দাওয়া ওয়া তাবলীগ ওয়েব সাইটের প্রতিটি পেজের সবচেয়ে নিচে ফুটার এরিয়ায় প্রতি দিনের অনলাইন ক্লাসের লেক্চারগুলো প্লে করে শুনতে পারবেন। এবং “Audio Archive” পেজ থেকে প্রত্যেকটি লেক্চার ডাউন-লোড করতে পরবেন।
আজ বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা যাক– সাধারণত বিজ্ঞানের অন্যতম বিষয়- ১। পদার্থ বিজ্ঞান ২। রসায়ন বিজ্ঞান ৩। জীব বিজ্ঞান ৪। গণিত বিজ্ঞান। এছড়াও আরও বিজ্ঞান আছে যেমন- সমাজ বিজ্ঞান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, ভূ-বিজ্ঞান, মহাবিশ্ব বা মহাকাশ বা মহাজাগতিক বিজ্ঞান। এ সব বিজ্ঞান পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। এ সব বিজ্ঞান মূলত গড়ে উঠেছে আল্লাহর সৃষ্টি কে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে। এ ছাড়াও আরও বিজ্ঞান বা জ্ঞান বা বিদ্যা আছে যেমন- কলা বা শীল্প তা চাই কথায়, লিখায় ও অঙ্গভঙ্গিতে, বস্তুতে বা অঙ্কনে ইত্যাদি। এই দ্বিতীয় প্রকার বিদ্যা মানুষের মনস্তাত্বিক ও ব্যবহারিক চাহিদার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এছাড়াও আরও একটা ভিন্ন ধারনের বিজ্ঞান বা বিদ্যা আছে তা হচ্ছে – দর্শন ও যুক্তি বিদ্যা। দর্শন ও যুক্তি বিদ্যা এমন বিদ্যা যা কেবল মানুষের অনুমানের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। যুক্তি বিদ্যার দুটি ভাগ, এক- যা পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছে যা মূলত বিজ্ঞানীরা ও গণীত বিশেষজ্ঞরা ব্যবহার করে, আর দুই- যুক্তি বিদ্যা যা শুধু অনুমানের উপর ভিত্তি করেই তৈরী হয়েছে যা অধিকাংশ দার্শনিকরা ব্যবহার করে। এর মধ্যে কিছু কিছু বিজ্ঞানীগণ এমন অনেক থিওরম ও হাইপোথিসস দিয়েগেছেন যা শুধু অনুমানের উপর বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই। আবার এমন কিছু বিজ্ঞানী আছে যারা যে বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল তা পরবর্তী সময়ের বিজ্ঞানীগণ ভুল প্রমাণ করেছেন। তাই এক কথায় বিজ্ঞানীগণ যে কথাই বলুক না তা চিরস্থায়ী সত্য নয়। তবে সে সব সিদ্ধান্ত আপত দৃষ্টিতে সেই পর্যন্ত সত্য বলে গ্রহণ করা যায় যতক্ষণ না তাকে আরও গভীর পর্যবেক্ষণে ভুল প্রমাণীত না হয়।
বিজ্ঞানীগণ বলেছেন এখন পর্যন্ত তারা বহু বিষয় সম্পর্কে জানেন না। এখনও অনেক বিষয় বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে ধরা পরে নাই। এমন অনেক বিষয় আছে যা বিজ্ঞানীগণ এখনও আবিস্কার করতে পারেন নাই। সৃষ্টিরাজীর এত ব্যপকতা দেখে বিজ্ঞানীগণ বিস্ময়াভিভূত। সৃষ্টির পরতে পরতে এত কৌশল তা নিতান্তই বিস্ময় ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় মানুষের জ্ঞান বড়ই সীমিত। এত সীমিত জ্ঞান নিয়ে মানুষ কিভাবে চিন্তা করে তারা সয়ংসম্পূর্ণ। এটাই মানুষের মিথ্যা অহমিকা। এটাই শয়তানের ধোকা।
আর অধিকাংশ দার্শনিকরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন যে বিষয়ে তাদের কোন সঠিক জ্ঞান নাই। তারা কিছু জানা বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত করে অন্য এমন বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্তনেন যে বিষয়ে আসলে তাদের মোটেও জ্ঞান নেই। তাই দার্শনিকদের সিদ্ধান্ত এক রকম হয় না। এক দাশর্নিক এক রকম সিদ্ধান্ত দেন এবং অন্য দার্শনিক অন্য রকম সিদ্ধান্ত দেন। তাই এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় দার্শনিকরা কেবল অনুমানের উপর সিদ্ধান্ত নেন। তাদের যে যুক্তি প্রক্রিয়া তা তাদের মনগড়া অনুমান ছাড়া আর কিছু নয়। এ সব যুক্তি প্রক্রিয়ার সাথে বাস্তবাতার কোন মিল নাই। ঐসব দার্শনিকরা তাদের যুক্তি প্রক্রিয়া বাস্তবতার থেকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। তাই তারা সত্য থেকে সম্পূর্ণ বিচ্চুত হয়েছে। বাস্তবানুগ যুক্তি গ্রহণ যোগ্য। আর অবাস্তব যুক্তি গ্রহণ যোগ্য নয়। যুক্তি দুই প্রকার বলা যেতে পারে এক- বাস্তব যুক্তি আর দুই অনুমান ও অবাস্তব যুক্তি। অধিকংশ দার্শনিকই বাস্তব যুক্তি গ্রহণ করেন নাই তবে বেশ কিছু দার্শনিক আছে যারা বাস্তব যুক্তি বাদী। এই বাস্তব যুক্তিবাদীদের বদৌলতে গড়ে উঠেছে গণিত শাস্ত্র এবং পদার্থ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা প্রশাখা।
এই আলোচনার বিষয়বস্তু যেহেতু বিজ্ঞান তাই জ্ঞান সস্পর্কে আলোচনায় আসা যাক। মানুষ পর্যবেক্ষণ করে যে জ্ঞান অর্যন করেছে সেই জ্ঞান মানুষের জানা জ্ঞান। আর এই জানা জ্ঞান এমন জ্ঞান যা ততক্ষণ পর্যন্ত সত্য যতক্ষণ পর্যন্ত না তা অধিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ভুল প্রমাণীত না হয়। আর এক প্রকার জ্ঞান যা মানুষ এখনও জানে না। মানুষের পর্যবেক্ষণে ধরা পরেছে যে মানুষ এখনও অনেক কিছু জানে না। এই অজানা জ্ঞান কে বলা হয় অদৃশ্য জ্ঞান বা ইলমুল গাইব বা নলেজ অব আন-সীন। যেমন- সৃষ্টির শেষ কোথায়, ভবিষ্যতে কি ঘটবে, বিজ্ঞানীগণ এখনো যে সব বিষয় আবিষ্কার করতে পারে নাই এমন বিষয়ের জ্ঞান বা মানুষের জানার জন্য প্রশ্নের শেষ নাই অর্থাৎ মানুষ সয়ংসম্পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী নয় বা মানুষ আসীম জ্ঞানের অধিকারী নয়, তাই অসীম জ্ঞান এমন নানা বিধ বহু জ্ঞান। এক কথায় মানুষ যে সম্পর্কে জানে না সেই বিষয়ের জ্ঞান কে ইলমুল গায়েব বা অদৃশ্যের জ্ঞান বলা হয়। অদৃশ্যের জ্ঞান বা মানুষের অজানা বিষয় এর জ্ঞান সম্পর্কে সব মানুষই স্বীকার করে যে মানুষ অনেক কিছু জানে না। সে নাস্তিক হোক বা আস্তিক হোক বা সে যাই হোক সে আন্তরিক ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ অনেক কিছু জানে না। কারণ সে যদি সব কিছু জানত তাহলে এত বৈজ্ঞানীক গবেষণার কোন প্রয়োজন হত না। তবে ইলমুল গাইব বা অদৃশ্যের জ্ঞান সম্পর্কে ইসলামের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও বহু বক্তব্য আছে তন্মধ্য কুরআন মাযিদ থেকে ৫১ টি আয়াত নিম্নে উল্লেখ করে তার বিবরণ এক এর এক প্রদান করা হল পরে তার বিশ্লেষণ করা হবে।
আল্লাহত’আলা বলেন- الۤمۤ ﴿١﴾ ذَٰلِكَ ٱلْكِتَٰبُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ ﴿٢﴾ ٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱلْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ ٱصَّلَٰوةَ وَمِمَّارَزَقْنَٰهُمْ يُنْفِقُونَ ﴿٣﴾ وَٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَاۤ أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَاۤ أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَبِٱلْأَخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ ﴿٤﴾ أُولَٰۤئِكَ عَلَٰى هُدًى مِّن رَّبِّهِمْۖ وَأُولَٰۤئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ ﴿٥﴾ سُورَةُ الْبَقَرَة – আলিফ লাম– মীম–(১), ইহা এমন এক কিতাব যাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। যারা মুত্তাকী (আল্লাহকে ভয় করে নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করে) তাদের জন্য পথে দিশা। (২) যারা বিশ্বাস স্থাপন করে অদৃশ্যের প্রতি এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমরা যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে (৩) এবং যারা তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং পরকালের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী (৪) উহারাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সরল সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং উহারাই সফল। (৫) [সূরা- বাকারা]
উপরে বর্ণিত আয়াতগুলোর মধ্যে ২য় আয়াত যেখানে বলা হয়েছে “যারা বিশ্বাস স্থাপন করে অদৃশ্যের প্রতি” এখানে অদৃশ্য বলতে- আল্লাহ, তাঁর মালাইকাগণ, তাঁর ওয়াহী, জান্নাত, জাহান্নাম, পরকাল, ভাগ্য সহ তাঁর ওয়াহীতে বর্ণিত সকল বিষয়। [তাফসীর ইবনে কাসির ও আহাসুনাল বায়ন এ বর্ণিত ব্যাখ্যার সারমর্ম]
ٱللَّهُ لآَإِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُۚ لَاتَأْ خُذُهُۥسِنَةٌوَلَانَوْمٌۚ لَّهُۥمَافِى ٱسَّمَٰوَٰتِ وَمَافِى ٱلْأَرْضِۗ مَن ذَاٱلَّذِى يَشْفَعُ عِنْدَهُۥۤ إِلَّابِإِذْنِهِۦۚ يَعْلَمُ مَابَيْنَ أَيْدِهِمْ وَمَاخَلْفَهُمْۖ وَلَايُحِيطُونَ بِشَىْءٍمِّنْ عِلْمِهِۦۤ إِلَّا بِمَاشَاءَۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَۖ وَلَا يَئُودُهُۥ حِفْظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ ﴿٢٥٥﴾ سُورَةُ الْبَقَرَة – আল্লাহ চিরঞ্জীব চিরপ্রতিষ্ঠিত তিনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নাই। তন্দ্রা ও নিদ্রা কোনকিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। আকাশ ও যমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর। এমন কে আছে যে তার অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তিনি তাহাদের সম্মুখের (ভিবিষ্যতের) ও পশ্চাতের (অতীতের) সবকিছু জানেন। তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা (মানুষ বা সৃষ্টির মধ্য থেকে কেহ) তাদের জ্ঞানের আবেষ্ঠনিতে আনতে পারে না, হাঁ যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর আসন আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যপ্ত। ইহাদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি মহান ও শ্রেষ্ঠ। [সূরা বাকারা- ২৫৫]
এখানে সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াতে অদৃশ্য আল্লাহ তাঁর নিজের সম্পর্কে ও তাঁর জ্ঞান ও ক্ষমতার কিছু বিবরণ, এবং মানুষের জ্ঞান ও ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেছেন।
قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾ وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا ٱحَدٌ ﴿٤﴾ سُورَةُ الْإِخْلَاصِ বল, আল্লাহ এক। (১) আল্লাহ সয়ংসম্পূর্ণ বা অভাব শূন্য- তাঁর কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না। (২) তাঁকে কেহ জন্ম দেয় নাই, তিনিও কাহাকেও জন্ম দেন নাই। (৩) তাঁর মত কেহ নাই অর্থাৎ তিনি অতুলনীয় অর্থাৎ এমন কিছু নাই যার সাথে তাঁকে তুলনা করা যায়। (৪) [সূরা ইখলাস]
এই সূরার ৪ টি আয়াতে অদৃশ্য আল্লাহর সত্তাগত অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে। তাই এই সূরার গুরুত্ব বেশ তাৎপর্য পূর্ণ।
قُلْ إِنْ تُخْفُوا مَافِى صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ ٱللهُ ؕ وَيَعْلَمُ مَافِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ؕ وَٱللهُ عَلَٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ ﴿٢٩﴾ سُورَةُ آلِ عِمْرَانَ বল, ‘তোমাদের অন্তরে যাহা আছে তাহা যদি তোমরা গোপন অথবা ব্যক্ত কর আল্লাহ উহা অবগত আছেন এবং আসমান ও যমীনে যাহা কিছু আছে তাহাও তিনি অবগত আছেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (২৯) [সূরা আলে ইমারন]
অদৃশ্য আল্লাহ মানুষের অন্তরে যা আছে সে যদি তা গোপন করে বা প্রকাশ করে তা জানেন, আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত কিছুই তিনার জ্ঞানের আওতায়। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
قَالَ يَٰٓـَٔادَمُ أَنۢبِئْهُم بِأَسْمَآئِهِمْۖ فَلَمَّآ أَنۢبَأَهُم بِأَسْمَآئِهِمْ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّىٓ أَعْلَمُ غَيْبَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَأَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ ﴿٣٣﴾ سُورَةُ ٱلْبَقَرَةٌ তিনি বললেন, ‘হে আদম! তাহাদিগকে এই সকলের নাম বলিয়া দাও।’ আদম ঐ সকলের নাম বলিয়া দিল। তিনি (আল্লাহ) বলিলেন, ‘আমি কি তোমাদিগকে বলি নাই যে, আকাশ মণ্ডল ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে আমি নিশ্চিত অবহিত এবং তোমরা যা ব্যক্ত কর বা গোপন রাখ আমি তাহাও জানি?’ (৩৩) [সূরা বাকারা]
অদৃশ্য আল্লাহ, সমস্ত আকাশ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে জানেন, তোমরা যা অন্তরে রাখ তা গোপন করলেও তা তিনি জানেন ব্যাক্ত করলেও তা তিনি জানেন।
ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَۚ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يُلْقُونَ أَقْلَٰمَهُمْ أَيُّهُمْ يَكْفُلُ مَرْيَمَ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يَخْتَصِمُونَ ﴿٤٤﴾ سُورَةُ آلِ عِمْرَانَ ইহা অদৃশ্য বিষয়ের সংবাদ – যাহা তোমাকে ঐশী বাণী দ্বারা অবহিত করতেছি। মার্য়ামের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাহাদের মধ্যে কে গ্রহণ করবে ইহার জন্য যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল তুমি তখন তাদের নিকট ছিলে না। এবং তারা যখন বাদানুবাদ করছিল তখনও তুমি তাদের নিকট ছিলে না। (৪৪) [সূরা আলে ইমরান]
মানুষের বিস্মৃত ইতিহাসের উল্লেখ করে অদৃশ্য আল্লাহ বলেন, এই ওয়াহী যা অদৃশ্য বিষয়ের সংবাদ- মানুষের ভুলে যাওয়া বিষয়কে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রসূল (সাঃ) কে অবহিত করা হল, তা অদৃশ্য প্রক্রিয়া।
مَّا كَانَ ٱللَّهُ لِيَذَرَ ٱلْمُؤْمِنِينَ عَلَىٰ مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ حَتَّىٰ يَمِيزَ ٱلْخَبِيثَ مِنَ ٱلطَّيِّبِۗ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلَى ٱلْغَيْبِ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَجْتَبِى مِن رُّسُلِهِۦ مَن يَشَآءُۖ فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۚ وَإِن تُؤْمِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَلَكُمْ أَجْرٌ عَظِيمٌ ﴿١٧٩﴾ سُورَةُ آلِ عِمْرَانَ অসৎকে সৎ হইতে পৃথক না করা পর্যন্ত তোমরা যে অবস্থায় রহিয়াছ আল্লাহ মু’মিনগণকে সেই অবস্থায় ছাড়িয়া দিতে পারেন না। আল্লাহ এমন নন যে তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে পাঠ করবেন বরং আল্লাহ তাঁর রসূলগণের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আন। তোমরা ঈমান আনিলে ও তাকওয়া অবলম্বন করিয়া চলিলে তোমাদের জন্য মহা পুরস্কার রহিয়াছে। [সূর আলে ইমরান- ১৭৯]
আল্লাহতা’আলা মুমিনদেরকে কাফিরদের বিরুদ্ধে যে সাহায্য করেন তাও অদৃশ্য এবং এই অদৃশ্যের বিষয় বা কৌশল তিনি কখনো প্রকাশ করেন না।
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَيَبْلُوَنَّكُمُ ٱللَّهُ بِشَىْءٍ مِّنَ ٱلصَّيْدِ تَنَالُهُۥٓ أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ لِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَخَافُهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿٩٤﴾ سُورَةُ ٱلْمَائِدَةِ হে মুমিনগণ! তোমাদের হাত ও বর্শা যাহা শিকার করে সে বিষয়ে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবেন, যাতে আল্লাহ অবহিত হন কে তাঁকে না দেখেও ভয় করে। সুতরাং ইহার পর কেহ সীমালংঘণ করলে তার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে। (৯৪) [সূরা ময়েদা]
উপরোক্ত আয়াতে অদৃশ্য আল্লাহকে ভয় করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে হজ্জ্ব ও উমরার সময় ইহরাম অবস্থায় শিকার করা সম্পর্কে সতর্ক বাণি উচ্চারণ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা হজ্জ্ব ও উমরার সময় প্রাণি/জীব হত্যা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন (ইসলামে বিধান মতে ক্ষতিকর জীব থেকে আত্ম রক্ষার জন্য হত্যা যায়েজ আছে)। এই ব্যবস্থা আল্লাহর পক্ষ থেকে এক পরীক্ষা এই যে- কে না দেখে আল্লাহকে ভয় করে। যে আল্লাহর হুকুম লঙ্ঘন করবে তার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।
يَوْمَ يَجْمَعُ ٱللَّهُ ٱلرُّسُلَ فَيَقُولُ مَاذَآ أُجِبْتُمْۖ قَالُوا۟ لَا عِلْمَ لَنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّٰمُ ٱلْغُيُوبِ ﴿١٠٩﴾ سُورَةُ ٱلْمَائِدَةِ স্মরণ কর, যে দিন আল্লাহ রাসূলদিগকে একত্র করবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন, ‘তোমরা (উম্মাতের নিকট থেকে) কি উত্তর পেয়েছিলে?’ তারা বলবে, ‘(তাদের অন্তরের কথা সম্পর্কে) আমাদিগের তো কোন জ্ঞান নাই; তুমি তো অদৃশ্য সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত। (১০৯) [সূরা মায়েদা]
মানুষ এমন কি নবী/রাসূলগণও অন্য মানুষের অন্তরের কথা জানে না। অন্য মানুষের অন্তরের বিষয় জানা একটা অদৃশ্য জ্ঞান। অদৃশ্য জ্ঞান অদৃশ্য আল্লাহ সম্যক পরিজ্ঞাত, সেটাই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
وَإِذْ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبْنَ مَرْيَمَ ءَأَنتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِى وَأُمِّىَ إِلَٰهَيْنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالَ سُبْحَٰنَكَ مَا يَكُونُ لِىٓ أَنْ أَقُولَ مَا لَيْسَ لِى بِحَقٍّۚ إِن كُنتُ قُلْتُهُۥ فَقَدْ عَلِمْتَهُۥۚ تَعْلَمُ مَا فِى نَفْسِى وَلَآ أَعْلَمُ مَا فِى نَفْسِكَۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّٰمُ ٱلْغُيُوبِ ﴿١١٦﴾ سُورَةُ ٱلْمَائِدَةِ আল্লাহ যখন বলবেন, ‘হে মারয়াম তনয় ‘ঈসা! তুমি কি লোকদিগকে বলেছিলে যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আমাকে ও আমার জননীকে উপাস্য রূপে গ্রহণ কর?’ সে বলবে তুমিই মহামহিমান্বিত! যাহা বলার অধিকার আমার নাই তাহা বলা আমার পক্ষে শোভন নহে। যদি আমি তা বলতাম তবে তুমি তো তাহা জানতে। আমার অন্তরের কথা তো তুমি অবগত আছ, কিন্তু তোমার অন্তরের কথা আমি অবগত নিহি; তুমি তো অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত। (১১৬) [সূরা মায়েদা]
এখানে খ্রীষ্টানগণ কি ভাবে ধর্মকে পরিবর্তন করে ঈসা (আঃ) ও তার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত করেছে। এ ব্যাপারে চুরান্ত বিচার দিবসে আল্লাহ তা’আলা ঈসা (আঃ) কে জিজ্ঞাসা করলে ঈসা (আঃ) উত্তরে উপরোক্ত কথা বলবেন। অদৃশ্য আল্লাহ সবকিছু জানেন, তিনি মানুষের অন্তরের কথা জানেন কিন্তু মানুষ আল্লাহর আন্তরের কথা জানে না উল্লেখ করা হয়েছে, আর এসবই অদৃশ্য বিষয়।
قُل لَّآ أَقُولُ لَكُمْ عِندِى خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعْلَمُ ٱلْغَيْبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمْ إِنِّى مَلَكٌۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِى ٱلْأَعْمَىٰ وَٱلْبَصِيرُۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ ﴿٥٠﴾ سُورَةُ الأَنْعَامِ বল, ‘আমি তোমাদেরকে ইহা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধনভান্ডার আছে, অদৃশ্য সম্বন্ধেও আমি অবগত নহি, এবং তোমাদিগকে ইহাও বলি না যে, আমি ফিরিশতা, আমার প্রতি যা ওহী হয় আমি শুধু তারই অনুসরণ করি’; বল, ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান?’ তোমরা কি অনুধাবন কর না? (৫০) তাঁর নিকটই গায়েব বা অদৃশ্যের চাবি-কাঠি রয়েছে, তিনি ছাড়া ওটা কেউ জানে না। (৫৯) [সূরা আন’আম]
আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু’আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেস্য করে বলছেন, আপনি লোকদেরকে বলে দিন- “আমার কাছে আল্লাহর ধনভান্ডার নাই, অদৃশ্য সম্বন্ধে আমি অবগত নহি, আমি মালাইকা নই, আমার প্রতি যা অহী হয় আমি শুধু তারই অনুসরণ করি। একমাত্র আল্লাহ নিকট অদৃশ্যের চাবি-কাঠি আছে, তিনি ছাড়া ওটা কেউ জানে না।”
وَهُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّۖ وَيَوْمَ يَقُولُ كُن فَيَكُونُۚ قَوْلُهُ ٱلْحَقُّۚ وَلَهُ ٱلْمُلْكُ يَوْمَ يُنفَخُ فِى ٱلصُّورِۚ عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِۚ وَهُوَ ٱلْحَكِيمُ ٱلْخَبِيرُ ﴿٧٣﴾ سُورَةُ الأَنْعَامِ তিনি যথাযথ ভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন; যখন তিনি বলেন, ‘হও’, তখনই হইয়া যায়; তাঁহার কথাই সত্য; যে-দিন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে সে দিনের কর্তৃত্ব তো তাঁরই; অদৃশ্য ও দৃশ্য সব কিছু সম্বন্ধে তিনি পরিজ্ঞাত; আর তিনিই প্রজ্ঞাময়, সবিশেষ অবহিত। (৭৩) [সূরা আন’আম]
এখানে অদৃশ্য আল্লাহ সৃষ্টির রহস্যের দিকে ইংগিত করেছেন। অদৃশ রহস্যময় আল্লাহর আদেশই সৃষ্টি এটাই পরিস্কার করে ব্যক্ত করেছেন। এবং এই সৃষ্টি এক দিন তাঁর আদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে শিংগায় ফুৎকারের মাধ্যমে তাই উল্লেখ করা হয়েছে। আর তিনি দৃশ্য অদৃশ্য সবকিছুই জানেন।
قُل لَّآ أَمْلِكُ لِنَفْسِى نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ ٱلْغَيْبَ لَٱسْتَكْثَرْتُ مِنَ ٱلْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِىَ ٱلسُّوٓءُۚ إِنْ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ ﴿١٨٨﴾ سُورَةُ الأَعْرَافِ বল, ‘আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত আমার নিজের ভাল-মন্দের উপর আমার কোন অধিকার নাই। আমি যদি অদৃশ্যের খবর জানতাম তবে তো আমি প্রভুত কল্যাণই লাভ করতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করত না। আমি তো শুধু মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা। (১৮৮) [সূরা ‘আরাফ]
আল্লাহ তা’আলা নবী কে লোকদের বলে দিতে বলছেন- আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া নবীর নিজের ভাল-মন্দের উপর কোন অধিকার নেই। নবী অদৃশ্য খবর জানেন না। নবীর প্রধান কাজ সুসংবাদ প্রদান করা ও সতর্ক করা।
أَلَمْ يَعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَىٰهُمْ وَأَنَّ ٱللَّهَ عَلَّٰمُ ٱلْغُيُوبِ ﴿٧٨﴾ سُورَةُ التَّوْبَةِ উহারা কি জানত না যে, উহাদের অন্তরের গোপন কথা ও উহাদের গোপন পরামর্শ আল্লাহ জানেন এবং যা অদৃশ্য তাহাও তিনি বিশেষভাবে জানেন? (৭৮) [সূরা তাওবা]
অদৃশ্য আল্লাহ অন্তরের গোপন কথা জানেন তিনি দৃশ্য অদৃশ্যের জ্ঞাতা।
يَعْتَذِرُونَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْۚ قُل لَّا تَعْتَذِرُوا۟ لَن نُّؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا ٱللَّهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْۚ وَسَيَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُۥ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿٩٤﴾ سُورَةُ التَّوْبَةِ তোমরা উহাদের নিকট ফিরে আসলে উহারা তোমাদের নিকট অজুহাত পেশ করবে; (তখন তোমরা) বলবে, ‘অজুহাত পেশ কর না, আমরা তোমাদের কখনই বিশ্বাস করব না; আল্লাহ আমাদিগকে তোমাদের খবর জানায়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁর রসূলও। অতঃপর, যিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা তাঁর নিকট তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে এবং তিনি, তোমরা যা করতে তা তোমাদেরকে জানাইয়া দিবেন।’ [সূরা তাওবা ৯৪]
অদৃশ্য আল্লাহ মানুষের সকল কর্ম অবজ্ঞত আছেন, আল্লাহ তাঁর রাসূল মার্ফত মুমিনদেরকে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে (ওহী যোগে) মুমিনদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের বিষয় অবগত করান। কিয়ামতের দিন প্রত্যেক মানুষ তাদের রবের নিকট উপস্থিত করান হবে এবং তাদের সমস্ত কর্ম উত্থাপন করা হবে।
وَقُلِ ٱعْمَلُوا۟ فَسَيَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُۥ وَٱلْمُؤْمِنُونَۖ وَسَتُرَدُّونَ إِلَىٰ عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿١٠٥﴾ سُورَةُ التَّوْبَةِ এবং বল, ‘তোমরা কর্ম করতে থাক; আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণও করবে এবং তোমরা প্রত্যবর্তিত হবে অদৃশ ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকট, অতঃপর তিনি তোমরা যা করতে তাহা তোমাদেরকে জানায়ে দিবেন। [সূরা তাওবা ১০৫]
পূর্বের আয়তের অনুরূপ।
وَيَقُولُونَ لَوْلَآ أُنزِلَ عَلَيْهِ ءَايَةٌ مِّن رَّبِّهِۦۖ فَقُلْ إِنَّمَا ٱلْغَيْبُ لِلَّهِ فَٱنتَظِرُوٓا۟ إِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُنتَظِرِينَ ﴿٢٠﴾ سُورَةُ يُونُسَ উহারা বলে, ‘তার প্রতিপালকের নিকট থেকে মু’জিযা নাযিল করা হয় না কেন?’ সুতরাং তুমি বলে দাও- অদৃশ্যের খবর শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন, অতএব তোমরাও প্রতিক্ষায় থাকো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম। [সূরা ইউনুস ২০]
মুজিযার বিষয়ও অদৃশ্য বিষয়। এগুলো অদৃশ্য আল্লাহর ক্ষমতা এটা মানুষের বা নবী ও রাসূলদের ক্ষমতা নয়।
وَلَآ أَقُولُ لَكُمْ عِندِى خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعْلَمُ ٱلْغَيْبَ وَلَآ أَقُولُ إِنِّى مَلَكٌ وَلَآ أَقُولُ لِلَّذِينَ تَزْدَرِىٓ أَعْيُنُكُمْ لَن يُؤْتِيَهُمُ ٱللَّهُ خَيْرًاۖ ٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا فِىٓ أَنفُسِهِمْۖ إِنِّىٓ إِذًا لَّمِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ ﴿٣١﴾ سُورَةُ هُودٍ আর আমি তোমাদের এ কথা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর সকল ভান্ডার রয়েছে, এবং আমি অদৃশ্যের কথা জানি, আর আমি এটাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা, আর যারা তোমাদের চোখে হীন আমি তাদেরকে বলতে পারি না যে, আল্লাহ কখনো তাদেরকে নিয়ামত দান করবেন না; তাদের অন্তরে যা কিছু আছে তা আল্লাহ উত্তম রূপে জানেন, আমি তো এরূপ বললে অন্যায়ই করে ফেলব। [সূরা হুদ ৩১]
উপরোক্ত সূরা আন’আমের ৫৯ নং আয়াতের অনুরূপ।
تِلْكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهَآ إِلَيْكَۖ مَا كُنتَ تَعْلَمُهَآ أَنتَ وَلَا قَوْمُكَ مِن قَبْلِ هَٰذَاۖ فَٱصْبِرْۖ إِنَّ ٱلْعَٰقِبَةَ لِلْمُتَّقِينَ ﴿٤٩﴾ سُورَةُ هُودٍ এটা হচ্ছে অদৃশ্য সংবাদ সমূহের অন্তরভুক্ত, যা আমি তোমার কাছে ওয়াহী মারফত পৌছিয়ে দিচ্ছি, ইতিপূর্বে এটা তুমি না জানতে, আর না তোমার কওম; অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্যই। [সূরা হুদ ৪৯]
অদৃশ্যের সংবাদ আল্লাহর নিকট আছে তিনি ছাড়া এই অদৃশ্যের সংবাদ আর কেহ দিতে পারে না।
وَلِلَّهِ غَيْبُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَإِلَيْهِ يُرْجَعُ ٱلْأَمْرُ كُلُّهُۥ فَٱعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِۚ وَمَا رَبُّكَ بِغَٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ ﴿١٢٣﴾ سُورَةُ هُودٍ আকাশ সমূহ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই, এবং তাঁরই কাছে সবকিছু প্রত্যাবর্তিত হবে। সুতরাং তাঁর ইবাদত কর, এবং তাঁর উপর নির্ভর কর, আর তোমরা যা কর, সে সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালক অনবহিত নহেন। [সূরা হুদ ১২৩]
অদৃশ্য আল্লাহ আকাশ সমূহ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান নিশ্চিত ভাবে রাখেন।
ٱرْجِعُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَبِيكُمْ فَقُولُوا۟ يَٰٓأَبَانَآ إِنَّ ٱبْنَكَ سَرَقَ وَمَا شَهِدْنَآ إِلَّا بِمَا عَلِمْنَا وَمَا كُنَّا لِلْغَيْبِ حَٰفِظِينَ ﴿٨١﴾ سُورَةُ يُوسُفَ তোমরা তোমাদের পিতার নিকট ফিরে যাও এবং বলঃ আমাদের পিতা! আপনার পুত্র চুরি করেছে, এবং আমরা যা জানি তারই প্রত্যক্ষ বিরণ দিলাম, অদৃশ্যের ব্যাপারে আমরা অবহিত ছিলাম না। [সূরা ইউসুফ ৮১]
অদৃশের জ্ঞান মানুষের নাই।
ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَۖ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوٓا۟ أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ ﴿١٠٢﴾ سُورَةُ يُوسُفَ এটা অদৃশ্য লোকের সংবাদ যাহা তোমাকে আমি ওয়াহী দ্বারা অবহিত করছি, ষড়যন্ত্রকালে যখন তারা মতৈক্যে পৌছেছিল তখন তুমি তাদের সাথে ছিলে না। [সূরা ইউসুফ ১০২]
অদৃশ্য আল্লাহ য়ড়যন্ত্র সম্পর্কে জানেন।
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلْكَبِيرُ ٱلْمُتَعَالِ ﴿٩﴾ سُورَةُ الرَّعْدِ যা অদৃশ্য ও যা দৃশ্যমান তিনি তা অবগত; তিনি মহান, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। [সূরা রা’দ-৯]
অদৃশ্য আল্লাহ দৃশ্য ও অদৃশ্য সম্পর্কে জানেন।
وَلِلَّهِ غَيْبُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَمَآ أَمْرُ ٱلسَّاعَةِ إِلَّا كَلَمْحِ ٱلْبَصَرِ أَوْ هُوَ أَقْرَبُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ ﴿٧٧﴾ سُورَةُ النَّحْلِ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই এবং কিয়ামতের ব্যাপার তো চক্ষুর পলকের ন্যায়; বরং ওর চেয়েও সত্বর; আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। [সূরা নাহল- ৭৭]
অদৃশ্য আল্লাহ কিয়ামত সম্পর্কে বললেন।
سَيَقُولُونَ ثَلَٰثَةٌ رَّابِعُهُمْ كَلْبُهُمْ وَيَقُولُونَ خَمْسَةٌ سَادِسُهُمْ كَلْبُهُمْ رَجْمًۢا بِٱلْغَيْبِۖ وَيَقُولُونَ سَبْعَةٌ وَثَامِنُهُمْ كَلْبُهُمْۚ قُل رَّبِّىٓ أَعْلَمُ بِعِدَّتِهِم مَّا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا قَلِيلٌۗ فَلَا تُمَارِ فِيهِمْ إِلَّا مِرَآءً ظَٰهِرًا وَلَا تَسْتَفْتِ فِيهِم مِّنْهُمْ أَحَدًا ﴿٢٢﴾ سُورَةُ الْكَهْفِ অজানা বিষয়ে অনুমানের উপর নির্ভর করে কেউ কেউ বলবেঃ তারা ছিল তিন জন, তাদের চতুর্থটি ছিল তাদের কুকুর; এবং কেউ কেউ বলেঃ তারা ছিল পাঁচজন, তাদের ষষ্টটি ছিল তাদের কুকুর; আর কেউ কেউ বলে, তারা ছিল সাতজন, তাদের অস্টমটি ছিল তাদের কুকুর; বলঃ আমার প্রতিপালকই তাদের সংখ্যা ভাল জানেন; তাদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে; সাধারণ আলোচনা ব্যতীত তুমি তাদের বিষয়ে বিতর্ক করো না এবং তাদের কাউকেও তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করো না। [সূরা কাহাফ- ২২]
অদৃশ্য বিষয়ে মানুষ কেবল অনুমান করেই বলে।
قُلِ ٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثُواۖ لَهُۥ غَيْبُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ أَبْصِرْ بِهِۦ وَأَسْمِعْۚ مَا لَهُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِىٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِى حُكْمِهِۦٓ أَحَدًا ﴿٢٦﴾ سُورَةُ الْكَهْفِ তুমি বলঃ তারা কত কাল ছিল, তা আল্লাহই ভাল জানেন, আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই; তিনি কত সুন্দর দ্র্রষ্টা ও শ্রোতা! তিনি ছাড়া তাদের জন্য কোন অভিভাবক নেই; তিনি কাউকেও নিজ কর্তৃত্বের শরীক করেন না। [সূরা কাহাফ- ২৬]
উপরের আয়াতটির মত এই আয়তটিও।
جَنَّٰتِ عَدْنٍ ٱلَّتِى وَعَدَ ٱلرَّحْمَٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعْدُهُۥ مَأْتِيًّا ﴿٦١﴾ سُورَةُ مَرْيَمَ এটা স্থায়ী জান্নাত, যে অদৃশ্য বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দয়াময় তাঁর বান্দাদেরকে দিয়েছেন; তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয় অবশ্যম্ভাবী। [সূরা মারইয়াম- ১৯]
দয়াময় আল্লাহ মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা অবশ্যম্ভাবী। যেমন- পরকাল, বিচার দিবস, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি; এসব বিষয়ও অদৃশ্য।
أَطَّلَعَ ٱلْغَيْبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَٰنِ عَهْدًا ﴿٧٨﴾ سُورَةُ مَرْيَمَ তুমি কি লক্ষ্য করেছো তাকে, যে আমার আয়াত সমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলেঃ আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি দেয়া হবেই। [৭৭] সে কি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? [৭৮] কখনই নয়! তারা যা বলে, আমি তা লিখে রাখবো এবং তাদের শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকবো। [সূরা মারইয়াম- ৭৯]
উপরোক্ত আয়াত তিনটি নাযিলের প্রক্ষাপট হচ্ছে- হযরত খাব্বাব ইবনু আরত (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “আমি একজন কর্মকার ছিলাম। আ’সইবনু ওয়াইল (সে অমুসলিম কাফির ছিল) আমার কাছে ঋণি ছিল। আমি তাকে তাগাদা করতে গেলে সে বলেঃ ‘আমি তো তোমার ঋণ ঐ পর্যন্ত পরিশোধ করবো না, যে পর্যন্ত না তুমি হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আনুগত্য পরিত্যাগ করবে।’ আমি বললাম, ‘আমি তো এই কুফরী ঐ পর্যন্ত করতে পারবো না, যে পর্যন্ত না তুমি মরে গিয়ে পুনরুজ্জীবিত হবে।’ ঐ কাফির তখন বললো, ‘ঠিক আছে, তাই হলো। যখন আমি মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত হবো, তখন আমি আমার মাল ও সন্তান সন্ততি অবশ্যই প্রাপ্ত হবো। তখন তুমি এসো, তোমার ঋণ পরিশোধ করে দেবো।’ ঐ সময় এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়।” এখানে পরকালের কে কি অবস্থায় থাকবে তা অদৃশ্য ব্যপার বলা হয়েছে। এই কাফির কি পরকালে মাল ও সন্তান সন্ততি পাবে? এ ব্যাপারে সে কিভাবে নিশ্চিত হল? অর্থাৎ সেকি অদৃশ্য ব্যাপরে জানে? না কখনই সে জানে না। দয়াময় আল্লাহ ঐ কাফিরের অদৃশ্য পরিণতির কথা পরবর্তী আয়াতে বর্ণনা করেছেন।
عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ فَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ ﴿٩٢﴾ سُورَةُ المُؤْمِنُون আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে অপর কোন মা’বূদ নেই; যদি থাকতো তবে প্রত্যেক মা’বূদ স্বীয় সৃষ্টি নিয়ে পৃথক হয়ে যেতো এবং একে অপরের উপর প্রাধান্য বিস্তার করতো; তারা যা বলে তা হতে আল্লাহ কত পবিত্র! [৯১] তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার ঊর্ধে। [সূরা মু’মিনূন- ৯২]
উপরোক্ত আয়াত দ্বয়ে খ্রীষ্টানদের কিছু ভ্রান্ত বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। তারা ইসা (আঃ) কে আল্লাহর সন্তান সাব্যস্ত করেছে এবং উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে। এই উক্তি সম্পূর্ণ রূপে মিথ্যা- এ কথাই বলা হয়েছে এবং এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। আর আল্লাহ অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, সর্বপ্রকার শিরক থেকে তিনি বহু উর্দ্ধে।
قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ٱلْغَيْبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ ﴿٦٥﴾ سُورَةُ النَّمْل বল আল্লাহ ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না এবং তারা জানে না তারা কখন পুনরুত্থিত হবে। [সূরা নামল- ৬৫]
আল্লাহ ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান কেউ রাখে না অর্থাৎ মানুষ (মানুষের মধ্যে নবী ও রাসূলগণও আছেন), জ্বীন, মালাইকা এরা কেউই অদৃশ্যের খবর জানে না; এবং তারা এও জানে না যে তারা কখন পুনরুথ্তিত হবে।
ذَٰلِكَ عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ ﴿٦﴾ سُورَةُ السَّجْدَة তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। [সূরা সাজদা- ৬]
অদৃশ্য আল্লাহ দৃশ্য ও অদৃশ্য বিষয়ের পরিজ্ঞাতা, তিনি পরাক্রমশালী, পরম দায়ালু।
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَا تَأْتِينَا ٱلسَّاعَةُۖ قُلْ بَلَىٰ وَرَبِّى لَتَأْتِيَنَّكُمْ عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِۖ لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِى ٱلْأَرْضِ وَلَآ أَصْغَرُ مِن ذَٰلِكَ وَلَآ أَكْبَرُ إِلَّا فِى كِتَٰبٍ مُّبِينٍ ﴿٣﴾ سُورَةُ سَبَإِ কাফিররা বলেঃ আমাদের উপর কিয়ামত আসবে না। বলঃ আসবেই, শপথ আমার প্রতিপালকের নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট ওটা আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু; বরং এর প্রত্যেকটি লিপিবদ্ধ আছে সুস্পষ্ট কিতাবে। [সূরা সাবা- ৩]
কাফিররা বা অস্বীকারকারীরা বলেঃ আমাদের উপর কিয়ামত আসবে না। অদৃশ্য আল্লাহ বলেন- বলে দাও, কিয়ামত অবশ্যই আসবে, এবং আল্লাহর শপথ করে বলা হচ্ছে নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট ওটা আসবে। তার পরেই বলা হচ্ছে, অদৃশ্য আল্লাহ এমন যে, তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু; বরং এর প্রত্যেকটি লিপিবদ্ধ আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ ٱلْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَىٰ مَوْتِهِۦٓ إِلَّا دَآبَّةُ ٱلْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنسَأَتَهُۥۖ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ ٱلْجِنُّ أَن لَّوْ كَانُوا۟ يَعْلَمُونَ ٱلْغَيْبَ مَا لَبِثُوا۟ فِى ٱلْعَذَابِ ٱلْمُهِينِ ﴿١٤﴾ سُورَةُ سَبَإِ যখন আমি সুলাইমান (আঃ)-এর মৃত্যু ঘটালাম তখন জ্বিনদেরকে তার মৃত্যুবিষয় জানালো শুধু মাটির পোকা যা সুলাইমান (আঃ)-এর লাঠি খাচ্ছিল। যখন সুলাইমান (আঃ) পড়ে গেল তখন জ্বিনেরা বুঝতে পারলো যে, তারা যদি অদৃশ্য বিষয় অবগত থাকতো তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। [সূরা সাবা- ১৪]
জ্বীনরা হযরত সুলাইমান (আঃ) এর আদেশে কঠিন কর্মে রত ছিল। সে সময় সুলাইমান (আঃ) লাঠিতে ভর দেয়া অবস্থায় দাঁড়িয়েছিলেন। এমতাবস্থায় সুলাইমান (আঃ) এর মৃত্যু ঘটে। এ ভাবেই সুলাইমান (আঃ) লাঠিতে ভর দেয়া অবস্থায় দাড়িয়ে রইলেন। যখন উই/ঘুন পোকা লাঠিটির কিছু অংশ খেয়ে ফেলল তখন সুলাইমান (আঃ) পরে গেলন এবং কর্মরত জ্বীনরা জানতে পারল সুলাইমান (আঃ) মারাগেছেন। তাই তারা আফসোস করে বলেছিল- আমরা যদি জানতে পারতাম অর্থাৎ আমাদের যদি অদৃশ্য বিষয়ে খবর থাকত তা হলে এই কঠিন পরিশ্রম করতে হত না। সে সময় মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা ছিল যে, “জ্বীনরা অদৃশ্যের খবর জানে।” এই ঘটনা দ্বারা তাদের এই ধারণা- ভ্রান্ত প্রমাণিত হল। অদৃশ্যের খবর আল্লাহ ছাড়া কেহ জানে না।
قُلْ إِنَّ رَبِّى يَقْذِفُ بِٱلْحَقِّ عَلَّٰمُ ٱلْغُيُوبِ ﴿٤٨﴾ سُورَةُ سَبَإِ বলঃ আমার প্রতিপালক সত্য নিক্ষেপ করেন; তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। [সূরা সাবা- ৪৮]
“আল্লাহ তা’আলা সত্য নিক্ষেপ করেন” অর্থ তিনি ওহী পাঠান তার মনোনিত বান্দার নিকট। এখানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু’আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ওহী পাঠানর কথা বলা হচ্ছে। আর আল্লাহ অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞাতা।
وَقَدْ كَفَرُوا۟ بِهِۦ مِن قَبْلُۖ وَيَقْذِفُونَ بِٱلْغَيْبِ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ ﴿٥٣﴾ سُورَةُ سَبَإِ তারা তো পূর্বে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল; তারা দূরবর্তী স্থান হতে অদৃশ্য বিষয়ে বাক্য ছুঁড়ে মারতো। [সূরা সাবা- ৫৩]
এখানে কিয়ামতের দিনে কাফিরদের অবস্থার কথা বলা হয়েছে। দুনিয়াতে তারা আল্লাহ আয়াত বা বাণী অস্বীকার করেছে, দুনিয়ার জীবনে অবস্থান করে পরকালের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে না না অবজ্ঞা সূচক মনগড়া কথা বলেছে, তারই উল্লেখ করা হয়েছে।
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰۚ وَإِن تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَىٰ حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَىْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَىٰٓۗ إِنَّمَا تُنذِرُ ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِٱلْغَيْبِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَمَن تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا يَتَزَكَّىٰ لِنَفْسِهِۦۚ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلْمَصِيرُ ﴿١٨﴾ سُورَةُ فَاطِرٍ কোন বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না, কোন ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি কাউকেও এটা বহন করতে আহ্বান করে তবে তার কিছুই বহন করা হবে না, নিকটাত্মীয় হলেও। তুমি শুধু সতর্ক করতে পার যারা তাদের প্রতিপালককে না দেখে ভয় করে। যে কেউ নিজেকে পরিশোধন করে সে তো পরিশোধন করে নিজেরই কল্যাণের জন্যে। প্রত্যাবর্তন তো আল্লাহর নিকট। [সূরা ফাতির- ১৮]
কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থার সময়, কোন মানুষ অন্য কোন মানুষকে কিছুই সাহায্য করতে পারবে না। সবাই নিজের অবস্থা নিয়ে এত সংঙ্কিত থাকবে যে কাহারও জন্য কিছুই করতে পারবে না। কেহ যদি কাহারও জন্য কিছু করতেও চায় তা সে করতে পারবে না, এমন কি নিকট আত্মীয় হলেও সে করবে না বা করতে পারবে না। আর যে অদৃশ্য আল্লাহকে না দেখে ভয় করে তাকে সতর্ক করতে ও সালাত আদায় করতে বলা হয়েছে। কেহ যদি নিজেকে পরিশোধন করে তা তার নিজের কল্যাণের জন্যই করবে। আর সবাইকে আল্লাহর কাছেই প্রত্যাবর্তন করান হবে।
إِنَّ ٱللَّهَ عَٰلِمُ غَيْبِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿٣٨﴾ سُورَةُ فَاطِرٍ আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় অবগত আছেন। অন্তরে যা রয়েছে সে সম্বন্ধে তিনি সবিশেষ অবহিত। [সূরা ফাতির- ৩৮]
আল্লাহ তা’আলা স্বীয় ব্যাপক ও অসীম জ্ঞানের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তিনি আসমান ও যমীনের সবকিছুই পূর্ণরূপে অবগত রয়েছেন। মানুষের অন্তরের গোপন কথাও তাঁর কাছে পরিস্কার।
إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ ٱتَّبَعَ ٱلذِّكْرَ وَخَشِىَ ٱلرَّحْمَٰنَ بِٱلْغَيْبِۖ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ ﴿١١﴾ سُورَةُ يسۤ তুমি শুধু তাদেরকেই সতর্ক করতে পার যারা উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখে দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তুমি তাদেরকে ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের সংবাদ দাও। [সূরা ইয়াসীন- ১১]
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ তুমি শুধু তাদেরকেই সতর্ক করতে পারবে যারা উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখে দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে এবং এমন স্থানেও তাঁকে ভয় করে যেখানে দেখার কেউই নেই। তারা জানে যে, আল্লাহ তাদের অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তিনি তাদের আমলগুলো দেখতে রয়েছেন। সুতরাং হে নবী (সাঃ)! তুমি এ ধরনের লোকদেরকে পুরস্কারের সুসংবাদ দিয়ে দাও।
قُلِ ٱللَّهُمَّ فَاطِرَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ عَٰلِمَ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ أَنتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِى مَا كَانُوا۟ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ ﴿٤٦﴾ سُورَةُ الزُّمَرِ বলঃ হে আল্লাহ! আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনার বান্দারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করে, আপনি তাদের মধ্যে ওর ফায়সালা করে দিবেন। [সূরা যুমার- ৪৬]
মুশরিকদের যে তাওহীদের প্রতি ঘৃণা এবং শিরকের প্রতি ভালবাসা রয়েছে তা বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা স্বীয় নবী (সাঃ)- কে বলছেনঃ তুমি শুধু এক আল্লাহকেই ডাকতে থাকো যিনি আসমান ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা এবং এগুলো তিনি ঐ সময় সৃষ্টি করেছেন যখন এগুলোর না কোন অস্তিত্ব ছিল এবং না এগুলোর কোন নমুনা ছিল। তিনি প্রকাশ্য ও গোপনীয় এবং উদ্ঘাটিত ও লুক্কায়িত সবই জানেন। এসব লোক যেসব বিষয় নিয়ে মতবিরোধ করছে তার ফায়সালা ঐ দিন হয়ে যাবে যেদিন তারা কবর হতে বের হয়ে হাশরের ময়দানে আসবে।
إِنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَٱللَّهُ بَصِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴿١٨﴾ سُورَةُ الْحُجْرَاتِ আল্লাহ আকশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। তোমরা যা কর তা দেখেন। [সূরা হুজরাত- ১৮]
আল্লাহ দৃশ্য ও অদৃশ্য সম্পর্কে অবগত আছেন- মানুষ যা করে তিনি তা পূর্ণরূপে অবগত আছেন।
مَّنْ خَشِىَ ٱلرَّحْمَٰنَ بِٱلْغَيْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِيبٍ ﴿٣٣﴾ سُورَةُ قۤ যারা না দেখে (আদৃশ্য) আল্লাহকে ভয় করে এবং বিনীত চিত্তে উপস্থিত হয়- [সূরা ক্বফ- ৩৩]
মাহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যারা না দেখে অর্থাৎ অদৃশ্য দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে এবং বিনীত চিত্তে উপস্থিত হয় তাদেরকে বলা হবেঃ শান্তির সাথে ওতে অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ কর। আল্লাহর সমস্ত শাস্তি হতে তোমরা নিরাপত্তা লাভ করলে। আর ভাবার্থ এও হবে যে, ফিরিশতারা তাদেরকে সালাম করবেন।
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ ﴿٤١﴾ سُورَةُ الطُّورِ না কি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লিখে? [সূরা তূর- ৪১]
অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ স্বীয় নবী (সাঃ) কে বলছেনঃ হে নবী (সাঃ)! তবে কি তুমি তোমার তাবলীগী কাজের উপর তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যা তাদের উপর ভারী হচ্ছ? অর্থাৎ নবী (সাঃ) তো তাঁর তাবলীগী কাজের উপর কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছেন না! তাহলে তাদের কাছে তাঁর আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে দেয়াতে তাদের অসন্তুষ্ট হবার কারণ কি? না কি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লিখে? না, না, যমীন ও আসমানের সমস্ত সৃষ্টজীবের মধ্যে কেউই অদৃশ্যের খবর রাখে না। এই লোকগুলো আল্লাহর দ্বীন এবং আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে আজে-বাজে কথা বলে স্বয়ং রাসূল (সাঃ)-কে, মুমিনদেরকে এবং সাধারণ লোকদেরকে প্রতারিত করতে চায়। কাফিরদের এটা জেনে রাখা উচিত যে, পরিণাম তারাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার।
أَعِندَهُۥ عِلْمُ ٱلْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰٓ ﴿٣٥﴾ سُورَةُ النَّجْمِ তার কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, সে জানবে? [সূরা নাজ্ম- ৩৫]
মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘তার কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, সে জানবে?’ অর্থাৎ সে কি জানবে যে, যদি সে আল্লাহর পথে খরচ করে তবে সে রিক্ত হস্ত হয়ে যাবে? আসলে তা নয়, বরং সে লোভ-লালসা, কার্পণ্য, স্বার্থপরতা এবং সংকীর্ণমনার কারণেই দান-খায়রাত করা হতে বিরত থাকছে।
لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌ ﴿٢٥﴾ سُورَةُ الحَدِيدِ নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও ন্যায়-নীতি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি লৌহও দিয়েছি যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি ও রয়েছে বহুবিধ কল্যাণ; এটা এই জন্য যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দিবেন কে প্রত্যক্ষ না করেও (অদৃশ্য) তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী। [সূরা হাদীদ- ২৫]
এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা এই জন্য যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দিবেন কে প্রত্যক্ষ না করেও অর্থাৎ অদৃশ্য অবস্থায় তাঁকে (আল্লাহকে) ও তাঁর রাসূল (সাঃ)-কে সাহায্য করে। অর্থাৎ এই অস্ত্র-শস্ত্রগুলো উঠিয়ে নেক নিয়তে কে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ)-কে সাহায্য করতে চায় তা আল্লাহ পরীক্ষা করতে চান। আল্লাহ তো সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী।
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِۖ هُوَ ٱلرَّحْمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ﴿٢٢﴾ سُورَةُ الحَشْرِ তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই, তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। [সূরা হাশর- ২২]
এরপর ইরশাদ হচ্ছেঃ আল্লাহ ছাড়া কোন পালকর্তা নাই, তাঁর সত্তা ছাড়া এমন কোন সত্তা নাই যে, কেউ তার কোন প্রকারের ইবাদত করতে পারে। আল্লাহ ছাড়া মানুষ যাদের ইবাদত করে সেগুলো সবই বাতিল। তিনি সারা বিশ্বের দৃশ্যের ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব কিছুই তাঁর কাছে পূর্ণভাবে প্রকাশমান। তিনি এমন বড় ও প্রশস্ত রহমতের অধিকারী যে, তাঁর রহমত সমস্ত মাখলূকের উপর পূর্ণভাবে বিদ্যমান রয়েছে। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতের রহমানও বটে এবং রাহীমও বটে।
قُلْ إِنَّ ٱلْمَوْتَ ٱلَّذِى تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُۥ مُلَٰقِيكُمْۖ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿٨﴾ سُورَةُ الجُمُعَةِ বলঃ তোমরা যে মৃত্যু হতে পালায়ন কর সেই মৃত্যুর সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই। অতঃপর তোমরা প্রত্যানীত হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহর নিকট এবং তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে যা তোমরা করতে। [সূরা জুমু’আ- ৮]
আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলার উক্তিঃ ‘বলঃ (হে মুহাম্মাদ সাঃ)! তোমরা যে মৃত্যু হতে পলায়ন কর সেই মৃত্যুর সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই। অতঃপর তোমরা প্রত্যানীত হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহর নিকট এবং তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে যা তোমরা করতে।’
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ﴿١٨﴾ سُورَةُ التَّغَابُنِ তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [সূরা তাগাবুন- ১৮]
পূর্বে আয়াতগুলির মত এখানেও আল্লাহ তা’আল বলেন- তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِٱلْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ ﴿١٢﴾ سُورَةُ المُلْكِ যারা দৃষ্টির আগোচরে তাদের প্রতিপালককে ভয় করে তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। [সূরা মূলক- ১২]
আল্লাহ ঐ লোকদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন যারা তাদের অদৃশ্য প্রতিপালকের সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়া সম্পর্কে ভয় করে। যদিও তারা নির্জনে অবস্থান করে, যেখানে কারো দৃষ্টি পড়বে না, তথাপিও তারা আল্লাহর ভয়ে তাঁর অবাধ্যতমূলক কাজ করে না এবং তাঁর আনুগত্য ও ইবাদত হতে বিমুখ হয় না।
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ ﴿١٢﴾ سُورَةُ القَلَمِ তাদের কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, তারা লিখে রাখে! [সূরা কলম- ১২]
এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সাঃ)! তুমি তো তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছ না যা তাদের উপর খুবই ভারী বোধ হচ্ছে? যার ভার বহন করতে তারা একেবারে ঝুঁকে পড়ছে? তাদের কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, তারা তা লিখে রাখে! এ দুটি বাক্যের তাফসীর সূরা তুরে বর্ণিত হয়েছে। ভাবার্থ হচ্ছেঃ হে নবী (সাঃ)! তাদের কাছে তো তুমি এর বিনিময়ে কোন ধন-সম্পদ যাচ্ঞা করছো না! পুণ্য লাভ করা ছাড়া তোমার তো অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই! তথাপিও এ লোকগুলো তোমাকে অবিশ্বাস করতে রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে তাদের অজ্ঞতা ও ঔদ্ধত্যপনা।
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِۦٓ أَحَدًا ﴿٢٦﴾ سُورَةُ الجِنِّ তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো নিকট প্রকাশ করেন না, [সূরা জ্বিন- ২৬]
এরপর আল্লাহ পাক বলেনঃ আল্লাহ অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো নিকট প্রাকাশ করেন না, তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত। যেমন- আল্লাহ তা’আলার উক্তিঃ- “তিনি যেমন ইচ্ছা করেন তদ্ব্যতীত তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত্ব করতে পারে না।” [সূরা বাকারা- ২৫৫]
وَمَا هُوَ عَلَى ٱلْغَيْبِ بِضَنِينٍ ﴿٢٤﴾ سُورَةُ التَّكْوِيرِ সে (রসূল সাল্লাল্লাহু’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে কৃপণ নয়। [সূরা তাকভীর- ২৪]
এই সূরা মি’রাজের পরে অবতীর্ণ হয়েছে “بِضَنِين” অন্য কিরআতে “بِظَنِين” রয়েছে, অর্থাৎ তাঁর প্রতি কোন অপবাদ নেই। আর “ض” দিয়ে পড়লে অর্থ হবেঃ তিনি কৃপণ বা বখীল নন, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে গায়েব বা অদৃশ্যের কথা তাঁকে অবহিত করা হলে তিনি তা যথাযথভাবে পৌঁছিয়ে দেন। এই দুইটি কিরাআতই বিশুদ্ধ ও সুপ্রসিদ্ধ। সুতরাং জিবরাঈল (আঃ) বার্তাবহ হিসেবে বার্তা পৌঁছাতে কোন প্রকার ঘাটতি রাখেননি বা কোন প্রকারের অপবাদও আরোপ করেননি।
উপরের আলোচনা থেকে এটা পরিস্কার বুঝা যায় যে, আল্লাহ তিনি এমন এক অস্তিত্ব যিনি অসীম জ্ঞানের অধিকারী, তিনি আকাশ ও জমিনে যা কিছু আছে সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, তিনি এমন যে, তিনি অনু পরিমান বা তার চেয়ে অতি ক্ষুদ্র বা বৃহৎ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তাঁর জ্ঞানের বাহিরে কিছু নাই, এ সবকিছু সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ করা আছে, তিনি নিজে অদৃশ্য, তিনি অদৃশ্য বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন, মানুষ সাভবিক প্রক্রিয়া ছাড়া অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে কিছু জানে না, যেমন- আলো ছাড়া মানুষ কিছু দেখতে পারে না, চোখের ও শ্রবণশক্তির নাগালের বাহিরে বা পর্দার আরালে কোন কিছু দেখতে পারে না বা বুঝতে পারে না, মানুষ অন্যের অন্তরের কথা জানে না, মানুষ নিশ্চিত ভাবে ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা জানে না এমন অনেক বিষয় মানুষ জানে না। তবে যন্ত্র-পাতি ব্যহার করে পর্দা ভেদ করে এক ধরণের রস্মী অথবা শব্দ তরঙ্গ প্রেরণ করে মানুষ পর্দার আরালের বস্তুকে দেখতে পারে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত, বর্তমানে বৈদ্যুতিকচুম্বকিয় তরঙ্গ ব্যবাহার করে বা ইন্টারনেট ব্যবাহার করে বহু দূরবর্তী স্থানের দৃশ্য ও শব্দ দেখা ও শুনা যায় এগুলোও সাভাবিক প্রক্রিয়া। মহান আল্লাহ তা’আলা এমন বহু সাভাবিক প্রক্রিয়া মানুষের জন্য রেখেছেন যা মানুষ এখনও আবিস্কার করতে পারে নাই। তবে এমন কিছু বিষয় আছে যা মানুষ কখনো নিজের জ্ঞানের আয়ত্তে আনতে পারবে না, এটা আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা। যেমন- আল্লাহ তাঁর নিজের সম্পর্কে যা বলেছেন- তিনি একক, তিনি অতুলনিয় অর্থাৎ এমন কোন অস্তিত্ব নাই যার সাথে তাঁর তুলনা করা যায়, তাঁর মত কোন কিছু নাই, তিনি দেখেন (দৃশ্য অদৃশ্য সবকিছু দেখেন)- তাহলে বুঝা যায় তার চোখ আছে অর্থাৎ দর্শণ করার ব্যবস্থা আছে তা অন্য কাহারও মত নয় তা শুধু তাঁর মত, তিনি শুনেন (তিনি নাগালের মধ্যে ও নাগালের বাহিরের সবকিছু শুনেন)- তাহলে বুঝা যায় তার কান আছে অর্থাৎ তার শুনার ব্যবস্থা আছে তা অন্য কাহারও মত নয় তা শুধু তাঁর মত, তিনি নিজ হাত দ্বারা আদমকে সৃষ্টি করেছেন- এতে বুঝা যায় তার হাত আছে তা অন্য কাহারও মত নয় তা শুধু তাঁর মতই, জাহান্নামকে শান্ত করার জন্য তিনি নিজ পা জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন এতে জাহান্নাম বলবে যথেষ্ট হয়েছে- এতে বুঝা যায় তার পা আছে তাঁর পা অন্য কাহারও মত নয় তাঁর পা শুধু তারই মত, তিনি আরসে আযিমে সমুন্নত আছেন, আল্লাহ চিরস্থায়ী, চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত, কিয়ামত বা এই মহা বিশ্ব কখন ধ্বংস হবে? মানুষের ভাগ্যসহ সকল সৃষ্টির পরিণতি, পরকাল, শেষ বিচার দিবস, পুরস্কার হিসাবে জান্নাত, শাস্তি হিসাবে জাহান্নাম, আলমে বার্যাখ, সরিয়াতের এমন সব বিধি-বিধান বিশেষ করে ইবাদতের মধ্যে তাইমুম ও মাছে করার নিয়ম কানুন যা বিধিবব্ধ করা আছে এমন বেশ কিছু বিষয় আছে যা মানুষ কখন নিজ জ্ঞানের আওতায় আনতে পরবে না এগুলো প্রকৃত অদৃশ্য বিষয়।
প্রকৃত অদৃশ্য বিষয় শুধু বিশ্বাস করতে হয়। অদৃশ্য বিষয়ের উপর যুক্তি কোন কাজ করে না কারণ অদৃশ্য বিষয়ের উপর যুক্তি প্রদর্শণের জ্ঞান মানুষের নাই। এখানে একটাই যুক্তি অসীম জ্ঞান মানুষের নাই, তা শুধু স্রষ্টারই আছে তিনি যা বলেন তা কেবল বিশ্বাসই করতে হয়।
দ্বীন ইসলামের সমস্ত কিছুই এসেছে ‘আলিমুল গাইব মহান স্রষ্টা মহা ক্ষমতাধর আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার পক্ষ থেকে। তাই দ্বীন ইসলামের উসূল বা মূল কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে সহীহ সুন্নাহ। এক্ষেত্রে উসূলুদদ্বীন, তিন মূল নীতি ও কিতাবুত তাওহীদ উল্লেখযোগ্য। এখানে শুধু উসূলুদদ্বীন, তিন মূল নীতি ও কিতাবুত তাওহীদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে লিংক দেয়া হল। আর কুরআন ও সহীহ হাদীস অধ্যায়েনর জন্য মোবাইল এ্যপস Al Quran (Tafsir & by word), Al Hadith, কুরআন মাজিদ, উল্লেখ যোগ্য। এ ছাড়াও তাওহীদ পাবলিকেশন মোবাইল ফোন নং +8801711646396, হাদীস ফাউণ্ডেশন মোবাইল ফোন নং +8801770800900, ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরী মোবাইল ফোন নং +8801730934325 থেকে প্রকাশিত কিতাব থেকে দ্বীন ইসলামের সহীহ পুস্তক পাওয়া যায়। দাওয়াহ ওয়া তবলীগ কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে ১ম ২য় ৩য় স্থান অধিকার করলেও বিশেষ পুরস্কার হিসাবে মূল্যবার কিতাব পাবেন আর পাস করলে সাধারণ পুরস্কার পাবেন।
১। উসূলুদদ্বীন বা দ্বীনের মূল ২। তিন মূল নীতি ৩। কিতাবুত তাওহীদ
সৃষ্টিরাজি বা সৃষ্টি জগৎ পর্যবেক্ষণ করে মানুষ যে জ্ঞান আরোহণ করেছে সেগুলো মোটামোটি = ১। পদার্থ বিজ্ঞান ২। রসায়ন বিজ্ঞান ৩। জীব বিজ্ঞান ৪। গণিত বিজ্ঞান ৫। সমাজ বিজ্ঞান ৬। রাষ্ট্র বিজ্ঞান ৭। ভূ-বিজ্ঞান ৮। মহাবিশ্ব বা মহাকাশ বা মহাজাগতিক বিজ্ঞান ৯। কলা বা শীল্প তা চাই কথায়, লিখায় ও অঙ্গভঙ্গিতে, বস্তুতে বা অঙ্কনে বিজ্ঞান ১০। দর্শন ও যুক্তি বিদ্যা। এগুলো সম্পর্কে প্রথমেই চুম্বক আলোচনা করা হয়েছে। বিষয় ভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা ও শিক্ষাগ্রহণ করতে বাস্তব অনুশীলন ও পড়াশুনা দরকার। এখানে কেবল ১। পদার্থ বিজ্ঞান ২। রসায়ন বিজ্ঞান ৩। জীব বিজ্ঞান ৪। গণিত বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রথমিক পরিচিতি মূলক আলোচনা করা হয়েছে। নিচে লিংক দেয়া হল।
১। পদার্থ বিজ্ঞান ২। রসায়ন বিজ্ঞান ৩। জীব বিজ্ঞান ৩। গণিত বিজ্ঞান
Khasru says:
নিজাম উদ্দিন সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানা দরকার। মাওঃ সাদ কান্দলভী সম্পর্কে এবং দেওবন্দ সম্পর্ক আপনাদের মূল্যবান মতামত আমার জানা দরকার। বাংলাদেশে নিজাম উদ্দিনের বিপরীতে কোন আমীর আছেন কি না ? । বাংলাদেশ থেকে আলমী মারকার পরিচালনার সবকিছু ঠিক ঠাক হয়েছে কি না ? জানালে বাধিত হব -০১৭১০৬৮৪৩৩৪
Md Shamsul Alam says:
আমি নিজাম উদ্দিন সম্পর্কে ভালভাবে অবগত নই। মাওঃ সাদ কান্দালভী সম্পর্কেও ভালভাবে অবগত নই। দেওবন্দ মার্কাজম ও ব্রলভি মার্কাজ অনেক অবদান আছে কিন্তু এ মার্কাজ মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত কারার বিপরীতে বিদাত ও শিরকী প্রতিরোধে মোটেও কোন অবাদান রাখে নাই বরং এর বিপরীতে এর গুরুত্বপূর্ণ আকাবীগণ বিদাত ও শিকরকে প্রোমোট করে অনেক কিতাব রচনা করেছেন। এরা মাজহাবী ফিরকাবন্দি বা দলাদলিকে প্রোমোট করে। তাই এসব মার্কাজগুলোকে বিদাত ও শিরিক বিদূরিদত করে কুরআন ও সুন্নাহর অনুকূলের সংশোধন হওয়া জরুরী। এবং কুরআন ও সুন্নাহার অনুকুলের শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে মাজহাবী ফিরকাবন্দি সহ সকল প্রাকার ফিরকাবন্দি দূর করতে হবে। তা নাহলে এসব মার্কাজ পরিত্যাগ করা জরুরী।
বাংলাদেশেও তেমন কোন সুন্দর পরিপূর্ণ মার্কাজ এখনও গড়ে উঠে নাই। এদেশে অধিকাংশ মানুষ হানাফি বলে দাবী করলেও ইমাম আবূ হানিফার আকিদা মানহাজ পরিত্যাগ করে বিদাতী ও শিরকী সংশ্লিষ্ট আকিদা গ্রহণ করে চলেছে। সম্ভবত ভারতবর্ষ দীর্ঘকাল শীয়া শাসীত হওয়ার কারণে এবং বিজাতীয় ইংরাজ শাসনও এই শীয়ইজম ও কাদীয়ানী আহম্মাদীয়াদেরকে প্রমোট করার কারণে ইমাম আবূ হানীফার আকিদা পরিত্যাগ করে এবং ভ্রান্ত আকিদা ও মানহাজ গ্রহণ করে শক্ত ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করেছে।