Dawah wa Tablig Islamic Website

Help Line = Mob no. +8801783385346 :: Email Address = shalampb@gmail.com || To see the Arabic (Saudi Print) correctly use "Mozilla Firefox" Browser.

Sura An-Nur to Sura An-Namal

সূচী-পত্রে ফিরে যাও

24 নং সূরা – আন-নূর – اَلنُّور

মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 64
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

01 – নূর
سُورَةٌ أَنزَلْنَٰهَا وَفَرَضْنَٰهَا وَأَنزَلْنَا فِيهَآ ءَايَٰتٍۭ بَيِّنَٰتٍ لَّعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
টি একটি সূরা, এটি আমি অবতীর্ণ করেছি এবং এর বিধানকে অবশ্য পালনীয় করেছি, এতে আমি অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
02 – নূর
ٱلزَّانِيَةُ وَٱلزَّانِى فَٱجْلِدُواۡ كُلَّ وَٰحِدٍ مِّنْهُمَا مِاۡئَةَ جَلْدَةٍۖ وَلَا تَأْخُذْكُم بِهِمَا رَأْفَةٌ فِى دِينِ ٱللَّهِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْءَاخِرِۖ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَآئِفَةٌ مِّنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
যভিচারিণী ও ব্যভিচারী – নারী ও পুরুষ প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে, আল্লাহর বিধান কার্যকরী করতে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী হও; মু’মিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
03 – নূর
ٱلزَّانِى لَا يَنكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَٱلزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَآ إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌۚ وَحُرِّمَ ذَٰلِكَ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ
যভিচারী ব্যভিচারিনী অথবা মুশরিক নারীকে ব্যতীত বিয়ে করেনা এবং ব্যভিচারিনীকে ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ব্যতীত কেহ বিয়ে করেনা, মু’মিনদের জন্য এদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
04 – নূর
وَٱلَّذِينَ يَرْمُونَ ٱلْمُحْصَنَٰتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُواۡ بِأَرْبَعَةِ شُهَدَآءَ فَٱجْلِدُوهُمْ ثَمَٰنِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُواۡ لَهُمْ شَهَٰدَةً أَبَدًاۚ وَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَٰسِقُونَ
ারা সতী-সাধ্বী রমনীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং চারজন সাক্ষী হাজির করেনা, তাদেরকে আশিটি কশাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেনা; তারাই সত্যত্যাগী।
05 – নূর
إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُواۡ مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُواۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
বে যদি এরপর তারা তাওবাহ করে ও নিজেদেরকে সংশোধন করে, আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
06 – নূর
وَٱلَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَٰجَهُمْ وَلَمْ يَكُن لَّهُمْ شُهَدَآءُ إِلَّآ أَنفُسُهُمْ فَشَهَٰدَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ شَهَٰدَٰتٍۭ بِٱللَّهِۙ إِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
বং যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে আল্লাহর নামে চার বার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী।
07 – নূর
وَٱلْخَٰمِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ ٱللَّهِ عَلَيْهِ إِن كَانَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
র পঞ্চম বারে বলবে যে, সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তাহলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহর লা’নত।
08 – নূর
وَيَدْرَؤُاۡ عَنْهَا ٱلْعَذَابَ أَن تَشْهَدَ أَرْبَعَ شَهَٰدَٰتٍۭ بِٱللَّهِۙ إِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
বে স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চার বার আল্লাহর নামে শপথ করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী।
09 – নূর
وَٱلْخَٰمِسَةَ أَنَّ غَضَبَ ٱللَّهِ عَلَيْهَآ إِن كَانَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
র পঞ্চমবারে বলবে যে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব।
10 – নূর
وَلَوْلَا فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُۥ وَأَنَّ ٱللَّهَ تَوَّابٌ حَكِيمٌ
তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেহই অব্যাহতি পেতেনা; এবং আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী ও প্রজ্ঞাময়।
11 – নূর
إِنَّ ٱلَّذِينَ جَآءُو بِٱلْإِفْكِ عُصْبَةٌ مِّنكُمْۚ لَا تَحْسَبُوهُ شَرًّا لَّكُمۖ بَلْ هُوَ خَيْرٌ لَّكُمْۚ لِكُلِّ ٱمْرِئٍ مِّنْهُم مَّا ٱكْتَسَبَ مِنَ ٱلْإِثْمِۚ وَٱلَّذِى تَوَلَّىٰ كِبْرَهُۥ مِنْهُمْ لَهُۥ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যারা এই অপবাদ রচনা করেছে তারাতো তোমাদেরই একটি দল; এটাকে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করনা; বরং এটাতো তোমাদের জন্য কল্যাণকর; তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে তাদের কৃত পাপ কাজের ফল, এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
12 – নূর
لَّوْلَآ إِذْ سَمِعْتُمُوهُ ظَنَّ ٱلْمُؤْمِنُونَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتُ بِأَنفُسِهِمْ خَيْرًا وَقَالُواۡ هَٰذَآ إِفْكٌ مُّبِينٌ
এ কথা শোনার পর মু’মিন পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের লোক সম্পর্কে উত্তম ধারনা করেনি এবং বলেনিঃ এটাতো সুস্পষ্ট অপবাদ?
13 – নূর
لَّوْلَا جَآءُو عَلَيْهِ بِأَرْبَعَةِ شُهَدَآءَۚ فَإِذْ لَمْ يَأْتُواۡ بِٱلشُّهَدَآءِ فَأُوۡلَٰٓئِكَ عِندَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلْكَٰذِبُونَ
তারা কেন এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী হাযির করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী হাযির করেনি, সেই কারণে তারা আল্লাহর বিধানে মিথ্যাবাদী।
14 – নূর
وَلَوْلَا فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُۥ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِ لَمَسَّكُمْ فِى مَآ أَفَضْتُمْ فِيهِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে, তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে তজ্জন্য কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করত।
15 – নূর
إِذْ تَلَقَّوْنَهُۥ بِأَلْسِنَتِكُمْ وَتَقُولُونَ بِأَفْوَاهِكُم مَّا لَيْسَ لَكُم بِهِۦ عِلْمٌ وَتَحْسَبُونَهُۥ هَيِّنًا وَهُوَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمٌ
যখন তোমরা লোকমুখে এটা ছড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করছিলে যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিলনা এবং তোমরা একে তুচ্ছ গন্য করেছিলে, যদিও আল্লাহর নিকট ছিল এটা গুরুতর বিষয়।
16 – নূর
وَلَوْلَآ إِذْ سَمِعْتُمُوهُ قُلْتُم مَّا يَكُونُ لَنَآ أَن نَّتَكَلَّمَ بِهَٰذَا سُبْحَٰنَكَ هَٰذَا بُهْتَٰنٌ عَظِيمٌ
এবং তোমরা যখন এটা শ্রবণ করলে তখন কেন বললেনাঃ এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের উচিৎ নয়; আল্লাহ পবিত্র, মহান! এটাতো এক গুরুতর অপবাদ।
17 – নূর
يَعِظُكُمُ ٱللَّهُ أَن تَعُودُواۡ لِمِثْلِهِۦٓ أَبَدًا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেনঃ তোমরা যদি মু’মিন হও তাহলে কখনও অনুরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করনা।
18 – নূর
وَيُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
19 – নূর
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلْفَٰحِشَةُ فِى ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জাননা।
20 – নূর
وَلَوْلَا فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُۥ وَأَنَّ ٱللَّهَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেহই অব্যাহতি পেতেনা, এবং আল্লাহ দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।
21 – নূর
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَتَّبِعُواۡ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَٰنِۚ وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَٰنِ فَإِنَّهُۥ يَأْمُرُ بِٱلْفَحْشَآءِ وَٱلْمُنكَرِۚ وَلَوْلَا فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُۥ مَا زَكَىٰ مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يُزَكِّى مَن يَشَآءُۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমরা শাইতানের পদাংক অনুসরণ করনা; কেহ শাইতানের পদাংক অনুসরণ করলে শাইতানতো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়; আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ না থাকলে তোমাদের কেহই কখনও পবিত্র হতে পারতেনা, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন, এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
22 – নূর
وَلَا يَأْتَلِ أُوۡلُواۡ ٱلْفَضْلِ مِنكُمْ وَٱلسَّعَةِ أَن يُؤْتُوٓاۡ أُوۡلِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْمَسَٰكِينَ وَٱلْمُهَٰجِرِينَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِۖ وَلْيَعْفُواۡ وَلْيَصْفَحُوٓاۡۗ أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ لَكُمْۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তদেরকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদেরকে কিছুই দিবেনা। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
23 – নূর
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَرْمُونَ ٱلْمُحْصَنَٰتِ ٱلْغَٰفِلَٰتِ ٱلْمُؤْمِنَٰتِ لُعِنُواۡ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।
24 – নূর
يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم بِمَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
যেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে তাদের জিহবা, তাদের হাত এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে –
25 – নূর
يَوْمَئِذٍ يُوَفِّيهِمُ ٱللَّهُ دِينَهُمُ ٱلْحَقَّ وَيَعْلَمُونَ أَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْحَقُّ ٱلْمُبِينُ
সেদিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্ত প্রতিফল পুরোপুরি দিবেন এবং তারা জানবে যে, আল্লাহই সত্য, স্পষ্ট প্রকাশক।
26 – নূর
ٱلْخَبِيثَٰتُ لِلْخَبِيثِينَ وَٱلْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَٰتِۖ وَٱلطَّيِّبَٰتُ لِلطَّيِّبِينَ وَٱلطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَٰتِۚ أُوۡلَٰٓئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য; দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য। লোকে যা বলে এরা তা থেকে পবিত্র; এদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা।
27 – নূর
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَدْخُلُواۡ بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُواۡ وَتُسَلِّمُواۡ عَلَىٰٓ أَهْلِهَاۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে প্রবেশ করনা; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
28 – নূর
فَإِن لَّمْ تَجِدُواۡ فِيهَآ أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّىٰ يُؤْذَنَ لَكُمْۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ٱرْجِعُواۡ فَٱرْجِعُواۡۖ هُوَ أَزْكَىٰ لَكُمْۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
যদি তোমরা গৃহে কেহকে না পাও তাহলে তাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়। যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তাহলে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।
29 – নূর
لَّيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَدْخُلُواۡ بُيُوتًا غَيْرَ مَسْكُونَةٍ فِيهَا مَتَٰعٌ لَّكُمْۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ
যে গৃহে কেহ বাস করেনা তাতে তোমাদের জন্য দ্রব্য সামগ্রী থাকলে সেখানে তোমাদের প্রবেশে কোনো পাপ নেই এবং আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর এবং যা তোমরা গোপন কর।
30 – নূর
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّواۡ مِنْ أَبْصَٰرِهِمْ وَيَحْفَظُواۡ فُرُوجَهُمْۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْۗ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا يَصْنَعُونَ
মু’মিনদেরকে বলঃ তারা যেন দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। এতে তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে; তারা যা করে সেই বিষয়ে আল্লাহ অবহিত।
31 – নূর
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَٰرِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَاۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ ءَابَآئِهِنَّ أَوْ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَآئِهِنَّ أَوْ أَبْنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوْ نِسَآئِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيْرِ أُوۡلِى ٱلْإِرْبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفْلِ ٱلَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُواۡ عَلَىٰ عَوْرَٰتِ ٱلنِّسَآءِۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّۚ وَتُوبُوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
ঈমান আনয়নকারিনী নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশে সজোরে পদক্ষেপ না ফেলে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
32 – নূর
وَأَنكِحُواۡ ٱلْأَيَٰمَىٰ مِنكُمْ وَٱلصَّٰلِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَآئِكُمْۚ إِن يَكُونُواۡ فُقَرَآءَ يُغْنِهِمُ ٱللَّهُ مِن فَضْلِهِۦۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌ
তোমাদের মধ্যে যারা ‘‘আইয়িম’’ (বিপত্নীক পুরুষ বা বিধবা মহিলা) তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন; আল্লাহতো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
33 – নূর
وَلْيَسْتَعْفِفِ ٱلَّذِينَ لَا يَجِدُونَ نِكَاحًا حَتَّىٰ يُغْنِيَهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضْلِهِۦۗ وَٱلَّذِينَ يَبْتَغُونَ ٱلْكِتَٰبَ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْ فَكَاتِبُوهُمْ إِنْ عَلِمْتُمْ فِيهِمْ خَيْرًاۖ وَءَاتُوهُم مِّن مَّالِ ٱللَّهِ ٱلَّذِىٓ ءَاتَىٰكُمْۚ وَلَا تُكْرِهُواۡ فَتَيَٰتِكُمْ عَلَى ٱلْبِغَآءِ إِنْ أَرَدْنَ تَحَصُّنًا لِّتَبْتَغُواۡ عَرَضَ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۚ وَمَن يُكْرِههُّنَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ مِنۢ بَعْدِ إِكْرَٰهِهِنَّ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাসদাসীদের মধ্যে কেহ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চাইলে তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে মঙ্গলের সন্ধান পাও; আল্লাহ তোমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন তা হতে তোমরা তাদেরকে দান করবে। তোমাদের দাসীরা সততা রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিণী হতে বাধ্য করনা, আর যে তাদেরকে বাধ্য করে, সেরূপ ক্ষেত্রে তাদের উপর যবরদস্তির পর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
34 – নূর
وَلَقَدْ أَنزَلْنَآ إِلَيْكُمْ ءَايَٰتٍ مُّبَيِّنَٰتٍ وَمَثَلًا مِّنَ ٱلَّذِينَ خَلَوْاۡ مِن قَبْلِكُمْ وَمَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِينَ
আমি তোমাদের নিকট অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াত, তোমাদের পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ত এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ।
35 – নূর
ٱللَّهُ نُورُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ مَثَلُ نُورِهِۦ كَمِشْكَوٰةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌۖ ٱلْمِصْبَاحُ فِى زُجَاجَةٍۖ ٱلزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّىٌّ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍ مُّبَٰرَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لَّا شَرْقِيَّةٍ وَلَا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِىٓءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌۚ نُّورٌ عَلَىٰ نُورٍۗ يَهْدِى ٱللَّهُ لِنُورِهِۦ مَن يَشَآءُۚ وَيَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْأَمْثَٰلَ لِلنَّاسِۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উপমা যেন একটি দীপাধার, যার মধ্যে আছে একটি প্রদীপ; প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ; এটা প্রজ্জ্বলিত করা হয় পুতঃপবিত্র যাইতূন বৃক্ষের তেল দ্বারা যা প্রাচ্যের নয়, প্রতিচ্যেরও নয়, আগুন ওকে স্পর্শ না করলেও যেন ওর তেল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; জ্যোতির উপর জ্যোতি! আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ নির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে; আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
36 – নূর
فِى بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيهَا ٱسْمُهُۥ يُسَبِّحُ لَهُۥ فِيهَا بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْءَاصَالِ
সেই সব গৃহ, যাকে মর্যাদায় সমুন্নত করতে এবং যাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।
37 – নূর
رِجَالٌ لَّا تُلْهِيهِمْ تِجَٰرَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَن ذِكْرِ ٱللَّهِ وَإِقَامِ ٱلصَّلَوٰةِ وَإِيتَآءِ ٱلزَّكَوٰةِۙ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ ٱلْقُلُوبُ وَٱلْأَبْصَٰرُ
সেই সব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে এবং সালাত কায়েম ও যাকাত প্রদান হতে বিরত রাখেনা, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে –
38 – নূর
لِيَجْزِيَهُمُ ٱللَّهُ أَحْسَنَ مَا عَمِلُواۡ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِۦۗ وَٱللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
যাতে তারা যে কাজ করে তজ্জন্য আল্লাহ তাদেরকে উত্তম পুরস্কার দেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের প্রাপ্যের অধিক দেন; আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করে।
39 – নূর
وَٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ أَعْمَٰلُهُمْ كَسَرَابٍۭ بِقِيعَةٍ يَحْسَبُهُ ٱلظَّمْـَٔانُ مَآءً حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَهُۥ لَمْ يَجِدْهُ شَيْـًٔا وَوَجَدَ ٱللَّهَ عِندَهُۥ فَوَفَّىٰهُ حِسَابَهُۥۗ وَٱللَّهُ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ
যারা কুফরী করে, তাদের আমলসমূহ মরুভূমির মরীচিকা সদৃশ। পিপাসার্ত যাকে পানি মনে করে থাকে, কিন্তু সে ওর নিকট উপস্থিত হলে দেখবে ওটা কিছু নয়, কিন্তু সে পাবে সেখানে আল্লাহকে। অতঃপর তিনি তার কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দিবেন; আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।
40 – নূর
أَوْ كَظُلُمَٰتٍ فِى بَحْرٍ لُّجِّىٍّ يَغْشَىٰهُ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِۦ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِۦ سَحَابٌۚ ظُلُمَٰتٌۢ بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ إِذَآ أَخْرَجَ يَدَهُۥ لَمْ يَكَدْ يَرَىٰهَاۗ وَمَن لَّمْ يَجْعَلِ ٱللَّهُ لَهُۥ نُورًا فَمَا لَهُۥ مِن نُّورٍ
অথবা (কাফিরদের কাজ) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, যার উপরে রয়েছে ঘন কালো মেঘ, একের উপর এক অন্ধকার। তার হাতকে বের করলে সে তা আদৌ দেখতে পায়না। আল্লাহ যাকে জ্যোতি দান করেননা তার জন্য কোন জ্যোতি নেই।
41 – নূর
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يُسَبِّحُ لَهُۥ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَٱلطَّيْرُ صَٰٓفَّٰتٍۖ كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهُۥ وَتَسْبِيحَهُۥۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِمَا يَفْعَلُونَ
তুমি কি দেখনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড্ডীয়মান বিহংগকূল আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? তারা প্রত্যেকেই জানে তাঁর যোগ্য প্রার্থনা এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি এবং তারা যা করে সেই বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।
42 – নূর
وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلْمَصِيرُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।
43 – নূর
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يُزْجِى سَحَابًا ثُمَّ يُؤَلِّفُ بَيْنَهُۥ ثُمَّ يَجْعَلُهُۥ رُكَامًا فَتَرَى ٱلْوَدْقَ يَخْرُجُ مِنْ خِلَٰلِهِۦ وَيُنَزِّلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن جِبَالٍ فِيهَا مِنۢ بَرَدٍ فَيُصِيبُ بِهِۦ مَن يَشَآءُ وَيَصْرِفُهُۥ عَن مَّن يَشَآءُۖ يَكَادُ سَنَا بَرْقِهِۦ يَذْهَبُ بِٱلْأَبْصَٰرِ
তুমি কি দেখনা আল্লাহ সঞ্চালিত করেন মেঘমালাকে, অতঃপর তাদেরকে একত্রিত করেন এবং পরে পুঞ্জীভূত করেন? অতঃপর তুমি দেখতে পাও, ওর মধ্য হতে নির্গত হয় বারিধারা। আকাশস্থিত শিলাস্তুপ হতে তিনি শিলা বর্ষণ করেন এবং এর দ্বারা তিনি যাকে ইচ্ছা তার উপর হতে এটা অন্য দিকে ফিরিয়ে দেন; মেঘের বিদ্যুৎঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।
44 – নূর
يُقَلِّبُ ٱللَّهُ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُوۡلِى ٱلْأَبْصَٰرِ
আল্লাহ দিন ও রাতের পরিবর্তন ঘটান, এতে শিক্ষা রয়েছে অন্তঃদৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য।
45 – নূর
وَٱللَّهُ خَلَقَ كُلَّ دَآبَّةٍ مِّن مَّآءٍۖ فَمِنْهُم مَّن يَمْشِى عَلَىٰ بَطْنِهِۦ وَمِنْهُم مَّن يَمْشِى عَلَىٰ رِجْلَيْنِ وَمِنْهُم مَّن يَمْشِى عَلَىٰٓ أَرْبَعٍۚ يَخْلُقُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আল্লাহ সমস্ত জীব সৃষ্টি করেছেন পানি হতে, ওদের কতক পেটে ভর দিয়ে চলে এবং কতক দু’ পায়ে ভর করে চলে এবং কতক চলে চার পায়ে, আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
46 – নূর
لَّقَدْ أَنزَلْنَآ ءَايَٰتٍ مُّبَيِّنَٰتٍۚ وَٱللَّهُ يَهْدِى مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আমিতো সুস্পষ্ট নিদর্শন অবতীর্ণ করেছি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।
47 – নূর
وَيَقُولُونَ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلرَّسُولِ وَأَطَعْنَا ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌ مِّنْهُم مِّنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَۚ وَمَآ أُوۡلَٰٓئِكَ بِٱلْمُؤْمِنِينَ
তারা বলেঃ আমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করছি। কিন্তু এরপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়; বস্তুতঃ তারা মু’মিন নয়।
48 – নূর
وَإِذَا دُعُوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِّنْهُم مُّعْرِضُونَ
আর যখন তাদেরকে ফাইসালা করে দেয়ার জন্য আহবান করা হয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়।
49 – নূর
وَإِن يَكُن لَّهُمُ ٱلْحَقُّ يَأْتُوٓاۡ إِلَيْهِ مُذْعِنِينَ
আর সত্য তাদের স্বপক্ষে হলে তারা বিনীতভাবে রাসূলের নিকট ছুটে আসে।
50 – নূর
أَفِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَمِ ٱرْتَابُوٓاۡ أَمْ يَخَافُونَ أَن يَحِيفَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ وَرَسُولُهُۥۚ بَلْ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ
তাদের অন্তরে কি ব্যাধি আছে, না তারা সংশয় পোষণ করে, না কি তারা ভয় করে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের প্রতি যুল্‌ম করবেন? বরং তারাইতো যালিম।
51 – নূর
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُواۡ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَاۚ وَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
মু’মিনদের উক্তিতো এই, যখন তাদের মধ্যে ফাইসালা করে দেয়ার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলেঃ আমরা শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম। আর তারাইতো সফলকাম।
52 – নূর
وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَخْشَ ٱللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَآئِزُونَ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম।
53 – নূর
وَأَقْسَمُواۡ بِٱللَّهِ جَهْدَ أَيْمَٰنِهِمْ لَئِنْ أَمَرْتَهُمْ لَيَخْرُجُنَّۖ قُل لَّا تُقْسِمُواۡۖ طَاعَةٌ مَّعْرُوفَةٌۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ
তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর শপথ করে বলে, তুমি তাদেরকে আদেশ করলে তারা বের হবেই; তুমি বলঃ শপথ করনা, যথার্থ আনুগত্যই কাম্য। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
54 – নূর
قُلْ أَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواۡ ٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوْاۡ فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْۖ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُواۡۚ وَمَا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلْبَلَٰغُ ٱلْمُبِينُ
বলঃ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর; অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরা দায়ী; এবং তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎ পথ পাবে, রাসূলের দায়িত্বতো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।
55 – নূর
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مِنكُمْ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ كَمَا ٱسْتَخْلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ ٱلَّذِى ٱرْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًاۚ يَعْبُدُونَنِى لَا يُشْرِكُونَ بِى شَيْـًٔاۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَٰسِقُونَ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেনই, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয় ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন; তারা আমার ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোন শরীক করবেনা, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারাতো সত্যত্যাগী।
56 – নূর
وَأَقِيمُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواۡ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِيعُواۡ ٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পার।
57 – নূর
لَا تَحْسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مُعْجِزِينَ فِى ٱلْأَرْضِۚ وَمَأْوَىٰهُمُ ٱلنَّارُۖ وَلَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
তুমি কাফিরদেরকে পৃথিবীতে প্রবল মনে করনা; তাদের আশ্রয়স্থল আগুন; কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম!
58 – নূর
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لِيَسْتَـْٔذِنكُمُ ٱلَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْ وَٱلَّذِينَ لَمْ يَبْلُغُواۡ ٱلْحُلُمَ مِنكُمْ ثَلَٰثَ مَرَّٰتٍۚ مِّن قَبْلِ صَلَوٰةِ ٱلْفَجْرِ وَحِينَ تَضَعُونَ ثِيَابَكُم مِّنَ ٱلظَّهِيرَةِ وَمِنۢ بَعْدِ صَلَوٰةِ ٱلْعِشَآءِۚ ثَلَٰثُ عَوْرَٰتٍ لَّكُمْۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ وَلَا عَلَيْهِمْ جُنَاحٌۢ بَعْدَهُنَّۚ طَوَّٰفُونَ عَلَيْكُم بَعْضُكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফাজরের সালাতের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ এবং ইশার সালাতের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলা রাখার সময়; এই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে তোমাদের জন্য ও তাদের জন্য কোন দোষ নেই; তোমাদের এক জনকে অপর জনের নিকটতো যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের নিকট তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্ট রূপে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
59 – নূর
وَإِذَا بَلَغَ ٱلْأَطْفَٰلُ مِنكُمُ ٱلْحُلُمَ فَلْيَسْتَـْٔذِنُواۡ كَمَا ٱسْتَـْٔذَنَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمْ ءَايَٰتِهِۦۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে তাদের বয়ঃজ্যেষ্ঠদের ন্যায়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
60 – নূর
وَٱلْقَوَٰعِدُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ ٱلَّٰتِى لَا يَرْجُونَ نِكَاحًا فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ غَيْرَ مُتَبَرِّجَٰتٍۭ بِزِينَةٍۖ وَأَن يَسْتَعْفِفْنَ خَيْرٌ لَّهُنَّۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
আর বৃদ্ধা নারী, যারা বিয়ের আশা রাখেনা, তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে; তবে এটা হতে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
61 – নূর
لَّيْسَ عَلَى ٱلْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْمَرِيضِ حَرَجٌ وَلَا عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمْ أَن تَأْكُلُواۡ مِنۢ بُيُوتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ ءَابَآئِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أُمَّهَٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ إِخْوَٰنِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخَوَٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَعْمَٰمِكُمْ أَوْ بُيُوتِ عَمَّٰتِكُمْ أَوْ بُيُوتِ أَخْوَٰلِكُمْ أَوْ بُيُوتِ خَٰلَٰتِكُمْ أَوْ مَا مَلَكْتُم مَّفَاتِحَهُۥٓ أَوْ صَدِيقِكُمْۚ لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَأْكُلُواۡ جَمِيعًا أَوْ أَشْتَاتًاۚ فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُواۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ ٱللَّهِ مُبَٰرَكَةً طَيِّبَةًۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই, আর দোষ নেই রোগীর জন্য এবং তোমাদের নিজেদের জন্যও দোষ নেই আহার করায় নিজেদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতাদের গৃহে অথবা তোমাদের মাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভাইদের গৃহে অথবা তোমাদের বোনদের গৃহে অথবা তোমাদের চাচাদের গৃহে অথবা তোমাদের ফুফুদের গৃহে অথবা তোমাদের মামাদের গৃহে অথবা তোমাদের খালাদের গৃহে অথবা সেই গৃহে যার চাবি রয়েছে তোমাদের কাছে অথবা তোমাদের প্রকৃত বন্ধুদের গৃহে। তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্য কোনো অপরাধ নেই। তবে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
62 – নূর
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَإِذَا كَانُواۡ مَعَهُۥ عَلَىٰٓ أَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُواۡ حَتَّىٰ يَسْتَـْٔذِنُوهُۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسْتَـْٔذِنُونَكَ أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۚ فَإِذَا ٱسْتَـْٔذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ وَٱسْتَغْفِرْ لَهُمُ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তার অনুমতি ব্যতীত তারা সরে পড়েনা; যারা অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী; অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাবার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দিবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
63 – নূর
لَّا تَجْعَلُواۡ دُعَآءَ ٱلرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُم بَعْضًاۚ قَدْ يَعْلَمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًاۚ فَلْيَحْذَرِ ٱلَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِۦٓ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
রাসূলের আহবানকে তোমরা একে অপরের প্রতি আহবানের মত গণ্য করনা; তোমাদের মধ্যে যারা চুপি চুপি সরে পড়ে আল্লাহ তাদেরকে জানেন। সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর কঠিন শাস্তি।
64 – নূর
أَلَآ إِنَّ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ قَدْ يَعْلَمُ مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُواۡۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۢ
জেনে রেখ, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা আল্লাহরই, তোমরা যাতে ব্যাপৃত তিনি তা জানেন; যেদিন তারা তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তারা যা করত; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।

25 নং সূরা – আল-ফুরকান – اَلْفُرْقَان

মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 77
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

01 – ফুরকান
تَبَارَكَ ٱلَّذِى نَزَّلَ ٱلْفُرْقَانَ عَلَىٰ عَبْدِهِۦ لِيَكُونَ لِلْعَٰلَمِينَ نَذِيرًا
কত মহান তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ‘ফুরকান’ অবতীর্ণ করেছেন যাতে সে বিশ্ব জগতের জন্য সতর্ককারী হতে পারে!
02 – ফুরকান
ٱلَّذِى لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ شَرِيكٌ فِى ٱلْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَىْءٍ فَقَدَّرَهُۥ تَقْدِيرًا
যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি; সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করেছেন যথাযথ অনুপাতে।
03 – ফুরকান
وَٱتَّخَذُواۡ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةً لَّا يَخْلُقُونَ شَيْـًٔا وَهُمْ يُخْلَقُونَ وَلَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا وَلَا يَمْلِكُونَ مَوْتًا وَلَا حَيَوٰةً وَلَا نُشُورًا
আর তারা তাঁর পরিবর্তে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করেছে অপরকে যারা কিছুই সৃষ্টি করেনা, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের অপকার অথবা উপকার করার ক্ষমতা রাখেনা এবং জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের উপরও কোন ক্ষমতা রাখেনা।
04 – ফুরকান
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ إِنْ هَٰذَآ إِلَّآ إِفْكٌ ٱفْتَرَىٰهُ وَأَعَانَهُۥ عَلَيْهِ قَوْمٌ ءَاخَرُونَۖ فَقَدْ جَآءُو ظُلْمًا وَزُورًا
কাফিরেরা বলেঃ এটা মিথ্যা ব্যতীত কিছু নয়, সে এটা উদ্ভাবন করেছে এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে; অবশ্যই তারা যুল্‌ম ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে।
05 – ফুরকান
وَقَالُوٓاۡ أَسَٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ ٱكْتَتَبَهَا فَهِىَ تُمْلَىٰ عَلَيْهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
এবং তারা বলেঃ এগুলিতো সেকালের উপকথা যা সে লিখিয়ে নিয়েছে; এগুলি সকাল-সন্ধ্যায় তার নিকট পাঠ করা হয়।
06 – ফুরকান
قُلْ أَنزَلَهُ ٱلَّذِى يَعْلَمُ ٱلسِّرَّ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
বলঃ এটা তিনিই অবতীর্ণ করেছেন যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমুদয় রহস্য অবগত আছেন; তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
07 – ফুরকান
وَقَالُواۡ مَالِ هَٰذَا ٱلرَّسُولِ يَأْكُلُ ٱلطَّعَامَ وَيَمْشِى فِى ٱلْأَسْوَاقِۙ لَوْلَآ أُنزِلَ إِلَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُونَ مَعَهُۥ نَذِيرًا
তারা বলেঃ এ কেমন রাসূল যে আহার করে এবং হাটে বাজারে চলাফিরা করে? তার কাছে কোন মালাক/ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হলনা যে তার সাথে থাকত সতর্ককারী রূপে?
08 – ফুরকান
أَوْ يُلْقَىٰٓ إِلَيْهِ كَنزٌ أَوْ تَكُونُ لَهُۥ جَنَّةٌ يَأْكُلُ مِنْهَاۚ وَقَالَ ٱلظَّٰلِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلًا مَّسْحُورًا
তাকে ধন ভান্ডার দেয়া হয়নি কেন, অথবা কেন একটি বাগান দেয়া হলনা যা হতে সে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে? সীমালংঘনকারীরা আরও বলেঃ তোমরাতো এক যাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।
09 – ফুরকান
ٱنظُرْ كَيْفَ ضَرَبُواۡ لَكَ ٱلْأَمْثَٰلَ فَضَلُّواۡ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ سَبِيلًا
দেখ, তারা তোমার কি উপমা দেয়। তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা পথ পাবেনা।
10 – ফুরকান
تَبَارَكَ ٱلَّذِىٓ إِن شَآءَ جَعَلَ لَكَ خَيْرًا مِّن ذَٰلِكَ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُورًۢا
কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে দিতে পারেন এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বস্তু – উদ্যানসমূহ, যার নিম্নদেশে নদ-নদী প্রবাহিত এবং দিতে পারেন প্রাসাদসমূহ।
11 – ফুরকান
بَلْ كَذَّبُواۡ بِٱلسَّاعَةِۖ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِٱلسَّاعَةِ سَعِيرًا
বরং তারা কিয়ামাতকে অস্বীকার করেছে এবং যারা কিয়ামাতকে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন।
12 – ফুরকান
إِذَا رَأَتْهُم مِّن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ سَمِعُواۡ لَهَا تَغَيُّظًا وَزَفِيرًا
দূর হতে আগুন যখন তাদেরকে দেখবে তখন তারা শুনতে পাবে ওর ক্রুদ্ধ গর্জন ও হুঙ্কার।
13 – ফুরকান
وَإِذَآ أُلْقُواۡ مِنْهَا مَكَانًا ضَيِّقًا مُّقَرَّنِينَ دَعَوْاۡ هُنَالِكَ ثُبُورًا
এবং যখন তাদেরকে শৃংখলিত অবস্থায় ওর কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা সেখানে ধ্বংস কামনা করবে।
14 – ফুরকান
لَّا تَدْعُواۡ ٱلْيَوْمَ ثُبُورًا وَٰحِدًا وَٱدْعُواۡ ثُبُورًا كَثِيرًا
তাদেরকে বলা হবেঃ আজ তোমরা একবারের জন্য ধ্বংস কামনা করনা, বরং বহুবার ধ্বংস হওয়ার কামনা করতে থাক।
15 – ফুরকান
قُلْ أَذَٰلِكَ خَيْرٌ أَمْ جَنَّةُ ٱلْخُلْدِ ٱلَّتِى وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَۚ كَانَتْ لَهُمْ جَزَآءً وَمَصِيرًا
তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ এটাই শ্রেয়, নাকি স্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে! এটাই তাদের পুরস্কার ও প্রত্যাবর্তন স্থল।
16 – ফুরকান
لَّهُمْ فِيهَا مَا يَشَآءُونَ خَٰلِدِينَۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعْدًا مَّسْـُٔولًا
সেখানে তারা যা কামনা করবে তা’ই পাবে এবং তারা স্থায়ী হবে। এই প্রতিশ্রুতি পূরণ তোমার রবেরই দায়িত্ব।
17 – ফুরকান
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ فَيَقُولُ ءَأَنتُمْ أَضْلَلْتُمْ عِبَادِى هَٰٓؤُلَآءِ أَمْ هُمْ ضَلُّواۡ ٱلسَّبِيلَ
এবং যেদিন তিনি একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদাত করত তাদেরকে, তিনি সেদিন জিজ্ঞেস করবেনঃ তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলে, নাকি তারা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিল?
18 – ফুরকান
قَالُواۡ سُبْحَٰنَكَ مَا كَانَ يَنۢبَغِى لَنَآ أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنْ أَوْلِيَآءَ وَلَٰكِن مَّتَّعْتَهُمْ وَءَابَآءَهُمْ حَتَّىٰ نَسُواۡ ٱلذِّكْرَ وَكَانُواۡ قَوْمًۢا بُورًا
তারা বলবেঃ আপনি পবিত্র ও মহান! আপনার পরিবর্তে আমরা অন্যকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করতে পারিনা। আপনিইতো এদেরকে ও এদের পিতৃ-পুরুষদেরকে ভোগ-সম্ভার দিয়েছিলেন। পরিণামে তারা উপদেশ বিস্মৃত হয়েছিল এবং পরিণত হয়েছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিতে।
19 – ফুরকান
فَقَدْ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسْتَطِيعُونَ صَرْفًا وَلَا نَصْرًاۚ وَمَن يَظْلِم مِّنكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيرًا
আল্লাহ (মুশরিকদেরকে) বলবেনঃ তোমরা যা বলতে তারা তা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। সুতরাং তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না, সাহায্যও পাবে না। তোমাদের মধ্যে যে সীমালংঘন করবে আমি তাকে মহাশাস্তি আস্বাদ করাব।
20 – ফুরকান
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ ٱلطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِى ٱلْأَسْوَاقِۗ وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً أَتَصْبِرُونَۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرًا
তোমার পূর্বে আমি যে সব রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সবাই আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফিরা করত। হে লোক সকল! আমি তোমাদের মধ্যে এককে অপরের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? তোমার রাব্ব সব কিছু দেখেন।
21 – ফুরকান
وَقَالَ ٱلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ لِقَآءَنَا لَوْلَآ أُنزِلَ عَلَيْنَا ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ أَوْ نَرَىٰ رَبَّنَاۗ لَقَدِ ٱسْتَكْبَرُواۡ فِىٓ أَنفُسِهِمْ وَعَتَوْ عُتُوًّا كَبِيرًا
যারা আমার সাক্ষাৎ কামনা করেনা তারা বলেঃ আমাদের নিকট মালাক/ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হয়না কেন? অথবা আমরা আমাদের রাব্বকে প্রত্যক্ষ করি না কেন? তারা তাদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং তারা সীমালংঘন করেছে গুরুতর রূপে।
22 – ফুরকান
يَوْمَ يَرَوْنَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ لَا بُشْرَىٰ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُجْرِمِينَ وَيَقُولُونَ حِجْرًا مَّحْجُورًا
যেদিন তারা মালাইকাকে/ফেরেশতাদেরকে প্রত্যক্ষ করবে সেদিন অপরাধীদের জন্য সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবেঃ যদি কোনো বাধা থাকত!
23 – ফুরকান
وَقَدِمْنَآ إِلَىٰ مَا عَمِلُواۡ مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَٰهُ هَبَآءً مَّنثُورًا
আমি তাদের কৃতকর্মগুলি বিবেচনা করব, অতঃপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।
24 – ফুরকান
أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مُّسْتَقَرًّا وَأَحْسَنُ مَقِيلًا
সেদিন জান্নাতবাসীদের বাসস্থান হবে উৎকৃষ্ট এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম।
25 – ফুরকান
وَيَوْمَ تَشَقَّقُ ٱلسَّمَآءُ بِٱلْغَمَٰمِ وَنُزِّلَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ تَنزِيلًا
যেদিন আকাশ মেঘপুঞ্জসহ বিদীর্ণ হবে এবং মালাইকাকে (ফেরেশতাদেরকে) নামিয়ে দেয়া হবে –
26 – ফুরকান
ٱلْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ ٱلْحَقُّ لِلرَّحْمَٰنِۚ وَكَانَ يَوْمًا عَلَى ٱلْكَٰفِرِينَ عَسِيرًا
সেদিন প্রকৃত রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফিরদের জন্য সেদিন হবে কঠিন।
27 – ফুরকান
وَيَوْمَ يَعَضُّ ٱلظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيْهِ يَقُولُ يَٰلَيْتَنِى ٱتَّخَذْتُ مَعَ ٱلرَّسُولِ سَبِيلًا
যালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবেঃ হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে সৎ পথ অবলম্বন করতাম!
28 – ফুরকান
يَٰوَيْلَتَىٰ لَيْتَنِى لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا
হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম!
29 – ফুরকান
لَّقَدْ أَضَلَّنِى عَنِ ٱلذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَآءَنِىۗ وَكَانَ ٱلشَّيْطَٰنُ لِلْإِنسَٰنِ خَذُولًا
আমাকেতো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট উপদেশ পৌঁছার পর; শাইতানতো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক।
30 – ফুরকান
وَقَالَ ٱلرَّسُولُ يَٰرَبِّ إِنَّ قَوْمِى ٱتَّخَذُواۡ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ مَهْجُورًا
তখন রাসূল বলবেঃ হে আমার রাব্ব! আমার সম্প্রদায়তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করেছিল।
31 – ফুরকান
وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِىٍّ عَدُوًّا مِّنَ ٱلْمُجْرِمِينَۗ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
এভাবেই প্রত্যেক নাবীর জন্য আমি অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু করেছি। তোমার জন্য তোমার রাব্ব পথ প্রদর্শক ও সাহায্যকারী রূপে যথেষ্ট।
32 – ফুরকান
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ ٱلْقُرْءَانُ جُمْلَةً وَٰحِدَةًۚ كَذَٰلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِۦ فُؤَادَكَۖ وَرَتَّلْنَٰهُ تَرْتِيلًا
কাফিরেরা বলেঃ সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারেই অবতীর্ণ হলনা কেন? এভাবেই অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমার হৃদয় ওর দ্বারা মযবূত হয় এবং তা সম্পূর্ণ রুপে আস্তে আস্তে আত্মস্থ করতে পার।
33 – ফুরকান
وَلَا يَأْتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئْنَٰكَ بِٱلْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيرًا
তারা তোমার নিকট এমন কোন সমস্যা উপস্থিত করেনি যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করিনি।
34 – ফুরকান
ٱلَّذِينَ يُحْشَرُونَ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ إِلَىٰ جَهَنَّمَ أُوۡلَٰٓئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضَلُّ سَبِيلًا
যাদেরকে মুখে ভর দিয়ে দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তাদেরই স্থান হবে অতি নিকৃষ্ট এবং তারাই পথভ্রষ্ট।
35 – ফুরকান
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا مُوسَى ٱلْكِتَٰبَ وَجَعَلْنَا مَعَهُۥٓ أَخَاهُ هَٰرُونَ وَزِيرًا
আমিতো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার ভাই হারূনকে তার সাহায্যকারী করেছিলাম।
36 – ফুরকান
فَقُلْنَا ٱذْهَبَآ إِلَى ٱلْقَوْمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا فَدَمَّرْنَٰهُمْ تَدْمِيرًا
এবং বলেছিলামঃ তোমরা সেই সম্প্রদায়ের নিকট যাও যারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করেছে; অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।
37 – ফুরকান
وَقَوْمَ نُوحٍ لَّمَّا كَذَّبُواۡ ٱلرُّسُلَ أَغْرَقْنَٰهُمْ وَجَعَلْنَٰهُمْ لِلنَّاسِ ءَايَةًۖ وَأَعْتَدْنَا لِلظَّٰلِمِينَ عَذَابًا أَلِيمًا
আর নূহের সম্প্রদায় যখন রাসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করল তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম এবং তাদেরকে মানবজাতির জন্য নিদর্শন স্বরূপ করে রাখলাম; যালিমদের জন্য আমি মর্মন্তদ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
38 – ফুরকান
وَعَادًا وَثَمُودَاۡ وَأَصْحَٰبَ ٱلرَّسِّ وَقُرُونًۢا بَيْنَ ذَٰلِكَ كَثِيرًا
আমি ধ্বংস করেছিলাম ‘আদ, ছামূদ, রা’স্ এবং তাদের অর্ন্তবর্তী কালের বহু সম্প্রদায়কেও।
39 – ফুরকান
وَكُلًّا ضَرَبْنَا لَهُ ٱلْأَمْثَٰلَۖ وَكُلًّا تَبَّرْنَا تَتْبِيرًا
আমি তাদের প্রত্যেকের জন্য দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছিলাম, আর তাদের সকলকেই আমি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করেছিলাম।
40 – ফুরকান
وَلَقَدْ أَتَوْاۡ عَلَى ٱلْقَرْيَةِ ٱلَّتِىٓ أُمْطِرَتْ مَطَرَ ٱلسَّوْءِۚ أَفَلَمْ يَكُونُواۡ يَرَوْنَهَاۚ بَلْ كَانُواۡ لَا يَرْجُونَ نُشُورًا
তারাতো সেই জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে যার উপর বর্ষিত হয়েছিল অকল্যাণের বৃষ্টি; তাহলে কি তারা এটা প্রত্যক্ষ করেনা? বস্তুতঃ তারা পুনরুত্থানের আশংকা করেনা।
41 – ফুরকান
وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَٰذَا ٱلَّذِى بَعَثَ ٱللَّهُ رَسُولًا
তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র রূপে গণ্য করে এবং বলেঃ এ-ই কি সে, যাকে আল্লাহ রাসূল করে পাঠিয়েছেন!
42 – ফুরকান
إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنْ ءَالِهَتِنَا لَوْلَآ أَن صَبَرْنَا عَلَيْهَاۚ وَسَوْفَ يَعْلَمُونَ حِينَ يَرَوْنَ ٱلْعَذَابَ مَنْ أَضَلُّ سَبِيلًا
সেতো আমাদেরকে আমাদের দেবতাদের হতে দূরে সরিয়ে দিত যদি না আমরা তাদের আনুগত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতাম। যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা জানবে কে সর্বাধিক পথভ্রষ্ট।
43 – ফুরকান
أَرَءَيْتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا
তুমি কি দেখনা তাকে, যে তার কামনা বাসনাকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করে? তবুও কি তুমি তার যিম্মাদার হবে?
44 – ফুরকান
أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَٱلْأَنْعَٰمِۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا
তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ শোনে ও বুঝে? তারাতো পশুরই মত; বরং তারা আরও অধম।
45 – ফুরকান
أَلَمْ تَرَ إِلَىٰ رَبِّكَ كَيْفَ مَدَّ ٱلظِّلَّ وَلَوْ شَآءَ لَجَعَلَهُۥ سَاكِنًا ثُمَّ جَعَلْنَا ٱلشَّمْسَ عَلَيْهِ دَلِيلًا
তুমি কি তোমার রবের প্রতি লক্ষ্য করনা, কিভাবে তিনি ছায়া সম্প্রসারিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে এটাকে তো স্থির রাখতে পারতেন। অনন্তর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক।
46 – ফুরকান
ثُمَّ قَبَضْنَٰهُ إِلَيْنَا قَبْضًا يَسِيرًا
অতঃপর আমি একে আমার দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।
47 – ফুরকান
وَهُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّيْلَ لِبَاسًا وَٱلنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ ٱلنَّهَارَ نُشُورًا
এবং তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণ স্বরূপ, বিশ্রামের জন্য তোমাদের দিয়েছেন নিদ্রা এবং সমুত্থানের জন্য দিয়েছেন দিন।
48 – ফুরকান
وَهُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ ٱلرِّيَٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِهِۦۚ وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً طَهُورًا
তিনিই স্বীয় রাহমাতের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী রূপে বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমি আকাশ হতে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি –
49 – ফুরকান
لِّنُحْۦِىَ بِهِۦ بَلْدَةً مَّيْتًا وَنُسْقِيَهُۥ مِمَّا خَلَقْنَآ أَنْعَٰمًا وَأَنَاسِىَّ كَثِيرًا
যদ্বারা আমি মৃত ভূ-খন্ডকে সঞ্জীবিত করি এবং আমার সৃষ্টির মধ্যের বহু জীব জন্তু ও মানুষকে তা পান করাই।
50 – ফুরকান
وَلَقَدْ صَرَّفْنَٰهُ بَيْنَهُمْ لِيَذَّكَّرُواۡ فَأَبَىٰٓ أَكْثَرُ ٱلنَّاسِ إِلَّا كُفُورًا
আর আমি এটা তাদের মধ্যে বিতরণ করি যাতে তারা স্মরণ করে; কিন্তু অধিকাংশ লোক শুধু অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে।
51 – ফুরকান
وَلَوْ شِئْنَا لَبَعَثْنَا فِى كُلِّ قَرْيَةٍ نَّذِيرًا
আমি ইচ্ছা করলে প্রতিটি জনপদের জন্য একজন সতর্ককারী প্রেরণ করতে পারতাম।
52 – ফুরকান
فَلَا تُطِعِ ٱلْكَٰفِرِينَ وَجَٰهِدْهُم بِهِۦ جِهَادًا كَبِيرًا
সুতরাং তুমি কাফিরদের আনুগত্য করনা এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের সাথে প্রবল সংগ্রাম চালিয়ে যাও।
53 – ফুরকান
وَهُوَ ٱلَّذِى مَرَجَ ٱلْبَحْرَيْنِ هَٰذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ وَهَٰذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَجَعَلَ بَيْنَهُمَا بَرْزَخًا وَحِجْرًا مَّحْجُورًا
তিনিই দুই সমুদ্রকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন; একটি মিষ্টি, সুপেয় এবং অপরটি লবণাক্ত, খর; উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান।
54 – ফুরকান
وَهُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ مِنَ ٱلْمَآءِ بَشَرًا فَجَعَلَهُۥ نَسَبًا وَصِهْرًاۗ وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا
এবং তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে; অতঃপর তিনি তার বংশগত ও বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছেন। তোমার রাব্ব সর্বশক্তিমান।
55 – ফুরকান
وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُهُمْ وَلَا يَضُرُّهُمْۗ وَكَانَ ٱلْكَافِرُ عَلَىٰ رَبِّهِۦ ظَهِيرًا
তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত করে যা তাদের উপকার করতে পারেনা, অপকারও করতে পারেনা; কাফিরতো স্বীয় রবের বিরোধী।
56 – ফুরকান
وَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ إِلَّا مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
আমিতো তোমাকে শুধু সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপেই প্রেরণ করেছি।
57 – ফুরকান
قُلْ مَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِلَّا مَن شَآءَ أَن يَتَّخِذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ سَبِيلًا
বলঃ আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, তবে যে ইচ্ছা করে সে তার রবের পথ অবলম্বন করুক।
58 – ফুরকান
وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱلْحَىِّ ٱلَّذِى لَا يَمُوتُ وَسَبِّحْ بِحَمْدِهِۦۚ وَكَفَىٰ بِهِۦ بِذُنُوبِ عِبَادِهِۦ خَبِيرًا
তুমি নির্ভর কর তাঁর উপর যিনি চিরঞ্জীব, যাঁর মৃত্যু নেই এবং তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। তিনি তাঁর বান্দাদের পাপ সম্পর্কে যথেষ্ট অবহিত।
59 – ফুরকান
ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۚ ٱلرَّحْمَٰنُ فَسْـَٔلْ بِهِۦ خَبِيرًا
তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওগুলির মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন; তিনিই রাহমান। তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ।
60 – ফুরকান
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ٱسْجُدُواۡ لِلرَّحْمَٰنِ قَالُواۡ وَمَا ٱلرَّحْمَٰنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا۩
যখন তাদেরকে বল হয়ঃ সাজদাহবনত হও ‘রাহমান’ এর প্রতি তখন তারা বলেঃ রাহমান আবার কে? তুমি কেহকে সাজদাহ করতে বললেই কি আমরা তাকে সাজদাহ করব? এতে তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়। [সাজদাহ]
61 – ফুরকান
تَبَارَكَ ٱلَّذِى جَعَلَ فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَٰجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا
কত মহান তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চাঁদ!
62 – ফুরকান
وَهُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا
এবং যারা উপদেশ গ্রহণ করতে ও কৃতজ্ঞ হতে চায় তাদের জন্য তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত এবং দিনকে পরস্পরের অনুগামী রূপে।
63 – ফুরকান
وَعِبَادُ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى ٱلْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ ٱلْجَٰهِلُونَ قَالُواۡ سَلَٰمًا
‘রাহমান’ এর বান্দা তারাই যারা নম্রভাবে চলাফিরা করে পৃথিবীতে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ লোকেরা সম্বোধন করে তখন তারা বলেঃ সালাম।
64 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَٰمًا
এবং তারা রাত অতিবাহিত করে তাদের রবের উদ্দেশে সাজদাহবনত হয়ে ও দন্ডায়মান থেকে।
65 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
এবং তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের হতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত করুন; ওর শাস্তিতো নিশ্চিত বিনাশ।
66 – ফুরকান
إِنَّهَا سَآءَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
নিশ্চয়ই আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসাবে ওটা কত নিকৃষ্ট!
67 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ إِذَآ أَنفَقُواۡ لَمْ يُسْرِفُواۡ وَلَمْ يَقْتُرُواۡ وَكَانَ بَيْنَ ذَٰلِكَ قَوَامًا
আর যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয় করেনা এবং কার্পন্যও করেনা; বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়।
68 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ ٱلنَّفْسَ ٱلَّتِى حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্যকে ডাকেনা; আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে তারা হত্যা করেনা এবং ব্যভিচার করেনা; যে এগুলি করে সে শাস্তি ভোগ করবে।
69 – ফুরকান
يُضَٰعَفْ لَهُ ٱلْعَذَابُ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِۦ مُهَانًا
কিয়ামাত দিবসে তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়।
70 – ফুরকান
إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَٰلِحًا فَأُوۡلَٰٓئِكَ يُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَيِّـَٔاتِهِمْ حَسَنَٰتٍۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
তারা নয় – যারা তাওবাহ করে, ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে; আল্লাহ তাদের পাপ পরিবর্তন করে দিবেন উত্তম আমলের দ্বারা; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
71 – ফুরকান
وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَٰلِحًا فَإِنَّهُۥ يَتُوبُ إِلَى ٱللَّهِ مَتَابًا
যে ব্যক্তি তাওবাহ করে ও সৎ কাজ করে সে সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর অভিমুখী হয়।
72 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّواۡ بِٱللَّغْوِ مَرُّواۡ كِرَامًا
আর যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়না এবং যখন তারা অসার ক্রিয়া-কলাপের সম্মুখীন হয় তখন স্বীয় মর্যাদার সাথে তা পরিহার করে চলে –
73 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُواۡ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِمْ لَمْ يَخِرُّواۡ عَلَيْهَا صُمًّا وَعُمْيَانًا
এবং যারা তাদের রবের আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে ওর প্রতি অন্ধ এবং বধির সদৃশ আচরণ করেনা –
74 – ফুরকান
وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
আর যারা প্রার্থনা করেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শ স্বরূপ করুন।
75 – ফুরকান
أُوۡلَٰٓئِكَ يُجْزَوْنَ ٱلْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُواۡ وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَٰمًا
তাদেরকে প্রতিদান স্বরূপ দেয়া হবে জান্নাত, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল। তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে।
76 – ফুরকান
خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ حَسُنَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
সেখানে তারা চিরকাল বসবাস করবে, কত উত্তম সেখানে অবস্থান ও আবাসস্থল!
77 – ফুরকান
قُلْ مَا يَعْبَؤُاۡ بِكُمْ رَبِّى لَوْلَا دُعَآؤُكُمْۖ فَقَدْ كَذَّبْتُمْ فَسَوْفَ يَكُونُ لِزَامًۢا
বলঃ তোমরা আমার রাব্বকে না ডাকলে তাঁর কিছুই আসে যায়না। তোমরা অস্বীকার করেছ, ফলে অচিরেই নেমে আসবে অপরিহার্য শাস্তি।

26 নং সূরা – আশ-শুয়’আরা – اَلشُّعَرَء

মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 227
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

01 – শুয়’আরা
طسٓمٓ
তা’ সীন মীম।
02 – শুয়’আরা
تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ
এগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
03 – শুয়’আরা
لَعَلَّكَ بَٰخِعٌ نَّفْسَكَ أَلَّا يَكُونُواۡ مُؤْمِنِينَ
তারা মু’মিন হচ্ছেনা বলে তুমি হয়ত মনকষ্টে আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে।
04 – শুয়’আরা
إِن نَّشَأْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ ءَايَةً فَظَلَّتْ أَعْنَٰقُهُمْ لَهَا خَٰضِعِينَ
আমি ইচ্ছা করলে আকাশ হতে তাদের নিকট এক নিদর্শন প্রেরণ করতাম, ফলে তাদের গ্রীবা বিনত হয়ে পড়ত ওর প্রতি।
05 – শুয়’আরা
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن ذِكْرٍ مِّنَ ٱلرَّحْمَٰنِ مُحْدَثٍ إِلَّا كَانُواۡ عَنْهُ مُعْرِضِينَ
যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোন নতুন উপদেশ আসে তখনই তারা তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
06 – শুয়’আরা
فَقَدْ كَذَّبُواۡ فَسَيَأْتِيهِمْ أَنۢبَٰٓؤُاۡ مَا كَانُواۡ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
তারাতো মিথ্যা জেনেছে, সুতরাং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তার প্রকৃত বার্তা তাদের নিকট শীঘ্রই এসে পড়বে।
07 – শুয়’আরা
أَوَلَمْ يَرَوْاۡ إِلَى ٱلْأَرْضِ كَمْ أَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ
তারা কি পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করেনা? আমি তাতে প্রত্যেক প্রকারের কত উৎকৃষ্ট জিনিস উদগত করেছি।
08 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
নিশ্চয়ই তাতে আছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
09 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
10 – শুয়’আরা
وَإِذْ نَادَىٰ رَبُّكَ مُوسَىٰٓ أَنِ ٱئْتِ ٱلْقَوْمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি যালিম সম্প্রদায়ের নিকট চলে যাও –
11 – শুয়’আরা
قَوْمَ فِرْعَوْنَۚ أَلَا يَتَّقُونَ
ফির‘আউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করেনা?
12 – শুয়’আরা
قَالَ رَبِّ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يُكَذِّبُونِ
তখন সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে অস্বীকার করবে।
13 – শুয়’আরা
وَيَضِيقُ صَدْرِى وَلَا يَنطَلِقُ لِسَانِى فَأَرْسِلْ إِلَىٰ هَٰرُونَ
এবং আমার হৃদয় সংকুচিত হয়ে পড়ছে, আর আমার জিহবাতো সাবলীল নয়, সুতরাং হারুনের প্রতিও প্রত্যাদেশ পাঠান।
14 – শুয়’আরা
وَلَهُمْ عَلَىَّ ذَنۢبٌ فَأَخَافُ أَن يَقْتُلُونِ
আমার বিরুদ্ধে তাদের এক অভিযোগ রয়েছে, আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।
15 – শুয়’আরা
قَالَ كَلَّاۖ فَٱذْهَبَا بِـَٔايَٰتِنَآۖ إِنَّا مَعَكُم مُّسْتَمِعُونَ
আল্লাহ বললেনঃ না কখনই নয়, অতএব তোমরা উভয়ে আমার নিদর্শনসহ যাও, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি শ্রবণকারী।
16 – শুয়’আরা
فَأْتِيَا فِرْعَوْنَ فَقُولَآ إِنَّا رَسُولُ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
অতএব তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের নিকট যাও এবং বলঃ আমরা জগতসমূহের রবের রাসূল।
17 – শুয়’আরা
أَنْ أَرْسِلْ مَعَنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
আমাদের সাথে যেতে দাও বানী ইসরাঈলকে।
18 – শুয়’আরা
قَالَ أَلَمْ نُرَبِّكَ فِينَا وَلِيدًا وَلَبِثْتَ فِينَا مِنْ عُمُرِكَ سِنِينَ
ফির‘আউন বললঃ আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মধ্যে লালন পালন করিনি? এবং তুমিতো তোমার জীবনের বহু বছর আমাদের মধ্যে কাটিয়েছ।
19 – শুয়’আরা
وَفَعَلْتَ فَعْلَتَكَ ٱلَّتِى فَعَلْتَ وَأَنتَ مِنَ ٱلْكَٰفِرِينَ
তুমিতো তোমার কাজ যা করার তা করেছ; তুমি অকৃতজ্ঞ।
20 – শুয়’আরা
قَالَ فَعَلْتُهَآ إِذًا وَأَنَا۠ مِنَ ٱلضَّآلِّينَ
মূসা বললঃ আমিতো এটা করেছিলাম তখন যখন আমি অজ্ঞ ছিলাম।
21 – শুয়’আরা
فَفَرَرْتُ مِنكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِى رَبِّى حُكْمًا وَجَعَلَنِى مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ
অতঃপর আমি যখন তোমাদের ভয়ে ভীত হলাম তখন আমি তোমাদের নিকট হতে পালিয়ে গিয়েছিলাম; অতঃপর আমার রাব্ব আমাকে জ্ঞান দান করেছেন এবং আমাকে রাসূল করেছেন।
22 – শুয়’আরা
وَتِلْكَ نِعْمَةٌ تَمُنُّهَا عَلَىَّ أَنْ عَبَّدتَّ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছ তাতো এই যে, তুমি বানী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ।
23 – শুয়’আরা
قَالَ فِرْعَوْنُ وَمَا رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
ফির‘আউন বললঃ জগতসমূহের রাব্ব আবার কি?
24 – শুয়’আরা
قَالَ رَبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَآۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ
মূসা বললঃ তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর রাব্ব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
25 – শুয়’আরা
قَالَ لِمَنْ حَوْلَهُۥٓ أَلَا تَسْتَمِعُونَ
ফির‘আউন তার পরিষদবর্গকে লক্ষ্য করে বললঃ তোমরা শুনেছ তো!
26 – শুয়’আরা
قَالَ رَبُّكُمْ وَرَبُّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ
মূসা বললঃ তিনি তোমাদের রাব্ব এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরও রাব্ব।
27 – শুয়’আরা
قَالَ إِنَّ رَسُولَكُمُ ٱلَّذِىٓ أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ لَمَجْنُونٌ
ফির‘আউন বললঃ তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রাসূলটি নিশ্চয়ই পাগল।
28 – শুয়’আরা
قَالَ رَبُّ ٱلْمَشْرِقِ وَٱلْمَغْرِبِ وَمَا بَيْنَهُمَآۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ
মূসা বললঃ তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর রাব্ব, যদি তোমরা বুঝতে।
29 – শুয়’আরা
قَالَ لَئِنِ ٱتَّخَذْتَ إِلَٰهًا غَيْرِى لَأَجْعَلَنَّكَ مِنَ ٱلْمَسْجُونِينَ
ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ কর তাহলে আমি তোমাকে অবশ্যই কারারুদ্ধ করব।
30 – শুয়’আরা
قَالَ أَوَلَوْ جِئْتُكَ بِشَىْءٍ مُّبِينٍ
মূসা বললঃ আমি তোমার নিকট স্পষ্ট কোন নিদর্শন আনয়ন করলেও?
31 – শুয়’আরা
قَالَ فَأْتِ بِهِۦٓ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে তা উপস্থিত কর।
32 – শুয়’আরা
فَأَلْقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ ثُعْبَانٌ مُّبِينٌ
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করলে তৎক্ষণাৎ তা এক সুস্পষ্ট অজগর হল।
33 – শুয়’আরা
وَنَزَعَ يَدَهُۥ فَإِذَا هِىَ بَيْضَآءُ لِلنَّٰظِرِينَ
আর মূসা হাত বের করল, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল।
34 – শুয়’আরা
قَالَ لِلْمَلَإِ حَوْلَهُۥٓ إِنَّ هَٰذَا لَسَٰحِرٌ عَلِيمٌ
ফির‘আউন তার পারিষদবর্গকে বললঃ এতো এক সুদক্ষ যাদুকর।
35 – শুয়’আরা
يُرِيدُ أَن يُخْرِجَكُم مِّنْ أَرْضِكُم بِسِحْرِهِۦ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ
এ তোমাদেরকে তোমাদের দেশ হতে তার যাদুবলে বহিস্কার করতে চায়! এখন তোমরা কি করতে বল?
36 – শুয়’আরা
قَالُوٓاۡ أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَٱبْعَثْ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَٰشِرِينَ
তারা বললঃ তাকে ও তার ভাইকে কিঞ্চিৎ অবকাশ দাও এবং নগরে সংগ্রাহকদেরকে পাঠাও –
37 – শুয়’আরা
يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِيمٍ
যেন তারা তোমার নিকট প্রতিটি সুদক্ষ যাদুকর উপস্থিত করে।
38 – শুয়’আরা
فَجُمِعَ ٱلسَّحَرَةُ لِمِيقَٰتِ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ
অতঃপর এক নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সময়ে যাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
39 – শুয়’আরা
وَقِيلَ لِلنَّاسِ هَلْ أَنتُم مُّجْتَمِعُونَ
আর লোকদেরকে বলা হলঃ তোমরাও সমবেত হচ্ছ কি?
40 – শুয়’আরা
لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ ٱلسَّحَرَةَ إِن كَانُواۡ هُمُ ٱلْغَٰلِبِينَ
যেন আমরা যাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি, যদি তারা বিজয়ী হয়।
41 – শুয়’আরা
فَلَمَّا جَآءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالُواۡ لِفِرْعَوْنَ أَئِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِن كُنَّا نَحْنُ ٱلْغَٰلِبِينَ
অতঃপর যাদুকররা এসে ফির‘আউনকে বললঃ আমরা যদি বিজয়ী হই তাহলে আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো?
42 – শুয়’আরা
قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ إِذًا لَّمِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ
ফির‘আউন বললঃ হ্যাঁ, তখন তোমরা অবশ্যই আমার নিকটজনদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
43 – শুয়’আরা
قَالَ لَهُم مُّوسَىٰٓ أَلْقُواۡ مَآ أَنتُم مُّلْقُونَ
মূসা তাদেরকে বললঃ তোমাদের যা নিক্ষেপ করার তা নিক্ষেপ কর।
44 – শুয়’আরা
فَأَلْقَوْاۡ حِبَالَهُمْ وَعِصِيَّهُمْ وَقَالُواۡ بِعِزَّةِ فِرْعَوْنَ إِنَّا لَنَحْنُ ٱلْغَٰلِبُونَ
অতঃপর তারা তাদের রজ্জু ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তারা বললঃ ফির‘আউনের শপথ! আমরাই বিজয়ী হব।
45 – শুয়’আরা
فَأَلْقَىٰ مُوسَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল; সহসা ওটা তাদের অলীক সৃষ্টিগুলিকে গ্রাস করতে লাগল।
46 – শুয়’আরা
فَأُلْقِىَ ٱلسَّحَرَةُ سَٰجِدِينَ
তখন যাদুকরেরা সাজদাহবনত হয়ে পড়ল।
47 – শুয়’আরা
قَالُوٓاۡ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
তারা বললঃ আমরা ঈমান আনলাম জগতসমূহের রবের প্রতি –
48 – শুয়’আরা
رَبِّ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ
যিনি মূসা ও হারুনেরও রাব্ব।
49 – শুয়’আরা
قَالَ ءَامَنتُمْ لَهُۥ قَبْلَ أَنْ ءَاذَنَ لَكُمْۖ إِنَّهُۥ لَكَبِيرُكُمُ ٱلَّذِى عَلَّمَكُمُ ٱلسِّحْرَ فَلَسَوْفَ تَعْلَمُونَۚ لَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُم مِّنْ خِلَٰفٍ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمْ أَجْمَعِينَ
ফির‘আউন বললঃ আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা তাতে বিশ্বাস করলে? এইতো তোমাদের প্রধান যে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে; শীঘ্রই তোমরা এর পরিণাম জানবে; আমি অবশ্যই তোমাদের হাত এবং তোমাদের পা বিপরীত দিক হতে কেটে ফেলব এবং তোমাদের সবাইকে শুলবিদ্ধ করবই।
50 – শুয়’আরা
قَالُواۡ لَا ضَيْرَۖ إِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ
তারা বললঃ কোন ক্ষতি নেই, আমরা আমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করব।
51 – শুয়’আরা
إِنَّا نَطْمَعُ أَن يَغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَٰيَٰنَآ أَن كُنَّآ أَوَّلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
আমরা আশা করি যে, আমাদের রাব্ব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন, কারণ আমরা মু’মিনদের মধ্যে অগ্রণী।
52 – শুয়’আরা
وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنْ أَسْرِ بِعِبَادِىٓ إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ
আমি মূসার প্রতি অহী করেছিলাম এই মর্মেঃ আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বহির্গত হও; তোমাদেরতো পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
53 – শুয়’আরা
فَأَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَٰشِرِينَ
অতঃপর ফির‘আউন শহরে শহরে লোক সংগ্রহকারী পাঠাল –
54 – শুয়’আরা
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ
এই বলেঃ এরাতো ক্ষুদ্র একটি দল।
55 – শুয়’আরা
وَإِنَّهُمْ لَنَا لَغَآئِظُونَ
এবং তারা আমাদের ক্রোধের সৃষ্টি করেছে।
56 – শুয়’আরা
وَإِنَّا لَجَمِيعٌ حَٰذِرُونَ
এবং আমরাতো সদা সতর্ক একটি দল।
57 – শুয়’আরা
فَأَخْرَجْنَٰهُم مِّن جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
পরিণামে আমি ফির‘আউন গোষ্ঠিকে বহিস্কৃত করলাম তাদের উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণ হতে।
58 – শুয়’আরা
وَكُنُوزٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ
এবং ধন ভান্ডার ও সুরম্য সৌধমালা হতে।
59 – শুয়’আরা
كَذَٰلِكَ وَأَوْرَثْنَٰهَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
এরূপই ঘটেছিল এবং বানী ইসরাঈলকে আমি করেছিলাম এ সমুদয়ের অধিকারী।
60 – শুয়’আরা
فَأَتْبَعُوهُم مُّشْرِقِينَ
তারা সূর্যোদয় কালে তাদের পশ্চাতে এসে পড়ল।
61 – শুয়’আরা
فَلَمَّا تَرَٰٓءَا ٱلْجَمْعَانِ قَالَ أَصْحَٰبُ مُوسَىٰٓ إِنَّا لَمُدْرَكُونَ
অতঃপর যখন দু’ দল পরস্পরকে দেখল তখন মূসার সঙ্গীরা বললঃ আমরাতো ধরা পড়ে যাচ্ছি!
62 – শুয়’আরা
قَالَ كَلَّآۖ إِنَّ مَعِىَ رَبِّى سَيَهْدِينِ
মূসা বললঃ কক্ষণই নয়। আমার সঙ্গে আছেন আমার রাব্ব; সত্ত্বর তিনি আমাকে পথ নির্দেশ করবেন।
63 – শুয়’আরা
فَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنِ ٱضْرِب بِّعَصَاكَ ٱلْبَحْرَۖ فَٱنفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَٱلطَّوْدِ ٱلْعَظِيمِ
অতঃপর আমি মূসার প্রতি অহী করলামঃ তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর, ফলে তা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বত সদৃশ হয়ে গেল।
64 – শুয়’আরা
وَأَزْلَفْنَا ثَمَّ ٱلْءَاخَرِينَ
আমি সেখানে উপনীত করলাম অপর দলটিকে।
65 – শুয়’আরা
وَأَنجَيْنَا مُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُۥٓ أَجْمَعِينَ
এবং আমি উদ্ধার করলাম মূসা ও তার সঙ্গী সকলকে।
66 – শুয়’আরা
ثُمَّ أَغْرَقْنَا ٱلْءَاخَرِينَ
অতঃপর নিমজ্জিত করলাম অপর দলটিকে।
67 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
68 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
এবং তোমার রাব্ব – তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
69 – শুয়’আরা
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ إِبْرَٰهِيمَ
তাদের নিকট ইবরাহীমের বৃত্তান্ত বর্ণনা কর।
70 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَا تَعْبُدُونَ
সে যখন তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা কিসের ইবাদাত কর?
71 – শুয়’আরা
قَالُواۡ نَعْبُدُ أَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عَٰكِفِينَ
তারা বললঃ আমরা মূর্তি পূজা করি এবং আমরা নিষ্ঠার সাথে তাদের পূজায় রত থাকব।
72 – শুয়’আরা
قَالَ هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ إِذْ تَدْعُونَ
সে বললঃ তোমরা প্রার্থনা করলে তারা কি শোনে?
73 – শুয়’আরা
أَوْ يَنفَعُونَكُمْ أَوْ يَضُرُّونَ
অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা অপকার করতে পারে?
74 – শুয়’আরা
قَالُواۡ بَلْ وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا كَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ
তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে এরূপই করতে দেখেছি।
75 – শুয়’আরা
قَالَ أَفَرَءَيْتُم مَّا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ
সে বললঃ তোমরা কি তার সম্বন্ধে ভেবে দেখেছ যার পূজা করছ –
76 – শুয়’আরা
أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُمُ ٱلْأَقْدَمُونَ
তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা?
77 – শুয়’আরা
فَإِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِّىٓ إِلَّا رَبَّ ٱلْعَٰلَمِينَ
তারা সবাই আমার শত্রু, জগতসমূহের রাব্ব ব্যতীত।
78 – শুয়’আরা
ٱلَّذِى خَلَقَنِى فَهُوَ يَهْدِينِ
তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই আমাকে পথ প্রদর্শন করেন।
79 – শুয়’আরা
وَٱلَّذِى هُوَ يُطْعِمُنِى وَيَسْقِينِ
তিনিই আমাকে দান করেন আহার্য ও পানীয়।
80 – শুয়’আরা
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
এবং অসুস্থ হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন।
81 – শুয়’আরা
وَٱلَّذِى يُمِيتُنِى ثُمَّ يُحْيِينِ
আর তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর আমাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।
82 – শুয়’আরা
وَٱلَّذِىٓ أَطْمَعُ أَن يَغْفِرَ لِى خَطِيٓـَٔتِى يَوْمَ ٱلدِّينِ
এবং আশা করি, তিনি কিয়ামাত দিবসে আমার অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।
83 – শুয়’আরা
رَبِّ هَبْ لِى حُكْمًا وَأَلْحِقْنِى بِٱلصَّٰلِحِينَ
হে আমার রাব্ব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎ কর্মপরায়ণদের সাথে আমাকে মিলিত করুন।
84 – শুয়’আরা
وَٱجْعَل لِّى لِسَانَ صِدْقٍ فِى ٱلْءَاخِرِينَ
আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী করুন!
85 – শুয়’আরা
وَٱجْعَلْنِى مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ ٱلنَّعِيمِ
এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন!
86 – শুয়’আরা
وَٱغْفِرْ لِأَبِىٓ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلضَّآلِّينَ
আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, সেতো পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
87 – শুয়’আরা
وَلَا تُخْزِنِى يَوْمَ يُبْعَثُونَ
এবং আমাকে লাঞ্ছিত করবেননা পুনরুত্থান দিবসে –
88 – শুয়’আরা
يَوْمَ لَا يَنفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ
যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবেনা।
89 – শুয়’আরা
إِلَّا مَنْ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ
সেদিন উপকৃত হবে শুধু সে, যে আল্লাহর নিকট আসবে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে।
90 – শুয়’আরা
وَأُزْلِفَتِ ٱلْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ
মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হবে জান্নাত।
91 – শুয়’আরা
وَبُرِّزَتِ ٱلْجَحِيمُ لِلْغَاوِينَ
আর পথভ্রষ্টদের জন্য উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম।
92 – শুয়’আরা
وَقِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ
তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের ইবাদাত করতে –
93 – শুয়’আরা
مِن دُونِ ٱللَّهِ هَلْ يَنصُرُونَكُمْ أَوْ يَنتَصِرُونَ
আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে অথবা তারা কি আত্মরক্ষা করতে সক্ষম?
94 – শুয়’আরা
فَكُبْكِبُواۡ فِيهَا هُمْ وَٱلْغَاوُۥنَ
অতঃপর তাদেরকে ও পথভ্রষ্টদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
95 – শুয়’আরা
وَجُنُودُ إِبْلِيسَ أَجْمَعُونَ
এবং ইবলীস বাহিনীর সবাইকেও।
96 – শুয়’আরা
قَالُواۡ وَهُمْ فِيهَا يَخْتَصِمُونَ
তারা সেখানে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে বলবে –
97 – শুয়’আরা
تَٱللَّهِ إِن كُنَّا لَفِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
আল্লাহর শপথ! আমরাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিলাম।
98 – শুয়’আরা
إِذْ نُسَوِّيكُم بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
যখন আমরা তোমাদেরকে জগতসমূহের রবের সমকক্ষ মনে করতাম।
99 – শুয়’আরা
وَمَآ أَضَلَّنَآ إِلَّا ٱلْمُجْرِمُونَ
আমাদেরকে দুস্কৃতকারীরাই বিভ্রান্ত করেছিল।
100 – শুয়’আরা
فَمَا لَنَا مِن شَٰفِعِينَ
পরিণামে আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
101 – শুয়’আরা
وَلَا صَدِيقٍ حَمِيمٍ
কোন সহৃদয় বন্ধুও নেই।
102 – শুয়’আরা
فَلَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَكُونَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
হায়! যদি আমাদের একবার প্রত্যাবর্তনের সুযোগ ঘটত তাহলে আমরা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম!
103 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশ মু’মিন নয়।
104 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
105 – শুয়’আরা
كَذَّبَتْ قَوْمُ نُوحٍ ٱلْمُرْسَلِينَ
নূহের সম্প্রদায় রাসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল।
106 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ
যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা?
107 – শুয়’আরা
إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
108 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
109 – শুয়’আরা
وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা; আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে।
110 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
111 – শুয়’আরা
قَالُوٓاۡ أَنُؤْمِنُ لَكَ وَٱتَّبَعَكَ ٱلْأَرْذَلُونَ
তারা বললঃ আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব, অথচ ইতর লোকেরা তোমার অনুসরণ করছে?
112 – শুয়’আরা
قَالَ وَمَا عِلْمِى بِمَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
নূহ বললঃ তারা কি কাজ করছে তা জানা আমার কি দরকার?
113 – শুয়’আরা
إِنْ حِسَابُهُمْ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّىۖ لَوْ تَشْعُرُونَ
তাদের হিসাব গ্রহণতো আমার রবেরই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে।
114 – শুয়’আরা
وَمَآ أَنَا۠ بِطَارِدِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
মু’মিনদেরকে তাড়িয়ে দেয়া আমার কাজ নয়,
115 – শুয়’আরা
إِنْ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
আমিতো শুধু একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।
116 – শুয়’আরা
قَالُواۡ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ يَٰنُوحُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمَرْجُومِينَ
তারা বললঃ হে নূহ! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তাহলে তুমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
117 – শুয়’আরা
قَالَ رَبِّ إِنَّ قَوْمِى كَذَّبُونِ
নূহ বললঃ হে আমার রাব্ব! আমার সম্প্রদায়তো আমাকে অস্বীকার করছে।
118 – শুয়’আরা
فَٱفْتَحْ بَيْنِى وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَنَجِّنِى وَمَن مَّعِىَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
সুতরাং আমার ও তাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করে দিন এবং আমাকে এবং আমার সাথে যে সব মু’মিন রয়েছে তাদেরকে রক্ষা করুন।
119 – শুয়’আরা
فَأَنجَيْنَٰهُ وَمَن مَّعَهُۥ فِى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ
অতঃপর আমি তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম বোঝাই করা নৌ-যানে।
120 – শুয়’আরা
ثُمَّ أَغْرَقْنَا بَعْدُ ٱلْبَاقِينَ
অতঃপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জিত করলাম।
121 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
122 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
এবং তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, দয়ালু।
123 – শুয়’আরা
كَذَّبَتْ عَادٌ ٱلْمُرْسَلِينَ
‘আদ সম্প্রদায় রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল।
124 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ
যখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা?
125 – শুয়’আরা
إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
126 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
127 – শুয়’আরা
وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি তোমাদের নিকট এর জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকট রয়েছে।
128 – শুয়’আরা
أَتَبْنُونَ بِكُلِّ رِيعٍ ءَايَةً تَعْبَثُونَ
তোমরা কি প্রতিটি উঁচু স্থানে নিরর্থক স্মৃতিসৌধ/ভাস্কর্য নির্মাণ করছ?
129 – শুয়’আরা
وَتَتَّخِذُونَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمْ تَخْلُدُونَ
আর তোমরা প্রাসাদ নির্মাণ করছ এই মনে করে যে, তোমরা চিরস্থায়ী হবে?
130 – শুয়’আরা
وَإِذَا بَطَشْتُم بَطَشْتُمْ جَبَّارِينَ
এবং যখন তোমরা আঘাত হান তখন আঘাত হেনে থাক কঠোরভাবে।
131 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
132 – শুয়’আরা
وَٱتَّقُواۡ ٱلَّذِىٓ أَمَدَّكُم بِمَا تَعْلَمُونَ
ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন সেই সমূদয় জ্ঞান যা তোমরা জান।
133 – শুয়’আরা
أَمَدَّكُم بِأَنْعَٰمٍ وَبَنِينَ
তোমাদের দিয়েছেন পশু-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি।
134 – শুয়’আরা
وَجَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
উদ্যান ও প্রস্রবন।
135 – শুয়’আরা
إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
আমি তোমাদের জন্য আশংকা করি মহা দিনের শাস্তির।
136 – শুয়’আরা
قَالُواۡ سَوَآءٌ عَلَيْنَآ أَوَعَظْتَ أَمْ لَمْ تَكُن مِّنَ ٱلْوَٰعِظِينَ
তারা বললঃ তুমি উপদেশ দাও অথবা না’ই দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান।
137 – শুয়’আরা
إِنْ هَٰذَآ إِلَّا خُلُقُ ٱلْأَوَّلِينَ
এটাতো পূর্ববর্তীদেরই স্বভাব।
138 – শুয়’আরা
وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ
আমরা শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত নই।
139 – শুয়’আরা
فَكَذَّبُوهُ فَأَهْلَكْنَٰهُمْۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
অতঃপর তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং আমি তাদের ধ্বংস করলাম। এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
140 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
এবং তোমার রাব্ব পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
141 – শুয়’আরা
كَذَّبَتْ ثَمُودُ ٱلْمُرْسَلِينَ
ছামূদ সম্প্রদায় রাসূলদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল।
142 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ صَٰلِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ
যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা?
143 – শুয়’আরা
إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
144 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
145 – শুয়’আরা
وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে।
146 – শুয়’আরা
أَتُتْرَكُونَ فِى مَا هَٰهُنَآ ءَامِنِينَ
তোমাদেরকে কি এ জগতে ভোগ বিলাসের মধ্যে নিরাপদে ছেড়ে দেয়া হবে –
147 – শুয়’আরা
فِى جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
উদ্যানে, প্রস্রবণে –
148 – শুয়’আরা
وَزُرُوعٍ وَنَخْلٍ طَلْعُهَا هَضِيمٌ
ও শস্যক্ষেতে এবং সুকোমল গুচ্ছ বিশিষ্ট খেজুর বাগানে?
149 – শুয়’আরা
وَتَنْحِتُونَ مِنَ ٱلْجِبَالِ بُيُوتًا فَٰرِهِينَ
তোমরাতো নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করেছ।
150 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
151 – শুয়’আরা
وَلَا تُطِيعُوٓاۡ أَمْرَ ٱلْمُسْرِفِينَ
এবং সীমা লংঘনকারীদের আদেশ মান্য করনা –
152 – শুয়’আরা
ٱلَّذِينَ يُفْسِدُونَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا يُصْلِحُونَ
যারা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করেনা।
153 – শুয়’আরা
قَالُوٓاۡ إِنَّمَآ أَنتَ مِنَ ٱلْمُسَحَّرِينَ
তারা বললঃ তুমিতো যাদুগ্রস্তদের অন্যতম।
154 – শুয়’আরা
مَآ أَنتَ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا فَأْتِ بِـَٔايَةٍ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তুমিতো আমাদের মত একজন মানুষ, অতএব তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে একটি নিদর্শন উপস্থিত কর।
155 – শুয়’আরা
قَالَ هَٰذِهِۦ نَاقَةٌ لَّهَا شِرْبٌ وَلَكُمْ شِرْبُ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ
সালিহ বললঃ এই যে উষ্ট্রী, এর জন্য রয়েছে পানি পানের এবং তোমাদের জন্য রয়েছে পানি পানের পালা নির্ধারিত এক এক দিনে।
156 – শুয়’আরা
وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوٓءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَظِيمٍ
এবং তোমরা ওর কোন অনিষ্ট সাধন করনা; তাহলে মহা দিনের শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে।
157 – শুয়’আরা
فَعَقَرُوهَا فَأَصْبَحُواۡ نَٰدِمِينَ
কিন্তু তারা ওকে বধ করল, পরিণামে তারা অনুতপ্ত হল।
158 – শুয়’আরা
فَأَخَذَهُمُ ٱلْعَذَابُۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
অতঃপর শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল; এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
159 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তোমার রাব্ব, তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
160 – শুয়’আরা
كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍ ٱلْمُرْسَلِينَ
লূতের সম্প্রদায় রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল।
161 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ
যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা?
162 – শুয়’আরা
إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
163 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
164 – শুয়’আরা
وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি এ জন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে।
165 – শুয়’আরা
أَتَأْتُونَ ٱلذُّكْرَانَ مِنَ ٱلْعَٰلَمِينَ
সৃষ্টির মধ্যে তোমরা কি শুধু পুরুষের সাথেই উপগত হবে?
166 – শুয়’আরা
وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُم مِّنْ أَزْوَٰجِكُمۚ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ
আর তোমাদের রাব্ব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীলোক সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা বর্জন করে থাক, বরং তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।
167 – শুয়’আরা
قَالُواۡ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ يَٰلُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمُخْرَجِينَ
তারা বললঃ হে লূত! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তাহলে অবশ্যই তুমি নির্বাসিত হবে।
168 – শুয়’আরা
قَالَ إِنِّى لِعَمَلِكُم مِّنَ ٱلْقَالِينَ
লূত বলল, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
169 – শুয়’আরা
رَبِّ نَجِّنِى وَأَهْلِى مِمَّا يَعْمَلُونَ
হে আমার রাব্ব! আমাকে ও আমার পরিবারবর্গকে, তারা যা করে তা হতে রক্ষা কর।
170 – শুয়’আরা
فَنَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ أَجْمَعِينَ
অতঃপর আমি তাকে এবং তার পরিবার পরিজনের সবাইকে রক্ষা করলাম –
171 – শুয়’আরা
إِلَّا عَجُوزًا فِى ٱلْغَٰبِرِينَ
এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
172 – শুয়’আরা
ثُمَّ دَمَّرْنَا ٱلْءَاخَرِينَ
অতঃপর অন্যদেরকে ধ্বংস করলাম।
173 – শুয়’আরা
وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًاۖ فَسَآءَ مَطَرُ ٱلْمُنذَرِينَ
তাদের উপর শাস্তিমূলক বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম, এবং ভীতি প্রদর্শনের জন্য এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট!
174 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
175 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
176 – শুয়’আরা
كَذَّبَ أَصْحَٰبُ لْـَٔيْكَةِ ٱلْمُرْسَلِينَ
আইকাবাসীরা রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল –
177 – শুয়’আরা
إِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَيْبٌ أَلَا تَتَّقُونَ
যখন শু‘আইব তাদেরকে বলেছিলঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা?
178 – শুয়’আরা
إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
আমিতো তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রাসূল।
179 – শুয়’আরা
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
180 – শুয়’আরা
وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা; আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে।
181 – শুয়’আরা
أَوْفُواۡ ٱلْكَيْلَ وَلَا تَكُونُواۡ مِنَ ٱلْمُخْسِرِينَ
তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিবে; যারা মাপে কমতি করে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা।
182 – শুয়’আরা
وَزِنُواۡ بِٱلْقِسْطَاسِ ٱلْمُسْتَقِيمِ
এবং তোমরা ওজন করবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়।
183 – শুয়’আরা
وَلَا تَبْخَسُواۡ ٱلنَّاسَ أَشْيَآءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْاۡ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ
লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিবেনা এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে ফিরনা।
184 – শুয়’আরা
وَٱتَّقُواۡ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلْجِبِلَّةَ ٱلْأَوَّلِينَ
এবং তোমরা ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।
185 – শুয়’আরা
قَالُوٓاۡ إِنَّمَآ أَنتَ مِنَ ٱلْمُسَحَّرِينَ
তারা বললঃ তুমিতো যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
186 – শুয়’আরা
وَمَآ أَنتَ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَإِن نَّظُنُّكَ لَمِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
তুমি আমাদেরই মত একজন মানুষ বলে আমরা মনে করি, তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
187 – শুয়’আরা
فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে আকাশের একটি খন্ড আমাদের উপর ফেলে দাও।
188 – শুয়’আরা
قَالَ رَبِّىٓ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ
সে বললঃ আমার রাব্ব ভাল জানেন, যা তোমরা কর।
189 – শুয়’আরা
فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ ٱلظُّلَّةِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
অতঃপর তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল, পরে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি গ্রাস করল; এটাতো ছিল এক ভীষণ দিনের শাস্তি।
190 – শুয়’আরা
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
191 – শুয়’আরা
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তোমার রাব্ব! তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
192 – শুয়’আরা
وَإِنَّهُۥ لَتَنزِيلُ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
নিশ্চয়ই ইহা (আল কুরআন) জগতসমূহের রাব্ব হতে অবতারিত।
193 – শুয়’আরা
نَزَلَ بِهِ ٱلرُّوحُ ٱلْأَمِينُ
জিবরাঈল ইহা নিয়ে অবতরণ করেছে –
194 – শুয়’আরা
عَلَىٰ قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ ٱلْمُنذِرِينَ
তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি সতর্ককারী হতে পার।
195 – শুয়’আরা
بِلِسَانٍ عَرَبِىٍّ مُّبِينٍ
অবতীর্ণ করা হয়েছে সুস্পষ্ট আরাবী ভাষায়।
196 – শুয়’আরা
وَإِنَّهُۥ لَفِى زُبُرِ ٱلْأَوَّلِينَ
পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে অবশ্যই এর উল্লেখ রয়েছে।
197 – শুয়’আরা
أَوَلَمْ يَكُن لَّهُمْ ءَايَةً أَن يَعْلَمَهُۥ عُلَمَٰٓؤُاۡ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
বানী ইসরাঈলের পন্ডিতরা এটা অবগত আছে, এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয়?
198 – শুয়’আরা
وَلَوْ نَزَّلْنَٰهُ عَلَىٰ بَعْضِ ٱلْأَعْجَمِينَ
আমি যদি ইহা কোন আজমীর (ভিন্ন ভাষী) প্রতি অবতীর্ণ করতাম –
199 – শুয়’আরা
فَقَرَأَهُۥ عَلَيْهِم مَّا كَانُواۡ بِهِۦ مُؤْمِنِينَ
এবং ওটা সে তাদের নিকট পাঠ করত, তাহলে তারা তাতে ঈমান আনতনা।
200 – শুয়’আরা
كَذَٰلِكَ سَلَكْنَٰهُ فِى قُلُوبِ ٱلْمُجْرِمِينَ
এভাবেই আমি পাপীদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
201 – শুয়’আরা
لَا يُؤْمِنُونَ بِهِۦ حَتَّىٰ يَرَوُاۡ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَلِيمَ
তারা এতে ঈমান আনবেনা যতক্ষণ না তারা মর্মন্তদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
202 – শুয়’আরা
فَيَأْتِيَهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
অতঃপর এটা তাদের নিকট এসে পড়বে আকস্মিকভাবে, তারা কিছুই বুঝতে পারবেনা।
203 – শুয়’আরা
فَيَقُولُواۡ هَلْ نَحْنُ مُنظَرُونَ
তখন তারা বলবেঃ আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে?
204 – শুয়’আরা
أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ
তারা কি তাহলে আমার শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়?
205 – শুয়’আরা
أَفَرَءَيْتَ إِن مَّتَّعْنَٰهُمْ سِنِينَ
তুমি চিন্তা করে দেখ, যদি আমি তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাস করতে দিই,
206 – শুয়’আরা
ثُمَّ جَآءَهُم مَّا كَانُواۡ يُوعَدُونَ
অতঃপর তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল তা তাদের নিকট এসে পড়ে –
207 – শুয়’আরা
مَآ أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُواۡ يُمَتَّعُونَ
তখন তাদের ভোগ-বিলাসের উপকরণ তাদের কোন কাজে আসবে কি?
208 – শুয়’আরা
وَمَآ أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلَّا لَهَا مُنذِرُونَ
আমি এমন কোন জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য সতর্ককারী ছিলনা।
209 – শুয়’আরা
ذِكْرَىٰ وَمَا كُنَّا ظَٰلِمِينَ
এটা উপদেশ স্বরূপ, আর আমি অত্যাচারী নই।
210 – শুয়’আরা
وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ ٱلشَّيَٰطِينُ
শাইতানরা ইহাসহ অবতীর্ণ হয়নি।
211 – শুয়’আরা
وَمَا يَنۢبَغِى لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ
তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখেনা।
212 – শুয়’আরা
إِنَّهُمْ عَنِ ٱلسَّمْعِ لَمَعْزُولُونَ
তাদেরকে শ্রবণের সুযোগ হতে দূরে রাখা হয়েছে।
213 – শুয়’আরা
فَلَا تَدْعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ فَتَكُونَ مِنَ ٱلْمُعَذَّبِينَ
অতএব তুমি অন্য কোন মা‘বূদকে আল্লাহর সাথে ডেকোনা, তাহলে তুমি শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
214 – শুয়’আরা
وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ ٱلْأَقْرَبِينَ
তোমার নিকটতম আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও।
215 – শুয়’আরা
وَٱخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব মু’মিনের প্রতি বিনয়ী হও।
216 – শুয়’আরা
فَإِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ إِنِّى بَرِىٓءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ
তারা যদি তোমার অবাধ্যতা করে তাহলে তুমি বলঃ তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই।
217 – শুয়’আরা
وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱلْعَزِيزِ ٱلرَّحِيمِ
তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর।
218 – শুয়’আরা
ٱلَّذِى يَرَىٰكَ حِينَ تَقُومُ
যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও (সালাতের জন্য)।
219 – শুয়’আরা
وَتَقَلُّبَكَ فِى ٱلسَّٰجِدِينَ
এবং দেখেন সাজদাহকারীদের সাথে তোমার উঠা বসা।
220 – শুয়’আরা
إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
221 – শুয়’আরা
هَلْ أُنَبِّئُكُمْ عَلَىٰ مَن تَنَزَّلُ ٱلشَّيَٰطِينُ
তোমাদেরকে কি জানাব, কার নিকট শাইতানরা অবতীর্ণ হয়?
222 – শুয়’আরা
تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ
তারাতো অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক চরম মিথ্যাবাদী ও পাপীর নিকট।
223 – শুয়’আরা
يُلْقُونَ ٱلسَّمْعَ وَأَكْثَرُهُمْ كَٰذِبُونَ
তারা কান পেতে থাকে এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
224 – শুয়’আরা
وَٱلشُّعَرَآءُ يَتَّبِعُهُمُ ٱلْغَاوُۥنَ
এবং কবিদের অনুসরণ করে তারা, যারা বিভ্রান্ত।
225 – শুয়’আরা
أَلَمْ تَرَ أَنَّهُمْ فِى كُلِّ وَادٍ يَهِيمُونَ
তুমি কি দেখনা, তারা বিভ্রান্ত হয়ে প্রত্যেক উপত্যকায় ঘুরে বেড়ায়?
226 – শুয়’আরা
وَأَنَّهُمْ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ
এবং যা তারা করেনা, তা বলে।
227 – শুয়’আরা
إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَذَكَرُواۡ ٱللَّهَ كَثِيرًا وَٱنتَصَرُواۡ مِنۢ بَعْدِ مَا ظُلِمُواۡۗ وَسَيَعْلَمُ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاۡ أَىَّ مُنقَلَبٍ يَنقَلِبُونَ
কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা ঈমান আনে ও সৎকার্য করে এবং আল্লাহকে বার বার স্মরণ করে ও অত্যাচারিত হবার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের গন্তব্যস্থল কোথায়?

27 নং সূরা – আন-নাম্‌ল – اَلنَّمْل

মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 93
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

01 – নাম্‌ল
طسٓۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْقُرْءَانِ وَكِتَابٍ مُّبِينٍ
তা সীন; এগুলি আয়াত আল-কুরআনের এবং সুস্পষ্ট কিতাবের।
02 – নাম্‌ল
هُدًى وَبُشْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ
পথ নির্দেশ ও সুসংবাদ মু’মিনদের জন্য।
03 – নাম্‌ল
ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং যারা আখিরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী।
04 – নাম্‌ল
إِنَّ ٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِٱلْءَاخِرَةِ زَيَّنَّا لَهُمْ أَعْمَٰلَهُمْ فَهُمْ يَعْمَهُونَ
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তাদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকে আমি শোভন করেছি, ফলে তারা বিভ্রান্তিতে ঘুরে বেড়ায়।
05 – নাম্‌ল
أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَهُمْ سُوٓءُ ٱلْعَذَابِ وَهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِ هُمُ ٱلْأَخْسَرُونَ
এদেরই জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং এরাই আখিরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
06 – নাম্‌ল
وَإِنَّكَ لَتُلَقَّى ٱلْقُرْءَانَ مِن لَّدُنْ حَكِيمٍ عَلِيمٍ
নিশ্চয়ই তোমাকে আল কুরআন দেয়া হয়েছে প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের নিকট হতে।
07 – নাম্‌ল
إِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِأَهْلِهِۦٓ إِنِّىٓ ءَانَسْتُ نَارًا سَـَٔاتِيكُم مِّنْهَا بِخَبَرٍ أَوْ ءَاتِيكُم بِشِهَابٍ قَبَسٍ لَّعَلَّكُمْ تَصْطَلُونَ
স্মরণ কর সেই সময়ের কথা, যখন মূসা তার পরিবারবর্গকে বলেছিলঃ আমি আগুন দেখেছি, সত্ত্বর আমি সেখান হতে তোমাদের জন্য কোন খবর আনব অথবা তোমাদের জন্য আনব জ্বলন্ত অঙ্গার, যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার।
08 – নাম্‌ল
فَلَمَّا جَآءَهَا نُودِىَ أَنۢ بُورِكَ مَن فِى ٱلنَّارِ وَمَنْ حَوْلَهَا وَسُبْحَٰنَ ٱللَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
অতঃপর সে যখন ওর নিকট এলো তখন ঘোষিত হলঃ ধন্য সেই ব্যক্তি যে আছে এই আগুনের মধ্যে এবং যারা আছে ওর চতুস্পার্শ্বে। জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।
09 – নাম্‌ল
يَٰمُوسَىٰٓ إِنَّهُۥٓ أَنَا ٱللَّهُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
হে মূসা! আমিতো আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
10 – নাম্‌ল
وَأَلْقِ عَصَاكَۚ فَلَمَّا رَءَاهَا تَهْتَزُّ كَأَنَّهَا جَآنٌّ وَلَّىٰ مُدْبِرًا وَلَمْ يُعَقِّبْۚ يَٰمُوسَىٰ لَا تَخَفْ إِنِّى لَا يَخَافُ لَدَىَّ ٱلْمُرْسَلُونَ
তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর, অতঃপর যখন সে ওটাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখল তখন সে পিছনের দিকে ছুটতে লাগল এবং ফিরেও তাকালনা। বলা হলঃ হে মূসা! ভীত হয়োনা, নিশ্চয়ই আমি এমন, আমার সান্নিধ্যে রাসূলগণ ভয় পায়না।
11 – নাম্‌ল
إِلَّا مَن ظَلَمَ ثُمَّ بَدَّلَ حُسْنًۢا بَعْدَ سُوٓءٍ فَإِنِّى غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তবে যারা যুল্‌ম করার পর মন্দ কাজের পরিবর্তে সৎ কাজ করে তাদের প্রতি আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
12 – নাম্‌ল
وَأَدْخِلْ يَدَكَ فِى جَيْبِكَ تَخْرُجْ بَيْضَآءَ مِنْ غَيْرِ سُوٓءٍۖ فِى تِسْعِ ءَايَٰتٍ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَقَوْمِهِۦٓۚ إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَوْمًا فَٰسِقِينَ
তোমার হাত তোমার বক্ষপার্শ্বে বস্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করাও। এটা বের হয়ে আসবে শুভ্র নির্দোষ হয়ে; এটা ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের নিকট আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্তর্গত; তারাতো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।
13 – নাম্‌ল
فَلَمَّا جَآءَتْهُمْ ءَايَٰتُنَا مُبْصِرَةً قَالُواۡ هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
অতঃপর যখন তাদের নিকট আমার স্পষ্ট আয়াত এলো তখন তারা বললঃ এটাতো সুস্পষ্ট যাদু।
14 – নাম্‌ল
وَجَحَدُواۡ بِهَا وَٱسْتَيْقَنَتْهَآ أَنفُسُهُمْ ظُلْمًا وَعُلُوًّاۚ فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُفْسِدِينَ
তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে নিদর্শনগুলি প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর ঐগুলিকে সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। দেখ, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কি হয়েছিল!
15 – নাম্‌ল
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا دَاوُۥدَ وَسُلَيْمَٰنَ عِلْمًاۖ وَقَالَا ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ٱلَّذِى فَضَّلَنَا عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّنْ عِبَادِهِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
আমি অবশ্যই দাউদকে ও সুলাইমানকে জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তারা বলেছিলঃ প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদেরকে তাঁর বহু মু’মিন বান্দাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
16 – নাম্‌ল
وَوَرِثَ سُلَيْمَٰنُ دَاوُۥدَۖ وَقَالَ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ عُلِّمْنَا مَنطِقَ ٱلطَّيْرِ وَأُوتِينَا مِن كُلِّ شَىْءٍۖ إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلْفَضْلُ ٱلْمُبِينُ
সুলাইমান হয়েছিল দাউদের উত্তরাধিকারী এবং সে বলেছিলঃ হে লোক সকল! আমাকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু হতে প্রদান করা হয়েছে; এটা অবশ্যই সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।
17 – নাম্‌ল
وَحُشِرَ لِسُلَيْمَٰنَ جُنُودُهُۥ مِنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ وَٱلطَّيْرِ فَهُمْ يُوزَعُونَ
সুলাইমানের সামনে সমবেত করা হল তার বাহিনীকে, জিন, মানুষ ও পক্ষীকুলকে এবং তাদেরকে বিন্যস্ত করা হল বিভিন্ন বুহ্যে।
18 – নাম্‌ল
حَتَّىٰٓ إِذَآ أَتَوْاۡ عَلَىٰ وَادِ ٱلنَّمْلِ قَالَتْ نَمْلَةٌ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّمْلُ ٱدْخُلُواۡ مَسَٰكِنَكُمْ لَا يَحْطِمَنَّكُمْ سُلَيْمَٰنُ وَجُنُودُهُۥ وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
যখন তারা পিপীলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছল তখন এক পিপীলিকা বললঃ হে পিপীলিকা বাহিনী! তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর, যেন সুলাইমান এবং তার বাহিনী তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পদতলে পিষে না ফেলে।
19 – নাম্‌ল
فَتَبَسَّمَ ضَاحِكًا مِّن قَوْلِهَا وَقَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِىٓ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ ٱلَّتِىٓ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ وَعَلَىٰ وَٰلِدَىَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَٰلِحًا تَرْضَىٰهُ وَأَدْخِلْنِى بِرَحْمَتِكَ فِى عِبَادِكَ ٱلصَّٰلِحِينَ
সুলাইমান ওর উক্তিতে মৃদু হাস্য করল এবং বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তজ্জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করুন।
20 – নাম্‌ল
وَتَفَقَّدَ ٱلطَّيْرَ فَقَالَ مَا لِىَ لَآ أَرَى ٱلْهُدْهُدَ أَمْ كَانَ مِنَ ٱلْغَآئِبِينَ
সুলাইমান পক্ষীকুলের সন্ধান নিল এবং বললঃ ব্যাপার কি, হুদহুদকে দেখছিনা যে! সে অনুপস্থিত না কি?
21 – নাম্‌ল
لَأُعَذِّبَنَّهُۥ عَذَابًا شَدِيدًا أَوْ لَأَاۡذْبَحَنَّهُۥٓ أَوْ لَيَأْتِيَنِّى بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ
সে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে না পারলে আমি অবশ্যই তাকে কঠিন শাস্তি দিব অথবা যবাহ করব।
22 – নাম্‌ল
فَمَكَثَ غَيْرَ بَعِيدٍ فَقَالَ أَحَطتُ بِمَا لَمْ تُحِطْ بِهِۦ وَجِئْتُكَ مِن سَبَإٍۭ بِنَبَإٍ يَقِينٍ
অনতি বিলম্বে হুদহুদ এসে পড়ল এবং বললঃ আপনি যা অবগত নন আমি তা অবগত হয়েছি এবং ‘সাবা’ হতে সুনিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি।
23 – নাম্‌ল
إِنِّى وَجَدتُّ ٱمْرَأَةً تَمْلِكُهُمْ وَأُوتِيَتْ مِن كُلِّ شَىْءٍ وَلَهَا عَرْشٌ عَظِيمٌ
আমি এক নারীকে দেখলাম যে তাদের উপর রাজত্ব করছে; তাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে এবং তার আছে এক বিরাট সিংহাসন।
24 – নাম্‌ল
وَجَدتُّهَا وَقَوْمَهَا يَسْجُدُونَ لِلشَّمْسِ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَزَيَّنَ لَهُمُ ٱلشَّيْطَٰنُ أَعْمَٰلَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ ٱلسَّبِيلِ فَهُمْ لَا يَهْتَدُونَ
আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম, তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সাজদাহ করছে; শাইতান তাদের কার্যাবলী তাদের নিকট শোভন করেছে এবং তাদেরকে সৎ পথ হতে নিবৃত্ত করেছে; ফলে তারা সৎ পথ প্রাপ্ত হয়না –
25 – নাম্‌ল
أَلَّا يَسْجُدُواۡ لِلَّهِ ٱلَّذِى يُخْرِجُ ٱلْخَبْءَ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُخْفُونَ وَمَا تُعْلِنُونَ
তারা নিবৃত্ত রয়েছে আল্লাহকে সাজদাহ করা হতে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর লুকায়িত বস্তুকে প্রকাশ করেন, এবং যিনি জানেন যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর।
26 – নাম্‌ল
ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلْعَرْشِ ٱلْعَظِيمِ۩
আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। তিনি মহাআরশের অধিপতি। [সাজদাহ]
27 – নাম্‌ল
قَالَ سَنَنظُرُ أَصَدَقْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
সুলাইমান বললঃ আমি দেখব, তুমি সত্য বলেছ, না কি তুমি মিথ্যাবাদী?
28 – নাম্‌ল
ٱذْهَب بِّكِتَٰبِى هَٰذَا فَأَلْقِهْ إِلَيْهِمْ ثُمَّ تَوَلَّ عَنْهُمْ فَٱنظُرْ مَاذَا يَرْجِعُونَ
তুমি যাও আমার এই পত্র নিয়ে এবং এটা তাদের নিকট অর্পন কর; অতঃপর তাদের নিকট হতে দূরে সরে থেক এবং লক্ষ্য কর তাদের প্রতিক্রিয়া কি?
29 – নাম্‌ল
قَالَتْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُاۡ إِنِّىٓ أُلْقِىَ إِلَىَّ كِتَٰبٌ كَرِيمٌ
সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে।
30 – নাম্‌ল
إِنَّهُۥ مِن سُلَيْمَٰنَ وَإِنَّهُۥ بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
ইহা সুলাইমানের নিকট হতে এবং ইহা দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।
31 – নাম্‌ল
أَلَّا تَعْلُواۡ عَلَىَّ وَأْتُونِى مُسْلِمِينَ
অহমিকা বশে আমাকে অমান্য করনা, এবং আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট উপস্থিত হও।
32 – নাম্‌ল
قَالَتْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُاۡ أَفْتُونِى فِىٓ أَمْرِى مَا كُنتُ قَاطِعَةً أَمْرًا حَتَّىٰ تَشْهَدُونِ
সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমার এই সমস্যায় তোমাদের অভিমত দাও; আমি যা সিদ্ধান্ত নিই তাতো তোমাদের উপস্থিতিতেই নিই।
33 – নাম্‌ল
قَالُواۡ نَحْنُ أُوۡلُواۡ قُوَّةٍ وَأُوۡلُواۡ بَأْسٍ شَدِيدٍ وَٱلْأَمْرُ إِلَيْكِ فَٱنظُرِى مَاذَا تَأْمُرِينَ
তারা বললঃ আমরাতো শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা; তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। কি আদেশ করবেন তা আপনি ভেবে দেখুন।
34 – নাম্‌ল
قَالَتْ إِنَّ ٱلْمُلُوكَ إِذَا دَخَلُواۡ قَرْيَةً أَفْسَدُوهَا وَجَعَلُوٓاۡ أَعِزَّةَ أَهْلِهَآ أَذِلَّةًۖ وَكَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ
সে বললঃ রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন ওকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে অপদস্থ করে; এরাও এ রূপই করবে।
35 – নাম্‌ল
وَإِنِّى مُرْسِلَةٌ إِلَيْهِم بِهَدِيَّةٍ فَنَاظِرَةٌۢ بِمَ يَرْجِعُ ٱلْمُرْسَلُونَ
আমি তাদের নিকট উপঢৌকন পাঠাচ্ছি, দেখি দূতেরা কি বার্তা নিয়ে ফিরে আসে!
36 – নাম্‌ল
فَلَمَّا جَآءَ سُلَيْمَٰنَ قَالَ أَتُمِدُّونَنِ بِمَالٍ فَمَآ ءَاتَىٰنِۦَ ٱللَّهُ خَيْرٌ مِّمَّآ ءَاتَىٰكُم بَلْ أَنتُم بِهَدِيَّتِكُمْ تَفْرَحُونَ
অতঃপর যখন দূত সুলাইমানের নিকট এলো তখন সুলাইমান বললঃ তোমরা আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে কি সাহায্য করবে? আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন তা তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা হতে উৎকৃষ্ট। অথচ তোমরা তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে আনন্দ বোধ করছ।
37 – নাম্‌ল
ٱرْجِعْ إِلَيْهِمْ فَلَنَأْتِيَنَّهُم بِجُنُودٍ لَّا قِبَلَ لَهُم بِهَا وَلَنُخْرِجَنَّهُم مِّنْهَآ أَذِلَّةً وَهُمْ صَٰغِرُونَ
তাদের নিকট ফিরে যাও, আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে নিয়ে আসব এক সৈন্যবাহিনী যার মুকাবিলা করার শক্তি তাদের নেই। আমি অবশ্যই তাদেরকে সেখান হতে বহিস্কার করব লাঞ্ছিতভাবে এবং তারা হবে অপমানিত।
38 – নাম্‌ল
قَالَ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُاۡ أَيُّكُمْ يَأْتِينِى بِعَرْشِهَا قَبْلَ أَن يَأْتُونِى مُسْلِمِينَ
সুলাইমান আরও বললঃ হে আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার নিকট এসে আত্মসমর্পন করার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার নিকট নিয়ে আসবে?
39 – নাম্‌ল
قَالَ عِفْرِيتٌ مِّنَ ٱلْجِنِّ أَنَا۠ ءَاتِيكَ بِهِۦ قَبْلَ أَن تَقُومَ مِن مَّقَامِكَۖ وَإِنِّى عَلَيْهِ لَقَوِىٌّ أَمِينٌ
এক শক্তিশালী জিন বললঃ আপনি আপনার স্থান হতে উঠার পূর্বে আমি ওটা আপনার নিকট এনে দিব এবং এ ব্যাপারে আমি অবশ্যই ক্ষমতাবান, বিশ্বস্ত।
40 – নাম্‌ল
قَالَ ٱلَّذِى عِندَهُۥ عِلْمٌ مِّنَ ٱلْكِتَٰبِ أَنَا۠ ءَاتِيكَ بِهِۦ قَبْلَ أَن يَرْتَدَّ إِلَيْكَ طَرْفُكَۚ فَلَمَّا رَءَاهُ مُسْتَقِرًّا عِندَهُۥ قَالَ هَٰذَا مِن فَضْلِ رَبِّى لِيَبْلُوَنِىٓ ءَأَشْكُرُ أَمْ أَكْفُرُۖ وَمَن شَكَرَ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِۦۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ رَبِّى غَنِىٌّ كَرِيمٌ
কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বললঃ আপনি চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি ওটা আপনাকে এনে দিব। সুলাইমান যখন ওটা সামনে রক্ষিত অবস্থায় দেখল তখন সে বললঃ এটা আমার রবের অনুগ্রহ যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ; যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা করে তার নিজের কল্যাণের জন্য এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় সে জেনে রাখুক যে, আমার রাব্ব অভাবমুক্ত, মহানুভব।
41 – নাম্‌ল
قَالَ نَكِّرُواۡ لَهَا عَرْشَهَا نَنظُرْ أَتَهْتَدِىٓ أَمْ تَكُونُ مِنَ ٱلَّذِينَ لَا يَهْتَدُونَ
সুলাইমান বললঃ তার সিংহাসনের আকৃতি বদলে দাও; দেখি সে সঠিক দিশা পায়, না কি সে বিভ্রান্তের অন্তর্ভুক্ত হয়।
42 – নাম্‌ল
فَلَمَّا جَآءَتْ قِيلَ أَهَٰكَذَا عَرْشُكِۖ قَالَتْ كَأَنَّهُۥ هُوَۚ وَأُوتِينَا ٱلْعِلْمَ مِن قَبْلِهَا وَكُنَّا مُسْلِمِينَ
ঐ নারী যখন এলো, তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলঃ তোমার সিংহাসন কি এইরূপই? সে বললঃ এটাতো যেন ওটাই; আমাদেরকে ইতোপূর্বেই প্রকৃত জ্ঞান দান করা হয়েছে এবং আমরা আত্মসমর্পনও করেছি।
43 – নাম্‌ল
وَصَدَّهَا مَا كَانَت تَّعْبُدُ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ إِنَّهَا كَانَتْ مِن قَوْمٍ كَٰفِرِينَ
আল্লাহর পরিবর্তে সে যার পূজা করত তা’ই তাকে সত্য হতে নিবৃত করেছিল, সে ছিল কাফির সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
44 – নাম্‌ল
قِيلَ لَهَا ٱدْخُلِى ٱلصَّرْحَۖ فَلَمَّا رَأَتْهُ حَسِبَتْهُ لُجَّةً وَكَشَفَتْ عَن سَاقَيْهَاۚ قَالَ إِنَّهُۥ صَرْحٌ مُّمَرَّدٌ مِّن قَوَارِيرَۗ قَالَتْ رَبِّ إِنِّى ظَلَمْتُ نَفْسِى وَأَسْلَمْتُ مَعَ سُلَيْمَٰنَ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
তাকে বলা হলঃ এই প্রাসাদে প্রবেশ কর। যখন সে ওটা দেখল তখন সে ওটাকে এক গভীর জলাশয় মনে করল এবং সে তার উভয় পায়ের গোছা অনাবৃত করল। সুলাইমান বললঃ স্বচ্ছ স্ফটিক মন্ডিত প্রাসাদ। সেই নারী বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো নিজের প্রতি যুল্‌ম করেছিলাম, আমি সুলাইমানের সাথে জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করছি।
45 – নাম্‌ল
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَآ إِلَىٰ ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَٰلِحًا أَنِ ٱعْبُدُواۡ ٱللَّهَ فَإِذَا هُمْ فَرِيقَانِ يَخْتَصِمُونَ
আমি ছামূদ সম্প্রদায়ের নিকট তাদের ভাই সালিহকে পাঠিয়েছিলাম এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। কিন্তু তারা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হল।
46 – নাম্‌ল
قَالَ يَٰقَوْمِ لِمَ تَسْتَعْجِلُونَ بِٱلسَّيِّئَةِ قَبْلَ ٱلْحَسَنَةِۖ لَوْلَا تَسْتَغْفِرُونَ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কেন কল্যাণের পূর্বে অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছ? কেন তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছনা, যাতে তোমরা অনুগ্রহ ভাজন হতে পার?
47 – নাম্‌ল
قَالُواۡ ٱطَّيَّرْنَا بِكَ وَبِمَن مَّعَكَۚ قَالَ طَٰٓئِرُكُمْ عِندَ ٱللَّهِۖ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ تُفْتَنُونَ
তারা বললঃ তোমাকে ও তোমার সঙ্গে যারা আছে তাদেরকে আমরা অমঙ্গলের কারণ মনে করি। সালিহ বললঃ তোমাদের শুভাশুভ আল্লাহর এখতিয়ারে, বস্তুতঃ তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
48 – নাম্‌ল
وَكَانَ فِى ٱلْمَدِينَةِ تِسْعَةُ رَهْطٍ يُفْسِدُونَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا يُصْلِحُونَ
আর সেই শহরে ছিল এমন নয় ব্যক্তি যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করত এবং সৎ কাজ করতনা।
49 – নাম্‌ল
قَالُواۡ تَقَاسَمُواۡ بِٱللَّهِ لَنُبَيِّتَنَّهُۥ وَأَهْلَهُۥ ثُمَّ لَنَقُولَنَّ لِوَلِيِّهِۦ مَا شَهِدْنَا مَهْلِكَ أَهْلِهِۦ وَإِنَّا لَصَٰدِقُونَ
তারা বললঃ তোমরা আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ কর; আমরা রাতে তাকে ও তার পরিবার পরিজনকে অবশ্যই আক্রমণ করব, অতঃপর তার অভিভাবককে নিশ্চিত বলবঃ তার পরিবার পরিজনের হত্যা আমরা প্রত্যক্ষ করিনি; আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।
50 – নাম্‌ল
وَمَكَرُواۡ مَكْرًا وَمَكَرْنَا مَكْرًا وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
তারা এক চক্রান্ত করেছিল এবং আমিও এক কৌশল অবলম্বন করলাম, কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি।
51 – নাম্‌ল
فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ مَكْرِهِمْ أَنَّا دَمَّرْنَٰهُمْ وَقَوْمَهُمْ أَجْمَعِينَ
অতএব দেখ, তাদের চক্রান্তের পরিণাম কি হয়েছে। আমি অবশ্যই তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়ের সকলকে ধ্বংস করেছি।
52 – নাম্‌ল
فَتِلْكَ بُيُوتُهُمْ خَاوِيَةًۢ بِمَا ظَلَمُوٓاۡۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এইতো তাদের ঘরবাড়ী সীমা লংঘন হেতু যা জনশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে; এতে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।
53 – নাম্‌ল
وَأَنجَيْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَكَانُواۡ يَتَّقُونَ
এবং যারা মু’মিন ও মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি।
54 – নাম্‌ল
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَتَأْتُونَ ٱلْفَٰحِشَةَ وَأَنتُمْ تُبْصِرُونَ
স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা জেনে শুনে কেন অশ্লীল কাজ করছ?
55 – নাম্‌ল
أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ ٱلرِّجَالَ شَهْوَةً مِّن دُونِ ٱلنِّسَآءِۚ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ
তোমরা কি কাম-তৃপ্তির জন্য নারীকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরাতো এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।
56 – নাম্‌ল
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِۦٓ إِلَّآ أَن قَالُوٓاۡ أَخْرِجُوٓاۡ ءَالَ لُوطٍ مِّن قَرْيَتِكُمْۖ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ
উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু বললঃ লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ হতে বহিস্কার কর, এরাতো এমন লোক যারা অতি পবিত্র সাজতে চায়।
57 – নাম্‌ল
فَأَنجَيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ قَدَّرْنَٰهَا مِنَ ٱلْغَٰبِرِينَ
অতঃপর তাকে ও তার পরিজনবর্গকে আমি উদ্ধার করলাম, তার স্ত্রী ব্যতীত, তাকে করেছিলাম ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
58 – নাম্‌ল
وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًاۖ فَسَآءَ مَطَرُ ٱلْمُنذَرِينَ
তাদের উপর ভয়ঙ্কর বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম; যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল তাদের জন্য এই বর্ষণ ছিল কত মারাত্মক।
59 – নাম্‌ল
قُلِ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ وَسَلَٰمٌ عَلَىٰ عِبَادِهِ ٱلَّذِينَ ٱصْطَفَىٰٓۗ ءَآللَّهُ خَيْرٌ أَمَّا يُشْرِكُونَ
বলঃ প্রশংসা আল্লাহই এবং শান্তি তাঁর মনোনীত বান্দাদের প্রতি। শ্রেষ্ঠ কি আল্লাহ, নাকি তারা যাদেরকে শরীক করা হয়?
60 – নাম্‌ল
أَمَّنْ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَأَنزَلَ لَكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَنۢبَتْنَا بِهِۦ حَدَآئِقَ ذَاتَ بَهْجَةٍ مَّا كَانَ لَكُمْ أَن تُنۢبِتُواۡ شَجَرَهَآۗ أَءِلَٰهٌ مَّعَ ٱللَّهِۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَعْدِلُونَ
বরং তিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং আকাশ হতে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেন বৃষ্টি; অতঃপর আমি ওটা দ্বারা মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি। ওর বৃক্ষাদি উদ্গত করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তবুও তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা সত্য হতে বিচ্যুত।
61 – নাম্‌ল
أَمَّن جَعَلَ ٱلْأَرْضَ قَرَارًا وَجَعَلَ خِلَٰلَهَآ أَنْهَٰرًا وَجَعَلَ لَهَا رَوَٰسِىَ وَجَعَلَ بَيْنَ ٱلْبَحْرَيْنِ حَاجِزًاۗ أَءِلَٰهٌ مَّعَ ٱللَّهِۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
বলত, কে পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং ওর মাঝে মাঝে প্রবাহিত করেছেন নদ-নদী এবং তাকে স্থির রাখার জন্য স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বত ও দুই সমুদ্রের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন অন্তরায়; আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তবুও তাদের অনেকেই জানেনা।
62 – নাম্‌ল
أَمَّن يُجِيبُ ٱلْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ ٱلسُّوٓءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَآءَ ٱلْأَرْضِۗ أَءِلَٰهٌ مَّعَ ٱللَّهِۚ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
কে আর্তের আহবানে সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদ-আপদ দূর করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তোমরা উপদেশ অতি সামান্যই গ্রহণ করে থাকো।
63 – নাম্‌ল
أَمَّن يَهْدِيكُمْ فِى ظُلُمَٰتِ ٱلْبَرِّ وَٱلْبَحْرِ وَمَن يُرْسِلُ ٱلرِّيَٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِهِۦٓۗ أَءِلَٰهٌ مَّعَ ٱللَّهِۚ تَعَٰلَى ٱللَّهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ
কে তোমাদেরকে স্থলের ও পানির অন্ধকারে পথ প্রদর্শন করেন এবং কে স্বীয় অনুগ্রহের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী বায়ু প্রেরণ করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তারা যাকে শরীক করে আল্লাহ তা হতে বহু উর্ধ্বে।
64 – নাম্‌ল
أَمَّن يَبْدَؤُاۡ ٱلْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُۥ وَمَن يَرْزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِۗ أَءِلَٰهٌ مَّعَ ٱللَّهِۚ قُلْ هَاتُواۡ بُرْهَٰنَكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
বলত, কে আদিতে সৃষ্টি করেন, অতঃপর ওর পুনরাবৃত্তি করবেন, এবং কে তোমাদেরকে আকাশ ও পৃথিবী হতে জীবনোপকরণ দান করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? বলঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর।
65 – নাম্‌ল
قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ٱلْغَيْبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ
বলঃ আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেহই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখেনা এবং তারা জানেনা তারা কখন পুনরুত্থিত হবে।
66 – নাম্‌ল
بَلِ ٱدَّٰرَكَ عِلْمُهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِۚ بَلْ هُمْ فِى شَكٍّ مِّنْهَاۖ بَلْ هُم مِّنْهَا عَمُونَ
বরং আখিরাত সম্পর্কে তাদের জ্ঞান নিঃশেষ হয়েছে; তারাতো এ বিষয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছে, বরং এ বিষয়ে তারা অন্ধ।
67 – নাম্‌ল
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ أَءِذَا كُنَّا تُرَٰبًا وَءَابَآؤُنَآ أَئِنَّا لَمُخْرَجُونَ
কাফিরেরা বলেঃ আমরা ও আমাদের পিতৃ-পুরুষরা মাটিতে পরিণত হয়ে গেলেও কি আমাদের পুনরুত্থিত করা হবে?
68 – নাম্‌ল
لَقَدْ وُعِدْنَا هَٰذَا نَحْنُ وَءَابَآؤُنَا مِن قَبْلُ إِنْ هَٰذَآ إِلَّآ أَسَٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ
এ বিষয়েতো আমাদেরকে এবং পূর্ব-পুরুষদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এটাতো পূর্ববর্তী উপকথা ব্যতীত আর কিছুই নয়।
69 – নাম্‌ল
قُلْ سِيرُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ فَٱنظُرُواۡ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُجْرِمِينَ
বলঃ পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ অপরাধীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে।
70 – নাম্‌ল
وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُن فِى ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ
তাদের সম্পর্কে তুমি দুঃখ করনা এবং তাদের ষড়যন্ত্রে মনঃক্ষুন্ন হয়োনা।
71 – নাম্‌ল
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا ٱلْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
তারা বলেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, কখন এই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে?
72 – নাম্‌ল
قُلْ عَسَىٰٓ أَن يَكُونَ رَدِفَ لَكُم بَعْضُ ٱلَّذِى تَسْتَعْجِلُونَ
বলঃ তোমরা যে বিষয়ে ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছ সম্ভবতঃ তার কিছু তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছে।
73 – নাম্‌ল
وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَشْكُرُونَ
নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
74 – নাম্‌ল
وَإِنَّ رَبَّكَ لَيَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمْ وَمَا يُعْلِنُونَ
তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে তা তোমার রাব্ব অবশ্যই জানেন।
75 – নাম্‌ল
وَمَا مِنْ غَآئِبَةٍ فِى ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ إِلَّا فِى كِتَٰبٍ مُّبِينٍ
আকাশে ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন রহস্য নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই।
76 – নাম্‌ল
إِنَّ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ يَقُصُّ عَلَىٰ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ أَكْثَرَ ٱلَّذِى هُمْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
বানী ইসরাঈল যে সমস্ত বিষয়ে মতভেদ করে, এই কুরআন তার অধিকাংশ তাদের নিকট বিবৃত করে।
77 – নাম্‌ল
وَإِنَّهُۥ لَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
আর নিশ্চয়ই এটি মু’মিনদের জন্য হিদায়াত ও রাহমাত।
78 – নাম্‌ল
إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِى بَيْنَهُم بِحُكْمِهِۦۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْعَلِيمُ
তোমার রাব্ব নিজ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফাইসালা করে দিবেন। তিনি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ।
79 – নাম্‌ল
فَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِۖ إِنَّكَ عَلَى ٱلْحَقِّ ٱلْمُبِينِ
অতএব আল্লাহর উপর নির্ভর কর; তুমিতো স্পষ্ট সত্যে প্রতিষ্ঠিত।
80 – নাম্‌ল
إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ ٱلْمَوْتَىٰ وَلَا تُسْمِعُ ٱلصُّمَّ ٱلدُّعَآءَ إِذَا وَلَّوْاۡ مُدْبِرِينَ
মৃতকে তুমি কথা শোনাতে পারবেনা, বধিরকেও পারবেনা আহবান শোনাতে, যখন তারা পিছন ফিরে চলে যায়।
81 – নাম্‌ল
وَمَآ أَنتَ بِهَٰدِى ٱلْعُمْىِ عَن ضَلَٰلَتِهِمْۖ إِن تُسْمِعُ إِلَّا مَن يُؤْمِنُ بِـَٔايَٰتِنَا فَهُم مُّسْلِمُونَ
তুমি অন্ধদেরকে তাদের পথভ্রষ্টতা হতে পথে আনতে পারবে না। তুমি শোনাতে পারবে শুধু তাদেরকে যারা বিশ্বাস করে। আর তারাই আত্মসমর্পনকারী (মুসলিম)।
82 – নাম্‌ল
وَإِذَا وَقَعَ ٱلْقَوْلُ عَلَيْهِمْ أَخْرَجْنَا لَهُمْ دَآبَّةً مِّنَ ٱلْأَرْضِ تُكَلِّمُهُمْ أَنَّ ٱلنَّاسَ كَانُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا لَا يُوقِنُونَ
যখন ঘোষিত শাস্তি তাদের উপর এসে যাবে তখন আমি মাটির গহবর হতে বের করব এক জীব, যা তাদের সাথে কথা বলবে; এ জন্য যে, মানুষ আমার নিদর্শনে অবিশ্বাসী।
83 – নাম্‌ল
وَيَوْمَ نَحْشُرُ مِن كُلِّ أُمَّةٍ فَوْجًا مِّمَّن يُكَذِّبُ بِـَٔايَٰتِنَا فَهُمْ يُوزَعُونَ
স্মরণ কর সেই দিনের কথা যেদিন আমি সমবেত করব প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে এক একটি দলকে, যারা আমার নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করত এবং তাদেরকে সারিবদ্ধ করা হবে।
84 – নাম্‌ল
حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءُو قَالَ أَكَذَّبْتُم بِـَٔايَٰتِى وَلَمْ تُحِيطُواۡ بِهَا عِلْمًا أَمَّاذَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
যখন তারা সমবেত হবে তখন (আল্লাহ তাদেরকে) বলবেনঃ তোমরা আমার নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করেছিলে, অথচ ওটা তোমরা জ্ঞানায়ত্ত করতে পারনি? না তোমরা অন্য কিছু করছিলে?
85 – নাম্‌ল
وَوَقَعَ ٱلْقَوْلُ عَلَيْهِم بِمَا ظَلَمُواۡ فَهُمْ لَا يَنطِقُونَ
সীমা লংঘন হেতু তাদের উপর ঘোষিত শাস্তি এসে পড়বে; ফলে তারা কিছুই বলতে পারবেনা।
86 – নাম্‌ল
أَلَمْ يَرَوْاۡ أَنَّا جَعَلْنَا ٱلَّيْلَ لِيَسْكُنُواۡ فِيهِ وَٱلنَّهَارَ مُبْصِرًاۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
তারা কি অনুধাবন করেনা যে, আমি রাত সৃষ্টি করেছি তাদের বিশ্রামের জন্য এবং দিনকে করেছি আলোকপ্রদ? এতে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।
87 – নাম্‌ল
وَيَوْمَ يُنفَخُ فِى ٱلصُّورِ فَفَزِعَ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِى ٱلْأَرْضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۚ وَكُلٌّ أَتَوْهُ دَٰخِرِينَ
আর যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন আল্লাহ যাদেরকে চান তারা ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সবাই ভীত-বিহবল হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়।
88 – নাম্‌ল
وَتَرَى ٱلْجِبَالَ تَحْسَبُهَا جَامِدَةً وَهِىَ تَمُرُّ مَرَّ ٱلسَّحَابِۚ صُنْعَ ٱللَّهِ ٱلَّذِىٓ أَتْقَنَ كُلَّ شَىْءٍۚ إِنَّهُۥ خَبِيرٌۢ بِمَا تَفْعَلُونَ
তুমি পর্বতমালা দেখে অচল মনে করছ, অথচ সেদিন ওগুলি হবে মেঘপুঞ্জের ন্যায় চলমান, এটা আল্লাহরই সৃষ্টি-নৈপুণ্য, যিনি সব কিছুকে করেছেন সুষম। তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে তিনি সম্যক অবগত।
89 – নাম্‌ল
مَن جَآءَ بِٱلْحَسَنَةِ فَلَهُۥ خَيْرٌ مِّنْهَا وَهُم مِّن فَزَعٍ يَوْمَئِذٍ ءَامِنُونَ
যে কেহ সৎ কাজ নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিফল পাবে এবং সেদিন তারা শংকা হতে নিরাপদ থাকবে।
90 – নাম্‌ল
وَمَن جَآءَ بِٱلسَّيِّئَةِ فَكُبَّتْ وُجُوهُهُمْ فِى ٱلنَّارِ هَلْ تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
আর যে কেহ অসৎ কাজ নিয়ে আসবে, তাকে অধোমুখে নিক্ষেপ করা হবে আগুনে (এবং তাদেরকে বলা হবে) তোমরা যা করতে তারই প্রতিফল তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে।
91 – নাম্‌ল
إِنَّمَآ أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ رَبَّ هَٰذِهِ ٱلْبَلْدَةِ ٱلَّذِى حَرَّمَهَا وَلَهُۥ كُلُّ شَىْءٍۖ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ ٱلْمُسْلِمِينَ
আমিতো আদিষ্ট হয়েছি এই নগরীর রবের ইবাদাত করতে, যিনি একে করেছেন সম্মানিত। সব কিছু তাঁরই। আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি যেন আমি আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হই।
92 – নাম্‌ল
وَأَنْ أَتْلُوَاۡ ٱلْقُرْءَانَۖ فَمَنِ ٱهْتَدَىٰ فَإِنَّمَا يَهْتَدِى لِنَفْسِهِۦۖ وَمَن ضَلَّ فَقُلْ إِنَّمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلْمُنذِرِينَ
আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন আবৃত্তি করতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলঃ আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।
93 – নাম্‌ল
وَقُلِ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ سَيُرِيكُمْ ءَايَٰتِهِۦ فَتَعْرِفُونَهَاۚ وَمَا رَبُّكَ بِغَٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
আর বলঃ প্রশংসা আল্লাহরই, তিনি তোমাদেরকে সত্ত্বর দেখাবেন তাঁর নিদর্শন, তখন তোমরা তা বুঝতে পারবে। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে তোমাদের রাব্ব গাফিল নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

শাইখ আব্দুর রব আফ্ফান- দাওয়াহ ওয়া তাবলীগ ক্লাস, বিষয়- আকিদা (শবেবরাত)-২০, তাং- ১০-৫-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী – DWT class, বিষয়- রাসূলের আনুগত্য- ১৮, তাং- ১৭-০৮-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলালা মাদানী- কুরবানী-২০১৭, তাং- ১০-০৮-২০১৭
শাইখ জাকির হুসাইন- দাওয়াহ ওয়া তবলীগ ক্লাস, বিষয়- আরবী ভাষা শিক্ষা-৫, তাং- ২০-১১-২০১৬
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল – DWT ক্লাস, বিষয়- যিলহজ্জ্ব মাসের ১০ দিনের আমল ও ফযিল, তাং- ১-৮-২০১৭
আহলি সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা, শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী
© Dawah wa Tablig since 2013