53 নং সূরা – আন-নজ্ম – اَلنَّجْم
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 62
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – নাজ্ম
وَٱلنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ
শপথ নক্ষত্রের, যখন ওটা হয় অস্তমিত,
02 – নাজ্ম
مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ
তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়,
03 – নাজ্ম
وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلْهَوَىٰٓ
এবং সে মনগড়া কথাও বলেনা।
04 – নাজ্ম
إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْىٌ يُوحَىٰ
এটাতো অহী, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।
05 – নাজ্ম
عَلَّمَهُۥ شَدِيدُ ٱلْقُوَىٰ
তাকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী –
06 – নাজ্ম
ذُو مِرَّةٍ فَٱسْتَوَىٰ
প্রজ্ঞা সম্পন্ন; সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল,
07 – নাজ্ম
وَهُوَ بِٱلْأُفُقِ ٱلْأَعْلَىٰ
তখন সে ঊর্ধ্ব দিগন্তে।
08 – নাজ্ম
ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ
অতঃপর সে তার নিকটবর্তী হল, অতি নিকটবর্তী।
09 – নাজ্ম
فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ
ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রইল, অথবা তারও কম।
10 – নাজ্ম
فَأَوْحَىٰٓ إِلَىٰ عَبْدِهِۦ مَآ أَوْحَىٰ
তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি যা অহী করার তা অহী করলেন।
11 – নাজ্ম
مَا كَذَبَ ٱلْفُؤَادُ مَا رَأَىٰٓ
যা সে দেখেছে তার অন্তকরণ তা অস্বীকার করেনি।
12 – নাজ্ম
أَفَتُمَٰرُونَهُۥ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ
সে যা দেখেছে তোমরা কি সে বিষয়ে তার সংগে বিতর্ক করবে?
13 – নাজ্ম
وَلَقَدْ رَءَاهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ
নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল।
14 – নাজ্ম
عِندَ سِدْرَةِ ٱلْمُنتَهَىٰ
সিদরাতুল মুনতাহার নিকট,
15 – নাজ্ম
عِندَهَا جَنَّةُ ٱلْمَأْوَىٰٓ
যার নিকট অবস্থিত বাসোদ্যান।
16 – নাজ্ম
إِذْ يَغْشَى ٱلسِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ
যখন বৃক্ষটি, যদ্বারা আচ্ছাদিত হবার তদ্বারা ছিল আচ্ছাদিত,
17 – নাজ্ম
مَا زَاغَ ٱلْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ
তার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যূতও হয়নি।
18 – নাজ্ম
لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ ءَايَٰتِ رَبِّهِ ٱلْكُبْرَىٰٓ
সেতো তার প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিল।
19 – নাজ্ম
أَفَرَءَيْتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلْعُزَّىٰ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্বন্ধে?
20 – নাজ্ম
وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلْأُخْرَىٰٓ
এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্বন্ধে?
21 – নাজ্ম
أَلَكُمُ ٱلذَّكَرُ وَلَهُ ٱلْأُنثَىٰ
তাহলে কি পুত্র-সন্তান তোমাদের জন্য এবং কন্যা-সন্তান আল্লাহর জন্য?
22 – নাজ্ম
تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰٓ
এ ধরণের বন্টনতো অসঙ্গত।
23 – নাজ্ম
إِنْ هِىَ إِلَّآ أَسْمَآءٌ سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّ وَمَا تَهْوَى ٱلْأَنفُسُۖ وَلَقَدْ جَآءَهُم مِّن رَّبِّهِمُ ٱلْهُدَىٰٓ
এগুলির কতক নামমাত্র যা তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা ও তোমরা রেখেছ, যার সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল প্রেরণ করেননি। তারাতো অনুমান এবং নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের রবের পথনির্দেশ এসেছে।
24 – নাজ্ম
أَمْ لِلْإِنسَٰنِ مَا تَمَنَّىٰ
মানুষ যা চায় তাই কি সে পায়?
25 – নাজ্ম
فَلِلَّهِ ٱلْءَاخِرَةُ وَٱلْأُولَىٰ
বস্তুতঃ ইহকাল ও পরকাল আল্লাহরই।
26 – নাজ্ম
وَكَم مِّن مَّلَكٍ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ لَا تُغْنِى شَفَٰعَتُهُمْ شَيْـًٔا إِلَّا مِنۢ بَعْدِ أَن يَأْذَنَ ٱللَّهُ لِمَن يَشَآءُ وَيَرْضَىٰٓ
আকাশে কত মালাইকা/ফেরেশতা রয়েছে, তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসু হবেনা যতক্ষণ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এবং যার প্রতি সন্তষ্ট তাকে অনুমতি না দেন।
27 – নাজ্ম
إِنَّ ٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِٱلْءَاخِرَةِ لَيُسَمُّونَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ تَسْمِيَةَ ٱلْأُنثَىٰ
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারাই নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে মালাইকাদেরকে।
28 – নাজ্ম
وَمَا لَهُم بِهِۦ مِنْ عِلْمٍۖ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّۖ وَإِنَّ ٱلظَّنَّ لَا يُغْنِى مِنَ ٱلْحَقِّ شَيْـًٔا
অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অনুমানের অনুসরণ করে; সত্যের মুকাবিলায় অনুমানের কোন মূল্য নেই।
29 – নাজ্ম
فَأَعْرِضْ عَن مَّن تَوَلَّىٰ عَن ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا
অতএব যে আমার স্মরণে বিমুখ তাকে উপেক্ষা করে চল; সেতো শুধু পার্থিব জীবন কামনা করে।
30 – নাজ্ম
ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُم مِّنَ ٱلْعِلْمِۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ ٱهْتَدَىٰ
তাদের জ্ঞানের দৌড় এই পর্যন্ত। তোমার রাব্বই ভাল জানেন কে তাঁর পথ হতে বিচ্যুত; তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথ প্রাপ্ত।
31 – নাজ্ম
وَلِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ لِيَجْزِىَ ٱلَّذِينَ أَسَٰٓـُٔواۡ بِمَا عَمِلُواۡ وَيَجْزِىَ ٱلَّذِينَ أَحْسَنُواۡ بِٱلْحُسْنَى
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই। যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তিনি দেন মন্দ ফল এবং যারা সৎ কাজ করে তাদেরকে দেন উত্তম পুরস্কার।
32 – নাজ্ম
ٱلَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَٰٓئِرَ ٱلْإِثْمِ وَٱلْفَوَٰحِشَ إِلَّا ٱللَّمَمَۚ إِنَّ رَبَّكَ وَٰسِعُ ٱلْمَغْفِرَةِۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنشَأَكُم مِّنَ ٱلْأَرْضِ وَإِذْ أَنتُمْ أَجِنَّةٌ فِى بُطُونِ أُمَّهَٰتِكُمْۖ فَلَا تُزَكُّوٓاۡ أَنفُسَكُمْۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ ٱتَّقَىٰٓ
যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হতে, ছোট- খাট অপরাধ করলেও তোমার রবের ক্ষমা অপরিসীম; তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত, যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রুণরূপে অবস্থান কর। অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা করনা, তিনিই সম্যক জানেন মুত্তাকী কে।
33 – নাজ্ম
أَفَرَءَيْتَ ٱلَّذِى تَوَلَّىٰ
তুমি কি দেখেছ সেই ব্যক্তিকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয়;
34 – নাজ্ম
وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰٓ
এবং দান করে সামান্যই, পরে বন্ধ করে দেয়?
35 – নাজ্ম
أَعِندَهُۥ عِلْمُ ٱلْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰٓ
তার কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে সে জানবে?
36 – নাজ্ম
أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِى صُحُفِ مُوسَىٰ
তাকে কি অবগত করা হয়নি যা আছে মূসার কিতাবে,
37 – নাজ্ম
وَإِبْرَٰهِيمَ ٱلَّذِى وَفَّىٰٓ
এবং ইবরাহীমের কিতাবে যে পালন করেছিল তার দায়িত্ব?
38 – নাজ্ম
أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ
ওটা এই যে, কোন বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবেনা।
39 – নাজ্ম
وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَٰنِ إِلَّا مَا سَعَىٰ
আর এই যে, মানুষ তা’ই পায় যা সে করে,
40 – নাজ্ম
وَأَنَّ سَعْيَهُۥ سَوْفَ يُرَىٰ
আর এই যে, তার কাজ অচিরেই দেখানো হবে,
41 – নাজ্ম
ثُمَّ يُجْزَىٰهُ ٱلْجَزَآءَ ٱلْأَوْفَىٰ
অতঃপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিদান।
42 – নাজ্ম
وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ ٱلْمُنتَهَىٰ
আর এই যে, সব কিছুর সমাপ্তিতো তোমার রবের নিকট।
43 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ
আর এই যে, তিনিই হাসান, তিনিই কাঁদান।
44 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا
এবং এই যে, তিনিই মারেন, তিনিই বাঁচান,
45 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥ خَلَقَ ٱلزَّوْجَيْنِ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰ
আর এই যে, তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল পুরুষ ও নারী –
46 – নাজ্ম
مِن نُّطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ
শুক্র বিন্দু হতে যখন তা স্খলিত হয়;
47 – নাজ্ম
وَأَنَّ عَلَيْهِ ٱلنَّشْأَةَ ٱلْأُخْرَىٰ
আর এই যে, পুনরুত্থান ঘটানোর দায়িত্ব তাঁরই।
48 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ
আর এই যে, তিনিই অভাবমুক্ত করেন ও সম্পদ দান করেন।
49 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥ هُوَ رَبُّ ٱلشِّعْرَىٰ
আর এই যে, তিনি ‘শি’রা’ নক্ষত্রের মালিক।
50 – নাজ্ম
وَأَنَّهُۥٓ أَهْلَكَ عَادًا ٱلْأُولَىٰ
এবং এই যে, তিনিই প্রথম ‘আদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন।
51 – নাজ্ম
وَثَمُودَاۡ فَمَآ أَبْقَىٰ
এবং সামূদ সম্প্রদায়কেও, কেহকেও তিনি বাকী রাখেননি।
52 – নাজ্ম
وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُۖ إِنَّهُمْ كَانُواۡ هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ
আর এদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কেও; তারা ছিল অতিশয় যালিম ও অবাধ্য।
53 – নাজ্ম
وَٱلْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ
উৎপাটিত আবাস ভূমিকে উল্টিয়ে নিক্ষেপ করেছিলেন।
54 – নাজ্ম
فَغَشَّىٰهَا مَا غَشَّىٰ
ওকে আচ্ছন্ন করল কি সর্বগ্রাসী শাস্তি!
55 – নাজ্ম
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ
তুমি তোমার রবের কোন্ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে?
56 – নাজ্ম
هَٰذَا نَذِيرٌ مِّنَ ٱلنُّذُرِ ٱلْأُولَىٰٓ
অতীতের সতর্ককারীদের ন্যায় এই নাবীও এক সতর্ককারী;
57 – নাজ্ম
أَزِفَتِ ٱلْءَازِفَةُ
কিয়ামাত আসন্ন,
58 – নাজ্ম
لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ ٱللَّهِ كَاشِفَةٌ
আল্লাহ ছাড়া কেহই এটা ব্যক্ত করতে সক্ষম নয়।
59 – নাজ্ম
أَفَمِنْ هَٰذَا ٱلْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ
তোমরা কি এই কথায় বিস্ময় বোধ করছ!
60 – নাজ্ম
وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ
এবং হাসি- ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছনা?
61 – নাজ্ম
وَأَنتُمْ سَٰمِدُونَ
তোমরাতো উদাসীন,
62 – নাজ্ম
فَٱسْجُدُواۡ لِلَّهِ وَٱعْبُدُواۡ۩
অতএব আল্লাহকে সাজদাহ কর এবং তাঁর ইবাদাত কর। [সাজদাহ]
54 নং সূরা – আল-কামার – اَلْقَمَر
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 55
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – কামার
ٱقْتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلْقَمَرُ
কিয়ামাত আসন্ন, চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে,
02 – কামার
وَإِن يَرَوْاۡ ءَايَةً يُعْرِضُواۡ وَيَقُولُواۡ سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ
তারা কোনো নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলেঃ এটাতো চিরাচরিত যাদু।
03 – কামার
وَكَذَّبُواۡ وَٱتَّبَعُوٓاۡ أَهْوَآءَهُمْۚ وَكُلُّ أَمْرٍ مُّسْتَقِرٌّ
তারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে, আর প্রত্যেক ব্যাপারই যথাসময়ে লক্ষ্যে পৌঁছবে।
04 – কামার
وَلَقَدْ جَآءَهُم مِّنَ ٱلْأَنۢبَآءِ مَا فِيهِ مُزْدَجَرٌ
তাদের নিকট এসেছে সুসংবাদ, যাতে আছে সাবধান বাণী।
05 – কামার
حِكْمَةٌۢ بَٰلِغَةٌۖ فَمَا تُغْنِ ٱلنُّذُرُ
এটা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে এই সতর্ক বাণী তাদের কোন উপকারে আসেনি।
06 – কামার
فَتَوَلَّ عَنْهُمْۘ يَوْمَ يَدْعُ ٱلدَّاعِ إِلَىٰ شَىْءٍ نُّكُرٍ
অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে।
07 – কামার
خُشَّعًا أَبْصَٰرُهُمْ يَخْرُجُونَ مِنَ ٱلْأَجْدَاثِ كَأَنَّهُمْ جَرَادٌ مُّنتَشِرٌ
অপমানে অবনমিত নেত্রে সেই দিন তারা কাবর হতে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়।
08 – কামার
مُّهْطِعِينَ إِلَى ٱلدَّاعِۖ يَقُولُ ٱلْكَٰفِرُونَ هَٰذَا يَوْمٌ عَسِرٌ
তারা আহবানকারীর দিকে ছুটে আসবে ভীত-বিহবল হয়ে। কাফিরেরা বলবেঃ কঠিন এই দিন।
09 – কামার
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ فَكَذَّبُواۡ عَبْدَنَا وَقَالُواۡ مَجْنُونٌ وَٱزْدُجِرَ
এদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও মিথ্যা আরোপ করেছিল আমার বান্দার প্রতি এবং বলেছিলঃ এতো এক পাগল। আর তাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল।
10 – কামার
فَدَعَا رَبَّهُۥٓ أَنِّى مَغْلُوبٌ فَٱنتَصِرْ
তখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিলঃ আমিতো অসহায়; অতএব তুমি আমার প্রতিবিধান কর।
11 – কামার
فَفَتَحْنَآ أَبْوَٰبَ ٱلسَّمَآءِ بِمَآءٍ مُّنْهَمِرٍ
ফলে আমি উন্মুক্ত করে দিলাম আকাশের দ্বার, প্রবল বারি বর্ষণে।
12 – কামার
وَفَجَّرْنَا ٱلْأَرْضَ عُيُونًا فَٱلْتَقَى ٱلْمَآءُ عَلَىٰٓ أَمْرٍ قَدْ قُدِرَ
এবং মাটি হতে উৎসারিত করলাম প্রস্রবণ। অতঃপর সকল পানি মিলিত হল এক পরিকল্পনা অনুসারে।
13 – কামার
وَحَمَلْنَٰهُ عَلَىٰ ذَاتِ أَلْوَٰحٍ وَدُسُرٍ
তখন নূহকে আরোহণ করালাম কাষ্ঠ ও কীলক নির্মিত এক নৌযানে,
14 – কামার
تَجْرِى بِأَعْيُنِنَا جَزَآءً لِّمَن كَانَ كُفِرَ
যা চলত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। এটা পুরস্কার তার জন্য যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।
15 – কামার
وَلَقَد تَّرَكْنَٰهَآ ءَايَةً فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
আমি এটাকে রেখে দিয়েছি এক নিদর্শনরূপে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
16 – কামার
فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ
কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!
17 – কামার
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, সুতরাং উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
18 – কামার
كَذَّبَتْ عَادٌ فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ
আ‘দ সম্প্রদায় সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল, ফলে কি কঠোর হয়েছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী!
19 – কামার
إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا صَرْصَرًا فِى يَوْمِ نَحْسٍ مُّسْتَمِرٍّ
তাদের উপর আমি প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু নিরবিচ্ছিন্ন দুর্ভোগের দিনে।
20 – কামার
تَنزِعُ ٱلنَّاسَ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ مُّنقَعِرٍ
মানুষকে ওটা উৎখাত করেছিল উন্মুলিত খেজুর কান্ডের ন্যায়।
21 – কামার
فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ
কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী!
22 – কামার
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণ করার কেহ আছে কি?
23 – কামার
كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِٱلنُّذُرِ
সামূদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল।
24 – কামার
فَقَالُوٓاۡ أَبَشَرًا مِّنَّا وَٰحِدًا نَّتَّبِعُهُۥٓ إِنَّآ إِذًا لَّفِى ضَلَٰلٍ وَسُعُرٍ
তারা বলেছিলঃ আমরা কি আমাদেরই সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির অনুসরণ করব? তাহলে তো আমরা বিপথগামী এবং উন্মাদরূপে গন্য হব।
25 – কামার
أَءُلْقِىَ ٱلذِّكْرُ عَلَيْهِ مِنۢ بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌ
আমাদের মধ্যে কি তারই প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে? না, সেতো একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।
26 – কামার
سَيَعْلَمُونَ غَدًا مَّنِ ٱلْكَذَّابُ ٱلْأَشِرُ
আগামীকাল তারা জানবে, কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।
27 – কামার
إِنَّا مُرْسِلُواۡ ٱلنَّاقَةِ فِتْنَةً لَّهُمْ فَٱرْتَقِبْهُمْ وَٱصْطَبِرْ
আমি তাদের পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি এক উষ্ট্রী; অতএব তুমি তাদের আচরণ লক্ষ্য কর এবং ধৈর্যশীল হও,
28 – কামার
وَنَبِّئْهُمْ أَنَّ ٱلْمَآءَ قِسْمَةٌۢ بَيْنَهُمْۖ كُلُّ شِرْبٍ مُّحْتَضَرٌ
আর তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের মধ্যে পানি বন্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্য প্রত্যেকে হাযির হবে পালাক্রমে।
29 – কামার
فَنَادَوْاۡ صَاحِبَهُمْ فَتَعَاطَىٰ فَعَقَرَ
অতঃপর তারা তাদের এক সঙ্গীকে আহবান করল, সে ওকে ধরে হত্যা করল।
30 – কামার
فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ
কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী!
31 – কামার
إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ صَيْحَةً وَٰحِدَةً فَكَانُواۡ كَهَشِيمِ ٱلْمُحْتَظِرِ
আমি তাদেরকে আঘাত হেনেছিলাম এক মহানাদ দ্বারা; ফলে তারা হয়ে গেল খোয়াড় প্রস্তুতকারী বিখন্ডিত শুস্ক শাখা-প্রশাখার ন্যায়।
32 – কামার
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণ করার কেহ আছে কি?
33 – কামার
كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍۭ بِٱلنُّذُرِ
লূত সম্প্রদায় প্রত্যাখ্যান করেছিল সতর্ককারীদেরকে।
34 – কামার
إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ حَاصِبًا إِلَّآ ءَالَ لُوطٍۖ نَّجَّيْنَٰهُم بِسَحَرٍ
আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বহনকারী প্রচন্ড ঝটিকা, কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়; তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছিলাম রাতের শেষাংশে,
35 – কামার
نِّعْمَةً مِّنْ عِندِنَاۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى مَن شَكَرَ
আমার বিশেষ অনুগ্রহ স্বরূপ; যারা কৃতজ্ঞ আমি এভাবেই তাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
36 – কামার
وَلَقَدْ أَنذَرَهُم بَطْشَتَنَا فَتَمَارَوْاۡ بِٱلنُّذُرِ
লূত তাদেরকে সতর্ক করেছিল আমার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে। কিন্তু তারা সতর্ক বাণী সম্বন্ধে বিতন্ডা শুরু করল।
37 – কামার
وَلَقَدْ رَٰوَدُوهُ عَن ضَيْفِهِۦ فَطَمَسْنَآ أَعْيُنَهُمْ فَذُوقُواۡ عَذَابِى وَنُذُرِ
তারা লূতের নিকট হতে তার মেহমানদেরকে দাবী করল, তখন আমি তাদের দৃষ্টিশক্তি লোপ করে দিলাম এবং বললামঃ আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম।
38 – কামার
وَلَقَدْ صَبَّحَهُم بُكْرَةً عَذَابٌ مُّسْتَقِرٌّ
প্রত্যুষে বিরামহীন শাস্তি তাদেরকে আঘাত করল।
39 – কামার
فَذُوقُواۡ عَذَابِى وَنُذُرِ
(আমি বললাম) আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম।
40 – কামার
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
41 – কামার
وَلَقَدْ جَآءَ ءَالَ فِرْعَوْنَ ٱلنُّذُرُ
ফির‘আউন সম্প্রদায়ের নিকটও এসেছিল সতর্ককারী।
42 – কামার
كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذْنَٰهُمْ أَخْذَ عَزِيزٍ مُّقْتَدِرٍ
কিন্তু তারা আমার সকল নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করল, অতঃপর পরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমান রূপে আমি তাদেরকে সুকঠিন শাস্তি দিলাম।
43 – কামার
أَكُفَّارُكُمْ خَيْرٌ مِّنْ أُوۡلَٰٓئِكُمْ أَمْ لَكُم بَرَآءَةٌ فِى ٱلزُّبُرِ
তোমাদের মধ্যকার কাফিরেরা কি তাদের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ? না কি তোমাদের অব্যাহতির কোন সনদ রয়েছে পূর্ববর্তী কিতাবে?
44 – কামার
أَمْ يَقُولُونَ نَحْنُ جَمِيعٌ مُّنتَصِرٌ
এরা কি বলে, আমরা এক সংঘবদ্ধ অপরাজেয় দল?
45 – কামার
سَيُهْزَمُ ٱلْجَمْعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ
এই দলতো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে,
46 – কামার
بَلِ ٱلسَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَٱلسَّاعَةُ أَدْهَىٰ وَأَمَرُّ
অধিকন্ত কিয়ামাত তাদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামাত হবে কঠিনতর ও তিক্ততর।
47 – কামার
إِنَّ ٱلْمُجْرِمِينَ فِى ضَلَٰلٍ وَسُعُرٍ
নিশ্চয়ই অপরাধীরা বিভ্রান্ত ও বিকারগ্রস্ত।
48 – কামার
يَوْمَ يُسْحَبُونَ فِى ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ ذُوقُواۡ مَسَّ سَقَرَ
যেদিন তাদেরকে উপুড় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের দিকে সেই দিন বলা হবেঃ জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন কর।
49 – কামার
إِنَّا كُلَّ شَىْءٍ خَلَقْنَٰهُ بِقَدَرٍ
আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে।
50 – কামার
وَمَآ أَمْرُنَآ إِلَّا وَٰحِدَةٌ كَلَمْحٍۭ بِٱلْبَصَرِ
আমার আদেশতো একটি কথায় নিস্পন্ন, চোখের পলকের মত।
51 – কামার
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَآ أَشْيَاعَكُمْ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
আমি ধ্বংস করেছি তোমাদের মত দলগুলিকে; অতএব উহা হতে উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি?
52 – কামার
وَكُلُّ شَىْءٍ فَعَلُوهُ فِى ٱلزُّبُرِ
তাদের সমস্ত কার্যকলাপ আছে ‘আমলনামায়,
53 – কামার
وَكُلُّ صَغِيرٍ وَكَبِيرٍ مُّسْتَطَرٌ
আছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সব কিছুই লিপিবদ্ধ;
54 – কামার
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍ وَنَهَرٍ
মুত্তাকীরা থাকবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে –
55 – কামার
فِى مَقْعَدِ صِدْقٍ عِندَ مَلِيكٍ مُّقْتَدِرٍۭ
যোগ্য আসনে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর সান্নিধ্যে।
55 নং সূরা – আর-রহমান – اَلرَّحْمَٰن
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 78
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – রহমান
ٱلرَّحْمَٰنُ
দয়াময় আল্লাহ!
02 – রহমান
عَلَّمَ ٱلْقُرْءَانَ
তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।
03 – রহমান
خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ
তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ।
04 – রহমান
عَلَّمَهُ ٱلْبَيَانَ
তিনিই তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে।
05 – রহমান
ٱلشَّمْسُ وَٱلْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ
সূর্য ও চাঁদ আবর্তন করে নির্ধারিত কক্ষপথে।
06 – রহমান
وَٱلنَّجْمُ وَٱلشَّجَرُ يَسْجُدَانِ
‘তারকা ও বৃক্ষ উভয়ে (আল্লাহকে) সাজদাহ করে।
07 – রহমান
وَٱلسَّمَآءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ ٱلْمِيزَانَ
তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন মানদন্ড –
08 – রহমান
أَلَّا تَطْغَوْاۡ فِى ٱلْمِيزَانِ
যাতে তোমরা ভারসাম্য লংঘন না কর।
09 – রহমান
وَأَقِيمُواۡ ٱلْوَزْنَ بِٱلْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُواۡ ٱلْمِيزَانَ
ওযনের ন্যায্য মান প্রতিষ্ঠিত কর এবং মিযানে কম করনা।
10 – রহমান
وَٱلْأَرْضَ وَضَعَهَا لِلْأَنَامِ
তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য।
11 – রহমান
فِيهَا فَٰكِهَةٌ وَٱلنَّخْلُ ذَاتُ ٱلْأَكْمَامِ
এতে রয়েছে ফল-মূল এবং খেজুর বৃক্ষ, যার ফল আবরণযুক্ত –
12 – রহমান
وَٱلْحَبُّ ذُو ٱلْعَصْفِ وَٱلرَّيْحَانُ
এবং খোসাবিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধ গুল্ম।
13 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
14 – রহমান
خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ مِن صَلْصَٰلٍ كَٱلْفَخَّارِ
মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মত শুস্ক মৃত্তিকা হতে –
15 – রহমান
وَخَلَقَ ٱلْجَآنَّ مِن مَّارِجٍ مِّن نَّارٍ
আর জিনকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধূম অগ্নিশিখা হতে।
16 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
17 – রহমান
رَبُّ ٱلْمَشْرِقَيْنِ وَرَبُّ ٱلْمَغْرِبَيْنِ
তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের নিয়ন্তা।
18 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
19 – রহমান
مَرَجَ ٱلْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ
তিনি প্রবাহিত করেন দুই দরিয়া, যারা পরস্পর মিলিত হয়,
20 – রহমান
بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ
কিন্তু ওদের মধ্যে রয়েছে এক অন্তরাল যা ওরা অতিক্রম করতে পারেনা।
21 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
22 – রহমান
يَخْرُجُ مِنْهُمَا ٱللُّؤْلُؤُ وَٱلْمَرْجَانُ
উভয় দরিয়া হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল।
23 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
24 – রহমান
وَلَهُ ٱلْجَوَارِ ٱلْمُنشَـَٔاتُ فِى ٱلْبَحْرِ كَٱلْأَعْلَٰمِ
সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বত সদৃশ নৌযানসমূহ তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন।
25 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
26 – রহমান
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ
ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সব কিছু নশ্বর,
27 – রহমান
وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو ٱلْجَلَٰلِ وَٱلْإِكْرَامِ
অবিনশ্বর শুধু তোমার রবের মুখমন্ডল যিনি মহিমাময়, মহানুভব।
28 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
29 – রহমান
يَسْـَٔلُهُۥ مَن فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِى شَأْنٍ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে সবাই তাঁর নিকট প্রার্থী, প্রতিনিয়ত তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত।
30 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
31 – রহমান
سَنَفْرُغُ لَكُمْ أَيُّهَ ٱلثَّقَلَانِ
হে মানুষ ও জিন! আমি শীঘ্রই তোমাদের প্রতি মনোনিবেশ করব।
32 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
33 – রহমান
يَٰمَعْشَرَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ إِنِ ٱسْتَطَعْتُمْ أَن تَنفُذُواۡ مِنْ أَقْطَارِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ فَٱنفُذُواۡۚ لَا تَنفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَٰنٍ
হে জিন ও মানুষ সম্প্রদায়! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার, অতিক্রম কর; কিন্তু তোমরা তা পারবেনা আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত।
34 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
35 – রহমান
يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّن نَّارٍ وَنُحَاسٌ فَلَا تَنتَصِرَانِ
তোমাদের প্রতি প্রেরিত হবে অগ্নিশিখা ও ধুম্রপুঞ্জ, তখন তোমরা তা প্রতিরোধ করতে পারবেনা।
36 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
37 – রহমান
فَإِذَا ٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتْ وَرْدَةً كَٱلدِّهَانِ
যেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে সেইদিন ওটা রক্ত-রঙ্গে রঞ্জিত চর্মের রূপ ধারণ করবে;
38 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
39 – রহমান
فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُسْـَٔلُ عَن ذَنۢبِهِۦٓ إِنسٌ وَلَا جَآنٌّ
সেদিন মানুষকে তার অপরাধ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হবেনা, আর না জিনকে।
40 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
41 – রহমান
يُعْرَفُ ٱلْمُجْرِمُونَ بِسِيمَٰهُمْ فَيُؤْخَذُ بِٱلنَّوَٰصِى وَٱلْأَقْدَامِ
অপরাধীদের পরিচয় পাওয়া যাবে তাদের চেহারা হতে; তাদেরকে পাকড়াও করা হবে পা ও মাথার ঝুঁটি ধরে।
42 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
43 – রহমান
هَٰذِهِۦ جَهَنَّمُ ٱلَّتِى يُكَذِّبُ بِهَا ٱلْمُجْرِمُونَ
এটাই সেই জাহান্নাম, যা অপরাধীরা অবিশ্বাস করত।
44 – রহমান
يَطُوفُونَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ حَمِيمٍ ءَانٍ
তারা জাহান্নামের আগুন ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করবে।
45 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
46 – রহমান
وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِۦ جَنَّتَانِ
আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দু’টি উদ্যান।
47 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
48 – রহমান
ذَوَاتَآ أَفْنَانٍ
উভয়ই বহু শাখা-পল্লব বিশিষ্ট বৃক্ষে পূর্ণ।
49 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
50 – রহমান
فِيهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ
উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রবাহমান দুই প্রস্রবণ;
51 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
52 – রহমান
فِيهِمَا مِن كُلِّ فَٰكِهَةٍ زَوْجَانِ
উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রত্যক ফল, জোড়ায় জোড়ায়।
53 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
54 – রহমান
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ فُرُشٍۭ بَطَآئِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍۚ وَجَنَى ٱلْجَنَّتَيْنِ دَانٍ
সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে পুরু রেশমের আস্তর বিশিষ্ট ফরাশে, দুই উদ্যানের ফল হবে তাদের নিকটবর্তী।
55 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
56 – রহমান
فِيهِنَّ قَٰصِرَٰتُ ٱلطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَآنٌّ
সেই সবের মাঝে রয়েছে বহু আনতনয়না, যাদেরকে পূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করেনি।
57 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
58 – রহমান
كَأَنَّهُنَّ ٱلْيَاقُوتُ وَٱلْمَرْجَانُ
তারা যেন প্রবাল ও পদ্মরাগ;
59 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
60 – রহমান
هَلْ جَزَآءُ ٱلْإِحْسَٰنِ إِلَّا ٱلْإِحْسَٰنُ
উত্তম কাজের জন্য উত্তম পুরস্কার ব্যতীত আর কি হতে পারে?
61 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
62 – রহমান
وَمِن دُونِهِمَا جَنَّتَانِ
এই উদ্যানদ্বয় ব্যতীত আরও দু’টি উদ্যান রয়েছে –
63 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
64 – রহমান
مُدْهَآمَّتَانِ
ঘন সবুজ এ উদ্যানটি দু’টি।
65 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
66 – রহমান
فِيهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ
উভয় উদ্যানে রয়েছে উচ্ছলিত দুই প্রস্রবন।
67 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
68 – রহমান
فِيهِمَا فَٰكِهَةٌ وَنَخْلٌ وَرُمَّانٌ
সেখানে রয়েছে ফলমূল, খেজুর ও আনার।
69 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
70 – রহমান
فِيهِنَّ خَيْرَٰتٌ حِسَانٌ
সেই সকলের মাঝে রয়েছে সুশীলা, সুন্দরীগণ।
71 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
72 – রহমান
حُورٌ مَّقْصُورَٰتٌ فِى ٱلْخِيَامِ
তারা তাবুতে সুরক্ষিত হুর।
73 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
74 – রহমান
لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَآنٌّ
তাদেরকে ইতোপূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করেনি।
75 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
76 – রহমান
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ رَفْرَفٍ خُضْرٍ وَعَبْقَرِىٍّ حِسَانٍ
তারা হেলান দিয়ে বসবে সবুজ তাকিয়ায় ও সুন্দর গালিচার উপর।
77 – রহমান
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
78 – রহমান
تَبَٰرَكَ ٱسْمُ رَبِّكَ ذِى ٱلْجَلَٰلِ وَٱلْإِكْرَامِ
কত মহান তোমার রবের নাম যিনি মহিমাময় ও মহানুভব!
56 নং সূরা – আল-ওয়াকিয়া – اَلْوَاقِعَة
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 96
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – ওয়াকিয়া
إِذَا وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ
যখন কিয়ামাত সংঘটিত হবে –
02 – ওয়াকিয়া
لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ
তখন সংঘটন অস্বীকার করার কেহ থাকবেনা।
03 – ওয়াকিয়া
خَافِضَةٌ رَّافِعَةٌ
এটা কেহকে করবে নীচ, কেহকে করবে সমুন্নত;
04 – ওয়াকিয়া
إِذَا رُجَّتِ ٱلْأَرْضُ رَجًّا
যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী –
05 – ওয়াকিয়া
وَبُسَّتِ ٱلْجِبَالُ بَسًّا
এবং পবর্তমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে।
06 – ওয়াকিয়া
فَكَانَتْ هَبَآءً مُّنۢبَثًّا
ফলে ওটা পর্যবসিত হবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় –
07 – ওয়াকিয়া
وَكُنتُمْ أَزْوَٰجًا ثَلَٰثَةً
এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন শ্রেণীতে।
08 – ওয়াকিয়া
فَأَصْحَٰبُ ٱلْمَيْمَنَةِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْمَيْمَنَةِ
ডান দিকের দল! কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল।
09 – ওয়াকিয়া
وَأَصْحَٰبُ ٱلْمَشْـَٔمَةِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْمَشْـَٔمَةِ
এবং বাম দিকের দল! কত হতভাগা বাম দিকের দল!
10 – ওয়াকিয়া
وَٱلسَّٰبِقُونَ ٱلسَّٰبِقُونَ
আর অগ্রবর্তীগণইতো অগ্রবর্তী।
11 – ওয়াকিয়া
أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلْمُقَرَّبُونَ
তারাই নৈকট্য প্রাপ্ত –
12 – ওয়াকিয়া
فِى جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ
সুখ উদ্যানের।
13 – ওয়াকিয়া
ثُلَّةٌ مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ
বহু সংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে;
14 – ওয়াকিয়া
وَقَلِيلٌ مِّنَ ٱلْءَاخِرِينَ
এবং অল্প সংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে,
15 – ওয়াকিয়া
عَلَىٰ سُرُرٍ مَّوْضُونَةٍ
স্বর্ণ খচিত আসনে –
16 – ওয়াকিয়া
مُّتَّكِـِٔينَ عَلَيْهَا مُتَقَٰبِلِينَ
তারা হেলান দিয়ে বসবে, পরস্পর মুখোমুখী হয়ে।
17 – ওয়াকিয়া
يَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَٰنٌ مُّخَلَّدُونَ
তাদের সেবায় ঘোরাফিরা করবে চির কিশোরেরা –
18 – ওয়াকিয়া
بِأَكْوَابٍ وَأَبَارِيقَ وَكَأْسٍ مِّن مَّعِينٍ
পান-পাত্র, কুজা ও প্রস্রবন নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে।
19 – ওয়াকিয়া
لَّا يُصَدَّعُونَ عَنْهَا وَلَا يُنزِفُونَ
সেই সুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবেনা, তারা জ্ঞানহারাও হবেনা।
20 – ওয়াকিয়া
وَفَٰكِهَةٍ مِّمَّا يَتَخَيَّرُونَ
এবং তাদের পছন্দ মত ফলমূল –
21 – ওয়াকিয়া
وَلَحْمِ طَيْرٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
আর তাদের ঈস্পিত পাখীর গোশত দিয়ে;
22 – ওয়াকিয়া
وَحُورٌ عِينٌ
আর তাদের জন্য থাকবে আয়তলোচনা হুর –
23 – ওয়াকিয়া
كَأَمْثَٰلِ ٱللُّؤْلُؤِ ٱلْمَكْنُونِ
সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ –
24 – ওয়াকিয়া
جَزَآءًۢ بِمَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
তাদের কর্মের পুরস্কার স্বরূপ।
25 – ওয়াকিয়া
لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا
সেখানে তারা শুনবেনা কোন অসার অথবা পাপ বাক্য,
26 – ওয়াকিয়া
إِلَّا قِيلًا سَلَٰمًا سَلَٰمًا
‘সালাম’ আর ‘সালাম’ বাণী ব্যতীত।
27 – ওয়াকিয়া
وَأَصْحَٰبُ ٱلْيَمِينِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْيَمِينِ
আর ডান দিকের দল! কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল!
28 – ওয়াকিয়া
فِى سِدْرٍ مَّخْضُودٍ
তারা থাকবে এক উদ্যানে, সেখানে আছে কন্টকহীন কুল বৃক্ষ,
29 – ওয়াকিয়া
وَطَلْحٍ مَّنضُودٍ
কাঁদি ভরা কদলী বৃক্ষ,
30 – ওয়াকিয়া
وَظِلٍّ مَّمْدُودٍ
সম্প্রসারিত ছায়া,
31 – ওয়াকিয়া
وَمَآءٍ مَّسْكُوبٍ
সদ্য প্রবাহমান পানি,
32 – ওয়াকিয়া
وَفَٰكِهَةٍ كَثِيرَةٍ
ও প্রচুর ফলমূল –
33 – ওয়াকিয়া
لَّا مَقْطُوعَةٍ وَلَا مَمْنُوعَةٍ
যা শেষ হবেনা এবং যা নিষিদ্ধও হবেনা,
34 – ওয়াকিয়া
وَفُرُشٍ مَّرْفُوعَةٍ
আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ।
35 – ওয়াকিয়া
إِنَّآ أَنشَأْنَٰهُنَّ إِنشَآءً
তাদের জন্য আমি করেছি বিশেষ সৃষ্টি।
36 – ওয়াকিয়া
فَجَعَلْنَٰهُنَّ أَبْكَارًا
তাদেরকে করেছি কুমারী,
37 – ওয়াকিয়া
عُرُبًا أَتْرَابًا
সোহাগিনী ও সমবয়স্কা –
38 – ওয়াকিয়া
لِّأَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ
(এ সবই) ডান দিকের লোকদের জন্য।
39 – ওয়াকিয়া
ثُلَّةٌ مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ
তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে।
40 – ওয়াকিয়া
وَثُلَّةٌ مِّنَ ٱلْءَاخِرِينَ
এবং অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে।
41 – ওয়াকিয়া
وَأَصْحَٰبُ ٱلشِّمَالِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلشِّمَالِ
আর বাম দিকের দল, কত হতভাগা বাম দিকের দল!
42 – ওয়াকিয়া
فِى سَمُومٍ وَحَمِيمٍ
তারা থাকবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে,
43 – ওয়াকিয়া
وَظِلٍّ مِّن يَحْمُومٍ
কৃষ্ণ বর্ণ ধুম্রের ছায়ায়,
44 – ওয়াকিয়া
لَّا بَارِدٍ وَلَا كَرِيمٍ
যা শীতলও নয়, আরামদায়কও নয়।
45 – ওয়াকিয়া
إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَبْلَ ذَٰلِكَ مُتْرَفِينَ
ইতোপূর্বে তারাতো মগ্ন ছিল ভোগ বিলাসে।
46 – ওয়াকিয়া
وَكَانُواۡ يُصِرُّونَ عَلَى ٱلْحِنثِ ٱلْعَظِيمِ
এবং তারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপ কর্মে।
47 – ওয়াকিয়া
وَكَانُواۡ يَقُولُونَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبْعُوثُونَ
তারা বলতঃ মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হলেও কি পুনরুত্থিত হব আমরা?
48 – ওয়াকিয়া
أَوَءَابَآؤُنَا ٱلْأَوَّلُونَ
এবং আমাদের পূর্বপুরুষরাও?
49 – ওয়াকিয়া
قُلْ إِنَّ ٱلْأَوَّلِينَ وَٱلْءَاخِرِينَ
বলঃ অবশ্যই পূর্ববতী ও পরবর্তীদের –
50 – ওয়াকিয়া
لَمَجْمُوعُونَ إِلَىٰ مِيقَٰتِ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ
সকলকে একত্রিত করা হবে এক নির্ধারিত দিনের নির্ধারিত সময়ে।
51 – ওয়াকিয়া
ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا ٱلضَّآلُّونَ ٱلْمُكَذِّبُونَ
অতঃপর হে বিভ্রান্ত মিথ্যা আরোপকারীরা!
52 – ওয়াকিয়া
لَءَاكِلُونَ مِن شَجَرٍ مِّن زَقُّومٍ
তোমরা অবশ্যই আহার করবে যাক্কুম বৃক্ষ হতে,
53 – ওয়াকিয়া
فَمَالِـُٔونَ مِنْهَا ٱلْبُطُونَ
এবং ওটা দ্বারা তোমরা উদর পূর্ণ করবে,
54 – ওয়াকিয়া
فَشَٰرِبُونَ عَلَيْهِ مِنَ ٱلْحَمِيمِ
তারপর তোমরা পান করবে অত্যুষ্ণ পানি –
55 – ওয়াকিয়া
فَشَٰرِبُونَ شُرْبَ ٱلْهِيمِ
পান করবে তৃষ্ণার্ত উষ্ট্রের ন্যায়।
56 – ওয়াকিয়া
هَٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ ٱلدِّينِ
কিয়ামাত দিবসে ওটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।
57 – ওয়াকিয়া
نَحْنُ خَلَقْنَٰكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُونَ
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তাহলে কেন তোমরা বিশ্বাস করছনা?
58 – ওয়াকিয়া
أَفَرَءَيْتُم مَّا تُمْنُونَ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ তোমাদের বীর্যপাত সম্বন্ধে?
59 – ওয়াকিয়া
ءَأَنتُمْ تَخْلُقُونَهُۥٓ أَمْ نَحْنُ ٱلْخَٰلِقُونَ
ওটা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?
60 – ওয়াকিয়া
نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ ٱلْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ
আমি তোমাদের জন্য মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই –
61 – ওয়াকিয়া
عَلَىٰٓ أَن نُّبَدِّلَ أَمْثَٰلَكُمْ وَنُنشِئَكُمْ فِى مَا لَا تَعْلَمُونَ
তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতি দান করতে যা তোমরা জাননা।
62 – ওয়াকিয়া
وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ ٱلنَّشْأَةَ ٱلْأُولَىٰ فَلَوْلَا تَذَكَّرُونَ
তোমরাতো অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে, তাহলে তোমরা অনুধাবন করনা কেন?
63 – ওয়াকিয়া
أَفَرَءَيْتُم مَّا تَحْرُثُونَ
তোমরা যে বীজ বপন কর সে সম্পর্কে চিন্তা করেছ কি?
64 – ওয়াকিয়া
ءَأَنتُمْ تَزْرَعُونَهُۥٓ أَمْ نَحْنُ ٱلزَّٰرِعُونَ
তোমরা কি ওকে অংকুরিত কর, না আমি অংকুরিত করি?
65 – ওয়াকিয়া
لَوْ نَشَآءُ لَجَعَلْنَٰهُ حُطَٰمًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُونَ
আমি ইচ্ছা করলে একে খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে তোমরা।
66 – ওয়াকিয়া
إِنَّا لَمُغْرَمُونَ
বলবেঃ আমাদেরতো সর্বনাশ হয়েছে!
67 – ওয়াকিয়া
بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ
আমরা হৃত সর্বস্ব হয়ে পড়েছি।
68 – ওয়াকিয়া
أَفَرَءَيْتُمُ ٱلْمَآءَ ٱلَّذِى تَشْرَبُونَ
তোমরা যে পানি পান কর সেই সম্পর্কে তোমরা ভেবে দেখেছ কি?
69 – ওয়াকিয়া
ءَأَنتُمْ أَنزَلْتُمُوهُ مِنَ ٱلْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ ٱلْمُنزِلُونَ
তোমরাই কি ওটা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না কি আমি ওটা বর্ষণ করি?
70 – ওয়াকিয়া
لَوْ نَشَآءُ جَعَلْنَٰهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ
আমি ইচ্ছা করলে ওটা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেনা?
71 – ওয়াকিয়া
أَفَرَءَيْتُمُ ٱلنَّارَ ٱلَّتِى تُورُونَ
তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর তা লক্ষ্য করে দেখেছ কি?
72 – ওয়াকিয়া
ءَأَنتُمْ أَنشَأْتُمْ شَجَرَتَهَآ أَمْ نَحْنُ ٱلْمُنشِـُٔونَ
তোমরাই কি ওর বৃক্ষ সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?
73 – ওয়াকিয়া
نَحْنُ جَعَلْنَٰهَا تَذْكِرَةً وَمَتَٰعًا لِّلْمُقْوِينَ
আমি একে করেছি নিদর্শন এবং মরুচারীদের প্রয়োজনীয় বস্তু।
74 – ওয়াকিয়া
فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ
সুতরাং তুমি তোমার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
75 – ওয়াকিয়া
فَلَآ أُقْسِمُ بِمَوَٰقِعِ ٱلنُّجُومِ
আমি শপথ করছি নক্ষত্র রাজির অস্তাচলের!
76 – ওয়াকিয়া
وَإِنَّهُۥ لَقَسَمٌ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ
অবশ্যই এটা এক মহা শপথ, যদি তোমরা জানতে।
77 – ওয়াকিয়া
إِنَّهُۥ لَقُرْءَانٌ كَرِيمٌ
নিশ্চয়ই এটা সম্মানিত কুরআন –
78 – ওয়াকিয়া
فِى كِتَٰبٍ مَّكْنُونٍ
যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে,
79 – ওয়াকিয়া
لَّا يَمَسُّهُۥٓ إِلَّا ٱلْمُطَهَّرُونَ
যারা পুতঃ পবিত্র তারা ব্যতীত অন্য কেহ তা স্পর্শ করেনা।
80 – ওয়াকিয়া
تَنزِيلٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
ইহা জগতসমূহের রবের নিকট হতে অবতীর্ণ।
81 – ওয়াকিয়া
أَفَبِهَٰذَا ٱلْحَدِيثِ أَنتُم مُّدْهِنُونَ
তবুও কি তোমরা এই বাণীকে তুচ্ছ গণ্য করবে?
82 – ওয়াকিয়া
وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ
এবং তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের উপজীব্য করে নিয়েছ!
83 – ওয়াকিয়া
فَلَوْلَآ إِذَا بَلَغَتِ ٱلْحُلْقُومَ
পরন্তু কেন নয় – প্রাণ যখন কন্ঠাগত হয়,
84 – ওয়াকিয়া
وَأَنتُمْ حِينَئِذٍ تَنظُرُونَ
এবং তখন তোমরা তাকিয়ে থাক,
85 – ওয়াকিয়া
وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنكُمْ وَلَٰكِن لَّا تُبْصِرُونَ
আর আমি তোমাদের অপেক্ষা তার নিকটতর, কিন্তু তোমরা দেখতে পাওনা।
86 – ওয়াকিয়া
فَلَوْلَآ إِن كُنتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ
তোমরা যদি কর্তৃত্বাধীন না হও –
87 – ওয়াকিয়া
تَرْجِعُونَهَآ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
তাহলে তোমরা ওটা ফিরাওনা কেন? যদি তোমরা সত্যবাদী হও!
88 – ওয়াকিয়া
فَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ
যদি সে নৈকট্য প্রাপ্তদের একজন হয় –
89 – ওয়াকিয়া
فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتُ نَعِيمٍ
তার জন্য রয়েছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখময় উদ্যান;
90 – ওয়াকিয়া
وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ
আর যদি সে ডান দিকের একজন হয় –
91 – ওয়াকিয়া
فَسَلَٰمٌ لَّكَ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ
তাকে বলা হবেঃ হে দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী! তোমার প্রতি শান্তি।
92 – ওয়াকিয়া
وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلْمُكَذِّبِينَ ٱلضَّآلِّينَ
কিন্তু সে যদি সত্য অস্বীকারকারী ও বিভ্রান্তদের অন্যতম হয় –
93 – ওয়াকিয়া
فَنُزُلٌ مِّنْ حَمِيمٍ
তাহলে রয়েছে আপ্যায়ন, অত্যুষ্ণ পানির দ্বারা –
94 – ওয়াকিয়া
وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ
এবং দহন, জাহান্নামের।
95 – ওয়াকিয়া
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ حَقُّ ٱلْيَقِينِ
এটাতো ধ্রুব সত্য।
96 – ওয়াকিয়া
فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ
অতএব তুমি তোমার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
57 নং সূরা – আল-হাদীদ – اَلْحَدِيد
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 29
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – হাদীদ
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
02 – হাদীদ
لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ يُحْىِۦ وَيُمِيتُۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান; তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
03 – হাদীদ
هُوَ ٱلْأَوَّلُ وَٱلْءَاخِرُ وَٱلظَّٰهِرُ وَٱلْبَاطِنُۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, তিনিই ব্যক্ত, তিনিই গুপ্ত এবং তিনি সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত।
04 – হাদীদ
هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَاۖ وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে এবং যা কিছু তা হতে বের হয় এবং আকাশ হতে যা কিছু নামে ও আকাশে যা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।
05 – হাদীদ
لَّهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرْجَعُ ٱلْأُمُورُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তাঁরই, এবং আল্লাহরই দিকে সব বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে।
06 – হাদীদ
يُولِجُ ٱلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلَّيْلِۚ وَهُوَ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
তিনিই রাতকে প্রবেশ করান দিনে এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতে, এবং তিনি অর্ন্তযামী।
07 – হাদীদ
ءَامِنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَأَنفِقُواۡ مِمَّا جَعَلَكُم مُّسْتَخْلَفِينَ فِيهِۖ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مِنكُمْ وَأَنفَقُواۡ لَهُمْ أَجْرٌ كَبِيرٌ
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন তা হতে ব্যয় কর। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও ব্যয় করে তাদের জন্য আছে মহা পুরস্কার।
08 – হাদীদ
وَمَا لَكُمْ لَا تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِۙ وَٱلرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ لِتُؤْمِنُواۡ بِرَبِّكُمْ وَقَدْ أَخَذَ مِيثَٰقَكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহতে ঈমান আনছনা? অথচ রাসূল তোমাদেরকে তোমাদের রবের প্রতি আহবান করছে এবং আল্লাহ তোমাদের নিকট হতে অংগীকার গ্রহণ করেছেন, অবশ্য তোমরা যদি তাতে বিশ্বাসী হও।
09 – হাদীদ
هُوَ ٱلَّذِى يُنَزِّلُ عَلَىٰ عَبْدِهِۦٓ ءَايَٰتٍۭ بَيِّنَٰتٍ لِّيُخْرِجَكُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ بِكُمْ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ
তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করেন, তোমাদেরকে অন্ধকার হতে আলোতে নিয়ে আসার জন্য; আল্লাহতো তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু।
10 – হাদীদ
وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَٰثُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ لَا يَسْتَوِى مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ ٱلْفَتْحِ وَقَٰتَلَۚ أُوۡلَٰٓئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ ٱلَّذِينَ أَنفَقُواۡ مِنۢ بَعْدُ وَقَٰتَلُواۡۚ وَكُلًّا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلْحُسْنَىٰۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তোমরা আল্লাহর পথে কেন ব্যয় করবেনা? আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মালিকানাতো আল্লাহরই। তোমাদের মধ্যে যারা মাক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে এবং সংগ্রাম করেছে তারা এবং পরবর্তীরা সমান নয়; তারা মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ তাদের অপেক্ষা যারা পরবর্তীকালে ব্যয় করেছে ও সংগ্রাম করেছে। তবে আল্লাহ উভয়ের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।
11 – হাদীদ
مَّن ذَا ٱلَّذِى يُقْرِضُ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَٰعِفَهُۥ لَهُۥ وَلَهُۥٓ أَجْرٌ كَرِيمٌ
কে আছে যে আল্লাহকে দিবে উত্তম ঋণ? তাহলে তিনি বহু গুণে একে বৃদ্ধি করবেন এবং তার জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।
12 – হাদীদ
يَوْمَ تَرَى ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ يَسْعَىٰ نُورُهُم بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَٰنِهِم بُشْرَىٰكُمُ ٱلْيَوْمَ جَنَّٰتٌ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
সেদিন তুমি দেখবে মু’মিন নর-নারীদেরকে তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডান পাশে তাদের জ্যোতি বিচ্ছুরিত হবে। (বলা হবে) আজ তোমাদের জন্য সুসংবাদ জান্নাতের, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে, সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে, এটাই মহা সাফল্য।
13 – হাদীদ
يَوْمَ يَقُولُ ٱلْمُنَٰفِقُونَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتُ لِلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱنظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِن نُّورِكُمْ قِيلَ ٱرْجِعُواۡ وَرَآءَكُمْ فَٱلْتَمِسُواۡ نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُم بِسُورٍ لَّهُۥ بَابٌۢ بَاطِنُهُۥ فِيهِ ٱلرَّحْمَةُ وَظَٰهِرُهُۥ مِن قِبَلِهِ ٱلْعَذَابُ
সেদিন মুনাফিক নর ও নারী মু’মিনদের বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্য একটু থাম, যাতে আমরা তোমাদের জ্যোতির কিছু গ্রহণ করতে পারি। বলা হবেঃ তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও এবং আলোর সন্ধান কর। অতঃপর উভয়ের মাঝে স্থাপিত হবে একটি প্রাচীর যাতে একটি দরযা থাকবে, ওর অভ্যন্তরে থাকবে রাহমাত এবং বহির্ভাগে থাকবে শাস্তি।
14 – হাদীদ
يُنَادُونَهُمْ أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْۖ قَالُواۡ بَلَىٰ وَلَٰكِنَّكُمْ فَتَنتُمْ أَنفُسَكُمْ وَتَرَبَّصْتُمْ وَٱرْتَبْتُمْ وَغَرَّتْكُمُ ٱلْأَمَانِىُّ حَتَّىٰ جَآءَ أَمْرُ ٱللَّهِ وَغَرَّكُم بِٱللَّهِ ٱلْغَرُورُ
মুনাফিকরা মু’মিনদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করবেঃ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলামনা? তারা বলবেঃ হ্যাঁ, কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ; তোমরা প্রতীক্ষা করেছিলে, সন্দেহ পোষণ করেছিলে এবং অলীক আকাংখা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল আল্লাহর হুকুম আসা পর্যন্ত, আর মহা প্রতারক তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল আল্লাহ সম্পর্কে।
15 – হাদীদ
فَٱلْيَوْمَ لَا يُؤْخَذُ مِنكُمْ فِدْيَةٌ وَلَا مِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡۚ مَأْوَىٰكُمُ ٱلنَّارُۖ هِىَ مَوْلَىٰكُمْۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
আজ তোমাদের নিকট হতে কোন মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবেনা এবং যারা কুফরী করেছিল তাদের নিকট হতেও নয়। জাহান্নামই তোমাদের আবাসস্থল, এটাই তোমাদের মাওলা (যোগ্য স্থান), কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম!
16 – হাদীদ
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ أَن تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ ٱللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ ٱلْحَقِّ وَلَا يَكُونُواۡ كَٱلَّذِينَ أُوتُواۡ ٱلْكِتَٰبَ مِن قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ ٱلْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ
যারা ঈমান আনে তাদের হৃদয় ভক্তি-বিগলিত হওয়ার সময় কি আসেনি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তাতে? এবং পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের মত যেন তারা না হয়, বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী।
17 – হাদীদ
ٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ يُحْىِ ٱلْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَاۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
জেনে রেখ, আল্লাহই ধরিত্রীকে ওর মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। আমি নিদর্শনগুলি তোমাদের জন্য বিশদভাবে ব্যক্ত করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার।
18 – হাদীদ
إِنَّ ٱلْمُصَّدِّقِينَ وَٱلْمُصَّدِّقَٰتِ وَأَقْرَضُواۡ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَٰعَفُ لَهُمْ وَلَهُمْ أَجْرٌ كَرِيمٌ
দানশীল পুরুষ ও দানশীলা নারী এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ বেশি এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।
19 – হাদীদ
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦٓ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصِّدِّيقُونَۖ وَٱلشُّهَدَآءُ عِندَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَكَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَآ أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَحِيمِ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে, তারাই তাদের রবের নিকট সত্যনিষ্ঠ ও শহীদ। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কুফরী করেছে ও আমার নিদর্শন অস্বীকার করেছে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী।
20 – হাদীদ
ٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِينَةٌ وَتَفَاخُرٌۢ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِى ٱلْأَمْوَٰلِ وَٱلْأَوْلَٰدِۖ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ ٱلْكُفَّارَ نَبَاتُهُۥ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَىٰهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُونُ حُطَٰمًاۖ وَفِى ٱلْءَاخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنٌۚ وَمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَآ إِلَّا مَتَٰعُ ٱلْغُرُورِ
তোমরা জেনে রেখ যে, পার্থিব জীবনতো ক্রীড়া কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক অহংকার প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়; ওর উপমা বৃষ্টি, যদ্বারা উৎপন্ন শস্য সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর ওটা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি ওটা পীতবর্ণ দেখতে পাও; অবশেষে ওটা খড়কুটায় পরিণত হয়। পরকালে (অবিশ্বাসীদের জন্য) রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং (সৎপথ অনুসারীদের জন্য রয়েছে) আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।
21 – হাদীদ
سَابِقُوٓاۡ إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ
তোমরা অগ্রণী হও তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাত লাভের প্রয়াসে যা প্রশস্ততায় আকাশ ও পৃথিবীর মত, যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাসীদের জন্য। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি এটা দান করেন; আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।
22 – হাদীদ
مَآ أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِى كِتَٰبٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَآۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٌ
পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি তা সংঘটিত করার পূর্বেই তা লিপিবদ্ধ থাকে, আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজ।
23 – হাদীদ
لِّكَيْلَا تَأْسَوْاۡ عَلَىٰ مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُواۡ بِمَآ ءَاتَىٰكُمْۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ
এটা এ জন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছ তাতে যেন তোমরা বিমর্ষ না হও, এবং যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তার জন্য হর্ষোৎফুল্ল না হও। আল্লাহ পছন্দ করেননা ঔদ্ধত ও অহংকারীদেরকে –
24 – হাদীদ
ٱلَّذِينَ يَبْخَلُونَ وَيَأْمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلْبُخْلِۗ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَنِىُّ ٱلْحَمِيدُ
যারা কার্পন্য করে এবং মানুষকে কার্পণ্যের নির্দেশ দেয়; যে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে জেনে রাখুক যে, আল্লাহতো অভাবমুক্ত, প্রশংসা।
25 – হাদীদ
لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌ
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও ন্যায় নীতি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি লৌহও দিয়েছি যাতে রয়েছে প্রচন্ড শক্তি এবং রয়েছে মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ; এটা এ জন্য যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দিবেন কে প্রত্যক্ষ না করেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী।
26 – হাদীদ
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا وَإِبْرَٰهِيمَ وَجَعَلْنَا فِى ذُرِّيَّتِهِمَا ٱلنُّبُوَّةَ وَٱلْكِتَٰبَۖ فَمِنْهُم مُّهْتَدٍۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ
আমি নূহ এবং ইবরাহীমকে এবং তাদের বংশধরদের জন্য স্থির করেছিলাম নবুওয়াত ও কিতাব, কিন্তু তাদের অল্পই সৎ পথ অবলম্বন করেছিল এবং অধিকাংশই ছিল সত্যত্যাগী।
27 – হাদীদ
ثُمَّ قَفَّيْنَا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم بِرُسُلِنَا وَقَفَّيْنَا بِعِيسَى ٱبْنِ مَرْيَمَ وَءَاتَيْنَٰهُ ٱلْإِنجِيلَ وَجَعَلْنَا فِى قُلُوبِ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُ رَأْفَةً وَرَحْمَةً وَرَهْبَانِيَّةً ٱبْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَٰهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ٱبْتِغَآءَ رِضْوَٰنِ ٱللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَاۖ فَـَٔاتَيْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مِنْهُمْ أَجْرَهُمْۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ
অতঃপর আমি তাদের অনুগামী করেছিলাম আমার রাসূলগণকে এবং অনুগামী করেছিলাম মারইয়াম-পুত্র ঈসাকে, আর তাকে দিয়েছিলাম ঈঞ্জীল এবং তার অনুসারীদের অন্তরে দিয়েছিলাম করুণা ও দয়া; কিন্তু দরবেশী জীবনতো তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রবর্তন করেছিল; আমি তাদেরকে এর বিধান দিইনি; অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি। তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমি করেছিলাম পুরস্কৃত এবং তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী।
28 – হাদীদ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَءَامِنُواۡ بِرَسُولِهِۦ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِن رَّحْمَتِهِۦ وَيَجْعَل لَّكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِۦ وَيَغْفِرْ لَكُمْۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদেরকে দিবেন দ্বিগুণ পুরস্কার এবং তিনি তোমাদেরকে দিবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
29 – হাদীদ
لِّئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ ٱلْكِتَٰبِ أَلَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَىْءٍ مِّن فَضْلِ ٱللَّهِۙ وَأَنَّ ٱلْفَضْلَ بِيَدِ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ
এটা এ জন্য যে, কিতাবীরা যেন জানতে পারে যে, আল্লাহর সামান্যতম অনুগ্রহের উপরও তাদের কোন অধিকার নেই; অনুগ্রহ আল্লাহরই এখতিয়ারে, যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।
58 নং সূরা – আল-মুজাদালাহ – اَلْمُجَادَلَة
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 22
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – মুজাদালাহ
قَدْ سَمِعَ ٱللَّهُ قَوْلَ ٱلَّتِى تُجَٰدِلُكَ فِى زَوْجِهَا وَتَشْتَكِىٓ إِلَى ٱللَّهِ وَٱللَّهُ يَسْمَعُ تَحَاوُرَكُمَآۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌۢ بَصِيرٌ
(হে রাসূল) আল্লাহ শুনেছেন সেই নারীর কথা যে তার স্বামীর বিষয়ে তোমার সাথে বাদানুবাদ করেছে এবং আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করেছে। আল্লাহ তোমাদের কথোপকথন শোনেন; আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
02 – মুজাদালাহ
ٱلَّذِينَ يُظَٰهِرُونَ مِنكُم مِّن نِّسَآئِهِم مَّا هُنَّ أُمَّهَٰتِهِمْۖ إِنْ أُمَّهَٰتُهُمْ إِلَّا ٱلَّٰٓـِٔى وَلَدْنَهُمْۚ وَإِنَّهُمْ لَيَقُولُونَ مُنكَرًا مِّنَ ٱلْقَوْلِ وَزُورًاۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ
তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে তারা জেনে রাখুক যে, তাদের স্ত্রীরা তাদের মা নয়; যারা তাদেরকে জন্মদান করে শুধু তারাই তাদের মা; তারাতো অসঙ্গত ও ভিত্তিহীন কথাই বলে; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।
03 – মুজাদালাহ
وَٱلَّذِينَ يُظَٰهِرُونَ مِن نِّسَآئِهِمْ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا قَالُواۡ فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مِّن قَبْلِ أَن يَتَمَآسَّاۚ ذَٰلِكُمْ تُوعَظُونَ بِهِۦۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে ‘‘যিহার’’ করে এবং পরে তাদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাহলে একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাস মুক্ত করতে হবে – এই নির্দেশ তোমাদেরকে দেয়া হল। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্যক অবগত।
04 – মুজাদালাহ
فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ مِن قَبْلِ أَن يَتَمَآسَّاۖ فَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ فَإِطْعَامُ سِتِّينَ مِسْكِينًاۚ ذَٰلِكَ لِتُؤْمِنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۚ وَتِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِۗ وَلِلْكَٰفِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
কিন্তু যার এ সামর্থ্য নেই, একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে তাকে একাদিক্রমে দুই মাস সিয়াম পালন করতে হবে। যে তাতেও অসমর্থ হবে সে ষাটজন অভাবগ্রস্তকে খাওয়াবে; এটা এ জন্য যে, তোমরা যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন কর। এগুলি আল্লাহর নির্ধারিত বিধান, কাফিরদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
05 – মুজাদালাহ
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحَآدُّونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ كُبِتُواۡ كَمَا كُبِتَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ وَقَدْ أَنزَلْنَآ ءَايَٰتٍۭ بَيِّنَٰتٍۚ وَلِلْكَٰفِرِينَ عَذَابٌ مُّهِينٌ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদেরকে অপদস্থ করা হবে যেমন অপদস্থ করা হয়েছে তাদের পূর্ববর্তীদেরকে; আমি সুস্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করেছি; কাফিরদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
06 – মুজাদালাহ
يَوْمَ يَبْعَثُهُمُ ٱللَّهُ جَمِيعًا فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوٓاۡۚ أَحْصَىٰهُ ٱللَّهُ وَنَسُوهُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ شَهِيدٌ
সেদিন, যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রে পুনরুত্থিত করবেন এবং তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা তারা করত; আল্লাহ উহার হিসাব রেখেছেন, যদিও তারা তা বিস্মৃত হয়েছে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।
07 – মুজাদালাহ
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۖ مَا يَكُونُ مِن نَّجْوَىٰ ثَلَٰثَةٍ إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلَآ أَدْنَىٰ مِن ذَٰلِكَ وَلَآ أَكْثَرَ إِلَّا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُواۡۖ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُواۡ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
তুমি কি অনুধাবন করনা, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন? তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয়না যাতে চতুর্থ হিসাবে তিনি উপস্থিত থাকেননা; এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয়না যাতে ষষ্ঠ হিসাবে তিনি উপস্থিত থাকেননা; তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশি হোক, তারা যেখানেই থাকুকনা কেন তিনি তাদের সাথে আছেন। তারা যা করে, তিনি তাদেরকে কিয়ামাত দিবসে তা জানিয়ে দিবেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।
08 – মুজাদালাহ
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ نُهُواۡ عَنِ ٱلنَّجْوَىٰ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا نُهُواۡ عَنْهُ وَيَتَنَٰجَوْنَ بِٱلْإِثْمِ وَٱلْعُدْوَٰنِ وَمَعْصِيَتِ ٱلرَّسُولِ وَإِذَا جَآءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ ٱللَّهُ وَيَقُولُونَ فِىٓ أَنفُسِهِمْ لَوْلَا يُعَذِّبُنَا ٱللَّهُ بِمَا نَقُولُۚ حَسْبُهُمْ جَهَنَّمُ يَصْلَوْنَهَاۖ فَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
তুমি কি তাদেরকে লক্ষ্য করনা, যাদেরকে গোপন পরামর্শ করতে নিষেধ করা হয়েছিল; অতঃপর তারা যা নিষিদ্ধ তারই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচরণ, সীমা লংঘন ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণের জন্য কানাকানি করে। তারা যখন তোমার নিকট আসে তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন করে যদ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন করেননি। তারা মনে মনে বলেঃ আমরা যা বলি উহার জন্য আল্লাহ আমাদেরকে শাস্তি দেননা কেন? জাহান্নামই তাদের উপযুক্ত শাস্তি, সেখানে তারা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস!
09 – মুজাদালাহ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا تَنَٰجَيْتُمْ فَلَا تَتَنَٰجَوْاۡ بِٱلْإِثْمِ وَٱلْعُدْوَٰنِ وَمَعْصِيَتِ ٱلرَّسُولِ وَتَنَٰجَوْاۡ بِٱلْبِرِّ وَٱلتَّقْوَىٰۖ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ ٱلَّذِىٓ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন গোপন পরামর্শ কর, সেই পরামর্শ যেন পাপাচরণ, সীমা লংঘন ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ সম্পর্কে না হয়। কল্যাণকর কাজ ও তাকওয়া অবলম্বনের পরামর্শ কর এবং ভয় কর আল্লাহকে যাঁর নিকট তোমরা সমবেত হবে।
10 – মুজাদালাহ
إِنَّمَا ٱلنَّجْوَىٰ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ لِيَحْزُنَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَلَيْسَ بِضَآرِّهِمْ شَيْـًٔا إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُؤْمِنُونَ
শাইতানের প্ররোচনায় হয় এই গোপন পরামর্শ, মু’মিনদেরকে দুঃখ দেয়ার জন্য; কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত শাইতান তাদের সামান্যতম ক্ষতি সাধনেও সক্ষম নয়। মু’মিনদের কর্তব্য হল আল্লাহর উপর নির্ভর করা।
11 – মুজাদালাহ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا قِيلَ لَكُمْ تَفَسَّحُواۡ فِى ٱلْمَجَٰلِسِ فَٱفْسَحُواۡ يَفْسَحِ ٱللَّهُ لَكُمْۖ وَإِذَا قِيلَ ٱنشُزُواۡ فَٱنشُزُواۡ يَرْفَعِ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مِنكُمْ وَٱلَّذِينَ أُوتُواۡ ٱلْعِلْمَ دَرَجَٰتٍۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
হে মু’মিনগণ! যখন তোমাদের বলা হয় মজলিসের স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান করে দিবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য স্থান প্রশস্ত করে দিবেন এবং যখন বলা হয় উঠে যাও, তখন উঠে যাবে। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করবেন; আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, তোমরা যা কর সেই সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।
12 – মুজাদালাহ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا نَٰجَيْتُمُ ٱلرَّسُولَ فَقَدِّمُواۡ بَيْنَ يَدَىْ نَجْوَىٰكُمْ صَدَقَةًۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَأَطْهَرُۚ فَإِن لَّمْ تَجِدُواۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমরা রাসূলের সাথে চুপি চুপি কথা বলতে চাইলে উহার পূর্বে সাদাকাহ প্রদান করবে, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় ও পরিশোধক। যদি তাতে অক্ষম হও তাহলে এ জন্য তোমাদেরকে অপরাধী গণ্য করা হবেনা। কেননা আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
13 – মুজাদালাহ
ءَأَشْفَقْتُمْ أَن تُقَدِّمُواۡ بَيْنَ يَدَىْ نَجْوَىٰكُمْ صَدَقَٰتٍۚ فَإِذْ لَمْ تَفْعَلُواۡ وَتَابَ ٱللَّهُ عَلَيْكُمْ فَأَقِيمُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواۡ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ وَٱللَّهُ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ
তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলার পূর্বে সাদাকাহ প্রদান কষ্টকর মনে কর? যখন তোমরা সাদাকাহ দিতে পারলেনা, আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন, তখন তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্যক অবগত।
14 – মুজাদালাহ
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ تَوَلَّوْاۡ قَوْمًا غَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مَّا هُم مِّنكُمْ وَلَا مِنْهُمْ وَيَحْلِفُونَ عَلَى ٱلْكَذِبِ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি, যারা আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে? তারা তোমাদের (মুসলিমদের) দলভুক্ত নয় এবং তাদেরও (ইয়াহুদদের) দলভুক্ত নয় এবং তারা জেনে মিথ্যা শপথ করে।
15 – মুজাদালাহ
أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُمْ عَذَابًا شَدِيدًاۖ إِنَّهُمْ سَآءَ مَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কঠিন শাস্তি। কত মন্দ তারা যা করে!
16 – মুজাদালাহ
ٱتَّخَذُوٓاۡ أَيْمَٰنَهُمْ جُنَّةً فَصَدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ فَلَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
তারা তাদের শপথগুলিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে, এভাবে তারা আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
17 – মুজাদালাহ
لَّن تُغْنِىَ عَنْهُمْ أَمْوَٰلُهُمْ وَلَآ أَوْلَٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَيْـًٔاۚ أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
আল্লাহর শাস্তির মুকাবিলায় তাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদের কোন কাজে আসবেনা; তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
18 – মুজাদালাহ
يَوْمَ يَبْعَثُهُمُ ٱللَّهُ جَمِيعًا فَيَحْلِفُونَ لَهُۥ كَمَا يَحْلِفُونَ لَكُمْۖ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ عَلَىٰ شَىْءٍۚ أَلَآ إِنَّهُمْ هُمُ ٱلْكَٰذِبُونَ
যেদিন আল্লাহ পুনরুত্থিত করবেন তাদের সকলকে, তখন তারা তাঁর (আল্লাহর) নিকট সেরূপ শপথ করবে যেরূপ শপথ তোমাদের নিকট করে এবং তারা মনে করে যে, এতে তারা উপকৃত হবে। সাবধান! তারাইতো মিথ্যাবাদী।
19 – মুজাদালাহ
ٱسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ ٱلشَّيْطَٰنُ فَأَنسَىٰهُمْ ذِكْرَ ٱللَّهِۚ أُوۡلَٰٓئِكَ حِزْبُ ٱلشَّيْطَٰنِۚ أَلَآ إِنَّ حِزْبَ ٱلشَّيْطَٰنِ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
শাইতান তাদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করেছে। ফলে তাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে আল্লাহর স্মরণ। তারা শাইতানেরই দল। সাবধান! শাইতানের দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত।
20 – মুজাদালাহ
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحَآدُّونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ أُوۡلَٰٓئِكَ فِى ٱلْأَذَلِّينَ
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা হবে চরম লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত।
21 – মুজাদালাহ
كَتَبَ ٱللَّهُ لَأَغْلِبَنَّ أَنَا۠ وَرُسُلِىٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌ
আল্লাহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, আমি এবং আমার রাসূল অবশ্যই বিজয়ী হব। আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
22 – মুজাদালাহ
لَّا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْءَاخِرِ يُوَآدُّونَ مَنْ حَآدَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَوْ كَانُوٓاۡ ءَابَآءَهُمْ أَوْ أَبْنَآءَهُمْ أَوْ إِخْوَٰنَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْۚ أُوۡلَٰٓئِكَ كَتَبَ فِى قُلُوبِهِمُ ٱلْإِيمَٰنَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٍ مِّنْهُۖ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ رَضِىَ ٱللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواۡ عَنْهُۚ أُوۡلَٰٓئِكَ حِزْبُ ٱللَّهِۚ أَلَآ إِنَّ حِزْبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায় তুমি পাবেনা যারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে, হোক না এই বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা তাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠি। তাদের অন্তরে (আল্লাহ) ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা; তিনি তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট, তারাই আল্লাহর দল। জেনে রেখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।
59 নং সূরা – আল-হাশ্র – اَلْحَشْر
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 24
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – হাশ্র
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
02 – হাশ্র
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَخْرَجَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ مِن دِيَٰرِهِمْ لِأَوَّلِ ٱلْحَشْرِۚ مَا ظَنَنتُمْ أَن يَخْرُجُواۡۖ وَظَنُّوٓاۡ أَنَّهُم مَّانِعَتُهُمْ حُصُونُهُم مِّنَ ٱللَّهِ فَأَتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُواۡۖ وَقَذَفَ فِى قُلُوبِهِمُ ٱلرُّعْبَۚ يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُم بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِى ٱلْمُؤْمِنِينَ فَٱعْتَبِرُواۡ يَٰٓأُوۡلِى ٱلْأَبْصَٰرِ
তিনিই কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফির তাদেরকে প্রথম সমাবেশেই তাদের আবাসভূমি হতে বিতাড়িত করেছিলেন। তোমরা কল্পনাও করনি যে, তারা নির্বাসিত হবে এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদের দুর্ভেদ্য দুর্গগুলি তাদেরকে রক্ষা করবে আল্লাহ হতে; কিন্তু আল্লাহর শাস্তি এমন এক দিক হতে এলো যা ছিল তাদের ধারনাতীত এবং তাদের অন্তরে তা ত্রাসের সঞ্চার করল। তারা ধ্বংস করে ফেলল তাদের বাড়ীঘর নিজেদের হাতে এবং মু’মিনদের হাতেও। অতএব হে চক্ষুম্মান ব্যক্তিবর্গ! তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর!
03 – হাশ্র
وَلَوْلَآ أَن كَتَبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمُ ٱلْجَلَآءَ لَعَذَّبَهُمْ فِى ٱلدُّنْيَاۖ وَلَهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِ عَذَابُ ٱلنَّارِ
আল্লাহ তাদের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে তাদেরকে পৃথিবীতে অন্য শাস্তি দিতেন; পরকালে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি।
04 – হাশ্র
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ شَآقُّواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۖ وَمَن يُشَآقِّ ٱللَّهَ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
উহা এ জন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল, এবং কেহ আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করলেতো আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
05 – হাশ্র
مَا قَطَعْتُم مِّن لِّينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَآئِمَةً عَلَىٰٓ أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ ٱللَّهِ وَلِيُخْزِىَ ٱلْفَٰسِقِينَ
তোমরা যে খেজুর বৃক্ষগুলি কর্তন করেছ এবং যেগুলি কান্ডের উপর স্থির রেখে দিয়েছ, তাতো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে; এটা এ জন্য যে, আল্লাহ পাপাচারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন।
06 – হাশ্র
وَمَآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ مِنْهُمْ فَمَآ أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلَا رِكَابٍ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يُسَلِّطُ رُسُلَهُۥ عَلَىٰ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আল্লাহ তাদের (ইয়াহুদীদের) নিকট হতে যে ‘ফাই’ তাঁর রাসূলকে দিয়েছেন, উহার জন্য তোমরা অশ্ব কিংবা উষ্ট্রে আরোহণ করে যুদ্ধ করনি; আল্লাহতো যার উপর ইচ্ছা তাঁর রাসূলদের কর্তৃত্ব দান করেন; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
07 – হাশ্র
مَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ مِنْ أَهْلِ ٱلْقُرَىٰ فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَٰمَىٰ وَٱلْمَسَٰكِينِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ كَىْ لَا يَكُونَ دُولَةًۢ بَيْنَ ٱلْأَغْنِيَآءِ مِنكُمْۚ وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمْ عَنْهُ فَٱنتَهُواۡۚ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
আল্লাহ এই জনপদবাসীদের নিকট হতে তাঁর রাসূলকে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহর, তাঁর রাসূলের, রাসূলের স্বজনগণের এবং ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্ত ও পথচারীদের যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান শুধু তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে। অতএব রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাক। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
08 – হাশ্র
لِلْفُقَرَآءِ ٱلْمُهَٰجِرِينَ ٱلَّذِينَ أُخْرِجُواۡ مِن دِيَٰرِهِمْ وَأَمْوَٰلِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنًا وَيَنصُرُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ
এই সম্পদ অভাবগ্রস্ত মুহাজিরদের জন্য যারা নিজেদের ঘরবাড়ী ও সম্পত্তি হতে উৎখাত হয়েছে। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্য করে। তারাইতো সত্যাশ্রয়ী।
09 – হাশ্র
وَٱلَّذِينَ تَبَوَّءُو ٱلدَّارَ وَٱلْإِيمَٰنَ مِن قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُونَ فِى صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِّمَّآ أُوتُواۡ وَيُؤْثِرُونَ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌۚ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে যারা এই নগরীতে বসবাস করেছে ও ঈমান এনেছে তারা মুহাজিরদেরকে ভালবাসে এবং মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে তার জন্য তারা অন্তরে বিদ্বেষ পোষণ করেনা, আর তারা তাদেরকে নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও; যারা কার্পণ্য হতে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে তারাই সফলকাম।
10 – হাশ্র
وَٱلَّذِينَ جَآءُو مِنۢ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلْإِيمَٰنِ وَلَا تَجْعَلْ فِى قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواۡ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রগামী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করুন এবং মু’মিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেননা। হে আমাদের রাব্ব! আপনিতো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।
11 – হাশ্র
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ نَافَقُواۡ يَقُولُونَ لِإِخْوَٰنِهِمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ لَئِنْ أُخْرِجْتُمْ لَنَخْرُجَنَّ مَعَكُمْ وَلَا نُطِيعُ فِيكُمْ أَحَدًا أَبَدًا وَإِن قُوتِلْتُمْ لَنَنصُرَنَّكُمْ وَٱللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَٰذِبُونَ
তুমি কি মুনাফিকদেরকে দেখনি? তারা কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে তাদের ঐ সব সঙ্গীকে বলেঃ তোমরা যদি বহিস্কৃত হও তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদের সাথে দেশত্যাগী হব এবং আমরা তোমাদের ব্যাপারে কখনও কারও কথা মানবো না এবং যদি তোমরা আক্রান্ত হও তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করব। কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
12 – হাশ্র
لَئِنْ أُخْرِجُواۡ لَا يَخْرُجُونَ مَعَهُمْ وَلَئِن قُوتِلُواۡ لَا يَنصُرُونَهُمْ وَلَئِن نَّصَرُوهُمْ لَيُوَلُّنَّ ٱلْأَدْبَٰرَ ثُمَّ لَا يُنصَرُونَ
বস্তুতঃ তারা বহিস্কৃত হলে মুনাফিকরা তাদের সাথে দেশ ত্যাগ করবেনা এবং তারা আক্রান্ত হলে তারা তাদেরকে সাহায্য করবেনা এবং তারা সাহায্য করতে এলেও অবশ্যই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, অতঃপর তারা কোন সাহায্যই পাবেনা।
13 – হাশ্র
لَأَنتُمْ أَشَدُّ رَهْبَةً فِى صُدُورِهِم مِّنَ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ
প্রকৃত পক্ষে, তাদের অন্তরে আল্লাহ অপেক্ষা তোমরাই অধিকতর ভয়ংকর। এটা এ জন্য যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
14 – হাশ্র
لَا يُقَٰتِلُونَكُمْ جَمِيعًا إِلَّا فِى قُرًى مُّحَصَّنَةٍ أَوْ مِن وَرَآءِ جُدُرٍۭۚ بَأْسُهُم بَيْنَهُمْ شَدِيدٌۚ تَحْسَبُهُمْ جَمِيعًا وَقُلُوبُهُمْ شَتَّىٰۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُونَ
তারা সবাই সমবেতভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সমর্থ হবেনা, কিন্তু শুধু সুরক্ষিত জনপদের অভ্যন্তরে অথবা দুর্গ প্রাচীরের অন্তরালে থেকে, পরস্পরের মধ্যে তাদের যুদ্ধ প্রচন্ড। তুমি মনে কর তারা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু তাদের মনের মিল নেই; এটা এ জন্য যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
15 – হাশ্র
كَمَثَلِ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ قَرِيبًاۖ ذَاقُواۡ وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
তাদের তুলনা তাদের পূর্বে যারা নিজেদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করেছে, এবং তাদের জন্যও রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
16 – হাশ্র
كَمَثَلِ ٱلشَّيْطَٰنِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَٰنِ ٱكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّى بَرِىٓءٌ مِّنكَ إِنِّىٓ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلْعَٰلَمِينَ
তাদের তুলনা হচ্ছে শাইতান, যখন সে মানুষকে বলে, কুফরী কর। অতঃপর যখন সে কুফরী করে তখন শাইতান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, আমি জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহকে ভয় করি।
17 – হাশ্র
فَكَانَ عَٰقِبَتَهُمَآ أَنَّهُمَا فِى ٱلنَّارِ خَٰلِدَيْنِ فِيهَاۚ وَذَٰلِكَ جَزَٰٓؤُاۡ ٱلظَّٰلِمِينَ
ফলে উভয়ের পরিণাম হবে জাহান্নাম। সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং এটাই যালিমদের কর্মফল।
18 – হাশ্র
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍۖ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর, প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামী কালের জন্য সে কি অগ্রিম পাঠিয়েছে। আর আল্লাহকে ভয় কর; তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।
19 – হাশ্র
وَلَا تَكُونُواۡ كَٱلَّذِينَ نَسُواۡ ٱللَّهَ فَأَنسَىٰهُمْ أَنفُسَهُمْۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَٰسِقُونَ
আর তাদের মত হয়োনা যারা আল্লাহকে বিস্মৃত হয়েছে, ফলে আল্লাহ তাদেরকে আত্মবিস্মৃত করেছেন। তারাইতো পাপাচারী
20 – হাশ্র
لَا يَسْتَوِىٓ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ وَأَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِۚ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ هُمُ ٱلْفَآئِزُونَ
জাহান্নামের অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান নয়। জান্নাতবাসীরাই সফলকাম।
21 – হাশ্র
لَوْ أَنزَلْنَا هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ عَلَىٰ جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُۥ خَٰشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ ٱللَّهِۚ وَتِلْكَ ٱلْأَمْثَٰلُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
যদি আমি এই কুরআন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করতাম তাহলে তুমি দেখতে যে, ওটা আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এ সব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করি মানুষের জন্য যাতে তারা চিন্তা করে।
22 – হাশ্র
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِۖ هُوَ ٱلرَّحْمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ
তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই, তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু।
23 – হাশ্র
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْمَلِكُ ٱلْقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلْمُؤْمِنُ ٱلْمُهَيْمِنُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْجَبَّارُ ٱلْمُتَكَبِّرُۚ سُبْحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত; যারা তাঁর শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান।
24 – হাশ্র
هُوَ ٱللَّهُ ٱلْخَٰلِقُ ٱلْبَارِئُ ٱلْمُصَوِّرُۖ لَهُ ٱلْأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰۚ يُسَبِّحُ لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
তিনিই আল্লাহ, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তাঁরই। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
60 নং সূরা – আল-মুমতাহানা – اَلْمُمْتَحَنَة
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 13
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – মুমতাহানা
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَتَّخِذُواۡ عَدُوِّى وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَآءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِم بِٱلْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُواۡ بِمَا جَآءَكُم مِّنَ ٱلْحَقِّ يُخْرِجُونَ ٱلرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْۙ أَن تُؤْمِنُواۡ بِٱللَّهِ رَبِّكُمْ إِن كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَٰدًا فِى سَبِيلِى وَٱبْتِغَآءَ مَرْضَاتِىۚ تُسِرُّونَ إِلَيْهِم بِٱلْمَوَدَّةِ وَأَنَا۠ أَعْلَمُ بِمَآ أَخْفَيْتُمْ وَمَآ أَعْلَنتُمْۚ وَمَن يَفْعَلْهُ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ ٱلسَّبِيلِ
হে মুমিনগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা; তোমরা কি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করছ? অথচ তারা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে; রাসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিস্কার করেছে এ কারণে যে, তোমরা তোমাদের রাব্ব আল্লাহর উপর ঈমান এনেছ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমার পথে জিহাদের উদ্দেশে বহির্গত হয়ে থাক তাহলে কেন তোমরা তাদের সাথে গোপনে বন্ধুত্ব করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর তা আমি সম্যক অবগত। তোমাদের যে কেহ এটা করে সেতো বিচ্যুত হয় সরল পথ হতে।
02 – মুমতাহানা
إِن يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُواۡ لَكُمْ أَعْدَآءً وَيَبْسُطُوٓاۡ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُم بِٱلسُّوٓءِ وَوَدُّواۡ لَوْ تَكْفُرُونَ
তোমাদেরকে কাবু করতে পারলে তারা হবে তোমাদের শত্রু এবং হাত ও জিহবা দ্বারা তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে এবং কামনা করবে যেন তোমরা কুফরী কর।
03 – মুমতাহানা
لَن تَنفَعَكُمْ أَرْحَامُكُمْ وَلَآ أَوْلَٰدُكُمْۚ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ يَفْصِلُ بَيْنَكُمْۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তোমাদের অত্মীয়-স্বজন ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামাত দিবসে কোন কাজে আসবেনা। আল্লাহ তোমাদের মধ্যে ফাইসালা করে দিবেন; তোমরা যা কর তিনি তা দেখেন।
04 – মুমতাহানা
قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِىٓ إِبْرَٰهِيمَ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ إِذْ قَالُواۡ لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَءَٰٓؤُاۡ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ ٱلْعَدَٰوَةُ وَٱلْبَغْضَآءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤْمِنُواۡ بِٱللَّهِ وَحْدَهُۥٓ إِلَّا قَوْلَ إِبْرَٰهِيمَ لِأَبِيهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ وَمَآ أَمْلِكُ لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍۖ رَّبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ ٱلْمَصِيرُ
তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদাত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানিনা। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে শুরু হল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য, যদি না তোমরা এক আল্লাহয় ঈমান আন। তবে ব্যতিক্রম তার পিতার প্রতি ইবরাহীমের উক্তিঃ আমি নিশ্চয়ই তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, যদিও তোমার ব্যাপারে আমি আল্লাহর নিকট কোন অধিকার রাখিনা। (ইবরাহীম ও তার অনুসারীগণ বলেছিল) হে আমাদের রাববঃ আমরাতো আপনারই উপর নির্ভর করেছি, আপনারই অভিমুখী হয়েছি এবং প্রত্যাবর্তনতো আপনারই নিকট।
05 – মুমতাহানা
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَٱغْفِرْ لَنَا رَبَّنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
হে আমাদের রাব্ব আপনি আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের পাত্র করবেননা, হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন! আপনিতো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
06 – মুমতাহানা
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيهِمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُواۡ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْءَاخِرَۚ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَنِىُّ ٱلْحَمِيدُ
তোমরা যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রত্যাশা কর নিশ্চয়ই তাদের জন্য তাদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। কেহ মুখ ফিরিয়ে নিলে সে জেনে রাখুক যে, আল্লাহতো অভাবমুক্ত, প্রশংসা।
07 – মুমতাহানা
عَسَى ٱللَّهُ أَن يَجْعَلَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ ٱلَّذِينَ عَادَيْتُم مِّنْهُم مَّوَدَّةًۚ وَٱللَّهُ قَدِيرٌۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা রয়েছে সম্ভবতঃ আল্লাহ তাদের ও তোমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দিবেন; আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরম দয়ালু।
08 – মুমতাহানা
لَّا يَنْهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ لَمْ يُقَٰتِلُوكُمْ فِى ٱلدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمْ أَن تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوٓاۡ إِلَيْهِمْۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُقْسِطِينَ
দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের স্বদেশ হতে বহিস্কৃত করেনি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহতো ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।
09 – মুমতাহানা
إِنَّمَا يَنْهَىٰكُمُ ٱللَّهُ عَنِ ٱلَّذِينَ قَٰتَلُوكُمْ فِى ٱلدِّينِ وَأَخْرَجُوكُم مِّن دِيَٰرِكُمْ وَظَٰهَرُواۡ عَلَىٰٓ إِخْرَاجِكُمْ أَن تَوَلَّوْهُمْۚ وَمَن يَتَوَلَّهُمْ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ
আল্লাহ শুধু তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন যারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বহিস্কৃত করেছে এবং তোমাদের বহিঃস্করণে সাহায্য করেছে। তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারাতো অত্যাচারী।
10 – মুমতাহানা
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا جَآءَكُمُ ٱلْمُؤْمِنَٰتُ مُهَٰجِرَٰتٍ فَٱمْتَحِنُوهُنَّۖ ٱللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَٰنِهِنَّۖ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَٰتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى ٱلْكُفَّارِۖ لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّۖ وَءَاتُوهُم مَّآ أَنفَقُواۡۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَآ ءَاتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّۚ وَلَا تُمْسِكُواۡ بِعِصَمِ ٱلْكَوَافِرِ وَسْـَٔلُواۡ مَآ أَنفَقْتُمْ وَلْيَسْـَٔلُواۡ مَآ أَنفَقُواۡۚ ذَٰلِكُمْ حُكْمُ ٱللَّهِۖ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমাদের নিকট মু’মিনা নারীরা দেশত্যাগী হয়ে এলে তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা কর, আল্লাহ তাদের ঈমান সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মু’মিনা তাহলে তাদেরকে কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠিয়ে দিওনা। মু’মিনা নারীরা কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিরেরা মু’মিনা নারীদের জন্য বৈধ নয়। কাফিরেরা যা ব্যয় করেছে তা তাদেরকে ফিরিয়ে দিবে। অতঃপর তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে কোন অপরাধ হবেনা, যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও। তোমরা কাফির নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখনা। তোমরা যা ব্যয় করেছ তা ফেরত চাবে এবং কাফিরেরা ফেরৎ চাবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটাই আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফাইসালা করে থাকেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
11 – মুমতাহানা
وَإِن فَاتَكُمْ شَىْءٌ مِّنْ أَزْوَٰجِكُمْ إِلَى ٱلْكُفَّارِ فَعَاقَبْتُمْ فَـَٔاتُواۡ ٱلَّذِينَ ذَهَبَتْ أَزْوَٰجُهُم مِّثْلَ مَآ أَنفَقُواۡۚ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ ٱلَّذِىٓ أَنتُم بِهِۦ مُؤْمِنُونَ
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেহ হাতছাড়া হয়ে কাফিরদের নিকট চলে যায় এবং তোমাদের যদি সুযোগ আসে তখন যাদের স্ত্রীরা হাতছাড়া হয়ে গেছে তাদের জন্য তারা (কাফিরেরা) যা ব্যয় করেছে তার সম পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। ভয় কর আল্লাহকে যাকে তোমরা বিশ্বাস কর।
12 – মুমতাহানা
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِذَا جَآءَكَ ٱلْمُؤْمِنَٰتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَىٰٓ أَن لَّا يُشْرِكْنَ بِٱللَّهِ شَيْـًٔا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَٰدَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَٰنٍ يَفْتَرِينَهُۥ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِى مَعْرُوفٍۙ فَبَايِعْهُنَّ وَٱسْتَغْفِرْ لَهُنَّ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে নাবী! মু’মিনা নারীরা যখন তোমার নিকট এসে বাইআ’ত করে এই মর্মে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন শরীক স্থির করবেনা, চুরি করবেনা, ব্যভিচার করবেনা, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবেনা, তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবেনা এবং সত্য কাজে তোমাকে অমান্য করবেনা তখন তাদের বাইআ’ত গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
13 – মুমতাহানা
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَتَوَلَّوْاۡ قَوْمًا غَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ قَدْ يَئِسُواۡ مِنَ ٱلْءَاخِرَةِ كَمَا يَئِسَ ٱلْكُفَّارُ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلْقُبُورِ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করনা, তারাতো আখিরাত সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে যেমন হতাশ হয়েছে কাফিরেরা সমাধিস্থদের বিষয়ে।
61 নং সূরা – আস-সফ – اَلصَّفّ
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 14
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
As-Saf 61:1-14
01 – সফ
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
02 – সফ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা যা করনা তা তোমরা কেন বল?
03 – সফ
كَبُرَ مَقْتًا عِندَ ٱللَّهِ أَن تَقُولُواۡ مَا لَا تَفْعَلُونَ
তোমরা যা করনা তোমাদের তা বলা আল্লাহর দৃষ্টিতে অতিশয় অসন্তোষজনক।
04 – সফ
إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلَّذِينَ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِهِۦ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنْيَٰنٌ مَّرْصُوصٌ
যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মত, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।
05 – সফ
وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِۦ يَٰقَوْمِ لِمَ تُؤْذُونَنِى وَقَد تَّعْلَمُونَ أَنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُمْۖ فَلَمَّا زَاغُوٓاۡ أَزَاغَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْۚ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْفَٰسِقِينَ
স্মরণ কর মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমাকে কেন কষ্ট দিচ্ছ যখন তোমরা জান যে, আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল? অতঃপর তারা যখন বক্র পথ অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তাদের হৃদয়কে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।
06 – সফ
وَإِذْ قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ يَٰبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ إِنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَىَّ مِنَ ٱلتَّوْرَىٰةِ وَمُبَشِّرًۢا بِرَسُولٍ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِى ٱسْمُهُۥٓ أَحْمَدُۖ فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ قَالُواۡ هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
স্মরণ কর, মারইয়াম তনয় ঈসা বললঃ হে বানী ইসরাঈল! আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল এবং আমার পূর্ব হতে তোমাদের নিকট যে তাওরাত রয়েছে আমি উহার সমর্থক এবং আমার পরে আহমাদ নামে যে রাসূল আসবেন আমি তাঁর সুসংবাদদাতা। পরে সে যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের নিকট এলো তখন তারা বলতে লাগলঃ এটাতো এক স্পষ্ট যাদু।
07 – সফ
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَىٰٓ إِلَى ٱلْإِسْلَٰمِۚ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে হতে পারে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সৎ পথে পরিচালিত করেননা।
08 – সফ
يُرِيدُونَ لِيُطْفِـُٔواۡ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفْوَٰهِهِمْ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْكَٰفِرُونَ
তারা আল্লাহর নূর ফুৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূর পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেন, যদিও কাফিরেরা তা অপছন্দ করে।
09 – সফ
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
তিনিই তাঁর রাসূলকে প্রেরণ করেছেন হিদায়াত এবং সত্য দীনসহ সকল দীনের উপর ওকে শ্রেষ্ঠত্ব দানের জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
10 – সফ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَٰرَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
হে মু’মিনগণ! আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দিব যা তোমাদের রক্ষা করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে?
11 – সফ
تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَٰهِدُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمْوَٰلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তোমাদের ধন সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে।
12 – সফ
يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ وَمَسَٰكِنَ طَيِّبَةً فِى جَنَّٰتِ عَدْنٍۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহা সাফল্য।
13 – সফ
وَأُخْرَىٰ تُحِبُّونَهَاۖ نَصْرٌ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
আর তিনি দান করবেন তোমাদের বাঞ্ছিত আরও একটি অনুগ্রহ; আল্লাহর সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়; মু’মিনদেরকে এর সুসংবাদ দাও।
14 – সফ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ كُونُوٓاۡ أَنصَارَ ٱللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّۦنَ مَنْ أَنصَارِىٓ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ ٱللَّهِۖ فَـَٔامَنَت طَّآئِفَةٌ مِّنۢ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ وَكَفَرَت طَّآئِفَةٌۖ فَأَيَّدْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ عَلَىٰ عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُواۡ ظَٰهِرِينَ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহর দীনের সাহায্যকারী হও, যেমন মারইয়াম তনয় ঈসা তার শিষ্যদেরকে বলেছিলঃ আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? হাওয়ারীগণ বলেছিলঃ আমরাইতো আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বানী ইসরাঈলের একদল ঈমান আনল এবং একদল কুফরী করল। পরে আমি মু’মিনদেরকে শক্তিশালী করলাম তাদের শত্রুদের মুকাবিলায়; ফলে তারা বিজয়ী হল।
62 নং সূরা – আল-জুমু’আহ – اَلْجُمُعَة
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 11
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – জুমু’আহ
يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ٱلْمَلِكِ ٱلْقُدُّوسِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَكِيمِ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবাই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আল্লাহর, যিনি অধিপতি, পবিত্র, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
02 – জুমু’আহ
هُوَ ٱلَّذِى بَعَثَ فِى ٱلْأُمِّيِّۦنَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُواۡ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتِهِۦ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَإِن كَانُواۡ مِن قَبْلُ لَفِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
তিনিই উম্মীদের মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূল রূপে যে তাদের নিকট আবৃত্তি করে তাঁর আয়াত, তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত; ইতোপূর্বেতো তারা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
03 – জুমু’আহ
وَءَاخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُواۡ بِهِمْۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আর তাদের অন্যান্যের জন্যও, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
04 – জুমু’আহ
ذَٰلِكَ فَضْلُ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ
এটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি এটা দান করেন। আল্লাহতো মহা অনুগ্রহশীল।
05 – জুমু’আহ
مَثَلُ ٱلَّذِينَ حُمِّلُواۡ ٱلتَّوْرَىٰةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ ٱلْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًۢاۚ بِئْسَ مَثَلُ ٱلْقَوْمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গর্দভ। কত নিকৃষ্ট সেই সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। আল্লাহ ফাসিক/পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
06 – জুমু’আহ
قُلْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ هَادُوٓاۡ إِن زَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ أَوْلِيَآءُ لِلَّهِ مِن دُونِ ٱلنَّاسِ فَتَمَنَّوُاۡ ٱلْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
বলঃ হে ইয়াহুদীরা! যদি তোমরা মনে কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু, অন্য কোন মানবগোষ্ঠী নয়; তাহলে তোমরা মৃত্যু কামনা কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
07 – জুমু’আহ
وَلَا يَتَمَنَّوْنَهُۥٓ أَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِٱلظَّٰلِمِينَ
কিন্তু তারা তাদের হস্ত যা অগ্রে প্রেরণ করেছে তার কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবেনা। আল্লাহ যালিমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত।
08 – জুমু’আহ
قُلْ إِنَّ ٱلْمَوْتَ ٱلَّذِى تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُۥ مُلَٰقِيكُمْۖ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَٰلِمِ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
বলঃ তোমরা যে মৃত্যু হতে পলায়ন কর সেই মৃত্যুর সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই। অতঃপর তোমরা উপস্থিত হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহর নিকট এবং তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে যা তোমরা করতে।
09 – জুমু’আহ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا نُودِىَ لِلصَّلَوٰةِ مِن يَوْمِ ٱلْجُمُعَةِ فَٱسْعَوْاۡ إِلَىٰ ذِكْرِ ٱللَّهِ وَذَرُواۡ ٱلْبَيْعَۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মু’মিনগণ! জুমু’আর দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলদ্ধি কর।
10 – জুমু’আহ
فَإِذَا قُضِيَتِ ٱلصَّلَوٰةُ فَٱنتَشِرُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ وَٱبْتَغُواۡ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ وَٱذْكُرُواۡ ٱللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলকাম হও।
11 – জুমু’আহ
وَإِذَا رَأَوْاۡ تِجَٰرَةً أَوْ لَهْوًا ٱنفَضُّوٓاۡ إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَآئِمًاۚ قُلْ مَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌ مِّنَ ٱللَّهْوِ وَمِنَ ٱلتِّجَٰرَةِۚ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلرَّٰزِقِينَ
যখন তারা কোন ব্যবসা বা খেল-তামাশা দেখে তখন তারা তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে ওর দিকে ছুটে যায়। বলঃ আল্লাহর নিকট যা আছে তা ক্রীড়া কৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিয্ক দাতা।
63 নং সূরা – আল-মুনাফিকূন – اَلْمُنَافِقُون
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 11
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – মুনাফিকূন
إِذَا جَآءَكَ ٱلْمُنَٰفِقُونَ قَالُواۡ نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُولُ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّكَ لَرَسُولُهُۥ وَٱللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ لَكَٰذِبُونَ
মুনাফিকরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তারা বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল। আর আল্লাহ জানেন যে, তুমি নিশ্চয়ই তাঁর রাসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
02 – মুনাফিকূন
ٱتَّخَذُوٓاۡ أَيْمَٰنَهُمْ جُنَّةً فَصَدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ إِنَّهُمْ سَآءَ مَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
তারা তাদের শপথগুলিকে ঢাল রূপে ব্যবহার করে, আর তারা আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে। তারা যা করছে তা কত মন্দ!
03 – মুনাফিকূন
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ ءَامَنُواۡ ثُمَّ كَفَرُواۡ فَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ
এটা এ জন্য যে, তারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে; ফলে তাদের হৃদয় মোহর করে দেয়া হয়েছে, পরিণামে তারা বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
04 – মুনাফিকূন
وَإِذَا رَأَيْتَهُمْ تُعْجِبُكَ أَجْسَامُهُمْۖ وَإِن يَقُولُواۡ تَسْمَعْ لِقَوْلِهِمْۖ كَأَنَّهُمْ خُشُبٌ مُّسَنَّدَةٌۖ يَحْسَبُونَ كُلَّ صَيْحَةٍ عَلَيْهِمْۚ هُمُ ٱلْعَدُوُّ فَٱحْذَرْهُمْۚ قَٰتَلَهُمُ ٱللَّهُۖ أَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ
তুমি যখন তাদের দিকে তাকাও তখন তাদের দেহাকৃতি তোমার নিকট প্রীতিকর মনে হয় এবং তারা যখন কথা বলে তখন তুমি সাগ্রহে তাদের কথা শ্রবণ কর, যদিও তারা দেয়ালে ঠেকানো কাঠের স্তম্ভ সদৃশ। তারা যে কোন শোরগোলকে মনে করে তাদেরই বিরুদ্ধে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হও, আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন! বিভ্রান্ত হয়ে তারা কোথায় চলছে?
05 – মুনাফিকূন
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْاۡ يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُولُ ٱللَّهِ لَوَّوْاۡ رُءُوسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّونَ وَهُم مُّسْتَكْبِرُونَ
যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এসো, আল্লাহর রাসূল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, তখন তারা মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং তুমি তাদেরকে দেখতে পাও যে, তারা দম্ভভরে ফিরে যায়।
06 – মুনাফিকূন
سَوَآءٌ عَلَيْهِمْ أَسْتَغْفَرْتَ لَهُمْ أَمْ لَمْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ لَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ لَهُمْۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْفَٰسِقِينَ
তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা না কর, উভয়ই তাদের জন্য সমান। আল্লাহ তাদেরকে কখনও ক্ষমা করবেননা। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎ পথে পরিচালিত করেননা।
07 – মুনাফিকূন
هُمُ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ لَا تُنفِقُواۡ عَلَىٰ مَنْ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ حَتَّىٰ يَنفَضُّواۡۗ وَلِلَّهِ خَزَآئِنُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَلَٰكِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ لَا يَفْقَهُونَ
তারাই বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সহচরদের জন্য ব্যয় করনা যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর ধন ভান্ডারতো আল্লাহরই। কিন্তু মুনাফিকরা তা বুঝেনা।
08 – মুনাফিকূন
يَقُولُونَ لَئِن رَّجَعْنَآ إِلَى ٱلْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ ٱلْأَعَزُّ مِنْهَا ٱلْأَذَلَّۚ وَلِلَّهِ ٱلْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِۦ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَٰكِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ
তারা বলেঃ আমরা মাদীনায় প্রত্যাবর্তন করলে সেখান হতে প্রবল দুর্বলকে বহিস্কৃত করবেই। কিন্তু সম্মানতো আল্লাহরই, আর তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের। কিন্তু মুনাফিকরা এটা জানেনা।
09 – মুনাফিকূন
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَٰلُكُمْ وَلَآ أَوْلَٰدُكُمْ عَن ذِكْرِ ٱللَّهِۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমাদের ঐশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে উদাসীন না করে। যারা উদাসীন হবে তারাইতো ক্ষতিগ্রস্ত।
10 – মুনাফিকূন
وَأَنفِقُواۡ مِن مَّا رَزَقْنَٰكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ أَحَدَكُمُ ٱلْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَآ أَخَّرْتَنِىٓ إِلَىٰٓ أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ
আমি তোমাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তোমরা তা হতে ব্যয় করবে তোমাদের কারও মৃত্যু আসার পূর্বে; অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে আরও কিছু কালের জন্য অবকাশ দিলে আমি সাদাকাহ করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
11 – মুনাফিকূন
وَلَن يُؤَخِّرَ ٱللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَآءَ أَجَلُهَاۚ وَٱللَّهُ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ
কিন্তু নির্ধারিত কাল যখন উপস্থিত হবে, আল্লাহ তখন কেহকেও অবকাশ দিবেননা। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
64 নং সূরা – আত-তাগাবুন – اَلتَّغَابُن
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 18
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – তাগাবুন
يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۖ لَهُ ٱلْمُلْكُ وَلَهُ ٱلْحَمْدُۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবাই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, সার্বভৌমত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই; তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
02 – তাগাবুন
هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌ وَمِنكُم مُّؤْمِنٌۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেহ হয় কাফির এবং কেহ মু’মিন। তোমরা যা কর আল্লাহ সম্যক দ্রষ্টা।
03 – তাগাবুন
خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْۖ وَإِلَيْهِ ٱلْمَصِيرُ
তিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী যথাযথভাবে এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন। তোমাদের আকৃতি করেছেন সুশোভন এবং প্রত্যাবর্তনতো তাঁরই নিকট।
04 – তাগাবুন
يَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন, তোমরা যা গোপন কর ও তোমরা যা প্রকাশ কর এবং তিনি অন্তর্যামী।
05 – তাগাবুন
أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَؤُاۡ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِن قَبْلُ فَذَاقُواۡ وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
তোমাদের নিকট কি পৌঁছেনি পূর্ববর্তী কাফিরদের বৃত্তান্ত? তারা তাদের কর্মের মন্দফল আস্বাদন করেছিল এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
06 – তাগাবুন
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُۥ كَانَت تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَقَالُوٓاۡ أَبَشَرٌ يَهْدُونَنَا فَكَفَرُواۡ وَتَوَلَّواۡۚ وَّٱسْتَغْنَى ٱللَّهُۚ وَٱللَّهُ غَنِىٌّ حَمِيدٌ
তা এ জন্য যে, তাদের নিকট যখন তাদের রাসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শনসহ আসতো তখন তারা বলতঃ মানুষই কি আমাদের পথের সন্ধান দিবে? অতঃপর তারা কুফরী করল ও মুখ ফিরিয়ে নিল; কিন্তু এতে আল্লাহর কিছু আসে যায়না। আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসা।
07 – তাগাবুন
زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ أَن لَّن يُبْعَثُواۡۚ قُلْ بَلَىٰ وَرَبِّى لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٌ
কাফিরেরা দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবেনা। বলঃ নিশ্চয়ই হবে, আমার রবের শপথ! তোমরা অবশ্যই পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমরা যা করতে তোমাদের সেই সম্বন্ধে অবশ্যই অবহিত করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
08 – তাগাবুন
فَـَٔامِنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَٱلنُّورِ ٱلَّذِىٓ أَنزَلْنَاۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
অতএব তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও যে জ্যোতি আমি অবতীর্ণ করেছি তাতে বিশ্বাস স্থাপন কর। তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।
09 – তাগাবুন
يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ ٱلْجَمْعِۖ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلتَّغَابُنِۗ وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعْمَلْ صَٰلِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّـَٔاتِهِۦ وَيُدْخِلْهُ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًاۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
স্মরণ কর, যেদিন তিনি তোমাদেরকে সমবেত করবেন সমাবেশ দিনে, সেদিন হবে লাভ লোকসানের দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহয় বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তিনি তার পাপ মোচন করবেন এবং তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। এটাই মহা সাফল্য।
10 – তাগাবুন
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَكَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَآ أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ خَٰلِدِينَ فِيهَاۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
কিন্তু যারা কুফরী করে এবং আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, কত মন্দ ঐ প্রত্যাবর্তনস্থল!
11 – তাগাবুন
مَآ أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِۗ وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُۥۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিপদই আপতিত হয়না এবং যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে তিনি তার অন্তরকে সুপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।
12 – তাগাবুন
وَأَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواۡ ٱلرَّسُولَۚ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَإِنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا ٱلْبَلَٰغُ ٱلْمُبِينُ
আল্লাহর আনুগত্য কর এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমার রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে প্রচার করা।
13 – তাগাবুন
ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُؤْمِنُونَ
আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই; সুতরাং মু’মিনরা যেন আল্লাহ উপরই নির্ভর করে।
14 – তাগাবুন
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِنَّ مِنْ أَزْوَٰجِكُمْ وَأَوْلَٰدِكُمْ عَدُوًّا لَّكُمْ فَٱحْذَرُوهُمْۚ وَإِن تَعْفُواۡ وَتَصْفَحُواۡ وَتَغْفِرُواۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে কেহ কেহ তোমাদের শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থেক। তোমরা যদি তাদেরকে মার্জনা কর, তাদের দোষ ক্রটি উপেক্ষা কর এবং তাদেরকে ক্ষমা কর তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
15 – তাগাবুন
إِنَّمَآ أَمْوَٰلُكُمْ وَأَوْلَٰدُكُمْ فِتْنَةٌۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥٓ أَجْرٌ عَظِيمٌ
তোমাদের সম্পদ ও সন্তান সন্ততি তোমাদের জন্য পরীক্ষা। আল্লাহরই নিকট রয়েছে মহা পুরস্কার।
16 – তাগাবুন
فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ مَا ٱسْتَطَعْتُمْ وَٱسْمَعُواۡ وَأَطِيعُواۡ وَأَنفِقُواۡ خَيْرًا لِّأَنفُسِكُمْۗ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
তোমরা আল্লাহকে যথাযথ ভয় কর, শোন, আনুগত্য কর ও ব্যয় কর তোমাদের নিজেদেরই কল্যাণে; যারা অন্তরের কার্পণ্য হতে মুক্ত তারাই সফলকাম।
17 – তাগাবুন
إِن تُقْرِضُواۡ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَٰعِفْهُ لَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْۚ وَٱللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ
যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর তাহলে তিনি তোমাদের জন্য ওটা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী ও সহনশীল।
18 – তাগাবুন
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
65 নং সূরা – আত-তালাক – اَلطَّلَاق
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 12
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – তালাক
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَطَلِّقُوهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُواۡ ٱلْعِدَّةَۖ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ رَبَّكُمْۖ لَا تُخْرِجُوهُنَّ مِنۢ بُيُوتِهِنَّ وَلَا يَخْرُجْنَ إِلَّآ أَن يَأْتِينَ بِفَٰحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍۚ وَتِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ ٱللَّهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُۥۚ لَا تَدْرِى لَعَلَّ ٱللَّهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذَٰلِكَ أَمْرًا
হে নাবী! তোমরা যদি তোমাদের স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর তাহলে তাদেরকে তালাক দিও ইদ্দাতের প্রতি লক্ষ্য রেখে, ইদ্দাতের হিসাব রেখ এবং তোমাদের রাব্ব আল্লাহকে ভয় কর; তোমরা তাদেরকে তাদের বাসগৃহ হতে বহিস্কার করনা এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়; এগুলি আল্লাহর বিধান। যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়তো আল্লাহ এরপর কোন উপায় করে দিবেন।
02 – তালাক
فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُواۡ ذَوَىْ عَدْلٍ مِّنكُمْ وَأَقِيمُواۡ ٱلشَّهَٰدَةَ لِلَّهِۚ ذَٰلِكُمْ يُوعَظُ بِهِۦ مَن كَانَ يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْءَاخِرِۚ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجْعَل لَّهُۥ مَخْرَجًا
তাদের ইদ্দাত পূরণের কাল আসন্ন হলে তোমরা হয় যথাবিধি তাদেরকে রেখে দিবে, না হয় তাদেরকে যথাবিধি পরিত্যাগ করবে এবং তোমাদের মধ্য হতে দু’জন ন্যায় পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখবে; তোমরা আল্লাহর জন্য সঠিক সাক্ষ্য দিও। ওটা দ্বারা তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার নিস্কৃতির ব্যবস্থা করে দিবেন –
03 – তালাক
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُۚ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُۥٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ بَٰلِغُ أَمْرِهِۦۚ قَدْ جَعَلَ ٱللَّهُ لِكُلِّ شَىْءٍ قَدْرًا
আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে দান করবেন রিয্ক; যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই, আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।
04 – তালাক
وَٱلَّٰٓـِٔى يَئِسْنَ مِنَ ٱلْمَحِيضِ مِن نِّسَآئِكُمْ إِنِ ٱرْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَٰثَةُ أَشْهُرٍ وَٱلَّٰٓـِٔى لَمْ يَحِضْنَۚ وَأُوۡلَٰتُ ٱلْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّۚ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجْعَل لَّهُۥ مِنْ أَمْرِهِۦ يُسْرًا
তোমাদের যে সব স্ত্রীর ঋতুমতী হওয়ার আশা নেই তাদের ইদ্দাত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দাতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের এখনও রজশ্বালা হয়নি তাদেরও। এবং গর্ভবতী নারীদের ইদ্দাতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আল্লাহকে যে ভয় করে আল্লাহ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দিবেন।
05 – তালাক
ذَٰلِكَ أَمْرُ ٱللَّهِ أَنزَلَهُۥٓ إِلَيْكُمْۚ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّـَٔاتِهِۦ وَيُعْظِمْ لَهُۥٓ أَجْرًا
এটা আল্লাহর বিধান যা তিনি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন; আল্লাহকে যে ভয় করে তিনি তার পাপ মোচন করবেন এবং তাকে দিবেন মহা পুরস্কার।
06 – তালাক
أَسْكِنُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ سَكَنتُم مِّن وُجْدِكُمْ وَلَا تُضَآرُّوهُنَّ لِتُضَيِّقُواۡ عَلَيْهِنَّۚ وَإِن كُنَّ أُوۡلَٰتِ حَمْلٍ فَأَنفِقُواۡ عَلَيْهِنَّ حَتَّىٰ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّۚ فَإِنْ أَرْضَعْنَ لَكُمْ فَـَٔاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّۖ وَأْتَمِرُواۡ بَيْنَكُم بِمَعْرُوفٍۖ وَإِن تَعَاسَرْتُمْ فَسَتُرْضِعُ لَهُۥٓ أُخْرَىٰ
তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর তাদেরকে সেই স্থানে বাস করতে দিও; তাদেরকে উত্যক্ত করনা সংকটে ফেলার জন্য, তারা গর্ভবতী হয়ে থাকলে সন্তান প্রসব পর্যন্ত তাদের জন্য ব্যয় করবে, যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্য দান করে তাহলে তাদেরকে পারিশ্রমিক দিবে এবং সন্তানের কল্যাণ সম্পর্কে তোমরা সংগতভাবে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করবে; তোমরা যদি নিজ নিজ দাবীতে অনমনীয় হও তাহলে অন্য নারী তার পক্ষে স্তন্য দান করবে।
07 – তালাক
لِيُنفِقْ ذُو سَعَةٍ مِّن سَعَتِهِۦۖ وَمَن قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُۥ فَلْيُنفِقْ مِمَّآ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُۚ لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَآ ءَاتَىٰهَاۚ سَيَجْعَلُ ٱللَّهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُسْرًا
বিত্তবান নিজ সামর্থ অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে, আল্লাহ যা তাকে দান করেছেন তা হতে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন তদপেক্ষা গুরুতর বোঝা তিনি তার উপর চাপিয়ে দেননা। আল্লাহ কষ্টের পর দিবেন স্বস্তি।
08 – তালাক
وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ عَتَتْ عَنْ أَمْرِ رَبِّهَا وَرُسُلِهِۦ فَحَاسَبْنَٰهَا حِسَابًا شَدِيدًا وَعَذَّبْنَٰهَا عَذَابًا نُّكْرًا
কত জনপদ তাদের রাব্ব ও তাঁর রাসূলদের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল দম্ভভরে। ফলে আমি তাদের নিকট হতে কঠোর হিসাব নিয়েছিলাম এবং তাদেরকে দিয়েছিলাম কঠিন শাস্তি।
09 – তালাক
فَذَاقَتْ وَبَالَ أَمْرِهَا وَكَانَ عَٰقِبَةُ أَمْرِهَا خُسْرًا
অতঃপর তারা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করল; ক্ষতিই ছিল তাদের কর্মের পরিণাম।
10 – তালাক
أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُمْ عَذَابًا شَدِيدًاۖ فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ يَٰٓأُوۡلِى ٱلْأَلْبَٰبِ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡۚ قَدْ أَنزَلَ ٱللَّهُ إِلَيْكُمْ ذِكْرًا
আল্লাহ তাদের জন্য কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ, যারা ঈমান এনেছ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন উপদেশ।
11 – তালাক
رَّسُولًا يَتْلُواۡ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ مُبَيِّنَٰتٍ لِّيُخْرِجَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِۚ وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعْمَلْ صَٰلِحًا يُدْخِلْهُ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًاۖ قَدْ أَحْسَنَ ٱللَّهُ لَهُۥ رِزْقًا
প্রেরণ করেছেন এমন এক রাসূল যে তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করে, যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনার জন্য। যে কেহ আল্লাহকে বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাকে উত্তম জীবনোপকরণ দিবেন।
12 – তালাক
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ وَمِنَ ٱلْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ ٱلْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ ٱللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًۢا
আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণ। ওগুলির মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ; ফলে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
66 নং সূরা – আত-তাহরীম – اَلتَّحْرِيم
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 12
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – তাহরীম
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَآ أَحَلَّ ٱللَّهُ لَكَۖ تَبْتَغِى مَرْضَاتَ أَزْوَٰجِكَۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে নাবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন তুমি তা নিষিদ্ধ করছ কেন? তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাচ্ছ? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
02 – তাহরীম
قَدْ فَرَضَ ٱللَّهُ لَكُمْ تَحِلَّةَ أَيْمَٰنِكُمْۚ وَٱللَّهُ مَوْلَىٰكُمْۖ وَهُوَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْحَكِيمُ
আল্লাহ তোমাদের শপথ হতে মুক্তি লাভের ব্যবস্থা করেছেন, আল্লাহ তোমাদের সহায়; তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
03 – তাহরীম
وَإِذْ أَسَرَّ ٱلنَّبِىُّ إِلَىٰ بَعْضِ أَزْوَٰجِهِۦ حَدِيثًا فَلَمَّا نَبَّأَتْ بِهِۦ وَأَظْهَرَهُ ٱللَّهُ عَلَيْهِ عَرَّفَ بَعْضَهُۥ وَأَعْرَضَ عَنۢ بَعْضٍۖ فَلَمَّا نَبَّأَهَا بِهِۦ قَالَتْ مَنْ أَنۢبَأَكَ هَٰذَاۖ قَالَ نَبَّأَنِىَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْخَبِيرُ
যখন নাবী তার স্ত্রীদের একজনকে গোপনে কিছু বলেছিল, অতঃপর যখন সে তা অন্যকে বলে দিয়েছিল এবং আল্লাহ নাবীকে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন তখন নাবী এই বিষয়ে কিছু ব্যক্ত করল এবং কিছু অব্যক্ত রাখল। যখন নাবী তা তার সেই স্ত্রীকে জানালো তখন সে বললঃ কে আপনাকে এটা অবহিত করল? নাবী বললঃ আমাকে অবহিত করেছেন তিনি যিনি সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।
04 – তাহরীম
إِن تَتُوبَآ إِلَى ٱللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَاۖ وَإِن تَظَٰهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ هُوَ مَوْلَىٰهُ وَجِبْرِيلُ وَصَٰلِحُ ٱلْمُؤْمِنِينَۖ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ بَعْدَ ذَٰلِكَ ظَهِيرٌ
যদি তোমরা উভয়ে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর যেহেতু তোমাদের হৃদয় ঝুকে পড়েছে (তাহলে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন)। কিন্তু তোমরা যদি নাবীর বিরুদ্ধে একে অপরের পোষকতা কর তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহই তার বন্ধু এবং জিবরাঈল ও সৎ আমলকারী মু’মিনগণও; উপরন্ত অন্যান্য মালাইকা/ফেরেশতারাও তার সাহায্যকারী।
05 – তাহরীম
عَسَىٰ رَبُّهُۥٓ إِن طَلَّقَكُنَّ أَن يُبْدِلَهُۥٓ أَزْوَٰجًا خَيْرًا مِّنكُنَّ مُسْلِمَٰتٍ مُّؤْمِنَٰتٍ قَٰنِتَٰتٍ تَٰٓئِبَٰتٍ عَٰبِدَٰتٍ سَٰٓئِحَٰتٍ ثَيِّبَٰتٍ وَأَبْكَارًا
যদি নাবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করে তাহলে তার রাব্ব সম্ভবতঃ তাকে দিবেন তোমাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর স্ত্রী যারা হবে আত্মসমর্পনকারিণী, বিশ্বাসিনী, আনুগত্যকারিনী, তাওবাহকারিনী, ইবাদাতকারিনী, সিয়াম পালনকারিণী, অকুমারী এবং কুমারী।
06 – তাহরীম
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ قُوٓاۡ أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَٰٓئِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে রক্ষা কর অগুন হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম হৃদয় কঠোর স্বভাবের মালাইকা (ফেরেশতা), যারা অমান্য করেনা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন তা এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তা’ই করে।
07 – তাহরীম
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَا تَعْتَذِرُواۡ ٱلْيَوْمَۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
হে কাফিরেরা! আজ তোমরা দোষ স্খলনের চেষ্টা করনা। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে।
08 – তাহরীম
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ تُوبُوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّـَٔاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ يَوْمَ لَا يُخْزِى ٱللَّهُ ٱلنَّبِىَّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مَعَهُۥۖ نُورُهُمْ يَسْعَىٰ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَٰنِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَٱغْفِرْ لَنَآۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, বিশুদ্ধ তাওবাহ; সম্ভবতঃ তোমাদের রাব্ব তোমাদের মন্দ কাজগুলি মোচন করে দিবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেই দিন নাবী এবং তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদেরকে আল্লাহ অপদস্ত করবেননা। তাদের জ্যোতি তাদের সম্মুখে এবং দক্ষিণ পার্শ্বে ধাবিত হবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণতা দান করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান।
09 – তাহরীম
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ جَٰهِدِ ٱلْكُفَّارَ وَٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱغْلُظْ عَلَيْهِمْۚ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
হে নাবী! কাফির ও মুনাফিকের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের প্রতি কঠোর হও। তাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম, ওটা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
10 – তাহরীম
ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ كَفَرُواۡ ٱمْرَأَتَ نُوحٍ وَٱمْرَأَتَ لُوطٍۖ كَانَتَا تَحْتَ عَبْدَيْنِ مِنْ عِبَادِنَا صَٰلِحَيْنِ فَخَانَتَاهُمَا فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمَا مِنَ ٱللَّهِ شَيْـًٔا وَقِيلَ ٱدْخُلَا ٱلنَّارَ مَعَ ٱلدَّٰخِلِينَ
আল্লাহ কাফিরদের জন্য নূহ ও লূতের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত উপস্থিত করছেন; তারা ছিল আমার বান্দাদের মধ্যে দুই সংকল্প পরায়ণ বান্দার অধীন। কিন্তু তারা তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, ফলে নূহ ও লূত তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারলনা এবং তাদেরকে বলা হলঃ জাহান্নামে প্রবেশকারীদের সাথে তোমরাও তাতে প্রবেশ কর।
11 – তাহরীম
وَضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱمْرَأَتَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ٱبْنِ لِى عِندَكَ بَيْتًا فِى ٱلْجَنَّةِ وَنَجِّنِى مِن فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِۦ وَنَجِّنِى مِنَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
আল্লাহ বিশ্বাসীদের জন্য উপস্থিত করেছেন ফির‘আউন পত্নীর দৃষ্টান্ত, যে প্রার্থনা করেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আপনার সন্নিধানে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করুন এবং আমাকে উদ্ধার করুন ফির‘আউন ও তার দুস্কৃতি হতে এবং আমাকে উদ্ধার করুন যালিম সম্প্রদায় হতে।
12 – তাহরীম
وَمَرْيَمَ ٱبْنَتَ عِمْرَٰنَ ٱلَّتِىٓ أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهِ مِن رُّوحِنَا وَصَدَّقَتْ بِكَلِمَٰتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِۦ وَكَانَتْ مِنَ ٱلْقَٰنِتِينَ
আরও দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন ইমরান তনয়া মারইয়ামের, যে তার সতীত্ব রক্ষা করেছিল, ফলে আমি তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার রবের বাণী ও তাঁর কিতাবসমূহ সত্য বলে গ্রহণ করেছিল; সে ছিল অনুগতদের একজন।
67 নং সূরা – আল-মুলক্ – اَلْمُلْك
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 30
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – মুলক্
تَبَٰرَكَ ٱلَّذِى بِيَدِهِ ٱلْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
মহা মহিমান্বিত তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব যাঁর করায়ত্ব; তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান –
02 – মুলক্
ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْمَوْتَ وَٱلْحَيَوٰةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًاۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْغَفُورُ
যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য – কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
03 – মুলক্
ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَٰوَٰتٍ طِبَاقًاۖ مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَٰنِ مِن تَفَٰوُتٍۖ فَٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍ
তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত দেখতে পাবেনা; আবার দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?
04 – মুলক্
ثُمَّ ٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ ٱلْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ
অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
05 – মুলক্
وَلَقَدْ زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَجَعَلْنَٰهَا رُجُومًا لِّلشَّيَٰطِينِۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ ٱلسَّعِيرِ
আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং ওগুলিকে করেছি শাইতানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।
06 – মুলক্
وَلِلَّذِينَ كَفَرُواۡ بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
যারা তাদের রাব্বকে অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি, ওটা কত মন্দ প্রত্যাবর্তন স্থল!
07 – মুলক্
إِذَآ أُلْقُواۡ فِيهَا سَمِعُواۡ لَهَا شَهِيقًا وَهِىَ تَفُورُ
যখন তন্মধ্যে নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা উহার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে, আর ওটা হবে উদ্বেলিত।
08 – মুলক্
تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ ٱلْغَيْظِۖ كُلَّمَآ أُلْقِىَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَآ أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
রোষে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবেঃ তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি?
09 – মুলক্
قَالُواۡ بَلَىٰ قَدْ جَآءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ ٱللَّهُ مِن شَىْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِى ضَلَٰلٍ كَبِيرٍ
তারা বলবেঃ অবশ্যই আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল, আমরা তাকে মিথ্যাবাদী গণ্য করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরাতো মহা বিভ্রান্তিতে রয়েছ।
10 – মুলক্
وَقَالُواۡ لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِىٓ أَصْحَٰبِ ٱلسَّعِيرِ
এবং তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জাহান্নামবাসী হতামনা।
11 – মুলক্
فَٱعْتَرَفُواۡ بِذَنۢبِهِمْ فَسُحْقًا لِّأَصْحَٰبِ ٱلسَّعِيرِ
তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অভিশাপ জাহান্নামীদের জন্য!
12 – মুলক্
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِٱلْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
নিশ্চয়ই যারা তাদের রাব্বকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
13 – মুলক্
وَأَسِرُّواۡ قَوْلَكُمْ أَوِ ٱجْهَرُواۡ بِهِۦٓۖ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
তোমরা তোমাদের কথা গোপনেই বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনিতো অন্তর্যামী।
14 – মুলক্
أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ ٱللَّطِيفُ ٱلْخَبِيرُ
যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেননা ? তিনি সূক্ষ্ণদর্শী, সম্যক অবগত।
15 – মুলক্
هُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ ذَلُولًا فَٱمْشُواۡ فِى مَنَاكِبِهَا وَكُلُواۡ مِن رِّزْقِهِۦۖ وَإِلَيْهِ ٱلنُّشُورُ
তিনিইতো তোমাদের জন্য ভূমিকে সুগম করে দিয়েছেন; অতএব তোমরা দিক-দিগন্তে বিচরণ কর এবং তাঁর প্রদত্ত জীবনোপকরণ হতে আহার্য গ্রহণ কর; পুনরুত্থানতো তাঁরই নিকট।
16 – মুলক্
ءَأَمِنتُم مَّن فِى ٱلسَّمَآءِ أَن يَخْسِفَ بِكُمُ ٱلْأَرْضَ فَإِذَا هِىَ تَمُورُ
তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে ধ্বসিয়ে দিবেননা, আর ওটা আকস্মিকভাবে থর থর করে কাঁপতে থাকবে?
17 – মুলক্
أَمْ أَمِنتُم مَّن فِى ٱلسَّمَآءِ أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًاۖ فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
অথবা তোমরা নিশ্চিত আছ যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর কংকরবর্ষী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করবেননা? তখন তোমরা জানতে পারবে কি রূপ ছিল আমার সতর্ক বাণী!
18 – মুলক্
وَلَقَدْ كَذَّبَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
এবং এদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল; ফলে কি রূপ হয়েছিল আমার শাস্তি!
19 – মুলক্
أَوَلَمْ يَرَوْاۡ إِلَى ٱلطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَٰٓفَّٰتٍ وَيَقْبِضْنَۚ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا ٱلرَّحْمَٰنُۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَىْءٍۭ بَصِيرٌ
তারা কি লক্ষ্য করেনা তাদের উর্ধ্বদেশে বিহঙ্গকূলের প্রতি, যারা পক্ষ বিস্তার করে ও সংকুচিত করে? দয়াময় আল্লাহই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।
20 – মুলক্
أَمَّنْ هَٰذَا ٱلَّذِى هُوَ جُندٌ لَّكُمْ يَنصُرُكُم مِّن دُونِ ٱلرَّحْمَٰنِۚ إِنِ ٱلْكَٰفِرُونَ إِلَّا فِى غُرُورٍ
দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের এমন কোন সৈন্যবাহিনী আছে কি যারা তোমাদের সাহায্য করবে? কাফিরেরা তো বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
21 – মুলক্
أَمَّنْ هَٰذَا ٱلَّذِى يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُۥۚ بَل لَّجُّواۡ فِى عُتُوٍّ وَنُفُورٍ
এমন কে আছে, যে তোমাদের জীবনোপকরণ দান করবে, তিনি যদি জীবনোপকরণ বন্ধ করে দেন? বস্তুতঃ তারা অবাধ্যতা ও সত্য বিমুখতায় অবিচল রয়েছে।
22 – মুলক্
أَفَمَن يَمْشِى مُكِبًّا عَلَىٰ وَجْهِهِۦٓ أَهْدَىٰٓ أَمَّن يَمْشِى سَوِيًّا عَلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
যে ব্যক্তি মুখে ভর দিয়ে ঝুকে চলে সে কি ঠিক পথে চলে, না কি সেই ব্যক্তি যে সরল পথে চলে?
23 – মুলক্
قُلْ هُوَ ٱلَّذِىٓ أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمْعَ وَٱلْأَبْصَٰرَ وَٱلْأَفْـِٔدَةَۖ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ
বলঃ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক।
24 – মুলক্
قُلْ هُوَ ٱلَّذِى ذَرَأَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
বলঃ তিনিই পৃথিবীতে তোমাদেরকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাঁরই নিকট তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।
25 – মুলক্
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا ٱلْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
তারা বলেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, এই প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হবে?
26 – মুলক্
قُلْ إِنَّمَا ٱلْعِلْمُ عِندَ ٱللَّهِ وَإِنَّمَآ أَنَا۠ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বলঃ এর জ্ঞান শুধু আল্লাহরই নিকট আছে, আমিতো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
27 – মুলক্
فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيٓـَٔتْ وُجُوهُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَقِيلَ هَٰذَا ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تَدَّعُونَ
যখন ওটা আসন্ন দেখবে তখন কাফিরদের মুখমন্ডল ম্লান হয়ে যাবে এবং তাদেরকে বলা হবেঃ এটাইতো তোমরা চাচ্ছিলে।
28 – মুলক্
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِىَ ٱللَّهُ وَمَن مَّعِىَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَن يُجِيرُ ٱلْكَٰفِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি – যদি আল্লাহ আমাকে ও আমার সঙ্গীদেরকে ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন তাতে কাফিরদের কি? তাদেরকে কে রক্ষা করবে বেদনাদায়ক শাস্তি হতে?
29 – মুলক্
قُلْ هُوَ ٱلرَّحْمَٰنُ ءَامَنَّا بِهِۦ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَاۖ فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
বলঃ তিনি দয়াময়, আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি ও তাঁরই উপর নির্ভর করি, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
30 – মুলক্
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَآؤُكُمْ غَوْرًا فَمَن يَأْتِيكُم بِمَآءٍ مَّعِينٍۭ
বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি, কোনো এক ভোরে যদি পানি ভূ-গর্ভে তোমাদের নাগালের বাইরে চলে যায় তাহলে কে তোমাদেরকে এনে দিবে প্রবাহমান পানি?