Dawah wa Tablig Islamic Website

Help Line = Mob no. +8801783385346 :: Email Address = shalampb@gmail.com || To see the Arabic (Saudi Print) correctly use "Mozilla Firefox" Browser.

Tin Mul Niti

Tin Mul Nity, Page- 1

بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

তিন মূল নীতি

সমাজ সংস্কারক ইমাম শাইখুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ) মৃতঃ ১২০৬ হিজরী

(আল্লাহ পাক তাকে রহম করুন এবং তাঁর জন্যে জান্নাতে বাসস্থান দান করুন)

বাংলায় অনুবাদ করেছেন- মুহাম্মদ আব্দুর রব আফ্ফান

লিসান্স, মাদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব

প্রিয় পাঠক! অবগত হও। আল্লাহ পাক তোমার প্রতি রহমত করুন! আমাদের প্রতি চারটি বিষয়ের জ্ঞনার্জন করা ওয়াজিব বা অপরিহার্য কর্তব্য।

০১। ইলম, আর তাহল আল্লাহ, তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে দলীল প্রমাণ সহ পরিচয় লাভ করা।

০২। ইলম অনুযায়ী আমল করা।

০৩। আমল করার জন্য (মানুষকে) আহবান করা।

০৪। উক্ত কাজে আহবান করতে গিয়ে কষ্ট ও আঘাত আসলে ধৈর্যধারণ করা। এর প্রমাণে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার বাণীঃ

وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ سُورَةُ ٱلۡعَصۡرِ

অর্থঃ “মহাকালের শপথ, মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয়, ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।” [সূরা আসরঃ ১-৩ আয়াত]

ইমাম শাফেঈ রাহিমাহুল্লাহু তা‘আলা (সূরা আসর সম্পর্কে) বলেনঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা যদি তাঁর সৃষ্টজীবের প্রতি এই সূরাটি ছাড়া অন্য কোন যুক্তি ও প্রমাণ অবতীর্ণ না করতেন তাহলে এ সূরাটিই তাদের (হিদায়াতের) জন্য যথেষ্ট ছিল।

এবং ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহু তা‘আলা বলেনঃ باب العلم قبل القول والعمل অর্থঃ ই‘লম বা জ্ঞানের স্থান কথা ও কজের পূর্বে। [সহীহ বুখারী প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৫]

এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

فَٱعۡلَمۡ أَنَّهُۥ لَآإِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ … ١٩

অর্থ- “(হে রসূল!) আপনি জেনে রাখুন, আল্লাহ ছাড়া (সত্যিকার) কোন মা‘বূদ নেই, সুতরাং গুনাহের জন্য (তাঁর কাছে) ক্ষমা প্রার্থনা করুন” [সূরা মুহাম্মাদঃ ১৯]

আল্লাহ তা‘আলা কথা ও কাজের পূর্বে ই‘লম বা জ্ঞানার্জনের (তথা জানার) কথা উল্লেখ করেছেন।

(প্রিয় পাঠক!) আরও জেনে রাখুন, আল্লাহ আপনাকে রহম করুন। প্রত্যেক মুসলিম নর ও নারীর প্রতি নিম্নের তিনটি বিষয়ের জ্ঞানার্জন এবং সে মোতাবেক আমল করা ওয়াজিব বা অপরিহার্য কর্তব্য।

প্রথমঃ

অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, রিযিক বা জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং আমাদেরকে তিনি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেড়ে দেন নেই বরং (হিদায়াতের জন্য) আমাদের কাছে রাসূল পাঠিয়েছেন। কাজেই যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর যে ব্যক্তি তাঁর নাফরমানী করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ

إِنَّآ أَرۡسَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ رَسُولٗا شَٰهِدًا عَلَيۡكُمۡ كَمَآ أَرۡسَلۡنَآ إِلَيٰ فِرۡعَوۡنَ رَسُولٗا ١٥ فَعَصَيٰ فِرۡعَوۡنُ ٱلرَّسُولَ فَأَخَذۡنَٰهُ أَخۡذٗا وَبِلٗا ١٦ سُورَةُ ٱلۡمُزَّمِّلِ

অর্থ- “নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট পাঠিয়েছি এক রাসূল তোমাদের সাক্ষী স্বরূপ, যেমন রাসূল পাঠিয়েছিলাম ফিরআ’উনের নিকট। কিন্তু ফিরআ’উন সেই রাসূলকে অমান্য করেছিল, ফলে আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিয়েছিলাম।” [সূরা মুয্যাম্মিল- ১৫-১৬]

দ্বিতীয়ঃ

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক করাকে (কখনও) পছন্দ করেন না, চায় তিনি কোন সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ফিরিস্তা হউন অথবা প্রেরিত কোন রাসূল হউন না কেন। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ

وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ سُورَةُ ٱلحِنِّ

অর্থ- “এবং এই যে মসজিদ সমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকেও ডেকো না।” [সূর জ্বীন- ১৮]

তৃতীয়ঃ

যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্য করবে এবং আল্লাহর একত্ববাদকে স্বীকার করবে তার জন্য, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরোধিতা করে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখা জায়েয নয়, উক্ত বিরোধিতাকারী যতই ঘনিষ্ঠ ও নিকটাত্মীয় হউক না কেন। এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

لَّاتَجِدُ قَوۡمٗا يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأَخِرِ يُوَآدُّونَ مَنۡ حَآدَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوۡكَانُوٓاْ ءَبَآءَهُمۡ أَوۡ إِخۡوَٰنَهُمۡ أَوۡ عَشِيرَتَهُمۡۚ أُوْلَٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ ٱلۡإِمَٰنَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٖ مِّنۡهُۖ وَيُدۡخِلُهُمۡ جَنَّتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ رَضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ أُوْلَٰٓئِكَ حِزۡبُ ٱللَّهِۚ أَلَآ إِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٢٢ سُورَةُ ٱلۡمُجَادِلَةِ

অর্থ- “(হে রাসূল!) আপনি পাবেন না আল্লাহর ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায়, যারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরুদ্ধাচারীদেরকে, হউক না এই বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা, অথবা তাদের জ্ঞাতি-গোত্র। তাদের অন্তরে আল্লাহ সুদৃঢ় করেছেন ঈমান এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর পক্ষ হতে রূহ্ দ্বারা। তিনি তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী সমূহ প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট, তারাই আল্লাহর দল। জেনে রেখো যে, আল্লহর দলই সফলকাম হবে।” [সূরা মুজাদালাহ্ – ২২]

(প্রিয় পাঠক! আরও জেনে রাখ) আল্লাহ তোমাকে তাঁর আনুগত্য করার জন্য পথপ্রদর্শন করুন। খাঁটি বিশ্বাসই হল মিল্লাতে ইবরাহীমের মূল কথা, আর তা‘হল যে তুমি শুধু মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত করবে এবং তাঁরই জন্য দ্বীনকে খালেস বা আন্তরিক ভাবে পালন করবে। আল্লাহ পাক কেবল তাঁরই ইবাদত করার জন্য সমগ্র মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু তাআ’লা এরশাদ করেনঃ

وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنۡسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ سُرَةُ ٱلذَّارِيَاتِ

অর্থ- “আমি জ্বিন ও মানুষকে এ জন্য সৃষ্টি করেছি যে, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে।” [সূরা যারিয়াতঃ ৫৬]

আয়াতে “আমারই ইবাদত করবে” এর অর্থ হল ইবাদতে আমাকে এক ও একক বলে জানবে। আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার বড় নির্দেশ তাওহীদ বা একত্ববাদ। এর অর্থ হল ইবাদতে আল্লাহকে একক রাখা (তাঁর ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করা।) আর সবচেয়ে বড় নিষেধ হল শিরক। শিরকের অর্থ হল আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে আহবান করা। এর প্রমাণ হল আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ

وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡئٗاۖ … ٣٦ سُورَةُ ٱلنِّسَاءِ

অর্থ- “এবং তোমরা আল্লাহরই ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কোন কিছু অংশী স্থাপন করো না।” [সূরা নিসাঃ ৩৬]

(যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়) তিনটি মূলনীতি কি যা প্রত্যেক মানুষের জন্য জানা ওয়াজিব বা অপরিহার্য? তুমি উত্তরে বলবে, বান্দাহ তার প্রতিপালককে, তার দ্বীন সম্পর্কে এবং তার নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জানবে।


প্রথম মূলনীতি

বান্দাহ তার প্রতিপালক সম্পর্কে জানাঃ

(যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় বা তোমার কাছে জানতে চাওয়া হয়) তোমার রব বা প্রতিপালক কে? উত্তরে বলবে- আমার প্রতিপালক আল্লাহ যিনি আমাকে এবং সমস্ত বিশ্ববাসীকে তাঁর নিয়া‘মত দ্বারা লালনপালন করেন। তিনিই আমার একমাত্র মা‘বূদ, তিনি ছাড়া আমার আর কোন মা‘বূদ নেই। এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَالَمِينَ ٢ سُرَةُ ٱلۡفَاتِحَةِ

অর্থ- “আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।” [সূরা ফাতিহা – ২]

আল্লাহ ছাড়া সবকিছুই সৃষ্ট বস্তু এবং আমি উক্ত সৃষ্ট বস্তুরই একজন মাত্র।

(যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়) যে, তুমি কিসের মাধ্যমে তোমার প্রতিপালককে চিনলেন? উত্তরে বলবে, আমি আমার প্রতিপালককে নিদর্শন ও চিহ্ন, সৃষ্টিকুলের মাধ্যমে চিনতে পেরেছি। তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে হল দিন ও রাত এবং চন্দ্র ও সূর্য। এবং তাঁর সৃষ্টিকুলের মধ্যে হলো সপ্তাকাশ জমিন এবং এ দু’য়ের ভিতরে ও এর মধ্যস্থলে যা কিছু আছে। এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلَّيۡلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُۚ لَاتَسۡجُدُواْ لِشَّمۡسِ وَلَا لِلۡقَمَرِ وَٱسۡجُدُواْ لِلَّهِ ٱلَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمۡ إِيَّهُ تَعۡبُدُونَ ٣٧ ۩ سُورَةُ فُصِّلَتۡ

অর্থ- “আর তাঁর (আল্লাহর) নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রজনী ও দিবস, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চন্দ্রকেও না, সিজদা কর আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর।” [সুরা হা-মীম আসসিজদাহ/ফুস্‌সিলাত -৩৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরও এরশাদ করেনঃ

إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَاوَتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ يُغۡشِي ٱلَّيۡلَ ٱلنَّهَارَ يَطۡلُبُهُۥ حَثِيثٗا وَٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتِۢ بِأَمۡرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَلۡأَمۡرُ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٥٤ سُورةُ ٱلۡأَعۡرَافِ

অর্থ- “নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের উপর সমাসীন হন, তিনি দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, যাতে ওরা একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে ত্বরিত গতিতে; সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজী সবই তাঁর হুকুমের অনুগত, জেনে রাখ, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই আর হুকুমের মালিক তিনিই, সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ হলেন বরকতময়।” [সূরা আ’রাফ ৫৪ ]

রব বা প্রতিপালক যিনি, তিনিই হলেন মা‘বুদ ইবাদতের যোগ্য। এর প্রমাণে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা এরশাদ করেনঃ

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعۡبُدُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُمۡ وَٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ٢١ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡاَرۡضَ فِرَٰشٗا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءٗ وَأَنۡزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَاءٗ فَأَخۡرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلسَّمَرَٰتِ رِزۡقٗالَّكُمۡۖ فَلَا تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ أَنۡدَادٗا وَأَنۡتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٢٢ سُورَةُ ٱلۡبَقَرَةِ

অর্থ- “হে মানব বৃন্দ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা পরহেজগার হও। যিনি তোমাদের জন্যে ভূতলকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, অতঃপর তার দ্বারা তোমাদের জন্য জীবনউপকরণ ফল-ফলাদি (ফল-মূল শষ্য) উৎপাদন করেন। অতএব তোমরা আল্লাহর জন্য শরীক (সমকক্ষ) সাব্যস্ত করো না এবং তোমরা তা অবগত আছ।” [সূরা বাকারা, ২১-২২]

ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহু ওয়া তা‘আলা বলেনঃ যিনি এই সমস্ত বস্তুর সৃষ্টিকারী তিনিই কেবল ইবাদতের হকদার।

ইবাদতের প্রকার সমূহঃ

(ইবাদতের প্রকার সমূহ) যা পালন করার জন্য আল্লাহ সুবাহানাহু তা‘আলা নির্দেশ করেছেন, তা হলো ইসলাম, ঈমান ও ইহসান। ইবাদতের অন্যান্য প্রকারের মধ্যে যেমন- দু‘আ বা আহবান করা, ভয়-ভীতি, আশা করা, তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা, আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা, ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা, আতংক, বিনয় ও নম্রতা, অমঙ্গলের আশংকা, প্রত্যাবর্তন করা, সাহায্য প্রার্থনা করা, আশ্রয় প্রার্থনা করা, কঠিন বিপদের সময় সহায্যের ফরিয়াদ ও আবেদন করা, কুরবানী করা এবং মানত ও উৎসর্গ করা সহ অন্যান্য যাবতীয় ইবাদত যা করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ প্রদান করেছেন। (উপরে উল্লেখিত সমস্ত প্রকার ইবাদত আল্লাহর উদ্দেশ্যে পালন করতে হবে।)

* একমাত্র আল্লাহর কাছেই দু‘আ করতে হবেঃ (ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই)

আল্লাহকেই আহবান করতে হবে এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ

وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ سُورَةُ الۡجِنِّ

অর্থ- “এবং এই যে, মসজিদ সমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকেও ডেকো না।” [সূরা জ্বীন- ১৮]

যে ব্যক্তি এই সমস্ত ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারও (যেমন- ফিরিশতা, নবী, ওলী, পীর ও মুরশীদ প্রভৃতি) জন্য সাব্যস্ত করবে সে মুশরিক ও কাফির বলে গণ্য হবে। এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهٗا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِندَ رَبِّهِ إِنَّهُ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧ سُورَةُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ

অর্থ- “যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে, ঐ বিষয়ে তার নিকট কোন প্রমাণ নেই; তার হিসাব তার প্রতিপালকের নিকট আছে, নিশ্চয়ই কাফিররা সফলকাম হয় না।” [সূরা মু’মিনুন- ১১৭]

(উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলি ইবাদতের অন্তর্ভুক্তি হওয়ার প্রমাণ)

* দু‘আ ইবাদত হওয়ার প্রমাণঃ

হাদীসে বর্ণিত আছে- ٱلدُّعَاءُ مُخُّ ٱلۡعِبَادَةِ “দু‘আ ইবাদতের মজ্জা ও মূল” [হাদীসটি ইমাম তিরমিযী আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন] এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِي أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡ إِنَّ الَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُنَ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ ٦٠ سُورَةُ غَافِرٍ

অর্থ- “তোমাদের প্রতিপালক বলেনঃ তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। যারা অহংকারে আমার ইবাদত বিমুখ, তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।” [সূরা গাফির ৬০]

* ভয়-ভীতি ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

… فَلَا تَخَافُو هُمۡ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ١٧٥ سُورَةُ آلِ عِمۡرَانَ

অর্থ- “যদি তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হও তবে তাদেরকে (কোন মানুষকেই) ভয় করো না বরং আমাকেই ভয় কর।” [সূরা আল ইমরান- ১৭৫]

* আশা-আকাঙ্ক্ষাও ইবাদত

এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

فَمَنۡ كَانَ يَرْجُواْ لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلٗا صَٰلِحٗا وَلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدَۢا ١١٠ سُورَةُ ٱلۡكَهۡفِ

অর্থ- “সুতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে ও তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।” [সূরা কাহ্‌ফ- ১১০]

* তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা আল্লাহর ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত

এর প্রমাণে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার বাণীঃ

وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ٢٣ سُورَةُ ٱلۡمائِدَةِ

অর্থ- “এবং তোমরা আল্লাহর উপর নির্ভর কর, যদি তোমরা মু‘মিন হও।” [সূরা মায়িদাহ্ – ২৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরও এরশাদ করেনঃ

وَمَن يَّتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسۡبُهُ ٣ سُورَةُ ٱلطَّلَاقِ

অর্থ- “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট।” [সূরা তালাক- ৩]

* আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা, ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা বা আতঙ্ক, বিনয় ও নম্রতাও ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

إِنَّهُمۡ كَانُواْ يُسَٰرِعُونَ فِي ٱلۡخَيۡرَٰتِ وَيَدۡعُونَنَا رَغَبٗا وَرَهَبٗاۖ وَكَانُواْ لَنَا خَٰشِعِينَ ٩٠ سُورَةُ ٱلۡأَنبِيَاءِ

অর্থ- “তারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করত আশা ও ভীতির সাথে এবং তারা ছিল আমার নিকট বিনীত।” [সূরা আম্বিয়া- ৯০]

* অমঙ্গলের আশংকা করা ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

… فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِي … ١٥٠ سُورَةُ ٱلۡبَقَرَةِ

অর্থ- “অতঃপর তোমরা তাদেরকে ভয় কর না বরং আমাকেই ভয় কর” [সূরা বাকারাহ- ১৫০]

* প্রত্যাবর্তন আল্লাহর ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

… وَأَنِيبُوٓاْ إِلَىٰ رَبِّكُمۡ وَأَسۡلِمُواْ لَهُۥ … ٥٤ سُورَةُ ٱلزُّمَرِ

অর্থ- “তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হও এবং তাঁর নিকট আত্মসমর্পণ কর।” [সূরা যুমার- ৫৪]

* সাহায্য প্রার্থনা করা ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ ٥ سُورَةُ ٱلۡفَاتِحَةِ

অর্থ- “আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য চাই।” [সূরা ফতিহা- ৫]

এবং হাদীসে (সাহায্য প্রার্থনা করা ইবাদত হওয়ার বিষয়) বর্ণিত হয়েছে, (إِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ) অর্থ- “যখন তুমি সাহায্য চাইবে আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে।” [এটি বড় হাদীসের একটি ছোট আংশ ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন হাদীসটি হাসান ও সহীহ]

* আশ্রয় প্রার্থনা করা ইবাদত

قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّسِ ١ مَلِكِ ٱلنَّاسِ ٢ سُورَةُ ٱلنَّاسِ

অর্থ- “(হে মুহাম্মদ!) বলঃ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করেছি মানুষের প্রতিপালকের, যিনি মানবমণ্ডলীর মালিক।” [সূরা নাস ১-২]

* কঠিন বিপদের সময় সাহায্যের ফরিয়াদ ও আবেদন করা ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

إِذۡ تَسۡتَغِيثُونَ رَبَّكُمۡ فَٱسۡتَجَابَ لَكُمۡ … ٩ سُورَةُ ٱلۡأَنفَالِ

অর্থ- “স্মরণ কর সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট কাতর কণ্ঠে প্রার্থনা করছিলে, আর তিনি সেই প্রার্থনা কবুল করেছিলেন।” [সূরা আনফাল- ৯]

কুরবাণী করা আল্লাহর ইবাদত

এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

قُلۡ إِنَّ صَّلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَاشَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٢ سُورَةُ ٱلۡأَنۡعَامِ

অর্থ- “(হে রাসূল!) তুমি বলে দাও আমার সালাত, আমার সকল ইবাদত (কুরবানী ও হজ্জ্ব) আমার জীবন ও মরণ সব কিছু সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে। তাঁর কোন শরীক নাই, আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি, আর আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে আমিই হলাম প্রথম।” [সূরা আন’আম- ১৬২-১৬৩]

(কুরবানী করা ইবাদত) হাদীস থেকে এর প্রমাণঃ

(لَعَنَ ٱللَّهُ مَن ذَبَحَ لِغَرِ ٱللَّهِ) অর্থ- “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে (যেমন- নবী, পীর, মুরশিদ ও কবরবাসীর উদ্দেশ্যে) কুরবানী করে আল্লাহ তার উপর লা‘নত করুন।” [হাদীসটি ইমাম মুসলিম বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।]

মানত করাও আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে শামিল

এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ

يُوفُونَ بِٱلنَّذۡرِ وَيَخَافُونَ يَوۡمٗا كَانَ شَرُّهُۥ مُسۡتَطِيرٗا ٧ سُورَةُ لۡإِنسَانِ

অর্থ- “তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যে দিনের বিপত্তি হবে ব্যাপক।” [সূরা দাহর বা সূরা ইনসান- ৭]


দ্বিতীয় মূলনীতি

দলীল প্রমাণ সহ ইসলামকে জানাঃ

দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে দলীল প্রমাণ সহ জ্ঞানার্জন করা। আর ইসলামের অর্থ হল একত্ববাদের সাথে আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজেকে আত্মসমর্পণ করা এবং একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করা ও শিরক থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বিশুদ্ধতা ও পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। এবং এর তিনটি স্তর (ইসলাম), (ঈমান), (ইহসান) এবং প্রতিটি স্তর বা শ্রেণীর আবার কয়েকটি করে রুকন রয়েছে।

প্রথম স্তর ॥ ইসলাম

ইসলামের রুকন (পাঁচটি)

০১। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা‘বূদ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল।

০২। সালাত প্রতিষ্ঠা করা।

০৩। যাকাত প্রদান করা।

০৪। রামাজান মাসে সিয়াম পালন করা।

০৫। কাবা ঘরে হজ্জ আদায় করা।

আরকানে ইসলামের প্রমাণঃ

তাওহীদের সাক্ষ্য

আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা‘বূদ নেই এর প্রমাণে আল্লাহর বানীঃ

شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَأُولُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَآئِمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ١٨ سُورَةُ آلِ عِمۡرَانَ

অর্থ- “আল্লাহ সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত (সত্যিকার) কেউ মা‘বূদ নেই এবং ফিরিশতাগণও (সাক্ষ্য দেয়); আল্লাহ ন্যায় ও ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত, তিনি ব্যতীত অন্য কোন (সত্য) মা‘বূদ নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আল-ইমরান- ১৭]

“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” শাহাদাত বাক্যের অর্থ হল যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা‘বূদ নেনি। “লা-ইলাহা” এর আর্থ হল আল্লাহ ছাড়া অন্য যাদের ইবাদত করা হয় তা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করা এবং “ইল্লাল্লাহু” বাক্য দ্বারা সমস্ত প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য স্থির করা এবং তাঁর ইবাদতে কোন শরীক নেই যেমন তাঁর রাজত্বে ও কর্তৃত্বে কোন শরীক নেই। এর ব্যাখ্যা আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা নিম্নের আয়াতে স্পষ্ট ও পরিস্কার ভাবে বিশ্লেষণ করে দিয়েছেন।

وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوۡمِهِۦٓ إِنَّنِي بَرَآءٞ مِّمَّا تَعۡبُدُونَ ٢٦ إِلَّا ٱلَّذِي فَطَرَنِي فَإِنَّهُۥ سَيَهۡدِينِ ٢٧ وَجَعَلَهَا كَلِمَةَۢ بَاقِيَةٗ فِي عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٢٨ سُورَةُ ٱلزُّخۡرُفِ

অর্থ- “(হে রাসূল!) স্মরণ কর, ইবরাহীম ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পিতা এবং সম্প্রদায়কে বলেছিল- তোমরা যাদের পূজা কর তাদের সাথে আমার কোনই সম্পর্ক নেই। আমার সম্পর্ক আছে শুধু তাঁরই সাথে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন। এই ঘোষণাকে সে স্থায়ী বাণীরূপে রেখে গেছেন তাঁর পরবর্তীদের জন্য যাতে তারা (শিরক থেকে) প্রত্যাবর্তন করে।” [সূরা যুখরুফ- ২৬-২৮]

এ সম্পর্কে আল্লাহতা‘আলার আরও বাণীঃ

قُلۡ يَٰأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ كَلَمَةٖ سَوَآءِۢ بَيۡنَنَا وَبَيۡنَكُمۡ أَلَّا نَعۡبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشۡرِكَ بِهِۦ شَيۡئٗا وَلَا يَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعْضًا أَرۡبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَقُولُواْ ٱشۡهَدُواْ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ٦٤ سُورَةُ آلِ عِمۡرَانَ

অর্থ- “(হে রাসূল!) তুমি বল- হে আহলি কিতাব! আমাদের মধ্যে যে বাক্য অভিন্ন ও সাদৃশ্য রয়েছে তার দিকে এসো, যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদত না করি ও তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমরা পরস্পর কাউকে প্রভুরূপে গ্রহণ না করি, অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তবে বল- তোমরা সাক্ষী থাক যে, আমরাই মুসলিম।” [সূরা আল ইমরান- ৬৪]

রিসালতের প্রমাণঃ

মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল, এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

لَقَدۡ جَآءَ كُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيصٌ عَلَيۡكُمۡ بِلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١٢٨ سُورَةُ ٱلتَّوۡبَةِ

অর্থ- “তোমাদের নিকট আগমন করেছেন তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল যার কাছে তোমাদের ক্ষতির বিষয় অতি কষ্টকর মনে হয়, যে হচ্ছেন খুবই হিতাকাঙ্খী, মুমিনদের প্রতি বড় স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ।” [সূরা তাওবাহ- ১২৮]

شَهادة أن محمدا رسول الله “মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” শাহদত বাক্যের অর্থ হল যে, তিনি [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তার আনুগত্য করা, তাঁর সমস্ত কথা ও সংবাদকে সত্য বলে স্বীকার করা, আর তিনি যা করতে নিষেধ ও সাবধান করেছেন তা বর্জন করা এবং আমরা আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার ইবাদত সেই ভাবে করবো যেভাবে তিনি শরীয়ত সম্মত বিধান করে দিয়েছেন।

যাকাত, সালাত এবং তাওহীদের ব্যাখ্যার প্রমাণে আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَٱءَ وَيُقِيمُواْ الصَّلَاةَ وَيُؤۡتُواْ الزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ ٥ سُورَةُ ٱلۡبَيِّنَةِ

অর্থ- “এবং তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্য বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে এবং এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন।” [সূরা বাইয়্যিনাহ- ৫]

সিয়াম ফরয হওয়ার প্রমাণে আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ سُورَةُ ٱلۡبَقَرَةِ

অর্থ- “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে ফরয করে দেয়া হয়েছে, যেন তোমরা সংযমশীল হতে পার।” [সূরা- বাকারাহ- ১৮৩]

হজ্জ ফরয হওয়ার প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

وَ لِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٩٧ سُورَةُ آلِ عِمۡرَانَ

অর্থ- “এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে কা‘বা গৃহের হজ্জ করা সেসব মানুষের উপর অবশ্য কর্তব্য যারা শারীরিক ও আর্থিক ভাবে ঐ পথ অতিক্রমে সামর্থ্য এবং যদি কেউ অস্বীকার করে তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশা মুক্ত।” [সূরা আল ইমরান- ৯৭]

দ্বিতীয় স্তর ॥ ঈমান

ঈমান প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসূলের হাদীসঃ

“ঈমানের সত্তর (অন্য বর্ণনায় ষাট) এর ও অধিক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তার সর্বোচ্চ হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলা এবং সর্ব নিম্ন হচ্ছে রাস্তা থেকে কোন কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা আর লজ্জাশীলতা ঈমানের শাখা সমূহের মধ্যে একটি।” [বুখারী ও মুসলিম]

ঈমানের রুকন ৬টিঃ

০১। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা।

০২। তাঁর মালাইকা (ফরিশতা) এর প্রতি ঈমান আনা।

০৩। তাঁর কিতাব সমূহের প্রতি ঈমান আনা।

০৪। তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনা।

০৫। কিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান আনা।

০৬। এবং ভাগ্যের ভাল ও মন্দের প্রতি ঈমান আনা।

ঈমানের ছয়টি রুকন এর প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَنۡ تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأَخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّنَ … ١٧٧ سُورَةُ ٱلۡبَقَرَةِ

অর্থ- “তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে ফিরানতে কোন পূণ্য নেই, বরং পূণ্য আছে আল্লাহে, পরকলে, মালাইকাগণে, কিতাবে ও নবিগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাতে।” [সূরা বাকারাহ- ১৭৭]

তাকদীর বা ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখার প্রমাণে আল্লাহর বাণীঃ

إِنَّ كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ سُورَةُ ٱلۡقَمَرِ

অর্থ- “আমি সবকিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে।” [সূরা কামার- ৪৯]

তৃতীয় স্তর ॥ ইহসানঃ

ইহসানের রুকন শুধু একটি। এবং তা হল, আল্লাহর ইবাদত এমন ভাবে করা যেন তুমি তাঁকে দেখছ আর যদি তুমি তাঁকে নাও দেখতে পাও তিনি যেন তোমাকে দেখছেন (এ ভাবে মনে বিশ্বাস রাখা)।

ইহসানের প্রমাণে আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَواْ وَّٱلَّذِينَ هُم مُّحۡسِنُونَ ١٢٨ سُورَةُ ٱلنَّحۡلِ

অর্থ- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপারায়ণ (মুহ্‌সিন)।” [সূরা নাহল- ১২৮]

আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা আরও বলেনঃ

وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡعَزِيزِ ٱلرَّحِيمِ ٢١٧ ٱلَّذِي يَرَىٰكَ حِينَ تَقُومُ ٢١٨ وَتَقَلُّبَكَ فِى ٱلسَّٰجِدِينَ ٢١٩ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ ٢٢٠ سُورَةُ ٱلشُّعَرَاءِ

অর্থ- “তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দণ্ডায়মান হও। এবং দেখেন সিজদাকারীদের সাথে উঠা-বসা। তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সূরা শুআরা- ২১৭-২২০]

আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা আরও বলেনঃ

وَمَا تَكُونُ فِي شَأۡنٖ وَمَا تَتۡلُواْ مِنۡهُ مِن قُرۡءَانٖ وَلَاتَعۡمَلُونَ مِنۡ عَمَلٍ إِلَّا كُنَّا عَلَيۡكُمۡ شُهُودًا إِذۡ تُفِيضُونَ فِيهِۚ … ٦١ سُورَةُ يُونُسَ

অর্থ- “আর তুমি যে অবস্থাতেই থাক না কেন, আর সেই অবস্থাগুলোর অন্তর্গত এটাও যে, তুমি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন স্থান হতে কুরআন পাঠ কর এবং তোমরা (অন্যান্য লোক) যে কাজ্‌ই কর, আমার সব কিছুই জানা থাকে, যখন তোমরা সেই কাজ করতে শুরু কর।” [সূরা ইউনূস- ৬১]

عن عمر بن الخطاب رضي اللَّه عنه، قال ((وبينما نحن جلس عند النبي صل اللَّه عليه وسلام إذ طلع علينا رجل شديد بياض الشياب، شديد سواد الشعر , لا يرى عليه أثر السفر , ولا يعرفه منا أحد فجلس إلى النبي صل اللَّه عليه وسلام فأسند ركبتيه إلى ركبتيه ووضع كفيه على فخذيه وَقال: أن تشهد أن لا إله إلا اللَّه وأن محمدا صل اللَّه عليه وسلام رسوا اللَّه، وتقيم الصلاة، وتؤتي الزكاة، وتصوم رمضان، وتحج البيت إن استطعت إليه سبيلا قال: صدقت، فعجبنا له يسأله و يسأله ويصدقه. قال أخبرني عن الإيمان، قال: أن تؤمن باللَّه وملائكته وكتبه ورسله واليوم الآخر وبالقدر خيره وشره. قال: أخبرني عن الإحسان، قال: أن تعبد اللَّه كأنك تراه فإن لم تكن تراه فإنه يراك. قال أخبرني الساعة، قال: ما المسؤول عنها بـأعلم من السئل عنها بأعلم من السائا. قال: أخبرني عن أماراتها قال: أن تلد الأمة ربتها. وأن ترى الحفاة العر اة العالة رعاء الشاة يتطاولون في البنيان، قال: فمضى فلبثنا مليا فقال: يا عمر أتدرون من السائل ؟ قلنا اللَّه ورسوله أعلم، قال هذا جبريل أتاكم يعلمكم أمر دينكم)) (أخرجه مسلم)

অর্থ- “ওমর ইবনুল খাত্তাব রাজিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা এক দিন নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট বসেছিলাম। সহসা এক ব্যক্তি সম্মুখ দিক হতে এসে উপস্থিত হল। তার পোশাক অত্যন্ত সাদা ও পরিচ্ছন্ন ছিল, মাথার চুল কুচকুচে কাল ছিল এবং তার প্রতি সফর করে আসার কোন চিহ্নও পাওয়া গেল না। অথচ আমাদের মধ্যে কেউ এ নবাগতকে চিনলাম না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মুখে দু’হাটু বিছিয়ে বসল এবং নিজের দু’হাটু নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দু’হাটুর সঙ্গে মিলিয়ে দিল ও নিজের দু’হাত নিজের দু’উরুর উপরে রাখল। অতঃপর সে বলল, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে বলুন ইসলাম কাকে বলে? উত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ইসলাম এই যে, (১) তুমি সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ বা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। (২) সালাত কায়েম করবে, (৩) যাকাত আদায় করবে। (৪) রমাজান মাসে রোজা রাখবে, (৫) আল্লাহর ঘরের হজ্জ করার সামর্থ থাকলে হজ্জ পালন করবে। তিনি (নবাগত) বললেন আপনি ঠিকই বলেছেন। এ হাদীস বর্ণনাকারী ওমর (রাঃ) বলেন এই নবাগত ব্যাক্তির প্রশ্ন করা এবং উত্তরের সত্যতা ঘোষণা করতে দেখে আমরা অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়ে উঠলাম। অতঃপর সে ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল- এখন বলুন ঈমান কাকে বলে? নবী করীম (সাঃ) উত্তরে বললেন- ঈমান হচ্ছে যে, তুমি আল্লাহ, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাব সমূহ, তাঁর রাসূগণ ও পরকালকে সত্য বলে বিশ্বাস করবে এবং প্রত্যেক ভাল মন্দ আল্লাহর নির্ধারিত সত্য বলে জানবে। এর পর সে বলল- ইহ্‌সান কাকে বলে? উত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- ইহ্‌সান বলা হয়, তুমি এমন ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ আর তুমি যদি তাঁকে নাও দেখতে পাও তিনি তো তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। সে লোকটি বলল- কিয়ামত কবে হবে সে সম্পর্কে আমাকে বলুন। উত্তরে তিনি বললেন- যার নিকট প্রশ্নটি করা হয়েছে সে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্নকারী অপেক্ষা অধিক কিছু জানেন না। সে বলল, আপনি উহার নিদর্শন সমূহ বলে দিন। তিনি বললেন- দাসী নিজের সম্রাজ্ঞী ও মনিবকে প্রশব করবে। তুমি দেখতে পাবে যাদের পায়ে জুতা ও গায়ে কাপড় নেই, যারা শূন্যহাত ও ছাগলের রাখাল, তারা বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছে এবং এ কাজে তারা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দিতা করছে। ওমর (রাঃ) বলেন এ সব বলার পর এই নবাগত লোকটি চলে গেল। এর পর আমরা বসে থেকে কিছুক্ষণ অতিবাহিত করলাম। তার পর নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, “এই প্রশ্নকারী ব্যক্তি কে ছিল, তা কি তোমরা জান? আমরা বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- তিনি ছিলেন জিবরিল (আঃ)। তিনি তোমাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তোমাদের এই মজলিসে এসেছিলেন।” [বুখারী ও মুসলিম]

Tin Mul Nity, Page- 1

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

শাইখ আব্দুর রব আফ্ফান- দাওয়াহ ওয়া তাবলীগ ক্লাস, বিষয়- আকিদা (শবেবরাত)-২০, তাং- ১০-৫-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী – DWT class, বিষয়- রাসূলের আনুগত্য- ১৮, তাং- ১৭-০৮-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলালা মাদানী- কুরবানী-২০১৭, তাং- ১০-০৮-২০১৭
শাইখ জাকির হুসাইন- দাওয়াহ ওয়া তবলীগ ক্লাস, বিষয়- আরবী ভাষা শিক্ষা-৫, তাং- ২০-১১-২০১৬
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল – DWT ক্লাস, বিষয়- যিলহজ্জ্ব মাসের ১০ দিনের আমল ও ফযিল, তাং- ১-৮-২০১৭
আহলি সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা, শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী
© Dawah wa Tablig since 2013