Web Page 4: Kitabul Juma-11 to Kitabut Taksirs Salate-18
لِقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الجُمُعَةِ، فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا البَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ} [الجمعة: ٩]
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বাণী। “জুমু‘আর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচা-কেনা বন্ধ করে দাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।” [সূরা আল-জুমু‘আ। ৬২:৯]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٧٦ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ هُرْمُزَ الأَعْرَجَ، مَوْلَى رَبِيعَةَ بْنِ الحَارِثِ، حَدَّثَهُ: أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «نَحْنُ الآخِرُونَ السَّابِقُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، بَيْدَ أَنَّهُمْ أُوتُوا الكِتَابَ مِنْ قَبْلِنَا، ثُمَّ هَذَا يَوْمُهُمُ الَّذِي فُرِضَ عَلَيْهِمْ، فَاخْتَلَفُوا فِيهِ، فَهَدَانَا اللَّهُ، فَالنَّاسُ لَنَا فِيهِ تَبَعٌ اليَهُودُ غَدًا، وَالنَّصَارَى بَعْدَ غَدٍ»
আবূল ইয়ামানি আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ যিনাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন রাবীয়া ইব্ন হা’রিসের স্বাধীন করা গুলাম ‘আব্দুর রহ’মান ইব্ন হুরমান আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি বর্ণনা করেন যে, আমি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনেছি। তিনি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, “আমরা দুনিয়ায় (আগমনের দিক দিয়ে) সর্বশেষ, কিন্তু কিয়ামাতের দিন আমরা মর্যাদার ব্যাপারে সবার পূর্বে। ব্যতিক্রম এই যে, আমাদের পূর্বে তাদের কিতাব প্রদান করা হয়েছে। অতঃপর তাদের সে দিন যে দিন তাদের জন্য ইবাদত ফরয করা হয়েছিল তারা এ বিষয়ে মতভেদ করেছে। কিন্তু সে বিষয়ে আল্লাহ্ আমাদের হিদায়েত করেছেন। কাজেই এ ব্যাপারে লোকেরা আমাদের পশ্চাদ্বর্তী। ইয়াহূদীদের (সম্মানীয় দিন হচ্ছে) আগামী কাল (শনিবার) এবং নাসারাদের আগামী পরশু (রোববার)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
٨٧٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الجُمُعَةَ، فَلْيَغْتَسِلْ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ জুমু‘আর সালাতে আসলে সে যেন গোসল করে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٧٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ، بَيْنَمَا هُوَ قَائِمٌ فِي الخُطْبَةِ يَوْمَ الجُمُعَةِ إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ مِنَ المُهَاجِرِينَ الأَوَّلِينَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَنَادَاهُ عُمَرُ: أَيَّةُ سَاعَةٍ هَذِهِ؟ قَالَ: إِنِّي شُغِلْتُ، فَلَمْ أَنْقَلِبْ إِلَى أَهْلِي حَتَّى سَمِعْتُ التَّأْذِينَ، فَلَمْ أَزِدْ أَنْ تَوَضَّأْتُ، فَقَالَ: وَالوُضُوءُ أَيْضًا، وَقَدْ عَلِمْتَ «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُ بِالْغُسْلِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ ইব্ন আসমা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুওয়ায়্রিয়াহ ইব্ন আসমা আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মালিক থেকে, তিনি যুহ্রী থেকে, তিনি সালিম ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জুমু‘আর দিন দাঁড়িয়ে খুত্বা দিচ্ছিলেন, এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রথম যুগের একজন মুহাজির সাহাবা এলেন। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে ডেকে বললেন, এখন সময় কত? তিনি বললেন, আমি ব্যস্ত ছিলাম, তাই ঘরে ফিরে আসতে পারিনি। এমন সময় আযান শুনে কেবল উযূ করে নিলাম। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, কেবল উযূই? অথচ আপনি জানেন যে, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোসলের নির্দেশ দিতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٧٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «غُسْلُ يَوْمِ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন স্বাফওয়ান ইব্ন মুলায়ম থেকে, তিনি আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “জুমু‘আর দিনে প্রত্যেক সাবালকের জন্য গোসল করা ওয়াজিব।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٠ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَرَمِيُّ بْنُ عُمَارَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بَكرِ بْنِ المُنكَدِرِ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ سُلَيْمٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ: أَشْهَدُ عَلَى أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ، وَأَنْ يَسْتَنَّ، وَأَنْ يَمَسَّ طِيبًا إِنْ وَجَدَ» قَالَ عَمْرٌو: «أَمَّا الغُسْلُ، فَأَشْهَدُ أَنَّهُ وَاجِبٌ، وَأَمَّا الِاسْتِنَانُ وَالطِّيبُ، فَاللَّهُ أَعْلَمُ أَوَاجِبٌ هُوَ أَمْ لَا، وَلَكِنْ هَكَذَا فِي الحَدِيثِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «هُوَ أَخُو مُحَمَّدِ بْنِ المُنْكَدِرِ، وَلَمْ يُسَمَّ أَبُو بَكْرٍ هَذَا» رَوَاهُ عَنْهُ بُكَيْرُ بْنُ الأَشَجِّ، وَسَعِيدُ بْنُ أَبِي هِلَالٍ وَعِدَّةٌ، «وَكَانَ مُحَمَّدُ بْنُ المُنْكَدِرِ يُكْنَى بِأَبِي بَكْرٍ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’রামী ইব্নু ‘উমারাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বকর ইব্ন মুনকাদির থেকে, তিনি বললেন: ‘আমর ইব্নু সুলাইম আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “জুমু‘আর দিন প্রত্যেক বালিগের জন্য গোসল করা কর্তব্য। আর মিস্ওয়াক করবে এবং সুগন্ধি পাওয়া গেলে তা ব্যবহার করবে। ‘আম্র (ইব্নু সুলায়ম) (রহমাহুল্লাহ) বলেন, গোসল সম্পর্কে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তা ওয়াজিব ৷ কিন্তু মিস্ওয়াক ও সুগন্ধি ওয়াজিব কিনা তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন। তবে হাদীসে এ রকমই আছে। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আবূ বক্র ইব্নু মুনকাদির (রহমাহুল্লাহ) হলেন মুহন্মাদ ইব্নু মুনকাদির (রহমাহুল্লাহ)-এর ভাই ৷ কিন্তু তিনি আবূ বক্র হিসেবেই পরিচিত নন। বুকায়র ইব্নু আশাজ্জ, সা‘ঈদ ইব্নু আবূ হিলাল সহ অনেকে তাঁর হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইব্নু মুনকাদির (রহমাহুল্লাহ)-এর কুনিয়াত (উপনাম) ছিল আবূ বক্র ও আবূ ‘আবদুল্লাহ্।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [মুসলিম ৭/১, হাঃ ৮৪৬, আহমাদ ১১২৫০] [আ.প্র. ৮২৯, ই. ফা. ৮৩৬]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨١ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ سُمَيٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الجُمُعَةِ غُسْلَ الجَنَابَةِ ثُمَّ رَاحَ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ كَبْشًا أَقْرَنَ، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الخَامِسَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً، فَإِذَا خَرَجَ الإِمَامُ حَضَرَتِ المَلَائِكَةُ يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ বকর ইব্ন ‘আব্দুর রহ’মান এর স্বাধীন করা গুলাম সুমায়্য়া থেকে, তিনি আবূ স্বালিহ’ সাম্মানি থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন জানাবাত গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং সালাতের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কুরবানী করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কুরবানী করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কুরবানী করল। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। পরে ইমাম যখন খুত্বা দেয়ার জন্য বের হন তখন মালাইকা (ফেরেশতাগণ) যিক্র শ্রবণের জন্য উপস্থিত হয়ে থাকে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٢ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، بَيْنَمَا هُوَ يَخْطُبُ يَوْمَ الجُمُعَةِ إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ، فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: لِمَ تَحْتَبِسُونَ عَنِ الصَّلَاةِ؟ فَقَالَ الرَّجُلُ: مَا هُوَ إِلَّا أَنْ سَمِعْتُ النِّدَاءَ تَوَضَّأْتُ، فَقَالَ: أَلَمْ تَسْمَعُوا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا رَاحَ أَحَدُكُمْ إِلَى الجُمُعَةِ فَلْيَغْتَسِلْ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি হলেন ইব্ন আবূ কাছীর, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেনঃ জুমু‘আর দিন ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) খুত্বা দিচ্ছিলেন, এ সময় এক ব্যক্তি মসজিদে আসলে ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, সালাতে সময় মত আসতে তোমরা কেন বাধাগ্রস্ত হও? তিনি বললেন, আযান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি উযূ করেছি। তখন ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তোমরা কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শোননি যে, যখন তোমাদের কেউ জুমু‘আর সালাতে রওয়ানা দেয়, তখন সে যেন গোসল করে নেয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٣ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنِ ابْنِ وَدِيعَةَ، عَنْ سَلْمَانَ الفَارِسِيِّ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الجُمُعَةِ، وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ، أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ، ثُمَّ يَخْرُجُ فَلَا يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإِمَامُ، إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন ওয়াদী‘আহ থেকে, তিনি সালমান ফারসী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন’ “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং যথাসাধ্য ভালরূপে পবিত্রতা অর্জন করে ও নিজের তেল হতে ব্যবহার করে বা নিজ ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে, অতঃপর বের হয় এবং দু’ জন লোকের মাঝে ফাঁক না করে, অতঃপর তার নির্ধারিত সালাত আদায় করে এবং ইমামের খুত্বা দেয়ার সময় চুপ থাকে, তা হলে তার সে জুমু’আ হতে আরেক জুমু’আ পর্যন্ত সময়ের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٤ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ طَاوُسٌ: قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ: ذَكَرُوا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اغْتَسِلُوا يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاغْسِلُوا رُءُوسَكُمْ، وَإِنْ لَمْ تَكُونُوا جُنُبًا وَأَصِيبُوا مِنَ الطِّيبِ» قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: أَمَّا الغُسْلُ فَنَعَمْ، وَأَمَّا الطِّيبُ فَلَا أَدْرِي
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি তাঊস থেকে, তিনি বললেন: আমি ইব্নূ ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বললাম, সাহাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং মাথা ধুয়ে ফেল যদিও তোমরা জুনুবী না হয়ে থাক এবং সুগন্ধি ব্যবহার কর। ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, গোসল সম্পর্কে নির্দেশ ঠিকই আছে, কিন্তু সুগন্ধি সম্পর্কে আমি জানি না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٥ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ، قَالَ: أَخْبَرَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «أَنَّهُ ذَكَرَ قَوْلَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الغُسْلِ يَوْمَ الجُمُعَةِ»، فَقُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ: أَيَمَسُّ طِيبًا أَوْ دُهْنًا إِنْ كَانَ عِنْدَ أَهْلِهِ؟ فَقَالَ: لَا أَعْلَمُهُ
ইবরাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্ন জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্রাহীম ইব্নু মায়সারাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন তাঊস থেকে, তিনি বললেন: ইব্ন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন, জুমু‘আর দিন গোসল সম্বন্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীর উল্লেখ করেন তখন আমি ইব্নূ ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পরিবার পরিজনের সঙ্গে অবস্থান করতেন তখনও কি তিনি সুগন্ধি বা তেল ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, “আমি তা জানি না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٦ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ، رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ عِنْدَ بَابِ المَسْجِدِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوِ اشْتَرَيْتَ هَذِهِ، فَلَبِسْتَهَا يَوْمَ الجُمُعَةِ وَلِلْوَفْدِ إِذَا قَدِمُوا عَلَيْكَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ فِي الآخِرَةِ» ثُمَّ جَاءَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهَا حُلَلٌ، فَأَعْطَى عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، مِنْهَا حُلَّةً، فَقَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَسَوْتَنِيهَا وَقَدْ قُلْتَ فِي حُلَّةِ عُطَارِدٍ مَا قُلْتَ؟ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لَمْ أَكْسُكَهَا لِتَلْبَسَهَا» فَكَسَاهَا عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَخًا لَهُ بِمَكَّةَ مُشْرِكًا
আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীটি খবর দিলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) মসজিদে নববীর দরজার নিকটে এক জোড়া রেশমী পোশাক (বিক্রি হতে) দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি এটি আপনি খরিদ করতেন আর জুমু‘আর দিন এবং যখন আপনার নিকট প্রতিনিধি দল আসে তখন আপনি তা পরিধান করতেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা তো সে ব্যক্তিই পরিধান করে, আখিরাতে যার (মঙ্গলের) কোন অংশ নেই। অতঃপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ ধরনের কয়েক জোড়া পোশাক আসে, তখন তার এক জোড়া তিনি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে প্রদান করেন। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আরয করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি আমাকে এটি পরতে দিলেন অথচ আপনি উতারিদের (রেশম) পোশাক সম্পর্কে যা বলার তা তো বলেছিলেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাকে এটি নিজের পরার জন্য দেইনি। ‘উমর ইব্নূ খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তখন এটি মক্কায় তাঁর এক ভাইকে দিয়ে দেন, সে তখন মুশরিক ছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
وَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَسْتَنُّ»
আবু সা ‘ঈদ খুদরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি মিস্ওয়াক করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي أَوْ عَلَى النَّاسِ لَأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلَاةٍ»
আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের জন্য বা তিনি বলেছেন, লোকদের জন্য যদি কঠিন মনে না করতাম, তাহলে প্রত্যেক সালাতের সাথে তাদের মিস্ওয়াক করার হুকুম করতাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৭২৪০; মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫২, আহমাদ ৭৪১৬] [আ.প্র. ৮৩৬, ই.ফা. ৮৪৩]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٨ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ الحَبْحَابِ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَكْثَرْتُ عَلَيْكُمْ فِي السِّوَاكِ»
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব ইব্নু হা’ব্হা’বি আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমি মিস্ওয়াক সম্পর্কে তোমাদের যথেষ্ট বলেছি।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [আ. প্র. ৮৩৭, ই. ফা. ৮৪৪]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٨٩ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، وَحُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَشُوصُ فَاهُ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু কাছীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মান্স্বূর ও হু’স্বায়ন থেকে, তিনি আবূ ওয়াইল থেকে, তিনি হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রাতে সালাতের জন্য উঠতেন তখন দাঁত মেজে পরিস্কার করে নিতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [২৪৫] [আ. প্র. ৮৩৮, ই.ফা. ৮৪৫]
হাদীসের মান: তাহকিক করা হয় নাই।
٨٩٠ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ، قَالَ: قَالَ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ وَمَعَهُ سِوَاكٌ يَسْتَنُّ بِهِ، فَنَظَرَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لَهُ: أَعْطِنِي هَذَا السِّوَاكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ، فَأَعْطَانِيهِ، فَقَصَمْتُهُ، ثُمَّ مَضَغْتُهُ «فَأَعْطَيْتُهُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَنَّ بِهِ وَهُوَ مُسْتَسْنِدٌ إِلَى صَدْرِي»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলায়মান ইব্নু বিলাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ বললেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন: ‘আবদুর রহমান ইব্নু আবূ বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) একটি মিস্ওয়াক হাতে নিয়ে দাঁত ঘষতে ঘষতে প্রবেশ করলেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকালেন। আমি তাঁকে বললাম, হে ‘আবদুর রহমান! মিস্ওয়াকটি আমাকে দাও। সে তা আমাকে দিল। আমি ব্যবহৃত অংশ ভেঙ্গে ফেললাম এবং তা চিবিয়ে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দিলাম। তিনি আমার বুকে হেলান দিয়ে তা দিয়ে মিস্ওয়াক করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [১৩৮৯, ৩১০০, ৩৭৭৪, ৪৪৩৮, ৪৪৪৬, ৪৪৪৯, ৪৪৫০, ৪৪৫১, ৫২১৭, ৬৫১০] [আ. প্র. ৮৩৯, ই.ফা. ৮৪৬]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩١ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ هُرْمُزَ الأَعْرَجُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الجُمُعَةِ فِي صَلَاةِ الفَجْرِ الم تَنْزِيلُ السَّجْدَةَ، وَهَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ حِينٌ مِنَ الدَّهْرِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন ইব্রাহীম থেকে, তিনি ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি হলেন ইব্ন হুর্মুয আ‘আ্রাজ, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিন ফজরের সালাতে الم تَنْزِيلُ السَّجْدَةَ এবং وَهَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ حِينٌ مِنَ الدَّهْرِ দু’টি সূরা তেলাওয়াত করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [১০৬৮; মুসলিম ৭/৬৪, হাঃ ৮৮০] [আ.প্র. ৮৪০, ই.ফা. ৮৪৭]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٢ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ العَقَدِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ الضُّبَعِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّ أَوَّلَ جُمُعَةٍ جُمِّعَتْ بَعْدَ جُمُعَةٍ فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي مَسْجِدِ عَبْدِ القَيْسِ بِجُوَاثَى مِنَ البَحْرَيْنِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আমির ‘আক্বাদী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্রাহীম ইব্নু ত্বাহ্মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জাম্রাহ যুবা‘ঈ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মসজিদে জুমু‘আর সালাত অনুষ্ঠিত হবার পর প্রথম জুমু‘আর সালাত অনুষ্ঠিত হয় বাহ্রাইনে জুওয়াসা নামক স্থানে অবস্থিত আবদুল কায়স গোত্রের মসজিদে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [৪৩৭১] [আ.প্র. ৮৪১, ই.ফা. ৮৪৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٣ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ المَرْوَزِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «كُلُّكُمْ رَاعٍ» وَزَادَ اللَّيْثُ، قَالَ يُونُسُ: كَتَبَ رُزَيْقُ بْنُ حُكَيْمٍ إِلَى ابْنِ شِهَابٍ، وَأَنَا مَعَهُ يَوْمَئِذٍ بِوَادِي القُرَى: هَلْ تَرَى أَنْ أُجَمِّعَ وَرُزَيْقٌ عَامِلٌ عَلَى أَرْضٍ يَعْمَلُهَا، وَفِيهَا جَمَاعَةٌ مِنَ السُّودَانِ وَغَيْرِهِمْ؟ – وَرُزَيْقٌ يَوْمَئِذٍ عَلَى أَيْلَةَ – فَكَتَبَ ابْنُ شِهَابٍ، وَأَنَا أَسْمَعُ: يَأْمُرُهُ أَنْ يُجَمِّعَ، يُخْبِرُهُ أَنَّ سَالِمًا حَدَّثَهُ: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، الإِمَامُ رَاعٍ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ فِي بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْئُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالخَادِمُ رَاعٍ فِي مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ» قَالَ: – وَحَسِبْتُ أَنْ قَدْ قَالَ – «وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي مَالِ أَبِيهِ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ»
বিশর ইব্নু মুহা’ম্মাদ মার্ওয়াযী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইঊনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল। লায়স ইব্নু সা‘দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আরো অতিরিক্ত বলেন, (পরবর্তী রাবী) ইউনুস বলেছেন, আমি একদা ইব্নু শিহাব-এর সঙ্গে ওয়াদিউল কুরা নামক স্থানে ছিলাম। তখন রুযাইক (ইব্নু হুকায়ম ইব্নু শিহাব-এর নিকট লিখলেন, আপনি কী মনে করেন, আমি কি (এখানে) জুমু‘আর সালাত আদায় করব? রুযায়ক তখন সেখানে তাঁর জমির কৃষি কাজের তত্ত্বাবধান করতেন। সেখানে একদল সুদানী ও অন্যান্য লোক বাস করত। রুযায়ক সে সময় আইলা শহরের (আমীর) ছিলেন। ইব্নু শিহাব তাঁকে জুমু’আ কায়িম করার নির্দেশ দিয়ে লিখেছিলেন এবং আমি তাকে এ নির্দেশ দিতে শুনলাম। সালিম তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই অধীনস্থদের (দায়িত্ব) জিজ্ঞাস করা হবে। ইমাম ১ একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁকে তাঁর অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। পুরুষ তার পরিবার বর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। নারী তার স্বামী-গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমার মনে হয়, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ পুত্র তার পিতার ধন-সম্পদের রক্ষক এবং এগুলো সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং সবাইকে তাদের অর্পিত দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। (২৪০৯, ২৫৫৪, ২৫৫৮, ২৭৫১, ৫১৮৮, ৫৬০০, ৭১৩৮) (আ.প্র. ৮৪২, ই.ফা. ৮৪৯)
অনুরূপ বর্ণনাঃ
ফুটনোটঃ
১. ইমাম’ শব্দ রাষ্ট্রের কর্ণধার, যে কোন কাজের তত্ত্বাবধায়ক, ব্যবস্থাপক ও সালাতের ইমাম অর্থে ব্যবহৃত হয়।
وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ: «إِنَّمَا الغُسْلُ عَلَى مَنْ تَجِبُ عَلَيْهِ الجُمُعَةُ»
ইব্নু ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন, যাদের উপর জুমু‘আর সালাত ওয়াজিব, শুধু তাদের গোসল করা প্রয়োজন।
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٤ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ جَاءَ مِنْكُمُ الجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর সালাতে আসবে সে যেন গোসল করে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «غُسْلُ يَوْمِ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি স্বাফ্ওয়ান ইব্ন সুলায়ম থেকে, তিনি আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি আবূ সা‘ঈদ খুদ্রী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – বলেন, “প্রত্যেক সাবালকের জন্য জুমু‘আর দিন গোসল করা ওয়াজিব।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٦ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” نَحْنُ الآخِرُونَ السَّابِقُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، أُوتُوا الكِتَابَ مِنْ قَبْلِنَا وَأُوتِينَاهُ مِنْ بَعْدِهِمْ، فَهَذَا اليَوْمُ الَّذِي اخْتَلَفُوا فِيهِ، فَهَدَانَا اللَّهُ فَغَدًا لِلْيَهُودِ، وَبَعْدَ غَدٍ لِلنَّصَارَى فَسَكَتَ
মুসলিম ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: উহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ত্বাবুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমরা দুনিয়ার (আগমনের দিক দিয়ে) সর্বশেষে। কিন্তু কিয়ামাতের দিন মর্যাদার দিক দিয়ে সবার পূর্বে। তবে তাদের কিতাব দেয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে এবং আমাদের তা দেয়া হয়েছে তাদের পরে। অতঃপর এই দিন (শুক্রবার নির্ধারণ) সম্বন্ধে তাদের মধ্যে মতানৈক্য হয়েছে। আল্লাহ্ আমাদের এ শুক্রবার সম্পর্কে হিদায়েত দান করেছেন। পরের দিন (শনিবার) ইয়াহূদীদের এবং তারপরের দিন (রোববার) নাসারাদের। অতঃপর কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٧ – ثُمَّ قَالَ: «حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ، أَنْ يَغْتَسِلَ فِي كُلِّ سَبْعَةِ أَيَّامٍ يَوْمًا يَغْسِلُ فِيهِ رَأْسَهُ وَجَسَدَهُ»
(পূর্বের হাদীসটির পর থেকে) অতঃপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন প্রত্যেক মুসলিমের উপর হক রয়েছে যে, প্রতি সাত দিনের এক দিন সে গোসল করবে, তার মাথা ও শরীর ধৌত করবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٨ – رَوَاهُ أَبَانُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لِلَّهِ تَعَالَى عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ حَقٌّ، أَنْ يَغْتَسِلَ فِي كُلِّ سَبْعَةِ أَيَّامٍ يَوْمًا»
আবানু ইব্নু স্বালিহ’ বর্ণনা করেন মুজাহিদ থেকে, তিনি ত্বাবুস থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “প্রত্যেক মুসলিমের উপর আল্লাহ্র হক রয়েছে যে, প্রতি সাত দিনে একবার সে যেন গোসল করে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٨٩٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «ائْذَنُوا لِلنِّسَاءِ بِاللَّيْلِ إِلَى المَسَاجِدِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শাবাবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ারক্বা’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আমর ইব্ন দ্বীনার থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বলেন, “তোমরা মহিলাদেরকে রাতে (সালাতের জন্য) মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দিবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٠ – حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: كَانَتِ امْرَأَةٌ لِعُمَرَ تَشْهَدُ صَلَاةَ الصُّبْحِ وَالعِشَاءِ فِي الجَمَاعَةِ فِي المَسْجِدِ، فَقِيلَ لَهَا: لِمَ تَخْرُجِينَ وَقَدْ تَعْلَمِينَ أَنَّ عُمَرَ يَكْرَهُ ذَلِكَ وَيَغَارُ؟ قَالَتْ: وَمَا يَمْنَعُهُ أَنْ يَنْهَانِي؟ قَالَ: يَمْنَعُهُ قَوْلُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَمْنَعُوا إِمَاءَ اللَّهِ مَسَاجِدَ اللَّهِ»
ইঊসুফ ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর স্ত্রী (আতিকাহ্ বিনত যায়দ) ফজর ও ‘ইশার সালাতের জামা‘আতে মসজিদে হাযির হতেন। তাঁকে বলা হল, আপনি কেন (সালাতের জন্য) বের হন? অথচ আপনি জানেন যে, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তা অপছন্দ করেন এবং মর্যাদা হানিকর মনে করেন। তিনি জবাব দিলেন, তা হলে কিসে বাধা দিচ্ছে যে, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) স্বয়ং আমাকে নিষেধ করছেন না? বলা হল, তাঁকে বাধা দেয় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ আল্লাহ্র দাসীদের আল্লাহ্র মসজিদে যেতে বারণ করো না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠١ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَبْدُ الحَمِيدِ، صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الحَارِثِ ابْنُ عَمِّ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: ابْنُ عَبَّاسٍ لِمُؤَذِّنِهِ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ: إِذَا قُلْتَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، فَلَا تَقُلْ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قُلْ: «صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ»، فَكَأَنَّ النَّاسَ اسْتَنْكَرُوا، قَالَ: فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي، إِنَّ الجُمْعَةَ عَزْمَةٌ وَإِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أُحْرِجَكُمْ فَتَمْشُونَ فِي الطِّينِ وَالدَّحَضِ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যিয়াদীর সঙ্গী ‘আব্দুল হা’মীদ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু হারিছ এর চাচার ছেলে মুহা’ম্মাদ ইব্নু শীরীন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর মুয়ায্যিনকে এক প্রবল বর্ষণের দিনে বললেন, যখন তুমি (আযানে) ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ্ বলবে, তখন ‘হাইয়া আলাস্ সালাহ্’ বলবে না, বলবে, “সাল্লু ফী বুয়ুতিকুম” (তোমরা নিজ নিজ বাসগৃহে সালাত আদায় কর)। তা লোকেরা অপছন্দ করল। তখন তিনি বললেনঃ আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা করেছেন। জুমু’আ নিঃসন্দেহে জরুরী। আমি অপছন্দ করি তোমাদেরকে মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার অসুবিধায় ফেলতে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
لِقَوْلِ اللَّهِ جَلَّ وَعَزَّ: {إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ} [الجمعة: ٩] وَقَالَ عَطَاءٌ: «إِذَا كُنْتَ فِي قَرْيَةٍ جَامِعَةٍ فَنُودِيَ بِالصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الجُمُعَةِ، فَحَقٌّ عَلَيْكَ أَنْ تَشْهَدَهَا سَمِعْتَ النِّدَاءَ أَوْ لَمْ تَسْمَعْهُ» وَكَانَ أَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، «فِي قَصْرِهِ أَحْيَانًا يُجَمِّعُ وَأَحْيَانًا لَا يُجَمِّعُ وَهُوَ بِالزَّاوِيَةِ عَلَى فَرْسَخَيْنِ»
কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ জুমু‘আর দিন যখন সালাতের জন্য ডাকা হয়, (তখন) আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও। [সূরা আল-জুমু‘আ ৬২:৯] ‘আত্বা (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, যখন তুমি কোন বড় শহরে বাস কর, জুমু‘আর দিন সালাতের জন্য আযান দেয়া হলে, তা তুমি শুনতে পাও বা না পাও, তোমাকে অবস্যই জামা ‘আতেহাযির হতে হবে। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন (বসরা হতে) দু’ ফারসাখ্ (ছয় মাইল) দূরে অবস্থিত জাবিয়া স্থানে তাঁর বাড়িতে অবস্থান করতেন, তখন কখনো জুমু‘আ পড়তেন, কখনো পড়তেন না।
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٢ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الحَارِثِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ: أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَهُ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: كَانَ النَّاسُ يَنْتَابُونَ يَوْمَ الجُمُعَةِ مِنْ مَنَازِلِهِمْ وَالعَوَالِيِّ، فَيَأْتُونَ فِي الغُبَارِ يُصِيبُهُمُ الغُبَارُ وَالعَرَقُ، فَيَخْرُجُ مِنْهُمُ العَرَقُ، فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنْسَانٌ مِنْهُمْ وَهُوَ عِنْدِي، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ أَنَّكُمْ تَطَهَّرْتُمْ لِيَوْمِكُمْ هَذَا»
আহ্’মাদ ইব্নু স্বালিহ্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আম্র ইব্নু হা’রিছ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু আবূ জা‘আ্ফার থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন জা‘আ্ফার ইব্ন যুবায়র থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়ার থেকে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, লোকজন তাদের বাড়ি ও উঁচু এলাকা হতেও জুমু‘আর সালাতের জন্য পালাক্রমে আসতেন। আর যেহেতু তারা ধুলো-বালির মধ্য দিয়ে আগমন করতেন, তাই তারা ধূলি মলিন ও ঘর্মাক্ত হয়ে যেতেন। তাঁদের দেহ হতে ঘাম বের হত। একদা তাদের একজন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট ছিলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “যদি তোমরা এ দিনটিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
وَكَذَلِكَ يُرْوَى عَنْ عُمَرَ، وَعَلِيٍّ، وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، وَعَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ
‘উমর, ‘আলী, নু’মান ইব্নু বাশীর এবং ‘আম্র ইব্নু হুরায়স (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতেও অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٣ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ: أَنَّهُ سَأَلَ عَمْرَةَ عَنِ الغُسْلِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَتْ: قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: ” كَانَ النَّاسُ مَهَنَةَ أَنْفُسِهِمْ، وَكَانُوا إِذَا رَاحُوا إِلَى الجُمُعَةِ، رَاحُوا فِي هَيْئَتِهِمْ فَقِيلَ لَهُمْ: لَوِ اغْتَسَلْتُمْ “
‘আবদান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি ‘আম্রাহ-কে জুমু‘আর দিনের গুসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, উত্তরে তিনি বললেন: ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা বলেন, “লোকজন নিজেদের কাজকর্ম নিজেরাই করতেন। যখন তারা দুপুরের পরে জুমু‘আর জন্য যেতেন তখন সে অবস্থায়ই চলে যেতেন। তাই তাঁদের বলা হল, যদি তোমরা গোসল করে নিতে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٤ – حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عُثْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي الجُمُعَةَ حِينَ تَمِيلُ الشَّمْسُ»
সুরায়জ ইব্নু নু‘মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফুলায়হ’ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উসমান ইব্ন ‘আব্দুর রহমান ইব্ন ‘উসমান তায়মী থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর সালাত আদায় করতেন, যখন সূর্য হেলে যেত”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٥ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنَّا نُبَكِّرُ بِالْجُمُعَةِ وَنَقِيلُ بَعْدَ الجُمُعَةِ»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমরা প্রথম ওয়াক্তেই জুমু‘আর সালাতে যেতাম এবং জুমু‘আর পরে কাইলূলা (দুপুরের বিশ্রাম) করতাম”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٦ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ المُقَدَّمِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَرَمِيُّ بْنُ عُمَارَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو خَلْدَةَ هُوَ خَالِدُ بْنُ دِينَارٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اشْتَدَّ البَرْدُ بَكَّرَ بِالصَّلَاةِ، وَإِذَا اشْتَدَّ الحَرُّ أَبْرَدَ بِالصَّلَاةِ»، يَعْنِي الجُمُعَةَ، قَالَ يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ: أَخْبَرَنَا أَبُو خَلْدَةَ، فَقَالَ: بِالصَّلَاةِ وَلَمْ يَذْكُرِ الجُمُعَةَ، وَقَالَ بِشْرُ بْنُ ثَابِتٍ: حَدَّثَنَا أَبُو خَلْدَةَ، قَالَ: صَلَّى بِنَا أَمِيرٌ الجُمُعَةَ، ثُمَّ قَالَ لِأَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: كَيْفَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الظُّهْرَ؟
মুহা’ম্মাদ ইব্নু আবূ বকর মুক্বাদ্দামী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’রামী ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ খাল্দাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তিনি হলেন খালিদ ইব্নু দীনার, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শীতের সময় প্রথম ওয়াক্তেই সালাত আদায় করতেন। আর তীব্র গরমের সময় ঠাণ্ডা করে (বিলম্ব করে- সালাত আদায় করতেন। অর্থাৎ জুমু‘আর সালাত।” ইউনুস ইব্নু বুকায়র (রহমাহুল্লাহ) আমাদের বলেছেন, আর তিনি সালাত শব্দের উল্লেখ করেছেন, জুমু’আ শব্দের উল্লেখ করেননি। আর বিশ্র ইব্নু সাবিত (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমাদের নিকট আবূ খালদা (রহমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন যে, জুমু‘আর ইমাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। অতঃপর তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত কিরুপে আদায় করতেন?
অনুরূপ বর্ণনাঃ
وَقَوْلِ اللَّهِ جَلَّ ذِكْرُهُ: {فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ} [الجمعة: ٩] وَمَنْ قَالَ: السَّعْيُ العَمَلُ وَالذَّهَابُ، لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا} [الإسراء: ١٩] وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «يَحْرُمُ البَيْعُ حِينَئِذٍ» وَقَالَ عَطَاءٌ: «تَحْرُمُ الصِّنَاعَاتُ كُلُّهَا» وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ: «إِذَا أَذَّنَ المُؤَذِّنُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَهُوَ مُسَافِرٌ فَعَلَيْهِ أَنْ يَشْهَدَ»
এবং আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা আল্লাহর স্বরণে দৌড়িয়ে আস।” যিনি বলেন, ‘সাঈ এর অর্থ কাজ করা, গমন করা। কেননা, আল্লাহর বাণীঃ —- এর অন্তর্গত সাঈ-এর অর্থ হচ্ছে কাজ করা। ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তখন (জুমু‘আর আযানের পর) যাবতীয় ক্রয়-বিক্রয় হারাম হয়ে যায়। আত্বা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, শিল্প-কারিগরির যাবতীয় কাজই তখন নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ইব্রাহীম ইব্ন সা’দ (রহমাহুল্লাহ) যুহরী (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেন, জুমু‘আর দিন যখন মুআয্যিন আযান দেয় তখন তার জন্য জুমু ‘আর সালাতে উপস্থিত হওয়া উচিত।
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٧ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبَايَةُ بْنُ رِفَاعَةَ، قَالَ: أَدْرَكَنِي أَبُو عَبْسٍ وَأَنَا أَذْهَبُ إِلَى الجُمُعَةِ، فَقَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ালীদ ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু আবূ মারইয়াম আনস্বারী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবায়া ইব্নু রিফা‘আ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আমি জুমু‘আর সালাতে যাবার কালে আবূ আব্স্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি বললেন: আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, “যার দু’পা আল্লাহ্র পথে ধূলি ধূসরিত হয়, আল্লাহ্ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٨ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدٍ، وَأَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ ، فَلَا تَأْتُوهَا تَسْعَوْنَ، وَأْتُوهَا تَمْشُونَ، عَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন যুহ্রী সা‘ঈদ ও আবূ সালামাহ থেকে বর্ণনা করলেন, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি- “যখন সালাত শুরু হয়, তখন দৌড়িয়ে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে না, বরং হেঁটে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে। সালাতে ধীর-স্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামা‘আতের সাথে সালাত যতটুকু পাও আদায় কর, আর যা ছুটে গেছে, পরে তা পূর্ণ করে নাও।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩٠٩ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو قُتَيْبَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ المُبَارَكِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ – لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا – عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي، وَعَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ»
‘আম্র ইব্নু আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ক্বুতায়বাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আলী ইব্নু মুবারক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাছির থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত সালাতে দাঁড়াবে না। তোমাদের জন্য ধীর-স্থির থাকা অত্যাবশ্যক।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩١٠ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ وَدِيعَةَ، حَدَّثَنَا سَلْمَانُ الفَارِسِيُّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيبٍ، ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ، فَصَلَّى مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্ন যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সা‘ঈদ মাক্ববুরী থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ইব্ন ওয়াদী‘আহ থেকে, তিনি বললেন: সালমান ফারসী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, অতঃপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, অতঃপর (মসজিদে) যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুত্বার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমু‘আ এবং পরবর্তী জুমু‘আর মধ্যবর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩١١ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا مَخْلَدُ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: سَمِعْتُ نَافِعًا، يَقُولُ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ: «نَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُقِيمَ الرَّجُلُ أَخَاهُ مِنْ مَقْعَدِهِ، وَيَجْلِسَ فِيهِ»، قُلْتُ لِنَافِعٍ: الجُمُعَةَ؟ قَالَ: الجُمُعَةَ وَغَيْرَهَا
মুহা’ম্মাদ তিনি হলেন ইব্নু সাল্লাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মাখলাদ ইব্নু ইয়াযীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি নাফি‘ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন: আমি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, যেন কেউ তার ভাইকে স্বীয় বসার স্থান হতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে সে জায়গায় না বসে। ইব্নু জুরাইজ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি নাফি‘ (রহমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ কি শুধু জুমু‘আর ব্যাপারে? তিনি বললেন, জুমু’আ ও অন্যান্য (সালাতের) ব্যাপারেও।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
٩١٢ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ: «كَانَ النِّدَاءُ يَوْمَ الجُمُعَةِ أَوَّلُهُ إِذَا جَلَسَ الإِمَامُ عَلَى المِنْبَرِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَكَثُرَ النَّاسُ زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى الزَّوْرَاءِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: ” الزَّوْرَاءُ: مَوْضِعٌ بِالسُّوقِ بِالْمَدِينَةِ “
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু), এবং উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সময় জুমু‘আর দিন ইমাম যখন মিম্বরের উপর বসতেন, তখন প্রথম আযান দেয়া হত। পরে যখন ‘উসমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) খলীফা হলেন এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি ‘যাওরাহ’ হতে তৃতীয় ১ আযান বৃদ্ধি করেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যাওরাহ’ হল মাদীনার অদূরে বাজারের একটি স্থান।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
ফুটনোটঃ
১. এর পূর্বে কেবল খুত্বার আযান ও ইক্বামাত প্রচলন ছিল। এখানে থেকে তৃতীয় অর্থাৎ সালাতের জন্য বর্তমানে প্রচলিত আযানের প্রচলন শুরু হয়।
হাদীসের মান: সহীহ
٩١٣ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ المَاجِشُونُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، «أَنَّ الَّذِي زَادَ التَّأْذِينَ الثَّالِثَ يَوْمَ الجُمُعَةِ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، حِينَ كَثُرَ أَهْلُ المَدِينَةِ وَلَمْ يَكُنْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُؤَذِّنٌ غَيْرَ وَاحِدٍ، وَكَانَ التَّأْذِينُ يَوْمَ الجُمُعَةِ حِينَ يَجْلِسُ الإِمَامُ» يَعْنِي عَلَى المِنْبَرِ
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আযীয ইব্নু আবু সালামাহ মাজিশূন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: মদীনার অধিবাসীদের সংখ্যা যখন বৃদ্ধি পেল, তখন জুমু‘আর দিন তৃতীয় আযান যিনি বৃদ্ধি করলেন, তিনি হলেন, উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় (জুমু‘আর জন্য) একজন ব্যতীত মুয়ায্যিন ছিল না এবং জুমু‘আর দিন আযান দেয়া হত যখন ইমাম বসতেন অর্থাৎ মিম্বরের উপর খুত্বার পূর্বে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۴ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ: سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ، وَهُوَ جَالِسٌ عَلَى المِنْبَرِ، أَذَّنَ المُؤَذِّنُ، قَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ، قَالَ مُعَاوِيَةُ: «اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ»، قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، فَقَالَ مُعَاوِيَةُ: «وَأَنَا»، فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالَ مُعَاوِيَةُ: «وَأَنَا»، فَلَمَّا أَنْ قَضَى التَّأْذِينَ، قَالَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى هَذَا المَجْلِسِ، «حِينَ أَذَّنَ المُؤَذِّنُ، يَقُولُ مَا سَمِعْتُمْ مِنِّي مِنْ مَقَالَتِي»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ বাক্র ইব্নু ‘উছমান ইব্ন সাহ্ল ইব্ন হু’নায়ফ আমাদেরকে হাদীসটি খবার দিলেন আবূ উমামাহ ইব্ন সাহ্ল ইব্ন হু’নায়ফ থেকে, তিনি বললেন: আমি মু‘আবিয়াহ ইব্নু আবূ সুফিয়ান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি মিম্বারে বসা অবস্থায় মুয়ায্যিন আযান দিলেন। মুয়ায্যিন বললেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার” মু‘আবিয়াহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।” মুয়ায্যিন বললেন, “আশ্হাদু আল্ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”, মু‘আবিয়াহ এবং আমিও তাই বললাম। মুয়ায্যিন বললেন, “আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্” তখন মু‘আবিয়াহ এবং আমিও তাই বললাম। যখন (মুয়ায্যিন) আযান শেষ করলেন, তখন মু‘আবিয়াহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, হে লোক সকল! তোমরা আমার হতে যে বাক্যগুলো শুনেছ, তা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মুয়ায্যিনের আযানের সময় এ মজলিসে বাক্যগুলো বলতে আমি শুনেছি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۵ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ «التَّأْذِينَ الثَّانِيَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، أَمَرَ بِهِ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، حِينَ كَثُرَ أَهْلُ المَسْجِدِ، وَكَانَ التَّأْذِينُ يَوْمَ الجُمُعَةِ حِينَ يَجْلِسُ الإِمَامُ»
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উকায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, মসজিদে মুসল্লীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, ‘উসমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জুমু‘আর দিন দ্বিতীয় আযানের নির্দেশ দেন। অথচ (ইতোপূর্বে) জুমু‘আর দিন ইমাম যখন (মিম্বারের উপর) বসতেন, তখন আযান দেয়া হতো।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۶ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، يَقُولُ: «إِنَّ الأَذَانَ يَوْمَ الجُمُعَةِ كَانَ أَوَّلُهُ حِينَ يَجْلِسُ الإِمَامُ، يَوْمَ الجُمُعَةِ عَلَى المِنْبَرِ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَلَمَّا كَانَ فِي خِلَافَةِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَكَثُرُوا، أَمَرَ عُثْمَانُ يَوْمَ الجُمُعَةِ بِالأَذَانِ الثَّالِثِ، فَأُذِّنَ بِهِ عَلَى الزَّوْرَاءِ، فَثَبَتَ الأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: আমি সায়িব ইব্নু ইয়াযীদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বক্র এবং ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা)-এর যুগে জুমু‘আর দিন ইমাম যখন মিম্বারের উপর বসতেন, তখন প্রথম আযান দেয়া হত। অত:পর যখন ‘উসমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর খিলাফাতের সময় এল এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন জুমু‘আর দিন তৃতীয় ১ আযানের নির্দেশ দেন। ‘যাওরা’ নামক স্থান হতে এ আযান দেয়া হয়, পরে এ আযানের সিলসিলা চলতে থাকে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. সে যুগে ইকামত কে আযান হিসেবে গন্য করা হত।
وَقَالَ أَنَسٌ: رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ «خَطَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى المِنْبَرِ»
আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার হতে খুতবা দিতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۷ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدٍ القَارِيُّ القُرَشِيُّ الإِسْكَنْدَرَانِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمِ بْنُ دِينَارٍ، أَنَّ رِجَالًا أَتَوْا سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ، وَقَدْ امْتَرَوْا فِي المِنْبَرِ مِمَّ عُودُهُ، فَسَأَلُوهُ عَنْ ذَلِكَ، فَقَالَ: وَاللَّهِ إِنِّي لَأَعْرِفُ مِمَّا هُوَ، وَلَقَدْ رَأَيْتُهُ أَوَّلَ يَوْمٍ وُضِعَ، وَأَوَّلَ يَوْمٍ جَلَسَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى فُلَانَةَ – امْرَأَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ قَدْ سَمَّاهَا سَهْلٌ – «مُرِي غُلَامَكِ النَّجَّارَ، أَنْ يَعْمَلَ لِي أَعْوَادًا، أَجْلِسُ عَلَيْهِنَّ إِذَا كَلَّمْتُ النَّاسَ» فَأَمَرَتْهُ فَعَمِلَهَا مِنْ طَرْفَاءِ الغَابَةِ، ثُمَّ جَاءَ بِهَا، فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَرَ بِهَا فَوُضِعَتْ هَا هُنَا، ثُمَّ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَيْهَا وَكَبَّرَ وَهُوَ عَلَيْهَا، ثُمَّ رَكَعَ وَهُوَ عَلَيْهَا، ثُمَّ نَزَلَ القَهْقَرَى، فَسَجَدَ فِي أَصْلِ المِنْبَرِ ثُمَّ عَادَ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّمَا صَنَعْتُ هَذَا لِتَأْتَمُّوا وَلِتَعَلَّمُوا صَلَاتِي»
ক্বুতায়বা ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়া‘আক্বূব ইব্নু ‘আব্দুর রহ’মান ইব্ন মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘আব্দুল ক্বারী ক্বুরাশী ইসকান্দারানী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ হা’যিম ইব্নু দীনার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: (একদিন) কিছু লোক সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদীর নিকট আগমন করে এবং মিম্বরটি কো্ন কাঠের তৈরি ছিল, এ নিয়ে তাদের মনে প্রশ্ন জেগে ছিল। তারা এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি সম্যকরূপে অবগত আছি যে, তা কিসের ছিল। প্রথম যেদিন তা স্থাপন করা হয় এবং প্রথম যে দিন এর উপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসেন তা আমি দেখেছি। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের অমুক মহিলার (বর্ণনাকারী বলেন, সাহ্ল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তার নামও উল্লেখ করেছিলেন) নিকট লোক পাঠিয়ে বলেছিলেন, তোমার কাঠমিস্ত্রি গোলামকে আমার জন্য কিছু কাঠ দিয়ে এমন জিনিস তৈরি করার নির্দেশ দাও, যার উপর বসে আমি লোকদের সাথে কথা বলতে পারি। অতঃপর সে মহিলা তাকে আদেশ করেন এবং সে (মদীনাহ হতে নয় মাইল দূরবর্তী) গাবা’র ঝাউ কাঠ দ্বারা তা তৈরি করে নিয়ে আসে। মহিলাটি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তা পাঠিয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশে এখানেই তা স্থাপন করা হয়। অতঃপর আমি দেখেছি, এর উপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করেছেন। এর উপর উঠে তাকবীর দিয়েছেন এবং এখানে (দাঁড়িয়ে) রুকূ’ করেছেন। অতঃপর পিছনের দিকে নেমে এসে মিম্বারের গোড়ায় সিজদা করেছেন এবং (এ সিজদা) পুনরায় করেছেন, অতঃপর সালাত শেষ করে সমবেত লোকদের দিকে ফিরে বলেছেনঃ হে লোক সকল! আমি এটা এ জন্য করেছি যে, তোমরা যেন আমার অনুসরণ করতে এবং আমার সালাত শিখে নিতে পার।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۸ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَنَسٍ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «كَانَ جِذْعٌ يَقُومُ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا وُضِعَ لَهُ المِنْبَرُ سَمِعْنَا لِلْجِذْعِ مِثْلَ أَصْوَاتِ العِشَارِ حَتَّى نَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهِ» قَالَ سُلَيْمَانُ: عَنْ يَحْيَى، أَخْبَرَنِي حَفْصُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ: أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ
সা‘ঈদ ইব্নু আবূ মার্ইয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আনাস আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “(মসজিদে নাববীতে) এমন একটি (খেজুর গাছের) খুঁটি ছিল যার সাথে হেলান দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়াতেন। অতঃপর যখন তাঁর জন্য মিম্বর স্থাপন করা হল, আমরা তখন খুঁটি হতে দশ মাসের গর্ভবতী উট্নীর মত ক্রন্দন করার শব্দ শুনতে পেলাম। এমন কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার হতে নেমে এসে খুঁটির উপর হাত রাখলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۱۹ – حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ عَلَى المِنْبَرِ، فَقَالَ: «مَنْ جَاءَ إِلَى الجُمُعَةِ، فَلْيَغْتَسِلْ»
আদম ইব্নু আবূ ইয়াসিন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যীব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি সালিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিম্বারের উপর হতে খুত্বা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু’আর সালাতে আসে সে যেন গোসল করে নেয়।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَنَسٌ: «بَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ قَائِمًا»
আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۰ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ القَوَارِيرِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الحَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ قَائِمًا، ثُمَّ يَقْعُدُ، ثُمَّ يَقُومُ كَمَا تَفْعَلُونَ الآنَ»
‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘উমার ক্বাওয়ারীরী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ ইব্নু হা’রিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্ন ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুত্বা দিতেন। অতঃপর বসতেন এবং পুনরায় দাঁড়াতেন। যেমন তোমরা এখন করে থাক।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَاسْتَقْبَلَ ابْنُ عُمَرَ، وَأَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمُ الإِمَامَ
ইব্নু ‘উমার ও আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ইমামের দিকে মুখ করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۱ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ هِلَالِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ يَسَارٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، قَالَ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَلَسَ ذَاتَ يَوْمٍ عَلَى المِنْبَرِ وَجَلَسْنَا حَوْلَهُ»
মু‘আয ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিলাল ইব্ন আবূ মায়মূনাহ থেকে, তিনি বললেন: ‘আত্বা ইব্নু ইয়াসার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা মিম্বারের উপর বসলেন এবং আমরা তাঁর চারদিকে (মুখ করে) বসলাম।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
رَوَاهُ عِكْرِمَةُ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘ইক্বরিমাহ (রহমাহুল্লাহ) ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۲ – وَقَالَ مَحْمُودٌ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي فَاطِمَةُ بِنْتُ المُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ قَالَتْ: دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ، قُلْتُ: مَا شَأْنُ النَّاسِ، فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا: إِلَى السَّمَاءِ، فَقُلْتُ: آيَةٌ؟ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا: أَيْ نَعَمْ، قَالَتْ: فَأَطَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جِدًّا حَتَّى تَجَلَّانِي الغَشْيُ، وَإِلَى جَنْبِي قِرْبَةٌ فِيهَا مَاءٌ، فَفَتَحْتُهَا، فَجَعَلْتُ أَصُبُّ مِنْهَا عَلَى رَأْسِي، فَانْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ النَّاسَ، وَحَمِدَ اللَّهَ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ» قَالَتْ: – وَلَغَطَ نِسْوَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ، فَانْكَفَأْتُ إِلَيْهِنَّ لِأُسَكِّتَهُنَّ، فَقُلْتُ لِعَائِشَةَ: مَا قَالَ؟ قَالَتْ: قَالَ -: ” مَا مِنْ شَيْءٍ لَمْ أَكُنْ أُرِيتُهُ إِلَّا قَدْ رَأَيْتُهُ فِي مَقَامِي هَذَا، حَتَّى الجَنَّةَ وَالنَّارَ، وَإِنَّهُ قَدْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّكُمْ تُفْتَنُونَ فِي القُبُورِ، مِثْلَ – أَوْ قَرِيبَ مِنْ – فِتْنَةِ المَسِيحِ الدَّجَّالِ، يُؤْتَى أَحَدُكُمْ فَيُقَالُ لَهُ: مَا عِلْمُكَ بِهَذَا الرَّجُلِ؟ فَأَمَّا المُؤْمِنُ – أَوْ قَالَ: المُوقِنُ شَكَّ هِشَامٌ – فَيَقُولُ: هُوَ رَسُولُ اللَّهِ، هُوَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَالهُدَى، فَآمَنَّا وَأَجَبْنَا وَاتَّبَعْنَا وَصَدَّقْنَا، فَيُقَالُ لَهُ: نَمْ صَالِحًا قَدْ كُنَّا نَعْلَمُ إِنْ كُنْتَ لَتُؤْمِنُ بِهِ، وَأَمَّا المُنَافِقُ – أَوْ قَالَ: المُرْتَابُ، شَكَّ هِشَامٌ – فَيُقَالُ لَهُ: مَا عِلْمُكَ بِهَذَا الرَّجُلِ؟ فَيَقُولُ: لَا أَدْرِي، سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ شَيْئًا فَقُلْتُ ” قَالَ هِشَامٌ: فَلَقَدْ قَالَتْ لِي فَاطِمَةُ فَأَوْعَيْتُهُ، غَيْرَ أَنَّهَا ذَكَرَتْ مَا يُغَلِّظُ عَلَيْهِ
এবং মাহ্’মূদ বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফাত্বিমাহ বিন্তু মুনযির আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আস্মা বিন্ত আবূ বক্র সিদ্দিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আমি (একদিন) ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর নিকট গেলাম। লোকজন তখন সালাত আদায় করছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, লোকদের কী হয়েছে? তখন তিনি মাথা দিয়ে আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তিনি মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করে, হ্যাঁ বললেন। (এরপর আমিও তাঁদের সঙ্গে সালাত যোগ দিলাম) অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত এত দীর্ঘায়িত করলেন যে, আমি প্রায় অজ্ঞান হতে যাচ্ছিলাম। আমার পার্শ্বেই একটি চামড়ার মশকে পানি রাখা ছিল। আমি সেটা খুললাম এবং আমার মাথায় পানি দিতে লাগলাম। অতঃপর যখন সূর্য উজ্জ্বল হয়ে উঠলো তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত সমাপ্ত করলেন এবং লোকজনের উদ্দেশ্যে খুত্বা পেশ করলেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ্র যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। অতঃপর বললেন, আম্মা বা’দু। আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, তখন কয়েকজন আনসারী মহিলা শোরগোল করছিলেন। তাই আমি চুপ করাবার উদ্দেশ্যে তাঁদের প্রতি ঝুঁকে পড়লাম। অতঃপর ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বললেন? ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, এমন কোন জিনিস নেই যা আমাকে দেখানো হয়নি আমি এ জায়গা হতে সব কিছুই দেখেছি। এমন কি জান্নাত ও জাহান্নাম দেখলাম। আমার নিকট ওয়াহী পাঠানো হয়েছে যে, তোমাদেরকে কবরে মাসীহ্ দাজ্জালের ফিত্নার ন্যায় অথবা তিনি বলেছেন, সে ফিত্নার কাছাকাছি ফিতনায় ফেলা হবে। (অর্থাৎ তোমাদেরকে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হবে) তোমাদের প্রত্যেককে (কবরে) উঠানো এবং প্রশ্ন করা হবে, এ ব্যক্তি (রসূলুল্লাহ্) সম্পর্কে তুমি কী জান? তখন মু’মিন অথবা মুকিন (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু’টোর মধ্যে কোন শব্দটি বলেছিলেন এ ব্যাপারে বর্ণনাকারী হিশামের মনে সন্দেহ রয়েছে) বলবে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল, তিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তিনি আমাদের নিকট সুস্পষ্ট দালীল ও হিদায়েত নিয়ে এসেছিলেন। অতঃপর আমরা ঈমান এনেছি, তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছি, তাঁর আনুগত্য করেছি এবং তাকে সত্য বলে গ্রহণ করেছি। তখন তাঁকে বলা হবে, তুমি ঘুমিয়ে থাক, যেহেতু তুমি নেককার। তুমি যে তাঁর প্রতি ঈমান এনেছ তা আমরা অবশ্যই জানতাম। আর মুনাফিক বা মুরতাব (সন্দেহ পোষণকারী) (এ দু’টোর মধ্যে কোন্ শব্দটি বলেছিলেন এ সম্পর্কে বর্ণনাকারী হিশামের মনে সন্দেহ রয়েছে)-কেও প্রশ্ন করা হবে যে, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি কী জান? উত্তরে সে বলবে, আমি কিছুই জানি না। অবশ্য মানুষকে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছি, আমিও তাই বলতাম। হিশাম (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ফাতিমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আমার নিকট যা বলেছেন, তা সবটুকু আমি উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছি। তবে তিনি ওদের প্রতি যে কঠোরতা করা হবে তাও উল্লেখ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۳ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ الحَسَنَ، يَقُولُ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ تَغْلِبَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُتِيَ بِمَالٍ – أَوْ سَبْيٍ – فَقَسَمَهُ، فَأَعْطَى رِجَالًا وَتَرَكَ رِجَالًا، فَبَلَغَهُ أَنَّ الَّذِينَ تَرَكَ عَتَبُوا، فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ أَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ فَوَاللَّهِ إِنِّي لَأُعْطِي الرَّجُلَ، وَأَدَعُ الرَّجُلَ، وَالَّذِي أَدَعُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنَ الَّذِي أُعْطِي، وَلَكِنْ أُعْطِي أَقْوَامًا لِمَا أَرَى فِي قُلُوبِهِمْ مِنَ الجَزَعِ وَالهَلَعِ، وَأَكِلُ أَقْوَامًا إِلَى مَا جَعَلَ اللَّهُ فِي قُلُوبِهِمْ مِنَ الغِنَى وَالخَيْرِ، فِيهِمْ عَمْرُو بْنُ تَغْلِبَ» فَوَاللَّهِ مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِكَلِمَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُمْرَ النَّعَمِ، تَابَعَهُ يُونُسُ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জারীর ইব্ন হা’যিম থেকে, তিনি বললেন: আমি হা’সান থেকে শুনলাম, তিনি বলছেন, ‘আম্র ইব্নু তাগলিব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু মাল বা কিছু সংখ্যক যুদ্ধবন্দী উপস্থিত করা হলে তিনি তা বণ্টন করে দিলেন। বণ্টনের সময় কিছু লোককে দিলেন এবং কিছু লোককে বাদ দিলেন। অতঃপর তাঁর নিকট সংবাদ পৌঁছলো যে, যাদের তিনি দেননি, তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র প্রশংসা করলেন ও তাঁর মহিমা বর্ণনা করলেন, অতঃপর বললেনঃ ‘আম্মা বা‘দ। আল্লাহ্র শপথ! আমি কোন লোককে দেই আর কোন লোককে দেই না। যাকে আমি দেই না সে, যাকে আমি দেই তাঁর চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয়। তবে আমি এমন লোকদের দেই যাদের অন্তরে অধৈর্য ও মালের প্রতি লিপ্সা দেখতে পাই; আর কিছু লোককে আল্লাহ্ যাদের অন্তরে অমুখাপেক্ষিতা ও কল্যাণ রেখেছেন, তাদের সে অবস্থার উপর ন্যস্ত করি। তাদের মধ্যে আম্র ইব্নু তাগলিব একজন। বর্ণনাকারী ‘আম্র ইব্নু তাগলিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ বাণীর পরিবর্তে আমি লাল উটও ১ পছন্দ করি না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. তৎকালীন আরবের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ছিল ‘লাল উট’।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۴ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ ذَاتَ لَيْلَةٍ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ، فَصَلَّى فِي المَسْجِدِ، فَصَلَّى رِجَالٌ بِصَلَاتِهِ، فَأَصْبَحَ النَّاسُ، فَتَحَدَّثُوا، فَاجْتَمَعَ أَكْثَرُ مِنْهُمْ، فَصَلَّوْا مَعَهُ، فَأَصْبَحَ النَّاسُ، فَتَحَدَّثُوا، فَكَثُرَ أَهْلُ المَسْجِدِ مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّوْا بِصَلَاتِهِ، فَلَمَّا كَانَتِ اللَّيْلَةُ الرَّابِعَةُ عَجَزَ المَسْجِدُ عَنْ أَهْلِهِ حَتَّى خَرَجَ لِصَلَاةِ الصُّبْحِ، فَلَمَّا قَضَى الفَجْرَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَتَشَهَّدَ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّهُ لَمْ يَخْفَ عَلَيَّ مَكَانُكُمْ، لَكِنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ، فَتَعْجِزُوا عَنْهَا» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: تَابَعَهُ يُونُسُ
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি শিহাব থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক রাতের মধ্যভাগে বের হলেন এবং মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করলেন। তাঁর সঙ্গে সাহাবীগণও সালাত আদায় করলেন, সকালে তাঁরা এ নিয়ে আলোচনা করলেন। ফলে (দ্বিতীয় রাতে) এর চেয়ে অধিক সংখ্যক সাহাবা একত্রিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। পরের দিন সকালেও তাঁরা এ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। ফলে তৃতীয় রাতে মসজিদে লোকসংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন এবং সাহাবীগণ তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীগণের স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। অবশেষে তিনি ফজরের সালাতের জন্য বের হলেন এবং ফজরের সালাত শেষ করে লোকদের দিকে ফিরলেন। অতঃপর আল্লাহ্র হামদ ও সানা বর্ণনা করলেন। অতঃপর বললেনঃ আম্মা বা’দ (তারপর বক্তব্য এই যে) এখানে তোমাদের উপস্থিতি আমার নিকট গোপন ছিল না, কিন্তু আমার আশংকা ছিল, তা তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হয় আর তোমরা তা আদায় করতে অপারগ হয়ে পড়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۵ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ عَشِيَّةً بَعْدَ الصَّلَاةِ، فَتَشَهَّدَ وَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ» تَابَعَهُ أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَأَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ»، تَابَعَهُ العَدَنِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ فِي «أَمَّا بَعْدُ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আবু হুমায়দ সা’ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “এক সন্ধ্যায় সালাতের পর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং শাহাদাত বাণী পাঠ করলেন। আর যথাযথভাবে আল্লাহ্র প্রশংসা করলেন। অতঃপর বললেন, ‘আম্মা বা’দ’।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۶ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، عَنِ المِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، قَالَ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعْتُهُ حِينَ تَشَهَّدَ يَقُولُ: «أَمَّا بَعْدُ» تَابَعَهُ الزُّبَيْدِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন জুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘আলী ইব্নু হু’সায়ন আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, মিসওয়ার ইব্ন মাখরামাহ থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন। অতঃপর আমি তাঁকে তাওহীদের সাক্ষ্য বাণী পাঠান্তে বলতে শুনলাম, ‘আম্মা বা’দ’।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۷ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ الغَسِيلِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: صَعِدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المِنْبَرَ، وَكَانَ آخِرَ مَجْلِسٍ جَلَسَهُ مُتَعَطِّفًا مِلْحَفَةً عَلَى مَنْكِبَيْهِ، قَدْ عَصَبَ رَأْسَهُ بِعِصَابَةٍ دَسِمَةٍ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ إِلَيَّ»، فَثَابُوا إِلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ هَذَا الحَيَّ مِنَ الأَنْصَارِ، يَقِلُّونَ وَيَكْثُرُ النَّاسُ، فَمَنْ وَلِيَ شَيْئًا مِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَطَاعَ أَنْ يَضُرَّ فِيهِ أَحَدًا أَوْ يَنْفَعَ فِيهِ أَحَدًا، فَلْيَقْبَلْ مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَيَتَجَاوَزْ عَنْ مُسِيِّهِمْ»
ইসমাঈল ইব্নু আবান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু গাসীল আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘ইকরিমাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বরের উপর আরোহণ করলেন। এ ছিল তাঁর জীবনের শেষ মজলিস। তিনি বসেছিলেন, তাঁর দু’ কাঁধের উপর বড় চাদর জড়ানো ছিল এবং মাথায় বাঁধা ছিল কালো পট্টি। তিনি আল্লাহ্র গুণকীর্তন করলেন এবং তাঁর মহিমা বর্ণনা করলেন, অতঃপর বললেন, হে লোক সকল! তোমরা আমার নিকট আস। লোকজন তাঁর নিকট একত্র হলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ ‘আম্মা বা’দ’। শুনে রাখ, এ আনসার গোত্র সংখ্যায় কমতে থাকবে এবং অন্য লোকেরা সংখ্যায় বাড়তে থাকবে। কাজেই যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মাতের কোন বিষয়ের কর্তৃত্ব লাভ করবে এবং সে এর সাহায্যে কারো ক্ষতি বা উপকার করার সুযোগ পাবে, সে যেন এই আনসারদের সৎ লোকদের ভাল কাজগুলো গ্রহণ করে এবং তাদের মন্দ কাজগুলো মাফ করে দেয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ المُفَضَّلِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ خُطْبَتَيْنِ يَقْعُدُ بَيْنَهُمَا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বিশর ইব্নু মুফায্যাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ খুত্বা দিতেন আর দু’ খুত্বার মধ্যখানে বসতেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۲۹ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا كَانَ يَوْمُ الجُمُعَةِ وَقَفَتِ المَلَائِكَةُ عَلَى بَابِ المَسْجِدِ يَكْتُبُونَ الأَوَّلَ فَالأَوَّلَ، وَمَثَلُ المُهَجِّرِ كَمَثَلِ الَّذِي يُهْدِي بَدَنَةً، ثُمَّ كَالَّذِي يُهْدِي بَقَرَةً، ثُمَّ كَبْشًا، ثُمَّ دَجَاجَةً، ثُمَّ بَيْضَةً، فَإِذَا خَرَجَ الإِمَامُ طَوَوْا صُحُفَهُمْ، وَيَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যিব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি আবূ ‘আব্দুল্লাহ আগার থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “জুমু’আর দিন মসজিদের দরজায় মালাইকা (ফেরেশতাগণ) অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে পূর্বে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার পূর্বে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। অতঃপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভী কুরবানী করে। অতঃপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগী দানকারীর ন্যায়। অতঃপর আগমনকারী ব্যক্তি একটি ডিম দানকারীর ন্যায়। অতঃপর ইমাম যখন বের হন তখন মালাইকা (ফেরেশতাগণ) তাঁদের খাতা বন্ধ করে দিয়ে মনোযোগ সহকারে খুত্বা শ্রবণ করতে থাকেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۰ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: «أَصَلَّيْتَ يَا فُلَانُ؟» قَالَ: لَا، قَالَ: «قُمْ فَارْكَعْ رَكْعَتَيْنِ»
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র ইব্ন দীনার থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, (কোন এক) জুমু’আর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে খুত্বা দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি আসলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে অমুক! তুমি কি সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না; তিনি বললেন, উঠ, সালাত আদায় করে নাও। ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনী বুখারীর ৮৭৭ নং হাদীসের টীকায় লিখেছেনঃ হাদীসের অন্য কতিপয় বর্ণনার ভিত্তিতে হানাফী মাযহাবে এই সময়ে সালাত না আদায় করাকে অধিকতর বিশুদ্ধ রীতি বলে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু এটি নিতান্তই অনুবাদকের নিজস্ব মনগড়া মত ও সহীহ হাদীস বিরোধী কথা। বরং এ কথার কোন সহীহ হাদীস নেই, একটি জাল হাদীসে রয়েছে। মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাক’আত সালাত পড়া সুন্নাত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাক’আত সালাত পড়ার পূর্বে বসতে নিষেধ করেছেন এবং বসার পূর্বে সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন যেমন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাণীঃ আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ মসজিদে প্রবেশ করে যতক্ষণ পর্যন্ত সে দু’ রাক’আত সালাত না পড়ে ততক্ষন পর্যন্ত যেন না বসে। আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নিশ্চয় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন বসার পূর্বে দু’রাক’আত সালাত পড়ে। (বুখারী ১ম খণ্ড ৬৩, ১৫৬ পৃষ্ঠা। মিশকাত ৬৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আঃ হক হাদীস ২৮৯। বুখারী ইঃফাঃ হাদীস নং ১০৮৯) অতঃপর উক্ত হাদীসের উপর আমলার্থে জুমাআর খুত্বা চলাকালীনও এ সালাত আদায় করতে হবে। আর এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, বুখারী ও মুসলিম যে হাদীসের ব্যাপারে ইত্তিফাক হয়েছেন- এর সকল হাদীস অন্য সকল হাদীস হতে বেশী শক্তিশালী।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۱ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ جَابِرًا، قَالَ: دَخَلَ رَجُلٌ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَالَ: «أَصَلَّيْتَ؟» قَالَ: لَا، قَالَ: «قُمْ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র থেকে, তিনি জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “এক জুমা’আহ্র দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দেয়ার সময় এক ব্যক্তি প্রবেশ করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সালাত আদায় করেছ কি? সে বলল, না; তিনি বললেনঃ উঠ, দু’রাক’আত সালাত আদায় কর।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ العَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسٍ، وَعَنْ يُونُسَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: ” بَيْنَمَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ يَوْمَ الجُمُعَةِ، إِذْ قَامَ رَجُلٌ، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: هَلَكَ الكُرَاعُ، وَهَلَكَ الشَّاءُ، فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَسْقِيَنَا، فَمَدَّ يَدَيْهِ وَدَعَا “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্ন যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল আযীয ইব্ন স্বুহায়ব থেকে, তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, এবং (আর এক বর্ণনায়) ইউনুস থেকে, তিনি ছাবিত থেকে, তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “এক জুম’আর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! (পানির অভাবে) ঘোড়া মরে যাচ্ছে, ছাগল বকরীও মরে যাচ্ছে। কাজেই আপনি দু’আ করুন, যেন আল্লাহ্ আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তখন তিনি দু’হাত প্রসারিত করলেন এবং দু’আ করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۳ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: أَصَابَتِ النَّاسَ سَنَةٌ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ قَامَ أَعْرَابِيٌّ، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: هَلَكَ المَالُ وَجَاعَ العِيَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا، فَرَفَعَ يَدَيْهِ وَمَا نَرَى فِي السَّمَاءِ قَزَعَةً، فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، مَا وَضَعَهَا حَتَّى ثَارَ السَّحَابُ أَمْثَالَ الجِبَالِ، ثُمَّ لَمْ يَنْزِلْ عَنْ مِنْبَرِهِ حَتَّى رَأَيْتُ المَطَرَ يَتَحَادَرُ عَلَى لِحْيَتِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَمُطِرْنَا يَوْمَنَا ذَلِكَ، وَمِنَ الغَدِ وَبَعْدَ الغَدِ، وَالَّذِي يَلِيهِ، حَتَّى الجُمُعَةِ الأُخْرَى، وَقَامَ ذَلِكَ الأَعْرَابِيُّ – أَوْ قَالَ: غَيْرُهُ – فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، تَهَدَّمَ البِنَاءُ وَغَرِقَ المَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا، فَرَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا» فَمَا يُشِيرُ بِيَدِهِ إِلَى نَاحِيَةٍ مِنَ السَّحَابِ إِلَّا انْفَرَجَتْ، وَصَارَتِ المَدِينَةُ مِثْلَ الجَوْبَةِ، وَسَالَ الوَادِي قَنَاةُ شَهْرًا، وَلَمْ يَجِئْ أَحَدٌ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلَّا حَدَّثَ بِالْجَوْدِ
ইব্রাহীম ইব্নু মুনযির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ালীদ ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ আম্র আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইস্হা’ক্ব ইব্নু আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ তালহা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একবার দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সে সময় কোন এক জুমু’আর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিচ্ছিলিন। তখন এক বেদুইন উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, হে আল্লাহ্র রসূল! (বৃষ্টির অভাবে) সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পরিবার পরিজনও অনাহারে রয়েছে। তাই আপনি আল্লাহ্র নিকট আমাদের জন্য দু’আ করুন। তিনি দু’ হাত তুললেন। সে সময় আমরা আকাশে এক খণ্ড মেঘও দেখিনি। যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ (করে বলছি)! (দু’আ শেষে) তিনি দু’ হাত (এখনও) নামান নি, এমন সময় পাহাড়ের ন্যায় মেঘের বিরাট বিরাট খণ্ড উঠে আসল। অতঃপর তিনি মিম্বার হতে নীচে নামেননি, এমন সময় দেখতে পেলাম তাঁর দাড়ির উপর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে। সে দিন আমাদের এখানে বৃষ্টি হল। এর পরে ক্রমাগত দু’দিন এবং পরবর্তী জুমু’আ পর্যন্ত প্রত্যেক দিন। (পরবর্তী জুমু’আর দিন) সে বেদুইন অথবা অন্য কেউ উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, হে আল্লাহ্র রসূল! (বৃষ্টির কারণে) এখন আমাদের বাড়ী ঘর ধ্বসে পড়ছে, সম্পদ ডুবে যাচ্ছে। তাই আপনি আমাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট দু’আ করুন। তখন তিনি দু’ হাত তুললেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ্ আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় (বৃষ্টি দাও), আমাদের উপর নয়। (দু’আর সময়) তিনি মেঘের এক একটি খণ্ডের দিকে ইশারা করছিলেন, আর সেখানকার মেঘ কেটে যাচ্ছিল। এর ফলে চতুর্দিকে মেঘ পরিবেষ্টিত অবস্থায় ঢালের ন্যায় মদীনার আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেলে এবং কানাত উপত্যকার পানি একমাস ধরে প্রবাহিত হতে লাগল, তখন (মদীনার) চারপাশের যে কোন অঞ্চল হতে যে কেউ এসেছে, সে এ প্রবল বৃষ্টির কথা আলোচনা করেছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَإِذَا قَالَ لِصَاحِبِهِ: أَنْصِتْ، فَقَدْ لَغَا وَقَالَ سَلْمَانُ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإِمَامُ»
যদি কেউ তার সাথীকে (মুসল্লীকে বলে) চুপ থাক, তাহলে সে একটি অনর্থক কথা বললো। সালমান ফারসী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, যখন ইমাম কথা বলবেন, তখন চুপ থাকবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۴ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الجُمُعَةِ: أَنْصِتْ، وَالإِمَامُ يَخْطُبُ، فَقَدْ لَغَوْتَ “
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু মুসায়্য়েব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “জুমু’আর দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লীকে চুপ থাক বলবে, অথচ ইমাম খুত্বা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: «فِيهِ سَاعَةٌ، لَا يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ، وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي، يَسْأَلُ اللَّهَ تَعَالَى شَيْئًا، إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ» وَأَشَارَ بِيَدِهِ يُقَلِّلُهَا
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু’আর দিন সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং বলেন, “এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে কোন মুসলিম বান্দা যদি এ সময় সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্র নিকট কিছু প্রার্থনা করে, তবে তিনি তাকে অবশ্যই তা দিয়ে থাকেন এবং তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۶ – حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الجَعْدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: ” بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ أَقْبَلَتْ عِيرٌ تَحْمِلُ طَعَامًا، فَالْتَفَتُوا إِلَيْهَا حَتَّى مَا بَقِيَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا، فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا} [الجمعة: 11] “
মুয়াবিয়া ইব্নু ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’স্বায়ন থেকে, তিনি সালিম ইব্ন আবূ জা‘আদ থেকে, তিনি বললেন: জাবির ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে (জুমু’আর) সালাত আদায় করছিলাম। এমন সময় খাদ্য দ্রব্য বহনকারী একটি উটের কাফিলা হাযির হল এবং তারা (মুসল্লীগণ) সে দিকে এত অধিক মনোযোগী হলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মাত্র বারোজন মুসল্লী অবশিষ্ট ছিলেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “এবং যখন তারা ব্যবসা বা খেল তামাশা দেখতে পেল তখন সে দিকে দ্রুত চলে গেল এবং আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে গেল”- [সূরা জুমু’আ ৬২:১১]।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ رَكْعَتَيْنِ، وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ، وَبَعْدَ المَغْرِبِ رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْتِهِ، وَبَعْدَ العِشَاءِ رَكْعَتَيْنِ، وَكَانَ لَا يُصَلِّي بَعْدَ الجُمُعَةِ حَتَّى يَنْصَرِفَ، فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের পূর্বে দু’ রাক’আত ও পরে দু’ রাক’আত, মাগরিবের পর নিজের ঘরে দু’ রাক’আত এবং ‘ইশার পর দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। আর জুমু’আর দিন নিজের ঘরে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতেন না। (ঘরে গিয়ে) দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনীর বুখারীর ৮৮৪ নং হাদীসের টীকায় লিখেছেন : জুমু’আর আগে ও পরে ৪/২ রাক’আত সুন্নাত পড়া বিশুদ্ধতর। কিন্তু জুমু’আর পূর্বে দু’রাকআত তাহিয়াতুল মসজিদ ব্যতীত চার রাক’আত বলে নির্দিষ্ট করে কোন সংখ্যার সালাত সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং এ মর্মে বর্ণিত হাদীসগুলো বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۸ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: «كَانَتْ فِينَا امْرَأَةٌ تَجْعَلُ عَلَى أَرْبِعَاءَ فِي مَزْرَعَةٍ لَهَا سِلْقًا، فَكَانَتْ إِذَا كَانَ يَوْمُ جُمُعَةٍ تَنْزِعُ أُصُولَ السِّلْقِ، فَتَجْعَلُهُ فِي قِدْرٍ، ثُمَّ تَجْعَلُ عَلَيْهِ قَبْضَةً مِنْ شَعِيرٍ تَطْحَنُهَا، فَتَكُونُ أُصُولُ السِّلْقِ عَرْقَهُ، وَكُنَّا نَنْصَرِفُ مِنْ صَلَاةِ الجُمُعَةِ، فَنُسَلِّمُ عَلَيْهَا، فَتُقَرِّبُ ذَلِكَ الطَّعَامَ إِلَيْنَا، فَنَلْعَقُهُ وَكُنَّا نَتَمَنَّى يَوْمَ الجُمُعَةِ لِطَعَامِهَا ذَلِكَ»
সা‘ঈদ ইব্নু মারইয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ গাস্সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সাহ্ল ইব্ন সা‘আদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমাদের মধ্যে বসবাসকারিণী জনৈকা মহিলা একটি ছোট নহরের পাশে ক্ষেতে বীটের চাষ করতেন। জুমু’আর দিনে সে বীটের মূল তুলে এনে রান্নার জন্য ডেগে চড়াতেন এবং এর উপর এক মুঠো যবের আটা দিয়ে রান্না করতেন। তখন এ বীট মূলই এর গোশ্ত (গোশতের বিকল্প) হয়ে যেত। আমরা জুমু’আর সালাত হতে ফিরে এসে তাঁকে সালাম দিতাম। তিনি তখন খাদ্য আমাদের সামনে রাখতেন এবং আমরা তা খেতাম। আমরা সে খাদ্যের আশায় জুমু’আর দিন উদগ্রীব থাকতাম।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۳۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَهْلٍ، بِهَذَا، وَقَالَ: «مَا كُنَّا نَقِيلُ وَلَا نَتَغَدَّى إِلَّا بَعْدَ الجُمُعَةِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ হা’যিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি সাহ্ল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি আরো বলেছেন, জুমু’আ (সালাতের) পরই আমরা কায়লূলাহ (দুপুরের শয়ন ও হাল্কা নিদ্রা) এবং দুপুরের আহার্য গ্রহণ করতাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۰ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُقْبَةَ الشَّيْبَانِيُّ الكُوفِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الفَزَارِيُّ، عَنْ حُمَيْدٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ: «كُنَّا نُبَكِّرُ إِلَى الجُمُعَةِ، ثُمَّ نَقِيلُ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘উক্ববাহ শায়বানী কূফী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ইসহা’ক ফাযারী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হুমাইদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, “আমরা সকাল সকাল জুমু’আয় যেতাম অতঃপর (সালাত শেষে) কায়লূলাহ করতাম।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۱ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الجُمُعَةَ، ثُمَّ تَكُونُ القَائِلَةُ»
সা‘ঈদ ইব্নু মারইয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ গাস্সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হাযিম আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সাহ্ল ইব্ন সা‘আদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে জুমু’আর সালাত আদায় করতাম। অতঃপর দুপুরের বিশ্রাম ও হালকা নিদ্রা যেতাম।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ، إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا، إِنَّ الكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُبِينًا، وَإِذَا كُنْتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ مَعَكَ، وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ، فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِنْ وَرَائِكُمْ، وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَى لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ، وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ، وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُمْ مَيْلَةً وَاحِدَةً، وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَنْ تَضَعُوا أَسْلِحَتَكُمْ، وَخُذُوا حِذْرَكُمْ، إِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُهِينًا} [النساء: ۱۲۰]
মহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ “আর যখন তোমরা পৃথিবীতে সফর করবে, তখন তোমাদের কোন গুনাহ হবে না যদি তোমরা সালাত সংক্ষিপ্ত কর, এ আশংকায় যে, কাফিররা তোমাদের জন্য ফিতনা সৃষ্টি করবে। নিশ্চয় কাফিররা হল তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর আপনি যখন তাদের মধ্যে থাকেন এবং তাদের সালাত পড়াতে চান, তখন যেন তাদের এক দল আপনার সাথে দাঁড়ায় এবং তারা যেন নিজেদের অস্ত্র সাথে রাখে। তারপর যখন তারা সিজদা সম্পন্ন করবে তখন যেন তারা তোমাদের পেছনে অবস্থান নেয়, আর অন্য দল যারা সালাত আদায় করেনি তারা যেন আপনার সাথে সালাত আদায় করে নেয়, এবং তারা যেন সতর্ক ও সশস্ত্র থাকে। কাফিররা চায় যেন তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও আসবাবপত্র সম্বন্ধে অসতর্ক হও যাতে তারা একযোগে তোমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। যদি তোমরা বৃষ্টির করণে কষ্ট পাও অথবা যদি তোমরা অসুস্থ হও, এ অবস্থায় নিজেদের অস্ত্র পরিত্যাগ করলে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। কিন্তু তোমরা সতর্কতা অবলম্বন করবে। আল্লাহ কাফিরদের জন্য অবশ্যই লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” [সূরা নেছা : ১২০]
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۲ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: سَأَلْتُهُ هَلْ صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ – يَعْنِي صَلَاةَ الخَوْفِ – قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِبَلَ نَجْدٍ، فَوَازَيْنَا العَدُوَّ، فَصَافَفْنَا لَهُمْ، «فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي لَنَا، فَقَامَتْ طَائِفَةٌ مَعَهُ تُصَلِّي وَأَقْبَلَتْ طَائِفَةٌ عَلَى العَدُوِّ، وَرَكَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَنْ مَعَهُ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ انْصَرَفُوا مَكَانَ الطَّائِفَةِ الَّتِي لَمْ تُصَلِّ، فَجَاءُوا، فَرَكَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهِمْ رَكْعَةً وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، فَقَامَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ، فَرَكَعَ لِنَفْسِهِ رَكْعَةً وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ»
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন, আমি তাকে (যুহরী)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি সালাত আদায় করতেন অর্থাৎ খাওফের সালাত? তিনি বললেন, আমাকে সালিম খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে নাজ্দ এলাকায় যুদ্ধ করেছিলাম। সেখানে আমরা শত্রুর মুখোমুখী কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। একদল তাঁর সঙ্গে সালাতে দাঁড়ালেন এবং অন্য একটি দল শত্রুর মুখোমুখী অবস্থান করলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সংগে যাঁরা ছিলেন তাঁদের নিয়ে রুকূ’ ও দুটি সিজদা করলেন। অতঃপর এ দলটি যারা সালাত আদায় করেনি, তাঁদের স্থানে চলে গেলেন এবং তাঁরা (যারা শত্রুর মুখোমুখী ছিলেন) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে এগিয়ে এলেন, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের সঙ্গে এক রুকূ’ ও দু’ সিজদা করলেন এবং পরে সালাম ফিরালেন। অতঃপর তাদের প্রত্যেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজে নিজে একটি রুকূ’ ও দুটি সিজদা (সহ সালাত) শেষ করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۳ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ القُرَشِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ نَحْوًا مِنْ قَوْلِ مُجَاهِدٍ: إِذَا اخْتَلَطُوا قِيَامًا، وَزَادَ ابْنُ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَإِنْ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ، فَلْيُصَلُّوا قِيَامًا وَرُكْبَانًا»
সা‘ঈদ ইব্নু ইয়াহ্ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ ক্বুরাশী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্ন জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মূস ইব্ন ‘উক্ববাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “সৈন্যরা যখন পরস্পর (শত্রুমিত্র) মিলিত হয়ে যায়, ‘তখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আরো বলেছেন যে, যদি সৈন্যদের অবস্থা এর চেয়ে গুরুতর হয়ে যায়, তাহলে দাঁড়ানো অবস্থায় এবং আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۴ – حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ، فَكَبَّرَ وَكَبَّرُوا مَعَهُ وَرَكَعَ وَرَكَعَ نَاسٌ مِنْهُمْ مَعَهُ، ثُمَّ سَجَدَ وَسَجَدُوا مَعَهُ، ثُمَّ قَامَ لِلثَّانِيَةِ، فَقَامَ الَّذِينَ سَجَدُوا وَحَرَسُوا إِخْوَانَهُمْ وَأَتَتِ الطَّائِفَةُ الأُخْرَى، فَرَكَعُوا وَسَجَدُوا مَعَهُ، وَالنَّاسُ كُلُّهُمْ فِي صَلَاةٍ، وَلَكِنْ يَحْرُسُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا»
হায়াত ইব্নু শুরায়হ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু হা’রব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুবায়দী থেকে, তিনি যুহ্রী থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘উতবাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে দাঁড়ালেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে (ইক্তিদা করে) দাঁড়ালেন। তিনি তাক্বীর বললেন, তারাও তাক্বীর বললেন, তিনি রুকূ’ করলেন, তারাও তাঁর সঙ্গে রুকূ’ করলেন। অতঃপর তিনি সিজদা করলেন এবং তারাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করলেন। অতঃপর তিনি দ্বিতীয় রাক’আতের জন্য দাঁড়ালেন, তখন যারা তাঁর সংগে সিজদা করছিলেন তারা উঠে দাঁড়ালেন এবং তাদের ভাইদের পাহারা দিতে লাগলেন। তখন অপর দলটি এসে তাঁর সঙ্গে রুকূ’ করলেন। এভাবে সকলেই সালাতে অংশগ্রহণ করলেন। অথচ একদল অপর দলকে পাহারাও দিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الأَوْزَاعِيُّ: «إِنْ كَانَ تَهَيَّأَ الفَتْحُ وَلَمْ يَقْدِرُوا عَلَى الصَّلَاةِ صَلَّوْا إِيمَاءً كُلُّ امْرِئٍ لِنَفْسِهِ، فَإِنْ لَمْ يَقْدِرُوا عَلَى الإِيمَاءِ أَخَّرُوا الصَّلَاةَ حَتَّى يَنْكَشِفَ القِتَالُ أَوْ يَأْمَنُوا، فَيُصَلُّوا رَكْعَتَيْنِ، فَإِنْ لَمْ يَقْدِرُوا صَلَّوْا رَكْعَةً وَسَجْدَتَيْنِ، فَإِنْ لَمْ يَقْدِرُوا لَا يُجْزِئُهُمُ التَّكْبِيرُ، وَيُؤَخِّرُوهَا حَتَّى يَأْمَنُوا» وَبِهِ قَالَ مَكْحُولٌ ” وَقَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: ” حَضَرْتُ عِنْدَ مُنَاهَضَةِ حِصْنِ تُسْتَرَ عِنْدَ إِضَاءَةِ الفَجْرِ، وَاشْتَدَّ اشْتِعَالُ القِتَالِ، فَلَمْ يَقْدِرُوا عَلَى الصَّلَاةِ، فَلَمْ نُصَلِّ إِلَّا بَعْدَ ارْتِفَاعِ النَّهَارِ، فَصَلَّيْنَاهَا وَنَحْنُ مَعَ أَبِي مُوسَى فَفُتِحَ لَنَا، وَقَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: وَمَا يَسُرُّنِي بِتِلْكَ الصَّلَاةِ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا “
ইমাম আওযায়ী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, যদি অবস্থা এমন হয় যে, বিজয় আসন্ন কিন্তু শত্রুদের ভয়ে সৈন্যদের (জাম‘আতে) সালাত আদায় করা সম্ভব নয়, তাহলে সবাই একাকী ইঙ্গিতে সালাত আদায় করবে। আর যদি ইঙ্গিতে আদায় করতে না পার তবে সালাত বিলম্বিত করবে। যে পর্যন্ত না যুদ্ধ শেষ হয় বা তারা নিরাপদ হয়। অতঃপর দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করবে। যদি (দু’ রাক‘আত) আদায় করতে সক্ষম না হয় তাহলে একটি রুকু ও দু’টি সিজদা (এক রাক ‘আত) আদায় করবে। তাও সম্ভব না হলে শুধু তাকবীর বলে সালাত শেষ করা জায়িয হবে না বরং নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত সালাত বিলম্ব করবে। মাকহুল (রহমাহুল্লাহ)ও এ মত পোষণ করতেন। আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেছেন, (একটি যুদ্ধে) ভোরবেলা, ভুস্তার দুর্গের উপর আক্রমণ চলছিল, এবং যুদ্ধ প্রচণ্ড রূপ ধারণ করে, ফলে সৈন্যদের সালাত আদায় করা অসম্ভব হয়ে পরে। সূর্য উঠার বেশ পরে আমরা সালাত আদায় করেছিলাম। আর আমরা তখন আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সাথে ছিলাম। পরে দুর্গ আমরা জয় করেছিলাম। আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, সে সালাতের বিনিময়ে দুনিয়া ও তার সব কিছুতেও আমাকে খুশী করতে পারবে না।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۵ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ البُخَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُبَارَكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: جَاءَ عُمَرُ يَوْمَ الخَنْدَقِ، فَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ، وَيَقُولُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا صَلَّيْتُ العَصْرَ حَتَّى كَادَتِ الشَّمْسُ أَنْ تَغِيبَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَأَنَا وَاللَّهِ مَا صَلَّيْتُهَا بَعْدُ» قَالَ: فَنَزَلَ إِلَى بُطْحَانَ، فَتَوَضَّأَ وَصَلَّى العَصْرَ بَعْدَ مَا غَابَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى المَغْرِبَ بَعْدَهَا
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু জা‘ফার বুখারী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াকী‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আলী ইব্ন মুবারাক থেকে, তিনি ইয়াহ’ইয়া ইব্ন আবূ কছীর থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কুরাইশ গোত্রের কাফিরদের মন্দ বলতে বলতে আসলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে, অথচ ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আল্লাহ্র কসম! আমিও তা এখনও আদায় করতে পারিনি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি মদীনার বুতহান উপত্যকায় নেমে উযূ করলেন এবং সূর্যাস্তের পর ‘আসর সালাত আদায় করলেন, অতঃপর মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الوَلِيدُ: ذَكَرْتُ لِلْأَوْزَاعِيِّ صَلَاةَ شُرَحْبِيلَ بْنِ السِّمْطِ وَأَصْحَابِهِ عَلَى ظَهْرِ الدَّابَّةِ، فَقَالَ: «كَذَلِكَ الأَمْرُ عِنْدَنَا إِذَا تُخُوِّفَ الفَوْتُ» وَاحْتَجَّ الوَلِيدُ: بِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ العَصْرَ إِلَّا فِي بَنِي قُرَيْظَةَ»
ওয়ালীদ (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, আমি ইমাম আওযায়ী (রহমাহুল্লাহ)-এর নিকট শুরাহ্বীল ইব্ন সিমত (রহমাহুল্লাহ) ও তার সঙ্গীগণের সওয়ার অবস্থায় তাঁদের সালাতের উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেন, সালাত ফাওত হওয়ার আশংকা থাকলে আমাদের নিকট ওটাই প্রচলিত নিয়ম। এর দলীল হিসেবে ওয়ালীদ (রহমাহুল্লাহ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নির্দেশ পেশ করেনঃ “তোমাদের কেউ যেন বাণী কুরায়যায় (এলাকায়) পৌঁছার আগে আসর সালাত আদায় না করে।”
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۶ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ، قَالَ: حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ: «لَا يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ العَصْرَ إِلَّا فِي بَنِي قُرَيْظَةَ» فَأَدْرَكَ بَعْضَهُمُ العَصْرُ فِي الطَّرِيقِ، فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لَا نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذَلِكَ، فَذُكِرَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ ইব্ন আস্মা’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুওয়ায়্রিইয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, “বনূ কুরাইযাহ এলাকায় পৌঁছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সালাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌঁছে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সালাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাঁদের কারোর ব্যাপারে কড়াকড়ি করেননি।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ العَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، وَثَابِتٍ البُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الصُّبْحَ بِغَلَسٍ، ثُمَّ رَكِبَ فَقَالَ: ” اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ، إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ: {فَسَاءَ صَبَاحُ المُنْذَرِينَ} [الصافات: ۱۷۷] ” فَخَرَجُوا يَسْعَوْنَ فِي السِّكَكِ وَيَقُولُونَ: مُحَمَّدٌ وَالخَمِيسُ – قَالَ: وَالخَمِيسُ الجَيْشُ – فَظَهَرَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَتَلَ المُقَاتِلَةَ وَسَبَى الذَّرَارِيَّ، فَصَارَتْ صَفِيَّةُ لِدِحْيَةَ الكَلْبِيِّ، وَصَارَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، ثُمَّ تَزَوَّجَهَا، وَجَعَلَ صَدَاقَهَا عِتْقَهَا ” فَقَالَ عَبْدُ العَزِيزِ، لِثَابِتٍ: يَا أَبَا مُحَمَّدٍ أَنْتَ سَأَلْتَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ: مَا أَمْهَرَهَا؟ قَالَ: أَمْهَرَهَا نَفْسَهَا، فَتَبَسَّمَ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দূল ‘আযীয ইব্ন স্বুহায়ব এবং ছাবিত বুনানী থেকে, তারা আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একদিন) ফজরের সালাত অন্ধকার থাকতে আদায় করলেন। অতঃপর সওয়ারীতে আরোহণ করলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ আক্বার, খায়বার ধ্বংস হোক! যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের এলাকায় অবতরণ করি তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হয় কতই না মন্দ! তখন তারা (ইয়াহূদীরা) বের হয়ে গলির মধ্যে দৌড়াতে লাগল এবং বলতে লাগল, মুহাম্মাদ ও তাঁর খামীস এসে গেছে। বর্ণনাকারী বলেন, খামীস হচ্ছে সৈন্য-সামন্ত। পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উপর জয়লাভ করেন। তিনি যোদ্ধাদের হত্যা করলেন এবং নারী-শিশুদের বন্দী করলেন। তখন সফিয়্যাহ প্রথম দিহ্ইয়া কালবীর এবং পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অংশে পড়ল। অতঃপর তিনি তাঁকে বিয়ে করেন এবং তাঁর মুক্তিদানকে মাহ্ররূপে গণ্য করেন। ‘আবদুল ‘আযীয (রহমাহুল্লাহ) সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট জানতে চাইলেন, তাঁকে কি মোহর দেয়া হয়েছিল? তা কি আপনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করেছিলেন? তিনি বললেন, তাঁর মুক্তিই তাঁর মোহর, আর মুচ্কি হাসলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۸ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ: أَخَذَ عُمَرُ جُبَّةً مِنْ إِسْتَبْرَقٍ تُبَاعُ فِي السُّوقِ، فَأَخَذَهَا، فَأَتَى بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ابْتَعْ هَذِهِ تَجَمَّلْ بِهَا لِلْعِيدِ وَالوُفُودِ، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ» فَلَبِثَ عُمَرُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَلْبَثَ، ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِجُبَّةِ دِيبَاجٍ، فَأَقْبَلَ بِهَا عُمَرُ، فَأَتَى بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: إِنَّكَ قُلْتَ: «إِنَّمَا هَذِهِ لِبَاسُ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ» وَأَرْسَلْتَ إِلَيَّ بِهَذِهِ الجُبَّةِ، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَبِيعُهَا أَوْ تُصِيبُ بِهَا حَاجَتَكَ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা নিয়ে ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি এটি ক্রয় করে নিন। ‘ঈদের সময় এবং প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এটি দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ এটি তো তার পোষাক, যার (আখিরাতে) কল্যানের কোন অংশ নেই। এ ঘটনার পর ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আল্লাহ্র যত দিন ইচ্ছা ততদিন অতিবাহিত করলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তা গ্রহণ করেন এবং সেটি নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি তো বলেছিলেন, এটা তার পোষাক যার (আখিরাতে) কল্যাণের কোন অংশ নেই। অথচ আপনি এ জুব্বা আমার নিকট পাঠিয়েছেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ তুমি এটি বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে তোমার প্রয়োজন পূরণ কর।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۴۹ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عِيسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَمْرٌو، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَسَدِيَّ، حَدَّثَهُ عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعِنْدِي جَارِيَتَانِ تُغَنِّيَانِ بِغِنَاءِ بُعَاثَ، فَاضْطَجَعَ عَلَى الفِرَاشِ، وَحَوَّلَ وَجْهَهُ، وَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ، فَانْتَهَرَنِي وَقَالَ: مِزْمَارَةُ الشَّيْطَانِ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: «دَعْهُمَا»، فَلَمَّا غَفَلَ غَمَزْتُهُمَا فَخَرَجَتَا
আহ্মাদ ইব্নু ‘ঈসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আম্র আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘আব্দুর রহ্মান আসাদী থেকে, তিনি ‘উরওয়া থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এলেন তখন আমার নিকট দু’টি মেয়ে বু’আস যুদ্ধ সংক্রান্ত গান গাইছিল। তিনি বিছানায় শুয়ে পড়লেন এবং চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখলেন। এ সময় আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এসে আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, শয়তানী বাদ্যযন্ত্র ১ (দফ্) বাজান হচ্ছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট! তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তাদের ছেড়ে দাও। অতঃপর তিনি যখন অন্য দিকে ফিরলেন তখন আমি তাদের ইঙ্গিত করলাম আর তারা বেরিয়ে গেল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ ১. দফ্ এক প্রকার এক মুখো ঢোল।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۰ – وَكَانَ يَوْمَ عِيدٍ، يَلْعَبُ السُّودَانُ بِالدَّرَقِ وَالحِرَابِ، فَإِمَّا سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِمَّا قَالَ: «تَشْتَهِينَ تَنْظُرِينَ؟» فَقُلْتُ: نَعَمْ، فَأَقَامَنِي وَرَاءَهُ، خَدِّي عَلَى خَدِّهِ، وَهُوَ يَقُولُ: «دُونَكُمْ يَا بَنِي أَرْفِدَةَ» حَتَّى إِذَا مَلِلْتُ، قَالَ: «حَسْبُكِ؟» قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «فَاذْهَبِي»
এবং (পূর্বের হাদীসটির পরের অংশ) ‘ঈদের দিন সুদানীরা বর্শা ও ঢালের খেলা করত। আমি নিজে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করেছিলাম অথবা তিনি নিজেই বলেছিলেন, তুমি কি তাদের খেলা দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ, অতঃপর তিনি আমাকে তাঁর পিছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার গাল ছিল তাঁর গালের সাথে লাগান। তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা করছিলে তা করতে থাক, হে বনূ আরফিদা। পরিশেষে আমি যখন ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার দেখা কি যথেষ্ট হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ, তিনি বললেন, তা হলে চলে যাও।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۱ – حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ : أَخْبَرَنِي زُبَيْدٌ، قَالَ: سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، عَنِ البَرَاءِ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَالَ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ مِنْ يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ، فَنَنْحَرَ فَمَنْ فَعَلَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا»
হা’জ্জাজ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুবায়দ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি শা‘আবী থেকে শুনলাম, তিনি বারা’আ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে খুত্বা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, “আমাদের আজকের এ দিনে আমরা যে কাজ প্রথম শুরু করব, তা হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে আসব এবং কুরবাণী করব। তাই যে এ রকম করে সে আমাদের রীতি সঠিকভাবে মান্য করল।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۲ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: دَخَلَ أَبُو بَكْرٍ وَعِنْدِي جَارِيَتَانِ مِنْ جَوَارِي الأَنْصَارِ تُغَنِّيَانِ بِمَا تَقَاوَلَتِ الأَنْصَارُ يَوْمَ بُعَاثَ، قَالَتْ: وَلَيْسَتَا بِمُغَنِّيَتَيْنِ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: أَمَزَامِيرُ الشَّيْطَانِ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذَلِكَ فِي يَوْمِ عِيدٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيدًا وَهَذَا عِيدُنَا»
‘উবায়দ ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন: তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, (একদিন আমার ঘরে) আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এলেন তখন আমার কাছে আনসারী দু’টি মেয়ে বু’আস যুদ্ধের দিন আনসারীগণ পরস্পর যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে গান গাইছিল। তিনি বলেন, তারা কোন পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘরে শয়তানী বাদ্যযন্ত্র। আর এটি ছিল ‘ঈদের দিন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ বক্র! প্রত্যেক জাতির জন্যই আনন্দ উৎসব রয়েছে আর এ হলো আমাদের আনন্দের দিন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۳ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَغْدُو يَوْمَ الفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ تَمَرَاتٍ» وَقَالَ مُرَجَّأُ بْنُ رَجَاءٍ، حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، «وَيَأْكُلُهُنَّ وِتْرًا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আব্দুর রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হুশায়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু আবূ বাক্র ইব্ন আনাস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্রের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক বর্ণনায় আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তা বিজোড় সংখ্যায় খেতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۴ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ الصَّلَاةِ، فَلْيُعِدْ»، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَذَا يَوْمٌ يُشْتَهَى فِيهِ اللَّحْمُ، وَذَكَرَ مِنْ جِيرَانِهِ، فَكَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدَّقَهُ، قَالَ: وَعِنْدِي جَذَعَةٌ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ شَاتَيْ لَحْمٍ، فَرَخَّصَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَا أَدْرِي أَبَلَغَتِ الرُّخْصَةُ مَنْ سِوَاهُ أَمْ لَا
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়য়ুব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন সিরীন থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “সালাতের পূর্বে যে যবেহ্ করবে তাকে পুনরায় যবেহ্ করতে হবে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আজকের এ দিনটিতে গোশত খাবার আকাঙ্ক্ষা করা হয়। সে তার প্রতিবেশীদের অবস্থা উল্লেখ করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেন তার কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। সে বলল, আমার নিকট এখন ছয় মাসের এমন একটি মেষ শাবক আছে, যা আমার নিকট দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বক্রীর চাইতেও অধিক পছন্দনীয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সেটা কুরবাণী করার অনুমতি দিলেন। অবশ্য আমি জানি না, এ অনুমতি তাকে ছাড়া অন্যদের জন্যও কি-না?”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۵ – حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: خَطَبَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الأَضْحَى بَعْدَ الصَّلَاةِ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى صَلَاتَنَا، وَنَسَكَ نُسُكَنَا، فَقَدْ أَصَابَ النُّسُكَ، وَمَنْ نَسَكَ قَبْلَ الصَّلَاةِ، فَإِنَّهُ قَبْلَ الصَّلَاةِ وَلَا نُسُكَ لَهُ»، فَقَالَ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ خَالُ البَرَاءِ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَإِنِّي نَسَكْتُ شَاتِي قَبْلَ الصَّلَاةِ، وَعَرَفْتُ أَنَّ اليَوْمَ يَوْمُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ، وَأَحْبَبْتُ أَنْ تَكُونَ شَاتِي أَوَّلَ مَا يُذْبَحُ فِي بَيْتِي، فَذَبَحْتُ شَاتِي وَتَغَدَّيْتُ قَبْلَ أَنْ آتِيَ الصَّلَاةَ، قَالَ: «شَاتُكَ شَاةُ لَحْمٍ» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَإِنَّ عِنْدَنَا عَنَاقًا لَنَا جَذَعَةً هِيَ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ شَاتَيْنِ، أَفَتَجْزِي عَنِّي؟ قَالَ: «نَعَمْ وَلَنْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ»
‘উসমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন: তিনি বললেন: জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মানস্বুর থেকে, তিনি শা‘আবী থেকে, তিনি বারা’আ ইব্নু ‘আযিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহার দিন সালাতের পর আমাদের উদ্দেশে খুত্বা দান করেন। খুত্বা্য় তিনি বলেন, “যে আমাদের মত সালাত আদায় করল এবং আমাদের মত কুরবাণী করল, সে কুরবাণীর রীতিনীতি যথাযথ পালন করল। আর যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবাণী করল তা সালাতের পূর্বে হয়ে গেল, এতে তার কুরবাণী হবে না। বারা’আ-এর মামা আবূ বুরদাহ্ ইব্নু নিয়ার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তখন বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার জানা মতে আজকের দিনটি পানাহারের দিন। তাই আমি পছন্দ করলাম যে, আমার ঘরে সর্বপ্রথম যবেহ্ করা হোক আমার বক্রীই। তাই আমি আমার বক্রীটি যবেহ্ করেছি এবং সালাতে আসার পূর্বে তা দিয়ে নাশ্তাও করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার বক্রীটি গোশ্তের উদ্দেশ্যে যবেহ্ করা হয়েছে। তখন তিনি আরয করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের নিকট এমন একট ছয় মাসের মেষ শাবক আছে যা আমার নিকট দু’টি বক্রীর চাইতেও পছন্দনীয়। এটি (কুরবাণী করলে) কি আমার জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তবে তুমি ছাড়া অন্য কারো জন্য যথেষ্ট হবে না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۶ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْرُجُ يَوْمَ الفِطْرِ وَالأَضْحَى إِلَى المُصَلَّى، فَأَوَّلُ شَيْءٍ يَبْدَأُ بِهِ الصَّلَاةُ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ، فَيَقُومُ مُقَابِلَ النَّاسِ، وَالنَّاسُ جُلُوسٌ عَلَى صُفُوفِهِمْ فَيَعِظُهُمْ، وَيُوصِيهِمْ، وَيَأْمُرُهُمْ، فَإِنْ كَانَ يُرِيدُ أَنْ يَقْطَعَ بَعْثًا قَطَعَهُ، أَوْ يَأْمُرَ بِشَيْءٍ أَمَرَ بِهِ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ» قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: «فَلَمْ يَزَلِ النَّاسُ عَلَى ذَلِكَ حَتَّى خَرَجْتُ مَعَ مَرْوَانَ – وَهُوَ أَمِيرُ المَدِينَةِ – فِي أَضْحًى أَوْ فِطْرٍ، فَلَمَّا أَتَيْنَا المُصَلَّى إِذَا مِنْبَرٌ بَنَاهُ كَثِيرُ بْنُ الصَّلْتِ، فَإِذَا مَرْوَانُ يُرِيدُ أَنْ يَرْتَقِيَهُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ، فَجَبَذْتُ بِثَوْبِهِ، فَجَبَذَنِي، فَارْتَفَعَ، فَخَطَبَ قَبْلَ الصَّلَاةِ»، فَقُلْتُ لَهُ: غَيَّرْتُمْ وَاللَّهِ، فَقَالَ أَبَا سَعِيدٍ: «قَدْ ذَهَبَ مَا تَعْلَمُ»، فَقُلْتُ: مَا أَعْلَمُ وَاللَّهِ خَيْرٌ مِمَّا لَا أَعْلَمُ، فَقَالَ: «إِنَّ النَّاسَ لَمْ يَكُونُوا يَجْلِسُونَ لَنَا بَعْدَ الصَّلَاةِ، فَجَعَلْتُهَا قَبْلَ الصَّلَاةِ»
সা‘ঈদ ইব্নু আবূ মারইয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যায়দ ইব্নু আসলাম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘ইয়াযি ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ আবূ ছারহ’ থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, ((নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ঈদুল ফিত্র ও ‘ঈদুল আযহার দিন ‘ঈদমাঠে যেতেন এবং সেখানে তিনি প্রথম যে কাজ শুরু করতেন তা হল সালাত। আর সালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা তাঁদের কাতারে বসে থাকতেন। তিনি তাঁদের নসীহত করতেন, উপদেশ দিতেন এবং নির্দেশ দান করতেন। যদি তিনি কোন সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছা করতেন, তবে তাদের আলাদা করে নিতেন। অথবা যদি কোন বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছা করতেন তবে তা জারি করতেন। অতঃপর তিনি ফিরে যেতেন। আবূ সা’ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, লোকেরা বরাবর এ নিয়মই অনুসরণ করে আসছিল। অবশেষে যখন মারওয়ান মদীনার ‘আমীর হলেন, তখন ’ঈদুল আযহা বা ‘ঈদুল ফিত্রের উদ্দেশে আমি তাঁর সঙ্গে বের হলাম। আমরা যখন ‘ঈদমাঠে পৌঁছলাম তখন সেখানে একটি মিম্বর দেখতে পেলাম, সেটি কাসীর ইব্নু সাল্ত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তৈরী করেছিলেন। মারওয়ান সালাত আদায়ের পূর্বেই এর উপর আরোহণ করতে উদ্যত হলেন। আমি তাঁর কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু তিনি কাপড় ছাড়িয়ে খুত্বা দিলেন। আমি তাকে বললাম, আল্লাহ্র কসম! তোমরা (রসূলের সুন্নাত) পরিবর্তন করে ফেলেছ। সে বলল, হে আবূ সা’ঈদ! তোমরা যা জানতে, তা গত হয়ে গেছে। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি যা জানি, তা তার চেয়ে ভাল (যা তুমি বলতে চাচ্ছ), তা আমি জানি না। সে তখন বলল, লোকজন সালাতের পর আমাদের জন্য বসে থাকে না, তাই ওটা সালাতের আগেই করেছি।))
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۷ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي فِي الأَضْحَى وَالفِطْرِ، ثُمَّ يَخْطُبُ بَعْدَ الصَّلَاةِ»
ইব্রাহীম ইব্নু মুনযির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু ‘ইয়ায আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহা ও ‘ঈদুল ফিত্রের দিন সালাত আদায় করতেন। আর সালাতের পরে খুত্বা দিতেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۸ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمَ الفِطْرِ، فَبَدَأَ بِالصَّلَاةِ قَبْلَ الخُطْبَةِ»
ইব্রাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন জুরায়জ থেকে, তিনি বললেন: ‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্রের দিন বের হন। অতঃপর খুত্বা্র পূর্বে সালাত শুরু করেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۵۹ – قَالَ: وَأَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَرْسَلَ إِلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ فِي أَوَّلِ مَا بُويِعَ لَهُ «إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ بِالصَّلَاةِ يَوْمَ الفِطْرِ، إِنَّمَا الخُطْبَةُ بَعْدَ الصَّلَاةِ»
(পূর্বের হাদীসটির পর থেকে) তিনি বললেন: ‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, ইব্নু যুবায়র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর বায়’আত গ্রহণের প্রথম দিকে ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর কাছে এ বলে লোক পাঠালেন যে, “‘ঈদুল ফিত্রের সালাতে আযান দেয়া হতো না এবং খুত্বা হল সালাতের পরে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۰ – وأَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَا: «لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ يَوْمَ الفِطْرِ وَلَا يَوْمَ الأَضْحَى»
‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তাঁরা বললেন, “‘ঈদুল ফিতরের সালাতে কিংবা ‘ঈদুল আযহার সালাতে আযান দেয়া হত না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۱ – وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ فَبَدَأَ بِالصَّلَاةِ، ثُمَّ خَطَبَ النَّاسَ بَعْدُ، فَلَمَّا فَرَغَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَزَلَ، فَأَتَى النِّسَاءَ، فَذَكَّرَهُنَّ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى يَدِ بِلَالٍ، وَبِلَالٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ صَدَقَةً» قُلْتُ لِعَطَاءٍ: أَتَرَى حَقًّا عَلَى الإِمَامِ الآنَ: أَنْ يَأْتِيَ النِّسَاءَ فَيُذَكِّرَهُنَّ حِينَ يَفْرُغُ؟ قَالَ: «إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ عَلَيْهِمْ وَمَا لَهُمْ أَنْ لَا يَفْعَلُوا»
এবং জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: ((নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রথমে সালাত আদায় করলেন এবং পরে লোকদের উদ্দেশে খুত্বা দিলেন। যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুত্বা শেষ করলেন, তিনি (মিম্বর হতে) নেমে মহিলাগণের (কাতারের) নিকট আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করলেন। তখন তিনি বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর হাতে ভর করেছিলেন এবং বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর কাপড় ছড়িয়ে ধরলে, নারীরা এতে সদাকার বস্তু ফেলতে লাগলেন।)) আমি ‘আতা (রহমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এখনো যরুরী মনে করেন যে, ইমাম খুত্বা শেষ করে নারীদের নিকট এসে তাদের নসীহত করবেন? তিনি বললেন, নিশ্চয় তা তাদের জন্য অবশ্যই জরুরী। তাদের কী হয়েছে যে, তাঁরা তা করবে না?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۲ – حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي الحَسَنُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: «شَهِدْتُ العِيدَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، فَكُلُّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ قَبْلَ الخُطْبَةِ»
আবূ ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হাসান ইব্নু মুসলিম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ত্বাবুস থেকে, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বক্র, ‘উমর এবং ‘উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহুম-এর সঙ্গে সালাতে হাযির ছিলাম। সকলেই খুত্বার আগে সালাত আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۳ – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يُصَلُّونَ العِيدَيْنِ قَبْلَ الخُطْبَةِ»
ইয়াক্বুব ইব্নু ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বক্র এবং ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) উভয় ‘ঈদের সালাত খুত্বার আগে আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۴ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى يَوْمَ الفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلَا بَعْدَهَا، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ وَمَعَهُ بِلَالٌ، فَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَجَعَلْنَ يُلْقِينَ تُلْقِي المَرْأَةُ خُرْصَهَا وَسِخَابَهَا»
সুলায়মান ইব্নু হা’রব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আদী ইব্ন ছাবিত থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিত্রে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি। অতঃপর বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে সঙ্গে নিয়ে নারীদের নিকট এলেন এবং সদাকা প্রদানের জন্য তাদের নির্দেশ দিলেন। তখন তাঁরা দিতে লাগলেন। নারীদের কেউ দিলেন আংটি, আবার কেউ দিলেন গলার হার।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۵ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا زُبَيْدٌ، قَالَ: سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ نَحَرَ قَبْلَ الصَّلَاةِ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ قَدَّمَهُ لِأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسْكِ فِي شَيْءٍ» فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ذَبَحْتُ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ، فَقَالَ: «اجْعَلْهُ مَكَانَهُ وَلَنْ تُوفِيَ أَوْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুবায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি শা‘আবী শুনলাম, তিনি বারা’আ ইব্নু ‘আযিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ((আজকের এ দিনে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সালাত আদায় করা। অতঃপর আমরা ফিরে আসব এবং কুরবাণী করব। কাজেই যে ব্যক্তি তা করল, সে আমাদের নিয়ম পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবাণী করল, তা শুধু গোশ্ত বলেই গণ্য হবে, যা সে পরিবারবর্গের জন্য পূর্বেই করে ফেলেছে। এতে কুরবাণীর কিছুই নেই। তখন আবূ বুরদাহ ইব্নু নিয়ার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নামক এক আনসারী বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি তো যবেহ্ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট এমন একটি মেষ শাবক আছে যা এক বছর বয়সের মেষের চেয়ে উৎকৃষ্ট। তিনি বললেন, সেটির স্থলে এটাকে যবেহ্ করে দাও। তবে তোমার পর অন্য কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে না।))
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الحَسَنُ: «نُهُوا أَنْ يَحْمِلُوا السِّلَاحَ يَوْمَ عِيدٍ إِلَّا أَنْ يَخَافُوا عَدُوًّا»
হাসান বাসরী (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, শত্রুর ভয় ছাড়া ‘ঈদের দিনে অস্ত্র বহণ করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۶ – حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى أَبُو السُّكَيْنِ، قَالَ: حَدَّثَنَا المُحَارِبِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُوقَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ: كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ حِينَ أَصَابَهُ سِنَانُ الرُّمْحِ فِي أَخْمَصِ قَدَمِهِ، فَلَزِقَتْ قَدَمُهُ بِالرِّكَابِ، فَنَزَلْتُ، فَنَزَعْتُهَا وَذَلِكَ بِمِنًى، فَبَلَغَ الحَجَّاجَ فَجَعَلَ يَعُودُهُ، فَقَالَ الحَجَّاجُ: لَوْ نَعْلَمُ مَنْ أَصَابَكَ، فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ: «أَنْتَ أَصَبْتَنِي» قَالَ: وَكَيْفَ؟ قَالَ: «حَمَلْتَ السِّلَاحَ فِي يَوْمٍ لَمْ يَكُنْ يُحْمَلُ فِيهِ، وَأَدْخَلْتَ السِّلَاحَ الحَرَمَ وَلَمْ يَكُنِ السِّلَاحُ يُدْخَلُ الحَرَمَ»
যাকারীয়া ইব্নু ইয়াহ’ইয়া আবূ সুকায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’রিবী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু সূক্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আমি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সংগে ছিলাম যখন বর্শার অগ্রভাগ তাঁর পায়ের তলদেশে বিদ্ধ হয়েছিল। ফলে তাঁর পা রেকাবের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। আমি তখন নেমে সেটি টেনে বের করে ফেললাম। এটা ঘটেছিল মিনায়। এ সংবাদ হাজ্জাজের নিকট পৌঁছলে তিনি তাঁকে দেখতে আসেন। হাজ্জাজ বললো, যদি আমি জানতে পারতাম কে আপনাকে আঘাত করেছে, (তবে তাকে শাস্তি দিতাম)। তখন ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তুমিই আমাকে আঘাত করেছ। সে বলল, তা কিভাবে? ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তুমিই সেদিন (ঈদের দিন) অস্ত্র ধারণ করেছ, যে দিন অস্ত্র বহন করা হতো না। তুমিই অস্ত্রকে হারামের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছ অথচ হারামের মধ্যে কখনো অস্ত্র প্রবেশ করা হয় না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۷ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوبَ، قَالَ: حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ العَاصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: دَخَلَ الحَجَّاجُ عَلَى ابْنِ عُمَرَ وَأَنَا عِنْدَهُ، فَقَالَ: كَيْفَ هُوَ؟ فَقَالَ: صَالِحٌ، فَقَالَ: مَنْ أَصَابَكَ؟ قَالَ: «أَصَابَنِي مَنْ أَمَرَ بِحَمْلِ السِّلَاحِ فِي يَوْمٍ لَا يَحِلُّ فِيهِ حَمْلُهُ» يَعْنِي الحَجَّاجَ
আহ্’মাদ ইব্নু ইয়া‘আ্ক্বুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসহা’ক্ব ইব্নু সা‘ঈদ ইব্ন ‘আম্র ইব্ন সা‘ঈদ ইব্ন ‘আস্ব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- এর নিকট হাজ্জাজ এলো। আমি তখন তাঁর নিকট ছিলাম। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, তিনি কেমন আছেন? ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, ভাল। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলো, আপনাকে কে আঘাত করেছে? তিনি বললেন আমাকে সে ব্যক্তি আঘাত করেছে যে, সে দিন অস্ত্র বহনের আদেশ দিয়েছে যে দিন তা বহন করা বৈধ নয়। অর্থাৎ হাজ্জাজ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُسْرٍ: «إِنْ كُنَّا فَرَغْنَا فِي هَذِهِ السَّاعَةِ وَذَلِكَ حِينَ التَّسْبِيحِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু বুস্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন, আমরা চাশ্তের সালাতের সময় ‘ঈদের সালাত সমাপ্ত করতাম।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۸ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ البَرَاءِ، قَالَ: خَطَبَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ، قَالَ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ، فَنَنْحَرَ فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ، فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ عَجَّلَهُ لِأَهْلِهِ لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَيْءٍ»، فَقَامَ خَالِي أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَا ذَبَحْتُ قَبْلَ أَنْ أُصَلِّيَ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ قَالَ: ” اجْعَلْهَا مَكَانَهَا – أَوْ قَالَ: اذْبَحْهَا – وَلَنْ تَجْزِيَ جَذَعَةٌ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ “
সুলায়মান ইব্নু হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুবায়দ থেকে, তিনি শা‘আবী থেকে, তিনি বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন আমাদের উদ্দেশে খুত্বা দেন। তিনি বলেন, “আজকের দিনে আমাদের প্রথম কাজ হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে এসে কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের রীতি পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করবে, তা শুধু গোশতের জন্যই হবে, যা সে পরিবারের জন্য তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। কুরবানী সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।” তখন আমার মামা আবূ বুরদাহ ইব্নু নিয়ার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি তো সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করে ফেলেছি। তবে এখন আমার নিকট এমন একটি মেষশাবক আছে যা ‘মুসিন্না’ ১ মেষের চাইতেও উত্তম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার স্থলে এটিই (কুরবানী) করে নাও। অথবা তিনি বললেনঃ এটিই যবেহ্ কর। তবে তুমি ব্যতীত আর কারো জন্যই মেষ শাবক যথেষ্ট হবে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১। ‘মুসিন্না’ অর্থ যার বয়স এক বছর পূর্ণ হয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়েছে।
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: ” وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ: أَيَّامُ العَشْرِ، وَالأَيَّامُ المَعْدُودَاتُ: أَيَّامُ التَّشْرِيقِ ” وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ، وَأَبُو هُرَيْرَةَ: «يَخْرُجَانِ إِلَى السُّوقِ فِي أَيَّامِ العَشْرِ يُكَبِّرَانِ، وَيُكَبِّرُ النَّاسُ بِتَكْبِيرِهِمَا» وَكَبَّرَ مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ خَلْفَ النَّافِلَةِ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, وَٱذْكُرُواۡ ٱللَّهَ فِىٓ أَيَّامٍ مَّعْدُودَٰتٍۚ [সূরা আল বাকারা ২:২০৩] দ্বারা (যিলহাজ্জ মাসের) দশ দিন বুঝায় এবং وَالْأَيَّامُ الْمَعْدُودَاتُ দ্বারা ‘আইয়ামুত তাশরীক’ বুঝায়। ইব্নু ‘উমার ও আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) এই দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবীরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবীর বলত। মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আলী (রহমাহুল্লাহ) নফল ১ সালাতে পরেও তাকবীর বলতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۶۹ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُسْلِمٍ البَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «مَا العَمَلُ فِي أَيَّامٍ أَفْضَلَ مِنْهَا فِي هَذِهِ؟» قَالُوا: وَلَا الجِهَادُ؟ قَالَ: «وَلَا الجِهَادُ، إِلَّا رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَيْءٍ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আর্‘আরাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুলায়মান থেকে, তিনি মুসলিম বাত্বীন থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন জাবীর থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়।” তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. এটি তাঁর নিজস্ব মত। অন্য ইমামগণের মতে শুধু ফরয সালাতের পরেই তাকবীর বলতে হয়।
وَكَانَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، «يُكَبِّرُ فِي قُبَّتِهِ بِمِنًى فَيَسْمَعُهُ أَهْلُ المَسْجِدِ، فَيُكَبِّرُونَ وَيُكَبِّرُ أَهْلُ الأَسْوَاقِ حَتَّى تَرْتَجَّ مِنًى تَكْبِيرًا» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ «يُكَبِّرُ بِمِنًى تِلْكَ الأَيَّامَ، وَخَلْفَ الصَّلَوَاتِ وَعَلَى فِرَاشِهِ وَفِي فُسْطَاطِهِ وَمَجْلِسِهِ، وَمَمْشَاهُ تِلْكَ الأَيَّامَ جَمِيعًا» وَكَانَتْ مَيْمُونَةُ: «تُكَبِّرُ يَوْمَ النَّحْرِ» وَكُنَّ «النِّسَاءُ يُكَبِّرْنَ خَلْفَ أَبَانَ بْنِ عُثْمَانَ، وَعُمَرَ بْنِ عَبْدِ العَزِيزِ لَيَالِيَ التَّشْرِيقِ مَعَ الرِّجَالِ فِي المَسْجِدِ»
‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) মিনায় নিজের তাবূতে তাকবীর বলতেন। মসজিদের লোকেরা তা শুনে তারাও তাকবীর বলতেন এবং বাজারের লোকেরাও তাকবীর বলতেন। ফলে সমস্ত মিনা তাকবীরে আওয়াযে গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সে দিনগুতে মিনায় তাকবীর বলতেন এবং সালাতের পরে, বিছানায়, খীমায়, মজলিসে এবং চলার সময় এ দিনগুলোত তাকবীর বলতেন। মাইমুনা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কুরবানীর দিন তাকবীর বলতেন এবং মহিলারা আবান ইব্নু ‘উসমান ও ‘উমর ইব্নু ‘আব্দুল ‘আযীয (রহমাহুল্লাহ)- এর পিছনে তাশরীকের রাতগুলোতে মাসজিদ পুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে তাকবীর বলতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۰ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ وَنَحْنُ غَادِيَانِ مِنْ مِنًى إِلَى عَرَفَاتٍ عَنِ التَّلْبِيَةِ، كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: «كَانَ يُلَبِّي المُلَبِّي، لَا يُنْكَرُ عَلَيْهِ، وَيُكَبِّرُ المُكَبِّرُ، فَلَا يُنْكَرُ عَلَيْهِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক ইব্নু আনাস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু আবূ বাক্র ছাক্বাফী আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, আমরা সকাল বেলা মিনা হতে যখন ‘আরাফাতের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট তালবিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কিরূপ করতেন? তিনি বললেন, “তালবিয়া পাঠকারী তালবিয়া পড়ত, তাকে নিষেধ করা হতো না। তাকবীর পাঠকারী তাকবীর পাঠ করত, তাকেও নিষেধ করা হতো না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۱ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ: «كُنَّا نُؤْمَرُ أَنْ نَخْرُجَ يَوْمَ العِيدِ حَتَّى نُخْرِجَ البِكْرَ مِنْ خِدْرِهَا، حَتَّى نُخْرِجَ الحُيَّضَ، فَيَكُنَّ خَلْفَ النَّاسِ، فَيُكَبِّرْنَ بِتَكْبِيرِهِمْ، وَيَدْعُونَ بِدُعَائِهِمْ يَرْجُونَ بَرَكَةَ ذَلِكَ اليَوْمِ وَطُهْرَتَهُ»
‘উমার ইব্নু হা’ফ্স্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আস্বিম থেকে, তিনি হা’ফ্স্বাহ থেকে, তিনি উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদের বের হবার আদেশ দেয়া হত। এমন কি আমরা কুমারী মেয়েদেরকেও অন্দর মহল হতে বের করতাম এবং ঋতুবতী মেয়েদেরকেও। তারা পুরুষদের পিছনে থাকতো এবং তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর বলতো এবং তাদের দু’আর সাথে দু’আ করত- সে দিনের বরকত এবং পবিত্রতা তারা আশা করত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۲ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ تُرْكَزُ الحَرْبَةُ قُدَّامَهُ يَوْمَ الفِطْرِ وَالنَّحْرِ، ثُمَّ يُصَلِّي»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, ‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে যুদ্ধের হাতিয়ার রেখে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۳ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ الحِزَامِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ : «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَغْدُو إِلَى المُصَلَّى وَالعَنَزَةُ بَيْنَ يَدَيْهِ تُحْمَلُ، وَتُنْصَبُ بِالْمُصَلَّى بَيْنَ يَدَيْهِ، فَيُصَلِّي إِلَيْهَا»
ইব্রাহীম ইব্নু মুন্যির হি’যামী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আম্র আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে খবর দিলেন ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: ‘ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে বর্শা পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۸۷۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ: «أَمَرَنَا نَبِيُّنَا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَنْ نُخْرِجَ العَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الخُدُورِ» وَعَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حَفْصَةَ بِنَحْوِهِ – وَزَادَ فِي حَدِيثِ – حَفْصَةَ، قَالَ: أَوْ قَالَتْ: «العَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الخُدُورِ، وَيَعْتَزِلْنَ الحُيَّضُ المُصَلَّى»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন (‘ঈদের সালাতের উদ্দেশে) যুবতী ও পর্দানশীন মেয়েদের নিয়ে যাবার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হতো। আইয়ুব (রহমাহুল্লাহ) হতে হাফসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে এবং হাফসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) হতে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বর্ণনা আছে, ‘ঈদগাহে ঋতুবতী নারীরা আলাদা থাকতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۵ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَابِسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ: «خَرَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ فِطْرٍ أَوْ أَضْحَى فَصَلَّى، ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ، فَوَعَظَهُنَّ، وَذَكَّرَهُنَّ، وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ»
‘আম্র ইব্নু ‘আব্বাস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ্’মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রহ্মান ইব্ন আব্বাস থেকে, তিনি বললেন: আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ‘ঈদুল ফিতর বা আযহার দিন বের হলাম। তিনি সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর নারীদের নিকট গিয়ে তাঁদের নসীহত করলেন এবং তাঁদেরকে সদকা করার নির্দেশ দিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُقَابِلَ النَّاسِ
আবূ সা‘ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۶ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ، عَنْ زُبَيْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ البَرَاءِ، قَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أَضْحًى إِلَى البَقِيعِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ، وَقَالَ: «إِنَّ أَوَّلَ نُسُكِنَا فِي يَوْمِنَا هَذَا، أَنْ نَبْدَأَ بِالصَّلَاةِ، ثُمَّ نَرْجِعَ، فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ وَافَقَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلَ ذَلِكَ، فَإِنَّمَا هُوَ شَيْءٌ عَجَّلَهُ لِأَهْلِهِ لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَيْءٍ» فَقَامَ رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي ذَبَحْتُ وَعِنْدِي جَذَعَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُسِنَّةٍ؟ قَالَ: «اذْبَحْهَا، وَلَا تَفِي عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু ত্বাল্হা’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুবায়দ থেকে, তিনি শা‘আ্বী থেকে, তিনি বারাআ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল আযহার দিন বাকী‘তে (নামে মাঠে) যান। অতঃপর তিনি দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে আমাদের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন এবং তিনি বললেন, আজকের দিনের প্রথম ‘ইবাদাত হল সালাত আদায় করা। অতঃপর ফিরে গিয়ে কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের নীতি অনুযায়ী কাজ করবে। আর যে এর পূর্বেই যবেহ্ করবে তা হলে তার যবেহ্ হবে এমন একটি কাজ, যা সে নিজের পরিবারবর্গের জন্যই তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে, এর সাথে কুরবানীর কোন সম্পর্ক নেই। তখন এক ব্যক্তি [আবূ বুরদাহ ইব্নু নিয়ার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)] দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি (পূবেই) যবেহ্ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট এমন একটি মেষশাবক আছে যা পূর্ণবয়স্ক মেষের চেয়ে উত্তম। (এটা কুরবানী করব কি?) তিনি বললেন, এটাই যবেহ্ কর। তবে তোমার পর আর কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قِيلَ لَهُ: أَشَهِدْتَ العِيدَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَلَوْلَا مَكَانِي مِنَ الصِّغَرِ مَا شَهِدْتُهُ حَتَّى أَتَى العَلَمَ الَّذِي عِنْدَ دَارِ كَثِيرِ بْنِ الصَّلْتِ، فَصَلَّى، ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ وَمَعَهُ بِلَالٌ، فَوَعَظَهُنَّ، وَذَكَّرَهُنَّ، وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَرَأَيْتُهُنَّ يَهْوِينَ بِأَيْدِيهِنَّ يَقْذِفْنَهُ فِي ثَوْبِ بِلَالٍ، ثُمَّ انْطَلَقَ هُوَ وَبِلَالٌ إِلَى بَيْتِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্নু ‘আব্বাস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে কখনো ‘ঈদে উপস্থিত হয়েছেন? তিনি বললেন হাঁ। যদি তাঁর নিকট আমার মর্যাদা না থকত তা হলে কম বয়সী হবার কারণে আমি ‘ঈদে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি বের হয়ে কাসীর ইব্নু সলাতের গৃহের নিকট স্থাপিত নিশানার নিকট এলেন এবং সালাত আদায় করলেন। অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর তিনি মহিলাগণের নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তাঁর সঙ্গে বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ছিলেন। তিনি নারীদের উপদেশ দিলেন, নসীহত করলেন এবং দান সদকা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমি তখন নারীদেরকে হতে বাড়িয়ে বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- এর কাপড়ে দান সামগ্রী ফেলতে দেখলাম। অতঃপর তিনি এবং বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নিজ বাড়ির দিকে চলে গেলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۸ – حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ نَصْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الفِطْرِ فَصَلَّى، فَبَدَأَ بِالصَّلَاةِ، ثُمَّ خَطَبَ، فَلَمَّا فَرَغَ نَزَلَ، فَأَتَى النِّسَاءَ، فَذَكَّرَهُنَّ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى يَدِ بِلَالٍ، وَبِلَالٌ بَاسِطٌ ثَوْبَهُ يُلْقِي فِيهِ النِّسَاءُ الصَّدَقَةَ» قُلْتُ لِعَطَاءٍ: زَكَاةَ يَوْمِ الفِطْرِ، قَالَ: لَا، وَلَكِنْ صَدَقَةً يَتَصَدَّقْنَ حِينَئِذٍ، تُلْقِي فَتَخَهَا، وَيُلْقِينَ، قُلْتُ: أَتُرَى حَقًّا عَلَى الإِمَامِ ذَلِكَ، وَيُذَكِّرُهُنَّ؟ قَالَ: إِنَّهُ لَحَقٌّ عَلَيْهِمْ، وَمَا لَهُمْ لَا يَفْعَلُونَهُ؟
ইসহা’ক ইব্নু ইব্রাহীম ইব্ন নাস্ব্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রাজ্জাক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন, পরে খুতবা দিলেন। খুতবা শেষে নেমে নারীদের নিকট আসলেন এবং তাঁদের নসীহত করলেন। তখন তিনি বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর হাতের উপর ভর দিয়ে ছিলেন এবং বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর কাপড় প্রসারিত করে ধরলেন। এতে নারীগণ দান সামগ্রী ফেলতে লাগলেন আমি (ইব্নু জুরায়জ) আত্বা (রহমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ কি ‘ঈদুল ফিতরের সদকা? তিনি বললেন না, বরং এ সাধারণ সদকা যা তাঁরা ঐ সময় দিচ্ছিলেন। কোন মহিলা তাঁর আংটি দান করলে অন্যান্য নারীরাও তাঁদের আংটি দান করতে লাগলেন। আমি আতা (রহমাহুল্লাহ)-কে (আবার), জিজ্ঞেস করলাম, মহিলাগণকে উপদেশ দেয়া কি ইমামের জন্য জরুরী? তিনি বললেন, অবশ্যই, তাদের উপর তা জরুরী। তাঁদের (অর্থাৎ ইমামগণের) কী হয়েছে যে, তাঁরা তা করবেন না?
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۷۹ – قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ: وَأَخْبَرَنِي الحَسَنُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: شَهِدْتُ الفِطْرَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ يُصَلُّونَهَا قَبْلَ الخُطْبَةِ، ثُمَّ يُخْطَبُ بَعْدُ، خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ حِينَ يُجَلِّسُ بِيَدِهِ، ثُمَّ أَقْبَلَ يَشُقُّهُمْ حَتَّى جَاءَ النِّسَاءَ مَعَهُ بِلَالٌ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ المُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ} [الممتحنة: 12] الآيَةَ، ثُمَّ قَالَ حِينَ فَرَغَ مِنْهَا: «آنْتُنَّ عَلَى ذَلِكِ؟» قَالَتِ امْرَأَةٌ وَاحِدَةٌ مِنْهُنَّ، لَمْ يُجِبْهُ غَيْرُهَا: نَعَمْ، – لَا يَدْرِي حَسَنٌ مَنْ هِيَ – قَالَ: «فَتَصَدَّقْنَ» فَبَسَطَ بِلَالٌ ثَوْبَهُ، ثُمَّ قَالَ: «هَلُمَّ، لَكُنَّ فِدَاءٌ أَبِي وَأُمِّي» فَيُلْقِينَ الفَتَخَ وَالخَوَاتِيمَ فِي ثَوْبِ بِلَالٍ قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ: ” الفَتَخُ: الخَوَاتِيمُ العِظَامُ كَانَتْ فِي الجَاهِلِيَّةِ “
ইব্নু জুরায়জ বললেন: হাসান ইব্নু মুসলিম (রহমাহুল্লাহ) তাউস (রহমাহুল্লাহ) এর মাধ্যমে ইব্নু আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) হতে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বক্র, ‘উমর ও উসমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহুম)-এর সঙ্গে ‘ঈদুল ফিতরে আমি উপস্থিত ছিলাম। তাঁরা খুতবার পূর্বে সালাত আদায় করতেন, পরে খুতবা দিতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তিনি হাতের ইঙ্গিতে (লোকদের) বসিয়ে দিচ্ছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে নবী ! যখন ঈমানদার মহিলাগণ আপনার নিকট এ শর্তে বায়‘আত করতে আসেন يَا اَيُّهَا النَّبِيُّ اِذَا جَاءَكَ المُؤمِنَاتَ يُبَايِعنَكَ – الاية (সূরাহ মুমতাহিনাহ ৬০:১২)। এ আয়াত শেষ করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা এ বায়‘আতের উপর আছ? তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা বলল, হাঁ, সে ছাড়া আর কেউ এর জবাব দিল না। হাসান (রহমাহুল্লাহ) জানেন না, সে মহিলা কে? অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সদকা কর। সে সময় বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর কাপড় প্রসারিত করে বললেন, আমার মা-বাপ আপনাদের জন্য কুরবান হোক, আসুন, আপনারা দান করুন। তখন নারীগণ তাঁদের ছোট-বড় আংটিগুলো বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর কাপড়ের মধ্যে ফেলতে লাগলেন। আবদুর রাযযাক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, — হলো বড় আংটি যা জাহিলী যুগে ব্যবহৃত হতো।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۰ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، قَالَتْ: كُنَّا نَمْنَعُ جَوَارِيَنَا أَنْ يَخْرُجْنَ يَوْمَ العِيدِ، فَجَاءَتِ امْرَأَةٌ، فَنَزَلَتْ قَصْرَ بَنِي خَلَفٍ، فَأَتَيْتُهَا، فَحَدَّثَتْ أَنَّ زَوْجَ أُخْتِهَا غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ غَزْوَةً، فَكَانَتْ أُخْتُهَا مَعَهُ فِي سِتِّ غَزَوَاتٍ، فَقَالَتْ: فَكُنَّا نَقُومُ عَلَى المَرْضَى، وَنُدَاوِي الكَلْمَى، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَعَلَى إِحْدَانَا بَأْسٌ إِذَا لَمْ يَكُنْ لَهَا جِلْبَابٌ أَنْ لَا تَخْرُجَ؟ فَقَالَ: «لِتُلْبِسْهَا صَاحِبَتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا، فَلْيَشْهَدْنَ الخَيْرَ وَدَعْوَةَ المُؤْمِنِينَ» قَالَتْ حَفْصَةُ: فَلَمَّا قَدِمَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ أَتَيْتُهَا فَسَأَلْتُهَا: أَسَمِعْتِ فِي كَذَا وَكَذَا؟ قَالَتْ: نَعَمْ بِأَبِي، وَقَلَّمَا ذَكَرَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا قَالَتْ: بِأَبِي قَالَ: ” لِيَخْرُجِ العَوَاتِقُ ذَوَاتُ الخُدُورِ – أَوْ قَالَ: العَوَاتِقُ وَذَوَاتُ الخُدُورِ، شَكَّ أَيُّوبُ – وَالحُيَّضُ، وَيَعْتَزِلُ الحُيَّضُ المُصَلَّى، وَلْيَشْهَدْنَ الخَيْرَ وَدَعْوَةَ المُؤْمِنِينَ ” قَالَتْ: فَقُلْتُ لَهَا: الحُيَّضُ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، أَلَيْسَ الحَائِضُ تَشْهَدُ عَرَفَاتٍ، وَتَشْهَدُ كَذَا، وَتَشْهَدُ كَذَا
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ূব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’ফসা বিন্ত সীরীন থেকে, তিনি বললেন, আমরা ‘ঈদের দিন আমাদের যুবতীদের বের হতে নিষেধ করতাম। একদা জনৈকা মহিলা এলেন এবং বনু খালাফের প্রাসাদে অবস্থান করলেন। আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি বললেন, তাঁর ভগ্নিপতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সাথে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, এর মধ্যে ছয়টি যুদ্ধে স্বয়ং তাঁর বোনও স্বামীর সাথে অংশগ্রহণ করেছেন, (মহিলা বলেন) আমার বোন বলেছেন, আমরা রুগ্নদের সেবা করতাম, আহতদের শুশ্রূষা করতাম। একবার তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! যদি আমাদের কারো ওড়না না থাকে, তখন কি সে বের হবে না? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ অবস্থায় তার বান্ধবী যেন তাকে নিজ ওড়না পরিধান করতে দেয় এবং এভাবে মহিলাগণ যেন কল্যাণকর কাজে ও মু‘মিনদের দু’আয় অংশগ্রহণ করেন। হাফসা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, যখন উম্মু আতিয়্যাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি কি এসব ব্যাপারে কিছু শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ, হাফসা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমরা পিতা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জন্য উৎসর্গিত হোক এবং তিনি যখনই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নাম উল্লেখ করতেন, তখনই একথা বলতেন। তাঁবুতে অবস্থানকারিণী যুবতীরা এবং ঋতুবতী নারীরা যেন বের হন। তবে ঋতুবতী নারীরা যেন সালাতের স্থান হতে সরে থাকেন। তারা সকলেই যেন কল্যাণকর কাজে ও মু’মিনদের দু’আয় অংশগ্রহণ করেন। হাফসা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি তাকে বললাম, ঋতুবতী নারীরাও? তিনি বললেন, হাঁ, ঋতুবতী নারী কি আরাফাত এবং অন্যান্য স্থানে উপস্থিত হয় না? ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۱ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، قَالَ: قَالَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ: ” أُمِرْنَا أَنْ نَخْرُجَ فَنُخْرِجَ الحُيَّضَ، وَالعَوَاتِقَ، وَذَوَاتِ الخُدُورِ – قَالَ ابْنُ عَوْنٍ: أَوِ العَوَاتِقَ ذَوَاتِ الخُدُورِ – فَأَمَّا الحُيَّضُ: فَيَشْهَدْنَ جَمَاعَةَ المُسْلِمِينَ، وَدَعْوَتَهُمْ وَيَعْتَزِلْنَ مُصَلَّاهُمْ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘আদী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন ‘আওন থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি বললেন: উম্মু আতিয়্যাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, (ঈদের দিন) আমাদেরকে বের হবার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তাই আমরা ঋতুবতী, যুবতী এবং তাঁবুতে অবস্থানকারিণী নারীদেরকে নিয়ে বের হতাম। ইব্নু ‘আওন (রহমাহুল্লাহ)-এর এক বর্ণনায় রয়েছে, অথবা তাঁবুতে অবস্থানকারিণী যুবতী নারীদেরকে নিয়ে বের হতাম। অতঃপর ঋতুবতী মহিলাগণ মুসলমানদের জামা‘আত এবং তাদের দু‘আয় অংশগ্রহণ করতেন। তবে ‘ঈদমাঠে পৃথকভাবে অবস্থান করতেন। ২
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. ও ২. অত্র হাদীস দ্বারা নারীদের ‘ঈদের মাঠে গমনের উপর কী পরিমাণ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তা স্পষ্ট প্রমাণিত।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۲ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي كَثِيرُ بْنُ فَرْقَدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَنْحَرُ، أَوْ يَذْبَحُ بِالْمُصَلَّى»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: কাছির ইব্নু ফারক্বাদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদেরমাঠে নাহর করতেন কিংবা যবেহ্ করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۳ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ المُعْتَمِرِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى صَلَاتَنَا، وَنَسَكَ نُسْكَنَا، فَقَدْ أَصَابَ النُّسُكَ، وَمَنْ نَسَكَ قَبْلَ الصَّلَاةِ، فَتِلْكَ شَاةُ لَحْمٍ»، فَقَامَ أَبُو بُرْدَةَ بْنُ نِيَارٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَاللَّهِ لَقَدْ نَسَكْتُ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ إِلَى الصَّلَاةِ، وَعَرَفْتُ أَنَّ اليَوْمَ يَوْمُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ، فَتَعَجَّلْتُ، وَأَكَلْتُ، وَأَطْعَمْتُ أَهْلِي، وَجِيرَانِي فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تِلْكَ شَاةُ لَحْمٍ» قَالَ: فَإِنَّ عِنْدِي عَنَاقَ جَذَعَةٍ هِيَ خَيْرٌ مِنْ شَاتَيْ لَحْمٍ، فَهَلْ تَجْزِي عَنِّي؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَلَنْ تَجْزِيَ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূল আহ্’ওয়াস্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মান্স্বূর ইব্নুল মু‘উ্তামির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শা‘আবী থেকে, তিনি বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, কুরবানীর দিন সালাতের পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে খুতবা দিলেন। খুতবায় তিনি বললেন, যে আমাদের মতো সালাত আদায় করবে এবং আমাদের কুরবানীর মত কুরবানী করবে, তার কুরবানী যথার্থ বলে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবানী করবে তার সে কুরবানী গোশ্ত খাওয়া ছাড়া আর কিছু হবে না। তখন আবূ বুরদাহ্ ইব্নু নিয়ার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম! আমি তো সালাতে বের হবার পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। আমি ভেবেছি যে, আজকের দিনটি তো পানাহারের দিন। তাই আমি তাড়াতাড়ি করে ফেলেছি। আমি নিজে খেয়েছি এবং আমার পরিবারবর্গ ও প্রতিবেশীদেরকেও আহার করিয়েছি। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ওটা গোশ্ত খাবার বকরী ছাড়া আর কিছু হয়নি। আবূ বুরদাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তবে আমার নিকট এমন একটি মেষ শাবক আছে যা দুটো (গোশ্ত খাওয়ার) বকরীর চেয়ে ভাল। এটা কি আমার পক্ষে কুরবানীর জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তবে তোমার পরে অন্য কারো জন্য যথেষ্ট হবে না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۴ – حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ: «إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى يَوْمَ النَّحْرِ، ثُمَّ خَطَبَ، فَأَمَرَ مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ الصَّلَاةِ أَنْ يُعِيدَ ذَبْحَهُ»، فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، جِيرَانٌ لِي – إِمَّا قَالَ: بِهِمْ خَصَاصَةٌ، وَإِمَّا قَالَ: بِهِمْ فَقْرٌ – وَإِنِّي ذَبَحْتُ قَبْلَ الصَّلَاةِ، وَعِنْدِي عَنَاقٌ لِي أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ شَاتَيْ لَحْمٍ، «فَرَخَّصَ لَهُ فِيهَا»
হা’মিদ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’ম্মাদ ইব্ন যায়দ থেকে, তিনি আয়্য়ুব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন সালাত আদায় করেন, অতঃপর খুতবা দিলেন। অতঃপর নির্দেশ দিলেন, যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে কুরবানী করেছে সে যেন পুনরায় কুরবানী করে। তখন আনসারদের মধ্য হতে জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার প্রতিবেশীরা ছিল উপবাসী অথবা বলেছেন দরিদ্র। তাই আমি সালাতের পূর্বেই যবেহ্ করে ফেলেছি। তবে আমার নিকট মেষশাবক আছে যা দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বকরির চাইতেও আমার নিকট অধিক পছন্দসই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সেটা কুরবানী করার অনুমতি দেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۵ – حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ جُنْدَبٍ، قَالَ: صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ، ثُمَّ خَطَبَ، ثُمَّ ذَبَحَ، فَقَالَ: «مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ، فَلْيَذْبَحْ أُخْرَى مَكَانَهَا، وَمَنْ لَمْ يَذْبَحْ، فَلْيَذْبَحْ بِاسْمِ اللَّهِ»
মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আসওয়াদ থেকে, তিনি জুনদাব ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর দিন সালাত আদায় করেন, অতঃপর খুতবা দেন। অতঃপর যবেহ্ করেন এবং তিনি বলেনঃ সালাতের পূর্বে যে ব্যক্তি যবেহ্ করবে তাকে তার স্থলে আর একটি যবেহ্ করতে হবে এবং যে যবেহ্ করেনি, আল্লাহর নামে তার যবেহ্ করা উচিত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۶ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ يَحْيَى بْنُ وَاضِحٍ، عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الحَارِثِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ يَوْمُ عِيدٍ خَالَفَ الطَّرِيقَ» تَابَعَهُ يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ فُلَيْحٍ، وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ: عَنْ فُلَيْحٍ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَحَدِيثُ جَابِرٍ أَصَحُّ
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তিনি হলেন ইব্নু সালাম, তিনি বললেন, আবূ তুমায়লাহ ইয়াহ্ইয়া ইব্নু ওয়াযিহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ফুলায়হ’ ইব্ন সুলায়মান থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন হা’রিছ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি জাবির রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদের দিন (বাড়ি ফেরার পথে) ভিন্ন পথে আসতেন”। ইউনুস ইব্নু মুহাম্মদ (রহমাহুল্লাহ) ফুলায়হ্-কে অনুসরণ করেছেন। এবং মুহাম্মাদ ইব্নু স্বালতি ফুলায়হ্ থেকে বললেন, তিনি সা‘ঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রাহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তবে জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে হাদীসটি অধিকতর বিশুদ্ধ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
لِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذَا عِيدُنَا أَهْلَ الإِسْلَامِ» وَأَمَرَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ مَوْلَاهُمْ ابْنَ أَبِي عُتْبَةَ بِالزَّاوِيَةِ فَجَمَعَ أَهْلَهُ وَبَنِيهِ، وَصَلَّى كَصَلَاةِ أَهْلِ المِصْرِ وَتَكْبِيرِهِمْ وَقَالَ عِكْرِمَةُ: «أَهْلُ السَّوَادِ يَجْتَمِعُونَ فِي العِيدِ، يُصَلُّونَ رَكْعَتَيْنِ كَمَا يَصْنَعُ الإِمَامُ» وَقَالَ عَطَاءٌ: «إِذَا فَاتَهُ العِيدُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ»
নারীগণ এবং যারা বাড়ী ও পল্লীতে আবস্থান করে তারাও এরূপ করবে। কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে মুসলিমগণ! এ হলো আমাদের ‘ঈদ। আর আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যাবিয়া নামক স্থানে তাঁর আযাদকৃত গোলাম ইব্নু আবূ উতবাকে এ আদেশ করেছিলেন। তাই তিনি তার পরিবারবর্গ ও সন্তান সন্ততিদের নিয়ে শহরের অধিবাসীদের ন্যায় তাকবীরসহ সালাত আদায় করেন এবং ইকরিমাহ (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, গ্রামের অধিবাসীরা ঈদের দিন সমবেত হয়ে ইমামের ন্যায় দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করবে। ‘আতা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, যখন কারো ‘ঈদের সালাত ছুটে যায় তখন সে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۷ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ مِنَى تُدَفِّفَانِ، وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَغَشٍّ بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ: «دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ، فَإِنَّهَا أَيَّامُ عِيدٍ، وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উর্ওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আবু বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর নিকট এলেন। এসময় মিনার দিবসগুলোর এক দিবসে তাঁর নিকট দুটি মেয়ে দফ বাজাচ্ছিলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর আবৃত অবস্থায় ছিলেন। তখন আবু বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) মেয়ে দু’টিকে ধমক দিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুখমণ্ডল হতে কাপড় সরিয়ে নিয়ে বললেন, হে আবু বক্র! ওদের বাধা দিওনা। কেননা, এসব ‘ঈদের দিন। আর সে দিনগুলো ছিলো মিনার দিন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۸ – وَقَالَتْ عَائِشَةُ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتُرُنِي وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الحَبَشَةِ وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي المَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ عُمَرُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي أَرْفِدَةَ» يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ
এবং ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, হাবশীরা যখন মসজিদে (এর প্রাঙ্গণে) খেলাধূলা করছিল, তখন আমি তাদের দেখছিলাম এবং আমি দেখেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আড়াল করে রেখেছেন। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হাবশীদের ধমক দিলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওদের ধমক দিওনা। হে বনূ আরফিদা! তোমরা যা করছিলে তা কর।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَبُو المُعَلَّى: سَمِعْتُ سَعِيدًا، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: «كَرِهَ الصَّلَاةَ قَبْلَ العِيدِ»
আবূ মুয়াল্লা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি সা‘ঈদ (রহমাহুল্লাহ)-কে ইব্ন আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বলতে শুনেছি যে, তিনি ‘ঈদের পূর্বে সালাত আদায় করা মাকরুহ মনে করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۸۹ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، قَالَ: سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمَ الفِطْرِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلَا بَعْدَهَا وَمَعَهُ بِلَالٌ»
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আদী ইবনু ছাবিত আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র থেকে হাদীসটি শুনলাম, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে সঙ্গে নিয়ে ‘ঈদুল ফিতরের দিন বের হয়ে দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করেন। তিনি এর পূর্বে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۰ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلَاةِ اللَّيْلِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ: «صَلَاةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خَشِيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ صَلَّى رَكْعَةً وَاحِدَةً تُوتِرُ لَهُ مَا قَدْ صَلَّى»
আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ এবং আব্দুল্লাহ ইব্ন দীনার থেকে, তিনি ইব্নু ‘ঊমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট রাতের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রাতের সালাত দু’ দু’ (রাক’আত) করে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ফজর হবার আশঙ্কা করে, সে যেন এক রাক’আত সালাত আদায় করে নেয়। আর সে যে সালাত আদায় করলো, তা তার জন্য বিত্র হয়ে যাবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. বিতর সালাত সুন্নাহ মুআক্বাদা। ফরয বা ওয়াজিব নয়। আর ওয়াজিব ও ফরয নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবা তাবিঈদের নিকট তথা হাদীসের দলিল অনুযায়ী একই বিষয়। আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিতর ফরয সালাতের মত বাধ্যতামূলক নয় বরং তা সুন্নাত যা প্রবর্তন করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদীসটি বর্ণনা করেছেন নাসাঈ ১৬৫৮, তিরমিযী হাদীস নং ৪৫৩, মুসান্নাফ ইব্ন আবী শাইবাহ ২/২৯৬, মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ৩/৩ হাদীস নং হাদীস নং ৪৫৬৯, সহীহ সুন নাসাঈ ১/৩৬৮। যে সমস্ত হাদীস ওয়াজিব সাব্যস্ত করার জন্য পেশ করা হয় তা দূর্বল কিংবা অস্পষ্ট। উপরোক্ত হাদীসের মত স্পষ্ট নয়। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন বুগ্ইয়াতুল মুতাত্বউয়ে ফী সালাতি তাত্বুওউ, পৃষ্ঠা ৪৬-৬৬। যারা বিতিরকে ওয়াজিব বলে তাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সাহাবা ‘উবাদাহ বিন সামিত মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন। দেখুন আবূ দাঊদ হাদীস নং ১৪২০।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۱ – وَعَنْ نَافِعٍ: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ: «كَانَ يُسَلِّمُ بَيْنَ الرَّكْعَةِ وَالرَّكْعَتَيْنِ فِي الوِتْرِ حَتَّى يَأْمُرَ بِبَعْضِ حَاجَتِهِ»
এবং নাফি’ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বিত্র সালাতের দু’ রাক’আতের মাঝে সালাম ফিরাতেন। অতঃপর কাউকে কোন প্রয়োজনীয় কাজের নির্দেশ দিতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۲ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ مَيْمُونَةَ وَهِيَ خَالَتُهُ فَاضْطَجَعْتُ فِي عَرْضِ وِسَادَةٍ «وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَهْلُهُ فِي طُولِهَا، فَنَامَ حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ – أَوْ قَرِيبًا مِنْهُ – فَاسْتَيْقَظَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ، ثُمَّ قَرَأَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ آلِ عِمْرَانَ، ثُمَّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ، فَتَوَضَّأَ، فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي»، فَصَنَعْتُ مِثْلَهُ، فَقُمْتُ إِلَى جَنْبهِ، «فَوَضَعَ يَدَهُ اليُمْنَى عَلَى رَأْسِي وَأَخَذَ بِأُذُنِي يَفْتِلُهَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَوْتَرَ، ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَهُ المُؤَذِّنُ، فَقَامَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ خَرَجَ، فَصَلَّى الصُّبْحَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক ইব্ন আনাস থেকে, তিনি মাখরামাহ ইব্ন সুলায়মান থেকে, তিনি কুরায় থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, একবার তিনি তাঁর খালা উম্মুল মু’মিনীন মাইমূনা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর ঘরে রাত কাটান। (তিনি বলেন) আমি বালিশের প্রস্থের দিক দিয়ে শয়ন করলাম এবং আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার পরিবার সেটির দৈর্ঘ্যের দিক দিয়ে শয়ন করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের অর্ধেক বা তার কাছাকাছি সময় পর্যন্ত ঘুমালেন। অতঃপর তিনি জাগ্রত হলেন এবং চেহারা হতে ঘুমের রেশ দূর করলেন। পরে তিনি সূরা আলে-ইমরানের (শেষ) দশ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। অতঃপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ঝুলন্ত মশ্কের নিকট গেলেন এবং উত্তমরূপে উযূ করলেন। অতঃপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তার মতই করলাম এবং তার পাশেই দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপর রাখলেন এবং আমার কান ধরে মুচরাইলেন বা ঘুরাইলেন (তাঁর ডান পাশে নিয়ে আসলেন)। অতঃপর তিনি দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর দু’ রাক’আত, অতঃপর দু’ রাক’আত, অতঃপর দু’ রাক’আত, অতঃপর দু’ রাক’আত, অতঃপর দু’ রাকাত। অতঃপর বিত্র আদায় করলেন। অতঃপর তিনি শুয়ে পড়লেন। অবশেষে মুআয্যিন তাঁর নিকট এলো। তখন তিনি দাঁড়িয়ে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বের হয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۳ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الحَارِثِ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ القَاسِمِ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلَاةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا أَرَدْتَ أَنْ تَنْصَرِفَ، فَارْكَعْ رَكْعَةً تُوتِرُ لَكَ مَا صَلَّيْتَ» قَالَ القَاسِمُ: «وَرَأَيْنَا أُنَاسًا مُنْذُ أَدْرَكْنَا يُوتِرُونَ بِثَلَاثٍ، وَإِنَّ كُلًّا لَوَاسِعٌ أَرْجُو أَنْ لَا يَكُونَ بِشَيْءٍ مِنْهُ بَأْسٌ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সুলাইমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ওয়াহ্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নুল হা’রিছ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুর রহ’মান ইব্ন ক্বাসিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করলেন, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের সালাত দু’ দু’ রাক’আত করে। অতঃপর যখন তুমি সালাত শেষ করতে চাইবে, তখন এক রাক’আত আদায় করে নিবে। তা তোমার পূর্ববর্তী সালাতকে বিত্র করে দিবে। ক্বাসিম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমরা সাবালক হয়ে লোকদের তিন রাক’আত বিত্র আদায় করতে দেখেছি। উভয় নিয়মেরই অবকাশ রয়েছে। আমি আশা করি এর কোনটিই দূষনীয় নয়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۴ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، كَانَتْ تِلْكَ صَلَاتَهُ – تَعْنِي بِاللَّيْلِ – فَيَسْجُدُ السَّجْدَةَ مِنْ ذَلِكَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ أَحَدُكُمْ خَمْسِينَ آيَةً قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ، وَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الفَجْرِ، ثُمَّ يَضْطَجِعُ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ المُؤَذِّنُ لِلصَّلَاةِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগার রাক’আত সালাত আদায় করতেন। এ ছিল তাঁর রাত্রিকালীন সালাত। এতে তিনি এমন দীর্ঘ সিজদা করতেন যে, তাঁর মাথা উঠাবার পূর্বে তোমাদের কেউ পঞ্চাশ আয়াত পড়তে পারে এবং ফাজরের সালাতের পূর্বে তিনি আরো দু’ রাক’আত পড়তেন। অতঃপর তিনি ডান কাতে শুয়ে বিশ্রাম করতেন, সালাতের জন্য মুআয্যিনের আসা পর্যন্ত।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: «أَوْصَانِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالوِتْرِ قَبْلَ النَّوْمِ»
আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ঘুমানোর পূর্বে বিতর আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۵ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ: قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ: أَرَأَيْتَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الغَدَاةِ أُطِيلُ فِيهِمَا القِرَاءَةَ، فَقَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ، وَيُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الغَدَاةِ، وَكَأَنَّ الأَذَانَ بِأُذُنَيْهِ» قَالَ حَمَّادٌ: أَيْ سُرْعَةً
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু সীরীন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন- আমি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে বললাম, ফজরের পূর্বের দু’ রাক’আতে আমি কির’আত দীর্ঘ করব কি-না, এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে দু’ দু’ রাক’আত করে সালাত আদায় করতেন এবং এক রাক’আত বিত্র আদায় করতেন ১। অতঃপর ফজরের সালাতের পূর্বে তিনি দু’ রাক’আত এমনভাবে আদায় করতেন যেন ইক্বামাতের শব্দ তাঁর কানে আসছে। রাব্বী হাম্মাদ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ তাড়াতাড়ি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۶ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مُسْلِمٌ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كُلَّ اللَّيْلِ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ»
‘উমার উব্নু হা’ফ্স্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মাসরুক্ব থেকে, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সকল অংশে (অর্থাৎ বিভিন্ন রাতে বিভিন্ন সময়ে) বিত্র আদায় করতেন আর (জীবনের) শেষ দিকে সাহ্রীর সময় তিনি বিত্র আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَأَنَا رَاقِدَةٌ مُعْتَرِضَةً عَلَى فِرَاشِهِ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يُوتِرَ أَيْقَظَنِي، فَأَوْتَرْتُ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে সালাত আদায় করতেন, তখন আমি তাঁর বিছানায় আড়াআড়িভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম। অতঃপর তিনি যখন বিত্র পড়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমিও বিত্র আদায় করে নিতাম।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اجْعَلُوا آخِرَ صَلَاتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “বিত্রকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত করবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۹۹۹ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّهُ قَالَ: كُنْتُ أَسِيرُ مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بِطَرِيقِ مَكَّةَ، فَقَالَ سَعِيدٌ: فَلَمَّا خَشِيتُ الصُّبْحَ نَزَلْتُ، فَأَوْتَرْتُ، ثُمَّ لَحِقْتُهُ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: أَيْنَ كُنْتَ؟ فَقُلْتُ: خَشِيتُ الصُّبْحَ، فَنَزَلْتُ، فَأَوْتَرْتُ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: أَلَيْسَ لَكَ فِي رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ؟ فَقُلْتُ: بَلَى وَاللَّهِ، قَالَ: «فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُوتِرُ عَلَى البَعِيرِ»
ইসামা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বক্র ইব্ন ‘উমার ইব্ন ‘আব্দুর রহমান ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার ইব্ন খাত্ত্বাব থেকে, তিনি সা’ঈদ ইব্নু ইয়াসার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর সঙ্গে মক্কার পথে সফর করছিলাম। সাঈদ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি যখন ফজর হয়ে যাবার ভয় করলাম, তখন সওয়ারী হতে নেমে পড়লাম এবং বিত্রের সালাত আদায় করলাম। অতঃপর তাঁর সঙ্গে মিলিত হলাম। তখন ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, ভোর হয়ে যাবার ভয়ে নেমে বিত্রের নামায আদায় করেছি। তখন ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আল্লাহ্র রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মধ্যে কি তোমার জন্য উত্তম আদর্শ নেই? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহ্র কসম ! তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটের পিঠে বিত্রের সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۰ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي فِي السَّفَرِ عَلَى رَاحِلَتِهِ، حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ يُومِئُ إِيمَاءً صَلَاةَ اللَّيْلِ، إِلَّا الفَرَائِضَ وَيُوتِرُ عَلَى رَاحِلَتِهِ»
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুওয়ায়্রিয়াহ ইব্নু আসমা’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে ফরয সালাত ব্যতীত তাঁর সওয়ারী হতেই ইঙ্গিতে রাতের সালাত আদায় করতেন সওয়ারী যে দিকেই ফিরুক না কেন। আর তিনি বাহনের উপরেই বিত্র আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۱ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: سُئِلَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: أَقَنَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصُّبْحِ؟ قَالَ: نَعَمْ، فَقِيلَ لَهُ: أَوَقَنَتَ قَبْلَ الرُّكُوعِ؟ قَالَ: «بَعْدَ الرُّكُوعِ يَسِيرًا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ূব থেকে, তিনি মুহাম্মাদ ইব্নু সীরীন থেকে, তিনি বলেন, “আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ফজরের সালাতে কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুনূত পড়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো তিনি কি রুকু’র পূর্বে কুনূত পড়েছেন? তিনি বললেন, কিছু সময় রুকু’র পরে পড়েছেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، قَالَ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنِ القُنُوتِ، فَقَالَ: قَدْ كَانَ القُنُوتُ قُلْتُ: قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَهُ؟ قَالَ: قَبْلَهُ، قَالَ: فَإِنَّ فُلَانًا أَخْبَرَنِي عَنْكَ أَنَّكَ قُلْتَ بَعْدَ الرُّكُوعِ، فَقَالَ: «كَذَبَ إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا، أُرَاهُ كَانَ بَعَثَ قَوْمًا يُقَالُ لَهُمْ القُرَّاءُ، زُهَاءَ سَبْعِينَ رَجُلًا، إِلَى قَوْمٍ مِنَ المُشْرِكِينَ دُونَ أُولَئِكَ، وَكَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ، فَقَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا يَدْعُو عَلَيْهِمْ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহি’দ ইব্নু যিয়াদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, আমি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, উত্তরে তিনি বলেন, কুনূত অবশ্যই পড়া হত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম রুকু’র পূর্বে না পরে? তিনি বললেন, রকূ’র পূর্বে না পরে? তিনি বললেন, রুকূ’র পূর্বে। ‘আসিম (রহমাহুল্লাহ) বললেন, অমুক ব্যক্তি আমাকে আপনার বরাত দিয়ে বলেছেন যে, আপনি বলেছেন, রুকু’র পরে। তখন আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, সে ভুল বলেছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকু’র পরে এক মাস ব্যাপী কুনূত পাঠ করেছেন। আমার জানা মতে, তিনি সত্তর জন সাহাবীর একটি দল, যাদের কুর্রা (অভিজ্ঞ ক্বারীগণ) বলা হতো মুশরিকদের কোন এক কওমের উদ্দেশ্যে পাঠান। এরা সেই কাউম নয়, যাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদ দু’আ করেছিলেন। বরং যাদের সাথে তাঁর চুক্তি ছিল (এবং তারা চুক্তি ভঙ্গ করে ক্বারীগণকে হত্যা করেছিল) তিনি এক মাস ব্যাপী কুনূতে সেসব কাফিরদের জন্য অভিসম্পাত করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۳ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنِ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «قَنَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا يَدْعُو عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ»
হা’ম্মাদ ইব্নু ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তায়মী থেকে, তিনি আবূ মিজলায থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, একমাস ব্যাপী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রি’ল ও যাক্ওয়ান গোত্রের বিরুদ্ধে কুনূতে দু’আ পাঠ করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۴ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ القُنُوتُ فِي المَغْرِبِ وَالفَجْرِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, মাগরিব ও ফজরের সালাতে কুনূত পড়া হত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۵ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: «خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَسْقِي وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বাক্র থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম-এর চাচা ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যায়দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দু’আয় বের হলেন এবং তিনি স্বীয় চাদর পরিবর্তন করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۶ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ، يَقُولُ: ” اللَّهُمَّ أَنْجِ عَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ، اللَّهُمَّ أَنْجِ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ، اللَّهُمَّ أَنْجِ الوَلِيدَ بْنَ الوَلِيدِ، اللَّهُمَّ أَنْجِ المُسْتَضْعَفِينَ مِنَ المُؤْمِنِينَ، اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ: وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: غِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا وَأَسْلَمُ سَالَمَهَا اللَّهُ ” قَالَ ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ: عَنْ أَبِيهِ، هَذَا كُلُّهُ فِي الصُّبْحِ
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুগীরাহ ইব্নু ‘আব্দুর রহ্মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবু হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন শেষ রাকআ’ত হতে মাথা উঠালেন, তখন বললেন, হে আল্লাহ্! আইয়্যাশ ইব্নু আবু রাবী’আহ্কে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ্! সালামাহ্ ইব্নু হিশামকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ্! ওয়ালীদ ইব্নু ওয়ালীদকে রক্ষা কর। হে আল্লাহ্! দূর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি কর। হে আল্লাহ্! মুযার গোত্রের উপর তোমার শাস্তি কঠোর করে দাও। হে আল্লাহ্! ইউসুফ (আঃ)-এর সময়ের দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরে) ও কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দাও। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বললেন, গিফার গোত্র, আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা কর। আর আসলাম গোত্র, আল্লাহ্ তাদেরকে নিরাপদ রাখ। ইব্নু আবু যিনাদ (রহমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা হতে বলেন, এ সমস্ত দু’আ ফজরের সালাতে ছিলো।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۷ – حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا رَأَى مِنَ النَّاسِ إِدْبَارًا، قَالَ: «اللَّهُمَّ سَبْعٌ كَسَبْعِ يُوسُفَ»، فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ حَصَّتْ كُلَّ شَيْءٍ، حَتَّى أَكَلُوا الجُلُودَ وَالمَيْتَةَ وَالجِيَفَ، وَيَنْظُرَ أَحَدُهُمْ إِلَى السَّمَاءِ، فَيَرَى الدُّخَانَ مِنَ الجُوعِ، فَأَتَاهُ أَبُو سُفْيَانَ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، إِنَّكَ تَأْمُرُ بِطَاعَةِ اللَّهِ، وَبِصِلَةِ الرَّحِمِ، وَإِنَّ قَوْمَكَ قَدْ هَلَكُوا، فَادْعُ اللَّهَ لَهُمْ، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ} [الدخان: 10] إِلَى قَوْلِهِ {إِنَّكُمْ عَائِدُونَ يَوْمَ نَبْطِشُ البَطْشَةَ الكُبْرَى، إِنَّا مُنْتَقِمُونَ} [الدخان: 16] ” فَالْبَطْشَةُ: يَوْمَ بَدْرٍ، وَقَدْ مَضَتِ الدُّخَانُ وَالبَطْشَةُ وَاللِّزَامُ وَآيَةُ الرُّومِ “
‘উছমান ইব্নু আবী শায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মান্স্বূর থেকে, তিনি আবূ যুহা’ থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি বললেন: আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকটে ছিলাম, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন লোকদেরকে ইসলাম বিমুখ ভূমিকায় দেখলেন, তখন দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ্! ইউসুফ (আঃ)-এর সময়ের সাত বছরের (দুর্ভিক্ষের) ন্যায় তাদের উপর সাতটি বছর দুর্ভিক্ষ দাও। ফলে তাদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ আপতিত হল যে, তা সব কিছু্ই ধ্বংস করে দিল। এমন কি মানুষ তখন চামড়া, মৃতদেহ এবং পচা ও গলিত জানোয়ারও খেতে লাগল। ক্ষুধার তাড়নায় অবস্থা এতদূর চরম আকার ধারণ করল যে, কেউ যখন আকাশের দিকে তাকাত তখন সে ধোঁয়া দেখতে পেত। এমতাবস্থায় আবূ সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি তো আল্লাহ্র আদেশ মেনে চল এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার আদেশ দান কর। কিন্তু তোমার কওমের লোকেরা তো মরে যাচ্ছে। তুমি তাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট দু‘আ কর। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ “তুমি সে দিনটির অপেক্ষায় থাক যখন আকাশ সুস্পষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে…সেদিন আমি প্রবলভাবে তোমাদের পাকড়াও করব”- (সূরা দুখান ৪৪/১০-১৬)। ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, সে কঠিন আঘাতের দিন ছিল বদরের যুদ্ধের দিন। ধোঁয়াও দেখা গেছে, আঘাতও এসেছে। আর মক্কার মুশ্রিকদের নিহত ও গ্রেফতার হওয়ার যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, তাও সত্য হয়েছে। সত্য হয়েছে সূরা রূম-এর এ আয়াতও (রুমবাসী দশ বছরের মধ্যে পারসিকদের উপর আবার বিজয়ী হবে)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۸ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَتَمَثَّلُ بِشِعْرِ أَبِي طَالِبٍ: «[البحر الطويل] وَأَبْيَضَ يُسْتَسْقَى الغَمَامُ بِوَجْهِهِ … ثِمَالُ اليَتَامَى عِصْمَةٌ لِلْأَرَامِلِ»
‘আমর ইব্নু ‘আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহমান ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু দীনার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বলেন, “আমি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে আবূ ত্বালিব-এর এই কবিতা পাঠ করতে শুনেছিঃ তিনি শুভ্র, তাঁর চেহারার অসীলাহ দিয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হতো। তিনি ইয়াতীমদের খাবার পরিবেশনকারী আর বিধবাদের তত্ত্বাবধায়ক।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۰۹ – وَقَالَ عُمَرُ بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا سَالِمٌ، عَنْ أَبِيهِ، رُبَّمَا ذَكَرْتُ قَوْلَ الشَّاعِرِ، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى وَجْهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَسْقِي، فَمَا يَنْزِلُ حَتَّى يَجِيشَ كُلُّ مِيزَابٍ وَأَبْيَضَ يُسْتَسْقَى الغَمَامُ بِوَجْهِهِ … ثِمَالُ اليَتَامَى عِصْمَةٌ لِلْأَرَامِلِ «وَهُوَ قَوْلُ أَبِي طَالِبٍ»
এবং ‘উমার ইব্নু হা’মযাহ বললেন: সালিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বৃষ্টির জন্য দু‘আরত অবস্থায় আমি তাঁর পবিত্র চেহারার দিকে তাকালাম এবং কবির এ কবিতাটি আমার মনে পড়লো। আর তাঁর (মিম্বার হতে) নামতে না নামতেই প্রবলবেগে মীযাব ১ হতে পানি প্রবাহিত হতে দেখলাম। তিনি শুভ্র, তাঁর চেহারার অসীলাহ দিয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হতো। তিনি ইয়াতীমদের খাবার পরিবেশনকারী আর বিধবাদের তত্ত্ববধায়ক।” আর এটা হলো আবূ ত্বালিবের বাণী (কবিতা)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১. পানি প্রবাহিত হওয়ার নালা- আল-কাওসার আধুনিক আরবী বাংলা অভিধান দ্রঃ। হাদীসে মীযাব বলতে কাবা ঘরের ছাদের পানি নামার স্থানকে বুঝানো হয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۰ – حَدَّثَنَا الحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ المُثَنَّى، عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، كَانَ إِذَا قَحَطُوا اسْتَسْقَى بِالعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ المُطَّلِبِ، فَقَالَ: «اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا فَتَسْقِينَا، وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا»، قَالَ: فَيُسْقَوْنَ
হাসান ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আনস্বারী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুছান্না আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ছুমামাহ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আনাস থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অনাবৃষ্টির সময় ‘আব্বাস ইব্নু আবদুল মুত্তালিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর ওয়াসীলাহ্ দিয়ে বৃষ্টির জন্য দু‘আ করতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ্! (আগে) আমরা আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়াসীলাহ্ দিয়ে দু‘আ করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করতেন। এখন আমরা আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচার ওয়াসীলাহ্ দিয়ে দু‘আ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, দু‘আর সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۱ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَسْقَى فَقَلَبَ رِدَاءَهُ»
ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াহ্ব ইব্নু জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবার দিলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন আবূ বক্র থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্ন তামীম থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়িদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দু’আ করেন এবং নিজের চাদর উল্টিয়ে দেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۲ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبَّادَ بْنَ تَمِيمٍ، يُحَدِّثُ أَبَاهُ، عَنْ عَمِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى المُصَلَّى فَاسْتَسْقَى فَاسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ، وَقَلَبَ رِدَاءَهُ، وَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: ” كَانَ ابْنُ عُيَيْنَةَ يَقُولُ: هُوَ صَاحِبُ الأَذَانِ، وَلَكِنَّهُ وَهْمٌ لِأَنَّ هَذَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ المَازِنِيُّ مَازِنُ الأَنْصَارِ “
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বকর থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্ন তামীম থেকে শুনলেন, তিনি তাঁর চাচা ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদগাহে গেলেন এবং বৃষ্টির জন্য দু’আ করলেন। অতঃপর কিব্লামুখী হয়ে নিজের চাদরখানি উল্টিয়ে নিলেন এবং দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। ইমাম বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ইব্নু ‘উয়াইনাহ (রহমাহুল্লাহ) বলতেন, এ হাদীসের বর্ণনাকরী ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হলেন আযানের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সাহাবী। কিন্তু তা ঠিক নয়। কারণ ইনি হলেন, সেই ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ ইব্নু ‘আসিম মাযিনী, যিনি আনসারের মাযিন গোত্রের লোক।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: —
মাকতাবাতুস সামিলাতে কোন হাদীসটি পাওয়া যায় নাই।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۳ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو ضَمْرَةَ أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَذْكُرُ أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ يَوْمَ الجُمُعَةِ مِنْ بَابٍ كَانَ وِجَاهَ المِنْبَرِ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ يَخْطُبُ، فَاسْتَقْبَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمًا، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ: هَلَكَتِ المَوَاشِي، وَانْقَطَعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ يُغِيثُنَا، قَالَ: فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، فَقَالَ: «اللَّهُمَّ اسْقِنَا، اللَّهُمَّ اسْقِنَا، اللَّهُمَّ اسْقِنَا» قَالَ أَنَسُ: وَلَا وَاللَّهِ مَا نَرَى فِي السَّمَاءِ مِنْ سَحَابٍ، وَلَا قَزَعَةً وَلَا شَيْئًا وَمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ سَلْعٍ مِنْ بَيْتٍ، وَلَا دَارٍ قَالَ: فَطَلَعَتْ مِنْ وَرَائِهِ سَحَابَةٌ مِثْلُ التُّرْسِ، فَلَمَّا تَوَسَّطَتِ السَّمَاءَ، انْتَشَرَتْ ثُمَّ أَمْطَرَتْ، قَالَ: وَاللَّهِ مَا رَأَيْنَا الشَّمْسَ سِتًّا، ثُمَّ دَخَلَ رَجُلٌ مِنْ ذَلِكَ البَابِ فِي الجُمُعَةِ المُقْبِلَةِ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ يَخْطُبُ، فَاسْتَقْبَلَهُ قَائِمًا، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ: هَلَكَتِ الأَمْوَالُ وَانْقَطَعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ يُمْسِكْهَا، قَالَ: فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا، وَلَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالجِبَالِ وَالآجَامِ وَالظِّرَابِ وَالأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ» قَالَ: فَانْقَطَعَتْ، وَخَرَجْنَا نَمْشِي فِي الشَّمْسِ قَالَ شَرِيكٌ: فَسَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ: أَهُوَ الرَّجُلُ الأَوَّلُ؟ قَالَ: «لَا أَدْرِي»
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ যাম্রাহ আনাস ইব্নু ‘ইয়ায আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: শারীক ইব্নু ‘আবদুল্লাহ আবূ নামির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলেন, তিনি বললেন, এক ব্যক্তি জুমু’আহ’র দিন মিম্বরের সোজাসুজি দরজা দিয়ে (মসজিদে) প্রবেশ করল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দাঁড়িয়ে খুত্বা দিচ্ছিলেন। সে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! গবাদি পশু ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। সুতরাং আপনি আল্লাহ্র কাছে দু’আ করুন, যেন তিনি আমাদের বৃষ্টি দেন। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর উভয় হাত তুলে দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ্! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ্! বৃষ্টি দিন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র কসম! আমরা তখন আকাশে মেঘমালা, মেঘের চিহ্ন বা কিছুই দেখতে পাইনি। অথচ সাল’আ (মদীনার একটি পাহাড়) পর্বত ও আমাদের মধ্যে কোন ঘর-বাড়ি ছিল না। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, হঠাৎ সাল‘আ পর্বতের পিছন হতে ঢালের মত মেঘ বেরিয়ে এল এবং তা মধ্য আকাশে পৌঁছে বিস্তৃত হয়ে পড়ল। অতঃপর বর্ষণ শুরু হল। তিনি বলেন, আল্লাহ্র কসম! আমরা ছয়দিন সূর্য দেখতে পাইনি। অতঃপর এক ব্যক্তি পরবর্তী জুমু‘আ’র দিন সে দরজা দিয়ে (মসজিদে) প্রবেশ করল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দাঁড়িয়ে খুত্বা দিচ্ছিলেন। লোকটি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাটও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কাজেই আপনি আল্লাহ্র নিকট বৃষ্টি বন্ধের জন্য দু‘আ করুন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উভয় হাত তুলে দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমাদের আশেপাশে, আমাদের উপর নয়; টিলা, পাহাড়, উচ্চভূমি, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, এতে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল এবং আমরা (মসজিদ হতে বেরিয়ে) রোদে চলতে লাগলাম। শরীক (রহমাহুল্লাহ) (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কি আগের সেই লোকটি? তিনি বললেন, আমি জানি না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۴ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَجُلًا، دَخَلَ المَسْجِدَ يَوْمَ جُمُعَةٍ مِنْ بَابٍ كَانَ نَحْوَ دَارِ القَضَاءِ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ يَخْطُبُ، فَاسْتَقْبَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمًا، ثُمَّ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ الأَمْوَالُ وَانْقَطَعْتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ يُغِيثُنَا، فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَغِثْنَا، اللَّهُمَّ أَغِثْنَا، اللَّهُمَّ أَغِثْنَا» قَالَ أَنَسٌ: وَلَا وَاللَّهِ، مَا نَرَى فِي السَّمَاءِ مِنْ سَحَابٍ، وَلَا قَزَعَةً وَمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ سَلْعٍ مِنْ بَيْتٍ وَلَا دَارٍ، قَالَ: فَطَلَعَتْ مِنْ وَرَائِهِ سَحَابَةٌ مِثْلُ التُّرْسِ فَلَمَّا تَوَسَّطَتِ السَّمَاءَ انْتَشَرَتْ، ثُمَّ أَمْطَرَتْ، فَلَا وَاللَّهِ، مَا رَأَيْنَا الشَّمْسَ سِتًّا، ثُمَّ دَخَلَ رَجُلٌ مِنْ ذَلِكَ البَابِ فِي الجُمُعَةِ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ يَخْطُبُ، فَاسْتَقْبَلَهُ قَائِمًا، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكَتِ الأَمْوَالُ وَانْقَطَعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ يُمْسِكْهَا عَنَّا، قَالَ: فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ، وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ، وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ» قَالَ: فَأَقْلَعَتْ، وَخَرَجْنَا نَمْشِي فِي الشَّمْسِ قَالَ شَرِيكٌ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ: أَهُوَ الرَّجُلُ الأَوَّلُ؟ فَقَالَ: «مَا أَدْرِي»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শারিক থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, এক ব্যক্তি জুমু‘আ’র দিন দারুল কাযা (বিচার করার স্থান)-এর দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করল। এ সময় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুত্বা দিচ্ছিলেন। লোকটি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ধন-সম্পদ নষ্ট হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেল। আপনি আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন যেন তিনি আমাদের বৃষ্টি দান করেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’হাত তুলে দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ্! আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ্! আমাদের বৃষ্টি দান করুন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র কসম! আমরা তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মেঘ নেই, মেঘের সামান্য টুক্রাও নেই। অথচ সাল‘আ পর্বত ও আমাদের মধ্যে কোন ঘরবাড়ি ছিল না। তিনি বললেন, হঠাৎ সাল‘আর ওপাশ হতে ঢালের মত মেঘ উঠে এল এবং মধ্য আকাশে এসে ছড়িয়ে পড়লো। অতঃপর প্রচুর বর্ষণ হতে লাগল। আল্লাহ্র কসম! আমরা ছয়দিন সূর্য দেখতে পাইনি। এর পরের জুমু‘আয় সে দরজা দিয়ে এক ব্যক্তি প্রবেশ করল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দাঁড়িয়ে খুত্বা দিচ্ছিলেন। লোকটি তাঁর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কাজেই আপনি বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দু’হাত তুলে দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। হে আল্লাহ্! টিলা, মালভূমি, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তখন বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল এবং আমরা বেরিয়ে রোদে চলতে লাগলাম। (রাবী) শরীক (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কি আগের সেই লোক? তিনি বললেন, আমি জানি না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۵ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ يَوْمَ الجُمُعَةِ، إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَحَطَ المَطَرُ، فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَسْقِيَنَا، فَدَعَا فَمُطِرْنَا، فَمَا كِدْنَا أَنْ نَصِلَ إِلَى مَنَازِلِنَا فَمَا زِلْنَا نُمْطَرُ إِلَى الجُمُعَةِ المُقْبِلَةِ، قَالَ: فَقَامَ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ غَيْرُهُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَصْرِفَهُ عَنَّا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا» قَالَ: فَلَقَدْ رَأَيْتُ السَّحَابَ يَتَقَطَّعُ يَمِينًا وَشِمَالًا، يُمْطَرُونَ وَلَا يُمْطَرُ أَهْلُ المَدِينَةِ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আ’র দিন খুত্বা দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে। আপনি আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন। তিনি যেন আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তিনি তখন দু‘আ করলেন। ফলে এত অধিক বৃষ্টি হল যে, আমাদের নিজ নিজ ঘরে পৌঁছতে পারছিলাম না। এমনকি পরের জুমু‘আ পর্যন্ত বৃষ্টি হতে থাকল। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তখন সে লোকটি অথবা অন্য একটি লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি দু‘আ করুন, আল্লাহ্ যেন আমাদের উপর হতে বৃষ্টি সরিয়ে দেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আল্লাহ্! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমি দেখতে পেলাম, মেঘ ডানে ও বামে পৃথক হয়ে বৃষ্টি হতে লাগল, মদীনাবাসীর উপর বর্ষণ হচ্ছিল না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۶ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: هَلَكَتِ المَوَاشِي، وَتَقَطَّعَتِ السُّبُلُ، فَدَعَا، فَمُطِرْنَا مِنَ الجُمُعَةِ إِلَى الجُمُعَةِ، ثُمَّ جَاءَ، فَقَالَ: تَهَدَّمَتِ البُيُوتُ، وَتَقَطَّعَتِ السُّبُلُ، وَهَلَكَتِ المَوَاشِي، فَادْعُ اللَّهَ يُمْسِكْهَا، فَقَامَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ، وَالأَوْدِيَةِ، وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ» فَانْجَابَتْ عَنِ المَدِينَةِ انْجِيَابَ الثَّوْبِ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি শারীক ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, গৃহপালিত পশুগুলো মরে যাচ্ছে এবং রাস্তাগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি দু‘আ করলেন। ফলে সে জুমু‘আ হতে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টি হতে থাকল। অতঃপর সে ব্যক্তি আবার এসে বলল, (অতি বৃষ্টির ফলে) ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, রাস্তা অচল হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ্! টিলা, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন। তখন মদীনা হতে মেঘ এমনভাবে কেটে গেল, যেমন কাপড় ছিঁড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۷ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكَتِ المَوَاشِي، وَانْقَطَعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَمُطِرُوا مِنْ جُمُعَةٍ إِلَى جُمُعَةٍ، فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ تَهَدَّمَتِ البُيُوتُ وَتَقَطَّعَتِ السُّبُلُ، وَهَلَكَتِ المَوَاشِي، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ عَلَى رُءُوسِ الجِبَالِ وَالآكَامِ، وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ، وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ»، فَانْجَابَتْ عَنِ المَدِينَةِ انْجِيَابَ الثَّوْبِ
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শারিক ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ নামীর থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, এক ব্যক্তি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! পশুগুলো মারা যাচ্ছে, এবং রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আপনি আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করলেন। ফলে সে জুমু‘আ হতে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকল। অতঃপর এক ব্যক্তি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ঘরবাড়ি ধ্বসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃহে আল্লাহ্! পাহাড়ের চূড়ায়, টিলায়, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বৃষ্টি বর্ষণ করুন। অতঃপর মদীনার আকাশ হতে মেঘ সরে গেল, যেমন কাপড় ছিঁড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۸ – حَدَّثَنَا الحَسَنُ بْنُ بِشْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعَافَى بْنُ عِمْرَانَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَجُلًا شَكَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، هَلَاكَ المَالِ وَجَهْدَ العِيَالِ «فَدَعَا اللَّهَ يَسْتَسْقِي» وَلَمْ يَذْكُرْ أَنَّهُ حَوَّلَ رِدَاءَهُ وَلَا اسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ
হা’সান ইব্নু বিশ্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘আফ ইব্নু ‘ইমারান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আওযা‘ঈ থেকে, তিনি ইসহা’ক্ব ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ত্বালহা’ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সম্পদ বিনষ্ট হবার এবং পরিবার-পরিজনের দুঃখ-কষ্টের অভিযোগ জানান। তখন তিনি আল্লাহ্র নিকট বৃষ্টির জন্য দু‘আ করলেন। বর্ণনাকারী এ কথা বলেননি, তিনি (আল্লাহ্র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর উল্টিয়ে ছিলেন এবং এও বলেননি তিনি ক্বিব্লামুখী হয়েছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۱۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ المَوَاشِي، وَتَقَطَّعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ، فَدَعَا اللَّهَ، فَمُطِرْنَا مِنَ الجُمُعَةِ إِلَى الجُمُعَةِ، فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، تَهَدَّمَتِ البُيُوتُ، وَتَقَطَّعَتِ السُّبُلُ، وَهَلَكَتِ المَوَاشِي، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ عَلَى ظُهُورِ الجِبَالِ وَالآكَامِ، وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ، وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ» فَانْجَابَتْ عَنِ المَدِينَةِ انْجِيَابَ الثَّوْبِ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন শারীক ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ নামির থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! পশুগুলো মরে যাচ্ছে এবং রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহ্র নিকট (বৃষ্টির জন্য) দু‘আ করুন। তখন তিনি দু‘আ করলেন। ফলে এক জুমু‘আ হতে পরের জুমু‘আ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হতে থাকল। অতঃপর এক ব্যক্তি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ্! পাহাড়ের উপর, টিলার উপর, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন। ফলে মদীনা হতে মেঘ এমনভাবে কেটে গেল যেমন কাপড় ছিড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۰ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، وَالأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: أَتَيْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ، فَقَالَ: إِنَّ قُرَيْشًا أَبْطَئُوا عَنِ الإِسْلَامِ، «فَدَعَا عَلَيْهِمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ حَتَّى هَلَكُوا فِيهَا، وَأَكَلُوا المَيْتَةَ وَالعِظَامَ»، فَجَاءَهُ أَبُو سُفْيَانَ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ جِئْتَ تَأْمُرُ بِصِلَةِ الرَّحِمِ وَإِنَّ قَوْمَكَ هَلَكُوا، فَادْعُ اللَّهَ، فَقَرَأَ: {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ} [الدخان: ۱۰] ثُمَّ عَادُوا إِلَى كُفْرِهِمْ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى: {يَوْمَ نَبْطِشُ البَطْشَةَ الكُبْرَى إِنَّا مُنْتَقِمُونَ} [الدخان: ۱۶] يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَزَادَ أَسْبَاطٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسُقُوا الغَيْثَ، فَأَطْبَقَتْ عَلَيْهِمْ سَبْعًا، وَشَكَا النَّاسُ كَثْرَةَ المَطَرِ، قَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا» فَانْحَدَرَتِ السَّحَابَةُ عَنْ رَأْسِهِ، فَسُقُوا النَّاسُ حَوْلَهُمْ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু কাসীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুফ্ইয়ান থেকে, তিনি বললেন: মানস্বুর এবং আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ যুহা’ থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি বললেন: ইব্নু মাস্‘উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমার নিকট আসলেন, তিনি বললেন, কুরাশইরা যখন ইসলাম গ্রহণে দেরি করছিল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বিরুদ্ধে দু‘আ করলেন। পরিণামে তাদেরকে দুর্ভিক্ষ এমনভাবে গ্রাস করল যে, তারা ধ্বংস হতে লাগল এবং মৃত দেহ ও হাড়গোড় খেতে লাগল। তখন আবূ সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি তো আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়ে থাক। অথচ তোমার জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তুমি মহান আল্লাহ্র নিকট দু‘আ কর। তখন তিনি তিলাওয়াত করলেন, “তুমি অপেক্ষা কর সে দিনের যে দিন আসমানে প্রকাশ্য ধোঁয়া দেখা দিবে” (সূরা দুখান ৪৪/১০)। অতঃপর (আল্লাহ্ যখন তাদের বিপদমুক্ত করলেন তখন) তারা আবার কুফরীর দিকে ফিরে গেল। এর পরিণতি স্বরূপ আল্লাহ্র এ বাণী: “যেদিন আমি কঠোরভাবে পাকড়াও করব”- (সূরা দুখান ৪৪/১৬) অর্থাৎ বদরের দিন। মানসূর (রহমাহুল্লাহ) হতে (বর্ণনাকারী) আসবাত (রহমাহুল্লাহ) আরো বলেছেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করেন। ফলে লোকজনের উপর বৃষ্টিপাত হয় এবং অবিরাম সাতদিন পর্যন্ত বর্ষিত হতে থাকে। লোকেরা অতিবৃষ্টির বিষয়টি পেশ করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করে বলেন, হে আল্লাহ্! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। অতঃপর তাঁর মাথার উপর হতে মেঘ সরে গেল। তাঁদের পার্শ্ববর্তী লোকদের উপর বর্ষিত হল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۱ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ يَوْمَ جُمُعَةٍ، فَقَامَ النَّاسُ، فَصَاحُوا، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَحَطَ المَطَرُ، وَاحْمَرَّتِ الشَّجَرُ، وَهَلَكَتِ البَهَائِمُ، فَادْعُ اللَّهَ يَسْقِينَا، فَقَالَ: «اللَّهُمَّ اسْقِنَا» مَرَّتَيْنِ، وَايْمُ اللَّهِ، مَا نَرَى فِي السَّمَاءِ قَزَعَةً مِنْ سَحَابٍ، فَنَشَأَتْ سَحَابَةٌ وَأَمْطَرَتْ، وَنَزَلَ عَنِ المِنْبَرِ فَصَلَّى، فَلَمَّا انْصَرَفَ، لَمْ تَزَلْ تُمْطِرُ إِلَى الجُمُعَةِ الَّتِي تَلِيهَا، فَلَمَّا قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، صَاحُوا إِلَيْهِ تَهَدَّمَتِ البُيُوتُ، وَانْقَطَعَتِ السُّبُلُ، فَادْعُ اللَّهَ يَحْبِسْهَا عَنَّا، فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا» فَكَشَطَتْ المَدِينَةُ، فَجَعَلَتْ تَمْطُرُ حَوْلَهَا وَلَا تَمْطُرُ بِالْمَدِينَةِ قَطْرَةٌ، فَنَظَرْتُ إِلَى المَدِينَةِ وَإِنَّهَا لَفِي مِثْلِ الإِكْلِيلِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু আবূ বকর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘উ্তামির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি ছাবিত থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, জুমু‘আর দিন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিচ্ছিলেন। তখন লোকেরা দাঁড়িয়ে উচ্চৈঃস্বরে বলতে লাগল, হে আল্লাহ্র রসূল! বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে, গাছপালা লাল হয়ে গেছে এবং পশুগুলো মারা যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন। এভাবে দু’বার বললেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) আল্লাহ্র কসম! আমরা তখন আকাশে এক খণ্ড মেঘও দেখতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ মেঘ দেখা দিল এবং বর্ষণ হলো। তিনি (রসূলুল্লাহ্) মিম্বার হতে নেমে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর যখন তিনি চলে গেলেন, তখন হতে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত বৃষ্টি হতে থাকে। অতঃপর যখন তিনি (দাঁড়িয়ে) জুমু‘আর খুত্বা দিচ্ছিলেন, তখন লোকেরা উচ্চৈঃস্বরে তাঁর নিকট নিবেদন করল, ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হচ্ছে, রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহ্র নিকট দু‘আ করুন যেন আমাদের হতে তিনি বৃষ্টি বন্ধ করেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃদু হেসে বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। তখন মদীনার আকাশ মুক্ত হলো আর এর আশে পাশে বৃষ্টি হতে লাগল। মদীনায় তখন এক ফোঁটা বৃষ্টিও হচ্ছিল না। আমি মদীনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মদীনা যেন মুকুটের ন্যায় শোভা পাচ্ছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۲ – وَقَالَ لَنَا أَبُو نُعَيْمٍ: عَنْ زُهَيْرٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، خَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الأَنْصَارِيُّ وَخَرَجَ مَعَهُ البَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ، وَزَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ «فَاسْتَسْقَى، فَقَامَ بِهِمْ عَلَى رِجْلَيْهِ عَلَى غَيْرِ مِنْبَرٍ، فَاسْتَغْفَرَ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ يَجْهَرُ بِالقِرَاءَةِ، وَلَمْ يُؤَذِّنْ وَلَمْ يُقِمْ» قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ: وَرَأَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الأَنْصَارِيُّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এবং আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে বললেন যুহায়র থেকে, তিনি আবূ ইসহাক থেকে, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ইয়াযীদ আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বের হলেন এবং, বারাআ ইব্নু ‘আযিব ও যায়দ ইব্নু আরকাম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও তাঁর সঙ্গে বের হলেন। তিনি মিম্বার ছাড়াই পায়ের উপর দাঁড়িয়ে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির জন্য দু‘আ করলেন। অতঃপর ইস্তিগফার করে আযান ও ইকামাত ব্যতীত সশব্দে কির’আত পড়ে দু‘ রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। (রাবী) আবূ ইসহাক (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ইয়াযীদ (আনসারী) (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছেন। (সুতরাং তিনি সাহাবী)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۳ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ، أَنَّ عَمَّهُ – وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَخْبَرَهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ بِالنَّاسِ يَسْتَسْقِي لَهُمْ، فَقَامَ فَدَعَا اللَّهَ قَائِمًا، ثُمَّ تَوَجَّهَ قِبَلَ القِبْلَةِ وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ فَأُسْقُوا»
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর চাচা থেকে, তিনি বললে, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির দু‘আর জন্য বের হলেন, ক্বিব্লামুখী হয়ে দু‘আ করলেন এবং নিজের চাদরখানি উল্টে দিলেন। অতঃপর দু‘রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। তিনি উভয় রাক‘আতে সশব্দে কির’আত পাঠ করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۴ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: «خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَسْقِي، فَتَوَجَّهَ إِلَى القِبْلَةِ يَدْعُو وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ جَهَرَ فِيهِمَا بِالقِرَاءَةِ»
আবূ নুয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর চাচা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির দু‘আর জন্য বের হলেন, ক্বিব্লামুখী হয়ে দু‘আ করলেন এবং নিজের চাদরখানি উল্টে দিলেন। অতঃপর দু‘রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। তিনি উভয় রাক‘আতে সশব্দে কির’আত পাঠ করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۵ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: ” رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ خَرَجَ يَسْتَسْقِي، قَالَ: فَحَوَّلَ إِلَى النَّاسِ ظَهْرَهُ، وَاسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ يَدْعُو، ثُمَّ حَوَّلَ رِدَاءَهُ، ثُمَّ صَلَّى لَنَا رَكْعَتَيْنِ جَهَرَ فِيهِمَا بِالقِرَاءَةِ “
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যিব্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম থেকে, তিনি তাঁর চাচা থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেদিন বৃষ্টির দু‘আর উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, আমি তা দেখেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি লোকদের দিকে তাঁর পিঠ ফিরালেন এবং ক্বিব্লামুখী হয়ে দু‘আ করলেন। অতঃপর তিনি তাঁর চাদর উল্টে দিলেন। আমাদের নিয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। তিনি উভয় রাক‘আতে সশব্দে কির’আত পাঠ করেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۶ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، سَمِعَ عَبَّادَ بْنَ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَسْقَى، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَقَلَبَ رِدَاءَهُ»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বাক্র থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম তাঁর চাচা থেকে শুনলেন, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দু‘আ করলেন। অতঃপর তিনি দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন এবং চাদর উল্টিয়ে নিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۷ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، سَمِعَ عَبَّادَ بْنَ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: «خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى المُصَلَّى يَسْتَسْقِي وَاسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، وَقَلَبَ رِدَاءَهُ» قَالَ سُفْيَانُ: فَأَخْبَرَنِي المَسْعُودِيُّ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ: «جَعَلَ اليَمِينَ عَلَى الشِّمَالِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ বক্র থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্বাদ ইব্নু তামীম তাঁর চাচা থেকে শুনলেন, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসতিস্কার জন্য ঈদগাহের ময়দানে গমন করেন। তিনি কিব্লামুখী হলেন, অতঃপর দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন এবং তাঁর চাদর উল্টিয়ে নিলেন। সুফিয়ান (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে মাস’ঊদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদের বলেছেন, তিনি (চাদর পাল্টানোর ব্যাপারে) বলেন, ডান পাশ বাঁ পাশে দিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۸ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَنَّ عَبَّادَ بْنَ تَمِيمٍ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ زَيْدٍ الأَنْصَارِيَّ أَخْبَرَهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى المُصَلَّى يُصَلِّي، وَأَنَّهُ لَمَّا دَعَا – أَوْ أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ – اسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ هَذَا مَازِنِيٌّ، وَالأَوَّلُ كُوفِيٌّ هُوَ ابْنُ يَزِيدَ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সালাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহাব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ বক্র ইবনু মুহা’ম্মাদ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আব্বাদ ইব্ন তামীম আমাকে খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে; তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতের জন্য ঈদগাহের উদ্দেশে বের হলেন। তিনি যখন দু’আ করলেন অথবা দু’আ করার ইচ্ছা করলেন তখন কিব্লামুখী হলেন এবং তাঁর চাদর উল্টিয়ে নিলেন।” ইমাম বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, এ (হাদীসের বর্ণনাকারী) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দ মাযিন গোত্রীয়। পূর্বের হাদীসের বর্ণনাকারী হলেন কুফী এবং তিনি ইব্নু ইয়াযীদ।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۲۹ – قَالَ أَيُّوبُ بْنُ سُلَيْمَانَ: حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلَالٍ، قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ: أَتَى رَجُلٌ أَعْرَابِيٌّ مِنْ أَهْلِ البَدْوِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ المَاشِيَةُ، هَلَكَ العِيَالُ هَلَكَ النَّاسُ، «فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، يَدْعُو، وَرَفَعَ النَّاسُ أَيْدِيَهُمْ مَعَهُ يَدْعُونَ»، قَالَ: فَمَا خَرَجْنَا مِنَ المَسْجِدِ حَتَّى مُطِرْنَا، فَمَا زِلْنَا نُمْطَرُ حَتَّى كَانَتِ الجُمُعَةُ الأُخْرَى، فَأَتَى الرَّجُلُ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، بَشِقَ المُسَافِرُ وَمُنِعَ الطَّرِيقُ
আয়্য়ুব ইব্নু সুলায়মান বললেন: আবূ বাক্র ইব্নু আবূ উওয়াস আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুলায়মান ইব্ন বিলাল থেকে, তিনি বললেন: আমি ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সা‘ঈদকে হাদীসটি বলতে শুনলাম, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, এক বেদুঈন জুমু’আ’র দিন রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! (অনাবৃষ্টিতে) পশুগুলো মরে যাচ্ছে, পরিবার-পরিজন মারা যাচ্ছে, মানুষ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আর জন্য দু’হাত উঠালেন। লোকজনও দু’আর জন্য আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হাত উঠিয়ে দু’আ করতে লাগলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা মসজিদ হতে বের হবার পূর্বেই বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল, এমন কি পরবর্তী জুমু’আ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টি হতে থাকল। তখন লোকটি আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! মুসাফির ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। (بَشِقَ) – এর অর্থ ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۰ – وَقَالَ الأُوَيْسِيُّ: حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، وَشَرِيكٍ، سَمِعَا أَنَسًا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَّهُ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ»
এবং উওয়ায়্সী বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ এবং শারীক থেকে, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বললেন, “তাঁর উভয় হাত উঠিয়েছিলেন, এমন কি আমরা তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখতে পেয়েছি।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۱ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَيْءٍ مِنْ دُعَائِهِ إِلَّا فِي الِاسْتِسْقَاءِ، وَإِنَّهُ يَرْفَعُ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া এবং ইব্ন ‘আদী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসতিস্কা ছাড়া অন্য কোথাও দু’আর মধ্যে হাত উঠাতেন না। তিনি হাত এতটুকু উপরে উঠাতেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: {كَصَيِّبٍ} [البقرة: ۱۹]: المَطَرُ ” وَقَالَ غَيْرُهُ: صَابَ وَأَصَابَ يَصُوبُ “
ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত। কুরআনের আয়াত كَصَيِّب অর্থ বৃষ্টি (সূরা আল-বাকারাহ- ১৯)। অন্যরা বলেছেন كَصَيِّب শব্দটি صاب واصابَ يَصيبُ এর মূল ধাতু হতে উৎপন্ন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۲ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الحَسَنِ المَرْوَزِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَأَى المَطَرَ، قَالَ: «اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا» تَابَعَهُ القَاسِمُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، وَرَوَاهُ الأَوْزَاعِيُّ، وَعُقَيْلٌ، عَنْ نَافِعٍ
মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন- তিনি ছিলেন ইব্নু মুক্বাতিল আবূল হা’সান মারওয়াযী, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ক্বাসিম ইব্ন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বৃষ্টি দেখলে বলতেন, “হে আল্লাহ্! মুষলধারায় কল্যাণকর বৃষ্টি দাও।” ক্বাসিম ইব্নু ইয়াহ্ইয়া (রহমাহুল্লাহ) ‘উবাইদুল্লাহ্র সূত্রে তার বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ্ (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন এবং ‘উকায়ল ও আওযায়ী (রহমাহুল্লাহ) নাফি’ (রহমাহুল্লাহ) হতে তা বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۳ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ المُبَارَكِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: أَصَابَتِ النَّاسَ سَنَةٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ عَلَى المِنْبَرِ يَوْمَ الجُمُعَةِ قَامَ أَعْرَابِيٌّ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَ المَالُ، وَجَاعَ العِيَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا أَنْ يَسْقِيَنَا، قَالَ: فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ وَمَا فِي السَّمَاءِ قَزَعَةٌ، قَالَ: فَثَارَ سَحَابٌ أَمْثَالُ الجِبَالِ، ثُمَّ لَمْ يَنْزِلْ عَنْ مِنْبَرِهِ حَتَّى رَأَيْتُ المَطَرَ يَتَحَادَرُ عَلَى لِحْيَتِهِ، قَالَ: فَمُطِرْنَا يَوْمَنَا ذَلِكَ، وَفِي الغَدِ، وَمِنْ بَعْدِ الغَدِ، وَالَّذِي يَلِيهِ إِلَى الجُمُعَةِ الأُخْرَى، فَقَامَ ذَلِكَ الأَعْرَابِيُّ – أَوْ رَجُلٌ غَيْرُهُ – فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، تَهَدَّمَ البِنَاءُ وَغَرِقَ المَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا، فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، وَقَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا، وَلَا عَلَيْنَا» قَالَ: فَمَا جَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُشِيرُ بِيَدِهِ إِلَى نَاحِيَةٍ مِنَ السَّمَاءِ إِلَّا تَفَرَّجَتْ، حَتَّى صَارَتِ المَدِينَةُ فِي مِثْلِ الجَوْبَةِ حَتَّى سَالَ الوَادِي، وَادِي قَنَاةَ شَهْرًا، قَالَ: فَلَمْ يَجِئْ أَحَدٌ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلَّا حَدَّثَ بِالْجَوْدِ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুবারাক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইস্হাক্ব ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ তালহা’হ্ আনস্বারী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একবার লোকেরা অনাবৃষ্টিতে পতিত হল। সে সময় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে জুমু’আ’র খুত্বা দিচ্ছিলেন। তখন এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! (অনাবৃষ্টিতে) ধন-সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিবার-পরিজন ক্ষুধার্ত। আপনি আল্লাহ্র নিকট দু’আ করুন, তিনি যেন আমাদের বৃষ্টি দান করেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দু’হাত তুললেন। সে সময় আকাশে একখণ্ড মেঘও ছিল না। বর্ণনাকারী বলেন, হঠাৎ পাহাড়ের মত বহু মেঘ একত্রিত হল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার হতে নামার আগেই বৃষ্টি শুরু হলো। এমনকি আমি দেখলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাড়ি বেয়ে বৃষ্টির পানি ঝরছে। বর্ণনাকারী আরো বলেন, সেদিন, তার পরের দিন, তার পরের দিন এবং পরবর্তী জুমু’আ পর্যন্ত বৃষ্টি হল। অতঃপর সে বেদুঈন বা অন্য কেউ দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেল, সম্পদ ডুবে গেল, আপনি আল্লাহ্র নিকট আমাদের জন্য দু’আ করুন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর দু’হাত তুলে বললেনঃ হে আল্লাহ্! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। অতঃপর তিনি হাত দিয়ে আকাশের যে দিকে ইশারা করলেন, সে দিকের মেঘ কেটে গেল। এতে সমগ্র মদীনার আকাশ মেঘ মুক্ত চালের মত হয়ে গেল এবং কানাত উপত্যকায় এক মাস ধরে বৃষ্টি প্রবাহিত হতে থাকে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন যে এলাকা হতে লোক আসত, কেবল এ প্রবল বর্ষণের কথাই বলাবলি করত।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۴ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: «كَانَتِ الرِّيحُ الشَّدِيدَةُ إِذَا هَبَّتْ عُرِفَ ذَلِكَ فِي وَجْهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
সা‘ঈদ ইব্নু আবূ মারয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হু’মায়দ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, যখন প্রবল গতিতে বায়ু প্রবাহিত হত তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারায় তার প্রতিক্রিয়া দেখা দিত। (ভয়ের চিহ্ন দেখা দিত)।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۵ – حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الحَكَمِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «نُصِرْتُ بِالصَّبَا، وَأُهْلِكَتْ عَادٌ بِالدَّبُورِ»
মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’কাম থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পূর্বের হাওয়া দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। আর আদ জাতিকে পশ্চিমা হাওয়া দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۶ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ العِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلَازِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الهَرْجُ – وَهُوَ القَتْلُ القَتْلُ – حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ المَالُ فَيَفِيضَ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ যিনাদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুর রহ্মান আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “ক্বিয়ামাত কায়িম হবে না, যে পর্যন্ত না ইল্ম উঠিয়ে নেয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিত্না প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। হারজ খুন-খারাবী। তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، قَالَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ الحَسَنِ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ: «اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَامِنَا، وَفِي يَمَنِنَا» قَالَ: قَالُوا: وَفِي نَجْدِنَا؟ قَالَ: قَالَ: «اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَامِنَا وَفِي يَمَنِنَا» قَالَ: قَالُوا: وَفِي نَجْدِنَا؟ قَالَ: قَالَ: «هُنَاكَ الزَّلَازِلُ وَالفِتَنُ، وَبِهَا يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন ইব্নু হা’সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘আওন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “হে আল্লাহ্! আমাদের শামে (সিরিয়া) ও ইয়ামনে বরকত দান করুন।” লোকেরা বলল, আমাদের নজদেও। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “হে আল্লাহ্! আমাদের শামদেশে ও ইয়ামনে বরকত দান করুন।” লোকেরা তখন বলল, আমাদের নজদেও। রাবী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, “সেখানে তো রয়েছে ভূমিকম্প ও ফিত্না-ফাসাদ আর শয়তানের শিং সেখান হতেই বের হবে (তার উত্থান ঘটবে)।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «شُكْرَكُمْ»
ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, ‘রিয্ক’ দ্বারা এখানে ‘কৃতজ্ঞতা’ বুঝানো হয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۸ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الجُهَنِيِّ، أَنَّهُ قَالَ: صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الصُّبْحِ بِالحُدَيْبِيَةِ عَلَى إِثْرِ سَمَاءٍ كَانَتْ مِنَ اللَّيْلَةِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: ” أَصْبَحَ مِنْ عِبَادِي مُؤْمِنٌ بِي وَكَافِرٌ، فَأَمَّا مَنْ قَالَ: مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللَّهِ وَرَحْمَتِهِ، فَذَلِكَ مُؤْمِنٌ بِي كَافِرٌ بِالكَوْكَبِ، وَأَمَّا مَنْ قَالَ: بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا، فَذَلِكَ كَافِرٌ بِي مُؤْمِنٌ بِالكَوْكَبِ “
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ্ ইব্ন কায়সান থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উতবাহ ইব্ন মাস‘উদ থেকে, তিনি যায়দ ইব্নু খালিদ জুহানী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে বৃষ্টিপাতের পরে আমাদের নিয়ে হুদাইবিয়ায় ফজরের সালাত আদায় করেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফিরিয়ে লোকদের দিকে মুখ করে বললেনঃ তোমরা কি জান, তোমাদের রব কী বলেছেন? তাঁরা বললেন, আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি তখন বললেন, (আল্লাহ্ বলেছেন) আমার কিছু সংখ্যক বান্দা বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী হয়ে গেল। যে ব্যক্তি বলে, আল্লাহ্র ফযল ও রহমতে আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে, সে আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি অবিশ্বাসী। আর যে ব্যক্তি বলে, অমুক অমুক নক্ষত্রে উদয়ের ফলে (বৃষ্টি হয়েছে) সে ব্যক্তি আমার প্রতি অবিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَمْسٌ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا اللَّهُ»
আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, পাঁচটি এমন বিষয় রয়েছে, যা সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۳۹ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مِفْتَاحُ الغَيْبِ خَمْسٌ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا اللَّهُ: لَا يَعْلَمُ أَحَدٌ مَا يَكُونُ فِي غَدٍ، وَلَا يَعْلَمُ أَحَدٌ مَا يَكُونُ فِي الأَرْحَامِ، وَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا، وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ، وَمَا يَدْرِي أَحَدٌ مَتَى يَجِيءُ المَطَرُ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু দীনার থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “গায়েবের চাবি হল পাঁচটি, যা আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানে না। (১) কেউ জানে না যে, আগামীকাল কী ঘটবে। (২) কেউ জানে না যে, আগামীকাল সে কী অর্জন করবে। (৩) কেউ জানে না যে, মায়ের গর্ভে কী আছে। (৪) কেউ জানে না যে, সে কোথায় মারা যাবে। (৫) কেউ জানে না যে, কখন বৃষ্টি হবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۰ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَانْكَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ حَتَّى دَخَلَ المَسْجِدَ، فَدَخَلْنَا، فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ حَتَّى انْجَلَتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَصَلُّوا، وَادْعُوا حَتَّى يُكْشَفَ مَا بِكُمْ»
‘আম্র ইব্নু ‘আওন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইউনুস থেকে, তিনি হা’সান থেকে, তিনি আবূ বাকরাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ছিলাম, এ সময় সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা দূর না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۱ – حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَقُومُوا، فَصَلُّوا»
শিহাব ইব্নু ‘আব্বাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্রাহীম ইব্নু হু’মায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসমা‘ঈল থেকে, তিনি ক্বায়স থেকে, তিনি বললেন, আমি আবূ মাস’ঊদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কোন লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। তাই তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হতে দেখবে, তখন দাঁড়িয়ে যাবে এবং সালাত আদায় করবে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۲ – حَدَّثَنَا أَصْبَغُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ القَاسِمِ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهُ كَانَ يُخْبِرُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهَا فَصَلُّوا»
আস্ব্বাগ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুর রহ্মান ইব্ন ক্বাসিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, “সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। তবে তা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কাজেই তোমরা যখনই গ্রহণ হতে দেখবে তখনই সালাত আদায় করবে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۳ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ القَاسِمِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلَاقَةَ، عَنِ المُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ: كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ، فَقَالَ النَّاسُ: كَسَفَتِ الشَّمْسُ لِمَوْتِ إِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ فَصَلُّوا، وَادْعُوا اللَّهَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হাশিম ইব্নু ক্বায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আবূ মু‘আবিয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যিয়াদ ইব্ন ‘ইলাকাহ থেকে, তিনি মুগীরা ইব্নু শু’বাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যে দিন (তাঁর পুত্র) ইবরাহীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ইন্তিকাল করেন, সেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। লোকেরা তখন বলতে লাগল, ইব্রাহীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “কারো মৃত্যু অথবা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমারা যখন তা দেখবে, তখন সালাত আদায় করবে এবং আল্লাহ্র নিকট দু’আ করবে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۴ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالنَّاسِ، فَقَامَ، فَأَطَالَ القِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ، فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ القِيَامَ وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ فَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ مَا فَعَلَ فِي الأُولَى، ثُمَّ انْصَرَفَ وَقَدْ انْجَلَتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ النَّاسَ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ، فَادْعُوا اللَّهَ، وَكَبِّرُوا وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا» ثُمَّ قَالَ: «يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ وَاللَّهِ مَا مِنْ أَحَدٍ أَغْيَرُ مِنَ اللَّهِ أَنْ يَزْنِيَ عَبْدُهُ أَوْ تَزْنِيَ أَمَتُهُ، يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلبَكَيْتُمْ كَثِيرًا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় একবার সূর্যগ্রহণ হল। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি দীর্ঘ সময় কিয়াম করেন, অতঃপর দীর্ঘক্ষণ রুকূ’ করেন। অতঃপর পুনরায় (সালাতে) তিনি উঠে দাঁড়ান এবং দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য তা প্রথম কিয়াম চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকূ’ করেন এবং এ রুকূ’ও দীর্ঘ করেন। তবে তা প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা করেন এবং সিজদাও দীর্ঘক্ষন করেন। অতঃপর তিনি প্রথম রাকা’আতে যা করেছিলেন তার অনুরূপ দ্বিতীয় রাকা’আতে করেন এবং যখন সূর্য প্রকাশিত হয় তখন সালাত শেষ করেন। অতঃপর তিনি লোকজনের উদ্দেশে খুত্বা দান করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ্র প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, “সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা আল্লাহ্র নিকট দু’আ করবে। তাঁর মহত্ব ঘোষণা করবে এবং সালাত আদায় করবে ও সদকা প্রদান করবে। অতঃপর তিনি আরো বললেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মাদী! আল্লাহ্র কসম, আল্লাহ্র কোন বান্দা যিনা করলে কিংবা কোন নারী যিনা করলে, আল্লাহ্র চেয়ে অধিক অপছন্দকারী কেউ নেই। হে উম্মাতে মুহাম্মাদী! আল্লাহ্র কসম, আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম এবং বেশী করে কাঁদতে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۵ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ : أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ سَلَّامِ بْنِ أَبِي سَلَّامٍ الحَبَشِيُّ الدِّمَشْقِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ الزُّهْرِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «لَمَّا كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُودِيَ إِنَّ الصَّلَاةَ جَامِعَةٌ»
ইসহা’ক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু স্বালিহ’ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: মু‘আবিয়াহ ইব্নু সাল্লাম ইব্ন আবূ সাল্লাম হা’বাশী দামিশ্ক্বী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু আবূ কাছির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ সালামাহ ইব্নু ‘আব্দুর রাহ্মান ইব্ন ‘আওফ যুহ্রী আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আম্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হলো, তখন ‘আস্-সলাতু জামি’আতুন’ বলে (সালাতে সমবেত হবার জন্য) আহ্বান জানানো হল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَتْ عَائِشَةُ، وَأَسْمَاءُ: خَطَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আয়িশা ও আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুত্বা দিয়েছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۶ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، ح وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنِي عُرْوَةُ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَرَجَ إِلَى المَسْجِدِ، فَصَفَّ النَّاسُ وَرَاءَهُ، فَكَبَّرَ فَاقْتَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ كَبَّرَ فَرَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقَامَ وَلَمْ يَسْجُدْ، وَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً هِيَ أَدْنَى مِنَ القِرَاءَةِ الأُولَى، ثُمَّ كَبَّرَ وَرَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ أَدْنَى مِنَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ قَالَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، فَاسْتَكْمَلَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فِي أَرْبَعِ سَجَدَاتٍ، وَانْجَلَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَنْصَرِفَ، ثُمَّ قَامَ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ: «هُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلَاةِ» وَكَانَ يُحَدِّثُ كَثِيرُ بْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، كَانَ يُحَدِّثُ يَوْمَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، بِمِثْلِ حَدِيثِ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، فَقُلْتُ لِعُرْوَةَ: ” إِنَّ أَخَاكَ يَوْمَ خَسَفَتْ بِالْمَدِينَةِ لَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ مِثْلَ الصُّبْحِ؟ قَالَ: أَجَلْ، لِأَنَّهُ أَخْطَأَ السُّنَّةَ “
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি সিহাব থেকে, (অন্য সনদে) আহ্’মাদ ইব্নু স্বালিহ্ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আম্বাসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন সিহাব থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় একবার সূর্যগ্রহণ হয়। তখন তিনি মসজিদে গমন করেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকেরা তাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হলো। তিনি তাক্বীর বললেন। অতঃপর আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীর্ঘ কির’আত পাঠ করলেন। অতঃপর তাক্বীর বললেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকূ’তে থাকলেন। অতঃপর সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলে দাঁড়ালেন এবং সিজদায় না গিয়েই আবার দীর্ঘক্ষণ কির’আত পাঠ করলেন। তবে তা প্রথম কিরাআতের চেয়ে অল্পস্থয়ী। অতঃপর তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ বললেন এবং দীর্ঘ রুকূ’ করলেন, তবে তা প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি বললেনঃ সামিআল্লাহ হুলিমান হা’মিদাহ অতঃপর সিজদায় গেলেন। অতঃপর তিনি পরবর্তী রাকা’আতেও অনুরূপ করলেন এবং এভাবে চার সিজদার সাথে চার রাক’আত পূর্ণ করলেন। তাঁর সালাত শেষ করার পূর্বেই সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে আল্লাহ্র যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন এবং বললেনঃ সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে গ্রহণ হয় না। কাজেই যখনই তোমরা গ্রহণ হতে দেখবে, তখনই ভীত হয়ে সালাতের দিকে গমন করবে। রাবী বর্ণনা করেন, কাসীর ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলতেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) হতে ‘উরওয়াহ (রহমাহুল্লাহ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তাই আমি ‘উরওয়াহ্কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার ভাই (‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যুবায়র) তো মদীনায় যেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল, সেদিন ফজরের সালাতের ন্যায় দু’রাক’আত সালাত আদায়ের অতিরিক্ত কিছু করেননি। তিনি বললেন, তা ঠিক, তবে তিনি সুন্নাত অনুসরণ করতে ভুল করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى: {وَخَسَفَ القَمَرُ} [القيامة: ۸]
আল্লাহ তা ‘আলা বলেছেন, “আর চন্দ্র নিস্প্রভ হয়ে পরবে”। [সূরা কিয়ামাহ, ৭৫:৮]
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۷ – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرَتْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى يَوْمَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ، فَكَبَّرَ، فَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَقَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، وَقَامَ كَمَا هُوَ، ثُمَّ قَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً وَهِيَ أَدْنَى مِنَ القِرَاءَةِ الأُولَى، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهِيَ أَدْنَى مِنَ الرَّكْعَةِ الأُولَى، ثُمَّ سَجَدَ سُجُودًا طَوِيلًا، ثُمَّ فَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ سَلَّمَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ النَّاسَ، فَقَالَ: فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ وَالقَمَرِ: «إِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلَاةِ»
সা‘ঈদ ইব্নু ‘উফায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উক্বায়ল আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সময় সালাত আদায় করেন। তিনি দাঁড়িয়ে তাক্বীর বললেন। অতঃপর দীর্ঘ কির’আত পাঠ করেন। অতঃপর তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করলেন। অতঃপর মাথা তুললেন, আর সামি‘আল্লাহু লিমান হা’মিদা বলে পূর্বের মতই দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কির’আত পাঠ করলেন। তবে তা পূর্বের কিরাআতের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করলেন, তবে এ রুকূ’ প্রথম রুকূ’র চেয়ে কম দীর্ঘ ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ সিজদা করলেন। অতঃপর তিনি শেষ রাক’আতে প্রথম রাকা’আতের অনুরূপ করলেন এবং সালাম ফিরালেন। তখন সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল। অতঃপর লোকদের উদ্দেশে তিনি খুত্বা দিলেন। খুত্বায় তিনি সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে বললেন, এ হচ্ছে আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা ভীত অবস্থায় সালাতের দিকে গমন করবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ أَبُو مُوسَى: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আবূ মূসা আশ‘আরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۸ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُخَوِّفُ بِهَا عِبَادَهُ» وَقَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَلَمْ يَذْكُرْ عَبْدُ الوَارِثِ، وَشُعْبَةُ، وَخَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَحَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ يُونُسَ: «يُخَوِّفُ اللَّهُ بِهَا عِبَادَهُ»، وَتَابَعَهُ أَشْعَثُ، عَنِ الحَسَنِ، وَتَابَعَهُ مُوسَى، عَنْ مُبَارَكٍ، عَنِ الحَسَنِ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُخَوِّفُ بِهِمَا عِبَادَهُ»
ক্বুতায়বা ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইউনুস থেকে, তিনি হা’সান থেকে, তিনি আবূ বাক্রাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যুর কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। তবে এ দিয়ে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন”। ইমাম বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ওয়ারিস, শু’আইব, খালিদ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্, হাম্মাদ ইব্নু সালাম (রহমাহুমুল্লাহ) ইউনুস (রহমাহুল্লাহ) হতে ‘এ দিয়ে আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন’ বাক্যটি বর্ণনা করেননি; আর মূসা (রহমাহুল্লাহ) মুবারক (রহমাহুল্লাহ) স্থলে হাসান (রহমাহুল্লাহ) হতে ইউনুস (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন। তিনি বলেন, আমাকে আবূ বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ্ এ দিয়ে তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۴۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ يَهُودِيَّةً جَاءَتْ تَسْأَلُهَا، فَقَالَتْ لَهَا: أَعَاذَكِ اللَّهُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، فَسَأَلَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُعَذَّبُ النَّاسُ فِي قُبُورِهِمْ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَائِذًا بِاللَّهِ مِنْ ذَلِكَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ থেকে, তিনি ‘আমরাহ বিনতি ‘আব্দুর রহ্মান থেকে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, এক ইয়াহুদী মহিলা তাঁর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করতে এলো। সে ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কে বলল, আল্লাহ্ তা’আলাও আপনাকে কবর আযাব হতে রক্ষা করুন। অতঃপর ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করেন, কবরে কি মানুষকে আযাব দেয়া হবে? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “এত্থেকে আল্লাহ্র নিকট পানাহ চাই”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۰ – ثُمَّ رَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ مَرْكَبًا، فَخَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَرَجَعَ ضُحًى، فَمَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ ظَهْرَانَيِ الحُجَرِ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي وَقَامَ النَّاسُ وَرَاءَهُ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَفَعَ فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ، فَسَجَدَ، ثُمَّ قَامَ فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ قَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ، فَسَجَدَ وَانْصَرَفَ، فَقَالَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ، ثُمَّ أَمَرَهُمْ أَنْ يَتَعَوَّذُوا مِنْ عَذَابِ القَبْرِ
(পূর্বের হাদীসটির সনদ থেকে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কর্তৃক বর্ণিত, অতঃপর কোন এক সকালে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়। তিনি সূর্যোদয় ও দুপুরের মাঝামাঝি সময় ফিরে আসেন এবং কামরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করেন। অতঃপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন এবং লোকেরা তাঁর পিছনে দাঁড়াল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করেন, পরে মাথা তুলে দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম পূর্বের কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করেন, তবে এ রুকূ’ পূর্বের রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং সিজদায় গেলেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ’ করলেন। এ রুকূ’ প্রথম রাক’আতের রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার রুকূ’ করলেন এবং তা প্রথম রাক’আতের রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। পরে মাথা তুললেন এবং সিজদায় গেলেন। অতঃপর সালাত শেষ করলেন। আল্লাহ্র যা ইচ্ছা তিনি তা বললেন এবং কবর আযাব হতে পানাহ চাওয়ার জন্য উপস্থিত লোকেদের আদেশ করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۱ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّهُ قَالَ: لَمَّا كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، نُودِيَ: «إِنَّ الصَّلَاةَ جَامِعَةٌ، فَرَكَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ فِي سَجْدَةٍ، ثُمَّ قَامَ، فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ فِي سَجْدَةٍ، ثُمَّ جَلَسَ، ثُمَّ جُلِّيَ عَنِ الشَّمْسِ»، قَالَ: وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: مَا سَجَدْتُ سُجُودًا قَطُّ كَانَ أَطْوَلَ مِنْهَا
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হয় তখন ‘আস্-সালাতু জামিয়াতুন’ বলে ঘোষণা দেয়া হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন এক রাক’আতে দু’বার রুকূ’ করেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাকা’আতেও দু’বার রুকূ’ করেন অতঃপর বসেন আর ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে যায়”। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেছেন, “এ সালাত ছাড়া এত লম্বা সিজদা আমি কক্ষণো করিনি”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَصَلَّى ابْنُ عَبَّاسٍ لَهُمْ فِي صُفَّةِ زَمْزَمَ وَجَمَعَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَصَلَّى ابْنُ عُمَرَ
ইব্ন আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) লোকদেরকে নিয়ে যম্যমের সুফ্ফায় সালাত আদায় করেন এবং আলী ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জামা ‘আতে সালাত আদায় করেছেন। ইব্ন উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) গ্রহণে-এর সালাত আদায় করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۲ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: انْخَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا نَحْوًا مِنْ قِرَاءَةِ سُورَةِ البَقَرَةِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَفَعَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ قَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ، فَاذْكُرُوا اللَّهَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، رَأَيْنَاكَ تَنَاوَلْتَ شَيْئًا فِي مَقَامِكَ ثُمَّ رَأَيْنَاكَ كَعْكَعْتَ؟ قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي رَأَيْتُ الجَنَّةَ، فَتَنَاوَلْتُ عُنْقُودًا، وَلَوْ أَصَبْتُهُ لَأَكَلْتُمْ مِنْهُ مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا، وَأُرِيتُ النَّارَ، فَلَمْ أَرَ مَنْظَرًا كَاليَوْمِ قَطُّ أَفْظَعَ، وَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ» قَالُوا: بِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «بِكُفْرِهِنَّ» قِيلَ: يَكْفُرْنَ بِاللَّهِ؟ قَالَ: ” يَكْفُرْنَ العَشِيرَ، وَيَكْفُرْنَ الإِحْسَانَ، لَوْ أَحْسَنْتَ إِلَى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ كُلَّهُ، ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا، قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি যায়দ ইব্ন আসলাম থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সালাত আদায় করেন এবং তিনি সূরা আল-বাক্বারা পাঠ করতে যত সময় লাগে সে পরিমাণ দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ’ করেন। অতঃপর মাথা তুলে পুনরায় দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করলেন। তবে তা প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা করেন। আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার দীর্ঘ রুকূ’ করেন, তবে তা পূর্বের রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কিয়াম করলেন, তবে তা প্রথম কিয়াম অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করেন, তবে তা প্রথম রুকূ’র অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা করেন এবং সালাত শেষ করেন। ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গিয়েছে। তারপর তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা গ্রহণ দেখবে তখনই আল্লাহ্কে স্মরণ করবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমরা দেখলাম, আপনি নিজের জায়গা হতে কি যেন ধরেছেন, আবার দেখলাম, আপনি যেন পিছনে সরে এলেন। তিনি বললেন- আমিতো জান্নাত দেখেছিলাম এবং এক গুচ্ছ আঙ্গুরের প্রতি হাত বাড়িয়েছিলাম। আমি তা পেয়ে গেলে দুনিয়া কায়িম থাকা পর্যন্ত অবশ্য তোমরা তা খেতে পারতে। অতঃপর আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা নারী। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! কী কারণে? তিনি বললেনঃ তাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞেস করা হল, তারা কি আল্লাহ্র সাথে কুফরী করে? তিনি জবাব দিলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে এবং ইহ্সান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাদের কারো প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, অতঃপর সে তোমার হতে (যদি) সামান্য ত্রুটি পায়, তা হলে বলে ফেলে, তোমার কাছ থেকে কখনো ভাল ব্যবহার পেলাম না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
1053 – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ امْرَأَتِهِ فَاطِمَةَ بِنْتِ المُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهَا قَالَتْ: أَتَيْتُ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَإِذَا النَّاسُ قِيَامٌ يُصَلُّونَ وَإِذَا هِيَ قَائِمَةٌ تُصَلِّي، فَقُلْتُ: مَا لِلنَّاسِ، فَأَشَارَتْ بِيَدِهَا إِلَى السَّمَاءِ، وَقَالَتْ: سُبْحَانَ اللَّهِ، فَقُلْتُ: آيَةٌ؟ فَأَشَارَتْ: أَيْ نَعَمْ، قَالَتْ: فَقُمْتُ حَتَّى تَجَلَّانِي الغَشْيُ، فَجَعَلْتُ أَصُبُّ فَوْقَ رَأْسِي المَاءَ، فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: ” مَا مِنْ شَيْءٍ كُنْتُ لَمْ أَرَهُ إِلَّا قَدْ رَأَيْتُهُ فِي مَقَامِي هَذَا، حَتَّى الجَنَّةَ وَالنَّارَ، وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّكُمْ تُفْتَنُونَ فِي القُبُورِ مِثْلَ – أَوْ قَرِيبًا مِنْ – فِتْنَةِ الدَّجَّالِ – لَا أَدْرِي أَيَّتَهُمَا قَالَتْ أَسْمَاءُ – يُؤْتَى أَحَدُكُمْ، فَيُقَالُ لَهُ: مَا عِلْمُكَ بِهَذَا الرَّجُلِ؟ فَأَمَّا المُؤْمِنُ – أَوِ المُوقِنُ، لَا أَدْرِي أَيَّ ذَلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ – فَيَقُولُ: مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَالهُدَى، فَأَجَبْنَا وَآمَنَّا وَاتَّبَعْنَا، فَيُقَالُ لَهُ: نَمْ صَالِحًا، فَقَدْ عَلِمْنَا إِنْ كُنْتَ لَمُوقِنًا، وَأَمَّا المُنَافِقُ – أَوِ المُرْتَابُ لَا أَدْرِي أَيَّتَهُمَا قَالَتْ أَسْمَاءُ – فَيَقُولُ: لَا أَدْرِي، سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ شَيْئًا فَقُلْتُهُ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ফাত্বিমা বিন্তি মুন্যির থেকে, তিনি আসমা বিন্তে আবূ বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন: সূর্যগ্রহের সময় আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর নিকট গেলাম। তখন লোকজন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল। তখন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) ও সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, লোকদের কী হয়েছে? তখন তিনি হাত দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করলেন এবং ‘সুবহানাল্লাহ্’ বললেন। আমি বললাম, এ কি কোন নিদর্শন? তখন তিনি ইঙ্গিতে বললেন, হাঁ। আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। এমন কি (দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে) আমি প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়লাম এবং মাথায় পানি ঢালতে লাগলাম। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শেষ করলেন, তখন আল্লাহ্র হাম্দ ও সানা বর্ণনা করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি এ স্থান হতে দেখতে পেলাম, যা এর পূর্বে দেখিনি, এমন কি জান্নাত এবং জাহান্নাম। আর আমার নিকট ওয়াহী পাঠান হয়েছে যে, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে কবরের মধ্যে দাজ্জালের ফিত্নার ন্যায় অথবা বলেছেন তার কাছাকাছি ফিত্নায় লিপ্ত করা হবে। বর্ণনাকারী বলেন, (‘মিস্লা’ ও ‘কারীবান’) দু’টির মধ্যে কোন্টি আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেছিলেন, তা আমার মনে নেই। তোমাদের এক একজনকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রশ্ন করা হবে, এ ব্যক্তি সম্পর্কে কী জান? তখন মু’মিন (ঈমানদার) অথবা ‘মুকিন’ (বিশ্বাসী) বলবেন- বর্ণনাকারী বলেন যে, আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) ‘মু’মিন’ শব্দ বলেছিলেন, না ‘মুকীন’ তা আমার স্মরণ নেই, তিনি হলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুস্পষ্ট দলীল ও হিদায়াত নিয়ে আমাদের নিকট এসেছিলেন এবং আমরা এতে সাড়া দিয়ে ঈমান এনেছি ও তাঁর অনুসরণ করেছি। অতঃপর তাঁকে বলা হবে, তুমি পুণ্যবান বান্দা হিসেবে ঘুমিয়ে থাক। আমরা অবশ্যই জানতাম যে, নিশ্চিতই তুমি দৃঢ়বিশ্বাস স্থাপনকারী ছিলে। আর মুনাফিক কিংবা সন্দেহকারী বর্ণনাকারী বলেন, আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) ‘মুনাফিক’ না ‘সন্দেহকারী’ বলেছিলেন তা আমার মনে নেই, সে শুধু বলবে, আমি কিছুই জানি না। আমি মানুষকে কিছু বলতে শুনেছি এবং আমিও তাই বলেছি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۴ – حَدَّثَنَا رَبِيعُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ فَاطِمَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ: لَقَدْ «أَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالعَتَاقَةِ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ»
রাবী‘উ ইব্নু ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাস থেকে, তিনি ফত্বিমাহ থেকে, তিনি আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে , তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সময় গোলাম আযাদ করার নির্দেশ দিয়েছেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۵ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ يَهُودِيَّةً جَاءَتْ تَسْأَلُهَا، فَقَالَتْ: أَعَاذَكِ اللَّهُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، فَسَأَلَتْ عَائِشَةُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُعَذَّبُ النَّاسُ فِي قُبُورِهِمْ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَائِذًا بِاللَّهِ مِنْ ذَلِكَ»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি ‘আম্রাহ বিনতি ‘আব্দুর রহ্’মান থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন: এক ইয়াহূদী মহিলা তাঁর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করতে এল। মহিলাটি বলল, আল্লাহ্ আপনাকে কবরের ‘আযাব হতে পানাহ্ দিন। অতঃপর ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেন, কবরে কি মানুষকে ‘আযাব দেয়া হবে? তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমি আল্লাহ্র নিকট পানাহ্ চাই ক্ববরের ‘আযাব হতে”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۶ – ثُمَّ رَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ مَرْكَبًا، فَكَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَرَجَعَ ضُحًى، فَمَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ ظَهْرَانَيِ الحُجَرِ، ثُمَّ قَامَ، فَصَلَّى وَقَامَ النَّاسُ وَرَاءَهُ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَفَعَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ، فَسَجَدَ سُجُودًا طَوِيلًا، ثُمَّ قَامَ، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ قَامَ قِيَامًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ القِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلًا وَهُوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ وَهُوَ دُونَ السُّجُودِ الأَوَّلِ، ثُمَّ انْصَرَفَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ ثُمَّ «أَمَرَهُمْ أَنْ يَتَعَوَّذُوا مِنْ عَذَابِ القَبْرِ»
(পূর্বের হাদীসটির সনদে) অতঃপরে একদা সকালে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়। তিনি ফিরে এলেন, তখন ছিল সূর্যোদয় ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হুজরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করলেন। অতঃপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন এবং লোকেরাও তাঁর পিছনে দাঁড়াল। তিনি দীর্ঘ কিয়াম করলেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ’ করলেন। অতঃপর মাথা তুলে আবার দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি আবার দীর্ঘ রুকূ’ করেন। তবে এ রুকূ’ প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ রুকূ’ করেন। তবে এ রুকূ’ প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ সিজদা করলেন। অতঃপর তিনি আবার দাঁড়িয়ে কিয়াম করেন অবশ্য তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ রুকূ’ করলেন, তা প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি আবার দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ’ করেন। অবশ্য এ রুকূ’ প্রথম রুকূ’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সিজদা করেন। এ সিজদা প্রথম সিজদার চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করেন। এরপরে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র যা ইচ্ছা তাই বললেন। শেষে তিনি সবাইকে কবরের ‘আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনার আদেশ করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
رَوَاهُ أَبُو بَكْرَةَ، وَالمُغِيرَةُ، وَأَبُو مُوسَى، وَابْنُ عَبَّاسٍ، وَابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ
আবূ বাকরাহ, মুগীরা, আবূ মূসা, ইব্নু ‘আব্বাস ও ইব্নু ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহুম)-এর এ বিষয়ে বিবরণ রয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنِي قَيْسٌ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الشَّمْسُ وَالقَمَرُ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَصَلُّوا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসমা‘ঈল থেকে, তিনি বললেন: ক্বায়স আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবু মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কারো জন্মের ও মৃত্যুর কারণে সুর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। এগুলো আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোর মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন সালাত আদায় করবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۸ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَهِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى بِالنَّاسِ، فَأَطَالَ القِرَاءَةَ، ثُمَّ رَكَعَ، فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَأَطَالَ القِرَاءَةَ وَهِيَ دُونَ قِرَاءَتِهِ الأُولَى، ثُمَّ رَكَعَ، فَأَطَالَ الرُّكُوعَ دُونَ رُكُوعِهِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ قَامَ، فَصَنَعَ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ قَامَ فَقَالَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ يُرِيهِمَا عِبَادَهُ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ، فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلَاةِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী এবং হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, “রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় সুর্যগ্রহণ হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন দাঁড়ালেন এবং লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তিনি কির’আত দীর্ঘ করেন। অতঃপর তিনি দীর্ঘ রুকু’ করেন। অতঃপর তিনি মাথা তুলেন এবং দীর্ঘ কির’আত পড়েন। তবে তা প্রথম কির’আতের চেয়ে স্বল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকু’ করেন এবং রুকু’ দীর্ঘ করেন। তবে এ রুকু’ প্রথম রুকু’র চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুলেন এবং দু’টি সিজদা করেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতেও অনুরুপ করেন। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে বললেনঃ সুর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে হয় না। আল্লাহ্র নিদর্শন সমুহের মধ্যে এ হল দু’টি নিদর্শন; যা আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের দেখিয়ে থাকেন। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে ভীত অবস্থায় সালাতের দিকে আসবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
رَوَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
এ সম্বন্ধে ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণনা রয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۵۹ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ العَلَاءِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزِعًا، يَخْشَى أَنْ تَكُونَ السَّاعَةُ، فَأَتَى المَسْجِدَ، فَصَلَّى بِأَطْوَلِ قِيَامٍ وَرُكُوعٍ وَسُجُودٍ رَأَيْتُهُ قَطُّ يَفْعَلُهُ، وَقَالَ: «هَذِهِ الآيَاتُ الَّتِي يُرْسِلُ اللَّهُ، لَا تَكُونُ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنْ يُخَوِّفُ اللَّهُ بِهِ عِبَادَهُ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ، فَافْزَعُوا إِلَى ذِكْرِهِ وَدُعَائِهِ وَاسْتِغْفَارِهِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আলা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বুরায়দা ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি আবূ বুরদাহ থেকে, তিনি আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “একবার সুর্যগ্রহণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত অবস্থায় উঠলেন এবং ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবার ভয় করছিলেন। অতঃপর তিনি মসজিদে আসেন এবং এর পূর্বে আমি তাঁকে যেমন করতে দেখেছি, তার চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কিয়াম, রুকু’ এবং সিজদা সহকারে সালাত আদায় করলেন। আর তিনি বললেনঃ এগুলো হল নিদর্শন যা আল্লাহ্ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। বরং আল্লাহ্ তা’আলা এর মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। কাজেই যখন তোমরা এর কিছু দেখতে পাবে, তখন ভীত অবস্থায় আল্লাহ্র যিকর, দু’আ এবং ইস্তিগ্ফারের দিকে ধাবিত হবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَهُ أَبُو مُوسَى، وَعَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ বিষয়ে আবূ মূসা ও আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۰ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عِلَاقَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ المُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، يَقُولُ: انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ، فَقَالَ النَّاسُ: انْكَسَفَتْ لِمَوْتِ إِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَادْعُوا اللَّهَ وَصَلُّوا حَتَّى يَنْجَلِيَ»
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যিয়াদ ইব্নু ‘ইলাক্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি মুগীরাহ ইব্ন শু‘উবাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –(এর পুত্র) ইব্রাহীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যেদিন ইন্তিকাল করেন, সেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। লোকেরা বলল ইব্রাহীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃ নিশ্চয়ই সূর্য ও চঁন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টোর গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা এদের গ্রহণ হতে দেখবে, তখন তাদের গ্রহণ মুক্ত হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ্র নিকট দু’আ করবে এবং সালাত আদায় করতে থাকবে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۱ – وَقَالَ أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي فَاطِمَةُ بِنْتُ المُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ: ” فَانْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ فَحَمِدَ اللَّهَ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ»
এবং আবূ উসামাহ বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফাত্বিমাহ বিন্তু মুনযির আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আসমা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করলেন আর এদিকে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল। অতঃপর তিনি খুত্বা দিলেন। এতে তিনি প্রথমে আল্লাহ্র যথাযথ প্রশংসা করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ ‘আম্মা বা’দ’।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۲ – حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু গায়লান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু ‘আমির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘উ্বাহ থেকে, তিনি ইউনুস থেকে, তিনি হা’সান থেকে, তিনি আবূ বাকরাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। তখন তিনি দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۳ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ، حَتَّى انْتَهَى إِلَى المَسْجِدِ وَثَابَ النَّاسُ إِلَيْهِ، فَصَلَّى بِهِمْ رَكْعَتَيْنِ، فَانْجَلَتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، وَإِنَّهُمَا لَا يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، وَإِذَا كَانَ ذَاكَ فَصَلُّوا وَادْعُوا حَتَّى يُكْشَفَ مَا بِكُمْ» وَذَاكَ أَنَّ ابْنًا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ يُقَالُ لَهُ إِبْرَاهِيمُ فَقَالَ النَّاسُ فِي ذَاكَ
আবূ মা‘আ্মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’সান থেকে, তিনি আবূ বাক্রাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। তিনি বের হয়ে তাঁর চাদর টেনে টেনে মসজিদে পৌঁছলেন এবং লোকজনও তাঁর নিকট সমবেত হল। অতঃপর তিনি তাদের নিয়ে দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন। অতঃপর সূর্যগ্রহণ মুক্ত হলে তিনি বললেন, “সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যুর কারণে এ দু’টোর গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন গ্রহণ হবে, তা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে।” এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কারণেই বলেছেন যে, সেদিন তাঁর পুত্র ইবরাহীম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর ওফাত হয়েছিল এবং লোকেরা সে ব্যাপারে পরস্পর বলাবলি করছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۴ – حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى بِهِمْ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فِي سَجْدَتَيْنِ الأَوَّلُ الأَوَّلُ أَطْوَلُ»
মাহ্’মূদ ইব্নু গায়লান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ আহ্’মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি ‘আম্রাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সময় লোকদের নিয়ে দু’রাক’আতে চার রুকূ’ সহ সালাত আদায় করেন। প্রথমটি (দ্বিতীয় রাক’আতের চেয়ে) দীর্ঘস্থায়ী ছিল।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۵ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ نَمِرٍ، سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، ” جَهَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَلَاةِ الخُسُوفِ بِقِرَاءَتِهِ، فَإِذَا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَتِهِ كَبَّرَ، فَرَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ مِنَ الرَّكْعَةِ قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، ثُمَّ يُعَاوِدُ القِرَاءَةَ فِي صَلَاةِ الكُسُوفِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فِي رَكْعَتَيْنِ وَأَرْبَعَ سَجَدَاتٍ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মিহ্রান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়লীদ ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু নামির আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি শিহাব থেকে শুনলেন, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সালাতে তাঁর কির’আত সশব্দে পাঠ করেন। কির’আত সমাপ্ত করার পর তাক্বীর বলে রুকু’ করেন। যখন রুকু’ হতে মাথা তুললেন, তখন বললেন সামি‘আল্লা-হুলিমান হা’মিদাহ, অতঃপর এ গ্রহণ-এর সালাতেই তিনি আবার কির’আত পাঠ করেন এবং চার রুকূ’ ও চার সিজদাসহ দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۶ – وَقَالَ الأَوْزَاعِيُّ، وَغَيْرُهُ، سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ الشَّمْسَ خَسَفَتْ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَعَثَ مُنَادِيًا: بالصَّلَاةُ جَامِعَةٌ، فَتَقَدَّمَ فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فِي رَكْعَتَيْنِ، وَأَرْبَعَ سَجَدَاتٍ، وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ نَمِرٍ، سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ مِثْلَهُ قَالَ الزُّهْرِيُّ: فَقُلْتُ: ” مَا صَنَعَ أَخُوكَ ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ مَا صَلَّى إِلَّا رَكْعَتَيْنِ مِثْلَ الصُّبْحِ، إِذْ صَلَّى بِالْمَدِينَةِ، قَالَ: أَجَلْ إِنَّهُ أَخْطَأَ السُّنَّةَ ” تَابَعَهُ سُفْيَانُ بْنُ حُسَيْنٍ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ فِي الجَهْرِ
এবং আওযা‘ঈ ও অন্যরা বললেন: আমি যুহ্রী থেকে শুনলাম, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে তিনি একজনকে “আস-সালাতু জামিয়াতুন” বলে ঘোষণা দেয়ার জন্য পাঠান। অতঃপর তিনি অগ্রসর হন এবং চার রুকূ’ ও চার সিজদাসহ দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন। ওয়ালীদ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমাকে আবদুর রহমান ইব্নু নামির আরো বলেন যে, তিনি ইব্নু শিহাব (রহমাহুল্লাহ) হতে অনুরূপ শুনেছেন, যুহরী (রহমাহুল্লাহ) বলেন যে, আমি ‘উরওয়াহ (রহমাহুল্লাহ)-কে বললাম, তোমার ভাই ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এরূপ করেননি। তিনি যখন মদীনায় গ্রহণ-এর সালাত আদায় করেন, তখন ফজরের সালাতের ন্যায় দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন। ‘উরওয়াহ (রহমাহুল্লাহ) বললেন, হাঁ, তিনি সুন্নাত অনুসরণে ভুল করেছেন। সুলাইমান ইব্নু কাসীর (রহমাহুল্লাহ) যুহরী (রহমাহুল্লাহ) হতে সশব্দে কিরাআতের ব্যাপারে ইব্নু কাসীর (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۷ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ الأَسْوَدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: ” قَرَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النَّجْمَ بِمَكَّةَ فَسَجَدَ فِيهَا وَسَجَدَ مَنْ مَعَهُ غَيْرَ شَيْخٍ أَخَذَ كَفًّا مِنْ حَصًى – أَوْ تُرَابٍ – فَرَفَعَهُ إِلَى جَبْهَتِهِ، وَقَالَ: يَكْفِينِي هَذَا “، فَرَأَيْتُهُ بَعْدَ ذَلِكَ قُتِلَ كَافِرًا
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ইসহা’ক্ব থেকে, তিনি বললেন: আমি আস্ওয়াদ থেকে শুনলাম, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় সূরা আন-নাজ্ম তিলাওয়াত করেন। অতঃপর তিনি সিজদা করেন এবং একজন বৃদ্ধ লোক ছাড়া তাঁর সঙ্গে সবাই সিজদা করেন। বৃদ্ধ লোকটি এক মুঠো কঙ্কর বা মাটি হাতে নিয়ে তার কপাল পর্যন্ত উঠিয়ে বলল আমার জন্য এ যথেষ্ট। আমি পরবর্তীতে দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۸ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الجُمُعَةِ فِي صَلَاةِ الفَجْرِ الم تَنْزِيلُ السَّجْدَةُ وَهَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্নু ইব্রাহীম থেকে, তিনি ‘আব্দুর্ রহমান থেকে, তিনি আবু হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুক্রবার ফজরের সালাতে সুরা আস সিজদা এবং সূরা ইনসান তিলাওয়াত করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۶۹ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو النُّعْمَانِ، قَالَا: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ص لَيْسَ مِنْ عَزَائِمِ السُّجُودِ، وَقَدْ «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْجُدُ فِيهَا»
সুলায়মান ইব্নু হা’রব এবং আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তাঁরা উভয় বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়য়ুব থেকে, তিনি ইকরামাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি বলেন, সূরা স-দ-এর সিজদা অত্যাবশ্যক সিজদাসমূহের মধ্যে গণ্য নয়। তবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি তিলাওয়াতের পর সিজদা করতে দেখেছি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
قَالَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইব্ন আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এ বিষয়ে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۰ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَرَأَ سُورَةَ النَّجْمِ، فَسَجَدَ بِهَا فَمَا بَقِيَ أَحَدٌ مِنَ القَوْمِ إِلَّا سَجَدَ، فَأَخَذَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ كَفًّا مِنْ حَصًى – أَوْ تُرَابٍ – فَرَفَعَهُ إِلَى وَجْهِهِ، وَقَالَ: يَكْفِينِي هَذَا “، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدُ قُتِلَ كَافِرًا
হা’ফস্ব ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উ্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ইসহা’ক্ব থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা আন্ নাজ্ম তিলাওয়াত করেন, অতঃপর সিজদা করেন। তখন উপস্থিত লোকদের মধ্যে এমন কেউ বাকী ছিল না, যে তাঁর সঙ্গে সিজদা করেনি। কিন্তু একব্যক্তি এক মুঠো কঙ্কর বা মাটি হাতে নিয়ে মুখমণ্ডল পর্যন্ত তুলে বলল, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। [‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন] পরে আমি এ ব্যক্তিকে দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «يَسْجُدُ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ»
আব্দুল্লাহ ইব্ন উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বিনা উযূতে তিলাওয়াতের সিজ্দা করেছেন।১
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۱ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَجَدَ بِالنَّجْمِ، وَسَجَدَ مَعَهُ المُسْلِمُونَ وَالمُشْرِكُونَ وَالجِنُّ وَالإِنْسُ» وَرَوَاهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ، عَنْ أَيُّوبَ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘ইক্রামাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি বললেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা আন্-নাজ্ম তিলাওয়াতের পর সিজদা করেন এবং তাঁর সাথে সমস্ত মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও ইনসান সবাই সিজদা করেছিল।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১। হযরত ইব্ন উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে অপর হাদীসে বর্ণিত আছে যে, তিনি উযূ অবস্থায় সিজ্দা করতেন। তাছাড়া কোন ইমামই উযূ ছাড়া তিলাওয়াতের সিজ্দা সমর্থন করেননি। –আইনী।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۲ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو الرَّبِيعِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ خُصَيْفَةَ، عَنِ ابْنِ قُسَيْطٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ سَأَلَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَزَعَمَ «أَنَّهُ قَرَأَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّجْمِ فَلَمْ يَسْجُدْ فِيهَا»
সুলায়মান ইব্নু দাউদ আবূ রাবী‘ই আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, ইসমা‘ঈল ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু খুস্বায়ফাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন ক্বুসায়ত্ব থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়ছার থেকে, তিনি যায়দ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, “একবার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট সূরা আন্-নাজ্ম তিলাওয়াত করা হল কিন্তু তাতে তিনি সিজদা করেননি”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۳ – حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُسَيْطٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ: «قَرَأْتُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّجْمِ فَلَمْ يَسْجُدْ فِيهَا»
আদম ইব্নু আবূ ইয়ায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ক্বুসায়ত্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি যায়দ ইব্নু সাবিত রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সূরা ওয়ান্-নাজ্ম তিলাওয়াত করলাম। এতে তিনি সিজদা করেননি”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۴ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَا: أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ: رَأَيْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَرَأَ: إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ، فَسَجَدَ بِهَا، فَقُلْتُ: يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أَلَمْ أَرَكَ تَسْجُدُ؟ قَالَ: «لَوْ لَمْ أَرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْجُدُ لَمْ أَسْجُدْ»
মুসলিম ইব্নু ইব্রাহীম এবং মু‘আযা ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তারা উভয়ই বললেন: হিশাস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, একবার আমি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে দেখলাম, তিনি “ইযাস্ সামাউন শাক্ক্বাত” তিলাওয়াত করলেন এবং সিজদা করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ হুরায়রা! আমি কি আপনাকে সিজদা করতে দেখিনি? তিনি বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সিজদা করতে না দেখলে সিজদা করতাম না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ لِتَمِيمِ بْنِ حَذْلَمٍ – وَهُوَ غُلَامٌ – فَقَرَأَ عَلَيْهِ سَجْدَةً، فَقَالَ: «اسْجُدْ فَإِنَّكَ إِمَامُنَا فِيهَا»
তামীম ইব্ন হাযলাম নামক এক বালক সিজ্দার আয়াত তিলওয়াত রকলে ইব্ন মাসউদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁকে (সিজদা করার জন্য) বললেন, এ ব্যাপারে তুমিই আমাদের ইমাম।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۵ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ عَلَيْنَا السُّورَةَ، فِيهَا السَّجْدَةُ فَيَسْجُدُ وَنَسْجُدُ، حَتَّى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا مَوْضِعَ جَبْهَتِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমাদের সামনে এমন এক সূরা তিলাওয়াত করলেন যাতে সিজদার আয়াত রয়েছে। তাই তিনি সিজদা করলেন এবং আমরাও সিজদা করলাম। ফলে অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, আমাদের কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পাচ্ছিলেন না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۶ – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ آدَمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ السَّجْدَةَ وَنَحْنُ عِنْدَهُ، فَيَسْجُدُ وَنَسْجُدُ مَعَهُ، فَنَزْدَحِمُ حَتَّى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا لِجَبْهَتِهِ مَوْضِعًا يَسْجُدُ عَلَيْهِ»
বিশর ইব্নু আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আলী ইব্নু মুসহির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং আমরা তাঁর নিকট থাকতাম, তখন তিনি সিজদা করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এতে এত ভীড় হতো যে, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقِيلَ لِعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ: «الرَّجُلُ يَسْمَعُ السَّجْدَةَ وَلَمْ يَجْلِسْ لَهَا»، قَالَ : «أَرَأَيْتَ لَوْ قَعَدَ لَهَا كَأَنَّهُ لَا يُوجِبُهُ عَلَيْهِ» وَقَالَ سَلْمَانُ: «مَا لِهَذَا غَدَوْنَا» وَقَالَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «إِنَّمَا السَّجْدَةُ عَلَى مَنِ اسْتَمَعَهَا» وَقَالَ الزُّهْرِيُّ: «لَا يَسْجُدُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ طَاهِرًا، فَإِذَا سَجَدْتَ وَأَنْتَ فِي حَضَرٍ، فَاسْتَقْبِلِ القِبْلَةَ، فَإِنْ كُنْتَ رَاكِبًا فَلَا عَلَيْكَ حَيْثُ كَانَ وَجْهُكَ» وَكَانَ السَّائِبُ بْنُ يَزِيدَ: «لَا يَسْجُدُ لِسُجُودِ القَاصِّ»
ইমরান ইব্ন হুসাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু -কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে ব্যক্তি সিজ্দার আয়াত শুনলো কিন্তু এর জন্য সে বসেনি (তার কি সিজ্দা করতে হবে?)। তিনি বললেন, তুমি কি মনে কর সে যদি শোনার জন্য বসতো (তা হলে কি) তাকে সিজদা করতে হত? (বুখারী রহমাহুল্লাহ বলেন) যেন তিনি তার জন্য সিজ্দা ওয়াজিব মনে করেন না। সালমান (ফরিসী) রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, আমরা এ জন্য (সিজ্দার আয়াত শোনার জন্য) আসিনি। উসমান ইব্ন আফ্ফান রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, যে মনোযোগসহ সিজ্দার আয়াত শোনে শুধু তার উপর সিজ্দা ওয়াজিব। যুহরী রহমাহুল্লাহ বলেছেন, পবিত্র অবস্থা ছাড়া সিজ্দা করবে না। যদি তুমি আবাসে থেকে সিজদা কর, তবে কিবলামুখী হবে। যদি তুমি সাওয়ার অবস্থায় হও, তবে যে দিকেই তোমার মুখ হোক না কেন, তাতে তোমার কোন দোষ নাই। আর সায়িব ইব্ন ইয়াযীদ রহমাহুল্লাহ বক্তার বক্তৃতায় সিজ্দার আয়াত শোনে সিজ্দা করতেন না।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۷ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ التَّيْمِيِّ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الهُدَيْرِ التَّيْمِيِّ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ: وَكَانَ رَبِيعَةُ مِنْ خِيَارِ النَّاسِ، عَمَّا حَضَرَ رَبِيعَةُ مِنْ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَرَأَ يَوْمَ الجُمُعَةِ عَلَى المِنْبَرِ بِسُورَةِ النَّحْلِ حَتَّى إِذَا جَاءَ السَّجْدَةَ نَزَلَ، فَسَجَدَ وَسَجَدَ النَّاسُ حَتَّى إِذَا كَانَتِ الجُمُعَةُ القَابِلَةُ قَرَأَ بِهَا، حَتَّى إِذَا جَاءَ السَّجْدَةَ، قَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا نَمُرُّ بِالسُّجُودِ، فَمَنْ سَجَدَ، فَقَدْ أَصَابَ وَمَنْ لَمْ يَسْجُدْ، فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ وَلَمْ يَسْجُدْ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ» وَزَادَ نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، «إِنَّ اللَّهَ لَمْ يَفْرِضِ السُّجُودَ إِلَّا أَنْ نَشَاءَ»
ইব্রাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্নু জুরায়জ থেকে, তিনি বললেন: আবূ বাক্র ইব্নু আবূ মুলায়কাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘উছমান ইব্ন ‘আব্দুর রহ্’মান তায়মী থেকে, তিনি রাবী‘আহ ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন হুদায়রী তায়মী থেকে, আবূ বকর বললেন: রাবী‘আহ ছিলেন স্বাধীন, একবার রাবী আহ ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হলেন, তিনি তখন জুমু’আর দিন মিম্বরে দাঁড়িয়ে সুরা নাহ্ল তিলাওয়াত করছিলেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি মিম্বর হতে নেমে সিজদা করলেন এবং লোকেরাও সিজদা করল। এভাবে যখন পরবর্তী জুমু’আ এল, তখন তিনি সে সূরা পাঠ করেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমরা যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করি, তখন যে সিজদা করবে সে ঠিকই করবে, যে সিজদা করবে না তার কোন গুনাহ নেই। তার বর্ণনায় (বর্ণনাকারী বলেন) আর ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সিজদা করেননি। নাফি’(রহমাহুল্লাহ) ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে আরো বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা সিজদা ফরয করেননি, তবে আমরা ইচ্ছা করলে সিজদা করতে পারি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۸ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنِي بَكْرٌ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ العَتَمَةَ، فَقَرَأَ: إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ فَسَجَدَ، فَقُلْتُ: مَا هَذِهِ؟ قَالَ: «سَجَدْتُ بِهَا خَلْفَ أَبِي القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَا أَزَالُ أَسْجُدُ فِيهَا حَتَّى أَلْقَاهُ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘উতামির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি, তিনি বললেন: বাক্র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ রাফি’ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমি একবার আবূ হুরাইরা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সাথে ‘ইশার সালাত আদায় করেছিলাম। তিনি সলাতে “ইযাস সামাউন শক্ক্বাত” সূরা তিলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কী? তিনি বললেন, এ সূরা তিলাওয়াতের সময় আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে আমি এ সিজদা করেছিলাম। তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে আমি সিজদা করতে থাকব।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۷۹ – حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الفَضْلِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ السُّورَةَ الَّتِي فِيهَا السَّجْدَةُ فَيَسْجُدُ، وَنَسْجُدُ مَعَهُ، حَتَّى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا مَكَانًا لِمَوْضِعِ جَبْهَتِهِ»
স্বাদাক্বাহ ইব্নু ফাযল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ থেকে, তিনি ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন এমন সূরা তিলাওয়াত করতেন যাতে সিজদা আছে, তখন তিনি সিজদা করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এমন কি (ভীড়ের কারণে) আমাদের মধ্যে কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পেত না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۰ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَاصِمٍ، وَحُصَيْنٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «أَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِسْعَةَ عَشَرَ يَقْصُرُ، فَنَحْنُ إِذَا سَافَرْنَا تِسْعَةَ عَشَرَ قَصَرْنَا، وَإِنْ زِدْنَا أَتْمَمْنَا»
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আসিম এবং হু’স্বায়ন থেকে, তিনি ‘ইকরিমাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা সফরে ঊনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান কালে সালাত কসর করেন। সেহেতু আমরাও ঊনিশ দিনের সফরে থাকলে কসর করি এবং এর চেয়ে অধিক হলে পূর্ণ সালাত আদায় করি।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۱ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ: ” خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ المَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَكَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ حَتَّى رَجَعْنَا إِلَى المَدِينَةِ، قُلْتُ: أَقَمْتُمْ بِمَكَّةَ شَيْئًا؟ قَالَ: أَقَمْنَا بِهَا عَشْرًا “
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়রিস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু আবূ ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে মদীনা ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি দু’রাক’আত, দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। (রাবী বলেন) আমি (আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বললাম, আপনারা (হজ্জকালীন সময়) মক্কায় কয় দিন অবস্থান করেছিলেন? তিনি বললেন, সেখানে আমরা দশ দিন অবস্থান করেছিলাম।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ وَمَعَ عُثْمَانَ صَدْرًا مِنْ إِمَارَتِهِ ثُمَّ أَتَمَّهَا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বক্র এবং ‘উমর (রাঃ)-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছি। উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর সঙ্গেও তাঁর খিলাফতের প্রথম দিকে দু’রাক’আত আদায় করেছি। অতঃপর তিনি পূর্ণ সালাত আদায় করতে লাগলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۳ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَنْبَأَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ، قَالَ: «صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آمَنَ مَا كَانَ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ»
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন: আমি হারিসা ইব্নু ওয়াহ্ব রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিরাপদ অবস্থায় আমাদেরকে নিয়ে মিনায় দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۴ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ، يَقُولُ: صَلَّى بِنَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِمِنًى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، فَقِيلَ: ذَلِكَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَاسْتَرْجَعَ، ثُمَّ قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَصَلَّيْتُ مَعَ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ، وَصَلَّيْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ»، فَلَيْتَ حَظِّي مِنْ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ رَكْعَتَانِ مُتَقَبَّلَتَانِ
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহিদ ইব্নু যিয়াদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আ্মাশ থেকে, তিনি বললেন: ইব্রাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আবদুর রহমান ইব্নু ইয়াযীদ-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: ‘উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাদেরকে নিয়ে মিনায় চার রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। অতঃপর এ সম্পর্কে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে বলা হলো, তিনি প্রথমে ‘ইন্না লিল্লাহ্’ পড়লেন, অতঃপর বললেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত পড়েছি এবং ‘উমর ইব্নু খাত্তাব রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর সঙ্গে মিনায় দু’রাক’আত পড়েছি। কতই না ভাল হতো যদি চার রাক’আতের পরিবর্তে দু’রাক’আত মাকবূল সালাত হতো।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۵ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي العَالِيَةِ البَرَّاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ لِصُبْحِ رَابِعَةٍ يُلَبُّونَ بِالحَجِّ، فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَجْعَلُوهَا عُمْرَةً إِلَّا مَنْ مَعَهُ الهَدْيُ» تَابَعَهُ عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرٍ
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: উহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূল ‘আলিয়াহ বার্রাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ (যুল হিজ্জার) ৪র্থ তারিখ সকালে (মক্কায়) আগমন করেন এবং তাঁরা হাজ্জের জন্য তালবীয়া পাঠ করতে থাকেন। অতঃপর তিনি তাঁদের হাজ্জকে ‘উমরায় পরিণত করার আদেশ দেন। তবে তারা ব্যতীত যাঁদের নিকট হাদী (কুরবানীর পশু) ছিল। হাদীস বর্ণনায় ‘আতা (রহমাহুল্লাহ) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَسَمَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَوْمًا وَلَيْلَةً سَفَرًا» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ، وَابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، يَقْصُرَانِ، وَيُفْطِرَانِ فِي أَرْبَعَةِ بُرُدٍ وَهِيَ سِتَّةَ عَشَرَ فَرْسَخًا
এক দিন ও এক রাতের সফরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর বলে উল্লেখ করেছেন। ইব্ন উমর ও ইব্ন আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা চার ‘বুরদ’ অর্থাৎ ষোল ফারসাখ দূরত্বে কসর করতেন এবং সাওম পালন করতেন না। ১
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۶ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الحَنْظَلِيُّ، قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي أُسَامَةَ: حَدَّثَكُمْ عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيََ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تُسَافِرِ المَرْأَةُ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ إِلَّا مَعَ ذِي مَحْرَمٍ»
ইসহা’ক্ব ইব্নু ইবরাহীম হা’নযালী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আবূ উসামাহকে বললাম, ‘উবায়দুল্লাহ তোমাদের জন্য হাদীসটি বর্ণনা করেছেন নাফি‘ থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কোন নারীই যেন মাহ্রামকে ২ সঙ্গে না নিয়ে তিন দিনের সফর না করে।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [ ]
ফুটনোটঃ
১। এক ফারসাখ হলো- তিন মাইল। – আইনী।
২। ইসলামের দৃষ্টিতে যাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম এমন পুরুষ ব্যক্তি।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۷ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تُسَافِرِ المَرْأَةُ ثَلَاثًا إِلَّا مَعَ ذِي مَحْرَمٍ» تَابَعَهُ أَحْمَدُ، عَنْ ابْنِ المُبَارَكِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মহিলার সাথে কোন মাহ্রাম পুরুষ না থাকলে, সে যেন তিন দিনের সফর না করে। আহ্মাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনায় অনুসরণ করেছেন ইব্ন মুবারক (রহমাহুল্লাহ)-কে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ-কে, তিনি নাফি‘-কে, তিনি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۸ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدٌ المَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُسَافِرَ مَسِيرَةَ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ لَيْسَ مَعَهَا حُرْمَةٌ» تَابَعَهُ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، وَسُهَيْلٌ، وَمَالِكٌ، عَنِ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি’ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ মাক্ববুরী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যে মহিলা আল্লাহ্ এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে কোন মাহ্রাম পুরুষকে সাথে না নিয়ে একদিন ও এক রাত্রির পথ সফর করা জায়িয নয়”। ইয়াহ্ইয়া ইব্নু আবূ কাসীর হাদীস বর্ণনায় সুহায়ল ও মালিক-কে অনুসরণ করেছেন, তিনি মাক্ববুরী-কে, তিনি আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَخَرَجَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ: فَقَصَرَ وَهُوَ يَرَى البُيُوتَ، فَلَمَّا رَجَعَ قِيلَ لَهُ هَذِهِ الكُوفَةُ قَالَ: «لَا حَتَّى نَدْخُلَهَا»
আলী রাজিআল্লাহু ‘আনহু বের হওয়ার পরই কসর করলেন। অথচ তাঁকে বলা হয়, এ তো কুফা। তিনি বললেন, না, যতক্ষণ পর্যন্ত কূফায় প্রবেশ না করি (ততক্ষন কসর করব)
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۸۹ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ المُنْكَدِرِ، وَإِبْرَاهِيمَ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «صَلَّيْتُ الظُّهْرَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا، وَبِذِي الحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন মুনকাদির ও ইবরাহীম ইব্ন মায়সারাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মদীনায় যুহরের সালাত চার রাক’আত আদায় করেছি এবং যুল-হুলাইফায় (আসরের সালাত) দু’ রাক’আত আদায় করেছি”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۰ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «الصَّلَاةُ أَوَّلُ مَا فُرِضَتْ رَكْعَتَيْنِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَأُتِمَّتْ صَلَاةُ الحَضَرِ» قَالَ الزُّهْرِيُّ: فَقُلْتُ لِعُرْوَةَ: مَا بَالُ عَائِشَةَ تُتِمُّ؟ قَالَ: «تَأَوَّلَتْ مَا تَأَوَّلَ عُثْمَانُ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফিয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বললেন, “প্রথম অবস্থায় সালাত দু’ রাক’আত করে ফরজ করা হয় অতঃপর সফরে সালাত সেভাবেই স্থায়ী থাকে এবং মুকীম অবস্থায় সালাত পূর্ণ (চার রাক’আত) করা হয়েছে”। যুহরী বলেন, আমি ‘উরওয়াহ-কে জিজ্ঞেস করলাম, “(মিনায়) আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা কেন সালাত পূর্ণ আদায় করতেন?” তিনি বললেন, “‘উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু যে ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন, “আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা তা গ্রহণ করেছেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۱ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ فِي السَّفَرِ يُؤَخِّرُ المَغْرِبَ، حَتَّى يَجْمَعَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ العِشَاءِ» قَالَ سَالِمٌ: وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَفْعَلُهُ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ “
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, “আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি সফরে ব্যস্ততার কারণে তিনি মাগরিবের সালাত বিলম্বিত করেছেন, এমনকি মাগরিব ও ‘ইশার সালাত একত্রে আদায় করেছেন”। সালিম বলেন, “‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সফরের ব্যস্ততার সময় এ রকমই করতেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۲ – وَزَادَ اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنْ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ سَالِمٌ: ” كَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: يَجْمَعُ بَيْنَ المَغْرِبِ وَالعِشَاءِ بِالْمُزْدَلِفَةِ ” قَالَ سَالِمٌ: وَأَخَّرَ ابْنُ عُمَرَ المَغْرِبَ، وَكَانَ اسْتُصْرِخَ عَلَى امْرَأَتِهِ صَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ، فَقُلْتُ لَهُ: الصَّلَاةَ، فَقَالَ: سِرْ، فَقُلْتُ: الصَّلَاةَ، فَقَالَ: سِرْ، حَتَّى سَارَ مِيلَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةً، ثُمَّ نَزَلَ فَصَلَّى، ثُمَّ قَالَ: «هَكَذَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ» وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ يُؤَخِّرُ المَغْرِبَ، فَيُصَلِّيهَا ثَلَاثًا، ثُمَّ يُسَلِّمُ، ثُمَّ قَلَّمَا يَلْبَثُ حَتَّى يُقِيمَ العِشَاءَ، فَيُصَلِّيهَا رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ يُسَلِّمُ وَلَا يُسَبِّحُ بَعْدَ العِشَاءِ حَتَّى يَقُومَ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ»
অপর এক সূত্রে লায়ছ বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সালিম বলেন: আমি ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু এর সাথে ছিলাম, তিনি মুযদালিফায় মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করলেন। সালিম আরও বলেন, ইবনু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর স্ত্রী সাফিয়্যাহ বিন্ত আবূ উবাইদ-এর দুঃসংবাদ পেয়ে মদীনা ফেরার সময় মাগরিবের সালাত বিলম্বিত করেন। আমি তাঁকে বললাম, সালাতের সময় হয়ে গেছে। তিনি বললেন, চলতে থাক। আমি আবার বললাম, সালাত? তিনি বললেন, চলতে থাক। এমনকি দুই বা তিন মাইল অগ্রসর হলেন। অতঃপর নেমে সালাত আদায় করলেন। পরে বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরের ব্যস্ততার সময় এমনভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি। ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু আরো বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি, সফরে যখনই তাঁর ব্যস্ততা ঘটেছে, তখন তিনি মাগরিবের সালাত (দেরী করে) আদায় করেছেন এবং তা তিন রাক’আতই আদায় করেছেন। মাগরিবের সালাম ফিরিয়ে অল্প দেরি করেই ‘ইশার ইকামত দেয়া হত এবং দু’রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরাতেন। কিন্তু ‘ইশার পরে গভীর রাত না হওয়া পর্যন্ত (নফল) সালাত আদায় করতেন না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۳ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আ‘আ্লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘আ্মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘আমির ইব্ন রাবী‘আহ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, “আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি, তাঁর সাওয়ারী যে দিকেই ফিরেছে, তিনি সে দিকেই সালাত আদায় করেছেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۴ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي التَّطَوُّعَ وَهُوَ رَاكِبٌ فِي غَيْرِ القِبْلَةِ»
আবূ নু‘আয়েম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন আব্দুর রহ’মান থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওয়ার অবস্থায় ক্বিব্লা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে নফল সালাত আদায় করেছেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۵ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ: وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ، وَيُوتِرُ عَلَيْهَا»، وَيُخْبِرُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَفْعَلُهُ
‘আব্দুল আ‘আ্লা ইব্নু হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ঊহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মূসা ইব্নু ‘উক্ববাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ থেকে, তিনি বললেন, “ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর সওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন এবং এর উপর বিত্রও আদায় করতেন। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۶ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «يُصَلِّي فِي السَّفَرِ عَلَى رَاحِلَتِهِ، أَيْنَمَا تَوَجَّهَتْ يُومِئُ» وَذَكَرَ عَبْدُ اللَّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَفْعَلُهُ
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু দীনার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু সফরে সওয়ারী যে দিকেই ফিরেছে সে দিকেই মুখ ফিরে ইঙ্গিতে সালাত আদায় করতেন এবং ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۷ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، أَنَّ عَامِرَ بْنَ رَبِيعَةَ أَخْبَرَهُ، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى الرَّاحِلَةِ يُسَبِّحُ، يُومِئُ بِرَأْسِهِ قِبَلَ أَيِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ، وَلَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ ذَلِكَ فِي الصَّلَاةِ المَكْتُوبَةِ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি শিহাব থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘আমির ইব্ন রাবী‘আহ থেকে, তিনি ‘আমির ইব্নু রাবী’আ রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি, তিনি সওয়ারীতে উপবিষ্ট অবস্থায় মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করে সে দিকেই সালাত আদায় করতেন যে দিকে সওয়ারী ফিরত। কিন্তু আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজ সালাতে এমন করতেন না”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۸ – وَقَالَ اللَّيْثُ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنْ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: قَالَ سَالِمٌ: «كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يُصَلِّي عَلَى دَابَّتِهِ مِنَ اللَّيْلِ، وَهُوَ مُسَافِرٌ مَا يُبَالِي حَيْثُ مَا كَانَ وَجْهُهُ» قَالَ ابْنُ عُمَرَ: «وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَبِّحُ عَلَى الرَّاحِلَةِ قِبَلَ أَيِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ، وَيُوتِرُ عَلَيْهَا، غَيْرَ أَنَّهُ لَا يُصَلِّي عَلَيْهَا المَكْتُوبَةَ»
লায়ছ বললেন: ইউনুস আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: সালিম বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু সফরকালে রাতের বেলায় সওয়ারীর উপর থাকা অবস্থায় সালাত আদায় করতেন, কোন্ দিকে তাঁর মুখ রয়েছে সে দিকে লক্ষ্য করতেন না এবং ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওয়ারীর উপর নফল সালাত আদায় করেছেন, সওয়ারী যে দিকে মুখ ফিরিয়েছে সে দিকেই এবং তার উপর বিত্রও আদায় করেছেন। কিন্তু সওয়ারীর উপর ফরজ সালাত আদায় করতেন না।”
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۰۹۹ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ نَحْوَ المَشْرِقِ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ المَكْتُوبَةَ نَزَلَ، فَاسْتَقْبَلَ القِبْلَةَ»
মু‘আয ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘আব্দুর রহ্’মান ইব্ন ছাওবান থেকে, তিনি বললেন: জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওয়ারীর উপর পূর্ব দিক ফিরেও সালাত আদায় করেছেন। কিন্তু যখন তিনি ফরজ সালাত আদায় করার ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি সওয়ারী হতে অবতরণ করতেন এবং ক্বিব্লামুখী হতেন”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۰ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَبَّانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ: اسْتَقْبَلْنَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حِينَ قَدِمَ مِنَ الشَّأْمِ، فَلَقِينَاهُ بِعَيْنِ التَّمْرِ فَرَأَيْتُهُ «يُصَلِّي عَلَى حِمَارٍ، وَوَجْهُهُ مِنْ ذَا الجَانِبِ» – يَعْنِي عَنْ يَسَارِ القِبْلَةِ – فَقُلْتُ: رَأَيْتُكَ تُصَلِّي لِغَيْرِ القِبْلَةِ، فَقَالَ: لَوْلَا أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَهُ لَمْ أَفْعَلْهُ ” رَوَاهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ، عَنْ حَجَّاجٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আহ্’মাদ ইব্ন সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ব্বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হাম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু সীরীন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু যখন সিরিয়া হতে ফিরে আসছিলেন, তখন আমরা তাঁকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিলাম। আইনুত্ তাম্র (নামক) স্থানে আমরা তাঁর সাক্ষাৎ পেলাম। তখন আমি তাঁকে দেখলাম গাধার পিঠে (আরোহী অবস্থায়) সামনের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছেন। অর্থাৎ ক্বিব্লার বাম দিকে মুখ করে। তখন তাঁকে আমি প্রশ্ন করলাম, আপনাকে তো দেখলাম ক্বিব্লা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেছেন? তিনি বললেন, যদি আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমন করতে না দেখতাম, তবে আমিও তা করতাম না।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
ফুটনোটঃ
১। প্রাণীর উপর সাওয়ার আবস্থায় ক্বিব্লার দিকে থেকে অন্য দিকে মুখ ঘুরে গেলে সে অবস্থায় সালাত আদায় করা যাবে কিন্তু ফরজ সালাত নয়।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۱ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَنَّ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ حَدَّثَهُ، قَالَ: سَافَرَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَقَالَ: ” صَحِبْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ أَرَهُ يُسَبِّحُ فِي السَّفَرِ، وَقَالَ اللَّهُ جَلَّ ذِكْرُهُ: (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ) “
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উমার ইব্নু মুহাম্মাদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হাফ্স ইব্নু ‘আসিম থেকে, তিনি বললেন: ইবনু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু একবার সফর করেন এবং বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে থেকেছি, সফরে তাঁকে নফল সালাত আদায় করতে দেখিনি এবং আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ্র রসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সূরা আল-আহযাব ৩৩/২২১)
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۲ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عِيسَى بْنِ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي: أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ: «صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ لَا يَزِيدُ فِي السَّفَرِ عَلَى رَكْعَتَيْنِ، وَأَبَا بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ كَذَلِكَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, ‘ঈসা ইব্ন হা’ফ্স ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি ইবনু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম, “তিনি সফরে দু’ রাক’আতের অধিক আদায় করতেন না”। আবূ বক্র, ‘উমর ও উসমান রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর এ রীতি ছিল। ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [ ]
ফুটনোটঃ ১. অত্র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে চিরকালই কস্র করেন, কখনো পূর্ণ সালাত আদায় করেননি। তাই একদল আলিমের মতে সফরে কাসর করতেই হবে। পূর্ণ পড়লে চলবে না। ইবনু ‘উমর বলেন, সফরের সালাত দু’রাক’আত। যে ব্যক্তি এ সুন্নাত ত্যাগ করবে সে কুফরী করে- (মুহাল্লা ৪র্থ খণ্ড ২৬৬ পৃষ্ঠা)। ইবনু ‘আব্বাস বলেন, যে ব্যক্তি সফরে চার রাক’আত পড়ে, সে যেন ঘরে দু’রাক’আত পড়ে। (ঐ ২৭০ পৃষ্ঠা) ইমাম ইবনু কাইয়ূম বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে ৪ রাক’আত বিশিষ্ট সালাত গুলো ৪ রাক’আতই আদায় করেছেন এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। আর আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা-এর হাদীসে আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাস্র এবং পূর্ণ দু’রকমই আদায় করেছেন-সে হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম ইবনু তাইমিয়া বলেন, হাদীসটি সহীহ্ নয়, বরং এটা আল্লাহ্র রসূলের উপরে একটা মিথ্যা অপবাদ। (যাদুল মা’আদ ১ম খণ্ড ১২৮ পৃষ্ঠা)
وَرَكَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَكْعَتَيِ الفَجْرِ فِي السَّفَرِ»
সফরে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের দু’ রাকা‘আত (সুন্নাত) আদায় করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۳ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ: مَا أَخْبَرَنَا أَحَدٌ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الضُّحَى غَيْرُ أُمِّ هَانِئٍ ذَكَرَتْ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ اغْتَسَلَ فِي بَيْتِهَا، فَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ، فَمَا رَأَيْتُهُ صَلَّى صَلَاةً أَخَفَّ مِنْهَا غَيْرَ أَنَّهُ يُتِمُّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ»
‘হাফ্স্ব ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উ্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র ইব্ন মুর্রাহ থেকে, তিনি ইব্নু আবূ লায়লা থেকে, তিনি বলেন, উম্মু হানী রাজিআল্লাহু ‘আনহা ব্যতীত অন্য কেউ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সলাতুয্ যুহা (পূর্বাহ্নের সালাত) আদায় করতে দেখেছেন বলে আমাদের জানান নি। তিনি [উম্মু হানী রাজিআল্লাহু ‘আনহা] বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন তাঁর ঘরে গোসল করার পর আট রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। আমি তাঁকে এর চেয়ে সংক্ষিপ্তভাবে কোন সালাত আদায় করতে দেখিনি, তবে তিনি রুকূ’ ও সিজদা পূর্ণভাবে আদায় করেছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۴ – وَقَالَ اللَّيْثُ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ: أَنَّ أَبَاهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ «رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى السُّبْحَةَ بِاللَّيْلِ فِي السَّفَرِ عَلَى ظَهْرِ رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ»
এবং লায়ছ বললেন: ইউনুস আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আমির ইব্ন রাবী‘আহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বলেন- তিনি, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে রাতের বেলা সফরে বাহনের পিঠে বাহনের গতিপথ অভিমুখী হয়ে নফল সালাত আদায় করতে দেখেছেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۵ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُسَبِّحُ عَلَى ظَهْرِ رَاحِلَتِهِ حَيْثُ كَانَ وَجْهُهُ يُومِئُ بِرَأْسِهِ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُهُ
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সফরে) তাঁর বাহনের পিঠে এর গতিপথ অভিমুখী হয়ে মাথার দ্বারা ইঙ্গিত করে নফল সালাত আদায় করতেন। আর ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু-ও তা করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۶ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ المَغْرِبِ وَالعِشَاءِ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি যুহ্রী থেকে শুনেছি, তিনি সালিম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দ্রুত সফর করতেন, তখন মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۷ – وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنِ الحُسَيْنِ المُعَلِّمِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ صَلَاةِ الظُّهْرِ وَالعَصْرِ، إِذَا كَانَ عَلَى ظَهْرِ سَيْرٍ وَيَجْمَعُ بَيْنَ المَغْرِبِ وَالعِشَاءِ»
ইব্রাহীম ইব্নু ত্বাহ্মান বললেন হু’সায়ন মু‘আলিম থেকে, তিনি ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাসির থেকে, তিনি ইক্রিমাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, সফরে দ্রুত চলার সময় আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহ্র ও ‘আসরের সালাত একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন। ১
অনুরূপ বর্ণনাঃ [ ]
ফুটনোটঃ
১. অত্র হাদীস দ্বারা দু’ওয়াক্তের সালাত এক ওয়াক্তে একত্রিত করা চলে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে জমা করতেন এ সম্পর্কে মু’আয ইবনু জাবালের হাদীস থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, তাবূক যুদ্ধের সময় আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফর শুরু করার পূর্বে সূর্য ঢলে যেত তখন তিনি (যুহরের ওয়াক্তেই) যুহর ও ‘আসর জমা করতেন এবং সূর্য ঢলার পূর্বে যদি তিনি রওয়ানা হতেন তাহলে যুহরকে দেরী করতেন এবং ‘আসরের সময় সাওয়ারী থেকে নেমে যুহর ও ‘আসর জমা করতেন। আর মাগরিবেও তিনি এরূপ করতেন। অর্থাৎ রওয়ানা হওয়ার পূর্বে যদি সূর্য ডুবে যেত তাহলে (মাগরিবের ওয়াক্তে) তিনি মাগরিব ও ‘ইশা জমা করতেন এবং সূর্য ডোববার পূর্বে যদি রওয়ানা হতেন তাহলে মাগরীবকে দেরী করতেন এবং ইশার সময়ে নেমে মাগরিব ও ‘ইশা জমা করতেন (আবূ দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত ১১৮ পৃষ্ঠা) হানাফিগণ বলেন, সালাত জমা করতে হলে প্রথম ওয়াক্তকে দেরী করে শেষ ওয়াক্তে নিয়ে গিয়ে এবং দ্বিতীয় ওয়াক্তকে একটু আগে টেনে দু’ওয়াক্তের মাঝখানে জমা করতে হবে। অর্থাৎ যুহরের আওয়াল ওয়াক্তে ‘আসর জমা হবে না এবং ‘আসরের আউয়াল ওয়াক্তে যুহর জমা হবে না। বরং যুহরের শেষ ওয়াক্তে যুহর ও ‘আসরকে জমা করতে হবে। আল্লামা রহমানী বলেন, বুখারী; মুসলিম, আবূ দাউদ ও নাসায়ীর রিওয়াতকৃত আনাস, ইবনু ‘উমর ও জাবির কর্তৃক বর্ণিত সহীহ ও স্পষ্ট হাদীসগুলো হানাফিগণের উক্ত মতটিকে বাতিল বলে প্রমাণিত করে এবং এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, দু’ওয়াক্তের মধ্যে যে কোন এক ওয়াক্তে দু‘ওয়াক্তের সালাত জমা হতে পারে- (মিরআত ২/২৬৯)। ইমাম শাফি’ঈ, মালিক ও আহমাদের মতও তাই- (আওনুল মা’বূদ ১/৪৭২)।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۸ – وَعَنْ حُسَيْنٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ صَلَاةِ المَغْرِبِ وَالعِشَاءِ فِي السَّفَرِ» وَتَابَعَهُ عَلِيُّ بْنُ المُبَارَكِ، وَحَرْبٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ حَفْصٍ، عَنْ أَنَسٍ جَمَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “
এবং হু’সায়ন থেকে, তিনি ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাছীর থেকে, তিনি হা’ফ্স ইব্ন ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন আনাস থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর কালে মাগরিব ও ‘ইশার সালাত একত্রে আদায় করতেন”। এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একত্রে আদায় করেছেন বা জমা করেছেন মর্মে- ‘আলী ইব্নু মুবারাক ও হারব তাঁকে (হু’সায়নকে) অনুসরণ করেছেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি হা’ফ্স্ব থেকে, তিনি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۰۹ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ فِي السَّفَرِ، يُؤَخِّرُ صَلَاةَ المَغْرِبِ حَتَّى يَجْمَعَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ العِشَاءِ» قَالَ سَالِمٌ: «وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَفْعَلُهُ إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ وَيُقِيمُ المَغْرِبَ، فَيُصَلِّيهَا ثَلَاثًا، ثُمَّ يُسَلِّمُ، ثُمَّ قَلَّمَا يَلْبَثُ حَتَّى يُقِيمَ العِشَاءَ، فَيُصَلِّيهَا رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ يُسَلِّمُ، وَلَا يُسَبِّحُ بَيْنَهُمَا بِرَكْعَةٍ، وَلَا بَعْدَ العِشَاءِ بِسَجْدَةٍ، حَتَّى يَقُومَ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখেছি যখন সফরে তাঁকে দ্রুত পথ অতিক্রম করতে হত, তখন মাগরিবের সালাত এত বিলম্বিত করতেন যে মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন। সালিম (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর রাজিআল্লাহু ‘আনহুও দ্রুত সফরকালে ঐ রকমই করতেন। তখন ইকামাতের পর মাগরিব তিন রাক’আত আদায় করতেন এবং সালাম ফিরাতেন। অতঃপর অল্প সময় অপেক্ষা করেই ‘ইশা-এর ইকামাত দিয়ে তা দু’রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরাতেন। এ দু’য়ের মাঝখানে কোন নফল সালাত আদায় করতেন না এবং ‘ইশার পরেও না। অতঃপর মধ্যরাতে (তাহাজ্জুদের জন্য) উঠতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۰ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا حَرْبٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، أَنَّ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، حَدَّثَهُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ هَاتَيْنِ الصَّلَاتَيْنِ فِي السَّفَرِ»، يَعْنِي المَغْرِبَ وَالعِشَاءَ
ইসাহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুস স্বামাদ ইব্নু ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’র্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ফ্স ইব্নু ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন আনাস আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি আনাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে এ দু’ সালাত একত্রে আদায় করতেন অর্থাৎ মাগরিব ও ‘ইশা”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
فِيهِ ابْنُ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস রাজিআল্লাহু ‘আনহু-এর বর্ণনা রয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۱ – حَدَّثَنَا حَسَّانُ الوَاسِطِيُّ ، قَالَ: حَدَّثَنَا المُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى وَقْتِ العَصْرِ، ثُمَّ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا، وَإِذَا زَاغَتْ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ رَكِبَ»
‘হাস্সান ওয়াসিত্বী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুফায্যল ইব্নু ফযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উকায়ল থেকে, তিনি শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য ঢলে পড়ার পূর্বে সফর শুরু করলে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত যুহর বিলম্বিত করতেন এবং উভয় সালাত একত্রে আদায় করতেন। আর (সফর শুরুর আগেই) সূর্য ঢলে গেলে যুহ্র আদায় করে নিতেন। অতঃপর সওয়ারীতে উঠতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۲ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا المُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ، أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى وَقْتِ العَصْرِ، ثُمَّ نَزَلَ فَجَمَعَ بَيْنَهُمَا، فَإِنْ زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَرْتَحِلَ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ رَكِبَ»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুফায্যল ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার পূর্বে সফর শুরু করলে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত যুহরের সালাত বিলম্বিত করতেন। অতঃপর অবতরণ করে দু’ সালাত একসাথে আদায় করতেন। আর যদি সফর শুরু করার পূর্বেই সূর্য ঢলে পড়তো তাহলে যুহরের আদায় করে নিতেন। অতঃপর সওয়ারীতে চড়তেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۳ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ وَهُوَ شَاكٍ، فَصَلَّى جَالِسًا وَصَلَّى وَرَاءَهُ قَوْمٌ قِيَامًا، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنِ اجْلِسُوا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঘরে সালাত আদায় করলেন, তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাই তিনি বসে বসে সালাত আদায় করছিলেন এবং এক দল সাহাবী তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। তখন তিনি বসে পড়ার জন্য তাদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর সালাত শেষ করে তিনি বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে অনুসরণ করার উদ্দেশে। কাজেই তিনি রুকূ’ করলে তোমরা রুকূ’ করবে এবং তিনি মাথা তুললে তোমরাও মাথা তুলবে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۴ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَقَطَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ فَرَسٍ فَخُدِشَ – أَوْ فَجُحِشَ – شِقُّهُ الأَيْمَنُ، فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ نَعُودُهُ، فَحَضَرَتِ الصَّلَاةُ، فَصَلَّى قَاعِدًا، فَصَلَّيْنَا قُعُودًا، وَقَالَ: ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ “
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ‘উয়ায়্নাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোড়া হতে পড়ে গেলেন। এতে আঘাত লেগে তাঁর ডান পাশের চামড়া ছিলে গেল। আমরা তাঁর রোগের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য তাঁর নিকট গেলাম। ইতোমধ্যে সালাতের সময় হলে তিনি বসে সালাত আদায় করলেন। আমরাও বসে সালাত আদায় করলাম। পরে তিনি বললেনঃ ইমাম তো নির্ধারণ করা হয় তাকে অনুসরণ করার জন্যে। কাজেই তিনি বললেনঃ ইমাম তাকবীর বললে, তোমরাও তাকবীর বলবে, রুকূ করলে তোমরাও রুকু করবে, তিনি মাথা তুললে তোমরাও মাথা তুলবে। তিনি যখন “সামি‘আল্লা হুলিমান হা’মিদাহ” বলে তোমরা বলবে “সামি‘আল্লা হুলিমান হা’মিদাহ”।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۵ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، أَخْبَرَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّهُ سَأَلَ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الحُسَيْنُ، عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ – وَكَانَ مَبْسُورًا – قَالَ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلَاةِ الرَّجُلِ قَاعِدًا، فَقَالَ: «إِنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا، فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ، وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا، فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَاعِدِ»
ইস্হা’ক্ব ইব্নু মানস্বুর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাওহ ইব্নু ‘উবাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি ‘ইমরান ইব্নু হুসাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, (অন্য একটি সূত্রে) ইস্হা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আব্দুস্বামাদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি, তিনি বললেন: হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বুরায়দাহ থেকে, তিনি বললেন: ‘ইমরান ইব্নু হু’সায়ন রাজিআল্লাহু ‘আনহু আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি ছিলেন অর্শ রোগী। তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ যদি কেউ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তবে তা-ই উত্তম। আর যে ব্যক্তি বসে সালাত আদায় করবে, তাঁর জন্য দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব আর যে শুয়ে আদায় করবে তার জন্য বসে আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۶ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ المُعَلِّمُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ – وَكَانَ رَجُلًا مَبْسُورًا – وَقَالَ أَبُو مَعْمَرٍ مَرَّةً: عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلَاةِ الرَّجُلِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ، وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ، وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَاعِدِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: «نَائِمًا عِنْدِي مُضْطَجِعًا هَا هُنَا»
আবূ মা‘আ্মার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল ওয়ারিস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন মু‘আল্লিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি ‘ইমরান ইব্নু হুসাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি অর্শ রোগী ছিলেন, তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বসে সালাত আদায়কারীর ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করল সে উত্তম আর যে ব্যক্তি বসে সালাত আদায় করল তার জন্য দাঁড়ান ব্যক্তির অর্ধেক সওয়াব আর যে শুয়ে আদায় করল, তার জন্যে বসে সালাত আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব। আবূ ‘আবদুল্লাহ বলেন, আমার মতে এ হাদীসে “ঘুমন্ত” এর দ্বারা “শায়িত” অবস্থা বুঝানো হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ عَطَاءٌ: «إِنْ لَمْ يَقْدِرْ أَنْ يَتَحَوَّلَ إِلَى القِبْلَةِ، صَلَّى حَيْثُ كَانَ وَجْهُهُ»
আতা রহমাহুল্লাহ বলেন, কিব্লার দিকে মুখ করতে অক্ষম ব্যক্তি যে দিক সম্ভব সে দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۷ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ طَهْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي الحُسَيْنُ المُكْتِبُ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلَاةِ، فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি ইব্রাহীম ইব্ন ত্বাহ্মান থেকে, তিনি বললেন: হু’সায়ন মুক্তিব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি ইমরান ইব্নু হুসাইন রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, তিনি বলেন, আমার অর্শ রোগ ছিল। তাই আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে সালাত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম, তিনি বললেনঃ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে, তা না পারলে বসে, যদি তাও না পার তাহলে শুয়ে।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
وَقَالَ الحَسَنُ: «إِنْ شَاءَ المَرِيضُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَائِمًا وَرَكْعَتَيْنِ قَاعِدًا»
হাসান রহমাহুল্লাহ বলেছেন, অসুস্থ ব্যক্তি ইচ্ছা করলে দু’রাকাত সালাত বসে এবং দু’রাকাআত দাঁড়িয়ে আদায় করতে পারে।
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۸ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أُمِّ المُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ: أَنَّهَا «لَمْ تَرَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي صَلَاةَ اللَّيْلِ قَاعِدًا قَطُّ حَتَّى أَسَنَّ، فَكَانَ يَقْرَأُ قَاعِدًا، حَتَّى إِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ، فَقَرَأَ نَحْوًا مِنْ ثَلَاثِينَ آيَةً – أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً – ثُمَّ رَكَعَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অধিক বয়সে পৌঁছার পূর্বে কখনো রাতের সালাত বসে আদায় করতে দেখেননি। (বার্ধক্যের) পরে তিনি বসে কির’আত পাঠ করতেন। যখন তিনি রুকূ’ করার ইচ্ছা করতেন, তখন দাঁড়িয়ে যেতেন এবং প্রায় ত্রিশ কিংবা চল্লিশ আয়াত তিলাওয়াত করে রুকূ’ করতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [
হাদীসের মান: সহীহ
۱۱۱۹ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، وَأَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: ” أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي جَالِسًا، فَيَقْرَأُ وَهُوَ جَالِسٌ، فَإِذَا بَقِيَ مِنْ قِرَاءَتِهِ نَحْوٌ مِنْ ثَلَاثِينَ – أَوْ أَرْبَعِينَ – آيَةً قَامَ فَقَرَأَهَا وَهُوَ قَائِمٌ، ثُمَّ يَرْكَعُ، ثُمَّ سَجَدَ يَفْعَلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، فَإِذَا قَضَى صَلَاتَهُ نَظَرَ: فَإِنْ كُنْتُ يَقْظَى تَحَدَّثَ مَعِي، وَإِنْ كُنْتُ نَائِمَةً اضْطَجَعَ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ইয়াযীদ এবং ‘উমার ইব্ন ‘উবায়দুল্লাহ এর স্বাধীন করা গুলাম আবূ নাযর থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন আব্দুর রহ’মান থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা রাজিআল্লাহু ‘আনহা থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসে সালাত আদায় করতেন। বসেই তিনি কির’আত পাঠ করতেন। যখন তাঁর কিরা’আতের প্রায় ত্রিশ বা চল্লিশ আয়াত বাকী থাকত, তখন তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দাঁড়িয়ে তা তিলাওয়াত করতেন, অতঃপর রুকূ’ করতেন; পরে সিজদা করতেন। দ্বিতীয় রাক’আতেও তেমনই করতেন। সালাত শেষ করে তিনি লক্ষ্য করতেন, আমি জেগে থাকলে আমার সাথে কথা বলতেন আর ঘুমিয়ে থাকলে তিনিও শুয়ে পরতেন।
অনুরূপ বর্ণনাঃ [