Web Page 5: Kitabut Tahajjud-19 to Kitabul Zanaja-23
وَقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ: {وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ} [الإسراء: ۷۹]
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “আর আপনি রাতের এক অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করুন, যা আপনার জন্য অতিরিক্ত কর্তব্য”। [সূরা আ-ইসরা ১৭:৭৯]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۰ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ أَبِي مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَتَهَجَّدُ قَالَ: ” اللَّهُمَّ لَكَ الحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الحَمْدُ أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الحَمْدُ أَنْتَ مَلِكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، وَلَكَ الحَمْدُ أَنْتَ الحَقُّ وَوَعْدُكَ الحَقُّ، وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ، وَقَوْلُكَ حَقٌّ، وَالجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ، وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَقٌّ، وَالسَّاعَةُ حَقٌّ، اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ المُقَدِّمُ، وَأَنْتَ المُؤَخِّرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ – أَوْ: لَا إِلَهَ غَيْرُكَ – ” قَالَ سُفْيَانُ: وَزَادَ عَبْدُ الكَرِيمِ أَبُو أُمَيَّةَ: «وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ» ، قَالَ سُفْيَانُ: قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ أَبِي مُسْلِمٍ: سَمِعَهُ مِنْ طَاوُسٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলাইমান ইব্নু আবূ মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঊসি থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলেন, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে তাহাজ্জুদের উদ্দেশে যখন দাঁড়াতেন, তখন দু’আ পড়তেন- “হে আল্লাহ্! আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, আপনি আসমান যমীন ও এ দু’য়ের মাঝে বিদ্যমান সব কিছুর নিয়ামক এবং আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা। আসমান যমীন এবং তাদের মাঝে বিদ্যমান সব কিছুর কর্তৃত্ব আপনারই। আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা। আপনি আসমান যমীনের নূর। আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা। আপনি আকাশ ও যমীনের মালিক, আপনারই জন্য সমস্ত প্রশংসা। আপনিই চির সত্য। আপনার ওয়াদা চির সত্য; আপনার সাক্ষাৎ সত্য; আপনার বাণী সত্য; জান্নাত সত্য; জাহান্নাম সত্য; নবীগণ সত্য; মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্য, কিয়ামত সত্য। ইয়া আল্লাহ্! আপনার নিকটই আমি আত্মসমর্পণ করলাম; আপনার প্রতি ঈমান আনলাম; আপনার উপরেই তাওয়াক্কুল করলাম, আপনার দিকেই রুজূ’ করলাম; আপনার (সন্তুষ্টির জন্যই) শত্রুতায় লিপ্ত হলাম, আপনাকেই বিচারক মেনে নিলাম। তাই আপনি আমার পূর্বাপর ও প্রকাশ্য গোপন সব অপরাধ ক্ষমা করুন। আপনিই অগ্র পশ্চাতের মালিক। আপনি ব্যতীত সত্য প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই, অথবা (অপর বর্ণনায়) আপনি ব্যতীত প্রকৃত কোন সত্য মা’বূদ নেই। সুফিয়ান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, আবূ উমাইয়্যাহ রহমাহুল্লাহ তাঁর বর্ণনায় (وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ) অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। সুফিয়ান বললেন- সুলায়মান ইব্নু আবূ মুসলিম বলল- তিনি তাঊস থেকে শুনেছেন, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۱ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، ح وَحَدَّثَنِي مَحْمُودٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ الرَّجُلُ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا رَأَى رُؤْيَا قَصَّهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَمَنَّيْتُ أَنْ أَرَى رُؤْيَا، فَأَقُصَّهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكُنْتُ غُلَامًا شَابًّا، وَكُنْتُ أَنَامُ فِي المَسْجِدِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَأَيْتُ فِي النَّوْمِ كَأَنَّ مَلَكَيْنِ أَخَذَانِي، فَذَهَبَا بِي إِلَى النَّارِ، فَإِذَا هِيَ مَطْوِيَّةٌ كَطَيِّ البِئْرِ وَإِذَا لَهَا قَرْنَانِ وَإِذَا فِيهَا أُنَاسٌ قَدْ عَرَفْتُهُمْ، فَجَعَلْتُ أَقُولُ: أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ، قَالَ: فَلَقِيَنَا مَلَكٌ آخَرُ فَقَالَ لِي: لَمْ تُرَعْ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহাম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘আ্মার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, (অন্য সূত্রে) মুহা’ম্মাদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুর রাজ্জাক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘আ্মার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সালিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবিতকালে কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখলে তা আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে বর্ণনা করত। এতে আমার মনে আকাঙ্ক্ষা জাগলো যে, আমি কোন স্বপ্ন দেখলে তা আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বর্ণনা করব। তখন আমি যুবক ছিলাম। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময়ে আমি মসজিদে ঘুমাতাম। আমি স্বপ্নে দেখলাম, যেন দু’জন ফেরেশ্তা আমাকে ধরে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলেছেন। তা যেন কুপের পাড় বাঁধানোর ন্যায় পাড় বাঁধানো। তাতে দু’টি খুঁটি রয়েছে এবং এর মধ্যে রয়েছে এমন কতক লোক, যাদের আমি চিনতে পারলাম। তখন আমি বলতে লাগলাম, আমি জাহান্নাম হতে আল্লাহ্র নিকট পানাহ চাই। তিনি বলেন, তখন অন্য একজন ফেরেশ্তা আমাদের সঙ্গে মিলিত হলেন। তিনি আমাকে বললেন, ভয় পেয়ো না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۲ – فَقَصَصْتُهَا عَلَى حَفْصَةَ فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ، لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ» فَكَانَ بَعْدُ لَا يَنَامُ مِنَ اللَّيْلِ إِلَّا قَلِيلًا
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) সালিম রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর পিতা থেকে, আমি এ স্বপ্ন (আমার বোন উম্মুল মু’মিনীন) হাফ্সা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট বর্ণনা করলাম। অতঃপর হাফ্সা রাজিআল্লাহু ‘আনহা তা আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ ‘আবদুল্লাহ্ কতই ভাল লোক! যদি রাত জেগে সে সালাত (তাহাজ্জুদ) আদায় করত! তারপর হতে ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু খুব অল্প সময়ই ঘুমাতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۳ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَخْبَرَتْهُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، كَانَتْ تِلْكَ صَلَاتَهُ يَسْجُدُ السَّجْدَةَ مِنْ ذَلِكَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ أَحَدُكُمْ خَمْسِينَ آيَةً، قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ، وَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الفَجْرِ، ثُمَّ يَضْطَجِعُ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ المُنَادِي لِلصَّلَاةِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ্ আমাকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তাহাজ্জুদে) এগার রাক’আত সালাত আদায় করতেন এবং তা ছিল তাঁর (স্বাভাবিক) সালাত। সে সালাতে তিনি এক একটি সিজদা এত পরিমাণ করতেন যে, তোমাদের কেউ (সিজদা হতে) তাঁর মাথা তোলার পূর্বে পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারত। আর ফজরের (ফরজ) সালাতের পূর্বে তিনি দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। অতঃপর তিনি ডান কাতে শুতেন যতক্ষণ না সালাতের জন্য তাঁর কাছে মুআয্যিন আসত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৬২৬] [আ.প্র. ১০৫২, ই.ফা. ১০৫৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۴ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ: سَمِعْتُ جُنْدَبًا، يَقُولُ: «اشْتَكَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَقُمْ لَيْلَةً أَوْ لَيْلَتَيْنِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আসওয়াদ থেকে, তিনি বললেন: আমি জুনদাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একবার) অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে এক রাত বা দু’ রাত তিনি (তাহাজ্জুদের জন্য) উঠেননি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ جُنْدَبِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «احْتَبَسَ جِبْرِيلُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»، فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْ قُرَيْشٍ: أَبْطَأَ عَلَيْهِ شَيْطَانُهُ، فَنَزَلَتْ: {وَالضُّحَى وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَى، مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى} [الضحى: 2]
মুহা’ম্মাদ ইব্নু কাছির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আসওয়াদ ইব্ন ক্বায়স থেকে, তিনি জুনদাব ইব্নু ‘আবদুল্লাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, একবার সাময়িকভাবে জিব্রাঈল ‘আলাইহিস সাল্লাম নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট হাযিরা হতে বিরত থাকেন। এতে জনৈকা কুরায়শ নারী বলল, তার শয়তানটি তাঁর নিকট আসতে দেরী করছে। তখন অবতীর্ণ হল- “শপথ পূর্বাহ্ণের ও রজনীর! যখন তা হয় নিঝুম। আপনার প্রতিপালক আপনাকে পরিত্যাগ করেননি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি”- (সূরা ওয়ায্যুহা ৯৩/১-৩)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَطَرَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ وَعَلِيًّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ لَيْلَةً لِلصَّلَاةِ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাজ্জুদ সালাতে উৎসাহ দানের জন্য একরাতে ফাতিমা ও আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর ঘরে গিয়েছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۶ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ هِنْدٍ بِنْتِ الحَارِثِ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَيْقَظَ لَيْلَةً، فَقَالَ: «سُبْحَانَ اللَّهِ مَاذَا أُنْزِلَ اللَّيْلَةَ مِنَ الفِتْنَةِ، مَاذَا أُنْزِلَ مِنَ الخَزَائِنِ، مَنْ يُوقِظُ صَوَاحِبَ الحُجُرَاتِ؟ يَا رُبَّ كَاسِيَةٍ فِي الدُّنْيَا عَارِيَةٍ فِي الآخِرَةِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি হিন্দ বিন্তি হা’রিছ থেকে, তিনি উম্মু সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একরাতে ঘুম হতে জেগে বললেনঃ সুবহানাল্লাহ্! আজ রাতে কত না ফিত্না নাযিল করা হল! আজ রাতে কতই না (রহমাতের) ভাণ্ডার নাযিল করা হল! কে জাগিয়ে দিবে বাড়িগুলোর লোকজনকে? ওহে! শোন, দুনিয়ার অনেক পোশাক পরিহিতা আখিরাতে উলঙ্গ হয়ে যাবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۷ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَرَقَهُ وَفَاطِمَةَ بِنْتَ النَّبِيِّ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَيْلَةً، فَقَالَ: «أَلَا تُصَلِّيَانِ؟» فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنْفُسُنَا بِيَدِ اللَّهِ، فَإِذَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَنَا بَعَثَنَا، فَانْصَرَفَ حِينَ قُلْنَا ذَلِكَ وَلَمْ يَرْجِعْ إِلَيَّ شَيْئًا، ثُمَّ سَمِعْتُهُ وَهُوَ مُوَلٍّ يَضْرِبُ فَخِذَهُ، وَهُوَ يَقُولُ: {وَكَانَ الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَيْءٍ جَدَلًا} [الكهف: ۵۴]
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘আলী ইব্নু হু’সায়ন আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন হু’সায়ন ইব্ন আলী থেকে, তিনি ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক রাতে তাঁর কন্যা ফাতিমা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট এসে বললেনঃ তোমরা কি সালাত আদায় করছ না? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের আত্মাগুলো তো আল্লাহ্ তা’আলার হাতে রয়েছে। তিনি যখন আমাদের জাগাতে ইচ্ছা করবেন, জাগিয়ে দিবেন। আমরা যখন একথা বললাম, তখন তিনি চলে গেলেন। আমার কথার কোন জবাব দিলেন না। পরে আমি শুনতে পেলাম যে, তিনি ফিরে যেতে যেতে আপন উরুতে করাঘাত করছিলেন এবং কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন- “মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়”- (সূরা আল-কাহ্ফ ১৮:৫৪)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۸ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَدَعُ العَمَلَ، وَهُوَ يُحِبُّ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ خَشْيَةَ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ النَّاسُ، فَيُفْرَضَ عَلَيْهِمْ، وَمَا سَبَّحَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُبْحَةَ الضُّحَى قَطُّ وَإِنِّي لَأُسَبِّحُهَا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে ‘আমল করা পছন্দ করতেন, সে ‘আমল কোন কোন সময় এ আশঙ্কায় ছেড়েও দিতেন যে, সে ‘আমল লোকেরা করতে থাকবে, ফলে তাদের উপর তা ফরজ হয়ে যাবে। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহা সালাত (নিয়মিত) আদায় করেননি।১ আমি সে সালাত আদায় করি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা তাঁর জানা অনুযায়ী এ কথা বলেছেন। উম্মু হানী রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর রিওয়ায়াত হতে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাশত্ আদায় প্রমাণিত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۲۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي المَسْجِدِ، فَصَلَّى بِصَلَاتِهِ نَاسٌ، ثُمَّ صَلَّى مِنَ القَابِلَةِ، فَكَثُرَ النَّاسُ، ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ، فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ: «قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلَّا أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন শিহাব থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়র থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক রাতে মসজিদে সালাত আদায় করছিলেন, কিছু লোক তাঁর সাথে সালাত আদায় করল। পরবর্তী রাতেও তিনি সালাত আদায় করলেন এবং লোক আরো বেড়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে লোকজন সমবেত হলেন, কিন্তু আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বের হলেন না। সকাল হলে তিনি বললেনঃ তোমরা যা করেছ আমি লক্ষ্য করেছি। তোমাদের নিকট বেরিয়ে আসার ব্যাপারে এ আশঙ্কাই আমাকে বাধা দিয়েছে যে, তোমাদের উপর তা ফরজ হয়ে যাবে। এটা ছিল রমযান মাসের ঘটনা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «كَانَ يَقُومُ حَتَّى تَفَطَّرَ قَدَمَاهُ» وَالفُطُورُ: الشُّقُوقُ {انْفَطَرَتْ} [الانفطار: ۱]: انْشَقَّتْ “
আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেছেন, এমনকি তাঁর পদযুগল ফেটে যেতো। (কুরআনের শব্দ) الفُطُورٌ অর্থ ফেটে যাওয়া, إِنْفَطَرَت ফেটে গেল।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۰ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، عَنْ زِيَادٍ، قَالَ: سَمِعْتُ المُغِيرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: إِنْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَقُومُ لِيُصَلِّيَ حَتَّى تَرِمُ قَدَمَاهُ – أَوْ سَاقَاهُ – فَيُقَالُ لَهُ فَيَقُولُ: «أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মিস‘আর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যিয়াদ থেকে, তিনি বললেন: আমি মুগীরা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাত্রি জাগরণ করতেন অথবা রাবী বলেছেন, সালাত আদায় করতেন; এমনকি তাঁর পদযুগল অথবা তাঁর দু’ পায়ের গোছা ফুলে যেত। তখন এ ব্যাপারে তাঁকে বলা হলে তিনি বলতেন, আমি কি একজন শুকরিয়া আদায়কারী বান্দা হব না?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۱ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ أَوْسٍ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ العَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «أَحَبُّ الصَّلَاةِ إِلَى اللَّهِ صَلَاةُ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَأَحَبُّ الصِّيَامِ إِلَى اللَّهِ صِيَامُ دَاوُدَ، وَكَانَ يَنَامُ نِصْفَ اللَّيْلِ وَيَقُومُ ثُلُثَهُ، وَيَنَامُ سُدُسَهُ، وَيَصُومُ يَوْمًا، وَيُفْطِرُ يَوْمًا»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফিয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আমর ইব্নু দীনার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আমর ইব্ন আওস থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আমর ইব্নুল ‘আস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বলেছেনঃ আল্লাহ্র নিকট সর্বাধিক প্রিয় সালাত হল দাঊদ ‘আলাইহিস সাল্লাম-এর সালাত। আর আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সর্বাধিক প্রিয় সিয়াম হল দাঊদ ‘আলাইহিস সাল্লাম-এর সিয়াম। তিনি [দাঊদ ‘আলাইহিস সাল্লাম] অর্ধরাত পর্যন্ত ঘুমাতেন, এক তৃতীয়াংশ তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতেন এবং রাতের এক ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। তিনি একদিন সিয়াম পালন করতেন, একদিন সাওমবিহীন অবস্থায় থাকতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۲ – حَدَّثَنِي عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَشْعَثَ، سَمِعْتُ أَبِي، قَالَ: سَمِعْتُ مَسْرُوقًا، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَيُّ العَمَلِ كَانَ أَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: «الدَّائِمُ»، قُلْتُ: مَتَى كَانَ يَقُومُ؟ قَالَتْ: «كَانَ يَقُومُ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ» حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَشْعَثِ، قَالَ: «إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ قَامَ فَصَلَّى»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন শু‘উ্বাহ থেকে, তিনি আশ্‘আছ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে শুনলেন, তিনি বললেন: আমি মাসরূক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট কোন্ ‘আমলটি সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল? তিনি বললেন, নিয়মিত ‘আমল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কখন তাহাজ্জুদের জন্য উঠতেন? তিনি বললেন, যখন মোরগের ডাক শুনতে পেতেন। আশ’আস রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর বর্ণনায় বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মোরগের ডাক শুনে উঠতেন এবং সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۳ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، قَالَ: ذَكَرَ أَبِي، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «مَا أَلْفَاهُ السَّحَرُ عِنْدِي إِلَّا نَائِمًا» تَعْنِي النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
মূসা ইব্নু ইসমাঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম ইব্নু সা‘ইদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, তিনি আমার নিকট ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায়ই সাহ্রীর সময় হত। অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۴ – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا رَوْحٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، «أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَزَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ تَسَحَّرَا، فَلَمَّا فَرَغَا مِنْ سَحُورِهِمَا، قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الصَّلَاةِ، فَصَلَّى»، فَقُلْنَا لِأَنَسٍ: كَمْ كَانَ بَيْنَ فَرَاغِهِمَا مِنْ سَحُورِهِمَا وَدُخُولِهِمَا فِي الصَّلَاةِ؟ قَالَ: كَقَدْرِ مَا يَقْرَأُ الرَّجُلُ خَمْسِينَ آيَةً
ইয়া‘কুব ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাওহ্’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু ‘আরূবাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ্ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং যায়দ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু সাহ্রী খেলেন। যখন তারা দু’জন সাহ্রী শেষ করলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন। [ক্বাতাদাহ রহমাহুল্লাহ বলেন] আমরা আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে জিজ্ঞেস করলাম, তাঁদের সাহ্রী সমাপ্ত করা ও (ফজরের) সালাত শুরু করার মধ্যে কি পরিমাণ ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, কেউ পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারে এতটা সময়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۵ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً، فَلَمْ يَزَلْ قَائِمًا حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سَوْءٍ»، قُلْنَا: وَمَا هَمَمْتَ؟ قَالَ: هَمَمْتُ أَنْ أَقْعُدَ وَأَذَرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আমাশ থেকে, তিনি আবূ ওয়াইল থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, রাতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। তিনি এত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন যে, আমি একটি মন্দ কাজের ইচ্ছা করেছিলাম। আবূ ওয়াইল রহমাহুল্লাহ বলেন আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কী ইচ্ছে করেছিলেন? তিনি বললেন, ইচ্ছে করেছিলাম, বসে পড়ি এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইক্তিদা ছেড়ে দেই।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۶ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا قَامَ لِلتَّهَجُّدِ مِنَ اللَّيْلِ يَشُوصُ فَاهُ بِالسِّوَاكِ»
হাফ্স ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হুস্বায়ন থেকে, তিনি আবূ ওয়াইল থেকে, তিনি হুযাইফা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলায় যখন তাহাজ্জুদ সালাতের জন্য উঠতেন তখন মিস্ওয়াক দ্বারা তাঁর মুখ পরিষ্কার করে নিতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۷ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: إِنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ صَلَاةُ اللَّيْلِ؟ قَالَ: «مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ، فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সু‘আয়্ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, একজন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! রাতের বেলা সালাতের পদ্ধতি কি? তিনি বললেনঃ দু’ দু’ রাক’আত করে। আর ফজর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলে এক রাক’আত মিলিয়ে বিত্র করে নিবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَتْ صَلَاةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً» يَعْنِي بِاللَّيْلِ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘বাহ্ থেকে, তিনি বললেন: আবূ জাম্রাহ্ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাত ছিল তের রাক’আত অর্থাৎ রাতে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۳۹ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ وَثَّابٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنْ صَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ؟ فَقَالَتْ: «سَبْعٌ، وَتِسْعٌ، وَإِحْدَى عَشْرَةَ، سِوَى رَكْعَتِي الفَجْرِ»
ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসরাঈল আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হা’স্বীন থেকে, তিনি ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন ওয়াছ্ছাব থেকে, তিনি মাসরূক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-কে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ফজরের দু’ রাক’আত সুন্নাত বাদে সাত বা নয় কিংবা এগার রাক’আত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۰ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً مِنْهَا الوِتْرُ، وَرَكْعَتَا الفَجْرِ»
‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’নযালাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ক্বাসিম ইব্ন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলা তের রাক’আত সালাত আদায় করতেন, যার ভিতর আছে বিত্র এবং ফজ্রের দু’ রাক’আত (সুন্নাত)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَوْلُهُ تَعَالَى: {يَا أَيُّهَا المُزَّمِّلُ، قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا، نِصْفَهُ أَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا، أَوْ زِدْ عَلَيْهِ، وَرَتِّلِ القُرْآنَ تَرْتِيلًا، إِنَّا سَنُلْقِي عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيلًا} [المزمل: ۲]. (إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ أَشَدُّ وِطَاءً وَأَقْوَمُ قِيلًا) {إِنَّ لَكَ فِي النَّهَارِ سَبْحًا طَوِيلًا} [المزمل: ۷] وَقَوْلُهُ: {عَلِمَ أَنْ لَنْ تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ، فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ القُرْآنِ، عَلِمَ أَنْ سَيَكُونُ مِنْكُمْ مَرْضَى وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِنْ فَضْلِ اللَّهِ، وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا، وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنْفُسِكُمْ مِنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِنْدَ اللَّهِ هُوَ خَيْرًا وَأَعْظَمَ أَجْرًا} قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: ” نَشَأَ: قَامَ بِالحَبَشِيَّةِ {(وِطَاءً)} قَالَ: مُوَاطَأَةَ القُرْآنِ، أَشَدُّ مُوَافَقَةً لِسَمْعِهِ وَبَصَرِهِ وَقَلْبِهِ، {لِيُوَاطِئُوا}: لِيُوَافِقُوا “
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “হে চাদর আবৃত রাসূল! রাতে সালাতে দণ্ডায়মান থাকুন সামান্য পরিমাণে রাত বাদ দিয়ে। অর্ধ রাত্রি কিংবা তার চেয়ে কিছু কম। অর্ধ রাত্রি কিংবা তার চেয়ে কিছু কম। অথবা তার চেয়ে কিছু বৃদ্ধি করুন। আর কুরআন পাঠ করুন ধীরে ধীরে, খুব স্পষ্টভাবে। অবশ্যই আমি আপনার প্রতি অচিরেই এক গুরুভার বাণী অবতীর্ণ করছি। নিশ্চয়ই রাত্রি জাগরণ প্রবৃত্তি দলনে প্রবলতর এবং বক্তব্যের ব্যাপারে বিশেষ ক্রিয়াশীল। দিনের বেলায় তো রয়েছে আপনার বহু কাজ।” [সূরা মুয্যাম্মিল ৭৩:১-৭] আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “তিনি অবগত আছেন যে, তোমরা এর যথাযথ হিসাব রাখতে পার না। অতএব, তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হয়েছেন। সুতরাং কুরআনের যতটুকু তোমাদের পক্ষে পাঠ করা সহজ, ততটুকু পাঠ করো। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্র অনুগ্রহ সন্ধানে দেশভ্রমণ করবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। অতএব, কুরআনের যতটুক তিলাওয়াত সহজ, ততটুকু তোমরা তিলাওয়াত করো। আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহ্কে উত্তম কর্জ দাও। আর তোমরা নিজেদের মঙ্গলের জন্য যা কিছু নেক কাজ অগ্রে প্রেরণ করবে, আল্লাহ্র কাছে তা তোমরা পাবে তদপেক্ষা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হিসেবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দায়ালু।” [সূরা মুয্যাম্মিল ৭৩:২০] ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, হাব্শী ভাষায় (وِطَاءً) শব্দটির অর্থ ‘উঠে দাঁড়াল’ আর (مُوَاطَأَةَ) শব্দের অর্থ হল- অধিক আনুকূল। অর্থাৎ তাঁর কান, চোখ এবং হৃদয়ের অধিক অনুকূল এবং তাই তা কুরআনের মর্ম অনুধাবনে অধিকতর উপযোগী। (لِيُوَاطِئُوا) শব্দের অর্থ হল “যাতে তার সামঞ্জস্য বিধান করতে পারে”।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۱ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُفْطِرُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لَا يَصُومَ مِنْهُ، وَيَصُومُ حَتَّى نَظُنَّ أَنْ لَا يُفْطِرَ مِنْهُ شَيْئًا، وَكَانَ لَا تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلَّا رَأَيْتَهُ، وَلَا نَائِمًا إِلَّا رَأَيْتَهُ» تَابَعَهُ سُلَيْمَانُ، وَأَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ حُمَيْدٍ
‘আব্দুল আযিয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়দ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কোন মাসে সিয়াম পালন করতেন না। এমন কি আমরা ধারণা করতাম যে, সে মাসে তিনি সিয়াম পালন করবেন না। আবার কোন কোন মাসে সিয়াম পালন করতে থাকতেন, এমন কি আমাদের ধারণা হত যে, সে মাসে তিনি সিয়াম ছাড়বেন না। তাঁকে তুমি সালাত রত অবস্থায় দেখতে চাইলে তাই দেখতে পেতে এবং ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে চাইলে তাও দেখতে পেতে। সুলাইমান ও আবূ খালিদ আহ্মার রহমাহুল্লাহ হুমায়দ রহমাহুল্লাহ হতে হাদীস বর্ণনায় মুহাম্মাদ ইব্নু জা’ফার রহমাহুল্লাহ-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۲ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ، فَارْقُدْ فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ، انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلَّا أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلَانَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পশ্চাদংশে তিনটি গিঠ দেয়। প্রতি গিঠে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাক। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহ্কে স্মরণ করে একটি গিঠ খুলে যায়, পড়ে উযূ করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়, অতঃপর সালাত আদায় করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয়, উৎফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলূষ কালিমা ও আলস্য সহকারে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۳ – حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عُلَيَّةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَوْفٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الرُّؤْيَا، قَالَ: «أَمَّا الَّذِي يُثْلَغُ رَأْسُهُ بِالحَجَرِ، فَإِنَّهُ يَأْخُذُ القُرْآنَ، فَيَرْفِضُهُ، وَيَنَامُ عَنِ الصَّلَاةِ المَكْتُوبَةِ»
মুআম্মাল ইব্নু হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু ‘উলায়্য়াহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আওফ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ রাজা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সামুরাহ ইব্নু জুনদাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি তাঁর স্বপ্ন বর্ণনার এক পর্যায়ে বলেছেন, যে ব্যক্তির মাথা পাথর দিয়ে বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ লোক যে কুরআন শিখে তা পরিত্যাগ করে এবং ফরজ সালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে।১
ফুটনোটঃ
১. হাদীসখানা এখানে অংশ বিশেষ উল্লিখিত হয়েছে, পূর্ণাংগ হাদীস রয়েছে كتاب الجنائز এ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۴ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ، فَقِيلَ: مَا زَالَ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحَ، مَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ، فَقَالَ: «بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূল আহ্’ওয়াস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মানস্বূর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ওয়াইল থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’ঊদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে এক ব্যক্তির ব্যাপারে আলোচনা করা হল- সকাল বেলা পর্যন্ত সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, সালাতের জন্য জাগ্রত হয়নি, তখন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ শয়তান তার কানে পেশাব করে দিয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {كَانُوا قَلِيلًا مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ} [الذاريات: ۱۷] : أَيْ مَا يَنَامُونَ {وَبِالأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ} [الذاريات: ۱۸]
আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেনঃ রাতের সামান্য পরিমাণ (সময়) তাঁরা নিদ্রারত থাকেন, শেষ রাতে তাঁরা ইসতিগফার করেন। [সূরা আয-যারিয়াত, ১৮]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي، فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি শিহাব থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ এবং আবূ ‘আব্দুল্লাহ আগারী থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্ তা’আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন যে, আমার নিকট চাইবে। আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ سَلْمَانُ لِأَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: نَمْ فَلَمَّا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ، قَالَ: قُمْ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ سَلْمَانُ»
সালমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু আবূ দারদা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে (রাতের প্রথমাংশে) বললেন, (এখন) ঘুমিয়ে পড়, শেষ রাত হলে তিনি বললেন (এখন) উঠে পড়। (বিষয়টি অবগত হয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ সালমান যথার্থ বলেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۶ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، كَيْفَ كَانَتْ صَلَاةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ؟ قَالَتْ: «كَانَ يَنَامُ أَوَّلَهُ وَيَقُومُ آخِرَهُ، فَيُصَلِّي، ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى فِرَاشِهِ، فَإِذَا أَذَّنَ المُؤَذِّنُ وَثَبَ، فَإِنْ كَانَ بِهِ حَاجَةٌ، اغْتَسَلَ وَإِلَّا تَوَضَّأَ وَخَرَجَ»
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, (অন্য সূত্র) সুলায়মান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ইসহা’ক্ব থেকে, তিনি আসওয়াদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাত কেমন ছিল? তিনি বলেন, তিনি প্রথমাংশে ঘুমাতেন, শেষাংশে জেগে সালাত আদায় করতেন। অতঃপর তাঁর শয্যায় ফিরে যেতেন, মুআয্যিন আযান দিলে শীঘ্র উঠে পড়তেন, তখন তাঁর প্রয়োজন থাকলে গোসল করতেন, নইলে উযূ করে (মসজিদের দিকে) বেরিয়ে যেতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، كَيْفَ كَانَتْ صَلَاةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَمَضَانَ؟ فَقَالَتْ: «مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلَا فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي أَرْبَعًا، فَلَا تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا، فَلَا تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلَاثًا» قَالَتْ عَائِشَةُ: فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ: أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ؟ فَقَالَ: «يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَيَّ تَنَامَانِ وَلَا يَنَامُ قَلْبِي»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসূফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ ইব্ন আবূ সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ ইব্নু আবদুর রাহমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-কে জিজ্ঞেস করেন, রমযান মাসে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাত কেমন ছিল? তিনি বললেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসে এবং অন্যান্য সময় (রাতে) এগার রাক’আতের অধিক সালাত আদায় করতেন না। তিনি চার রাক’আত সালাত আদায় করতেন। তুমি সেই সালাতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর চার রাক’আত সালাত আদায় করতেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। অতঃপর তিনি তিন রাক’আত (বিত্র) সালাত আদায় করতেন। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, (একদা) আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি বিত্রের পূর্বে ঘুমিয়ে থাকেন? তিনি ইরশাদ করলেনঃ আমার চোখ দু’টি ঘুমায়, কিন্তু আমার হৃদয় ঘুমায় না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۸ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي شَيْءٍ مِنْ صَلَاةِ اللَّيْلِ جَالِسًا، حَتَّى إِذَا كَبِرَ قَرَأَ جَالِسًا، فَإِذَا بَقِيَ عَلَيْهِ مِنَ السُّورَةِ ثَلَاثُونَ أَوْ أَرْبَعُونَ آيَةً، قَامَ فَقَرَأَهُنَّ، ثُمَّ رَكَعَ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, রাতের কোন সালাতে আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বসে কির’আত পড়তে দেখিনি। অবশ্য শেষ দিকে বার্ধক্যে উপনীত হলে তিনি বসে কির’আত পড়তেন। যখন (পঠিত) সূরার ত্রিশ চল্লিশ আয়াত অবশিষ্ট থাকত, তখন দাড়িঁয়ে যেতেন এবং সেগুলো পড়ার পর রুকু করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۴۹ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ أَبِي حَيَّانَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلَالٍ: «عِنْدَ صَلَاةِ الفَجْرِ يَا بِلَالُ حَدِّثْنِي بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ فِي الإِسْلَامِ، فَإِنِّي سَمِعْتُ دَفَّ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَيَّ فِي الجَنَّةِ» قَالَ: مَا عَمِلْتُ عَمَلًا أَرْجَى عِنْدِي: أَنِّي لَمْ أَتَطَهَّرْ طَهُورًا، فِي سَاعَةِ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ، إِلَّا صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِي أَنْ أُصَلِّيَ ” قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «دَفَّ نَعْلَيْكَ يَعْنِي تَحْرِيكَ»
ইস্হা’ক্ব ইব্নু নাস্ব্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ হায়্য়ান থেকে, তিনি আবূ যুর্‘আহ্ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা ফজরের সালাতের সময় বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু কে জিজ্ঞেস করলেন, হে বিলাল! ইসলাম গ্রহণের পর সর্বাধিক সন্তুষ্টিব্যঞ্জক যে ‘আমল তুমি করেছ, তার কথা আমার নিকট ব্যক্ত কর। কেননা, জান্নাতে (মি’রাজের রাতে) আমি আমার সামনে তোমার পাদুকার আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমার নিকট এর চেয়ে (অধিক ) সন্তুষ্টিব্যঞ্জক হয় এমন কিছুতো আমি করিনি। দিন রাতের যে কোন প্রহরে আমি তাহারাত ও পবিত্রতা অর্জন করেছি, তখনই সে তাহারাত দ্বারা সালাত আদায় করেছি, যে পরিমাণ সালাত আদায় করা আমার তাক্দীরে লেখা ছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۰ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: دَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا حَبْلٌ مَمْدُودٌ بَيْنَ السَّارِيَتَيْنِ، فَقَالَ: «مَا هَذَا الحَبْلُ؟» قَالُوا: هَذَا حَبْلٌ لِزَيْنَبَ فَإِذَا فَتَرَتْ تَعَلَّقَتْ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا حُلُّوهُ لِيُصَلِّ أَحَدُكُمْ نَشَاطَهُ، فَإِذَا فَتَرَ فَلْيَقْعُدْ»
আবূ মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আযীয ইব্নু স্বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মসজিদে) প্রবেশ করে দেখতে পেলেন যে, দু’টি স্তম্ভের মাঝে একটি রশি টাঙানো রয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ রশিটি কী কাজের জন্য? লোকেরা বললো, এটি যায়নাবের রশি, তিনি (ইবাদাত করতে করতে) অবসন্ন হয়ে পড়লে এটির সাথে নিজেকে বেঁধে নেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ না, এটা খুলে ফেল। তোমাদের কারো প্রাণবন্ত থাকা পর্যন্ত ইবাদাত করা উচিত। যখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন যেন সে বসে পড়ে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۱ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَتْ عِنْدِي امْرَأَةٌ مِنْ بَنِي أَسَدٍ، فَدَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «مَنْ هَذِهِ؟» قُلْتُ: فُلَانَةُ لَا تَنَامُ بِاللَّيْلِ، فَذُكِرَ مِنْ صَلَاتِهَا، فَقَالَ: «مَهْ عَلَيْكُمْ مَا تُطِيقُونَ مِنَ الأَعْمَالِ، فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا»
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু মাসলামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ্ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, বনূ আসাদের এক মহিলা আমার নিকট উপস্হিত ছিলেন, তখন আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট আসলেন এবং তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ মহিলাটি কে? আমি বললাম, অমুক। তিনি রাতে ঘুমান না। তখন তাঁর সালাতের কথা উল্লেখ করা হলে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ রাখ রাখ। সাধ্যানুযায়ী ‘আমল করতে থাকাই তোমাদের কর্তব্য। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা (সাওয়াব দানে ) ক্লান্ত হন না, যতক্ষণ তোমরা ক্লান্ত হয়ে পড়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۲ – حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ الحُسَيْنِ، حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الحَسَنِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ العَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَبْدَ اللَّهِ، لَا تَكُنْ مِثْلَ فُلَانٍ كَانَ يَقُومُ اللَّيْلَ، فَتَرَكَ قِيَامَ اللَّيْلِ» وَقَالَ هِشَامٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي العِشْرِينَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى، عَنْ عُمَرَ بْنِ الحَكَمِ بْنِ ثَوْبَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ مِثْلَهُ. وَتَابَعَهُ عَمْرُو بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ
‘আব্বাস ইব্নু হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুবাশ্শির ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আওযা‘ঈ থেকে, (অন্য সূত্রে) মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আবূল হা’সান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু আবূ কাছির আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ সালামাহ্ ইব্নু ‘আব্দুর রহ্’মান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনু আ’স রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেনঃ “হে ‘আবদুল্লাহ! তুমি অমুক ব্যক্তির মত হয়ো না, সে রাত জেগে ‘ইবাদাত করত, পরে রাত জেগে ‘ইবাদাত করা ছেড়ে দিয়েছে”। এবং হিশাম বললেন: আবূ ‘ইশরীন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উমার ইব্ন হা’কাম ইব্ন ছাওবান থেকে, তিনি বললেন: আবূ সালামা আমাকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এবং তা অনুসরণ করেছেন ‘আম্র ইব্নু আবূ সালামাহ্ আওযা‘ঈ সূত্রে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۳ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي العَبَّاسِ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَقُومُ اللَّيْلَ وَتَصُومُ النَّهَارَ؟» قُلْتُ: إِنِّي أَفْعَلُ ذَلِكَ، قَالَ: «فَإِنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ هَجَمَتْ عَيْنُكَ، وَنَفِهَتْ نَفْسُكَ، وَإِنَّ لِنَفْسِكَ حَقًّا، وَلِأَهْلِكَ حَقًّا، فَصُمْ وَأَفْطِرْ، وَقُمْ وَنَمْ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র থেকে, তিনি আবুল ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে শুনেছি, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেনঃ আমাকে কি জানানো হয়নি যে, তুমি রাতভর ‘ইবাদাতে জেগে থাক আর দিনভর সিয়াম পালন কর? আমি বললাম, হ্যাঁ, তা আমি করে থাকি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ একথা নিশ্চিত যে, তুমি এমন করতে থাকলে তোমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাবে এবং তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়বে। তোমার দেহের অধিকার রয়েছে, তোমার পরিবার পরিজনেরও অধিকার রয়েছে। কাজেই তুমি সিয়াম পালন করবে এবং বাদও দেবে। রাতে জেগে ‘ইবাদাত করবে এবং ঘুমাবেও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۴ – حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الفَضْلِ، أَخْبَرَنَا الوَلِيدُ هُوَ ابْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عُمَيْرُ بْنُ هَانِئٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي جُنَادَةُ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ، حَدَّثَنِي عُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ تَعَارَّ مِنَ اللَّيْلِ، فَقَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، الحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، ثُمَّ قَالَ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، أَوْ دَعَا، اسْتُجِيبَ لَهُ، فَإِنْ تَوَضَّأَ وَصَلَّى قُبِلَتْ صَلَاتُهُ “
স্বাদাক্বাহ্ ইব্নু ফায্ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, ওয়ালীদ তিনি ছিলেন ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উমায়র ইব্নু হানী আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুনাদাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্য়াহ্ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: উবাদাহ ইবনু সামিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন। যে ব্যক্তি রাতে জেগে ওঠে এ দু’আ পড়ে –(দু’আর অর্থ ) “এক আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই। রাজ্য তাঁরই। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনিই সব কিছুর উপরে শক্তিমান। যাবতীয় হাম্দ আল্লাহ্রই জন্য, আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র, আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন ইলাহ নেই। আল্লাহ্ মহান, গুনাহ হতে বাঁচার এবং নেক কাজ করার কোন শক্তি নেই আল্লাহ্র তাওফীক ব্যতীত”। অতঃপর বলে, “হে আল্লাহ্ ! আমাকে ক্ষমা করুন”। বা (অন্য কোন ) দু’আ করে, তাঁর দুআ কবুল হয়। অতঃপর উযু করে (সালাত আদায় করলে) তার সালাত কবুল হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۵ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي الهَيْثَمُ بْنُ أَبِي سِنَانٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، وَهُوَ يَقُصُّ فِي قَصَصِهِ، وَهُوَ يَذْكُرُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَخًا لَكُمْ لَا يَقُولُ الرَّفَثَ» يَعْنِي بِذَلِكَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ رَوَاحَةَ [البحر الطويل] “وَفِينَا رَسُولُ اللَّهِ يَتْلُو كِتَابَهُ … إِذَا انْشَقَّ مَعْرُوفٌ مِنَ الفَجْرِ، سَاطِعُ أَرَانَا الهُدَى بَعْدَ العَمَى فَقُلُوبُنَا … بِهِ مُوقِنَاتٌ أَنَّ مَا قَالَ وَاقِعُ يَبِيتُ يُجَافِي جَنْبَهُ عَنْ فِرَاشِهِ … إِذَا اسْتَثْقَلَتْ بِالْمُشْرِكِينَ المَضَاجِعُ،” تَابَعَهُ عُقَيْلٌ، وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ: أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدٍ، وَالأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইঊনুস থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: হায়সাম ইব্নু আবূ সিনান রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু তারঁ বক্তব্য বর্ণনাকালে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তোমাদের এক ভাই অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইব্নু রাওয়াহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু অনর্থক কথা বলেননি”।১ “আর আমাদের মধ্যে রয়েছেন আল্লাহ্র রাসূল, যিনি তিলাওয়াত করেন তাঁর আল্লাহ্র কিতাব, যখন ফজ্রের আলো উদ্ভাসিত হয়। তিনি আমাদের গোমরাহীর পর হিদায়াতের পথ দেখিয়েছেন, তাই আমাদের অন্তরগুলো তাঁর প্রতি এ বিশ্বাস রাখে যে যা তিনি বলেছেন তা অবশ্যই সত্য। তিনি রাত যাপন করেন পার্শ্বদেশকে শয্যা হতে দূরে সরিয়ে রেখে. যখন মুশরিকরা থাকে আপন শয্যাসমূহে নিদ্রামগ্ন”। আর ‘উকায়ল রহমাহুল্লাহ তাঁর অনুসরণ করেছেন। যুবাইদী রহমাহুল্লাহ বললেন: যুহ্রী আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ এবং আওযা‘ঈ থেকে, তাঁরা উভয়ই আবু হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।
ফুটনোটঃ
১. আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু আনসারী কর্তৃক রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এ প্রশংসায় রচিত কবিতার কয়েকটি পংক্তি, তিনি মুতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۶ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: رَأَيْتُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَأَنَّ بِيَدِي قِطْعَةَ إِسْتَبْرَقٍ، فَكَأَنِّي لَا أُرِيدُ مَكَانًا مِنَ الجَنَّةِ إِلَّا طَارَتْ إِلَيْهِ، وَرَأَيْتُ كَأَنَّ اثْنَيْنِ أَتَيَانِي أَرَادَا أَنْ يَذْهَبَا بِي إِلَى النَّارِ، فَتَلَقَّاهُمَا مَلَكٌ، فَقَالَ: لَمْ تُرَعْ خَلِّيَا عَنْهُ
আবূ নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ূব থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম–এর সময়ে আমি (এক রাতে) স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার হাতে একটুকরা মোটা রেশমী কাপড় রয়েছে এবং যেন আমি জান্নাতের যে স্হানে যেতে ইচ্ছা করছি কাপড় (আমাকে) সেখানে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অপর একটি স্বপ্নে আমি দেখলাম, যেন দু’জন মালাক আমার নিকট এসে আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। তখন অন্য একজন মালাক তাঁদের সামনে এসে বললেন, তোমার কোন ভয় নেই। (আর ঐ দু’জনকে বললেন) তোমরা ওকে ছেড়ে দাও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۷ – فَقَصَّتْ حَفْصَةُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِحْدَى رُؤْيَايَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ» فَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ
(পূর্বের ১১৫৬ নং হাদীসটির পর থেকে) (উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আমার স্বপ্নদ্বয়ের একটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম–এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ ‘আবদুল্লাহ কত ভাল লোক! যদি সে রাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) আদায় করত। তারপর হতে ‘আবদুল্লাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু রাতের এক অংশ সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۸ – وَكَانُوا لَا يَزَالُونَ يَقُصُّونَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرُّؤْيَا أَنَّهَا فِي اللَّيْلَةِ السَّابِعَةِ مِنَ العَشْرِ الأَوَاخِرِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ، فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيَهَا فَلْيَتَحَرَّهَا مِنَ العَشْرِ الأَوَاخِرِ»
(পূর্বের ১১৫৬ নং হাদীসটির সনদে এ হাদীসটি বর্ণিত) সাহাবীগণ আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট (তাঁদের দেখা) স্বপ্নের বর্ণনা দিলেন। লাইলাতুল কদর রমযানের শেষ দশকের সপ্তম রাতে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি মনে করি যে, (লাইলাতুল কদর শেষ দশকে হবার ব্যাপারে) তোমাদের স্বপ্নগুলোর মধ্যে পরস্পর মিল রয়েছে। কাজেই যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদ্রের অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন তা শেষ দশকে অনুসন্ধান করে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۵۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ هُوَ ابْنُ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ: حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العِشَاءَ، ثُمَّ صَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ، وَرَكْعَتَيْنِ جَالِسًا، وَرَكْعَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءَيْنِ وَلَمْ يَكُنْ يَدَعْهُمَا أَبَدًا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইয়াযীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, সা‘ঈদ তিনি ছিলেন ইব্নু আবূ আয়্য়ূব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জাফার ইব্নু রাবী‘আহ্ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘ইরাক ইব্ন মালিক থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইশার সালাত আদায় করলেন অতঃপর আট রাক’আত সালাত আদায় করেন এবং দু’রাকআত আদায় করেন বসে। আর দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন আযান ও ইক্বামাত–এর মাঝে। এ দু’রাক’আত তিনি কখনো পরিত্যাগ করতেন না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۰ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى رَكْعَتَيِ الفَجْرِ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইয়াযীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু আবূ আয়্য়ূব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ আসওয়াদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়র থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজ্রের দু’রাকআত সালাত আদায় করার পর ডান কাতে শয়ন করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۱ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْحَكَمِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ – رضى اللهُ عَنْهَا – أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا صَلَّى {شُنَّةَ الْفَجْرِ} فَإِنْ كُنْتُ مُشْتَيْقِظَةً حَدَّثَنِي وَإِلَّا اضْطَجَعَ حَتَّى يُؤْذَنَ بِالصَّلَاةِ.
বিশ্র ইব্নুল হা’কাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সালাম আবূ নায্র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ফজ্রের সুন্নাত) সালাত আদায় করার পর আমি জেগে থাকলে, তিনি আমার সাথে কথাবার্তা বলতেন, নতুবা সালাতের সময় হওয়া সম্পর্কে অবগত করানো পর্যন্ত শুয়ে থাকতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَ مُحَمَّدٌ وَيُذْكَرُ ذَالِكَ عَنْ عَمَّارٍ وَاَبِى ذَرٍّ وَاَنَسٍ وَجَابَرٍ بْنِ زَيْدٍ وَعِكْرِمَةَ وَالزُّهْرِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ وَقَالَ يَحْيَىٰ بْنُ سَعِيدٍ الْاَنْصَارِىُّ مَا اَدْرَكْتُ فُقَهَاءَأَرْضِنَا إِلَّا يُسَلِّمُونَ فِى كُلِّ اثْنَتَيْنِ مِنَ النَّهَارِ
মুহাম্মাদ ইমাম বুখারি রহমাহুল্লাহ বলেন, বিষয়টি আম্মার, আবূ যার্র, আনাস, জাবির ইব্নু যায়দ, ‘ইকরিমাহ এবং যুহরি রাজিআল্লাহু ‘আনহুম হতেও উল্লিখিত হয়েছে। ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আনসারী বলেছেন, আমাদের শহরের (মদীনার) ফকীহগণকে দিনের সালাতে প্রতি দু’রাক‘আত শেষে সালাম ফিরাতে দেখেছি।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۲ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي المَوَالِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ المُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: ” إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ – فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ – فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي ” قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»
ক্বুতায়বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্নু আবূ মাওয়ালী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্নুল মুন্কাদির থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ ১ শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরা সমূহ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক’আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়ে : “প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বরকত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো ; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্হা কর সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল”। তিনি ইরশাদ করেন তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে। অনুরূপ বর্ণনাঃ [৬৩৮২, ৭৩৯০] [আ.প্র. ১০৮৮, ই.ফা. ১০৯৩]
ফুটনোটঃ
১. সালাত ও দু’আর মাধ্যমে উদ্দিষ্ট বিষয়ে কল্যাণ চাওয়া।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۳ – حَدَّثَنَا المَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، سَمِعَ أَبَا قَتَادَةَ بْنَ رِبْعِيٍّ الأنْصَارِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ المَسْجِدَ، فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ»
মাক্বী ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি ‘আমির ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যুবায়র থেকে, তিনি ‘আম্র ইব্ন সুলায়ম যুরাক্বী থেকে, তিনি আবূ কাতাদা ইবনু রিব’আ আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনেছেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে দু’রাক’আত সালাত (তাহিয়্যাতুল–মসজিদ) আদায় করার পূর্বে বসবে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৪৪৪] [আ.প্র. ১০৮৯, ই.ফা. ১০৯৪]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ انْصَرَفَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইসহা’ক্ব ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ত্বালহা’হ্ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিয়ে দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন, তারপর চলে গেলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৩৮০] [আ.প্র. ১০৯০, ই.ফা. ১০৯৫]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۵ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الجُمُعَةِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ المَغْرِبِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ العِشَاءِ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সালিম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে যুহরের পূর্বে দু’রাক‘আত, যুহরের পরে দু’রাক‘আত, জুমু‘আর পরে দু’রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’রাক‘আত এবং ‘ইশার পরে দু‘রাক‘আত (সুন্নাত) সালাত আদায় করেছি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৯৩৭] [আ.প্র. ১০৯১, ই.ফা. ১০৯৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۶ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَخْطُبُ: «إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ أَوْ قَدْ خَرَجَ، فَلْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু দীনার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর খুতবা প্রদানকালে ইরশাদ করলেন : “তোমরা কেউ এমন সময় মসজিদে উপস্হিত হলে, যখন ইমাম (জুমু‘আর) খুতবা দিচ্ছেন, কিংবা মিম্বরে আরোহণের জন্য (হুজরাহ হতে) বেরিয়ে পড়েছেন, তাহলে সে তখন যেন দু’রাক’আত সালাত আদায় করে নেয়”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৯৩০] [আ.প্র. ১০৯২, ই.ফা. ১০৯৭]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۷ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَيْفُ بْنُ سُلَيْمَانَ، سَمِعْتُ مُجَاهِدًا، يَقُولُ: أُتِيَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فِي مَنْزِلِهِ فَقِيلَ لَهُ: هَذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ دَخَلَ الكَعْبَةَ، قَالَ: فَأَقْبَلْتُ فَأَجِدُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ خَرَجَ، وَأَجِدُ بِلَالًا عِنْدَ البَابِ قَائِمًا، فَقُلْتُ: يَا بِلَالُ أَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الكَعْبَةِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: فَأَيْنَ؟ قَالَ: «بَيْنَ هَاتَيْنِ الأُسْطُوَانَتَيْنِ، ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فِي وَجْهِ الكَعْبَةِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَوْصَانِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَكْعَتَيِ الضُّحَى» وَقَالَ عِتْبَانُ بْنُ مَالِكٍ: «غَدَا عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بَعْدَ مَا امْتَدَّ النَّهَارُ، وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সায়ফ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি মুজাহিদ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইব্নু ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর বাড়িতে এসে তাঁকে খবর দিল, এইমাত্র আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বা শরীফে প্রবেশ করলেন। ইব্নু ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি অগ্রসর হলাম। তখন আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বা ঘর হতে বের হয়ে পড়েছেন। বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু দরজার নিকট দাঁড়িয়ে আছেন। আমি বললাম, হে বিলাল! রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বার ভিতরে সালাত আদায় করেছেন কি? তিনি বললেন, হাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন স্থানে? তিনি বললেন, দু’স্তম্ভের মাঝখানে।১ তারপর তিনি বেরিয়ে এসে কা’বার সামনে দু’রাকআত সালাত আদায় করলেন। [৩৯৭] ইমাম বুখারী রহমাহুল্লাহ বলেন, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দু’ রাক’আত সলাতুয্ যুহা (চাশ্ত-এর সালাত)-এর আদেশ করেছেন। ইতবান (ইবনু মালিক আনসারী) রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, একদা অনেকটা বেলা হলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ বকর এবং ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমার এখানে আসলেন। আমরা তাঁর পিছনে কাতারে দাঁড়ালাম আর তিনি (আমাদের নিয়ে ) দু’রাক’আত সালাত (চাশ্ত) আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [আ.প্র. ১০৯৩, ই.ফা. ১০৯৮]
ফুটনোটঃ
১. কা’বার অভ্যন্তরের সারিতে ছয়টি স্তম্ভ রয়েছে। সামনের সারিতে দু’টি স্তম্ভ ডানে এবং একটি স্তম্ভ বামে রেখে দাঁড়ালে তা দরজা বরাবরে সামনের দু’স্তম্ভের মাঝখানে হয়। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দরজা বরাবর অগ্রসর হয়ে দেয়ালের কাছে সালাত আদায় করেছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۸ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ أَبُو النَّضْرِ: حَدَّثَنِي عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، فَإِنْ كُنْتُ مُسْتَيْقِظَةً حَدَّثَنِي، وَإِلَّا اضْطَجَعَ» قُلْتُ لِسُفْيَانَ: فَإِنَّ بَعْضَهُمْ يَرْوِيهِ رَكْعَتَيِ الفَجْرِ، قَالَ سُفْيَانُ: هُوَ ذَاكَ
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ নয্র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ফজরের) দু’রাক’আত (সুন্নাত) সালাত আদায় করতেন। অতঃপর আমি জেগে থাকলে আমার সাথে কথাবার্তা বলতেন, নইলে (ডান) কাতে শয়ন করতেন। (বর্ণনাকারী ’আলী বলেন), আমি সুফিয়ান রহমাহুল্লাহ-কে জিজ্ঞেস করলাম, কেউ কেউ এ হাদীসে (দু’রাক’আত স্থলে) ফজরের দু’ রাক’আত রিওয়ায়াত করে থাকেন। (এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?) সুফিয়ান রহমাহুল্লাহ বললেন, এটা তা-ই।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [১১১৮] [আ.প্র.১০৯৪, ই.ফা.১০৯৯]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۶۹ – حَدَّثَنَا بَيَانُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى شَيْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ أَشَدَّ مِنْهُ تَعَاهُدًا عَلَى رَكْعَتَيِ الفَجْرِ»
বায়ান ইব্নু ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আত্বা থেকে, তিনি ‘উবায়দ ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন নফল সালাতকে ফজরের দু’রাক’আত সুন্নাতের চেয়ে অধিক গুরুত্ব প্রদান করতেন না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [মুসলিম ৬/১৪, হাঃ ৭২৪] [আ.প্র.১০৯৫, ই.ফা.১১০০]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۰ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي بِاللَّيْلِ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، ثُمَّ يُصَلِّي إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ بِالصُّبْحِ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে তের রাক’আত সালাত আদায় করতেন, অতঃপর সকালে আযান শোনার পর সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক’আত সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৬২৬] [আ.প্র.১০৯৬, ই.ফা.১১০১]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۱ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمَّتِهِ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: ” كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُخَفِّفُ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى إِنِّي لَأَقُولُ: هَلْ قَرَأَ بِأُمِّ الكِتَابِ؟ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি তাঁর চাচা ‘আম্রাহ্ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের সালাতের পূর্বের দু’রাক’আত (সুন্নাত) এত সংক্ষিপ্ত করতেন এমনকি আমি (মনে মনে) বলতাম, তিনি কি (শুধু) উম্মুল কিতাব (সূরা ফাতিহা) তিলাওয়াত করলেন?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০২]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ، وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ المَغْرِبِ، وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ العِشَاءِ، وَسَجْدَتَيْنِ بَعْدَ الجُمُعَةِ، فَأَمَّا المَغْرِبُ وَالعِشَاءُ فَفِي بَيْتِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইবনু ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে যুহরের পূর্বে দু’রাক’আত, যুহরের পর দু’রাক’আত, মাগরিবের পর দু’রাক’আত, ’ইশার পর দু’রাক’আত এবং জুমু’আর পর দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছি। তবে মাগরিব ও ’ইশার পরের সালাত তিনি তাঁর ঘরে আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৯৩৭] [আ.প্র. ১০৯৭, ই.ফা. ১১০৩]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۳ – وَحَدَّثَتْنِي أُخْتِي حَفْصَةُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ بَعْدَ مَا يَطْلُعُ الفَجْرُ»، وَكَانَتْ سَاعَةً لَا أَدْخُلُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا وَقَالَ ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ: عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، بَعْدَ العِشَاءِ فِي أَهْلِهِ، تَابَعَهُ كَثِيرُ بْنُ فَرْقَدٍ، وَأَيُّوبُ، عَنْ نَافِعٍ
(পূর্বের হাদীসটির পর থেকে) এবং আমার বোন (উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর হবার পর সংক্ষিপ্ত দু’রাক’আত সালাত আদায় করতেন। ইব্নু ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, এটি ছিল এমন একটি সময়, যখন আমরা কেউ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হতাম না। ইব্নু আবু যিনাদ রহমাহুল্লাহ বলেছেন, মূসা ইব্নুত ‘উক্বাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু নাফি‘ রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে ‘ইশার পরে তাঁর পরিজনের মধ্যে কথাটি বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৬১৮; মুসলিম ৬/১৫, হাঃ ৭২৯] [আ.প্র. ১০৯৭ শেষাংশ, ই.ফা. ১১০৩ শেষাংশ]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۴ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، قَالَ: سَمِعْتُ أبَا الشَّعْثَاءِ جَابِرًا، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَمَانِيًا جَمِيعًا، وَسَبْعًا جَمِيعًا»، قُلْتُ: يَا أَبَا الشَّعْثَاءِ، أَظُنُّهُ أَخَّرَ الظُّهْرَ، وَعَجَّلَ العَصْرَ، وَعَجَّلَ العِشَاءَ، وَأَخَّرَ المَغْرِبَ، قَالَ: وَأَنَا أَظُنُّهُ
আলী ‘ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ শা‘আ্ছা জাবির থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আমি ইব্নু ’আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে আট রাক’আত একত্রে (যুহ্র ও ’আসরের) এবং সাত রাক’আত একত্রে (মাগরিব-’ইশার) সালাত আদায় করেছি। সে ক্ষেত্রে সুন্নাত আদায় করা হয়নি। ‘আম্র রহমাহুল্লাহ বলেন, আমি বললাম, হে আবুশ্ শা’সা! আমার ধারণা, তিনি যুহ্র শেষ ওয়াক্তে এবং আসর প্রথম ওয়াক্তে আর ‘ইশা প্রথম ওয়াক্তে ও মাগরিব শেষ ওয়াক্তে আদায় করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমিও তাই মনে করি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۵ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ تَوْبَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، قَالَ: قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَتُصَلِّي الضُّحَى؟ قَالَ: لَا، قُلْتُ: فَعُمَرُ؟ قَالَ: لَا، قُلْتُ: فَأَبُو بَكْرٍ؟ قَالَ: لَا، قُلْتُ: فَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: لَا إِخَالُهُ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘বাহ থেকে, তিনি তাওবাহ্ থেকে, তিনি মুওয়ার্রিক থেকে, তিনি বলেন, আমি ইব্নু ’উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে প্রশ্ন করলাম, আপনি কি যুহা সালাত আদায় করে থাকেন? তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, আবূ উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তা আদায় করতেন কি? তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু? তিনি বললেন, না। আমি প্রশ্ন করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম? তিনি বললেন, আমি তা মনে করি না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۶ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، يَقُولُ: مَا حَدَّثَنَا أَحَدٌ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى غَيْرُ أُمِّ هَانِئٍ فَإِنَّهَا قَالَتْ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ بَيْتَهَا يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ، فَاغْتَسَلَ وَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ، فَلَمْ أَرَ صَلَاةً قَطُّ أَخَفَّ مِنْهَا، غَيْرَ أَنَّهُ يُتِمُّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু মুর্রাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি শুনলাম ‘আবদুর রহমান ইব্নু আবূ লায়লা থেকে, তিনি বলেন, উম্মু হানী রাজিআল্লাহু ‘আনহা ব্যতীত অন্য কেউ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে চাশ্তের সালাত আদায় করতে দেখেছেন, এমন আমাদের নিকট কেউ বর্ণনা করেননি। তিনি উম্মু হানী রাজিআল্লাহু ‘আনহা অবশ্য বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন (পূর্বাহ্নে) তাঁর ঘরে গিয়ে গোসল করেছেন। (তিনি বলেছেন) যে, আমি আর কখনো (তাঁর) অনুরূপ সংক্ষিপ্ত সালাত দেখিনি। তবে কির’আত ছাড়া তিনি রুকু ও সিজদা পূর্ণাঙ্গরূপে আদায় করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۷ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبَّحَ سُبْحَةَ الضُّحَى»، وَإِنِّي لَأُسَبِّحُهَا
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যীব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘উর্ওয়াহ্ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে যুহা-এর সালাত আদায় করতে আমি দেখিনি। তবে আমি তা আদায় করে থাকি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَهُ عِتْبَانُ بْنُ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইতবান ইব্ন মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু বিষয়টি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উল্লেখ করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۸ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الجُرَيْرِيُّ هُوَ ابْنُ فَرُّوخَ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَوْصَانِي خَلِيلِي بِثَلَاثٍ لَا أَدَعُهُنَّ حَتَّى أَمُوتَ: «صَوْمِ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَصَلَاةِ الضُّحَى، وَنَوْمٍ عَلَى وِتْرٍ»
মুসলিম ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আব্বাসুল জুরায়রীয়ু তিনি ছিলেন ইব্নু ফার্রুখ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ ‘উছমান নাহ্দী থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমার খলীল ও বন্ধু (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজের ওসিয়্যাত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, মৃত্যু পর্যন্ত তা আমি পরিত্যাগ করব না। (তা হল) ১. প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করা। ২. সালাতুয-যোহা (চাশত এর সালাত আদায় করা)। ৩. বিত্র (সালাত) আদায় করে শয়ন করা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۷۹ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الجَعْدِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ: قَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ – وَكَانَ ضَخْمًا – لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَا أَسْتَطِيعُ الصَّلَاةَ مَعَكَ، فَصَنَعَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا، فَدَعَاهُ إِلَى بَيْتِهِ وَنَضَحَ لَهُ طَرَفَ حَصِيرٍ بِمَاءٍ، «فَصَلَّى عَلَيْهِ رَكْعَتَيْنِ» وَقَالَ فُلَانُ بْنُ فُلَانِ بْنِ جَارُودٍ لِأَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى؟ فَقَالَ: «مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى غَيْرَ ذَلِكَ اليَوْمِ»
আলী ইব্নুল জা‘দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সীরীন থেকে, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, জনৈক স্থুল দেহ বিশিষ্ট আনসারী নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট আরয্ করলেন, আমি আপনার সঙ্গে (জামা‘আতে) সালাত আদায় করতে পারি না। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উদ্দেশে খাবার তৈরি করে তাঁকে দাওয়াত করে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলেন এবং একটি চাটাই এর এক অংশে (কোমল ও পরিচ্ছন্ন করার উদ্দেশে) পানি ছিটিয়ে (তা বিছিয়ে) দিলেন। তখন তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে চাটাইয়ের উপরে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। ইব্নু জারূদ রহমাহুল্লাহ আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে জিজ্ঞেস করলেন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি চাশ্ত-এর সালাত আদায় করতেন? আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, সেদিন বাদে অন্য সময়ে তাঁকে এ সালাত আদায় করতে দেখিনি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۰ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : «حَفِظْتُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرَ رَكَعَاتٍ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ المَغْرِبِ فِي بَيْتِهِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ العِشَاءِ فِي بَيْتِهِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الصُّبْحِ» وَكَانَتْ سَاعَةً لَا يُدْخَلُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে আমি দশ রাক‘আত সালাত আমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। যুহরের পূর্বে দু’রাক‘আত পরে দু’রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে, ‘ইশার পরে দু’রাক‘আত তাঁর ঘরে এবং দু’রাক‘আত সকালের (ফজ্রের) সালাতের পূর্বে। (ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন) আর সময়টি ছিল এমন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট (সচরাচর) কোন লোককে প্রবেশ করতে দেয়া হত না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۱ – حَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ: «أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَذَّنَ المُؤَذِّنُ وَطَلَعَ الفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ»
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে ইব্ন ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন- তবে) উম্মুল মু’মিনীন হাফ্সা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আমাকে বর্ণনা করলেন, যখন মুআয্যিন আযান দিতেন এবং ফজর উদিত হত তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ المُنْتَشِرِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَا يَدَعُ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الغَدَاةِ» تَابَعَهُ ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَعَمْرٌو، عَنْ شُعْبَةَ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘বাহ থেকে, তিনি ইবরাহীম ইব্ন মুহা’ম্মাদ ইব্ন মুনতাশির থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং (ফজ্রের পূর্বে) দু’রাক‘আত সালাত ছাড়তেন না। ইব্নু আবূ আদী ও ‘আমর রহমাহুল্লাহ শু‘বাহ রহমাহুল্লাহ হতে হাদীস বর্ণনায় ইয়াহ্ইয়া রহমাহুল্লাহ-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۳ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، عَنِ الحُسَيْنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ المُزَنِيُّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «صَلُّوا قَبْلَ صَلَاةِ المَغْرِبِ»، قَالَ: «فِي الثَّالِثَةِ لِمَنْ شَاءَ كَرَاهِيَةَ أَنْ يَتَّخِذَهَا النَّاسُ سُنَّةً»
আবূ মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’সায়ন থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুরায়দাহ্ থেকে, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ মুযানী রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেছেনঃ তোমরা মাগরিবের (ফরজের) পূর্বে (নফল) সালাত আদায় করবে; লোকেরা এ ‘আমলকে সুন্নাত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে, এটার কারণে তৃতীয়বারে তিনি বললেনঃ এ তার জন্য যে ইচ্ছে করে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ هُوَ المُقْرِئُ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، قَالَ: سَمِعْتُ مَرْثَدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ اليَزَنِيَّ، قَالَ: أَتَيْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الجُهَنِيَّ، فَقُلْتُ: أَلَا أُعْجِبُكَ مِنْ أَبِي تَمِيمٍ يَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ المَغْرِبِ؟ فَقَالَ عُقْبَةُ: «إِنَّا كُنَّا نَفْعَلُهُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»، قُلْتُ: فَمَا يَمْنَعُكَ الآنَ؟ قَالَ: «الشُّغْلُ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইয়াযীদ তিনি ছিলেন মুক্ব্রীউ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু আবূ আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু আবূ হা’বীব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি মার্সাদ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ ইয়াযানী রহমাহুল্লাহ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি ‘উক্বাহ ইব্নু জুহানী রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট গিয়ে তাঁকে বললাম, আবূ তামীম সম্পর্কে এ কথা বলে কি আমি আপনাকে বিস্মিত করে দিব না যে, তিনি মাগরিবের (ফরজ) সালাতের পূর্বে দু’ রাক‘আত (নফল) সালাত আদায় করে থাকেন। ‘উক্বাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, এতে বিস্ময়ের কী আছে? আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময়ে তো আমরা তা আদায় করতাম। আমি প্রশ্ন করলাম, তা হলে এখন কিসে আপনাকে বাধা দিচ্ছে? তিনি বললেন, কর্মব্যাস্ততা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ذَكَرَهُ أَنَسٌ، وَعَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ বিষয়ে আনাস ও ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۵ – حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيُّ: أَنَّهُ عَقَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعَقَلَ مَجَّةً مَجَّهَا فِي وَجْهِهِ مِنْ بِئْرٍ كَانَتْ فِي دَارِهِمْ
ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়া‘কুব ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু শিহাব থেকে, তিনি বললেনঃ মাহমূদ ইব্নু রাবী‘ আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে খবর দিলেন, (শিশুকালে তাঁর দেখা) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা তাঁর ভাল স্মরণ আছে এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের বাড়ির কুপ হতে (পানি মুখে নিয়ে বরকতের জন্য) তার মুখমন্ডলে যে ছিটিয়ে দিচ্ছিলেন সে কথাও তার ভাল মনে আছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۶ – فَزَعَمَ مَحْمُودٌ، أَنَّهُ سَمِعَ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصارِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَقُولُ: كُنْتُ أُصَلِّي لِقَوْمِي بِبَنِي سَالِمٍ وَكَانَ يَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ وَادٍ إِذَا جَاءَتِ الأَمْطَارُ، فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ قِبَلَ مَسْجِدِهِمْ، فَجِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لَهُ: إِنِّي أَنْكَرْتُ بَصَرِي، وَإِنَّ الوَادِيَ الَّذِي بَيْنِي وَبَيْنَ قَوْمِي يَسِيلُ إِذَا جَاءَتِ الأَمْطَارُ، فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ، فَوَدِدْتُ أَنَّكَ تَأْتِي فَتُصَلِّي مِنْ بَيْتِي مَكَانًا، أَتَّخِذُهُ مُصَلًّى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَأَفْعَلُ» فَغَدَا عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ، فَاسْتَأْذَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَذِنْتُ لَهُ فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ: «أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ؟» فَأَشَرْتُ لَهُ إِلَى المَكَانِ الَّذِي أُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ فِيهِ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَبَّرَ، وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ، فَحَبَسْتُهُ عَلَى خَزِيرٍ يُصْنَعُ لَهُ، فَسَمِعَ أَهْلُ الدَّارِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِي، فَثَابَ رِجَالٌ مِنْهُمْ حَتَّى كَثُرَ الرِّجَالُ فِي البَيْتِ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ: مَا فَعَلَ مَالِكٌ؟ لَا أَرَاهُ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ: ذَاكَ مُنَافِقٌ لَا يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تَقُلْ ذَاكَ أَلَا تَرَاهُ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ “، فَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، أَمَّا نَحْنُ، فَوَ اللَّهِ لَا نَرَى وُدَّهُ وَلَا حَدِيثَهُ إِلَّا إِلَى المُنَافِقِينَ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ ” قَالَ مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ: فَحَدَّثْتُهَا قَوْمًا فِيهِمْ أَبُو أَيُّوبَ صَاحِبُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَتِهِ الَّتِي تُوُفِّيَ فِيهَا، وَيَزِيدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ عَلَيْهِمْ بِأَرْضِ الرُّومِ، فَأَنْكَرَهَا عَلَيَّ أَبُو أَيُّوبَ، قَالَ: وَاللَّهِ مَا أَظُنُّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَا قُلْتَ قَطُّ، فَكَبُرَ ذَلِكَ عَلَيَّ، فَجَعَلْتُ لِلَّهِ عَلَيَّ إِنْ سَلَّمَنِي حَتَّى أَقْفُلَ مِنْ غَزْوَتِي أَنْ أَسْأَلَ عَنْهَا عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، إِنْ وَجَدْتُهُ حَيًّا فِي مَسْجِدِ قَوْمِهِ، فَقَفَلْتُ، فَأَهْلَلْتُ بِحَجَّةٍ أَوْ بِعُمْرَةٍ، ثُمَّ سِرْتُ حَتَّى قَدِمْتُ المَدِينَةَ، فَأَتَيْتُ بَنِي سَالِمٍ، فَإِذَا عِتْبَانُ شَيْخٌ أَعْمَى يُصَلِّي لِقَوْمِهِ، فَلَمَّا سَلَّمَ مِنَ الصَّلَاةِ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ وَأَخْبَرْتُهُ مَنْ أَنَا، ثُمَّ سَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ الحَدِيثِ، فَحَدَّثَنِيهِ كَمَا حَدَّثَنِيهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) মাহমূদ বললেন: ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে (যিনি ছিলেন বদর জিহাদে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে উপস্থিত বদরী সাহাবীগণের অন্যতম) বলতে শুনেছেন যে, আমি আমার কাওম বনূ সালিমের সালাতে ইমামাত করতাম। আমার ও তাদের (কাওমের মসজিদের) মধ্যে ছিল একটি উপত্যকা। বৃষ্টি হলে উপত্যকা আমার মসজিদ গমনে বাধা সৃষ্টি করতো এবং এ উপত্যকা অতিক্রম করে তাদের মসজিদে যাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হতো। তাই আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলাম, (হে আল্লাহ্র রাসূল!) আমি আমার দৃষ্টিশক্তির কমতি অনুভব করছি (উপরন্তু) আমার ও আমার গোত্রের মধ্যকার উপত্যকাটি বৃষ্টি হলে প্লাবিত হয়ে যায়। তখন তা পার হওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই আমার একান্ত আশা যে আপনি শুভাগমন করে আমার ঘরের কোন স্থানে সালাত আদায় করবেন; আমি সে স্থানটিকে সালাতের স্থানরূপে নির্ধারিত করে নিব। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, শীঘ্রই তা করবো। পরের দিন সূর্যের উত্তাপ যখন বেড়ে গেল, তখন আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বকর (রাঃ) আসলেন। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (প্রবেশের) অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে স্বাগত জানালাম, তিনি উপবেশন না করেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ঘরের কোন্ জায়গায় আমার সালাত আদায় করা তুমি পছন্দ কর? যে স্থানে সালাত আদায় করা আমার মনঃপূত ছিল, তাঁকে আমি সে স্থানের দিকে ইঙ্গিত করে দিলাম আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে তাক্বীর বললেন, আমরা সারিবদ্ধভাবে তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম। তিনি দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন। তাঁর সালাম ফেরানোর সময় আমরাও সালাম ফিরালাম। অতঃপর তাঁর উদ্দেশে যে খাযীরা প্রস্তুত করা হচ্ছিল তা আহারের জন্য তাঁর প্রত্যাগমনে আমি বিলম্ব ঘটালাম। ইতিমধ্যে মহল্লার লোকেরা আমার বাড়িতে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবস্থানের সংবাদ শুনতে পেয়ে তাঁদের কিছু লোক এসে গেলেন। এমন কি আমার ঘরে অনেক লোকের সমাগম ঘটলো। তাঁদের একজন বললেন, মালিক (ইব্নু দুখায়শিন) করল কী? তাকে দেখছি না যে? তাঁদের একজন জবাব দিলেন, সে মুনাফিক! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে না। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করলেন : এমন কথা বলবে না। তুমি কি লক্ষ্য করছ না যে, আল্লাহ্র সন্তুষ্টি কামনায় ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ উচ্চারণ করেছে। সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই অধিক অবগত। তবে আল্লাহ্র কসম! আমরা মুনাফিকদের সাথেই তার ভালবাসা ও আলাপ-আলোচনা দেখতে পাই। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন : আল্লাহ্ তা‘আলা সে ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ উচ্চারণ করে। মাহমূদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে একদল লোকের নিকট বর্ণনা করলাম তাঁদের মধ্যে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবী আবূ আইয়ুব (আনসারী) রাজিআল্লাহু ‘আনহু ছিলেন। তিনি সে যুদ্ধে ওফাত পেয়েছিলেন। আর ইয়াযীদ ইব্নু মু‘আবিয়া রাজিআল্লাহু ‘আনহু রোমানদের দেশে তাদের আমীর ছিলেন। আবূ আইয়ুব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমার বর্ণিত হাদীসটি অস্বীকার করে বললেন, আল্লাহ্র কসম! তুমি যে কথা বলেছ তা যে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, তা আমি বিশ্বাস করতে পারি না। ফলে তা আমার নিকট ভারী মনে হল। তখন আমি আল্লাহ্র নামে প্রতিজ্ঞা করলাম যে, যদি এ যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত তিনি আমাকে নিরাপদ রাখেন, তাহলে আমি ইত্বান ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে তাঁর কাউমের মসজিদের বিষয়ে জিজ্ঞেস করবো, যদি তাঁকে জীবিত অবস্থায় পেয়ে যাই। অতঃপর আমি ফিরে চললাম এবং হজ্জ কিংবা উমরার নিয়্যাতে ইহরাম করলাম। অতঃপর সফর করতে করতে আমি মাদীনায় উপনীত হয়ে বনূ সালিম গোত্রে উপস্থিত হলাম। দেখতে পেলাম ‘ইত্বান রাজিআল্লাহু ‘আনহু যিনি তখন একজন বৃদ্ধ ও অন্ধ ব্যক্তি কাউমের সালাতে ইমামাত করছেন। তিনি সালাত সমাপ্ত করলে আমি তাঁকে সালাম দিলাম এবং আমার পরিচয় দিয়ে উক্ত হাদীস সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি প্রথমবারের মতই হাদীসটি আমাকে শুনালেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ أَيُّوبَ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اجْعَلُوا فِي بُيُوتِكُمْ مِنْ صَلَاتِكُمْ، وَلَا تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا» تَابَعَهُ عَبْدُ الوَهَّابِ، عَنْ أَيُّوبَ
‘আব্দুল ‘আলা ইব্নু হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বু’হায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব এবং ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা তোমাদের কিছু কিছু সালাত তোমাদের ঘরে আদায় করবে, তোমাদের ঘরগুলোকে কবর বানাবে না। ‘আবদুল ওহ্হাব রহমাহুল্লাহ আইউব রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে হাদীস বর্ণনায় ওয়াহ্ব রহমাহুল্লাহ-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۸ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَبْدُ المَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ قَزَعَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَرْبَعًا، قَالَ: سَمِعْتُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – وَكَانَ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ غَزْوَةً – ح
হা’ফ্স্ব ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল মালিক ইব্নু ‘উমায়র্ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন কায‘আ থেকে, তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে চারটি বিষয় বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে শুনেছি। আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۸۹ – حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ: المَسْجِدِ الحَرَامِ، وَمَسْجِدِ الرَّسُولِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَسْجِدِ الأَقْصَى “
‘আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে, তিনি বলেছেন, মসজিদুল হারাম, মসজিদুর রাসূল এবং মসজিদুল আক্সা (বায়তুল মাক্দিস) তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মসজিদে (সালাতের) উদ্দেশে হাওদা বাঁধা যাবে না (অর্থাৎ সফর করা যাবে না)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۰ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ رَبَاحٍ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «صَلَاةٌ فِي مَسْجِدِي هَذَا خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ، إِلَّا المَسْجِدَ الحَرَامَ»
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যায়দ ইব্ন রাবাহ্’ এবং ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন আবূ ‘আব্দুল্লাহিল ‘আগার্রি থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মসজিদুল হারাম ব্যতীত আমার এ মসজিদে সালাত আদায় করা অপরাপর মসজিদে এক হাজার সালাতের চেয়ে উত্তম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۱ – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ هُوَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، أَخْبَرَنَا أَيُّوبُ ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، كَانَ لَا يُصَلِّي مِنَ الضُّحَى إِلَّا فِي يَوْمَيْنِ: يَوْمَ يَقْدَمُ بِمَكَّةَ، فَإِنَّهُ كَانَ يَقْدَمُهَا ضُحًى فَيَطُوفُ بِالْبَيْتِ، ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ خَلْفَ المَقَامِ، وَيَوْمَ يَأْتِي مَسْجِدَ قُبَاءٍ، فَإِنَّهُ كَانَ يَأْتِيهِ كُلَّ سَبْتٍ، فَإِذَا دَخَلَ المَسْجِدَ كَرِهَ أَنْ يَخْرُجَ مِنْهُ حَتَّى يُصَلِّيَ فِيهِ، قَالَ: وَكَانَ يُحَدِّثُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَزُورُهُ رَاكِبًا وَمَاشِيًا
ইয়া‘কূব ইব্নু ইব্রাহীম তিনি ছিলেন দাওরাক্বী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘উলায়্য়াহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ূব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ থেকে, তিনি বললেন: ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু দু’ দিন ছাড়া অন্য সময়ে চাশ্তের সালাত আদায় করতেন না, যে দিন তিনি মক্কায় আগমন করতেন। তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি চাশ্তের সময় মক্কায় আগমন করতেন। তিনি বাইতুল্লাহ্ ত্বওয়াফ করার পর মাকামে ইব্রাহীম-এর পিছনে দাঁড়িয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। আর যে দিন তিনি কুবা মসজিদে গমন করতেন। তিনি প্রতি শনিবার সেখানে গমন করতেন এবং সেখানে সালাত আদায় না করে বেরিয়ে আসা অপছন্দ করতেন। নাফি‘ রহমাহুল্লাহ বলেন, তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু হাদীস বর্ণনা করতেন যে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুবা মসজিদ যিয়ারত করতেন- কখনো সওয়ারীতে, কখনো পদব্রজে।
ফুটনোটঃ
১. কুবা মসজিদ: মসজিদে নববী থেকে প্রায় তিন মাইল দূরে অবস্থিত মদীনর প্রথম মসজিদ এবং মদীনায় হিজরত কালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۲ – قَالَ: وَكَانَ يَقُولُ: «إِنَّمَا أَصْنَعُ كَمَا رَأَيْتُ أَصْحَابِي يَصْنَعُونَ، وَلَا أَمْنَعُ أَحَدًا أَنْ يُصَلِّيَ فِي أَيِّ سَاعَةٍ شَاءَ مِنْ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ، غَيْرَ أَنْ لَا تَتَحَرَّوْا طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوبَهَا»
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) তিনি (ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে (নাফি‘ কে) আরো বলতেন, আমি আমার সাথীদেরকে যেমন করতে দেখেছি তেমন করব। আর কাউকে আমি দিন রাতের কোন সময়ই সালাত আদায় করতে বাধা দিইনা, তবে তাঁরা যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় (সালাতের) ইচ্ছা না করে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۳ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِي مَسْجِدَ قُبَاءٍ كُلَّ سَبْتٍ، مَاشِيًا وَرَاكِبًا» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «يَفْعَلُهُ»
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন দীনার থেকে, তিনি ইব্ন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি শনিবার কুবা মসজিদে আসতেন, কখনো পদব্রজে, কখনো সওয়ারীতে। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-ও ঐরূপ করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۴ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِي مَسْجِدَ قُبَاءٍ رَاكِبًا وَمَاشِيًا» زَادَ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، «فَيُصَلِّي فِيهِ رَكْعَتَيْنِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরোহণ করে কিংবা পায়ে হেঁটে কুবা মসজিদে আসতেন। ইব্নু নুমায়র রহমাহুল্লাহ নাফি‘ রহমাহুল্লাহ হতে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ المَازِنِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا بَيْنَ بَيْتِي وَمِنْبَرِي رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বাক্র থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্ন তামীম থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ-মাযিনী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বার-এর মধ্যবর্তী স্থানটুকু জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান।
ফুটনোটঃ
১. আসলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় এটা কবর ছিলনা বরং এটা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী আয়শা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর ঘর ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে নববীর মেম্বারে আরোহন করে খুতবা দিতেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ঘরে মৃত্যু বরণ করেন। তাই এখানে তাঁকে দাফন করা হয়। পরবর্তিতে উমার ও আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা-দ্বয়কে এখানে দাফন করা হয়। এটা তখন মসজিদের নববীর বাহিরে ছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۶ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا بَيْنَ بَيْتِي وَمِنْبَرِي رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ، وَمِنْبَرِي عَلَى حَوْضِي»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার থেকে, তিনি বললেন: খুবায়ব ইব্নু ‘আব্দুর রহ্মান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’ফ্স ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান আর আমার মিম্বর অবস্থিত আমার হাউয (কাউসার)-এর উপরে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۷ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ، سَمِعْتُ قَزَعَةَ، مَوْلَى زِيَادٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يُحَدِّثُ بِأَرْبَعٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَعْجَبْنَنِي وَآنَقْنَنِي قَالَ: «لَا تُسَافِرِ المَرْأَةُ يَوْمَيْنِ إِلَّا مَعَهَا زَوْجُهَا أَوْ ذُو مَحْرَمٍ، وَلَا صَوْمَ فِي يَوْمَيْنِ الفِطْرِ وَالأَضْحَى، وَلَا صَلَاةَ بَعْدَ صَلَاتَيْنِ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ وَلَا تُشَدُّ الرِّحَالُ، إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِ الحَرَامِ، وَمَسْجِدِ الأَقْصَى وَمَسْجِدِي»
আবূ ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল মালিক থেকে, তিনি বললেন: আমি যিয়াদের স্বাধীন করা গুলাম ক্বাযা‘হ্ থেকে শুনেছি, তিনি বললেন: আমি আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে চারটি বিষয় বর্ণনা করতে শুনেছি, যা আমাকে আনন্দিত ও মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেনঃ নারীগণ স্বামী কিংবা মাহ্রাম ১ ব্যতীত দু’দিনের দূরত্বের পথে সফর করবে না। ‘ঈদুল ফিত্র ও ‘ঈদুল আযহার দিনগুলোতে সিয়াম নেই। দু’ (ফরজ) সালাতের পর কোন (নফল ও সুন্নাত) সালাত নেই, ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এবং ১. মসজিদুল হারাম ২. মসজিদুল আক্সা এবং ৩. আমার মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে (যিয়ারতের উদ্দেশে) হাওদা বাঁধা যাবে না। (সফর করা যাবে না)।
ফুটনোটঃ
১. মাহরামঃ স্থায়ীভাবে বিবাহ করা হারাম এমন সম্পর্কযুক্ত পুরূষ যেমন- দাদা, বাবা, ভাই, ভাতীজা, মামা, চাচা, শুশুর ইত্যাদি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «يَسْتَعِينُ الرَّجُلُ فِي صَلَاتِهِ مِنْ جَسَدِهِ بِمَا شَاءَ» وَوَضَعَ أَبُو إِسْحَاقَ: «قَلَنْسُوَتَهُ فِي الصَّلَاةِ وَرَفَعَهَا» وَوَضَعَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ كَفَّهُ عَلَى رُسْغِهِ الأَيْسَرِ، إِلَّا أَنْ يَحُكَّ جِلْدًا أَوْ يُصْلِحَ ثَوْبًا
ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, কোন ব্যক্তি তার সালাতের মধ্যে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা (সালাত সংশ্লিষ্ট কাজে) সাহায্য নিতে পারে। আবূ ইসহা’ক রহমাহুল্লাহ সালাত আদায়রত অবস্থায় তাঁর টুপী নামিয়ে রেখেছিলেন এবং তা তুলে মাথায় দিয়েছিলেন। ‘আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু (সালাতে) সাধারণত তাঁর (ডান হাতের) পাঞ্জার বাম হাতের কব্জির উপরে রাখতেন, তবে কখনো শরীর চুলাকাতে হলে বা কাপড় ঠিক করতে হলে করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۸ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّهُ أَخْبَرَهُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُونَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – وَهِيَ خَالَتُهُ – قَالَ: فَاضْطَجَعْتُ عَلَى عَرْضِ الوِسَادَةِ، «وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَهْلُهُ فِي طُولِهَا، فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ – أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ، أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ – ثُمَّ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَلَسَ، فَمَسَحَ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدِهِ، ثُمَّ قَرَأَ العَشْرَ آيَاتٍ خَوَاتِيمَ سُورَةِ آلِ عِمْرَانَ، ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ، فَتَوَضَّأَ مِنْهَا، فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي» قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ، ثُمَّ ذَهَبْتُ، فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ، «فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ اليُمْنَى عَلَى رَأْسِي، وَأَخَذَ بِأُذُنِي اليُمْنَى يَفْتِلُهَا بِيَدِهِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَوْتَرَ، ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ المُؤَذِّنُ، فَقَامَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ، ثُمَّ خَرَجَ، فَصَلَّى الصُّبْحَ»
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মাখ্রামাহ্ ইব্ন সুলায়মান থেকে, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু এর আজাদ করা গুলাম কুরায়ব থেকে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, তিনি তাঁর খালা মু’মিনদের মা মাইমূনাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর ঘরে রাত কাটালেন। তিনি বলেন, আমি বালিশের প্রস্থের দিকে শুয়ে পড়লাম, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সহধর্মিণী বালিশের দৈর্ঘ্যে শয়ন করলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মধ্যরাত বা তার কিছু আগ বা পর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জেগে উঠে বসলেন এবং দু’হাতে মুখমন্ডল মুছে ঘুমের রেশ দূর করলেন। অতঃপর তিনি সূরা আল ইমরানের শেষ দশ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। পরে একটি ঝুলন্ত মশ্কের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং এর পানি দ্বারা উত্তমরূপে উযূ করে সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমিও উঠে পড়লাম এবং তিনি যেমন করেছিলেন, আমিও তেমন করলাম। অতঃপর আমি গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপরে রেখে আমার ডান কানে মোচড়াতে লাগলেন এবং আমাকে তাঁর পিছন হতে ঘুরিয়ে এনে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তিনি তখন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর দু’রাক‘আত, অতঃপর (দু’রাক‘আতের সাথে আর এক রাক‘আত দ্বারা বেজোড় করে) বিত্র আদায় করে শুয়ে পড়লেন। শেষে (ফজরের জামাআতের জন্য) মুআয্যিন এলেন। তিনি দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত (কিরাআতে) দু’রাক‘আত (ফজরের সুন্নাত) আদায় করলেন। অতঃপর বেরিয়ে গেলেন এবং ফজরের সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۹۹ – حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الصَّلَاةِ، فَيَرُدُّ عَلَيْنَا، فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا، وَقَالَ: «إِنَّ فِي الصَّلَاةِ شُغْلًا» حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ السَّلُولِيُّ، حَدَّثَنَا هُرَيْمُ بْنُ سُفْيَانَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ
ইব্নু নুমায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ফুযায়ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্রাহীম থেকে, তিনি ‘আলক্বামাহ্ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস‘ঊদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তাঁর সালাতরত অবস্থায় সালাম করতাম; তিনি আমাদের সালামের জওয়াব দিতেন। পরে যখন আমরা নাজাশীর নিকট হতে ফিরে এলাম, তখন তাঁকে (সালাতে) সালাম করলে তিনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন না এবং পরে ইরশাদ করলেন : সালাতে আছে নিমগ্নতা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [১২১৬, ৩৮৭৫] [আ.প্র. ১১২১, ই.ফা. ১১২৫]
‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [মুসলিম ৫/৭, হাঃ ৫৩৮, আহমাদ ৩৫৬৩] [ই.ফা. ১১২৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۰ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عِيسَى هُوَ ابْنُ يُونُسَ عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ الحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، قَالَ: قَالَ لِي زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ: إِنْ كُنَّا لَنَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُكَلِّمُ أَحَدُنَا صَاحِبَهُ بِحَاجَتِهِ، حَتَّى نَزَلَتْ: {حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ، وَالصَّلَاةِ الوُسْطَى، وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ} [البقرة: ۲۳۸] «فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوتِ»
ইব্রাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘ঈসা তিনি ছিলেন ইব্নু ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসমা‘ঈল থেকে, তিনি হা’রিছ ইব্ন শুবায়ল থেকে, তিনি আবূ ‘আম্র শায়বানী থেকে, তিনি যায়দ ইব্নু আরক্বাম রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময়ে সালাতের মধ্যে কথা বলতাম। আমাদের যে কেউ তার সঙ্গীর সাথে নিজ দরকারী বিষয়ে কথা বলত। অবশেষে এ আয়াত নাযিল হল حافِظوا عَلى الصَّلَواتِ الاية “তোমরা তোমাদের সালাত সমূহের সংরক্ষণ কর ও নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা কর; বিশেষ মধ্যবর্তী (‘আসর) সালাতে, আর তোমরা (সালাতে) আল্লাহ্র উদ্দেশে একাগ্রচিত্ত হও”- (সূরা আল-বাকারা ২/২৩৮)। অতঃপর আমরা সালাতে নীরব থাকতে আদেশপ্রাপ্ত হলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۱ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصْلِحُ بَيْنَ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفِ بْنِ الحَارِثِ»، وَحَانَتِ الصَّلَاةُ، فَجَاءَ بِلَالٌ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَقَالَ: حُبِسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَؤُمُّ النَّاسَ؟ قَالَ: نَعَمْ ، إِنْ شِئْتُمْ، فَأَقَامَ بِلَالٌ الصَّلَاةَ، فَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَصَلَّى «فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ يَشُقُّهَا شَقًّا، حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ الأَوَّلِ»، فَأَخَذَ النَّاسُ بِالتَّصْفِيحِ – قَالَ سَهْلٌ: هَلْ تَدْرُونَ مَا التَّصْفِيحُ؟ هُوَ التَّصْفِيقُ – وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، لَا يَلْتَفِتُ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرُوا التَفَتَ، فَإِذَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصَّفِّ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ مَكَانَكَ، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ يَدَيْهِ فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ رَجَعَ القَهْقَرَى وَرَاءَهُ، «وَتَقَدَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আযীয ইব্নু হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনূ আমর ইব্নু আওফের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়ার উদ্দেশে বের হলেন, ইতোমধ্যে সালাতের সময় উপস্থিত হল। তখন বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট এসে বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আপনি লোকদের সালাতে ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, হাঁ, যদি তোমরা চাও। তখন বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু সালাতের ইক্বামাত বললেন, আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সামনে এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু করলেন। ইতোমধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে প্রথম কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ ‘তাসফীহ্’ করতে লাগলেন। সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তাসফীহ্ কী তা তোমরা জান? তা হল ‘তাস্ফীক’১ (তালি বাজান) আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সালাতে এদিক সেদিক লক্ষ্য করতেন না। মুসল্লীগণ অধিক তালি বাজালে তিনি সে দিকে লক্ষ্য করলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কাতারে দেখতে পেলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ইঙ্গিত করলেন- যথাস্থানে থাক। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তখন দু’হাত তুলে আল্লাহ্ তা‘আলার হাম্দ বর্ণনা করলেন এবং পিছু হেঁটে চলে এলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামনে এগিয়ে গিয়ে সালাত আদায় করলেন।
ফুটনোটঃ
১. ‘তাস্ফীক’ এক হাতের তালু দ্বারা অন্য হাতের তালুতে আঘাত করা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۲ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا حُصَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنَّا نَقُولُ: التَّحِيَّةُ فِي الصَّلَاةِ، وَنُسَمِّي، وَيُسَلِّمُ بَعْضُنَا عَلَى بَعْضٍ، فَسَمِعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: ” قُولُوا: التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، فَإِنَّكُمْ إِذَا فَعَلْتُمْ ذَلِكَ فَقَدْ سَلَّمْتُمْ عَلَى كُلِّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ “
‘আমর ইব্নু ‘ঈছা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আব্দুস্ স্বামাদ ‘আব্দুল আযীয ইব্নু ‘আব্দুস স্বামাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’স্বায়ন ইব্নু ‘আব্দুর রহ্মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আকূ ওয়াইল থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস্‘ঊদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা সালাতের (বৈঠকে) আত্তাহিয়্যাতু বলতাম, তখন আমাদের একে অপরকে সালামও করতাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা শুনে ইরশাদ করলেন : তোমরা বলবে- التَّحيّاتُ لله (অর্থ)- “যাবতীয় মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্রই জন্য। হে (মহান) নবী! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত (বর্ষিত)- হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র সালিহ্ বান্দাদের প্রতি; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন প্রকৃত ইলাহ্ নেই। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।” কেননা, তোমরা এরূপ করলে আসমান ও যমীনে আল্লাহ্র সকল নেক বান্দাকে তোমরা যেন সালাম করলে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۳ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ، وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহ্রী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ (ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য) পুরুষদের বেলায় তাস্বীহ্-সুবহানাল্লাহ্ বলা। তবে মহিলাদের বেলায় ‘তাসফীক’ (এক হাতের তালু দিয়ে অন্য হাতের তালুতে মারা)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۴ – حَدَّثَنَا يَحْيَى، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّسْبِيحُ للرِّجَالِ، وَالتَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ»
ইয়াহ্ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াকী‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুফ্ইয়ান থেকে, তিনি আবূ হাযিম থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সালাতে (লোকমা দেয়ার জন্য) পুরুষদের জন্য ‘তাস্বীহ্’ আর মহিলাদের জন্য তাসফীক।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
رَوَاهُ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ বিষয়ে সাহল ইব্নু সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে রিওয়ায়ত করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۵ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ يُونُسُ: قَالَ الزُّهْرِيُّ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: أَنَّ المُسْلِمِينَ بَيْنَا هُمْ فِي الفَجْرِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ، وَأَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُصَلِّي بِهِمْ، «فَفَجِئَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ وَهُمْ صُفُوفٌ، فَتَبَسَّمَ يَضْحَكُ» فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى عَقِبَيْهِ، وَظَنَّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُرِيدُ أَنْ يَخْرُجَ إِلَى الصَّلَاةِ، وَهَمَّ المُسْلِمُونَ أَنْ يَفْتَتِنُوا فِي صَلَاتِهِمْ، فَرَحًا بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ رَأَوْهُ، فَأَشَارَ بِيَدِهِ: «أَنْ أَتِمُّوا، ثُمَّ دَخَلَ الحُجْرَةَ، وَأَرْخَى السِّتْرَ»، وَتُوُفِّيَ ذَلِكَ اليَوْمَ
বিশর ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস হাদীসটি বললেন, তিনি বললেন: জুহ্রী হাদীসটি বললেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন: মুসলিমগণ সোমবার (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাতের দিন) ফজরের সালাতে ছিলেন, আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর হুজরার পর্দা সরিয়ে তাঁদের দিকে তাকালেন। তখন তাঁরা সারিবদ্ধ ছিলেন। তা দেখে তিনি মৃদু হাসলেন। তখন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর গোড়ালির উপর ভর দিয়ে পিছে সরে আসলেন। তিনি ধারণা করলেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের জন্য আসার ইচ্ছা করছেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখার আনন্দে মুসলিমগণের সালাত ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন তিনি সালাত সুসম্পন্ন করার জন্য তাদের দিকে হাতে ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর তিনি হুজরায় প্রবেশ করেন এবং পর্দা ছেড়ে দেন আর সে দিনই তাঁর মৃত্যু হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۶ – وَقَالَ اللَّيْثُ: حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ: قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا وَهُوَ فِي صَوْمَعَةٍ، قَالَتْ: يَا جُرَيْجُ، قَالَ: اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلَاتِي، قَالَتْ: يَا جُرَيْجُ، قَالَ: اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلَاتِي، قَالَتْ: يَا جُرَيْجُ، قَالَ: اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلَاتِي، قَالَتْ: اللَّهُمَّ لَا يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وُجُوهِ المَيَامِيسِ، وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الغَنَمَ، فَوَلَدَتْ، فَقِيلَ لَهَا: مِمَّنْ هَذَا الوَلَدُ؟ قَالَتْ: مِنْ جُرَيْجٍ، نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ، قَالَ جُرَيْجٌ: أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي؟ قَالَ: يَا بَابُوسُ، مَنْ أَبُوكَ؟ قَالَ: رَاعِي الغَنَمِ “
এবং লায়ছ বললেন: জা‘ফার ইব্নু রাবী‘আহ্ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্মান ইব্ন হুর্মুয থেকে, তিনি বললেন: আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত! মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বক্রী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বক্রীর অমুক রাখাল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۷ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي مُعَيْقِيبٌ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فِي الرَّجُلِ يُسَوِّي التُّرَابَ حَيْثُ يَسْجُدُ، قَالَ: «إِنْ كُنْتَ فَاعِلًا فَوَاحِدَةً»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি বললেন: মু’আইকিব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন, যে সিজদার স্থান হতে মাটি সমান করে। তিনি বলেন, যদি তোমার একান্তই করতে হয়, তবে একবার।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرٌ، حَدَّثَنَا غَالِبٌ القَطَّانُ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي شِدَّةِ الحَرِّ، فَإِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ أَحَدُنَا أَنْ يُمَكِّنَ وَجْهَهُ مِنَ الأَرْضِ بَسَطَ ثَوْبَهُ، فَسَجَدَ عَلَيْهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বিশর্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গালিব ক্বাত্ত্বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বাক্র ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আমরা আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। আমাদের কেউ মাটিতে তার চেহারা (কপাল) স্থির রাখতে সক্ষম না হলে সে তার কাপড় বিছিয়ে তার উপর সিজদা করত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۰۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كُنْتُ أَمُدُّ رِجْلِي فِي قِبْلَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُصَلِّي، فَإِذَا سَجَدَ غَمَزَنِي، فَرَفَعْتُهَا، فَإِذَا قَامَ مَدَدْتُهَا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ নাযর থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাত আদায়কালে আমি তাঁর কিব্লার দিকে পা ছড়িয়ে রাখতাম; তিনি সিজদার করার সময় আমাকে খোঁচা দিলে আমি পা সরিয়ে নিতাম; তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আবার পা ছড়িয়ে দিতাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۰ – حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ صَلَّى صَلَاةً، قَالَ: ” إِنَّ الشَّيْطَانَ عَرَضَ لِي فَشَدَّ عَلَيَّ لِيَقْطَعَ الصَّلَاةَ عَلَيَّ، فَأَمْكَنَنِي اللَّهُ مِنْهُ، فَذَعَتُّهُ وَلَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ أُوثِقَهُ إِلَى سَارِيَةٍ حَتَّى تُصْبِحُوا، فَتَنْظُرُوا إِلَيْهِ، فَذَكَرْتُ قَوْلَ سُلَيْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: رَبِّ {هَبْ لِي مُلْكًا لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي} [ص: ۳۵] فَرَدَّهُ اللَّهُ خَاسِيًا ” ثُمَّ قَالَ النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ: ” فَذَعَتُّهُ: بِالذَّالِ أَيْ خَنَقْتُهُ، وَفَدَعَّتُّهُ مِنْ قَوْلِ اللَّهِ: {يَوْمَ يُدَعُّونَ} [الطور: ۱۳]: أَيْ يُدْفَعُونَ، وَالصَّوَابُ: فَدَعَتُّهُ، إِلَّا أَنَّهُ كَذَا قَالَ، بِتَشْدِيدِ العَيْنِ وَالتَّاءِ “
মাহ্মূদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শাবাবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্নু যিয়াদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সালাত আদায় করার পর বললেনঃ শয়তান আমার সামনে এসে আমার সালাত বিনষ্ট করার জন্য আমার উপর আক্রমণ করল। তখন আল্লাহ্ আমাকে তার উপর ক্ষমতা দান করলেন, আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম। আমার ইচ্ছা হয়েছিল, তাকে কোন স্তম্ভের সাথে বেঁধে রাখি। যাতে তোমরা সকাল বেলা উঠে তাকে দেখতে পাও। তখন সুলাইমান ‘আলাইহিস সালাম -এর এ দু’আ আমার মনে পড়ে গেল, رَبِّ هَب لي مُلكاً “হে রব! আমাকে এমন এক রাজ্য দান করুন যার অধিকারী আমার পরে আর কেউ না হয়”। তখন আল্লাহ্ তাকে (শয়তানকে) অপমানিত করে দূর করে দিলেন। (আ.প্র. ১১৩১) নায্র ইব্নু শুমায়ল (রহমাহুল্লাহ) বলেন, فَذَ عَتُّهُ শব্দটি ذال সহ অর্থাৎ তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম এবং فَدَ عتُّهُ আল্লাহ্র কালাম يَومَ يُدَ عُّونَ থেকে অর্থাৎ তাদেরকে ধাক্কা মেরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সঠিক হল তবে فَدَ عَّتُّهُ তবে ع ও ت অক্ষর দুটি তাশদীদ সহ পাঠ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ قَتَادَةُ: «إِنْ أُخِذَ ثَوْبُهُ يَتْبَعُ السَّارِقَ وَيَدَعُ الصَّلَاةَ»
ক্বাতাদাহ রহমাহুল্লাহ বলেন, কাপড় যদি (চুরি করে) নিয়ে যাওয়া হয়, তবে সালাত ছেড়ে দিয়ে চোরকে অনুসরণ করবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۱ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا الأَزْرَقُ بْنُ قَيْسٍ، قَالَ: كُنَّا بِالأَهْوَازِ نُقَاتِلُ الحَرُورِيَّةَ، فَبَيْنَا أَنَا عَلَى جُرُفِ نَهَرٍ إِذَا رَجُلٌ يُصَلِّي، وَإِذَا لِجَامُ دَابَّتِهِ بِيَدِهِ، فَجَعَلَتِ الدَّابَّةُ تُنَازِعُهُ وَجَعَلَ يَتْبَعُهَا – قَالَ شُعْبَةُ: هُوَ أَبُو بَرْزَةَ الأَسْلَمِيُّ – فَجَعَلَ رَجُلٌ مِنَ الخَوَارِجِ يَقُولُ: اللَّهُمَّ افْعَلْ بِهَذَا الشَّيْخِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ الشَّيْخُ، قَالَ: إِنِّي سَمِعْتُ قَوْلَكُمْ «وَإِنِّي غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتَّ غَزَوَاتٍ – أَوْ سَبْعَ غَزَوَاتٍ – وَثَمَانِيَ وَشَهِدْتُ تَيْسِيرَهُ»، وَإِنِّي إِنْ كُنْتُ أَنْ أُرَاجِعَ مَعَ دَابَّتِي أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَدَعَهَا تَرْجِعُ إِلَى مَأْلَفِهَا فَيَشُقُّ عَلَيَّ
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আযরাক্ব ইব্নু ক্কায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, আমরা আহওয়ায শহরে হারুরী (খারিজী) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিলাম। যখন আমরা নহরের তীরে ছিলাম তখন সেখানে এক ব্যক্তি এসে সালাত আদায় করতে লাগল আর তার বাহনের লাগাম তার হাতে আছে। বাহনটি (ছূটে যাওয়ার জন্য) টানাটানি করতে লাগল, তিনিও তার অনুসরন করতে লাগলেন। রাবী শু‘বাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তিনি ছিলেন আবূ বারযাহ আসলামী রাজিআল্লাহু ‘আনহু। এ অবস্থা দেখে এক খারিজী বলে উঠলো, ইয়া আল্লাহ্! এ বৃদ্ধকে কিছু করুন। বৃদ্ধ সালাত শেষ করে বললেন- আমি তোমাদের কথা শুনেছি। আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে ছয়, সাত কিংবা আট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং আমি তাঁর সহজীকরণ লক্ষ্য করেছি। আমার বাহনটির সাথে আগপিছ হওয়া বাহনটিকে তার চারণ ভূমিতে ছেড়ে দেয়ার চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয়। কেননা, তা আমার জন্য কষ্টদায়ক হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۲ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَرَأَ سُورَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، ثُمَّ اسْتَفْتَحَ بِسُورَةٍ أُخْرَى، ثُمَّ رَكَعَ حَتَّى قَضَاهَا وَسَجَدَ، ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ فِي الثَّانِيَةِ، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَصَلُّوا، حَتَّى يُفْرَجَ عَنْكُمْ، لَقَدْ رَأَيْتُ فِي مَقَامِي هَذَا كُلَّ شَيْءٍ وُعِدْتُهُ، حَتَّى لَقَدْ رَأَيْتُ أُرِيدُ أَنْ آخُذَ قِطْفًا مِنَ الجَنَّةِ، حِينَ رَأَيْتُمُونِي جَعَلْتُ أَتَقَدَّمُ، وَلَقَدْ رَأَيْتُ جَهَنَّمَ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا، حِينَ رَأَيْتُمُونِي تَأَخَّرْتُ، وَرَأَيْتُ فِيهَا عَمْرَو بْنَ لُحَيٍّ وَهُوَ الَّذِي سَيَّبَ السَّوَائِبَ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ্ থেকে, তিনি বললেন: ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, একবার সুর্যগ্রহণ হলো। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সালাতে) দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সূরা পাঠ করলেন, অতঃপর রুকূ’ করলেন, আর তা দীর্ঘ করলেন। অতঃপর রুকূ’ হতে মাথা তুলেন এবং অন্য একটি সূরা পাঠ করতে শুরু করলেন। পরে রুকূ‘ সমাপ্ত করে সিজদা করলেন। দ্বিতীয় রাকা‘আতেও এরূপ করলেন। অতঃপর বললেনঃ এ দু’টি (চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ) আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের অন্যতম। তোমরা তা দেখলে গ্রহণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে। আমি আমার এ স্থানে দাঁড়িয়ে, আমাকে যা ওয়াদা করা হয়েছে তা সবই দেখতে পেয়েছি। এমনকি যখন তোমরা আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে দেখেছিলে তখন আমি দেখলাম যে, জান্নাতের একটি (আঙ্গুর) গুচ্ছ নেয়ার ইচ্ছা করছি এবং জাহান্নামে দেখতে পেলাম যে, তার একাংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলছে। আর যখন তোমরা আমাকে পিছনে সরে আসতে দেখেছিলে আমি দেখলাম সেখানে আম্র ইব্নু লুহাইকে যে সায়িবাহ ১ প্রথা প্রবর্তন করেছিল।
ফুটনোটঃ
১. السَوائِبَ বহুবচন, السائِبَة একবচনে – অর্থ বিমুক্ত, পরিত্যক্ত, বাঁধনমুক্ত । জাহিলী যুগে দেব-দেবীর নামে উট ছেড়ে দেওয়ার কু-প্রথা ছিল । এসব উটের দুধ পান করা এবং তাকে বাহনরূপে ব্যবহার করা অবৈধ মনে করা হত ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَيُذْكَرُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو: «نَفَخَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سُجُودِهِ فِي كُسُوفٍ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘উম্র রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য গ্রহণের সালাতে সিজদার সময় ফুঁ দিয়েছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۳ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى نُخَامَةً فِي قِبْلَةِ المَسْجِدِ، فَتَغَيَّظَ عَلَى أَهْلِ المَسْجِدِ، وَقَالَ: ” إِنَّ اللَّهَ قِبَلَ أَحَدِكُمْ، فَإِذَا كَانَ فِي صَلَاتِهِ فَلَا يَبْزُقَنَّ – أَوْ قَالَ: لَا يَتَنَخَّمَنَّ – ” ثُمَّ نَزَلَ فَحَتَّهَا بِيَدِهِ وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «إِذَا بَزَقَ أَحَدُكُمْ فَلْيَبْزُقْ عَلَى يَسَارِهِ»
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি নাফি‘ তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদের কিব্লার দিকে নাকের শ্লেষ্মা দেখতে পেয়ে মসজিদের লোকদের উপর রাগান্বিত হলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ্ তোমাদের প্রত্যেকের সামনে রয়েছেন, কাজেই তোমাদের কেউ সালাতে থাকাকালে থু থু ফেলবে না বা বর্ণনাকারী বলেছেন, নাক ঝাড়বে না। এ কথা বলার পর তিনি (মিম্বার হতে) নেমে এসে নিজের হাতে তা ঘষে ঘষে পরিষ্কার করলেন এবং ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তোমাদের কেউ যখন থুথু ফেলে তখন সে যেন তার বাঁ দিকে ফেলে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا كَانَ فِي الصَّلَاةِ، فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ، فَلَا يَبْزُقَنَّ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَلَا عَنْ يَمِينِهِ وَلَكِنْ عَنْ شِمَالِهِ تَحْتَ قَدَمِهِ اليُسْرَى»
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ক্বাতাদাহ্ থেকে শুনলাম, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন তো সে তার রবের সাথে নিবিড় আলাপে মশগুল থাকে। কাজেই সে যেন তার সামনে বা ডানে থু থু না ফেলে; তবে (প্রয়োজনে) বাঁ দিকে বা পায়ের নীচে ফেলবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
فِيهِ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ বিষয়ে সাহ্ল ইব্নু সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
মাকতাবাতুস শামেলাতে বিবরণ পাওয়া যায় নাই
….
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ النَّاسُ يُصَلُّونَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُمْ عَاقِدُو أُزْرِهِمْ مِنَ الصِّغَرِ عَلَى رِقَابِهِمْ، فَقِيلَ لِلنِّسَاءِ: «لَا تَرْفَعْنَ رُءُوسَكُنَّ، حَتَّى يَسْتَوِيَ الرِّجَالُ جُلُوسًا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু কাসীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হাযিম থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন এবং তাঁরা তাদের লুঙ্গি ছোট হবার কারনে ঘাড়ের সাথে বেঁধে রাখতেন। তাই মহিলাগণকে বলা হল, পুরুষগণ সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত তোমরা (সিজদার হতে) মাথা তুলবে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۶ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كُنْتُ أُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الصَّلَاةِ فَيَرُدُّ عَلَيَّ، فَلَمَّا رَجَعْنَا سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيَّ وَقَالَ: «إِنَّ فِي الصَّلَاةِ لَشُغْلًا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু আবী শায়বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ফুযায়ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘মাশ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি ‘আলকামাহ্ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তাঁর সালাতে সালাম করতাম। তিনি আমাকে সালামের জবাব দিতেন। আমরা (আবিসিনিয়া হতে) ফিরে এসে তাঁকে (সালাতে) সালাম করলাম। তিনি জওয়াব দিলেন না এবং পরে বললেনঃ সালাতে আছে নিমগ্নতা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۷ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ شِنْظِيرٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَةٍ لَهُ، فَانْطَلَقْتُ، ثُمَّ رَجَعْتُ وَقَدْ قَضَيْتُهَا، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيَّ، فَوَقَعَ فِي قَلْبِي مَا اللَّهُ أَعْلَمُ بِهِ، فَقُلْتُ فِي نَفْسِي: لَعَلَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَدَ عَلَيَّ أَنِّي أَبْطَأْتُ عَلَيْهِ، ثُمَّ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيَّ، فَوَقَعَ فِي قَلْبِي أَشَدُّ مِنَ المَرَّةِ الأُولَى، ثُمَّ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ عَلَيَّ، فَقَالَ: «إِنَّمَا مَنَعَنِي أَنْ أَرُدَّ عَلَيْكَ أَنِّي كُنْتُ أُصَلِّي»، وَكَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ مُتَوَجِّهًا إِلَى غَيْرِ القِبْلَةِ
আবূ মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: কাছীর ইব্নু শিন্যীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আত্বা ইব্ন রাবাহ্ থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তাঁর একটি কাজে পাঠালেন, আমি গেলাম এবং কাজটি সেরে ফিরে এলাম। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সালাম করলাম। তিনি জওয়াব দিলেন না। এতে আমার মনে এমন খটকা লাগল যা আল্লাহ্ই ভাল জানেন। আমি মনে মনে বললাম, সম্ভবত আমি বিলম্বে আসার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার আমি তাঁকে সালাম করলাম; তিনি জওয়াব দিলেন না। ফলে আমার মনে প্রথম বারের চেয়েও অধিক খটকা লাগল। (সালাত শেষে) আবার আমি তাঁকে সালাম করলাম এবার তিনি সালামের জওয়াব দিলেন এবং বললেনঃ সালাতে ছিলাম বলে তোমার সালামের জওয়াব দিতে পারিনি। তিনি তখন তাঁর বাহনের পিঠে কিব্লা হতে অন্যমুখে ছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۸ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: بَلَغَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ بِقُبَاءٍ كَانَ بَيْنَهُمْ شَيْءٌ، فَخَرَجَ يُصْلِحُ بَيْنَهُمْ فِي أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَحُبِسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَانَتِ الصَّلَاةُ، فَجَاءَ بِلَالٌ إِلَى أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ حُبِسَ، وَقَدْ حَانَتِ الصَّلَاةُ، فَهَلْ لَكَ أَنْ تَؤُمَّ النَّاسَ؟ قَالَ: نَعَمْ إِنْ شِئْتَ، فَأَقَامَ بِلَالٌ الصَّلَاةَ وَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَكَبَّرَ لِلنَّاسِ وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ يَشُقُّهَا شَقًّا، حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، فَأَخَذَ النَّاسُ فِي التَّصْفِيحِ – قَالَ سَهْلٌ: التَّصْفِيحُ: هُوَ التَّصْفِيقُ – قَالَ: وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، لَا يَلْتَفِتُ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَفَتَ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ يَأْمُرُهُ: «أَنْ يُصَلِّيَ»، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَدَهُ فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ رَجَعَ القَهْقَرَى وَرَاءَهُ حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى لِلنَّاسِ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: ” يَا أَيُّهَا النَّاسُ، مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَيْءٌ فِي الصَّلَاةِ أَخَذْتُمْ بِالتَّصْفِيحِ؟ إِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَقُلْ: سُبْحَانَ اللَّهِ ” ثُمَّ التَفَتَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ لِلنَّاسِ حِينَ أَشَرْتُ إِلَيْكَ؟» قَالَ أَبُو بَكْرٍ: مَا كَانَ يَنْبَغِي لِابْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ক্বুতায়বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, ‘আব্দুল আযীয আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ হাযিম থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা’দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছল যে, কুবায় বনূ আমর ইব্নু আওফ গোত্রে কোন ব্যাপার ঘটেছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশে তিনি কয়েকজন সাহাবীসহ বেরিয়ে গেলেন। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতোমধ্যে সালাতের সময় হয়ে গেল। বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট এসে বললেন, হে আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু! আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্মব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে সালাতের সময় উপস্থিত। আপনি কি লোকদের ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, হাঁ, যদি তুমি চাও। তখন বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু সালাতের ইক্বামাত বললেন এবং আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু এগিয়ে গেলেন এবং তাক্বীর বললেন। তখন আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ তখন তাস্ফীহ্ করতে লাগলেন। সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তাস্ফীহ্ মানে তাস্ফীক (হাতে তালি দেয়া) তিনি আরো বললেন, আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সালাতে এদিক সেদিক তাকাতেন না। মুসল্লীগণ অধিক (তালি দেয়া) করছিলে, তিনি লক্ষ্য করলে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁকে ইঙ্গিতে সালাত আদায় করার আদেশ দিলেন। তখন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর দু’হাত তুললেন এবং আল্লাহ্র হাম্দ বর্ণনা করলেন। অতঃপর পিছু হেঁটে পিছনে চলে এসে কাতারে দাঁড়ালেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামনে এগিয়ে গেলেন এবং মুসল্লীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে তিনি মুসল্লীগণের দিকে মুখ করে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমাদের কি হয়েছে? সালাতে কোন ব্যাপার ঘটলে তোমরা হাত চাপড়াতে শুরু কর কেন? হাত চাপড়ানো তো মেয়েদের জন্য। সালাতে আদায়রত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে পুরুষরা সুব্হানাল্লাহ্ বলবে। অতপর তিনি আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর দিকে লক্ষ্য করে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ বক্র! তোমাকে আমি ইঙ্গিত করা সত্ত্বেও কিসে তোমাকে সালাত আদায়ে বাধা দিল? আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা ইব্নু আবূ কুহাফার ১ জন্য সমীচীন নয়।
ফুটনোটঃ
১. আবূ কূহাফাহ, আবু বক্র রাজিআল্লাহু ‘আনহু -এর পিতা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۱۹ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «نُهِيَ عَنِ الخَصْرِ فِي الصَّلَاةِ» وَقَالَ هِشَامٌ ، وَأَبُو هِلَالٍ: عَنْ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আবূ নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, সালাতে কোমরে হাত রাখা নিষেধ করা হয়েছে। হিশাম ও আবূ হিলাল রহমাহুল্লাহ ইব্নু সীরীন রহমাহুল্লাহ-এর মাধ্যমে আবু হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۰ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «نَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ مُخْتَصِرًا»
‘আম্র ইব্নু ‘আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, কোমরে হাত রেখে সালাত আদায় করতে লোকেদের নিষেধ করা হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «إِنِّي لَأُجَهِّزُ جَيْشِي وَأَنَا فِي الصَّلَاةِ»
‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, আমি সালাতের মধ্যে আমার সেনাবাহিনী বিন্যাসের চিন্তা করে থাকি। ১
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۱ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا عُمَرُ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الحَارِثِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العَصْرَ، فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ سَرِيعًا دَخَلَ عَلَى بَعْضِ نِسَائِهِ، ثُمَّ خَرَجَ وَرَأَى مَا فِي وُجُوهِ القَوْمِ مِنْ تَعَجُّبِهِمْ لِسُرْعَتِهِ، فَقَالَ: «ذَكَرْتُ وَأَنَا فِي الصَّلَاةِ تِبْرًا عِنْدَنَا، فَكَرِهْتُ أَنْ يُمْسِيَ – أَوْ يَبِيتَ عِنْدَنَا – فَأَمَرْتُ بِقِسْمَتِهِ»
ইস্হা’ক ইব্নু মানস্বূর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাওহ্’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উমার তিনি হলেন ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ মুলায়কাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘ঊকবাহ ইব্নু হারিস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ‘আসরের সালাত আদায় করলাম। সালাম করেই তিনি দ্রুত উঠে তাঁর কোন এক সহধর্মিণীর নিকট গেলেন, অতঃপর বেরিয়ে এলেন। তাঁর দ্রুত যাওয়া আসার ফলে (উপস্থিত) সাহাবীগণের চেহারায় বিস্ময়ের আভাস দেখে তিনি বললেনঃ সালাতে আমার নিকট রাখা একটি সোনার টুক্রার কথা আমার মনে পড়ে গেল। সন্ধ্যায় বা রাতে তা আমার নিকট থাকবে আমি এটা অপছন্দ করলাম। তাই, তা বন্টন করে দেয়ার নির্দেশ দিলাম।
ফুটনোটঃ
১. জিহাদ এবং আখিরাতের কাজ বিধায় বিধায় বিশেষ পরিস্থিতিতে উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সালাতে এরূপ চিন্তা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۲ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ جَعْفَرٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ: قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا أُذِّنَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ لَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لَا يَسْمَعَ التَّأْذِينَ، فَإِذَا سَكَتَ المُؤَذِّنُ أَقْبَلَ، فَإِذَا ثُوِّبَ أَدْبَرَ، فَإِذَا سَكَتَ أَقْبَلَ، فَلَا يَزَالُ، بِالْمَرْءِ يَقُولُ لَهُ: اذْكُرْ مَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ حَتَّى لَا يَدْرِيَ كَمْ صَلَّى ” قَالَ أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: «إِذَا فَعَلَ أَحَدُكُمْ ذَلِكَ، فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ قَاعِدٌ»، وَسَمِعَهُ أَبُو سَلَمَةَ، مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জা‘ফার থেকে, তিনি আ‘রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে,, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের আযান হলে শয়তান পিঠ ফিরিয়ে পালায় যাতে সে আযান শুনতে না পায়। তখন তার পশ্চাদ-বায়ু নিঃসরণ হতে থাকে। মুআয্যিন আযান শেষে নীরব হলে সে আবার এগিয়ে আসে। আবার ইক্বামাত বলা হলে পালিয়ে যায়। মুআয্যিন (ইক্বামাত) শেষ করলে এগিয়ে আসে। তখন সে মুসল্লীকে বলতে থাকে, (ওটা) স্মরন কর, যে বিষয় তার স্মরনে ছিল না। শেষ পর্যন্ত কত রাক‘আত সালাত আদায় করল তা মনে করতে পারে না। আবূ সালামা ইব্নু ‘আবদুর (রহঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ এরূপ অবস্থায় পড়লে (শেষ বৈঠকে) বসা অবস্থায় যেন দু’টি সিজদা করে। এ কথা আবূ সালামা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে শুনেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۳ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، قَالَ: قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: يَقُولُ النَّاسُ: أَكْثَرَ أَبُو هُرَيْرَةَ، فَلَقِيتُ رَجُلًا، فَقُلْتُ: بِمَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ البَارِحَةَ فِي العَتَمَةِ؟ فَقَالَ: لَا أَدْرِي؟ فَقُلْتُ: لَمْ تَشْهَدْهَا؟ قَالَ: بَلَى، قُلْتُ: لَكِنْ أَنَا أَدْرِي «قَرَأَ سُورَةَ كَذَا وَكَذَا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উছমান ইব্নু ‘উমারআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি বললেন: আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, “লোকে বলে আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু অধিক হাদীস বর্ণনা করেছে। এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ হলে আমি জিজ্ঞেস করলাম। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম গতরাতে ‘ইশার সালাতে কোন সূরা পড়েছেন? লোকটি বলল, আমি জানিনা। আমি বললাম, কেন, তুমি কি সে সালাতে উপস্থিত ছিলে না? সে বলল, হ্যাঁ, ছিলাম। আমি বললাম, আমি কিন্তু জানি তিনি অমুক অমুক সূরা পড়েছেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ: «صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ مِنْ بَعْضِ الصَّلَوَاتِ، ثُمَّ قَامَ، فَلَمْ يَجْلِسْ، فَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ، فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ وَنَظَرْنَا تَسْلِيمَهُ كَبَّرَ قَبْلَ التَّسْلِيمِ، فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ، ثُمَّ سَلَّمَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক ইব্নু আনাস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘আবদুর রহ্’মান আ‘রাজ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহায়নাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, কোন এক সালাতে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’রাক‘আত আদায় করে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুসল্লীগণ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। যখন তাঁর সালাত সমাপ্ত করার সময় হলো এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম, তখন তিনি সালাম ফিরানোর পূর্বে তাক্বীর বলে বসে বসেই দু’টি সিজদা করলেন। অতঃপর সালাম ফিরালেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ مِنَ اثْنَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ لَمْ يَجْلِسْ بَيْنَهُمَا، فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ بَعْدَ ذَلِكَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি ‘আবদুর রহ্’মান আ‘রাজ থেকে, তিনি আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহাইনাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহ্রের দু’রাক‘আত আদায় করে দাঁড়িয়ে গেলেন। দু’রাক‘আতের পর তিনি বসলেন না। সালাত শেষ হয়ে গেলে তিনি দু’টি সিজদা করলেন এবং অতঃপর সালাম ফিরালেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۶ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الحَكَمِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الظُّهْرَ خَمْسًا، فَقِيلَ لَهُ: أَزِيدَ فِي الصَّلَاةِ؟ فَقَالَ: «وَمَا ذَاكَ؟» قَالَ: صَلَّيْتَ خَمْسًا، فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ بَعْدَ مَا سَلَّمَ
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’কাম থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি ‘আল্ক্বামাহ্ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহ্রের সালাত পাঁচ রাক‘আত আদায় করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, সালাত কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেন, এ প্রশ্ন কেন? (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি তো পাঁচ রাক‘আত সালাত আদায় করেছেন। অতএব তিনি সালাম ফিরানোর পর দু’টি সিজদা করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۷ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الظُّهْرَ – أَوِ العَصْرَ – فَسَلَّمَ، فَقَالَ لَهُ ذُو اليَدَيْنِ: الصَّلَاةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَقَصَتْ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهِ: «أَحَقٌّ مَا يَقُولُ؟» قَالُوا: نَعَمْ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ، ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ قَالَ سَعْدٌ: وَرَأَيْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ صَلَّى مِنَ المَغْرِبِ رَكْعَتَيْنِ، فَسَلَّمَ وَتَكَلَّمَ، ثُمَّ صَلَّى مَا بَقِيَ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، وَقَالَ: «هَكَذَا فَعَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘দ ইব্ন ইব্রাহীম থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিয়ে যুহর বা আসরের সালাত আদায় করলেন এবং সালাম ফিরালেন। তখন যুল-ইয়াদাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া আল্লাহ্র রাসূল! সালাত কি কম হয়ে গেল? নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে জিজ্ঞেস করলেন, সে যা বলছে, তা কি ঠিক? তাঁরা বললেন, হাঁ। তখন তিনি আরও দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। পরে দু’টি সিজদা করলেন। সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র-কে দেখেছি, তিনি মাগরিবের দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন এবং কথা বললেন। পরে অবশিষ্ট সালাত আদায় করে দু’টি সিজদা করলেন এবং বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রকম করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَسَلَّمَ أَنَسٌ، وَالحَسَنُ وَلَمْ يَتَشَهَّدَا وَقَالَ قَتَادَةُ: «لَا يَتَشَهَّدُ»
আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু ও হাসান (বাসরী) রহমাহুল্লাহ সালাম ফিরিয়েছেন। কিন্তু তাশাহ্হুদ পড়েননি। কাতাদা রহমাহুল্লাহ বলেছেন, তাশাহ্হুদ পড়বে না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۸ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي تَمِيمَةَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ، فَقَالَ لَهُ ذُو اليَدَيْنِ: أَقَصُرَتِ الصَّلَاةُ، أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصَدَقَ ذُو اليَدَيْنِ؟» فَقَالَ النَّاسُ: نَعَمْ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ، ثُمَّ رَفَعَ ” حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ عَلْقَمَةَ، قَالَ: قُلْتُ لِمُحَمَّدٍ فِي سَجْدَتَيِ السَّهْوِ تَشَهُّدٌ؟ قَالَ: لَيْسَ فِي حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ.
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক ইব্নু আনাস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আয়্য়ূব ইব্ন আবূ তামীমাহ্ সাখতিয়ানী থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন সীরীন থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’রাক‘আত আদায় করে সালাত শেষ করলেন। যুল-ইয়াদাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সালাত কি কম করে দেয়া হয়েছে, না কি আপনি ভুলে গেছেন? আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, যুল-ইয়াদাইন কি সত্য বলেছে? মুসল্লীগণ বললেন, হাঁ। তখন আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে আরও দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি সালাম ফিরালেন এবং তাক্বীর বললেন, পরে সিজদা করলেন, স্বাভাবিক সিজদা মতো বা তার চেয়ে দীর্ঘ। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৪৮২] [আ.প্র. ১১৪৮, ই.ফা. ১১৫৫] ১২২৮/১. সালামা ইব্নু ‘আলক্বামাহ রহমাহুল্লাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদ (ইব্নু সীরীন) রহমাহুল্লাহ-কে জিজ্ঞেস করলাম, সিজদা সাহ্উর পর তাশাহুদ আছে কি? তিনি বললেন, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর হাদীসে তা নেই। [আ.প্র. ১১৪৯, ই.ফা. ১১৫৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۲۹ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِحْدَى صَلَاتَيِ العَشِيِّ – قَالَ مُحَمَّدٌ: وَأَكْثَرُ ظَنِّي العَصْرَ – رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ قَامَ إِلَى خَشَبَةٍ فِي مُقَدَّمِ المَسْجِدِ، فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهَا، وَفِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَهَابَا أَنْ يُكَلِّمَاهُ، وَخَرَجَ سَرَعَانُ النَّاسِ فَقَالُوا: أَقَصُرَتِ الصَّلَاةُ؟ وَرَجُلٌ يَدْعُوهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذُو اليَدَيْنِ، فَقَالَ: أَنَسِيتَ أَمْ قَصُرَتْ؟ فَقَالَ: لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تُقْصَرْ، قَالَ: «بَلَى قَدْ نَسِيتَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَكَبَّرَ، ثُمَّ وَضَعَ رَأْسَهُ، فَكَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَكَبَّرَ»
হা’ফ্স ইব্নু উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিকালের কোন এক সালাত দু’রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরালেন। মুহাম্মাদ বলেন, আমার প্রবল ধারণা, তা ছিল আসরের সালাত। অতপর মসজিদের একটি কাষ্ঠ খণ্ডের নিকট গিয়ে দাঁড়ালেন এবং তার উপর হাত রাখলেন। মুসল্লীগণের ভিতরে সামনের দিকে আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু ও ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু ছিলেন। তাঁরা উভয়ে তাঁর সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। তাড়াহুড়াকারী মুসল্লীগণ বেরিয়ে পড়লেন। তাঁরা বলাবলি করেত লাগলেন, সালাত কি কমিয়ে দেয়া হয়েছে? কিন্তু এক ব্যক্তি, যাঁকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যূল-ইয়াদাইন বলে ডাকতেন, জিজ্ঞেস করল আপনি কি ভুলে গেছেন, না কি সালাত কমিয়ে দেয়া হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলিনি আর সালাতও কম করা হয়নি। তখন তাকে বলা হল যে, আপনি ভুলে গেছেন। তখন তিনি দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন। অতঃপর তাক্বীর বলে সিজদা করলেন, স্বাভাবিক সিজদার ন্যায় বা তার চেয়ে দীর্ঘ। অতঃপর মাথা উঠিয়ে আবার তাক্বীর বলে মাথা রাখলেন অর্থাৎ তাক্বীর বলে সিজদায় গিয়ে স্বাভাবিক সিজদার মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন। অতঃপর মাথা উঠিয়ে তাক্বীর বললেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۰ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ الأَعْرَجِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ الأَسْدِيِّ، حَلِيفِ بَنِي عَبْدِ المُطَّلِبِ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ فِي صَلَاةِ الظُّهْرِ وَعَلَيْهِ جُلُوسٌ، فَلَمَّا أَتَمَّ صَلَاتَهُ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، فَكَبَّرَ فِي كُلِّ سَجْدَةٍ وَهُوَ جَالِسٌ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ، وَسَجَدَهُمَا النَّاسُ مَعَهُ مَكَانَ مَا نَسِيَ مِنَ الجُلُوسِ» تَابَعَهُ ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ ابْنِ شِهَابٍ فِي التَّكْبِيرِ
ক্বুতায়বাহ্ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আ‘রাজ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহাইনাহ আসাদী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, যিনি বানূ ‘আবদুল মুত্তালিবের সঙ্গে মৈত্রী চুক্তিবদ্ধ ছিলেন তাঁর হতে বর্ণিত। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহ্রের সালাতে (দু’রাক‘আত আদায় করার পর) না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। সালাত পূর্ণ করার পর সালাম ফিরাবার পূর্বে তিনি বসা অবস্থায় ভুলে যাওয়া বৈঠকের স্থলে দু’টি সিজদা সম্পূর্ণ করলেন, প্রতি সিজদায় তাক্বীর বললেন। মুসল্লীগণও তাঁর সঙ্গে এ দু’টি সিজদা করল। ইব্নু শিহাব হতে তাক্বীরের কথা বর্ণনায় ইব্নু জুরাইজ লায়স-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۱ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الدَّسْتُوَائِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا نُودِيَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ، وَلَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لَا يَسْمَعَ الأَذَانَ، فَإِذَا قُضِيَ الأَذَانُ أَقْبَلَ، فَإِذَا ثُوِّبَ بِهَا أَدْبَرَ، فَإِذَا قُضِيَ التَّثْوِيبُ، أَقْبَلَ حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ المَرْءِ وَنَفْسِهِ، يَقُولُ: اذْكُرْ كَذَا وَكَذَا، مَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ، حَتَّى يَظَلَّ الرَّجُلُ إِنْ يَدْرِي كَمْ صَلَّى، فَإِذَا لَمْ يَدْرِ أَحَدُكُمْ كَمْ صَلَّى ثَلَاثًا أَوْ أَرْبَعًا، فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ “
মু‘আয ইব্নু ফাযালাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাব ইব্নু আবূ ‘আব্দুল্লাহ্ দাস্তুয়াঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাছীর থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যখন সালাতের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান পিঠ ফিরিয়ে পালায় যাতে আযান শুনতে না পায় আর তার পশ্চাদ-বায়ু সশব্দে নির্গত হতে থাকে। আযান শেষ হয়ে গেলে সে এগিয়ে আসে। আবার সালাতের জন্য ইক্বামাত দেওয়া হলে সে পিঠ ফিরিয়ে পালায়। ইক্বামাত শেষ হয়ে গেলে আবার ফিরে আসে। এমনকি সে সালাত আদায়রত ব্যক্তির মনে ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করে এবং বলতে থাকে, অমুক অমুক বিষয় স্মরন কর, যা তার স্মরণে ছিলনা। এভাবে সে ব্যক্তি কত রাক‘আত সালাত আদায় করেছে তা স্মরন করতে পারে না। তাই তোমাদের কেউ তিন রাক‘আত বা চার রাক‘আত সালাত আদায় করেছে, তা মনে রাখতে না পারলে বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَسَجَدَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «سَجْدَتَيْنِ بَعْدَ وِتْرِهِ»
ইব্নু আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বিতরের পর দুটি সিজদা (সাহ্উ) করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۲ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ يُصَلِّي جَاءَ الشَّيْطَانُ، فَلَبَسَ عَلَيْهِ حَتَّى لَا يَدْرِيَ كَمْ صَلَّى، فَإِذَا وَجَدَ ذَلِكَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ»
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ ইব্ন ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ সালাতে দাঁড়ালে শয়তান এসে তাকে সন্দেহে ফেলে, এমনকি সে বুঝতে পারে না যে, কত রাক‘আত সালাত আদায় করেছে। তোমাদের কারো এ অবস্থা হলে সে যেন বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা করে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۳ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، وَالمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَزْهَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، أَرْسَلُوهُ إِلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَقَالُوا: اقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنَّا جَمِيعًا، وَسَلْهَا عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ صَلَاةِ العَصْرِ، وَقُلْ لَهَا: إِنَّا أُخْبِرْنَا عَنْكِ أَنَّكِ تُصَلِّينَهُمَا، وَقَدْ بَلَغَنَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْهَا، وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَكُنْتُ أَضْرِبُ النَّاسَ مَعَ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ عَنْهَا، فَقَالَ كُرَيْبٌ: فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَبَلَّغْتُهَا مَا أَرْسَلُونِي، فَقَالَتْ: سَلْ أُمَّ سَلَمَةَ، فَخَرَجْتُ إِلَيْهِمْ، فَأَخْبَرْتُهُمْ بِقَوْلِهَا، فَرَدُّونِي إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ بِمِثْلِ مَا أَرْسَلُونِي بِهِ إِلَى عَائِشَةَ، فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَى عَنْهَا، ثُمَّ رَأَيْتُهُ يُصَلِّيهِمَا حِينَ صَلَّى العَصْرَ، ثُمَّ دَخَلَ عَلَيَّ وَعِنْدِي نِسْوَةٌ مِنْ بَنِي حَرَامٍ مِنَ الأَنْصَارِ، فَأَرْسَلْتُ إِلَيْهِ الجَارِيَةَ، فَقُلْتُ: قُومِي بِجَنْبِهِ فَقُولِي لَهُ: تَقُولُ لَكَ أُمُّ سَلَمَةَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، سَمِعْتُكَ تَنْهَى عَنْ هَاتَيْنِ، وَأَرَاكَ تُصَلِّيهِمَا، فَإِنْ أَشَارَ بِيَدِهِ، فَاسْتَأْخِرِي عَنْهُ، فَفَعَلَتِ الجَارِيَةُ، فَأَشَارَ بِيَدِهِ، فَاسْتَأْخَرَتْ عَنْهُ، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «يَا بِنْتَ أَبِي أُمَيَّةَ، سَأَلْتِ عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ العَصْرِ، وَإِنَّهُ أَتَانِي نَاسٌ مِنْ عَبْدِ القَيْسِ، فَشَغَلُونِي عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ فَهُمَا هَاتَانِ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন বুকায়র থেকে, তিনি কুরায়ব থেকে, তিনি বলেন- ইব্নু ‘আব্বাস, মিসওয়ার ইব্নু মাখরামাহ এবং ‘আবদুর রহমান ইব্নু আযহার রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট পাঠালেন এবং বলে দিলেন, তাঁকে আমাদের সকলের তরফ হতে সালাম পৌঁছিয়ে আসরের পরের দু’রাক‘আত সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। তাঁকে একথাও বলবে যে, আমরা খবর পেয়েছি যে, আপনি সে দু’রাক‘আত আদায় করেন, অথচ আমাদের নিকট পৌঁছেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে দু’রাক‘আত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু সংবাদে আরও বললেন যে, আমি ‘উমর ইব্নু খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর সাথে এ সালাতের কারণে লোকদের মারধোর করতাম। কুরায়ব বলেন, আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট গিয়ে তাঁকে তাঁদের পয়গাম পৌঁছিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, উম্মু সালামা্ রাজিআল্লাহু ‘আনহা-কে জিজ্ঞেস কর। [কুরায়ব বলেন] আমি সেখান হতে বের হয়ে তাঁদের নিকট গেলাম এবং তাঁদেরকে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর কথা জানালাম। তখন তাঁরা আমাকে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট যে বিষয় নিয়ে পাঠিয়েছিলেন, তা নিয়ে পুনরায় উম্মু সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট পাঠালেন। উম্মু সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বললেন, আমিও নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তা নিষেধ করতে শুনেছি। অথচ অতঃপর তাঁকে আসরের সালাতের পর তা আদায় করতেও দেখেছি। একদা তিনি ‘আসরের সালাতের পর আমার ঘরে আসলেন। তখন আমার নিকট বনূ হারাম গোত্রের আনসারী কয়েকজন মহিলা উপস্থিত ছিলেন। আমি বাঁদীকে এ বলে তাঁর নিকট পাঠালাম যে, তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলবে, উম্মে সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আপনার নিকট জানতে চেয়েছেন, আপনাকে (‘আসরের পর সালাতের) দু’রাক‘আত নিষেধ করতে শুনেছি; অথচ দেখছি, আপনি তা আদায় করছেন? যদি তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেন, তাহলে পিছনে সরে থাকবে, বাঁদী তা-ই করল। তিনি ইঙ্গিত করলেন, সে পিছনে সরে থাকল। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, হে আবূ উমায়্যার কন্যা! ‘আসরের পরের দু’রাক‘আত সালাত সম্পর্কে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করেছ। আবদুল কায়স গোত্রের কিছু লোক আমার নিকট এসেছিল। তাদের কারণে যুহ্রের পরের দু’রাক‘আত আদায় করতে না পেরে (তাদেরকে নিয়ে) ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। এ দু’রাক‘আত সে দু’রাক‘আত। ১
ফুটনোটঃ
১. ঘটনাটি একবারের হলেও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্ট্যের কারনে তা নিয়মিত সালাতে পরিণত হয়। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন ‘আমাল একবার শুরু করলে তা নিয়মিত করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَهُ كُرَيْبٌ: عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
কুরাইব রহমাহুল্লাহ উম্মু সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে এ সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۴ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَلَغَهُ أَنَّ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ، كَانَ بَيْنَهُمْ شَيْءٌ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصْلِحُ بَيْنَهُمْ فِي أُنَاسٍ مَعَهُ، فَحُبِسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَحَانَتِ الصَّلَاةُ، فَجَاءَ بِلَالٌ إِلَى أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ حُبِسَ، وَقَدْ حَانَتِ الصَّلَاةُ، فَهَلْ لَكَ أَنْ تَؤُمَّ النَّاسَ؟ قَالَ: نَعَمْ إِنْ شِئْتَ، فَأَقَامَ بِلَالٌ، وَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَكَبَّرَ لِلنَّاسِ وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ، حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، فَأَخَذَ النَّاسُ فِي التَّصْفِيقِ، وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ لَا يَلْتَفِتُ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَفَتَ، فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَأْمُرُهُ: «أَنْ يُصَلِّيَ» فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَدَيْهِ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَرَجَعَ القَهْقَرَى وَرَاءَهُ حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، فَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى لِلنَّاسِ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: ” يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَيْءٌ فِي الصَّلَاةِ، أَخَذْتُمْ فِي التَّصْفِيقِ إِنَّمَا التَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَقُلْ: سُبْحَانَ اللَّهِ، فَإِنَّهُ لَا يَسْمَعُهُ أَحَدٌ حِينَ يَقُولُ: سُبْحَانَ اللَّهِ إِلَّا التَفَتَ، يَا أَبَا بَكْرٍ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ لِلنَّاسِ حِينَ أَشَرْتُ إِلَيْكَ ” فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: مَا كَانَ يَنْبَغِي لِابْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ক্বুতায়বাহ্ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়া‘ক্বূব ইব্ন ‘আব্দুর রহ্মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ হা’যিম থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা‘দ সা‘ঈদী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট সংবাদ পৌঁছে যে, বানূ আমর ইব্নু আওফ-এ কিছু ঘটেছে। তাদের মধ্যে আপোষ করে দেয়ার উদ্দেশে তিনি কয়েকজন সাহাবীসহ বেরিয়ে গেলেন। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতোমধ্যে সালাতের সময় হয়ে গেল। বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট এসে বললেন, হে আবূ বক্র! আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে সালাতের সময় হয়ে গেছে, আপনি কি সালাতে লোকদের ইমামাত করতে প্রস্তুত আছেন? তিনি বললেন, হাঁ, যদি তুমি চাও। তখন বিলাল রাজিআল্লাহু ‘আনহু ইক্বামাত বললেন এবং আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সামনে এগিয়ে গিয়ে লোকদের জন্য তাক্বীর বললেন। এদিকে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলেন এবং কাতারের ভিতর দিয়ে হেঁটে (প্রথম) কাতারে এসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুসল্লীগণ তখন হাততালি দিতে লাগলেন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর অভ্যাস ছিল যে, সালাতে এদিক সেদিক তাকাতেন না। মুসল্লীগণ যখন অধিক পরিমানে হাতাতালি দিতে লাগলেন, তখন তিনি সেদিকে তাকালেন এবং আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখতে পেলেন। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ইঙ্গিত করে সালাত আদায় করতে থাকার নির্দেশ দিলেন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু দু’হাত তুলে আল্লাহ্র হাম্দ বর্ণনা করলেন এবং পিছনের দিকে সরে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামনে এগিয়ে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে মুসল্লীগণের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, হে লোক সকল! তোমাদের কি হয়েছে, সালাতে কোন ব্যাপার ঘটলে তোমরা হাততালি দিতে থাক কেন? হাততালি তো মেয়েদের জন্য। কারো সালাতের মধ্যে কোন সমস্যা দেখা দিলে সে যেন ‘সুবহানাল্লাহ্’ বলে। কারণ, কেউ অন্যকে সুবহানাল্লাহ্ বলতে শুনলে অবশ্যই সেদিকে লক্ষ্য করবে। অতঃপর তিনি বললেন, হে আবূ বক্র! তোমাকে আমি ইঙ্গিত করা সত্ত্বেও কিসে তোমাকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বাধা দিল? আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, কুহাফার ছেলের জন্য এ সমীচীন নয় যে, সে আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়ে সালাত আদায় করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۵ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا الثَّوْرِيُّ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ فَاطِمَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ: دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، وَهِيَ «تُصَلِّي قَائِمَةً وَالنَّاسُ قِيَامٌ»، فَقُلْتُ: مَا شَأْنُ النَّاسِ؟ «فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا إِلَى السَّمَاءِ»، فَقُلْتُ: آيَةٌ؟ فَقَالَتْ بِرَأْسِهَا: «أَيْ نَعَمْ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ছাওরী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি ফাত্বিমাহ্ থেকে, তিনি আসমা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট গেলাম, তখন তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, আর লোকেরাও সালাতে দাঁড়ানো ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, লোকদের অবস্থা কী? তখন তিনি তাঁর মাথা দ্বারা আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন। আমি বললাম, এটা কি নিদর্শন? তিনি আবার তাঁর মাথার ইঙ্গিতে বললেন, হাঁ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۶ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ وَهُوَ شَاكٍ جَالِسًا، وَصَلَّى وَرَاءَهُ قَوْمٌ قِيَامًا، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنِ اجْلِسُوا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا»
ইসমা‘ঈল ইব্নু আবূ আওয়াস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর অসুস্থ অবস্থায় তাঁর ঘরে বসে সালাত আদায় করছিলেন। একদল সাহাবী তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। তিনি তাঁদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন, বসে যাও। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাকে অনুসরণ করার জন্য। কাজেই তিনি রুকূ’ করলে তোমরা রুকূ’ করবে; আর তিনি মাথা উঠালে তোমরাও মাথা উঠাবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقِيلَ لِوَهْبِ بْنِ مُنَبِّهٍ: أَلَيْسَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مِفْتَاحُ الجَنَّةِ؟ قَالَ: «بَلَى، وَلَكِنْ لَيْسَ مِفْتَاحٌ إِلَّا لَهُ أَسْنَانٌ، فَإِنْ جِئْتَ بِمِفْتَاحٍ لَهُ أَسْنَانٌ فُتِحَ لَكَ، وَإِلَّا لَمْ يُفْتَحْ لَكَ»
ওয়াহ্হাব ইব্নু মুনাব্বিহ্ রহমাহুল্লাহ-কে জিজ্ঞেস করা হল, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” কি জান্নাতের চাবি নয়? উত্তরে তিনি বললেন, অবশ্যই। তবে যে কোন চাবির দাঁত থাকে। তুমি দাঁত যুক্ত চাবি ১ আনতে পারলে তোমার জন্য (জান্নাতের) দরজা খুলে দেয়া হবে। অন্যথায় তোমার জন্য খোলা হবে না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۷ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا وَاصِلٌ الأَحْدَبُ، عَنِ المَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” أَتَانِي آتٍ مِنْ رَبِّي، فَأَخْبَرَنِي – أَوْ قَالَ: بَشَّرَنِي – أَنَّهُ: مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الجَنَّةَ ” قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: «وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ»
মূসা ইব্নু ইসাম‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মাহ্দী ইব্নু মায়মূনা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াসিলুল আহ্’দাব্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মা‘রূব ইব্ন সুওয়ায়্দ থেকে, তিনি আবূ যার্ (গিফারী) রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ একজন আগন্তুক [জিব্রীল ‘আলইহি ওয়া সাল্লাম] আমার প্রতিপালকের নিকট হতে এসে আমাকে খবর দিলেন অথবা তিনি বলেছেন, আমাকে সুসংবাদ দিলেন, আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে? তিনি বললেনঃ যদিও সে যিনা করে থাকে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে। ২
ফুটনোটঃ
১. দাঁত বিশিষ্ট চাবি বলতে যাবতীয় সৎকর্মকে বুঝানো হয়েছে।
২. কৃত কর্মের শাস্তি ভোগ অথবা ক্ষমা লাভের পরই সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। কারণ কবীরাহ্ গুনাহে লিপ্ত হলেই মানুষ ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায় না। হাদীসটি মুসলিম নামধারী চরমপন্থী দল খারিজীদের আকীদার প্রতিবাদে একটি মযবুত দলীল। ওদের ধারনা মানুষ কবীরাহ্ গুনাহে লিপ্ত হলেই কাফির হয়ে যায় (নাউযুবিল্লাহ)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۸ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا شَقِيقٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ» وَقُلْتُ أَنَا: «مَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الجَنَّةَ»
‘উমার ইব্নু হা’ফ্স্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আ‘মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শাক্বীক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ (ইব্নু মাস’ঊদ) রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন; আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে আল্লাহর সঙ্গে শির্ক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুর শির্ক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۳۹ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَشْعَثِ، قَالَ: سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: ” أَمَرَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِسَبْعٍ، وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ: أَمَرَنَا بِاتِّبَاعِ الجَنَائِزِ، وَعِيَادَةِ المَرِيضِ، وَإِجَابَةِ الدَّاعِي، وَنَصْرِ المَظْلُومِ، وَإِبْرَارِ القَسَمِ، وَرَدِّ السَّلَامِ، وَتَشْمِيتِ العَاطِسِ، وَنَهَانَا عَنْ: آنِيَةِ الفِضَّةِ، وَخَاتَمِ الذَّهَبِ، وَالحَرِيرِ، وَالدِّيبَاجِ، وَالقَسِّيِّ، وَالإِسْتَبْرَقِ “
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আশ্‘আছ থেকে, তিনি বললেন: আমি মু‘আবিয়াহ্ ইব্ন সুওয়ায়্দ ইব্ন মুক্বার্রিন থেকে শুনলাম, তিনি বারা’আ ইব্নু ‘আযিব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাতটি বিষয়ে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সাতটি বিষয়ে আমাদের নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন- ১. জানাযার অনুগমন করতে, ২. রুগ্ন ব্যক্তির খোঁজ-খবর নিতে, ৩. দা’ওয়াত দাতার দা’ওয়াত গ্রহণ করতে, ৪. মাযলূমকে সাহায্য করতে, ৫. কসম হতে দায়মুক্ত করতে, ৬. সালামের জবাব দিতে এবং ৭. হাঁচিদাতাকে (ইয়ারহামুকাল্লাহু বলে) সন্তুস্ট করতে। আর তিনি নিষেধ করেছেন- ১. রৌপ্যের পাত্র ১, ২. স্বর্ণের আংটি, ৩. রেশম, ৪. দীবাজ, ৫. কাস্সী (কেস্ রেশম), ৬. ইস্তিব্রাক (তসর জাতীয় রেশম) ২ ব্যবহার করতে। ৩
ফুটনোটঃ
১. স্বর্ণের অলংকার ও রেশমের পোশাক পুরুষদের জন্য হারাম, নারীদের জন্যে বৈধ। তবে শরীরে চুলকানী বা ঘা ইত্যাদির কারণে পুরুষদের জন্যেও রেশমের পোশাক ব্যবহার বৈধ।
২. স্বর্ণ-রৌপ্যের পাত্র সকল মুসলমানদের জন্য হারাম। তবে কোন পাত্র ভেঙ্গে গেলে তা সোনা-রূপার তার দিয়ে জোড়া ও ঝালাই দেয়া জায়িয।
৩. এ হাদীসে নিষেধকৃত ছয়টির উল্লেখ করা আছে। সপ্তম বিষয়টি এই কিতাবের ‘সোনার আংটি’ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۰ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” حَقُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِمِ خَمْسٌ: رَدُّ السَّلَامِ، وَعِيَادَةُ المَرِيضِ، وَاتِّبَاعُ الجَنَائِزِ، وَإِجَابَةُ الدَّعْوَةِ، وَتَشْمِيتُ العَاطِسِ ” تَابَعَهُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، وَرَوَاهُ سَلَامَةُ بْنُ رَوْحٍ، عَنْ عُقَيْلٍ
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু আবূ সালামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আওযা‘ঈ থেকে, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: সা ‘ঈদ ইব্নু মুসায়্য়েব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি যে, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক্ পাঁচটিঃ ১. সালামের জবাব দেয়া, ২. অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেয়া, ৩. জানাযার পশ্চাদানুসরণ করা, ৪. দা’ওয়াত কবূল করা এবং ৫. হাঁচিদাতাকে খুশী করা (আল-হামদু লিল্লাহর জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা)। আবদুর রায্যাক রহমাহুল্লাহ ‘আমর ইব্নু আবূ সালামা রহমাহুল্লাহ-এর অনুসরণ করেছেন। আবদুর রায্যাক রহমাহুল্লাহ বলেন, আমাকে মা’মার রহমাহুল্লাহ -এরূপ অবহিত করেছেন এবং এ হাদীস সালামা রহমাহুল্লাহ ‘উকাইল রহমাহুল্লাহ হতে রিওয়ায়াত করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۱ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَعْمَرٌ وَيُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرَتْهُ، قَالَتْ: أَقْبَلَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى فَرَسِهِ مِنْ مَسْكَنِهِ بِالسُّنْحِ حَتَّى نَزَلَ، فَدَخَلَ المَسْجِدَ، فَلَمْ يُكَلِّمِ النَّاسَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَتَيَمَّمَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مُسَجًّى بِبُرْدِ حِبَرَةٍ، فَكَشَفَ عَنْ وَجْهِهِ، ثُمَّ أَكَبَّ عَلَيْهِ، فَقَبَّلَهُ، ثُمَّ بَكَى، فَقَالَ: «بِأَبِي أَنْتَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، لَا يَجْمَعُ اللَّهُ عَلَيْكَ مَوْتَتَيْنِ، أَمَّا المَوْتَةُ الَّتِي كُتِبَتْ عَلَيْكَ فَقَدْ مُتَّهَا»
বিশ্র ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: মা‘মার এবং ইঊনুস আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: আবূ সালামা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আমাকে বলেছেন, (রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মৃত্যুর খবর পেয়ে) আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সুন্হ’ -এ অবস্থিত তাঁর বাড়ি হতে ঘোড়ায় চড়ে এলেন এবং নেমে মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে লোকজনদের সঙ্গে কোন কথা না বলে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর ঘরে প্রবেশ করে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দিকে অগ্রসর হলেন। তখন তিনি একখানি ‘হিবারাহ’ ইয়ামানী চাদরে আবৃত ছিলেন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুখমন্ডল উন্মুক্ত করে তাঁর উপর ঝুকে পড়লেন এবং চুমু খেলেন, অতঃপর ক্রন্দন করতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আল্লাহ্ আপনার জন্য দুই মৃত্যু একত্র করবেন না। তবে যে মৃত্যু আপনার জন্য অবধারিত ছিল তা তো আপনি কবূল করেছেন। আবূ সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে খবর দিয়েছিলেন যে, (তারপর) আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বাহিরে এলেন। তখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু লোকজনের সাথে বাক্যালাপ করছিলেন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন। তিনি তা মানলেন না। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন, তিনি তা মানলেন না। তখন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু কালিমা-ই-শাহাদাতের দ্বারা (বক্তব্য) আরম্ভ করলেন। লোকেরা ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে ছেড়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আম্মা বা’দু, তোমাদের মাঝে যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইবাদত করতে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যই মারা গেছেন। আর যারা মহান আল্লাহর ইবাদত করতে, নিশ্চয় আল্লাহ্ চিরঞ্জীব, অমর। মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেনঃ وَمَا مُحَمَّدٌ الَّا رَسُوْلٌ …. الشَّاكِرِينَ، (যার অর্থ) মুহাম্মাদ একজন রসূল মাত্র আর কিছু নন। তার পূর্বেও অনেক রসূল চলে গেছেন। অতএব যদি তিনি মারা যান অথবা নিহত হন তাহলে কি তোমরা পায়ের গোড়ালিতে ভর করে পেছনে ফিরে যাবে? আর যদি কেউ সেরূপ পেছনে ফিরেও যায়, তবে সে কখনও আল্লাহর বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ অতি সত্বর কৃতজ্ঞদের পুরস্কার দিবেন-(আল-ইমরানঃ ১৪৪)। আল্লাহর কসম, মনে হচ্ছিল যেন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর তিলওয়াত করার পূর্বে লোকদের জানাই ছিল না যে, আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেছেন। এখনই যেন লোকেরা আয়াতখানি তার কাছ থেকে পেলেন। প্রতিটি মানুষকেই তখন ঐ আয়াত তিলায়াত করতে শোনা গেল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: فَأَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ خَرَجَ، وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُكَلِّمُ النَّاسَ، فَقَالَ: «اجْلِسْ»، فَأَبَى، فَقَالَ : «اجْلِسْ»، فَأَبَى، فَتَشَهَّدَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَمَالَ إِلَيْهِ النَّاسُ، وَتَرَكُوا عُمَرَ، فَقَالَ: ” أَمَّا بَعْدُ، فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ يَعْبُدُ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَإِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ مَاتَ، وَمَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ، فَإِنَّ اللَّهَ حَيٌّ لَا يَمُوتُ، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: {وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ} [آل عمران: ۱۴۴] إِلَى {الشَّاكِرِينَ} [آل عمران: ۱۴۴] ” وَاللَّهِ لَكَأَنَّ النَّاسَ لَمْ يَكُونُوا يَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ أَنْزَلَهَا حَتَّى تَلَاهَا أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَتَلَقَّاهَا مِنْهُ النَّاسُ، فَمَا يُسْمَعُ بَشَرٌ إِلَّا يَتْلُوهَا
আবূ সালামা বললেন: ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বাহিরে এলেন। তখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু লোকজনের সাথে বাক্যালাপ করছিলেন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন। তিনি তা মানলেন না। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন, তিনি তা মানলেন না। তখন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু কালিমা-ই-শাহাদাতের দ্বারা (বক্তব্য) আরম্ভ করলেন। লোকেরা ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে ছেড়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হন। আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন…..আম্মা বা’দু, তোমাদের মাঝে যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইবাদত করতে, (তারা জেনেনাও) মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যই মারা গেছেন। আর যারা মহান আল্লাহর ইবাদত করতে, (তারা জেনেনাও) নিশ্চয় আল্লাহ্ চিরঞ্জীব, অমর। মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেনঃ وَمَا مُحَمَّدٌ الَّا رَسُوْلُ——– اِلى الشَّاكِرِينَ (যার অর্থ) মুহাম্মাদ একজন রসূল মাত্র আর কিছু নন। তার পূর্বেও অনেক রসূল চলে গেছেন। অতএব যদি তিনি মারা যান অথবা নিহত হন তাহলে কি তোমরা পায়ের গোড়ালিতে ভর করে পেছনে ফিরে যাবে? আর যদি কেউ সেরূপ পেছনে ফিরেও যায়, তবে সে কখনও আল্লাহর বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ অতি সত্বর কৃতজ্ঞদের পুরস্কার দিবেন-(আল-ইমরানঃ ১১৪)। আল্লাহর কসম, মনে হচ্ছিল যেন আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর তিলওয়াত করার পূর্বে লোকদের জানাই ছিল না যে, আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেছেন। এখনই যেন লোকেরা আয়াতখানি তার কাছ থেকে পেলেন। প্রতিটি মানুষকেই তখন ঐ আয়াত তিলায়াত করতে শোনা গেল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ أُمَّ العَلَاءِ، امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ بَايَعَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرَتْهُ: أَنَّهُ اقْتُسِمَ المُهَاجِرُونَ قُرْعَةً فَطَارَ لَنَا عُثْمَانُ بْنُ مَظْعُونٍ، فَأَنْزَلْنَاهُ فِي أَبْيَاتِنَا، فَوَجِعَ وَجَعَهُ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، فَلَمَّا تُوُفِّيَ وَغُسِّلَ وَكُفِّنَ فِي أَثْوَابِهِ، دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَيْكَ أَبَا السَّائِبِ، فَشَهَادَتِي عَلَيْكَ: لَقَدْ أَكْرَمَكَ اللَّهُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَمَا يُدْرِيكِ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَكْرَمَهُ؟» فَقُلْتُ: بِأَبِي أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَمَنْ يُكْرِمُهُ اللَّهُ؟ فَقَالَ: «أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ اليَقِينُ، وَاللَّهِ إِنِّي لَأَرْجُو لَهُ الخَيْرَ، وَاللَّهِ مَا أَدْرِي، وَأَنَا رَسُولُ اللَّهِ، مَا يُفْعَلُ بِي» قَالَتْ: فَوَاللَّهِ لَا أُزَكِّي أَحَدًا بَعْدَهُ أَبَدًا، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ مِثْلَهُ. وَقَالَ نَافِعُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ عُقَيْلٍ مَا يُفْعَلُ بِهِ. وَتَابَعَهُ شُعَيْبٌ، وَعَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، وَمَعْمَرٌ
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: খরিজাহ্ ইব্নু যায়দ ইব্ন ছাবিত আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আনসারী মহিলা ও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বাই’আতকারী উম্মুল ‘আলা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন: (মদীনায় হিজরতের পর) লটারীর মাধ্যমে মুহাজিরদের বন্টন করা হচ্ছিল। তাতে ‘উসমান ইবনু মায’উন রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদের অংশে পড়লেন, আমরা (সাদরে) তাঁকে আমাদের গৃহে স্থান দিলাম। এক সময়ে তিনি সেই রোগে আক্রান্ত হলেন, যাতে তাঁর মৃত্যু হল। যখন তাঁর মৃত্যু হল এবং তাঁকে গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হল, তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন আমি বললাম, হে আবাস্-সায়িব! আপনার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক! আপনার ব্যাপারে আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ্ আপনাকে সম্মানিত করেছেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি কি করে জানলে যে, আল্লাহ্ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান, হে আল্লাহর রসূল! তাহলে আল্লাহ্ আর কাকে সম্মানিত করবেন? আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তার ব্যাপার তো এই যে, নিশ্চয় তাঁর মৃত্যু হচ্ছে এবং আল্লাহর কসম! আমি তার জন্য কল্যাণ কামনা করি। আল্লাহর কসম! আমি জানি না আমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হবে, অথচ আমি আল্লাহর রসূল। সেই আনসারী মহিলা বলেন, আল্লাহর কসম! অতঃপর এরপর হতে আমি কখনোও কোন ব্যক্তি সম্বন্ধে পবিত্র বলে মন্তব্য করি না। (আর এক বর্ণনায়) সা’ঈদ ইবনু ‘উফাইর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, লায়স্ও ঐরূপ হাদীস আমাদেরকে বর্ণনা করেন। আর নাফি’ ইবনু ইয়াযীদ ‘উক্বায়্ল থেকে বললেন, “তার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হবে?” ১ শু’য়াইব, ‘আমর ইবনু দীনার ও মা’মার রহমাহুল্লাহ ‘উকাইল রহমাহুল্লাহ-কে সমর্থন করেছেন।
ফুটনোটঃ
১. অর্থাৎ প্রথম বর্ণনায় রয়েছে مَا يُفْعَلُ بِىْ আমর সংগে কি ব্যবহার করা হবে ? আর দ্বিতীয় বর্ণনায় রয়েছে مَا يُفْعَلُ بِهِ – তাঁর সংগে কি ব্যবহার করা হবে ?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [২৬৮৭, ৩৯২৯, ৭০০৩, ৭০০৪, ৭০১৮] [ই.ফা. ১১৭১]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ المُنْكَدِرِ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: لَمَّا قُتِلَ أَبِي جَعَلْتُ أَكْشِفُ الثَّوْبَ عَنْ وَجْهِهِ أَبْكِي، وَيَنْهَوْنِي عَنْهُ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَنْهَانِي، فَجَعَلَتْ عَمَّتِي فَاطِمَةُ تَبْكِي، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَبْكِينَ أَوْ لَا تَبْكِينَ مَا زَالَتِ المَلَائِكَةُ تُظِلُّهُ بِأَجْنِحَتِهَا حَتَّى رَفَعْتُمُوهُ» تَابَعَهُ ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ المُنْكَدِرِ، سَمِعَ جَابِرًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুনকাদির থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, (উহুদ যুদ্ধে) আমার পিতা আব্দুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু শহীদ হয়ে গেলে আমি তাঁর মুখমন্ডল হতে কাপড় সরিয়ে ক্রন্দন করতে লাগলাম। লোকজন আমাকে নিষেধ করতে লাগল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নিষেধ করেননি। আমার ফুফী ফাতিমা রাজিআল্লাহু ‘আনহু ও ক্রন্দন করতে লাগলেন। এতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কাঁদ বা না-ই কাঁদ (উভয় সমান) তোমরা তাকে তুলে নেয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাঁদের ডানা দিয়ে ছায়া বিস্তার করে রেখেছেন। ইব্নু জুরাইজ রহমাহুল্লাহ মুহাম্মাদ ইব্নু মুন্কাদির রহমাহুল্লাহ সূত্রে জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে হাদীস বর্ণনায় শু’বা রহমাহুল্লাহ এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۵ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَى النَّجَاشِيَّ فِي اليَوْمِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ خَرَجَ إِلَى المُصَلَّى، فَصَفَّ بِهِمْ وَكَبَّرَ أَرْبَعًا»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নাজাশী যেদিন মারা যান সেদিন-ই আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মৃত্যুর খবর দেন এবং জানযার স্থানে গিয়ে লোকদের কাতারবন্দী করে চার তাকবীর আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۶ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَخَذَ الرَّايَةَ زَيْدٌ فَأُصِيبَ، ثُمَّ أَخَذَهَا جَعْفَرٌ فَأُصِيبَ، ثُمَّ أَخَذَهَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ فَأُصِيبَ – وَإِنَّ عَيْنَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَتَذْرِفَانِ – ثُمَّ أَخَذَهَا خَالِدُ بْنُ الوَلِيدِ مِنْ غَيْرِ إِمْرَةٍ فَفُتِحَ لَهُ»
আবূ মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়্দ ইব্ন হালাল থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মূতা যুদ্ধের অবস্থা বর্ণনায়) বললেনঃ যায়দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু পতাকা বহন করেছে অতঃপর শহীদ হয়েছে। অতঃপর জা’ফর রাজিআল্লাহু ‘আনহু (পতাকা) হাতে নিয়েছে, সেও শহীদ হয়। অতঃপর ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু রাওয়াহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু (পতাকা) ধারণ করে এবং সেও শহীদ হয়। এ খবর বলছিলেন এবং আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল। অতঃপর খালিদ ইব্নু ওয়ালিদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু পরামর্শ ছাড়াই (পতাকা) হাতে তুলে নেন এবং তাঁর দ্বারাই বিজয় লাভ হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَبُو رَافِعٍ: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا آذَنْتُمُونِي»
আবূ রাফি’ রহমাহুল্লাহ আবু হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তোমরা আমাকে কেন খবর দিলে না?
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيِّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: مَاتَ إِنْسَانٌ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ، فَمَاتَ بِاللَّيْلِ، فَدَفَنُوهُ لَيْلًا، فَلَمَّا أَصْبَحَ أَخْبَرُوهُ، فَقَالَ: «مَا مَنَعَكُمْ أَنْ تُعْلِمُونِي؟» قَالُوا: كَانَ اللَّيْلُ فَكَرِهْنَا، وَكَانَتْ ظُلْمَةٌ أَنْ نَشُقَّ عَلَيْكَ فَأَتَى قَبْرَهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মু‘আবিয়াহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ ইসহা’ক্ব শায়বানী থেকে, তিনি শা‘বী থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মারা গেল। যার অসুস্থতার সময় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোঁজ-খবর রাখতেন। তার মৃত্যু হয় এবং রাতেই লোকেরা তাঁকে দাফন করেন। সকাল হলে তাঁরা (এ বিষয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে খবর দেন। তিনি বললেনঃ আমাকে খবর দিতে তোমাদের কিসে বাধা দিল? তাঁরা বলল, তখন ছিল রাত এবং গাঢ় অন্ধকার। তাই আপনাকে কষ্ট দেয়া আমরা পছন্দ করিনি। তিনি ঐ ব্যক্তির কবরের নিকট গেলেন এবং তাঁর জন্য সালাতে জানাযা আদায় করলেন। ৬
ফুটনোটঃ
৬. হাদীসটিতে কেউ সালাতে জানাযা সময়মত আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে কবরকে সামনে নিয়ে তা আদায় করতে পারবে বলে প্রমানিত হলো। অনুরূপভাবে গায়িবানা জানাযা পড়ার বৈধতারও সমর্থন পাওয়া গেল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ} [البقرة: ۱۵۵]
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ “আর সবরকারীদের সুসংবাদ প্রদান করুন” [আল-বাকারা ১৫৫]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۸ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنَ النَّاسِ مِنْ مُسْلِمٍ، يُتَوَفَّى لَهُ ثَلَاثٌ لَمْ يَبْلُغُوا الحِنْثَ، إِلَّا أَدْخَلَهُ اللَّهُ الجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ إِيَّاهُمْ»
আবূ মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমের তিনটি সন্তান সাবালিগ হবার পূর্বে মারা গেলে তাদের প্রতি তাঁর রহমত সরূপ অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ৭
ফুটনোটঃ
৭. ‘আমল ভাল থাকলে সরাসরি প্রবেশ করতে পারবে। নতুবা ক্ষমার পরে অথবা জাহান্নামে গিয়ে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার পরে প্রবেশ করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۴۹ – حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَصْبَهَانِيِّ، عَنْ ذَكْوَانَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ النِّسَاءَ قُلْنَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اجْعَلْ لَنَا يَوْمًا فَوَعَظَهُنَّ، وَقَالَ: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَ لَهَا ثَلَاثَةٌ مِنَ الوَلَدِ، كَانُوا حِجَابًا مِنَ النَّارِ»، قَالَتِ امْرَأَةٌ: وَاثْنَانِ؟ قَالَ: «وَاثْنَانِ»
মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্নু আস্ববাহানী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যাক্ওয়ান থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, মহিলাগণ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম –এর নিকট নিবেদন করলেন, আমাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিন। অতঃপর তিনি একদা তাদের ওয়ায-নসীহত করলেন এবং বললেনঃ যে স্ত্রীলোকের তিনটি সন্তান মারা যায়, তারা তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে। তখন এক মহিলা প্রশ্ন করলেন, দু’টি সন্তান মারা গেলে? তিনি বললেন, দু’টি সন্তান মারা গেলেও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۰ – وَقَالَ شَرِيكٌ: عَنْ ابْنِ الأَصْبَهَانِيِّ، حَدَّثَنِي أَبُو صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: «لَمْ يَبْلُغُوا الحِنْثَ»
এবং শরীক বললেন ইব্ন আস্ববাহানী থেকে, তিনি বললেন: আবূ স্বালিহ্’ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সা’ঈদ ও আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বলেন, “যারা বালিগ হয়নি”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۱ – حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَمُوتُ لِمُسْلِمٍ ثَلَاثَةٌ مِنَ الوَلَدِ، فَيَلِجَ النَّارَ، إِلَّا تَحِلَّةَ القَسَمِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: {وَإِنْ مِنْكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا} [مريم: ۷۱]
আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি যুহ্রী থেকে শুনলাম, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমের তিনটি (নাবালিগ) সন্তান মারা গেল, তবুও জাহান্নামে প্রবেশ করবে, এমন হবে না। তবে কেবল কসম পূর্ণ হবার পরিমাণ পর্যন্ত। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ ইমাম বুখারী রহমাহুল্লাহ বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ وَاِنْ مِنْكُمْ الَّا وَارِدْهَا “তোমাদের প্রত্যেককেই তা অতিক্রম করতে হবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۲ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِامْرَأَةٍ عِنْدَ قَبْرٍ وَهِيَ تَبْكِي، فَقَالَ: «اتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ছাবিত আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি কবরের নিকট উপস্থিত এক মহিলার পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন, সে তখন ক্রন্দন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ্কে ভয় কর এবং ধৈর্য ধর।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَحَنَّطَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ابْنًا لِسَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ، وَحَمَلَهُ، وَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «المُسْلِمُ لَا يَنْجُسُ حَيًّا وَلَا مَيِّتًا» وَقَالَ سَعِيدٌ: «لَوْ كَانَ نَجِسًا مَا مَسِسْتُهُ» وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «المُؤْمِنُ لَا يَنْجُسُ»
ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সা‘ঈদ ইব্নু যায়দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু এক (মৃত) পুত্রকে সুগন্ধি মাখিয়ে দিলেন, তাকে বহন করলেন এবং জানাযার সালাত আদায় করলেন অথচ তিনি (নতুন ভাবে) উযূ করেননি। ইব্নু আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, জীবিত ও মৃত কোন অবস্থায়ই মুসলিম অপবিত্র নয়। সা‘দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, (মৃতদেহে) অপবিত্র হলে আমি তা স্পর্শ করতাম না। আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মু‘মিন অপবিত্র হয় না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۳ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ الأَنْصَارِيَّةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ تُوُفِّيَتِ ابْنَتُهُ، فَقَالَ: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا، أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ، بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا – أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ – فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي»، فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ ، فَأَعْطَانَا حِقْوَهُ، فَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ» تَعْنِي إِزَارَهُ
ইসমা ‘ঈল ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব সাখতিয়ান থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্নু শিরীন থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যা যায়নাব রাজিআল্লাহু ‘আনহা ইন্তিকাল করলে তিনি আমাদের নিকট এসে বললেনঃ তোমরা তাঁকে তিনবার বা পাঁচবার বা প্রয়োজন মনে করলে তাঁর চেয়ে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। শেষবারে কর্পূর বা কিছু কর্পূর ব্যবহার করবে। তোমরা শেষ করে আমাকে খবর দাও। আমারা শেষ করার পর তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদরখানি আমাদেরকে দিয়ে বললেনঃ এটি তাঁর শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে দাও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَغْسِلُ ابْنَتَهُ، فَقَالَ: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا، أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا، فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي»، فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ، فَأَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ، فَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ» فَقَالَ أَيُّوبُ، وَحَدَّثَتْنِي حَفْصَةُ بِمِثْلِ حَدِيثِ مُحَمَّدٍ، وَكَانَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ: «اغْسِلْنَهَا وِتْرًا»، وَكَانَ فِيهِ: «ثَلَاثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ سَبْعًا» وَكَانَ فِيهِ أَنَّهُ قَالَ: «ابْدَءُوا بِمَيَامِنِهَا، وَمَوَاضِعِ الوُضُوءِ مِنْهَا»، وَكَانَ فِيهِ: أَنَّ أُمَّ عَطِيَّةَ قَالَتْ: وَمَشَطْنَاهَا ثَلَاثَةَ قُرُونٍ
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব ছাকাফী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি মুহাম্মাদ থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা আনসারী রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যা যায়নাব রাজিআল্লাহু ‘আনহা ইন্তিকাল করলে তিনি আমাদের নিকট এসে বললেনঃ তোমরা তাঁকে তিনবার বা পাঁচবার বা প্রয়োজন মনে করলে তার চেয়ে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দ্বারা গোসল দাও। শেষবার কর্পূর ব্যবহার করবে। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাও। আমরা শেষ করার পর তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদরখানি আমাদের দিকে দিয়ে বললেনঃ এটি তাঁর ভিতরের কাপড় হিসেবে পরিয়ে দাও। আইয়ুব রহমাহুল্লাহ বলেছেন, হাফসা রহমাহুল্লাহ আমাকে মুহাম্মাদ বর্ণিত হাদীসের ন্যায় হাদীস শুনিয়েছেন। তবে তাঁর হাদীসে আছে যে, তাকে বিজোড় সংখ্যায় গোসল দিবে। আরও আছে, তিনবার, পাঁচবার অথবা সাতবার কর; তাতে আরো আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা তার ডান দিক হতে এবং তার উযূর স্থানগুলো থেকে আরম্ভ করবে।” তাতে, এ কথাও আছে। (বর্ণনাকারিণী) উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেছেন, আমরা তার চুলগুলো আঁচড়ে তিনটি গোছা করে দিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۵ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَسْلِ ابْنَتِهِ: «ابْدَأْنَ بِمَيَامِنِهَا، وَمَوَاضِعِ الوُضُوءِ مِنْهَا»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হাফ্সাহ্ বিন্তি সিরীন থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যার গোসলের ব্যাপারে ইরশাদ করেনঃ তোমরা তাঁর ডান দিক হতে এবং উযূর অঙ্গসমূহ হতে শুরু করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۶ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ خَالِدٍ الحَذَّاءِ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: لَمَّا غَسَّلْنَا بِنْتَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ لَنَا وَنَحْنُ نَغْسِلُهَا: «ابْدَءُوا بِمَيَامِنِهَا، وَمَوَاضِعِ الوُضُوءِ مِنْهَا»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াকী‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুফিয়ান থেকে, তিনি খালিদ ইব্ন হা’য্যা থেকে, তিনি হা’ফ্স্বাহ্ বিন্তি সীরীন থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যা (যায়নাব রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর গোসল দিতে যাচ্ছিলাম, গোসল দেয়ার সময় তিনি আমাদের বলেনঃ তোমরা তাঁর ডান দিক হতে এবং উযূর স্থানগুলো হতে শুরু করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حَمَّادٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ: تُوُفِّيَتْ بِنْتُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لَنَا: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، إِنْ رَأَيْتُنَّ، فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي»، فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَنَزَعَ مِنْ حِقْوِهِ إِزَارَهُ، وَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ»
‘আব্দুর্ রহ্মান ইব্নু হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আ‘উন আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম–এর কন্যার ইন্তিকাল হলে তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা তাকে তিনবার, পাঁচবার অথবা তোমরা প্রয়োজন মনে করলে তার চেয়ে অধিকবার গোসল দাও। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাবে। আমরা শেষ করে তাকে জানালাম। তখন তিনি তার কোমর হতে চাদর খুলে দিয়ে বললেনঃ এটি তার ভিতরের কাপড় হিসেবে পরিয়ে দাও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۸ – حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ: تُوُفِّيَتْ إِحْدَى بَنَاتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، إِنْ رَأَيْتُنَّ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا – أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ – فَإِذَا فَرَغْتُنَّ، فَآذِنَّنِي» قَالَتْ: فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ، فَأَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ، فَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ» وَعَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، بِنَحْوِهِ
হা’মিদ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যাগণের একজনের ইন্তিকাল হল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে গেলেন এবং বললেনঃ তোমরা তাঁকে তিনবার, পাঁচবার অথবা প্রয়োজন মনে করলে তার চেয়ে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দ্বারা গোসল দাও। শেষবারে কর্পূর বা ‘কিছু কর্পূর’ ব্যবহার করবে। গোসল শেষ করে আমাকে জানাবে। উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমরা শেষ করে তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদর আমাদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেনঃ এটি তাঁর ভিতরের কাপড় হিসেবে পরাও। আইয়ুব রহমাহুল্লাহ হাফসা রহমাহুল্লাহ-এর সূত্রে উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা একইভাবে বর্ণনা করেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۵۹ – وَقَالَتْ: إِنَّهُ قَالَ: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا أَوْ سَبْعًا، أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، إِنْ رَأَيْتُنَّ» قَالَتْ حَفْصَةُ: قَالَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: وَجَعَلْنَا رَأْسَهَا ثَلَاثَةَ قُرُونٍ
এবং তিনি (উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছিলেনঃ তাঁকে তিন, পাঁচ, সাতবার প্রয়োজনে তার চেয়ে অধিকবার গোসল দাও। হাফসা রহমাহুল্লাহ বলেন, উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমরা তাঁর মাথার চুলে তিনটি গোছা (বেনী) ৮ বানিয়ে দিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ: «لَا بَأْسَ أَنْ يُنْقَضَ شَعَرُ المَيِّتِ»
ইব্নু সীরীন রহমাহুল্লাহ বলেছেন, মৃতের চুল খুলে দেয়ার কোন দোষ নেই।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۰ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَيُّوبُ: وَسَمِعْتُ حَفْصَةَ بِنْتَ سِيرِينَ، قَالَتْ: حَدَّثَتْنَا أُمُّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّهُنَّ جَعَلْنَ رَأْسَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثَلَاثَةَ قُرُونٍ نَقَضْنَهُ، ثُمَّ غَسَلْنَهُ، ثُمَّ جَعَلْنَهُ ثَلَاثَةَ قُرُونٍ»
হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন- আয়্য়ুব বলেন, আমি হা’ফসা বিন্তি সীরীন থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম –এর কন্যার মাথার চুল তিনটি বেণী করেছেন। তাঁরা তা খুলেছেন, অতঃপর তা ধুয়ে তিনটি বেনী করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الحَسَنُ: «الخِرْقَةُ الخَامِسَةُ تَشُدُّ بِهَا الفَخِذَيْنِ، وَالوَرِكَيْنِ تَحْتَ الدِّرْعِ»
হাসান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, পঞ্চম বস্ত্রখন্ড ৯ দ্বারা কমীসের নীচে উরুদ্বয় ও নিতম্বদ্বয় বেঁধে দিবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۱ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَنَّ أَيُّوبَ، أَخْبَرَهُ قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ سِيرِينَ، يَقُولُ: جَاءَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ مِنَ اللَّاتِي بَايَعْنَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَدِمَتِ البَصْرَةَ تُبَادِرُ ابْنًا لَهَا، فَلَمْ تُدْرِكْهُ، فَحَدَّثَتْنَا، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَنَحْنُ نَغْسِلُ ابْنَتَهُ، فَقَالَ: «اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا، أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا، فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي» قَالَتْ: فَلَمَّا فَرَغْنَا أَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ، فَقَالَ: «أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ» وَلَمْ يَزِدْ عَلَى ذَلِكَ، وَلَا أَدْرِي أَيُّ بَنَاتِهِ، وَزَعَمَ أَنَّ الإِشْعَارَ: الفُفْنَهَا فِيهِ، وَكَذَلِكَ كَانَ ابْنُ سِيرِينَ يَأْمُرُ بِالْمَرْأَةِ أَنْ تُشْعَرَ، وَلَا تُؤْزَرَ
হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আইয়ূব রহমাহুল্লাহ থেকে, তিনি বলেন, আমি ইব্নু সীরীন রহমাহুল্লাহ-কে বলতে শুনেছি যে, আনসারী মহিলা উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা আগমন করলেন, যিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বাই’আতকারীদের একজন। তিনি তাঁর এক ছেলেকে দেখার জন্য বাসরায় এসেছিলেন, কিন্তু তিনি তাকে পাননি। তখন তিনি আমাদের হাদীস শুনালেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন, তখন আমরা তাঁর কন্যাকে গোসল দিচ্ছিলাম। তিনি বলেনঃ তোমরা তাঁকে তিনবার, পাঁচবার অথবা প্রয়োজনে তার চেয়ে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। আর শেষবারে কর্পূর দাও। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাবে। তিনি বলেন, আমরা যখন শেষ করলাম, তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাদর আমাদের দিকে নিক্ষেপ করে বললেনঃ এটা তাঁর শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে দাও। উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর অধিক বর্ণনা করেননি। (আইয়ূব রহমাহুল্লাহ বলেন) আমি জানি না, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কোন কন্যা ছিলেন? তিনি বলেন, – অর্থ শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে দাও। ইবনু সীরীন রহমাহুল্লাহ মহিলা সম্পর্কে এভাবেই আদেশ করতেন যে, ভিতরের কাপড় শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে দিবে, ইজারের মত ব্যবহার করবে না।
ফুটনোটঃ
৯. হাসান রহমাহুল্লাহ-এর উক্তিতে বুঝা যায় যে, মহিলাদের পাঁচ কাপড়ে কাফন দেয়া যেতে পারে তবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহীহ সনদে এ ব্যাপারে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি যার ফলে কতক আলিম মহিলাদেরকেও পুরুষদের ন্যায় তিন কাপড়ে কাফন দেয়ার পক্ষপাতী।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۲ – حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أُمِّ الهُذَيْلِ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «ضَفَرْنَا شَعَرَ بِنْتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» تَعْنِي ثَلَاثَةَ قُرُونٍ، وَقَالَ وَكِيعٌ: قَالَ سُفْيَانُ: نَاصِيَتَهَا وَقَرْنَيْهَا
ক্বাবীস্বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্য়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি উম্মু হুযায়ল থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যার মাথায় চুল বেনী পাকিয়ে দিয়েছিলাম, অর্থাৎ তিনটি বেনী। ওয়াকী’ রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, সুফিয়ান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, মাথার সামনে একটি বেনী এবং দু’পাশে দু’টি বেনী।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۳ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، قَالَ: حَدَّثَتْنَا حَفْصَةُ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: تُوُفِّيَتْ إِحْدَى بَنَاتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اغْسِلْنَهَا بِالسِّدْرِ وِتْرًا ثَلَاثًا، أَوْ خَمْسًا، أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ، وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا – أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ – فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي»، فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ، فَأَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ، فَضَفَرْنَا شَعَرَهَا ثَلَاثَةَ قُرُونٍ، وَأَلْقَيْنَاهَا خَلْفَهَا
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম ইব্ন হাস্সান থেকে, তিনি বললেন: হা’ফ্স্বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যাগণের একজনের ইন্তিকাল হলে তিনি আমাদের নিকট এসে বললেনঃ তোমরা তাঁকে বরই পাতার পানি দিয়ে বিজোড় সংখ্যক তিনবার, পাঁচবার অথবা প্রয়োজনবোধ করলে আরও অধিকবার গোসল দাও। শেষবারে কর্পূর অথবা তিনি বলেছিলেন কিছু কর্পূর ব্যবহার করবে। তোমরা গোসল শেষ করে আমাকে জানাবে। আমরা শেষ করে তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদর আমাদের দিকে এগিয়ে দিলেন, আমরা তাঁর মাথার চুলগুলো তিনটি বেনী করে পিছনের দিকে ছেড়ে দিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ المُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُفِّنَ فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ يَمَانِيَةٍ بِيضٍ، سَحُولِيَّةٍ مِنْ كُرْسُفٍ لَيْسَ فِيهِنَّ قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুবারাক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন তার পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তিনটি ইয়ামানী সাহুলী সাদা সূতী বস্ত্র দ্বারা কাফন দেয়া হয়েছিল। তার মধ্যে কামীস এবং পাগড়ী ছিল না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۵ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، قَالَ: بَيْنَمَا رَجُلٌ وَاقِفٌ بِعَرَفَةَ ، إِذْ وَقَعَ عَنْ رَاحِلَتِهِ، فَوَقَصَتْهُ – أَوْ قَالَ: فَأَوْقَصَتْهُ – قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ، وَلَا تُحَنِّطُوهُ، وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ، فَإِنَّهُ يُبْعَثُ يَوْمَ القِيَامَةِ مُلَبِّيًا»
আবূ নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আরাফাতে ওয়াকূফ অবস্থায় অকস্মাৎ তার উটনী হতে পড়ে যায়। এতে তাঁর ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবী বলেছেন, তাঁর ঘাড় মটকে দিল। (যাতে সে মারা গেল)। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাঁকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’ কাপড়ে তাঁকে কাফন দাও। তাঁকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তাঁর মস্তক আবৃত করবে না। কেননা, কিয়ামাতের দিবসে সে তালবিয়া ১ পাঠরত অবস্থায় উত্থিত হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. ইহরাম অবস্থায় যে দু’আ পাঠ করা হয়….. اللّهُمَّ لَبَّيك আল্লাহুম্মা লাব্বায়কা……এ দু’আকে তাল্বিয়া বলে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۶ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: بَيْنَمَا رَجُلٌ وَاقِفٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَفَةَ، إِذْ وَقَعَ مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَأَقْصَعَتْهُ – أَوْ قَالَ: فَأَقْعَصَتْهُ – فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ، وَلَا تُحَنِّطُوهُ، وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ، فَإِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ مُلَبِّيًا»
ক্বুতায়বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্নু যুবায়র থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে আরাফাতে ওয়াকূফ কালে অকস্মাৎ সে তার সওয়ারী হতে পড়ে যান। যার ফলে তাঁর ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবী বলেন, ঘাড় মটকে দিল। (যাতে তিনি মারা গেলেন)। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাঁকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’ কাপড়ে তাঁকে কাফন দাও; তাঁকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তাঁর মস্তক আবৃত করবে না। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন তাঁকে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উত্থিত করবেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۷ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ: أَنَّ رَجُلًا وَقَصَهُ بَعِيرُهُ وَنَحْنُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ مُحْرِمٌ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ، وَلَا تُمِسُّوهُ طِيبًا، وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ، فَإِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ مُلَبِّيًا»
আবূ নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বিশর থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্নু যুবায়র থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: এক ব্যক্তির উট তার ঘাড় মটকে দিল। (ফলে সে মারা গেল)। সে সময় আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। ঐ ব্যক্তি ছিল ইহ্রাম অবস্থায়। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’ কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মস্তক আবৃত করো না। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামাতের দিন তাকে মুলাব্বি ১ (অর্থাৎ ইহরামরত) অবস্থায় উত্থিত করবেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ ১. মুলাব্বিদঃ মাথার চুল এলোমেলো না হওয়ার জন্য মোম জাতীয় আঠাল দ্রব্য ব্যবহারকারী, এখানে ইহরামরত অবস্থা বুঝান হয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرٍو، وَأَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، قَالَ: كَانَ رَجُلٌ وَاقِفٌ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَفَةَ، فَوَقَعَ عَنْ رَاحِلَتِهِ – قَالَ أَيُّوبُ: فَوَقَصَتْهُ، وَقَالَ عَمْرٌو: فَأَقْصَعَتْهُ – فَمَاتَ فَقَالَ: ” اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ، وَلَا تُحَنِّطُوهُ، وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ، فَإِنَّهُ يُبْعَثُ يَوْمَ القِيَامَةِ، قَالَ أَيُّوبُ: يُلَبِّي، وَقَالَ عَمْرٌو: مُلَبِّيًا “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র এবং আয়্য়ুব থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে আরাফাতে অবস্থান করছিলেন। সে তার সওয়ারী হতে পতিত হলেন। (পরবর্তী অংশের বর্ণনায়) আইয়ুব রহমাহুল্লাহ বলেন, فوقمصته তার ঘার মট্কে দিল। আর আমর রহমাহুল্লাহ বলেন, فاقمصته তাকে দ্রুত মৃত্যুমুখে ঠেলে দিল। যার ফলে তিনি মারা গেলেন। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাঁকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’ কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাঁকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তাঁর মস্তক আবৃত করবে না। কারণ, তাঁকে কিয়ামত দিবসে উত্থিত করা হবে এ অবস্থায় যে, আইয়ুব রহমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘সে তালবিয়া পাঠ করছে’ আর ‘আমর রহমাহুল্লাহ বলেন, সে তালবিয়া পাঠরত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۶۹ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَيٍّ لَمَّا تُوُفِّيَ، جَاءَ ابْنُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَعْطِنِي قَمِيصَكَ أُكَفِّنْهُ فِيهِ، وَصَلِّ عَلَيْهِ، وَاسْتَغْفِرْ لَهُ، فَأَعْطَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَمِيصَهُ، فَقَالَ: «آذِنِّي أُصَلِّي عَلَيْهِ»، فَآذَنَهُ، فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَيْهِ جَذَبَهُ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: أَلَيْسَ اللَّهُ نَهَاكَ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَى المُنَافِقِينَ؟ فَقَالَ: ” أَنَا بَيْنَ خِيَرَتَيْنِ، قَالَ: {اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً، فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ} [التوبة: 80] ” فَصَلَّى عَلَيْهِ، فَنَزَلَتْ: {وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا، وَلَا تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ} [التوبة: 84]
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উবাই (মুনাফিক সর্দার)-এর মৃত্যু হলে তার পুত্র (যিনি সাহাবী ছিলেন) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, আপনার জামাটি আমাকে দান করুন। আমি সেটা দিয়ে আমার পিতার কাফন পরাতে ইচ্ছা করি। আর আপনি তার জানাযা পড়বেন এবং তার জন্য মাগফিরাত কামনা করবেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জামাটি তাঁকে দিয়ে দিলেন এবং বললেনঃ আমাকে খবর দিও, আমি তার জানাযা আদায় করব। তিনি তাঁকে খবর দিলেন। যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জানাযা আদায়ের ইচ্ছা করলেন, তখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন, আল্লাহ্ কি আপনাকে মুনাফিকদের জানাযা আদায় করতে নিষেধ করেননি? তিনি বললেনঃ আমাকে তো দু’টির মধ্যে কোন একটি করার ইখ্তিয়ার দেয়া হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ (যার অর্থ) “আপনি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য মাগফিরাত কামনা করুন বা মাগফিরাত কামনা না-ই করুন (একই কথা) আপনি যদি সত্তর বারও তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন; কখনো আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন না-” (আত্তাওবাঃ ৮০)। কাজেই তিনি তার জানাযা পড়লেন, অতঃপর নাযিল হলঃ (যার অর্থ) “তাদের কেউ মৃত্যুবরণ করলে আপনি তাদের জানাযা কক্ষণও আদায় করবেন না।” (আত্-তাওবাঃ ৮৪)
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۰ – حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ جَابِرًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَيٍّ بَعْدَ مَا دُفِنَ، فَأَخْرَجَهُ، فَنَفَثَ فِيهِ مِنْ رِيقِهِ، وَأَلْبَسَهُ قَمِيصَهُ»
মালিক ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘উয়ায়্নাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আমর থেকে, তিনি জাবীর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনেছেন, তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাইকে দাফন করার পর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার (কবরের) নিকট এলেন এবং তাকে বের করলেন। অতঃপর তার উপর থুথু দিলেন, আর নিজের জামাটি তাকে পরিয়ে দিলেন। ১০
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১০. কিন্তু কোনই উপকার হয়নি তার কারণ ও মুনাফিকীর কারণে নিজের পরকালকে বরবাদ করে ফেলেছিল।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۱ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كُفِّنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابِ سُحُولٍ كُرْسُفٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ»
আবূ নু‘আয়্ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্য়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি ‘উর্ওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তিনখানা সুতী সাদা সাহুলী (ইয়ামানী) কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছিল, তার মধ্যে কামীস এবং পাগড়ী ছিল না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُفِّنَ فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তিনখানা কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল, তাতে জামা ও পাগড়ী ছিলনা। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ রহমাহুল্লাহ বলেন, আবূ নু‘আইম রহমাহুল্লাহ ثلاثة – শব্দটি বলেননি। আর ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ওয়ালীদ রহমাহুল্লাহ হতে হাদীস বর্ণনায় ثلاثة শব্দটি বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۳ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُفِّنَ فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তিনখানা সাদা সাহুলী কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে কোন কামীস ও পাগড়ী ছিলনা।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَبِهِ قَالَ: عَطَاءٌ، وَالزُّهْرِيُّ، وَعَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، وَقَتَادَةُ وَقَالَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ: «الحَنُوطُ مِنْ جَمِيعِ المَالِ» وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ: «يُبْدَأُ بِالكَفَنِ، ثُمَّ بِالدَّيْنِ، ثُمَّ بِالوَصِيَّةِ» وَقَالَ سُفْيَانُ: «أَجْرُ القَبْرِ وَالغَسْلِ هُوَ مِنَ الكَفَنِ»
আতা, যুহরী, ‘আমর ইব্নু দীনার এবং কাতাদা রহমাহুল্লাহ এ কথা বলেছেন। আমর ইব্নু দীনার রহমাহুল্লাহ আরও বলেছেন, সুগন্ধিও সমস্ত সম্পদ হতে দিতে হবে। ইব্রাহীম রহমাহুল্লাহ বলেছেন, (সম্পদ হতে) প্রথমে কাফন অতঃপর ঋণ পরিশোধ, অতঃপর ওয়াসিয়াত পূরণ করতে হবে। সুফিয়ান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, কবর ও গোসল দেয়ার খরচও কাফনের শামিল।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۴ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ المَكِّيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: أُتِيَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَوْمًا بِطَعَامِهِ، فَقَالَ: «قُتِلَ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَكَانَ خَيْرًا مِنِّي، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مَا يُكَفَّنُ فِيهِ إِلَّا بُرْدَةٌ، وَقُتِلَ حَمْزَةُ – أَوْ رَجُلٌ آخَرُ – خَيْرٌ مِنِّي، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مَا يُكَفَّنُ فِيهِ إِلَّا بُرْدَةٌ، لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ يَكُونَ قَدْ عُجِّلَتْ لَنَا طَيِّبَاتُنَا فِي حَيَاتِنَا الدُّنْيَا ثُمَّ جَعَلَ يَبْكِي»
আহ্’মাদ ইব্নু মুহা’ম্মাদ মাক্কী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্রাহীম ইব্নু সা‘দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা’দ থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, একদা ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে খাবার দেয়া হল। তখন তিনি বললেন, মুস্‘আব ইব্নু উমাইর রাজিআল্লাহু ‘আনহু শহীদ হলেন আর তিনি আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিলেন অথচ তাঁর কাফনের জন্য একটি চাদর ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। হামযাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বা অপর এক ব্যক্তি শহীদ হলেন, তিনিও ছিলেন আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, অথচ তাঁর কাফনের জন্যও একটি চাদর ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। তাই আমার ভয় হয়, আমাদের নেক আমলের বিনিময়ে আমাদের এ পার্থিব জীবনে পূর্বেই দেয়া হল। অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِيهِ إِبْرَاهِيمَ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أُتِيَ بِطَعَامٍ وَكَانَ صَائِمًا، فَقَالَ: ” قُتِلَ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّي، كُفِّنَ فِي بُرْدَةٍ، إِنْ غُطِّيَ رَأْسُهُ، بَدَتْ رِجْلَاهُ، وَإِنْ غُطِّيَ رِجْلَاهُ بَدَا رَأْسُهُ – وَأُرَاهُ قَالَ: وَقُتِلَ حَمْزَةُ وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّي – ثُمَّ بُسِطَ لَنَا مِنَ الدُّنْيَا مَا بُسِطَ – أَوْ قَالَ: أُعْطِينَا مِنَ الدُّنْيَا مَا أُعْطِينَا – وَقَدْ خَشِينَا أَنْ تَكُونَ حَسَنَاتُنَا عُجِّلَتْ لَنَا، ثُمَّ جَعَلَ يَبْكِي حَتَّى تَرَكَ الطَّعَامَ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহআমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ ইব্ন ইব্রাহীম থেকে, তিনি তাঁর পিতা ইব্রাহীম থেকে, তিনি বললেন: একদা ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে খাদ্য পরিবেশন করা হল, তখন তিনি সিয়াম পালন করছিলেন। তিনি বললেন, মুস‘আব ইব্নু উমাইর রাজিআল্লাহু ‘আনহু শহীদ হলেন। তিনি ছিলেন, আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। (অথচ) তাঁকে এমন একটি চাদর দিয়ে কাফন দেয়া হল যে, তাঁর মাথা ঢাকলে তাঁর দু’ পা বাইরে থাকে আর দু’ পা ঢাকলে মাথা বাইরে থাকে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে পড়ে, তিনি আরও বলেছিলেন, হামযাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু শহীদ হলেন। তিনিও ছিলেন আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। অতঃপর আমাদের জন্য পৃথিবীতে অত্যধিক প্রাচুর্য দেয়া হয়েছে। আশঙ্কা হয় যে, আমাদের নেক ‘আমলগুলো (এর বিনিময়ে) আমাদের পূর্বেই দিয়ে দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি ক্রন্দন করতে লাগলেন, এমনকি খাদ্যও বর্জন করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۶ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا شَقِيقٌ، حَدَّثَنَا خَبَّابٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: هَاجَرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَلْتَمِسُ وَجْهَ اللَّهِ، فَوَقَعَ أَجْرُنَا عَلَى اللَّهِ، فَمِنَّا مَنْ مَاتَ لَمْ يَأْكُلْ مِنْ أَجْرِهِ شَيْئًا، مِنْهُمْ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَمِنَّا مَنْ أَيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ، فَهُوَ يَهْدِبُهَا، قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ، فَلَمْ نَجِدْ مَا نُكَفِّنُهُ إِلَّا بُرْدَةً إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ خَرَجَتْ رِجْلَاهُ، وَإِذَا غَطَّيْنَا رِجْلَيْهِ خَرَجَ رَأْسُهُ، «فَأَمَرَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُغَطِّيَ رَأْسَهُ ، وَأَنْ نَجْعَلَ عَلَى رِجْلَيْهِ مِنَ الإِذْخِرِ»
‘উমার ইব্নু হা’ফ্স্ব ইব্ন গিয়াছ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শাক্বিক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খাব্বার রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে মদীনায় হিজরত করছিলাম, এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করেছিলাম। আমাদের প্রতিদান আল্লাহর দরবারে নির্ধারিত হয়ে আছে। অতঃপর আমাদের মধ্যে অনেকে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের বিনিময়ে কিছুই ভোগ করে যাননি। তাঁদেরই একজন মুস‘আব ইব্নু উমাইর রাজিআল্লাহু ‘আনহু আর আমাদের মধ্যে অনেকে এমনও আছেন যাঁদের প্রতিদানের ফল পরিপক্ক হয়েছে। আর তাঁরা তা ভোগ করছন। মুস‘আব রাজিআল্লাহু ‘আনহু উহুদের দিন শহীদ হয়েছিলেন। আমরা তাঁকে কাফন দেয়ার জন্য এমন একটি চাদর ব্যতীত আর কিছুই পেলাম না; যা দিয়ে তাঁর মস্তক আবৃত করলে তাঁর দু’ পা বাইরে থাকে আর তাঁর দু’ পা আবৃত করলে তাঁর মস্তক বাইরে থাকে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মস্তক আবৃত করতে এবং তাঁর দু’খানা পায়ের উপর ইয্খির (ঘাস) দিয়ে দিতে আমাদের নির্দেশ দিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَهْلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ امْرَأَةً جَاءَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبُرْدَةٍ مَنْسُوجَةٍ، فِيهَا حَاشِيَتُهَا»، أَتَدْرُونَ مَا البُرْدَةُ؟ قَالُوا: الشَّمْلَةُ، قَالَ: نَعَمْ، قَالَتْ: نَسَجْتُهَا بِيَدِي فَجِئْتُ لِأَكْسُوَكَهَا، «فَأَخَذَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْتَاجًا إِلَيْهَا، فَخَرَجَ إِلَيْنَا وَإِنَّهَا إِزَارُهُ»، فَحَسَّنَهَا فُلَانٌ، فَقَالَ: اكْسُنِيهَا، مَا أَحْسَنَهَا، قَالَ القَوْمُ: مَا أَحْسَنْتَ، لَبِسَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْتَاجًا إِلَيْهَا، ثُمَّ سَأَلْتَهُ، وَعَلِمْتَ أَنَّهُ لَا يَرُدُّ، قَالَ: إِنِّي وَاللَّهِ، مَا سَأَلْتُهُ لِأَلْبَسَهُ، إِنَّمَا سَأَلْتُهُ لِتَكُونَ كَفَنِي، قَالَ سَهْلٌ: فَكَانَتْ كَفَنَهُ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট একখানা বুরদা নিয়ে এলেন যার সাথে ঝালর যুক্ত ছিল। সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তোমরা জান, বুরদা কী? তারা বলল, চাদর। সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, ঠিকই। মহিলা বললেন, চাদরখানি আমি নিজ হস্তে বয়ন করেছি এবং তা আপনার পরিধানের জন্য নিয়ে এসেছি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা গ্রহণ করলেন এবং তাঁর চাদরের প্রয়োজনও ছিল। অতঃপর তিনি তা ইযার হিসেবে পরিধান করে আমাদের সম্মুখে আসলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি তার সৌন্দর্য বর্ণনা করে বললেন, বাহ! কত সুন্দর! আমাকে এটি পরিধানের জন্য দান করুন। সাহাবীগন বললেন, তুমি ভাল করনি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা তাঁর প্রয়োজনে পরিধান করেছেন; তবুও তুমি তা চেয়ে বসলে। অথচ তুমি জান যে, তিনি কাউকে বিমুখ করেন না। ঐ ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! আমি তা পরিধানের উদ্দেশে চাইনি। আমার চাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য যেন তা দিয়ে আমার কাফন হয়। সাহ্ল রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, অবশেষে তা তাঁর কাফনই হয়েছিল। ১১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১১. হাদীস হতে যা জানা যায়ঃ (১) হাদীস বর্ণনায় সময় সাহাবাদের রাজিআল্লাহু ‘আনহু সতর্কতা। (২) শালীনতা বজায় থাকলে মহিলাদের কাজের অনুমতি। (৩) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থনৈতিক সংকটে দিনাতিপাত করতেন। (৪) নবী ইতস্ততা পরিত্যাগ করে চাদরকে লুঙ্গি বানিয়েছেন। (৫) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভাবের মধ্যেও দান করেছন। (৬) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীয়া গ্রহণ করতেন। (৭) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীয়ার মাল দান করে দেয়া বৈধ। (৮) কারো আচরণ ভুল হলে তাকে সতর্ক করা। (৯) নিজের আচরণের প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা প্রদান করা। (১০) সামান্য একটু রূপকভাবে কথা বলা যায়। (১১) রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাউকে বিমুখ না করার গুনাবলী। (১২) রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় তা সাথে জড়িত বস্তু হতে বারাকাৎ হাসিল করা। (১৩) তাঁর জীবদ্দশায়ই কাফন তৈরীর মাধ্যমে মৃতের প্রস্তুতি নেয়া ভাল। (১৪) কেউ ভাল নিয়ত রাখলে মহান আল্লাহ তা অবশ্যই পূরণ করেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۸ – حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ بْنُ عُقْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ الحَذَّاءِ، عَنْ أُمِّ الهُذَيْلِ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «نُهِينَا عَنِ اتِّبَاعِ الجَنَائِزِ، وَلَمْ يُعْزَمْ عَلَيْنَا»
ক্বাবীস্বাহ্ ইব্নু ‘উক্ববাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন খালিদ হায্যা-এর থেকে, তিনি উম্মু হুযায়্ল থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, জানাযার পশ্চাদানুগমন করতে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে, তবে আমাদের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়নি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۷۹ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ المُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: تُوُفِّيَ ابْنٌ لِأُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَلَمَّا كَانَ اليَوْمُ الثَّالِثُ دَعَتْ بِصُفْرَةٍ، فَتَمَسَّحَتْ بِهِ، وَقَالَتْ: «نُهِينَا أَنْ نُحِدَّ أَكْثَرَ مِنْ ثَلَاثٍ إِلَّا بِزَوْجٍ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বিশ্র ইব্নু মুফায্যাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সালামাহ্ ইব্নু ‘আল্ক্বামাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহাম্মাদ ইব্নু সীরীন থেকে, তিনি বলেন, উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর এক পুত্রের মৃত্যু হল। তৃতীয় দিবসে তিনি হলুদ বর্ণের সুগন্ধি আনয়ন করিয়ে ব্যবহার করলেন, আর বললেন, স্বামী ব্যতীত অন্য কারো জন্য তিন দিবসের বেশি শোক পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۰ – حَدَّثَنَا الحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ نَافِعٍ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَتْ: لَمَّا جَاءَ نَعْيُ أَبِي سُفْيَانَ مِنَ الشَّأْمِ، دَعَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا بِصُفْرَةٍ فِي اليَوْمِ الثَّالِثِ، فَمَسَحَتْ عَارِضَيْهَا، وَذِرَاعَيْهَا، وَقَالَتْ: إِنِّي كُنْتُ عَنْ هَذَا لَغَنِيَّةً، لَوْلَا أَنِّي سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ، أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ، إِلَّا عَلَى زَوْجٍ، فَإِنَّهَا تُحِدُّ عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا»
হু’মায়দ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’মায়দ ইব্নু নাফি‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যায়নাব বিন্তি আবূ সালামাহ্ থেকে রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, যখন সিরিয়া হতে আবূ সুফিয়ান রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর মৃত্যুর খবর পৌছল, তার তৃতীয় দিবসে উম্মু হাবীবা রাজিআল্লাহু ‘আনহা হলুদ বর্ণের সুগন্ধি আনয়ন করলেন এবং তাঁর উভয় গন্ড ও বাহুতে মথিত করলেন। অতঃপর বললেন, অবশ্য আমার এর কোন প্রয়োজন ছিল না, যদি আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে না শুনতাম যে, স্ত্রীলোক আল্লাহ্ এবং ক্বিয়ামাতের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে তার পক্ষে স্বামী ব্যতীত অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশি শোক পালন করা বৈধ নয়। অবশ্য স্বামীর জন্য সে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۱ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ أَخْبَرَتْهُ، قَالَتْ: دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ حَبِيبَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ، تُحِدُّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আবূ বাক্র ইব্ন মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘আম্র ইব্ন হা’য্ম থেকে, তিনি হু’মায়্দ ইব্ন নাফি‘ থেকে, তিনি যায়নাব বিন্তু আবূ সালামা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিণী উম্মু হাবীবা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকটে গেলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে স্ত্রীলোক আল্লাহ্ এবং ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে তার পক্ষে কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ নয়। তবে স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন (বৈধ)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۲ – ثُمَّ دَخَلْتُ عَلَى زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ حِينَ تُوُفِّيَ أَخُوهَا، فَدَعَتْ بِطِيبٍ، فَمَسَّتْ بِهِ، ثُمَّ قَالَتْ: مَا لِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجَةٍ، غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى المِنْبَرِ يَقُولُ: «لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ، تُحِدُّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ، إِلَّا عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا»
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) অতঃপর যায়নাব বিন্তু জাহ্শ রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর ভ্রাতার মৃত্যু হলে আমি তাঁর নিকট গেলাম। তখন তিনি কিছু সুগন্ধি আনয়ন করিয়ে তা ব্যবহার করলেন। অতঃপর বললেন, সুগন্ধি ব্যবহারের আমার কোন প্রয়োজন নেই, তবু যেহেতু আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ এবং ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এমন কোন স্ত্রীলোকের পক্ষে কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ নয়। তবে স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন (শোক পালন করবে)। ১২
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১২. শোক পালনের সময় মহিলাদের সুগন্ধি ব্যবহার করা জায়িয নয়। অন্যান্য সময় তা বৈধ হলেও নিজ বাড়ীতে অবস্থানের সময়ে মাত্র। পক্ষান্তরে তাদের জন্যে বাইরে বের হওয়ার সময় সুগন্ধি ব্যবহার করা হারাম।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۳ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِامْرَأَةٍ تَبْكِي عِنْدَ قَبْرٍ، فَقَالَ: «اتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي» قَالَتْ: إِلَيْكَ عَنِّي، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَبْ بِمُصِيبَتِي، وَلَمْ تَعْرِفْهُ، فَقِيلَ لَهَا: إِنَّهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَتْ بَابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدَهُ بَوَّابِينَ، فَقَالَتْ: لَمْ أَعْرِفْكَ، فَقَالَ: «إِنَّمَا الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولَى»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ছাবিত আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক মহিলার পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন, যিনি কবরের পার্শ্বে ক্রন্দন করছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি আল্লাহ্কে ভয় কর এবং ধৈর্য ধারণ কর। মহিলাটি বললেন, আমার নিকট থেকে প্রস্থান করুন। আপনার উপর তো আমার মত বিপদ উপস্থিত হয়নি। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে চিনতে পারেননি। পরে তাকে বলা হল, তিনি তো নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরজায় উপস্থিত হলেন, তাঁর কাছ কোন প্রহরী ছিল না। তিনি নিবেদন করলেন, আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। তিনি বললেনঃ “ধৈর্য ধারণ তো বিপদের প্রাথমিক অবস্থাতেই করতে হয়”। ১৩
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৩. হাদীসটি হতে জানা গেল, সর্বাবস্থায় মানুষকে উপদেশ দিতে হবে। আরও জানা গেল যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদাসিধে চলতেন। সেই সাথে আরও জানা গেল যে, না জানা ব্যক্তির ওযর গ্রহণযোগ্য।
لِقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا} [التحريم: ۶] وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ» فَإِذَا لَمْ يَكُنْ مِنْ سُنَّتِهِ، فَهُوَ كَمَا قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: {لَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى} [الأنعام: ۱۶۴] ” وَهُوَ كَقَوْلِهِ: {وَإِنْ تَدْعُ مُثْقَلَةٌ} [فاطر: ۱۸] ذُنُوبًا {إِلَى حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ} [فاطر: ۱۸] وَمَا يُرَخَّصُ مِنَ البُكَاءِ فِي غَيْرِ نَوْحٍ» وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُقْتَلُ نَفْسٌ ظُلْمًا إِلَّا كَانَ عَلَى ابْنِ آدَمَ الأَوَّلِ كِفْلٌ مِنْ دَمِهَا» وَذَلِكَ لِأَنَّهُ أَوَّلُ مَنْ سَنَّ القَتْلَ “
কারণ আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেনঃ (যার অর্থ) “তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর।” [তাহ্রীম: ৬] এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই তার নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কিন্তু তা যদি তার অভ্যাস না হয়ে থাকে তবে তার বিধান হবে যা ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা ব্যক্ত করেছেনঃ (যার অর্থ) “নিজ বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না” [আল-আন‘আম]। আর এ হলো আল্লাহ্ তা‘আলার এ বাণীর ন্যায় “কোন (গুনাহের) বোঝা বহনকারী ব্যক্তি যদি কাউকেও তা বহন করার আহবান জানায় তবে তা থেকে কিছুই বহন করা হবে না- [ফাতির: ১৮]। আর বিলাপ ব্যতীত ক্রন্দনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা হলে সে হত্যার অপরাধের অংশ প্রথম আদম সন্তান (কাবিল) এর উপর বর্তাবে। আর সেটা এ কারণে যে, সেই প্রথম ব্যক্তি যে হত্যার প্রবর্তন করেছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۴ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، وَمُحَمَّدٌ، قَالَا: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا عَاصِمُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: أَرْسَلَتِ ابْنَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِ إِنَّ ابْنًا لِي قُبِضَ، فَأْتِنَا، فَأَرْسَلَ يُقْرِئُ السَّلَامَ، وَيَقُولُ: «إِنَّ لِلَّهِ مَا أَخَذَ، وَلَهُ مَا أَعْطَى، وَكُلٌّ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمًّى، فَلْتَصْبِرْ، وَلْتَحْتَسِبْ»، فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ تُقْسِمُ عَلَيْهِ لَيَأْتِيَنَّهَا، فَقَامَ وَمَعَهُ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، وَمَعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ، وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ وَرِجَالٌ، فَرُفِعَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّبِيُّ وَنَفْسُهُ تَتَقَعْقَعُ – قَالَ: حَسِبْتُهُ أَنَّهُ قَالَ كَأَنَّهَا شَنٌّ – فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ، فَقَالَ سَعْدٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا هَذَا؟ فَقَالَ: «هَذِهِ رَحْمَةٌ جَعَلَهَا اللَّهُ فِي قُلُوبِ عِبَادِهِ، وَإِنَّمَا يَرْحَمُ اللَّهُ مِنْ عِبَادِهِ الرُّحَمَاءَ»
‘আব্দান ও মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তারা উভয়ই বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আস্বিম ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ ‘উছমান থেকে, তিনি বললেন: উসামাহ ইব্নু যায়দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জনৈকা কন্যা (যায়নাব) তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট লোক পাঠালেন যে, আমার এক পুত্র মরণাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, তাই আপনি আমাদের নিকট আসুন। তিনি বলে পাঠালেন, (তাঁকে) সালাম দিবে এবং বলবেঃ আল্লাহরই অধিকারে যা কিছু তিনি নিয়ে যান আর তাঁরই অধিকারে যা কিছু তিনি দান করেন। তাঁর নিকট সকল কিছুরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কাজেই সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং সওয়াবের অপেক্ষায় থাকে। তখন তিনি তাঁর কাছে কসম দিয়ে পাঠালেন, তিনি যেন অবশ্যই আগমন করেন। তখন তিনি দন্ডায়মান হলেন এবং তাঁর সাথে ছিলেন সা’দ ইব্নু উবাদাহ, মু‘আয ইব্নু জাবাল, উবাই ইব্নু কা’ব, যাইদ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহুম এবং আরও কয়েকজন। তখন শিশুটিকে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে তুলে দেয়া হল। তখন সে ছটফট করছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা ধারনা যে, তিনি এ কথা বলেছিলেন, যেন তার শ্বাস মশকের মত (শব্দ হচ্ছিল)। আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দু’ চক্ষু বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। সা’দ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আল্লাহর রসূল! একি? তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ্ তাঁর বান্দার অন্তরে গচ্ছিত রেখেছেন। আর আল্লাহ্ তো তাঁর দয়ালু বান্দাদের প্রতিই দয়া করেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِلَالِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: شَهِدْنَا بِنْتًا لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ عَلَى القَبْرِ، قَالَ: فَرَأَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدْمَعَانِ، قَالَ: فَقَالَ: «هَلْ مِنْكُمْ رَجُلٌ لَمْ يُقَارِفِ اللَّيْلَةَ؟» فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: أَنَا، قَالَ: «فَانْزِلْ» قَالَ: فَنَزَلَ فِي قَبْرِهَا
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আমির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফুলায়হ্’ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিলাল ইব্ন ‘আলী থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক কন্যা (উম্মু কুলসুম রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর জানাযায় উপস্থিত হলাম। আল্লাহর রসূল কবরের পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিলেন। আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তখন আমি তাঁর চক্ষু হতে অশ্রু ঝরতে দেখলাম। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে আজ রাতে স্ত্রী মিলন করোনি? আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তা হলে তুমি (কবরে) অবতরণ কর। রাবী বলেন, তখন তিনি আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর কবরে অবতরণ করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۶ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ: تُوُفِّيَتْ ابْنَةٌ لِعُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِمَكَّةَ، وَجِئْنَا لِنَشْهَدَهَا وَحَضَرَهَا ابْنُ عُمَرَ، وَابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، وَإِنِّي لَجَالِسٌ بَيْنَهُمَا – أَوْ قَالَ: جَلَسْتُ إِلَى أَحَدِهِمَا، ثُمَّ جَاءَ الآخَرُ فَجَلَسَ إِلَى جَنْبِي – فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا لِعَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ: أَلَا تَنْهَى عَنِ البُكَاءِ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ المَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেনত, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ্ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ মুলাইকা রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বলেন, মক্কায় উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর জনৈকা কন্যার মৃত্যু হল। আমরা সেখানে (জানাযায়) অংশগ্রহন করার জন্য গেলাম। ইব্নু ‘উমর এবং ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা-ও সেখানে উপস্থিত হলেন। আমি তাঁদের দু’জনের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলাম, অথবা তিনি বলেছেন, আমি তাঁদের একজনের পার্শ্বে গিয়ে উপবেশন করলাম, পরে অন্যজন আগমন করে আমার পার্শ্বে উপবেশন করলেন। (ক্রন্দনের শব্দ শুনে) ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু ‘আমর ইব্নু ‘উসমানকে বললেন, তুমি কেন ক্রন্দন করতে নিষেধ করছ না? কেননা, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে ‘আযাব দেয়া হয়”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۷ – فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: قَدْ كَانَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُولُ بَعْضَ ذَلِكَ، ثُمَّ حَدَّثَ، قَالَ: صَدَرْتُ مَعَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مِنْ مَكَّةَ، حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ إِذَا هُوَ بِرَكْبٍ تَحْتَ ظِلِّ سَمُرَةٍ، فَقَالَ: اذْهَبْ، فَانْظُرْ مَنْ هَؤُلَاءِ الرَّكْبُ، قَالَ: فَنَظَرْتُ فَإِذَا صُهَيْبٌ، فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ: ادْعُهُ لِي، فَرَجَعْتُ إِلَى صُهَيْبٍ فَقُلْتُ: ارْتَحِلْ فَالحَقْ أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، فَلَمَّا أُصِيبَ عُمَرُ دَخَلَ صُهَيْبٌ يَبْكِي يَقُولُ: وَا أَخَاهُ وَا صَاحِبَاهُ، فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: يَا صُهَيْبُ، أَتَبْكِي عَلَيَّ، وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ المَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ»
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) তখন ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-ও এমন কিছু বলতেন। অতঃপর ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করলেন, ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর সাথে মক্কা থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলাম। আমরা বাইদা (নামক স্থানে) উপস্থিত হলে ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বাবলা বৃক্ষের ছায়ায় একটি কাফিলা দর্শন করতঃ আমাকে বললেন, গিয়ে দেখো এ কাফিলা কার? ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি গিয়ে দেখলাম সেখানে সুহাইব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আছেন। আমি তাঁকে তা অবহিত করলাম। তিনি বললেন, তাঁকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। আমি সুহাইব রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট আবার গেলাম এবং বললাম, চলুন, আমীরুল মু’মিনীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন। অতঃপর যখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু (ঘাতকের আঘাতে) আহত হলেন, তখন সুহাইব রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর কাছে আগমন করতঃ এ বলে ক্রন্দন করতে লাগলেন, হায় আমার ভাই! হায় আমার বন্ধু! এতে ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, তুমি আমার জন্য ক্রন্দন করছো? অথচ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার আপন জনের কোন কোন কান্নার কারণে অবশ্যই তাকে ‘আযাব দেয়া হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۸ – قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَقَالَتْ: رَحِمَ اللَّهُ عُمَرَ، وَاللَّهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ لَيُعَذِّبُ المُؤْمِنَ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ»، وَلَكِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ لَيَزِيدُ الكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ»، وَقَالَتْ: حَسْبُكُمُ القُرْآنُ: {وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى} [الأنعام: ۱۶۴] قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «عِنْدَ ذَلِكَ وَاللَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى» قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ: «وَاللَّهِ مَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا شَيْئًا»
ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর মৃত্যুর পর ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট আমি ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর এ উক্তি উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে রহম করুন। আল্লাহর কসম! আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার (মৃত) ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বললেন, (এ ব্যাপারে) আল্লাহর কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইরশাদ হয়েছে) : ‘বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না’- (আন‘আম ১৬৪)। তখন ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আল্লাহ্ই (বান্দাকে) হাসান এবং কাঁদান করান। রাবী ইব্নু আবূ মুলাইকা রহমাহুল্লাহ বলেন, আল্লাহর কসম! (এ কথা শুনে) ইব্নু ‘উমর কোন মন্তব্য করলেন না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۸۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا: سَمِعَتْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: إِنَّمَا مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى يَهُودِيَّةٍ يَبْكِي عَلَيْهَا أَهْلُهَا، فَقَالَ: «إِنَّهُمْ لَيَبْكُونَ عَلَيْهَا وَإِنَّهَا لَتُعَذَّبُ فِي قَبْرِهَا»
‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিললেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বক্র থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আম্র বিন্তি ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ইয়াহুদী স্ত্রীলোকের (কবরের) পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যার পরিবারের লোকেরা তার জন্য ক্রন্দন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তারা তো তার জন্য ক্রন্দন করছে। অথচ তাকে কবরে ‘আযাব দেয়া হচ্ছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۰ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ خَلِيلٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ وَهْوَ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: لَمَّا أُصِيبَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ جَعَلَ صُهَيْبٌ يَقُولُ: وَا أَخَاهُ، فَقَالَ عُمَرُ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ المَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الحَيِّ»
ইসমা‘ঈল ইব্নু খলীল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আলী ইব্নু মুস্হির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ইস্হা’ক্ব শায়বানী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বুরদার থেকে, তিনি তাঁর পিতা (আবূ মূসা আশ‘আরী রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, যখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু আহত হলেন, তখন সুহাইব রাজিআল্লাহু ‘আনহু হায়! আমার ভাই! বলতে লাগলেন। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তুমি কি অবহিত নও যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ জীবিতদের কান্নার কারণে অবশ্যই মৃতদের ‘আযাব দেয়া হয়?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «دَعْهُنَّ يَبْكِينَ عَلَى أَبِي سُلَيْمَانَ مَا لَمْ يَكُنْ نَقْعٌ أَوْ لَقْلَقَةٌ» وَالنَّقْعُ: التُّرَابُ عَلَى الرَّأْسِ، وَاللَّقْلَقَةُ: الصَّوْتُ “
উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আবূ সুলাইমান (খালিদ ইব্ন ওয়ালীদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর জন্য) তাঁর (পরিবার পরিজনকে) কাঁদতে দাও। যতক্ষণ نقع (নাক্’) কিংবা لقلقة (লাকলাকা) না হয়। নাক্’ হল- মাথায় মাটি নিক্ষেপ, আর ‘লাকলাকা’ হল- চিৎকার।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۱ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ المُغِيرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ، مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ» سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ نِيحَ عَلَيْهِ يُعَذَّبُ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু ‘উবায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ’লী ইব্ন রাবী‘আহ্ থেকে, তিনি মুগীরা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে সে যেন অবশ্যই তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়। (মুগীরা রাজিআল্লাহু ‘আনহু আরও বলেছেন), আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আরও বলতে শুনেছি, যে (মৃত) ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপকৃত বিষয়ের উপর ‘আযাব দেয়া হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۲ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «المَيِّتُ يُعَذَّبُ فِي قَبْرِهِ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ» تَابَعَهُ عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، وَقَالَ آدَمُ: عَنْ شُعْبَةَ: «المَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الحَيِّ عَلَيْهِ»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন শু‘বাহ্ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ্ থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি ইব্ন ‘উমার থেকে, তিনি তাঁর পিতা ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য বিলাপের কারণে তাকে কবরে শাস্তি দেয়া হয়”। আবদুল আ‘লা রহমাহুল্লাহ তাঁকে অনুসরণ করেছেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ রহমাহুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: কাতাদা এবং আদম রহমাহুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘বাহ্ থেকে, তিনি বললেন: “মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য জীবিতদের কান্নার কারণে ‘আযাব দেয়া হয়”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
(মাক্তাবাতুস্ সামেলাতে এ বাব নাই এবং এ হাদীসটি পূর্ববর্তি ৮১০ নং বাবের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। কিন্তু ইসলামী ফাউন্ডেশন-এর ছাপানো বুখারী গ্রন্থে এ বাবটি শিরোনাম বিহীন অবস্থায় দেখানো হয়েছে এবং এতে ১২৯৩ নং হাদীসটি দেখানো হয়েছে।)
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۳ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا ابْنُ المُنْكَدِرِ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: جِيءَ بِأَبِي يَوْمَ أُحُدٍ قَدْ مُثِّلَ بِهِ، حَتَّى وُضِعَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ سُجِّيَ ثَوْبًا، فَذَهَبْتُ أُرِيدُ أَنْ أَكْشِفَ عَنْهُ، فَنَهَانِي قَوْمِي، ثُمَّ ذَهَبْتُ أَكْشِفُ عَنْهُ، فَنَهَانِي قَوْمِي، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرُفِعَ، فَسَمِعَ صَوْتَ صَائِحَةٍ، فَقَالَ: «مَنْ هَذِهِ؟» فَقَالُوا: ابْنَةُ عَمْرٍو – أَوْ أُخْتُ عَمْرٍو – قَالَ: «فَلِمَ تَبْكِي؟ أَوْ لَا تَبْكِي، فَمَا زَالَتِ المَلَائِكَةُ تُظِلُّهُ بِأَجْنِحَتِهَا حَتَّى رُفِعَ»
আলী ইব্নু আব্দুল্লাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু মুন্কাদির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমার পিতাকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তিত অবস্থায় নিয়ে এসে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে রাখা হল। তখন একখানি বস্ত্র দ্বারা তাঁকে আবৃত রাখা হয়েছিল। আমি তাঁর উপর হতে আবরণ উন্মোচন করেতে আসলে আমার কওমের লোকেরা আমাকে নিষেধ করল। পুনরায় আমি আবরণ উন্মুক্ত করতে থাকলে আমার কওমের লোকেরা (আবার) আমাকে নিষেধ করল। পরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশে তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হল। তখন তিনি (রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ক্রন্দনকারিণীর শব্দ শুনে জিজ্ঞেস করলেন, এ কে? লোকেরা বলল, ‘আমরের মেয়ে অথবা (তারা বলল,) ‘আমরের বোন। তিনি বললেন, ক্রন্দন করছো কেন? অথবা বললেন, ক্রন্দন করো না। কেননা, তাঁকে উঠিয়ে নেয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাঁদের পক্ষ বিস্তার করে তাঁকে ছায়া দিয়ে রেখেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৪. মৃত ব্যক্তির জন্য আত্মীয়দের যা করণীয়ঃ (১) ধৈর্য ধারণ করা ও তাকদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকা ও ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলা। [সূরা আল-বাক্কারাহ : ১৫৫-১৫৭] (২) তার জন্য দু ‘আ করা ও তার সামনে উত্তম কথা বলা। (৩) মৃত্যু সংবাদ দিয়ে মানুষকে এ কথা বলা যে, তোমরা মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। (৪) যথাশীঘ্র তার জানাযা ও দাফনের ব্যবস্থা করা। (৫) মৃতের ঋণ থাকলে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা।
মৃত্যুর পর মানুষ যে সব কাজের জন্য উপকৃত হবেঃ (১) সে নিজে বা তার পক্ষ থেকে সাদকায়ে জারিয়া। (২) ইল্ম যার দ্বারা উপকার সাধিত হয়। (৩) সৎ সন্তান যে তার জন্য দুয়া করতে থাকে। [মুসলিম] মৃতের জন্য তার কবরে একাকীভাবে দু ‘হাত তুলে দু ‘আ করা জায়িয। [‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর হাদীস]
মসজিদ মাদ্রাসাহ, মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠা, রস্তাঘাট, সেতু নর্মাণ, কূপ, বিল, নহর খনন, কুরআন-হাদীসের কিতাবাদি ক্রয় করে প্রদান এসব কাজ সাদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۴ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا زُبَيْدٌ اليَامِيُّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ، وَشَقَّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুবায়দ ইয়ামী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্রাহীম থেকে, তিনি মাস্রূক্ব থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস‘ঊদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যারা (মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশে) গন্ডে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে এবং জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُنِي عَامَ حَجَّةِ الوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ اشْتَدَّ بِي، فَقُلْتُ: إِنِّي قَدْ بَلَغَ بِي مِنَ الوَجَعِ وَأَنَا ذُو مَالٍ، وَلَا يَرِثُنِي إِلَّا ابْنَةٌ، أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِي؟ قَالَ: «لَا» فَقُلْتُ: بِالشَّطْرِ؟ فَقَالَ: «لَا» ثُمَّ قَالَ: «الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ – أَوْ كَثِيرٌ – إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ، خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ، وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللَّهِ إِلَّا أُجِرْتَ بِهَا، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ» فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي؟ قَالَ: «إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا صَالِحًا إِلَّا ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً، ثُمَّ لَعَلَّكَ أَنْ تُخَلَّفَ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ، وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُونَ، اللَّهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ، وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ، لَكِنِ البَائِسُ سَعْدُ ابْنُ خَوْلَةَ» يَرْثِي لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ مَاتَ بِمَكَّةَ
আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘আমির ইব্ন সা‘ঈদ ইব্ন আবূ ওয়াক্কাস থেকে, তিনি তাঁর পিতা সা‘দ ইব্নু আবূ ওয়াক্কাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জে একটি কঠিন রোগে আমি আক্রান্ত হলে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার খোঁজ খবর নেয়ার জন্য আসতেন। একদা আমি তাঁর কাছে নিবেদন করলাম, আমার রোগ চরমে পৌঁছেছে আর আমি সম্পদশালী। একমাত্র কন্যা ছাড়া কেউ আমার উত্তরাধিকারী নেই। তবে আমি কি আমার সম্পদের দু’ তৃতীয়াংশ সদকা করতে পারি? তিনি বললেন, না। আমি আবার নিবেদন করলাম, তাহলে অর্ধেক। তিনি বললেন, না। অতঃপর তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও বিরাট পরিমাণ অথবা অধিক। তোমরা ওয়ারিসদের অভাবমুক্ত রেখে যাওয়া, তাদের খালি হাতে পরমুখাপেক্ষী অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম। ১৫ আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তুমি যে কোন ব্যয় করো না কেন, তোমাকে তার বিনিময়ে প্রদান করা হবে। এমনকি যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে (তারও প্রতিদান পাবে)। আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! (আফসোস) আমি আমার সাথীদের হতে পিছনে থেকে যাব? তিনি বললেন, তুমি যদি পিছনে থেকে নেক ‘আমল করতে থাক, তাহলে তাতে তোমার মর্যাদা ও উন্নতি বৃদ্ধিই পেতে থাকবে। তাছাড়া, সম্ভবত, তুমি পিছনে (থেকে যাবে)। যার ফলে তোমার দ্বারা অনেক কওম উপকার লাভ করবে। আর অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ্! আমার সাহাবীগনের হিজরত বলবৎ রাখুন। পশ্চাতে ফিরিয়ে দিবেন না। কিন্তু আফসোস! সা‘দ ইব্নু খাওলার জন্য (এ বলে) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করছিলেন, যেহেতু মক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৫. বর্তমান সমাজে কিছু অতি পরহেজগার লোক দেখা যায় যারা নিজেদের ওয়ারিসদের বঞ্চিত করে মালের সিংহভাগ দান করে থাকেন, কেউ বা মেয়েদের বঞ্চিত করেন আবার কেউ বা সমাবেশ করে লিখে দিয়ে যান তাদেরকে এ হাদীস থেকে শিক্ষা নেয়া দরকার।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۶ – وَقَالَ الحَكَمُ بْنُ مُوسَى: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جَابِرٍ: أَنَّ القَاسِمَ بْنَ مُخَيْمِرَةَ حَدَّثَهُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ بْنُ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: وَجِعَ أَبُو مُوسَى وَجَعًا شَدِيدًا، فَغُشِيَ عَلَيْهِ وَرَأْسُهُ فِي حَجْرِ امْرَأَةٍ مِنْ أَهْلِهِ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَرُدَّ عَلَيْهَا شَيْئًا، فَلَمَّا أَفَاقَ، قَالَ: أَنَا بَرِيءٌ مِمَّنْ بَرِئَ مِنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ وَالحَالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ»
হা’কাম ইব্নু মূসা বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু হা’মযাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্ন জাবির থেকে, তিনি ক্বাসিম ইব্ন মুখায়মিরাহ্ থেকে, তিনি বললেন: আবূ বুরদা ইব্নু আবূ মূসা রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আবূ মূসা আশ‘আরী রাজিআল্লাহু ‘আনহু কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেন। এমনকি তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। তখন তাঁর মাথা তাঁর পরিবারভুক্ত কোন এক মহিলার কোলে ছিল। তিনি তাকে কোন জবাব দিতে পারছিলেন না। জ্ঞান ফিরে পেলে তিনি বললেন, সে সব লোকের সঙ্গে আমি সম্পর্ক রাখিনা যাদের সাথে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে সব নারীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের কথা প্রকাশ করেছেন- যারা চিৎকার করে ক্রন্দন করে, যারা মস্তক মুন্ডন করে এবং যারা জামা কাপড় ছিন্ন করে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الخُدُودَ، وَشَقَّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ্’মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘মাশ থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্ন মুর্রাহ্ থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নূ মাস’উদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যারা শোকে গণ্ডে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۸ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الخُدُودَ، وَشَقَّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ»
‘উমার ইব্নু হা’ফ্স্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন মুর্রাহ্ থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ যারা শোকে গণ্ডে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۲۹۹ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، قَالَ: سَمِعْتُ يَحْيَى، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي عَمْرَةُ، قَالَتْ: سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: لَمَّا جَاءَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَتْلُ ابْنِ حَارِثَةَ، وَجَعْفَرٍ، وَابْنِ رَوَاحَةَ جَلَسَ يُعْرَفُ فِيهِ الحُزْنُ وَأَنَا أَنْظُرُ مِنْ صَائِرِ البَابِ شَقِّ البَابِ، فَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: إِنَّ نِسَاءَ جَعْفَرٍ وَذَكَرَ بُكَاءَهُنَّ، فَأَمَرَهُ أَنْ يَنْهَاهُنَّ، فَذَهَبَ، ثُمَّ أَتَاهُ الثَّانِيَةَ، لَمْ يُطِعْنَهُ، فَقَالَ: «انْهَهُنَّ» فَأَتَاهُ الثَّالِثَةَ، قَالَ: وَاللَّهِ لَقَدْ غَلَبْنَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَزَعَمَتْ أَنَّهُ قَالَ: «فَاحْثُ فِي أَفْوَاهِهِنَّ التُّرَابَ» فَقُلْتُ: أَرْغَمَ اللَّهُ أَنْفَكَ، لَمْ تَفْعَلْ مَا أَمَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَمْ تَتْرُكْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ العَنَاءِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ইয়াহ্’ইয়া থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: ‘আমরাহ্ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, যখন (মুতা-র যুদ্ধ ক্ষেত্র হতে) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে (যায়দ) ইব্নূ হারিসা রাজিআল্লাহু ‘আনহু, জা’ফর ও ইব্নু রাওয়াহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর শাহাদাতের খবর পৌঁছল, তখন তিনি (এমনভাবে) বসে পড়লেন যে, তাঁর মধ্যে দুঃখের চিহ্ন ফুটে উঠেছিল। আমি (‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা) দরজার ফাঁক দিয়ে তা প্রত্যক্ষ করছিলাম। এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হয়ে জা’ফর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর পরিবারের মহিলাদের কান্নাকাটির কথা উল্লেখ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন, তিনি যেন তাদেরকে কান্নাকাটি করতে নিষেধ করেন, লোকটি চলে গেল এবং দ্বিতীয়বার এসে (বলল) তারা তার কথা মানেনি। তিনি ইরশাদ করলেনঃ তাঁদেরকে নিষেধ করো। ঐ ব্যক্তি তৃতীয়বার এসে বললেন, আল্লাহর কসম! সে আল্লাহর রাসূল! তাঁরা আমাদের হার মানিয়েছে। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমার মনে হয়, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরক্তির সাথে বললেনঃ তাহলে তাদের মুখে মাটি নিক্ষেপ করো। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্ তোমার নাকে ধূলি মিলিয়ে দেন। ১ তুমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশ পালন করতে পারনি। অথচ তুমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বিরক্ত করতেও দ্বিধা করোনি। ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. أَرغَمَ اللهُ : আরবী ব্যবহারে বাক্যটি তোমাকে অপছন্দনীয় বিষয়ের সম্মুখীন করুন ও তোমাকে লজ্জিত, অপমানিত করুন, অর্থে ব্যবহৃত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۰ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا حِينَ قُتِلَ القُرَّاءُ، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَزِنَ حُزْنًا قَطُّ أَشَدَّ مِنْهُ»
‘আমর ইব্নু ‘আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু ফুযায়্ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আস্বিম আহ্’ওয়াল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, (বীর-ই মাউনার ঘটনায়) ক্বারি (সাহাবীগনের) শাহাদাতের পর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ফজরের সালাতে) এক মাস যাবত কুনুত-ই নাযিলা ২ পাঠ করেছিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমি আর কখনো এর চেয়ে অধিক শোকাভিভূত হতে দেখিনি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২. কুনূত-ই-নাযিলাঃ মুসলমানদের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় সার্বিক বিপদকালে ফজরের সালাতে দ্বিতীয় রাকা’আতের রুকূ’র পর দাঁড়িয়ে ইমাম সাহেব উচ্চস্বরে বিশেষ দু’আ পড়েন, (মুক্তাদীগণ আমীন, আমীন, বলতে থাকেন) এ দু’আকে কুনূত-ই-নাযিলা বলা হয়।
وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ كَعْبٍ القُرَظِيُّ: ” الجَزَعُ: القَوْلُ السَّيِّئُ وَالظَّنُّ السَّيِّئُ “، وَقَالَ يَعْقُوبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ: {إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ} [يوسف: ۸۶]
মুহাম্মাদ ইব্নু কা’ব রহমাহুল্লাহ বলেন, অস্থিরতা হচ্ছে মন্দ বাক্য উচ্চারণ করা, কুধারনা পোষণ করা। ই‘কূব ‘আলাইহিস্ সালাম বলেছেনঃ “আমি আমার অসহনীয় বেদনা ও আমার দুঃখ শুধু আল্লাহ্র নিকট নিবেদন করছি।” [সূরা ইউসুফ: ১২, ৮৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۱ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الحَكَمِ ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: اشْتَكَى ابْنٌ لِأَبِي طَلْحَةَ، قَالَ: فَمَاتَ، وَأَبُو طَلْحَةَ خَارِجٌ، فَلَمَّا رَأَتِ امْرَأَتُهُ أَنَّهُ قَدْ مَاتَ هَيَّأَتْ شَيْئًا، وَنَحَّتْهُ فِي جَانِبِ البَيْتِ، فَلَمَّا جَاءَ أَبُو طَلْحَةَ قَالَ: كَيْفَ الغُلَامُ، قَالَتْ: قَدْ هَدَأَتْ نَفْسُهُ، وَأَرْجُو أَنْ يَكُونَ قَدِ اسْتَرَاحَ، وَظَنَّ أَبُو طَلْحَةَ أَنَّهَا صَادِقَةٌ، قَالَ: فَبَاتَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ اغْتَسَلَ، فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ أَعْلَمَتْهُ أَنَّهُ قَدْ مَاتَ، فَصَلَّى مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ أَخْبَرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا كَانَ مِنْهُمَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُبَارِكَ لَكُمَا فِي لَيْلَتِكُمَا» قَالَ سُفْيَانُ: فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ: فَرَأَيْتُ لَهُمَا تِسْعَةَ أَوْلَادٍ كُلُّهُمْ قَدْ قَرَأَ القُرْآنَ
বিশর ইব্নু হা’কাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান ইব্নু ‘উইয়ায়্নাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসহা’ক্ব ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ত্বাল্হা’ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর এক পুত্র অসুস্থ হয়ে পড়ল। বর্ণনাকারী বলেন, তার মৃত্যু হলো। তখন আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বাড়ির বাইরে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী যখন দেখলেন যে, ছেলেটি মারা গেছে, তখন তিনি কিছু প্রস্তুতি নিলেন ১ এবং ছেলেটিকে ঘরের এক কোণে রেখে দিলেন। আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বাড়িতে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ছেলের অবস্থা কেমন? স্ত্রী জওয়াব দিলেন, তার আত্মা শান্ত হয়েছে এবং আশা করি সে এখন আরাম পাচ্ছে। আবূ তালহা ভাবলেন তাঁর স্ত্রী সত্য বলেছেন। রাবী বলেন, তিনি রাত যাপন করলেন এবং ভোরে গোসল করলেন। তিনি বাইরে যেতে উদ্যত হলে স্ত্রী তাঁকে জানালেন, ছেলেটি মারা গেছে। অতঃপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে (ফজরের) সালাত আদায় করলেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তাঁদের রাতের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করলেন। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ আশা করা যায়, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের এ রাতে বরকত দিবেন। সুফিয়ান রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক ব্যক্তি বর্ণনা করেছেন, আমি আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু দম্পতির নয় জন সন্তান দেখেছি, তাঁরা সবাই কুরআন পাঠ করেছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. যাতে স্বামী ব্যাপারটি বুঝতে না পারেন তজ্জন্য তিনি নিজেই শিশুটির গোসল ও কাফনের ব্যবস্থা করলেন, অথবা খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করলেন, অথবা স্বামীর সঙ্গলাভের জন্য সাজ-সজ্জার প্রস্তুতি নিলেন।
وَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: نِعْمَ العِدْلَانِ، وَنِعْمَ العِلَاوَةُ: {الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُصِيبَةٌ قَالُوا: إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ، وَأُولَئِكَ هُمُ المُهْتَدُونَ} [البقرة: ۱۵۷] وَقَوْلُهُ تَعَالَى: {وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ، وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الخَاشِعِينَ} [البقرة: ۴۵]
‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, কতই না উত্তম দুই ঈদ্র এবং কতই না উত্তম ইলাওয়াহ্ ১৬ (আল্লাহ্র বাণী) [যার অর্থ] “যারা তাদের উপর যখন যখন কোন বিপদ আপতিত হয় তখন বলেঃ আমরা তো আল্লাহরই জন্য এবং আমরা সবাই অবশ্যই তাঁরই কাছে ফিরে যাব। এরাই তাঁরা যাদের প্রতি রয়েছে তাদের রবের তরফ থেকে অশেষ অনুগ্রহ ও করুণা আর এরাই হল হিদায়াতপ্রাপ্ত।” [আল-বাকারাহ ১৫৬-১৫৭] আর আল্লাহ্ তা ‘আলার বাণীঃ “তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে। অবশ্য তা অত্যান্ত কঠিন, তবে সেসব বিনীত লোকদের ব্যতিরেকে।” [আল-বাকারাহ্ ৪৫]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۲ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ ثَابِتٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولَى»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ছাবিত থেকে, তিনি বললেন: আমি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বিপদের প্রথম অবস্থায়ই প্রকৃত সবর।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৬. উটের পিঠে দুই পার্শের বোঝাকে ঈদ্লান বলা হয় এবং তাঁর উপরে মধ্যবর্তী স্থানে যে বোঝা রাখা হয় তাকে ইলাওয়াহ্ বলা হয়। (১৫৭)
وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَدْمَعُ العَيْنُ، وَيَحْزَنُ القَلْبُ»
ইব্নু ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণনা করেছেন, (বিপদে) চোখ অশ্রু সজল হয়, অন্তর হয় ব্যথিত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۳ – حَدَّثَنَا الحَسَنُ بْنُ عَبْدِ العَزِيزِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا قُرَيْشٌ هُوَ ابْنُ حَيَّانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: دَخَلْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَبِي سَيْفٍ القَيْنِ، وَكَانَ ظِئْرًا لِإِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِبْرَاهِيمَ، فَقَبَّلَهُ، وَشَمَّهُ، ثُمَّ دَخَلْنَا عَلَيْهِ بَعْدَ ذَلِكَ وَإِبْرَاهِيمُ يَجُودُ بِنَفْسِهِ، فَجَعَلَتْ عَيْنَا رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَذْرِفَانِ، فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: وَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ: «يَا ابْنَ عَوْفٍ إِنَّهَا رَحْمَةٌ»، ثُمَّ أَتْبَعَهَا بِأُخْرَى، فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ العَيْنَ تَدْمَعُ، وَالقَلْبَ يَحْزَنُ، وَلَا نَقُولُ إِلَّا مَا يَرْضَى رَبُّنَا، وَإِنَّا بِفِرَاقِكَ يَا إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ» رَوَاهُ مُوسَى، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ المُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হা’সান ইব্নু ‘আব্দুল আযীয আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু হা’স্সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বুরায়্শ তিনি ছিলেন ইব্নু হা’য়্য়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ছাবিত থেকে, তিনি ‘আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে আবূ সায়ফ্ কর্মকারের নিকট গেলাম। তিনি ছিলেন (নবী -তনয়) ইব্রাহীম রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর দুধ সম্পর্কীয় পিতা। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইব্রাহীম রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে তুলে নিয়ে চুমু খেলেন এবং নাকে-মুখে লাগালেন। অতঃপর (আরেক বার) আমরা তাঁর (আবূ সায়ফ্-এর) বাড়িতে গেলাম। তখন ইব্রাহীম রাজিআল্লাহু ‘আনহু মুমূর্ষু অবস্থায়। এতে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উভয় চক্ষু হতে অশ্রু ঝরতে লাগল। তখন ‘আবদুর রহমান ইব্নু ‘আওফ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আর আপনিও? (ক্রন্দন করছেন)। তখন তিনি বললেনঃ অশ্রু প্রবাহিত হয় আর হৃদয় হয় ব্যথিত। তবে আমরা মুখে তা-ই বলি যা আমাদের রব পছন্দ করেন। ১৭ আর হে ইব্রাহীম! তোমার বিচ্ছেদে আমরা অবশ্যই শোকসন্তপ্ত। ১৮ মূসা রহ্’মাহুল্লাহ বর্ণনা করলেন সুলায়মান ইব্ন মুগীরাহ থেকে, তিনি ছাবিত থেকে, তিনি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৭. হাদিসটি হতে বিপদে অশ্রু ঝড়ানো আর মহান আল্লাহর নাফরমানী প্রকাশক শব্দাবলী বাদ দিয়ে মুখে শোক প্রকাশ করার অনুমতি পাওয়া যায়, পক্ষান্তরে মহান আল্লাহর নাফরমানী হয় কিংবা তাকদীরের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশক শব্দাবলী পরিত্যাগ করার তাকীদ দেয়া হয়।
১৮. এ ধরনের বাকরীতি বিভিন্ন ভাষায় বিদ্যমান আছে। সুতরাং আরবীতে তো থাকবেই। বিধায় মৃত ব্যক্তিকে সংশোধন করার দলীল হিসাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীটি ব্যবহার করার কোনই অবকাশ নেই।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۴ – حَدَّثَنَا أَصْبَغُ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الحَارِثِ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: اشْتَكَى سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ شَكْوَى لَهُ، فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ مَعَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، وَسَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ فَوَجَدَهُ فِي غَاشِيَةِ أَهْلِهِ، فَقَالَ: «قَدْ قَضَى» قَالُوا: لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَبَكَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا رَأَى القَوْمُ بُكَاءَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَكَوْا، فَقَالَ: «أَلَا تَسْمَعُونَ إِنَّ اللَّهَ لَا يُعَذِّبُ بِدَمْعِ العَيْنِ، وَلَا بِحُزْنِ القَلْبِ، وَلَكِنْ يُعَذِّبُ بِهَذَا – وَأَشَارَ إِلَى لِسَانِهِ – أَوْ يَرْحَمُ، وَإِنَّ المَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ» وَكَانَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «يَضْرِبُ فِيهِ بِالعَصَا، وَيَرْمِي بِالحِجَارَةِ، وَيَحْثِي بِالتُّرَابِ»
আস্ব্বাগ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ওয়াহ্ব থেকে, তিনি বললেন: ‘আমর আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সা ‘ঈদ ইব্ন হা’রিছ আনসারী থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, সা’দ ইব্নু ‘উবাদাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু রোগাক্রান্ত হলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘আবদুর রাহমান ইব্নু ‘আওফ’ সা’দ ইব্নু আবূ ওয়াক্কাস এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে দেখতে আসলেন। তিনি তাঁর ঘরে প্রবেশ করে তাঁকে পরিজনের মাঝে দেখতে পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, তার কি মৃত্যু হয়েছে! তাঁরা বললেন, না। হে আল্লাহর রসূল! তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেঁদে ফেললেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কান্না দেখে উপস্থিত লকেরা কাঁদতে লাগলেন। তখন তিনি ইরশাদ করলেনঃ শুনে রাখ! নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা’আলা চোখের পানি ও অন্তরের শোক-ব্যথার কারনে ‘আযাব দিবেন না। তিনি ‘আযাব দিবেন এর কারনে (এ বলে) জিহ্বার দিকে ইঙ্গিত করলেন। অথবা এর কারণেই তিনি রহম করে থাকেন। আর নিশ্চয় মৃত ব্যক্তিকে তাঁর পরিজনের বিলাপের কারণে ‘আযাব দেয়া হয়’। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু এ (ধরণের কান্নার) কারণে লাঠি দ্বারা আঘাত করতেন, কঙ্কর নিক্ষেপ করতেন বা মুখে মাটি পুরে দিতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي عَمْرَةُ، قَالَتْ: سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، تَقُولُ: لَمَّا جَاءَ قَتْلُ زَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ، وَجَعْفَرٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَوَاحَةَ جَلَسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْرَفُ فِيهِ الحُزْنُ، وَأَنَا أَطَّلِعُ مِنْ شَقِّ البَابِ، فَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ نِسَاءَ جَعْفَرٍ وَذَكَرَ بُكَاءَهُنَّ، فَأَمَرَهُ بِأَنْ يَنْهَاهُنَّ، فَذَهَبَ الرَّجُلُ، ثُمَّ أَتَى، فَقَالَ: قَدْ نَهَيْتُهُنَّ، وَذَكَرَ أَنَّهُنَّ لَمْ يُطِعْنَهُ، فَأَمَرَهُ الثَّانِيَةَ أَنْ يَنْهَاهُنَّ، فَذَهَبَ ثُمَّ أَتَى، فَقَالَ: وَاللَّهِ لَقَدْ غَلَبْنَنِي – أَوْ غَلَبْنَنَا، الشَّكُّ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ – فَزَعَمَتْ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «فَاحْثُ فِي أَفْوَاهِهِنَّ التُّرَابَ» فَقُلْتُ: أَرْغَمَ اللَّهُ أَنْفَكَ، فَوَاللَّهِ مَا أَنْتَ بِفَاعِلٍ، وَمَا تَرَكْتَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ العَنَاءِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু হা’ওশাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আমরাহ্ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, (মুতার যুদ্ধ ক্ষেত্র হতে) যায়দ ইব্নু হারিসাহ, জা’ফর এবং ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্নু রাওয়াহা রাজিআল্লাহু ‘আনহুম-এর শাহাদাতের খবর পৌঁছলে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসে পড়লেন; তাঁর মধ্যে শোকের আলামত প্রকাশ পেল। আমি (‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা) দরজার ফাঁক দিয়ে ঝুঁকে তা দেখছিলাম। তখন এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে সম্বোধন করেন, হে আল্লাহর রসূল! জা’ফর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর (পরিবারের) মহিলাগণ কান্নাকাটি করছে। তিনি তাদের নিষেধ করার জন্য তাকে আদেশ করলেন। সেই ব্যক্তি চলে গেলেন। পরে এসে বললেন, আমি তাদের নিষেধ করেছি। তিনি উল্লেখ করলেন যে, তারা তাকে মানেনি। তিনি তাদের নিষেধ করার জন্য দ্বিতীয়বার তাকে নির্দেশ দিলেন। তিনি চলে গেলেন এবং আবার এসে বললেন, আল্লাহর কসম! অবশ্যই তাঁরা আমাকে (বা বলেছেন আমাদেরকে) হার মানিয়েছে। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তা হলে তাঁদের মুখে মাটি ছুঁড়ে মারো। (‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন) আমি বললাম, আল্লাহ্ তোমার নাকে ধূলি মিশ্রিত করুন। আল্লাহর কসম! তোমাকে যে কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা করতে পারছ না আর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বিরক্ত করতেও ছাড়ছে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۶ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «أَخَذَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ البَيْعَةِ أَنْ لَا نَنُوحَ»، فَمَا وَفَتْ مِنَّا امْرَأَةٌ غَيْرَ خَمْسِ نِسْوَةٍ: أُمِّ سُلَيْمٍ، وَأُمِّ العَلَاءِ، وَابْنَةِ أَبِي سَبْرَةَ امْرَأَةِ مُعَاذٍ، وَامْرَأَتَيْنِ – أَوِ ابْنَةِ أَبِي سَبْرَةَ، وَامْرَأَةِ مُعَاذٍ وَامْرَأَةٍ أُخْرَى –
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি উম্মু আতিয়্যা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাই’আত গ্রহণকালে আমাদের কাছ হতে এ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, আমরা (কোন মৃতের জন্য) বিলাপ করব না। কিন্তু আমাদের মধ্য হতে পাঁচজন মহিলা উম্মু সুলাইম, উম্মুল ‘আলা, আবূ সাব্রাহ্র কন্যা মু’আযের স্ত্রী, আরো দু’জন মহিলা বা মু’আযের স্ত্রী ও আরেকজন মহিলা ব্যতীত কোন নারীই সে ওয়াদা রক্ষা করেনি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۷ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا رَأَيْتُمُ الجَنَازَةَ، فَقُومُوا حَتَّى تُخَلِّفَكُمْ» قَالَ سُفْيَانُ: قَالَ الزُّهْرِيُّ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَادَ الحُمَيْدِيُّ: «حَتَّى تُخَلِّفَكُمْ أَوْ تُوضَعَ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহ্রী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সালিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আমির ইব্নু রাবী’আ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা জানাযা দেখলে তা তোমাদের পিছনে ফেলে যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে। হুমাইদী আরও উল্লেখ করেছেন, তা তোমাদের পশ্চাতে ফেলে যাওয়া বা মাটিতে নামিয়ে রাখা পর্যন্ত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۸ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ جِنَازَةً، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ مَاشِيًا مَعَهَا، فَلْيَقُمْ حَتَّى يَخْلُفَهَا أَوْ تُخَلِّفَهُ أَوْ تُوضَعَ مِنْ قَبْلِ أَنْ تُخَلِّفَهُ»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্ন ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি ‘আমির ইব্ন রাবিয়া‘ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ জানাযা যেতে দেখলে যদি সে তাঁর সহযাত্রী না হয়, তবে ততক্ষন সে দাঁড়িয়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে ব্যক্তি জানাযা পিছনে ফেলে বা জানাযা তাকে পিছনে ফেলে যায় অথবা পিছনে ফেলে যাওয়ার পূর্বে তা (মাটিতে) নামিয়ে রাখা হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۰۹ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: كُنَّا فِي جَنَازَةٍ، فَأَخَذَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِيَدِ مَرْوَانَ فَجَلَسَا قَبْلَ أَنْ تُوضَعَ، فَجَاءَ أَبُو سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَأَخَذَ بِيَدِ مَرْوَانَ، فَقَالَ: قُمْ فَوَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمَ هَذَا «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَانَا عَنْ ذَلِكَ» فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ صَدَقَ
আহ্’মাদ ইব্নু ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা’ঈদ মাক্বুরী থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বলেন, আমরা একটি জানাযায় শরীক হলাম। (সেখানে) আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু মারওয়ানের হাত ধরলেন এবং তাঁর জানাযা নামিয়ে রাখার পূর্বেই বসে পড়লেন। তখন আবূ সা’ঈদ এগিয়ে এসে মারওয়ানের হাত ধরে বললেন, দাঁড়িয়ে পড়ুন! আল্লাহর কসম! ইনি (আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তো জানেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ কাজ করতে (জানাযা নামিয়ে রাখার পূর্বে বসতে) নিষেধ করেছেন। তখন আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তিনি ঠিকই বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۰ – حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ يَعْنِي ابْنَ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا رَأَيْتُمُ الجَنَازَةَ، فَقُومُوا، فَمَنْ تَبِعَهَا فَلَا يَقْعُدْ حَتَّى تُوضَعَ»
মুসলিম অর্থাৎ ইব্ন ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন কোন জানাযা যেতে দেখবে, যদি সে তার সহযাত্রী না হয় তাহলে সে ততক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবে, যতক্ষণ না তা চলে যায় অথবা নামিয়ে না রাখা হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۱ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مِقْسَمٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: مَرَّ بِنَا جَنَازَةٌ، فَقَامَ لَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقُمْنَا بِهِ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهَا جِنَازَةُ يَهُودِيٍّ، قَالَ: «إِذَا رَأَيْتُمُ الجِنَازَةَ، فَقُومُوا»
মু‘আয ইব্নু ফাযালহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন মিক্ব্সাম থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমাদের পার্শ্ব দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমরাও দাঁড়িয়ে পড়লাম এবং নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! এ তো ইয়াহূদীর জানাযা। তিনি বললেনঃ তোমরা যে কোন জানাযা দেখলে দাঁড়িয়ে পড়বে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۲ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ: كَانَ سَهْلُ بْنُ حُنَيْفٍ، وَقَيْسُ بْنُ سَعْدٍ قَاعِدَيْنِ بِالقَادِسِيَّةِ، فَمَرُّوا عَلَيْهِمَا بِجَنَازَةٍ، فَقَامَا، فَقِيلَ لَهُمَا إِنَّهَا مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ أَيْ مِنْ أَهْلِ الذِّمَّةِ، فَقَالَا: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّتْ بِهِ جِنَازَةٌ فَقَامَ، فَقِيلَ لَهُ: إِنَّهَا جِنَازَةُ يَهُودِيٍّ، فَقَالَ: «أَلَيْسَتْ نَفْسًا»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু মুর্রাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আবদুর রহমান ইব্নু আবূ লাইলাহ রহ্’মাহুল্লাহ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, সাহ্ল ইব্নু হুনাইফ ও কায়স ইব্নু সা’দ রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা কাদিসিয়াতে উপবিষ্ট ছিলেন, তখন লোকেরা তাদের সামনে দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাচ্ছিল। (তা দেখে) তারা দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাদের বলা হল, এটা তো এ দেশীয় জিম্মী ব্যক্তির (অমুসলিমের) জানাযা। তখন তারা বললেন, (একদা) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলে তাঁকে বলা হল, এটা তো এক ইয়াহুদীর জানাযা। তিনি এরশাদ করলেনঃ সে কি মানুষ নয়? ১৯
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১৯. একমাত্র ইসলামই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা আজ মানব অধিকার প্রতিষ্ঠার ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছে তারা দেখাক এরূপ দু’একটি দৃষ্টান্ত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۳ – وَقَالَ أَبُو حَمْزَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ: كُنْتُ مَعَ قَيْسٍ، وَسَهْلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَقَالَا: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالَ زَكَرِيَّاءُ عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، كَانَ أَبُو مَسْعُودٍ، وَقَيْسٌ: «يَقُومَانِ لِلْجَنَازَةِ»
এবং আবূ হা’মযাহ বললেন আ‘মাশ থেকে, তিনি ‘আম্র থেকে, তিনি ইবন আবূ লায়লাহ রহ্’মাহুল্লাহ থেকে, তিনি বলেন, আমি সাহল এবং কায়স রাজিআল্লাহু ‘আনহু এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তারা দু’জন বললেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। জাকারিয়া রহ্’মাহুল্লাহ সূত্রে ইবনু আবূ লায়লাহ রহ্’মাহুল্লাহ হতে বর্ণনা করেন, আবূ মাস’উদ ও কায়স রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা জানাযা যেতে দেখলে দাড়িয়ে যেতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا وُضِعَتِ الجِنَازَةُ ، وَاحْتَمَلَهَا الرِّجَالُ عَلَى أَعْنَاقِهِمْ، فَإِنْ كَانَتْ صَالِحَةً، قَالَتْ: قَدِّمُونِي، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ صَالِحَةٍ، قَالَتْ: يَا وَيْلَهَا أَيْنَ يَذْهَبُونَ بِهَا؟ يَسْمَعُ صَوْتَهَا كُلُّ شَيْءٍ إِلَّا الإِنْسَانَ، وَلَوْ سَمِعَهُ صَعِقَ “
‘আব্দুল আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যখন জানাযা খাটে রাখা হয় এবং পুরুষরা তা কাঁধে বহন করে নেয়, তখন সে সৎ হলে বলতে থাকে, আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাও। আর সৎ না হলে সে বলতে থাকে, হায় আফসোস! তোমরা এটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ? মানব জাতি ব্যতীত সবাই তার চিৎকার শুনতে পায়। মানুষ তা শুনলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنْتُمْ مُشَيِّعُونَ وَامْشِ بَيْنَ يَدَيْهَا وَخَلْفَهَا، وَعَنْ يَمِينِهَا، وَعَنْ شِمَالِهَا» وَقَالَ غَيْرُهُ: «قَرِيبًا مِنْهَا»
আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তোমরা (জানাযাকে) বিদায় দানকারী। অতএব, তোমরা তার সম্মুখে, পশ্চাতে এবং ডানে বামে চলবে। অন্যান্যরা বলেছেন, তার নিকট নিকট (চলবে)।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۵ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَفِظْنَاهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ، فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُونَهَا، وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ، فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ»
আলী ইব্নু আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমরা জুহুরী থেকে হাদীসটি সংরক্ষণ করলাম, তিনি সা ‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা জানাযা নিয়ে দ্রুতগতিতে চলবে। কেননা, সে যদি পুণ্যবান হয়, তবে এটা উত্তম, যার দিকে তোমরা তাঁকে এগিয়ে দিচ্ছ আর যদি সে অন কিছু হয়, তবে সে একটি আপদ, যাকে তোমরা তোমাদের ঘাড় হতে জলদি নামিয়ে ফেলছ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۶ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” إِذَا وُضِعَتِ الجِنَازَةُ، فَاحْتَمَلَهَا الرِّجَالُ عَلَى أَعْنَاقِهِمْ، فَإِنْ كَانَتْ صَالِحَةً قَالَتْ: قَدِّمُونِي، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ صَالِحَةٍ قَالَتْ لِأَهْلِهَا: يَا وَيْلَهَا أَيْنَ يَذْهَبُونَ بِهَا، يَسْمَعُ صَوْتَهَا كُلُّ شَيْءٍ إِلَّا الإِنْسَانَ، وَلَوْ سَمِعَ الإِنْسَانُ لَصَعِقَ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লাইছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলেন, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যখন জানাযা (খাটিয়ায়) রাখা হয় এবং পুরুষ লোকেরা তা তাদের কাঁধে তুলে নেয়, সে পুণ্যবান হলে তখন বলতে থাকে, আমাকে সামনে এগিয়ে দাও। আর পুণ্যবান না হলে সে আপন পরিজনকে বলতে থাকে, হায় আফসোস! এটা নিয়ে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? মানুষ জাতি ব্যতীত সবাই তার চিৎকার সুন্তে পায়। মানুষ যদি তা শুনতে পেত তবে অবশ্যই অজ্ঞান হয়ে যেত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. الجنازة শব্দটির প্রথম অক্ষর জীম ‘যবর’ বিশিষ্ট হলে তার অর্থ- মৃত ব্যক্তি, লাশ; আর প্রথম অক্ষর ‘যের’ বিশিষ্ট হলে অর্থ হবে- জানাযা বহনের খাটিয়া বা খাট।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى النَّجَاشِيِّ، فَكُنْتُ فِي الصَّفِّ الثَّانِي أَوِ الثَّالِثِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ‘আওয়ানাহ্ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ্ থেকে, তিনি ‘আত্বা থেকে, তিনি জাবির ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবিসিনিয়ার বাদশাহ্ নাজাশীর জানাযা আদায় করেন। আমি দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় কাতারে ছিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «نَعَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَصْحَابِهِ النَّجَاشِيَّ، ثُمَّ تَقَدَّمَ، فَصَفُّوا خَلْفَهُ، فَكَبَّرَ أَرْبَعًا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়্‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে নাজাশীর মৃত্যু খবর শোনালেন, পরে তিনি সম্মুখে অগ্রসর হলেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে কাতারবন্দী হলে তিনি চার তাক্বীরে ২০ (জানাযার সালাত) আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২০. জানাযার সালাত ৪ থেকে ৯ পর্যন্ত তাকবীরে পড়া নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত। এবং প্রত্যেক তাকবীর বলার সময় রফউল ইয়াদাইন করতে হবে। এটি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর আমল- (এটা বাইহাকী সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন- আহকামুল জানায়িয ১৪৮ পৃষ্ঠা)। ৪ থেকে ৯ তাকবীরের যেটাই করবে যথেষ্ট হবে। এক প্রকারকে অপরিহার্যভাবে ধরে রাখতে চাইলে সেটা হল ৪ তাকবীর। কেননা এ ব্যাপারে হাদীসসমূহ শক্তিশালী ও অধিক। (আহকামুল জানায়িয ১৪১ পৃষ্ঠা)
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۱۹ – حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَنْ شَهِدَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَتَى عَلَى قَبْرٍ مَنْبُوذٍ، فَصَفَّهُمْ، وَكَبَّرَ أَرْبَعًا» قُلْتُ: مَنْ حَدَّثَكَ، قَالَ: ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শা‘বী থেকে, তিনি বলেন, এমন এক সাহাবী যিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, তিনি আমাকে খবর দিয়েছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি পৃথক কবরের নিকট গমন করলেন এবং লোকেদের কাতারবন্দী করে চার তাক্বীরের সঙ্গে জানাযার সালাত আদায় করলেন। আমি (শাইবানী) শা’বী-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ হাদীস আপনাকে কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۰ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَهُمْ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَدْ تُوُفِّيَ اليَوْمَ رَجُلٌ صَالِحٌ مِنَ الحَبَشِ، فَهَلُمَّ، فَصَلُّوا عَلَيْهِ»، قَالَ: فَصَفَفْنَا، فَصَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْهِ وَنَحْنُ مَعَهُ صُفُوفٌ قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ: عَنْ جَابِرٍ «كُنْتُ فِي الصَّفِّ الثَّانِي»
ইব্রাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: জুরায়জ্ তাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আজ হাবাশা দেশের (আবিসিনিয়ার) একজন পুণ্যবান লোকের মৃত্যু হয়েছে, তোমরা এসো তাঁর জন্য (জানাযার) সালাত আদায় কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তখন কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (জানাযার) সালাত আদায় করলেন, আমরা ছিলাম কয়েক কাতার। আবূ যুবাইর জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণনা করেন, জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, আমি দ্বিতীয় কাতারে ছিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۱ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ عَامِرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَرَّ بِقَبْرٍ قَدْ دُفِنَ لَيْلًا، فَقَالَ: «مَتَى دُفِنَ هَذَا؟» قَالُوا: البَارِحَةَ، قَالَ: «أَفَلَا آذَنْتُمُونِي؟» قَالُوا: دَفَنَّاهُ فِي ظُلْمَةِ اللَّيْلِ فَكَرِهْنَا أَنْ نُوقِظَكَ، فَقَامَ، فَصَفَفْنَا خَلْفَهُ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: وَأَنَا فِيهِمْ فَصَلَّى عَلَيْهِ
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহি’দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়্বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আমির থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক (ব্যক্তির) কবরের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন, যাকে রাতের বেলা দাফন করা হয়েছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, একে কখন দাফন করা হল? সাহাবীগন বললেন, গত রাতে। তিনি বললেনঃ তোমরা আমাকে জানালে না কেন? তাঁরা বললেন, আমরা তাঁকে রাতের আধারে দাফন করেছিলাম, তাই আপনাকে জাগানো পছন্দ করিনি। তখন তিনি (সেখানে) দাঁড়িয়ে গেলেন। আমরাও তাঁর পিছনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম। ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম। তিনি তাঁর জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى عَلَى الجَنَازَةِ» وَقَالَ: «صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ» وَقَالَ: «صَلُّوا عَلَى النَّجَاشِيِّ» سَمَّاهَا صَلَاةً لَيْسَ فِيهَا رُكُوعٌ، وَلَا سُجُودٌ، وَلَا يُتَكَلَّمُ فِيهَا وَفِيهَا تَكْبِيرٌ وَتَسْلِيمٌ ” وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «لَا يُصَلِّي إِلَّا طَاهِرًا، وَلَا يُصَلِّي عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ، وَلَا غُرُوبِهَا، وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ» وَقَالَ الحَسَنُ: «أَدْرَكْتُ النَّاسَ وَأَحَقُّهُمْ بِالصَّلَاةِ عَلَى جَنَائِزِهِمْ مَنْ رَضُوهُمْ لِفَرَائِضِهِمْ، وَإِذَا أَحْدَثَ يَوْمَ العِيدِ أَوْ عِنْدَ الجَنَازَةِ يَطْلُبُ المَاءَ وَلَا يَتَيَمَّمُ، وَإِذَا انْتَهَى إِلَى الجَنَازَةِ وَهُمْ يُصَلُّونَ يَدْخُلُ مَعَهمْ بِتَكْبِيرَةٍ» وَقَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: «يُكَبِّرُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالسَّفَرِ وَالحَضَرِ أَرْبَعًا» وَقَالَ أَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «التَّكْبِيرَةُ الوَاحِدَةُ اسْتِفْتَاحُ الصَّلَاةِ» وَقَالَ: {وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا} [التوبة: 84] وَفِيهِ صُفُوفٌ وَإِمَامٌ
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জানাযা সালাত আদায় করবে…..। তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের সঙ্গির জন্য (জানাযার) সালাত আদায কর। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একে সালাত বলেছেন, (অথচ) এর মধ্যে রুকু’ ও সিজদাহ্ নেই এবং এতে কথা বলা যায় না, এতে রয়ে তাকবির ও তাসলিম। ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু পবিত্রতা ছাড়া (জানাযার) আদায় করতেন না ও সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকালে এ সালাত আদায় করতেন না। (তাকবীর কালে) দু‘হাত উত্তোলন করতেন। হাসান (বাসরী) রহমাহুল্লাহ বলেন, আমি সাহাবীগণকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে, তাঁদের জানাযার সালাতের (ইমামতের) জন্য তাঁকেই অধিকতর যোগ্য মনে করা হতো যাকে তাদের ফরয সালাতসমূহের (ইমামতের) জন্য তাঁরা পছন্দ করতেন। ঈদের দিন (সালাত কালে) বা জানাযার সালাত আদায় কালে কারো উযূ নষ্ট হয়েগেলে, তিনি পানি খোঁজ করতেন, তায়াম্মুম করতেন না। কেউ জানাযার নিকট পৌঁছে, লোকদের সালাত রত দেখলে তাকবীর বলে তাতে শামিল হয়ে যেতেন। ইব্নু মুসাইয়িব রহমাহুল্লাহ বলেছেন, দিনে হোক বা রাতে, বিদেশে হোক কিংবা দেশে (জানাযার সালাতের) চার তাকবীরই বলবে। আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, (প্রথম) এক তকবীর হল সালাতের সূচনা। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ “তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে কক্ষনও তার জন্য সালাত (জানাযা) আদায় করবে না” – [আত্-তাওবাহ ৮৪] এ ছাড়াও জানাযার সালাতে রয়েছে একাধিক কাতার ও ইমামতের বিধান।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۲ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَنْ مَرَّ مَعَ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَبْرٍ مَنْبُوذٍ «فَأَمَّنَا، فَصَفَفْنَا خَلْفَهُ»، فَقُلْنَا: يَا أَبَا عَمْرٍو، مَنْ حَدَّثَكَ؟ قَالَ: ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শায়বান থেকে, তিনি শা’বী থেকে, তিনি বলেন, এমন এক সাহাবী আমাকে খবর দিয়েছেন, যিনি তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে একটি পৃথক কবরের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামত করলেন, আমরা তার পিছনে কাতারবন্দী ২১ হলাম এবং সালাত আদায় করলাম। আমরা (শাইবানী) (শা’বীকে) জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ ‘আম্র! আপনাকে এ হাদীস কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২১. জানাযার সালাতে তিন বা তার অধিক কাতার করা উত্তম এবং তিন কাতারের ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে। (আহকামুল জানায়িয ১২৭-১২৮ পৃষ্ঠা, আলবানী)
وَقَالَ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «إِذَا صَلَّيْتَ فَقَدْ قَضَيْتَ الَّذِي عَلَيْكَ» وَقَالَ حُمَيْدُ بْنُ هِلَالٍ: «مَا عَلِمْنَا عَلَى الجَنَازَةِ إِذْنًا وَلَكِنْ مَنْ صَلَّى، ثُمَّ رَجَعَ فَلَهُ قِيرَاطٌ»
যায়দ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, জানাযার সালাত আদায় করলে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করলে। হুমাইদ ইব্নু হিলাল রহমাহুল্লাহ বলেন, জানাযার সালাতের পর (চলে যেতে চাইলে) অনুমতি গ্রহণের কথা আমার জানা নেই, তবে যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে চলে যায়, সে এক কীরাত সাওয়াব লাভ করে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۳ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ نَافِعًا يَقُولُ: حُدِّثَ ابْنُ عُمَرَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ يَقُولُ: «مَنْ تَبِعَ جَنَازَةً فَلَهُ قِيرَاطٌ» فَقَالَ: أَكْثَرَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَلَيْنَا
আবূ নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর ইব্নু হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি নাফি’ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন: ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট বর্ণনা করা হল যে, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলে থাকেন, যিনি জানাযার পশ্চাতে গমন করবেন তিনি এক কীরাত সওয়াবর অধিকারী হবেন। তিনি বললেন, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদের বেশি বেশি হাদীস শোনান।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۴ – فَصَدَّقَتْ يَعْنِي عَائِشَةَ أَبَا هُرَيْرَةَ، وَقَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُهُ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «لَقَدْ فَرَّطْنَا فِي قَرَارِيطَ كَثِيرَةٍ» فَرَّطْتُ: ضَيَّعْتُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ “
(পূর্বের হাদীসটির পর থেকে) তবে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা এ বিষয়ে আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমিও আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ হাদীস বলতে শুনেছি। ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তা হলে তো আমরা অনেক কীরাত (সওয়াব) হারিয়ে ফেলেছি। فَرَّطْت এর অর্থ আল্লাহর আদেশ আমি খুইয়ে ফেলেছি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، قَالَ: قَرَأْتُ عَلَى ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ ، أَنَّهُ سَأَلَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ح حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ شَبِيبِ بْنِ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ ابْنُ شِهَابٍ: وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجُ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ شَهِدَ الجَنَازَةَ حَتَّى يُصَلِّيَ، فَلَهُ قِيرَاطٌ، وَمَنْ شَهِدَ حَتَّى تُدْفَنَ كَانَ لَهُ قِيرَاطَانِ»، قِيلَ: وَمَا القِيرَاطَانِ؟ قَالَ: «مِثْلُ الجَبَلَيْنِ العَظِيمَيْنِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ইব্ন আবূ যি’ব থেকে জানলাম, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন আবূ সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে জাজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃতের জন্য সালাত আদায় করা পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কীরাত, আর যে ব্যক্তি মৃতের দাফন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে তার জন্য দু’কীরাত। জিজ্ঞেস করা হল দু’কীরাত কী? তিনি বললেন, দু’টি বিশাল পর্বত সমতুল্য (সওয়াব)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۶ – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ عَامِرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْرًا، فَقَالُوا: هَذَا دُفِنَ – أَوْ دُفِنَتْ – البَارِحَةَ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «فَصَفَّنَا خَلْفَهُ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا»
ইয়াক্বূব ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু আবূ বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যায়েদাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ইসহা’ক্বা শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আমির থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি কবরের নিকট আসলেন। সাহাবাগন বললেন, একে গত রাতে দাফন করা হয়েছে। ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, তখন আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে কাতারবন্দী হলাম। অতঃপর তিনি তার জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۷ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، وَأَبِي سَلَمَةَ أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: نَعَى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّجَاشِيَّ صَاحِبَ الحَبَشَةِ، يَوْمَ الَّذِي مَاتَ فِيهِ، فَقَالَ: «اسْتَغْفِرُوا لِأَخِيكُمْ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আবূ সালামাহ্ এবং সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাজাশীর মৃত্যুর দিনই আমাদের তাঁর মৃত্যুর খবর জানান এবং ইরশাদ করেনঃ তোমরা তোমাদের ভাই-এর (নাজাশীর) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। ২২
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২২. মৃতের জানাযা এবং দাফনের পর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মৃত্যুর খবর অবহিত হয়ে সাহাবায়ে কেরামসহ আরেক দফা মৃতের জানাযার সালাত আদায় করেছেন। এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে সে মৃতের জন্য একাধিক জানাযার সালাত জায়িয। মৃতের কবরের নিকটেই হোক বা দূরবর্তী স্থানেই হোক। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাজাশীর গায়েবানা জানাযা পড়েছিলেন। গায়েবানা জানাযার বৈধতার এটাই দলীল।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۸ – وَعَنْ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ: أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَفَّ بِهِمْ بِالْمُصَلَّى فَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا»
(পূর্বের হাদীসটির বর্ণনার পর থেকে) এবং ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু মুসায়্য়েব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের নিয়ে মুসাল্লায় কাতার করলেন, অতঃপর চার তাকবীর আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۲۹ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ اليَهُودَ، جَاءُوا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ مِنْهُمْ وَامْرَأَةٍ زَنَيَا «فَأَمَرَ بِهِمَا، فَرُجِمَا قَرِيبًا مِنْ مَوْضِعِ الجَنَائِزِ عِنْدَ المَسْجِدِ»
ইব্রাহীম ইব্নু মুন্যির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ যাম্রাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মূসা ইব্নু ‘উক্ব্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ইয়াহূদীরা তাদের এক পুরুষ ও এক স্ত্রীলোককে হাযির করল, যারা ব্যভিচার করেছিল। তখন তিনি তাদের উভয়কে রজমের পাথর নিক্ষেপে হত্যা নির্দেশ দেন। মসজিদের পাশে জানাযার স্থানের নিকটে তাদের দু’জনকে রজম করা হল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَلَمَّا «مَاتَ الحَسَنُ بْنُ الحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ» ضَرَبَتِ امْرَأَتُهُ القُبَّةَ عَلَى قَبْرِهِ سَنَةً، ثُمَّ رُفِعَتْ، فَسَمِعُوا صَائِحًا يَقُولُ: أَلَا هَلْ وَجَدُوا مَا فَقَدُوا، فَأَجَابَهُ الآخَرُ: بَلْ يَئِسُوا فَانْقَلَبُوا “
হাসান ইব্নু হাসান ইব্নু আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু – এর মৃত্যু হলে তাঁর স্ত্রী এক বছর যাবৎ তাঁর কবরের উপর কুব্বা (তাঁবু) তৈরী করে রাখেন, পরে তিনি তা উঠিয়ে নেন। তখন লোকেরা এই বলতে আওয়াজ শুনলেন, ওহে! তারা কি হারানো বস্তু ফিরে পেয়েছে? অপর একজন জবাব দিল, না, বরং নিরাশ হয়ে ফিরে গেছে?
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۰ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ هِلَالٍ هُوَ الوَزَّانُ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ: «لَعَنَ اللَّهُ اليَهُودَ وَالنَّصَارَى، اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسْجِدًا»، قَالَتْ: وَلَوْلَا ذَلِكَ لَأَبْرَزُوا قَبْرَهُ غَيْرَ أَنِّي أَخْشَى أَنْ يُتَّخَذَ مَسْجِدًا
‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শায়বান থেকে, তিনি হিলাল থেকে হলেন- … , তিনি ‘উর্ওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যে রোগে মৃত্যু হয়েছিল, সে রোগাবস্থায় তিনি বলেছিলেনঃ ইয়াহূদী ও নাসারা সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ, তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, সে আশঙ্কা না থাকলে তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর) কবরকে উন্মুক্ত রাখা হত, কিন্তু আমি আশঙ্কা করি যে, (উন্মুক্ত রাখা হলে) একে মসজিদে পরিণত করা হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۱ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «صَلَّيْتُ وَرَاءَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى امْرَأَةٍ مَاتَتْ فِي نِفَاسِهَا، فَقَامَ عَلَيْهَا وَسَطَهَا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু বুরায়দাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সামুরা ইব্নু জুন্দাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পশ্চাতে আমি এমন এক স্ত্রীলোকের জানাযার সালাত আদায় করেছিলাম, যে নিফাসের ২৩ অবস্থায় মারা গিয়েছিল। তাই তিনি তার (স্ত্রীলোকটির) মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২৩. প্রসূতি মহিলার প্রসব পরবর্তী রক্তস্রাবকে আরবীতে নিফাস বলা হয়।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۲ – حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، حَدَّثَنَا سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «صَلَّيْتُ وَرَاءَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى امْرَأَةٍ مَاتَتْ فِي نِفَاسِهَا، فَقَامَ عَلَيْهَا وَسَطَهَا»
‘ইমরান ইব্নু মায়সারা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি বললেন: সামুরা ইব্নু জুন্দাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পশ্চাতে আমি এমন এক স্ত্রীলোকের জানাযায় সালাত আদায় করেছিলাম, যে নিফাসের অবস্থায় মারা গিয়েছিলন। তাই তিনি তার (স্ত্রীলোকটির) মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ حُمَيْدٌ: «صَلَّى بِنَا أَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَكَبَّرَ ثَلَاثًا، ثُمَّ سَلَّمَ فَقِيلَ لَهُ، فَاسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ، ثُمَّ كَبَّرَ الرَّابِعَةَ، ثُمَّ سَلَّمَ»
হুমাইদ রহমাহুল্লাহ বলেন, আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু একবার আমাদের নিয়ে (জানাযার) সালাত আদায় করলেন, তিনবার তাকবীর বললেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন। এ ব্যাপারে তাঁকে জানানো হলে, তিনি কিব্লামুখী হয়ে চতুর্থ তাকবীর দিলেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۳ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَى النَّجَاشِيَّ فِي اليَوْمِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ، وَخَرَجَ بِهِمْ إِلَى المُصَلَّى، فَصَفَّ بِهِمْ، وَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعَ تَكْبِيرَاتٍ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাজাশীর মৃত্যুর দিন তাঁর মৃত্যুর খবর জানালেন এবং সাহাবীবর্গকে সঙ্গে নিয়ে জানাযার সালাতের স্থানে গেলেন এবং তাদেরকে সারিবদ্ধ করে চার তাক্বীরে জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى أَصْحَمَةَ النَّجَاشِيِّ فَكَبَّرَ أَرْبَعًا» وَقَالَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ: عَنْ سَلِيمٍ: أَصْحَمَةَ، وَتَابَعَهُ عَبْدُ الصَّمَدِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সিনান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সালীম ইব্নু হা’য়্য়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু মিনা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসহামা নাজাশীর জানাযায় সালাত আদায় করলেন, তাতে তিনি চার তাকবীর দিলেন। ইয়াযীদ ইব্নু হারূন ও আবদুস্ সামাদ সালীম হতে أَصْحَمَةَ শব্দটি উল্লেখ করেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الحَسَنُ: ” يَقْرَأُ عَلَى الطِّفْلِ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ وَيَقُولُ: اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَسَلَفًا وَأَجْرًا “
হাসান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, শিশুর জানাযার সালাতে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করবে এবং দু‘আ পড়বে ٱللهُمَّ ٱلجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَسَلَفًا وَأَجْرًا “হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের জন্য অগ্রে প্রেরিত, অগ্রগামী এবং আমাদের পুরস্কার স্বরূপ গ্রহণ কর।”
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدٍ، عَنْ طَلْحَةَ، قَالَ: صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، ح حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَوْفٍ، قَالَ: صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَلَى جَنَازَةٍ فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ قَالَ: «لِيَعْلَمُوا أَنَّهَا سُنَّةٌ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ত্বাল্হা’হ্ থেকে, তিনি বললেন: আমি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর পিছনে (জানাযার) সালাত আদায় করলাম। (অন্য হাদীস সূত্রে) মুহা’ম্মাদ ইব্নু কাছীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ ইব্ন ইব্রাহীম থেকে, তিনি ত্বাল্হা’হ্ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘আওফ থেকে, তিনি বললেন: আমি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর পিছনে জানাযার সালাত আদায় করলাম তাতে তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন ২৪ এবং (সালাত শেষে) বললেন, (আমি সূরা ফাতিহা পাঠ করলাম) যাতে লোকেরা জানতে পারে যে, এটা সুন্নাত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۶ – حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ: سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَنْ مَرَّ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَبْرٍ مَنْبُوذٍ «فَأَمَّهُمْ وَصَلَّوْا خَلْفَهُ»، قُلْتُ: مَنْ حَدَّثَكَ هَذَا يَا أَبَا عَمْرٍو؟ قَالَ: ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
হা’জ্জাজ ইব্নু মিনহাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি শা’বী থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমাকে এমন এক সাহাবী বর্ণনা করেছেন, যিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে একটি পৃথক কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তাঁদের ইমামতি করলেন এবং তাঁরা তাঁর পিছনে জানাযার সালাত আদায় করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি শা’বীকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ ‘আম্র! আপনার নিকট এ হাদীস কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الفَضْلِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ أَسْوَدَ رَجُلًا – أَوِ امْرَأَةً – كَانَ يَكُونُ فِي المَسْجِدِ يَقُمُّ المَسْجِدَ، فَمَاتَ وَلَمْ يَعْلَمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَوْتِهِ، فَذَكَرَهُ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ: «مَا فَعَلَ ذَلِكَ الإِنْسَانُ؟» قَالُوا: مَاتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ : «أَفَلَا آذَنْتُمُونِي؟» فَقَالُوا: إِنَّهُ كَانَ كَذَا وَكَذَا – قِصَّتُهُ – قَالَ: فَحَقَرُوا شَأْنَهُ، قَالَ: «فَدُلُّونِي عَلَى قَبْرِهِ» فَأَتَى قَبْرَهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ফায্ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ছাবিত থেকে, তিনি আবূ রাফি‘ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: কালো এক পুরুষ বা এক মহিলা মসজিদে ঝাড়ু দিত। সে মারা গেল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মৃত্যুর খবর জানতে পারেননি। একদা তার কথা উল্লেখ করে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ লোকটির কি হল? সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সে তো মারা গেছে। তিনি বললেনঃ তোমরা আমাকে জানাওনি কেন? সে ছিল এমন এমন বলে তাঁরা তার ঘটনা উল্লেখ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁরা তার মর্যাদাকে খাটো করে দেখলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমাকে তার কবর দেখিয়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি তার কবরের কাছে আসলেন এবং তার জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۸ – حَدَّثَنَا عَيَّاشٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، قَالَ: وَقَالَ لِي خَلِيفَةُ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” العَبْدُ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ، وَتُوُلِّيَ وَذَهَبَ أَصْحَابُهُ حَتَّى إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ، فَأَقْعَدَاهُ، فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَيَقُولُ: أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ، فَيُقَالُ: انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الجَنَّةِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا، وَأَمَّا الكَافِرُ – أَوِ المُنَافِقُ – فَيَقُولُ: لَا أَدْرِي، كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ، فَيُقَالُ: لَا دَرَيْتَ وَلَا تَلَيْتَ، ثُمَّ يُضْرَبُ بِمِطْرَقَةٍ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً بَيْنَ أُذُنَيْهِ، فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ إِلَّا الثَّقَلَيْنِ “
‘আয়্য়াশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আ‘লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি এবং খলিফাহ্ বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ্ থেকে, তিনি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তাকে পিছনে রেখে তার সাথীরা চলে যায় (এতটুকু দূরে যে,) তখনও সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায়, এমন সময় তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে দেন। অতঃপর তাঁরা প্রশ্ন করেন, এই যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাঁর সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তখন সে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রসূল। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থানের জায়গাটি দেখে নাও, যার পরিবর্তে আল্লাহ্ তা’আলা তোমার জন্য জান্নাতে একটি স্থান নির্ধারিত করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তখন সে দু’টি স্থান একই সময় দেখতে পাবে। আর যারা ক্বাফির বা মুনাফিক, তারা বলবে, আমি জানি না। অন্য লোকেরা যা বলত আমিও তাই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, না তুমি নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। অতঃপর তার দু’ কানের মাঝখানে লোহার মুগুর দিয়ে এমন জোরে মারা হবে, যাতে সে চিৎকার করে উঠবে, তার আশপাশের সবাই তা শুনতে পাবে মানুষ ও জ্বীন ছাড়া।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۳۹ – حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: ” أُرْسِلَ مَلَكُ المَوْتِ إِلَى مُوسَى عَلَيْهِمَا السَّلَامُ، فَلَمَّا جَاءَهُ صَكَّهُ، فَرَجَعَ إِلَى رَبِّهِ، فَقَالَ: أَرْسَلْتَنِي إِلَى عَبْدٍ لَا يُرِيدُ المَوْتَ، فَرَدَّ اللَّهُ عَلَيْهِ عَيْنَهُ وَقَالَ: ارْجِعْ، فَقُلْ لَهُ: يَضَعُ يَدَهُ عَلَى مَتْنِ ثَوْرٍ فَلَهُ بِكُلِّ مَا غَطَّتْ بِهِ يَدُهُ بِكُلِّ شَعْرَةٍ سَنَةٌ، قَالَ: أَيْ رَبِّ، ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: ثُمَّ المَوْتُ، قَالَ: فَالْآنَ، فَسَأَلَ اللَّهَ أَنْ يُدْنِيَهُ مِنَ الأَرْضِ المُقَدَّسَةِ رَمْيَةً بِحَجَرٍ “، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَلَوْ كُنْتُ ثَمَّ لَأَرَيْتُكُمْ قَبْرَهُ، إِلَى جَانِبِ الطَّرِيقِ، عِنْدَ الكَثِيبِ الأَحْمَرِ»
মাহ্’মূদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর্ রায্যাক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘মার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন ত্বাবুস থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: মালাকুল মাওতকে মূসা ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট পাঠানো হল। তিনি তাঁর নিকট আসলে, মূসা ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে চপেটাঘাত করলেন। (যার ফলে তাঁর চোখ বেরিয়ে গেল।) তখন মালাকুল মাওত তাঁর প্রতিপালকের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন, আমাকে এমন এক বান্দার কাছে পাঠিয়েছেন যে মরতে চায় না। তখন আল্লাহ্ তাঁর চোখ ফিরিয়ে দিয়ে হুকুম করলেন, আবার গিয়ে তাঁকে বল, তিনি একটি ষাঁড়ের পিঠে তাঁর হাত রাখবেন, তখন তাঁর হাত যতটুকু আবৃত করবে, তার সম্পূর্ণ অংশের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে তাঁকে এক বছর করে আয়ু দান করা হবে। মূসা ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ শুনে বললেন, হে আমার রব! অতঃপর কী হবে? আল্লাহ্ বললেনঃ অতঃপর মৃত্যু। মূসা ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তা হলে এখনই হোক। তখন তিনি একটি পাথর নিক্ষেপ করলে যতদূর যায় বাইতুল মাক্বদিসের ততটুকু নিকটবর্তী স্থানে তাঁকে পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার কাছে নিবেদন করলেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি সেখানে থাকলে অবশ্যই পথের পাশে লাল বালুর টিলার নিকটে তাঁর কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَدُفِنَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ لَيْلًا
আবূ বক্র রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে রাতে দাফন করা হয়েছিল।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۰ – حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رَجُلٍ بَعْدَ مَا دُفِنَ بِلَيْلَةٍ، قَامَ هُوَ وَأَصْحَابُهُ وَكَانَ سَأَلَ عَنْهُ، فَقَالَ: «مَنْ هَذَا؟» فَقَالُوا: فُلَانٌ دُفِنَ البَارِحَةَ، فَصَلَّوْا عَلَيْهِ
‘উছ্মান ইব্নু আবূ শায়বাহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শায়বানী থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, এক ব্যক্তিকে রাত্রিকালে দাফন করার পর তার জানাযার সালাত আদায় করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ গিয়ে দাঁড়ালেন। তখন তিনি লোকটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন এবং বললেন, এ লোকটি কে? তাঁরা জবাব দিলেন, অমুক, গতরাতে তাকে দাফন করা হয়েছে। তখন তাঁরা তার জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۱ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: لَمَّا اشْتَكَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَتْ بَعْضُ نِسَائِهِ كَنِيسَةً رَأَيْنَهَا بِأَرْضِ الحَبَشَةِ يُقَالُ لَهَا: مَارِيَةُ، وَكَانَتْ أُمُّ سَلَمَةَ، وَأُمّ حَبِيبَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَتَتَا أَرْضَ الحَبَشَةِ، فَذَكَرَتَا مِنْ حُسْنِهَا وَتَصَاوِيرَ فِيهَا، فَرَفَعَ رَأْسَهُ، فَقَالَ: «أُولَئِكِ إِذَا مَاتَ مِنْهُمُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ بَنَوْا عَلَى قَبْرِهِ مَسْجِدًا، ثُمَّ صَوَّرُوا فِيهِ تِلْكَ الصُّورَةَ أُولَئِكِ شِرَارُ الخَلْقِ عِنْدَ اللَّهِ»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অসুস্থতার সময় তাঁর এক সহধর্মিণী হাবাশা দেশে তাঁর দেখা ‘মারিয়া’ নামক একটি গীর্জার কথা বললেন। উম্মু সালামা এবং উম্মু হাবীবা রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা হাবাশায় গিয়েছিলেন। তাঁরা দু’জন ঐ গীর্জার সৌন্দর্য এবং তার ভিতরের চিত্রকর্মের বিবরণ দিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মাথা তুলে বললেনঃ সে সব দেশের লোকেরা তাদের কোন নেক্কার ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর কবরে মসজিদ নির্মাণ করত এবং তাতে ঐ সব চিত্রকর্ম অংকণ করত। তারা হলো, আল্লাহর নিকৃষ্ট সৃষ্টি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۲ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا هِلَالُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: شَهِدْنَا بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ عَلَى القَبْرِ، فَرَأَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدْمَعَانِ، فَقَالَ: «هَلْ فِيكُمْ مِنْ أَحَدٍ لَمْ يُقَارِفِ اللَّيْلَةَ؟» فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: أَنَا، قَالَ: «فَانْزِلْ فِي قَبْرِهَا»، فَنَزَلَ فِي قَبْرِهَا فَقَبَرَهَا قَالَ ابْنُ مُبَارَكٍ: قَالَ فُلَيْحٌ: «أُرَاهُ يَعْنِي الذَّنْبَ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: {لِيَقْتَرِفُوا} [الأنعام: 113]: أَيْ لِيَكْتَسِبُوا
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সিনান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফুলায়হ্’ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিলাল ইব্নু আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক কন্যার দাফনে হাযির ছিলাম। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরের পাশেই বসেছিলেন। আমি দেখলাম, তাঁর দু’চোখে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে আজ রাতে স্ত্রী মিলনে লিপ্ত হয়নি? আবূ তালহা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাঁর কবরে নেমে পড়, তখন তিনি তাঁর কবরে নেমে গেলেন এবং তাঁকে দাফন করলেন। ইব্নু মুবারাক বললেন: ফুলাইহ বলেন, “তাকে দেখল অর্থাৎ। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ বুখারী বলেন, – অর্থাৎ যেন লিপ্ত হয়ে পড়ে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۳ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ، ثُمَّ يَقُولُ: «أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ»، فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ، وَقَالَ: «أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلَاءِ يَوْمَ القِيَامَةِ»، وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ فِي دِمَائِهِمْ، وَلَمْ يُغَسَّلُوا، وَلَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِمْ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ’মান ইব্ন কা‘আব ইব্ন মালিক থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদের শহীদগণের দু’ দু’ জনকে একই কাপড়ে (কবরে) একত্র করতেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করতেন, তাঁদের উভয়ের মধ্যে কে কুরআন সম্পর্কে অধিক জানত? দু’ জনের মধ্যে এক জনের দিকে ইঙ্গিত করা হলে তাঁকে কবরে পূর্বে রাখতেন এবং বললেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন এদের ব্যাপারে সাক্ষী হব। তিনি রক্ত-মাখা অবস্থায় তাঁদের দাফন করার নির্দেশ দিলেন, তাঁদের গোসল দেয়া হয়নি এবং তাঁদের (জানাযার) সালাতও আদায় করা হয়নি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الخَيْرِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمًا، فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ صَلَاتَهُ عَلَى المَيِّتِ، ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَى المِنْبَرِ، فَقَالَ: «إِنِّي فَرَطٌ لَكُمْ، وَأَنَا شَهِيدٌ عَلَيْكُمْ، وَإِنِّي وَاللَّهِ لَأَنْظُرُ إِلَى حَوْضِي الآنَ، وَإِنِّي أُعْطِيتُ مَفَاتِيحَ خَزَائِنِ الأَرْضِ – أَوْ مَفَاتِيحَ الأَرْضِ – وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا بَعْدِي، وَلَكِنْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنَافَسُوا فِيهَا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লাইস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযিদ ইব্নু আবূ হা’বীব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূল খায়র থেকে, তিনি ‘উক্বা ইব্নু ‘আমির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বের হলেন এবং উহুদে পৌঁছে মৃতের জন্য যেরূপ (জানাযার) সালাত আদায় করা হয় উহুদের শহীদানের জন্য অনুরূপ সালাত আদায় করলেন। অতঃপর ফিরে এসে মিম্বারে তাশরীফ রেখে বললেনঃ আমি হবো তোমাদের জন্য অগ্রে প্রেরিত এবং তোমাদের জন্য সাক্ষী। আল্লাহর কসম! এ মুহূর্তে আমি অবশ্যই আমার হাউয (হাউয-ই-কাউসার) দেখছি। আর অবশ্যই আমাকে পৃথিবীর ভান্ডারসমূহের চাবিগুচ্ছ প্রদান করা হয়েছে। অথবা (বর্ণনাকারী বলেছেন) পৃথিবীর চাবিগুচ্ছ ২৫ আর আল্লাহর কসম! তোমরা আমার পরে শির্ক করবে এ আশঙ্কা আমি করি না। তবে তোমাদের ব্যাপারে আমার আশঙ্কা যে, তোমরা পার্থিব সম্পদ লাভে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২৫. পৃথিবীর চাবিগুচ্ছ কথাটির অর্থ হল, দুনিয়ার প্রাচুর্য দেয়া হবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۵ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ»
সা‘ঈদ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লাইছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্ন কা‘আব থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি খবর দিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদের শহীদগণের দু’ দু’জনকে একত্র করে দাফন করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۶ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: « ادْفِنُوهُمْ فِي دِمَائِهِمْ» – يَعْنِي يَوْمَ أُحُدٍ – وَلَمْ يُغَسِّلْهُمْ
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আব্দুর্ রহ্’মান ইব্ন কা‘আব ইব্ন মালিক থেকে, তিনি জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তাঁদেরকে তাঁদের রক্ত সহ দাফন কর। অর্থাৎ উহুদের যুদ্ধের দিন শহীদগণের সম্পর্কে (কথাটি বলেছিলেন) আর তিনি তাঁদের গোসলও দেননি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَسُمِّيَ اللَّحْدَ لِأَنَّهُ فِي نَاحِيَةٍ، وَكُلُّ جَائِرٍ مُلْحِدٌ {مُلْتَحَدًا} [الكهف: ۲۷]: مَعْدِلًا، وَلَوْ كَانَ مُسْتَقِيمًا كَانَ ضَرِيحًا
আবূ ‘আব্দুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) রহমাহুল্লাহ বলেন, একদিকে ঢালু করে গর্ত করা হয় বলে ‘লাহদ’ নামকরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক যালিমই ‘মুলহিদ’ (ঝগড়াটে) مُلْتَحَدًا অর্থ – পাশ কাটিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়ার স্থান। আর কবর সমান হলে তাকে বলা হয় ‘যারীহ’ (সিন্দুক কবর)।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ، ثُمَّ يَقُولُ: «أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ؟»، فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ، وَقَالَ: «أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلَاءِ» وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ بِدِمَائِهِمْ، وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ، وَلَمْ يُغَسِّلْهُمْ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: লায়াছ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্ন কা‘আব ইব্ন মালিক থেকে, তিনি জাবির ইব্নু আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদের শহীদগণের দু’ দুজনকে একই কাপড়ে (কবরে) একত্রে দাফন করার ব্যবস্থা করে জিজ্ঞেস করলেন। তাঁদের মধ্যে কে কুরআন সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত? যখন তাঁদের একজনের দিকে ইঙ্গিত করা হত, তখন তিনি তাঁকে প্রথম কবরে রাখতেন আর বলতেনঃ আমি তাঁদের জন্য সাক্ষী হব। (কিয়ামাতে) তিনি তাঁদের রক্ত-মাখা অবস্থায় দাফন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁদের জানাযার সালাতও আদায় করেননি। তাঁদের গোসলও দেননি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۸ – وَأَخْبَرَنَا ابْنُ المُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لِقَتْلَى أُحُدٍ: «أَيُّ هَؤُلَاءِ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ؟» فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى رَجُلٍ قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ قَبْلَ صَاحِبِهِ، وَقَالَ جَابِرٌ: فَكُفِّنَ أَبِي وَعَمِّي فِي نَمِرَةٍ وَاحِدَةٍ، وَقَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ: حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، حَدَّثَنِي مَنْ سَمِعَ جَابِرًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
ইব্নু মুবারক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আওযায়ী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহরী থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদ যুদ্ধের শহীদগণের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন, তাঁদের মাঝে কুরআন সম্পর্কে কে অধিক জ্ঞাত? কোন একজনের দিকে ইঙ্গিত করা হলে, তিনি তাঁকে তাঁর সঙ্গীর পূর্বে কবরে রাখতেন। জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমার পিতা ও চাচাকে একখানি পশমের তৈরি নক্শা করা কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছিল। আর সুলাইমান ইব্নু কাসীর বললেন: জুহুরী আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার নিকট এমন এক ব্যক্তি হাদীস বর্ণনা করেছেন, যিনি জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে শুনেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۴۹ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «حَرَّمَ اللَّهُ مَكَّةَ فَلَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي، وَلَا لِأَحَدٍ بَعْدِي، أُحِلَّتْ لِي سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، لَا يُخْتَلَى خَلَاهَا وَلَا يُعْضَدُ شَجَرُهَا، وَلَا يُنَفَّرُ صَيْدُهَا، وَلَا تُلْتَقَطُ لُقَطَتُهَا إِلَّا لِمُعَرِّفٍ» فَقَالَ العَبَّاسُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: إِلَّا الإِذْخِرَ لِصَاغَتِنَا وَقُبُورِنَا؟ فَقَالَ: إِلَّا الإِذْخِرَ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لِقُبُورِنَا وَبُيُوتِنَا»، وَقَالَ أَبَانُ بْنُ صَالِحٍ عَنِ الحَسَنِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ، وَقَالَ مُجَاهِدٌ: عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «لِقَيْنِهِمْ وَبُيُوتِهِمْ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু হা’ওশাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘ইকরামাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ, তা’আলা মক্কাকে হারাম (সম্মানিত বা নিষিদ্ধ এলাকা) সাব্যস্ত করেছেন। আমার পূর্বে তা, কারো জন্য হালাল (বৈধ ও উন্মুক্ত এলাকা) ছিল না এবং আমার পরেও কারো জন্য তা হালাল হবে না। আমার জন্য একটি দিনের (মক্কা বিজয়ের দিন) কিছু সময় হালাল করা হয়েছিল। কাজেই তার ঘাস উৎপাটন করা যাবে না, তার গাছ কাটা যাবে না, শিকারকে তাড়িয়ে দেয়া যাবে না। সেখানে পড়ে থাকা (হারানো) বস্তু উঠিয়ে নেয়া যাবে না, তবে হারানো প্রাপ্তির ঘোষণা প্রদানকারীর জন্য (অনুমতি থাকবে)। তখন আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, তবে ইয্খির ঘাস আমাদের স্বর্ণকারদের জন্য এবং আমাদের কবরগুলোর জন্য প্রয়োজন। তখন তিনি বললেনঃ ইয্খির ব্যতীত। আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, আমাদের কবর ও বাড়ী ঘরের জন্য। আর আবান ইব্নু স্বালিহ বললেন হা’সান ইব্ন মুসলিম থেকে, তিনি সাফিয়্যা বিন্ত শায়বাহ্ থেকে, তিনি বললেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অনুরূপ বলতে শুনেছি। এবং মুজাহিদ বললেন ত্বাবুস থেকে, তিনি ইব্নু আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, তাদের “কর্মকার ও ঘর-বাড়ির জন্য”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۰ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ عَمْرٌو: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَيٍّ بَعْدَ مَا أُدْخِلَ حُفْرَتَهُ «فَأَمَرَ بِهِ، فَأُخْرِجَ، فَوَضَعَهُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَنَفَثَ عَلَيْهِ مِنْ رِيقِهِ، وَأَلْبَسَهُ قَمِيصَهُ»، فَاللَّهُ أَعْلَمُ وَكَانَ كَسَا عَبَّاسًا قَمِيصًا قَالَ سُفْيَانُ: وَقَالَ: أَبُو هُرَيْرَةَ وَكَانَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَمِيصَانِ، فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَلْبِسْ أَبِي قَمِيصَكَ الَّذِي يَلِي جِلْدَكَ، قَالَ سُفْيَانُ: «فَيُرَوْنَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلْبَسَ عَبْدَ اللَّهِ قَمِيصَهُ مُكَافَأَةً لِمَا صَنَعَ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র বলেন: আমি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উবাই (মুনাফিক সর্দারকে) কবর দেয়ার পর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার (কবরের) নিকট আসলেন এবং তিনি তাঁকে বের করার নির্দেশ দিলে তাকে (কবর হতে) বের করা হল। তখন তিনি তাকে তাঁর (নিজের) দু’ হাঁটুর উপর রাখলেন, নিজের (মুখের) লালা (তাঁর উপর ফুঁকে) দিলেন এবং নিজের জামা তাকে পরিয়ে দিলেন। আল্লাহ্ সমধিক অবগত। সে আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে একটি জামা পড়তে দিয়েছিল। আর সুফিয়ান রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিধানে তখন দুটি জামা ছিল। ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার (পবিত্র) দেহের সাথে জড়িয়ে থাকা জামাটি আমার পিতাকে পরিয়ে দিন। সুফিয়ান বলেন, তারা মনে করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জামা ‘আবদুল্লাহ্ (ইব্নু উবাই)-কে পরিয়ে দিয়েছিলেন, তার কৃত (ইহসানের) বিনিময় স্বরূপ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۱ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، أَخْبَرَنَا بِشْرُ بْنُ المُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ المُعَلِّمُ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا حَضَرَ أُحُدٌ دَعَانِي أَبِي مِنَ اللَّيْلِ، فَقَالَ: مَا أُرَانِي إِلَّا مَقْتُولًا فِي أَوَّلِ مَنْ يُقْتَلُ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِنِّي لَا أَتْرُكُ بَعْدِي أَعَزَّ عَلَيَّ مِنْكَ، غَيْرَ نَفْسِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَإِنَّ عَلَيَّ دَيْنًا فَاقْضِ، وَاسْتَوْصِ بِأَخَوَاتِكَ خَيْرًا، «فَأَصْبَحْنَا، فَكَانَ أَوَّلَ قَتِيلٍ وَدُفِنَ مَعَهُ آخَرُ فِي قَبْرٍ، ثُمَّ لَمْ تَطِبْ نَفْسِي أَنْ أَتْرُكَهُ مَعَ الآخَرِ، فَاسْتَخْرَجْتُهُ بَعْدَ سِتَّةِ أَشْهُرٍ، فَإِذَا هُوَ كَيَوْمِ وَضَعْتُهُ هُنَيَّةً غَيْرَ أُذُنِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বিশর ইব্নুল মুফায্যাল আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হুসায়ন মু‘আল্লিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আত্বা থেকে, তিনি জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, যখন উহুদ যুদ্ধের সময় উপস্থিত হল, তখন রাতের বেলা আমার পিতা আমাকে ডেকে বললেন, আমার মনে হয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীগনের মধ্যে যাঁরা প্রথমে শহীদ হবেন, আমি তাঁদের মধ্যে একজন হব। আর আমি আমার (মৃত্যুর) পরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত তোমার চেয়ে অধিকতর প্রিয় কাউকে রেখে যাচ্ছি না। আমার যিম্মায় কর্য রয়েছে। তুমি তা পরিশোধ করবে। তোমার বোনদের ব্যাপারে সদুপদেশ গ্রহণ করবে। জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, পরদিন সকাল হলে আমরা দেখলাম যে তিনিই প্রথম শহীদ। তাঁর কবরে তাঁর আর একজন সাহাবীকে তাঁর সাথে দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু পরে অন্য একজনের সাথে (একই) কবরে তাঁকে রাখা আমার মনে ভাল লাগল না। তাই ছয় মাস পর আমি তাঁকে (কবর হতে) বের করলাম এবং দেখলাম যে, তাঁর কানে সামান্য চিহ্ন ব্যতীত তিনি সেই দিনের মতই (অক্ষত ও অবিকৃত) রয়েছেন, যে দিন তাঁকে (কবরে) রেখেছিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۲ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «دُفِنَ مَعَ أَبِي رَجُلٌ، فَلَمْ تَطِبْ نَفْسِي حَتَّى أَخْرَجْتُهُ، فَجَعَلْتُهُ فِي قَبْرٍ عَلَى حِدَةٍ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু ‘আমির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘উবাহ থেকে, তিনি ইব্ন আবূ নাজীহ’ থেকে, তিনি ‘আত্ব‘ থেকে, তিনি জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমার পিতার সাথে আরেকজন শহীদকে দাফন করা হলে আমার মন তাতে তুষ্ট হতে পারল না। অবশেষে আমি তাঁকে (কবর হতে) বের করলাম এবং একটি পৃথক কবরে তাঁকে দাফন করলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۳ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ رَجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ، ثُمَّ يَقُولُ: «أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ؟» فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا، قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ، فَقَالَ: «أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلَاءِ يَوْمَ القِيَامَةِ» فَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ بِدِمَائِهِمْ، وَلَمْ يُغَسِّلْهُمْ
‘আবদান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: লায়ছ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্ন কা‘আব ইব্ন মালিক থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদের শহীদগণের দু’ দু’জনকে একত্র করে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কুরআন সম্পর্কে কে অধিক জ্ঞাত? দুজনের কোন একজনের দিকে ইঙ্গিত করা হলে প্রথমে তাঁকে কবরে রাখতেন। অতঃপর ইরশাদ করেনঃ কিয়ামাতের দিন আমি তাঁদের জন্য সাক্ষী হব। তিনি রক্ত-মাখা অবস্থায়ই তাঁদের দাফন করার আদেশ করলেন এবং তাঁদের গোসলও দেননি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الحَسَنُ، وَشُرَيْحٌ وَإِبْرَاهِيمُ، وَقَتَادَةُ: «إِذَا أَسْلَمَ أَحَدُهُمَا فَالوَلَدُ مَعَ المُسْلِمِ» وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا مَعَ أُمِّهِ مِنَ المُسْتَضْعَفِينَ، وَلَمْ يَكُنْ مَعَ أَبِيهِ عَلَى دِينِ قَوْمِهِ، وَقَالَ: «الإِسْلَامُ يَعْلُو وَلَا يُعْلَى»
হাসান, শুরাইহ্, ইব্রাহীম ও কাতাদা রহমাহুল্লাহ বলেছেন, পিতা-মাতার কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে সন্তান মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে। ইব্ন ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর মায়ের সাথে ‘মুস্তায‘আফীন’ (দুর্বল ও নির্যাতিত জামা‘আত)- এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তাঁকে তাঁর পিতা (আব্বাস)- এর সাথে ‘তার কাওমের (মুশরিকদের) ধর্মে গণ্য করা হতো না। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ইসলাম বিজয়ী হয়, বিজিত হয় না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۴ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَخْبَرَهُ أَنَّ عُمَرَ انْطَلَقَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَهْطٍ قِبَلَ ابْنِ صَيَّادٍ، حَتَّى وَجَدُوهُ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ عِنْدَ أُطُمِ بَنِي مَغَالَةَ، وَقَدْ قَارَبَ ابْنُ صَيَّادٍ الحُلُمَ، فَلَمْ يَشْعُرْ حَتَّى ضَرَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ، ثُمَّ قَالَ لِابْنِ صَيَّادٍ: «تَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟»، فَنَظَرَ إِلَيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ الأُمِّيِّينَ، فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟ فَرَفَضَهُ وَقَالَ: «آمَنْتُ بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ» فَقَالَ لَهُ: «مَاذَا تَرَى؟» قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: يَأْتِينِي صَادِقٌ وَكَاذِبٌ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُلِّطَ عَلَيْكَ الأَمْرُ» ثُمَّ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي قَدْ خَبَأْتُ لَكَ خَبِيئًا» فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: هُوَ الدُّخُّ، فَقَالَ: «اخْسَأْ، فَلَنْ تَعْدُوَ قَدْرَكَ» فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ يَكُنْهُ فَلَنْ تُسَلَّطَ عَلَيْهِ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْهُ فَلَا خَيْرَ لَكَ فِي قَتْلِهِ»
‘আবদান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইউনুস থেকে, তিনি যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে একটি দলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে ইব্নু সাইয়াদ-এর (বাড়ির) দিকে গেলেন। তাঁরা তাঁকে (ইব্নু সাইয়াদকে) বনূ মাগালা দুর্গের পাশে অন্যান্য বালকদের সাথে খেলাধূলারত পেলেন। তখন ইব্নু সাইয়াদ বালিগ হবার নিকটবর্তী হয়েছিল। সে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগমন অনুভব করার পূর্বেই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার হাত ধরে ফেললেন। অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, আমি আল্লাহর রসূল? ইব্নু সাইয়াদ তাঁর দিকে দৃষ্টি করে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মীদের রসূল। অতঃপর সে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলল, আপনি কি সাক্ষ্য দিবেন যে, আমি আল্লাহর রসূল? তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ আমি আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছি। অতঃপর তিনি তাকে (ইব্নু সাইয়াদকে) জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কী দেখে থাক? ইব্নু সাইয়াদ বলল, আমার নিকট সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী আগমন করে থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ ব্যাপারটি তোমার নিকট বিভ্রান্তিকর করা হয়েছে। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনঃ আমি একটি বিষয় তোমার হতে (আমার মনের মধ্যে) গোপন রেখেছি। বলতো সেটি কী? ইব্নু সাইয়াদ বলল, তা হচ্ছে (الدُّخُّ) ‘আদ্-দুখখু। তখন তিনি ইরশাদ করলেনঃ তুমি লাঞ্ছিত হও ! তুমি কখনো তোমার (জন্য নির্ধারিত) সীমা অতিক্রম করতে পারবে না। তখন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই ২৬। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করলেনঃ যদি সে সে-ই (অর্থাৎ মাসীহ্ দাজ্জাল) হয়ে থাকে, তাহলে তাকে কাবু করার ক্ষমতা তোমাকে দেয়া হবে না। আর যদি সে-ই (দাজ্জাল) না হয়, তাহলে তাকে হত্যা করার মধ্যে তোমার কোন কল্যাণ নেই।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২৬. ইসলামী শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তির হকদার কেউ হলে একমাত্র ক্ষমতাসীন দায়িত্বশীল ব্যক্তিই পারবে তার উপর তা প্রয়োগ করতে। অন্য কারো অধিকার নেই। বর্ণিত হাদীসে ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর অনুমতি চাওয়াতে এটাই প্রমাণিত হয়।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۵ – وَقَالَ سَالِمٌ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَقُولُ: انْطَلَقَ بَعْدَ ذَلِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ إِلَى النَّخْلِ الَّتِي فِيهَا ابْنُ صَيَّادٍ، وَهُوَ يَخْتِلُ أَنْ يَسْمَعَ مِنْ ابْنِ صَيَّادٍ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَرَاهُ ابْنُ صَيَّادٍ، فَرَآهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مُضْطَجِعٌ – يَعْنِي فِي قَطِيفَةٍ لَهُ فِيهَا رَمْزَةٌ أَوْ زَمْرَةٌ – فَرَأَتْ أمُّ ابْنِ صَيّادٍ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ، فَقَالَتْ لِابْنِ صَيَّادٍ: يَا صَافِ – وَهُوَ اسْمُ ابْنِ صَيَّادٍ – هَذَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَثَارَ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ تَرَكَتْهُ بَيَّنَ»، وَقَالَ شُعَيْبٌ فِي حَدِيثِهِ: فَرَفَصَهُ رَمْرَمَةٌ – أَوْ زَمْزَمَةٌ – وَقَالَ إِسْحَاقُ الكَلْبِيُّ، وَعُقَيْلٌ: رَمْرَمَةٌ، وَقَالَ مَعْمَرٌ: رَمْزَةٌ
সালিম বললেন: আমি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উবাই ইব্নু কা’ব রাজিআল্লাহু ‘আনহু ঐ খেজুরের বাগানের দিকে গমন করলেন যেখানে ইব্নু সাইয়াদ ছিল। ইব্নু সাইয়াদ তাকে দেখে ফেলার পূর্বেই ইব্নু সাইয়াদের কিছু কথা তিনি শুনে নিতে চাচ্ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে একটি চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখলেন। যার ভিতর হতে তার গুনগুন আওয়াজ শোনা ১ যাচ্ছিল। ইব্নু সাইয়াদের মা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখতে পেল যে, তিনি খেজুর (গাছের) কাণ্ডের আড়ালে আত্মগোপন করে চলছেন। সে তখন ইব্নু সাইয়াদকে ডেকে বলল, ও সাফ! (এটি ইব্নু সাইয়াদের ডাক নাম) এই যে মুহাম্মাদ! তখন ইব্নু সাইয়াদ লাফিয়ে উঠল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেনঃ সে (ইব্নু সাইয়াদের মা) তাকে (যথাবস্থায়) থাকতে দিলে (ব্যাপারটি) স্পষ্ট হয়ে যেত।
শুআইব (রহঃ) তাঁর হাদীসে (فَرَفَضَهُ) বলেন, এবং সন্দেহের সাথে বলেন, (رَمْرَمَةُ) অথবা (زَمْزَمَةُ)। এবং ইসহাক কালবী ও উকাইল (র.) বলেছেন (رَمْرَمَةُ), আর মা’মার বলেছেন, (رَمْزَةٌ)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. (رَمْرَمَة، زَمْزَمَة، رَمْزَةُ، رَمْزَمَةُ ) শব্দগুলো সমার্থকবোধক। অর্থাৎ অষ্পষ্ট ও গুনগুন শব্দ।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۶ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ وَهْوَ ابْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ غُلَامٌ يَهُودِيٌّ يَخْدُمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَمَرِضَ، فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ، فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِهِ، فَقَالَ لَهُ: «أَسْلِمْ»، فَنَظَرَ إِلَى أَبِيهِ وَهُوَ عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُ: أَطِعْ أَبَا القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَسْلَمَ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَقُولُ: «الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَنْقَذَهُ مِنَ النَّارِ»
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ তিনি হলেন ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ছাবিত থেকে, তিনি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী বালক নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমাত করত, সে একবার অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখার জন্য আসলেন। তিনি তার মাথার নিকট বসে তাকে বললেনঃ তুমি ইসলাম গ্রহণ কর, সে তখন তার পিতার দিকে তাকাল, সে তার নিকটেই ছিল, পিতা তাকে বলল, আবুল কাসেম (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কুনিয়াত)- এর কথা মেনে নাও, তখন সে ইসলাম গ্রহণ করল। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখান হতে বের হয়ে যাওয়ার সময় ইরশাদ করলেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সে আল্লাহর, যিনি তাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۷ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي يَزِيدَ، سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ: «كُنْتُ أَنَا وَأُمِّي مِنَ المُسْتَضْعَفِينَ أَنَا مِنَ الوِلْدَانِ وَأُمِّي مِنَ النِّسَاءِ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু আবূ ইয়াযীদ বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি এবং আমার মা (লুবাবাহ্ বিন্ত হারিস) মুসতায’আফীন (দুর্বল, অসহায়) এর অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমি ছিলাম না-বালিগ শিশুদের মধ্যে আর আমার মা ছিলেন মহিলাদের মধ্যে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۸ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ ابْنُ شِهَابٍ: «يُصَلَّى عَلَى كُلِّ مَوْلُودٍ مُتَوَفًّى، وَإِنْ كَانَ لِغَيَّةٍ، مِنْ أَجْلِ أَنَّهُ وُلِدَ عَلَى فِطْرَةِ الإِسْلَامِ، يَدَّعِي أَبَوَاهُ الإِسْلَامَ، أَوْ أَبُوهُ خَاصَّةً، وَإِنْ كَانَتْ أُمُّهُ عَلَى غَيْرِ الإِسْلَامِ، إِذَا اسْتَهَلَّ صَارِخًا صُلِّيَ عَلَيْهِ، وَلَا يُصَلَّى عَلَى مَنْ لَا يَسْتَهِلُّ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُ سِقْطٌ» فَإِنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، كَانَ يُحَدِّثُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلَّا يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، كَمَا تُنْتَجُ البَهِيمَةُ بَهِيمَةً جَمْعَاءَ، هَلْ تُحِسُّونَ فِيهَا مِنْ جَدْعَاءَ»، ثُمَّ يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: {فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا} [الروم: ۳۰] الآيَةَ
আবূল ইয়ামানি আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আইব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব বলেছেন, নবজাত শিশু মারা গেলে তাঁদের প্রত্যেকের জানাযার সালাত আদায় করা হবে। যদিও সে কোন ভ্রষ্টা মায়ের সন্তানও হয়। এ কারণে যে, সে সন্তানটি ইসলামী ফিত্রাহ্র (তাওহীদ) এর উপর জন্মলাভ করেছে। তার পিতামাতা ইসলামের দাবীদার হোক বা বিশেষভাবে তার পিতা। যদিও তার মা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের অনুসারী হয়। নবজাত শিশু সরবে কেঁদে থাকলে তার জানাযার সালাত আদায় করা হবে। আর যে শিশু না কাঁদবে, তার জানাযার সালাত আদায় করা হবে না। কেননা, সে অপূর্ণাঙ্গ সন্তান। কারণ, আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু হাদীস বর্ণনা করতেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিত্রাতের (তাওহীদের) উপর। অতঃপর তার মা-বাপ তাকে ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু নিখুঁত বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোন কান কাটা দেখতে পাও? (বরং মানুষরাই তার নাক কান কেটে দিয়ে বা ছিদ্র করে তাকে বিকৃত করে থাকে। অনুরূপ ইসলামের ফিত্রাহ্তে ভূমিষ্ট সন্তানকে মা-বাপ তাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও জীবন ধারায় প্রবাহিত করে ভ্রান্ত ধর্মী বানিয়ে ফেলে) পড়ে আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু তিলাওয়াত করলেনঃ (فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا) “আল্লাহর দেয়া ফিত্রাতের অনুসরন কর, যে ফিত্রাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন -” (সূরা রূমঃ ৩০)
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۵۹ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلَّا يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، وَيُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، كَمَا تُنْتَجُ البَهِيمَةُ بَهِيمَةً جَمْعَاءَ، هَلْ تُحِسُّونَ فِيهَا مِنْ جَدْعَاءَ» ثُمَّ يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: {فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ القَيِّمُ} [الروم: ۳۰]
আবদান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: আবূ সালামাহ ইব্ন ‘আব্দুর রহ্’মান আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রত্যেক নবজাতকই ফিত্রাতের উপর জন্মলাভ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহূদী, নাসারা বা মাজূসী (অগ্নিপূজারী) রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্নাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও? অতঃপর আবূ হুরায়রা তিলাওয়াত করলেনঃ (فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ) (যার অর্থ) “আল্লাহর দেয়া ফিত্রাতের অনুসরণ কর, যে ফিত্রাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন”- (সূরা রুমঃ ৩০)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۰ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ، وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أُمَيَّةَ بْنِ المُغِيرَةِ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي طَالِبٍ: ” يَا عَمِّ، قُلْ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللَّهِ ” فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ: يَا أَبَا طَالِبٍ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ المُطَّلِبِ؟ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ، وَيَعُودَانِ بِتِلْكَ المَقَالَةِ حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ: هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ المُطَّلِبِ، وَأَبَى أَنْ يَقُولَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا وَاللَّهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ» فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِيهِ: {مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ} [التوبة: ۱۱۳] الآيَةَ
ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়া‘আক্বুব ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সাঈ‘দ ইব্নু মুসাইয়্যাব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, আবূ তালিব এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিকট আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশাম ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা ইব্নু মুগীরাকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। (রাবী বলেন) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেনঃ চাচাজান! “লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু” কালিমা পাঠ করুন, তাহলে এর অসীলায় আমি আল্লাহর সমীপে আপনার জন্য সাক্ষী দিতে পারব। আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা বলে উঠল, ওহে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম হতে বিমুখ হবে? অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিকট কালিমাহ পেশ করতে থাকেন, আর তারা দু’জনও তাদের উক্তি পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অবশেষে আবূ তালিব তাদের সামনে শেষ কথাটি যা বলল, তা এই যে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু’ বলতে অস্বীকার করল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! তবুও আমি আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা হতে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ – (নবীর জন্য সঙ্গত নয়……) مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ.. (সূরা আত্-তাওবাহ্ঃ ১১৩)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَأَوْصَى بُرَيْدَةُ الأَسْلَمِيُّ: «أَنْ يُجْعَلَ فِي قَبْرِهِ جَرِيدَانِ» وَرَأَى ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فُسْطَاطًا عَلَى قَبْرِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، فَقَالَ: «انْزِعْهُ يَا غُلَامُ، فَإِنَّمَا يُظِلُّهُ عَمَلُهُ» وَقَالَ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدٍ: «رَأَيْتُنِي وَنَحْنُ شُبَّانٌ فِي زَمَنِ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَإِنَّ أَشَدَّنَا وَثْبَةً الَّذِي يَثِبُ قَبْرَ عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُونٍ حَتَّى يُجَاوِزَهُ» وَقَالَ عُثْمَانُ بْنُ حَكِيمٍ: أَخَذَ بِيَدِي خَارِجَةُ فَأَجْلَسَنِي عَلَى قَبْرٍ، وَأَخْبَرَنِي عَنْ عَمِّهِ يَزِيدَ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ: «إِنَّمَا كُرِهَ ذَلِكَ لِمَنْ أَحْدَثَ عَلَيْهِ» وَقَالَ نَافِعٌ: «كَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَجْلِسُ عَلَى القُبُورِ»
বুরাদা আসলমী রাজিআল্লাহু’আনহু, তাঁর কবরে দু’টি খেজুরের ডাল পূঁতে দেয়ার ওয়াসিয়াত করেছিলেন। আবদূর রাহ্মান (ইব্নু আবূ বক্র) রাজিআল্লাহু ‘আনহু -এর কবরের উপরে একটি তাঁবু দেখতে পেয়ে আব্দুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে বালক! ওটা অপসারিত কর, কেননা একমাত্র তার ‘আমলই তাকে ছায়া দিতে পারে। খারিজ ইব্নু যায়দ রহমাহুল্লাহ বলেছেন, আমার মনে আছে, উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর খিলাফতকালে যখন আমরা তরুন ছিলাম তকন উসমান ইব্নু মাজ‘উন রাজিআল্লাহু ‘আনহু -এর কবর লাফিয়ে অতিক্রমকারীকেই আমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ লম্ফবিদ মনে করা হত। আর ‘উসমান ইব্নু হাকীম রহমাহুল্লাহ বলেছেন, খারিজাহ রহমাহুল্লাহ আমার হাত ধরে একটি কবরের উপর বসিয়ে দিলেন এবং চাচা ইয়াযীদ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু হতে আমাকে অবহিত করেন যে, তিনি বলেন, কবরের উপরে বসা মাকরূহ তা ঐব্যক্তির জন্য যে, যেখানে বসে পেশাব পায়খানা করে। আর নাফি’ রহমাহুল্লাহ বলেছেন, ইব্নু ‘উমার রাজিআল্লাহু ‘আনহু কবরের উপরে বসতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۱ – حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّهُ مَرَّ بِقَبْرَيْنِ يُعَذَّبَانِ، فَقَالَ: «إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لَا يَسْتَتِرُ مِنَ البَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ»، ثُمَّ أَخَذَ جَرِيدَةً رَطْبَةً، فَشَقَّهَا بِنِصْفَيْنِ، ثُمَّ غَرَزَ فِي كُلِّ قَبْرٍ وَاحِدَةً، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لِمَ صَنَعْتَ هَذَا؟ فَقَالَ: «لَعَلَّهُ أَنْ يُخَفَّفَ عَنْهُمَا مَا لَمْ يَيْبَسَا»
ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মু‘আবীয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আমাশ থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি ত্বাবুস থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যে কবর দু’টির বাসিন্দাদের উপর আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে অথচ তাদের এমন গুনাহর জন্য আযাব দেয়া হচ্ছে না (যা হতে বিরত থাকা) দুরূহ ছিল। তাদের একজন পেশাবের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত না, আর অপরজন চোগলখুরী করে বেড়াত। অতঃপর তিনি খেজুরের একটি তাজা ডাল নিয়ে তা দু’ভাগে বিভক্ত করলেন, অতঃপর প্রতিটি কবরে একটি করে পুঁতে দিলেন। সাহাবীগন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কেন এরূপ করলেন? তিনি বললেনঃ ডাল দুটি না শুকানো পর্যন্ত আশা করি তাদের আযাব হালকা করা হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
{يَخْرُجُونَ مِنَ الأَجْدَاثِ} [القمر: ۷] الأَجْدَاثُ: القُبُورُ، {بُعْثِرَتْ} [الانفطار: ۴]: أُثِيرَتْ، بَعْثَرْتُ حَوْضِي: أَيْ جَعَلْتُ أَسْفَلَهُ أَعْلَاهُ، الإِيفَاضُ: الإِسْرَاعُ وَقَرَأَ الأَعْمَشُ: (إِلَى نَصْبٍ): إِلَى شَيْءٍ مَنْصُوبٍ يَسْتَبِقُونَ إِلَيْهِ ” وَالنُّصْبُ وَاحِدٌ، وَالنَّصْبُ مَصْدَرٌ {يَوْمُ الخُرُوجِ} [ق: ۴۲]: مِنَ القُبُورِ {يَنْسِلُونَ} [الأنبياء: ۹۶]: يَخْرُجُونَ “
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ يَخْرُجُونَ مِنَ الْأَجْدَاثِ তারা কবর থেকে বের হবে। [সূরা মা ‘আরিজ: ৪৩] الا جدث অর্থ -কবরসমূহ। [সূরা ইনফিতর: ৪] بُعْثِرَتْ অর্থ- উন্মোচিত হবে بَعْثَرْتُ حَوْضِى অর্থ- আমি হাওযের নিচের অংশকে উপরে তুলে দিয়েছি। الْإِيفَاضُ অর্থ – দ্রুত গতিতে চলা। আমাশ রহমাহুল্লাহ إِلَى نَصْبِ يُضُونَ إِلَى شَى مَنْصُوبِ يَسْتَبِقُنَ إِلَيْهِ এর কিরাআত অর্থ – তারা স্থাপিত কোন বস্তুর দিকে দ্রুত গতিতে চলে। আর النُّصْبُ একবচন আর النَّصْبُ মাস্দার বা ক্রিয়ামূল। [সূরা কাফ এর ৪২ আয়াত] يَوْمَ الْخُرُوجِ বেরিয়ে আসার দিন। অর্থাৎ مِنَ الْقُبُورِ কবর থেকে। [সূরা আম্বিয়া ৯৬ আয়াত] يَنْسِلُونَ অর্থ- ‘বের হয়ে ছুটে আসবে’
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۲ – حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، قَالَ: حَدَّثَنِي جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنَّا فِي جَنَازَةٍ فِي بَقِيعِ الغَرْقَدِ، فَأَتَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَعَدَ وَقَعَدْنَا حَوْلَهُ، وَمَعَهُ مِخْصَرَةٌ، فَنَكَّسَ فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِمِخْصَرَتِهِ، ثُمَّ قَالَ: «مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ، مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ إِلَّا كُتِبَ مَكَانُهَا مِنَ الجَنَّةِ وَالنَّارِ، وَإِلَّا قَدْ كُتِبَ شَقِيَّةً أَوْ سَعِيدَةً» فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ العَمَلَ؟ فَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَسَيَصِيرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ، وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ فَسَيَصِيرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ، قَالَ: «أَمَّا أَهْلُ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُونَ لِعَمَلِ السَّعَادَةِ، وَأَمَّا أَهْلُ الشَّقَاوَةِ فَيُيَسَّرُونَ لِعَمَلِ الشَّقَاوَةِ» ثُمَّ قَرَأَ: {فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى وَصَدَّقَ بِالحُسْنَى} [الليل: ۶] الآيَةَ
‘উছমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মানস্বূর থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন ‘উবাদাহ থেকে, তিনি আবূ ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি ‘আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমরা বাকী’উল গারক্বাদ (কবরস্থানে) এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করলেন। তিনি উপবেশন করলে আমরাও তাঁর চারদিকে বসে পড়লাম। তাঁর হাতে একটি ছড়ি ছিল। তিনি নীচের দিকে তাকিয়ে তাঁর ছড়িটি দ্বারা মাটি খুঁড়তে লাগলেন। অতঃপর বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, অথবা বললেনঃ এমন কোন সৃষ্ট প্রাণী নেই, যার জন্য জান্নাত ও জাহান্নামে জায়গা নির্ধারিত করে দেয়া হয়নি আর এ কথা লিখে দেয়া হয়নি যে, সে দুর্ভাগা হবে কিংবা ভাগ্যবান। তখন এক ব্যক্তি আরয করল, হে আল্লাহর রসূল! তা হলে কি আমরা আমাদের ভাগ্যলিপির উপর ভরসা করে আমল করা ছেড়ে দিব না? কেননা, আমাদের মধ্যে যারা ভাগ্যবান তারা অচিরেই ভাগ্যবানদের আমলের দিকে ধাবিত হবে। আর যারা দুর্ভাগা তারা অচিরেই দুর্ভাগাদের আমলের দিকে ধাবিত হবে। তিনি বললেনঃ যারা ভাগ্যবান, তাদের জন্য সৌভাগ্যের আমল সহজ করে দেয়া হয় আর ভাগ্যাহতদের জন্য দুর্ভাগ্যের আমল সহজ করে দেয়া হয়। অতঃপর তিনি এ আয়াতে তিলাওয়াত করলেনঃ فَاَمَّا مَنْ اَعْطى – وَاتقى الاية “কাজেই যে দান করে এবং তাক্ওয়া অবলম্বন করে আর ভাল কথাকে সত্য বলে বুঝেছে” – (সূরা লাইলঃ ৫)
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۳ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ حَلَفَ بِمِلَّةٍ غَيْرِ الإِسْلَامِ كَاذِبًا مُتَعَمِّدًا، فَهُوَ كَمَا قَالَ، وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ عُذِّبَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযিদ ইব্নু যুরায়‘ই আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি সাবিত ইব্নু যাহ্হাক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বলেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের (অনুসারী হবার) ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা হলফ করে সে যেমন বলল, তেমনই হবে আর যে ব্যক্তি কোন ধারালো লোহা দিয়ে আত্মহত্যা করে, তাকে তা দিয়েই জাহান্নামে ‘আযাব দেয়া হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۴ – وَقَالَ حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنِ الحَسَنِ، حَدَّثَنَا جُنْدَبٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – فِي هَذَا المَسْجِدِ فَمَا نَسِينَا وَمَا نَخَافُ أَنْ يَكْذِبَ جُنْدَبٌ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَ: ” كَانَ بِرَجُلٍ جِرَاحٌ، فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَقَالَ اللَّهُ: بَدَرَنِي عَبْدِي بِنَفْسِهِ حَرَّمْتُ عَلَيْهِ الجَنَّةَ “
এবং হাজ্জাজ ইব্নু মিন্হাল বললেন: জারীর ইব্নু হাযিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’সান থেকে, তিনি বললেন: জুন্দাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু এই মসজিদে আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আর তা আমরা ভুলে যাইনি এবং আমরা এ আশংকাও করিনি যে, জুন্দাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে মিথ্যা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তির (দেহে) যখম ছিল, সে আত্মহত্যা করল। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমার বান্দা তার প্রাণ নিয়ে আমার সাথে তাড়াহুড়া করল। আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম। ২৭
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
২৭. এটা ধমকী স্বরূপ, কেননা কাবীরাহ গুনাহের জন্য জান্নাত হারাম হয় না বরং শিরকে আকবার ও কুফরী অবস্থায় বিনা তাওবায় মারা গেলে জান্নাত হারাম হয়।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۵ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الَّذِي يَخْنُقُ نَفْسَهُ يَخْنُقُهَا فِي النَّارِ، وَالَّذِي يَطْعُنُهَا يَطْعُنُهَا فِي النَّارِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ যিনাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে (অনুরূপভাবে) নিজেকে ফাঁস লাগাতে থাকবে আর যে ব্যক্তি বর্শার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে (অনুরূপভাবে) বর্শা বিদ্ধ হতে থাকবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
رَوَاهُ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
(আব্দুল্লাহ) ইব্ন উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বিষয়টি রেওয়ায়েত করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۶ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، أَنَّهُ قَالَ: لَمَّا مَاتَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُولَ، دُعِيَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيُصَلِّيَ عَلَيْهِ، فَلَمَّا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَثَبْتُ إِلَيْهِ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَتُصَلِّي عَلَى ابْنِ أُبَيٍّ وَقَدْ قَالَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا: كَذَا وَكَذَا؟ أُعَدِّدُ عَلَيْهِ قَوْلَهُ، فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «أَخِّرْ عَنِّي يَا عُمَرُ» فَلَمَّا أَكْثَرْتُ عَلَيْهِ، قَالَ: «إِنِّي خُيِّرْتُ فَاخْتَرْتُ، لَوْ أَعْلَمُ أَنِّي إِنْ زِدْتُ عَلَى السَّبْعِينَ يُغْفَرُ لَهُ لَزِدْتُ عَلَيْهَا» قَالَ: فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ انْصَرَفَ، فَلَمْ يَمْكُثْ إِلَّا يَسِيرًا، حَتَّى نَزَلَتِ الآيَتَانِ مِنْ بَرَاءَةٌ: {وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا} [التوبة: 84] إِلَى قَوْلِهِ {وَهُمْ فَاسِقُونَ} [التوبة: 84] قَالَ: فَعَجِبْتُ بَعْدُ مِنْ جُرْأَتِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَئِذٍ، وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ
ইয়াহইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস থেকে, তিনি ‘উমর ইব্নুল খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, (মুনাফিক সর্দার) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উবাই ইব্নু সালূল ১ মারা গেলে জানাযার সালাতের জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আহবান করা হল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে) দাঁড়ালে আমি দ্রুত তাঁর নিকট গিয়ে বসলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি ইব্নু ‘উবাই’র জানাযার সালাত আদায় করতে যাচ্ছেন? অথচ সে অমুক অমুক দিন (আপনার শানে এবং ঈমানদারদের সম্পর্কে) এই এই কথা বলেছে। এ বলে আমি তার উক্তিগুলো গুণেগুণে পুনরাবৃত্তি করলাম। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, ‘উমর, সরে যাও! আমি বারবার আপত্তি করলে তিনি বললেন, আমাকে (তার সালাত আদায় করার ব্যাপারে) ইখ্তিয়ার দেয়া হয়েছে। কাজেই আমি তা গ্রহণ করলাম। আমি যদি জানতাম যে, সত্তর বারের অধিক মাগফিরাত কামনা করলে তাকে মাফ করা হবে তা হলে আমি অবশ্যই তার চেয়ে অধিক বার মাফ চাইতাম। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করেন এবং ফিরে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরেই সূরা বারা’আতের এ দু’টি আয়াত নাযিল হলঃ وَلَا تُصَلِّ …. مِنْهُم ماتَ اَبَدًا – “তাদের কেউ মারা গেলে আপনি কখনো তার জানাযার সালাত আদায় করবেন না। এমতাবস্থায় যে তারা ফাসিক” (সূরা আত্তাওবাহ ৯ : ৮৪)। রাবী বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে আমার ঐ দিনের দুঃসাহসিক আচরণ করায় আমি বিস্মিত হয়েছি। আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলই সমধিক অবগত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. মুনাফিক সর্দার আব্দুল্লাহর পিতার নাম ছিল উবাই, আত মাতার নাম ছিল সালূল, তাই তাকে ইব্ন উবাই ইব্ন সালূল বলা হত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۷ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: مَرُّوا بِجَنَازَةٍ، فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَجَبَتْ» ثُمَّ مَرُّوا بِأُخْرَى فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا شَرًّا، فَقَالَ: «وَجَبَتْ» فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: مَا وَجَبَتْ؟ قَالَ: «هَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ خَيْرًا، فَوَجَبَتْ لَهُ الجَنَّةُ، وَهَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ شَرًّا، فَوَجَبَتْ لَهُ النَّارُ، أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللَّهِ فِي الأَرْضِ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু স্বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক সাহাবী জানাযার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁরা তার প্রশংসা করলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ওয়াজিব হয়ে গেল। একটু পরে অপর একটি জানাযা অতিক্রম করলেন। তখন তাঁরা তার নিন্দাসূচক মন্তব্য করলেন। (এবারও) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ওয়াজিব হয়ে গেল। তখন ‘উমর ইব্নুল খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আরয করলেন, (হে আল্লাহর রসূল!) কি ওয়াজিব হয়ে গেল? তিনি বললেনঃ এ (প্রথম) ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা উত্তম মন্তব্য করলে, তাই তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেল। আর এ (দ্বিতীয়) ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা নিন্দাসূচক মন্তব্য করায় তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গেল। তোমরা তো পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
1368 – حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ هُوَ الصَّفَّارُ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي الفُرَاتِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ، قَالَ: قَدِمْتُ المَدِينَةَ وَقَدْ وَقَعَ بِهَا مَرَضٌ، فَجَلَسْتُ إِلَى عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَمَرَّتْ بِهِمْ جَنَازَةٌ، فَأُثْنِيَ عَلَى صَاحِبِهَا خَيْرًا، فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: وَجَبَتْ، ثُمَّ مُرَّ بِأُخْرَى فَأُثْنِيَ عَلَى صَاحِبِهَا خَيْرًا، فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: وَجَبَتْ، ثُمَّ مُرَّ بِالثَّالِثَةِ فَأُثْنِيَ عَلَى صَاحِبِهَا شَرًّا، فَقَالَ: وَجَبَتْ، فَقَالَ أَبُو الأَسْوَدِ: فَقُلْتُ: وَمَا وَجَبَتْ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ؟ قَالَ: قُلْتُ كَمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّمَا مُسْلِمٍ، شَهِدَ لَهُ أَرْبَعَةٌ بِخَيْرٍ، أَدْخَلَهُ اللَّهُ الجَنَّةَ» فَقُلْنَا: وَثَلَاثَةٌ، قَالَ: «وَثَلَاثَةٌ» فَقُلْنَا: وَاثْنَانِ، قَالَ: «وَاثْنَانِ» ثُمَّ لَمْ نَسْأَلْهُ عَنِ الوَاحِدِ
‘আফ্ফান ইব্নু মুসলিম তিনি হলেন স্বাফ্ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: দাঊদ ইব্নু আবূ ফুরাত আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি আবুল আসওয়াদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি মদীনায় আসলাম, তখন সেখানে একটি রোগ (মহামারী আকারে) ছড়িয়ে পড়েছিল। আমি ‘উমর ইব্নুল খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তাদের পাশ দিয়ে একটি জানাযা অতিক্রম করল। তখন জানাযার লোকটি সম্পর্কে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করা হল। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেল। অতঃপর অপর একটি (জানাযা) অতিক্রম করল। তখন সে লোকটি সম্পর্কেও প্রশংসাসূচক মন্তব্য করা হল। (এবারও) তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় একটি (জানাযা) অতিক্রম করল, লোকটি সম্বন্ধে নিন্দাসূচক মন্তব্য করা হল। তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেল। আবুল আসওয়াদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেনঃ আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! কি ওয়াজিব হয়ে গেল? তিনি বললেন, আমি তেমনই বলেছি, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, যে কোন মুসলমান সম্পর্কে চার ব্যক্তি ভাল বলে সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেনঃ তখন আমরা বলেছিলাম, তিনজন হলে? তিনি বললেন, তিনজন হলেও। আমরা বললাম, দু’জন হলে? তিনি বললেন, দু’জন হলেও। অতঃপর আমরা একজন সম্পর্কে আর তাঁকে জিজ্ঞেস করিনি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَوْلُهُ تَعَالَى: {وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ المَوْتِ، وَالمَلَائِكَةُ بَاسِطُو أَيْدِيهِمْ، أَخْرِجُوا أَنْفُسَكُمُ اليَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الهُونِ} قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: الهُونُ: هُوَ الهَوَانُ، وَالهَوْنُ: الرِّفْقُ وَقَوْلُهُ جَلَّ ذِكْرُهُ: {سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ، ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ} [التوبة: ۱۰۱]، وَقَوْلُهُ تَعَالَى: {وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ العَذَابِ. النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ، أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ العَذَابِ} [غافر: ۴۶]
আল্লাহ্ সুবহানাহুতা‘আলা -এর বাণীঃ “আর যদি তুমি দেখতে পেতে, যখন যালিমরা মৃত্যু যন্ত্রনায় থাকবে এবং মালাইকাগণ হাত বাড়িয়ে বলবে, তোমাদের প্রাণ বের করে দাও, আজ তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি দেওয়া হবে।” [সূরা আল-আন‘আম : ৯৩] আবু ‘আব্দুল্লাহ (ইমাম বুখারী) রহমাহুল্লাহ বলেন- الْهُونُ এর অর্থ الْهَوَانُ বাংলায় অর্থ- অবমাননা। আল্লাহ্ তা‘আলা আল-ফুরকানের ৬৩ নং আয়াতে বলেন- الْهُونُ এর অর্থ الرِّفْقُ এর বাংলা অর্থ- নম্রতা। আল্লাহ্ সুবহানাহুতা‘আলা -এর বাণীঃ “অচিরেই আমি তাদেরকে দু’বার (বারবার) শাস্তি দিব। পরে তারা প্রত্যাবর্তিত হবে মহাশাস্তির দিকে।” [সূরা তাওবা : ১০১] এবং তাঁর বাণীঃ আর নিকৃষ্ট (কঠিন) শাস্তি ফের‘আউন গোষ্টিকে ঘিরে ফেলল, সকাল সন্ধ্যায় তাদেরকে উপস্থিত করা হয় জাহান্নামের সামনে, আর যে দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে (সেদিন বলা হবে) ফির‘আউন গোষ্টিকে প্রবিষ্ট কর কঠিন শাস্তিতে।” [সূরা মু‘মিন : ৪৫-৪৬]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۶۹ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا أُقْعِدَ المُؤْمِنُ فِي قَبْرِهِ أُتِيَ، ثُمَّ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ: {يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالقَوْلِ الثَّابِتِ} [إبراهيم: 27] ” حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ بِهَذَا – وَزَادَ – {يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا} [إبراهيم: 27] نَزَلَتْ فِي عَذَابِ القَبْرِ
হা’ফ্স ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আলক্বামাহ ইব্ন মারছাদ থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন ‘উবায়াদহ থেকে, তিনি বারা’আ ইব্নু ‘আযিব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে, তিনি বলেন, মু’মিন ব্যক্তিকে যখন তার কবরে বসানো হয় তখন উপস্থিত করা হয় ফেরেশতাগণকে। অতঃপর (ফেরেশতাগণের প্রশ্নের উত্তরে) সে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, – لآ الهَ الَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ “আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল।” এটা আল্লাহর কালামঃ (যার অর্থ) “আল্লাহ্ পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে অবিচল রাখবেন সে সকল লোককে যারা ঈমান এনেছে, প্রতিষ্ঠিত বাণীতে” – (সূরা ইব্রাহীমঃ ২৭)। শু’বাহ সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি অতিরিক্ত বলেছেন যে, يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا আল্লাহ অবিচল রাখবেন যারা ঈমান এনেছে – এ আয়াত কবরের আযাব সম্পর্কে নাযিল হয়েছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۰ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، حَدَّثَنِي نَافِعٌ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ، قَالَ: اطَّلَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَهْلِ القَلِيبِ، فَقَالَ: «وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا؟» فَقِيلَ لَهُ: تَدْعُو أَمْوَاتًا؟ فَقَالَ: «مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ مِنْهُمْ، وَلَكِنْ لَا يُجِيبُونَ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াক্বুব ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ্’ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বদরে নিহত) গর্তবাসীদের ১ দিকে ঝুঁকে দেখে বললেনঃ “তোমাদের সাথে রব যে ওয়াদা করেছিলেন, তা তোমরা বাস্তবে পেয়েছ তো?” – (সূরা আল-আ’রাফ ৭: ৪৪) তখন তাঁকে বলা হল, আপনি মৃতদের ডেকে কথা বলছেন? (ওরা কি শুনতে পায়?), তিনি বললেনঃ “তোমরা তাদের চেয়ে অধিক শুনতে পাও না, তবে তারা জবাব দিতে পারছে না”। ২
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. ‘القَليب’ পুরাতন গর্ত বা খাদ যে গর্তের মুখ বন্দ করা হয়নী। বদর যুদ্ধে নিহত মুশরীক দলনেতা আবূ জাহল গঙদের একটি গর্তে নিক্কেপ করা হয়েছিল, ‘قَليب’ বদরের গর্ত বা খাদ বলা হয়।
২. কবরবাসীকে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কোন কিছু শুনানোর ক্ষমতা রাখেন না তবে মহান আল্লাহ্ তাওফীক দিলে সম্ভব। বর্ণিত অবস্থা তারই দৃষ্টান্ত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۱ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: إِنَّمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُمْ لَيَعْلَمُونَ الآنَ أَنَّ مَا كُنْتُ أَقُولُ لَهُمْ حَقٌّ» وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ المَوْتَى} [النمل: ۸۰]
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহাম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, নিশ্চয়ই তারা এখন ভালভাবে জানতে (ও বুঝতে) পেরেছে যে, (কবর আযাব প্রসঙ্গে) আমি তাদের যা বলতাম তা বাস্তব। আল্লাহ্ তা’আলা ঘোষণা করেছেনঃ “আপনি (হে নবী!) নিশ্চিতই মৃতদের (কোন কথা) শোনাতে পারেন না” – (সূরা আন-নামালঃ ৮০)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۲ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، سَمِعْتُ الأَشْعَثَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ يَهُودِيَّةً دَخَلَتْ عَلَيْهَا، فَذَكَرَتْ عَذَابَ القَبْرِ، فَقَالَتْ لَهَا: أَعَاذَكِ اللَّهُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، فَسَأَلَتْ عَائِشَةُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَذَابِ القَبْرِ، فَقَالَ: «نَعَمْ، عَذَابُ القَبْرِ» قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدُ صَلَّى صَلَاةً إِلَّا تَعَوَّذَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ زَادَ غُنْدَرٌ: «عَذَابُ القَبْرِ حَقٌّ»
‘আবদান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন শু‘বাহ থেকে, তিনি বললেন: আমি আশ‘আছ থেকে শুনলাম, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন: এক ইয়াহুদী স্ত্রীলোক ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর কাছে এসে কবর আযাব সম্পর্কে আলোচনা করে তাঁকে (দু’আ করে) বলল, আল্লাহ্ আপনাকে কবর আযাব হতে রক্ষা করুন! পরে ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা কবর আযাব সম্পর্কে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেনঃ হাঁ, কবর আযাব (সত্য)। ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, এরপর থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এমন কোন সালাত আদায় করতে দেখিনি, যাতে তিনি কবর আযাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেননি। [এ হাদীসের বর্ণনায়] গুণদার অধিক উল্লেখ করেছেন যে, ‘কবর ‘আযাব একেবারে বাস্তব’।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۳ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ: أَنَّهُ سَمِعَ أَسْمَاءَ بِنْتَ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، تَقُولُ: «قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطِيبًا فَذَكَرَ فِتْنَةَ القَبْرِ الَّتِي يَفْتَتِنُ فِيهَا المَرْءُ، فَلَمَّا ذَكَرَ ذَلِكَ ضَجَّ المُسْلِمُونَ ضَجَّةً»
ইহ্’ইয়া ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়া ইব্নু যুবাইর রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি আসমা বিন্ত আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একবার) দাঁড়িয়ে খুৎবাহ দিচ্ছিলেন তাতে তিনি কবরে মানুষ যে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তার বর্ণনা দিলে মুসলমানগণ ভয়ার্ত চিৎকার করতে লাগলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۴ – حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ حَدَّثَهُمْ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّ العَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ، فَيَقُولَانِ: مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَّا المُؤْمِنُ، فَيَقُولُ: أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ، فَيُقَالُ لَهُ: انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الجَنَّةِ، فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا – قَالَ قَتَادَةُ: وَذُكِرَ لَنَا: أَنَّهُ يُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ، ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَنَسٍ – قَالَ: وَأَمَّا المُنَافِقُ وَالكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ: مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ؟ فَيَقُولُ: لَا أَدْرِي كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ، فَيُقَالُ: لَا دَرَيْتَ وَلَا تَلَيْتَ، وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً، فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ “
‘আয়্য়াশ ইব্নু ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আ‘আ্লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তার সাথীরা এতটুকু মাত্র দূরে যায় যে, সে তখনও তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। ২৯ এ সময় দু’জন ফেরেশতা তার নিকট এসে তাকে বসান এবং তাঁরা বলেন, এ ব্যক্তি অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তখন মু’মিন ব্যক্তি বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রসূল। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থান স্থলটির দিকে নযর কর, আল্লাহ্ তোমাকে তার বদলে জান্নাতের একটি অবস্থান স্থল দান করেছেন। তখন সে দুটি স্থলের দিকেই দৃষ্টি করে দেখবে। কাতাদা বলেন, আমাদের নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, সে ব্যক্তির জন্য তাঁর কবর প্রশস্ত করে দেয়া হবে। অতঃপর তিনি (কাতাদা) পুনরায় আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর হাদীসের বর্ণনায় ফিরে আসেন। তিনি [আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু] বলেন, আর মুনাফিক বা কাফির ব্যক্তিকেও প্রশ্ন করা হবে তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কী বলতে? সে উত্তরে বলবে, আমি জানি না। লোকেরা যা বলত আমি তা-ই বললাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি না নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। আর তাকে লোহার মুগুর দ্বারা এমনভাবে আঘাত করা হবে, যার ফলে সে এমন বিকট চিৎকার করে উঠবে যে, দু’ জাতি (মানুষ ও জ্বিন) ছাড়া তার আশপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَوْنُ بْنُ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، قَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ وَجَبَتِ الشَّمْسُ، فَسَمِعَ صَوْتًا فَقَالَ: «يَهُودُ تُعَذَّبُ فِي قُبُورِهَا» وَقَالَ النَّضْرُ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَوْنٌ، سَمِعْتُ أَبِي، سَمِعْتُ البَرَاءَ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আওন ইব্নু আবূ জাহা’য়ফাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তার পিতা থেকে, তিনি বারা’ ইব্ন ‘আযিব থেকে, তিনি আবূ আইয়ুব [আনসারী] রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, (একবার) সূর্য ডুবে যাওয়ার পর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বের হলেন। তখন তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়ে বলেনঃ ইয়াহূদীদের কবরে আযাব দেয়া হচ্ছে। (এটা আযাব দেয়ার বা আযাবের ফেরেশতাগণের বা ইয়াহূদীদের আওয়াজ।) [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন] এবং নযর বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আওন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আমার পিতা থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আমি বারা’ থেকে শুনলাম, তিনি আবূ আইয়ুব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে (অনুরূপ) বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۶ – حَدَّثَنَا مُعَلًّى، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، قَالَ: حَدَّثَتْنِي ابْنَةُ خَالِدِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ العَاصِ، أَنَّهَا سَمِعَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَهُوَ «يَتَعَوَّذُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ»
মু‘আল্লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বুহা’য়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মূসা ইব্ন ‘উক্ববাহ থেকে, তিনি বললেন: ইব্নাহ খালিদ ইব্ন সাঈদ ইব্ন ‘আস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কবরের শাস্তি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতে শুনেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۷ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُو وَيَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ، وَمِنْ فِتْنَةِ المَحْيَا وَالمَمَاتِ، وَمِنْ فِتْنَةِ المَسِيحِ الدَّجَّالِ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’আ করতেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার সমীপে পানাহ চাচ্ছি কবরের শাস্তি হতে, জাহান্নামের শাস্তি হতে, জীবন ও মরণের ফিতনা হতে এবং মাসীহ দাজ্জাল এর ফিতনা হতে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۷۸ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَبْرَيْنِ فَقَالَ: «إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ مِنْ كَبِيرٍ» ثُمَّ قَالَ: «بَلَى أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ يَسْعَى بِالنَّمِيمَةِ، وَأَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لَا يَسْتَتِرُ مِنْ بَوْلِهِ» قَالَ: ثُمَّ أَخَذَ عُودًا رَطْبًا، فَكَسَرَهُ بِاثْنَتَيْنِ، ثُمَّ غَرَزَ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى قَبْرٍ، ثُمَّ قَالَ: «لَعَلَّهُ يُخَفَّفُ عَنْهُمَا مَا لَمْ يَيْبَسَا»
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আ্মাশ থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি ত্বাবুস থেকে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, (একবার) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ঐ দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে আর কোন কঠিন কাজের কারণে তাদের আযাব দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ (আযাব দেয়া হচ্ছে) তবে তাদের একজন পরনিন্দা করে বেড়াত, অন্যজন তার পেশাবের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত না। (রাবী বলেন) অতঃপর তিনি একটি তাজা ডাল নিয়ে তা দু’খন্ডে ভেঙ্গে ফেললেন। অতঃপর সে দু’খন্ডের প্রতিটি এক এক কবরে পুঁতে দিলেন। অতঃপর বললেনঃ আশা করা যায় যে এ দু’টি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের উভয়ের ‘আযাব হালকা করা হবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
1379 – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا مَاتَ عُرِضَ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالعَشِيِّ، إِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَيُقَالُ: هَذَا مَقْعَدُكَ حَتَّى يَبْعَثَكَ اللَّهُ يَوْمَ القِيَامَةِ “
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মারা গেলে অবশ্যই তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার অবস্থান স্থল উপস্থাপন করা হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তবে (অবস্থান স্থল) জান্নাতীদের মধ্যে দেখানো হয়। আর সে জাহান্নামী হলে, তাকে জাহান্নামীদের (অবস্থান স্থল দেখানো হয়) আর তাকে বলা হয়, এ হচ্ছে তোমার অবস্থান স্থল, ক্বিয়ামত দিবসে আল্লাহ তোমাকে পুনরুত্থিত করা অবধি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۰ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا وُضِعَتِ الجِنَازَةُ، فَاحْتَمَلَهَا الرِّجَالُ عَلَى أَعْنَاقِهِمْ، فَإِنْ كَانَتْ صَالِحَةً قَالَتْ: قَدِّمُونِي، قَدِّمُونِي، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ صَالِحَةٍ قَالَتْ: يَا وَيْلَهَا، أَيْنَ يَذْهَبُونَ بِهَا؟ يَسْمَعُ صَوْتَهَا كُلُّ شَيْءٍ إِلَّا الإِنْسَانَ، وَلَوْ سَمِعَهَا الإِنْسَانُ لَصَعِقَ “
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন আবূ সাঈদ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মৃত ব্যক্তিকে খাটিয়ায় রেখে লোকেরা যখন কাঁধে বহন করে নিয়ে যায়, তখন সে নেককার হলে বলতে থাকে, আমাকে এগিয়ে নিয়ে চল, আমাকে এগিয়ে নিয়ে চল; আর সে নেককার না হলে বলতে থাকে হায় আফসোস! এটাকে নিয়ে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? মানুষ ব্যতীত সব কিছুই তার এ আওয়াজ শুনতে পায়। মানুষেরা তা শুনতে পেলে অবশ্যই অজ্ঞান হয়ে পড়ত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ مَاتَ لَهُ ثَلَاثَةٌ مِنَ الوَلَدِ، لَمْ يَبْلُغُوا الحِنْثَ، كَانَ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ أَوْ دَخَلَ الجَنَّةَ»
আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তির এমন তিনটি সন্তান মারা যায়, যারা বালিগ হয়নি, তারা (মাতা-পিতার জন্য) জাহান্নাম হতে আবরণ হয়ে যাবে। অথবা (তিনি বলেছেন) সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۱ – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنَ النَّاسِ مُسْلِمٌ، يَمُوتُ لَهُ ثَلَاثَةٌ مِنَ الوَلَدِ لَمْ يَبْلُغُوا الحِنْثَ، إِلَّا أَدْخَلَهُ اللَّهُ الجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ إِيَّاهُمْ»
ইয়াক্বূব ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘উলায়্য়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু স্বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইবনু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম ব্যক্তির এমন তিনটি (সন্তান) মারা যাবে, যারা বালিগ হয়নি, আল্লাহ তাদের প্রতি তাঁর রহমতের ফযলে সে ব্যক্তিকে (মা-বাপকে) জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۲ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّهُ سَمِعَ البَرَاءَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ لَهُ مُرْضِعًا فِي الجَنَّةِ»
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আদী ইব্ন ছাবিত থেকে, তিনি বারা’আ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, (নবী তনয়) ইবরাহীম রাজিআল্লাহু ‘আনহু –এর মৃত্যু হলে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তাঁর জন্য তো জান্নাতে একজন দুধ-মা রয়েছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۳ – حَدَّثَنِي حِبَّانُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَوْلَادِ المُشْرِكِينَ، فَقَالَ: «اللَّهُ إِذْ خَلَقَهُمْ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ»
হি’ব্বান ইব্নু মূসা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন: তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ বিশর থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র থেকে, তিনি ইবনু আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মুশরিকদের শিশু সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: আল্লাহ তাদের সৃষ্টি লগ্নেই তাদের ভবিষ্যৎ আমল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۴ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: سُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَرَارِيِّ المُشْرِكِينَ، فَقَالَ: «اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ»
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘আত্বা ইব্নু ইয়াযীদ লায়ছী আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মুশরিকদের নাবালক সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন: আল্লাহ তাদের ভবিষ্যৎ ‘আমল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۵ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، كَمَثَلِ البَهِيمَةِ تُنْتَجُ البَهِيمَةَ هَلْ تَرَى فِيهَا جَدْعَاءَ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্ন আবূ যিব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন আব্দুর রহ’মান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: প্রত্যেক নবজাতক ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। অত:পর তার মাতাপিতা তাকে ইয়াহুদী বা নাসারা অথবা অগ্নি উপাসক করে, যেমন চতুষ্পদ জন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে (জন্মগত) কানকাটা দেখেছ?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۶ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى صَلَاةً أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ: «مَنْ رَأَى مِنْكُمُ اللَّيْلَةَ رُؤْيَا؟» قَالَ: فَإِنْ رَأَى أَحَدٌ قَصَّهَا، فَيَقُولُ: «مَا شَاءَ اللَّهُ» فَسَأَلَنَا يَوْمًا فَقَالَ: «هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمْ رُؤْيَا؟» قُلْنَا: لَا، قَالَ: «لَكِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ رَجُلَيْنِ أَتَيَانِي فَأَخَذَا بِيَدِي، فَأَخْرَجَانِي إِلَى الأَرْضِ المُقَدَّسَةِ، فَإِذَا رَجُلٌ جَالِسٌ، وَرَجُلٌ قَائِمٌ، بِيَدِهِ كَلُّوبٌ مِنْ حَدِيدٍ» قَالَ بَعْضُ أَصْحَابِنَا عَنْ مُوسَى: ” إِنَّهُ يُدْخِلُ ذَلِكَ الكَلُّوبَ فِي شِدْقِهِ حَتَّى يَبْلُغَ قَفَاهُ، ثُمَّ يَفْعَلُ بِشِدْقِهِ الآخَرِ مِثْلَ ذَلِكَ، وَيَلْتَئِمُ شِدْقُهُ هَذَا، فَيَعُودُ فَيَصْنَعُ مِثْلَهُ، قُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ، فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ عَلَى قَفَاهُ وَرَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى رَأْسِهِ بِفِهْرٍ – أَوْ صَخْرَةٍ – فَيَشْدَخُ بِهِ رَأْسَهُ، فَإِذَا ضَرَبَهُ تَدَهْدَهَ الحَجَرُ، فَانْطَلَقَ إِلَيْهِ لِيَأْخُذَهُ، فَلَا يَرْجِعُ إِلَى هَذَا حَتَّى يَلْتَئِمَ رَأْسُهُ وَعَادَ رَأْسُهُ كَمَا هُوَ، فَعَادَ إِلَيْهِ، فَضَرَبَهُ، قُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا إِلَى ثَقْبٍ مِثْلِ التَّنُّورِ، أَعْلَاهُ ضَيِّقٌ وَأَسْفَلُهُ وَاسِعٌ يَتَوَقَّدُ تَحْتَهُ نَارًا، فَإِذَا اقْتَرَبَ ارْتَفَعُوا حَتَّى كَادَ أَنْ يَخْرُجُوا، فَإِذَا خَمَدَتْ رَجَعُوا فِيهَا، وَفِيهَا رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ، فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ مِنْ دَمٍ فِيهِ رَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى وَسَطِ النَّهَرِ – قَالَ يَزِيدُ، وَوَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ: عَنْ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ – وَعَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ حِجَارَةٌ، فَأَقْبَلَ الرَّجُلُ الَّذِي فِي النَّهَرِ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ رَمَى الرَّجُلُ بِحَجَرٍ فِي فِيهِ، فَرَدَّهُ حَيْثُ كَانَ، فَجَعَلَ كُلَّمَا جَاءَ لِيَخْرُجَ رَمَى فِي فِيهِ بِحَجَرٍ، فَيَرْجِعُ كَمَا كَانَ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ، فَانْطَلَقْنَا حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ خَضْرَاءَ، فِيهَا شَجَرَةٌ عَظِيمَةٌ، وَفِي أَصْلِهَا شَيْخٌ وَصِبْيَانٌ، وَإِذَا رَجُلٌ قَرِيبٌ مِنَ الشَّجَرَةِ بَيْنَ يَدَيْهِ نَارٌ يُوقِدُهَا، فَصَعِدَا بِي فِي الشَّجَرَةِ، وَأَدْخَلَانِي دَارًا لَمْ أَرَ قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهَا، فِيهَا رِجَالٌ شُيُوخٌ وَشَبَابٌ، وَنِسَاءٌ، وَصِبْيَانٌ، ثُمَّ أَخْرَجَانِي مِنْهَا فَصَعِدَا بِي الشَّجَرَةَ، فَأَدْخَلَانِي دَارًا هِيَ أَحْسَنُ وَأَفْضَلُ فِيهَا شُيُوخٌ، وَشَبَابٌ، قُلْتُ: طَوَّفْتُمَانِي اللَّيْلَةَ، فَأَخْبِرَانِي عَمَّا رَأَيْتُ، قَالَا: نَعَمْ، أَمَّا الَّذِي رَأَيْتَهُ يُشَقُّ شِدْقُهُ، فَكَذَّابٌ يُحَدِّثُ بِالكَذْبَةِ، فَتُحْمَلُ عَنْهُ حَتَّى تَبْلُغَ الآفَاقَ، فَيُصْنَعُ بِهِ إِلَى يَوْمِ القِيَامَةِ، وَالَّذِي رَأَيْتَهُ يُشْدَخُ رَأْسُهُ، فَرَجُلٌ عَلَّمَهُ اللَّهُ القُرْآنَ، فَنَامَ عَنْهُ بِاللَّيْلِ وَلَمْ يَعْمَلْ فِيهِ بِالنَّهَارِ، يُفْعَلُ بِهِ إِلَى يَوْمِ القِيَامَةِ، وَالَّذِي رَأَيْتَهُ فِي الثَّقْبِ فَهُمُ الزُّنَاةُ، وَالَّذِي رَأَيْتَهُ فِي النَّهَرِ آكِلُوا الرِّبَا، وَالشَّيْخُ فِي أَصْلِ الشَّجَرَةِ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَالصِّبْيَانُ، حَوْلَهُ، فَأَوْلَادُ النَّاسِ وَالَّذِي يُوقِدُ النَّارَ مَالِكٌ خَازِنُ النَّارِ، وَالدَّارُ الأُولَى الَّتِي دَخَلْتَ دَارُ عَامَّةِ المُؤْمِنِينَ، وَأَمَّا هَذِهِ الدَّارُ فَدَارُ الشُّهَدَاءِ، وَأَنَا جِبْرِيلُ، وَهَذَا مِيكَائِيلُ، فَارْفَعْ رَأْسَكَ، فَرَفَعْتُ رَأْسِي، فَإِذَا فَوْقِي مِثْلُ السَّحَابِ، قَالَا: ذَاكَ مَنْزِلُكَ، قُلْتُ: دَعَانِي أَدْخُلْ مَنْزِلِي، قَالَا: إِنَّهُ بَقِيَ لَكَ عُمُرٌ لَمْ تَسْتَكْمِلْهُ فَلَوِ اسْتَكْمَلْتَ أَتَيْتَ مَنْزِلَكَ “
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর ইব্নু হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, আবূ রাজা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সামুরা ইবনু জুনদুব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ফজর) সালাত শেষে আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ গত রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? (বর্ণনাকারী) বলেন, কেউ স্বপ্ন, দেখে থাকলে তিনি তা বিবৃত করতেন। তিনি তখন আল্লাহর মর্যী মুতাবিক তাবীর বলতেন। একদা আমাদেরকে প্রশ্ন করলেন, তোমাদের কেউ কি কোন স্বপ্ন দেখেছ? আমরা বললাম, জী না। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ গত রাতে আমি দেখলাম, দু’জন লোক এসে আমার দু’হাত ধরে আমাকে পবিত্র ভূমির দিকে নিয়ে চললো। হঠাৎ দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া হাতে দাঁড়িয়ে। [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন] আমাদের এক সাথী মু’সা বর্ণনা করেছেন যে, দাঁড়ানো ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তির (এক পাশের) চোয়ালটা এমনভাবে আঁকড়া বিদ্ধ করছিল যে, তা (চোয়াল বিদীর্ণ করে) মস্তকের পিছনের দিক পর্যন্ত পৌছে যাচ্ছিল। অত:পর অপর চোয়ালটিও আগের মত বিদীর্ণ করল। ততক্ষণে প্রথম চোয়ালটা জোড়া লেগে যাচ্ছিল। আঁকড়াধারী ব্যক্তি পুণরায় সেরূপ করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কী হচ্ছে? সাথীদ্বয় বললেন, (পরে বলা হবে এখন) চলুন। আমরা চলতে চলতে চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যক্তির পাশে এসে উপস্থিত হলাম, তার মাথার নিকট পাথর হাতে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে পাথর দিয়ে তার মাথা চূর্ণ করে দিচ্ছিল। নিক্ষিপ্ত পাথর দূরে গড়িয়ে যাওয়ার ফলে তা তুলে নিয়ে শায়িত ব্যক্তির নিকট ফিরে আসার পূর্বেই বিচূর্ণ মাথা আগের মত জোড়া লেগে যাচ্ছিল। সে পুণরায় মাথার উপরে পাথর নিক্ষেপ করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, লোকটি কে? তাঁরা বললেন, চলুন। আমরা অগ্রসর হয়ে তন্দুরের ন্যায় এক গর্তের নিকট উপস্থিত হলাম। গর্তের উপরিভাগ ছিল সংকীর্ণ ও নীচের অংশ প্রশস্ত এবং এর তলদেশ হতে আগুন জ্বলছিল। আগুন গর্তের মুখের নিকটবর্তী হলে সেখানের লোকগুলোও উপরে চলে আসে যেন তারা গর্ত হতে বের হয়ে যাবে। আগুন ক্ষীণ হয়ে গেলে তারাও (তলদেশে) ফিরে যায়। গর্তের মধ্যে বহুসংখ্যক উলঙ্গ নারী-পুরুষ ছিল। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তাঁরা বললেন, চলুন। আমরা চলতে চলতে একটি রক্ত প্রবাহিত নদীর কাছে হাযির হলাম। নদীর মাঝখানে এক ব্যক্তি দাঁড়ানো ছিল (ইমাম বুখারী (র.) বলেন) ইয়াযীদ ইব্ন হারূন ও ওহাব ইব্ন জারীর ইব্ন হাযিম রহ্’মাহুল্লাহ বর্ণনায় وَ عَلَى شَتَ النّهَرِ رَجُلُ بَيْنَ يَديهِ حِجَارَةً রয়েছে। নদীর তীরে অপর এক ব্যক্তি যার সামনে ছিল পাথর। নদীর মাঝখানে লোকটি নদী হতে বের হয়ে আসার জন্য অগ্রসর হলেই তীরে দাঁড়ানো লোকটি সে ব্যক্তির মুখ বরাবর পাথর নিক্ষেপ করছিল, এতে সে পূর্বস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছিল। এমনভাবে যতবার সে তীরে উঠে আসতে চেষ্টা করে, ততবার সে ব্যক্তি তার মুখ বরাবর পাথর নিক্ষেপ করে পূর্বস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য করে। আমি জানতে চাইলাম, এ ঘটনার কারণ কী? তাঁরা বললেন, চলতে থাকুন। আমরা চলতে চলতে একটি সবুজ বাগানে উপস্থিত হলাম। এতে একটি বড় গাছ ছিল। গাছটির গোড়ায় এক বৃদ্ধ ও বেশ কিছু বালক-বালিকা ছিল। হঠাৎ দেখি যে, গাছটির সন্নিকটে জনৈক ব্যক্তি আগুন জ্বালাচ্ছে। সাথীদ্বয় আমাকে নিয়ে গাছে আরোহণ করে এমন একটি বাড়িতে প্রবেশ করলেন যার চেয়ে সুদৃশ্য বাড়ি ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি। বাড়িতে বহু সংখ্যক বৃদ্ধ, যুবক, নারী এবং বালক-বালিকা ছিল। অত:পর তাঁরা আমাকে সেখান হতে বের করে নিয়ে গাছে আরো উপরে আরোহণ করে অপর একটি বাড়িতে প্রবেশ করালেন। এটা পূর্বাপেক্ষা অধিক সুদৃশ্য ও মনোরম। বাড়িটিতে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক। আমি বললাম, আজ রাতে আপনারা আমাকে (বহুদূর পর্যন্ত) ভ্রমণ করালেন। এবার বলুন, যা দেখলাম তার তাৎপর্য কী? তাঁরা বললেন, না, আপনি যে ব্যক্তির চোয়াল বিদীর্ণ করার দৃশ্য দেখলেন সে মিথ্যাবাদী; মিথ্যা কথা বলে বেড়াতো, তার বিবৃত মিথ্যা বর্ণনা ক্রমাগত বর্ণিত হয়ে দূর দূরান্তে পৌছে যেতো। ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার সঙ্গে এ ব্যবহার করা হবে। আপনি যার মাথা পূর্ণ করতে দেখলেন, সে এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ কুরআনের শিক্ষা দান করেছিলেন, কিন্তু রাতের বেলায় সে কুরআন হতে বিরত হয়ে নিদ্রা যেতো এবং দিনের বেলায় কুরআন অনুযায়ী ‘আমল করতো না। তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত এইরূপই করা হবে। গর্তের মধ্যে যাদেরকে আপনি দেখলেন, তারা ব্যভিচারী। (রক্ত প্রবাহিত) নদীতে আপনি যাকে দেখলেন, সে সুদখোর। গাছের গোড়ায় যে বৃদ্ধ ছিলেন তিনি ইবরাহীম (আ.) এবং তাঁর চারপাশের বালক-বালিকারা মানুষের সন্তান। যিনি আগুন জ্বালাচ্ছিলেন তিনি হলেন, জাহান্নামের খাযিন-মালিক নামক ফেরেশতা। প্রথম যে বাড়িতে আপনি প্রবেশ করলেন তা সাধারণ মু’মিনদের বাসস্থান। আর এ বাড়িটি হলো শহীদগণের আবাস। আমি (হলাম) জিবরাঈল আর ইনি হলে মীকাইল। (এরপর জিবরাঈল আমাকে বললেন) আপনার মাথা উপরে উঠান। আমি উঠিয়ে মেঘমালার মত কিছু দেখলাম। তাঁরা বললেন, এটাই হলো আপনার আবাসস্থল। আমি বললাম, আমাকে ছেড়ে দিন আমি আমার আবাসস্থলে প্রবেশ করি। তাঁরা বললেন, এখনো আপনার আয়ু কিছু সময়ের জন্য রয়ে গেছে, যা এখনো পূর্ণ হয়নি। অবশিষ্ট সময় পূর্ণ হলে অবশ্যই আপনি স্বীয় আবাসে চলে আসবেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۷ – حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلْتُ عَلَى أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: فِي كَمْ كَفَّنْتُمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: «فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ» وَقَالَ لَهَا: فِي أَيِّ يَوْمٍ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: «يَوْمَ الِاثْنَيْنِ» قَالَ: فَأَيُّ يَوْمٍ هَذَا؟ قَالَتْ: «يَوْمُ الِاثْنَيْنِ» قَالَ: أَرْجُو فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَ اللَّيْلِ، فَنَظَرَ إِلَى ثَوْبٍ عَلَيْهِ، كَانَ يُمَرَّضُ فِيهِ بِهِ رَدْعٌ مِنْ زَعْفَرَانٍ، فَقَالَ: اغْسِلُوا ثَوْبِي هَذَا وَزِيدُوا عَلَيْهِ ثَوْبَيْنِ، فَكَفِّنُونِي فِيهَا، قُلْتُ: إِنَّ هَذَا خَلَقٌ، قَالَ: إِنَّ الحَيَّ أَحَقُّ بِالْجَدِيدِ مِنَ المَيِّتِ، إِنَّمَا هُوَ لِلْمُهْلَةِ فَلَمْ يُتَوَفَّ حَتَّى أَمْسَى مِنْ لَيْلَةِ الثُّلَاثَاءِ، وَدُفِنَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ
মু‘আল্লা ইব্নু আসাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আমি আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কয় খন্ড কাপড়ে তোমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কাফন দিয়েছিলে? ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বললেন, তিন খন্ড সাদা সাহুলী (স্থানের নাম) কাপড়ে, যার মধ্যে জামা ও পাগড়ী ছিল না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, কোন দিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইনতিকাল করেন? ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, সোমবার। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আজ কী বার? তিনি (‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, আজ সোমবার। তিনি (আবূ বকর রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আমি আশা করি এখন হতে আগত রাতের মধ্যে (আমার মৃত্যু হবে)। অতঃপর অসুস্থকালীন নিজের পরিধেয় কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য করে তাতে জাফরানী রং এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, আমার এ কাপড়টি ধুয়ে তার সাথে আরো দু’খন্ড কাপড় বৃদ্ধি করে আমার কাফন দিবে। আমি (‘আয়িশা) বললাম, এটা (পরিধেয় কাপড়টি) পুরাতন। তিনি বললেন, মৃত ব্যক্তি অপেক্ষা জীবিতদের নতুন কাপড়ের প্রয়োজন অধিক। আর কাফন হলো বিগলিত শবদেহের জন্য। তিনি মঙ্গলবার রাতের সন্ধ্যায় ইনতিকাল করেন, ভোর হবার পূর্বেই তাঁকে দাফন করা হয়েছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۸ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أُمِّي افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا، وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ، فَهَلْ لَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»
সা‘ঈদ ইব্নু আবূ মারয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বললেন, আমার মায়ের আকস্মিক মৃত্যু ঘটে, কিন্তু আমার বিশ্বাস তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) কথা বলতে সক্ষম হলে কিছু সদকা করে যেতেন। এখন আমি তাঁর পক্ষ হতে সদকা করলে তিনি এর প্রতিফল পাবেন কি? তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: {فَأَقْبَرَهُ} [عبس: ۲۱]: أَقْبَرْتُ الرَّجُلَ أُقْبِرُهُ إِذَا جَعَلْتَ لَهُ قَبْرًا، وَقَبَرْتُهُ: دَفَنْتُهُ {كِفَاتًا} [المرسلات: ۲۵]: يَكُونُونَ فِيهَا أَحْيَاءً، وَيُدْفَنُونَ فِيهَا أَمْوَاتًا
আল্লাহ্র বাণীঃ فَأَقْبَرَهَ তাকে কবরস্থ করলেন। أَقْبَرْتُ أَقْبِرهُ الرَّجُلَ তখন বলবে যখন তুমি কারোর জন্য কবর তৈরী করবে। قَبَرْتُهُ دَفنْتُهُ অর্থাৎ কবরস্থ করা, كِفَاتًا অর্থাৎ জীবিতাবস্থায় ভুপৃষ্ঠে অবস্থান করবে ও মৃত্যুর পর এর মধ্যে সমাহিত হবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۸۹ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، عَنْ هِشَامٍ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ يَحْيَى بْنُ أَبِي زَكَرِيَّاءَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: إِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَتَعَذَّرُ فِي مَرَضِهِ: «أَيْنَ أَنَا اليَوْمَ، أَيْنَ أَنَا غَدًا» اسْتِبْطَاءً لِيَوْمِ عَائِشَةَ، فَلَمَّا كَانَ يَوْمِي، قَبَضَهُ اللَّهُ بَيْنَ سَحْرِي وَنَحْرِي وَدُفِنَ فِي بَيْتِي
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলায়মান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, (অন্য সূত্র) মুহা’ম্মাদ ইব্নু হার্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মারওয়ান ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু আবূ যাকারিয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোগশয্যায় (স্ত্রীগণের নিকট অবস্থানের) পালার সময়কাল জানতে চাইতেন। আমার অবস্থান আজ কোথায় হবে? আগামীকাল কোথায় হবে? ‘আয়িশা (রাঃ)-এর পালা বিলম্বিত হচ্ছে বলে ধারণা করেই এ প্রশ্ন করতেন। (‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন) যে দিন আমার পালা আসলো, সেদিন আল্লাহ তাঁকে আমার কন্ঠদেশ ও বক্ষের মাঝে (হেলান দেয়া অবস্থায়) রূহ কব্য করলেন ৩০ এবং আমার ঘরে তাঁকে দাফন করা হয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
৩০. যারা স্বামী মারা যাওয়ার সময় স্ত্রীকে ধারে কাছেও যেতে দেন না, তাদেরকে এ হাদিস থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۹۰ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ هِلَالٍ هُوَ الوَزَّانُ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي لَمْ يَقُمْ مِنْهُ: «لَعَنَ اللَّهُ اليَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ»، لَوْلَا ذَلِكَ أُبْرِزَ قَبْرُهُ غَيْرَ أَنَّهُ خَشِيَ – أَوْ خُشِيَ – أَنَّ يُتَّخَذَ مَسْجِدًا وَعَنْ هِلَالٍ، قَالَ: «كَنَّانِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ وَلَمْ يُولَدْ لِي» حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ سُفْيَانَ التَّمَّارِ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ: «أَنَّهُ رَأَى قَبْرَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسَنَّمًا» حَدَّثَنَا فَرْوَةُ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، لَمَّا سَقَطَ عَلَيْهِمُ الحَائِطُ فِي زَمَانِ الوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ المَلِكِ، أَخَذُوا فِي بِنَائِهِ فَبَدَتْ لَهُمْ قَدَمٌ، فَفَزِعُوا وَظَنُّوا أَنَّهَا قَدَمُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَمَا وَجَدُوا أَحَدًا يَعْلَمُ ذَلِكَ حَتَّى قَالَ لَهُمْ عُرْوَةُ: «لَا وَاللَّهِ مَا هِيَ قَدَمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا هِيَ إِلَّا قَدَمُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ»
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিলাল থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্তিম রোগশয্যায় বলেন, ইয়াহুদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। কারণ, তারা তাদের নবী গণের কবরকে সিজদার স্থানে পরিণত করেছে। (রাবী উরওয়া বলেন) এরূপ আশঙ্কা না থাকলে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কবরকে (ঘরের বেষ্টনীতে সংরক্ষিত না রেখে) খোলা রাখা হতো। কিন্তু তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশংকা করেন বা আশংকা করা হয় যে, পরবর্তীতে একে মসজিদে পরিণত করা হবে। রাবী হিলাল বলেন, উরওয়া আমাকে (আবূ আমর) কুনিয়াতে ভূষিত করেন আর তখন পর্যন্ত আমি কোন সন্তানের পিতা হইনি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৪৩৫] [আ.প্র. ১৩০১, ই.ফা.১৩০৯]
——————
১৩৯০/১. মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ বকর ইব্নু আয়্য়াশ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সুফিয়ান তাম্মার রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে। তিনি বলেন, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবর উটের কুজের ন্যায় (উঁচু) দেখেছেন। [আ.প্র.১৩০০, ই.ফা.১৩০৮]
——————
১৩৯০/২. ফারওয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আলী ইব্নু মুসহীর আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্নু উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিত থেকে, তিনি বলেন, ওয়ালীদ ইবনু আবদুল মালিক-এর শাসনামলে যখন (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাওযার বেষ্টনী দেয়াল ধসে পড়ে, তখন তাঁরা সংষ্কার করতে আরম্ভ করলে একটি পা প্রকাশ পায়, তা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কদম মুবারক বলে ধারণা করার কারণে লোকেরা খুব ঘাবড়ে যায়। সনাক্ত করার মত কাউকে তারা পায়নি। অবশেষে উরওয়া রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাদের বললেন, আল্লাহর কসম এ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পা নয় বরং এতো ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর পা।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۹۱ – وَعَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّهَا أَوْصَتْ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «لَا تَدْفِنِّي مَعَهُمْ وَادْفِنِّي مَعَ صَوَاحِبِي بِالْبَقِيعِ لَا أُزَكَّى بِهِ أَبَدًا»
এবং হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবাইর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে অসিয়্যত করেছিলেন, আমাকে তাঁদের (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর দু’সাহাবী)-এর পাশে দাফন করবে না। বরং আমাকে আমার সঙ্গিনীদের সাথে বাকী’তে দাফন করবে যাতে আমি চিরকালের জন্য প্রশংসিত হতে না থাকি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۹۲ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ الحَمِيدِ، حَدَّثَنَا حُصَيْنُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ الأَوْدِيِّ، قَالَ: رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، اذْهَبْ إِلَى أُمِّ المُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَقُلْ: يَقْرَأُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ عَلَيْكِ السَّلَامَ، ثُمَّ سَلْهَا، أَنْ أُدْفَنَ مَعَ صَاحِبَيَّ، قَالَتْ: كُنْتُ أُرِيدُهُ لِنَفْسِي فَلَأُوثِرَنَّهُ اليَوْمَ عَلَى نَفْسِي، فَلَمَّا أَقْبَلَ، قَالَ: لَهُ مَا لَدَيْكَ؟ قَالَ: أَذِنَتْ لَكَ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، قَالَ: ” مَا كَانَ شَيْءٌ أَهَمَّ إِلَيَّ مِنْ ذَلِكَ المَضْجَعِ، فَإِذَا قُبِضْتُ فَاحْمِلُونِي، ثُمَّ سَلِّمُوا، ثُمَّ قُلْ: يَسْتَأْذِنُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، فَإِنْ أَذِنَتْ لِي، فَادْفِنُونِي، وَإِلَّا فَرُدُّونِي إِلَى مَقَابِرِ المُسْلِمِينَ، إِنِّي لَا أَعْلَمُ أَحَدًا أَحَقَّ بِهَذَا الأَمْرِ مِنْ هَؤُلَاءِ النَّفَرِ الَّذِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَنْهُمْ رَاضٍ، فَمَنِ اسْتَخْلَفُوا بَعْدِي فَهُوَ الخَلِيفَةُ فَاسْمَعُوا لَهُ وَأَطِيعُوا، فَسَمَّى عُثْمَانَ، وَعَلِيًّا، وَطَلْحَةَ، وَالزُّبَيْرَ، وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ، وَسَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ، وَوَلَجَ عَلَيْهِ شَابٌّ مِنَ الأَنْصَارِ، فَقَالَ: أَبْشِرْ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ بِبُشْرَى اللَّهِ، كَانَ لَكَ مِنَ القَدَمِ فِي الإِسْلَامِ مَا قَدْ عَلِمْتَ، ثُمَّ اسْتُخْلِفْتَ فَعَدَلْتَ، ثُمَّ الشَّهَادَةُ بَعْدَ هَذَا كُلِّهِ، فَقَالَ: لَيْتَنِي يَا ابْنَ أَخِي وَذَلِكَ كَفَافًا لَا عَلَيَّ وَلَا لِي، أُوصِي الخَلِيفَةَ مِنْ بَعْدِي بِالْمُهَاجِرِينَ الأَوَّلِينَ خَيْرًا، أَنْ يَعْرِفَ لَهُمْ حَقَّهُمْ، وَأَنْ يَحْفَظَ لَهُمْ حُرْمَتَهُمْ، وَأُوصِيهِ بِالأَنْصَارِ خَيْرًا الَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ أَنْ يُقْبَلَ مِنْ مُحْسِنِهِمْ، وَيُعْفَى عَنْ مُسِيئِهِمْ، وَأُوصِيهِ بِذِمَّةِ اللَّهِ، وَذِمَّةِ رَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُوفَى لَهُمْ بِعَهْدِهِمْ، وَأَنْ يُقَاتَلَ مِنْ وَرَائِهِمْ وَأَنْ لَا يُكَلَّفُوا فَوْقَ طَاقَتِهِمْ “
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর ইব্নু ‘আব্দুল হা’মীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হুসায়ন ইব্নু ‘আব্দুর রহ্মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আমর ইবনু মায়মুন আওদী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে দেখলাম তিনি নিজের ছেলে আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে ডেকে বললেন, তুমি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট গিয়ে বল, ‘উমর ইবনুল খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু আপনাকে সালাম বলেছেন। অত:পর আমাকে আমার দু’জন সাথী (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আবূ বক্র)-এর পাশে দাফন করতে তিনি রাযী আছেন কি না? ১ ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি পূর্ব হতেই নিজের জন্য এর আশা পোষণ করতাম, কিন্তু আজ ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে নিজের উপর অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু ফিরে এলে ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, কি বার্তা নিলে এলে? তিনি বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! তিনি [‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা] আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, সেখানে শয্যা লাভই ছিল আমার নিকট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমার মৃত্যুর পর আমাকে বহন করে [‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর নিকট উপস্থিত করে] তাঁকে সালাম জানিয়ে বলবে, ‘উমর ইবনু খাত্তাব (পুণরায়) আপনার অনুমতি চাইছেন। তিনি অনুমতি দিলে, আমাকে সেখানে দাফন করবে। অন্যথায় আমাকে মুসলমানদের কবরস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। ২ অত:পর ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, এ কয়েকজন ব্যক্তি যাদের উপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত সন্তুষ্ট ছিলেন, তাঁদের অপেক্ষা অন্য কাউকে আমি এ খিলাফতের (দায়িত্ব পালনে) অধিক যোগ্য বলে মনে করি না। তাই আমার তাঁরা (তাঁদের মধ্য হতে) যাঁকে খলীফা মনোনীত করবেন তিনি খলীফা হবেন। তোমরা সকলেই তাঁর আদেশ মেনে চলবে, তাঁর আনুগত্য করবে। এ বলে তিনি ‘উসমান, ‘আলী, তালহা, যুবাইর, ‘আবদুর রাহমান ইবনু আওফ ও সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নাম উল্লেখ করলেন। এ সময়ে এক আনসারী যুবক ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! আল্লাহ প্রদত্ত সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আপনি ইসলামের ছায়াতলে দীর্ঘদিন অতিবাহিত করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন যা আপনিও জানেন। অত:পর আপনাকে খলীফা নিযুক্ত করা হয় এবং আপনি ন্যায়বিচার করেছেন। সর্বোপরি আপনি শাহাদাত লাভ করেছেন। ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে ভাতিজা! যদি তা আমার জন্য লাভ লোকসানের না হয়ে বরাবর হয়, তবে কতই না ভাল হবে। (তিনি বললেন) আমার পরবর্তী খলীফাকে ওয়াসিয়্যাত করে যাচ্ছি, তিনি যেন প্রথম দিকের মুহাজিরদের ব্যাপারে যত্নবান হন, তাঁদের হক আদায় করে চলেন, যেন তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেন। আমি তাঁকে আনসারদের সাথেও সদাচারের উপদেশ দেই, যারা ঈমান ও মদীনাকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন, যেন তাঁদের মধ্যকার সৎকর্মপরায়ণদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা হয় এবং তাঁদের মধ্যকার (লঘু) অপরাধীকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। সর্বশেষে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দায়িত্বভূক্ত (সর্বস্তরের মু’মিনদের সম্পর্কে) সতর্ক করে দিচ্ছি যেন মু’মিনদের সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করা হয়, তাদের রক্ষার জন্য যুদ্ধ করা হয় এবং সাধ্যের বাইরে কোন দায়িত্ব তাদের উপর অর্পণ করা না হয়।
ফুটনোটঃ
১. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কবর আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা -এর ঘর বিধায় এর মালিকানা তাঁর থাকায় উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু এর দাফনে অনুমতির প্রয়োজন ছিল।
২. তাঁর এ কথাগুলি ক্বিয়ামত পর্যন্ত আদর্শ হয়ে থাকবে, সুতরাং আমাদের সবাইকে বিশেষ করে শাসক গোষ্ঠীকে এখান থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۹۳ – حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَسُبُّوا الأَمْوَاتَ، فَإِنَّهُمْ قَدْ أَفْضَوْا إِلَى مَا قَدَّمُوا» وَرَوَاهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ القُدُّوسِ، عَنِ الأَعْمَشِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، تَابَعَهُ عَلِيُّ بْنُ الجَعْدِ، وَابْنُ عَرْعَرَةَ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ, আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুজাহিদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ, তারা স্বীয় কর্মফল পর্যন্ত পৌছে গেছে। [ইমাম বুখারী রহ্’মাহুল্লাহ বলেন] ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আবদুল কুদ্দুস ও মুহাম্মাদ ইবনু আনাস রহ্’মাহুল্লাহ আ’মাশ রহ্’মাহুল্লাহ হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ‘আলী ইবনু জা’দ, ইবনু আর’আরা ও ইবনু আবূ ‘আদী রহ্’মাহুল্লাহ শু’বাহ রহ্’মাহুল্লাহ হতে হাদীস বর্ণনায় আদম রহ্’মাহুল্লাহ-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۳۹۴ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ” قَالَ أَبُو لَهَبٍ عَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَبًّا لَكَ سَائِرَ اليَوْمِ فَنَزَلَتْ: {تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ} [المسد: ۱] “
‘উমার ইব্নু হা’ফস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমর ইব্নু মুর্রাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র থেকে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আবূ লাহাব লানাতুল্লাহি আলাইহি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে লক্ষ্য করে বললো, সারা দিনের জন্য তোমার অনিষ্ট হোক! (তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে) নাযিল হয়: (যার অর্থ) “আবূ লাহাবের হাত দু’টো ধ্বংস হোক এবং সেও ধ্বংস হোক” – (আল-মাসাদ:১)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [