7 নং সূরা – আল-আ’রাফ- ٱلْأَعْرَاف
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 206
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – ‘আরাফ
الٓمٓصٓ
আলিফ লাম-মিম-সাদ।
2 – ‘আরাফ
كِتَٰبٌ أُنزِلَ إِلَيْكَ فَلَا يَكُن فِى صَدْرِكَ حَرَجٌ مِّنْهُ لِتُنذِرَ بِهِۦ وَذِكْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ
এ একটি কিতাব যা তোমার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, সুতরাং তোমার অন্তরে যেন মোটেই সংকীর্ণতা না আসে। আর মু’মিনদের জন্য এটা উপদেশ।
3 – ‘আরাফ
ٱتَّبِعُواۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُواۡ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَۗ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
তোমার রবের পক্ষ থেকে যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে তুমি তা অনুসরণ কর এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবক অথবা সাহায্যকারী হিসাবে গ্রহণ করনা। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো।
4 – ‘আরাফ
وَكَم مِّن قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَٰهَا فَجَآءَهَا بَأْسُنَا بَيَٰتًا أَوْ هُمْ قَآئِلُونَ
কত জনপদকেই না আমি ধ্বংস করেছি! আমার শাস্তি তাদের উপর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় অথবা দ্বিপ্রহরে যখন তারা বিশ্রামরত ছিল তখনই আপতিত হয়েছে।
5 – ‘আরাফ
فَمَا كَانَ دَعْوَىٰهُمْ إِذْ جَآءَهُم بَأْسُنَآ إِلَّآ أَن قَالُوٓاۡ إِنَّا كُنَّا ظَٰلِمِينَ
আমার শাস্তি যখন তাদের কাছে এসে পড়েছিল তখন তাদের মুখে ‘‘বাস্তবিকই আমরা অত্যাচারী ছিলাম’’ এ কথা ছাড়া আর কিছুই ছিলনা।
6 – ‘আরাফ
فَلَنَسْـَٔلَنَّ ٱلَّذِينَ أُرْسِلَ إِلَيْهِمْ وَلَنَسْـَٔلَنَّ ٱلْمُرْسَلِينَ
অতঃপর আমি (কিয়ামাত দিবসে) যাদের কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল তাদেরকে এবং রাসূলদেরকেও অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করব।
7 – ‘আরাফ
فَلَنَقُصَّنَّ عَلَيْهِم بِعِلْمٍۖ وَمَا كُنَّا غَآئِبِينَ
তখন আমি তাদের সমস্ত বিবরণ অকপটে প্রকাশ করে দিব, যেহেতু আমি পূর্ণরূপে জ্ঞাত আছি, আর আমিতো কোন কালে বেখবর ছিলামনা।
8 – ‘আরাফ
وَٱلْوَزْنُ يَوْمَئِذٍ ٱلْحَقُّۚ فَمَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
আর সেদিন (কিয়ামাতের দিন) ন্যায় ও সঠিকভাবে (প্রত্যেকের ‘আমল) ওযন করা হবে, সুতরাং যাদের (পুণ্যের) পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে কৃতকার্য ও সফলকাম।
9 – ‘আরাফ
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓاۡ أَنفُسَهُم بِمَا كَانُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا يَظْلِمُونَ
আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে। কেননা তারা আমার নিদর্শনসমূহকে (আয়াত) প্রত্যাখ্যান করত।
10 – ‘আরাফ
وَلَقَدْ مَكَّنَّٰكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَٰيِشَۗ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ
আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভূ-পৃষ্ঠে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং আমি তোমাদের জন্য ওতে জীবিকা নির্বাহের উপকরণসমূহ সৃষ্টি করেছি, তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক।
11 – ‘আরাফ
وَلَقَدْ خَلَقْنَٰكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَٰكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَٰٓئِكَةِ ٱسْجُدُواۡ لِءَادَمَ فَسَجَدُوٓاۡ إِلَّآ إِبْلِيسَ لَمْ يَكُن مِّنَ ٱلسَّٰجِدِينَ
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে রূপ দান করেছি, তারপর আমি মালাইকাদেরকে/ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি – তোমরা আদমকে সাজদাহ কর। তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহ করল, যারা সাজদাহ করল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হলনা।
12 – ‘আরাফ
قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَۖ قَالَ أَنَا۠ خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِى مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُۥ مِن طِينٍ
তিনি (আল্লাহ) তাকে (ইবলীসকে) জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি যখন তোকে সাজদাহ (আদমকে) করতে আদেশ করলাম তখন কোন বস্তু তোকে নত শির হতে নিবৃত্ত করল? সে উত্তরে বললঃ আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি দ্বারা।
13 – ‘আরাফ
قَالَ فَٱهْبِطْ مِنْهَا فَمَا يَكُونُ لَكَ أَن تَتَكَبَّرَ فِيهَا فَٱخْرُجْ إِنَّكَ مِنَ ٱلصَّٰغِرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ এই স্থান থেকে নেমে যা, এখানে থেকে অহংকার করা যেতে পারেনা; সুতরাং বের হয়ে যা, নিশ্চয়ই তুই ইতরদের অন্তর্ভুক্ত।
14 – ‘আরাফ
قَالَ أَنظِرْنِىٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
সে বললঃ আমাকে পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন!
15 – ‘আরাফ
قَالَ إِنَّكَ مِنَ ٱلْمُنظَرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।
16 – ‘আরাফ
قَالَ فَبِمَآ أَغْوَيْتَنِى لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَٰطَكَ ٱلْمُسْتَقِيمَ
(ইবলীস) বললঃ আপনি যে আমাকে পথভ্রষ্ট করলেন এ কারণে আমিও শপথ করে বলছি – আমি আপনার সরল পথে অবশ্যই ওৎ পেতে বসে থাকব।
17 – ‘আরাফ
ثُمَّ لَءَاتِيَنَّهُم مِّنۢ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَٰنِهِمْ وَعَن شَمَآئِلِهِمْۖ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَٰكِرِينَ
অতঃপর আমি তাদের সম্মুখ দিয়ে, পিছন দিয়ে, ডান দিক দিয়ে এবং বাম দিক দিয়ে তাদের কাছে আসব, আপনি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবেননা।
18 – ‘আরাফ
قَالَ ٱخْرُجْ مِنْهَا مَذْءُومًا مَّدْحُورًاۖ لَّمَن تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكُمْ أَجْمَعِينَ
তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ তুই এখান থেকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত অবস্থায় বের হয়ে যা, তাদের (বানী আদমের) মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে, নিশ্চয়ই আমি তোদের সকলের দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করব।
19 – ‘আরাফ
وَيَٰٓـَٔادَمُ ٱسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ ٱلْجَنَّةَ فَكُلَا مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
আর হে আদম! তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং এখানে তোমাদের মনে যা চায় তাই খাও, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়োনা, তাহলে অত্যাচারীদের মধ্যে গণ্য হবে।
20 – ‘আরাফ
فَوَسْوَسَ لَهُمَا ٱلشَّيْطَٰنُ لِيُبْدِىَ لَهُمَا مَا وُۥرِىَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَٰتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَىٰكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةِ إِلَّآ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ ٱلْخَٰلِدِينَ
অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান যা পরস্পরের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য শাইতান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল, সে বললঃ তোমাদের রাব্ব এই বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন, এর কারণ এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা যেন মালাইকা/ফেরেশতা হয়ে না যাও, অথবা এখানে (এই জান্নাতে) চিরন্তন জীবন লাভ করতে না পার।
21 – ‘আরাফ
وَقَاسَمَهُمَآ إِنِّى لَكُمَا لَمِنَ ٱلنَّٰصِحِينَ
সে তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বললঃ আমি তোমাদের হিতাকাংখীদের অন্যতম।
22 – ‘আরাফ
فَدَلَّىٰهُمَا بِغُرُورٍۚ فَلَمَّا ذَاقَا ٱلشَّجَرَةَ بَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِۖ وَنَادَىٰهُمَا رَبُّهُمَآ أَلَمْ أَنْهَكُمَا عَن تِلْكُمَا ٱلشَّجَرَةِ وَأَقُل لَّكُمَآ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لَكُمَا عَدُوٌّ مُّبِينٌ
অতঃপর সে (শাইতান) তাদের উভয়কে বিভ্রান্ত করল। যখন তারা সেই নিষিদ্ধ গাছের ফলের স্বাদ গ্রহণ করল তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং তারা বাগানের বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগল। তাদের রাব্ব তাদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ আমি কি এই বৃক্ষ সম্পর্কে তোমাদেরকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শাইতান তোমাদের প্রকাশ্য শক্র?
23 – ‘আরাফ
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব।
24 – ‘আরাফ
قَالَ ٱهْبِطُواۡ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّۖ وَلَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَٰعٌ إِلَىٰ حِينٍ
তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ তোমরা একে অন্যের শক্র রূপে এখান থেকে নেমে যাও, তোমাদের জন্য পৃথিবীতে বাসস্থান রয়েছে, একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সেখানে জীবন ধারণের উপযোগী সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
25 – ‘আরাফ
قَالَ فِيهَا تَحْيَوْنَ وَفِيهَا تَمُوتُونَ وَمِنْهَا تُخْرَجُونَ
তিনি বললেনঃ সেই পৃথিবীতেই তোমরা জীবন যাপন করবে, সেখানেই তোমাদের মৃত্যু সংঘটিত হবে এবং সেখান হতেই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে।
26 – ‘আরাফ
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَٰرِى سَوْءَٰتِكُمْ وَرِيشًاۖ وَلِبَاسُ ٱلتَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌۚ ذَٰلِكَ مِنْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
হে বানী আদম! আমি তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করার ও বেশভূষার জন্য তোমাদের পোশাক পরিচ্ছদের উপকরণ অবতীর্ণ করেছি। (বেশ-ভূষার তুলনায়) আল্লাহভীতির পরিচ্ছদই হচ্ছে সর্বোত্তম পরিচ্ছদ। এটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম নিদর্শন, সম্ভবতঃ মানুষ এটা হতে উপদেশ গ্রহণ করবে।
27 – ‘আরাফ
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ ٱلشَّيْطَٰنُ كَمَآ أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ ٱلْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءَٰتِهِمَآۗ إِنَّهُۥ يَرَىٰكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُۥ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْۗ إِنَّا جَعَلْنَا ٱلشَّيَٰطِينَ أَوْلِيَآءَ لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ
হে আদম সন্তান! শাইতান যেন তোমাদেরকে সেরূপ প্রলুব্ধ করতে না পারে যেরূপ তোমাদের মাতা-পিতাকে (প্রলুব্ধ করে) জান্নাত হতে বহিস্কার করেছিল এবং তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখানোর জন্য বিবস্ত্র করেছিল। সে (শাইতান) নিজে এবং তার দল তোমাদেরকে দেখতে পায়, অথচ তোমরা তাদেরকে দেখতে পাওনা। নিঃসন্দেহে আমি অবিশ্বাসীদের জন্য শাইতানকে বন্ধু ও অভিভাবক বানিয়ে দিয়েছি।
28 – ‘আরাফ
وَإِذَا فَعَلُواۡ فَٰحِشَةً قَالُواۡ وَجَدْنَا عَلَيْهَآ ءَابَآءَنَا وَٱللَّهُ أَمَرَنَا بِهَاۗ قُلْ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَأْمُرُ بِٱلْفَحْشَآءِۖ أَتَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
যখন তারা কোন লজ্জাস্কর ও অশ্লীল আচরণ করে তখন তারা বলেঃ আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে এসব কাজ করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এটা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তুমি বলঃ না আল্লাহ কখনও অশ্লীল ও লজ্জাস্কর আচরণের নির্দেশ দেননা, তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে এমন সব কথা বলছ যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই?
29 – ‘আরাফ
قُلْ أَمَرَ رَبِّى بِٱلْقِسْطِۖ وَأَقِيمُواۡ وُجُوهَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَٱدْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَۚ كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
তুমি বলঃ আমার রাব্ব ন্যায় বিচারের আদেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সালাতে তোমাদের মনযোগ স্থির রেখ এবং তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধ মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁকেই ডাক; তোমাদেরকে প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা তেমনিভাবে ফিরে আসবে।
30 – ‘আরাফ
فَرِيقًا هَدَىٰ وَفَرِيقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ ٱلضَّلَٰلَةُۗ إِنَّهُمُ ٱتَّخَذُواۡ ٱلشَّيَٰطِينَ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ
আল্লাহ এক দলকে সৎ পথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের জন্য সংগত কারণেই ভ্রান্তি নির্ধারিত হয়েছে,তারা আল্লাহকে ছেড়ে শাইতানকে অভিভাবক ও বন্ধু বানিয়েছিল এবং নিজেদেরকে সৎ পথগামী মনে করত।
31 – ‘আরাফ
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ خُذُواۡ زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُواۡ وَٱشْرَبُواۡ وَلَا تُسْرِفُوٓاۡۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلْمُسْرِفِينَ
হে আদম সন্তান! প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণ কর, আর খাও এবং পান কর। তবে অপব্যয় ও অমিতাচার করবেনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেননা।
32 – ‘আরাফ
قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِىٓ أَخْرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّيِّبَٰتِ مِنَ ٱلرِّزْقِۚ قُلْ هِىَ لِلَّذِينَ ءَامَنُواۡ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا خَالِصَةً يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِۗ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য যে সব শোভনীয় বস্তু ও পবিত্র জীবিকা সৃষ্টি করেছেন তা কে নিষিদ্ধ করেছে? তুমি ঘোষণা করে দাও – এই সমস্ততো তাদের জন্যই যারা পার্থিব জীবনে এবং বিশেষ করে কিয়ামাত দিবসে বিশ্বাস করে। এমনিভাবে আমি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করে থাকি।
33 – ‘আরাফ
قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّىَ ٱلْفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَٱلْإِثْمَ وَٱلْبَغْىَ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُواۡ بِٱللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِۦ سُلْطَٰنًا وَأَن تَقُولُواۡ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
তুমি বলঃ আমার রাব্ব প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপ কাজ, অন্যায় ও অসংগত বিদ্রোহ ও বিরোধিতা এবং আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা যার পক্ষে আল্লাহ কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যে সম্বন্ধে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই, (ইত্যাদি কাজ ও বিষয়সমূহ) নিষিদ্ধ করেছেন।
34 – ‘আরাফ
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌۖ فَإِذَا جَآءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةًۖ وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ
প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় সমুপস্থিত হবে তখন তা এক মুহুর্তকালও আগে কিংবা পরে হবেনা।
35 – ‘আরাফ
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ إِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ رُسُلٌ مِّنكُمْ يَقُصُّونَ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتِىۙ فَمَنِ ٱتَّقَىٰ وَأَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
হে আদম সন্তান! তোমাদের মধ্য হতে যদি কোন রাসূল তোমাদের নিকট আগমন করে এবং আমার বাণী ও নিদর্শন তোমাদের কাছে বিবৃত করে; তখন যারা সতর্ক হবে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে নিবে এবং সৎ কাজ করবে, তাদের কোন ভয়-ভীতি থাকবেনা।
36 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَٱسْتَكْبَرُواۡ عَنْهَآ أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
আর যারা আমার নিদর্শন ও বিধানকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার করে ওটা হতে দূরে সরে থাকে তারাই হবে জাহান্নামী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে।
37 – ‘আরাফ
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِـَٔايَٰتِهِۦٓۚ أُوۡلَٰٓئِكَ يَنَالُهُمْ نَصِيبُهُم مِّنَ ٱلْكِتَٰبِۖ حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَتْهُمْ رُسُلُنَا يَتَوَفَّوْنَهُمْ قَالُوٓاۡ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالُواۡ ضَلُّواۡ عَنَّا وَشَهِدُواۡ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ أَنَّهُمْ كَانُواۡ كَٰفِرِينَ
যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং তাঁর নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে সে অপেক্ষা বড় যালিম আর কে হতে পারে? তাদের ‘আমলনামায় লিখিত নির্ধারিত অংশ তাদের নিকট পৌঁছবেই, পরিশেষে যখন আমার প্রেরিত মালাক/ফেরেশতা তাদের প্রাণ হরণের জন্য তাদের নিকট পৌঁছবে, তখন তারা (ফেরেশতারা) জিজ্ঞেস করবেঃ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা ডাকতে তারা কোথায়? তখন তারা উত্তরে বলবেঃ আমাদের হতে তারা উধাও হয়ে গেছে। আর নিজেরাই স্বীকারোক্তি করবে যে, তারা কাফির বা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী ছিল।
38 – ‘আরাফ
قَالَ ٱدْخُلُواۡ فِىٓ أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِكُم مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ فِى ٱلنَّارِۖ كُلَّمَا دَخَلَتْ أُمَّةٌ لَّعَنَتْ أُخْتَهَاۖ حَتَّىٰٓ إِذَا ٱدَّارَكُواۡ فِيهَا جَمِيعًا قَالَتْ أُخْرَىٰهُمْ لِأُولَىٰهُمْ رَبَّنَا هَٰٓؤُلَآءِ أَضَلُّونَا فَـَٔاتِهِمْ عَذَابًا ضِعْفًا مِّنَ ٱلنَّارِۖ قَالَ لِكُلٍّ ضِعْفٌ وَلَٰكِن لَّا تَعْلَمُونَ
আল্লাহ বলেনঃ তোমাদের পূর্বে মানব ও জিন হতে যে সব সম্প্রদায় গত হয়েছে, তাদের সাথে তোমরাও জাহান্নামে প্রবেশ কর। যখন কোন দল তাতে প্রবেশ করবে তখনই অপর দলকে তারা অভিসস্পাত করবে, পরিশেষে যখন তাতে সকলে জমায়েত হবে তখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! এরাই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে, সুতরাং আপনি এদের দ্বিগুণ শাস্তি দিন! তখন আল্লাহ বলবেনঃ তাদের প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে দ্বিগুণ শাস্তি, কিন্তু তোমরা জাননা।
39 – ‘আরাফ
وَقَالَتْ أُولَىٰهُمْ لِأُخْرَىٰهُمْ فَمَا كَانَ لَكُمْ عَلَيْنَا مِن فَضْلٍ فَذُوقُواۡ ٱلْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْسِبُونَ
অতঃপর পূর্ববর্তী লোকেরা পরবর্তী লোকদেরকে বলবেঃ আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ শাস্তি ভোগ করতে থাক।
40 – ‘আরাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَٱسْتَكْبَرُواۡ عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَٰبُ ٱلسَّمَآءِ وَلَا يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ حَتَّىٰ يَلِجَ ٱلْجَمَلُ فِى سَمِّ ٱلْخِيَاطِۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُجْرِمِينَ
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার বশতঃ তা থেকে ফিরে থাকে, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবেনা এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করবেনা, যতক্ষণ না সুচের ছিদ্র পথে উট প্রবেশ করে, এমনিভাবেই আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি।
41 – ‘আরাফ
لَهُم مِّن جَهَنَّمَ مِهَادٌ وَمِن فَوْقِهِمْ غَوَاشٍۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّٰلِمِينَ
তাদের জন্য হবে জাহান্নামের (আগুনের) শয্যা এবং তাদের উপরের আচ্ছাদনও হবে (আগুনের তৈরী) চাদর, এমনিভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি।
42 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَآ أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
যারা ঈমান এনেছে ও ভাল কাজ করেছে এমন কোন ব্যক্তিকে আমি তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করিনা – তারাই হবে জান্নাতবাসী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে।
43 – ‘আরাফ
وَنَزَعْنَا مَا فِى صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ تَجْرِى مِن تَحْتِهِمُ ٱلْأَنْهَٰرُۖ وَقَالُواۡ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ٱلَّذِى هَدَىٰنَا لِهَٰذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِىَ لَوْلَآ أَنْ هَدَىٰنَا ٱللَّهُۖ لَقَدْ جَآءَتْ رُسُلُ رَبِّنَا بِٱلْحَقِّۖ وَنُودُوٓاۡ أَن تِلْكُمُ ٱلْجَنَّةُ أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
আর তাদের অন্তরে যা কিছু ঈর্ষা ও বিদ্বেষ রয়েছে তা আমি দূর করে দিব, তাদের নিম্নদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে; তখন তারা বলবেঃ সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করলে আমরা পথ পেতামনা, আমাদের রবের প্রেরিত রাসূলগণ সত্য বাণী নিয়ে এসেছিলেন। আর তাদেরকে সম্বোধন করে বলা হবেঃ তোমরা যে (ভাল) ‘আমল করতে তারই জন্য তোমাদেরকে এই জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে।
44 – ‘আরাফ
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ أَصْحَٰبَ ٱلنَّارِ أَن قَدْ وَجَدْنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَهَلْ وَجَدتُّم مَّا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّاۖ قَالُواۡ نَعَمْۚ فَأَذَّنَ مُؤَذِّنٌۢ بَيْنَهُمْ أَن لَّعْنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلظَّٰلِمِينَ
আর জান্নাতের অধিবাসীগণ আগুনের অধিবাসীদেরকে ডাকবে যে, ‘আমাদের রব আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন তা আমরা সত্য পেয়েছি। সুতরাং তোমাদের রব তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন, তা কি তোমরা সত্যই পেয়েছ’? তারা বলবে, ‘হ্যাঁ’। অতঃপর এক ঘোষক তাদের মধ্যে ঘোষণা দেবে যে, আল্লাহর লা’নত যালিমদের উপর’।
45 – ‘আরাফ
ٱلَّذِينَ يَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ كَٰفِرُونَ
যারা আল্লাহর পথে চলতে (মানুষকে) বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করত তারা পরকালকেও অস্বীকার করত।
46 – ‘আরাফ
وَبَيْنَهُمَا حِجَابٌۚ وَعَلَى ٱلْأَعْرَافِ رِجَالٌ يَعْرِفُونَ كُلًّۢا بِسِيمَىٰهُمْۚ وَنَادَوْاۡ أَصْحَٰبَ ٱلْجَنَّةِ أَن سَلَٰمٌ عَلَيْكُمْۚ لَمْ يَدْخُلُوهَا وَهُمْ يَطْمَعُونَ
এই উভয় শ্রেণীর লোকদের মাঝে পার্থক্যকারী একটি পর্দা রয়েছে। এবং আ‘রাফে (জান্নাত ও জাহান্নামের ঊর্ধ্বস্থানে) কিছু লোক থাকবে, তারা প্রত্যেককে লক্ষণ ও চিহ্ন দ্বারা চিনতে পারবে। তারা জান্নাতবাসীকে ডেকে বলবেঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক; তখনো তারা জান্নাতে প্রবেশ করেনি বটে, কিন্তু তারা প্রবেশ করার আকাংখা করবে।
47 – ‘আরাফ
وَإِذَا صُرِفَتْ أَبْصَٰرُهُمْ تِلْقَآءَ أَصْحَٰبِ ٱلنَّارِ قَالُواۡ رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا مَعَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
পরন্ত জাহান্নামীদের প্রতি তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয়া হবে, তখন তারা (আ‘রাফবাসীরা) বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের সঙ্গী করবেননা।
48 – ‘আরাফ
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلْأَعْرَافِ رِجَالًا يَعْرِفُونَهُم بِسِيمَىٰهُمْ قَالُواۡ مَآ أَغْنَىٰ عَنكُمْ جَمْعُكُمْ وَمَا كُنتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ
আ‘রাফবাসীদের কয়েকজন জাহান্নামী লোককে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনতে পেরে ডাক দিয়ে বলবেঃ তোমাদের দলবল ও পার্থিব জীবনের ধন-সম্পদ এবং তোমাদের গর্ব, অহংকার তোমাদের কোনই উপকারে এলোনা।
49 – ‘আরাফ
أَهَٰٓؤُلَآءِ ٱلَّذِينَ أَقْسَمْتُمْ لَا يَنَالُهُمُ ٱللَّهُ بِرَحْمَةٍۚ ٱدْخُلُواۡ ٱلْجَنَّةَ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمْ وَلَآ أَنتُمْ تَحْزَنُونَ
এই জান্নাতবাসীরা কি তারা নয় যাদের সম্পর্কে তোমরা কসম করে বলতে যে, এদের প্রতি আল্লাহ দয়া প্রদর্শন করবেননা? তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর, তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা চিন্তিত ও দুঃখিত হবেনা।
50 – ‘আরাফ
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ أَصْحَٰبَ ٱلْجَنَّةِ أَنْ أَفِيضُواۡ عَلَيْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ أَوْ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُۚ قَالُوٓاۡ إِنَّ ٱللَّهَ حَرَّمَهُمَا عَلَى ٱلْكَٰفِرِينَ
জাহান্নামীরা জান্নাতীদেরকে সম্বোধন করে বলবেঃ আমাদের উপর কিছু পানি ঢেলে দাও অথবা আল্লাহ প্রদত্ত তোমাদের জীবিকা হতে কিছু প্রদান কর। তারা বলবেঃ আল্লাহ এ দু’টি জিনিস কাফিরদের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।
51 – ‘আরাফ
ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواۡ دِينَهُمْ لَهْوًا وَلَعِبًا وَغَرَّتْهُمُ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَاۚ فَٱلْيَوْمَ نَنسَىٰهُمْ كَمَا نَسُواۡ لِقَآءَ يَوْمِهِمْ هَٰذَا وَمَا كَانُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا يَجْحَدُونَ
তারা নিজেদের দীনকে ক্রীড়া-কৌতুকের বস্তুতে পরিণত করেছিল এবং পার্থিব জীবন তাদেরকে ধোকায় ফেলে রেখেছিল। সুতরাং আজ আমি তাদেরকে তেমনিভাবে ভুলে থাকব যেমনিভাবে তারা এই দিনের সাক্ষাতের কথা ভুলে গিয়েছিল এবং যেমনভাবে তারা আমার নিদর্শন ও আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল।
52 – ‘আরাফ
وَلَقَدْ جِئْنَٰهُم بِكِتَٰبٍ فَصَّلْنَٰهُ عَلَىٰ عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আর আমি তাদের নিকট এমন একটি কিতাব পৌঁছিয়েছিলাম যাকে আমি স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বিস্তারিত বর্ণনা করেছিলাম এবং যা ছিল মু’মিনদের জন্য পথ নির্দেশ ও রাহমাতের প্রতীক।
53 – ‘আরাফ
هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا تَأْوِيلَهُۥۚ يَوْمَ يَأْتِى تَأْوِيلُهُۥ يَقُولُ ٱلَّذِينَ نَسُوهُ مِن قَبْلُ قَدْ جَآءَتْ رُسُلُ رَبِّنَا بِٱلْحَقِّ فَهَل لَّنَا مِن شُفَعَآءَ فَيَشْفَعُواۡ لَنَآ أَوْ نُرَدُّ فَنَعْمَلَ غَيْرَ ٱلَّذِى كُنَّا نَعْمَلُۚ قَدْ خَسِرُوٓاۡ أَنفُسَهُمْ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُواۡ يَفْتَرُونَ
তারা কি এই অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয় বস্তু প্রকাশ করা হোক? যেদিন এর বিষয় বস্তু প্রকাশিত হবে সেদিন যারা এর আগমনের কথা ভুলে গিয়েছিল তারা বলবেঃ বাস্তবিকই আমাদের রবের রাসূলগণ সত্য বাণী নিয়ে এসেছিলেন, এমন কোন সুপারিশকারী আছে কি যারা আমাদের জন্য সুপারিশ করবে? অথবা আমাদেরকে কি পুনরায় দুনিয়ায় পাঠানো যেতে পারে যাতে আমরা পূর্বের কৃতকর্মের তুলনায় ভিন্ন কিছু করতে পারি? নিঃসন্দেহে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, আর তারা যেসব মিথ্যা (মা‘বূদ ও রসম রেওয়াজ) রচনা করেছিল, তাও তাদের হতে অন্তর্হিত হয়ে যাবে।
54 – ‘আরাফ
إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ يُغْشِى ٱلَّيْلَ ٱلنَّهَارَ يَطْلُبُهُۥ حَثِيثًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتٍۭ بِأَمْرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلْخَلْقُ وَٱلْأَمْرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
নিশ্চয়ই তোমাদের রাব্ব হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের উপর সমাসীন হন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যাতে ওরা একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে ত্বরিত গতিতে; সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজী সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। জেনে রেখ, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই, আর হুকুমের একমাত্র মালিকও তিনি, সারা জাহানের রাব্ব আল্লাহ হলেন বারাকাতময়।
55 – ‘আরাফ
ٱدْعُواۡ رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةًۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلْمُعْتَدِينَ
তোমরা বিনীতভাবে ও সংগোপনে তোমাদের রাব্বকে ডাকবে, তিনি সীমা লংঘনকারীদেরকে ভালবাসেননা।
56 – ‘আরাফ
وَلَا تُفْسِدُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَٰحِهَا وَٱدْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًاۚ إِنَّ رَحْمَتَ ٱللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ ٱلْمُحْسِنِينَ
দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর বিপর্যয় ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করনা, আল্লাহকে ভয়-ভীতি ও আশা আকাংখার সাথে ডাক, নিঃসন্দেহে আল্লাহর রাহমাত সৎকর্মশীলদের অতি সন্নিকটে।
57 – ‘আরাফ
وَهُوَ ٱلَّذِى يُرْسِلُ ٱلرِّيَٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِهِۦۖ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَقَلَّتْ سَحَابًا ثِقَالًا سُقْنَٰهُ لِبَلَدٍ مَّيِّتٍ فَأَنزَلْنَا بِهِ ٱلْمَآءَ فَأَخْرَجْنَا بِهِۦ مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِۚ كَذَٰلِكَ نُخْرِجُ ٱلْمَوْتَىٰ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
সেই আল্লাহই স্বীয় রাহমাতের (বৃষ্টির) আগে বাতাসকে সুসংবাদ বহনকারী রূপে প্রেরণ করেন। যখন ঐ বাতাস ভারী মেঘমালাকে বহন করে নিয়ে আসে তখন আমি ঐ মেঘমালাকে কোন নির্জীব ভূ-খন্ডের দিকে প্রেরণ করি। অতঃপর ওটা হতে বারিধারা বর্ষণ করি, তারপর সেই পানির সাহায্যে সেখানে সর্ব প্রকার ফল ফলাদি উৎপাদন করি। এমনিভাবেই আমি মৃতকে জীবিত করি, যাতে তোমরা এটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পার।
58 – ‘আরাফ
وَٱلْبَلَدُ ٱلطَّيِّبُ يَخْرُجُ نَبَاتُهُۥ بِإِذْنِ رَبِّهِۦۖ وَٱلَّذِى خَبُثَ لَا يَخْرُجُ إِلَّا نَكِدًاۚ كَذَٰلِكَ نُصَرِّفُ ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍ يَشْكُرُونَ
আর উৎকৃষ্ট ভূমি ওর রবের নির্দেশক্রমে খুব উৎকৃষ্ট ফসল ফলায়, আর যা নিকৃষ্ট ভূমি – তাতে খুব কমই ফসল ফলে থাকে। এমনিভাবেই আমি কৃতজ্ঞ পরায়ণদের জন্য আমার আয়াতসমূহ বিভিন্নভাবে বর্ণনা করে থাকি।
59 – ‘আরাফ
لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِۦ فَقَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُواۡ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥٓ إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
) আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে তাদেরকে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা শুধু আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই, আমি তোমাদের প্রতি এক গুরুতর দিনের শাস্তির আশংকা করছি।
60 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِهِۦٓ إِنَّا لَنَرَىٰكَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
তার সম্প্রদায়ের প্রধান ও নেতারা বললঃ আমরা তোমাকে স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে দেখছি।
61 – ‘আরাফ
قَالَ يَٰقَوْمِ لَيْسَ بِى ضَلَٰلَةٌ وَلَٰكِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি কোন ভুল ভ্রান্তি ও গুমরাহীর মধ্যে লিপ্ত নই, বরং আমি সারা জাহানের রবের (প্রেরিত) একজন রাসূল।
62 – ‘আরাফ
أُبَلِّغُكُمْ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَأَنصَحُ لَكُمْ وَأَعْلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি, আর আমি তোমাদেরকে হিতোপদেশ দিচ্ছি। তোমরা যা জাননা আমি তা আল্লাহর নিকট থেকে জেনে থাকি।
63 – ‘আরাফ
أَوَعَجِبْتُمْ أَن جَآءَكُمْ ذِكْرٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَلَىٰ رَجُلٍ مِّنكُمْ لِيُنذِرَكُمْ وَلِتَتَّقُواۡ وَلَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
তোমাদের মধ্য থেকে একজন লোকের মাধ্যমে তোমাদের রবের পক্ষ হতে উপদেশ বাণী আসায় কি তোমরা বিস্মিত হয়েছ, যাতে সে তোমাদেরকে সতর্ক ও হুশিয়ার করতে পারে, যেন তোমরা সাবধান হও এবং যেন আল্লাহভীতি অবলম্বন করতে পার, হয়ত তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করা হবে?
64 – ‘আরাফ
فَكَذَّبُوهُ فَأَنجَيْنَٰهُ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥ فِى ٱلْفُلْكِ وَأَغْرَقْنَا ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَآۚ إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَوْمًا عَمِينَ
কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, ফলে তাকে এবং তার সাথে নৌকায় যারা ছিল তাদেরকে (আযাব হতে) রক্ষা করলাম, আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে অমান্য করেছিল, তাদেরকে ডুবিয়ে মারলাম। বস্তুতঃ নিঃসন্দেহে তারা ছিল এক অন্ধ সম্প্রদায়।
65 – ‘আরাফ
وَإِلَىٰ عَادٍ أَخَاهُمْ هُودًاۗ قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُواۡ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥٓۚ أَفَلَا تَتَّقُونَ
‘আদ জাতির নিকট তাদের ভাই হুদকে (নাবী রূপে) পাঠিয়েছিলাম। সে বললঃ হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই, তোমরা কি সাবধান হবেনা?
66 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِن قَوْمِهِۦٓ إِنَّا لَنَرَىٰكَ فِى سَفَاهَةٍ وَإِنَّا لَنَظُنُّكَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
তার জাতির নেতারা বললঃ আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখছি এবং আমরাতো তোমাকে নিশ্চিত রূপে মিথ্যাবাদী মনে করি।
67 – ‘আরাফ
قَالَ يَٰقَوْمِ لَيْسَ بِى سَفَاهَةٌ وَلَٰكِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি নির্বোধ নই, বরং আমি হলাম সারা জাহানের রবের মনোনীত রাসূল।
68 – ‘আরাফ
أُبَلِّغُكُمْ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَأَنَا۠ لَكُمْ نَاصِحٌ أَمِينٌ
আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছি, আর আমি তোমাদের একজন বিশ্বস্ত হিতাকাংখী ।
69 – ‘আরাফ
أَوَعَجِبْتُمْ أَن جَآءَكُمْ ذِكْرٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَلَىٰ رَجُلٍ مِّنكُمْ لِيُنذِرَكُمْۚ وَٱذْكُرُوٓاۡ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَآءَ مِنۢ بَعْدِ قَوْمِ نُوحٍ وَزَادَكُمْ فِى ٱلْخَلْقِ بَصْۜطَةًۖ فَٱذْكُرُوٓاۡ ءَالَآءَ ٱللَّهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
তোমরা কি এতে বিস্মিত হচ্ছ যে, তোমাদের জাতিরই একটি লোকের মাধ্যমে তোমাদের রবের পক্ষ হতে তাঁর বিধান ও উপদেশসহ তোমাদেরকে সতর্ক করার উদ্দেশে তোমাদের কাছে এসেছে? তোমরা সেই অবস্থার কথা স্মরণ কর যখন নূহের সম্প্রদায়ের পর আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদেরকে অন্যদের অপেক্ষা শক্তিতে অধিকতর বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন। তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর, হয়তো তোমরা সফলকাম হবে।
70 – ‘আরাফ
قَالُوٓاۡ أَجِئْتَنَا لِنَعْبُدَ ٱللَّهَ وَحْدَهُۥ وَنَذَرَ مَا كَانَ يَعْبُدُ ءَابَآؤُنَاۖ فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট শুধু এই উদ্দেশে এসেছো যে, আমরা যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করি এবং আমাদের পূর্ব-পুরুষরা যাদের পূজা করত তাদেরকে বর্জন করি? তুমি তোমার কথা ও দাবীতে সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর।
71 – ‘আরাফ
قَالَ قَدْ وَقَعَ عَلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ رِجْسٌ وَغَضَبٌۖ أَتُجَٰدِلُونَنِى فِىٓ أَسْمَآءٍ سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّا نَزَّلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍۚ فَٱنتَظِرُوٓاۡ إِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُنتَظِرِينَ
সে বললঃ তোমাদের রবের শাস্তি ও ক্রোধ তোমাদের উপর অবধারিত হয়ে আছে। তোমরা কি আমার সাথে এমন কতকগুলি নাম সম্বন্ধে বিতর্ক করছ যার নামকরণ করেছ তোমরা এবং তোমাদের বাপ দাদারা, আর যে বিষয়ে আল্লাহ কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি? সুতরাং তোমরা (শাস্তির জন্য) অপেক্ষা করতে থাক, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।
72 – ‘আরাফ
فَأَنجَيْنَٰهُ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَقَطَعْنَا دَابِرَ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَاۖ وَمَا كَانُواۡ مُؤْمِنِينَ
অতঃপর আমি তাকে (হুদকে) এবং তার সঙ্গী-সাথীদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করলাম, আর যারা আমার নিদর্শনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল এবং যারা ঈমানদার ছিলনা তাদের মূলোৎপাটন করে ছাড়লাম।
73 – ‘আরাফ
وَإِلَىٰ ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَٰلِحًاۗ قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُواۡ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥۖ قَدْ جَآءَتْكُم بَيِّنَةٌ مِّن رَّبِّكُمْۖ هَٰذِهِۦ نَاقَةُ ٱللَّهِ لَكُمْ ءَايَةًۖ فَذَرُوهَا تَأْكُلْ فِىٓ أَرْضِ ٱللَّهِۖ وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوٓءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
আর আমি ছামূদ জাতির নিকট তাদের ভাই সালিহকে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই, তোমাদের রবের পক্ষ হতে এক স্পষ্ট নিদর্শন তোমাদের নিকট এসেছে, এটি আল্লাহর উষ্ট্রী – তোমাদের জন্য একটি নিদর্শন স্বরূপ। তোমরা একে ছেড়ে দাও – আল্লাহর যমীনে চরে খাবে, ওকে খারাপ উদ্দেশে স্পর্শ করনা, (কেহ কোন কষ্ট দিলে) এক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে।
74 – ‘আরাফ
وَٱذْكُرُوٓاۡ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَآءَ مِنۢ بَعْدِ عَادٍ وَبَوَّأَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ تَتَّخِذُونَ مِن سُهُولِهَا قُصُورًا وَتَنْحِتُونَ ٱلْجِبَالَ بُيُوتًاۖ فَٱذْكُرُوٓاۡ ءَالَآءَ ٱللَّهِ وَلَا تَعْثَوْاۡ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ
তোমরা স্মরণ কর সেই বিষয়টি যখন তিনি ‘আদ জাতির পর তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন, আর তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে, তোমরা সমতল ভূমিতে প্রাসাদ ও পাহাড় কেটে আবাস গৃহ নির্মাণ করেছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে দিওনা।
75 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُواۡ مِن قَوْمِهِۦ لِلَّذِينَ ٱسْتُضْعِفُواۡ لِمَنْ ءَامَنَ مِنْهُمْ أَتَعْلَمُونَ أَنَّ صَٰلِحًا مُّرْسَلٌ مِّن رَّبِّهِۦۚ قَالُوٓاۡ إِنَّا بِمَآ أُرْسِلَ بِهِۦ مُؤْمِنُونَ
তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক প্রধানরা তাদের মধ্যকার দুর্বল ও উৎপীড়িত মু’মিনদেরকে বললঃ তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, সালিহ তার রাব্ব কর্তৃক প্রেরিত হয়েছে? তারা উত্তরে বললঃ নিশ্চয়ই যে বার্তাসহ সে প্রেরিত হয়েছে, আমরা তা বিশ্বাস করি।
76 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓاۡ إِنَّا بِٱلَّذِىٓ ءَامَنتُم بِهِۦ كَٰفِرُونَ
দাম্ভিকরা বললঃ তোমরা যা বিশ্বাস কর আমরা তা বিশ্বাস করিনা।
77 – ‘আরাফ
فَعَقَرُواۡ ٱلنَّاقَةَ وَعَتَوْاۡ عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ وَقَالُواۡ يَٰصَٰلِحُ ٱئْتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ
অতঃপর তারা সেই উষ্ট্রীটিকে মেরে ফেললো এবং গর্ব ও দাম্ভিকতার সাথে তাদের রবের নির্দেশের বিরোদ্ধাচরণ করল এবং বললঃ হে সালিহ! তুমি সত্য রাসূল হয়ে থাকলে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর।
78 – ‘আরাফ
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُواۡ فِى دَارِهِمْ جَٰثِمِينَ
সুতরাং ভূমিকম্প তাদেরকে গ্রাস করে নিলো, ফলে তারা নিজেদের গৃহের মধ্যেই নতজানু হয়ে পড়ে রইল।
79 – ‘আরাফ
فَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰقَوْمِ لَقَدْ أَبْلَغْتُكُمْ رِسَالَةَ رَبِّى وَنَصَحْتُ لَكُمْ وَلَٰكِن لَّا تُحِبُّونَ ٱلنَّٰصِحِينَ
সালিহ এ কথা বলে তাদের জনপদ হতে বের হয়ে গেলঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরাতো হিতৈষী বন্ধুদেরকে পছন্দ করনা।
80 – ‘আরাফ
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَتَأْتُونَ ٱلْفَٰحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ ٱلْعَٰلَمِينَ
আর আমি লূতকে পাঠিয়েছিলাম। সে তার কাওমকে বলেছিলঃ তোমরা এমন অশ্লীল ও কু-কর্ম করছো যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে আর কেহই করেনি।
81 – ‘আরাফ
إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ ٱلرِّجَالَ شَهْوَةً مِّن دُونِ ٱلنِّسَآءِۚ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ
তোমরা স্ত্রীলোকদের বাদ দিয়ে পুরুষদের দ্বারা নিজেদের যৌন ইচ্ছা নিবারণ করে নিচ্ছ। প্রকৃত পক্ষে, তোমরা হচ্ছ সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।
82 – ‘আরাফ
وَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِۦٓ إِلَّآ أَن قَالُوٓاۡ أَخْرِجُوهُم مِّن قَرْيَتِكُمْۖ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ
তার জাতির লোকদের এটা ছাড়া আর কোন জবাবই ছিলনা যে, এদের তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও, এরা নিজেদেরকে বড় পবিত্র রাখতে চায়।
83 – ‘আরাফ
فَأَنجَيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ كَانَتْ مِنَ ٱلْغَٰبِرِينَ
পরিশেষে, আমি তাকে এবং তার পরিবারের লোকদেরকে, তার স্ত্রী ছাড়া, শাস্তি হতে রক্ষা করেছিলাম, তার স্ত্রী তাদের সাথে পিছনেই রয়ে গিয়েছিল।
84 – ‘আরাফ
وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًاۖ فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُجْرِمِينَ
অতঃপর আমি তাদের উপর মুষলধারে বারিপাত ঘটালাম, অতঃপর লক্ষ্য কর, অপরাধী লোকদের পরিণাম কি হয়েছিল।
85 – ‘আরাফ
وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًاۗ قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُواۡ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥۖ قَدْ جَآءَتْكُم بَيِّنَةٌ مِّن رَّبِّكُمْۖ فَأَوْفُواۡ ٱلْكَيْلَ وَٱلْمِيزَانَ وَلَا تَبْخَسُواۡ ٱلنَّاسَ أَشْيَآءَهُمْ وَلَا تُفْسِدُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَٰحِهَاۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
আর আমি মাদইয়ানবাসীদের কাছে তাদেরই ভাই শু‘আইবকে পাঠিয়েছিলাম। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই। তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট দলীল এসে গেছে। সুতরাং তোমরা ওযন ও পরিমাণ পূর্ণ মাত্রায় দিবে, মানুষকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করবেনা। আর দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর ঝগড়া ফাসাদ ও বিপর্যয় ঘটাবেনা, তোমরা বাস্তবিক পক্ষে ঈমানদার হলে এই পথই হল তোমাদের জন্য কল্যাণকর।
86 – ‘আরাফ
وَلَا تَقْعُدُواۡ بِكُلِّ صِرَٰطٍ تُوعِدُونَ وَتَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ مَنْ ءَامَنَ بِهِۦ وَتَبْغُونَهَا عِوَجًاۚ وَٱذْكُرُوٓاۡ إِذْ كُنتُمْ قَلِيلًا فَكَثَّرَكُمْۖ وَٱنظُرُواۡ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُفْسِدِينَ
আর (জীবনের) প্রতিটি পথে এমনিভাবে দস্যি হয়ে যেওনা যে, ঈমানদার লোকদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখতে থাকবে এবং সহজ সরল পথকে বক্র করায় ব্যস্ত থাকবে। ঐ অবস্থানটির কথা স্মরণ কর, যখন তোমরা সংখ্যায় স্বল্প ছিলে, অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে দিলেন, আর এই জগতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কি হয়েছে তা জ্ঞানচক্ষু খুলে লক্ষ্য কর।
87 – ‘আরাফ
وَإِن كَانَ طَآئِفَةٌ مِّنكُمْ ءَامَنُواۡ بِٱلَّذِىٓ أُرْسِلْتُ بِهِۦ وَطَآئِفَةٌ لَّمْ يُؤْمِنُواۡ فَٱصْبِرُواۡ حَتَّىٰ يَحْكُمَ ٱللَّهُ بَيْنَنَاۚ وَهُوَ خَيْرُ ٱلْحَٰكِمِينَ
আমার নিকট যা (আল্লাহর পক্ষ হতে) প্রেরিত হয়েছে তা যদি তোমাদের কোন দল বিশ্বাস করে এবং কোন দল অবিশ্বাস করে তাহলে ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না আল্লাহ আমাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফাইসালা করে দেন। তিনিই হলেন উত্তম ফাইসালাকারী।
88 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُواۡ مِن قَوْمِهِۦ لَنُخْرِجَنَّكَ يَٰشُعَيْبُ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مَعَكَ مِن قَرْيَتِنَآ أَوْ لَتَعُودُنَّ فِى مِلَّتِنَاۚ قَالَ أَوَلَوْ كُنَّا كَٰرِهِينَ
আর তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক ও অহংকারী প্রধানরা বলেছিলঃ হে শু‘আইব! আমরা অবশ্যই তোমাকে, তোমার সংগী সাথী মু’মিনদেরকে আমাদের জনপদ হতে বহিস্কার করব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মাদর্শে ফিরে আসবে। সে বললঃ আমরা যদি তাতে রাযী না হই?
89 – ‘আরাফ
قَدِ ٱفْتَرَيْنَا عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا إِنْ عُدْنَا فِى مِلَّتِكُم بَعْدَ إِذْ نَجَّىٰنَا ٱللَّهُ مِنْهَاۚ وَمَا يَكُونُ لَنَآ أَن نَّعُودَ فِيهَآ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّنَاۚ وَسِعَ رَبُّنَا كُلَّ شَىْءٍ عِلْمًاۚ عَلَى ٱللَّهِ تَوَكَّلْنَاۚ رَبَّنَا ٱفْتَحْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمِنَا بِٱلْحَقِّ وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْفَٰتِحِينَ
তোমাদের ধর্মাদর্শ হতে আল্লাহ আমাদেরকে মুক্তি দেয়ার পর আমরা যদি তাতে আবার ফিরে যাই তাহলে নিশ্চিতভাবে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপকারী হব! আমাদের রাব্ব আল্লাহ না চাইলে ওতে আবার ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। সবকিছুই আমাদের রবের জ্ঞানায়ত্ত, আমরা আল্লাহর উপরই নির্ভর করছি। হে আমাদের রাব্ব! আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সঠিকভাবে ফাইসালা করে দিন, আপনিইতো সর্বোত্তম ফাইসালাকারী।
90 – ‘আরাফ
وَقَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِن قَوْمِهِۦ لَئِنِ ٱتَّبَعْتُمْ شُعَيْبًا إِنَّكُمْ إِذًا لَّخَٰسِرُونَ
আর তাদের সম্প্রদায়ের কাফির সর্দাররা বললঃ তোমরা যদি শু‘আইবকে অনুসরণ কর তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
91 – ‘আরাফ
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُواۡ فِى دَارِهِمْ جَٰثِمِينَ
অতঃপর ভূ-কম্পন তাদেরকে গ্রাস করল, ফলে তারা নিজেদের গৃহেই উপুড় হয়ে পড়ে রইল।
92 – ‘আরাফ
ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ شُعَيْبًا كَأَن لَّمْ يَغْنَوْاۡ فِيهَاۚ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ شُعَيْبًا كَانُواۡ هُمُ ٱلْخَٰسِرِينَ
অবস্থা দেখে মনে হল, যারা শু‘আইবকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তারা যেন কখনও সেখানে বসবাস করেনি, শু‘আইবকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী লোকেরাই শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
93 – ‘আরাফ
فَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰقَوْمِ لَقَدْ أَبْلَغْتُكُمْ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَنَصَحْتُ لَكُمْۖ فَكَيْفَ ءَاسَىٰ عَلَىٰ قَوْمٍ كَٰفِرِينَ
সে তাদের নিকট হতে এ কথা বলে বেরিয়ে এলোঃ হে আমার জাতি! আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছি এবং সৎ উপদেশ দিয়েছি। সুতরাং আমি কাফির সম্প্রদায়ের জন্য কি করে আক্ষেপ করতে পারি?
94 – ‘আরাফ
وَمَآ أَرْسَلْنَا فِى قَرْيَةٍ مِّن نَّبِىٍّ إِلَّآ أَخَذْنَآ أَهْلَهَا بِٱلْبَأْسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ لَعَلَّهُمْ يَضَّرَّعُونَ
আমি কোন জনপদে নাবী রাসূল পাঠালে, ওর অধিবাসীদেরকে দুঃখ-দারিদ্র ও রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত করে থাকি, উদ্দেশ্য হল, তারা যেন নম্র ও বিনয়ী হয়।
95 – ‘আরাফ
ثُمَّ بَدَّلْنَا مَكَانَ ٱلسَّيِّئَةِ ٱلْحَسَنَةَ حَتَّىٰ عَفَواۡ وَّقَالُواۡ قَدْ مَسَّ ءَابَآءَنَا ٱلضَّرَّآءُ وَٱلسَّرَّآءُ فَأَخَذْنَٰهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
অতঃপর আমি তাদের দুরাবস্থাকে সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছি। অবশেষে তারা খুব প্রাচুর্যের অধিকারী হয়, আর তারা (অকৃতজ্ঞ স্বরে) বলেঃ আমাদের পূর্ব-পুরুষরাও এভাবে দুঃখ ভোগ করেছে। অতঃপর অকস্মাৎ আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, কিন্তু তারা কিছুই বুঝতে পারলনা।
96 – ‘আরাফ
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ ٱلْقُرَىٰٓ ءَامَنُواۡ وَٱتَّقَوْاۡ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَٰتٍ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ وَلَٰكِن كَذَّبُواۡ فَأَخَذْنَٰهُم بِمَا كَانُواۡ يَكْسِبُونَ
জনপদের অধিবাসীরা যদি ঈমান আনত এবং আল্লাহভীতি অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতের দ্বারসমূহ খুলে দিতাম, কিন্তু তারা নাবী রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, ফলে তাদের কৃতকর্মের জন্য আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম।
97 – ‘আরাফ
أَفَأَمِنَ أَهْلُ ٱلْقُرَىٰٓ أَن يَأْتِيَهُم بَأْسُنَا بَيَٰتًا وَهُمْ نَآئِمُونَ
রাতে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকে তখন আমার শাস্তি এসে তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে – এটা হতে কি জনপদের অধিবাসীরা নির্ভয় হয়ে পড়েছে ?
98 – ‘আরাফ
أَوَأَمِنَ أَهْلُ ٱلْقُرَىٰٓ أَن يَأْتِيَهُم بَأْسُنَا ضُحًى وَهُمْ يَلْعَبُونَ
অথবা জনপদের লোকেরা কি এই ভয় রাখেনা যে, আমার শাস্তি তাদের উপর তখন আপতিত হবে যখন তারা পূর্বাহ্নে আমোদ প্রমোদে রত থাকবে ?
99 – ‘আরাফ
أَفَأَمِنُواۡ مَكْرَ ٱللَّهِۚ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْقَوْمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে ? সর্বনাশগ্রস্থ সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেহই নি:শঙ্ক হতে পারেনা।
100 – ‘আরাফ
أَوَلَمْ يَهْدِ لِلَّذِينَ يَرِثُونَ ٱلْأَرْضَ مِنۢ بَعْدِ أَهْلِهَآ أَن لَّوْ نَشَآءُ أَصَبْنَٰهُم بِذُنُوبِهِمْۚ وَنَطْبَعُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ
কোন এলাকার অধিবাসী ধ্বংস হওয়ার পর সেই এলাকার যারা উত্তরাধিকারী হয়, তাদের কাছে কি এটা প্রতীয়মান হয়নি যে, আমি ইচ্ছা করলে তাদের পাপের কারণে তাদেরকে শাস্তি দিতে পারি, আর তাদের অন্তঃকরণের উপর মোহর এটে দিতে পারি যাতে তারা কিছুই শুনতে পারেনা?
101 – ‘আরাফ
تِلْكَ ٱلْقُرَىٰ نَقُصُّ عَلَيْكَ مِنْ أَنۢبَآئِهَاۚ وَلَقَدْ جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَمَا كَانُواۡ لِيُؤْمِنُواۡ بِمَا كَذَّبُواۡ مِن قَبْلُۚ كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِ ٱلْكَٰفِرِينَ
ঐ জনপদগুলির কিছু ঘটনা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, তাদের কাছে রাসূলগণ সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণসহ এসেছিল, কিন্তু পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনার ছিলনা, এমনিভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন।
102 – ‘আরাফ
وَمَا وَجَدْنَا لِأَكْثَرِهِم مِّنْ عَهْدٍۖ وَإِن وَجَدْنَآ أَكْثَرَهُمْ لَفَٰسِقِينَ
আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, তবে তাদের অধিকাংশকে পাপাচারী রূপে পেয়েছি।
103 – ‘আরাফ
ثُمَّ بَعَثْنَا مِنۢ بَعْدِهِم مُّوسَىٰ بِـَٔايَٰتِنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِيۡهِۦ فَظَلَمُواۡ بِهَاۖ فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُفْسِدِينَ
অতঃপর আমি মূসাকে আমার আয়াত ও নিদর্শনসহ ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের নিকট পাঠালাম, কিন্তু তারা যুলম করল। সুতরাং এই বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা তুমি লক্ষ্য কর।
104 – ‘আরাফ
وَقَالَ مُوسَىٰ يَٰفِرْعَوْنُ إِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
মূসা বললঃ হে ফির‘আউন! আমি বিশ্বের রবের একজন রাসূল।
105 – ‘আরাফ
حَقِيقٌ عَلَىٰٓ أَن لَّآ أَقُولَ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْحَقَّۚ قَدْ جِئْتُكُم بِبَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ فَأَرْسِلْ مَعِىَ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
আমি আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া আর কিছুই বলবনা, আমি তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছি। সুতরাং বানী ইসরাঈলকে আমার সাথে যেতে দাও।
106 – ‘আরাফ
قَالَ إِن كُنتَ جِئْتَ بِـَٔايَةٍ فَأْتِ بِهَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি বাস্তবিকই স্পষ্ট দলীল ও কোন নিদর্শন এনে থাক তাহলে উপস্থিত কর, যদি তুমি সত্যবাদী হও।
107 – ‘আরাফ
فَأَلْقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ ثُعْبَانٌ مُّبِينٌ
তখন মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং সহসাই ওটা এক জীবিত অজগরে পরিণত হল।
108 – ‘আরাফ
وَنَزَعَ يَدَهُۥ فَإِذَا هِىَ بَيْضَآءُ لِلنَّٰظِرِينَ
আর সে তার হাত বের করল, তৎক্ষণাৎই ওটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র ও উজ্জ্বল আলোকময় প্রতিভাত হল।
109 – ‘আরাফ
قَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ إِنَّ هَٰذَا لَسَٰحِرٌ عَلِيمٌ
ফির‘আউন সম্প্রদায়ের প্রধানরা বললঃ নিঃসন্দেহে এ ব্যক্তি বড় সুদক্ষ যাদুকর।
110 – ‘আরাফ
يُرِيدُ أَن يُخْرِجَكُم مِّنْ أَرْضِكُمْۖ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ
সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়, এখন তোমাদের পরামর্শ কি?
111 – ‘আরাফ
قَالُوٓاۡ أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَأَرْسِلْ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَٰشِرِينَ
তারা বললঃ তাকে এবং তার ভাইকে (হারুন) কিছু দিনের জন্য অবকাশ দিন, আর শহরে শহরে সংগ্রাহক পাঠিয়ে দিন,
112 – ‘আরাফ
يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَٰحِرٍ عَلِيمٍ
যেন তারা আপনার (ফির‘আউন) নিকট প্রত্যেক সুদক্ষ যাদুকরকে উপস্থিত করে।
113 – ‘আরাফ
وَجَآءَ ٱلسَّحَرَةُ فِرْعَوْنَ قَالُوٓاۡ إِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِن كُنَّا نَحْنُ ٱلْغَٰلِبِينَ
যাদুকরেরা ফির‘আউনের কাছে এসে বললঃ আমরা যদি বিজয় লাভ করতে পারি তাহলে আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো?
114 – ‘আরাফ
قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ لَمِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ
সে বললঃ হ্যাঁ, তোমরাই হবে আমার দরবারের নিকটতম ব্যক্তি।
115 – ‘আরাফ
قَالُواۡ يَٰمُوسَىٰٓ إِمَّآ أَن تُلْقِىَ وَإِمَّآ أَن نَّكُونَ نَحْنُ ٱلْمُلْقِينَ
অতঃপর যাদুকরেরা বললঃ হে মূসা! তুমি কি তোমার লাঠি নিক্ষেপ করবে, নাকি আমরাই (প্রথমে) নিক্ষেপ করব?
116 – ‘আরাফ
قَالَ أَلْقُواۡۖ فَلَمَّآ أَلْقَوْاۡ سَحَرُوٓاۡ أَعْيُنَ ٱلنَّاسِ وَٱسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَآءُو بِسِحْرٍ عَظِيمٍ
বললঃ তোমরাই নিক্ষেপ কর। সুতরাং যখন যাদুকরেরা নিক্ষেপ করল তখন লোকের চোখে ধাঁধাঁর সৃষ্টি করল এবং তাদেরকে ভীত ও আতংকিত করল, তারা এক বড় রকমের যাদু দেখাল।
117 – ‘আরাফ
وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَۖ فَإِذَا هِىَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ
আমি মূসার নিকট এই প্রত্যাদেশ পাঠালাম, তুমি তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ কর। মূসা তা নিক্ষেপ করলে ওটা (এক বিরাট অজগর হয়ে) সহসা ওদের অলীক সৃষ্টিগুলিকে গ্রাস করতে লাগল।
118 – ‘আরাফ
فَوَقَعَ ٱلْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
আর ফির‘আউন ও তার দলবলের লোকেরা মুকাবিলার মাইদানে পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত ও অপমানিত হল।
119 – ‘আরাফ
فَغُلِبُواۡ هُنَالِكَ وَٱنقَلَبُواۡ صَٰغِرِينَ
আর ফির‘আউন ও তার দলবলের লোকেরা মুকাবিলার মাইদানে পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত ও অপমানিত হল।
120 – ‘আরাফ
وَأُلْقِىَ ٱلسَّحَرَةُ سَٰجِدِينَ
যাদুকরেরা তখন সাজদাহবনত হল।
121 – ‘আরাফ
قَالُوٓاۡ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
তারা বললঃ আমরা বিশ্বের রবের প্রতি ঈমান আনলাম,
122 – ‘আরাফ
رَبِّ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ
মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।
123 – ‘আরাফ
قَالَ فِرْعَوْنُ ءَامَنتُم بِهِۦ قَبْلَ أَنْ ءَاذَنَ لَكُمْۖ إِنَّ هَٰذَا لَمَكْرٌ مَّكَرْتُمُوهُ فِى ٱلْمَدِينَةِ لِتُخْرِجُواۡ مِنْهَآ أَهْلَهَاۖ فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ
ফির‘আউন বললঃ আমি অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তার উপর ঈমান আনলে? নিশ্চয়ই তোমরা এক চক্রান্ত পাকিয়েছ শহরবাসীদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু সত্ত্বরই তোমরা এর পরিণাম জ্ঞাত হবে।
124 – ‘আরাফ
لَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُم مِّنْ خِلَٰفٍ ثُمَّ لَأُصَلِّبَنَّكُمْ أَجْمَعِينَ
অবশ্যই আমি তোমাদের বিপরীত হস্ত-পদ কর্তন করব, তারপর তোমাদের সবাইকে আমি শুলে চড়াব।
125 – ‘আরাফ
قَالُوٓاۡ إِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ
তারা (যাদুকরেরা) বললঃ নিশ্চয়ই আমরা আমাদের রবের নিকট ফিরে যাব।
126 – ‘আরাফ
وَمَا تَنقِمُ مِنَّآ إِلَّآ أَنْ ءَامَنَّا بِـَٔايَٰتِ رَبِّنَا لَمَّا جَآءَتْنَاۚ رَبَّنَآ أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
তুমি আমাদের মধ্যে এছাড়া কোনই দোষ পাচ্ছনা যে, আমাদের কাছে যখন আমাদের রবের নিদর্শনাবলী এসে গেল তখন আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম রূপে আমাদের মৃত্যু দান করুন!
127 – ‘আরাফ
وَقَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ أَتَذَرُ مُوسَىٰ وَقَوْمَهُۥ لِيُفْسِدُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ وَيَذَرَكَ وَءَالِهَتَكَۚ قَالَ سَنُقَتِّلُ أَبْنَآءَهُمْ وَنَسْتَحْىِۦ نِسَآءَهُمْ وَإِنَّا فَوْقَهُمْ قَٰهِرُونَ
ফির‘আউন সম্প্রদায়ের সর্দাররা তাকে বললঃ তুমি কি মূসা ও তার সম্প্রদায়কে রাজ্যে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির জন্য মুক্ত ছেড়ে দিবে এবং তোমাকে ও তোমার দেবতাদেরকে বর্জন করে চলার সুযোগ দিবে? সে বললঃ আমি তাদের সন্তানদের হত্যা করব এবং তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখব, তাদের উপর আমাদের শক্তি ও ক্ষমতা প্রবল ও সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে।
128 – ‘আরাফ
قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ ٱسْتَعِينُواۡ بِٱللَّهِ وَٱصْبِرُوٓاۡۖ إِنَّ ٱلْأَرْضَ لِلَّهِ يُورِثُهَا مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦۖ وَٱلْعَٰقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ
মূসা তার সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর এবং ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অবলম্বন কর। এই পৃথিবীর সার্বভৌম মালিক আল্লাহ, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা উহার উত্তরাধিকারী করেন, শুভ পরিণাম ও শেষ সাফল্য লাভ হয় আল্লাহভীরুদের জন্য।
129 – ‘আরাফ
قَالُوٓاۡ أُوذِينَا مِن قَبْلِ أَن تَأْتِيَنَا وَمِنۢ بَعْدِ مَا جِئْتَنَاۚ قَالَ عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ
তারা বললঃ আপনি আমাদের নিকট (নাবী রূপে) আগমনের পূর্বেও আমরা (ফির‘আউন কর্তৃক) নির্যাতিত হয়েছি এবং আপনার আগমনের পরও নির্যাতিত হচ্ছি। সে (মূসা) বললঃ সম্ভবতঃ শীঘ্রই তোমাদের রাব্ব তোমাদের শক্রকে ধ্বংস করবেন এবং তোমাদেরকে তাদের রাজ্যে স্থলাভিষিক্ত করবেন, অতঃপর তোমরা কিরূপ কাজ কর তা তিনি লক্ষ্য করবেন।
130 – ‘আরাফ
وَلَقَدْ أَخَذْنَآ ءَالَ فِرْعَوْنَ بِٱلسِّنِينَ وَنَقْصٍ مِّنَ ٱلثَّمَرَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
আমি ফির‘আউনের অনুসারীদেরকে বছরের পর বছর দুর্ভিক্ষ, অজন্ম ও ফসলহানির মধ্যে বিপন্ন রেখেছিলাম, যাতে তারা ঈমান আনে।
131 – ‘আরাফ
فَإِذَا جَآءَتْهُمُ ٱلْحَسَنَةُ قَالُواۡ لَنَا هَٰذِهِۦۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَطَّيَّرُواۡ بِمُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُۥٓۗ أَلَآ إِنَّمَا طَٰٓئِرُهُمْ عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
যখন তাদের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ হত তখন তারা বলতঃ এটা আমাদের প্রাপ্য, আর যদি তাদের দুঃখ দৈন্য ও বিপদ আপদ হত তখন তারা ওটাকে মূসা ও তার সঙ্গী সাথীদের মন্দ ভাগ্যের কারণ রূপে নিরূপণ করত। তোমরা জেনে রেখ যে, তাদের অকল্যাণ আল্লাহরই নিয়ন্ত্রণাধীন, কিন্তু তাদের অধিকাংশ সে সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেনা।
132 – ‘আরাফ
وَقَالُواۡ مَهْمَا تَأْتِنَا بِهِۦ مِنْ ءَايَةٍ لِّتَسْحَرَنَا بِهَا فَمَا نَحْنُ لَكَ بِمُؤْمِنِينَ
তারা বললঃ আমাদেরকে যাদু করার জন্য যে কোন নিদর্শনই পেশ করনা কেন আমরা তাতে ঈমান আনবনা।
133 – ‘আরাফ
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلطُّوفَانَ وَٱلْجَرَادَ وَٱلْقُمَّلَ وَٱلضَّفَادِعَ وَٱلدَّمَ ءَايَٰتٍ مُّفَصَّلَٰتٍ فَٱسْتَكْبَرُواۡ وَكَانُواۡ قَوْمًا مُّجْرِمِينَ
অতঃপর আমি তাদের উপর প্লাবণ, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত ধারার শাস্তি পাঠিয়ে ক্লিষ্ট করি, ওগুলি ছিল আমার সুস্পষ্ট নিদর্শন, কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত দাম্ভিকতা ও অহংকারেই মেতে রইল, তারা ছিল একটি অপরাধী জাতি।
134 – ‘আরাফ
وَلَمَّا وَقَعَ عَلَيْهِمُ ٱلرِّجْزُ قَالُواۡ يَٰمُوسَى ٱدْعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِندَكَۖ لَئِن كَشَفْتَ عَنَّا ٱلرِّجْزَ لَنُؤْمِنَنَّ لَكَ وَلَنُرْسِلَنَّ مَعَكَ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
তাদের উপর কোন বালা মুসীবত ও বিপদ-আপদ আপতিত হলে তারা বলতঃ হে মূসা! আমাদের পক্ষ থেকে তোমার রবের নিকট দু‘আ কর। তার সাথে তোমার যে অঙ্গীকার রয়েছে তদনুযায়ী যদি আমাদের উপর থেকে প্লেগ দূর করে দিতে পার তাহলে আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনবো এবং তোমার সাথে বানী ইসরাঈলদেরকে পাঠিয়ে দিব।
135 – ‘আরাফ
فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ ٱلرِّجْزَ إِلَىٰٓ أَجَلٍ هُم بَٰلِغُوهُ إِذَا هُمْ يَنكُثُونَ
কিন্তু যখনই আমি তাদের উপর হতে প্লেগের শাস্তির সেই সময়টি অপসারিত করতাম যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল, তখনই আবার তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করত।
136 – ‘আরাফ
فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَٰهُمْ فِى ٱلْيَمِّ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَكَانُواۡ عَنْهَا غَٰفِلِينَ
সুতরাং আমি তাদের হতে প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে অতল সমুদ্রে ডুবিয়ে মারলাম, কেননা তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, আর এই ব্যাপারে তারা ছিল সম্পূর্ণ গাফিল বা উদাসীন।
137 – ‘আরাফ
وَأَوْرَثْنَا ٱلْقَوْمَ ٱلَّذِينَ كَانُواۡ يُسْتَضْعَفُونَ مَشَٰرِقَ ٱلْأَرْضِ وَمَغَٰرِبَهَا ٱلَّتِى بَٰرَكْنَا فِيهَاۖ وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ ٱلْحُسْنَىٰ عَلَىٰ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ بِمَا صَبَرُواۡۖ وَدَمَّرْنَا مَا كَانَ يَصْنَعُ فِرْعَوْنُ وَقَوْمُهُۥ وَمَا كَانُواۡ يَعْرِشُونَ
যে জাতিকে দুর্বল ও দীনহীন ভাবা হত আমি তাদেরকে আমার কল্যাণ প্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানাই, আর বানী ইসরাঈল জাতি সম্পর্কে তোমার রবের শুভ ও কল্যাণময় বাণী (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ হল যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদসমূহকে আমি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছি।
138 – ‘আরাফ
وَجَٰوَزْنَا بِبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْبَحْرَ فَأَتَوْاۡ عَلَىٰ قَوْمٍ يَعْكُفُونَ عَلَىٰٓ أَصْنَامٍ لَّهُمْۚ قَالُواۡ يَٰمُوسَى ٱجْعَل لَّنَآ إِلَٰهًا كَمَا لَهُمْ ءَالِهَةٌۚ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ
আমি বানী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে দিলাম, অতঃপর তারা মূর্তি পূজারত এক জাতির সংস্পর্শে এল। তারা বললঃ হে মূসা! তাদের যেরূপ মা‘বূদ রয়েছে, আমাদের জন্যও ঐরূপ মা‘বূদ বানিয়ে দাও। সে বললঃ তোমরা একটি মূর্খ সম্প্রদায়।
139 – ‘আরাফ
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ وَبَٰطِلٌ مَّا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
এ সব লোক যে কাজে লিপ্ত রয়েছে তাতো ধ্বংস করা হবে, আর তারা যা করছে তা অমূলক ও বাতিল বিষয়।
140 – ‘আরাফ
قَالَ أَغَيْرَ ٱللَّهِ أَبْغِيكُمْ إِلَٰهًا وَهُوَ فَضَّلَكُمْ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ
সে বললঃ আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে তোমাদের জন্য অন্য মা‘বূদের সন্ধান করব? অথচ তিনিই হলেন একমাত্র আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে বিশ্ব জগতে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন!
141 – ‘আরাফ
وَإِذْ أَنجَيْنَٰكُم مِّنْ ءَالِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِۖ يُقَتِّلُونَ أَبْنَآءَكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَآءَكُمْۚ وَفِى ذَٰلِكُم بَلَآءٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ
স্মরণ কর সেই সময়টির কথা, যখন আমি তোমাদেরকে ফির‘আউনের অনুসারীদের দাসত্ব হতে মুক্তি দিয়েছি, যারা তোমাদেরকে অতিশয় মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক ও ন্যাক্কারজনক শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্রদেরকে হত্যা করত এবং নারীদেরকে জীবিত রাখত। এটা ছিল তোমাদের জন্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে বিরাট পরীক্ষা।
142 – ‘আরাফ
وَوَٰعَدْنَا مُوسَىٰ ثَلَٰثِينَ لَيْلَةً وَأَتْمَمْنَٰهَا بِعَشْرٍ فَتَمَّ مِيقَٰتُ رَبِّهِۦٓ أَرْبَعِينَ لَيْلَةًۚ وَقَالَ مُوسَىٰ لِأَخِيهِ هَٰرُونَ ٱخْلُفْنِى فِى قَوْمِى وَأَصْلِحْ وَلَا تَتَّبِعْ سَبِيلَ ٱلْمُفْسِدِينَ
আমি মূসাকে ও‘য়াদা দিয়েছিলাম ত্রিশ রাতের জন্য এবং আরো দশ দ্বারা ওটা পূর্ণ করেছিলাম। এভাবে তার রবের নির্ধারিত সময়টি চল্লিশ রাত দ্বারা পূর্ণতা লাভ করে। মূসা তার ভাই হারুনকে বলেছিলঃ তুমি আমার কাওমের মধ্যে আমার স্থলাভিষিক্তরূপে কাজ করবে এবং তাদেরকে সংশোধন করার কাজ করতে থাকবে, এবং বিপর্যয় ও ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের অনুসরণ করবেনা।
143 – ‘আরাফ
وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ قَالَ رَبِّ أَرِنِىٓ أَنظُرْ إِلَيْكَۚ قَالَ لَن تَرَىٰنِى وَلَٰكِنِ ٱنظُرْ إِلَى ٱلْجَبَلِ فَإِنِ ٱسْتَقَرَّ مَكَانَهُۥ فَسَوْفَ تَرَىٰنِىۚ فَلَمَّا تَجَلَّىٰ رَبُّهُۥ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُۥ دَكًّا وَخَرَّ مُوسَىٰ صَعِقًاۚ فَلَمَّآ أَفَاقَ قَالَ سُبْحَٰنَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْمُؤْمِنِينَ
মূসা যখন নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হল, তখন তার রাব্ব তার সাথে কথা বললেন। সে তখন নিবেদন করলঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে দর্শন দিন। আল্লাহ বললেনঃ তুমি আমাকে আদৌ দেখতে পারবেনা, তবে তুমি ঐ পাহাড়ের দিকে তাকাও। যদি ঐ পাহাড় স্বস্থানে স্থির থাকে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পারবে। অতঃপর তার রাব্ব যখন পাহাড়ে জ্যোতিস্মান হলেন তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিল, আর মূসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গেল। যখন চেতনা ফিরে এলো তখন সে বললঃ আপনি মহিমাময়, আপনার পবিত্র সত্তার কাছে আমি তাওবাহ করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম ঈমান আনলাম।
144 – ‘আরাফ
قَالَ يَٰمُوسَىٰٓ إِنِّى ٱصْطَفَيْتُكَ عَلَى ٱلنَّاسِ بِرِسَٰلَٰتِى وَبِكَلَٰمِى فَخُذْ مَآ ءَاتَيْتُكَ وَكُن مِّنَ ٱلشَّٰكِرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ হে মূসা! আমি তোমাকেই আমার রিসালাত ও আমার সাথে বাক্যালাপের জন্য লোকদের মধ্য হতে মনোনীত করেছি। অতএব আমি তোমাকে যা কিছু দিই তা তুমি গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
145 – ‘আরাফ
وَكَتَبْنَا لَهُۥ فِى ٱلْأَلْوَاحِ مِن كُلِّ شَىْءٍ مَّوْعِظَةً وَتَفْصِيلًا لِّكُلِّ شَىْءٍ فَخُذْهَا بِقُوَّةٍ وَأْمُرْ قَوْمَكَ يَأْخُذُواۡ بِأَحْسَنِهَاۚ سَأُوۡرِيكُمْ دَارَ ٱلْفَٰسِقِينَ
অতঃপর আমি তার জন্য ফলকের উপর সর্ব বিষয়ের উপদেশ এবং সর্ব বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা লিখে দিয়েছি, (অতঃপর তাকে বললাম) এই হিদায়াতকে দৃঢ় হস্তে শক্তভাবে গ্রহণ কর এবং তোমার সম্প্রদায়কে এর সুন্দর সুন্দর বিধানগুলি মেনে চলতে আদেশ কর। আমি ফাসেক বা সত্যত্যাগীদের আবাসস্থান শীঘ্রই তোমাদেরকে প্রদর্শন করাব।
146 – ‘আরাফ
سَأَصْرِفُ عَنْ ءَايَٰتِىَ ٱلَّذِينَ يَتَكَبَّرُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَإِن يَرَوْاۡ كُلَّ ءَايَةٍ لَّا يُؤْمِنُواۡ بِهَا وَإِن يَرَوْاۡ سَبِيلَ ٱلرُّشْدِ لَا يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًا وَإِن يَرَوْاۡ سَبِيلَ ٱلْغَىِّ يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَكَانُواۡ عَنْهَا غَٰفِلِينَ
পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার করে বেড়ায় আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনসমূহ হতে ফিরিয়ে রাখব, প্রত্যেকটি নিদর্শন দেখার পরেও তারা তাতে ঈমান আনবে না, তারা যদি সৎ পথ দেখতে পায় তবুও সেই পথ সৎ পথ বলে গ্রহণ করবে না। কিন্তু তারা ভ্রান্ত ও গুমরাহীর পথ দেখলে তাকেই তারা গ্রহণ করবে। এর কারণ হল-তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তারা তা থেকে সম্পূর্ণরূপে অমনোযোগী ছিল।
147 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَلِقَآءِ ٱلْءَاخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَٰلُهُمْۚ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও আখিরাতের সাক্ষাত মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের সমূদয় ‘আমল বিনষ্ট হয়ে যায়, তারা যা করে তদনুযায়ী তাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে।
148 – ‘আরাফ
وَٱتَّخَذَ قَوْمُ مُوسَىٰ مِنۢ بَعْدِهِۦ مِنْ حُلِيِّهِمْ عِجْلًا جَسَدًا لَّهُۥ خُوَارٌۚ أَلَمْ يَرَوْاۡ أَنَّهُۥ لَا يُكَلِّمُهُمْ وَلَا يَهْدِيهِمْ سَبِيلًاۘ ٱتَّخَذُوهُ وَكَانُواۡ ظَٰلِمِينَ
আর মূসার চলে যাবার পর অলংকার দ্বারা একটি বাছুরের (মত) পুতুল তৈরী করল, ওটা হতে গরুর মত শব্দ বের হত। তারা কি দেখেনি যে, ওটা তাদের সাথে কথা বলেনা এবং তাদেরকে কোন পথও দেখিয়ে দেয়না? তবুও তারা ওটাকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করল। বস্তুতঃ তারা ছিল বড় অত্যাচারী।
149 – ‘আরাফ
وَلَمَّا سُقِطَ فِىٓ أَيْدِيهِمْ وَرَأَوْاۡ أَنَّهُمْ قَدْ ضَلُّواۡ قَالُواۡ لَئِن لَّمْ يَرْحَمْنَا رَبُّنَا وَيَغْفِرْ لَنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
আর যখন তারা লজ্জিত হল এবং দেখল যে, (প্রকৃত পক্ষে) তারা বিভ্রান্ত হয়েছে, তখন তারা বললঃ আমাদের প্রভু যদি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।
150 – ‘আরাফ
وَلَمَّا رَجَعَ مُوسَىٰٓ إِلَىٰ قَوْمِهِۦ غَضْبَٰنَ أَسِفًا قَالَ بِئْسَمَا خَلَفْتُمُونِى مِنۢ بَعْدِىٓۖ أَعَجِلْتُمْ أَمْرَ رَبِّكُمْۖ وَأَلْقَى ٱلْأَلْوَاحَ وَأَخَذَ بِرَأْسِ أَخِيهِ يَجُرُّهُۥٓ إِلَيْهِۚ قَالَ ٱبْنَ أُمَّ إِنَّ ٱلْقَوْمَ ٱسْتَضْعَفُونِى وَكَادُواۡ يَقْتُلُونَنِى فَلَا تُشْمِتْ بِىَ ٱلْأَعْدَآءَ وَلَا تَجْعَلْنِى مَعَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
মূসা রাগাম্বিত বিক্ষুদ্ধ অবস্থায় নিজ জাতির নিকট ফিরে এসে বললঃ আমার চলে যাওয়ার পর তোমরা কত নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্ব করেছ, তোমরা তোমাদের প্রভুর নির্দেশের পূর্বেই কেন তাড়াহুড়া করতে গেলে? অতঃপর সে ফলকগুলি ফেলে দিল এবং স্বীয় ভাইয়ের মস্তক (চুল) ধরে নিজের দিকে টানতে লাগল। সে (হারূন) বললঃ হে আমার মাতার পুত্র! এই লোকগুলি আমাকে পরাভূত করে ফেলেছিল এবং আমাকে মেরে ফেলতে উদ্যত হয়েছিল। অতএব তুমি আমাকে শক্র সমক্ষে হাস্যস্পদ করনা, আর এই যালিম লোকদের মধ্যে আমাকে গণ্য করনা।
151 – ‘আরাফ
قَالَ رَبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِأَخِى وَأَدْخِلْنَا فِى رَحْمَتِكَۖ وَأَنتَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ
তখন মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করুন! আর আমাদেরকে আপনার রাহমাতের মধ্যে দাখিল করুন! আপনি সব চেয়ে দয়াবান।
152 – ‘আরাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواۡ ٱلْعِجْلَ سَيَنَالُهُمْ غَضَبٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَذِلَّةٌ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُفْتَرِينَ
যারা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছে, অবশ্যই তারা এই পার্থিব জীবনে তাদের রবের গযব ও লাঞ্ছনায় নিপতিত হবে, মিথ্যা রচনাকারীদেরকে আমি এভাবেই প্রতিফল দিয়ে থাকি।
153 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ عَمِلُواۡ ٱلسَّيِّـَٔاتِ ثُمَّ تَابُواۡ مِنۢ بَعْدِهَا وَءَامَنُوٓاۡ إِنَّ رَبَّكَ مِنۢ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
যারা খারাপ কাজ করে, এরপর তাওবাহ করলে ও ঈমান আনলে, তোমার আল্লাহতো ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
154 – ‘আরাফ
وَلَمَّا سَكَتَ عَن مُّوسَى ٱلْغَضَبُ أَخَذَ ٱلْأَلْوَاحَۖ وَفِى نُسْخَتِهَا هُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلَّذِينَ هُمْ لِرَبِّهِمْ يَرْهَبُونَ
মূসার ক্রোধ যখন প্রশমিত হল তখন সে প্রস্তর ফলকগুলি তুলে নিল, তাতে লেখা ছিলঃ যারা তাদের রাব্বকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে হিদায়াত ও রাহমাত।
155 – ‘আরাফ
وَٱخْتَارَ مُوسَىٰ قَوْمَهُۥ سَبْعِينَ رَجُلًا لِّمِيقَٰتِنَاۖ فَلَمَّآ أَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ قَالَ رَبِّ لَوْ شِئْتَ أَهْلَكْتَهُم مِّن قَبْلُ وَإِيَّٰىَۖ أَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ ٱلسُّفَهَآءُ مِنَّآۖ إِنْ هِىَ إِلَّا فِتْنَتُكَ تُضِلُّ بِهَا مَن تَشَآءُ وَتَهْدِى مَن تَشَآءُۖ أَنتَ وَلِيُّنَا فَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَاۖ وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْغَٰفِرِينَ
মূসা তার সম্প্রদায় হতে সত্তর জন নেতৃস্থানীয় লোক আমার নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার জন্য নির্বাচন করল, যখন ঐ লোকগুলি একটি কঠিন ভূ-কম্পনে আক্রান্ত হল তখন মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি ইচ্ছা করলে এর পূর্বেও ওদেরকে এবং আমাকে ধ্বংস করতে পারতেন, আমাদের মধ্যকার কতক নির্বোধ লোকের অন্যায়ের কারণে কি আপনি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? এটাতো আপনার পরীক্ষা, আপনি যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন, আপনিইতো আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন, এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন, ক্ষমাকারীদের মধ্যে আপনিইতো উত্তম ক্ষমাকারী।
156 – ‘আরাফ
وَٱكْتُبْ لَنَا فِى هَٰذِهِ ٱلدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِى ٱلْءَاخِرَةِ إِنَّا هُدْنَآ إِلَيْكَۚ قَالَ عَذَابِىٓ أُصِيبُ بِهِۦ مَنْ أَشَآءُۖ وَرَحْمَتِى وَسِعَتْ كُلَّ شَىْءٍۚ فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلَّذِينَ هُم بِـَٔايَٰتِنَا يُؤْمِنُونَ
অতএব আমাদের জন্য এই দুনিয়ায় ও পরকালে কল্যাণ নির্ধারিত করে দিন, আমরা আপনার নিকটই প্রত্যাবর্তন করেছি। তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ যাকে ইচ্ছা আমি আমার শাস্তি দিয়ে থাকি, আর আমার করুণা ও দয়া প্রতিটি জিনিসকেই পরিব্যপ্ত করে রয়েছে, সুতরাং আমি তাদের জন্যই কল্যাণ অবধারিত করব যারা পাপাচার হতে বিরত থাকে, যাকাত দেয় এবং আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি ঈমান আনে।
157 – ‘আরাফ
ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِىَّ ٱلْأُمِّىَّ ٱلَّذِى يَجِدُونَهُۥ مَكْتُوبًا عِندَهُمْ فِى ٱلتَّوْرَىٰةِ وَٱلْإِنجِيلِ يَأْمُرُهُم بِٱلْمَعْرُوفِ وَيَنْهَىٰهُمْ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ ٱلْخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَٱلْأَغْلَٰلَ ٱلَّتِى كَانَتْ عَلَيْهِمْۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواۡ ٱلنُّورَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓۙ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
যারা সেই নিরক্ষর রাসূলের অনুসরণ করে চলে যার কথা তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জীল কিতাবে লিখিত পায়, যে মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ করতে নিষেধ করে, আর সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করে এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তুকে তাদের প্রতি অবৈধ করে, আর তাদের উপর চাপানো বোঝা ও বন্ধন হতে তাদেরকে মুক্ত করে। সুতরাং তার প্রতি যারা ঈমান রাখে, তাকে সম্মান করে এবং সাহায্য করে ও সহানুভূতি প্রকাশ করে, আর সেই আলোকের অনুসরণ করে চলে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, তারাই (ইহকালে ও পরকালে) সাফল্য লাভ করবে।
158 – ‘আরাফ
قُلْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا ٱلَّذِى لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْىِۦ وَيُمِيتُۖ فَـَٔامِنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِىِّ ٱلْأُمِّىِّ ٱلَّذِى يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
বলঃ হে মানবমন্ডলী! আমি তোমাদের সকলের জন্য সেই আল্লাহর রাসূল রূপে প্রেরিত হয়েছি, যিনি আকাশ ও ভূ-মন্ডলের সার্বভৌম একচ্ছত্র মালিক, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর সেই বার্তাবাহক নিরক্ষর নাবীর প্রতি ঈমান আন। যে আল্লাহ ও তাঁর কালামে বিশ্বাস স্থাপন করে, তোমরা তারই অনুসরণ কর। আশা করা যায়, তোমরা সরল সঠিক পথের সন্ধান পাবে।
159 – ‘আরাফ
وَمِن قَوْمِ مُوسَىٰٓ أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِٱلْحَقِّ وَبِهِۦ يَعْدِلُونَ
মূসার সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন একদল লোক রয়েছে যারা সঠিক ও নির্ভুল পথ প্রদর্শন করে এবং ন্যায় বিচার করে।
160 – ‘আরাফ
وَقَطَّعْنَٰهُمُ ٱثْنَتَىْ عَشْرَةَ أَسْبَاطًا أُمَمًاۚ وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ إِذِ ٱسْتَسْقَىٰهُ قَوْمُهُۥٓ أَنِ ٱضْرِب بِّعَصَاكَ ٱلْحَجَرَۖ فَٱنۢبَجَسَتْ مِنْهُ ٱثْنَتَا عَشْرَةَ عَيْنًاۖ قَدْ عَلِمَ كُلُّ أُنَاسٍ مَّشْرَبَهُمْۚ وَظَلَّلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلْغَمَٰمَ وَأَنزَلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلْمَنَّ وَٱلسَّلْوَىٰۖ كُلُواۡ مِن طَيِّبَٰتِ مَا رَزَقْنَٰكُمْۚ وَمَا ظَلَمُونَا وَلَٰكِن كَانُوٓاۡ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
আমি বানী ইসরাঈলকে দ্বাদশ গোত্রে বিভক্ত করেছি। মূসার সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন তার কাছে পানির দাবী জানাল, তখন আমি মূসার কাছে প্রত্যাদেশ পাঠালাম – তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর, ফলে ওটা হতে দ্বাদশ প্রস্রবণ উৎসারিত হল, প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ পানস্থান জেনে নিল। আর আমি তাদের উপর মেঘ দ্বারা ছায়া বিস্তার করলাম এবং তাদের জন্য আকাশ হতে ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ খাদ্যরূপী নি‘আমাত অবতীর্ণ করলাম। সুতরাং (আমি বললাম) তোমাদেরকে যা কিছু পবিত্র জীবিকা দান করা হয়েছে তা আহার কর। (কিন্তু ওরা আমার শর্ত উপেক্ষা করে যুলম করল) তারা আমার উপর কোন যুলম করেনি, বরং তারা নিজেদের উপরই যুলম করেছে।
161 – ‘আরাফ
وَإِذْ قِيلَ لَهُمُ ٱسْكُنُواۡ هَٰذِهِ ٱلْقَرْيَةَ وَكُلُواۡ مِنْهَا حَيْثُ شِئْتُمْ وَقُولُواۡ حِطَّةٌ وَٱدْخُلُواۡ ٱلْبَابَ سُجَّدًا نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطِيٓـَٰٔتِكُمْۚ سَنَزِيدُ ٱلْمُحْسِنِينَ
যখন আমি তাদেরকে বলেছিলামঃ এই (বাইতুল মুকাদ্দাস ও তৎসংশ্লিষ্ট) জনপদে বসবাস কর এবং যা ইচ্ছা আহার কর, আর তোমরা বলঃ (হে রাব্ব!) ক্ষমা চাই, আর দ্বারদেশ দিয়ে নত শিরে প্রবেশ কর; আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং সৎ কর্মশীল লোকদের জন্য আমার দান বৃদ্ধি করব।
162 – ‘আরাফ
فَبَدَّلَ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواۡ مِنْهُمْ قَوْلًا غَيْرَ ٱلَّذِى قِيلَ لَهُمْ فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِجْزًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ بِمَا كَانُواۡ يَظْلِمُونَ
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা যালিম ও সীমা লংঘনকারী ছিল, তারা সেই কথা পরিবর্তন করে ফেললো যা তাদেরকে বলতে বলা হয়েছিল, সুতরাং তাদের সীমা লংঘনের কারণে আমি আসমান হতে তাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করলাম।
163 – ‘আরাফ
وَسْـَٔلْهُمْ عَنِ ٱلْقَرْيَةِ ٱلَّتِى كَانَتْ حَاضِرَةَ ٱلْبَحْرِ إِذْ يَعْدُونَ فِى ٱلسَّبْتِ إِذْ تَأْتِيهِمْ حِيتَانُهُمْ يَوْمَ سَبْتِهِمْ شُرَّعًا وَيَوْمَ لَا يَسْبِتُونَۙ لَا تَأْتِيهِمْۚ كَذَٰلِكَ نَبْلُوهُم بِمَا كَانُواۡ يَفْسُقُونَ
আর তাদেরকে সেই জনপদের অবস্থাও জিজ্ঞেস কর যা সমুদ্রের তীরে অবস্থিত ছিল। যখন তারা শনিবারের আদেশ লংঘন করেছিল। শনিবার উদযাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত, কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করতনা, সেদিন ওগুলি তাদের কাছে আসতনা, এভাবে আমি তাদের নাফরমানীর কারণে তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম।
164 – ‘আরাফ
وَإِذْ قَالَتْ أُمَّةٌ مِّنْهُمْ لِمَ تَعِظُونَ قَوْمًاۙ ٱللَّهُ مُهْلِكُهُمْ أَوْ مُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِيدًاۖ قَالُواۡ مَعْذِرَةً إِلَىٰ رَبِّكُمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
যখন তাদের একদল লোক অপর দলের নিকট বলেছিলঃ ঐ জাতিকে তোমরা কেন উপদেশ দিচ্ছ যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করবেন অথবা কঠিন শাস্তি দিবেন? তারা উত্তরে বললঃ তোমাদের রবের নিকট দোষমুক্তির জন্য এবং এই আশা করছি যে, হয়তো তারা তাঁকে ভয় করবে।
165 – ‘আরাফ
فَلَمَّا نَسُواۡ مَا ذُكِّرُواۡ بِهِۦٓ أَنجَيْنَا ٱلَّذِينَ يَنْهَوْنَ عَنِ ٱلسُّوٓءِ وَأَخَذْنَا ٱلَّذِينَ ظَلَمُواۡ بِعَذَابٍۭ بَـِٔيسٍۭ بِمَا كَانُواۡ يَفْسُقُونَ
তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয় তা যখন তারা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি, আর যালিমদেরকে তাদের অসৎ কর্মের কারণে কঠোর শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম।
166 – ‘আরাফ
فَلَمَّا عَتَوْاۡ عَن مَّا نُهُواۡ عَنْهُ قُلْنَا لَهُمْ كُونُواۡ قِرَدَةً خَٰسِـِٔينَ
অতঃপর যখন তারা বেপরোয়াভাবে নিষিদ্ধ কাজগুলি করতে থাকল তখন আমি বললামঃ তোমরা ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।
167 – ‘আরাফ
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَٰمَةِ مَن يَسُومُهُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِۗ إِنَّ رَبَّكَ لَسَرِيعُ ٱلْعِقَابِۖ وَإِنَّهُۥ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
তোমার রাব্ব ঘোষণা করলেন যে, তিনি তাদের (ইয়াহুদীদের) উপর কিয়ামাত পর্যন্ত এমন সব লোককে শক্তিশালী করে প্রেরণ করতে থাকবেন যারা তাদেরকে কঠিনতর শাস্তি দিতে থাকবে। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব শাস্তি দানে ক্ষিপ্র হস্ত, আর নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহশীল।
168 – ‘আরাফ
وَقَطَّعْنَٰهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ أُمَمًاۖ مِّنْهُمُ ٱلصَّٰلِحُونَ وَمِنْهُمْ دُونَ ذَٰلِكَۖ وَبَلَوْنَٰهُم بِٱلْحَسَنَٰتِ وَٱلسَّيِّـَٔاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
আমি তাদেরকে বিভিন্ন দলে দুনিয়ায় বিস্তৃত করেছি, তাদের কতক লোক সদাচারী, আর কিছু লোক ভিন্নতর। আর আমি ভাল ও মন্দের মধ্যে নিপতিত করে তাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি যাতে তারা আমার পথে ফিরে আসে।
169 – ‘আরাফ
فَخَلَفَ مِنۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَرِثُواۡ ٱلْكِتَٰبَ يَأْخُذُونَ عَرَضَ هَٰذَا ٱلْأَدْنَىٰ وَيَقُولُونَ سَيُغْفَرُ لَنَا وَإِن يَأْتِهِمْ عَرَضٌ مِّثْلُهُۥ يَأْخُذُوهُۚ أَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِم مِّيثَٰقُ ٱلْكِتَٰبِ أَن لَّا يَقُولُواۡ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْحَقَّ وَدَرَسُواۡ مَا فِيهِۗ وَٱلدَّارُ ٱلْءَاخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ يَتَّقُونَۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
অতঃপর তাদের অযোগ্য উত্তরসুরীরা একের পর এক তাদের স্থলাভিষিক্ত হয় এবং তারা কিতাবেরও উত্তরাধিকারী হয়। কিন্তু তারা এই নিকৃষ্ট দুনিয়ার স্বার্থাবলী করায়ত্ত্ব করে আর বলেঃ আমাদেরকে ক্ষমা করা হবে। বস্তুতঃ ওর অনুরূপ সামগ্রী আবার তাদের নিকট এলে ওটাও তারা গ্রহণ করে। তাদের নিকট হতে কি কিতাবের প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর নামে সত্য ছাড়া কিছুই বলবেনা? আর কিতাবে যা রয়েছে তাতো তারা অধ্যয়নও করে। মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু লোকদের জন্য পরকালের সামগ্রী, তোমরা কি এতটুকু কথাও অনুধাবণ করতে পারনা?
170 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ يُمَسِّكُونَ بِٱلْكِتَٰبِ وَأَقَامُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ إِنَّا لَا نُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُصْلِحِينَ
যারা আল্লাহর কিতাবকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং সালাত কায়েম করে; আমিতো সৎ কর্মশীলদের কর্মফল নষ্ট করিনা।
171 – ‘আরাফ
وَإِذْ نَتَقْنَا ٱلْجَبَلَ فَوْقَهُمْ كَأَنَّهُۥ ظُلَّةٌ وَظَنُّوٓاۡ أَنَّهُۥ وَاقِعٌۢ بِهِمْ خُذُواۡ مَآ ءَاتَيْنَٰكُم بِقُوَّةٍ وَٱذْكُرُواۡ مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
যখন আমি বানী ইসরাঈলের উপর পাহাড়কে স্থাপন করি, ওটা ছিল কোন একটি ছায়ার ন্যায়, তারা তখন মনে করেছিল যে, ওটা তাদের উপর পড়ে যাবে। তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা দৃঢ়ভাবে শক্ত হাতে ধারণ কর এবং ওতে যা রয়েছে তা স্মরণ রেখ। আশা করা যায় যে, তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হবে।
172 – ‘আরাফ
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِىٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْۖ قَالُواۡ بَلَىٰۛ شَهِدْنَآۛ أَن تَقُولُواۡ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَٰذَا غَٰفِلِينَ
যখন তোমার রাব্ব বানী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদেরকে বের করলেন এবং তাদেরকেই তাদের উপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কি তোমাদের রাব্ব (প্রভু) নই? তারা সমস্বরে উত্তর দিলঃ ‘হ্যাঁ! আমরা সাক্ষী থাকলাম।’ (এটা এ জন্য যে) যাতে তোমরা কিয়ামাত দিবসে বলতে না পার, ‘‘আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ অনবহিত ছিলাম।’’
173 – ‘আরাফ
أَوْ تَقُولُوٓاۡ إِنَّمَآ أَشْرَكَ ءَابَآؤُنَا مِن قَبْلُ وَكُنَّا ذُرِّيَّةً مِّنۢ بَعْدِهِمْۖ أَفَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ ٱلْمُبْطِلُونَ
অথবা তোমরা যেন কিয়ামাত দিবসে এ কথা বলতে না পার – আমাদের পূর্ব-পুরুষরাইতো আমাদের পূর্বে শির্ক করেছিল, আমরা ছিলাম (শুধুমাত্র) তাদের পরবর্তী বংশধর। সুতরাং আপনি কি আমাদেরকে সেই ভ্রান্ত ও বাতিলদের কৃতকর্মের দরুণ ধ্বংস করবেন?
174 – ‘আরাফ
وَكَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ وَلَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
এভাবেই আমি নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বিবৃত করি যাতে তারা ফিরে আসে।
175 – ‘আরাফ
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱلَّذِىٓ ءَاتَيْنَٰهُ ءَايَٰتِنَا فَٱنسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ ٱلشَّيْطَٰنُ فَكَانَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ
তুমি এদেরকে সেই ব্যক্তির বৃত্তান্ত শুনিয়ে দাও, যাকে আমি নিদর্শন দান করেছিলাম, কিন্তু সে উহা বর্জন করে। ফলে শাইতান তার পিছনে লেগে যায়, আর সে পথভ্রষ্টদের মধ্যে শামিল হয়ে যায়।
176 – ‘আরাফ
وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَٰهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُۥٓ أَخْلَدَ إِلَى ٱلْأَرْضِ وَٱتَّبَعَ هَوَىٰهُۚ فَمَثَلُهُۥ كَمَثَلِ ٱلْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثۚ ذَّٰلِكَ مَثَلُ ٱلْقَوْمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَاۚ فَٱقْصُصِ ٱلْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
আর আমি ইচ্ছা করলে তাকে এই আয়াতসমূহের সাহায্যে উন্নত করতাম, কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি অধিক ঝুঁকে পড়ে এবং স্বীয় কামনা বাসনার (প্রবৃত্তির) অনুসরণ করতে থাকে। তার উদাহরণ একটি কুকুরের ন্যায়, ওকে যদি তুমি কষ্ট দাও তাহলে জিহবা বের করে হাঁপায়, আবার কষ্ট না দিলেও জিহবা বের করে হাঁপাতে থাকে। যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, এই উদাহরণ হল সেই সম্প্রদায়ের জন্য। তুমি কাহিনী বর্ণনা করে শোনাতে থাক, হয়তো তারা এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে।
177 – ‘আরাফ
سَآءَ مَثَلًا ٱلْقَوْمُ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَأَنفُسَهُمْ كَانُواۡ يَظْلِمُونَ
কতই না মন্দ উদাহরণ সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করতে থাকে।
178 – ‘আরাফ
مَن يَهْدِ ٱللَّهُ فَهُوَ ٱلْمُهْتَدِىۖ وَمَن يُضْلِلْ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
আল্লাহ যাকে পথ দেখান সে’ই পথ প্রাপ্ত হয়, আর যাকে তিনি পথ প্রদর্শন হতে বঞ্চিত করেন সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
179 – ‘আরাফ
وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِۖ لَهُمْ قُلُوبٌ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ ءَاذَانٌ لَّا يَسْمَعُونَ بِهَآۚ أُوۡلَٰٓئِكَ كَٱلْأَنْعَٰمِ بَلْ هُمْ أَضَلُّۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْغَٰفِلُونَ
আমি বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা উপলব্ধি করেনা; তাদের চক্ষু রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা দেখেনা। তাদের কর্ণ রয়েছে, কিন্তু তদ্বারা তারা শোনেনা। তারাই হল পশুর ন্যায়, বরং তা অপেক্ষাও অধিক বিভ্রান্ত। তারাই হল গাফিল বা উদাসীন।
180 – ‘আরাফ
وَلِلَّهِ ٱلْأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰ فَٱدْعُوهُ بِهَاۖ وَذَرُواۡ ٱلَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِىٓ أَسْمَٰٓئِهِۦۚ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
আর আল্লাহর জন্য সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে, সুতরাং তোমরা তাঁকে সেই সব নামেই ডাকবে, আর তাদেরকে বর্জন কর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে, সত্ত্বরই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল দেয়া হবে।
181 – ‘আরাফ
وَمِمَّنْ خَلَقْنَآ أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِٱلْحَقِّ وَبِهِۦ يَعْدِلُونَ
আর আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের মধ্যে এমন একটি দলও রয়েছে যারা সত্য পথের দা‘ওয়াত দেয় এবং ন্যায় বিচার করে।
182 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ
যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, আমি তাদের অজ্ঞাতে তাদেরকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাব।
183 – ‘আরাফ
وَأُمْلِى لَهُمْۚ إِنَّ كَيْدِى مَتِينٌ
আমি তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আমার কৌশল অতি শক্ত।
184 – ‘আরাফ
أَوَلَمْ يَتَفَكَّرُواۡۗ مَا بِصَاحِبِهِم مِّن جِنَّةٍۚ إِنْ هُوَ إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
তারা কি এটা চিন্তা করেনা যে, তাদের সঙ্গী পাগল নয়? সে নিছক একজন সুস্পষ্ট ভয় প্রদর্শনকারী!
185 – ‘আরাফ
أَوَلَمْ يَنظُرُواۡ فِى مَلَكُوتِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا خَلَقَ ٱللَّهُ مِن شَىْءٍ وَأَنْ عَسَىٰٓ أَن يَكُونَ قَدِ ٱقْتَرَبَ أَجَلُهُمْۖ فَبِأَىِّ حَدِيثٍۭ بَعْدَهُۥ يُؤْمِنُونَ
তারা কি আল্লাহর সৃষ্টি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কোন গভীর চিন্তা করেনা? এবং তাদের জীবনে নির্দিষ্ট মেয়াদটি পূর্ণ হওয়ার সময়টি হয়তো বা নিকটে এসে পড়েছে, তারা কি এটাও চিন্তা করেনা? এরপর তারা আর কোন কথায় ঈমান আনবে?
186 – ‘আরাফ
مَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَلَا هَادِىَ لَهُۥۚ وَيَذَرُهُمْ فِى طُغْيَٰنِهِمْ يَعْمَهُونَ
যাদেরকে আল্লাহ বিপথগামী করেন, তাদের কোন পথ প্রদর্শক নেই, আর আল্লাহ তাদেরকে তাদেরই বিভ্রান্তির মধ্যে উদভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দেন।
187 – ‘আরাফ
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَىٰهَاۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ رَبِّىۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَآ إِلَّا هُوَۚ ثَقُلَتْ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ لَا تَأْتِيكُمْ إِلَّا بَغْتَةًۗ يَسْـَٔلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِىٌّ عَنْهَاۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, কিয়ামাত কখন সংঘটিত হবে? তুমি বলে দাওঃ এ বিষয়ে আমার রাব্বই একমাত্র জ্ঞানের অধিকারী, শুধু তিনিই ওটা ওর নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করবেন, তা হবে আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে এক ভয়ংকর ঘটনা। তোমাদের উপর ওটা আকস্মিকভাবেই আসবে। তুমি যেন এ বিষয় সবিশেষ অবগত, এটা ভেবে তারা তোমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলে দাওঃ এ সম্পর্কীয় জ্ঞান একমাত্র আমার রবেরই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই এ কথা বুঝেনা।
188 – ‘আরাফ
قُل لَّآ أَمْلِكُ لِنَفْسِى نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ ٱلْغَيْبَ لَٱسْتَكْثَرْتُ مِنَ ٱلْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِىَ ٱلسُّوٓءُۚ إِنْ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
তুমি বলঃ আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া আমার নিজের ভাল-মন্দ বিষয়ে আমার কোন অধিকার নেই। আমি যদি অদৃশ্য তত্ত্ব ও খবর জানতাম তাহলে আমি রবের কল্যাণ লাভ করতে পারতাম, আর কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করতে পারতনা, আমিতো শুধু মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য একজন ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদবাহী।
189 – ‘আরাফ
هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَاۖ فَلَمَّا تَغَشَّىٰهَا حَمَلَتْ حَمْلًا خَفِيفًا فَمَرَّتْ بِهِۦۖ فَلَمَّآ أَثْقَلَت دَّعَوَا ٱللَّهَ رَبَّهُمَا لَئِنْ ءَاتَيْتَنَا صَٰلِحًا لَّنَكُونَنَّ مِنَ ٱلشَّٰكِرِينَ
তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই ব্যক্তি হতেই তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যেন সে তার নিকট থেকে প্রশান্তি লাভ করতে পারে। অতঃপর যখন সে তার সাথে মিলনে প্রবৃত্ত হয় তখন সেই মহিলাটি এক গোপন ও লঘু গর্ভ ধারণ করে, আর ওটা নিয়ে চলাফেরা করতে থাকে। যখন তার গর্ভ গুরুভার হয় তখন তারা উভয়েই তাদের রবের কাছে প্রার্থনা করেঃ আপনি যদি আমাদেরকে সৎ সন্তান দান করেন তাহলে আমরা আপনার কৃতজ্ঞ বান্দা হব।
190 – ‘আরাফ
فَلَمَّآ ءَاتَىٰهُمَا صَٰلِحًا جَعَلَا لَهُۥ شُرَكَآءَ فِيمَآ ءَاتَىٰهُمَاۚ فَتَعَٰلَى ٱللَّهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ
অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে সৎ ও সুস্থ সন্তান দান করেন তখন তারা আল্লাহর দেয়া এই দানে অংশী স্থাপন করে, কিন্তু তারা যাকে অংশী করে আল্লাহ তার অনেক উর্ধ্বে।
191 – ‘আরাফ
أَيُشْرِكُونَ مَا لَا يَخْلُقُ شَيْـًٔا وَهُمْ يُخْلَقُونَ
তারা কি এমন বস্তুকে (আল্লাহর সাথে) অংশী করে যারা কোন বস্তুই সৃষ্টি করেনা, বরং তারা নিজেরাই (আল্লাহর দ্বারা) সৃষ্ট?
192 – ‘আরাফ
وَلَا يَسْتَطِيعُونَ لَهُمْ نَصْرًا وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ
তারা যেমন তাদের কোন সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেনা, তেমনি নিজেরাও কোন সাহায্য করতে পারেনা।
193 – ‘আরাফ
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَتَّبِعُوكُمْۚ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ أَدَعَوْتُمُوهُمْ أَمْ أَنتُمْ صَٰمِتُونَ
তোমরা যদি ওদেরকে সৎ পথে ডাক তাহলে তারা তোমাদের অনুসরণ করবেনা, তাদেরকে ডাকা অথবা চুপ করে থাকা উভয়ই তোমাদের পক্ষে সমান।
194 – ‘আরাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ عِبَادٌ أَمْثَالُكُمْۖ فَٱدْعُوهُمْ فَلْيَسْتَجِيبُواۡ لَكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকেই ডাক, তারাতো তোমাদেরই মত বান্দা। সুতরাং যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তাদেরকে উপাস্য হিসাবে ডাকতে থাক, দেখ তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় কি না!
195 – ‘আরাফ
أَلَهُمْ أَرْجُلٌ يَمْشُونَ بِهَآۖ أَمْ لَهُمْ أَيْدٍ يَبْطِشُونَ بِهَآۖ أَمْ لَهُمْ أَعْيُنٌ يُبْصِرُونَ بِهَآۖ أَمْ لَهُمْ ءَاذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَاۗ قُلِ ٱدْعُواۡ شُرَكَآءَكُمْ ثُمَّ كِيدُونِ فَلَا تُنظِرُونِ
তাদের কি পা আছে যা দ্বারা চলছে? তাদের কি হাত আছে যদ্বারা কোন কিছু ধরে থাকে অথবা চক্ষু আছে যা দ্বারা দেখতে পায়? তাদের কি কর্ণ আছে যা দ্বারা শুনে থাকে? তুমি বলঃ আল্লাহর সাথে তোমরা যাদেরকে অংশী করছ তাদেরকে ডাক, তারপর (সকলে একত্রিত হয়ে) আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে থাক, আমাকে আদৌ কোন অবকাশ দিওনা।
196 – ‘আরাফ
إِنَّ وَلِۦِّىَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى نَزَّلَ ٱلْكِتَٰبَۖ وَهُوَ يَتَوَلَّى ٱلصَّٰلِحِينَ
আমার অভিভাবক হলেন সেই আল্লাহ যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, আর তিনিই সৎ কর্মশীলদের অভিভাবকত্ব করে থাকেন।
197 – ‘আরাফ
وَٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَكُمْ وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ
আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকে ডাক তারা তোমাদের সাহায্য করার কোন ক্ষমতা রাখেনা এবং নিজেদেরকেও সাহায্য করতে পারেনা।
198 – ‘আরাফ
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَسْمَعُواۡۖ وَتَرَىٰهُمْ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ وَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ
যদি তুমি তাদেরকে (মূর্তি) হিদায়াতের পথে ডাক তাহলে সে ডাক তারা শুনবেনা। আর তুমি দেখবে যে, তারা তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে, আসলে তারা কিছুই দেখছেনা।
199 – ‘আরাফ
خُذِ ٱلْعَفْوَ وَأْمُرْ بِٱلْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ ٱلْجَٰهِلِينَ
তুমি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর, এবং লোকদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দাও, আর মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল।
200 – ‘আরাফ
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ نَزْغٌ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
শাইতানের কু-মন্ত্রণা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে তুমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর, তিনি সর্ব শ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।
201 – ‘আরাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوْاۡ إِذَا مَسَّهُمْ طَٰٓئِفٌ مِّنَ ٱلشَّيْطَٰنِ تَذَكَّرُواۡ فَإِذَا هُم مُّبْصِرُونَ
যারা আল্লাহভীরু, শাইতান যখন তাদেরকে কু-মন্ত্রণা দেয়, সাথে সাথে তারা আত্মসচেতন হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের জ্ঞান চক্ষু ফিরে পায়।
202 – ‘আরাফ
وَإِخْوَٰنُهُمْ يَمُدُّونَهُمْ فِى ٱلْغَىِّ ثُمَّ لَا يُقْصِرُونَ
শাইতান যাদের অনুগত সাথী, তারা আরও বিভ্রান্তি ও গুমরাহীর মধ্যে প্রবেশ করে, এ প্রচেষ্টায় তারা আদৌ থেমে থাকেনা।
203 – ‘আরাফ
وَإِذَا لَمْ تَأْتِهِم بِـَٔايَةٍ قَالُواۡ لَوْلَا ٱجْتَبَيْتَهَاۚ قُلْ إِنَّمَآ أَتَّبِعُ مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّ مِن رَّبِّىۚ هَٰذَا بَصَآئِرُ مِن رَّبِّكُمْ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
তুমি যখন কোন নিদর্শন ও মু’জিযা তাদের কাছে পেশ করনা, তখন তারা বলেঃ আপনি এ সব মু’জিযা কেন পেশ করেননা? তুমি বলঃ আমার রবের নিকট থেকে আমার কাছে যা কিছু প্রত্যাদেশ পাঠানো হয়, আমি শুধুমাত্র তারই অনুসরণ করি। এই কুরআন তোমার রবের নিকট থেকে বিশেষ নিদর্শন, আর এটা ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্য হিদায়াত ও রাহমাত।
204 – ‘আরাফ
وَإِذَا قُرِئَ ٱلْقُرْءَانُ فَٱسْتَمِعُواۡ لَهُۥ وَأَنصِتُواۡ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সাথে তা শ্রবণ করবে এবং নীরব নিশ্চুপ হয়ে থাকবে, হয়তো তোমাদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা হবে।
205 – ‘আরাফ
وَٱذْكُر رَّبَّكَ فِى نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ ٱلْجَهْرِ مِنَ ٱلْقَوْلِ بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْءَاصَالِ وَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْغَٰفِلِينَ
তোমার রাব্বকে মনে মনে সবিনয় ও সশংক চিত্তে অনুচ্চস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ করবে, আর (হে নাবী!) তুমি এ ব্যাপারে গাফিল ও উদাসীন হয়ো না ।
206 – ‘আরাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِۦ وَيُسَبِّحُونَهُۥ وَلَهُۥ يَسْجُدُونَ
যারা (অর্থাৎ ফেরেশতা) তোমাদের রবের সান্নিধ্যে থাকে তারা তাঁরই গুণগান ও মহিমা প্রকাশ করে এবং তাঁরই সম্মুখে সাজদাহবনত হয়। [সাজদাহ]
৮ নং সূরা- আল-আনফাল- ٱلْأَنْفَال
মাদানী- মোট আয়াত সংখ্যা: ৭৫
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
1 – আনফাল
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْأَنفَالِۖ قُلِ ٱلْأَنفَالُ لِلَّهِ وَٱلرَّسُولِۖ فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَصْلِحُواۡ ذَاتَ بَيْنِكُمْۖ وَأَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
হে নাবী! লোকেরা তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। অতএব তোমরা এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক সঠিক রূপে গড়ে নাও, আর যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক তাহলে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর।
2 – আনফাল
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتْهُمْ إِيمَٰنًا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
নিশ্চয়ই মু’মিনরা এরূপই হয় যে, যখন (তাদের সামনে) আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে, আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান আরও বৃদ্ধি পায়, আর তারা নিজেদের রবের উপর নির্ভর করে।
3 – আনফাল
ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ يُنفِقُونَ
যারা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করে এবং আমি যা কিছু তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে,
4 – আনফাল
أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُؤْمِنُونَ حَقًّاۚ لَّهُمْ دَرَجَٰتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
এরাই সত্যিকারের ঈমানদার, এদের জন্য রয়েছে তাদের রবের সন্নিধানে উচ্চ পদসমূহ, আরও রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।
5 – আনফাল
كَمَآ أَخْرَجَكَ رَبُّكَ مِنۢ بَيْتِكَ بِٱلْحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقًا مِّنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ لَكَٰرِهُونَ
যেরূপ তোমার রাব্ব তোমাকে তোমার গৃহ হতে (বদরের দিকে) বের করলেন, আর মুসলিমদের একটি দল তা পছন্দ করেনি ।
6 – আনফাল
يُجَٰدِلُونَكَ فِى ٱلْحَقِّ بَعْدَمَا تَبَيَّنَ كَأَنَّمَا يُسَاقُونَ إِلَى ٱلْمَوْتِ وَهُمْ يَنظُرُونَ
সেই যথার্থ বিষয় প্রকাশ হওয়ার পরও ওতে তারা তোমার সাথে এরূপ বিবাদ করছিল যেন কেহ তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর তারা তা প্রত্যক্ষ করছে।
7 – আনফাল
وَإِذْ يَعِدُكُمُ ٱللَّهُ إِحْدَى ٱلطَّآئِفَتَيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيْرَ ذَاتِ ٱلشَّوْكَةِ تَكُونُ لَكُمْ وَيُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُحِقَّ ٱلْحَقَّ بِكَلِمَٰتِهِۦ وَيَقْطَعَ دَابِرَ ٱلْكَٰفِرِينَ
স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে দু’টি দলের মধ্য হতে একটি সম্বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ওটা তোমাদের করতলগত হবে। তোমরা এই আশা করেছিলে যেন নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তে এসে পড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছা ছিল এই যে, তিনি স্বীয় নির্দেশাবলী দ্বারা সত্যকে সত্যরূপে প্রতিষ্ঠা করেন এবং কাফিরদেরকে নির্মূল করেন।
8 – আনফাল
لِيُحِقَّ ٱلْحَقَّ وَيُبْطِلَ ٱلْبَٰطِلَ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُجْرِمُونَ
ইহা এ জন্য যাতে সত্য সত্যরূপে এবং অসত্য অসত্যরূপে প্রতিভাত হয়ে যায়, যদিও এটা অপরাধীরা অপ্রীতিকরই মনে করে।
9 – আনফাল
إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَٱسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّى مُمِدُّكُم بِأَلْفٍ مِّنَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةِ مُرْدِفِينَ
স্মরণ কর সেই সংকট মুহুর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকট কাতর কন্ঠে প্রার্থনা করেছিলে, আর তিনি সেই প্রার্থনা কবূল করে বলেছিলেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে এক হাজার মালাইকা/ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব, যারা একের পর এক আসবে।
10 – আনফাল
وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشْرَىٰ وَلِتَطْمَئِنَّ بِهِۦ قُلُوبُكُمْۚ وَمَا ٱلنَّصْرُ إِلَّا مِنْ عِندِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
আল্লাহ এটা করেছিলেন শুভ সংবাদ হিসাবে এবং যাতে তোমাদের চিত্ত আশ্বস্ত হয়। বস্তুতঃ সাহায্যতো শুধু আল্লাহর তরফ থেকেই হয়ে থাকে। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
11 – আনফাল
إِذْ يُغَشِّيكُمُ ٱلنُّعَاسَ أَمَنَةً مِّنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً لِّيُطَهِّرَكُم بِهِۦ وَيُذْهِبَ عَنكُمْ رِجْزَ ٱلشَّيْطَٰنِ وَلِيَرْبِطَ عَلَىٰ قُلُوبِكُمْ وَيُثَبِّتَ بِهِ ٱلْأَقْدَامَ
যখন তিনি (আল্লাহ) তাঁর পক্ষ থেকে প্রশান্তির জন্য তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন, আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, (উদ্দেশ্য ছিল) তোমাদেরকে এর দ্বারা পবিত্র করবেন এবং তোমাদের হতে শাইতানের কু-মন্ত্রনা দূর করবেন, আর তোমাদের হৃদয়কে সুদৃঢ় করবেন এবং তোমাদের পা স্থির ও প্রতিষ্ঠিত রাখবেন।
12 – আনফাল
إِذْ يُوحِى رَبُّكَ إِلَى ٱلْمَلَٰٓئِكَةِ أَنِّى مَعَكُمْ فَثَبِّتُواۡ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡۚ سَأُلْقِى فِى قُلُوبِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ ٱلرُّعْبَ فَٱضْرِبُواۡ فَوْقَ ٱلْأَعْنَاقِ وَٱضْرِبُواۡ مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ
স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মালাক/ফেরেশতার নিকট প্রত্যাদেশ করলেনঃ আমি তোমাদের সাথে আছি। সুতরাং তোমরা ঈমানদারদের সুপ্রতিষ্ঠিত ও অবিচল রাখ, আর যারা কাফির, আমি তাদের হৃদয়ে ভীতি সৃষ্টি করে দিব। অতএব তোমরা তাদের স্কন্ধে আঘাত হান, আর আঘাত হান তাদের অঙ্গুলিসমূহের প্রতিটি জোড়ায়।
13 – আনফাল
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ شَآقُّواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ وَمَن يُشَاقِقِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর।
14 – আনফাল
ذَٰلِكُمْ فَذُوقُوهُ وَأَنَّ لِلْكَٰفِرِينَ عَذَابَ ٱلنَّارِ
সুতরাং তোমরা এর স্বাদ গ্রহণ কর, সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের লেলিহান আগুনের শাস্তি।
15 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ ٱلْأَدْبَارَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কাফির বাহিনীর সম্মুখীন হবে তখন তাদের মুকাবিলা করা হতে কখনোই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবেনা।
16 – আনফাল
وَمَن يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُۥٓ إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ فِئَةٍ فَقَدْ بَآءَ بِغَضَبٍ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأْوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
আর সেদিন যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় বাহিনীর কেন্দ্রস্থলে স্থান নেয়া ব্যতীত কেহ তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে অর্থাৎ পালিয়ে গেলে সে আল্লাহর গযবে পরিবেষ্টিত হবে, তার আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম, আর জাহান্নাম কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
17 – আনফাল
فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ قَتَلَهُمْۚ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ رَمَىٰۚ وَلِيُبْلِىَ ٱلْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ بَلَآءً حَسَنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর (হে নাবী!) যখন তুমি (ধূলাবালি) নিক্ষেপ করেছিলে তখন তা মূলতঃ তুমি নিক্ষেপ করনি, বরং আল্লাহই তা নিক্ষেপ করেছিলেন। এটা করা হয়েছিল মু’মিনদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করার জন্য, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও জানেন।
18 – আনফাল
ذَٰلِكُمْ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُوهِنُ كَيْدِ ٱلْكَٰفِرِينَ
আর এমনিভাবেই আল্লাহ কাফিরদের চক্রান্ত দুর্বল ও নস্যাৎ করে থাকেন।
19 – আনফাল
إِن تَسْتَفْتِحُواۡ فَقَدْ جَآءَكُمُ ٱلْفَتْحُۖ وَإِن تَنتَهُواۡ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْۖ وَإِن تَعُودُواۡ نَعُدْ وَلَن تُغْنِىَ عَنكُمْ فِئَتُكُمْ شَيْـًٔا وَلَوْ كَثُرَتْ وَأَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
(হে কাফিরেরা!) তোমরাতো ফাইসালা চাচ্ছ, ফাইসালাতো তোমাদের সামনেই এসে গেছে। তোমরা যদি এখনও (মুসলিমদের অনিষ্ট করা হতে) বিরত থাক তাহলে তা তোমাদের পক্ষেই কল্যাণকর, আর যদি পুনরায় তোমরা এ কাজ কর তাহলে আমিও তোমাদেরকে পুনরায় শাস্তি দিব, আর তোমাদের বিরাট বাহিনী তোমাদের কোনই উপকারে আসবেনা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মু’মিনদের সাথে রয়েছেন।
20 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ أَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَوَلَّوْاۡ عَنْهُ وَأَنتُمْ تَسْمَعُونَ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তোমরা যখন তার কথা শুনছ তখন তোমরা তার আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নিওনা।
21 – আনফাল
وَلَا تَكُونُواۡ كَٱلَّذِينَ قَالُواۡ سَمِعْنَا وَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ
তোমরা ঐ সব লোকের মত হয়োনা, যারা বলে – আমরা আপনাদের কথা শুনলাম, কার্যতঃ তারা কিছুই শোনেনা।
22 – আনফাল
إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَآبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلصُّمُّ ٱلْبُكْمُ ٱلَّذِينَ لَا يَعْقِلُونَ
আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে ঐ সব মূক ও বধির লোক, যারা কিছুই বুঝেনা (অর্থাৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায়না)।
23 – আনফাল
وَلَوْ عَلِمَ ٱللَّهُ فِيهِمْ خَيْرًا لَّأَسْمَعَهُمْۖ وَلَوْ أَسْمَعَهُمْ لَتَوَلَّواۡ وَّهُم مُّعْرِضُونَ
আল্লাহ যদি জানতেন যে, তাদের মধ্যে কল্যাণকর কিছু নিহিত রয়েছে তাহলে অবশ্যই তিনি তাদেরকে শোনার তাওফীক দিতেন, তিনি যদি তাদেরকে শোনাতেন তাহলেও তারা উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে চলে যেত।
24 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱسْتَجِيبُواۡ لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْۖ وَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ ٱلْمَرْءِ وَقَلْبِهِۦ وَأَنَّهُۥٓ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের জীবন সঞ্চারক বস্তুর দিকে আহবান করেন। আর জেনে রেখ, আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের অন্তরালে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।
25 – আনফাল
وَٱتَّقُواۡ فِتْنَةً لَّا تُصِيبَنَّ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواۡ مِنكُمْ خَآصَّةًۖ وَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
তোমরা সেই ফিতনাকে ভয় কর যা তোমাদের মধ্যকার শুধুমাত্র যালিম ও পাপিষ্ঠদেরকেই বিশেষভাবে ক্লিষ্ট করবেনা। তোমরা জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর।
26 – আনফাল
وَٱذْكُرُوٓاۡ إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِى ٱلْأَرْضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ ٱلنَّاسُ فَـَٔاوَىٰكُمْ وَأَيَّدَكُم بِنَصْرِهِۦ وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
স্মরণ কর, যখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে খুব দুর্বলরূপে পরিগণিত হতে, আর তোমরা এই শংকায় নিপতিত থাকতে যে, লোকেরা অকস্মাৎ তোমাদেরকে ধরে নিয়ে যাবে। (এই অবস্থায়) আল্লাহই তোমাদেরকে (মাদীনায়) আশ্রয় দেন এবং স্বীয় সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন, আর পবিত্র বস্তু দ্বারা তোমাদের জীবিকা দান করেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
27 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَخُونُواۡ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ وَتَخُونُوٓاۡ أَمَٰنَٰتِكُمْ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা জেনে শুনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করনা এবং তোমাদের পরস্পরের আমানত সম্পর্কেও বিশ্বাস ভঙ্গ করনা।
28 – আনফাল
وَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّمَآ أَمْوَٰلُكُمْ وَأَوْلَٰدُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥٓ أَجْرٌ عَظِيمٌ
আর তোমরা জেনে রেখ যে, তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি প্রকৃত পক্ষে পরীক্ষার সামগ্রী মাত্র, আর আল্লাহর নিকট মহাপুরস্কার রয়েছে।
29 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِن تَتَّقُواۡ ٱللَّهَ يَجْعَل لَّكُمْ فُرْقَانًا وَيُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّـَٔاتِكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ
হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার একটি মান নির্ণয়ক শক্তি দান করবেন, আর তোমাদের দোষক্রটি তোমাদের হতে দূর করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন, আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল ও মঙ্গলময়।
30 – আনফাল
وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَۚ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلْمَٰكِرِينَ
আর স্মরণ কর, যখন কাফিরেরা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, তোমাকে বন্দী করবে অথবা হত্যা করবে কিংবা নির্বাসিত করবে। তারাও ষড়যন্ত্র করতে থাকুক এবং আল্লাহও (স্বীয় নাবীকে বাঁচানোর) কৌশল করতে থাকেন, আল্লাহ হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ কৌশলী।
31 – আনফাল
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُنَا قَالُواۡ قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَآءُ لَقُلْنَا مِثْلَ هَٰذَآۙ إِنْ هَٰذَآ إِلَّآ أَسَٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ
তাদেরকে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনানো হয় তখন তারা বলেঃ আমরা শুনেছি, ইচ্ছা করলে আমরাও এর অনুরূপ বলতে পারি, নিঃসন্দেহে এটা পুরাকালের উপাখ্যান ছাড়া কিছু নয়।
32 – আনফাল
وَإِذْ قَالُواۡ ٱللَّهُمَّ إِن كَانَ هَٰذَا هُوَ ٱلْحَقَّ مِنْ عِندِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ ٱلسَّمَآءِ أَوِ ٱئْتِنَا ِبِعَذَابٍ أَلِيمٍ
আর স্মরণ কর, যখন তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! ইহা (কুরআন) যদি আপনার পক্ষ হতে সত্য হয় তাহলে আকাশ থেকে আমাদের উপর প্রস্তর বর্ষণ করুন অথবা আমাদের উপর কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি এনে দিন।
33 – আনফাল
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
(হে নাবী!) তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেয়া আল্লাহর অভিপ্রায় নয়, আর আল্লাহ এটাও চাননা যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন।
34 – আনফাল
وَمَا لَهُمْ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ ٱللَّهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ وَمَا كَانُوٓاۡ أَوْلِيَآءَهُۥٓۚ إِنْ أَوْلِيَآؤُهُۥٓ إِلَّا ٱلْمُتَّقُونَ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
কিন্তু তাদের কি বলার আছে যে জন্য আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেননা, যখন তারা মাসজিদুল হারামের পথ রোধ করছে, অথচ তারা মাসজিদুল হারামের তত্ত্বাবধায়ক নয়? আল্লাহভীরু লোকেরাই উহার তত্ত্বাবধায়ক, কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক এটা অবগত নয়।
35 – আনফাল
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِندَ ٱلْبَيْتِ إِلَّا مُكَآءً وَتَصْدِيَةًۚ فَذُوقُواۡ ٱلْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
কা’বা ঘরের কাছে তাদের সালাত হল শিস দেয়া ও করতালি প্রদান ছাড়া অন্য কিছুই নয়, সুতরাং তোমরা কুফরী করার কারণে এখন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর।
36 – আনফাল
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ يُنفِقُونَ أَمْوَٰلَهُمْ لِيَصُدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ فَسَيُنفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً ثُمَّ يُغْلَبُونَۗ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ إِلَىٰ جَهَنَّمَ يُحْشَرُونَ
নিশ্চয়ই কাফিরেরা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করার উদ্দেশে তাদের ধন সম্পদ ব্যয় করে, তারা তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করতেই থাকবে, অতঃপর ওটাই শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে এবং তারা পরাভূতও হবে। আর যারা কুফরী করে তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে।
37 – আনফাল
لِيَمِيزَ ٱللَّهُ ٱلْخَبِيثَ مِنَ ٱلطَّيِّبِ وَيَجْعَلَ ٱلْخَبِيثَ بَعْضَهُۥ عَلَىٰ بَعْضٍ فَيَرْكُمَهُۥ جَمِيعًا فَيَجْعَلَهُۥ فِى جَهَنَّمَۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
এটা এ কারণে যে, আল্লাহ ভাল থেকে মন্দকে পৃথক করবেন, আর কু-জনদের সকলকে একজনের উপর অপর জনকে স্তপীকৃত করবেন এবং অতঃপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এরাই চরম ক্ষতিগ্রস্ত লোক।
38 – আনফাল
قُل لِّلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ إِن يَنتَهُواۡ يُغْفَرْ لَهُم مَّا قَدْ سَلَفَ وَإِن يَعُودُواۡ فَقَدْ مَضَتْ سُنَّتُ ٱلْأَوَّلِينَ
তুমি কাফিরদেরকে বলঃ তারা যদি অনাচার থেকে বিরত থাকে তাহলে তাদের পূর্বের অপরাধ যা হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করবেন। কিন্তু তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে তাহলে পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ততো রয়েছেই।
39 – আনফাল
وَقَٰتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ كُلُّهُۥ لِلَّهِۚ فَإِنِ ٱنتَهَوْاۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তোমরা সদা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দীন সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। আর তারা যদি ফিতনা ও বিপর্যয় সৃষ্টি হতে বিরত থাকে তাহলে তারা কি করেছে তা আল্লাহই দেখবেন।
40 – আনফাল
وَإِن تَوَلَّوْاۡ فَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ مَوْلَىٰكُمْۚ نِعْمَ ٱلْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ ٱلنَّصِيرُ
আর যদি তোমাকে না’ই মানে এবং দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহই তোমাদের (মুসলিমদের) অভিভাবক। তিনি কতইনা উত্তম অভিভাবক ও সাহায্যকারী!
41 – আনফাল
وَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّمَا غَنِمْتُم مِّن شَىْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ‚ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَٰمَىٰ وَٱلْمَسَٰكِينِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ إِن كُنتُمْ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ وَمَآ أَنزَلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا يَوْمَ ٱلْفُرْقَانِ يَوْمَ ٱلْتَقَى ٱلْجَمْعَانِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আর তোমরা জেনে রেখ যে, যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গাণীমাতের মাল লাভ করেছ ওর এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রাসূল, (রাসূলের) নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মূসাফিরের জন্য – যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর প্রতি এবং যা আমি অবতীর্ণ করেছি আমার বান্দার উপর সেই চুড়ান্ত ফাইসালার দিন, যেদিন দু‘দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
42 – আনফাল
إِذْ أَنتُم بِٱلْعُدْوَةِ ٱلدُّنْيَا وَهُم بِٱلْعُدْوَةِ ٱلْقُصْوَىٰ وَٱلرَّكْبُ أَسْفَلَ مِنكُمْۚ وَلَوْ تَوَاعَدتُّمْ لَٱخْتَلَفْتُمْ فِى ٱلْمِيعَٰدِۙ وَلَٰكِن لِّيَقْضِىَ ٱللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًا لِّيَهْلِكَ مَنْ هَلَكَ عَنۢ بَيِّنَةٍ وَيَحْيَىٰ مَنْ حَىَّ عَنۢ بَيِّنَةٍۗ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ
আর স্মরণ কর, যখন তোমরা প্রান্তরের এই দিকে ছিলে, আর তারা প্রান্তরের অপর দিকে শিবির রচনা করেছিল, আর উষ্ট্রারোহী কাফেলা তোমাদের অপেক্ষা নিম্নভূমিতে ছিল, যদি পূর্ব হতেই তোমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চাইতে তাহলে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হত, কিন্তু যা ঘটানোর ছিল তা আল্লাহ সম্পন্ন করার জন্য উভয় দলকে যুদ্ধক্ষেত্রে সমবেত করলেন, তাতে যে ধ্বংস হবে সে যেন সত্য সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হবার পর ধ্বংস হয়, আর যে জীবিত থাকবে সে যেন সত্য সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হবার পর জীবিত থাকে। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।
43 – আনফাল
إِذْ يُرِيكَهُمُ ٱللَّهُ فِى مَنَامِكَ قَلِيلًاۖ وَلَوْ أَرَىٰكَهُمْ كَثِيرًا لَّفَشِلْتُمْ وَلَتَنَٰزَعْتُمْ فِى ٱلْأَمْرِ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ سَلَّمَۗ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাকে স্বপ্নযোগে ওদের সংখ্যা অল্প দেখিয়েছিলেন, যদি তোমাকে তাদের সংখ্যা অধিক দেখাতেন তাহলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং যুদ্ধ সম্পর্কে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হত, কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। অন্তরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে তিনি সবিশেষ অবহিত।
44 – আনফাল
وَإِذْ يُرِيكُمُوهُمْ إِذِ ٱلْتَقَيْتُمْ فِىٓ أَعْيُنِكُمْ قَلِيلًا وَيُقَلِّلُكُمْ فِىٓ أَعْيُنِهِمْ لِيَقْضِىَ ٱللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًاۗ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرْجَعُ ٱلْأُ
আরও স্মরণ কর, যা ঘটানোর ছিল, চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করার জন্য যখন দু’দল মুখোমুখী দন্ডায়মান হয়েছিল তখন তোমাদের দৃষ্টিতে ওদের সংখ্যা খুব অল্প দেখাচ্ছিল, আর ওদের চোখেও তোমাদেরকে খুব স্বল্প সংখ্যক পরিদৃষ্ট হচ্ছিল, সমস্ত বিষয় ও সমস্যাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে।
45 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَٱثْبُتُواۡ وَٱذْكُرُواۡ ٱللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং অবিচল থাকবে যখন কোন দলের সম্মুখীন হও, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।
46 – আনফাল
وَأَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَنَٰزَعُواۡ فَتَفْشَلُواۡ وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْۖ وَٱصْبِرُوٓاۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ
তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হও। তোমরা সাহস ও ক্ষমতাহারা হয়ে যাবে যদি নিজেদের মধ্যে বিবাদ কর। তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
47 – আনফাল
وَلَا تَكُونُواۡ كَٱلَّذِينَ خَرَجُواۡ مِن دِيَٰرِهِم بَطَرًا وَرِئَآءَ ٱلنَّاسِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ
তোমরা তাদের মতো আচরণ করনা যারা নিজেদের গৃহ হতে সদর্পে এবং লোকদেরকে (নিজেদের শক্তি) প্রদর্শন করে বের হয় ও মানুষকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত রাখে, তারা যা করে আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।]
48 – আনফাল
وَإِذْ زَيَّنَ لَهُمُ ٱلشَّيْطَٰنُ أَعْمَٰلَهُمْ وَقَالَ لَا غَالِبَ لَكُمُ ٱلْيَوْمَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَإِنِّى جَارٌ لَّكُمْۖ فَلَمَّا تَرَآءَتِ ٱلْفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ وَقَالَ إِنِّى بَرِىٓءٌ مِّنكُمْ إِنِّىٓ أَرَىٰ مَا لَا تَرَوْنَ إِنِّىٓ أَخَافُ ٱللَّهَۚ وَٱللَّهُ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
স্মরণ কর, যখন শাইতান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টিতে খুব চাকচিক্যময় ও শোভনীয় করে দেখাচ্ছিল, সে গর্বভরে বলেছিলঃ কোন মানুষই আজ তোমাদের উপর বিজয় লাভ করতে পারবেনা, আমি সাহায্যার্থে তোমাদের নিকটই থাকব। কিন্তু উভয় বাহিনীর মধ্যে যখন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ শুরু হল তখন সে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সরে পড়ল এবং বললঃ আমি তোমাদের বিষয়ে দায়িত্ব মুক্ত, আমি যা দেখেছি তোমরা তা দেখনা, আমি আল্লাহকে ভয় করি, আর আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর।
49 – আনফাল
إِذْ يَقُولُ ٱلْمُنَٰفِقُونَ وَٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ غَرَّ هَٰٓؤُلَآءِ دِينُهُمْۗ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
যারা মুনাফিক, অন্তরে যাদের ব্যাধি রয়েছে তারা বলে, তাদের ধর্ম তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে। যে কেহ আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
50 – আনফাল
وَلَوْ تَرَىٰٓ إِذْ يَتَوَفَّى ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡۙ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَٰرَهُمْ وَذُوقُواۡ عَذَابَ ٱلْحَرِيقِ
তুমি যদি ঐ অবস্থা দেখতে যখন মালাইকা/ফেরেশতারা কাফিরদের মুখমন্ডল ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত হেনে তাদের মৃত্যু ঘটিয়েছে, (আর বলছে) তোমরা জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর।
51 – আনফাল
ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّٰمٍ لِّلْعَبِيدِ
এই শাস্তি হল তোমাদের সেই কাজেরই পরিণাম ফল যা তোমাদের দু’হাত পূর্বাহ্নেই আয়োজন করেছিল, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর কখনও অত্যাচারী নন।
52 – আনফাল
كَدَأْبِ ءَالِ فِرْعَوْنَۙ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ كَفَرُواۡ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمْۗ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ
এটা ফির‘আউনের বংশ ও তাদের পূর্ববর্তী লোকদের অবস্থার ন্যায়; তারা আল্লাহর নিদর্শনকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ফলে আল্লাহ তাদের পাপের কারণে তাদেরকে পাকড়াও করলেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তিমান ও কঠিন শাস্তিদাতা।
53 – আনফাল
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُواۡ مَا بِأَنفُسِهِمْۙ وَأَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
এই শাস্তির কারণ এই যে, আল্লাহ যদি কোন জাতির উপর নি‘আমাত দান করেন সেই নি‘আমাত ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেননা, যতক্ষণ পর্যন্ত সেই জাতি নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।
54 – আনফাল
كَدَأْبِ ءَالِ فِرْعَوْنَۙ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ كَذَّبُواۡ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِمْ فَأَهْلَكْنَٰهُم بِذُنُوبِهِمْ وَأَغْرَقْنَآ ءَالَ فِرْعَوْنَۚ وَكُلٌّ كَانُواۡ ظَٰلِمِينَ
ফির‘আউনের বংশধর ও তৎপূর্বের জাতিসমূহের ন্যায় তারা তাদের রবের নিদর্শনসমূহ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। ফলে আমি তাদের পাপের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করেছি এবং ফির‘আউনের বংশধরকে (সমুদ্রে) নিমজ্জিত করেছি, তারা প্রত্যেকেই ছিল যুলমকারী।
55 – আনফাল
إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَآبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা কুফরী করে এবং যারা ঈমান আনেনা।
56 – আনফাল
ٱلَّذِينَ عَٰهَدتَّ مِنْهُمْ ثُمَّ يَنقُضُونَ عَهْدَهُمْ فِى كُلِّ مَرَّةٍ وَهُمْ لَا يَتَّقُونَ
ওদের মধ্যে যাদের সাথে তুমি চুক্তিবদ্ধ হয়েছ তারাও নিকৃষ্ট, তারা প্রতিবারেই কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেছে, (চুক্তি ভঙ্গের ব্যাপারে আল্লাহকে কিছুমাত্র) তারা ভয় করেনা।
57 – আনফাল
فَإِمَّا تَثْقَفَنَّهُمْ فِى ٱلْحَرْبِ فَشَرِّدْ بِهِم مَّنْ خَلْفَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
অতএব তোমরা যদি তাদেরকে যুদ্ধের মাইদানে আয়ত্তে আনতে পার তাহলে তাদেরকে তাদের পিছনে যারা রয়েছে তাদের হতে বিচ্ছিন্ন করে এমনভাবে শায়েস্তা কর যাতে তারা শিক্ষা পায়।
58 – আনফাল
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوْمٍ خِيَانَةً فَٱنۢبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَىٰ سَوَآءٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْخَآئِنِينَ
(হে নাবী!) তুমি যদি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ভঙ্গের আশংকা কর তাহলে তোমার চুক্তিকেও প্রকাশ্যভাবে তাদের সামনে চুক্তি ভঙ্গের খবর দিয়ে দাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাস ভঙ্গকারীদেরকে পছন্দ করেননা।
59 – আনফাল
وَلَا يَحْسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ سَبَقُوٓاۡۚ إِنَّهُمْ لَا يُعْجِزُونَ
যারা কাফির তারা (বদর প্রান্তরে প্রাণ বাঁচাতে পেরে) যেন মনে না করে যে, তারা পরিত্রাণ পেয়েছে, তারা মু’মিনগণকে হতবল করতে পারবেনা।
60 – আনফাল
وَأَعِدُّواۡ لَهُم مَّا ٱسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ ٱلْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ ٱللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَءَاخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ ٱللَّهُ يَعْلَمُهُمْۚ وَمَا تُنفِقُواۡ مِن شَىْءٍ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ
তোমরা কাফিরদের মুকাবিলা করার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও সদাসজ্জিত অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে যদ্দবারা আল্লাহর শক্র ও তোমাদের শক্রদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করবে, এছাড়া অন্যান্যদেরকেও যাদেরকে তোমরা জাননা, কিন্তু আল্লাহ জানেন। আর তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় কর, তার প্রতিদান তোমাদেরকে পুরোপুরি প্রদান করা হবে, তোমাদের প্রতি (কম দিয়ে) অত্যাচার করা হবেনা।
61 – আনফাল
وَإِن جَنَحُواۡ لِلسَّلْمِ فَٱجْنَحْ لَهَا وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
যদি তারা (কাফিরেরা) সন্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে তাহলে তুমিও সন্ধি করতে আগ্রহী হও, আর আল্লাহর উপর ভরসা কর, নিঃসন্দেহে তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাত।
62 – আনফাল
وَإِن يُرِيدُوٓاۡ أَن يَخْدَعُوكَ فَإِنَّ حَسْبَكَ ٱللَّهُۚ هُوَ ٱلَّذِىٓ أَيَّدَكَ بِنَصْرِهِۦ وَبِٱلْمُؤْمِنِينَ
আর তারা যদি তোমাকে প্রতারিত করার ইচ্ছা করে তাহলে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি এমন (মহাশক্তিশালী) যে, (গাইবি) সাহায্য (ফেরেশতা) দ্বারা এবং মু’মিনগণ দ্বারা তোমাকে শক্তিশালী করেছেন।
63 – আনফাল
وَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْۚ لَوْ أَنفَقْتَ مَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا مَّآ أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْۚ إِنَّهُۥ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
আর তিনি মু’মিনদের অন্তরে প্রীতি ও ঐক্য স্থাপন করেছেন, তুমি যদি পৃথিবীর সমুদয় সম্পদও ব্যয় করতে তবুও তাদের অন্তরে প্রীতি, সদ্ভাব ও ঐক্য স্থাপন করতে পারতেনা, কিন্তু আল্লাহই ওদের পরস্পরের মধ্যে প্রীতি ও সদ্ভাব স্থাপন করে দিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তিনি মহাশক্তিমান ও মহাকৌশলী।
64 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ حَسْبُكَ ٱللَّهُ وَمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
হে নাবী! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী মু’মিনদের জন্য (সর্বক্ষেত্রে) আল্লাহই যথেষ্ট।
65 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ حَرِّضِ ٱلْمُؤْمِنِينَ عَلَى ٱلْقِتَالِۚ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَٰبِرُونَ يَغْلِبُواۡ مِاۡئَتَيْنِۚ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّاۡئَةٌ يَغْلِبُوٓاۡ أَلْفًا مِّنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ
হে নাবী! মু’মিনদেরকে জিহাদের জন্য উদ্ধুদ্ধ কর, তোমাদের মধ্যে যদি বিশজন ধৈর্যশীল মুজাহিদ থাকে তাহলে তারা দু’শ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর তোমাদের মধ্যে এক‘শ জন থাকলে তারা এক হাজার কাফিরের উপর বিজয়ী হবে, কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদের বোধশক্তি নেই, কিছুই বোঝেনা।
66 – আনফাল
ٱلْـَٰٔنَ خَفَّفَ ٱللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًاۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّاۡئَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُواۡ مِاۡئَتَيْنِۚ وَإِن يَكُن مِّنكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوٓاۡ أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ
আল্লাহ এক্ষণে তোমাদের গুরু দায়িত্ব লাঘব করে দিলেন, তোমাদের মধ্যে যে দৈহিক দুর্বলতা রয়েছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন, এতদসত্ত্বেও তোমাদের মধ্যে একশ’ জন ধৈর্যশীল লোক থাকলে তারা দু’শ’ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর এক হাজার জন থাকলে তারা আল্লাহর হুকুমে দু’হাজার কাফিরের উপর বিজয় লাভ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
67 – আনফাল
مَا كَانَ لِنَبِىٍّ أَن يَكُونَ لَهُۥٓ أَسْرَىٰ حَتَّىٰ يُثْخِنَ فِى ٱلْأَرْضِۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ ٱلدُّنْيَا وَٱللَّهُ يُرِيدُ ٱلْءَاخِرَةَۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
কোন নাবীর পক্ষে তখন পর্যন্ত বন্দী (জীবিত) রাখা শোভা পায়না, যতক্ষণ পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠ (দেশ) হতে শক্র বাহিনী নির্মূল না হয়, তোমরা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সম্পদ কামনা করছ, অথচ আল্লাহ চান তোমাদের পরকালের কল্যাণ, আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
68 – আনফাল
لَّوْلَا كِتَٰبٌ مِّنَ ٱللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَآ أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
আল্লাহর লিপি পূর্বেই লিখিত না হলে তোমরা যা কিছু গ্রহণ করেছ তজ্জন্য তোমাদের উপর কঠিন শাস্তি আপতিত হত।
69 – আনফাল
فَكُلُواۡ مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَٰلًا طَيِّبًاۚ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
সুতরাং যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গণীমাত রূপে লাভ করেছ তা হালাল ও পবিত্র রূপে ভোগ কর, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
70 – আনফাল
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ قُل لِّمَن فِىٓ أَيْدِيكُم مِّنَ ٱلْأَسْرَىٰٓ إِن يَعْلَمِ ٱللَّهُ فِى قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًا مِّمَّآ أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে নাবী! তোমাদের হাতে যারা বন্দী হয়েছে তাদেরকে বল, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কল্যাণকর কিছু রয়েছে বলে অবগত হন তাহলে তোমাদের হতে (মুক্তিপণ রূপে) যা কিছু নেয়া হয়েছে তা অপেক্ষা উত্তম কিছু দান করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
71 – আনফাল
وَإِن يُرِيدُواۡ خِيَانَتَكَ فَقَدْ خَانُواۡ ٱللَّهَ مِن قَبْلُ فَأَمْكَنَ مِنْهُمْۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আর তারা যদি তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা রাখে তাহলে এর পূর্বে আল্লাহর সাথেও তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সুতরাং তিনি তাদের উপর তোমাকে শক্তিশালী করেছেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।
72 – আনফাল
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَهَاجَرُواۡ وَجَٰهَدُواۡ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ ءَاوَواۡ وَّنَصَرُوٓاۡ أُوۡلَٰٓئِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۚ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَلَمْ يُهَاجِرُواۡ مَا لَكُم مِّن وَلَٰيَتِهِم مِّن شَىْءٍ حَتَّىٰ يُهَاجِرُواۡۚ وَإِنِ ٱسْتَنصَرُوكُمْ فِى ٱلدِّينِ فَعَلَيْكُمُ ٱلنَّصْرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوْمٍۭ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَٰقٌۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
যারা ঈমান এনেছে, দীনের জন্য হিজরাত করেছে, নিজেদের জানমাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে এবং যারা আশ্রয় দান ও সাহায্য করেছে, তারা পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরাত করেনি, তারা হিজরাত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই, কিন্তু তারা যদি দীনের ব্যাপারে তোমাদের নিকট সাহায্য প্রার্থী হয় তাহলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, তবে তোমাদের এবং যে জাতির মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়, তোমরা যা করছ আল্লাহ তা খুব ভাল রূপেই লক্ষ্য করেন।
73 – আনফাল
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۚ إِلَّا تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِى ٱلْأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ
যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, তোমরা যদি (উপরোক্ত) বিধান কার্যকর না কর তাহলে ভূ-পৃষ্ঠে ফিতনা ও মহা বিপর্যয় দেখা দিবে।
74 – আনফাল
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَهَاجَرُواۡ وَجَٰهَدُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ ءَاوَواۡ وَّنَصَرُوٓاۡ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُؤْمِنُونَ حَقًّاۚ لَّهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
যারা ঈমান এনেছে, (দীনের জন্য) হিজরাত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা (মু’মিনদেরকে) আশ্রয় দিয়েছে এবং যাবতীয় সাহায্য সহানুভূতি প্রকাশ করেছে, তারাই হল প্রকৃত মু’মিন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।
75 – আনফাল
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مِنۢ بَعْدُ وَهَاجَرُواۡ وَجَٰهَدُواۡ مَعَكُمْ فَأُوۡلَٰٓئِكَ مِنكُمْۚ وَأُوۡلُواۡ ٱلْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَىٰ بِبَعْضٍ فِى كِتَٰبِ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۢ
আর যারা এর পরে ঈমান এনেছে ও হিজরাত করেছে এবং তোমাদের সাথে একত্রে জিহাদ করেছে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত; আল্লাহর বিধানে আত্মীয়গণ একে অন্যের অপেক্ষা বেশি হকদার, নিঃসন্দেহে আল্লাহ প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে ভাল রূপে অবহিত।