12 নং সূরা – ইউসুফ – يُوسُف
মাক্কী – আয়াত সংখ্যা: 111
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – ইউসুফ
الٓرۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ
আলিফ-লাম-রা এগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
2 – ইউসুফ
إِنَّآ أَنزَلْنَٰهُ قُرْءَٰنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
আমি অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
3 – ইউসুফ
نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ أَحْسَنَ ٱلْقَصَصِ بِمَآ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ وَإِن كُنتَ مِن قَبْلِهِۦ لَمِنَ ٱلْغَٰفِلِينَ
আমি তোমার কাছে উত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, অহীর মাধ্যমে তোমার কাছে এই কুরআন প্রেরণ করে, যদিও এর পূর্বে তুমি ছিলে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত।
4 – ইউসুফ
إِذْ قَالَ يُوسُفُ لِأَبِيهِ يَٰٓأَبَتِ إِنِّى رَأَيْتُ أَحَدَ عَشَرَ كَوْكَبًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ رَأَيْتُهُمْ لِى سَٰجِدِينَ
যখন ইউসুফ তার পিতাকে বললঃ হে পিতা! আমি এগারটি নক্ষত্র, সূর্য এবং চাঁদকে দেখেছি – দেখেছি ওদেরকে আমার প্রতি সাজদাহবনত অবস্থায়।
5 – ইউসুফ
قَالَ يَٰبُنَىَّ لَا تَقْصُصْ رُءْيَاكَ عَلَىٰٓ إِخْوَتِكَ فَيَكِيدُواۡ لَكَ كَيْدًاۖ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لِلْإِنسَٰنِ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
সে বললঃ হে আমার পুত্র! তোমার স্বপ্নের বৃত্তান্ত তোমার ভাইদের নিকট বর্ণনা করনা; করলে তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে; শাইতানতো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
6 – ইউসুফ
وَكَذَٰلِكَ يَجْتَبِيكَ رَبُّكَ وَيُعَلِّمُكَ مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِ وَيُتِمُّ نِعْمَتَهُۥ عَلَيْكَ وَعَلَىٰٓ ءَالِ يَعْقُوبَ كَمَآ أَتَمَّهَا عَلَىٰٓ أَبَوَيْكَ مِن قَبْلُ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْحَٰقَۚ إِنَّ رَبَّكَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
এভাবে তোমার রাব্ব তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিবেন, আর তোমার প্রতি ও ইয়াকূবের পরিবার পরিজনের প্রতি অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন যেভাবে তিনি এটা পূর্বে পূর্ণ করেছিলেন তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি। নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
7 – ইউসুফ
لَّقَدْ كَانَ فِى يُوسُفَ وَإِخْوَتِهِۦٓ ءَايَٰتٌ لِّلسَّآئِلِينَ
ইউসুফ ও তার ভাইদের ঘটনায় জিজ্ঞাসুদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
8 – ইউসুফ
إِذْ قَالُواۡ لَيُوسُفُ وَأَخُوهُ أَحَبُّ إِلَىٰٓ أَبِينَا مِنَّا وَنَحْنُ عُصْبَةٌ إِنَّ أَبَانَا لَفِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
যখন তারা (ভাইয়েরা) বলেছিলঃ আমাদের পিতার নিকট ইউসুফ এবং তার ভাইই (বিন ইয়ামীন) অধিক প্রিয়, অথচ আমরা একটি সংহত দল, আমাদের পিতাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন ।
9 – ইউসুফ
ٱقْتُلُواۡ يُوسُفَ أَوِ ٱطْرَحُوهُ أَرْضًا يَخْلُ لَكُمْ وَجْهُ أَبِيكُمْ وَتَكُونُواۡ مِنۢ بَعْدِهِۦ قَوْمًا صَٰلِحِينَ
ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোন স্থানে ফেলে এসো। ফলে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের প্রতি নিবিষ্ট হবে এবং তারপর তোমরা ভাল লোক হয়ে যাবে।
10 – ইউসুফ
قَالَ قَآئِلٌ مِّنْهُمْ لَا تَقْتُلُواۡ يُوسُفَ وَأَلْقُوهُ فِى غَيَٰبَتِ ٱلْجُبِّ يَلْتَقِطْهُ بَعْضُ ٱلسَّيَّارَةِ إِن كُنتُمْ فَٰعِلِينَ
তাদের মধ্যে একজন বললঃ ইউসুফকে হত্যা করনা, বরং যদি তোমরা কিছু করতেই চাও তাহলে তাকে কোন গভীর কুপে নিক্ষেপ কর, যাত্রী দলের কেহ তাকে তুলে নিয়ে যাবে।
11 – ইউসুফ
قَالُواۡ يَٰٓأَبَانَا مَا لَكَ لَا تَأْمَ۫نَّا عَلَىٰ يُوسُفَ وَإِنَّا لَهُۥ لَنَٰصِحُونَ
তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! ইউসুফের ব্যাপারে আপনি আমাদেরকে অবিশ্বাস করছেন কেন, যদিও আমরা তার হিতাকাংখী?
12 – ইউসুফ
أَرْسِلْهُ مَعَنَا غَدًا يَرْتَعْ وَيَلْعَبْ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ
আপনি আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, সে ফলমূল খাবে ও খেলাধুলা করবে, আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করব।
13 – ইউসুফ
قَالَ إِنِّى لَيَحْزُنُنِىٓ أَن تَذْهَبُواۡ بِهِۦ وَأَخَافُ أَن يَأْكُلَهُ ٱلذِّئْبُ وَأَنتُمْ عَنْهُ غَٰفِلُونَ
সে বললঃ এটা আমাকে কষ্ট দিবে যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি ভয় করি, তোমরা তার প্রতি অমনোযোগী হলে তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে।
14 – ইউসুফ
قَالُواۡ لَئِنْ أَكَلَهُ ٱلذِّئْبُ وَنَحْنُ عُصْبَةٌ إِنَّآ إِذًا لَّخَٰسِرُونَ
তারা বললঃ আমরা একটি সংহত দল হওয়া সত্ত্বেও যদি তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলে তাহলেতো আমরা ক্ষতিগ্রস্তই হব।
15 – ইউসুফ
فَلَمَّا ذَهَبُواۡ بِهِۦ وَأَجْمَعُوٓاۡ أَن يَجْعَلُوهُ فِى غَيَٰبَتِ ٱلْجُبِّۚ وَأَوْحَيْنَآ إِلَيْهِ لَتُنَبِّئَنَّهُم بِأَمْرِهِمْ هَٰذَا وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
অতঃপর যখন তারা তাকে নিয়ে গেল এবং তাকে গভীর কূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল, এমতাবস্থায় আমি তাকে জানিয়ে দিলামঃ তুমি তাদেরকে তাদের এই কর্মের কথা অবশ্যই বলে দিবে যখন তারা তোমাকে চিনবেনা।
16 – ইউসুফ
وَجَآءُوٓ أَبَاهُمْ عِشَآءً يَبْكُونَ
তারা রাতে কাঁদতে কাঁদতে তাদের পিতার নিকট এলো।
17 – ইউসুফ
قَالُواۡ يَٰٓأَبَانَآ إِنَّا ذَهَبْنَا نَسْتَبِقُ وَتَرَكْنَا يُوسُفَ عِندَ مَتَٰعِنَا فَأَكَلَهُ ٱلذِّئْبُۖ وَمَآ أَنتَ بِمُؤْمِنٍ لَّنَا وَلَوْ كُنَّا صَٰدِقِينَ
তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়ের প্রতিযোগিতা করেছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু আপনিতো আমাদের বিশ্বাস করবেননা, যদিও আমরা সত্যবাদী।
18 – ইউসুফ
وَجَآءُو عَلَىٰ قَمِيصِهِۦ بِدَمٍ كَذِبٍۚ قَالَ بَلْ سَوَّلَتْ لَكُمْ أَنفُسُكُمْ أَمْرًاۖ فَصَبْرٌ جَمِيلٌۖ وَٱللَّهُ ٱلْمُسْتَعَانُ عَلَىٰ مَا تَصِفُونَ
আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লেপন করে এনেছিল। সে বললঃ না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যস্থল।
19 – ইউসুফ
وَجَآءَتْ سَيَّارَةٌ فَأَرْسَلُواۡ وَارِدَهُمْ فَأَدْلَىٰ دَلْوَهُۥۖ قَالَ يَٰبُشْرَىٰ هَٰذَا غُلَٰمٌۚ وَأَسَرُّوهُ بِضَٰعَةًۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِمَا يَعْمَلُونَ
এক যাত্রী দল এলো, তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে তার পানির বালতি নামিয়ে দিল, সে বলে উঠলঃ কি সুখবর! এ যে এক কিশোর! অতঃপর তারা তাকে পণ্য রূপে লুকিয়ে রাখল, তারা যা করছিল সেই বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবগত ছিলেন।
20 – ইউসুফ
وَشَرَوْهُ بِثَمَنٍۭ بَخْسٍ دَرَٰهِمَ مَعْدُودَةٍ وَكَانُواۡ فِيهِ مِنَ ٱلزَّٰهِدِينَ
আর তারা তাকে বিক্রি করল স্বল্প মূল্যে, মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে, তারা এতে ছিল নির্লোভ।
21 – ইউসুফ
وَقَالَ ٱلَّذِى ٱشْتَرَىٰهُ مِن مِّصْرَ لِٱمْرَأَتِهِۦٓ أَكْرِمِى مَثْوَىٰهُ عَسَىٰٓ أَن يَنفَعَنَآ أَوْ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدًاۚ وَكَذَٰلِكَ مَكَّنَّا لِيُوسُفَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلِنُعَلِّمَهُۥ مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِۚ وَٱللَّهُ غَالِبٌ عَلَىٰٓ أَمْرِهِۦ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
মিসরের যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেছিল, সে তার স্ত্রীকে বললঃ সম্মানজনকভাবে এর থাকার ব্যবস্থা কর, সম্ভবতঃ সে আমাদের উপকারে আসবে অথবা আমরা একে পুত্র রূপেও গ্রহণ করতে পারি এবং এভাবে আমি ইউসুফকে সেই দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম তাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেয়ার জন্য। আল্লাহ তাঁর কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।
22 – ইউসুফ
وَلَمَّا بَلَغَ أَشُدَّهُۥٓ ءَاتَيْنَٰهُ حُكْمًا وَعِلْمًاۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ
সে যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হল তখন আমি তাকে হিকমাত ও জ্ঞান দান করলাম, এবং এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করি।
23 – ইউসুফ
وَرَٰوَدَتْهُ ٱلَّتِى هُوَ فِى بَيْتِهَا عَن نَّفْسِهِۦ وَغَلَّقَتِ ٱلْأَبْوَٰبَ وَقَالَتْ هَيْتَ لَكَۚ قَالَ مَعَاذَ ٱللَّهِۖ إِنَّهُۥ رَبِّىٓ أَحْسَنَ مَثْوَاىَۖ إِنَّهُۥ لَا يُفْلِحُ ٱلظَّٰلِمُونَ
সে যে স্ত্রী লোকের গৃহে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎ কাজ কামনা করল এবং দরজাগুলি বন্ধ করে দিল ও বললঃ চলে এসো (আমরা কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করি), সে বললঃ আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি (আযীয) আমার প্রভু! তিনি আমাকে সম্মানজনকভাবে থাকতে দিয়েছেন, সীমালংঘনকারীরা সফলকাম হয়না।
24 – ইউসুফ
وَلَقَدْ هَمَّتْ بِهِۦۖ وَهَمَّ بِهَا لَوْلَآ أَن رَّءَا بُرْهَٰنَ رَبِّهِۦۚ كَذَٰلِكَ لِنَصْرِفَ عَنْهُ ٱلسُّوٓءَ وَٱلْفَحْشَآءَۚ إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُخْلَصِينَ
সেই রমণীতো তার প্রতি আসক্ত হয়ে ছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার রবের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করত। তাকে মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে ছিল আমার বিশুদ্ধ চিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
25 – ইউসুফ
وَٱسْتَبَقَا ٱلْبَابَ وَقَدَّتْ قَمِيصَهُۥ مِن دُبُرٍ وَأَلْفَيَا سَيِّدَهَا لَدَا ٱلْبَابِۚ قَالَتْ مَا جَزَآءُ مَنْ أَرَادَ بِأَهْلِكَ سُوٓءًا إِلَّآ أَن يُسْجَنَ أَوْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
তারা উভয়ে দৌড়ে দরযার দিকে গেল এবং স্ত্রী লোকটি পিছন হতে তার জামা ছিড়ে ফেলল, তারা স্ত্রী লোকটির স্বামীকে দরযার কাছে দেখতে পেল। স্ত্রী লোকটি বললঃ যে তোমার পরিবারের সাথে কু-কাজ কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ অথবা অন্য কোন বেদনাদায়ক শাস্তি ব্যতীত আর কি দন্ড হতে পারে?
26 – ইউসুফ
قَالَ هِىَ رَٰوَدَتْنِى عَن نَّفْسِىۚ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنْ أَهْلِهَآ إِن كَانَ قَمِيصُهُۥ قُدَّ مِن قُبُلٍ فَصَدَقَتْ وَهُوَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
সে (ইউসুফ) বললঃ সে’ই আমা হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিল। স্ত্রী লোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলঃ যদি তার জামার সম্মুখ দিক ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী ।
27 – ইউসুফ
وَإِن كَانَ قَمِيصُهُۥ قُدَّ مِن دُبُرٍ فَكَذَبَتْ وَهُوَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
আর যদি তার জামা পিছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি মিথ্যা কথা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী।
28 – ইউসুফ
فَلَمَّا رَءَا قَمِيصَهُۥ قُدَّ مِن دُبُرٍ قَالَ إِنَّهُۥ مِن كَيْدِكُنَّۖ إِنَّ كَيْدَكُنَّ عَظِيمٌ
সুতরাং গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়েছে তখন সে বললঃ ভীষণ তোমাদের ছলনা।
29 – ইউসুফ
يُوسُفُ أَعْرِضْ عَنْ هَٰذَاۚ وَٱسْتَغْفِرِى لِذَنۢبِكِۖ إِنَّكِ كُنتِ مِنَ ٱلْخَاطِـِٔينَ
হে ইউসুফ! তুমি এটা উপেক্ষা কর এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই তুমিই অপরাধী।
30 – ইউসুফ
وَقَالَ نِسْوَةٌ فِى ٱلْمَدِينَةِ ٱمْرَأَتُ ٱلْعَزِيزِ تُرَٰوِدُ فَتَىٰهَا عَن نَّفْسِهِۦۖ قَدْ شَغَفَهَا حُبًّاۖ إِنَّا لَنَرَىٰهَا فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
নগরে কতিপয় নারী বললঃ আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎ কাজ কামনা করেছে; প্রেম তাকে উম্মত্ত করেছে, আমরাতো তাকে দেখছি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে।
31 – ইউসুফ
فَلَمَّا سَمِعَتْ بِمَكْرِهِنَّ أَرْسَلَتْ إِلَيْهِنَّ وَأَعْتَدَتْ لَهُنَّ مُتَّكَـًٔا وَءَاتَتْ كُلَّ وَٰحِدَةٍ مِّنْهُنَّ سِكِّينًا وَقَالَتِ ٱخْرُجْ عَلَيْهِنَّۖ فَلَمَّا رَأَيْنَهُۥٓ أَكْبَرْنَهُۥ وَقَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ وَقُلْنَ حَٰشَ لِلَّهِ مَا هَٰذَا بَشَرًا إِنْ هَٰذَآ إِلَّا مَلَكٌ كَرِيمٌ
স্ত্রী লোকটি যখন তাদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনল, তখন সে তাদেরকে ডেকে পাঠাল, তাদের প্রত্যেককে একটি করে চাকু দিল এবং যুবককে বললঃ তাদের সামনে বের হও। অতঃপর তারা যখন তাকে দেখল তখন তারা তার সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। তারা বললঃ অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্য! এতো মানুষ নয়, এতো এক মহিমান্বিত মালাক/ফেরেশতা!
32 – ইউসুফ
قَالَتْ فَذَٰلِكُنَّ ٱلَّذِى لُمْتُنَّنِى فِيهِۖ وَلَقَدْ رَٰوَدتُّهُۥ عَن نَّفْسِهِۦ فَٱسْتَعْصَمَۖ وَلَئِن لَّمْ يَفْعَلْ مَآ ءَامُرُهُۥ لَيُسْجَنَنَّ وَلَيَكُونًا مِّنَ ٱلصَّٰغِرِينَ
সে বললঃ এই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ, আমি তার হতে অসৎ কাজ কামনা করেছি; কিন্তু সে নিজকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি, সে যদি তা না করে তাহলে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
33 – ইউসুফ
قَالَ رَبِّ ٱلسِّجْنُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا يَدْعُونَنِىٓ إِلَيْهِۖ وَإِلَّا تَصْرِفْ عَنِّى كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُن مِّنَ ٱلْجَٰهِلِينَ
ইউসুফ বললঃ হে আমার রাব্ব! এই নারীরা আমাকে যার প্রতি আহবান করছে তা অপেক্ষা কারাগার আমার কাছে অধিক প্রিয়। আপনি যদি আমাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা না করেন তাহলে ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব।
34 – ইউসুফ
فَٱسْتَجَابَ لَهُۥ رَبُّهُۥ فَصَرَفَ عَنْهُ كَيْدَهُنَّۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
অতঃপর তার রাব্ব তার আহবানে সাড়া দিলেন এবং তাদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন, তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
35 – ইউসুফ
ثُمَّ بَدَا لَهُم مِّنۢ بَعْدِ مَا رَأَوُاۡ ٱلْءَايَٰتِ لَيَسْجُنُنَّهُۥ حَتَّىٰ حِينٍ
নিদর্শনাবলী দেখার পর তাদের মনে হল যে, তাকে কিছু কালের জন্য কারারুদ্ধ করতেই হবে।
36 – ইউসুফ
وَدَخَلَ مَعَهُ ٱلسِّجْنَ فَتَيَانِۖ قَالَ أَحَدُهُمَآ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَعْصِرُ خَمْرًاۖ وَقَالَ ٱلْءَاخَرُ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِى خُبْزًا تَأْكُلُ ٱلطَّيْرُ مِنْهُۖ نَبِّئْنَا بِتَأْوِيلِهِۦٓۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ
তার সাথে দু’জন যুবক কারাগারে প্রবেশ করল, তাদের একজন বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আংগুর নিংড়িয়ে রস বের করছি এবং অপরজন বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আমার মাথায় রুটি বহন করছি এবং পাখী তা হতে খাচ্ছে, আমাদেরকে আপনি এর তাৎপর্য জানিয়ে দিন, আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি।
37 – ইউসুফ
قَالَ لَا يَأْتِيكُمَا طَعَامٌ تُرْزَقَانِهِۦٓ إِلَّا نَبَّأْتُكُمَا بِتَأْوِيلِهِۦ قَبْلَ أَن يَأْتِيَكُمَاۚ ذَٰلِكُمَا مِمَّا عَلَّمَنِى رَبِّىٓۚ إِنِّى تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ هُمْ كَٰفِرُونَ
ইউসুফ বললঃ তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা আসার পূর্বে আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়ে দিব, আমি যা তোমাদেরকে বলব তা আমার রাব্ব আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা হতে বলব, যে সম্প্রদায় আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা ও পরলোকে অবিশ্বাসী হয় আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি।
38 – ইউসুফ
وَٱتَّبَعْتُ مِلَّةَ ءَابَآءِىٓ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْحَٰقَ وَيَعْقُوبَۚ مَا كَانَ لَنَآ أَن نُّشْرِكَ بِٱللَّهِ مِن شَىْءٍۚ ذَٰلِكَ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ عَلَيْنَا وَعَلَى ٱلنَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ
আমি আমার পিতৃ পুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকূবের মতবাদ অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন বস্তুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়, এটা আমাদের ও সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা।
39 – ইউসুফ
يَٰصَىٰحِبَىِ ٱلسِّجْنِ ءَأَرْبَابٌ مُّتَفَرِّقُونَ خَيْرٌ أَمِ ٱللَّهُ ٱلْوَٰحِدُ ٱلْقَهَّارُ
হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন বহু রাব্ব শ্রেয়, নাকি পরাক্রমশালী এক আল্লাহ?
40 – ইউসুফ
مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِۦٓ إِلَّآ أَسْمَآءً سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍۚ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوٓاۡ إِلَّآ إِيَّاهُۚ ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
তাঁকে ছেড়ে তোমরা শুধু কতকগুলি নামের ইবাদাত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছ, এইগুলির কোন প্রমাণ আল্লাহ পাঠাননি। হুকুম (বিধান) দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে, আর কারও ইবাদাত করবেনা; এটাই সরল সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।
41 – ইউসুফ
يَٰصَىٰحِبَىِ ٱلسِّجْنِ أَمَّآ أَحَدُكُمَا فَيَسْقِى رَبَّهُۥ خَمْرًاۖ وَأَمَّا ٱلْءَاخَرُ فَيُصْلَبُ فَتَأْكُلُ ٱلطَّيْرُ مِن رَّأْسِهِۦۚ قُضِىَ ٱلْأَمْرُ ٱلَّذِى فِيهِ تَسْتَفْتِيَانِ
হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের একজনের ব্যাপার এই যে, সে তার প্রভুকে মদ পান করাবে এবং অপর সম্বন্ধে কথা এই যে, সে শুলবিদ্ধ হবে; অতঃপর তার মস্তক হতে পাখী আহার করবে, যে বিষয়ে তোমরা জানতে চেয়েছ তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
42 – ইউসুফ
وَقَالَ لِلَّذِى ظَنَّ أَنَّهُۥ نَاجٍ مِّنْهُمَا ٱذْكُرْنِى عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَىٰهُ ٱلشَّيْطَٰنُ ذِكْرَ رَبِّهِۦ فَلَبِثَ فِى ٱلسِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ
ইউসুফ তাদের মধ্যে যে মুক্তি পাবে মনে করল, তাকে বললঃ তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বল; কিন্তু শাইতান তাকে তার প্রভুর কাছে তার বিষয়ে বলার কথা ভুলিয়ে দিল। সুতরাং ইউসুফ কয়েক বছর কারাগারে রইল।
43 – ইউসুফ
وَقَالَ ٱلْمَلِكُ إِنِّىٓ أَرَىٰ سَبْعَ بَقَرَٰتٍ سِمَانٍ يَأْكُلُهُنَّ سَبْعٌ عِجَافٌ وَسَبْعَ سُنۢبُلَٰتٍ خُضْرٍ وَأُخَرَ يَابِسَٰتٍۖ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَأُ أَفْتُونِى فِى رُءْيَٰىَ إِن كُنتُمْ لِلرُّءْيَا تَعْبُرُونَ
বাদশাহ বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি স্থূলকায় গাভী, ওগুলিকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ এবং অপর সাতটি শুস্ক। হে প্রধানগণ! যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পার তাহলে আমার স্বপ্ন সম্বন্ধে অভিমত দাও।
44 – ইউসুফ
قَالُوٓاۡ أَضْغَٰثُ أَحْلَٰمٍۖ وَمَا نَحْنُ بِتَأْوِيلِ ٱلْأَحْلَٰمِ بِعَٰلِمِينَ
তারা বললঃ এটা অর্থহীন স্বপ্ন এবং আমরা এরূপ স্বপ্ন ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই।
45 – ইউসুফ
وَقَالَ ٱلَّذِى نَجَا مِنْهُمَا وَٱدَّكَرَ بَعْدَ أُمَّةٍ أَنَا۠ أُنَبِّئُكُم بِتَأْوِيلِهِۦ فَأَرْسِلُونِ
দু’জন কারারুদ্ধের মধ্যে যে মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে তার স্মরণ হলে সে বললঃ আমি এর তাৎপর্য তোমাদেরকে জানিয়ে দিব, সুতরাং তোমরা আমাকে পাঠিয়ে দাও।
46 – ইউসুফ
يُوسُفُ أَيُّهَا ٱلصِّدِّيقُ أَفْتِنَا فِى سَبْعِ بَقَرَٰتٍ سِمَانٍ يَأْكُلُهُنَّ سَبْعٌ عِجَافٌ وَسَبْعِ سُنۢبُلَٰتٍ خُضْرٍ وَأُخَرَ يَابِسَٰتٍ لَّعَلِّىٓ أَرْجِعُ إِلَى ٱلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَعْلَمُونَ
সে বললঃ হে ইউসুফ! হে সত্যবাদী! সাতটি স্থুলকায় গাভী, ওগুলিকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুস্ক শীষ সম্বন্ধে আপনি আমাদেরকে ব্যাখ্যা দিন, যাতে আমি লোকদের কাছে ফিরে যেতে পারি এবং যাতে তারা অবগত হতে পারে।
47 – ইউসুফ
قَالَ تَزْرَعُونَ سَبْعَ سِنِينَ دَأَبًا فَمَا حَصَدتُّمْ فَذَرُوهُ فِى سُنۢبُلِهِۦٓ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تَأْكُلُونَ
ইউসুফ বললঃ তোমরা সাত বছর একাদিক্রমে চাষ করবে, অতঃপর তোমরা শস্য সংগ্রহ করবে; তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা আহার করবে, তা ব্যতীত সমস্ত শস্য শীষ সমেত রেখে দিবে।
48 – ইউসুফ
ثُمَّ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ سَبْعٌ شِدَادٌ يَأْكُلْنَ مَا قَدَّمْتُمْ لَهُنَّ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تُحْصِنُونَ
এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর; এই সাত বছর যা পূর্বে সঞ্চয় করে রাখবে – লোকে তা খাবে; শুধু সামান্য কিছু যা তোমরা সংরক্ষণ করবে তা ব্যতীত।
49 – ইউসুফ
ثُمَّ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ عَامٌ فِيهِ يُغَاثُ ٱلنَّاسُ وَفِيهِ يَعْصِرُونَ
এবং এরপর আসবে এক বছর, সেই বছর মানুষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে এবং সেই বছর মানুষ প্রচুর ফলের রস নিংড়াবে।
50 – ইউসুফ
وَقَالَ ٱلْمَلِكُ ٱئْتُونِى بِهِۦۖ فَلَمَّا جَآءَهُ ٱلرَّسُولُ قَالَ ٱرْجِعْ إِلَىٰ رَبِّكَ فَسْـَٔلْهُ مَا بَالُ ٱلنِّسْوَةِ ٱلَّٰتِى قَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّۚ إِنَّ رَبِّى بِكَيْدِهِنَّ عَلِيمٌ
বাদশাহ বললঃ তোমরা ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো। যখন দূত তার কাছে উপস্থিত হল তখন সে বললঃ তুমি তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করঃ যে নারীরা তাদের হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কি? আমার রাব্ব তাদের ছলনা সম্যক অবগত।
51 – ইউসুফ
قَالَ مَا خَطْبُكُنَّ إِذْ رَٰوَدتُّنَّ يُوسُفَ عَن نَّفْسِهِۦۚ قُلْنَ حَٰشَ لِلَّهِ مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ مِن سُوٓءٍۚ قَالَتِ ٱمْرَأَتُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْـَٰٔنَ حَصْحَصَ ٱلْحَقُّ أَنَا۠ رَٰوَدتُّهُۥ عَن نَّفْسِهِۦ وَإِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
বাদশাহ নারীদেরকে বললঃ যখন তোমরা ইউসুফ হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিলে তখন তোমাদের কি হয়েছিল? তারা বললঃ অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! আমরা তার মধ্যে কোন দোষ দেখিনি। আযীযের স্ত্রী বললঃ এক্ষণে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল, আমিই তার হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিলাম, সেতো সত্যবাদী।
52 – ইউসুফ
ذَٰلِكَ لِيَعْلَمَ أَنِّى لَمْ أَخُنْهُ بِٱلْغَيْبِ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى كَيْدَ ٱلْخَآئِنِينَ
সে বললঃ আমি এটা বলেছিলাম যাতে সে জানতে পারে যে, তার অনুপস্থিতিতে আমি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করিনি এবং আল্লাহ বিশ্বাস ঘাতকদের ষড়যন্ত্র সফল করেননা।
53 – ইউসুফ
وَمَآ أُبَرِّئُ نَفْسِىٓۚ إِنَّ ٱلنَّفْسَ لَأَمَّارَةٌۢ بِٱلسُّوٓءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّىٓۚ إِنَّ رَبِّى غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আমি নিজকে নির্দোষ মনে করিনা, মানুষের মন অবশ্যই মন্দ কর্ম-প্রবণ। কিন্তু সে নয় যার প্রতি আমার রাব্ব অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয়ই আমার রাব্ব অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
54 – ইউসুফ
وَقَالَ ٱلْمَلِكُ ٱئْتُونِى بِهِۦٓ أَسْتَخْلِصْهُ لِنَفْسِىۖ فَلَمَّا كَلَّمَهُۥ قَالَ إِنَّكَ ٱلْيَوْمَ لَدَيْنَا مَكِينٌ أَمِينٌ
বাদশাহ বললঃ ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাকে একান্ত সহচর নিযুক্ত করব। অতঃপর বাদশাহ যখন তার সাথে কথা বলল তখন রাজা বললঃ আজ তুমি আমাদের কাছে মর্যাদাবান ও বিশ্বাস ভাজন হলে।
55 – ইউসুফ
قَالَ ٱجْعَلْنِى عَلَىٰ خَزَآئِنِ ٱلْأَرْضِۖ إِنِّى حَفِيظٌ عَلِيمٌ
সে বললঃ আমাকে কোষাগারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম সংরক্ষণকারী, অতিশয় জ্ঞানবান।
56 – ইউসুফ
وَكَذَٰلِكَ مَكَّنَّا لِيُوسُفَ فِى ٱلْأَرْضِ يَتَبَوَّأُ مِنْهَا حَيْثُ يَشَآءُۚ نُصِيبُ بِرَحْمَتِنَا مَن نَّشَآءُۖ وَلَا نُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُحْسِنِينَ
এভাবে আমি ইউসুফকে সেই দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম। সে সেই দেশে যথা ইচ্ছা অবস্থান করতে পারত। আমি যাকে ইচ্ছা তার প্রতি দয়া করি, আর আমি সৎ কর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করিনা।
57 – ইউসুফ
وَلَأَجْرُ ٱلْءَاخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَكَانُواۡ يَتَّقُونَ
যারা মু’মিন ও মুত্তাকী তাদের পরকালের পুরস্কারই উত্তম।
58 – ইউসুফ
وَجَآءَ إِخْوَةُ يُوسُفَ فَدَخَلُواۡ عَلَيْهِ فَعَرَفَهُمْ وَهُمْ لَهُۥ مُنكِرُونَ
ইউসুফের ভাইয়েরা এলো এবং তার নিকট উপস্থিত হল। সে তাদেরকে চিনল, কিন্তু তারা তাকে চিনতে পারলনা।
59 – ইউসুফ
وَلَمَّا جَهَّزَهُم بِجَهَازِهِمْ قَالَ ٱئْتُونِى بِأَخٍ لَّكُم مِّنْ أَبِيكُمْۚ أَلَا تَرَوْنَ أَنِّىٓ أُوفِى ٱلْكَيْلَ وَأَنَا۠ خَيْرُ ٱلْمُنزِلِينَ
আর সে যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিল তখন সে বললঃ তোমরা আমার নিকট তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে নিয়ে এসো; তোমরা কি দেখছনা যে, আমি মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিই? এবং আমি উত্তম মেযবান?
60 – ইউসুফ
فَإِن لَّمْ تَأْتُونِى بِهِۦ فَلَا كَيْلَ لَكُمْ عِندِى وَلَا تَقْرَبُونِ
কিন্তু তোমরা যদি তাকে আমার নিকট নিয়ে না আস তাহলে আমার নিকট তোমাদের জন্য কোন বরাদ্দ থাকবেনা এবং তোমরা আমার নিকটবর্তী হবেনা।
61 – ইউসুফ
قَالُواۡ سَنُرَٰوِدُ عَنْهُ أَبَاهُ وَإِنَّا لَفَٰعِلُونَ
তারা বললঃ ওর বিষয়ে আমরা ওর পিতাকে সম্মত করার চেষ্টা করব এবং আমরা নিশ্চয়ই এটা করব।
62 – ইউসুফ
وَقَالَ لِفِتْيَٰنِهِ ٱجْعَلُواۡ بِضَٰعَتَهُمْ فِى رِحَالِهِمْ لَعَلَّهُمْ يَعْرِفُونَهَآ إِذَا ٱنقَلَبُوٓاۡ إِلَىٰٓ أَهْلِهِمْ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
ইউসুফ তার ভৃত্যদেরকে বললঃ তারা যে পণ্য মূল্য দিয়েছে তা তাদের মালপত্রের মধ্যে রেখে দাও, যাতে স্বজনদের কাছে প্রত্যাবর্তনের পর তারা বুঝতে পারে যে, ওটা প্রত্যর্পন করা হয়েছে, তা হলে তারা পুনরায় আসতে পারে।
63 – ইউসুফ
فَلَمَّا رَجَعُوٓاۡ إِلَىٰٓ أَبِيهِمْ قَالُواۡ يَٰٓأَبَانَا مُنِعَ مِنَّا ٱلْكَيْلُ فَأَرْسِلْ مَعَنَآ أَخَانَا نَكْتَلْ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ
অতঃপর যখন তারা তাদের পিতার নিকট ফিরে এলো তখন তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সুতরাং আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন যাতে আমরা রসদ পেতে পারি, আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করব।
64 – ইউসুফ
قَالَ هَلْ ءَامَنُكُمْ عَلَيْهِ إِلَّا كَمَآ أَمِنتُكُمْ عَلَىٰٓ أَخِيهِ مِن قَبْلُۖ فَٱللَّهُ خَيْرٌ حَٰفِظًاۖ وَهُوَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ
সে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে ওর সম্বন্ধে সেইরূপ বিশ্বাস করব, যেরূপ বিশ্বাস পূর্বে তোমাদেরকে করেছিলাম ওর ভাইয়ের ব্যাপারে? আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি শ্রেষ্ঠতম দয়ালু।
65 – ইউসুফ
وَلَمَّا فَتَحُواۡ مَتَٰعَهُمْ وَجَدُواۡ بِضَٰعَتَهُمْ رُدَّتْ إِلَيْهِمْۖ قَالُواۡ يَٰٓأَبَانَا مَا نَبْغِىۖ هَٰذِهِۦ بِضَٰعَتُنَا رُدَّتْ إِلَيْنَاۖ وَنَمِيرُ أَهْلَنَا وَنَحْفَظُ أَخَانَا وَنَزْدَادُ كَيْلَ بَعِيرٍۖ ذَٰلِكَ كَيْلٌ يَسِيرٌ
যখন তারা তাদের মালপত্র খুলল তখন তারা দেখতে পেল, তাদের পণ্যমূল্য তাদেরকে প্রত্যর্পন করা হয়েছে। তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমরা আর কি প্রত্যাশা করতে পারি? এটা আমাদের প্রদত্ত পণ্যমূল্য, আমাদেরকে প্রত্যর্পন করা হয়েছে; পুনরায় আমরা আমাদের পরিবারবর্গকে খাদ্যসামগ্রী এনে দিব এবং আমরা আমাদের ভাইয়ের রক্ষণাবেক্ষণ করব এবং আমরা অতিরিক্ত আর এক উট বোঝাই পণ্য আনব, যা এনেছি তা পরিমাণে অল্প।
66 – ইউসুফ
قَالَ لَنْ أُرْسِلَهُۥ مَعَكُمْ حَتَّىٰ تُؤْتُونِ مَوْثِقًا مِّنَ ٱللَّهِ لَتَأْتُنَّنِى بِهِۦٓ إِلَّآ أَن يُحَاطَ بِكُمْۖ فَلَمَّآ ءَاتَوْهُ مَوْثِقَهُمْ قَالَ ٱللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِيلٌ
পিতা বললঃ আমি ওকে কখনও তোমাদের সাথে পাঠাবনা যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার কর যে, তোমরা তাকে আমার নিকট নিয়ে আসবেই, অবশ্য যদি তোমরা একান্ত অসহায় হয়ে না পড়। অতঃপর যখন তারা তার নিকট প্রতিজ্ঞা করল তখন সে বললঃ আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ তার বিধায়ক।
67 – ইউসুফ
وَقَالَ يَٰبَنِىَّ لَا تَدْخُلُواۡ مِنۢ بَابٍ وَٰحِدٍ وَٱدْخُلُواۡ مِنْ أَبْوَٰبٍ مُّتَفَرِّقَةٍۖ وَمَآ أُغْنِى عَنكُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍۖ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُۖ وَعَلَيْهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُتَوَكِّلُونَ
সে বললঃ হে আমার পুত্রগণ! তোমরা এক দরযা দিয়ে প্রবেশ করনা, ভিন্ন ভিন্ন দরযা দিয়ে প্রবেশ করবে, আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারিনা। বিধান আল্লাহরই; আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং যারা নির্ভর করতে চায় তারা তাঁরই (আল্লাহরই) উপর নির্ভর করুক।
68 – ইউসুফ
وَلَمَّا دَخَلُواۡ مِنْ حَيْثُ أَمَرَهُمْ أَبُوهُم مَّا كَانَ يُغْنِى عَنْهُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍ إِلَّا حَاجَةً فِى نَفْسِ يَعْقُوبَ قَضَىٰهَاۚ وَإِنَّهُۥ لَذُو عِلْمٍ لِّمَا عَلَّمْنَٰهُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
যখন তারা, তাদের পিতা তাদেরকে যেভাবে আদেশ করেছিল সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে ওটা তাদের কোন কাজে এলোনা; ইয়াকূব শুধু তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল এবং সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল। কারণ আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।
69 – ইউসুফ
وَلَمَّا دَخَلُواۡ عَلَىٰ يُوسُفَ ءَاوَىٰٓ إِلَيْهِ أَخَاهُۖ قَالَ إِنِّىٓ أَنَا۠ أَخُوكَ فَلَا تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
তারা যখন ইউসুফের সামনে হাযির হল তখন ইউসুফ তার (সহোদর) ভাইকে নিজের কাছে রাখল এবং বললঃ আমিই তোমার (সহোদর) ভাই। সুতরাং তারা যা করত সেজন্য দুঃখ করনা।
70 – ইউসুফ
فَلَمَّا جَهَّزَهُم بِجَهَازِهِمْ جَعَلَ ٱلسِّقَايَةَ فِى رَحْلِ أَخِيهِ ثُمَّ أَذَّنَ مُؤَذِّنٌ أَيَّتُهَا ٱلْعِيرُ إِنَّكُمْ لَسَٰرِقُونَ
অতঃপর সে যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিল তখন সে তার (সহোদর) ভাইয়ের মালপত্রের মধ্যে পানপাত্র রেখে দিল, অতঃপর এক ঘোষক উচ্চৈঃস্বরে বললঃ হে যাত্রীদল! তোমরা নিশ্চয়ই চোর।
71 – ইউসুফ
قَالُواۡ وَأَقْبَلُواۡ عَلَيْهِم مَّاذَا تَفْقِدُونَ
তারা তাদের দিকে ফিরে তাকাল এবং বললঃ তোমরা কি হারিয়েছ?
72 – ইউসুফ
قَالُواۡ نَفْقِدُ صُوَاعَ ٱلْمَلِكِ وَلِمَن جَآءَ بِهِۦ حِمْلُ بَعِيرٍ وَأَنَا۠ بِهِۦ زَعِيمٌ
তারা বললঃ আমরা রাজার পানপাত্র হারিয়েছি; যে ওটা এনে দিবে সে এক উট বোঝাই মাল পাবে এবং আমি ওর যামীন।
73 – ইউসুফ
قَالُواۡ تَٱللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُم مَّا جِئْنَا لِنُفْسِدَ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا كُنَّا سَٰرِقِينَ
তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! তোমরাতো জান যে, আমরা এই দেশে দুস্কৃতি করতে আসিনি এবং আমরা চোরও নই।
74 – ইউসুফ
قَالُواۡ فَمَا جَزَٰٓؤُهُۥٓ إِن كُنتُمْ كَٰذِبِينَ
তারা বললঃ যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও তাহলে তার শাস্তি কি?
75 – ইউসুফ
قَالُواۡ جَزَٰٓؤُهُۥ مَن وُجِدَ فِى رَحْلِهِۦ فَهُوَ جَزَٰٓؤُهُۥۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّٰلِمِينَ
তারা বললঃ এর শাস্তি এই যে, যার মালপত্রের মধ্যে পাত্রটি পাওয়া যাবে, সে’ই তার বিনিময়, এভাবে আমরা সীমালংঘনকারীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।
76 – ইউসুফ
فَبَدَأَ بِأَوْعِيَتِهِمْ قَبْلَ وِعَآءِ أَخِيهِ ثُمَّ ٱسْتَخْرَجَهَا مِن وِعَآءِ أَخِيهِۚ كَذَٰلِكَ كِدْنَا لِيُوسُفَۖ مَا كَانَ لِيَأْخُذَ أَخَاهُ فِى دِينِ ٱلْمَلِكِ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُۚ نَرْفَعُ دَرَجَٰتٍ مَّن نَّشَآءُۗ وَفَوْقَ كُلِّ ذِى عِلْمٍ عَلِيمٌ
অতঃপর সে তার (সহোদর) ভাইয়ের মালপত্র তল্লাশির পূর্বে তাদের মাল-পত্র তল্লাশি করতে লাগল, পরে তার সহোদরের মাল-পত্রের মধ্য হতে পাত্রটি বের করল। এভাবে আমি ইউসুফের জন্য কৌশল করেছিলাম, রাজার আইনে তার সহোদরকে সে আটক করতে পারতনা, আল্লাহ ইচ্ছা না করলে। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি, প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর আছেন সর্বজ্ঞানী।
77 – ইউসুফ
قَالُوٓاۡ إِن يَسْرِقْ فَقَدْ سَرَقَ أَخٌ لَّهُۥ مِن قَبْلُۚ فَأَسَرَّهَا يُوسُفُ فِى نَفْسِهِۦ وَلَمْ يُبْدِهَا لَهُمْۚ قَالَ أَنتُمْ شَرٌّ مَّكَانًاۖ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَصِفُونَ
তারা বললঃ সে যদি চুরি করে থাকে তার (সহোদর) ভাইওতো ইতোপূর্বে চুরি করেছিল, এতে ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে গোপন রাখল এবং তাদের কাছে প্রকাশ করলনা। সে মনে মনে বললঃ তোমাদের অবস্থাতো হীনতর এবং তোমরা যা বলছ সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবগত।
78 – ইউসুফ
قَالُواۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْعَزِيزُ إِنَّ لَهُۥٓ أَبًا شَيْخًا كَبِيرًا فَخُذْ أَحَدَنَا مَكَانَهُۥٓۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ
তারা বললঃ হে আযীয! এর পিতা আছেন অতিশয় বৃদ্ধ, সুতরাং এর স্থলে আপনি আমাদের একজনকে রাখুন! আমরাতো আপনাকে দেখছি মহানুভব ব্যক্তিদের একজন।
79 – ইউসুফ
قَالَ مَعَاذَ ٱللَّهِ أَن نَّأْخُذَ إِلَّا مَن وَجَدْنَا مَتَٰعَنَا عِندَهُۥٓ إِنَّآ إِذًا لَّظَٰلِمُونَ
সে বললঃ যার নিকট আমরা আমাদের মাল পেয়েছি, তাকে ছাড়া অন্যকে রাখার অপরাধ হতে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরূপ করলে আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব।
80 – ইউসুফ
فَلَمَّا ٱسْتَيْـَٔسُواۡ مِنْهُ خَلَصُواۡ نَجِيًّاۖ قَالَ كَبِيرُهُمْ أَلَمْ تَعْلَمُوٓاۡ أَنَّ أَبَاكُمْ قَدْ أَخَذَ عَلَيْكُم مَّوْثِقًا مِّنَ ٱللَّهِ وَمِن قَبْلُ مَا فَرَّطتُمْ فِى يُوسُفَۖ فَلَنْ أَبْرَحَ ٱلْأَرْضَ حَتَّىٰ يَأْذَنَ لِىٓ أَبِىٓ أَوْ يَحْكُمَ ٱللَّهُ لِىۖ وَهُوَ خَيْرُ ٱلْحَٰكِمِينَ
যখন তারা তার নিকট হতে সম্পূর্ণ নিরাশ হল তখন তারা নির্জনে গিয়ে পরামর্শ করতে লাগল, ওদের মধ্যে যে ছিল বয়োজ্যেষ্ঠ সে বললঃ তোমরা কি জাননা যে, তোমাদের পিতা তোমাদের নিকট হতে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বেও তোমরা ইউসুফের ব্যাপারে ক্রটি করেছিলে; সুতরাং আমি কিছুতেই এই দেশ ত্যাগ করবনা যতক্ষণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দেন অথবা আল্লাহ আমার জন্য কোন ব্যবস্থা করেন এবং তিনিই বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
81 – ইউসুফ
ٱرْجِعُوٓاۡ إِلَىٰٓ أَبِيكُمْ فَقُولُواۡ يَٰٓأَبَانَآ إِنَّ ٱبْنَكَ سَرَقَ وَمَا شَهِدْنَآ إِلَّا بِمَا عَلِمْنَا وَمَا كُنَّا لِلْغَيْبِ حَٰفِظِينَ
তোমরা তোমাদের পিতার নিকট ফিরে যাও এবং বলঃ হে আমাদের পিতা! আপনার পুত্র চুরি করেছে এবং আমরা যা জানি তারই প্রত্যক্ষ বিবরণ দিলাম, অদৃশ্যের ব্যাপারে আমরা অবহিত ছিলামনা।
82 – ইউসুফ
وَسْـَٔلِ ٱلْقَرْيَةَ ٱلَّتِى كُنَّا فِيهَا وَٱلْعِيرَ ٱلَّتِىٓ أَقْبَلْنَا فِيهَاۖ وَإِنَّا لَصَٰدِقُونَ
যে জনপদে আমরা ছিলাম ওর অধিবাসীদেরকে জিজ্ঞেস করুন এবং যে যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদেরকেও, আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।
83 – ইউসুফ
قَالَ بَلْ سَوَّلَتْ لَكُمْ أَنفُسُكُمْ أَمْرًاۖ فَصَبْرٌ جَمِيلٌۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَأْتِيَنِى بِهِمْ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْحَكِيمُ
ইয়াকূব বললঃ না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে; সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়; হয়তো আল্লাহ ওদেরকে এক সাথে আমার কাছে এনে দিবেন, তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
84 – ইউসুফ
وَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰٓأَسَفَىٰ عَلَىٰ يُوسُفَ وَٱبْيَضَّتْ عَيْنَاهُ مِنَ ٱلْحُزْنِ فَهُوَ كَظِيمٌ
সে ওদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ আফসোস ইউসুফের জন্য। শোকে তার চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং সে ছিল অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট।
85 – ইউসুফ
قَالُواۡ تَٱللَّهِ تَفْتَؤُاۡ تَذْكُرُ يُوسُفَ حَتَّىٰ تَكُونَ حَرَضًا أَوْ تَكُونَ مِنَ ٱلْهَٰلِكِينَ
তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আপনিতো ইউসুফের কথা ভুলবেননা যতক্ষণ না আপনি শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত হবেন, অথবা মৃত্যু বরণ করবেন।
86 – ইউসুফ
قَالَ إِنَّمَآ أَشْكُواۡ بَثِّى وَحُزْنِىٓ إِلَى ٱللَّهِ وَأَعْلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
সে বললঃ আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর নিকট হতে যা জানি তোমরা তা জাননা।
87 – ইউসুফ
يَٰبَنِىَّ ٱذْهَبُواۡ فَتَحَسَّسُواۡ مِن يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلَا تَاۡيْـَٔسُواۡ مِن رَّوْحِ ٱللَّهِۖ إِنَّهُۥ لَا يَاۡيْـَٔسُ مِن رَّوْحِ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْقَوْمُ ٱلْكَٰفِرُونَ
হে আমার পুত্রগণ! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার সহোদরের অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহর করুণা হতে তোমরা নিরাশ হয়োনা, কারণ কাফির ব্যতীত কেহই আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়না।
88 – ইউসুফ
فَلَمَّا دَخَلُواۡ عَلَيْهِ قَالُواۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْعَزِيزُ مَسَّنَا وَأَهْلَنَا ٱلضُّرُّ وَجِئْنَا بِبِضَٰعَةٍ مُّزْجَىٰةٍ فَأَوْفِ لَنَا ٱلْكَيْلَ وَتَصَدَّقْ عَلَيْنَآۖ إِنَّ ٱللَّهَ يَجْزِى ٱلْمُتَصَدِّقِينَ
যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হল তখন বললঃ হে আযীয! আমরা ও আমাদের পরিবার পরিজন বিপন্ন হয়ে পড়েছি এবং আমরা তুচ্ছ পণ্য নিয়ে এসেছি; আপনি আমাদের রসদ পূর্ণ মাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে দান করুন; আল্লাহ দাতাদেরকে পুরস্কৃত করেন।
89 – ইউসুফ
قَالَ هَلْ عَلِمْتُم مَّا فَعَلْتُم بِيُوسُفَ وَأَخِيهِ إِذْ أَنتُمْ جَٰهِلُونَ
সে বললঃ তোমরা কি জান, তোমরা ইউসুফ ও তার সহোদরের প্রতি কিরূপ আচরণ করেছিলে, যখন তোমরা ছিলে অজ্ঞ?
90 – ইউসুফ
قَالُوٓاۡ أَءِنَّكَ لَأَنتَ يُوسُفُۖ قَالَ أَنَا۠ يُوسُفُ وَهَٰذَآ أَخِىۖ قَدْ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَآۖ إِنَّهُۥ مَن يَتَّقِ وَيَصْبِرْ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُحْسِنِينَ
তারা বললঃ তাহলে কি তুমিই ইউসুফ? সে বললঃ আমিই ইউসুফ এবং এই আমার সহোদর; আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। যে ব্যক্তি মুত্তাকী ও ধৈর্যশীল, আল্লাহ সেইরূপ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেননা।
91 – ইউসুফ
قَالُواۡ تَٱللَّهِ لَقَدْ ءَاثَرَكَ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَإِن كُنَّا لَخَٰطِـِٔينَ
তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আল্লাহ নিশ্চয়ই তোমাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা নিশ্চয়ই অপরাধী ছিলাম।
92 – ইউসুফ
قَالَ لَا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ ٱلْيَوْمَۖ يَغْفِرُ ٱللَّهُ لَكُمْۖ وَهُوَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ
সে বললঃ আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন, এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।
93 – ইউসুফ
ٱذْهَبُواۡ بِقَمِيصِى هَٰذَا فَأَلْقُوهُ عَلَىٰ وَجْهِ أَبِى يَأْتِ بَصِيرًا وَأْتُونِى بِأَهْلِكُمْ أَجْمَعِينَ
তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও এবং এটা আমার পিতার মুখমন্ডলের উপর রেখ, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন, আর তোমরা তোমাদের পরিবারের সকলকেই আমার নিকট নিয়ে এসো।
94 – ইউসুফ
وَلَمَّا فَصَلَتِ ٱلْعِيرُ قَالَ أَبُوهُمْ إِنِّى لَأَجِدُ رِيحَ يُوسُفَۖ لَوْلَآ أَن تُفَنِّدُونِ
অতঃপর যাত্রীদল যখন বের হয়ে পড়ল তখন তাদের পিতা বললঃ তোমরা যদি আমাকে অপ্রকৃতিস্থ মনে না কর তাহলে বলিঃ আমি ইউসুফের ঘ্রাণ পাচ্ছি।
95 – ইউসুফ
قَالُواۡ تَٱللَّهِ إِنَّكَ لَفِى ضَلَٰلِكَ ٱلْقَدِيمِ
তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আপনিতো আপনার পূর্ব বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন।
96 – ইউসুফ
فَلَمَّآ أَن جَآءَ ٱلْبَشِيرُ أَلْقَىٰهُ عَلَىٰ وَجْهِهِۦ فَٱرْتَدَّ بَصِيرًاۖ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّىٓ أَعْلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
অতঃপর যখন সুসংবাদ বাহক উপস্থিত হল এবং তার মুখমন্ডলের উপর জামাটি রাখল তখন সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল। সে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর নিকট হতে যা জানি তোমরা তা জাননা।
97 – ইউসুফ
قَالُواۡ يَٰٓأَبَانَا ٱسْتَغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَآ إِنَّا كُنَّا خَٰطِـِٔينَ
তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন; আমরাতো অপরাধী।
98 – ইউসুফ
قَالَ سَوْفَ أَسْتَغْفِرُ لَكُمْ رَبِّىٓۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
সে বললঃ আমি আমার রবের নিকট তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তিনিতো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
99 – ইউসুফ
فَلَمَّا دَخَلُواۡ عَلَىٰ يُوسُفَ ءَاوَىٰٓ إِلَيْهِ أَبَوَيْهِ وَقَالَ ٱدْخُلُواۡ مِصْرَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ
অতঃপর তারা যখন ইউসুফের নিকট উপস্থিত হল তখন সে তার মাতা-পিতাকে আলিঙ্গন করল এবং বললঃ আপনারা আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন!
100 – ইউসুফ
وَرَفَعَ أَبَوَيْهِ عَلَى ٱلْعَرْشِ وَخَرُّواۡ لَهُۥ سُجَّدًاۖ وَقَالَ يَٰٓأَبَتِ هَٰذَا تَأْوِيلُ رُءْيَٰىَ مِن قَبْلُ قَدْ جَعَلَهَا رَبِّى حَقًّاۖ وَقَدْ أَحْسَنَ بِىٓ إِذْ أَخْرَجَنِى مِنَ ٱلسِّجْنِ وَجَآءَ بِكُم مِّنَ ٱلْبَدْوِ مِنۢ بَعْدِ أَن نَّزَغَ ٱلشَّيْطَٰنُ بَيْنِى وَبَيْنَ إِخْوَتِىٓۚ إِنَّ رَبِّى لَطِيفٌ لِّمَا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْحَكِيمُ
আর ইউসুফ তার মাতা-পিতাকে উচ্চাসনে বসাল এবং তারা সবাই তার সামনে সাজদাহয় লুটিয়ে পড়ল। সে বললঃ হে আমার পিতা! এটাই আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা; আমার রাব্ব ওটা সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমাকে কারাগার হতে মুক্ত করেছেন এবং শাইতান আমার ও আমার ভাইদের সম্পর্ক নষ্ট করার পরও আপনাদেরকে মরু অঞ্চল হতে এখানে এনে দিয়ে আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আমার রাব্ব যা ইচ্ছা তা নিপুণতার সাথে করে থাকেন, তিনিতো সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
101 – ইউসুফ
رَبِّ قَدْ ءَاتَيْتَنِى مِنَ ٱلْمُلْكِ وَعَلَّمْتَنِى مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِۚ فَاطِرَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ أَنتَ وَلِىِّۦ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِۖ تَوَفَّنِى مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِى بِٱلصَّٰلِحِينَ
হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে রাজ্য দান করেছেন এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়েছেন। হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা! আপনিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক, আপনি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন!
102 – ইউসুফ
ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَۖ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوٓاۡ أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ
এটা অদৃশ্যলোকের সংবাদ যা তোমাকে আমি অহী দ্বারা অবহিত করছি, ষড়যন্ত্রকালে যখন তারা মতৈক্যে পৌঁছেছিল তখন তুমি তাদের সাথে ছিলেনা।
103 – ইউসুফ
وَمَآ أَكْثَرُ ٱلنَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ
তুমি যতই চাও না কেন, অধিকাংশ লোকই ঈমান আনার নয়।
104 – ইউসুফ
وَمَا تَسْـَٔلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَٰلَمِينَ
আর তুমিতো তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক দাবী করছোনা, এটাতো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ছাড়া কিছু নয়।
105 – ইউসুফ
وَكَأَيِّن مِّنْ ءَايَةٍ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে, তারা এ সমস্ত প্রত্যক্ষ করে, কিন্তু তারা এ সবের প্রতি উদাসীন।
106 – ইউসুফ
وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُم بِٱللَّهِ إِلَّا وَهُم مُّشْرِكُونَ
তাদের অধিকাংশ আল্লাহকে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর সাথে শরীক করে।
107 – ইউসুফ
أَفَأَمِنُوٓاۡ أَن تَأْتِيَهُمْ غَٰشِيَةٌ مِّنْ عَذَابِ ٱللَّهِ أَوْ تَأْتِيَهُمُ ٱلسَّاعَةُ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
তাহলে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামাতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ?
108 – ইউসুফ
قُلْ هَٰذِهِۦ سَبِيلِىٓ أَدْعُوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِىۖ وَسُبْحَٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ
তুমি বলঃ এটাই আমার (আল্লাহর) পথ; প্রতিটি মানুষকে আমি আহবান করি সজ্ঞানে, আমি এবং আমার অনুসারীগণও; আল্লাহ মহিমান্বিত এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে আমি তাদের অন্তভুর্ক্ত নই।
109 – ইউসুফ
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِىٓ إِلَيْهِم مِّنْ أَهْلِ ٱلْقُرَىٰٓۗ أَفَلَمْ يَسِيرُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُواۡ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۗ وَلَدَارُ ٱلْءَاخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ ٱتَّقَوْاۡۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তোমার পূর্বেও জনপদবাসীদের মধ্য হতে পুরুষদেরকেই পাঠিয়েছিলাম, যাদের নিকট অহী পাঠাতাম; তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছিল তা কি দেখেনি? যারা মুত্তাকী তাদের জন্য পরকালই শ্রেয়; তোমরা কি বুঝনা?
110 – ইউসুফ
حَتَّىٰٓ إِذَا ٱسْتَيْـَٔسَ ٱلرُّسُلُ وَظَنُّوٓاۡ أَنَّهُمْ قَدْ كُذِبُواۡ جَآءَهُمْ نَصْرُنَا فَنُجِّىَ مَن نَّشَآءُۖ وَلَا يُرَدُّ بَأْسُنَا عَنِ ٱلْقَوْمِ ٱلْمُجْرِمِينَ
অবশেষে যখন রাসূলগণ নিরাশ হল এবং লোকে ভাবল যে, রাসূলদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে তখন তাদের কাছে আমার সাহায্য এলো। এভাবে আমি যাকে ইচ্ছা করি সে উদ্ধার পায়, আর অপরাধী সম্প্রদায় হতে আমার শাস্তি রদ করা হয়না।
111 – ইউসুফ
لَقَدْ كَانَ فِى قَصَصِهِمْ عِبْرَةٌ لِّأُوۡلِى ٱلْأَلْبَٰبِۗ مَا كَانَ حَدِيثًا يُفْتَرَىٰ وَلَٰكِن تَصْدِيقَ ٱلَّذِى بَيْنَ يَدَيْهِ وَتَفْصِيلَ كُلِّ شَىْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
তাদের বৃত্তান্তে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আছে শিক্ষা, ইহা এমন বাণী যা মিথ্যা প্রবন্ধ নয়, কিন্তু মু’মিনদের জন্য এটা পূর্ব গ্রন্থে যা আছে উহার সমর্থন এবং সমস্ত কিছুর বিশদ বিবরণ, হিদায়াত ও রাহমাত।
13 নং সূরা – আর রাদ – ٱلرَّعْد
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 43
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – রাদ
الٓمٓرۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِۗ وَٱلَّذِىٓ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ٱلْحَقُّ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ
আলিম লাম মীম রা, এগুলি কুরআনের আয়াত; যা তোমার রাব্ব হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা’ই সত্য; কিন্তু অধিকাংশ এতে বিশ্বাস করেনা।
2 – রাদ
ٱللَّهُ ٱلَّذِى رَفَعَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَاۖ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۖ وَسَخَّرَ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَۖ كُلٌّ يَجْرِى لِأَجَلٍ مُّسَمًّىۚ يُدَبِّرُ ٱلْأَمْرَ يُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّكُم بِلِقَآءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ
আল্লাহই উর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করলেন; প্রত্যেকে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবর্তন করে, তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা তোমাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পার।
3 – রাদ
وَهُوَ ٱلَّذِى مَدَّ ٱلْأَرْضَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنْهَٰرًاۖ وَمِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ جَعَلَ فِيهَا زَوْجَيْنِ ٱثْنَيْنِۖ يُغْشِى ٱلَّيْلَ ٱلنَّهَارَۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
তিনিই ভূতলকে বিস্তৃত করেছেন এবং ওতে পর্বত ও নদী সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক প্রকারের ফল সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়; তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন; এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।
4 – রাদ
وَفِى ٱلْأَرْضِ قِطَعٌ مُّتَجَٰوِرَٰتٌ وَجَنَّٰتٌ مِّنْ أَعْنَٰبٍ وَزَرْعٌ وَنَخِيلٌ صِنْوَانٌ وَغَيْرُ صِنْوَانٍ يُسْقَىٰ بِمَآءٍ وَٰحِدٍ وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَىٰ بَعْضٍ فِى ٱلْأُكُلِۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন ভূখন্ড; ওতে আছে আঙ্গুর-কানন, শষ্যক্ষেত, একাধিক শির বিশিষ্ট অথবা এক শির বিশিষ্ট খেজুর-বৃক্ষ, সিঞ্চিত একই পানিতে; এবং ফল হিসাবে ওগুলির কতককে কতকের উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি, অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন।
5 – রাদ
وَإِن تَعْجَبْ فَعَجَبٌ قَوْلُهُمْ أَءِذَا كُنَّا تُرَٰبًا أَءِنَّا لَفِى خَلْقٍ جَدِيدٍۗ أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ بِرَبِّهِمْۖ وَأُوۡلَٰٓئِكَ ٱلْأَغْلَٰلُ فِىٓ أَعْنَاقِهِمْۖ وَأُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
যদি তুমি বিস্মিত হও তাহলে বিস্ময়ের বিষয় তাদের বক্তব্যঃ মাটিতে পরিণত হওয়ার পরও কি আমরা নতুন জীবন লাভ করব? ওরাই ওদের রাব্বকে অস্বীকার করে এবং ওদেরই গলদেশে থাকবে লৌহ-শৃংখল, ওরাই জাহান্নামী এবং সেখানে ওরা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী।
6 – রাদ
وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِٱلسَّيِّئَةِ قَبْلَ ٱلْحَسَنَةِ وَقَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِمُ ٱلْمَثُلَٰتُۗ وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ لِّلنَّاسِ عَلَىٰ ظُلْمِهِمْۖ وَإِنَّ رَبَّكَ لَشَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
মঙ্গলের পূর্বে তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, যদিও তাদের পূর্বে এর বহু দৃষ্টান্ত গত হয়েছে। বস্তুতঃ মানুষের সীমালংঘন সত্ত্বেও তোমার রাব্ব মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল এবং তোমার রাব্ব শাস্তি দানেও কঠোর।
7 – রাদ
وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَوْلَآ أُنزِلَ عَلَيْهِ ءَايَةٌ مِّن رَّبِّهِۦٓۗ إِنَّمَآ أَنتَ مُنذِرٌۖ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ
যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তার রবের নিকট হতে তার নিকট কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়না কেন? হে নাবী! কথা এই যে, তুমিতো শুধুমাত্র ভয় প্রদর্শনকারী এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে পথ প্রদর্শক।
8 – রাদ
ٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ أُنثَىٰ وَمَا تَغِيضُ ٱلْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُۖ وَكُلُّ شَىْءٍ عِندَهُۥ بِمِقْدَارٍ
প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং জরায়ুতে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তা জানেন। এবং তাঁর বিধানে প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে।
9 – রাদ
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلْكَبِيرُ ٱلْمُتَعَالِ
যা অদৃশ্য ও যা দৃশ্যমান তিনি তা অবগত; তিনি মহান, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।
10 – রাদ
سَوَآءٌ مِّنكُم مَّنْ أَسَرَّ ٱلْقَوْلَ وَمَن جَهَرَ بِهِۦ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍۭ بِٱلَّيْلِ وَسَارِبٌۢ بِٱلنَّهَارِ
তোমাদের মধ্যে যে কথা গোপন রাখে এবং যে তা প্রকাশ করে, রাতে যে আত্মগোপন করে এবং দিনে যে প্রকাশ্যে বিচরণ করে, তারা সমভাবে তাঁর (আল্লাহর) জ্ঞানগোচর।
11 – রাদ
لَهُۥ مُعَقِّبَٰتٌ مِّنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ يَحْفَظُونَهُۥ مِنْ أَمْرِ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُواۡ مَا بِأَنفُسِهِمْۗ وَإِذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِقَوْمٍ سُوٓءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُۥۚ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَالٍ
মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে একের পর এক প্রহরী থাকে; তারা আল্লাহর আদেশে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে; নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেননা যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে। কোন সম্প্রদায় সম্পর্কে যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন তাহলে তা রদ করার কেহ নেই এবং তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক (ওয়ালী) নেই।
12 – রাদ
هُوَ ٱلَّذِى يُرِيكُمُ ٱلْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنشِئُ ٱلسَّحَابَ ٱلثِّقَالَ
তিনিই তোমাদেরকে দেখান বিজলী, যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনিই সৃষ্টি করেন ঘন মেঘ।
13 – রাদ
وَيُسَبِّحُ ٱلرَّعْدُ بِحَمْدِهِۦ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِۦ وَيُرْسِلُ ٱلصَّوَٰعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَن يَشَآءُ وَهُمْ يُجَٰدِلُونَ فِى ٱللَّهِ وَهُوَ شَدِيدُ ٱلْمِحَالِ
বজ্র ধ্বনি ও মালাইকা সভয়ে তাঁর সপ্রশংস মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি বজ্রপাত ঘটান এবং যাকে ইচ্ছা ওটা দ্বারা আঘাত করেন। তথাপি ওরা আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে; যদিও তিনি মহা শক্তিশালী ।
14 – রাদ
لَهُۥ دَعْوَةُ ٱلْحَقِّۖ وَٱلَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَسْتَجِيبُونَ لَهُم بِشَىْءٍ إِلَّا كَبَٰسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى ٱلْمَآءِ لِيَبْلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَٰلِغِهِۦۚ وَمَا دُعَآءُ ٱلْكَٰفِرِينَ إِلَّا فِى ضَلَٰلٍ
সত্যের আহবান তাঁরই। যারা তাঁকে ছাড়া আহবান করে অপরকে তারা (অপরেরা) তাদেরকে কোনই সাড়া দেয়না; তাদের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত যে তার মুখে পানি পৌঁছবে এই আশায় তার হস্তদ্বয় প্রসারিত করে এমন পানির দিকে যা তার মুখে পৌঁছার নয়, কাফিরদের আহবান নিষ্ফল।
15 – রাদ
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَٰلُهُم بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْءَاصَالِ۩
আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল-সন্ধ্যায়। [সাজদাহ]
16 – রাদ
قُلْ مَن رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ قُلِ ٱللَّهُۚ قُلْ أَفَٱتَّخَذْتُم مِّن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ لَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ نَفْعًا وَلَا ضَرًّاۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِى ٱلْأَعْمَىٰ وَٱلْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِى ٱلظُّلُمَٰتُ وَٱلنُّورُۗ أَمْ جَعَلُواۡ لِلَّهِ شُرَكَآءَ خَلَقُواۡ كَخَلْقِهِۦ فَتَشَٰبَهَ ٱلْخَلْقُ عَلَيْهِمْۚ قُلِ ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ وَهُوَ ٱلْوَٰحِدُ ٱلْقَهَّٰرُ
বলঃ কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্ব? বলঃ তিনি আল্লাহ! বলঃ তাহলে কি তোমরা অভিভাবক রূপে গ্রহণ করেছ আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে, যারা নিজেদের লাভ বা ক্ষতি সাধনে সক্ষম নয়? বলঃ অন্ধ ও চক্ষুস্মান কি সমান অথবা অন্ধকার ও আলো কি এক? তাহলে কি তারা আল্লাহর এমন শরীক স্থাপন করছে যারা (আল্লাহর সৃষ্টির মত) সৃষ্টি করেছে, যে কারণে সৃষ্টি তাদের মধ্যে বিভ্রাট ঘটিয়েছে? বলঃ আল্লাহ সকল কিছুর স্রষ্টা, তিনি এক, পরাক্রমশালী।
17 – রাদ
أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَسَالَتْ أَوْدِيَةٌۢ بِقَدَرِهَا فَٱحْتَمَلَ ٱلسَّيْلُ زَبَدًا رَّابِيًاۚ وَمِمَّا يُوقِدُونَ عَلَيْهِ فِى ٱلنَّارِ ٱبْتِغَآءَ حِلْيَةٍ أَوْ مَتَٰعٍ زَبَدٌ مِّثْلُهُۥۚ كَذَٰلِكَ يَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْحَقَّ وَٱلْبَٰطِلَۚ فَأَمَّا ٱلزَّبَدُ فَيَذْهَبُ جُفَآءًۖ وَأَمَّا مَا يَنفَعُ ٱلنَّاسَ فَيَمْكُثُ فِى ٱلْأَرْضِۚ كَذَٰلِكَ يَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْأَمْثَالَ
তিনি আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, ফলে নদীসমূহ ওদের পরিমাণ অনুযায়ী প্লাবিত হয় এবং প্লাবন তার উপরিস্থিত আবর্জনা বহন করে। এভাবে আবর্জনা উপরি ভাগে আসে যখন অলংকার অথবা তৈজসপত্র নির্মানের উদ্দেশে কিছু অগ্নিতে উত্তপ্ত করা হয় তার। এভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকেন; যা আবর্জনা তা ফেলে দেয়া হয় এবং যা মানুষের উপকারে আসে তা যমীনে থেকে যায়, এভাবে আল্লাহ উপমা দিয়ে থাকেন।
18 – রাদ
لِلَّذِينَ ٱسْتَجَابُواۡ لِرَبِّهِمُ ٱلْحُسْنَىٰۚ وَٱلَّذِينَ لَمْ يَسْتَجِيبُواۡ لَهُۥ لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُۥ مَعَهُۥ لَٱفْتَدَوْاۡ بِهِۦٓۚ أُوۡلَٰٓئِكَ لَهُمْ سُوٓءُ ٱلْحِسَابِ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُۖ وَبِئْسَ ٱلْمِهَادُ
মঙ্গল তাদের, যারা তাদের রবের আহবানে সাড়া দেয়। এবং যারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়না তাদের যদি পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সমস্তই থাকত এবং উহার সাথে সম পরিমাণ আরও থাকত তাহলে অবশ্যই তারা মুক্তিপণ স্বরূপ তা প্রদান করত; তাদের হিসাব হবে কঠোর এবং জাহান্নাম হবে তাদের আবাস; ওটা কত নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল!
19 – রাদ
أَفَمَن يَعْلَمُ أَنَّمَآ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ٱلْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَىٰٓۚ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُوۡلُواۡ ٱلْأَلْبَٰبِ
তোমার রাব্ব হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা যে ব্যক্তি সত্য বলে জানে সে, আর অন্ধ কি সমান? উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাই।
20 – রাদ
ٱلَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ ٱللَّهِ وَلَا يَنقُضُونَ ٱلْمِيثَٰقَ
যারা আল্লাহকে প্রদত্ত অঙ্গীকার রক্ষা করে এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেনা ।
21 – রাদ
وَٱلَّذِينَ يَصِلُونَ مَآ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦٓ أَن يُوصَلَ وَيَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ وَيَخَافُونَ سُوٓءَ ٱلْحِسَابِ
আর আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আদেশ করেছেন যারা তা অক্ষুণ্ণ রাখে, ভয় করে তাদের রাব্বকে এবং ভয় করে কঠোর হিসাবকে ।
22 – রাদ
وَٱلَّذِينَ صَبَرُواۡ ٱبْتِغَآءَ وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواۡ مِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً وَيَدْرَءُونَ بِٱلْحَسَنَةِ ٱلسَّيِّئَةَ أُوۡلَٰٓئِكَ لَهُمْ عُقْبَى ٱلدَّارِ
আর যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ধৈর্য ধারণ করে, সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করে, আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং যারা ভাল দ্বারা মন্দ দূর করে তাদের জন্য শুভ পরিণাম ।
23 – রাদ
جَنَّٰتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَن صَلَحَ مِنْ ءَابَآئِهِمْ وَأَزْوَٰجِهِمْ وَذُرِّيَّٰتِهِمْۖ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِم مِّن كُلِّ بَابٍ
স্থায়ী জান্নাত, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের মাতা-পিতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎ কাজ করেছে তারাও এবং মালাইকা/ফেরেশতারা তাদের কাছে হাযির হবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।
24 – রাদ
سَلَٰمٌ عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْۚ فَنِعْمَ عُقْبَى ٱلدَّارِ
(তারা বলবেঃ) তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছ বলে তোমাদের প্রতি শান্তি (সালাম)! কতই না ভাল এই পরিণাম!
25 – রাদ
وَٱلَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعْدِ مِيثَٰقِهِۦ وَيَقْطَعُونَ مَآ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦٓ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِى ٱلْأَرْضِۙ أُوۡلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوٓءُ ٱلدَّارِ
যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য আছে অভিসম্পাত এবং আছে মন্দ আবাস।
26 – রাদ
ٱللَّهُ يَبْسُطُ ٱلرِّزْقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقْدِرُۚ وَفَرِحُواۡ بِٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا فِى ٱلْءَاخِرَةِ إِلَّا مَتَٰعٌ
আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন কিংবা সংকুচিত করেন; কিন্তু তারা পাথির্ব জীবন নিয়েই উল্লসিত, অথচ ইহজীবনতো পরজীবনের তুলনায় ক্ষণস্থায়ী ভোগ মাত্র।
27 – রাদ
وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَوْلَآ أُنزِلَ عَلَيْهِ ءَايَةٌ مِّن رَّبِّهِۦۗ قُلْ إِنَّ ٱللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِىٓ إِلَيْهِ مَنْ أَنَابَ
যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তার রবের নিকট হতে তার নিকট কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়না কেন? তুমি বলঃ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং তিনি তাদেরকে তাঁর পথ দেখান যারা তাঁর অভিমুখী।
28 – রাদ
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكْرِ ٱللَّهِ تَطْمَئِنُّ ٱلْقُلُوبُ
যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের চিত্ত প্রশান্ত হয়; জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্ত হয়।
29 – রাদ
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ طُوبَىٰ لَهُمْ وَحُسْنُ مَـَٔابٍ
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, কল্যাণ ও শুভ পরিণাম তাদেরই।
30 – রাদ
كَذَٰلِكَ أَرْسَلْنَٰكَ فِىٓ أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَآ أُمَمٌ لِّتَتْلُوَاۡ عَلَيْهِمُ ٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِٱلرَّحْمَٰنِۚ قُلْ هُوَ رَبِّى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ
এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট আবৃত্তি করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি; তথাপি তারা দয়াময়কে অস্বীকার করে। তুমি বলঃ তিনিই আমার রাব্ব! তিনি ছাড়া অন্য কোন মা‘বূদ নেই, তাঁরই উপর আমি নির্ভর করি এবং আমার প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে।
31 – রাদ
وَلَوْ أَنَّ قُرْءَانًا سُيِّرَتْ بِهِ ٱلْجِبَالُ أَوْ قُطِّعَتْ بِهِ ٱلْأَرْضُ أَوْ كُلِّمَ بِهِ ٱلْمَوْتَىٰۗ بَل لِّلَّهِ ٱلْأَمْرُ جَمِيعًاۗ أَفَلَمْ يَاۡيْـَٔسِ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ أَن لَّوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ لَهَدَى ٱلنَّاسَ جَمِيعًاۗ وَلَا يَزَالُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ تُصِيبُهُم بِمَا صَنَعُواۡ قَارِعَةٌ أَوْ تَحُلُّ قَرِيبًا مِّن دَارِهِمْ حَتَّىٰ يَأْتِىَ وَعْدُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُخْلِفُ ٱلْمِيعَادَ
যদি কোন কুরআন এমন হত যদ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত, তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করতনা; কিন্তু সমস্ত বিষয়ই আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত; তাহলে কি যারা ঈমান এনেছে তাদের প্রত্যয় হয়নি যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিশ্চয়ই সকলকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতেন? যারা কুফরী করেছে তাদের কর্মফলের জন্য তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে, অথবা বিপর্যয় তাদের আশেপাশে আপতিত হতেই থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ঘটবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিশ্রুতি পালনে অক্ষম নন।
32 – রাদ
وَلَقَدِ ٱسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَأَمْلَيْتُ لِلَّذِينَ كَفَرُواۡ ثُمَّ أَخَذْتُهُمْۖ فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ
তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে এবং যারা কুফরী করেছে তাদেরকে কিছু অবকাশ দিয়েছিলাম, অতঃপর তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম; কেমন ছিল আমার পাকড়াও!
33 – রাদ
أَفَمَنْ هُوَ قَآئِمٌ عَلَىٰ كُلِّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْۗ وَجَعَلُواۡ لِلَّهِ شُرَكَآءَ قُلْ سَمُّوهُمْۚ أَمْ تُنَبِّـُٔونَهُۥ بِمَا لَا يَعْلَمُ فِى ٱلْأَرْضِ أَم بِظَٰهِرٍ مِّنَ ٱلْقَوْلِۗ بَلْ زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُواۡ مَكْرُهُمْ وَصُدُّواۡ عَنِ ٱلسَّبِيلِۗ وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِنْ هَادٍ
তাহলে কি প্রত্যেক মানুষ যা করে, তার যিনি পর্যবেক্ষক তিনি অক্ষম এদের উপাস্যগুলির মত? অথচ তারা আল্লাহর বহু শরীক করেছে। তুমি বলঃ তোমরা তাদের পরিচয় দাও; তোমরা কি পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ তাঁকে দিতে চাও যা তিনি জানেননা? না বরং ওদের ছলনা ওদের নিকট শোভন প্রতীয়মান হয় এবং তারা সৎ পথ হতে নিবৃত্ত হয়; আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার কোন পথ প্রদর্শক নেই।
34 – রাদ
لَّهُمْ عَذَابٌ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۖ وَلَعَذَابُ ٱلْءَاخِرَةِ أَشَقُّۖ وَمَا لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن وَاقٍ
তাদের জন্য পার্থিব জীবনে আছে শাস্তি এবং পরকালের শাস্তিতো আরও কঠোর! এবং আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করার তাদের কেহ নেই।
35 – রাদ
مَّثَلُ ٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَۖ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُۖ أُكُلُهَا دَآئِمٌ وَظِلُّهَاۚ تِلْكَ عُقْبَى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَواۡۖ وَّعُقْبَى ٱلْكَٰفِرِينَ ٱلنَّارُ
মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার উপমা এইরূপঃ ওর পাদদেশে নদী প্রবাহিত, ওর ফলসমূহ এবং ওর ছায়া চিরস্থায়ী; যারা মুত্তাকী এটা তাদের কর্মফল, এবং কাফিরদের কর্মফল আগুন।
36 – রাদ
وَٱلَّذِينَ ءَاتَيْنَٰهُمُ ٱلْكِتَٰبَ يَفْرَحُونَ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيْكَۖ وَمِنَ ٱلْأَحْزَابِ مَن يُنكِرُ بَعْضَهُۥۚ قُلْ إِنَّمَآ أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ ٱللَّهَ وَلَآ أُشْرِكَ بِهِۦٓۚ إِلَيْهِ أَدْعُواۡ وَإِلَيْهِ مَـَٔابِ
আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তারা যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আনন্দ পায়, কিন্তু কোন কোন দল ওর কতক অংশ অস্বীকার করে। তুমি বলঃ আমিতো আল্লাহরই ইবাদাত করতে ও তাঁর কোন শরীক না করতে আদিষ্ট হয়েছি; আমি তাঁরই প্রতি আহবান করি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।
37 – রাদ
وَكَذَٰلِكَ أَنزَلْنَٰهُ حُكْمًا عَرَبِيًّاۚ وَلَئِنِ ٱتَّبَعْتَ أَهْوَآءَهُم بَعْدَمَا جَآءَكَ مِنَ ٱلْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلَا وَاقٍ
আর এভাবে আমি ইহা (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এক বিধান, আরাবী ভাষায়। জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষক থাকবেনা।
38 – রাদ
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَٰجًا وَذُرِّيَّةًۚ وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن يَأْتِىَ بِـَٔايَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِۗ لِكُلِّ أَجَلٍ كِتَابٌ
তোমার পূর্বেও আমি অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন নিদর্শন উপস্থিত করা কোন রাসূলের কাজ নয়; প্রত্যেক বিষয়ের নির্ধারিত কাল লিপিবদ্ধ।
39 – রাদ
يَمْحُواۡ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُ وَيُثْبِتُۖ وَعِندَهُۥٓ أُمُّ ٱلْكِتَٰبِ
আল্লাহর যা ইচ্ছা তা নিশ্চিহ্ন করেন এবং যা ইচ্ছা তা প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং তাঁরই নিকট আছে কিতাবের মূল।
40 – রাদ
وَإِن مَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ ٱلَّذِى نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ ٱلْبَلَٰغُ وَعَلَيْنَا ٱلْحِسَابُ
আমি তাদেরকে যে শাস্তির কথা বলি, তার কিছু যদি তোমাকে দেখিয়েই দিই অথবা যদি এর পূর্বে তোমার মৃত্যু ঘটিয়েই দিই – তোমার কর্তব্যতো শুধু প্রচার করা; আর হিসাব গ্রহণের দায়িত্ব আমার।
41 – রাদ
أَوَلَمْ يَرَوْاۡ أَنَّا نَأْتِى ٱلْأَرْضَ نَنقُصُهَا مِنْ أَطْرَافِهَاۚ وَٱللَّهُ يَحْكُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُكْمِهِۦۚ وَهُوَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ
তারা কি দেখেনা যে, আমি তাদের দেশকে চারদিক হতে সংকুচিত করে আনছি? আল্লাহ আদেশ করেন, তাঁর আদেশ রদ করার কেহ নেই এবং তিনি হিসাব গ্রহণে তৎপর।
42 – রাদ
وَقَدْ مَكَرَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلِلَّهِ ٱلْمَكْرُ جَمِيعًاۖ يَعْلَمُ مَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍۗ وَسَيَعْلَمُ ٱلْكُفَّٰرُ لِمَنْ عُقْبَى ٱلدَّارِ
তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু সমস্ত চক্রান্ত আল্লাহর এখতিয়ারে; প্রত্যেক ব্যক্তি যা করে তা তিনি জানেন এবং কাফিরেরা শীঘ্রই জানবে শুভ পরিণাম কাদের জন্য।
43 – রাদ
وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَسْتَ مُرْسَلًاۚ قُلْ كَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِيدًۢا بَيْنِى وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِندَهُۥ عِلْمُ ٱلْكِتَٰبِ
যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তুমি (আল্লাহর) প্রেরিত নও; তুমি বলঃ আল্লাহ এবং যাদের নিকট কিতাবের জ্ঞান আছে তারা আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট।
14 নং সূরা – ইবরাহীম – إِبْرَاهِيم
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 52
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – ইবরাহীম
الٓرۚ كِتَٰبٌ أَنزَلْنَٰهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ ٱلنَّاسَ مِنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذْنِ رَبِّهِمْ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَمِيدِ
আলিফ লাম রা। এই কিতাব আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যাতে তুমি মানব জাতিকে বের করে আনতে পার অন্ধকার হতে আলোর দিকে; তাঁর পথে, যিনি পরাক্রমশালী, প্রশংসিত।
2 – ইবরাহীম
ٱللَّهِ ٱلَّذِى لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۗ وَوَيْلٌ لِّلْكَٰفِرِينَ مِنْ عَذَابٍ شَدِيدٍ
আল্লাহ, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তা তাঁরই; কঠিন শাস্তির দুর্ভোগ কাফিরদের জন্য।
3 – ইবরাহীম
ٱلَّذِينَ يَسْتَحِبُّونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا عَلَى ٱلْءَاخِرَةِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًاۚ أُوۡلَٰٓئِكَ فِى ضَلَٰلٍۭ بَعِيدٍ
যারা পার্থিব জীবনকে পরকালিন জীবনের উপর প্রাধান্য দেয়, মানুষকে নিবৃত্ত করে আল্লাহর পথ হতে এবং তা (আল্লাহর পথ) বক্র করতে চায়; তারাইতো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
4 – ইবরাহীম
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِۦ لِيُبَيِّنَ لَهُمْۖ فَيُضِلُّ ٱللَّهُ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِى مَن يَشَآءُۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
5 – ইবরাহীম
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِـَٔايَٰتِنَآ أَنْ أَخْرِجْ قَوْمَكَ مِنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ وَذَكِّرْهُم بِأَيَّىٰمِ ٱللَّهِۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
মূসাকে আমি আমার নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার হতে আলোতে আনয়ন কর, এবং তাদেরকে আল্লাহর দিনগুলি দ্বারা উপদেশ দাও, এতেতো নিদর্শন রয়েছে পরম ধৈর্যশীল ও পরম কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।
6 – ইবরাহীম
وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ ٱذْكُرُواۡ نِعْمَةَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ أَنجَىٰكُم مِّنْ ءَالِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِ وَيُذَبِّحُونَ أَبْنَآءَكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَآءَكُمْۚ وَفِى ذَٰلِكُم بَلَآءٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ
যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তিনি তোমাদেরকে রক্ষা করেছিলেন ফির‘আউন সম্প্রদায়ের কবল হতে যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্রদেরকে যবাহ করত ও তোমাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত; এবং এতে ছিল তোমাদের রবের পক্ষ হতে এক মহা পরীক্ষা।
7 – ইবরাহীম
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِى لَشَدِيدٌ
যখন তোমাদের রাব্ব ঘোষণা করেনঃ তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দিব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।
8 – ইবরাহীম
وَقَالَ مُوسَىٰٓ إِن تَكْفُرُوٓاۡ أَنتُمْ وَمَن فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ ٱللَّهَ لَغَنِىٌّ حَمِيدٌ
মূসা বলেছিলঃ তোমরা এবং পৃথিবীর সকলেও যদি অকৃতজ্ঞ হও তথাপি আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং প্রশংসা ।
9 – ইবরাহীম
أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَؤُاۡ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَۛ وَٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِمْۛ لَا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا ٱللَّهُۚ جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَرَدُّوٓاۡ أَيْدِيَهُمْ فِىٓ أَفْوَٰهِهِمْ وَقَالُوٓاۡ إِنَّا كَفَرْنَا بِمَآ أُرْسِلْتُم بِهِۦ وَإِنَّا لَفِى شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَنَآ إِلَيْهِ مُرِيبٍ
তোমাদের কাছে কি সংবাদ আসেনি তোমাদের পূর্ববর্তীদের; নূহের সম্প্রদায়ের, ‘আদ ও ছামূদের এবং তাদের পূর্ববর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেহ জানেনা; তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল এসেছিল; তারা তাদের হাত তাদের মুখে স্থাপন করত এবং বলতঃ যা নিয়ে তোমরা প্রেরিত হয়েছ তা আমরা প্রত্যাখ্যান করি এবং আমরা অবশ্যই বিভ্রান্তিকর সন্দেহ পোষণ করি সেই বিষয়ে, যার প্রতি তোমরা আমাদেরকে আহবান করছ।
10 – ইবরাহীম
قَالَتْ رُسُلُهُمْ أَفِى ٱللَّهِ شَكٌّ فَاطِرِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ يَدْعُوكُمْ لِيَغْفِرَ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرَكُمْ إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّىۚ قَالُوٓاۡ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا تُرِيدُونَ أَن تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ ءَابَآؤُنَا فَأْتُونَا بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ
তাদের রাসূলগণ বলেছিলঃ আল্লাহ সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ আছে, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা? তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন তোমাদের পাপ ক্ষমা করার জন্য এবং নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তোমাদেরকে অবকাশ দেয়ার জন্য। তারা বলতঃ তোমরাতো আমাদের মতই মানুষ; আমাদের পিতৃ পুরুষগণ যাদের ইবাদাত করত তোমরা তাদের ইবাদাত হতে আমাদেরকে বিরত রাখতে চাও; অতএব তোমরা আমাদের কাছে কোন অকাট্য প্রমাণ উপস্থিত কর।
11 – ইবরাহীম
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦۖ وَمَا كَانَ لَنَآ أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَٰنٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُؤْمِنُونَ
তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বলতঃ সত্য বটে আমরা তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন; আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তোমাদের নিকট প্রমাণ উপস্থিত করা আমাদের কাজ নয়; মু’মিনদের আল্লাহর উপরই নির্ভর করা উচিত।
12 – ইবরাহীম
وَمَا لَنَآ أَلَّا نَتَوَكَّلَ عَلَى ٱللَّهِ وَقَدْ هَدَىٰنَا سُبُلَنَاۚ وَلَنَصْبِرَنَّ عَلَىٰ مَآ ءَاذَيْتُمُونَاۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُتَوَكِّلُونَ
আমরা আল্লাহর উপর নির্ভর করবনা কেন? তিনিইতো আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন; তোমরা আমাদেরকে যে ক্লেশ দিচ্ছ, আমরা অবশ্যই তা ধৈর্যের সাথে সহ্য করব এবং নির্ভরকারীদের আল্লাহরই উপর নির্ভর করা উচিত।
13 – ইবরাহীম
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لِرُسُلِهِمْ لَنُخْرِجَنَّكُم مِّنْ أَرْضِنَآ أَوْ لَتَعُودُنَّ فِى مِلَّتِنَاۖ فَأَوْحَىٰٓ إِلَيْهِمْ رَبُّهُمْ لَنُهْلِكَنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ
কাফিরেরা তাদের রাসূলদেরকে বলেছিলঃ আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই আমাদের দেশ হতে বহিস্কার করব, অথবা তোমাদেরকে আমাদের ধর্মাদর্শে ফিরে আসতেই হবে। অতঃপর রাসূলদেরকে তাদের রাব্ব অহী প্রেরণ করলেন; যালিমদেরকে আমি অবশ্যই বিনাশ করব।
14 – ইবরাহীম
وَلَنُسْكِنَنَّكُمُ ٱلْأَرْضَ مِنۢ بَعْدِهِمْۚ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَافَ مَقَامِى وَخَافَ وَعِيدِ
তাদের পরে আমি তোমাদেরকে দেশে প্রতিষ্ঠিত করবই; এটা তাদের জন্য যারা ভয় রাখে আমার সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার এবং ভয় রাখে আমার শাস্তির।
15 – ইবরাহীম
وَٱسْتَفْتَحُواۡ وَخَابَ كُلُّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ
তারা বিচার কামনা করল এবং প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারী ব্যর্থ মনোরথ হল।
16 – ইবরাহীম
مِّن وَرَآئِهِۦ جَهَنَّمُ وَيُسْقَىٰ مِن مَّآءٍ صَدِيدٍ
তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিণামে জাহান্নাম রয়েছে এবং প্রত্যেককে পান করানো হবে গলিত পুঁজ ।
17 – ইবরাহীম
يَتَجَرَّعُهُۥ وَلَا يَكَادُ يُسِيغُهُۥ وَيَأْتِيهِ ٱلْمَوْتُ مِن كُلِّ مَكَانٍ وَمَا هُوَ بِمَيِّتٍۖ وَمِن وَرَآئِهِۦ عَذَابٌ غَلِيظٌ
যা সে অতি কষ্টে গলধঃকরণ করবে এবং তা গলধঃকরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সর্ব দিক হতে তার নিকট আসবে মৃত্যু যন্ত্রণা, কিন্তু তার মৃত্যু ঘটবেনা এবং সে কঠোর শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে।
18 – ইবরাহীম
مَّثَلُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ بِرَبِّهِمْۖ أَعْمَٰلُهُمْ كَرَمَادٍ ٱشْتَدَّتْ بِهِ ٱلرِّيحُ فِى يَوْمٍ عَاصِفٍۖ لَّا يَقْدِرُونَ مِمَّا كَسَبُواۡ عَلَىٰ شَىْءٍۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلضَّلَٰلُ ٱلْبَعِيدُ
যারা তাদের রাব্বকে অস্বীকার করে তাদের উপমা – তাদের কাজসমূহ ছাই সদৃশ যা ঝড়ের দিনে বাতাস প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়; যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাতে পারেনা; এটাতো ঘোর বিভ্রান্তি।
19 – ইবরাহীম
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّۚ إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ وَيَأْتِ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ
তুমি কি লক্ষ্য করনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী যথাবিধি সৃষ্টি করেছেন? তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের অস্তিত্ব বিলোপ করতে পারেন এবং এক নতুন সৃষ্টি অস্তিত্বে আনতে পারেন।
20 – ইবরাহীম
وَمَا ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ بِعَزِيزٍ
আর এটা আল্লাহর জন্য আদৌ কঠিন নয়।
21 – ইবরাহীম
وَبَرَزُواۡ لِلَّهِ جَمِيعًا فَقَالَ ٱلضُّعَفَٰٓؤُاۡ لِلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓاۡ إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ أَنتُم مُّغْنُونَ عَنَّا مِنْ عَذَابِ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍۚ قَالُواۡ لَوْ هَدَىٰنَا ٱللَّهُ لَهَدَيْنَٰكُمْۖ سَوَآءٌ عَلَيْنَآ أَجَزِعْنَآ أَمْ صَبَرْنَا مَا لَنَا مِن مَّحِيصٍ
সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবেই। যারা অহংকার করত, দুর্বলেরা তাদেরকে বলবেঃ আমরাতো তোমাদের অনুসারী ছিলাম; এখন তোমরা আল্লাহর শাস্তি হতে কি আমাদেরকে কিছু মাত্র রক্ষা করতে পারবে? তারা বলবেঃ আল্লাহ আমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করতাম; এখন আমাদের ধৈর্যচ্যূত হওয়া অথবা ধৈর্যশীল হওয়া একই কথা; আমাদের কোন নিস্কৃতি নেই।
22 – ইবরাহীম
وَقَالَ ٱلشَّيْطَٰنُ لَمَّا قُضِىَ ٱلْأَمْرُ إِنَّ ٱللَّهَ وَعَدَكُمْ وَعْدَ ٱلْحَقِّ وَوَعَدتُّكُمْ فَأَخْلَفْتُكُمْۖ وَمَا كَانَ لِىَ عَلَيْكُم مِّن سُلْطَٰنٍ إِلَّآ أَن دَعَوْتُكُمْ فَٱسْتَجَبْتُمْ لِىۖ فَلَا تَلُومُونِى وَلُومُوٓاۡ أَنفُسَكُمۖ مَّآ أَنَا۠ بِمُصْرِخِكُمْ وَمَآ أَنتُم بِمُصْرِخِىَّۖ إِنِّى كَفَرْتُ بِمَآ أَشْرَكْتُمُونِ مِن قَبْلُۗ إِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যখন সব কিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে তখন শাইতান বলবেঃ আল্লাহ তোমাদেরকে দিয়েছিলেন সত্য প্রতিশ্রুতি, আমিও তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিনি; আমারতো তোমাদের উপর কোন আধিপত্য ছিলনা, আমি শুধু তোমাদেরকে আহবান করেছিলাম এবং তোমরা আমার আহবানে সাড়া দিয়েছিলে; সুতরাং তোমরা আমার প্রতি দোষারোপ করনা, তোমরা তোমাদের প্রতিই দোষারোপ কর; আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নই এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নও; তোমরা যে পূর্বে আমাকে (আল্লাহর) শরীক করেছিলে তার সাথে আমার কোনই সম্পর্ক নেই; যালিমদের জন্যতো বেদনাদায়ক শাস্তি আছেই।
23 – ইবরাহীম
وَأُدْخِلَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْۖ تَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَٰمٌ
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদেরকে দাখিল করা হবে জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী হবে তাদের রবের অনুমতিক্রমে। সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।
24 – ইবরাহীম
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا كَلِمَةً طَيِّبَةً كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِى ٱلسَّمَآءِ
তুমি কি লক্ষ্য করনা আল্লাহ কিভাবে উপমা দিয়ে থাকেন? সৎ বাক্যের তুলনা উৎকৃষ্ট বৃক্ষ যার মূল সুদৃঢ় এবং যার প্রশাখা উর্ধ্বে বিস্তৃত ।
25 – ইবরাহীম
تُؤْتِىٓ أُكُلَهَا كُلَّ حِينٍۭ بِإِذْنِ رَبِّهَاۗ وَيَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
যা প্রত্যেক মওসুমে ফল দান করে তার রবের অনুমতিক্রমে, এবং আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে।
26 – ইবরাহীম
وَمَثَلُ كَلِمَةٍ خَبِيثَةٍ كَشَجَرَةٍ خَبِيثَةٍ ٱجْتُثَّتْ مِن فَوْقِ ٱلْأَرْضِ مَا لَهَا مِن قَرَارٍ
কু-বাক্যের তুলনা এক মন্দ বৃক্ষ যার মূল ভূ-পৃষ্ঠ হতে বিচ্ছিন্ন, যার কোন স্থায়িত্ব নেই।
27 – ইবরাহীম
يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِٱلْقَوْلِ ٱلثَّابِتِ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَفِى ٱلْءَاخِرَةِۖ وَيُضِلُّ ٱللَّهُ ٱلظَّٰلِمِينَۚ وَيَفْعَلُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُ
যারা শাশ্বত বাণীতে বিশ্বাসী তাদেরকে ইহজীবনে ও পরজীবনে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন এবং যারা যালিম, আল্লাহ তাদেরকে বিভ্রান্তিতে রাখবেন; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন।
28 – ইবরাহীম
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ بَدَّلُواۡ نِعْمَتَ ٱللَّهِ كُفْرًا وَأَحَلُّواۡ قَوْمَهُمْ دَارَ ٱلْبَوَارِ
তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনা যারা আল্লাহর অনুগ্রহের পরিবর্তে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং তাদের সম্প্রদায়কে নামিয়ে আনে ধ্বংসের আলয়ে ।
29 – ইবরাহীম
جَهَنَّمَ يَصْلَوْنَهَاۖ وَبِئْسَ ٱلْقَرَارُ
জাহান্নাম, যার মধ্যে তারা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট ঐ আবাসস্থল!
30 – ইবরাহীম
وَجَعَلُواۡ لِلَّهِ أَندَادًا لِّيُضِلُّواۡ عَن سَبِيلِهِۦۗ قُلْ تَمَتَّعُواۡ فَإِنَّ مَصِيرَكُمْ إِلَى ٱلنَّارِ
আর তারা আল্লাহর সমকক্ষ উদ্ভাবন করে তাঁর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্য; তুমি বলঃ ভোগ করে নাও, পরিণামে আগুনই তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল।
31 – ইবরাহীম
قُل لِّعِبَادِىَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ يُقِيمُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُنفِقُواۡ مِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌ لَّا بَيْعٌ فِيهِ وَلَا خِلَٰلٌ
আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মু’মিন তাদেরকে বল সালাত কায়েম করতে এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে, সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব থাকবেনা।
32 – ইবরাহীম
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَخْرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزْقًا لَّكُمْۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلْفُلْكَ لِتَجْرِىَ فِى ٱلْبَحْرِ بِأَمْرِهِۦۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلْأَنْهَٰرَ
তিনিই আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে তদ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্য ফল-মূল উৎপাদন করেন, যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তাঁর বিধানে ওটা সমুদ্রে বিচরণ করে এবং যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীসমূহকে।
33 – ইবরাহীম
وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ دَآئِبَيْنِۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ
তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চাঁদকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী এবং তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত ও দিনকে ।
34 – ইবরাহীম
وَءَاتَىٰكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلْتُمُوهُۚ وَإِن تَعُدُّواۡ نِعْمَتَ ٱللَّهِ لَا تُحْصُوهَآۗ إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ
আর তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তোমরা তাঁর নিকট যা কিছু চেয়েছ; তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে ওর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবেনা; মানুষ অবশ্যই অতিমাত্রায় যালিম, অকৃতজ্ঞ।
35 – ইবরাহীম
وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِيمُ رَبِّ ٱجْعَلْ هَٰذَا ٱلْبَلَدَ ءَامِنًا وَٱجْنُبْنِى وَبَنِىَّ أَن نَّعْبُدَ ٱلْأَصْنَامَ
স্মরণ কর, ইবরাহীম বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! এই শহরকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে মূর্তি পূজা হতে দূরে রাখুন।
36 – ইবরাহীম
رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِّنَ ٱلنَّاسِۖ فَمَن تَبِعَنِى فَإِنَّهُۥ مِنِّىۖ وَمَنْ عَصَانِى فَإِنَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে আমার রাব্ব! এই সব মূর্তি বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে; সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে’ই আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেহ আমার অবাধ্য হলে আপনিতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
37 – ইবরাহীম
رَّبَّنَآ إِنِّىٓ أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِى بِوَادٍ غَيْرِ ذِى زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ ٱلْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱجْعَلْ أَفْـِٔدَةً مِّنَ ٱلنَّاسِ تَهْوِىٓ إِلَيْهِمْ وَٱرْزُقْهُم مِّنَ ٱلثَّمَرَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
হে আমাদের রাব্ব! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র গৃহের নিকট। হে আমাদের রাব্ব! এ জন্য যে, তারা যেন সালাত কায়েম করে; সুতরাং আপনি কিছু লোকের অন্তর ওদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফলফলাদি দ্বারা তাদের রিয্কের ব্যবস্থা করুন যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
38 – ইবরাহীম
رَبَّنَآ إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِى وَمَا نُعْلِنُۗ وَمَا يَخْفَىٰ عَلَى ٱللَّهِ مِن شَىْءٍ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فِى ٱلسَّمَآءِ
হে আমাদের রাব্ব! আপনিতো জানেন যা আমরা গোপন করি এবং যা আমরা প্রকাশ করি; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর কোন কিছুই আল্লাহর নিকট গোপন থাকেনা।
39 – ইবরাহীম
ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ٱلَّذِى وَهَبَ لِى عَلَى ٱلْكِبَرِ إِسْمَٰعِيلَ وَإِسْحَٰقَۚ إِنَّ رَبِّى لَسَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য যিনি আমাকে আমার বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন; আমার রাব্ব অবশ্যই প্রার্থনা শুনে থাকেন।
40 – ইবরাহীম
رَبِّ ٱجْعَلْنِى مُقِيمَ ٱلصَّلَوٰةِ وَمِن ذُرِّيَّتِىۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَآءِ
হে আমার রাব্ব! আমাকে সালাত কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও; হে আমাদের রাব্ব! আমার প্রার্থনা কবূল করুন।
41 – ইবরাহীম
رَبَّنَا ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ ٱلْحِسَابُ
হে আমার রাব্ব! যেদিন হিসাব হবে সেদিন আমাকে, আমার মাতাপিতাকে এবং মু’মিনদেরকে ক্ষমা করুন।
42 – ইবরাহীম
وَلَا تَحْسَبَنَّ ٱللَّهَ غَٰفِلًا عَمَّا يَعْمَلُ ٱلظَّٰلِمُونَۚ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ ٱلْأَبْصَٰرُ
তুমি কখনও মনে করনা যে, যালিমরা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ উদাসীন। তবে তিনি সেদিন পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন যেদিন তাদের চক্ষু হবে স্থির।
43 – ইবরাহীম
مُهْطِعِينَ مُقْنِعِى رُءُوسِهِمْ لَا يَرْتَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْفُهُمْۖ وَأَفْـِٔدَتُهُمْ هَوَآءٌ
ভীতি বিহবল চিত্তে (আকাশের দিকে চেয়ে) ছুটাছুটি করবে। নিজেদের প্রতি তাদের দৃষ্টি ফিরবেনা এবং তাদের অন্তর হবে শূন্য।
44 – ইবরাহীম
وَأَنذِرِ ٱلنَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ ٱلْعَذَابُ فَيَقُولُ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواۡ رَبَّنَآ أَخِّرْنَآ إِلَىٰٓ أَجَلٍ قَرِيبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ ٱلرُّسُلَۗ أَوَلَمْ تَكُونُوٓاۡ أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ
যেদিন তাদের শাস্তি আসবে সেদিন সম্পর্কে তুমি মানুষকে সতর্ক কর। তখন যালিমরা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের কিছুকালের জন্য অবকাশ দিন, আমরা আপনার আহবানে সাড়া দিব এবং রাসূলদের অনুসরণ করবই। তোমরা কি পূর্বে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের পতন নেই?
45 – ইবরাহীম
وَسَكَنتُمْ فِى مَسَٰكِنِ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاۡ أَنفُسَهُمْ وَتَبَيَّنَ لَكُمْ كَيْفَ فَعَلْنَا بِهِمْ وَضَرَبْنَا لَكُمُ ٱلْأَمْثَالَ
অথচ তোমরা বাস করতে তাদের বাসভূমিতে যারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল এবং তাদের প্রতি আমি কি করেছিলাম তাও তোমাদের নিকট সুবিদিত ছিল এবং তোমাদের নিকট আমি তাদের দৃষ্টান্তও উপস্থিত করেছিলাম।
46 – ইবরাহীম
وَقَدْ مَكَرُواۡ مَكْرَهُمْ وَعِندَ ٱللَّهِ مَكْرُهُمْ وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ ٱلْجِبَالُ
তারা ভীষণ চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আল্লাহর নিকট তাদের চক্রান্ত রক্ষিত রয়েছে। তাদের চক্রান্ত এমন ছিলনা যাতে পর্বত টলে যেত।
47 – ইবরাহীম
فَلَا تَحْسَبَنَّ ٱللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِۦ رُسُلَهُۥٓۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ ذُو ٱنتِقَامٍ
তুমি কখনও মনে করনা যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন; আল্লাহ পরাক্রমশালী, দন্ড বিধায়ক।
48 – ইবরাহীম
يَوْمَ تُبَدَّلُ ٱلْأَرْضُ غَيْرَ ٱلْأَرْضِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُۖ وَبَرَزُواۡ لِلَّهِ ٱلْوَٰحِدِ ٱلْقَهَّارِ
যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও এবং মানুষ উপস্থিত হবে আললাহর সামনে, যিনি এক, পরাক্রমশালী।
49 – ইবরাহীম
وَتَرَى ٱلْمُجْرِمِينَ يَوْمَئِذٍ مُّقَرَّنِينَ فِى ٱلْأَصْفَادِ
সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃংখলিত অবস্থায়।
50 – ইবরাহীম
سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٍ وَتَغْشَىٰ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ
তাদের পোশাক হবে আলকাতরার এবং আগুন আচ্ছন্ন করবে তাদের মুখমন্ডল।
51 – ইবরাহীম
لِيَجْزِىَ ٱللَّهُ كُلَّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ
যাতে আল্লাহ প্রতিদান দেন প্রত্যেক নাফসকে যা সে অর্জন করেছে। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
52 – ইবরাহীম
هَٰذَا بَلَٰغٌ لِّلنَّاسِ وَلِيُنذَرُواۡ بِهِۦ وَلِيَعْلَمُوٓاۡ أَنَّمَا هُوَ إِلَٰهٌ وَٰحِدٌ وَلِيَذَّكَّرَ أُوۡلُواۡ ٱلْأَلْبَٰبِ
ইহা মানুষের জন্য এক বার্তা যাতে এর দ্বারা তারা সতর্ক হয় এবং জানতে পারে যে, তিনি একমাত্র উপাস্য এবং যাতে বোধশক্তি সম্পন্নরা উপদেশ গ্রহণ করে।
15 নং সূরা – হিজর – ٱلْحِجْر
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 99
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – হিজর
الٓرۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِ وَقُرْءَانٍ مُّبِينٍ
আলিফ লাম রা। এগুলি আয়াত, মহাগ্রন্থের, সুস্পষ্ট কুরআনের।
2 – হিজর
رُّبَمَا يَوَدُّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَوْ كَانُواۡ مُسْلِمِينَ
যারা কুফরী করেছে, তারা একসময় কামনা করবে যদি তারা মুসলিম হত!
3 – হিজর
ذَرْهُمْ يَأْكُلُواۡ وَيَتَمَتَّعُواۡ وَيُلْهِهِمُ ٱلْأَمَلُۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
তাদের ছেড়ে দাও, তারা খেতে থাকুক, ভোগ করতে থাকুক এবং মিথ্যা আশা ওদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখুক, পরিণামে তারা বুঝবে।
4 – হিজর
وَمَآ أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلَّا وَلَهَا كِتَابٌ مَّعْلُومٌ
আমি কোন জনপদকে তার নির্দিষ্ট কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ধ্বংস করিনি।
5 – হিজর
مَّا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَـْٔخِرُونَ
কোন জাতি তার নির্দিষ্ট কালকে ত্বরান্বিত করতে পারেনা এবং বিলম্বিতও করতে পারেনা।
6 – হিজর
وَقَالُواۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِى نُزِّلَ عَلَيْهِ ٱلذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌ
তারা বলেঃ ওহে, যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে! তুমিতো নিশ্চয়ই উম্মাদ।
7 – হিজর
لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِٱلْمَلَٰٓئِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তুমি সত্যবাদী হলে আমাদের নিকট মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে হাযির করছনা কেন?
8 – হিজর
مَا نُنَزِّلُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَمَا كَانُوٓاۡ إِذًا مُّنظَرِينَ
আমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে যথার্থ কারণ ব্যতীত প্রেরণ করিনা; মালাইকা/ফেরেশতারা হাযির হলে তারা অবকাশ পাবেনা।
9 – হিজর
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا ٱلذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ
আমিই জিকর (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই উহার সংরক্ষক।
10 – হিজর
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِى شِيَعِ ٱلْأَوَّلِينَ
তোমার পূর্বে আমি পূর্বের অনেক সম্প্রদায়ের নিকট রাসূল পাঠিয়েছি।
11 – হিজর
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا كَانُواۡ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
তাদের নিকট এমন কোন রাসূল আসেনি যাকে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করতনা।
12 – হিজর
كَذَٰلِكَ نَسْلُكُهُۥ فِى قُلُوبِ ٱلْمُجْرِمِينَ
এভাবে আমি অপরাধীদের অন্তরে তা সঞ্চার করি।
13 – হিজর
لَا يُؤْمِنُونَ بِهِۦۖ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ ٱلْأَوَّلِينَ
তারা কুরআনে বিশ্বাস করবেনা এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল।
14 – হিজর
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فَظَلُّواۡ فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি তাদের জন্য আমি আকাশের দরযা খুলে দিই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহণ করতে থাকে ।
15 – হিজর
لَقَالُوٓاۡ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَٰرُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
তবুও তারা বলবেঃ আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে; না, বরং আমরা এক যাদুগ্রস্ত সম্প্রদায়।
16 – হিজর
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًا وَزَيَّنَّٰهَا لِلنَّٰظِرِينَ
আকাশে আমি গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং ওকে করেছি সুশোভিত, দর্শকদের জন্য।
17 – হিজর
وَحَفِظْنَٰهَا مِن كُلِّ شَيْطَٰنٍ رَّجِيمٍ
প্রত্যেক অভিশপ্ত শাইতান হতে আমি ওকে রক্ষা করি।
18 – হিজর
إِلَّا مَنِ ٱسْتَرَقَ ٱلسَّمْعَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌ مُّبِينٌ
আর কেহ চুরি করে সংবাদ শুনতে চাইলে ওর পশ্চাদ্ধাবন করে প্রদীপ্ত শিখা।
19 – হিজর
وَٱلْأَرْضَ مَدَدْنَٰهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَىْءٍ مَّوْزُونٍ
পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং ওতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি; আমি ওতে প্রত্যেক বস্তু উৎপন্ন করেছি সুপরিমিতভাবে।
20 – হিজর
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَٰيِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُۥ بِرَٰزِقِينَ
আর আমি ওতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যও।
21 – হিজর
وَإِن مِّن شَىْءٍ إِلَّا عِندَنَا خَزَآئِنُهُۥ وَمَا نُنَزِّلُهُۥٓ إِلَّا بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ
আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার এবং আমি তা সুসম পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি।
22 – হিজর
وَأَرْسَلْنَا ٱلرِّيَٰحَ لَوَٰقِحَ فَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَسْقَيْنَٰكُمُوهُ وَمَآ أَنتُمْ لَهُۥ بِخَٰزِنِينَ
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদেরকে পান করতে দিই; ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই।
23 – হিজর
وَإِنَّا لَنَحْنُ نُحْىِۦ وَنُمِيتُ وَنَحْنُ ٱلْوَٰرِثُونَ
আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।
24 – হিজর
وَلَقَدْ عَلِمْنَا ٱلْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا ٱلْمُسْتَـْٔخِرِينَ
তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে আমি তাদেরকে জানি এবং পরে যারা আসবে তাদেরকেও জানি।
25 – হিজর
وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْۚ إِنَّهُۥ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
তোমার রাব্বই তাদেরকে সমবেত করবেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
26 – হিজর
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن صَلْصَٰلٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে।
27 – হিজর
وَٱلْجَآنَّ خَلَقْنَٰهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ ٱلسَّمُومِ
এর পূর্বে সৃষ্টি করেছি জিনকে, প্রখর শিখাযুক্ত অগ্নি হতে।
28 – হিজর
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَٰٓئِكَةِ إِنِّى خَٰلِقٌۢ بَشَرًا مِّن صَلْصَٰلٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে মানুষ সৃষ্টি করব।
29 – হিজর
فَإِذَا سَوَّيْتُهُۥ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِى فَقَعُواۡ لَهُۥ سَٰجِدِينَ
যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সাজদাহবনত হও।
30 – হিজর
فَسَجَدَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ
মালাইকা/ফেরেশতাগণ সবাই একত্রে সাজদাহ করল।
31 – হিজর
إِلَّآ إِبْلِيسَ أَبَىٰٓ أَن يَكُونَ مَعَ ٱلسَّٰجِدِينَ
কিন্তু ইবলীস করলনা, সে সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল।
32 – হিজর
قَالَ يَٰٓإِبْلِيسُ مَا لَكَ أَلَّا تَكُونَ مَعَ ٱلسَّٰجِدِينَ
(আল্লাহ) বললেনঃ হে ইবলীস! তোর কি হল, তুই কেন সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলিনা?
33 – হিজর
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُۥ مِن صَلْصَٰلٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
সে উত্তরে বললঃ ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মৃত্তিকা হতে যে মানুষ আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি তাকে সাজদাহ করার নই।
34 – হিজর
قَالَ فَٱخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ
(আল্লাহ) বললেনঃ তাহলে তুই এখান হতে বের হয়ে যা, কারণ তুই অভিশপ্ত।
35 – হিজর
وَإِنَّ عَلَيْكَ ٱللَّعْنَةَ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلدِّينِ
কর্মফল দিন পর্যন্ত তোর প্রতি রইল লা’নত।
36 – হিজর
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِىٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
ইবলীস বললঃ হে আমার রাব্ব! পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন।
37 – হিজর
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ ٱلْمُنظَرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল ।
38 – হিজর
إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْوَقْتِ ٱلْمَعْلُومِ
অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।
39 – হিজর
قَالَ رَبِّ بِمَآ أَغْوَيْتَنِى لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি যে আমাকে বিপথগামী করলেন তজ্জন্য আমি পৃথিবীতে মানুষের নিকট পাপ কাজকে শোভনীয় করে তুলব এবং আমি তাদের সকলকে বিপথগামী করব।
40 – হিজর
إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ ٱلْمُخْلَصِينَ
তবে তাদের মধ্য হতে আপনার নির্বাচিত বান্দাগণ ব্যতীত।
41 – হিজর
قَالَ هَٰذَا صِرَٰطٌ عَلَىَّ مُسْتَقِيمٌ
তিনি বললেনঃ এটাই আমার নিকট পৌঁছার সরল পথ।
42 – হিজর
إِنَّ عِبَادِى لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَٰنٌ إِلَّا مَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ
বিভ্রান্তদের মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে তারা ছাড়া আমার বান্দাদের উপর তোর কোন ক্ষমতা থাকবেনা।
43 – হিজর
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِينَ
অবশ্যই তোর অনুসারীদের সবারই নির্ধারিত স্থান হবে জাহান্নাম।
44 – হিজর
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَٰبٍ لِّكُلِّ بَابٍ مِّنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُومٌ
ওর সাতটি দরযা আছে, প্রত্যেক দরযার জন্য পৃথক পৃথক দল আছে।
45 – হিজর
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবন বহুল জান্নাতে।
46 – হিজর
ٱدْخُلُوهَا بِسَلَٰمٍ ءَامِنِينَ
(তাদেরকে বলা হবে) তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে এখানে প্রবেশ কর।
47 – হিজর
وَنَزَعْنَا مَا فِى صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَٰنًا عَلَىٰ سُرُرٍ مُّتَقَٰبِلِينَ
আমি তাদের অন্তর হতে ঈর্ষা দূর করব; তারা ভ্রাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে অবস্থান করবে।
48 – হিজর
لَا يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُم مِّنْهَا بِمُخْرَجِينَ
সেখানে তাদেরকে অবসাদ স্পর্শ করবেনা এবং তারা সেখান হতে বহিস্কৃতও হবেনা।
49 – হিজর
نَبِّئْ عِبَادِىٓ أَنِّىٓ أَنَا ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
আমার বান্দাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয়ই আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
50 – হিজর
وَأَنَّ عَذَابِى هُوَ ٱلْعَذَابُ ٱلْأَلِيمُ
আর আমার শাস্তি! তা অতি মর্মন্তদ শাস্তি।
51 – হিজর
وَنَبِّئْهُمْ عَن ضَيْفِ إِبْرَٰهِيمَ
আর তুমি তাদেরকে ইবরাহীমের মেহমানদের সংবাদ দাও।
52 – হিজর
إِذْ دَخَلُواۡ عَلَيْهِ فَقَالُواۡ سَلَٰمًا قَالَ إِنَّا مِنكُمْ وَجِلُونَ
যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ ‘সালাম’ তখন সে বলেছিলঃ আমরা তোমাদের আগমনে আতংকিত।
53 – হিজর
قَالُواۡ لَا تَوْجَلْ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَٰمٍ عَلِيمٍ
তারা বললঃ ভয় করনা, আমরা তোমাকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি।
54 – হিজর
قَالَ أَبَشَّرْتُمُونِى عَلَىٰٓ أَن مَّسَّنِىَ ٱلْكِبَرُ فَبِمَ تُبَشِّرُونَ
সে বললঃ তোমরা কি আমাকে সুসংবাদ দিচ্ছ আমি বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও? তোমরা কি বিষয়ে সুসংবাদ দিচ্ছ?
55 – হিজর
قَالُواۡ بَشَّرْنَٰكَ بِٱلْحَقِّ فَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْقَٰنِطِينَ
তারা বললঃ আমরা সত্য সংবাদ দিচ্ছি; সুতরাং তুমি নিরাশ হয়োনা।
56 – হিজর
قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِۦٓ إِلَّا ٱلضَّآلُّونَ
সে বললঃ যারা পথভ্রষ্ট তারা ব্যতীত আর কে তার রবের অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়?
57 – হিজর
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا ٱلْمُرْسَلُونَ
সে বললঃ হে প্রেরিতগণ! অতঃপর তোমরা কি বিশেষ কাজ নিয়ে এসেছ?
58 – হিজর
قَالُوٓاۡ إِنَّآ أُرْسِلْنَآ إِلَىٰ قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বললঃ আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হয়েছে।
59 – হিজর
إِلَّآ ءَالَ لُوطٍ إِنَّا لَمُنَجُّوهُمْ أَجْمَعِينَ
তবে লূতের পরিবারবর্গের বিরুদ্ধে নয়, আমরা অবশ্যই তাদের সকলকে রক্ষা করব।
60 – হিজর
إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ قَدَّرْنَآۙ إِنَّهَا لَمِنَ ٱلْغَٰبِرِينَ
কিন্তু তার স্ত্রীকে নয়; আমরা স্থির করেছি যে, সে অবশ্যই পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
61 – হিজর
فَلَمَّا جَآءَ ءَالَ لُوطٍ ٱلْمُرْسَلُونَ
মালাইকা/ফেরেশতাগণ যখন লূত পরিবারের নিকট এলো –
62 – হিজর
قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
তখন লূত বললঃ তোমরাতো অপরিচিত লোক।
63 – হিজর
قَالُواۡ بَلْ جِئْنَٰكَ بِمَا كَانُواۡ فِيهِ يَمْتَرُونَ
তারা বললঃ না, তারা যে বিষয়ে সন্দিগ্ধ ছিল আমরা তোমার নিকট তা নিয়ে এসেছি।
64 – হিজর
وَأَتَيْنَٰكَ بِٱلْحَقِّ وَإِنَّا لَصَٰدِقُونَ
আমরা তোমার নিকট সত্য সংবাদ নিয়ে এসেছি এবং অবশ্যই আমরা সত্যবাদী।
65 – হিজর
فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ ٱلَّيْلِ وَٱتَّبِعْ أَدْبَٰرَهُمْ وَلَا يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ وَٱمْضُواۡ حَيْثُ تُؤْمَرُونَ
সুতরাং তুমি রাতের শেষ প্রহরে তোমার পরিবারবর্গসহ বের হয়ে পড় এবং তুমি তাদের পশ্চাদনুসরণ কর এবং তোমাদের মধ্যে কেহ যেন পিছন ফিরে না তাকায়, তোমাদেরকে যেখানে যেতে বলা হয়েছে সেখানে চলে যাও।
66 – হিজর
وَقَضَيْنَآ إِلَيْهِ ذَٰلِكَ ٱلْأَمْرَ أَنَّ دَابِرَ هَٰٓؤُلَآءِ مَقْطُوعٌ مُّصْبِحِينَ
আমি তাকে এ বিষয়ে প্রত্যাদেশ দিলাম যে, প্রত্যুষে তাদেরকে সমূলে বিনাশ করা হবে।
67 – হিজর
وَجَآءَ أَهْلُ ٱلْمَدِينَةِ يَسْتَبْشِرُونَ
নগরবাসীরা আনন্দোম্মাদ হয়ে উপস্থিত হল।
68 – হিজর
قَالَ إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ ضَيْفِى فَلَا تَفْضَحُونِ
সে বললঃ নিশ্চয়ই এরা আমার অতিথি; সুতরাং তোমরা আমাকে বেইয্যাত করনা।
69 – হিজর
وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَلَا تُخْزُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে লজ্জিত করনা।
70 – হিজর
قَالُوٓاۡ أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ ٱلْعَٰلَمِينَ
তারা বললঃ আমরা কি দুনিয়াবাসী লোককে আশ্রয় দিতে আপনাকে নিষেধ করিনি?
71 – হিজর
قَالَ هَٰٓؤُلَآءِ بَنَاتِىٓ إِن كُنتُمْ فَٰعِلِينَ
লূত বললঃ একান্তই যদি তোমরা কিছু করতে চাও তাহলে আমার এই কন্যাগণ রয়েছে।
72 – হিজর
لَعَمْرُكَ إِنَّهُمْ لَفِى سَكْرَتِهِمْ يَعْمَهُونَ
তোমার জীবনের শপথ! ওরাতো আপন নেশায় মত্ত ছিল।
73 – হিজর
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ
অতঃপর সূর্যোদয়ের সময়ে মহানাদ তাদেরকে আঘাত করল।
74 – হিজর
فَجَعَلْنَا عَٰلِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ
সুতরাং আমি জনপদকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর প্রস্তর কংকর নিক্ষেপ করলাম।
75 – হিজর
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِينَ
অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য।
76 – হিজর
وَإِنَّهَا لَبِسَبِيلٍ مُّقِيمٍ
ওটা লোক চলাচলের পথপার্শ্বে এখনও বিদ্যমান।
77 – হিজর
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَأَ يَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ
অবশ্যই এতে মু’মিনদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।
78 – হিজর
وَإِن كَانَ أَصْحَٰبُ ٱلْأَيْكَةِ لَظَٰلِمِينَ
আর ‘আয়কা’বাসীরাওতো ছিল সীমা লংঘনকারী।
79 – হিজর
فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ وَإِنَّهُمَا لَبِإِمَامٍ مُّبِينٍ
সুতরাং আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি, ওদের উভয়ই প্রকাশ্য পথপার্শ্বে অবস্থিত।
80 – হিজর
وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَٰبُ ٱلْحِجْرِ ٱلْمُرْسَلِينَ
হিজরবাসীরা রাসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল।
81 – হিজর
وَءَاتَيْنَٰهُمْ ءَايَٰتِنَا فَكَانُواۡ عَنْهَا مُعْرِضِينَ
আমি তাদেরকে আমার নিদর্শন দেখিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছিল।
82 – হিজর
وَكَانُواۡ يَنْحِتُونَ مِنَ ٱلْجِبَالِ بُيُوتًا ءَامِنِينَ
তারা পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করত নিরাপদ বসবাসের জন্য।
83 – হিজর
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ
অতঃপর প্রভাতকালে মহানাদ তাদেরকে আঘাত করল।
84 – হিজর
فَمَآ أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُواۡ يَكْسِبُونَ
সুতরাং তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের কোন কাজে আসেনি।
85 – হিজর
وَمَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَآ إِلَّا بِٱلْحَقِّۗ وَإِنَّ ٱلسَّاعَةَ لَءَاتِيَةٌۖ فَٱصْفَحِ ٱلصَّفْحَ ٱلْجَمِيلَ
আকাশসমূহ ও পৃথিবী এবং এ দু’য়ের অন্তবর্তী কোন কিছুই আমি অযথা সৃষ্টি করিনি; এবং কিয়ামাত অবশ্যম্ভাবী; সুতরাং তুমি পরম সৌজন্যের সাথে তাদেরকে ক্ষমা কর।
86 – হিজর
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ ٱلْخَلَّٰقُ ٱلْعَلِيمُ
নিশ্চয়ই তোমার রাব্বই মহান স্রষ্টা, মহাজ্ঞানী।
87 – হিজর
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَٰكَ سَبْعًا مِّنَ ٱلْمَثَانِى وَٱلْقُرْءَانَ ٱلْعَظِيمَ
আমিতো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয় এবং দিয়েছি মহান কুরআন।
88 – হিজর
لَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعْنَا بِهِۦٓ أَزْوَٰجًا مِّنْهُمْ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَٱخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে ভোগ বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি তার প্রতি তুমি কখনও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করনা; তাদেরকে যা দেয়া হয়েছে সেই জন্য তুমি ক্ষোভ করনা; তুমি মু’মিনদের জন্য তোমার বাহু অবনমিত কর।
89 – হিজর
وَقُلْ إِنِّىٓ أَنَا ٱلنَّذِيرُ ٱلْمُبِينُ
আর বলঃ আমিতো একজন ভয় প্রদর্শনকারী মাত্র।
90 – হিজর
كَمَآ أَنزَلْنَا عَلَى ٱلْمُقْتَسِمِينَ
যেভাবে আমি অবতীর্ণ করেছিলাম বিভক্তকারীদের উপর,
91 – হিজর
ٱلَّذِينَ جَعَلُواۡ ٱلْقُرْءَانَ عِضِينَ
যারা কুরআনকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে।
92 – হিজর
فَوَرَبِّكَ لَنَسْـَٔلَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
সুতরাং তোমার রবের শপথ! আমি তাদের সকলকে প্রশ্ন করবই,
93 – হিজর
عَمَّا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
সেই বিষয়ে, যা তারা করে।
94 – হিজর
فَٱصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ ٱلْمُشْرِكِينَ
অতএব তুমি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছ তা প্রকাশ্যে প্রচার কর এবং মুশরিকদের উপেক্ষা কর।
95 – হিজর
إِنَّا كَفَيْنَٰكَ ٱلْمُسْتَهْزِءِينَ
আমিই যথেষ্ট তোমার জন্য, বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে।
96 – হিজর
ٱلَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَۚ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
যারা আল্লাহর সাথে অপর মা‘বূদ প্রতিষ্ঠা করেছে। এবং শীঘ্রই তারা জানতে পারবে!
97 – হিজর
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ
আমিতো জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয়।
98 – হিজর
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ ٱلسَّٰجِدِينَ
সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসা দ্বারা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
99 – হিজর
وَٱعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ ٱلْيَقِينُ
আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ইবাদাত কর।