Web Page 3: Kitabu Mawakitus Salat-9 to Kitabul Ajan-10
“وَقَوْلِهِ: {إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى المُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَوْقُوتًا} [النساء: ١٠٣] مُوَقَّتًا وَقَّتَهُ عَلَيْهِمْ “
আল্লাহ তা‘আলার বানী: “নিশ্চয়ই সালাত মু‘মিনদের উপর নির্ধারিত সময়ে ফরয।” আয়াতে ব্যবহৃত “মুয়াক্কাতান” এর অর্থে ব্যবহৃত, অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে ফরয – যা আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢١ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، قَالَ: قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ العَزِيزِ أَخَّرَ الصَّلَاةَ يَوْمًا فَدَخَلَ عَلَيْهِ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، فَأَخْبَرَهُ أَنَّ المُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ أَخَّرَ الصَّلَاةَ يَوْمًا وَهُوَ بِالعِرَاقِ، فَدَخَلَ عَلَيْهِ أَبُو مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيُّ، فَقَالَ: مَا هَذَا يَا مُغِيرَةُ أَلَيْسَ قَدْ عَلِمْتَ أَنَّ جِبْرِيلَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَزَلَ فَصَلَّى، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَلَّى، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَلَّى، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَلَّى، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَلَّى، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قَالَ: «بِهَذَا أُمِرْتُ»، فَقَالَ عُمَرُ لِعُرْوَةَ: اعْلَمْ مَا تُحَدِّثُ، أَوَأَنَّ جِبْرِيلَ هُوَ أَقَامَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقْتَ الصَّلَاةِ؟ قَالَ عُرْوَةُ: كَذَلِكَ كَانَ بَشِيرُ بْنُ أَبِي مَسْعُودٍ يُحَدِّثُ، عَنْ أَبِيهِ،
‘আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি মালিকের নিকট থেকে শুনেছি, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উমর ইবনু ‘আবদুল’ ‘আযীয থেকে, তিনি একদা কোন এক সালাত আদায়ে বিলম্ব করলেন। তখন ‘উরওয়াহ ইবনু যুবায়র তাঁর নিকট গেলেন এবং তাঁর নিকট বর্ণনা করলেন যে, ইরাকে অবস্থানকালে মুগিরা ইব্নু শুবাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) একদা এক সালাত আদায়ে বিলম্ব করেছিলেন। ফলে আবূ মাস’উদ আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর নিকট গিয়ে বললেন: হে মুগিরাহ! একী? তুমি কি অবগত নও যে, জিবরীল (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করে সালাত আদায় করলেন আর, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সালাত আদায় করলেন। আবার তিনি সালাত আদায় করলেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সালাত আদায় করলেন। পুনরায় তিনি সালাত আদায় করলেন এবং আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সালাত আদায় করলেন। আবার তিনি সালাত আদায় করলেন এবং আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সালাত আদায় করলেন। পুনরায় তিনি সালাত আদায় করলেন এবং আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সালাত আদায় করলেন। অতঃপর জিবরীল (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি এজন্য আদিষ্ট হয়েছি। ‘উমর (ইব্নু ‘আবদুল ‘আযীয) (রহমাহুল্লাহ) ‘উরওয়াহ (রহমাহুল্লাহ)-কে বললেন, “তুমি যা রিওয়ায়াত করছ তা একটু ভেবে দেখ। জিবরীলই কি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঁর জন্য সালাতের ওয়াক্ত নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন?” উরওয়াহ (রহমাহুল্লাহ) বললেন, বাশির ইবনু আবু মাস’উদ (রহমাহুল্লাহ) তার পিতা হতে এমনই বর্ণনা করেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٢ – قَالَ عُرْوَةُ: وَلَقَدْ حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي العَصْرَ، وَالشَّمْسُ فِي حُجْرَتِهَا قَبْلَ أَنْ تَظْهَرَ»
‘উরওয়াহ বললেন: অবশ্য ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন মুহূর্তে ‘আসরের সালাত আদায় করতেন যে, সূর্যরশ্মি তখনও তাঁর হুজরার মধ্যে থাকতো। তবে তা উপরের দিকে উঠে যাওয়ার পূর্বেই।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٣ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبَّادٌ هُوَ ابْنُ عَبَّادٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ القَيْسِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: إِنَّا مِنْ هَذَا الحَيِّ مِنْ رَبِيعَةَ وَلَسْنَا نَصِلُ إِلَيْكَ إِلَّا فِي الشَّهْرِ الحَرَامِ، فَمُرْنَا بِشَيْءٍ نَأْخُذْهُ عَنْكَ وَنَدْعُو إِلَيْهِ مَنْ وَرَاءَنَا، فَقَالَ: ” آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ الإِيمَانِ بِاللَّهِ، ثُمَّ فَسَّرَهَا لَهُمْ: شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامُ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَأَنْ تُؤَدُّوا إِلَيَّ خُمُسَ مَا غَنِمْتُمْ، وَأَنْهَى عَنْ: الدُّبَّاءِ وَالحَنْتَمِ وَالمُقَيَّرِ وَالنَّقِيرِ “
ক্বুতায়বাহ ইব্ন সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্বাদ (তিনি ইব্ন আব্বাদ) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ জাম্রাহ থেকে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, একবার আবদুল কায়স গোত্রের একটি প্রতিনিধি দল আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এঁর দরবারে এসে বললো, আপনার ও আমাদের মাঝে সে ‘রাবীআ’ গোত্র থাকায় শাহ্রে হারাম (নিষিদ্ধ মাসসমুহ) ছাড়া অন্য কোন সময় আমরা আপনার নিকট আসতে পারিনা। কাজেই আপনি আমাদের এমন কিছু নির্দেশ দিন যা আমরা নিজেরাও গ্রহন করবো এবং আমাদের যারা পিছনে রয়ে গেছে তাদের প্রতিও আহবান জানাবো। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি, আর চারটি বিষয় হতে তোমাদের নিষেধ করছি। নির্দেশিত বিষয়ের মাঝে একটি হল ‘ঈমান বিল্লাহ’ (আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা)। অতঃপর তিনি তাদেরকে ব্যাখ্যা করে বুঝালেন যে, ‘ঈমান বিল্লাহর’ অর্থ হলো, এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই আর আমি আল্লাহ্র রসূল, সালাত কায়েম করা, যাকাত দেয়া, আর গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দান করা। আর তোমাদেরকে নিষেধ করছি কদুর পাত্র, সবুজ রঙের মাটির পাত্র, বিশেষ ধরনের তৈলাক্ত পাত্র ও গাছের গুড়ি খোদাই করে তৈরি পাত্র ব্যবেহার করতে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٤ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنَا قَيْسٌ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى إِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ»
মুহা’ম্মাদ ইব্ন মুছান্নাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন. তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন. তিনি বললেন: ক্বায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট সালাত আদায়, যাকাত প্রদান এবং প্রত্যেক মুসলমানকে নসীহত করার বায়’আত গ্রহন করেছি”।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٥ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ: حَدَّثَنِي شَقِيقٌ، قَالَ: سَمِعْتُ حُذَيْفَةَ، قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: أَيُّكُمْ يَحْفَظُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الفِتْنَةِ، قُلْتُ أَنَا كَمَا قَالَهُ: قَالَ: إِنَّكَ عَلَيْهِ أَوْ عَلَيْهَا لَجَرِيءٌ، قُلْتُ: «فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ، تُكَفِّرُهَا الصَّلَاةُ وَالصَّوْمُ وَالصَّدَقَةُ، وَالأَمْرُ وَالنَّهْيُ»، قَالَ: لَيْسَ هَذَا أُرِيدُ، وَلَكِنِ الفِتْنَةُ الَّتِي تَمُوجُ كَمَا يَمُوجُ البَحْرُ، قَالَ: لَيْسَ عَلَيْكَ مِنْهَا بَأْسٌ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا، قَالَ: أَيُكْسَرُ أَمْ يُفْتَحُ؟ قَالَ: يُكْسَرُ، قَالَ: إِذًا لَا يُغْلَقَ أَبَدًا، قُلْنَا: أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ البَابَ؟ قَالَ: نَعَمْ، كَمَا أَنَّ دُونَ الغَدِ اللَّيْلَةَ، إِنِّي حَدَّثْتُهُ بِحَدِيثٍ لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَ حُذَيْفَةَ، فَأَمَرْنَا مَسْرُوقًا فَسَأَلَهُ، فَقَالَ: البَابُ عُمَرُ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘মাস থেকে, তিনি বললেন: শাক্বীক্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, একদা আমরা ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এঁর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ফিতনা-ফাসাদ সম্পর্কে রসূল্লুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে মনে রেখেছো? হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, ‘যেমনভাবে তিনি বলেছিলেন হুবুহু তেমনিই আমি মনে রেখেছি।’ ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী মনে রাখার ব্যাপারে তুমি খুব দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছো। আমি বললাম, (রসূল্ললাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন) মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে যে ফিতনায় পতিত হয়- সালাত, সিয়াম, সদাকা (ন্যায়ের) আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ তা দূরীভূত করে দেয়। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং আমি সেই ফিতনার কথা বলছি যা সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় ভয়াল হবে। হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন! সে ব্যাপারে আপনার ভয়ের কোন কারন নেই। কেননা, আপনার ও সে ফিতনার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জিজ্ঞেস করলেন, সে দরজাটি কি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেয়া হবে? হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, ভেঙ্গে ফেলা হবে। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তাহলে তো আর কোনদিন তা বন্ধ করা যাবে না। [হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এঁর ছাত্র শাক্বীক (রহমাহুল্লাহ) বলেন,] আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কি সে দরজাটি সমন্ধে জানতেন? হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, হাঁ, দিনের পূর্বে রাতের আগমন যেমন সুনিশ্চিত, তেমনি নিশ্চিতভাবে তিনি জানতেন। কেননা, আমি তাঁর কাছে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছি, যা মোটেও ত্রুটিযুক্ত নয়। (দরজাটি কী) এ বিষয়ে হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর নিকট জানতে ভয় পাচ্ছিলাম। তাই আমরা মাসরূক (রহমাহুল্লাহ)- কে বললাম এবং তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, দরজাটি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নিজেই।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٦ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَجُلًا أَصَابَ مِنَ امْرَأَةٍ قُبْلَةً، فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخْبَرَهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {أَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ، إِنَّ الحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ} [هود: ١١٤] فَقَالَ الرَّجُلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِي هَذَا؟ قَالَ: «لِجَمِيعِ أُمَّتِي كُلِّهِمْ»
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্ন যুরায়‘ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুলায়মান তায়মী থেকে, তিনি ‘উসমান নাহ্দী থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জনৈক মহিলাকে চুম্বন করে বসে। পরে সে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বিষয়টি তাঁর গোচরীভূত করে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত নাযিল করেনঃ “দিনের দু’প্রান্তে- সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম অংশে সালাত কায়েম কর। নিশ্চয়ই ভাল কাজ পাপাচারকে মিটিয়ে দেয়”-(হুদ, ১১:১১৪)। লোকটি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহ্র রসূল! এ কি শুধু আমার বেলায়? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমার সকল উম্মাতের জন্যই।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٧ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ المَلِكِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ الوَلِيدُ بْنُ العَيْزَارِ: أَخْبَرَنِي قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا عَمْرٍو الشَّيْبَانِيَّ، يَقُولُ: حَدَّثَنَا صَاحِبُ – هَذِهِ الدَّارِ وَأَشَارَ إِلَى دَارِ – عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّ العَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ؟ قَالَ: «الصَّلَاةُ عَلَى وَقْتِهَا»، قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ بِرُّ الوَالِدَيْنِ» قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» قَالَ: حَدَّثَنِي بِهِنَّ، وَلَوِ اسْتَزَدْتُهُ لَزَادَنِي
আবূ ওয়ালীদ হিশাম ইব্ন ‘আব্দুল মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ালীদ ইব্নল ‘আয়যার আমাকে খবর দিলেন, তিনি বললেন, আবূ আমর শায়বানি (রহমাহুল্লাহ) থেকে আমি শুনেছি, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর বাড়ির দিকে ইংগিত করে বলেন, এ বাড়ির মালিক আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহ্র নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথা সময়ে সালাত আদায় করা। ইবনু মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, অতঃপর কোনটি? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অতঃপর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ (আল্লাহ্র পথে জিহাদ)। ইবনু মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, এগুলো তো আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনই, যদি আমি আরও অধিক জানতে চাইতাম, তাহলে তিনি আমাকে আরও বলতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٨ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، وَالدَّرَاوَرْدِيُّ، عَنْ يَزِيدَ يَعْنِي ابْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهَرًا بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ فِيهِ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسًا، مَا تَقُولُ: ذَلِكَ يُبْقِي مِنْ دَرَنِهِ ” قَالُوا: لَا يُبْقِي مِنْ دَرَنِهِ شَيْئًا، قَالَ: «فَذَلِكَ مِثْلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ، يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الخَطَايَا»
ইবরাহীম ইব্ন হা’মযাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্ন আবূ হা’যিম ওয়াদ্দারাওয়ারদিউ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াযীদ অর্থাৎ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন হাদি থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন ইবরাহীম থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন আব্দুর রহমান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, “বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তাঁর দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তাঁর দেহে কোনরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদহারণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা বান্দার গুনাহসমুহ মিটিয়ে দেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٢٩ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، عَنْ غَيْلَانَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: ” مَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا كَانَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قِيلَ: الصَّلَاةُ؟ قَالَ: أَلَيْسَ ضَيَّعْتُمْ مَا ضَيَّعْتُمْ فِيهَا “
মূসা ইব্ন ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মাহদী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন গায়লান থেকে, তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আজকাল কোনো জিনিসই সে অবস্থায় পাই না, যেমন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে ছিল। প্রশ্ন করা হলো, সালাতও কি? তিনি বললেন, সে ক্ষেত্রেও যা হক নষ্ট করার তা-কি তোমরা করনি? ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. উওম ওয়াক্তে সালাত আদায় না করে দেরী করে আদায় করা। যেমন সময় হয়ে যাওয়ার পরও ফজর, যুহর ও আসরের সালাত ইচ্ছাকৃতভাবে দেরীতে আদায় করা।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٠ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ وَاصِلٍ أَبُو عُبَيْدَةَ الحَدَّادُ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي رَوَّادٍ، أَخِي عَبْدِ العَزِيزِ بْنِ أَبِي رَوَّادٍ، قَالَ: سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ، يَقُولُ: دَخَلْتُ عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ بِدِمَشْقَ وَهُوَ يَبْكِي، فَقُلْتُ: مَا يُبْكِيكَ؟ فَقَالَ: «لَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا أَدْرَكْتُ إِلَّا هَذِهِ الصَّلَاةَ وَهَذِهِ الصَّلَاةُ قَدْ ضُيِّعَتْ» وَقَالَ بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ البُرْسَانِيُّ، أَخْبَرَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي رَوَّادٍ نَحْوَهُ
‘আমর ইব্ন যুরারাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহি’দ ইব্ন ওয়াস্বিল আবূ ‘উবায়দাহ হা’দ্দাদ আমাদেরকে খবর দিলেন ‘উছমান ইব্ন আবূ রাওওয়াদ এবং আমার ভাই ‘আব্দুল আযীয ইব্ন আবু রাওওয়াদ থেকে, তিনি বললেন: আমি যুহরী থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি দামেশ্কে আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হলাম, তিনি তখন কাঁদছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কোন বিষয়টি কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুগে যা কিছু পেয়েছি তার মধ্যে কেবলমাত্র সালাত ছাড়া আর কিছুই বহাল নেই। কিন্তু সালাতকেও নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বক্র (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমার নিকট মুহাম্মাদ ইবনু বক্র বুরসানি (রহমাহুল্লাহ) এবং ‘উসমান ইবনু আবু রাওওয়াদ (রহমাহুল্লাহ) অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣١ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى يُنَاجِي رَبَّهُ، فَلَا يَتْفِلَنَّ عَنْ يَمِينِهِ، وَلَكِنْ تَحْتَ قَدَمِهِ اليُسْرَى» وَقَالَ سَعِيدٌ: عَنْ قَتَادَةَ، «لَا يَتْفِلُ قُدَّامَهُ أَوْ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمَيْهِ» وَقَالَ شُعْبَةُ: «لَا يَبْزُقُ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَلَا عَنْ يَمِينِهِ وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمِهِ» وَقَالَ حُمَيْدٌ: عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَبْزُقْ فِي القِبْلَةِ، وَلَا عَنْ يَمِينِهِ، وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمِهِ»
মুসলিম ইব্ন ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে গোপনে কথা বলে। কাজেই, সে যেন ডানদিকে থুথু না ফেলে, তবে (প্রয়োজনে) বাম পায়ের নীচে ফেলতে পারে”। তবে সা’ঈদ (রহমাহুল্লাহ) ক্বাতাদাহ (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেছেন, সে যেন সামনের দিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলতে পারে। আর শু’বাহ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, সে যেন সামনের দিকে অথবা ডান দিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বামদিকে অথবা পায়ের তলায় ফেলতে পারে। আর হুমায়দ (রহমাহুল্লাহ) আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, সে যেন কিবলার দিকে অথবা ডানদিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলতে পারে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٢ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلّى الله عليه وسلم قَالَ: «اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ، وَلَا يَبْسُطْ ذِرَاعَيْهِ كَالكَلْبِ، وَإِذَا بَزَقَ فَلَا يَبْزُقَنَّ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَلَا عَنْ يَمِينِهِ، فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ»
হা’ফস্ব ইব্ন ‘উমারআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্ন ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বাতাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা সিজদায় ই’তিদাল বজায় রাখ। তোমাদের কেউ যেন তাঁর বাহুদ্বয় কুকুরের মত বিছিয়ে না দেয়। আর যদি থুথু ফেলতে হয়, তাহলে সে যেন সামনে ও ডানে না ফেলে। কেননা সে তখন তার প্রতিপালকের সাথে গোপন কথায় লিপ্ত থাকে”।১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনীর বুখারীর টীকায় ৩৯৬ নং হাদীসে সালাতে থুথু ফেলা মানসুখ হয়ে গেছে বললেও ৫০১ নং হাদীসের টীকায় প্রয়োজনে সালাতে বামে পায়ের নীচে থুথু ফেলা জায়িয এ সংক্রান্ত হাদীস এনেছেন এবং সালাত আদায়কালে প্রয়োজনে থুথু ফেলার বৈধতা স্বীকার করেছেন এবং সেটিই সঠিক। আসলে মাযহাবের মতের সাথে সহীহ হাদীসের অমিল হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন প্রকার চিন্তা গবেষনা ছাড়াই “হাদীসটি মানসুখ হয়ে গেছে” এ ধরনের কথা বলা হাদীসের প্রতি অবজ্ঞা ও তথা রসূলের বাণীর প্রতি ধৃষ্টতারই শামিল।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٣ – حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ، قَالَ: صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ، حَدَّثَنَا الأَعْرَجُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ، وَغَيْرُهُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَنَافِعٌ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «إِذَا اشْتَدَّ الحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ الصَّلَاةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ»
আয়্য়ূব ইব্ন সুলাইমান ইব্ন বিলাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ বাকর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুলায়মান থেকে, তিনি বললেন: স্বালিহ’ ইব্ন কায়সান থেকে, তিনি বললেন: আ‘আ্রাজ ‘আব্দুর রহ’মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবু হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর স্বাধীন করা গুলাম না‘ফি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তাঁরা উভয়ই [আবু হুরায়রাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এবং ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)] আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বললেন, তিনি [রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বলেন, “যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে সালাত আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
পূর্ববর্তী হাদীসটির অনুরূপ।
আবু হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে সালাত আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٥ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ المُهَاجِرِ أَبِي الحَسَنِ، سَمِعَ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: أَذَّنَ مُؤَذِّنُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الظُّهْرَ، فَقَالَ: «أَبْرِدْ أَبْرِدْ» أَوْ قَالَ: «انْتَظِرِ انْتَظِرْ» وَقَالَ: «شِدَّةُ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ، فَإِذَا اشْتَدَّ الحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ الصَّلَاةِ» حَتَّى رَأَيْنَا فَيْءَ التُّلُولِ
মুহা’ম্মাদ ইব্ন বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উ্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহাজির আবূল হা’সান থেকে, তিনি বললেন: যায়দ ইব্ন ওয়হাব শুনেছেন আবূ যার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুআযযিন যুহরের আযান দিলে তিনি বললেনঃ ঠাণ্ডা হতে দাও, ঠাণ্ডা হতে দাও। অথবা তিনি বললেন, অপেক্ষা কর, অপেক্ষা কর। তিনি আরও বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের ফলেই সৃষ্টি হয়। কাজেই গরম যখন বেড়ে যায় তখন গরম কমলেই সালাত আদায় করবে। এমনকি (বিলম্ব করতে বেলা এতটুকু গড়িয়ে গিয়েছিল যে) আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٦ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ المَدِينِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَفِظْنَاهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا اشْتَدَّ الحَرُّ فَأَبْرِدُوا بِالصَّلَاةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ»
‘আলী ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ মাদীনী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমরা যুহুরী থেকে সংরক্ষণ করেছি, তিনি সাঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে, তিনি বললেন, “যখন গরম বেড়ে যাবে তখন তোমরা তা কমে এলে যুহরের সালাত আদায় করো। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের উত্তাপের অংশ।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٧ – وَاشْتَكَتِ النَّارُ إِلَى رَبِّهَا، فَقَالَتْ: يَا رَبِّ أَكَلَ بَعْضِي بَعْضًا، فَأَذِنَ لَهَا بِنَفَسَيْنِ، نَفَسٍ فِي الشِّتَاءِ وَنَفَسٍ فِي الصَّيْفِ، فَهُوَ أَشَدُّ مَا تَجِدُونَ مِنَ الحَرِّ، وَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ مِنَ الزَّمْهَرِيرِ “
সনদ পূর্ববর্তী হাদীসটির অনুরূপ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট এ বলে নালিশ করেছিলো, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচন্ডতায়) আমার এক অংশ আর এক অংশকে গ্রাশ করে ফেলেছে। ফলে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে দু’টি শ্বাস ফেলার অনুমতি দিলেন, একটি শীতকালে আর একটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দু’টি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে যে প্রচন্ড উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচন্ড ঠাণ্ডা অনুভব কর তাই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٨ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا أَبُو صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبْرِدُوا بِالظُّهْرِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ» تَابَعَهُ سُفْيَانُ، وَيَحْيَى، وَأَبُو عَوَانَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ
‘উমার ইব্ন হা’ফস্ব্ ইব্ন গিয়াছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ স্বালিহ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সা’ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যুহরের সালাত গরম কমলে আদায় কর। কেননা, গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে। সুফিয়ান, ইয়াহইয়া এবং আবূ আওয়ানা (রহমাহুল্লাহ) আ’মাশ (রহমাহুল্লাহ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٣٩ – حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُهَاجِرٌ أَبُو الحَسَنِ مَوْلَى لِبَنِي تَيْمِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ الغِفَارِيِّ، قَالَ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ، فَأَرَادَ المُؤَذِّنُ أَنْ يُؤَذِّنَ لِلظُّهْرِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبْرِدْ» ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُؤَذِّنَ، فَقَالَ لَهُ: «أَبْرِدْ» حَتَّى رَأَيْنَا فَيْءَ التُّلُولِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ، فَإِذَا اشْتَدَّ الحَرُّ فَأَبْرِدُوا بِالصَّلَاةِ» وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «(تَتَفَيَّأُ) تَتَمَيَّلُ»
আদম ইব্ন আবূ ইয়াস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বানী ত্বায়মিল্লাহ এর স্বাধীন করা গুলাম মুহাজির আবূল হা’সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি যায়দ ইব্ন ওয়াহাব থেকে শুনলাম, তিনি আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে, তিনি বললেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ছিলাম। এক সময় মুয়াযযিন যুহরের আযান দিতে চেয়েছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মুয়াযযিন আযান দিতে চাইলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (পুনরায়) বললেনঃ গরম কমতে দাও। এভাবে তিনি (সালাত আদায়ে) এতো বিলম্ব করলেন যে, আমরা টিলাগুলো ছায়া দেখতে পেলাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচন্ড হলে উত্তাপ কমার পর সালাত আদায় করো। [*] ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, কুরআনেঃ (আরবী) শব্দটি (আরবী) ঝুঁকে পড়া, গড়িয়ে পড়ার অর্থে ব্যবেহৃত হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
* আরবের মরু এলাকায় উত্তপ্ত বালু ও মরু ঝড়ের কারণে সেখানে প্রচন্ড গরম দেখা দিত। তাই কখনও কখনও যূহরের সালাত কিছুটা বিলম্বে আদায় করতেন। কিন্তু আমাদের দেশের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ, তুলনামূলকভাবে ঠাণ্ডা। তাই এখানে সব সময় আওয়াল ওয়াক্তে সালাত আদায়ে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে অতীব গরমের সময় কিছুটা বিলম্ব করে যুহরের সালাত আদায় করাই সুন্নাত। কিন্তু অতীব দুঃখের কথা কি অতি গরম কি ঠাণ্ডা আমাদের দেশের বেশীর ভাগ মসজিদে আওয়াল ওয়াক্ত বাদ দিয়ে সব সময় ওয়াক্ত হয়ে যাবার অনেক পরে সালাত আদায় করে আওয়াল ওয়াক্তের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হন।
وَقَالَ جَابِرٌ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي بِالهَاجِرَةِ»
জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, দুপুরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٠ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ حِينَ زَاغَتِ الشَّمْسُ، فَصَلَّى الظُّهْرَ، فَقَامَ عَلَى المِنْبَرِ، فَذَكَرَ السَّاعَةَ، فَذَكَرَ أَنَّ فِيهَا أُمُورًا عِظَامًا، ثُمَّ قَالَ: «مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَسْأَلَ عَنْ شَيْءٍ فَلْيَسْأَلْ، فَلَا تَسْأَلُونِي عَنْ شَيْءٍ إِلَّا أَخْبَرْتُكُمْ، مَا دُمْتُ فِي مَقَامِي هَذَا» فَأَكْثَرَ النَّاسُ فِي البُكَاءِ، وَأَكْثَرَ أَنْ يَقُولَ: «سَلُونِي»، فَقَامَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ حُذَافَةَ السَّهْمِيُّ، فَقَالَ: مَنْ أَبِي؟ قَالَ: «أَبُوكَ حُذَافَةُ» ثُمَّ أَكْثَرَ أَنْ يَقُولَ: «سَلُونِي» فَبَرَكَ عُمَرُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ، فَقَالَ: رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا، فَسَكَتَ، ثُمَّ قَالَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ آنِفًا فِي عُرْضِ هَذَا الحَائِطِ، فَلَمْ أَرَ كَالخَيْرِ وَالشَّرِّ»
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে, তিনি বলেন, একদা সূর্য ঢলে পড়লে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এলেন এবং যুহরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর মিম্বারে দাঁড়িয়ে কিয়ামত সম্বন্ধে আলোচনা করেন এবং বলেন যে, ক্বিয়ামাতে বহু ভয়ানক ঘটনা ঘটবে। অতঃপর তিনি বলেন, আমাকে কেউ প্রশ্ন করতে চাইলে করতে পারে। আমি যতক্ষন এ বৈঠকে আছি, এর মধ্যে তোমরা আমাকে যা কিছু জিজ্ঞেস করবে আমি তা জানিয়ে দিবো। এ শুনে লোকেরা খুব কাঁদতে শুরু করলো। আর তিনি বারবার বলতে থাকলেনঃ আমাকে প্রশ্ন কর, আমাকে প্রশ্ন কর। এ সময় ‘আব্দুল্লাহ্ ইবনু হুযাফা সাহমী (রাঃ) দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আমার পিতা কে? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার পিতা ‘হুযাফা’। অতঃপর তিনি অনেকবার বললেনঃ আমাকে প্রশ্ন কর। তখন ‘উমর (রাঃ) নতজানু হয়ে বসে বললেন, “আমরা আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নবী হিসেবে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণ পর বললেনঃ এক্ষুণি এ দেওয়ালের পাশে জান্নাত ও জাহান্নাম আমার সামনে তুলে ধরা হয়েছিল; এতো উত্তম ও এতো নিকৃষ্টের মত কিছু আমি আর দেখিনি।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤١ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو المِنْهَالِ، عَنْ أَبِي بَرْزَةَ، ” كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الصُّبْحَ وَأَحَدُنَا يَعْرِفُ جَلِيسَهُ، وَيَقْرَأُ فِيهَا مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى المِائَةِ، وَيُصَلِّي الظُّهْرَ إِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ، وَالعَصْرَ وَأَحَدُنَا يَذْهَبُ إِلَى أَقْصَى المَدِينَةِ، رَجَعَ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ – وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي المَغْرِبِ – وَلَا يُبَالِي بِتَأْخِيرِ العِشَاءِ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ، ثُمَّ قَالَ: إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ ” وَقَالَ مُعَاذٌ: قَالَ شُعْبَةُ: لَقِيتُهُ مَرَّةً، فَقَالَ: «أَوْ ثُلُثِ اللَّيْلِ»
হাফস্ব ইব্ন ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মিনহাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বারযাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় ফজরের সালাত আদায় করতেন, যখন আমাদের একজন তার পার্শ্ববর্তী অপরজনকে চিনতে পারতো। আর এ সালাতে তিনি ষাট হতে একশ’ আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং যুহরের সালাত আদায় করতেন যখন সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়তো। তিনি ‘আসরের সালাত আদায় করতেন এমন সময় যে, আমাদের কেউ মদীনার শেষ প্রান্তে পৌছে আবার ফিরে আসতে পারতো, তখনও সূর্য সতেজ থাকতো।” রাবী বলেন, “মাগরীব সম্পর্কে তিনি [আবূ বারযা (রাঃ)] কী বলেছিলেন, আমি তা ভুলে গেছি। আর ‘ইশার সালাত রাতের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত পিছিয়ে নিতে তিনি কোনোরূপ দ্বিধাবোধ করতেন না।” অতঃপর রাবী বলেন, “রাতের অর্ধাংশ পর্যন্ত পিছিয়ে নিতে অসুবিধা বোধ করতেন না।” আর মু’আজ (রহমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেন যে, শু’বাহ (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, পরে আবু মিনহাল (রহমাহুল্লাহ) এর সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছিল, সে সময় তিনি বলেছিলেন, “রাতের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিলম্ব করতে অসুবিধা বোধ করতেন না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٢ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ يَعْنِي ابْنَ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنِي غَالِبٌ القَطَّانُ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ المُزَنِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالظَّهَائِرِ، فَسَجَدْنَا عَلَى ثِيَابِنَا اتِّقَاءَ الحَرِّ»
মুহা’ম্মাদ অর্থাৎ ইব্ন মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: খালিদ ইব্ন ‘আব্দুর রহমান আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: গালিব ক্বাত্তান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বক্র ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ মুযানী থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমরা যখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর পিছনে গরমের সময় সালাত আদায় করতাম, তখন তাপ হতে রক্ষা পাবার জন্য কাপড়ের উপর সিজদা করতাম।” ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোট:
১. ঝড় বৃষ্টি কিংবা শংকা থাকলে যুহর-‘আসর এবং মাগরিব-‘ইশা সালাতকে এক সাথে পরপর আদায় করা জায়েজ। সফর অবস্থাতেও যুহর ও ‘আসর ক্কসর করে যুহরের ওয়াক্তে কিংবা ‘আসরের ওয়াক্তে আদায় করা জায়িজ। অনুরূপ অবস্থায় মাগরিবের তিন রাক‘আত ও পরক্ষণেই ‘ইশার দু’রাক‘আত একসঙ্গে আদায় করা সুন্নাত।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٣ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادٌ هُوَ ابْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى بِالْمَدِينَةِ سَبْعًا وَثَمَانِيًا: الظُّهْرَ وَالعَصْرَ وَالمَغْرِبَ وَالعِشَاءَ “، فَقَالَ أَيُّوبُ: لَعَلَّهُ فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ، قَالَ: عَسَى
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ তিনি হলেন ইব্ন যিয়াদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র ইব্ন দীনার থেকে, তিনি জাবির ইব্ন যায়দ থেকে, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় অবস্থানকালে (একবার) যুহর ও ‘আসরের আট রাক’আত এবং মাগরিব ও ‘ইশার সাত রাক’আত একত্রে মিলিত আদায় করেন। আইয়ূব (রহমাহুল্লাহ) বলেন, সম্ভবত এটা বৃষ্টির রাতে হয়েছিল। জাবির (রহমাহুল্লাহ) বললেন, সম্ভবত তাই।১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. ঝড় বৃষ্টি কিংবা শংকা থাকলে যুহর-‘আসর এবং মাগরিব-‘ইশা সালাতকে একসাথে পরপর আদায় করা জায়িজ। সফর অবস্থাতেও যুহর ও ‘আসর ক্বসর করে যুহরের ওয়াক্তে কিংবা ‘আসরের ওয়াক্তে আদায় করা জায়িজ। অনুরূপ অবস্থায় মাগরিবের তিন রাক’আত ও পরক্ষণেই ‘ইশার দু’রাক’আত একসঙ্গে আদায় করা সুন্নাত।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٤ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي العَصْرَ، وَالشَّمْسُ لَمْ تَخْرُجْ مِنْ حُجْرَتِهَا» وَقَالَ أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ: «مِنْ قَعْرِ حُجْرَتِهَا»
ইবরাহীম ইব্ন মুনযির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্ন ‘ইয়ায আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন ‘ইয়ায থেকে, তিনি হিশাম থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় ‘আসরের সালাত আদায় করতেন যে, তখনো সূর্যরশ্মি ঘরের বাইরে যায়নি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٥ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى العَصْرَ، وَالشَّمْسُ فِي حُجْرَتِهَا لَمْ يَظْهَرِ الفَيْءُ مِنْ حُجْرَتِهَا»
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লাইস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় ‘আসরের সালাত আদায় করেছিলেন যে, সূর্যরশ্মি তখনো তাঁর ঘরের মধ্যে ছিল, আর ছায়া তখনো তাঁর ঘর হতে বেরিয়ে পড়েনি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٦ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يُصَلِّي صَلَاةَ العَصْرِ وَالشَّمْسُ طَالِعَةٌ فِي حُجْرَتِي لَمْ يَظْهَرِ الفَيْءُ بَعْدُ»، وَقَالَ مَالِكٌ، وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَشُعَيْبٌ، وَابْنُ أَبِي حَفْصَةَ: «وَالشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ تَظْهَرَ»
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্ন ‘উয়ায়্না আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহুরী থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সালাত আদায় করতেন, আর সূর্যকিরণ তখনো আমার ঘরে থাকতো। সালাত আদায় করার পরও ছায়া (ঘরে) দৃষ্টিগোচর হতো না।” আবু ‘আবদুল্লাহ্ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেন, ইমাম মালিক, ইয়াহইয়া ইবনু সা’ঈদ, শুআইব ও ইবনু আবূ হাফস্ (রহমাহুল্লাহ) উক্ত সনদে এ হাদীসটির বর্ণনায়, ‘সূর্যরশ্মি আমার ঘরের ভিতরে থাকতো, ঘরের মেঝেতে ছায়া নেমে আসেনি’ এমন বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٧ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَوْفٌ، عَنْ سَيَّارِ بْنِ سَلَامَةَ، قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي عَلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، فَقَالَ لَهُ أَبِي: كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي المَكْتُوبَةَ؟ فَقَالَ: «كَانَ يُصَلِّي الهَجِيرَ، الَّتِي تَدْعُونَهَا الأُولَى، حِينَ تَدْحَضُ الشَّمْسُ، وَيُصَلِّي العَصْرَ، ثُمَّ يَرْجِعُ أَحَدُنَا إِلَى رَحْلِهِ فِي أَقْصَى المَدِينَةِ ، وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ – وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي المَغْرِبِ – وَكَانَ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُؤَخِّرَ العِشَاءَ، الَّتِي تَدْعُونَهَا العَتَمَةَ، وَكَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَالحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَكَانَ يَنْفَتِلُ مِنْ صَلَاةِ الغَدَاةِ حِينَ يَعْرِفُ الرَّجُلُ جَلِيسَهُ، وَيَقْرَأُ بِالسِّتِّينَ إِلَى المِائَةِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্ন মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আউফ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন সায়্য়ার ইব্ন সালামাহ থেকে, তিনি বললেন: একদা আমি ও আমার পিতা আবূ বারযা আসলামী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- এর নিকট গেলাম। আমার পিতা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয সালাতসমূহ কীভাবে আদায় করতেন? তিনি বললেন, “আল-হাজীর, যাকে তোমরা আল-উলা বা যুহর বলে থাকো, তা তিনি আদায় করতেন যখন সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়তো। আর ‘আসরের সালাত এমন সময় আদায় করতেন যে, অতঃপর আমাদের মাদিনার শেষ প্রান্তে তার ঘরে ফিরে যেতো আর সূর্য তখনও সতেজ থাকতো। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন তা আমি ভুলে গেছি। আর ‘ইশার সালাত যাকে তোমরা ‘আতামা’ বলে থাকো, তা তিনি বিলম্বে আদায় করা পছন্দ করতেন। আর তিনি ‘ইশার সালাতের পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন। তিনি ফজরের সালাত এমন সময় সমাপ্ত করতেন যখন প্রত্যেকে তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনতে পারতো। এ সালাতে তিনি ষাট হতে একশ’ আয়াত তিলাওয়াত করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي العَصْرَ، ثُمَّ يَخْرُجُ الإِنْسَانُ إِلَى بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ، فَنَجِدُهُمْ يُصَلُّونَ العَصْرَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি ইসহা’ক্ব ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ত্বালহা’হ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ‘আসরের সালাত আদায় করতাম। সালাতের পর লোকেরা ‘আমর ইনবু আওফ গোত্রের মহল্লায় গিয়ে তাদেরকে সালাত আদায় করা অবস্থায় পেতো।” ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনীর ৫১৫ নং হাদীসের টীকায় কি একথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, তারা ‘আসরের সালাত দেরী করে আদায় করতেন বলেই আমাদের দেশে ‘আসরের সালাত দেরীতে আদায় করা হয়। অথচ এটা উত্তম সময় ছিল না। কারণ উত্তম সময় হল দু’মাইল হাঁটার পূর্বে আদায়কৃত সালাতের সময়। আর ‘আসরের ওয়াক্ত সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বহাল থাকে, তাই বলে তা উত্তম সময় নয়।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٤٩ – حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ بْنَ سَهْلٍ، يَقُولُ: صَلَّيْنَا مَعَ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ العَزِيزِ الظُّهْرَ، ثُمَّ خَرَجْنَا حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فَوَجَدْنَاهُ يُصَلِّي العَصْرَ، فَقُلْتُ: يَا عَمِّ مَا هَذِهِ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّيْتَ؟ قَالَ: «العَصْرُ، وَهَذِهِ صَلَاةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّتِي كُنَّا نُصَلِّي مَعَهُ»
ইব্ন মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ বকর ইব্ন ‘উসমান ইব্ন সাহ্ল ইব্ন হু’নায়ফী আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি আবূ উমামা ইব্ন সাহ্ল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, একবার আমরা ‘উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহমাহুল্লাহ)-এর সঙ্গে যুহরের সালাত আদায় করলাম। অতঃপর সেখান হতে বেরিয়ে আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর নিকট গেলাম। আমরা গিয়ে তাঁকে ‘আসরের সালাত আদায়ে রত পেলাম। আমি তাঁকে বললাম চাচা! এ কোন্ সালাত যা আপনি আদায় করলেন? তিনি বললেন, “ ‘আসরের সালাত আর এ হলো আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সালাত, যা আমি তাঁর সাথে আদায় করতাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٠ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي العَصْرَ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ حَيَّةٌ، فَيَذْهَبُ الذَّاهِبُ إِلَى العَوَالِي، فَيَأْتِيهِمْ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ» وَبَعْضُ العَوَالِي مِنَ المَدِينَةِ عَلَى أَرْبَعَةِ أَمْيَالٍ أَوْ نَحْوِهِ
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহুরী থেকে, তিনি বললেন: আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, “তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সালাত আদায় করতেন, আর সূর্য তখনও যথেষ্ট উপরে উজ্জ্বল অবস্থায় বিরাজমান থাকতো। সালাতের পর কোনো গমনকারী ‘আওয়ালী’র ১ দিকে রওয়ানা হয়ে তাদের নিকট পৌছে যেতো, আর তখনও সূর্য উপরে থাকতো। আওয়ালীর কোন কোন অংশ ছিল মদীনা হতে চার মাইল বা তার কাছাকাছি দূরত্বে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. আওয়ালী বা উচু এলাকা। মদীনার উপকন্ঠে নজদের দিকের গ্রামগুলোকে আওয়ালী বা উচু এলাকা ধরা হত। আর তিহামার দিকের গ্রামগুলোকে ‘সাফিলা’ (سافله) বা নিম্নএলাকা বলা হত।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥١ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي العَصْرَ، ثُمَّ يَذْهَبُ الذَّاهِبُ مِنَّا إِلَى قُبَاءٍ، فَيَأْتِيهِمْ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমরা, ‘আসরের সালাত আদায় করতাম, অতঃপর আমাদের কোনো গমনকারী কুবার দিকে যেতো এবং সূর্য যথেষ্ট থাকতেই সে তাদের নিকট পৌঁছে যেতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٢ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الَّذِي تَفُوتُهُ صَلَاةُ العَصْرِ، كَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: {يَتِرَكُمْ} [محمد: ٣٥] «وَتَرْتُ الرَّجُلَ إِذَا قَتَلْتَ لَهُ قَتِيلًا أَوْ أَخَذْتَ لَهُ مَالًا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ই থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যদি কোন ব্যক্তির ‘আসরের সালাত ছুটে যায়, তাহলে যেন তার পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদ সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেল। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ [ইমাম বুখারী (রহমাহুল্লাহ)] বলেন, (আরবী পরিভাষায়) (আরবী) বাক্যটি ব্যবেহার করা হয় যখন কেউ কাউকে হত্যা করে অথবা মাল-সম্পদ ছিনিয়ে নেয়।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٣ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي المَلِيحِ، قَالَ: كُنَّا مَعَ بُرَيْدَةَ فِي غَزْوَةٍ فِي يَوْمٍ ذِي غَيْمٍ، فَقَالَ: بَكِّرُوا بِصَلَاةِ العَصْرِ، فَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ تَرَكَ صَلَاةَ العَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু আবূ কাসির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আবূ মালীহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা বুরাইদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর সঙ্গে ছিলাম। দিনটি ছিলো মেঘলা। তাই বুরাইদাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, শীঘ্র ‘আসরের সালাত আদায় করে নাও। কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার ‘আমাল বিনষ্ট হয়ে যায়।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٤ – حَدَّثَنَا الحُمَيْدِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَظَرَ إِلَى القَمَرِ لَيْلَةً – يَعْنِي البَدْرَ – فَقَالَ: «إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ، كَمَا تَرَوْنَ هَذَا القَمَرَ، لَا تُضَامُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ، فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لَا تُغْلَبُوا عَلَى صَلَاةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا فَافْعَلُوا» ثُمَّ قَرَأَ: {وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الغُرُوبِ} [ق: ٣٩]، قَالَ إِسْمَاعِيلُ: «افْعَلُوا لَا تَفُوتَنَّكُمْ»
হু’মায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মারওয়ান ইব্নু মু‘আবিয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বায়স থেকে, তিনি জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ ঐ চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা কোন ভীড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্য উদয়ের এবং অস্ত যাওয়ার পূর্বের সালাত (শয়তানের প্রভাবমুক্ত হয়ে) আদায় করতে পারলে তোমরা তাই করবে। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন, “কাজেই তোমার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবীহ্ পাঠ কর সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে”- (সুরা ক্বাফ ৫০:৩৯)। ইসমাঈল (রহমাহুল্লাহ) বলেন, এর অর্থ হল- এমনভাবে আদায় করার চেষ্টা করবে যেন কখনো ছুটে না যায়।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلَائِكَةٌ بِاللَّيْلِ وَمَلَائِكَةٌ بِالنَّهَارِ، وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلَاةِ الفَجْرِ وَصَلَاةِ العَصْرِ، ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ، فَيَسْأَلُهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ: كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي؟ فَيَقُولُونَ: تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ، وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “মালাকগণ পালা বদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; একদল দিনে, একদল রাতে। ‘আসর ও ফজরের সালাতে উভয় দল একত্র হন। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যান। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন্ অবস্থায় রেখে আসলে? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। উত্তরে তাঁরা বলেন, আমরা তাদের সালাতে রেখে এসেছি, আর আমরা যখন তাদের নিকট গিয়েছিলাম তখনও তারা সালাত আদায়রত অবস্থায় ছিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٦ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَدْرَكَ أَحَدُكُمْ سَجْدَةً مِنْ صَلَاةِ العَصْرِ، قَبْلَ أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ، فَلْيُتِمَّ صَلَاتَهُ، وَإِذَا أَدْرَكَ سَجْدَةً مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ، قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ، فَلْيُتِمَّ صَلَاتَهُ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া ইব্ন আবূ কাছীর থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যদি সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে ‘আসরের সালাতের এক সিজদা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্য উদিত হবার পূর্বে ফজরের সালাতের এক সিজদা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: ” إِنَّمَا بَقَاؤُكُمْ فِيمَا سَلَفَ قَبْلَكُمْ مِنَ الأُمَمِ كَمَا بَيْنَ صَلَاةِ العَصْرِ إِلَى غُرُوبِ الشَّمْسِ، أُوتِيَ أَهْلُ التَّوْرَاةِ التَّوْرَاةَ، فَعَمِلُوا حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ عَجَزُوا، فَأُعْطُوا قِيرَاطًا قِيرَاطًا، ثُمَّ أُوتِيَ أَهْلُ الإِنْجِيلِ الإِنْجِيلَ، فَعَمِلُوا إِلَى صَلَاةِ العَصْرِ، ثُمَّ عَجَزُوا، فَأُعْطُوا قِيرَاطًا قِيرَاطًا، ثُمَّ أُوتِينَا القُرْآنَ، فَعَمِلْنَا إِلَى غُرُوبِ الشَّمْسِ، فَأُعْطِينَا قِيرَاطَيْنِ قِيرَاطَيْنِ، فَقَالَ: أَهْلُ الكِتَابَيْنِ: أَيْ رَبَّنَا، أَعْطَيْتَ هَؤُلَاءِ قِيرَاطَيْنِ قِيرَاطَيْنِ، وَأَعْطَيْتَنَا قِيرَاطًا قِيرَاطًا، وَنَحْنُ كُنَّا أَكْثَرَ عَمَلًا؟ قَالَ: قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: هَلْ ظَلَمْتُكُمْ مِنْ أَجْرِكُمْ مِنْ شَيْءٍ؟ قَالُوا: لَا، قَالَ: فَهُوَ فَضْلِي أُوتِيهِ مَنْ أَشَاءُ “
‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহিল উওয়ায়্সী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম ইব্নু সা‘আদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সালিম ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন, “আগেকার উম্মাতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হলো ‘আসর হতে নিয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের ন্যায়। তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেয়া হয়েছিল। তারা তদনুযায়ী কাজ করতে লাগলো; যখন দুপুর হলো, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়লো। তাদের এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়। আর ইনজীল অনুসারীদেরকে ইনজীল দেয়া হলো। তারা ‘আসরের সালাত পর্যন্ত কাজ করে অপারগ হয়ে পড়লো। তাদেরকে এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক দেয়া হলো। অতঃপর আমাদেরকে কুরআন দেয়া হলো। আমরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম। আমাদের দু’ দু’ ‘কীরাত’ করে দেয়া হলো। এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের দু’ দু’ ‘কীরাত’ করে দান করেছেন, আর আমাদের দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশি। আল্লাহ্ তা‘আলা বললেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনোরূপ যুলুম করেছি? তারা বললো, না। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বললেনঃ এ হলো, আমার অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٨ – حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مَثَلُ المُسْلِمِينَ وَاليَهُودِ وَالنَّصَارَى، كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَأْجَرَ قَوْمًا، يَعْمَلُونَ لَهُ عَمَلًا إِلَى اللَّيْلِ، فَعَمِلُوا إِلَى نِصْفِ النَّهَارِ فَقَالُوا: لَا حَاجَةَ لَنَا إِلَى أَجْرِكَ، فَاسْتَأْجَرَ آخَرِينَ، فَقَالَ: أَكْمِلُوا بَقِيَّةَ يَوْمِكُمْ وَلَكُمُ الَّذِي شَرَطْتُ، فَعَمِلُوا حَتَّى إِذَا كَانَ حِينَ صَلَاةِ العَصْرِ، قَالُوا: لَكَ مَا عَمِلْنَا، فَاسْتَأْجَرَ قَوْمًا، فَعَمِلُوا بَقِيَّةَ يَوْمِهِمْ حَتَّى غَابَتِ الشَّمْسُ، وَاسْتَكْمَلُوا أَجْرَ الفَرِيقَيْنِ “
আবূ কুরায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বুরায়দ থেকে, তিনি আবূ বুরদাহ থেকে, তিনি আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মুসলিম, ইয়াহূদী ও নাসারাদের উদাহরণ হলো এমন, এক ব্যক্তি একদল লোককে নিয়োগ করলো, তারা তার জন্য রাত পর্যন্ত কাজ করবে। কিন্তু অর্ধদিবস পর্যন্ত কাজ করার পর তারা বললো, আপনার পারিশ্রমিকের আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। সে ব্যক্তি অন্য আরেক দল লোককে কাজে নিয়োগ করলো এবং বলল, তোমরা দিনের বাকী অংশ কাজ কর, তোমরা আমার নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবে। তারা কাজ করতে শুরু করলো। যখন ‘আসরের সালাতের সময় হলো, তখন তারা বললো, আমরা যা কাজ করেছি তা আপনার জন্য রেখে গেলাম। অতঃপর সে ব্যক্তি আরেক দল লোককে কাজে নিয়োগ করলো। তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত দিনের বাকী অংশে কাজ করলো এবং সে দু’দলের পূর্ণ পারিশ্রমিক অর্জন করলো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَقَالَ عَطَاءٌ: «يَجْمَعُ المَرِيضُ بَيْنَ المَغْرِبِ وَالعِشَاءِ»
আতা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, রুগ্ন ব্যক্তি মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করতে পারবে।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٥٩ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو النَّجَاشِيِّ صُهَيْبٌ مَوْلَى رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَافِعَ بْنَ خَدِيجٍ، يَقُولُ: «كُنَّا نُصَلِّي المَغْرِبَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَنْصَرِفُ أَحَدُنَا وَإِنَّهُ لَيُبْصِرُ مَوَاقِعَ نَبْلِهِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মিহ্রান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাফি‘ই ইব্ন খাদীজ- এর স্বাধীন করা গুলাম আবূ নাজাশী স্বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি রাফি‘ ইবনু খাদীজ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, “আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করে এমন সময় ফিরে আসতাম যে, আমাদের কেউ (তীর নিক্ষেপ করলে) নিক্ষিপ্ত তীর পড়ার জায়গা দেখতে পেতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٠ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ: قَدِمَ الحَجَّاجُ فَسَأَلْنَا جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، فَقَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الظُّهْرَ بِالهَاجِرَةِ، وَالعَصْرَ وَالشَّمْسُ نَقِيَّةٌ، وَالمَغْرِبَ إِذَا وَجَبَتْ، وَالعِشَاءَ أَحْيَانًا وَأَحْيَانًا، إِذَا رَآهُمُ اجْتَمَعُوا عَجَّلَ، وَإِذَا رَآهُمْ أَبْطَؤُوا أَخَّرَ، وَالصُّبْحَ كَانُوا – أَوْ كَانَ – النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيهَا بِغَلَسٍ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘আদ ইব্ন ইবরাহীম থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইবনু ‘আমর ইবনু হাসান ইবনু ‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: হাজ্জাজ (ইবনু ইউসুফ) (মদীনায়) এলে আমরা জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে সালাতের ওয়াক্ত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম, (কেননা, হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ বিলম্ব করে সালাত আদায় করতেন)। তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত প্রচন্ড গরমের সময় আদায় করতেন। আর ‘আসরের সালাত সূর্য উজ্জ্বল থাকতে আদায় করতেন, মাগরিবের সালাত সূর্য অস্ত যেতেই আর ‘ইশার সালাত বিভিন্ন সময়ে আদায় করতেন। যদি দেখতেন, সকলেই সমবেত হয়েছেন, তাহলে সকাল সকাল আদায় করতেন। আর যদি দেখতেন, লোকজন আসতে দেরী করছে, তাহলে বিলম্বে আদায় করতেন। আর ফজরের সালাত তাঁরা কিংবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্ধকার থাকতে আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦١ – حَدَّثَنَا المَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَغْرِبَ إِذَا تَوَارَتْ بِالحِجَابِ»
মাক্কী ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু আবূ ‘উবায়দাআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সালামাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করতাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٢ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: «صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبْعًا جَمِيعًا وَثَمَانِيًا جَمِيعًا»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু দীনার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্ন যায়দ থেকে শুনলাম, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মাগরিব ও ‘ইশার) সাত রাক’আত ও (যুহর ও ‘আসরের) আট রাক’আত একত্রে আদায় করেছেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٣ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، عَنِ الحُسَيْنِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُغَفَّلٍ المُزَنِيُّ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تَغْلِبَنَّكُمُ الأَعْرَابُ عَلَى اسْمِ صَلَاتِكُمُ المَغْرِبِ» قَالَ الأَعْرَابُ: وَتَقُولُ: هِيَ العِشَاءُ
আবূ মা‘আমার, তিনি হলেন আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’সায়ন থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু বুরায়দাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মুগাফ্ফাল মুযানী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: বেদুঈনরা মাগরিবের সালাতের নামের ব্যাপারে তোমাদের উপর যেন প্রভাব বিস্তার না করে। রাবী (‘আবদুল্লাহ্ মুযানী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, বেদুঈনরা মাগরিবকে ‘ইশা বলে থাকে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَثْقَلُ الصَّلَاةِ عَلَى المُنَافِقِينَ العِشَاءُ وَالفَجْرُ» وَقَالَ: «لَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالفَجْرِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: ” وَالِاخْتِيَارُ: أَنْ يَقُولَ العِشَاءُ، لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَمِنْ بَعْدِ صَلَاةِ العِشَاءِ} [النور: ٥٨] ” وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: «كُنَّا نَتَنَاوَبُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ صَلَاةِ العِشَاءِ فَأَعْتَمَ بِهَا» وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ، وَعَائِشَةُ: «أَعْتَمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالعِشَاءِ» وَقَالَ بَعْضُهُمْ، عَنْ عَائِشَةَ: «أَعْتَمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالعَتَمَةِ» وَقَالَ جَابِرٌ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي العِشَاءَ» وَقَالَ أَبُو بَرْزَةَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُؤَخِّرُ العِشَاءَ» وَقَالَ أَنَسٌ: «أَخَّرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العِشَاءَ الآخِرَةَ» وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ، وَأَبُو أَيُّوبَ، وَابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ: «صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَغْرِبَ وَالعِشَاءَ»
১. ইশার সালাত দেরী করে আদায় করেছেন এর জন্য (اَخَّرُ الْعَشَاءَ) না বলে (اَعْتَمَ) শব্দটি ব্যবাহার করেছেন। যাতে বর্ণনায় ইশা ও আতামা বলার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি তার বর্ণনায় ইশা ও আতামা দু’টো শব্দই ব্যবহার করেছেন।
২. শেষ ইশা বলে ইশা ও ইশার সালাতকেই বুঝানো হয়েছে। কেননা, কোন কোন ক্ষেত্রে মাগরিবকেও ইশা বলা হয়। আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নিবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন যে, মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর সালাত হল ‘ইশা ও ফজর। তিনি আরও বলেছেন যে, তারা যদি জানতো, আতামা (ইশা) ও ফযরে কি কল্যাণ নিহিত আছে। ইমামা বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইশা শব্দ ব্যবহার করাই উত্তম। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন: “ইশা সালাতের পর” -(সূরাহ আন-নূর ২৪:৫৮) আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমরা পালাক্রমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এখানে ‘ইশার সালাতের সময় যেতাম। একবার তিনিও দেরী করে আদায় করেন। ইবনু ‘আব্বাস ও ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) হতে (এরূপ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশা দেরী করে আদায় করেন। বর্ণনাকারীদের কেউ কেউ বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আতামাহকে দেরী করে আদায় করেন। জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করলেন। আবূ বারযা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত বিলম্বে আদায় করতেন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ ‘ইশা বিলম্বে আদায় করলেন। ইব্নু উমর, আবূ আইয়ূব ও ইব্নূ ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুম) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিব ও ‘ইশার সালাত আদায় করেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٤ – حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: سَالِمٌ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً صَلَاةَ العِشَاءِ، وَهِيَ الَّتِي يَدْعُو النَّاسُ العَتَمَةَ، ثُمَّ انْصَرَفَ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا، فَقَالَ: «أَرَأَيْتُمْ لَيْلَتَكُمْ هَذِهِ، فَإِنَّ رَأْسَ مِائَةِ سَنَةٍ مِنْهَا، لَا يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ أَحَدٌ»
‘আব্দান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহুরী থেকে, তিনি সালিম থেকে, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, “এক রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে ‘ইশার সালাত আদায় করেন, যে সালাতকে লোকেরা ‘আতামা’ বলে থাকে। অতঃপর তিনি ফিরে আমাদের দিকে মুখ করে বললেন, আজকের এ রাত সম্পর্কে তোমরা জান কি? এ রাত হতে নিয়ে একশ’ বছরের শেষ মাথায় আজ যারা ভূপৃষ্ঠে আছে তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٥ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو هُوَ ابْنُ الحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ: سَأَلْنَا جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ صَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «كَانَ يُصَلِّي الظُّهْرَ بِالهَاجِرَةِ، وَالعَصْرَ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ، وَالمَغْرِبَ إِذَا وَجَبَتْ، وَالعِشَاءَ إِذَا كَثُرَ النَّاسُ عَجَّلَ، وَإِذَا قَلُّوا أَخَّرَ، وَالصُّبْحَ بِغَلَسٍ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘আদ ইব্ন ইবরাহীম থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইবনু ‘আমর ইবনু হাসান ইবনু ‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমরা জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সালাত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, “মধ্যাহ্ন গড়ালেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত আদায় করতেন এবং সূর্য সতেজ থাকতে ‘আসর আদায় করতেন। আর সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাবার সাথে সাথে মাগরিব আদায় করতেন। ‘ইশার সালাতে লোকদের আধিক্য হলেই দ্রুত আদায় করে নিতেন আর সংখ্যায় কম হলে দেরীতে আদায় করতেন। ফজরের সালাত অন্ধকার থাকতেই আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٦ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ، قَالَتْ: أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً بِالعِشَاءِ، وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يَفْشُوَ الإِسْلَامُ، فَلَمْ يَخْرُجْ حَتَّى قَالَ عُمَرُ: نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ، فَخَرَجَ، فَقَالَ لِأَهْلِ المَسْجِدِ: «مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ غَيْرَكُمْ»
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু বাকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করতে বিলম্ব করলেন। এ হলো ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রসারের পূর্বের কথা। (সালাতের জন্য) তিনি বেরিয়ে আসেননি, এমন কি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে এলেন এবং মসজিদের লোকদের লক্ষ্য করে বললেনঃ “তোমরা ব্যতীত যমীনের অধিবাসীদের কেউ ‘ইশার সালাতের জন্য অপেক্ষায় নেই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٧ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ العَلَاءِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: كُنْتُ أَنَا وَأَصْحَابِي الَّذِينَ قَدِمُوا مَعِي فِي السَّفِينَةِ نُزُولًا فِي بَقِيعِ بُطْحَانَ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْمَدِينَةِ، فَكَانَ يَتَنَاوَبُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ صَلَاةِ العِشَاءِ كُلَّ لَيْلَةٍ نَفَرٌ مِنْهُمْ، فَوَافَقْنَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا وَأَصْحَابِي، وَلَهُ بَعْضُ الشُّغْلِ فِي بَعْضِ أَمْرِهِ، فَأَعْتَمَ بِالصَّلَاةِ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ، ثُمَّ خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى بِهِمْ، فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ، قَالَ لِمَنْ حَضَرَهُ: «عَلَى رِسْلِكُمْ، أَبْشِرُوا، إِنَّ مِنْ نِعْمَةِ اللَّهِ عَلَيْكُمْ، أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ يُصَلِّي هَذِهِ السَّاعَةَ غَيْرُكُمْ» أَوْ قَالَ: «مَا صَلَّى هَذِهِ السَّاعَةَ أَحَدٌ غَيْرُكُمْ» لَا يَدْرِي أَيَّ الكَلِمَتَيْنِ قَالَ، قَالَ أَبُو مُوسَى فَرَجَعْنَا، فَفَرِحْنَا بِمَا سَمِعْنَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আলা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন বুরায়দাহ থেকে, তিনি আবূ বরদাহ থেকে, তিনি আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমি ও আমার সাথীরা-যারা (আবিসিনিয়া হতে) জাহাজ মারফত আমার সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন- বাকী‘য়ে বুতহানের একটা মুক্ত এলাকায় বসবাসরত ছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থাকতেন মদীনায়। বুতহানের অধিবাসীরা পালাক্রমে একদল করে প্রতি রাতে ‘ইশার সালাতের সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খিদমতে আসতেন। পালাক্রমে ‘ইশার সালাতের সময় আমি ও আমার কতিপয় সঙ্গী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে হাযির হলাম। তখন তিনি কোনো কাজে খুব ব্যস্ত ছিলেন, ফলে সালাত আদায়ে বিলম্ব করলেন। এমন কি রাত অর্ধেক হয়ে গেলো। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এলেন এবং সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে বললেনঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে বসে যাও। তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি যে, আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের জন্য এটি এক নিয়ামত যে, তোমরা ছাড়া মানুষের মধ্যে কেউ এ মুহূর্তে সালাত আদায় করছে না। কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা ছাড়া কোনো উম্মাত এ সময় সালাত আদায় করেনি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন্ বাক্যটি বলেছিলেন বর্ণনাকারী তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এ কথা শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত মনে বাড়ি ফিরলাম।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٨ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ الحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي المِنْهَالِ، عَنْ أَبِي بَرْزَةَ، «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَ العِشَاءِ وَالحَدِيثَ بَعْدَهَا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সালাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব ছাক্বাফী আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: খালিদ হা’যা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ মিনহাল থেকে, তিনি আবূ বারযাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٦٩ – حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ سُلَيْمَانَ هُوَ ابْنُ بِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ هُوَ ابْنُ بِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ، أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ: أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالعِشَاءِ حَتَّى نَادَاهُ عُمَرُ: الصَّلَاةَ نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ، فَخَرَجَ، فَقَالَ: «مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ غَيْرُكُمْ»، قَالَ: وَلَا يُصَلَّى يَوْمَئِذٍ إِلَّا بِالْمَدِينَةِ، وَكَانُوا يُصَلُّونَ فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ الأَوَّلِ
আয়্য়ূব ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তিনি (সুলায়মান) হলেন ইব্নু বিলাল, তিনি বললেন: আবূ বাক্র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সূলায়মান থেকে তিনি (সুলায়মান) হলেন ইব্ন বিলাল, তিনি বললেন: স্বালিহ’ ইব্নু কায়সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু শিহাব আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করলেন। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে বললেন, আস্-সালাত। নারী ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তোমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের জন্য অপেক্ষা করছে না।” (রাবী বলেন) তখন মদীনা ছাড়া অন্য কোথাও সালাত আদায় করা হতো না। (তিনি আরও বলেন যে) পশ্চিম আকাশের ‘শাফাক’ (পশ্চিম আকাশের লাল কিরণ) অন্তর্হিত হবার পর হতে রাতের প্রথম এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে তাঁরা ‘ইশা সালাত আদায় করতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٠ – حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ يَعْنِي ابْنَ غَيْلَانَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شُغِلَ عَنْهَا لَيْلَةً، فَأَخَّرَهَا حَتَّى رَقَدْنَا فِي المَسْجِدِ، ثُمَّ اسْتَيْقَظْنَا، ثُمَّ رَقَدْنَا، ثُمَّ اسْتَيْقَظْنَا، ثُمَّ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قَالَ: «لَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ غَيْرُكُمْ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «لَا يُبَالِي أَقَدَّمَهَا أَمْ أَخَّرَهَا، إِذَا كَانَ لَا يَخْشَى أَنْ يَغْلِبَهُ النَّوْمُ عَنْ وَقْتِهَا، وَكَانَ يَرْقُدُ قَبْلَهَا»،
মুহা’ম্মাদ অর্থাৎ ইব্না গায়লান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রাযাযাক্ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: নাফি‘ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: এক রাতে কর্মব্যস্ততার কারণে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায়ে দেরী করলেন, এমন কি আমরা মসজিদে ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর জেগে উঠে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর আবার জেগে উঠলাম। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে এলেন, অতঃপর বললেন, “তোমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের অপেক্ষা করছে না”। ঘুম প্রবল হবার কারণে ‘ইশার সালাত বিনষ্ট হবার আশংকা না থাকলে ইবনু ‘উমর (রাঃ) তা আগে ভাগে বা বিলম্ব করে আদায় করতে দ্বিধা করতেন না। কখনও কখনও তিনি ‘ইশার পূর্বে নিদ্রাও যেতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧١ – قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ: قُلْتُ لِعَطَاءٍ، وَقَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ: أَعْتَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً بِالعِشَاءِ، حَتَّى رَقَدَ النَّاسُ وَاسْتَيْقَظُوا، وَرَقَدُوا وَاسْتَيْقَظُوا، فَقَامَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ فَقَالَ: الصَّلَاةَ – قَالَ عَطَاءٌ: قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ -: فَخَرَجَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ الآنَ، يَقْطُرُ رَأْسُهُ مَاءً، وَاضِعًا يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ، فَقَالَ: «لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي، لَأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُصَلُّوهَا هَكَذَا» فَاسْتَثْبَتُّ عَطَاءً كَيْفَ وَضَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رَأْسِهِ يَدَهُ، كَمَا أَنْبَأَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ فَبَدَّدَ لِي عَطَاءٌ بَيْنَ أَصَابِعِهِ شَيْئًا مِنْ تَبْدِيدٍ، ثُمَّ وَضَعَ أَطْرَافَ أَصَابِعِهِ عَلَى قَرْنِ الرَّأْسِ، ثُمَّ ضَمَّهَا يُمِرُّهَا كَذَلِكَ عَلَى الرَّأْسِ، حَتَّى مَسَّتْ إِبْهَامُهُ طَرَفَ الأُذُنِ، مِمَّا يَلِي الوَجْهَ عَلَى الصُّدْغِ، وَنَاحِيَةِ اللِّحْيَةِ، لَا يُقَصِّرُ وَلَا يَبْطُشُ إِلَّا كَذَلِكَ، وَقَالَ: «لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُصَلُّوا هَكَذَا»
ইবনু জুরায়জ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, এ বিষয়ে আমি আতা (রহমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বলতে শুনেছি যে, এক রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করেছিলেন, এমন কি লোকজন একবার ঘুমিয়ে জেগে উঠল, আবার ঘুমিয়ে পড়ে জাগ্রত হলো। তখন ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) উঠে গিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বললেন, ‘আস-সালাত’। ‘আত্বা (রহমাহুল্লাহ) বলেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেছেন, অতঃপর আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এলেন- যেন এখনো আমি তাঁকে দেখছি- তাঁর মাথা হতে পানি টপকে পড়ছিলো এবং তাঁর হাত মাথার উপর ছিলো। তিনি এসে বললেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবে (বিলম্ব করে) ‘ইশার সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম। ইবনু জুরায়জ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে মাথায় হাত রেখেছিলেন তা কীভাবে রেখেছিলেন, বিষয়টি সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করার জন্য আতা (রহমাহুল্লাহ)-কে বললাম। আতা (রহমাহুল্লাহ) তাঁর আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁক করলেন, অতঃপর সেগুলোর অগ্রভাগ সম্মুখ দিক হতে (চুলের অভ্যন্তরে) প্রবেশ করালেন। অতঃপর অঙ্গুলিগুলো একত্রিত করে মাথার উপর দিয়ে এভাবে টেনে নিলেন যে, তার বৃদ্ধাঙ্গুলি কানের সে পার্শ্বকে স্পর্শ করে গেলো যা মুখমণ্ডল সংলগ্ন চোয়ালের হাড্ডির উপর শ্মশ্রুর পাশে অবস্থিত। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] চুলের পানি ঝরাতে কিংবা চুল চাপড়াতে এমনই করতেন। এবং তিনি বলেছিলেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবেই (বিলম্ব করে) সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَقَالَ أَبُو بَرْزَةَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَحِبُّ تَأْخِيرَهَا»
আবূ বারযা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইশার সালাত দেরীতে আদায় করা পছন্দ করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٢ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ المُحَارِبِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: أَخَّرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ العِشَاءِ إِلَى نِصْفِ اللَّيْلِ، ثُمَّ صَلَّى، ثُمَّ قَالَ: «قَدْ صَلَّى النَّاسُ وَنَامُوا، أَمَا إِنَّكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا انْتَظَرْتُمُوهَا»، وَزَادَ ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ، سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ: «كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ خَاتَمِهِ لَيْلَتَئِذٍ»
‘আব্দুর রাহীম মুহা’রিবী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যায়েদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়দ ত্বাবীল থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন: একরাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত অর্ধেক রাত পর্যন্ত বিলম্ব করলেন। অতঃপর সালাত আদায় করে তিনি বললেন, “লোকেরা নিশ্চয়ই সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে। শোন! তোমরা যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় ছিলে ততক্ষণ তোমরা সালাতেই ছিলে। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহমাহুল্লাহ)-এর বর্ণনায় আরও আছে, তিনি বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু আইউব (রহমাহুল্লাহ) হুমায়দ (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (হুমায়দ) আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বলতে শুনেছেন, সে রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আংটির উজ্জ্বলতা আমি যেন এখনও দেখতে পাচ্ছি।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٣ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا قَيْسٌ، قَالَ لِي جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ: كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ نَظَرَ إِلَى القَمَرِ لَيْلَةَ البَدْرِ، فَقَالَ: «أَمَا إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا، لَا تُضَامُّونَ – أَوْ لَا تُضَاهُونَ – فِي رُؤْيَتِهِ فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لَا تُغْلَبُوا عَلَى صَلَاةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا، فَافْعَلُوا» ثُمَّ قَالَ: «وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসমা‘ঈল থেকে, তিনি বললেন: ক্বায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: এক রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “শোন! এটি যেমন দেখতে পাচ্ছো- তোমাদের প্রতিপালককেও তোমরা তেমনি দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই তোমরা যদি সূর্য উঠার পূর্বের সালাত ও সূর্য ডুবার পূর্বের সালাত আদায়ে সমর্থ হও, তাহলে তাই কর”। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসায় তাসবীহ্ পাঠ করুন”- (সূরাহ্ ত্ব-হা্ ২০/১৩)। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রহমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনু শিহাব (রহমাহুল্লাহ)…. জারীর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে আরো বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে খালি চোখে দেখতে পাবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٤ – حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنِي أَبُو جَمْرَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ صَلَّى البَرْدَيْنِ دَخَلَ الجَنَّةَ» وَقَالَ ابْنُ رَجَاءٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، أَنَّ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ أَخْبَرَهُ بِهَذَا، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا أَبُو جَمْرَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
হুদবাহ ইব্নু খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হাম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ জামরাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ বক্র ইবনু আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে তাঁর পিতার সূত্র থেকে, তিনি বলেন, আল্লহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; “যে ব্যক্তি দুই শীতের (ফজর ও ‘আসরের) সালাত আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে”। ইবনু রজা‘ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, হাম্মাম (রহমাহুল্লাহ) আবূ জামরাহ (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেন যে, আবূ বক্র ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু কায়স (রহমাহুল্লাহ) তাঁর নিকট এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٥ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، حَدَّثَهُ: ” أَنَّهُمْ تَسَحَّرُوا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ، قُلْتُ: كَمْ بَيْنَهُمَا؟ قَالَ: قَدْرُ خَمْسِينَ أَوْ سِتِّينَ “، يَعْنِي آيَةً
‘আম্র ইব্নু ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হাম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি যায়দ ইবনু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “তাঁরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে সাহারী খেয়েছেন, অতঃপর ফজরের সালাতে দাঁড়িয়েছেন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ দু’য়ের মাঝে কতটুকু সময়ের ব্যবধান ছিলো? তিনি বললেন, পঞ্চাশ বা ষাট আয়াত তিলাওয়াত করা যায়, এরূপ সময়ের ব্যবধান ছিলো”।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٦ – حَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ ، سَمِعَ رَوْحَ بْنَ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَزَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ: «تَسَحَّرَا فَلَمَّا فَرَغَا مِنْ سَحُورِهِمَا، قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الصَّلَاةِ، فَصَلَّى»، قُلْنَا لِأَنَسٍ: كَمْ كَانَ بَيْنَ فَرَاغِهِمَا مِنْ سَحُورِهِمَا وَدُخُولِهِمَا فِي الصَّلَاةِ؟ قَالَ: «قَدْرُ مَا يَقْرَأُ الرَّجُلُ خَمْسِينَ آيَةً»
হা’সান ইব্নু স্বাব্বাহ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাওহা’ ইব্ন ‘ঊবাদাহ শুনলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও যায়দ ইবনু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) একসাথে সাহারী খাচ্ছিলেন, যখন তাঁদের খাওয়া হয়ে গেলো- আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ফজরের) সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন। কাতাদা্ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমরা আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তাঁদের সাহারী খাওয়া হতে অবসর হয়ে সালাত শুরু করার মধ্যে কতটুকু সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, একজন লোক পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারে এতটুকু সময়”।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٧ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، عَنْ أَخِيهِ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، أَنَّهُ سَمِعَ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ، يَقُولُ: «كُنْتُ أَتَسَحَّرُ فِي أَهْلِي، ثُمَّ يَكُونُ سُرْعَةٌ بِي، أَنْ أُدْرِكَ صَلَاةَ الفَجْرِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
ইসমা ‘ঈল ইব্নু আবূ উওয়াইস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর ভাই এর থেকে, তিনি সুলায়মান থেকে, তিনি আবূ হা’যিম থেকে, তিনি সাহল ইবনু সা‘দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলেন, তিনি বলেন, “আমি আমার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সাহারী খেতাম। খাওয়ার পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ফজরের সালাত পাওয়ার জন্য আমাকে খুব তাড়াহুড়া করতে হতো”।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٨ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ، قَالَتْ: «كُنَّ نِسَاءُ المُؤْمِنَاتِ يَشْهَدْنَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الفَجْرِ مُتَلَفِّعَاتٍ بِمُرُوطِهِنَّ، ثُمَّ يَنْقَلِبْنَ إِلَى بُيُوتِهِنَّ حِينَ يَقْضِينَ الصَّلَاةَ، لَا يَعْرِفُهُنَّ أَحَدٌ مِنَ الغَلَسِ»
ইয়াহ্ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘উকায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়র আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “মুসলিম মহিলাগণ সর্বাঙ্গ চাদরে ঢেকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ফজরের জামা’আতে হাযির হতেন। অতঃপর সালাত আদায় করে তারা নিজ নিজ ঘরে ফিরে যেতেন। আবছা আঁধারে কেউ তাঁদের চিনতে পারতো না।” ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, আমাদের দেশে অধিকাংশ মসজিদে যে সময় ফজরের সালাত আদায় করা হয় তা আদৌ এ হাদীস অনুযায়ী ‘আমল করা হয় না। কারণ ফজরের সালাত এমন অবস্থায় শেষ করা হয় যে, নিকট হতে তো দূরের কথা অনেক দূর থেকেও একে অন্যকে চিনতে পারে। শুধু তা-ই নয়। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, রমযানের দিনগুলোতে যে সময় ফজরের আযান দেয়া হয় তার থেকে রমযান শুরুর পূর্বদিন ও ঈদুল ফিতরের দিন থেকে তার অনেক পরে আযান দেয়া হয়। অথচ একদিনে সময়ের ব্যবধান এত হতে পারে না। যদি কেউ নফল সওমের জন্য রমযানের সময়ের বাইরে দেয়া আযান পর্যন্ত সাহারী খেতে থাকেন তাহলে তার সাওম আদৌ হবে কি? কারণ উক্ত আযানের সময় সাহারীর শেষ সময়ও পার হয়ে যায়। দলিলহীনভাবে এ রকম না করে উচিত ছিল সর্বদা রমযানের ন্যায়ই অন্য সময়ও আযান দেয়া যেন আযানের পূর্ব পর্যন্ত সাহারী খেলে সাহারীর সময় থাকে। শুধু তাই নয় বরং শুধুমাত্র রমযান মাসেই তারা আউয়াল ওয়াক্তে ফজরের সালাত আদায় করে থাকেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٧٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، وَعَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، وَعَنِ الأَعْرَجِ يُحَدِّثُونَهُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَدْرَكَ مِنَ الصُّبْحِ رَكْعَةً قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ، فَقَدْ أَدْرَكَ الصُّبْحَ، وَمَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ العَصْرِ قَبْلَ أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ، فَقَدْ أَدْرَكَ العَصْرَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি যায়দ ইব্ন আসলাম থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার ইব্ন থেকে, তিনি বুসর ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি আ‘আরাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সূর্য উঠার পূর্বে ফজরের সালাতের এক রাক‘আত পায়, সে ফজরের সালাত পেল। আর যে ব্যক্তি সূর্য ডুবার পূর্বে ‘আসরের সালাতের এক রাক‘আত পেলো সে আসরের সালাত পেলো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٠ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصَّلَاةِ، فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইঊসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন ‘আব্দুর রহমান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সালাতের এক রাক‘আত পায়, সে সালাত পেলো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨١ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي العَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: شَهِدَ عِنْدِي رِجَالٌ مَرْضِيُّونَ وَأَرْضَاهُمْ عِنْدِي عُمَرُ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنِ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَشْرُقَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ»
হা’ফস্ব ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আবূ ‘আলিয়াহ থেকে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, কয়েকজন আস্থাভাজন ব্যক্তি- যাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে বলেছেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের পর সূর্য উজ্জ্বল হয়ে না উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [আ. প্র. ৫৪৭, ই. ফা. ৫৫৪]
৫৮১/১. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার নিকট কয়েক ব্যক্তি এরূপ বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [মুসলিম ৬/৫১, হাঃ ৮২৬] [আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৫৫৫]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٢ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، سَمِعْتُ أَبَا العَالِيَةِ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي نَاسٌ بِهَذَا
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘উবাহ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ আলিয়াহ থেকে শুনলাম, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে বললেন, “আমাকে এরূপই (পূর্বের হাদীসটির অনুরূপ) বর্ণনা করেছেন”।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٣ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَحَرَّوْا بِصَلَاتِكُمْ طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوبَهَا» وَقَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَرْتَفِعَ، وَإِذَا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَغِيبَ» تَابَعَهُ عَبْدَةُ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইবনু ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মসয় সালাত আদায়ের ইচ্ছা করো না।” এবং তিনি (হিসামের পিতা) আরও বললেন: ইব্নু ‘উমার আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যদি সূর্যের একাংশ প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে পূর্ণরূপে উদিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায়ে দেরি করো। আর যদি তার একাংশ ডুবে যায় তাহলে সম্পূর্ণরূপে অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায়ে দেরি করো।” ‘আবদাহও এ রকমই বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٤ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: ” أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ بَيْعَتَيْنِ، وَعَنْ لِبْسَتَيْنِ وَعَنْ صَلَاتَيْنِ: نَهَى عَنِ الصَّلَاةِ بَعْدَ الفَجْرِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ، وَعَنِ اشْتِمَالِ الصَّمَّاءِ، وَعَنْ الِاحْتِبَاءِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ، يُفْضِي بِفَرْجِهِ إِلَى السَّمَاءِ، وَعَنِ المُنَابَذَةِ، وَالمُلَامَسَةِ “
‘উবায়দ ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ উসামাহ থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি খুবায়ব ইব্ন ‘আব্দুর রহমামন থেকে, তিনি হা’ফস্ব ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ধরনের বেচা-কেনা করতে, দু’ভাবে পোষাক পরিধান করতে এবং দু’সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য পূর্ণরূপে উদিত না হওয়া পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। আর পুরো শরীর জড়িয়ে কাপড় পরতে এবং এক কাপড়ে (যেমন লুঙ্গি ইত্যাদি পরে) হাঁটু খাড়া করে এমনভাবে বসতে নিষেধ করেছেন যাতে লজ্জাস্থান উপরের দিকে খুলে যায়। আর মুনাবাযাহ ১ ও মুলামাসাহ ২ (এর পন্থায় বেচা-কেনা) নিষেধ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. মুনাবাযাঃ বিভিন্ন দরের একাধিক পণ্যদ্রব্য একস্থানে রেখে মূল্য হিসেবে একটি অংক নির্ধারণ করে এ শর্তে বিক্রি করা যে, ক্রেতা নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব থেকে পাথর নিক্ষেপ করে যে পণ্যের গায়ে লাগাতে পারবে, উল্লেখিত মূল্যে তাকে তা বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ করতে হবে। এ পন্থার বেচা-কেনা “মুনাবাযা” বলে অভিহিত।
২. মুলামাসাঃ একাধিক পণ্যের প্রত্যেকটির ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্য নির্ধারণ করে এভাবে বিক্রি করা যে, ক্রেতা যেটি স্পর্শ করবে, পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে তাকে অবশ্যই তা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের বেচাকেনা শরয়ী পরিভাষায় ‘মুলামাসা’ বলে অভিহিত। যেহেতু এতে পসন্দ অপসন্দের স্বাধীনতা থাকে না, তাই শরীয়াত এ দু’টো পন্থাকে নিষিদ্ধ করেছে।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَتَحَرَّى أَحَدُكُمْ، فَيُصَلِّي عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلَا عِنْدَ غُرُوبِهَا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফী’ থেকে, তিনি ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের উদ্যোগ না নেয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٦ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ الجُنْدَعِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا صَلَاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ، وَلَا صَلَاةَ بَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ»
আব্দুল আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ’ থেকে, তিনি ইব্ন হিশাম থেকে, তিনি বললেন: ‘আত্বা ইব্নু ইয়াযীদ জুনদা’ঈ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলছেন: আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, “ফজরের পর সূর্য উদিত হয়ে (একটু) উপরে না উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত কোন সালাত নেই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٧ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ: سَمِعْتُ حُمْرَانَ بْنَ أَبَانَ، يُحَدِّثُ عَنْ مُعَاوِيَةَ، قَالَ: «إِنَّكُمْ لَتُصَلُّونَ صَلَاةً لَقَدْ صَحِبْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا رَأَيْنَاهُ يُصَلِّيهَا، وَلَقَدْ نَهَى عَنْهُمَا»، يَعْنِي: الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ العَصْرِ
মুহাম্মাদ ইব্নু আবান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুনদার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ তায়্য়্যাহ’ থেকে, তিনি বললেন: আমি হু’রমান ইব্ন আবান থেকে শুনলাম, তিনি মু’আবিয়া (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন, “তোমরা এমন এক সালাত আদায় করে থাক-রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাহচর্য লাভ করা সত্ত্বেও আমরা তাঁকে কখনও তা আদায় করতে দেখিনি। বরং তিনি তা হতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ ‘আসরের পর দু’রাক’আত।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٨ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ خُبَيْبٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: ” نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلَاتَيْنِ: بَعْدَ الفَجْرِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ “
মুহাম্মাদ ইব্নু সালাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আবদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি খুবায়ব থেকে, তিনি হা’ফ্স্ব ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য ডুবা পর্যন্ত।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
رَوَاهُ عُمَرُ، وَابْنُ عُمَرَ، وَأَبُو سَعِيدٍ، وَأَبُو هُرَيْرَةَ
‘উমার, ইব্নু ‘উমার আবূ সায়ীদ, ও আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٨٩ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: ” أُصَلِّي كَمَا رَأَيْتُ أَصْحَابِي يُصَلُّونَ: لَا أَنْهَى أَحَدًا يُصَلِّي بِلَيْلٍ وَلَا نَهَارٍ مَا شَاءَ، غَيْرَ أَنْ لَا تَحَرَّوْا طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوبَهَا “
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়য়ুব থেকে, তিনি নাফি’ থেকে, তিনি ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আমি আমার সাথীদের যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি সেভাবেই আমি সালাত আদায় করি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়ে সালাতের ইচ্ছা করা ভিন্ন রাতে বা দিনে যে কোন সময়ে কেউ সালাত আদায় করতে চাইলে আমি নিষেধ করি না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ كُرَيْبٌ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ العَصْرِ رَكْعَتَيْنِ، وَقَالَ: «شَغَلَنِي نَاسٌ مِنْ عَبْدِ القَيْسِ عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ»
কুরাইব উম্মে সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসরের পর দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করলেন এবং বললেন, আবদুল কায়স গোত্রের লোকেরা আমাকে যুহরের পরবর্তী দু’রাকা‘আত সালাত আদায় থেকে ব্যস্ত রেখেছিল।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٠ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، سَمِعَ عَائِشَةَ، قَالَتْ: وَالَّذِي ذَهَبَ بِهِ، مَا تَرَكَهُمَا حَتَّى لَقِيَ اللَّهَ، وَمَا لَقِيَ اللَّهَ تَعَالَى حَتَّى ثَقُلَ عَنِ الصَّلَاةِ، وَكَانَ يُصَلِّي كَثِيرًا مِنْ صَلَاتِهِ قَاعِدًا – تَعْنِي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ العَصْرِ – «وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيهِمَا، وَلَا يُصَلِّيهِمَا فِي المَسْجِدِ، مَخَافَةَ أَنْ يُثَقِّلَ عَلَى أُمَّتِهِ، وَكَانَ يُحِبُّ مَا يُخَفِّفُ عَنْهُمْ»
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহি’দ ইব্ন আয়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “সে মহান সত্তার কসম, যিনি তাকে (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) উঠিয়ে নিয়েছেন, আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি দু’রাকাত সালাত কখনই ছাড়েননি। আর সালাতে দাঁড়ানো যখন তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি, তখনই তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। তিনি তাঁর এ সালাত অধিকাংশ সময়ে বসে বসেই আদায় করতেন।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এ সালাত দ্বারা ‘আসরের পরবর্তী দু’রাকাতের কথা বুঝিয়েছেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু’রাকাত সালাত আদায় করতেন, তবে উম্মাতের উপর বোঝা হয়ে পড়ার আশংকায় তা মসজিদে আদায় করতেন না। কেননা, উম্মতের জন্য যা সহজ হয় তাই তাঁর কাম্য ছিল।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩١ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، قَالَتْ عَائِشَةُ: ابْنَ أُخْتِي «مَا تَرَكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ السَّجْدَتَيْنِ بَعْدَ العَصْرِ عِنْدِي قَطُّ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) তিনি বললেন, “হে ভাগ্নে! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট উপস্থিত থাকার কালে ‘আসরের পরবর্তী দু’রাক’আত কখনও ছাড়েননি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٢ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: ” رَكْعَتَانِ لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَعُهُمَا سِرًّا وَلَا عَلَانِيَةً: رَكْعَتَانِ قَبْلَ صَلَاةِ الصُّبْحِ، وَرَكْعَتَانِ بَعْدَ العَصْرِ “
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল ওয়াহি’দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বানী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুর রহমান ইব্নু আস্ওয়াদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন: ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, “দু’রাকাত সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন অবস্থাতেই ছাড়তেন না। তাহলো ফজরের সালাতের পূর্বের দু’রাকাত ও আসরের পরের দু’রাকাত।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٣ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: رَأَيْتُ الأَسْوَدَ، وَمَسْرُوقًا، شَهِدَا عَلَى عَائِشَةَ قَالَتْ: «مَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِينِي فِي يَوْمٍ بَعْدَ العَصْرِ، إِلَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আর‘আরাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ইসহা’ক থেকে, তিনি বললেন: আমি আসওয়াদ ও মাসরূক্বকে ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর নিকট উপস্থিত দেখলাম, তিনি বললেন, “আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দিনই আসরের পর আমার নিকট আসতেন সে দিনই দু’রাকাত সালাত আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٤ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، أَنَّ أَبَا المَلِيحِ حَدَّثَهُ، قَالَ: كُنَّا مَعَ بُرَيْدَةَ فِي يَوْمٍ ذِي غَيْمٍ، فَقَالَ: بَكِّرُوا بِالصَّلَاةِ، فَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ تَرَكَ صَلَاةَ العَصْرِ حَبِطَ عَمَلُهُ»
মু‘আজ ইব্ন ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে তিনি ছিলেন ইব্নু আবূ কাছীর, তিনি আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আবূ মালীহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, এক মেঘলা দিনে আমরা বুরাইদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন, শীঘ্র সালাত আদায় করে নাও। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেন, “যে ব্যক্তি আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার সমস্ত আমাল বিনষ্ট হয়ে যায়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٥ – حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سِرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً، فَقَالَ: بَعْضُ القَوْمِ: لَوْ عَرَّسْتَ بِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «أَخَافُ أَنْ تَنَامُوا عَنِ الصَّلَاةِ» قَالَ بِلَالٌ: أَنَا أُوقِظُكُمْ، فَاضْطَجَعُوا، وَأَسْنَدَ بِلَالٌ ظَهْرَهُ إِلَى رَاحِلَتِهِ، فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَنَامَ، فَاسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدْ طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ، فَقَالَ: «يَا بِلَالُ، أَيْنَ مَا قُلْتَ؟» قَالَ: مَا أُلْقِيَتْ عَلَيَّ نَوْمَةٌ مِثْلُهَا قَطُّ، قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ قَبَضَ أَرْوَاحَكُمْ حِينَ شَاءَ، وَرَدَّهَا عَلَيْكُمْ حِينَ شَاءَ، يَا بِلَالُ، قُمْ فَأَذِّنْ بِالنَّاسِ بِالصَّلَاةِ» فَتَوَضَّأَ، فَلَمَّا ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ وَابْيَاضَّتْ، قَامَ فَصَلَّى
‘ইমরান ইব্নু মায়সারাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু ফুযায়ল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হুস্বায়্ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ কাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ছিলাম। যাত্রী দলের কেউ কেউ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! রাতের এ শেষ প্রহরের আমাদের নিয়ে যদি একটু বিশ্রাম নিতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার ভয় হচ্ছে সালাতের সময়ও তোমরা ঘুমিয়ে থকবে। বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আমি আপনাদের জাগিয়ে দিব। কাজেই সবাই শুয়ে পড়লেন। এ দিকে বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তার হাওদার গায়ে একটু হেলান দিয়ে বসলেন। এতে তাঁর দু’চোখ মুদে আসলো। ফলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। সূর্য কেবল উঠতে শুরু করেছে, এমন সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাগ্রত হলেন এবং বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে ডেকে বললেন, হে বিলাল! তোমার কথা গেলো কোথায়? বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আমার এতো অধিক ঘুম আর কখনও পায়নি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আল্লাহ তায়ালা যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তোমাদের রূহ কবয করে নিয়েছেন; আবার যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তা তোমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। হে বিলাল! উঠ, লোকদের জন্য সালাতের আযান দাও। অতঃপর তিনি উযু করলেন এবং সূর্য যখন উপরে উঠল এবং উজ্জ্বল হলো তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٦ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ، جَاءَ يَوْمَ الخَنْدَقِ، بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ فَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا كِدْتُ أُصَلِّي العَصْرَ، حَتَّى كَادَتِ الشَّمْسُ تَغْرُبُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَاللَّهِ مَا صَلَّيْتُهَا» فَقُمْنَا إِلَى بُطْحَانَ، فَتَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ وَتَوَضَّأْنَا لَهَا، فَصَلَّى العَصْرَ بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا المَغْرِبَ
মু ‘আয ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: খন্দকের দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এসে কুরাইশ গোত্রীয় কাফিরদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি এখনও আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য অস্ত যায় যায়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করিনি। অতঃপর আমরা উঠে বুতহানের দিকে গেলাম। সেখানে তিনি সালাত জন্য উযু করলেন এবং আমরাও উযু করলাম; অতঃপর সূর্য ডুবে গেলে আসরের সালাত আদায় করেন, অতঃপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ: «مَنْ تَرَكَ صَلَاةً وَاحِدَةً عِشْرِينَ سَنَةً، لَمْ يُعِدْ إِلَّا تِلْكَ الصَّلَاةَ الوَاحِدَةَ»
ইব্রাহীম (রহমাহুল্লাহ) বলেন, কেউ যদি বিশ বছরও এক ওয়াক্তের সালাত ছেড়ে দিয়ে থাকে তা হলে তাকে শুধু সে ওয়াক্তের সালাতই পুনরায় আদায় করতে হবে।
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٧ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، وَمُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَا: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا، لَا كَفَّارَةَ لَهَا إِلَّا ذَلِكَ {وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي} [طه: ١٤] “، قَالَ مُوسَى: قَالَ هَمَّامٌ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: بَعْدُ: «وَأَقِمِ الصَّلَاةَ للذِّكْرَى»، قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ حَبَّانُ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ
আবূ নু‘আয়ম এবং মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তাঁরা উভয় বললেন: হাম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যদি কেউ কোনো সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে সালাতের অন্য কোনো কাফফারা নেই।” (কেননা, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন) “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়িম কর”-[সূরাহ ত্ব-হা ২০:১৪] মূসা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, হাম্মাম (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন যে, আমি তাকে [কাতাদা (রহমাহুল্লাহ)] পরে বলতে শুনেছি, “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়িম কর”-(সূরাহ ত্ব-হা ২০:১৪) আবূ ‘আব্দুল্লাহ (রহমাহুল্লাহ) এবং হাব্বান (রহমাহুল্লাহ) বললেন: হাম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বাতাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٨ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى القَطَّانُ، أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: ” جَعَلَ عُمَرُ يَوْمَ الخَنْدَقِ يَسُبُّ كُفَّارَهُمْ، وَقَالَ: مَا كِدْتُ أُصَلِّي العَصْرَ حَتَّى غَرَبَتْ، قَالَ: فَنَزَلْنَا بُطْحَانَ، فَصَلَّى بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى المَغْرِبَ “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ক্বাত্বত্বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া তিনি ছিলেন ইব্নু আবূ কাছির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ সালামাহ থেকে, তিনি জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে’ তিনি বললেন: খন্দকের যুদ্ধকালে এক সময় ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কুরাইশ কাফিরদের তিরস্কার করতে লাগলেন এবং বললেন, সূর্যাস্তের পূর্বে আমি ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, [জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন] অতঃপর আমরা বুতহান উপত্যকায় উপস্থিত হলাম। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের পর সে সালাত আদায় করলেন, তার পরে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٥٩٩ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عَوْفٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو المِنْهَالِ، قَالَ: انْطَلَقْتُ مَعَ أَبِي إِلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، فَقَالَ لَهُ أَبِي: حَدِّثْنَا كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي المَكْتُوبَةَ؟ قَالَ: ” كَانَ يُصَلِّي الهَجِيرَ – وَهِيَ الَّتِي تَدْعُونَهَا الأُولَى – حِينَ تَدْحَضُ الشَّمْسُ، وَيُصَلِّي العَصْرَ، ثُمَّ يَرْجِعُ أَحَدُنَا إِلَى أَهْلِهِ فِي أَقْصَى المَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ – وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي المَغْرِبِ – قَالَ: وَكَانَ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُؤَخِّرَ العِشَاءَ، قَالَ: وَكَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَالحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَكَانَ يَنْفَتِلُ مِنْ صَلَاةِ الغَدَاةِ، حِينَ يَعْرِفُ أَحَدُنَا جَلِيسَهُ، وَيَقْرَأُ مِنَ السِّتِّينَ إِلَى المِائَةِ “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আওফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মিনহাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আমার পিতার সঙ্গে আবূ বারযা আসলামী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট গেলাম। আমার পিতা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফারয সালাতসমূহ কোন সময় আদায় করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত যাকে তোমরা প্রথম সালাত বলে থাকো, সূর্য ঢলে পড়লে আদায় করতেন। আর তিনি আসরের সালাত এমন সময় আদায় করতেন যে, আমাদের কেউ সূর্য সজীব থাকতেই মদীনার শেষ প্রান্তে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে আসতে পারতো। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। অতঃপর আবূ বারযা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, ইশার সালাত একটু বিলম্বে আদায় করাকে তিনি পছন্দ করতেন। আর ইশার পূর্বে ঘুমানো এবং পরে কথাবার্তা বলা তিনি অপছন্দ করতেন। আর এমন মুহূর্তে তিনি ফজরের সালাত শেষ করতেন যে, আমাদের যে কেউ তার পাশ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনত পারত। এ সালাতে তিনি ষাট হতে একশত আয়াত তিলাওয়াত করতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٠ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ الحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ: انْتَظَرْنَا الحَسَنَ وَرَاثَ عَلَيْنَا حَتَّى قَرُبْنَا مِنْ وَقْتِ قِيَامِهِ، فَجَاءَ فَقَالَ: دَعَانَا جِيرَانُنَا هَؤُلَاءِ، ثُمَّ قَالَ: قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: انْتَظَرْنَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، حَتَّى كَانَ شَطْرُ اللَّيْلِ يَبْلُغُهُ، فَجَاءَ فَصَلَّى لَنَا، ثُمَّ خَطَبَنَا، فَقَالَ: «أَلَا إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا ثُمَّ رَقَدُوا، وَإِنَّكُمْ لَمْ تَزَالُوا فِي صَلَاةٍ مَا انْتَظَرْتُمُ الصَّلَاةَ – قَالَ الحَسَنُ – وَإِنَّ القَوْمَ لَا يَزَالُونَ بِخَيْرٍ مَا انْتَظَرُوا الخَيْرَ» قَالَ قُرَّةُ: هُوَ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু স্বাব্বাহ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, আবূ আলী হা’নাফী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বুররাহ ইব্নু খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: একদা আমরা হাসান বসরী (রহমাহুল্লাহ)-এর অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি এতো বিলম্বে আসলেন যে, নিয়মিত সালাত শেষে চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলো। এরপর তিনি এসে বললেন, আমাদের এ প্রতিবেশীগণ আমাদের ডেকেছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আনাস ইবনু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, এক রাতে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অপেক্ষায় ছিলাম। এমন কি প্রায় অর্ধেক রাত হয়ে গেলো, তখন এসে তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আমাদের সম্বোধন করে তিনি বললেন, “জেনে রাখ! লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে, তবে তোমরা যতক্ষন সালাতের অপেক্ষায় ছিলে ততক্ষন সালাতেই রত ছিলে।” হাসান বসরী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, মানুষ যতক্ষন কল্যাণের অপেক্ষায় থাকে, ততক্ষন তারা কল্যাণেই রত থাকে। কুররা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, এ উক্তি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কর্তৃক বর্ণিত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাদীসের অংশ।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠١ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، وَأَبُو بَكْرٍ ابْنُ أَبِي حَثْمَةَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ: صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ العِشَاءِ فِي آخِرِ حَيَاتِهِ، فَلَمَّا سَلَّمَ، قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «أَرَأَيْتَكُمْ لَيْلَتَكُمْ هَذِهِ، فَإِنَّ رَأْسَ مِائَةٍ، لَا يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ اليَوْمَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ أَحَدٌ» فَوَهِلَ النَّاسُ فِي مَقَالَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِلَى مَا يَتَحَدَّثُونَ مِنْ هَذِهِ الأَحَادِيثِ، عَنْ مِائَةِ سَنَةٍ، وَإِنَّمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «لَا يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ اليَوْمَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ» يُرِيدُ بِذَلِكَ أَنَّهَا تَخْرِمُ ذَلِكَ القَرْنَ
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহুরী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু উমার এবং আবূ বকর ইব্নু হা’ছ্মাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তাঁর শেষ জীবনে ইশার সালাত আদায় করে সালাম ফিরবার পর বললেন, আজকের এ রাত সম্পর্কে তোমাদের অভিমত কী? আজ হতে নিয়ে একশ বছরের মাথায় আজ যারা ভূ-পৃষ্ঠে আছে তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। কিন্তু সাহাবীগণ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একশ বছরের এ উক্তি সম্পর্কে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা করতে থাকলেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজকে যারা জীবিত আছে তাদের কেউ ভূ-পৃষ্ঠে থাকবে না। এর দ্বারা তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, এ শতাব্দী ঐ যুগের পরিসমাপ্তি ঘটাবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٢ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّ أَصْحَابَ الصُّفَّةِ، كَانُوا أُنَاسًا فُقَرَاءَ وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ اثْنَيْنِ فَلْيَذْهَبْ بِثَالِثٍ، وَإِنْ أَرْبَعٌ فَخَامِسٌ أَوْ سَادِسٌ» وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ جَاءَ بِثَلَاثَةٍ، فَانْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشَرَةٍ، قَالَ: فَهُوَ أَنَا وَأَبِي وَأُمِّي – فَلَا أَدْرِي قَالَ: وَامْرَأَتِي وَخَادِمٌ – بَيْنَنَا وَبَيْنَ بَيْتِ أَبِي بَكْرٍ، وَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ تَعَشَّى عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ لَبِثَ حَيْثُ صُلِّيَتِ العِشَاءُ، ثُمَّ رَجَعَ، فَلَبِثَ حَتَّى تَعَشَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ بَعْدَ مَا مَضَى مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ، قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ: وَمَا حَبَسَكَ عَنْ أَضْيَافِكَ – أَوْ قَالَتْ: ضَيْفِكَ – قَالَ: أَوَمَا عَشَّيْتِيهِمْ؟ قَالَتْ: أَبَوْا حَتَّى تَجِيءَ، قَدْ عُرِضُوا فَأَبَوْا، قَالَ: فَذَهَبْتُ أَنَا فَاخْتَبَأْتُ، فَقَالَ يَا غُنْثَرُ فَجَدَّعَ وَسَبَّ، وَقَالَ: كُلُوا لَا هَنِيئًا، فَقَالَ: وَاللَّهِ لَا أَطْعَمُهُ أَبَدًا، وَايْمُ اللَّهِ، مَا كُنَّا نَأْخُذُ مِنْ لُقْمَةٍ إِلَّا رَبَا مِنْ أَسْفَلِهَا أَكْثَرُ مِنْهَا – قَالَ: يَعْنِي حَتَّى شَبِعُوا – وَصَارَتْ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَتْ قَبْلَ ذَلِكَ، فَنَظَرَ إِلَيْهَا أَبُو بَكْرٍ فَإِذَا هِيَ كَمَا هِيَ أَوْ أَكْثَرُ مِنْهَا، فَقَالَ لِامْرَأَتِهِ: يَا أُخْتَ بَنِي فِرَاسٍ مَا هَذَا؟ قَالَتْ: لَا وَقُرَّةِ عَيْنِي، لَهِيَ الآنَ أَكْثَرُ مِنْهَا قَبْلَ ذَلِكَ بِثَلَاثِ مَرَّاتٍ، فَأَكَلَ مِنْهَا أَبُو بَكْرٍ، وَقَالَ: إِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ – يَعْنِي يَمِينَهُ – ثُمَّ أَكَلَ مِنْهَا لُقْمَةً، ثُمَّ حَمَلَهَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ، وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمٍ عَقْدٌ، فَمَضَى الأَجَلُ، فَفَرَّقَنَا اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا، مَعَ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ أُنَاسٌ، اللَّهُ أَعْلَمُ كَمْ مَعَ كُلِّ رَجُلٍ، فَأَكَلُوا مِنْهَا أَجْمَعُونَ، أَوْ كَمَا قَالَ
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘উতামির ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উছমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবদুর রহমান ইবনু আবূ বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আসহাবে সুফফা ছিলেন খুবই দরিদ্র। (একদা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যার নিকট দু’জনের আহার আছে, সে যেন (তাঁদের হতে) তৃতীয় জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। আর যার নিকট চারজনের আহারের সংস্থান আছে, সে যেন পঞ্চম বা ষষ্ঠজনকে সঙ্গে নিয়ে যায়। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তিনজন সাথে নিয়ে আসেন এবং আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশজন নিয়ে আসেন। আবদুর রহমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমাদের ঘরে এবং আবূ বক্রের ঘরে আমি, আমার পিতা ও মাতা (এই তিনজন সদস্য) ছিলাম। রাবী বলেন, আমি জানি না, তিনি আমার স্ত্রী এবং খাদিম একথা বলেছিলেন কি-না? আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘরেই রাতের আহার করেন, এবং ইশার সালাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। ‘ইশার সালাতের পর তিনি আবার (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘরে) ফিরে আসেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর রাতের আহার শেষ করা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। আল্লাহর ইচ্ছায় রাতের কিছু সময় অতিবাহিত হবার পর বাড়ি ফিরলে তাঁর স্ত্রী তাকে বললেন, মেহমানদের নিকট আসতে কিসে আপনাকে ব্যস্ত রেখেছিল? কিংবা তিনি বলেছিলেন, (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) মেহমান হতে। আবু বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, এখনও তাদের খাবার দাওনি? তিনি বললেন, আপনি না আসা পর্যন্ত তারা খেতে অস্বীকার করেন। তাদের সামনে উপস্থিত করা হয়েছিল, তবে তারা খেতে সম্মত হননি। আবদুর রহমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, (পিতার তিরস্কারের ভয়ে) আমি সরে গিয়ে আত্মগোপন করলাম। তিনি (রাগান্বিত হয়ে) বললেন, ওরে বোকা এবং ভর্ৎসনা করলেন। আর (মেহমানদের) বললেন, খেয়ে নিন। আপনারা অস্বস্তিতে ছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এ কখনই খাব না। ‘আবদুর রহমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা লোকমা উঠিয়ে নিতেই নীচ হতে তা অধিক পরিমানে বেড়ে যাচ্ছিল। তিনি খেলেন, সকলেই পেট ভরে খেলেন। অথচ পূর্বের চেয়ে অধিক খাবার রয়ে গেলো। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) খাবারের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন তা পূর্বের সমপরিমান কিংবা তার চাইতেও বেশী। তিনি তার স্ত্রীকে বললেন, হে বানূ ফিরাসের বোন। একি? তিনি বললেন, আমার চোখের প্রশান্তির কসম! এতো এখন পূর্বের চেয়ে তিনগুন বেশি। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-ও তা হতে আহার করলেন এবং বললেন, আমার সে শপথ শয়তানের পক্ষ হতেই হয়েছিল। অতঃপর তিনি আরও লুকমা মুখে দিলেন এবং অবশিষ্ট খাবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দরবারে নিয়ে গেলেন। ভোর পর্যন্ত সে খাদ্য আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছেই ছিল। এদিকে আমাদের ও অন্য একটি গোত্রের মাঝে যে সন্ধি ছিলো তার সময়সীমা পূর্ন হয়ে যায়। (এবং তারা মদীনায় আসে) আমরা তাদের বারজনের নেতৃত্বে ভাগ করে দেই। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই কিছু কিছু লোক ছিলো। তবে প্রত্যেকের সঙ্গে কতজন ছিল তা আল্লাহই জানেন। তারা সকলেই সেই খাদ্য হতে আহার করেন। (রাবী বলেন) কিংবা আবদুর রহমান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যেভাবে বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَقَوْلُهُ عَزَّ وَجَلَّ: (وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ اتَّخَذُوهَا هُزُؤًا وَلَعِبًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَعْقِلُونَ)، وَقَوْلُهُ {إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الجُمُعَةِ} [الجمعة: ٩]
আল্লাহ্ তা’আলার বাণী: “আর যখন তোমরা সালাতের জন্য আহবান কর, তখন তারা একে হাসি-তামাশা ও খেলা বলে মনে করে। কারণ তারা এমন লোক যাদের বোধশক্তি নেই” [সূরা আল-মাইদাহ ৫:৫৮]। আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেছেন: “আর যখন জুমুআ’র দিনে সালাতের জন্য ডাকা হয়।” [সূরা আল-জুমুআহ ৬২:৯]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٣ – حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ الحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: ذَكَرُوا النَّارَ وَالنَّاقُوسَ، فَذَكَرُوا اليَهُودَ وَالنَّصَارَى «فَأُمِرَ بِلَالٌ أَنْ يَشْفَعَ الأَذَانَ، وَأَنْ يُوتِرَ الإِقَامَةَ»
‘ইমরান ইব্নু মায়সারাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ হা’য্যা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, (জামা’আতে সালাত আদায়ের জন্য) সাহাবা-ই-কিরাম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আগুন জ্বালানো অথবা নাকূস বাজানোর কথা আলোচনা করেন। আবার এগুলোকে (যথাক্রমে) ইয়াহুদী ও নাসারাদের প্রথা বলে উল্লেখ করা হয়। অতঃপর বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে আযানের বাক্য দু’বার করে ও ইক্বামাতের বাক্য বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হয়।
অনুরূপ বর্ণনা : [১] [আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৬]
ফুটনোটঃ
১. ইখতেলাফী বিষয়ে কুরআন মাজিদে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অনুযায়ী কুরআন ও সহীহ হাদীসের দৃষ্টিতে যেটা অধিক সঠিক বলে প্রমানিত তাহাই গ্রহণ করতে হবে। সেই বিধান মতে নিম্নে পর্যালোচনা করা হলোঃ-
বুখারী ছাড়াও মুসলিম ও আবূ দাউদে ইক্বামতের বাক্যগুলো একবার করে বলার সহীহ হাদীস বিদ্যমান। তথাপিও আধুনিক প্রকাশনীর সহীহ বুখারী গ্রন্থের এই হাদীসটির টীকায় লেখা “হানাফীগণ অন্য এক হাদীসের ভিত্তিতে ইক্বামাতের বাক্যগুলো দু’বার করে বলেন।” এ কথার প্রক্ষিতে এবং সর্বাসাধারণ মুসলিম উম্মাহর অবগতির জন্য মুহাদ্দিসীনেকিরামগণের কতিপয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেসন পেশ করা হলঃ-
হাফিয আবূ ‘উমর বিন ‘আবদুর রব বলেন, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, ইসহাক বিন রাহওয়াইহি, দাউদ বিন আলী, মোহাম্মদ বিন জরীর প্রভৃতি ইক্বামতের শব্দগুলি একবার বা দু’বার করে বলার উভয়বিধ অভিমত গ্রহন করেছেন। তাঁদের দৃষ্টিতে উভয় নিয়মই বিশুদ্ধ, বৈধ ও গ্রহণযোগ্য এবং ঐচ্ছিক ব্যাপার-যে ইচ্ছা করবে একবারও বলতে পারবে এবং অপরপক্ষে যে ইচ্ছা করবে দু’বার করেও বলতে পারবে। (তুহফা সহ তিরমিযী ১ম খণ্ড ১৭৪পৃঃ)
হাফিয আবু আওয়ানাহ তদীয় মসনদ গ্রন্থে ১ম খণ্ড ৩৩০ পৃষ্ঠায় বলেন, বিলালের আযানের ইক্বামাত একবার করে বলার নিয়ম মনসূখ হয়নি। আবূ মাহযূরাহ্র হাদীস হতে ইক্বামাত দু’বার করে বলা প্রমাণিত হলেও তা হতে অধিক সহীহ আনাসের হাদীসে একবার করে বলা প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং উসূলে হাদীস শাস্ত্রের বিধান ও ন্যায়নীতির ভিত্তিতে বিরোধক্ষেত্রে যা অধিক সহীহ তা-ই গ্রহণ করা উত্তম ও একান্ত বাঞ্ছনীয়।
ইমাম আবদুল ওয়াহহাব শা’রানী হানাফী ‘কাশ্ফুল গুম্মা’ ১ম খণ্ড ১২৮ পৃষ্ঠায় আবুদল্লাহ বিন যায়দের আযানের সাথে উল্লেখিত ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে বলার নিয়মের উল্লেখ করেছেন। উক্ত গ্রন্থে ১২৯ পৃষ্ঠায় তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলালকে আযানের শব্দগুলি দু’বার করে এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো একবার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীসের উল্লেখ করেছেন।
শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) তদীয় সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘গুনিয়াতুত তালেবীন’-এর ৮ পৃষ্ঠায় ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে বলার স্বপক্ষে তাঁর নিজের মন্তব্য পেশ করেছেন।
মোটের উপর আমরা ইমাম আহমাদ, ইসহাক বিন রাহওয়াইহি এবং অন্যান্য ওলামায়ে কিরামের ন্যায় ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে অথবা দু’বার করে বলার উভয়বিধ অভিমতের বৈধতা ও প্রামাণিকতা স্বীকার করি; অধিকন্তু আমরা উভয়বিধ ‘আমলকে জায়েজ বলে মনে করি। যেহেতু ইক্বামাতের শব্দগুলি দু’বার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীস হতে একবার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীস অধিক প্রামাণ্য ও বিশুদ্ধ এবং তা বহু সূত্রে বর্ণিত এমনকি ইমাম বুখারী ও মুসলিম উভয় কর্তৃক গৃহীত, কাজেই আমরা ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে বলা সর্বোত্তম মনে করি।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٤ – حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَقُولُ: كَانَ المُسْلِمُونَ حِينَ قَدِمُوا المَدِينَةَ يَجْتَمِعُونَ فَيَتَحَيَّنُونَ الصَّلَاةَ لَيْسَ يُنَادَى لَهَا، فَتَكَلَّمُوا يَوْمًا فِي ذَلِكَ، فَقَالَ بَعْضُهُمْ: اتَّخِذُوا نَاقُوسًا مِثْلَ نَاقُوسِ النَّصَارَى ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ بُوقًا مِثْلَ قَرْنِ اليَهُودِ، فَقَالَ عُمَرُ: أَوَلَا تَبْعَثُونَ رَجُلًا يُنَادِي بِالصَّلَاةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا بِلَالُ قُمْ فَنَادِ بِالصَّلَاةِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু গায়লান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রাযাযাক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন: নাফি’ আমাকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন, ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলছিলেন, মুসলমানগণ যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন তাঁরা সালাতের সময় অনুমান করে সমবেত হতেন। এর জন্য কোন ঘোষণা দেয়া হতো না। একদা তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। কয়েকজন সাহাবী বললেন, নাসারাদের ন্যায় নাকূস বাজানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর কয়েকজন বললেন, ইয়াহূদীদের শিঙ্গার ন্যায় শিঙ্গা ফোঁকানোর ব্যবস্থা করা হোক। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, সালাতের ঘোষণা দেয়ার জন্য তোমরা কি একজন লোক পাঠাতে পার না? তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে বিলাল, উঠ এবং সালাতের জন্য ঘোষণা দাও।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৭]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٥ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ عَطِيَّةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «أُمِرَ بِلَالٌ أَنْ يَشْفَعَ الأَذَانَ، وَأَنْ يُوتِرَ الإِقَامَةَ، إِلَّا الإِقَامَةَ»
সুলায়মান ইব্ন হারব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সিমাক ইব্ন ‘আত্বিয়াহ থেকে, তিনি আয়য়ুব থেকে, তিনি আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে আযানের শব্দ দু’ দু’বার এবং قَدْقَامَتِ الصَّلاَةُ ব্যতীত ইক্বামাতের শব্দগুলো বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
অনুরূপ বর্ণনা : [৬০৩] [আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٦ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا خَالِدٌ الحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «لَمَّا كَثُرَ النَّاسُ» قَالَ: «ذَكَرُوا أَنْ يَعْلَمُوا وَقْتَ الصَّلَاةِ بِشَيْءٍ يَعْرِفُونَهُ، فَذَكَرُوا أَنْ يُورُوا نَارًا، أَوْ يَضْرِبُوا نَاقُوسًا فَأُمِرَ بِلَالٌ أَنْ يَشْفَعَ الأَذَانَ، وَأَنْ يُوتِرَ الإِقَامَةَ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সালাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহাব ছাক্বাফী আমাদেরকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন: খালিদ হায্যাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, মুসলিমগণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তাঁরা সালাতের সময়ের জন্য এমন কোন সংকেত নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিলেন, যার সাহায্যে সালাতের সময় উপস্থিত এ কথা বুঝা যায়। কেউ কেউ বলেলেন, আগুন জ্বালানো হোক, কিংবা ঘণ্টা বাজানো হোক। তখন বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে আযানের শব্দগুলো দু’ দু’বার এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হলো।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৯]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٧ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «أُمِرَ بِلَالٌ أَنْ يَشْفَعَ الأَذَانَ، وَأَنْ يُوتِرَ الإِقَامَةَ» قَالَ إِسْمَاعِيلُ: فَذَكَرْتُ لِأَيُّوبَ، فَقَالَ: «إِلَّا الإِقَامَةَ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে আযানের বাক্যগুলো দু’ দু’বার এবং ইক্বামাতের বাক্যগুলো বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হয়। ইসমাঈল (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি এ হাদীস আইয়ূবের নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তবে ‘কাদ্কামাতিস্ সলাতু’ ছাড়া।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ، وَلَهُ ضُرَاطٌ، حَتَّى لَا يَسْمَعَ التَّأْذِينَ، فَإِذَا قَضَى النِّدَاءَ أَقْبَلَ، حَتَّى إِذَا ثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ، حَتَّى إِذَا قَضَى التَّثْوِيبَ أَقْبَلَ، حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ المَرْءِ وَنَفْسِهِ، يَقُولُ: اذْكُرْ كَذَا، اذْكُرْ كَذَا، لِمَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ حَتَّى يَظَلَّ الرَّجُلُ لَا يَدْرِي كَمْ صَلَّى “
‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আরাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন সালাতের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শুনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সালাতের জন্য ইক্বামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পোঁছে যে, সে কয় রাক’আত সালাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَقَالَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ العَزِيزِ: «أَذِّنْ أَذَانًا سَمْحًا وَإِلَّا فَاعْتَزِلْنَا»
উমর ইব্ন আব্দুল্ল আযীয (রহমাহুল্লাহ) (মুয়াজ্জিনকে) বলতেন, স্বাভাবিক কণ্ঠে সাদাসিধাভাবে আযান দাও, নতুবা এ পদ ছেড়ে দাও।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٠٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ الأَنْصَارِيِّ ثُمَّ المَازِنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، قَالَ لَهُ: إِنِّي أَرَاكَ تُحِبُّ الغَنَمَ وَالبَادِيَةَ، فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ، أَوْ بَادِيَتِكَ، فَأَذَّنْتَ بِالصَّلَاةِ فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ، فَإِنَّهُ: «لَا يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ المُؤَذِّنِ، جِنٌّ وَلَا إِنْسٌ وَلَا شَيْءٌ، إِلَّا شَهِدَ لَهُ يَوْمَ القِيَامَةِ»، قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আব্দুর রহমান ইব্ন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুর রহমান ইব্ন আবূ সা‘আ্সা‘আ্হ আনসারী থেকে, তিনি মাযিনী (রহমাহুল্লাহ) থেকে, তাকে তার পিতা সংবাদ দিয়েছেন যে, আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বক্রী চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাসো। তাই তুমি যখন বক্রী নিয়ে থাকো, বা বন-জঙ্গলে থাকো এবং সালাতের জন্য আযান দাও, তখন উচ্চকণ্ঠে আযান দাও। কেননা, জিন্, ইনসান বা যে কোন বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়ায্যিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামাতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। আবূ সা’ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, এ কথা আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছি।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٠ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا غَزَا بِنَا قَوْمًا، لَمْ يَكُنْ يَغْزُو بِنَا حَتَّى يُصْبِحَ وَيَنْظُرَ، فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا كَفَّ عَنْهُمْ، وَإِنْ لَمْ يَسْمَعْ أَذَانًا أَغَارَ عَلَيْهِمْ، قَالَ: فَخَرَجْنَا إِلَى خَيْبَرَ، فَانْتَهَيْنَا إِلَيْهِمْ لَيْلًا، فَلَمَّا أَصْبَحَ وَلَمْ يَسْمَعْ أَذَانًا رَكِبَ، وَرَكِبْتُ خَلْفَ أَبِي طَلْحَةَ، وَإِنَّ قَدَمِي لَتَمَسُّ قَدَمَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَخَرَجُوا إِلَيْنَا بِمَكَاتِلِهِمْ وَمَسَاحِيهِمْ، فَلَمَّا رَأَوُا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالُوا: مُحَمَّدٌ وَاللَّهِ، مُحَمَّدٌ وَالخَمِيسُ، قَالَ: فَلَمَّا رَآهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، خَرِبَتْ خَيْبَرُ، إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ {فَسَاءَ صَبَاحُ المُنْذَرِينَ} [الصافات: ١٧٧] “
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু জা‘আফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়দ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই আমাদের নিয়ে কোন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেতেন, ভোর না হওয়া পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করতেন না বরং লক্ষ্য রাখতেন, যদি তিনি আযান শুনতে পেতেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হতে বিরত থাকতেন। আর যদি আযান শুনতে না পেতেন, তাহলে অভিযান চালাতেন। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমরা খায়বারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম এবং রাতের বেলায় তাদের সেখানে পোঁছলাম। যখন প্রভাত হলো এবং তিনি আযান শুনতে পেলেন না; তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ার হলেন। আমি আবূ তালহা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর পিছনে সওয়ার হলাম। আমার পা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পায়ের সাথে লেগে যাচ্ছিল। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তারা তাদের থলে ও কোদাল নিয়ে বেরিয়ে আমাদের দিকে আসলো। হঠাৎ তারা যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেলো, তখন বলে উঠল, ‘এ যে মুহাম্মাদ, আল্লাহ্র শপথ! মুহাম্মাদ তাঁর পঞ্চ বাহিনী সহ!’ আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের দেখে বলে উঠলেনঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, খায়বার ধ্বংস হোক। আমরা যখন কোন কাওমের আঙ্গিণায় অবতরণ করি, তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হয় মন্দ।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١١ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ، فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ المُؤَذِّنُ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াযীদ লায়সী থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তাই বলবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٢ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الحَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنِي عِيسَى بْنُ طَلْحَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ يَوْمًا، فَقَالَ مِثْلَهُ، إِلَى قَوْلِهِ: وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
মু‘আয ইব্নু ফাযালাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন ইবরাহীম ইব্ন হা’রিছ থেকে, তিনি বললেন: ‘ঈসা ইব্নু তালহা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: একদা তিনি মু’আবিয়াহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে (আযানের জবাব দিতে) শুনেছেন যে, তিনি ‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ’ পর্যন্ত মুআযযিনের মতই বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٣ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى – نَحْوَهُ – قَالَ يَحْيَى: وَحَدَّثَنِي بَعْضُ إِخْوَانِنَا، أَنَّهُ قَالَ: لَمَّا قَالَ: حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قَالَ: «لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ»، وَقَالَ: هَكَذَا سَمِعْنَا نَبِيَّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ
ইসহা’ক্ব ইব্নু রাহওয়ায়হ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়াহ্ব ইব্নু জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্ইয়া (রহমাহুল্লাহ) থেকে, ইয়াহ্ইয়া (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, আমার কোনো ভাই আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, মুআয্যিন যখন حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ বলল, তখন তিনি [মু‘আবিয়াহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)] لاَحَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ বললেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমরা এরূপ বলতে শুনেছি।
অনুরূপ বর্ণনা : [৬১২] [আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৮৬]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٤ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ المُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ: اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ القَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الوَسِيلَةَ وَالفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ القِيَامَةِ “
‘আলী ইব্নু ‘আয়্য়াশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব ইব্নু আবূ হা’মযাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন মুনকাদির থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে দু’আ করেঃ “হে আল্লাহ্-এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের মালিক, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকামে মাহমুদে পোঁছে দিন যার অঙ্গীকার আপনি করেছেন”–ক্বিয়ামাতের দিন সে আমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. আযানের জওয়াবে কয়েকটি বিষয় বাড়তিভাবে চালু হয়েছে, যা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেনঃ “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার নামে মিথ্যারোপ করলো, সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিল ।” (বুখারী, মিশকাত ১৯৮ ‘ইলম অধ্যায়)
(১) অত্র হাদীসের শেষাংশে ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী’আদ। (২) বায়হাক্বীতে (১ম খণ্ডের ৪১০ পৃঃ) বর্ণিত আযানের দু’আর শুরুতে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি হাক্কি হা-যিহিদ দা’ওয়াতে। (৩) ইমাম তাহাভীর শারহু মা’আনিল আসার-এ বর্ণিত ‘আ-তি সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদান। (৪) ইবনুস সুন্নীর ‘ফী ‘আমালিল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ’ গ্রন্থে ওয়াদ দারাজাতার রাফী’আহ। রাফী’ঈ প্রণীত ‘আল মুহাররির গ্রন্থে আযানের দু’আর শেষে বর্ণিত ‘ইয়া আরহামার রা-হিমীন। আযানের জওয়াবে প্রচলিত বাড়তি বিষয়গুলো অবশ্যই পরিত্যাজ্য। অতিরিক্ত শব্দগুলো সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। (মুহাদ্দিস শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী কৃত ‘ইরওয়াইল গালীল, ১ম খণ্ড ২৬০-২৬১ পৃষ্ঠা হাদীস নং ২৪৩) রেডিও ও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে প্রচারিত দু’আয় ‘ওয়ারযুকনা শা’আতাহূ ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ’ বাক্যটি যা যোগ করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই।
وَيُذْكَرُ: «أَنَّ أَقْوَامًا اخْتَلَفُوا فِي الأَذَانِ فَأَقْرَعَ بَيْنَهُمْ سَعْدٌ»
উল্লেখ করা হয়েছে যে, একদল লোক আযান দেয়ার ব্যাপারে প্রতিযোগিতা করল। সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁদের মধ্যে কুরআহার (লটারি) মাধ্যমে নির্বাচন করলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلَّا أَنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لَاسْتَهَمُوا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لَاسْتَبَقُوا إِلَيْهِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ، لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ বকর এর স্বাধীন করা গুলাম সুমাইয়া থেকে, তিনি আবূ স্বালিহ’ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আযানে ও প্রথম কাতারে কী (ফযীলত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, কুরআহর মাধ্যমে বাছাই ব্যতীত এ সুযোগ লাভ করা যদি সম্ভব না হত, তাহলে অবশ্যই তারা কুরআহর মাধ্যমে ফায়সালা করত। যুহরের সালাত আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী (ফযীলত) রয়েছে, যদি তারা জানত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। আর ‘ইশা ও ফজরের সালাত (জামা’আতে) আদায়ের কী ফযীলত তা যদি তারা জানত, তাহলে নিঃসন্দেহে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা হাজির হত।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
وَتَكَلَّمَ سُلَيْمَانُ بْنُ صُرَدٍ فِي أَذَانِهِ وَقَالَ الحَسَنُ: «لَا بَأْسَ أَنْ يَضْحَكَ وَهُوَ يُؤَذِّنُ أَوْ يُقِيمُ»
সুলাইমান ইব্ন সুরাদ (রহমাহুল্লাহ) আযানের মধ্যে কথা বলেছেন। হাসান বসরী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আযান ইকামত দেওয়ার সময় হেসে ফেললে কোন দোষ নেই।
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٦ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، وَعَبْدِ الحَمِيدِ، صَاحِبِ الزِّيَادِيِّ، وَعَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الحَارِثِ، قَالَ: خَطَبَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ فِي يَوْمٍ رَدْغٍ، فَلَمَّا بَلَغَ المُؤَذِّنُ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، فَأَمَرَهُ أَنْ يُنَادِيَ «الصَّلَاةُ فِي الرِّحَالِ»، فَنَظَرَ القَوْمُ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ، فَقَالَ: «فَعَلَ هَذَا مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ وَإِنَّهَا عَزْمَةٌ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব এবং যিয়াদের সাথী আব্দুল হা’মীদ এবং ‘আস্বিম আহ্’ওয়াল থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু হারিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, একবার বর্ষণ মুখর দিনে ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবাহ দিচ্ছিলেন। এদিকে মুয়াজ্জিন আযান দিতে গিয়ে যখন “হায়য়্যি ‘আলাস্ব স্বালাহ” -এ পোঁছল, তখন তিনি তাকে এ ঘোষণা দেয়ার নির্দেশ দিলেন যে, “নিজ অবস্থানে সালাত আদায় কর।” এতে লোকেরা একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। তখন ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, তাঁর চেয়ে যিনি অধিক উত্তম ছিলেন (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনিই এরূপ করেছেন। অবশ্য জুমু’আর সালাত ওয়াজিব। (তবে ওযরের কারণে নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করার অনুমতি আছে)।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ بِلَالًا يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُنَادِيَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ»، ثُمَّ قَالَ: وَكَانَ رَجُلًا أَعْمَى، لَا يُنَادِي حَتَّى يُقَالَ لَهُ: أَصْبَحْتَ أَصْبَحْتَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সালিম ইব্ন আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রাত থাকতেই আযান দেন। কাজেই ইব্নু উম্মে মাকতূম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আযান না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা (সাহরীর) পানাহার করতে পার। ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, ইব্নু উম্মে মাকতূম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ছিলেন অন্ধ। যতক্ষণ না তাঁকে বলে দেওয়া হত যে, ‘ভোর হয়েছে, ভোর হয়েছে’–ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি আযান দিতেন না।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي حَفْصَةُ، «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا اعْتَكَفَ المُؤَذِّنُ لِلصُّبْحِ، وَبَدَا الصُّبْحُ، صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تُقَامَ الصَّلَاةُ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ই থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার থেকে, তিনি বললেন: হাফসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, “যখন মুয়াজ্জিন সুবহে সাদিকের প্রতীক্ষায় থাকত (ও আযান দিত) এবং ভোর স্পষ্ট হতো- জামা’আত দাঁড়ানোর পূর্বে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংক্ষেপে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦١٩ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، «كَانَ النَّبِيُّ صلّى الله عليه وسلم يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءِ وَالإِقَامَةِ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের আযান ও ইক্বামাতের মাঝে দু’ রাক’আত সালাত সংক্ষেপে আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٠ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ بِلَالًا يُنَادِي بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُنَادِيَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন দীনার থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই তোমরা (সাহ্রী) পানাহার করতে থাক; যতক্ষণ না ইব্নু উম্মে মাকতূম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আযান দেন। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনীর ৫৮৫ নং হাদীসের টীকায় লিখেছেন যে, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাহাজ্জুদ সালাতের জন্য আযান দিতেন। কিন্তু কথাটি ভুল কারণ পরবর্তী হাদীস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে যে, তাহাজ্জুদ সালাত আদায়কারী ব্যক্তির অবসর গ্রহণ ও ঘুমন্ত মানুষকে জাগ্রত করার জন্য (যাতে তারা সাহারী খেতে পারে) বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আযান দিতেন। আর যারা জাগ্রত অবস্থায় সাহারী খেতেন তারা যেন এই আযান শুনে সাহারী খাওয়া বন্ধ না করেন। মক্কা মদীনায় ফজরের আযানের মাত্র আধা ঘণ্টা পূর্বে এ আযান এখনও চালু আছে। এবং এটা তাহাজ্জুদের আযান নয়। নাসায়ী, বাইহাকী, ইব্নু খুযাইমাহ, ইব্নুস সাকান থেকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যাতে প্রমাণিত হয় যে, শুধুমাত্র প্রথম আযানে “আস্ সলাতু খাইরুম মিনান নাওম” আছে। আর দ্বিতীয়তে অর্থাৎ ফজরের মূল আযানে নেই। বিস্তারিত দেখুন সুবুলুস সালাম ২য় খণ্ড ১৮৫ পৃষ্ঠা ।
আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী লিখিত তামামুল মিন্নাহ গ্রন্থের ১৪৬ পৃষ্ঠা থেকে ১৪৮ পৃষ্ঠায় দীর্ঘ আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসে তিনি বলেছেনঃ উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, দ্বিতীয় আযানে তাসবীব বা আসসলাতু খাইরুম মিনান নাওম বলা বিদ’আত–সুন্নত বিরোধী। সুন্নাতের বিরোধিতা আরো বেশী সাব্যস্ত হয় প্রথম আযানকে উৎখাত করে সে আযানের তাসবীব বা শব্দবিশেষ “আস্ সলাতু খাইরুম মিনান নাওমকে দ্বিতীয় আযানে যুক্ত করায়। আর বাড়াবাড়ি করে দ্বিতীয় আযানে সাব্যস্ত করা হয়। (তামামুল মিন্নাহ ১৪৮ পৃঃ)
ইমাম তাহাবী প্রথম আযানে তাসবীব হওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচিত ইব্নু ‘উমর ও আবূ মাহযূরাহর সুস্পষ্ট হাদীস দু’টি উল্লেখ করার পর বলেছেন। এটিই ইমাম আবূ হানিফাহ, ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদের মত। (তামুমুল মিন্নাহ ১৪৮. পৃষ্ঠা)
আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী সুন্নাহ বিরোধী আমল প্রচলন হওয়ার দু’টি কারণ উল্লেখ করেছেনঃ একঃ ইসলামী দুনিয়ার অধিকাংশ মুয়াযযিন সুন্নাত বিরোধী আমল অব্যাহত রেখেছেন এবং খুব কম সংখ্যক আলিম এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দুইঃ অধিকাংশগণই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান ছাড়াই আলোচনা করেছেন। তাঁরা তাসবীব ফজরের প্রথম আযানে যেমনটি স্পষ্টভাবে সহীহ হাদীসগুলোতে এসেছে- তেমনটি ব্যাখ্যা প্রদান করেননি। একমাত্র ইবনু রাসলান এবং সাম’আনী অধিকাংশের বিরোধিতা করে সহীহ হাদীস অনুযায়ী ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।
ঘুমের চেয়ে সালাত উত্তম এ কথাটি ফারয সালাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ ঘুমের সাথে ফারয সালাতের তুলনা হতে পারে না। এটি হতে পারে নফল সালাতের ক্ষেত্রে। কারণ উত্তমতার প্রসঙ্গ আনলে উভয়টি করা বৈধ হয়। এখানে ফারয সালাত বাদ দিয়ে ঘুমানো যাবে এমন কথা কেউ বলতে পারবেন না। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে তাসবীব প্রথম আযানের সাথে সংশ্লিষ্ট, দ্বিতীয় আযানে নয়। যা বিভিন্ন দেশে চালু আছে। উল্লেখ্য সিরিয়া ও জর্দানের যে সব এলাকায় আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানীর দা’ওয়াত ও তাবলীগের ব্যাপকা প্রচার লাভ করেছে সে সব জায়গায় এবং সুদানের সালাফীগণও (আনসারুস সুন্নাহ) ফজরের দ্বিতীয় আযানে তাসবীব ব্যাবহার করেন না।
শাইখ উসাইমিন “প্রত্যেক দুই আযানের মধ্যে সালাত রয়েছে” এ আম হাদীস দ্বারা তিনি উপরে বর্ণিত আযান বলতে সকালের আযানকে বুঝিয়েছেন। কারণ দ্বিতীয় আযানটি হচ্ছে ইক্বামাত। এ হাদীস দ্বারা তাসবীব ফজরের দ্বিতীয় আযানে সাব্যস্ত করা অযৌক্তিক। কারণ ইক্বামাতকে যদি আযান হিসেবে ধরা হয় তাহলে সেটি ফজরের ক্ষেত্রে তৃতীয় আযান, দ্বিতীয় নয়। যখন বিষয়টি ফজরের আযানকে ঘিরেই তখন স্পষ্টভাবে যেখানে প্রথম বলা হয়েছে তখন দ্বিতীয় আযান হিসেবে দ্বিতীয় আযানকেই ধরতে হবে। তৃতীয়টিকে নয়। আর যারা “প্রত্যেক দুই আযানের মধ্যে সালাত রয়েছে” এই আম হাদীসের উপর আমল করতে গিয়ে ফজরের তিনটি আযানকে অস্বীকার করবেন। তারা কি ৬২০ নং হাদীসের বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) প্রথম আযান দেয়ার সময় পানাহার বন্ধ না করে উম্মু মাকতূমের ইক্বামাত পর্যন্ত পানাহার করে থাকেন।
এই আযান দেয়ার পূর্বে সতর্ক করার জন্য কোন কিছু বলা জায়িয নয়। ফজরে অন্য মুয়াযযিন আযান দিবে যাতে দুই আযানের পার্থক্য নিরূপণ করা যায়। শুধু তাই নয় প্রথম আযানে আসসলাতু খাইরুম…. আছে যা উম্মে মাকতূমের আযানে ছিল না। (সুবুলুস সালাম) আল্লাহ্ই সবচেয়ে ভালো জানেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢١ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ: حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَمْنَعَنَّ أَحَدَكُمْ – أَوْ أَحَدًا مِنْكُمْ – أَذَانُ بِلَالٍ مِنْ سَحُورِهِ، فَإِنَّهُ يُؤَذِّنُ – أَوْ يُنَادِي بِلَيْلٍ – لِيَرْجِعَ قَائِمَكُمْ، وَلِيُنَبِّهَ نَائِمَكُمْ، وَلَيْسَ أَنْ يَقُولَ الفَجْرُ – أَوِ الصُّبْحُ -» وَقَالَ بِأَصَابِعِهِ وَرَفَعَهَا إِلَى فَوْقُ وَطَأْطَأَ إِلَى أَسْفَلُ حَتَّى يَقُولَ هَكَذَا وَقَالَ زُهَيْرٌ: «بِسَبَّابَتَيْهِ إِحْدَاهُمَا فَوْقَ الأُخْرَى، ثُمَّ مَدَّهَا عَنْ يَمِينِهِ وَشِمَالِهِ»
আহ্’মাদ ইব্নু ইঊনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলায়মান তায়মী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ‘উসমান নাহ্দী থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন মাস্‘ঊদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে সাহ্রী খাওয়া হতে বিরত না রাখে। কেননা, সে রাত থাকতে আযান দেয়- যেন তোমাদের মধ্যে যারা তাহাজ্জুদের সালাতে রত তারা ফিরে যায় আর যারা ঘুমন্ত তাদেরকে জাগিয়ে দেয়। অতঃপর তিনি বললেনঃ ফজর বা সুবহে সাদিক বলা যায় না– তিনি একবার আঙ্গুল উপরের দিকে উঠিয়ে নীচের দিকে নামিয়ে ইঙ্গিত করে বললেন, যতক্ষণ না এরূপ হয়ে যায়।” বর্ণনাকারী যুহাইর (রহমাহুল্লাহ) তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলদ্বয় একটি অপরটির উপর রাখার পর তাঁর ডানে ও বামে প্রসারিত করে দেখালেন।১
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
ফুটনোটঃ
১. পূর্ব দিকে প্রথমে খাড়া আলোক-রেখা দেখা যায় এই আলোক রেখা প্রকৃত ফজর নয়। পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে বিস্তৃত আলোক রেখাই প্রকৃত ফজরের সময় ।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٢ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ: عُبَيْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنَا عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، وَعَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ بِلَالًا يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ»
ইসহা’ক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাসিম ইব্ন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই, ইব্নু উম্মু মাকতূম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যতক্ষণ আযান না দেয়, ততক্ষণ তোমরা (সাহারী) পানাহার করতে পার।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٣ – َحَدَّثَنِي يُوسُفُ بْنُ عِيسَى المَرْوَزِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا الفَضْلُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّ بِلَالًا يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ، فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ»
ইউসুফ ইব্নু ‘ঈসা মারওয়াযী আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফযল ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাসিম ইব্ন মুহা’ম্মাদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকেন। কাজেই, ইব্নু উম্মু মাকতূম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যতক্ষণ আযান না দেয়, ততক্ষণ তোমরা (সাহারী) পানাহার করতে পার।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٤ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الوَاسِطِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ الجُرَيْرِيِّ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ المُزَنِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلَاةٌ، ثَلَاثًا لِمَنْ شَاءَ»
ইসহা’ক্ব ওয়াসিত্বী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জুরায়রী থেকে, তিনি ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মুগাফ্ফাল মুযানী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে সালাত রয়েছে। একথা তিনি তিনবার বললেন, (তারপর বলেন) যে চায় তার জন্য।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٥ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: سَمِعْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الأَنْصَارِيَّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ المُؤَذِّنُ إِذَا أَذَّنَ قَامَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَبْتَدِرُونَ السَّوَارِيَ، حَتَّى يَخْرُجَ النَّبِيُّ صلّى الله عليه وسلم وَهُمْ كَذَلِكَ، يُصَلُّونَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ المَغْرِبِ، وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ شَيْءٌ»، قَالَ عُثْمَانُ بْنُ جَبَلَةَ، وَأَبُو دَاوُدَ: عَنْ شُعْبَةَ، لَمْ يَكُنْ بَيْنَهُمَا إِلَّا قَلِيلٌ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আম্র ইব্ন ‘আমীর আনসারী থেকে শুনলাম, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “মুয়াজ্জিন যখন আযান দিতো, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের মধ্যে কয়েকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির নিকট গিয়ে দাঁড়াতেন এবং এ অবস্থায় মাগরিবের পূর্বে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। অথচ মাগরিবের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে কিছু (সময়) থাকত না। ‘উসমান ইব্নু জাবালাহ ও আবূ দাউদ (রহমাহুল্লাহ) শু’বাহ (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেন যে, এ দু’য়ের মধ্যবর্তী ব্যবধান খুবই সামান্য হত।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٦ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَكَتَ المُؤَذِّنُ بِالأُولَى مِنْ صَلَاةِ الفَجْرِ قَامَ، فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الفَجْرِ، بَعْدَ أَنْ يَسْتَبِينَ الفَجْرُ، ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ، حَتَّى يَأْتِيَهُ المُؤَذِّنُ لِلْإِقَامَةِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহুরী থেকে, তিনি বললেন: ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, “যখন মুয়াজ্জিন ফজরের সালাতের প্রথম আযান শেষ করতেন তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে যেতেন এবং সুবহে সাদিকের পর ফজরের সালাতের পূর্বে দু’ রাক’আত সালাত সংক্ষেপে আদায় করতেন, অতঃপর ডান কাতে শুয়ে পড়তেন এবং ইক্বামাতের জন্য মুয়াজ্জিন তাঁর নিকট না আসা পর্যন্ত শুয়ে থাকতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৯৯৪, ১১২৩, ১১৬০, ১১৭০, ৬৩১০] [আ.প্র. ৫৯০, ই.ফা. ৫৯৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلَاةٌ، بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلَاةٌ»، ثُمَّ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ: «لِمَنْ شَاءَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইয়াযীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: কাহ্নাস ইব্নুল হা’সান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুরায়দাহ থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মুগাফ্ফাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে সালাত আদায় করা যায়। তৃতীয়বার এ কথা বলার পর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬২৪] [আ.প্র. ৫৯১, ই.ফা. ৫৯৯]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٨ – حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الحُوَيْرِثِ، أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفَرٍ مِنْ قَوْمِي، فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ لَيْلَةً، وَكَانَ رَحِيمًا رَفِيقًا، فَلَمَّا رَأَى شَوْقَنَا إِلَى أَهَالِينَا، قَالَ: «ارْجِعُوا فَكُونُوا فِيهِمْ، وَعَلِّمُوهُمْ، وَصَلُّوا، فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ، وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ»
মু‘আল্লা ইব্নু আসাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি মালিক ইব্নু হুয়াইরিছ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আমি আমার গোত্রের কয়েকজন লোকের সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট এলাম এবং আমরা তাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত দয়ালু ও বন্ধু বৎসল ছিলেন। তিনি যখন আমাদের মধ্যে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে যাওয়ার আগ্রহ লক্ষ্য করলেন, তখন তিনি আমাদের বললেন, “তোমরা পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর, আর তাদের দ্বীন শিক্ষা দিবে এবং সালাত আদায় করবে। যখন সালাত উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের কেউ আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামত করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৩০, ৬৩১, ৬৫৮, ৬৮৫, ৮১৯, ২৮৪৮, ৬০০৮, ৭২৪৬; মুসলিম ৫/৫৩, হাঃ ৬৭৪, আহমাদ ১৫৫৯৮] [আ.প্র. ৫৯২, ই.ফা. ৬০০]
وَكَذَلِكَ بِعَرَفَةَ وَجَمْعٍ، وَقَوْلِ المُؤَذِّنِ: الصَّلَاةُ فِي الرِّحَالِ، فِي اللَّيْلَةِ البَارِدَةِ أَوِ المَطِيرَةِ
আরাফা ও মুয্দালিফার হুকুম ও অনুরূপ এবং প্রচণ্ড শীতের রাতে ও বৃষ্টির সময় মুআয্যিনের এ মর্মে ঘোষণা করা যে, “নিজ অবস্থানেই সালাত আদায় কর”।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٢٩ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ المُهَاجِرِ أَبِي الحَسَنِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ، فَأَرَادَ المُؤَذِّنُ أَنْ يُؤَذِّنَ، فَقَالَ لَهُ: «أَبْرِدْ»، ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُؤَذِّنَ، فَقَالَ لَهُ: «أَبْرِدْ»، ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يُؤَذِّنَ، فَقَالَ لَهُ: «أَبْرِدْ» حَتَّى سَاوَى الظِّلُّ التُّلُولَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহাজির আবূল হা’সান থেকে, তিনি যায়দ ইব্ন ওয়াহাব থেকে, তিনি আবূ যার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমরা এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে ছিলাম। মুয়াজ্জিন আযান দিতে চাইলে তিনি বললেনঃ ঠাণ্ডা হতে দাও। কিছুক্ষণ পর মুয়াজ্জিন পুনরায় আযান দিতে চাইলে তিনি বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। অতঃপর সে আবার আযান দিতে চাইলে তিনি আবার বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। এভাবে বিলম্ব করতে করতে টিলাগুলোর ছায়া তার সমান হয়ে গেলো। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ উত্তাপের প্রখরতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ বিশেষ।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৫৩৫] [আ.প্র. ৫৯৩, ই.ফা. ৬০১]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٠ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ الحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الحُوَيْرِثِ، قَالَ: أَتَى رَجُلَانِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُرِيدَانِ السَّفَرَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَنْتُمَا خَرَجْتُمَا، فَأَذِّنَا، ثُمَّ أَقِيمَا، ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন খালিদ হায্যা’আ থেকে, তিনি আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি মালিক ইব্নু হুওয়ায়ইরিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, দু’জন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেন, “তোমরা উভয়ে যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, অতঃপর ইক্বামাত দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামত করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬২৮] [আ.প্র. ৫৯৪, ই.ফা. ৬০২]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣١ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكٌ، أَتَيْنَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ، فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ يَوْمًا وَلَيْلَةً، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَحِيمًا رَفِيقًا، فَلَمَّا ظَنَّ أَنَّا قَدِ اشْتَهَيْنَا أَهْلَنَا – أَوْ قَدِ اشْتَقْنَا – سَأَلَنَا عَمَّنْ تَرَكْنَا بَعْدَنَا، فَأَخْبَرْنَاهُ، قَالَ: «ارْجِعُوا إِلَى أَهْلِيكُمْ، فَأَقِيمُوا فِيهِمْ وَعَلِّمُوهُمْ وَمُرُوهُمْ – وَذَكَرَ أَشْيَاءَ أَحْفَظُهَا أَوْ لَا أَحْفَظُهَا – وَصَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي، فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ، وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুছান্না আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি বললেন: মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, “আমরা সমবয়সী একদল যুবক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট হাযির হলাম। বিশদিন ও বিশ রাত আমরা তাঁর নিকট অবস্থান করলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র স্বভাবের লোক ছিলেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা আমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যেতে চাই বা ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েছি, তখন তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, আমরা আমাদের পিছনে কাদের রেখে এসেছি। আমরা তাঁকে জানালাম। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর। আর তাদের (দ্বীন) শিক্ষা দাও, এবং (সৎ কাজের) নির্দেশ দাও। (বর্ণনাকারী বলেন) মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন যা আমার মনে আছে বা মনে নেই। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে। সালাতের সময় উপস্থিত হলে তোমাদের একজন যেন আযান দেয় এবং যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে যেন ইমামত করে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬২৮] [আ.প্র. ৫৯৫, ই.ফা. ৬০৩]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٢ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنِي نَافِعٌ، قَالَ: أَذَّنَ ابْنُ عُمَرَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ بِضَجْنَانَ، ثُمَّ قَالَ: صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ، فَأَخْبَرَنَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُ مُؤَذِّنًا يُؤَذِّنُ، ثُمَّ يَقُولُ عَلَى إِثْرِهِ: «أَلَا صَلُّوا فِي الرِّحَالِ» فِي اللَّيْلَةِ البَارِدَةِ، أَوِ المَطِيرَةِ فِي السَّفَرِ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘উমার থেকে, তিনি বললেন: নাফি’ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, প্রচণ্ড এক শীতের রাতে ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর।
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৬৬; মুসলিম ৬/৩, হাঃ ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০] [আ.প্র. ৫৯৬, ই.ফা. ৬০৪]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٣ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو العُمَيْسِ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالأَبْطَحِ، فَجَاءَهُ بِلَالٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلَاةِ ثُمَّ خَرَجَ بِلَالٌ بِالعَنَزَةِ حَتَّى رَكَزَهَا بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالأَبْطَحِ، وَأَقَامَ الصَّلَاةَ»
ইসহা’ক ইব্নু মানস্বুর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জা‘আ্ফর ইব্নু ‘আওন আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘উমায়স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আওন ইব্ন আবূ যুহায়ফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আবতাহ্ নামক জায়গায় দেখলাম, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর নিকট আসলেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে সালাতের সংবাদ দিলেন। অতঃপর বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) একটি বর্শা নিয়ে বের হলেন। অবশেষে আবতাহে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সামনে তা পুঁতে দিলেন, অতঃপর সালাতের ইক্বামাত দিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [১৮৭] [আ.প্র. ৫৯৭, ই.ফা. ৬০৫]
وَيُذْكَرُ عَنْ بِلَالٍ: «أَنَّهُ جَعَلَ إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «لَا يَجْعَلُ إِصْبَعَيْهِ فِي أُذُنَيْهِ» وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ: «لَا بَأْسَ أَنْ يُؤَذِّنَ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ» وَقَالَ عَطَاءٌ: «الوُضُوءُ حَقٌّ وَسُنَّةٌ» وَقَالَتْ عَائِشَةُ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَذْكُرُ اللَّهَ عَلَى كُلِّ أَحْيَانِهِ»
বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি আযানের সময় দু’কানে দু’টি আঙ্গুল রাখতেন। তেব উব্ন উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) দু’কানে দু’টি আঙ্গুল রাখতেন না। ইবরাহীম (রহমাহুল্লাহ) বলেন, বিনা উযু তে আযান কোন দোষ নেই। আতা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, (আযানের জন্য) উযূ জরুরী এবং সুন্নাত। আয়শা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বক্ষণ আল্লাহর যিক্র করতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٤ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، «أَنَّهُ رَأَى بِلَالًا يُؤَذِّنُ فَجَعَلْتُ أَتَتَبَّعُ فَاهُ هَا هُنَا وَهَهُنَا بِالأَذَانِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আওন ইব্ন আবূ যুহায়ফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “তিনি বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)–কে আযান দিতে দেখেছেন। (এরপর তিনি বলেন) তাই আমি তাঁর (বিলালের) ন্যায় আযানের মাঝে মুখ এদিক সেদিক (ডানে-বামে) ফিরাই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [১৮৭] [আ.প্র. ৫৯৮, ই.ফা. ৬০৬]
وَكَرِهَ ابْنُ سِيرِينَ أَنْ يَقُولَ: «فَاتَتْنَا الصَّلَاةُ، وَلَكِنْ لِيَقُلْ لَمْ نُدْرِكْ» وَقَوْلُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَحُّ “
ইব্ন সীরীন (রহমাহুল্লাহ) এর মতে “আমাদের সালাত ফাওত হয়ে গেছে” বলা অপছন্দনীয়। বরং “আমরা সালাত পাইনি” এরূপ বলা উচিৎ। তবে এ ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন তাই সঠিক।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٥ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ سَمِعَ جَلَبَةَ رِجَالٍ، فَلَمَّا صَلَّى قَالَ: «مَا شَأْنُكُمْ؟» قَالُوا: اسْتَعْجَلْنَا إِلَى الصَّلَاةِ؟ قَالَ: «فَلَا تَفْعَلُوا إِذَا أَتَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا»
আবূ নু’আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ কাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়ায শুনতে পেলেন। সালাত শেষে তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের কি হয়েছিল? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “এরূপ করবে না। যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পূর্ণ করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [মুসলিম ৫/২৮, হাঃ ৬০৩, আহমাদ ২২৬৭১] [আ.প্র. ৫৯৯, ই.ফা. ৬০৭]
وَقَالَ: «مَا أَدْرَكْتُمْ، فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا» قَالَهُ أَبُو قَتَادَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
তিনি বলেন, তোমরা ইমামের সঙ্গে যতটুকু পাও আদায় করবে, আর তোমাদের যা ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পুরা করে নিবে। আবু কাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ কথা বর্ণনা করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٦ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا سَمِعْتُمُ الإِقَامَةَ، فَامْشُوا إِلَى الصَّلَاةِ وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ وَالوَقَارِ، وَلَا تُسْرِعُوا، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যিই্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জুহ্রী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়িব থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে, এবং (অন্য রেয়াতে) জুহ্রী থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যখন তোমরা ইক্বামাত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৯০৮; মুসলিম ৫/২৯, হাঃ ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২] [আ.প্র. ৬০০, ই.ফা. ৬০৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٧ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ: كَتَبَ إِلَيَّ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلّى الله عليه وسلم: «إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَلَا تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي»
মুসলিম ইব্ন ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: তিনি ইয়াহ’ইয়া ইব্নু আবূ কাসীরকে লিখলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সালাতের ইক্বামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৩৮, ৯০৯; মুসলিম ৫/২৯, হাঃ ৬০৪, আহমাদ ২২৭১২] [আ.প্র. ৬০১, ই.ফা. ৬০৯]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٨ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَلَا تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সালাতের ইক্বামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না। ধীরস্থিরতার প্রতি লক্ষ্য রাখা তোমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৩৭] [আ.প্র. ৬০২, ই.ফা. ৬১০]
ফুট নোটঃ
আলী ইব্নু মুবারক (রহমাহুল্লাহ) হাদীস বর্ণনায় শায়বান (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٣٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ وَقَدْ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، وَعُدِّلَتِ الصُّفُوفُ، حَتَّى إِذَا قَامَ فِي مُصَلَّاهُ، انْتَظَرْنَا أَنْ يُكَبِّرَ، انْصَرَفَ، قَالَ: «عَلَى مَكَانِكُمْ» فَمَكَثْنَا عَلَى هَيْئَتِنَا، حَتَّى خَرَجَ إِلَيْنَا يَنْطِفُ رَأْسُهُ مَاءً، وَقَدِ اغْتَسَلَ
‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম ইব্নু সা‘আদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ’ ইব্নু কায়সান থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আবূ সালামাহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের কক্ষ হতে সালাতের জন্য তাশরীফ নিয়ে আসলেন। এদিকে সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয়েছে এবং কাতার সোজা করে নেয়া হয়েছে, এমন কি তিনি মুসাল্লায় দাঁড়ালেন, আমরা তাক্বীরের অপেক্ষা করছি, এমন সময় তিনি ফিরে গেলেন এবং বলে গেলেন তোমরা নিজ নিজ স্থলে অপেক্ষা কর। আমরা নিজ নিজ অবস্থায় অপেক্ষা করতে থাকলাম যে পর্যন্ত না তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেন। তাঁর মাথা হতে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছিল, তিনি গোসল করেছিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [২৭৫] [আ.প্র. ৬০৩, ই.ফা. ৬১১]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٠ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَسَوَّى النَّاسُ صُفُوفَهُمْ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَقَدَّمَ، وَهُوَ جُنُبٌ، ثُمَّ قَالَ: «عَلَى مَكَانِكُمْ» فَرَجَعَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ خَرَجَ وَرَأْسُهُ يَقْطُرُ مَاءً، فَصَلَّى بِهِمْ
ইসহাক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহরী থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন ‘আব্দুর রহমান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “(একবার) সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয়ে গেছে, লোকেরা তাদের কাতার সোজা করে নিয়েছে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে আসলেন এবং সামনে এগিয়ে গেলেন, তখন তাঁর উপর গোসল ফরয ছিল। তিনি বললেনঃ তোমরা নিজ নিজ জায়গায় অপেক্ষা কর। অতঃপর তিনি ফিরে গেলেন এবং গোসল করলেন, অতঃপর ফিরে আসলেন, তখন তাঁর মাথা হতে পানি টপ্টপ্ করে পড়ছিল। অতঃপর সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [২৭৫] [আ.প্র. ৬০৪, ই.ফা. ৬১২]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤١ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، يَقُولُ: أَخْبَرَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَهُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ يَوْمَ الخَنْدَقِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ: مَا كِدْتُ أَنْ أُصَلِّيَ، حَتَّى كَادَتِ الشَّمْسُ تَغْرُبُ، وَذَلِكَ بَعْدَ مَا أَفْطَرَ الصَّائِمُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَاللَّهِ مَا صَلَّيْتُهَا» فَنَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى بُطْحَانَ وَأَنَا مَعَهُ، فَتَوَضَّأَ ثُمَّ صَلَّى – يَعْنِي العَصْرَ – بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا المَغْرِبَ
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ সালামাহ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন: জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, “খন্দকের যুদ্ধের দিন ‘উমর ইব্নু খাত্তাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র কসম! আমি সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য ডুবতে লাগলো, [জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন,] যখন কথা হচ্ছিল তখন এমন সময়, যখন সওম পালনকারী ইফ্তার করে ফেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্র কসম! আমিও সে সালাত আদায় করিনি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘বুতহান’ নামক উপত্যকায় গেলেন, আমিও তাঁর সঙ্গে ছিলাম। সেখানে তিনি উযূ করলেন এবং সূর্যাস্তের পরে তিনি (প্রথমে) আসর সালাত আদায় করলেন, অতঃপর তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৫৯৬] [আ.প্র. ৬০৫, ই.ফা. ৬১৩]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٢ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُنَاجِي رَجُلًا فِي جَانِبِ المَسْجِدِ، فَمَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ حَتَّى نَامَ القَوْمُ»
আবূ মা‘আমার ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু স্বুহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “সালাতের ইক্বামাত হয়ে গেছে তখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের এক পাশে এক ব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলছিলেন, অবশেষে যখন লোকদের ঘুম আসছিল তখন তিনি সালাতে দাঁড়ালেন।” ১
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৪৩, ৬২৯২; মুসলিম ৩/৩৩, হাঃ ৩৭৬] [আ.প্র. ৬০৬, ই.ফা. ৬১৪]
ফুটনোটঃ
১. ইক্বামাত হয়ে যাওয়ার পরও প্রয়োজনে ইমাম কথা বলতে পারেন। এতে নতুন করে ইক্বামাত দিতে হবে না। অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইক্বামাত হয়ে যাবার পর মুসল্লীদের দিকে ফিরে ইমাম মুসল্লীদের কাতার সোজা করার জন্য কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিবে, অতঃপর ইমাম সালাত আরম্ভ করবেন। কিন্তু আমাদের দেশে এ সুন্নাতের বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায় যা বিদ’আত। (বুখারী ৬৭৬ নং হাদীস দ্রষ্টব্য)
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٣ – حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، قَالَ: سَأَلْتُ ثَابِتًا البُنَانِيَّ – عَنِ الرَّجُلِ يَتَكَلَّمُ بَعْدَ مَا تُقَامُ الصَّلَاةُ – فَحَدَّثَنِي عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَعَرَضَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ، فَحَبَسَهُ بَعْدَ مَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ»
‘আয়য়াশ ইব্নু ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আ‘আ্লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হুমাইদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, সালাতের ইক্বামাত হয়ে যাবার পর কোন ব্যক্তি কথা বললে তার সম্পর্কে আমি সাবিত বুনানীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত একটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তিনি বললেন, “সালাতের ইক্বামাত দেয়া হয় এমন সময় এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলো এবং ইক্বামাতের পরও তাঁকে কথার মধ্যে ব্যস্ত রাখল।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৪২] [আ.প্র. ৬০৭, ই.ফা. ৬১৫]
وَقَالَ الحَسَنُ: «إِنْ مَنَعَتْهُ أُمُّهُ عَنِ العِشَاءِ فِي الجَمَاعَةِ شَفَقَةً لَمْ يُطِعْهَا»
হাসান বাসরী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, কোন মা যদি তাঁর সন্তানের প্রতি স্নেহবশত ইশার সালাত জামা‘আতে আদায় করতে নিষেধ করে, তবে এ ব্যাপারে সন্তান তার মায়ের আনুগত্য করবে না।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٤ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلَاةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُهُمْ، أَنَّهُ يَجِدُ عَرْقًا سَمِينًا، أَوْ مِرْمَاتَيْنِ حَسَنَتَيْنِ، لَشَهِدَ العِشَاءَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই, অতঃপর সালাত কায়েমের আদেশ দেই, অতঃপর সালাতের আযান দেয়া হোক, অতঃপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামত করার নির্দেশ দেই। অতঃপর আমি লোকদের নিকট যাই এবং তাদের (যারা সালাতে শামিল হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোশ্তহীন মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দু’টি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ‘ইশা সালাতের জামা’আতেও হাযির হতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম ৫/২৪, হাঃ ৬৫১, আহমাদ ৭৩৩২] [আ.প্র. ৬০৮, ই.ফা. ৬১৬]
وَكَانَ الأَسْوَدُ: «إِذَا فَاتَتْهُ الجَمَاعَةُ ذَهَبَ إِلَى مَسْجِدٍ آخَرَ» وَجَاءَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: «إِلَى مَسْجِدٍ قَدْ صُلِّيَ فِيهِ، فَأَذَّنَ وَأَقَامَ وَصَلَّى جَمَاعَةً»
জামা‘আত না পেলে আসওয়াদ ইব্ন ইয়াযীদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অন্য মসজিদে চলে যেতেন। আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এমন এক মসজিদে গেলেন যেখানে ইকামত দিয়ে জামা‘আতে সালাত আদায় করলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «صَلَاةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلَاةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ই থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “জামা’আতে সালাতের ফযীলত একাকী আদায়কৃত সালাত অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশী।”
অনুরূপ বর্ণনা : [৬৪৯, মুসলিম ৫/৪২, হাঃ ৬৫০, আহমাদ ৫৩৩২] [আ.প্র. ৬০৯, ই.ফা. ৬১৭]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٦ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «صَلَاةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلَاةَ الفَذِّ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু হাদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন খাব্বাব থেকে, তিনি আবূ সা’ঈদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, একাকী সালাত আদায়ের চেয়ে জামা’আতে সালাত আদায়ের ফযীলত পঁচিশগুন বেশী।”
অনুরূপ বর্ণনা : [আ.প্র. ৬১০, ই.ফা. নাই]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٧ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا صَالِحٍ، يَقُولُ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” صَلَاةُ الرَّجُلِ فِي الجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلَى صَلَاتِهِ فِي بَيْتِهِ، وَفِي سُوقِهِ، خَمْسًا وَعِشْرِينَ ضِعْفًا، وَذَلِكَ أَنَّهُ: إِذَا تَوَضَّأَ، فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ، ثُمَّ خَرَجَ إِلَى المَسْجِدِ، لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا الصَّلَاةُ، لَمْ يَخْطُ خَطْوَةً، إِلَّا رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ، وَحُطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ، فَإِذَا صَلَّى، لَمْ تَزَلِ المَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَيْهِ، مَا دَامَ فِي مُصَلَّاهُ: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ، اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ، وَلَا يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلَاةَ “
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওযাহি’দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আবূ স্বালিহ’ থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “কোনো ব্যক্তির জামা‘আতের সাথে সালাতের সওয়াব, তার নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত সালাতের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে উযূ করলো, অতঃপর একমাত্র সালাতের উদ্দেশে মসজিদে রওয়ানা করল তখন তার প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মর্তবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর সে যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) তার জন্য এ বলে দু‘আ করতে থাকেন- ‘হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।’ আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে সালাতে রত বলে গণ্য হয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [১৭৬] [আ.প্র. ৬১১, ই.ফা. ৬১৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٨ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «تَفْضُلُ صَلَاةُ الجَمِيعِ صَلَاةَ أَحَدِكُمْ وَحْدَهُ، بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ جُزْءًا، وَتَجْتَمِعُ مَلَائِكَةُ اللَّيْلِ وَمَلَائِكَةُ النَّهَارِ فِي صَلَاةِ الفَجْرِ» ثُمَّ يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ: فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ: {إِنَّ قُرْآنَ الفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا} [الإسراء: ٧٨]
আবূ ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্ন মুসায়্য়েব এবং আবূ সালামাহ ইব্নু ‘আব্দুর রহ’মান আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, “জামা‘আতের সালাত তোমাদের কারো একাকী সালাত হতে পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব রাখে। আর ফজরের সালাতে রাতের ও দিনের মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) একত্রিত হয়।” অতঃপর আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলতেন, তোমরা চাইলে (এর প্রমাণ স্বরূপ) “ফজরের সালাতে মালাকগণ উপস্থিত হয়”- (সূরা ইসরা ১৭:১৮) এ আয়াত পাঠ কর।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٤٩ – قَالَ شُعَيْبٌ: وَحَدَّثَنِي نَافِعٌ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: «تَفْضُلُهَا بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً»
শু‘আয়ব বললেন, আমাকে নাফি‘ (রহমাহুল্লাহ) বর্ণনা করলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “জামা‘আতের সালাতে একাকী সালাত হতে সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব হয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٠ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: سَمِعْتُ سَالِمًا، قَالَ: سَمِعْتُ أُمَّ الدَّرْدَاءِ، تَقُولُ: دَخَلَ عَلَيَّ أَبُو الدَّرْدَاءِ وَهُوَ مُغْضَبٌ، فَقُلْتُ: مَا أَغْضَبَكَ؟ فَقَالَ: «وَاللَّهِ مَا أَعْرِفُ مِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا إِلَّا أَنَّهُمْ يُصَلُّونَ جَمِيعًا»
‘উমার ইব্নু হা’ফস্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি সালিম থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আমি উম্মুদ দারদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, একবার আবূ দারদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ভীষণ রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিসে তোমাকে রাগান্বিত করেছে? তিনি বললেন, “আল্লাহর শপথ! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মাতের মধ্যে জামা‘আতে সালাত আদায় বাদ দিয়ে তাঁর তরীকার আর কিছুই দেখছি না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥١ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ العَلَاءِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْظَمُ النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلَاةِ أَبْعَدُهُمْ، فَأَبْعَدُهُمْ مَمْشًى وَالَّذِي يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنَ الَّذِي يُصَلِّي، ثُمَّ يَنَامُ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু আ‘আ্লা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ উসামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বুরায়দ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি আবূ বুর্দাহ থেকে, তিনি আবূ মুসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “(মসজিদ হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সালাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার পুণ্য সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٢ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَيٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِطَرِيقٍ وَجَدَ غُصْنَ شَوْكٍ عَلَى الطَّرِيقِ فَأَخَّرَهُ، فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ فَغَفَرَ لَهُ»
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি আবূ বকর ইব্ন ‘আব্দুর রহ’মান এর স্বাধীন করা গুলাম মূসা থেকে, তিনি আবূ স্বালিহ’ সাম্মান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় রাস্তায় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ তা‘আলা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গুনাহ মাফ করে দিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٣ – ثُمَّ قَالَ: ” الشُّهَدَاءُ خَمْسَةٌ: المَطْعُونُ، وَالمَبْطُونُ، وَالغَرِيقُ، وَصَاحِبُ الهَدْمِ، وَالشَّهِيدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ” وَقَالَ: «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوا إِلَّا أَنْ يَسْتَهِمُوا لَاسْتَهَمُوا عَلَيْهِ
(৬৫২ নং হাদীসটির পর থেকে ও একই সনদে), অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “শহীদ পাঁচ প্রকার- ১. প্লেগে মৃত ব্যক্তি ২. কলেরায় মৃত ব্যক্তি ৩. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি ৪. চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং ৫. আল্লাহ্র পথে (জিহাদে) শহীদ।” তিনি আরও বলেছেনঃ মানুষ যদি আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত আদায় করার কী ফযীলত তা জানত আর কুরআহ্র মাধ্যমে ফায়সালা করা ছাড়া সে সুযোগ না পেতো, তাহলে কুরআহ্র মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করতো।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٤ – وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لَاسْتَبَقُوا إِلَيْهِ وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا»
(৬৫২ নং হাদীসটি ও ৬৫৩ নং হাদীসটির পর থেকে ও একই সনদে), আর আউয়াল ওয়াক্তে যুহরের সালাতের কী ফযীলত তা যদি মানুষ জানত, তাহলে এর জন্য তারা আবশ্যই সর্বাগ্রে যেত। আর ‘ইশা ও ফজর সালাত (জামা‘আতে) আদায়ে কী ফযীলত, তা যদি তারা জানত তা হলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এজন্য অবশ্যই উপস্থিত হতো।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٥ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا بَنِي سَلِمَةَ أَلَا تَحْتَسِبُونَ آثَارَكُمْ» وَقَالَ مُجَاهِدٌ: فِي قَوْلِهِ: {وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ} [يس: ١٢]، قَالَ: «خُطَاهُمْ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন হা’ওশাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’মায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “হে বনী সালিমা! তোমরা কি (মসজিদে আসার পথে) তোমাদের পদক্ষেপের নেকী কামনা কর না?” “তাদের কর্ম ও কীর্তিসমূহ লিখে রাখি” (সূরা ইয়া সীন ৩৬/১২) তাঁর এ বাণী সম্পর্কে মুজাহিদ বলেন। অর্থাৎ তোমাদের পদক্ষেপসমূহ।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٦ – وَقَالَ ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ، حَدَّثَنِي أَنَسٌ: أَنَّ بَنِي سَلِمَةَ أَرَادُوا أَنْ يَتَحَوَّلُوا عَنْ مَنَازِلِهِمْ فَيَنْزِلُوا قَرِيبًا مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَكَرِهَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُعْرُوا المَدِينَةَ، فَقَالَ: «أَلَا تَحْتَسِبُونَ آثَارَكُمْ» قَالَ مُجَاهِدٌ: «خُطَاهُمْ آثَارُهُمْ، أَنْ يُمْشَى فِي الأَرْضِ بِأَرْجُلِهِمْ»
এবং ইব্নু মারইয়াম বলেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হু’মায়দ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বনী সালিমা গোত্রের লোকেরা নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বসতি স্থাপন করতে চেয়েছিল। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, কিন্তু মদীনার কোনো এলাকা একেবারে শূন্য হওয়াটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করেননি। তাই তিনি বললেন, “তোমরা কি (মসজিদে আসা যাওয়ায়) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সওয়াব কামনা কর না?” মুজাহিদ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, “অর্থাৎ যমীনে চলার পদচিহ্নসমূহ।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٧ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ صَلَاةٌ أَثْقَلَ عَلَى المُنَافِقِينَ مِنَ الفَجْرِ وَالعِشَاءِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا، لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ المُؤَذِّنَ، فَيُقِيمَ، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا يَؤُمُّ النَّاسَ، ثُمَّ آخُذَ شُعَلًا مِنْ نَارٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَى مَنْ لَا يَخْرُجُ إِلَى الصَّلَاةِ بَعْدُ»
‘উমার ইব্নু হা’ফস্ব্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ স্বালিহ’ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ‘ইশার সালাত অপেক্ষা অধিক ভারী সালাত আর নেই। এ দু’ সালাতের কী ফযীলত, তা যদি তারা জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো। আমি ইচ্ছে করেছিলাম যে, মুয়াজ্জিনকে ইক্বামাত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামত করতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে অতঃপর যারা সালাতে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٨ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ الحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الحُوَيْرِثِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ، فَأَذِّنَا وَأَقِيمَا، ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইবনু যুরায়‘ই আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ হা’য্যা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি মালিক ইব্নু হুওয়াইরিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সালাতের সময় হলে তোমাদের দু’জনের একজন আযান দিবে এবং ইক্বামাত বলবে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বয়সে অধিক বড় সে ইমামাত করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٥٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” المَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِي مُصَلَّاهُ، مَا لَمْ يُحْدِثْ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ، اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ، لَا يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا دَامَتِ الصَّلَاةُ تَحْبِسُهُ ، لَا يَمْنَعُهُ أَنْ يَنْقَلِبَ إِلَى أَهْلِهِ إِلَّا الصَّلَاةُ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তোমাদের কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে তার উযূ ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) এ বলে দু‘আ করেন যে, হে আল্লাহ্! আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন, হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহম করুন। আর তোমাদের মাঝে যে ব্যক্তির সালাতই তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়া হতে বিরত রাখে, সে সালাতে রত আছে বলে পরিগণিত হবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٠ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ بُنْدَارٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ، يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ: الإِمَامُ العَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي المَسَاجِدِ، وَرَجُلَانِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ، فَقَالَ: إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ، أَخْفَى حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার বুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: খুবায়ব ইব্নু ‘আব্দুর রহমান আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’ফ্স্ব ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যে দিন আল্লাহ্র (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, ৪. সে দু’ ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহ্র জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহ্র জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিক্র করে, ফলে তার দু’ চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦١ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، قَالَ: سُئِلَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ هَلِ اتَّخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاتَمًا؟ فَقَالَ: نَعَمْ أَخَّرَ لَيْلَةً صَلَاةَ العِشَاءِ إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ بَعْدَ مَا صَلَّى، فَقَالَ: «صَلَّى النَّاسُ وَرَقَدُوا وَلَمْ تَزَالُوا فِي صَلَاةٍ مُنْذُ انْتَظَرْتُمُوهَا» قَالَ: فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ خَاتَمِهِ
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু জা‘আ্ফার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হুমাইদ থেকে, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আংটি ব্যবহার করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এক রাতে তিনি ‘ইশার সালাত অর্ধরাত পর্যন্ত বিলম্বে আদায় করলেন। সালাত শেষ করে আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু তোমরা যতক্ষণ সালাতের জন্য অপেক্ষা করেছ, ততক্ষণ সালাতে রত ছিলে বলে গণ্য করা হয়েছে।” আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, এ সময় আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটির উজ্জ্বলতা লক্ষ্য করছিলাম।
অনুরূপ বর্ণনা : [ ] [ ]
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٢ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ غَدَا إِلَى المَسْجِدِ وَرَاحَ، أَعَدَّ اللَّهُ لَهُ نُزُلَهُ مِنَ الجَنَّةِ كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু হারূন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুত্বার্রিফ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যায়দ ইব্ন আসলাম থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٣ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ قَالَ: ح وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ يَعْنِي ابْنَ بِشْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَجُلًا مِنَ الأَزْدِ يُقَالُ لَهُ: مَالِكُ ابْنُ بُحَيْنَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَجُلًا وَقَدْ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَاثَ بِهِ النَّاسُ، وَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الصُّبْحَ أَرْبَعًا، الصُّبْحَ أَرْبَعًا» تَابَعَهُ غُنْدَرٌ، وَمُعَاذٌ، عَنْ شُعْبَةَ فِي مَالِكٍ، وَقَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ: عَنْ سَعْدٍ، عَنْ حَفْصٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ، وَقَالَ حَمَّادٌ: أَخْبَرَنَا سَعْدٌ، عَنْ حَفْصٍ، عَنْ مَالِكٍ
‘আব্দুল ‘আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি হাফ্স ইব্ন ‘আস্বিম থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মালিক ইব্নু বুহাইনাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে গেলেন। (অন্য সূত্রে ইমাম বুখারী বলেন,) ‘আবদুর রহমান অর্থাৎ ইব্ন বিশ্র আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বাহ্যু ইব্নু আসাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উ্বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘আ্দ ইব্নু ইবরাহীম আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: হাফ্স ইব্নু আসিম থেকে আমি শুনলাম। তিনি বললেন, আমি মালিক ইব্নু বুহাইনাহ নামক আয্দ গোত্রীয় এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতে দেখলেন। তখন ইক্বামাত হয়ে গেছে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শেষ করলেন, লোকেরা সে লোকটিকে ঘিরে ফেলল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, “ফজর কি চার রাক‘আত? ফজর কি চার রাক‘আত?” ১
গুন্দার ও মুয়ায অনুসরণ করেছেন শু‘উবাহ থেকে মালিকের (বর্ণনা), এবং ইব্নু ইসহা’ক বললেন সা‘ঈদ থেকে, তিনি হাফ্স থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন বুহা’য়না থেকে, এবং হা’ম্মাদ বললেন: সা‘আদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হাফ্স্ব থেকে, তিনি মালিক থেকে। গুনদার ও মু‘আয, শু‘বা সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইব্নু ইসহাক, সাদ -এর মাধ্যমে সে হাফ্স হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু বুহাইনাহ হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। (এ বর্ণনাটিই সঠিক) তবে হাম্মাদ সাদ-এর মাধ্যমে তিনি হাফ্স হতে হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে মালিক ইব্নু বুহাইনাহ হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন।
ফুটনোটঃ ১. ইক্বামাত হয়ে গেলে কোন নফল সালাত আদায় করা যাবে না। এ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় অনেকে ইক্বামাত হয়ে যাবার পরও নফল সালাত আদায় করতে থাকেন। বিশেষ করে ফজরের সালাত চলাকালীন সময়ে অনেককেই দেখা যায় সুন্নাত দু’ রাকা‘আত সালাত আদায় করতে। ফজরের জামা‘আত চলতে থাকলে ঐ জামা‘আতে শামিল না হয়ে তাড়াহুড়ো করে সুন্নাত পড়ে জামা‘আতে শামিল হওয়া হাদীসের বিরোধিতা করার শামিল । প্রমাণ নিম্নের হাদীসগুলোঃ ‘আবদুল্লাহ ইব্নু সারজাস বলেন, এক ব্যক্তি এল। তখন (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সালাতে ছিলেন। ফলে লোকটি দু’ রাক‘আত আদায় করে জামা‘আতে প্রবেশ করল। (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করে তাকে বললেন, ওহো অমুক! সালাত কোনটি! যেটি আমাদের সঙ্গে আদায় করলে সেটি না যেটি তুমি একা আদায় করলে? (নাসায়ী, মাবসূত ১ম খণ্ড ১০১ পৃষ্ঠা লাহোরী ছাপা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন ফারয সালাতের তাকবীর দেয়া হয়ে যায় তখন ফারয সালাত ব্যতীত অন্য কোন (নফল বা সুন্নাত) সালাত হবে না। (মুসলিম, মিশকাত ৯৬ পৃষ্ঠা) হানাফী ইমাম মুহাম্মাদ বলেন, সুন্নাত না আদায় করে জামা‘আতেই ঢুকতে হবে। (মাবসূত ১ম খণ্ড ১৬৭ পৃষ্ঠা) ফজরের সুন্নাত সালাত ছুটে গেলে ফারয সালাত আদায়ের পর পরই পড়ে নিবে অথবা কোন জরুরী প্রয়োজন থাকলে এ দু’ রাক‘আত সালাত সূর্যোদয়ের পরেও পড়তে পারবেন। (তিরমিযী ১ম খণ্ড)
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٤ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَذَكَرْنَا المُوَاظَبَةَ عَلَى الصَّلَاةِ وَالتَّعْظِيمَ لَهَا، قَالَتْ: لَمَّا مَرِضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَضَهُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ ، فَحَضَرَتِ الصَّلَاةُ، فَأُذِّنَ فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» فَقِيلَ لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، وَأَعَادَ فَأَعَادُوا لَهُ، فَأَعَادَ الثَّالِثَةَ، فَقَالَ: «إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ»، فَخَرَجَ أَبُو بَكْرٍ فَصَلَّى فَوَجَدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً، فَخَرَجَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، كَأَنِّي أَنْظُرُ رِجْلَيْهِ تَخُطَّانِ مِنَ الوَجَعِ، فَأَرَادَ أَبُو بَكْرٍ أَنْ يَتَأَخَّرَ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ مَكَانَكَ، ثُمَّ أُتِيَ بِهِ حَتَّى جَلَسَ إِلَى جَنْبِهِ، قِيلَ لِلْأَعْمَشِ: وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَأَبُوبَكْرٍ يُصَلِّي بِصَلَاتِهِ، وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ، فَقَالَ: بِرَأْسِهِ نَعَمْ رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ بَعْضَهُ، وَزَادَ أَبُو مُعَاوِيَةَ جَلَسَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا
‘উমার ইব্নু হা’ফ্স্ব ইব্ন গিয়াছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে, তিনি বললেন- একদা আমরা ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর নিকট বসে নিয়মিত সালাত আদায় ও তার মর্যাদা সম্বন্ধে আলোচনা করছিলাম। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন সালাতের সময় হলে আযান দেয়া হলো। তখন তিনি বললেন, আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। তাঁকে বলা হলো যে, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন তখন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার সে কথা বললেন এবং তারাও আবার তা-ই বললেন। তৃতীয়বারও তিনি সে কথা ব’লে বললেন, তোমরা ইউসুফের সাথীদের মত। আবূ বক্রকে নির্দেশ দাও যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেয়। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু করলেন। এদিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেকে একটু হালকাবোধ করলেন। দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমার চোখে এখনও স্পষ্ট ভাসছে। অসুস্থতার কারণে তাঁর দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। তখন আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে স্বস্থানে থাকার জন্য ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আনা হলো, তিনি আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর পাশে বসলেন।
আ‘মাশকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ তাহলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইমামাত করছিলেন। আর আবূ বকর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণে সালাত আদায় করছিলেন এবং লোকেরা আবূ বকর (রাঃ)-এর সালাতের অনুসরণ করছিল। আ‘মাশ (রাঃ) মাথার ইঙ্গিতে বললেন, হ্যাঁ। আবূ দাঊদ (রহঃ) শু‘বা (রহঃ) সূত্রে আ‘মাশ (রাঃ) হতে হাদীসের কিয়দংশ উল্লেখ করেছেন। আবূ মু‘আবিয়াহ (রহঃ) অতিরিক্ত বলেছেন, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর বাঁ দিকে বসেছিলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٥ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: «لَمَّا ثَقُلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَاشْتَدَّ وَجَعُهُ اسْتَأْذَنَ أَزْوَاجَهُ أَنْ يُمَرَّضَ فِي بَيْتِي، فَأَذِنَّ لَهُ، فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ تَخُطُّ رِجْلَاهُ الأَرْضَ، وَكَانَ بَيْنَ العَبَّاسِ وَرَجُلٍ آخَرَ» قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ: فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِابْنِ عَبَّاسٍ مَا قَالَتْ عَائِشَةُ، فَقَالَ لِي: وَهَلْ تَدْرِي مَنِ الرَّجُلُ الَّذِي لَمْ تُسَمِّ عَائِشَةُ؟ قُلْتُ: لَا، قَالَ: هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ
ইবরাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাস ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন মা‘আ্মার থেকে, তিনি যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাঁর রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলো, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের নিকট সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি দিলেন। সে সময় দু’ জন লোকের কাঁধে ভর করে (সালাতের জন্য) তিনি বের হলেন, তাঁর দু’ পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিল। তিনি ছিলেন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে।” (বর্ণনাকারী) উবাইদুল্লাহ্ বলেন, ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর বর্ণিত এ ঘটনা ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান, তিনি কে ছিলেন, যার নাম ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেননি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন ‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٦ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، أَذَّنَ بِالصَّلَاةِ فِي لَيْلَةٍ ذَاتِ بَرْدٍ وَرِيحٍ، ثُمَّ قَالَ: أَلَا صَلُّوا فِي الرِّحَالِ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُ المُؤَذِّنَ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةٌ ذَاتُ بَرْدٍ وَمَطَرٍ، يَقُولُ: «أَلَا صَلُّوا فِي الرِّحَالِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন নাফি‘ই থেকে, তিনি বললেন, ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) একদা তীব্র শীত ও বাতাসের রাতে সালাতের আযান দিলেন। অতঃপর ঘোষণা করলেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও, অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রচণ্ড শীত ও বৃষ্টির রাত হলে মুয়াজ্জিনকে এ কথা বলার নির্দেশ দিতেন- “প্রত্যেকে নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٧ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ، كَانَ يَؤُمُّ قَوْمَهُ وَهُوَ أَعْمَى، وَأَنَّهُ قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهَا تَكُونُ الظُّلْمَةُ وَالسَّيْلُ، وَأَنَا رَجُلٌ ضَرِيرُ البَصَرِ، فَصَلِّ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي بَيْتِي مَكَانًا أَتَّخِذُهُ مُصَلَّى، فَجَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ؟» فَأَشَارَ إِلَى مَكَانٍ مِنَ البَيْتِ، فَصَلَّى فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি মাহমুদ ইব্নু রাবী ‘আল-আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, ‘ইতবান ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর নিজ গোত্রের ইমামাত করতেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। একদা তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! কখনো কখনো ঘোর অন্ধকার ও বর্ষণ প্রবাহিত হয়ে পড়ে। অথচ আমি একজন অন্ধ ব্যক্তি। হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমার ঘরে কোন এক স্থানে সালাত আদায় করুন যে স্থানটিকে আমার সালাতের স্থান হিসেবে নির্ধারিত করব। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ঘরে এলেন এবং বললেনঃ আমার সালাত আদায়ের জন্য কোন্ জায়গাটি তুমি ভাল মনে কর? তিনি ইংগিত করে ঘরের জায়গা দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে স্থানে সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الوَهَّابِ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الحَمِيدِ، صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الحَارِثِ، قَالَ: خَطَبَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ فِي يَوْمٍ ذِي رَدْغٍ، فَأَمَرَ المُؤَذِّنَ لَمَّا بَلَغَ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قَالَ: قُلْ: «الصَّلَاةُ فِي الرِّحَالِ»، فَنَظَرَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ، فَكَأَنَّهُمْ أَنْكَرُوا، فَقَالَ: كَأَنَّكُمْ أَنْكَرْتُمْ هَذَا، «إِنَّ هَذَا فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي»، – يَعْنِي النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – إِنَّهَا عَزْمَةٌ، وَإِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أُحْرِجَكُمْ ” وَعَنْ حَمَّادٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الحَارِثِ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، نَحْوَهُ، غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ: «كَرِهْتُ أَنْ أُؤَثِّمَكُمْ فَتَجِيئُونَ تَدُوسُونَ الطِّينَ إِلَى رُكَبِكُمْ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যীয়াদীর সাথী ‘আব্দুল হা’মীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু হারিস থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, “এক ঝড়-বৃষ্টির দিনে ইব্নু আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদের উদ্দেশ্য খুত্বা দিচ্ছিলেন। মুয়াজ্জিন যখন “সালাতের জন্য আস” পর্যন্ত পৌঁছল, তখন তিনি তাকে বললেন, ঘোষণা করে দাও যে, “সালাত যার যার আবাসস্থলে।” এ শুনে লোকেরা একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগলো- যেন তারা বিষয়টাকে অপছন্দ করলো। তিনি তাদের লক্ষ্য করে বললেন, মনে হয় তোমরা বিষয়টি অপছন্দ করছ। তবে, আমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনিই এরূপ করেছেন। একথা সত্য যে, জুমু’আর সালাত ওয়াজিব। তবে তোমাদের অসুবিধায় ফেলা আমি পছন্দ করিনা। ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এ সূত্রে এমন উল্লেখ আছে, আমি তোমাদের গুনাহর অভিযোগে ফেলতে পছন্দ করিনা যে, তোমরা হাঁটু পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে আসবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٦٩ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ: سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، فَقَالَ: جَاءَتْ سَحَابَةٌ، فَمَطَرَتْ حَتَّى سَالَ السَّقْفُ، وَكَانَ مِنْ جَرِيدِ النَّخْلِ، فَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، «فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْجُدُ فِي المَاءِ وَالطِّينِ، حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ الطِّينِ فِي جَبْهَتِهِ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি আবূ সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- কে (লাইলাতুল কাদ্র সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এক খণ্ড মেঘ এসে এমনভাবে বর্ষণ শুরু করল যে, যার ফলে (মসজিদে নাববীর) ছাদ দিয়ে পানি পড়া শুরু হল। কেননা, (তখন মসজিদের) ছাদ ছিল খেজুরের ডালের তৈরি। এমন সময় সালাতের ইক্বামাত দেওয়া হল, “আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে পানি ও কাদার উপর সিজদা করতে দেখলাম, এমন কি আমি তাঁর কপালেও কাদামাটির চিহ্ন দেখলাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٠ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: قَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ: إِنِّي لَا أَسْتَطِيعُ الصَّلَاةَ مَعَكَ، وَكَانَ رَجُلًا ضَخْمًا، «فَصَنَعَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا، فَدَعَاهُ إِلَى مَنْزِلِهِ، فَبَسَطَ لَهُ حَصِيرًا، وَنَضَحَ طَرَفَ الحَصِيرِ فَصَلَّى عَلَيْهِ رَكْعَتَيْنِ»، فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ آلِ الجَارُودِ لِأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى؟ قَالَ: مَا رَأَيْتُهُ صَلَّاهَا إِلَّا يَوْمَئِذٍ
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু সীরীন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, এক আনসারী (সাহাবী) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বললেন, আমি আপনার সাথে মসজিদে এসে সালাত আদায় করতে অপারগ। তিনি ছিলেন মোটা। “তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কিছু খাবার তৈরি করলেন এবং তাঁকে বাড়িতে দাওয়াত করে নিয়ে গেলেন। তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এর জন্য একটি চাটাই পেতে দিলেন এবং চাটাইয়ের এক প্রান্তে কিছু পানি ছিটিয়ে দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে চাটাইয়ের উপর দু’রাকআত সালাত আদায় করলেন।” জারূদ গোত্রের এক ব্যক্তি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করল, নবী কি চাশ্তের নামাজ আদায় করতেন? তিনি বললেন, ঐ দিন ছাড়া আর কোনদিন তাঁকে এ সালাত আদায় করতে দেখিনি।
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «يَبْدَأُ بِالعَشَاءِ» وَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ: «مِنْ فِقْهِ المَرْءِ إِقْبَالُهُ عَلَى حَاجَتِهِ حَتَّى يُقْبِلَ عَلَى صَلَاتِهِ وَقَلْبُهُ فَارِغٌ»
ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) (সালাতের) পূর্বে রাতের খাবার খেয়ে নিতেন। আবূ দারদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন, জ্ঞানীর পরিচয় হল, প্রথমে নিজের প্রয়োজন মেটানো, যাতে নিশ্চিতভাবে সালাতে মনোনিবেশ করতে পারে।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧١ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ: سَمِعْتُ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «إِذَا وُضِعَ العَشَاءُ وَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَابْدَءُوا بِالعَشَاءِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়, তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٢ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا قُدِّمَ العَشَاءُ، فَابْدَءُوا بِهِ قَبْلَ أَنْ تُصَلُّوا صَلَاةَ المَغْرِبِ، وَلَا تَعْجَلُوا عَنْ عَشَائِكُمْ»
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “বিকেলের খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সালাতের পূর্বে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবে না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٣ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وُضِعَ عَشَاءُ أَحَدِكُمْ وَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَابْدَءُوا بِالعَشَاءِ وَلَا يَعْجَلْ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «يُوضَعُ لَهُ الطَّعَامُ، وَتُقَامُ الصَّلَاةُ، فَلَا يَأْتِيهَا حَتَّى يَفْرُغَ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قِرَاءَةَ الإِمَامِ»
‘উবায়দ ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ উসামাহ থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ই থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার এসে পড়ে, অপরদিকে সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়। তখন পূর্বে খাবার খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবেনা।” [নাফি‘ই (রহঃ) বলেন] ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর জন্য খাবার পরিবেশন করা হত, “সে সময় সালাতের ইক্বামাত দেওয়া হত, তিনি খাবার শেষ না করে সালাতে আসতেন না। অথচ তিনি ইমামের কিরাআত শুনতে পেতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٤ – وَقَالَ زُهَيْرٌ، وَوَهْبُ بْنُ عُثْمَانَ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ عَلَى الطَّعَامِ، فَلَا يَعْجَلْ حَتَّى يَقْضِيَ حَاجَتَهُ مِنْهُ، وَإِنْ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ»، رَوَاهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، عَنْ وَهْبِ بْنِ عُثْمَانَ «وَوَهْبٌ مَدِينِيٌّ»
এবং যুহায়র ও ওয়াহ্ব ইব্নু ‘উছমান বললেন মূসা ইব্ন উক্ববাহ থেকে, তিনি নাফি‘ই থেকে, তিনি ইব্ন ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তোমাদের কেউ যখন খাবার খেতে থাক, তখন সালাতের ইক্বামাত হয়ে গেলেও খাওয়া শেষ না করে তাড়াহুড়া করবেনা।” আবু ‘আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী বলেন, আমাকে ইবরাহীম ইব্নু মুনযির (রহমাহুল্লাহ) এ হাদীসটি ওয়াহব ইব্নু উসমান (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেছেন এবং ওয়াহব হলেন মদীনাবাসী।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي جَعْفَرُ بْنُ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ ذِرَاعًا يَحْتَزُّ مِنْهَا، فَدُعِيَ إِلَى الصَّلَاةِ، فَقَامَ، فَطَرَحَ السِّكِّينَ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
‘আব্দুল আযীয ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন স্বালিহ থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: জা‘আফর ইব্নু আমর ইব্নু উমাইয়াহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে (বকরীর) সামনের রানের গোশ্ত কেটে খেতে দেখতে পেলাম, এমন সময় তাঁকে সালাতের জন্য ডাকা হলে তিনি ছুরি রেখে দিয়ে উঠে গেলেন ও নতুন উযূ না করেই সালাত আদায় করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٦ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا الحَكَمُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ مَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ فِي بَيْتِهِ؟ قَالَتْ: «كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ – تَعْنِي خِدْمَةَ أَهْلِهِ – فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’কাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আমি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে থাকা অবস্থায় কী করতেন? তিনি বললেন, “ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ পরিবারবর্গের সহায়তা করতেন। আর সালাতের সময় হলে সালাতের জন্য চলে যেতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٧ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، قَالَ: جَاءَنَا مَالِكُ بْنُ الحُوَيْرِثِ – فِي مَسْجِدِنَا هَذَا – فَقَالَ: إِنِّي لَأُصَلِّي بِكُمْ وَمَا أُرِيدُ الصَّلَاةَ، أُصَلِّي كَيْفَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي، فَقُلْتُ لِأَبِي قِلَابَةَ: كَيْفَ كَانَ يُصَلِّي؟ قَالَ: مِثْلَ شَيْخِنَا هَذَا، قَالَ: وَكَانَ شَيْخًا، «يَجْلِسُ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، قَبْلَ أَنْ يَنْهَضَ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى»
মুসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ঊহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ক্বিলাবা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, একবার মালিক ইব্নু হুওয়াইরিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদের এ মসজিদে এলেন। তিনি বললেন, আমি অবশ্যিই তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করবো, বস্তুত আমার উদ্দেশ্য সালাত আদায় করা নয় বরং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি, তা তোমাদের দেখানোই আমার উদ্দেশ্য। [আইয়ূব (রহমাহুল্লাহ) বলেন] আমি আবূ ক্বিলাবা (রহমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কিরূপে সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, আমাদের এই শাইখের মত আর “শাইখ প্রথম রাক’আতের সিজদা শেষ করে যখন মাথা উত্তোলন করতেন, তখন দাঁড়ানোর আগে একটু বসতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٨ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: مَرِضَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاشْتَدَّ مَرَضُهُ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: إِنَّهُ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَامَ مَقَامَكَ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، قَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» فَعَادَتْ، فَقَالَ: «مُرِي أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَإِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ» فَأَتَاهُ الرَّسُولُ، فَصَلَّى بِالنَّاسِ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইসহা’ক্ব ইব্নু নাস্ব্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’সায়ন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যাইদাহ থেকে, তিনি ‘আব্দুল মালিক ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি বললেন: আবূ বুর্দাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ মূসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রমে তাঁর অসুস্থতা তীব্রতর হলে তিনি বললেন, “আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল”। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন, তিনি তো কোমল হৃদয়ের লোক, যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে পারবেন না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, “আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে”। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আবার সে কথা বললেন। তখন তিনি আবার বললেন, “আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। তোমরা ইউসুফের (‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের) সাথী মহিলাদের মতোই।” অতঃপর একজন সংবাদদাতা আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট সংবাদ নিয়ে আসলেন এবং তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশাতেই লোকদেরকে সঙ্গে নিয়ে সালাত আদায় করলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٧٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي مَرَضِهِ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ: فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ: قُولِي لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ، فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَهْ إِنَّكُنَّ لَأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ» فَقَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ: مَا كُنْتُ لِأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বললেন, “আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে বল সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমি বললাম, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তাঁর কান্নার দরুন লোকেরা তাঁর কিছু্ই শুনতে পাবে না। কাজেই ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিন। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমি হাফ্সা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) -কে বললাম, তুমিও আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বল যে, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আপনার স্থানে দাঁড়ালে কান্নার জন্য লোকেরা কিছুই শুনতে পাবে না। তাই ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করার নির্দেশ দিন। হাফ্সা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাই করলেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “থামো, তোমরা ইউসুফ (‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের)-এর সঙ্গী মহিলাদের মত। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল।” তখন হাফ্সা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) -কে বললেন, আমি তোমার কাছ থেকে কখনও ভাল কিছু পেলাম না।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٠ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الأَنْصَارِيُّ – وَكَانَ تَبِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَخَدَمَهُ وَصَحِبَهُ – أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُصَلِّي لَهُمْ فِي وَجَعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ الِاثْنَيْنِ وَهُمْ صُفُوفٌ فِي الصَّلَاةِ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتْرَ الحُجْرَةِ يَنْظُرُ إِلَيْنَا وَهُوَ قَائِمٌ كَأَنَّ وَجْهَهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ، ثُمَّ تَبَسَّمَ يَضْحَكُ، فَهَمَمْنَا أَنْ نَفْتَتِنَ مِنَ الفَرَحِ بِرُؤْيَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ الصَّفَّ، وَظَنَّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَارِجٌ إِلَى الصَّلَاةِ «فَأَشَارَ إِلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَتِمُّوا صَلَاتَكُمْ وَأَرْخَى السِّتْرَ فَتُوُفِّيَ مِنْ يَوْمِهِ»
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী, খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে পীড়িত অবস্থায় আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা সালাতের জন্য কাতারে দাঁড়াল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুজরার পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁর চেহারা যেন কুরআনে করীমের পৃষ্ঠা (এর ন্যায় ঝলমল করছিল)। তিনি মুচকি হাসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেয়ে খুশীতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হয়তো সালাতে বেরিয়ে আসবেন। “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ইশারায় জানালেন যে, তোমরা তোমাদের সালাত পূর্ণ করে নাও। অতঃপর তিনি পর্দা ছেড়ে দিলেন। সে দিনই তাঁর ওফাত হয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨١ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «لَمْ يَخْرُجِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثًا»، فَأُقِيمَتِ الصَّلَاةُ، فَذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَقَدَّمُ، فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بِالحِجَابِ فَرَفَعَهُ، فَلَمَّا وَضَحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا نَظَرْنَا مَنْظَرًا كَانَ أَعْجَبَ إِلَيْنَا مِنْ وَجْهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ وَضَحَ لَنَا، فَأَوْمَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ إِلَى أَبِي بَكْرٍ أَنْ يَتَقَدَّمَ، وَأَرْخَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الحِجَابَ، فَلَمْ يُقْدَرْ عَلَيْهِ حَتَّى مَاتَ»
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আযীয আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “(রোগাক্রান্ত থাকায়) তিনদিন পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইরে আসেননি।” এমতাবস্থায় একসময় সালাতের ইক্বামাত দেয়া হল। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ইমামত করার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। “এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরের পর্দা ধরে উঠালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারা যখন আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তাঁর চেহারার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আমরা আর কখনো দেখিনি। যখন তাঁর চেহারা আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইঙ্গিতে আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে (ইমামতের জন্য) এগিয়ে যেতে বললেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তারপর মৃত্যুর আগে তাঁকে আর দেখতে পাইনি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٢ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: لَمَّا اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَعُهُ قِيلَ لَهُ فِي الصَّلَاةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَرَأَ غَلَبَهُ البُكَاءُ، قَالَ: «مُرُوهُ فَيُصَلِّي» فَعَاوَدَتْهُ، قَالَ: «مُرُوهُ فَيُصَلِّي، إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ» تَابَعَهُ الزُّبَيْدِيُّ، وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ يَحْيَى الكَلْبِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَالَ عُقَيْلٌ، وَمَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حَمْزَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি হা’মযাহ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে খবর দিলেন, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোগ যখন খুব বেড়ে গেল, তখন তাঁকে সালাতের জামা’আত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেন, “আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেয়।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমি বললাম, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অত্যস্ত কোমল মনের লোক। কির’আতের সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়বেন। তিনি বললেন, “তাঁকেই সালাত আদায় করতে বল।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সে কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনি আবার বললেন, “তাঁকেই সালাত আদায় করতে বল। তোমরা ইউসুফ (‘আলইহি ওয়া সাল্লামের)-এর সাথী মহিলাদের মতো।” এ হাদীসটি যুহরী (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করার ক্ষেত্রে যুবাইদী, যুহরীর ভাতিজা ও ইসহাক ইব্নু ইয়াহ্ইয়া কালবী (রহমাহুল্লাহ) ইউনুস (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন। এবং মা’মার ও উকাইল (রহমাহুল্লাহ) যুহরী (রহমাহুল্লাহ)-এর মাধ্যমে হামযা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীসটি (মুরসাল হিসেবে) বর্ণনা করেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٣ – حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فِي مَرَضِهِ»، فَكَانَ يُصَلِّي بِهِمْ، قَالَ عُرْوَةُ: فَوَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفْسِهِ خِفَّةً، فَخَرَجَ، فَإِذَا أَبُو بَكْرٍ يَؤُمُّ النَّاسَ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ اسْتَأْخَرَ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ: «أَنْ كَمَا أَنْتَ»، فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِذَاءَ أَبِي بَكْرٍ إِلَى جَنْبِهِ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ “
যাকারিয়া ইব্নু ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু নুমায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। ‘উরওয়া (রহমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেন, ইতিমধ্যে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটু সুস্থতা বোধ করলেন এবং সালাতের জন্য বেরিয়ে আসলেন। তখন আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) লোকদের ইমামত করছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখে পিছিয়ে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইঙ্গিত করলেন যে, যেভাবে আছ সেভাবেই থাক। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর বরাবর তাঁর পাশ বসে গেলেন। তখন আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অনুসরণ করে সালাত আদায় করছিলেন আর লোকেরা আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে অনুসরণ করে সালাত আদায় করছিল।
অনুরূপ বর্ণনা : [
فِيهِ عَائِشَةُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ মর্মে আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٤ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي حَازِمِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَهَبَ إِلَى بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ لِيُصْلِحَ بَيْنَهُمْ، فَحَانَتِ الصَّلَاةُ، فَجَاءَ المُؤَذِّنُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ، فَقَالَ: أَتُصَلِّي لِلنَّاسِ فَأُقِيمَ؟ قَالَ: نَعَمْ فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ فِي الصَّلَاةِ، فَتَخَلَّصَ حَتَّى وَقَفَ فِي الصَّفِّ، فَصَفَّقَ النَّاسُ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ لَا يَلْتَفِتُ فِي صَلَاتِهِ، فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَّصْفِيقَ التَفَتَ، فَرَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنِ امْكُثْ مَكَانَكَ»، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَدَيْهِ، فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى مَا أَمَرَهُ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ ذَلِكَ، ثُمَّ اسْتَأْخَرَ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى اسْتَوَى فِي الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَثْبُتَ إِذْ أَمَرْتُكَ» فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: مَا كَانَ لِابْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا لِي رَأَيْتُكُمْ أَكْثَرْتُمُ التَّصْفِيقَ، مَنْ رَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلَاتِهِ، فَلْيُسَبِّحْ فَإِنَّهُ إِذَا سَبَّحَ التُفِتَ إِلَيْهِ، وَإِنَّمَا التَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ হাযিম ইব্ন দীনার থেকে, তিনি সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমর ইব্নু আওফ গোত্রের এক বিবাদ মীমাংসার জন্য সেখানে যান। ইতিমধ্যে (আসরের) সালাতের সময় হয়ে গেলে, মুয়ায্যিন আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট এসে বললেন, আপনি কি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেবেন? তা হলে ইক্বামাত দেই? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সালাত আরম্ভ করলেন। লোকেরা সালাতরত অবস্থাতেই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন এবং তিনি সারিগুলো ভেদ করে প্রথম সারিতে গিয়ে দাঁড়ালেন। তখন সাহাবীগণ হাতে তালি দিতে লাগলেন। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সালাতে আর কোন দিকে তাকাতেন না। কিন্তু সাহাবীগণ যখন অধিক করে হাতে তালি দিতে লাগলেন, তখন তিনি তাকালেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতি ইঙ্গিত করলেন- নিজের জায়গায় থাক। তখন আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) দু’হাত উঠিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে পিছিয়ে গেলেন এবং কাতারের বরাবর দাঁড়ালেনন। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে এগিয়ে সলাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, হে আবূ বক্র! আমি তোমাকে নির্দেশ দেয়ার পর কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছিল? আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আবূ কুহাফার পুত্রের জন্যে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা শোভনীয় নয়। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাদের এক হাতে তালি দিতে দেখলাম। কারণ কী? শোন! সালাতের কারো কিছু ঘটলে সুবহানাল্লাহ বলবে। সুবহানাল্লাহ্ বললেই তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া হবে। আর হাতে তালি দেয়া তো মহিলাদের জন্য।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٥ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الحُوَيْرِثِ، قَالَ: قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ شَبَبَةٌ، فَلَبِثْنَا عِنْدَهُ نَحْوًا مِنْ عِشْرِينَ لَيْلَةً، وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَحِيمًا فَقَالَ: «لَوْ رَجَعْتُمْ إِلَى بِلَادِكُمْ، فَعَلَّمْتُمُوهُمْ مُرُوهُمْ، فَلْيُصَلُّوا صَلَاةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا، وَصَلَاةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا، وَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ، فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ»
সুলায়মান ইব্নু হা’রব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি আবূ ক্বিলাবাহ থেকে, তিনি মালিক ইব্নু হুওয়ায়রিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমরা একদল যুবক একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খেদমতে উপস্থিত হলাম এবং প্রায় বিশ রাত্রি আমরা সেখানে থাকলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু। তাই তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা যখন নিজ দেশে ফিরে গিয়ে লোকদের দ্বীন শিক্ষা দিবে, তখন তাদের এ সময়ে অমুক সালাত আদায় করতে বলবে এবং ঐ সময়ে অমুক সালাত আদায় করতে বলবে। অতঃপর যখন সালাতের সময় হয় তখন তোমাদের একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে বয়সে বড় ব্যক্তি ইমামত করবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٦ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ أَسَدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ، قَالَ: سَمِعْتُ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصارِيَّ، قَالَ: اسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَذِنْتُ لَهُ فَقَالَ: «أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ؟» فَأَشَرْتُ لَهُ إِلَى المَكَانِ الَّذِي أُحِبُّ، فَقَامَ وَصَفَفْنَا خَلْفَهُ، ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا
মু‘আয ইব্ন আসাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: মুহা’ম্মাদ ইব্নু রাবী‘ই্ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আমার গৃহে প্রবেশের) অনুমতি চাইলে তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার ঘরের কোন জায়গাটি আমার সালাত আদায়ের জন্য তুমি পছন্দ কর। আমি আমার পছন্দসই একটি স্থান ইঙ্গিত করে দেখালে তিনি সেখানে সালাতের জন্য দাঁড়ালেন, আমরা তাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালাম। অতঃপর তিনি সালাম ফিরালেন এবং আমরা সালাম ফিরালাম।
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَصَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ بِالنَّاسِ وَهُوَ جَالِسٌ وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: «إِذَا رَفَعَ قَبْلَ الإِمَامِ يَعُودُ، فَيَمْكُثُ بِقَدْرِ مَا رَفَعَ، ثُمَّ يَتْبَعُ الإِمَامَ» وَقَالَ الحَسَنُ: ” فِيمَنْ يَرْكَعُ مَعَ الإِمَامِ رَكْعَتَيْنِ وَلَا يَقْدِرُ عَلَى السُّجُودِ، يَسْجُدُ لِلرَّكْعَةِ الآخِرَةِ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ يَقْضِي الرَّكْعَةَ الأُولَى بِسُجُودِهَا، وَفِيمَنْ نَسِيَ سَجْدَةً حَتَّى قَامَ: يَسْجُدُ “
যে রোগে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওফাত হয়, সে সময় তিনি বসে বসে লোকদের ইমামত করেছেন। ইব্নু মাস‘ঊদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, কেউ যদি ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তাহলে ফিরেগিয়ে ততটুক সময় বিলম্ব করবে, যতটুকু সময় মাথা উঠিয়ে রেখেছিল। অতঃপর ইমামকে অনুসরণ করবে। হাসান বাসরী (রহমাহুল্লাহ) বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে রুকু’ সহ দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করে, কিন্তু সিজদা দিতে পারে না, সে শেষ রাক‘আতের জন্য দু’সিজদা করবে এবং প্রথম রাক‘আত সিজদাসহ পুনরায় আদায় করবে। আর যে ব্যক্তি ভুলক্রমে এক সিজদা না দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, সে (পরের রাক‘আতে) সিজদা করে নিবে।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٧ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ: أَلَا تُحَدِّثِينِي عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: بَلَى، ثَقُلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» قُلْنَا: لَا، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ، قَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي المِخْضَبِ». قَالَتْ: فَفَعَلْنَا، فَاغْتَسَلَ، فَذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ، فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» قُلْنَا: لَا، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي المِخْضَبِ» قَالَتْ: فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ، فَقَالَ: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» قُلْنَا: لَا، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي المِخْضَبِ»، فَقَعَدَ، فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» فَقُلْنَا: لَا، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَالنَّاسُ عُكُوفٌ فِي المَسْجِدِ، يَنْتَظِرُونَ النَّبِيَّ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِصَلَاةِ العِشَاءِ الآخِرَةِ، فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ بِأَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُكَ أَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ – وَكَانَ رَجُلًا رَقِيقًا -: يَا عُمَرُ صَلِّ بِالنَّاسِ، فَقَالَ لَهُ عُمَرُ: أَنْتَ أَحَقُّ بِذَلِكَ، فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الأَيَّامَ، ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَدَ مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً، فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا العَبَّاسُ لِصَلَاةِ الظُّهْرِ وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِيَتَأَخَّرَ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَنْ لَا يَتَأَخَّرَ، قَالَ: أَجْلِسَانِي إِلَى جَنْبِهِ، فَأَجْلَسَاهُ إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ: فَجَعَلَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي وَهُوَ يَأْتَمُّ بِصَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَالنَّاسُ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاعِدٌ، قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ: فَدَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَهُ: أَلَا أَعْرِضُ عَلَيْكَ مَا حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ عَنْ مَرَضِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: هَاتِ، فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَدِيثَهَا، فَمَا أَنْكَرَ مِنْهُ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ: أَسَمَّتْ لَكَ الرَّجُلَ الَّذِي كَانَ مَعَ العَبَّاسِ قُلْتُ: لَا، قَالَ: هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
আহ’মাদ ইব্নু ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মূসা ইব্ন আবূ ‘আইশাহ থেকে, তিনি উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু উত্বা থেকে, তিনি বললেন, আমি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (অন্তিম কালের) অসুস্থতা সম্পর্কে কি আপনি আমাকে কিছু শুনাবেন? তিনি বললেন, অবশ্যই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পানি দাও। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। আবার উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। অতঃপর তিনি উঠে বসলেন, এবং গোসল করলেন। এবং উঠতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষারত। ওদিকে সাহাবীগণ ‘ইশার সালাতের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপেক্ষায় মাসজিদে বসে ছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট এ মর্মে লোক পাঠালেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেন। সংবাদ বাহক আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলরেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অত্যস্ত কোমল মনের লোক ছিলেন, তাই তিনি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে বললেন, হে ‘উমর! আপনি সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করে নিন। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আপনিই এর অধিক যোগ্য। তাই আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সে কয়দিন সালাত আদায় করলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটু নিজে হাল্কাবোধ করলেন এবং দু’জন লোকের কাঁধে ভর করে যুহরের সালাতের জন্য বের হলেন। সে দু’জনের একজন ছিলেন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তখন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলেন, পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে পিছিয়ে না আসার জন্য ইঙ্গিত করলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে তাঁর পাশে বসিয়ে দাও। তাঁরা তাঁকে আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর পাশে বসিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের ইক্তিদা করে সালাত আদায় করতে লাগলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সালাতের ইক্তিদা করতে লাগলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উপবিষ্ট ছিলেন। ‘উবাইদুল্লাহ্ বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্তিম কালের অসুস্থতা সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আমাকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তা কি আমি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? তিনি বললেন, করুন। তাই আমি তাঁকে সে হাদীস শুনালাম। তিনি এ বর্ণনার কোন অংশেই আপত্তি করলেন না, তবে তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সাথে যে অপর এক সাহাবী ছিলেন,’আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কি আপনার নিকট তাঁর নাম বলেছেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٨ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ وَهُوَ شَاكٍ، فَصَلَّى جَالِسًا وَصَلَّى وَرَاءَهُ قَوْمٌ قِيَامًا، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنِ اجْلِسُوا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا رَكَعَ، فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ، فَارْفَعُوا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا»
আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হিশাম ইব্নু ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, একবার অসুস্থ থাকার কারণে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজগৃহে সালাত আদায় করেন এবং বসে সালাত আদায় করছিলেন, একদল সাহাবী তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। তিনি তাদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন যে, বসে যাও। সালাত শেষ করার পর তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই সে যখন রুকূ’ করে তোমরাও রুকূ’ করবে এবং সে যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠায় তখন তোমরাও মাথা উঠাবে, আর সে যখন বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. এ হুকুম পরে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু রোগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রহিত হয়ে গেছে। কাজেই ইমাম বসে সালাত আদায় করলেও সক্ষম মুক্তাদী দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٨٩ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكِبَ فَرَسًا، فَصُرِعَ عَنْهُ فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ، فَصَلَّى صَلَاةً مِنَ الصَّلَوَاتِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَصَلَّيْنَا وَرَاءَهُ قُعُودًا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا، فَصَلُّوا قِيَامًا، فَإِذَا رَكَعَ، فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ، فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، وَإِذَا صَلَّى قَائِمًا، فَصَلُّوا قِيَامًا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا، فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ ” قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: قَالَ الحُمَيْدِيُّ: قَوْلُهُ: «إِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا» بهُوَ فِي مَرَضِهِ القَدِيمِ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا، وَالنَّاسُ خَلْفَهُ قِيَامًا، لَمْ يَأْمُرْهُمْ بِالقُعُودِ، وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ بِالْآخِرِ فَالْآخِرِ، مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ায় সওয়ার হন অতঃপর তিনি তা হতে পড়ে যান, এতে তার ডান পাশে একটু আঘাত লাগে। তিনি কোন এক ওয়াক্তের সালাত বসে আদায় করছিলেন, আমরাও তাঁর পিছনে বসে সালাত আদায় করলাম। সালাত শেষ করার পর তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণই করা হয় তাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই ইমাম যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করবে, সে যখন রুকূ’ করে থাকে তোমরাও রুকূ’ করবে, সে যখন উঠে, তখন তোমরাও উঠবে, আর সে যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলে তখন তোমরা رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলবে। আর সে যখন বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রহমাহুল্লাহ) বলেন, হুমাইদী (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন যে, “যখন ইমাম বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ নির্দেশ ছিলো পূর্বে অসুস্থকালীন। অতঃপর তিনি বসে সালাত আদায় করেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের বসতে নির্দেশ দেননি। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ‘আমলের মধ্যে সর্বশেষ ‘আমলই গ্রহণ করতে হবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
قَالَ أَنَسٌ: «فَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا»
আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, যখন ইমাম সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٠ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ: حَدَّثَنِي البَرَاءُ – وَهُوَ غَيْرُ كَذُوبٍ -، قَالَ: ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، لَمْ يَحْنِ أَحَدٌ مِنَّا ظَهْرَهُ، حَتَّى يَقَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَاجِدًا، ثُمَّ نَقَعُ سُجُودًا بَعْدَهُ ” حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، نَحْوَهُ بِهَذَا
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সুফ্ইয়ান থেকে, তিনি বললেন: আবূ ইসহা’ক্ব আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইয়াযীদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: বারা’আ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তিনি মিথ্যাবাদী নন ১ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, যিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত না সিজদায় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সিজদায় যাওয়ার পর আমরা সিজদায় যেতাম। সুফিয়ান (রহমাহুল্লাহ) সূত্রে আবূ ইসহাক (রহমাহুল্লাহ) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. هُوَ غَيْرُ كَذُوبٍ ‘তিনি মিথ্যাবাদী নন’ একথা বলে হযরত বারা’আ (রা.) – এর সত্যবাদীতার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩١ – حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ – أَوْ: لَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ – إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ، أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ، أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ “
হা’জ্জাজ ইব্নু মিনহাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মুহা’ম্মাদ ইব্ন যিয়াদ থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা’আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَكَانَتْ عَائِشَةُ: «يَؤُمُّهَا عَبْدُهَا ذَكْوَانُ مِنَ المُصْحَفِ» وَوَلَدِ البَغِيِّ وَالأَعْرَابِيِّ، وَالغُلَامِ الَّذِي لَمْ يَحْتَلِمْ ” لِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَؤُمُّهُمْ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ»
‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর গুলাম যাকওয়ান কুরআন দেখে কিরাআত পড়ে ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর ইমামত করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তাদের মধ্যে যে আল্লাহর কিতাব সম্বন্ধে অধিক জানে সে তাদের ইমামত করবে। [ইমাম বুখারী (রহমাহুল্লাহ) বলেন,] বিনা কারণে গুলামকে জামা‘আতে উপস্থিত হতে বাধা দেয়া যাবে না।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٢ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: «لَمَّا قَدِمَ المُهَاجِرُونَ الأَوَّلُونَ العُصْبَةَ – مَوْضِعٌ بِقُبَاءٍ – قَبْلَ مَقْدَمِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَؤُمُّهُمْ سَالِمٌ مَوْلَى أَبِي حُذَيْفَةَ، وَكَانَ أَكْثَرَهُمْ قُرْآنًا»
ইবরাহীম ইব্নু মুনযির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু ‘ইয়াযআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দিল্লাহ থেকে, তিনি নাফি‘ই থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন যে, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (মদীনায়) আগমনের পূর্বে মুহাজিরগণের প্রথম দল যখন কুবা এলাকার কোন এক স্থানে এলেন, তখন আবূ হুযাইফা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁদের ইমামত করতেন। তাঁদের মধ্যে তিনি কুর’আন সম্পর্কে অধিক অভিজ্ঞ ছিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٣ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَإِنِ اسْتُعْمِلَ حَبَشِيٌّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ তায়্য়াহ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা শোন ও আনুগত্য কর, যদিও তোমাদের উপর এমন কোন হাবশীকে নেতা নিযুক্ত করা হয়-যার মাথা কিসমিসের মতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٤ – حَدَّثَنَا الفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الحَسَنُ بْنُ مُوسَى الأَشْيَبُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يُصَلُّونَ لَكُمْ، فَإِنْ أَصَابُوا فَلَكُمْ، وَإِنْ أَخْطَئُوا فَلَكُمْ وَعَلَيْهِمْ»
ফযল ইব্নু সাহল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’সান ইব্নু মূসা আশইয়াব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রহ’মান ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন দীনার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যায়দ ইব্ন আসলাম থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তারা তোমাদের ইমামত করে। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করে তাহলে তার সওয়াব তোমরা পাবে। আর যদি তারা ভুল করে, তাহলে তোমাদের জন্য সওয়াব আছে, আর ভুলত্রুটির দায়িত্ব তাদের (ইমামের) উপরই বর্তাবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ الحَسَنُ: «صَلِّ وَعَلَيْهِ بِدْعَتُهُ»
হাসান (রহমাহুল্লাহ) বলেন, তাঁর পিছনেও সালাত আদায় করে নিবে। তবে বিদা‘আতের গুনাহ তার উপরই বর্তাবে।
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٥ – قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ لَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ خِيَارٍ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، – وَهُوَ مَحْصُورٌ – فَقَالَ: إِنَّكَ إِمَامُ عَامَّةٍ، وَنَزَلَ بِكَ مَا نَرَى، وَيُصَلِّي لَنَا إِمَامُ فِتْنَةٍ، وَنَتَحَرَّجُ؟ فَقَالَ: «الصَّلَاةُ أَحْسَنُ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ، فَإِذَا أَحْسَنَ النَّاسُ، فَأَحْسِنْ مَعَهُمْ، وَإِذَا أَسَاءُوا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ» وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ، قَالَ: الزُّهْرِيُّ: «لَا نَرَى أَنْ يُصَلَّى خَلْفَ المُخَنَّثِ إِلَّا مِنْ ضَرُورَةٍ لَا بُدَّ مِنْهَا»
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী রহমাহুল্লাহ) বললেন, আমাকে মুহাম্মাদ ইব্নু ইউসুফ (রহমাহুল্লাহ) বললেন: তিনি বললেন: আওযা‘ঈ (রহমাহুল্লাহ) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহ্রী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়দ ইব্ন ‘আব্দুর রহ’মান (রহমাহুল্লাহ) থেকে, তিনি ‘উবাইদুল্লাহ ইব্নু আদী ইব্নু খিয়ার (রহমাহুল্লাহ) থেকে, তিনি ‘উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অবরুদ্ধ থাকার সময় তাঁর নিকট গিয়ে বললেন, আসলে আপনিই জনগণের ইমাম। আর আপনার বিপদ কী তা নিজেই বুঝতে পারছেন। আর আমাদের ইমামত করছে বিদ্রোহীদের নেতা। ফলে আমরা গুনাহগার হবার ভয় করছি। তিনি বললেন, মানুষের ‘আমলের মধ্যে সালাতই সবোর্ত্তম। কাজেই লোকেরা যখন উত্তম কাজ করে, তখন তুমিও তাদের সাথে উত্তম কাজে অংশ নিবে, আর যখন তারা মন্দ কাজে লিপ্ত হয়, তখন তাদের মন্দ কাজ হতে বেঁচে থাকবে। যুবাইদী (রহমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেন যে, যুহরী (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, যারা ইচ্ছে করে হিজড়া সাজে, তাদের পিছনে বিশেষ জরুরী ছাড়া সালাত আদায় করা উচিত বলে মনে করি না।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٦ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي ذَرٍّ: «اسْمَعْ وَأَطِعْ وَلَوْ لِحَبَشِيٍّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু আবান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শু‘উবাহ থেকে, তিনি আবূ তায়্য়াহ’ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলেন, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ যার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) -কে বললেন, শোন এবং আনুগত্য কর, যদিও কোন হাবশী আমীর হয় যার মাথা কিস্মিসের মতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٧ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الحَكَمِ، قَالَ: سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: بِتُّ فِي بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ ” فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العِشَاءَ، ثُمَّ جَاءَ، فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، ثُمَّ نَامَ، ثُمَّ قَامَ، فَجِئْتُ، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى خَمْسَ رَكَعَاتٍ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ نَامَ حَتَّى سَمِعْتُ غَطِيطَهُ – أَوْ قَالَ: خَطِيطَهُ – ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ “
সুলায়মান ইব্নু হা’রব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হা’কাম থেকে, তিনি বললেন: আমি সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র থেকে শুনলাম, তিনি ইব্ন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, একদা আমি আমার খালা মায়মুনা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর ঘরে রাত কাটালাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করে আসলেন এবং চার রাক’আত সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর উঠে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে তাঁর ডানপাশে নিয়ে নিলেন এবং পাঁচ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আরও দু’রাক’আত সালাত আদায় করে নিদ্রা গেলেন। এমনকি আমি তাঁর নাক ডাকার শব্দ শুনতে পেলাম। তারপর তিনি (ফজরের) সালাতের জন্য বের হলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٨ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: نِمْتُ عِنْدَ مَيْمُونَةَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَهَا تِلْكَ اللَّيْلَةَ «فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي، فَقُمْتُ عَلَى يَسَارِهِ، فَأَخَذَنِي، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، ثُمَّ نَامَ حَتَّى نَفَخَ، وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ، ثُمَّ أَتَاهُ المُؤَذِّنُ، فَخَرَجَ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ» قَالَ عَمْرٌو: فَحَدَّثْتُ بِهِ بُكَيْرًا، فَقَالَ: حَدَّثَنِي كُرَيْبٌ بِذَلِكَ
আহ্’মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ওয়াহ্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুর রব্ ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি মাখ্রামাহ ইব্ন সুলায়মান থেকে, তিনি ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর স্বাধীনকরা গুলাম কুরায়ব থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, আমি (আমার খালা) মাইমুনা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর ঘরে ঘুমালাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে রাতে তাঁর নিকট ছিলেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করলেন। অতঃপর সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিমি আমাকে ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে আসলেন। আর তিনি তের রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নাক ডাকতে শুরু করল এবং তিনি যখন ঘুমাতেন তাঁর নাক ডাকত। অতঃপর তাঁর নিকট মুয়াজ্জিন এলেন, তিনি বেরিয়ে গিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন এবং (নতুন) উযূ করেননি। ‘আম্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, এ হাদীস আমি বুকায়র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে শুনালে তিনি বলেন, কুরায়ব (রহমাহুল্লাহ)-ও এ হাদীস আমার নিকট বর্ণনা করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٦٩٩ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي «فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ، فَقُمْتُ أُصَلِّي مَعَهُ، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ بِرَأْسِي، فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “একদা আমি আমার খালা মায়মুনা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) এর নিকট রাত্রি যাপন করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সালাতে দাঁড়ালেন, আমিও তাঁর সাথে সালাত আদায় করতে দাঁড়ালাম। আমি তাঁর বামপাশে দাড়িয়ে ছিলাম, তিনি আমার মাথা ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٠ – حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ: «أَنَّ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ، كَانَ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَرْجِعُ، فَيَؤُمُّ قَوْمَهُ»
মুসলিম ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র থেকে, তিনি জাবির ইব্ন ‘আবদুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: “মু’আয ইব্নু জাবাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করার পর ফিরে গিয়ে নিজ গোত্রের ইমামাত করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠١ – حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كَانَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَرْجِعُ، فَيَؤُمُّ قَوْمَهُ، فَصَلَّى العِشَاءَ، فَقَرَأَ بِالْبَقَرَةِ، فَانْصَرَفَ الرَّجُلُ، فَكَأَنَّ مُعَاذًا تَنَاوَلَ مِنْهُ، فَبَلَغَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «فَتَّانٌ، فَتَّانٌ، فَتَّانٌ» ثَلَاثَ مِرَارٍ – أَوْ قَالَ: «فَاتِنًا، فَاتِنًا، فَاتِنًا» – وَأَمَرَهُ بِسُورَتَيْنِ مِنْ أَوْسَطِ المُفَصَّلِ، قَالَ عَمْرٌو: لَا أَحْفَظُهُمَا
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র থেকে, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: মু’আয ইব্নু জাবাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করার পর ফিরে গিয়ে নিজ গোত্রের সাথে ইমামাত করতেন। একদা তিনি ‘ইশার সালাতে সূরা বাক্বারা পাঠ করেন। এতে এক ব্যক্তি জামা‘আত হতে বেরিয়ে যায়। এজন্য মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর সমালোচনা করেন। এ খবর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পৌঁছলে তিনি তিনবার فَتَّاَنُ (ফিতনাহ সৃষ্টিকারী) অথবা فَاتِنًا (বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী) শব্দটি বললেন। এবং তিনি তাকে আওসাতে মুফাস্সালের দু’টি সূরা পাঠের নির্দেশ দেন। ‘আম্র (রাজিআল্লাহু‘আনহু) বলেন, কোন দু’টি সূরার কথা তিনি বলেছিলেন, তা আমার স্মরণ নেই।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٢ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ: حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: سَمِعْتُ قَيْسًا، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو مَسْعُودٍ، أَنَّ رَجُلًا، قَالَ: وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لَأَتَأَخَّرُ عَنْ صَلَاةِ الغَدَاةِ مِنْ أَجْلِ فُلَانٍ مِمَّا يُطِيلُ بِنَا، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَوْعِظَةٍ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْهُ يَوْمَئِذٍ، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ، فَأَيُّكُمْ مَا صَلَّى بِالنَّاسِ فَلْيَتَجَوَّزْ، فَإِنَّ فِيهِمُ الضَّعِيفَ وَالكَبِيرَ وَذَا الحَاجَةِ»
‘আহ’মাদ ইব্নু ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ক্বায়স থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আবূ মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, এক সাহাবী এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র শপথ! আমি অমূকের কারনে ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি। তিনি (জাম’আতে) সালাতকে খুব দীর্ঘ করেন। আবূ মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নসীহাত করতে আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সে দিনের ন্যায় এতও অধিক রাগান্বিত হতে আর কোনদিন দেখিনি। তিনি বলেন, “তোমাদের মাঝে বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যে যে কেউ অন্য লোক দিয়ে সালাত আদায় করে, সে যেন সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মধ্য দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোকও থাকে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٣ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ لِلنَّاسِ، فَلْيُخَفِّفْ، فَإِنَّ مِنْهُمُ الضَّعِيفَ وَالسَّقِيمَ وَالكَبِيرَ، وَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ لِنَفْسِهِ فَلْيُطَوِّلْ مَا شَاءَ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আরাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে, তখন যেন সে সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মাঝে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃর্দ্ধ রয়েছে। আর কেউ যদি একাকী সালাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٤ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لَأَتَأَخَّرُ عَنِ الصَّلَاةِ فِي الفَجْرِ مِمَّا يُطِيلُ بِنَا فُلَانٌ فِيهَا، فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا رَأَيْتُهُ غَضِبَ فِي مَوْضِعٍ كَانَ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْهُ يَوْمَئِذٍ، ثُمَّ قَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ، فَمَنْ أَمَّ النَّاسَ فَلْيَتَجَوَّزْ، فَإِنَّ خَلْفَهُ الضَّعِيفَ وَالكَبِيرَ وَذَا الحَاجَةِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসমা‘ঈল ইব্নু আবূ খালিদ থেকে, তিনি ক্বায়সে ইব্ন আবূ হা’যিম থেকে, তিনি আবূ মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, এক সাহাবী এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক ব্যক্তির জন্য আমি ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি। কেননা, তিনি আমাদের সালাত খুব দীর্ঘায়িত করেন। এ শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগান্বিত হলেন। আবূ মাস’উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, নসীহাত করতে গিয়ে সে দিন তিনি যেমন রাগান্বিত হয়েছিলেন, সে দিনের মত রাগান্বিত হতে তাঁকে আর কোন দিন দেখিনি। অতঃপর তিনি বললেন, “হে লোকেরা! তোমাদের মধ্যে বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যে যে কেউ লোকদের ইমামাত করে, সে যেন সংক্ষেপ করে। কেননা, তার পিছনে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোকেরা রয়েছে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٥ – حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَارِبُ بْنُ دِثَارٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ: أَقْبَلَ رَجُلٌ بِنَاضِحَيْنِ وَقَدْ جَنَحَ اللَّيْلُ، فَوَافَقَ مُعَاذًا يُصَلِّي، فَتَرَكَ نَاضِحَهُ وَأَقْبَلَ إِلَى مُعَاذٍ، فَقَرَأَ بِسُورَةِ البَقَرَةِ – أَوِ النِّسَاءِ – فَانْطَلَقَ الرَّجُلُ وَبَلَغَهُ أَنَّ مُعَاذًا نَالَ مِنْهُ، فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَشَكَا إِلَيْهِ مُعَاذًا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مُعَاذُ، أَفَتَّانٌ أَنْتَ» – أَوْ «أَفَاتِنٌ» – ثَلَاثَ مِرَارٍ: «فَلَوْلَا صَلَّيْتَ بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ، وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا، وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى، فَإِنَّهُ يُصَلِّي وَرَاءَكَ الكَبِيرُ وَالضَّعِيفُ وَذُو الحَاجَةِ» أَحْسِبُ هَذَا فِي الحَدِيثِ، قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَتَابَعَهُ سَعِيدُ بْنُ مَسْرُوقٍ ، وَمِسْعَرٌ، وَالشَّيْبَانِيُّ، قَالَ عَمْرٌو، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مِقْسَمٍ، وَأَبُو الزُّبَيْرِ: عَنْ جَابِرٍ، قَرَأَ مُعَاذٌ فِي العِشَاءِ بِالْبَقَرَةِ، وَتَابَعَهُ الأَعْمَشُ، عَنْ مُحَارِبٍ
আদম ইব্নু আবূ ইয়াসিন আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মুহা’রিব ইব্ন দিছার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্ন ‘আবদুল্লাহ আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, জনৈক সাহাবী দু’টি উটের পিঠে পানি নিয়ে আসছিলেন। রাতের অন্ধকার তখন ঘনীভূত হয়ে এসেছিল। এ সময় তিনি মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে সালাত আদায়রত পান, তিনি তার উট দু’টি বসিয়ে মু’আয (রাঃ)-এর দিকে (সালাত আদায় করতে) এগিয়ে গেলেন। মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূরা বাক্বারা বা সূরা আন-নিসা পড়তে শুরু করেন। এতে তিনি সাহাবী (জামা’আত ছেড়ে) চলে যান। পরে তিনি জানতে পারেন যে, মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এ জন্য তার সমালোচনা করেছেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)- এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “হে মু’আয! তুমি কি লোকদের ফিত্নায় ফেলতে চাও? বা তিনি বলেছিলেন, তুমি কি ফিত্না সৃষ্টিকারী? তিনি একথা তিনবার বলেন। অতঃপর তিনি বলেন, তুমি سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ, وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا এবং وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰ (সূরা) দ্বারা সালাত আদায় করলে না কেন? কারণ, তোমার পিছনে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোক সালাত আদায় করে থাকে।” [শু’বাহ (রহমাহুল্লাহ) বলেন] আমার ধারনা শেষোক্ত বাক্যটিও হাদীসের অংশ। সায়ীদ ইব্নু মাসরূক, মিসওআর এবং শাইবানী (রহমাহুল্লাহ) ও অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। ‘আমর, ‘উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু মিকসাম এবং আবূ যুবাইর (রহমাহুল্লাহ) জাবির (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণনা করেন যে, মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ‘ইশার সালাতে সূরা বাকারাহ পাঠ করেছিলেন। আ’মাশ (রহমাহুল্লাহ) ও মুহারিব (রহমাহুল্লাহ) সূত্রে এরূপই রিওয়ায়াত করেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٦ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوجِزُ الصَّلَاةَ وَيُكْمِلُهَا»
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল আযীয আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত সংক্ষেপে এবং পূর্ণভাবে আদায় করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٧ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا الوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنِّي لَأَقُومُ فِي الصَّلَاةِ أُرِيدُ أَنْ أُطَوِّلَ فِيهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلَاتِي كَرَاهِيَةَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمِّهِ» تَابَعَهُ بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ، وَابْنُ المُبَارَكِ، وَبَقِيَّةُ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ
ইবরাহীম ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ওয়লীদ ইব্নু মুসলিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া ইব্ন আবূ কাছীর থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা ক্বাতাদাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমি অনেক সময দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারণ শিশুর মাকে কষ্টে ফেলা আমি পছন্দ করি না। বিশ্র ইব্নু বক্র, বাকিয়্যাহ ও ইব্নু মুবারাক আওযায়ী (রহমাহুল্লাহ) হতে হাদীস বর্ণনায় ওয়ালীদ ইব্নু মুসলিম (রহমাহুল্লাহ)-এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٨ – حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: «مَا صَلَّيْتُ وَرَاءَ إِمَامٍ قَطُّ أَخَفَّ صَلَاةً، وَلَا أَتَمَّ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنْ كَانَ لَيَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَيُخَفِّفُ مَخَافَةَ أَنْ تُفْتَنَ أُمُّهُ»
খালিদ ইব্নু মাখলাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুলায়মান ইব্নু বিলাল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শারিক ইব্নু ‘আব্দুল্লাহআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ সালাত আর কোন ইমামের পিছনে আদায় করিনি। আর তা এজন্য যে, তিনি শিশুর কান্না শুনতে পেতেন এবং তার মায়ের ফিত্নায় পড়ার আশংকায় সংক্ষেপ করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٠٩ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنِّي لَأَدْخُلُ فِي الصَّلَاةِ وَأَنَا أُرِيدُ إِطَالَتَهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلَاتِي مِمَّا أَعْلَمُ مِنْ شِدَّةِ وَجْدِ أُمِّهِ مِنْ بُكَائِهِ»
‘আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়‘ই আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বাতাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তা আমি জানি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٠ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنِّي لَأَدْخُلُ فِي الصَّلَاةِ، فَأُرِيدُ إِطَالَتَهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ مِمَّا أَعْلَمُ مِنْ شِدَّةِ وَجْدِ أُمِّهِ مِنْ بُكَائِهِ» وَقَالَ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ ‘আদী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ থেকে, তিনি ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি এবং শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, আমি জানি শিশু কান্না করলে মায়ের মন খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।” এবং মূসা বললেন: আবানু আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বতাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١١ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو النُّعْمَانِ، قَالَا: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «كَانَ مُعَاذٌ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَأْتِي قَوْمَهُ، فَيُصَلِّي بِهِمْ»
সুলায়মান ইব্নু হা’রব এবং আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তাঁরা উভয়ই বললেন: হা’ম্মাদ ইব্নু যায়দ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আয়্য়ুব থেকে, তিনি ‘আমর ইব্নু দীনার থেকে, তিনি জাবির ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “মু’আয (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাত আদায় করে নিজ গোত্রে ফিরে গিয়ে তাদের ইমামাত করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٢ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: لَمَّا مَرِضَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَضَهُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ أَتَاهُ بِلَالٌ يُوذِنُهُ بِالصَّلَاةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ»، قُلْتُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ إِنْ يَقُمْ مَقَامَكَ يَبْكِي، فَلَا يَقْدِرُ عَلَى القِرَاءَةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ»، فَقُلْتُ: مِثْلَهُ، فَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ: «إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ»، فَصَلَّى وَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ يَخُطُّ بِرِجْلَيْهِ الأَرْضَ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ أَنْ صَلِّ، فَتَأَخَّرَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَقَعَدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى جَنْبِهِ، وَأَبُو بَكْرٍ يُسْمِعُ النَّاسَ التَّكْبِيرَ تَابَعَهُ مُحَاضِرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু দাঊদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে আক্রান্ত থাকাকালে একবার বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর নিকট এসে সালাতের (সময় হওয়ার) সংবাদ দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “আবূ বক্রকে বল, যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে।” [‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেন] আমি বললাম, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি আপনার স্থানে দাঁড়ালে কেঁদে ফেলবেন এবং কিরাআত পড়তে পারবেন না। তিনি আবার বললেনঃ “আবূ বকরকে বল, সালাত আদায় করতে।” আমি আবারও সেকথা বললাম। তখন তৃতীয় বা চতুর্থবারে তিনি বললেন, “তোমরা তো ইউসুফের (‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের)–সাথী রমণীদেরই মত। আবূ বকর (রাঃ) কে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে।” আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন, ইতিমধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’জন লোকের কাঁধে ভর করে বের হলেন। [‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বললেনঃ] আমি যেন এখনও সে দৃশ্য দেখতে পাই, তিনি দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়িয়ে যান। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে দেখতে পেয়ে পিছনে সরে আসতে লাগলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইঙ্গিতে তাঁকে সালাত আদায় করতে বললেন, (তবুও) আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) পিছনে সরে আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পাশে বসলেন, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাকবীর শুনাতে লাগলেন। মুহাযির (রহমাহুল্লাহ) আমাশ (রহমাহুল্লাহ) হতে হাদীস বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু দাউদ (রহমাহুল্লাহ) –এর অনুসরণ করেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَيُذْكَرُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ائْتَمُّوا بِي وَلْيَأْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ»
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উল্লেখ করা হচ্ছে: তিনি বললেন: তোমরা আমার অনুসরণ করবে, তোমাদের পিছনের লোকেরা যেন তোমাদের ইকতিদা করে।
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٣ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: لَمَّا ثَقُلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَ بِلَالٌ يُوذِنُهُ بِالصَّلَاةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ»، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ وَإِنَّهُ مَتَى مَا يَقُمْ مَقَامَكَ لَا يُسْمِعُ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ» فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ: قُولِي لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، وَإِنَّهُ مَتَى يَقُمْ مَقَامَكَ لَا يُسْمِعُ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ، قَالَ: «إِنَّكُنَّ لَأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ» فَلَمَّا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ وَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفْسِهِ خِفَّةً، فَقَامَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، وَرِجْلَاهُ يَخُطَّانِ فِي الأَرْضِ، حَتَّى دَخَلَ المَسْجِدَ، فَلَمَّا سَمِعَ أَبُو بَكْرٍ حِسَّهُ، ذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَأَخَّرُ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى جَلَسَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي قَاعِدًا، يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ مُقْتَدُونَ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
ক্বুতায়বা ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ মু‘আবিয়াহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আ্মাশ থেকে, তিনি ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন (রোগে) পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এসে সালাতের কথা বললেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আবূ বক্রকে বল, লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে।” আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে এ নির্দেশ দেন (তবে ভাল হয়)। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ “লোকদের নিয়ে আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে সালাত আদায় করতে বল।” আমি হাফ্সাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি যখন আপনার বদলে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে এ নির্দেশ দিতেন (তবে ভালো হতো)। এ শুনে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “তোমরা ইউসুফের সাথী নারীদেরই মতো। আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল।” আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) লোকদের নিয়ে সালাত শুরু করলেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে একটু সুস্থবোধ করলেন এবং দু’জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মসজিদে গেলেন। তাঁর দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন তাঁর আগমন টের পেলেন, পিছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার প্রতি ইঙ্গিত করলেন (স্বস্থানে থাকার জন্য)। অতঃপর তিনি এসে আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর বামপাশে বসে গেলেন। অবশেষে আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর সালাতের অনুসরণ করছিল।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٤ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي تَمِيمَةَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ، فَقَالَ لَهُ ذُو اليَدَيْنِ: أَقَصُرَتِ الصَّلَاةُ، أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصَدَقَ ذُو اليَدَيْنِ» فَقَالَ النَّاسُ: نَعَمْ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক ইব্ন আনাস থেকে, তিনি আয়্য়ূব ইব্ন তামীমাহ সাখতিয়ানী থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন সীরীন থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ রাক’আত আদায় করে সালাত শেষ করে ফেললেন। যূল-ইয়াদাইন (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সালাত কি কম করা হয়েছে, না কি আপনি ভুলে গেছেন? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (অন্যদের লক্ষ্য করে) বললেন, “যূল-ইয়াদাইন কি ঠিক বলছে?” সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং আরও দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন এবং তাকবীর বলে স্বাভাবিক সিজদার মতো অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٥ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: ” صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، فَقِيلَ: صَلَّيْتَ رَكْعَتَيْنِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ “
আবূ ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সা‘ঈদ ইব্ন ইবরাহীম থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন আব্দুর রহমান থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত দু’ রাক’আত আদায় করলেন। তাঁকে বলা হল, আপনি দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। তখন তিনি আরও দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন এবং সালাম ফিরানোর পর দু’টি (সাহু) সিজদা করলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَدَّادٍ، ” سَمِعْتُ نَشِيجَ عُمَرَ، وَأَنَا فِي آخِرِ الصُّفُوفِ يَقْرَأُ: {إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ} [يوسف: ٨٦] “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু শাদ্দাদ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমি পিছনের কাতার হতে ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর চাপা কান্নার আওয়ায শুনেছি। তিনি তখন “আমি আমার দুঃখ ও বেদনার অভিযোগ একমাত্র আল্লাহর নিকটই পেশ করছি” [সূরা ইউসুফ ১২:১৮]-এ আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٦ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي مَرَضِهِ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: قُلْتُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ لِحَفْصَةَ: قُولِي لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ، فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَهْ إِنَّكُنَّ لَأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ، فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ» قَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ: مَا كُنْتُ لِأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক ইব্ন আনাস আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম ইব্ন ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (অন্তিম) রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বললেনঃ “আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমি তাঁকে বললাম, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন আপনার স্থালে দাঁড়াবেন, তখন কান্নার কারণে সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। কাজেই ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, “আবূ বক্রকে বল লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে দিতে।” ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, তখন আমি হাফ্সাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কে বললাম, তুমি তাকেঁ বল যে, আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন কান্নার কারণে সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। কাজেই ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে বলুন তিনি যেন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। হাফ্সা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) তাই করলেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “থামো! তোমরা ইউসুফের সাথী মহিলাদেরই মতো। আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে।” এতে হাফসা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) কে (দুঃখ করে) বললেন, তোমার কাছ হতে আমি কখনো ভাল কিছু পাইনি।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٧ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ المَلِكِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، قَالَ: سَمِعْتُ سَالِمَ بْنَ أَبِي الجَعْدِ، قَالَ: سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ، أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ»
আবূ ওয়ালীদ হিশাম ইব্নু ‘আব্দুল মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আম্র ইব্নু মুর্রাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: আমি সালিম ইব্ন জা‘আ্দ থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: আমি নু’মান ইব্নু বশীর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নিবে, তা না হলে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করে দিবেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٨ – حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ العَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَقِيمُوا الصُّفُوفَ، فَإِنِّي أَرَاكُمْ خَلْفَ ظَهْرِي»
আবূ মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়ারিছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল আযীয ইব্ন স্বুহায়ব থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা কাতার সোজা করে নিবে। জেনে রাখ, আমি আমার পিছনে তোমাদেরকে দেখতে পাই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧١٩ – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ ابْنُ أَبِي رَجَاءٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ: حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِوَجْهِهِ، فَقَالَ: «أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ، وَتَرَاصُّوا، فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي»
আহ’মাদ ইব্নু আবূ রাজাই আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘আবিয়া ইব্ন ‘আম্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যাইদাহ ইব্নু ক্বুদামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হু’মায়দ ত্বাবীল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন, সালাতের ইক্বামাত হচ্ছে, এমন সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ করে তাকালেন এবং বললেন, “তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নাও আর মিলে দাঁড়াও। কেননা, আমি আমার পিছনে তোমাদেরকে দেখতে পাই।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٠ – حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَيٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الشُّهَدَاءُ: الغَرِقُ، وَالمَطْعُونُ، وَالمَبْطُونُ، وَالهَدِمُ “
আবূ ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি সুমায়্য়ী থেকে, তিনি আবূ স্বালিহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে এবং ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহীদ।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢١ – وَقَالَ: «وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لَاسْتَبَقُوا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي العَتَمَةِ وَالصُّبْحِ، لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الصَّفِّ المُقَدَّمِ لَاسْتَهَمُوا»
এবং তিনি বললেন, “যদি লোকেরা জানত যে, আওয়াল ওয়াক্তে সালাত আদায়ের কী ফযীলত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করে আগেভাগে আসার চেষ্টা করতো। আর ‘ইশা ও ফজরের জামা’আতের কী ফযীলত যদি তারা জানত তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হতো। এবং সামনের কাতারের কী ফযীলত তা যদি জানত, তাহলে এর জন্য তারা কুর’আ ব্যবহার করতো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٢ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَلَا تَخْتَلِفُوا عَلَيْهِ، فَإِذَا رَكَعَ، فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا لَكَ الحَمْدُ، وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا، فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ، وَأَقِيمُوا الصَّفَّ فِي الصَّلَاةِ، فَإِنَّ إِقَامَةَ الصَّفِّ مِنْ حُسْنِ الصَّلَاةِ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুর রায্যাক্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মা‘আমার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন হাম্মাম ইব্ন মুনাব্বিহ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “অনুসরণ করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়। কাজেই তার বিরুদ্ধাচরণ করবে না। তিনি যখন রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকু’ করবে। তিনি যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলেন , তখন তোমরা رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলবে। তিনি যখন সিজদা করবেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। তিনি যখন বসে সালাত আদায় করেন, তখন তোমরাও সবাই বসে সালাত আদায় করবে। আর তোমরা সালাতে কাতার সোজা করে নিবে, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٣ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: « سَوُّوا صُفُوفَكُمْ، فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصُّفُوفِ مِنْ إِقَامَةِ الصَّلَاةِ»
আবূ ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নিবে, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٤ – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ أَسَدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا الفَضْلُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدٍ الطَّائِيُّ، عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَدِمَ المَدِينَةَ فَقِيلَ لَهُ: مَا أَنْكَرْتَ مِنَّا مُنْذُ يَوْمِ عَهِدْتَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: «مَا أَنْكَرْتُ شَيْئًا إِلَّا أَنَّكُمْ لَا تُقِيمُونَ الصُّفُوفَ» وَقَالَ عُقْبَةُ بْنُ عُبَيْدٍ: عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ، قَدِمَ عَلَيْنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ المَدِينَةَ بِهَذَا
মু‘আয ইব্নু আসাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফয্ল ইব্নু মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু ‘উবায়দ ত্বায়্য়ী আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন বুশায়র ইব্ন ইয়াসার আনস্বারী থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: একবার তিনি (আনাস) মদীনায় আসলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগের তুলনায় আপনি আমাদের সময়ের অপছন্দনীয় কী দেখতে পাচ্ছেন? তিনি বললেন, “অন্য কোন কাজ তেমন অপছন্দনীয় মনে হচ্ছে না। তবে তোমরা (সালাতে) কাতার ঠিকমত সোজা কর না।” ‘উক্বাহ ইব্নু ‘উবাইদ (রহমাহুল্লাহ) বুশাইর ইব্নু ইয়াসার (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেন যে, আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদের নিকট মদীনায় এলেন, বাকী অংশ অনুরূপ।
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. জামা‘আতে দাঁড়াবার সময় পায়ের গিটের সাথে পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর পায়ের গিট মিলিয়ে এবং কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে পার্শবর্তী মুসুল্লীর বাহু মিলিয়ে কাতারবন্দী হয়ে সালাত আদায় করতে হবে। দুই মুসল্লির মাঝখানে ফাঁকা ফাঁকা করে দাঁড়ানোর কথা কোন হাদীসে নাই। আবূ দাউদে আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেছেন, তোমরা তোমাদের কাতারসমূহের মধ্যে পরস্পর মিলে দাঁড়াও এবং কাতারসমূহের মধ্যে তোমরা পরস্পর নিকটবর্তী হও। এবং তোমাদের ঘাড়সমূহকে সমপর্যায়ে সোজা রাখ। সেই মহান সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আমি শয়তানকে দেখি সে কাতারের ফাঁকসমূহে প্রবেশ করে যেন কালো কালো ভেড়ার বাচচা। আরও হাদীস দেখুন [বুখারী ১০০ পৃষ্ঠা, মুসলিম ১৮২ পৃষ্ঠা। আবুদাউদ ৯৭ পৃষ্ঠা, তিরমিযী ৫৩ পৃষ্ঠা, নাসঈ, ইবনে মাজাহ ৭১ পৃষ্ঠা। দারাকুৎনী ১ম খণ্ড ২৮৩ পৃষ্ঠা, মেশকাত ৯৮ পৃষ্ঠা, বুখারী আযীযুল হক, ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪২৭। বুখারী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড অনুচ্ছেদসহ হাদীস নং ৬৮২, ৬৮৬, ৬৮৭। মুসলিম ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৮৫১। আবু দাউদ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৬২, ৬৬৬। তিরমিযী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২২৭। মেশকাত নূর মোহাম্মাদ আযমী ৩য় খণ্ড ও মেশকাত মাদরাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ১০১৭, ১০১৮, ১০২০, ১০২৫, ১০৩৩, ১০৩৪। বুলুগুলস মারাম ১২৪ পৃষ্ঠা।
وَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ بَشِيرٍ: «رَأَيْتُ الرَّجُلَ مِنَّا يُلْزِقُ كَعْبَهُ بِكَعْبِ صَاحِبِهِ»
নুমান ইব্নু বাশীর (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমাদের মধ্যে লোক-জনকে দেখেছি পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির টাখ্নুর সাথে টাখ্নু মিলাতে।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٥ – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ خَالِدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ، فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي، وَكَانَ أَحَدُنَا يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ، وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ»
‘আম্র ইব্নু খালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হু’মায়দ থেকে, তিনি আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পিছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন আমাদের প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٦ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَأْسِي مِنْ وَرَائِي، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى وَرَقَدَ، فَجَاءَهُ المُؤَذِّنُ، فَقَامَ وَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: দাঊদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র ইব্ন দীনার থেকে, তিনি ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর স্বাধীনকরা গুলাম কুরায়ব থেকে, তিনি ইব্নু আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, “কোন একরাতে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সংগে সালাত আদায় করতে গিয়ে তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পিছনের দিক ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে আসলেন। অতঃপর সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। পরে তাঁর নিকট মুয়াজ্জিন এলে তিনি উঠে সালাত আদায় করলেন, কিন্তু (নতুনভাবে) উযূ করলেন না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٧ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «صَلَّيْتُ أَنَا وَيَتِيمٌ، فِي بَيْتِنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মুহা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইসহা’ক্ব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “একবার আমাদের ঘরে আমি ও একটি ইয়াতীম ছেলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। আর আমার মা উম্মু সুলাইম (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) আমাদের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٨ – حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «قُمْتُ لَيْلَةً أُصَلِّي عَنْ يَسَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخَذَ بِيَدِي – أَوْ بِعَضُدِي – حَتَّى أَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ، وَقَالَ بِيَدِهِ مِنْ وَرَائِي»
মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ছাবিত ইব্নু ইয়াযীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শা‘আ্বী থেকে, তিনি ইব্নু আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “একরাতে আমি সালাত আদায়ের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার হাত বা বাহু ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন এবং তিনি তাঁর হাতের ইঙ্গিতে বললেন, আমার পিছনের দিক দিয়ে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ الحَسَنُ: «لَا بَأْسَ أَنْ تُصَلِّيَ وَبَيْنَكَ وَبَيْنَهُ نَهْرٌ» وَقَالَ أَبُو مِجْلَزٍ: «يَأْتَمُّ بِالإِمَامِ وَإِنْ كَانَ بَيْنَهُمَا طَرِيقٌ أَوْ جِدَارٌ إِذَا سَمِعَ تَكْبِيرَ الإِمَامِ»
হাসান (রহমাহুল্লাহ) বলেন, “তোমার ও ইমামের মধ্যে নহর থাকলেও ইকতিদা করতে অসুবিধা নেই।” আবূ মিজলায (রহমাহুল্লাহ) বলেন, “যদি ইমামের তাকবীর শোনা যায় তাহলে ইমাম ও মুকতাদীর মধ্যে রাস্তা ও দেয়াল থাকলেও ইকতিদা করা যায়।”
হাদীসের মান: সহীহ
٧٢٩ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فِي حُجْرَتِهِ، وَجِدَارُ الحُجْرَةِ قَصِيرٌ، فَرَأَى النَّاسُ شَخْصَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ أُنَاسٌ يُصَلُّونَ بِصَلَاتِهِ، فَأَصْبَحُوا فَتَحَدَّثُوا بِذَلِكَ، فَقَامَ اللَّيْلَةَ الثَّانِيَةَ، فَقَامَ مَعَهُ أُنَاسٌ يُصَلُّونَ بِصَلَاتِهِ، صَنَعُوا ذَلِكَ لَيْلَتَيْنِ – أَوْ ثَلَاثًا – حَتَّى إِذَا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ، جَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَخْرُجْ، فَلَمَّا أَصْبَحَ ذَكَرَ ذَلِكَ النَّاسُ فَقَالَ: «إِنِّي خَشِيتُ أَنْ تُكْتَبَ عَلَيْكُمْ صَلَاةُ اللَّيْلِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু সালাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইয়াহ’ইয়া ইব্ন সা‘ঈদ আনস্বারী থেকে, তিনি ‘আম্রাহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সালাত তাঁর নিজ কামরায় আদায় করতেন। কামরার দেওয়ালটি ছিল নীচু। ফলে একদা সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীর দেখতে পেলেন এবং (দেয়ালের অন্য পাশে) সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। সকালে তাঁরা এ কথা বলাবলি করছিলেন। দ্বিতীয় রাতে তিনি (সালাতে) দাঁড়ালেন। সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। দু’ বা তিন রাত তাঁরা এরূপ করলেন। এরপরে (রাতে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে থাকলেন, আর বের হলেন না। ভোরে সাহাবীগণ এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ “আমার আশংকা হচ্ছিল যে, রাতের সালাত তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হতে পারে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٠ – حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ المُنْذِرِ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَهُ حَصِيرٌ، يَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ، وَيَحْتَجِرُهُ بِاللَّيْلِ، فَثَابَ إِلَيْهِ نَاسٌ، فَصَلَّوْا وَرَاءَهُ»
ইবরাহীম ইব্নু মুনযির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু ফুদায়ক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ যি‘ই্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মাক্ববুরী থেকে, তিনি আবূ সালামাহ ইব্ন ‘আব্দুর রাহ’মান থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি চাটাই ছিল। তিনি তা দিনের বেলায় বিছিয়ে রাখতেন এবং রাতের বেলা তা দিয়ে কামরা বানিয়ে নিতেন। সাহাবীগণ তাঁর পিছনে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান এবং তাঁর পিছনে সালাত আদায় করেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣١ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمٍ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اتَّخَذَ حُجْرَةً – قَالَ: حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ مِنْ حَصِيرٍ – فِي رَمَضَانَ، فَصَلَّى فِيهَا لَيَالِيَ، فَصَلَّى بِصَلَاتِهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَلَمَّا عَلِمَ بِهِمْ جَعَلَ يَقْعُدُ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ: «قَدْ عَرَفْتُ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ صَنِيعِكُمْ، فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ، فَإِنَّ أَفْضَلَ الصَّلَاةِ صَلَاةُ المَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلَّا المَكْتُوبَةَ» قَالَ عَفَّانُ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى، سَمِعْتُ أَبَا النَّضْرِ، عَنْ بُسْرٍ، عَنْ زَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আব্দুল আ‘আ্লা ইব্নু হা’ম্মাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: উহায়ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মূসা ইব্নু ‘উক্ববাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন সালাম আবূ নাযার থেকে, তিনি বুস্র ইব্ন সা‘ঈদ থেকে, তিনি যায়দ ইব্নু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসে একটি ছোট কামরা বানালেন। তিনি (বুস্র ইব্নু সায়ীদ) (রহমাহুল্লাহ) বলেন, মনে হয়, যায়দ ইব্নু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কামরাটি চাটাই দিয়ে তৈরি ছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক রাত সালাত আদায় করেন। আর তাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কিছু সাহাবীও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। তিনি যখন তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন, তখন তিনি বসে থাকলেন। পরে তিনি তাঁদের নিকট এসে বললেন, “তোমাদের কার্যকলাপ দেখে আমি বুঝতে পেরেছি। হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরেই সালাত আদায় কর। কেননা, ফরয সালাত ছাড়া লোকেরা ঘরে যে সালাত আদায় করে তা-ই উত্তম।” ‘আফফান (রহমাহুল্লাহ) যায়দ ইব্নু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম বলেছেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٢ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الأَنْصَارِيُّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكِبَ فَرَسًا فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ – قَالَ أَنَسٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – فَصَلَّى لَنَا يَوْمَئِذٍ صَلَاةً مِنَ الصَّلَوَاتِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَصَلَّيْنَا وَرَاءَهُ قُعُودًا، ثُمَّ قَالَ لَمَّا سَلَّمَ: ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ “
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ায় চড়েন। ফলে তাঁর ডান পাঁজরে আঁচড় লাগে। আনাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন এ সময় কোন এক সালাত আমাদের নিয়ে তিনি বসে আদায় করেন। আমরাও তাঁর পিছনে বসে সালাত আদায় করি। সালাম ফিরানোর পর তিনি বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে অনুসরণ করার জন্যই। তাই তিনি যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেন তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। আর তিনি যখন রুকূ’ করেন তখন তোমারাও রুকূ’ করবে। তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। তিনি যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলেন, তখন তোমরা رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলবে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٣ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ: خَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ فَرَسٍ، فَجُحِشَ، فَصَلَّى لَنَا قَاعِدًا فَصَلَّيْنَا مَعَهُ قُعُودًا، ثُمَّ انْصَرَفَ، فَقَالَ: ” إِنَّمَا الإِمَامُ – أَوْ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ – لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا لَكَ الحَمْدُ، وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا “
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন শিহাব থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়া হতে পড়ে গিয়ে আহত হন। তাই তিনি আমাদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে বসে সালাত আদায় করি। অতঃপর তিনি ফিরে বললেনঃ “ইমাম অনুসরণের জন্যই বা তিনি বলেছিলেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করবে। যখন তিনি উঠেন তখন তোমরাও উঠবে। তিনি যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলেন, তখন তোমরা رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলবে এবং তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٤ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا ، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ “
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন, যিনাদ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন আ‘আ্রাজ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন তিনি রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করবে। যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলেন তখন তোমরা বলবে رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ আর তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। যখন তিনি বসে সালাত আদায় করেন তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
الأُولَى مَعَ الِافْتِتَاحِ سَوَاءً
প্রথমে সালাত শুরু করার সময়।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ: ” أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلَاةَ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ، رَفَعَهُمَا كَذَلِكَ أَيْضًا، وَقَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، وَكَانَ لَا يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ “
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসলামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি সালিম ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা [‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ)] থেকে, তিনি বললেন, “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শুরু করতেন, তখন উভয় হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকূ’তে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও একই ভাবে দু’হাত উঠাতেন এবং سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه ও رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলতেন। কিন্তু সিজদার সময় এরুপ করতেন না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٦ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ” رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ فِي الصَّلَاةِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يَكُونَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَكَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يُكَبِّرُ لِلرُّكُوعِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ، وَيَقُولُ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، وَلَا يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু মুক্বাতিল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইউনুস আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু আব্দুল্লাহ আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এ রকম করতেন। আবার যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও এমন করতেন এবং سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলতেন। তবে সিজদার সময় এরূপ করতেন না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٧ – حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الوَاسِطِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، أَنَّهُ رَأَى مَالِكَ بْنَ الحُوَيْرِثِ «إِذَا صَلَّى كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَ يَدَيْهِ»، وَحَدَّثَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَنَعَ هَكَذَا
ইসহা’ক্ব ওয়াসিত্বী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: খালিদ ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন খালিদ থেকে, তিনি আবূ কিলাবা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি মালিক ইব্নু হুওয়ায়রিস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে দেখেছেন, “তিনি যখন সালাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু’ করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রু’কু হতে মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ فِي أَصْحَابِهِ: «رَفَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ»
আবূ হুমাইদ (রহমাহুল্লাহ) তাঁর সাথীদের বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁধ বরাবর হাত উঠাতেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٨ – حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ” رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ افْتَتَحَ التَّكْبِيرَ فِي الصَّلَاةِ، فَرَفَعَ يَدَيْهِ حِينَ يُكَبِّرُ حَتَّى يَجْعَلَهُمَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَهُ، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَعَلَ مِثْلَهُ، وَقَالَ: رَبَّنَا وَلَكَ الحَمْدُ، وَلَا يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يَسْجُدُ، وَلَا حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ “
আবূল ইয়ামান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘আয়ব আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন যুহ্রী থেকে, তিনি বললেন: সালিম ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে তাকবীর দিয়ে সালাত শুরু করতে দেখেছি, তিনি যখন তাকবীর বলতেন তখন তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং কাঁধ বরাবর করতেন। আর যখন রুকূ’র তাকবীর বলতেন তখনও এ রকম করতেন। আবার যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলতেন, তখনও এরূপ করতেন এবং رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ বলতেন। কিন্তু সিজদায় যেতে এরূপ করতেন না। আর সিজদার থেকে মাথা উঠাবার সময়ও এরূপ করতেন না।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٣٩ – حَدَّثَنَا عَيَّاشٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ ” إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ “، وَرَفَعَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَوَاهُ ابْنُ طَهْمَانَ، عَنْ أَيُّوبَ، وَمُوسَى بْنِ عُقْبَةَ مُخْتَصَرًا
‘আয়্য়াশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ‘আলা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উবায়দুল্লাহআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি‘ই থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, যখন তিনি সালাত শুরু করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং দু’হাত উঠাতেন আর যখন রুকু’ করতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এরপর যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه বলতেন তখনও দু’ হাত উঠাতেন এবং দু’রাক’আত আদায়ের পর যখন দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এ সমস্ত আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত বলে ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন। এ হাদীসটি হাম্মাদ ইব্নু সালাম ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। ইব্নু তাহমান, আইয়ূব ও মূসা ইব্নু ‘উক্বাহ (রহমাহুল্লাহ) হতে এ হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. আধুনিক প্রকাশনীর ৬৯৫ নং হাদীসের বিশাল এক টীকা লেখা হয়েছে শুধু মাযহাবী ফিরকাবন্দী রসম রেওয়াজ চালু রাখার জন্য। এতে বহু মারফু’ হাদীসকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহীহ হাদীসকে উপেক্ষা করে- কেবল মাত্র হানাফী মাযহাব ঠিক রাখার জন্য- তাক্বীরে তাহরীমা ছাড়া কোথাও রাফ’উল ইয়াদাঈন হয় না লিখা হয়েছে, অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজীবন সালাতে তাক্বীরে তাহরীমাহ ছাড়াও রাফ’উল ইয়াদাঈন বা হাত উত্তোলন করেছেন। নিম্নের হাদীস তার জ্বলন্ত প্রমাণঃ
আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রূকু’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। এবং যখন রূকু’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন। ইমাম বুখারী এটা বর্ণনা করেছেন। তাঁর অপর বর্ণনায় এটাও আছে যে, যখন তিনি [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] দ্বিতীয় রাক’আত হতে (তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত (কাঁধ বরাবর) উঠাতেন। এ ধরণের মার্ফু ও সহীহ হাদীস সমূহের উদাহরণ নিম্নে প্রদান করা হলো-
(বুখারী ১ম খণ্ড ১০২ পৃষ্ঠা। মুসলিম ১৬৮ পৃষ্ঠা। আবু দাউদ ১ম খণ্ড ১০৪, ১০৫ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৯ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪১, ১৫৮, ১৬২ পৃষ্ঠা। ইব্নু খুযায়মাহ ৯৫, ৯৬। মেশকাত ৭৫ পৃষ্ঠা। ইবনে মাজাহ ১৬৩ পৃষ্ঠা। যাদুল মা’আদ ১ম খণ্ড ১৩৭, ১৩৮, ১৫০ পৃষ্ঠা। হিদায়া দিরায়াহ ১১৩-১১৫ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ১৯০ পৃষ্ঠা। বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯২, ৬৯৩, ৬৯৫। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৩২-৪৩৪। বুখারী ইসলামীক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯৭-৭০১ অনুচ্ছেদসহ। মুসলিম ইসলামীক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৪৫-৭৫০। আবূ দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৮৪২-৮৪৪। তিরমিযী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ২৫৫। মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ও মাদরাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৩৮-৭৩৯, ৭৪১, ৭৪৫। বুলূগুল মারাম ৮১ পৃষ্ঠা। ইসলামিয়াত বি-এ. হাদীস পর্ব ১২৬-১২৯ পৃষ্ঠা)
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শুরু করতেন, যখন রুকু’ করতেন এবং যখন রুকু’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন কিন্তু সিজদার মধ্যে হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ অর্থাৎ তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সর্বদাই তাঁর সালাত এরূপ করতেন। (বায়হাকি, হেদায়াহ দেরায়াহ ১ম খণ্ড ১১৪ পৃষ্ঠা)
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, রফ’উল ইয়াদাঈন হল সালাতের সৌন্দর্য, রুকু’তে যাবার সময় ও রুকু’ হতে উঠার সময় কেউ রফ’উল ইয়াদাঈন না করলে তিনি তাকে ছোট পাথর ছুঁড়ে মারতেন। (নায়লুল আওত্বার ৩/১২, ফাতহুল বারী ২/২৫৭) হাদীস জগতের শ্রেষ্ঠ ইমাম ইসমা’ঈল বুখারী জুযউর রফ’ইল ইয়াদাইন নামক একটি স্বতন্ত্র হাদীস গ্রন্থই রচনা করেছেন। যার মধ্যে ১৯৮টি হাদীস বিদ্যমান। (ছাপা তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ঢাকা)
যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী তাঁর সিফাতু সলাতুন্নবী গ্রন্থে বুখারী ও মুসলিমের হাদীস “তিনি রুকু’ থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় দু’হাত উঠাতেন” উল্লেখ করে টীকায় লিখেছেন- এ হস্ত উত্তোলন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে সাব্যেস্ত। কিছু সংখ্যক হানাফী আলেম সহ বেশীরভাগ আলিম হাত উঠানোর পক্ষে মত পোষণ করেন।
রফ’উল ইয়াদাইন ও খোলাফায়ে রাশিদ্বীন এবং আশরা মুবাশ্শারীনঃ ইমাম যায়লা’ঈ হানাফী (রহমাহুল্লাহ), আল্লামা আবদুল হাই লক্ষ্ণৌবী হানাফী (রহমাহুল্লাহ), আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী হানাফী (রহমাহুল্লাহ) এবং হাফিয ইব্নু হাজার আসকালানী (রহমাহুল্লাহ) সবাই ইমাম হাকেম (রহমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ
ইমাম হাকিম (রহমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ “রফয়ে য়াদাইন ব্যতীত অন্য কোন সুন্নাতের বর্ণনার ক্ষেত্রে খোলাফায়ে রাশেদ্বীন, আশরা মোবাশ্শারা (জান্নাতের শুভসংবাদ প্রাপ্ত দশজন সাহাবা) এবং বড় বড় সাহাবীগণ (তাদের দূর দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরও) একত্রিত হয়েছেন বলে আমার জানা নেই। (নাসবুর রায়াহ ১/৪১৮ পৃষ্ঠা, নাইলুল ফারকাদাইন পৃষ্ঠা ২৬, তালখীছ আলহাবীর ১/৮২) শায়খ আবদুল কাদের জীলানী ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ শায়খ আবদুল কাদের জীলানী (রহমাহুল্লাহ) সালাতের সুন্নাতসমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেনঃ
“সালাত শুরু করার সময়, রুকু’তে যাওয়ার সময় এবং রুকু’ থেকে উঠার সময় রফ’উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত।” (গুনইয়াতুত ত্বালিবীন পৃষ্ঠা ১০) হানাফী ‘আলিমগণ ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ শায়খ আবুত্বলিব মাক্কী হানাফী (রহমাহুল্লাহ) তাঁর কূতুল কূলুব নামক গ্রন্থে সালাতের সুন্নাত সমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ
“রুকু’তে যাওয়ার সময় রফ’উল ইয়াদাইন করা এবং তাকবীর বলা সুন্নাত। তারপর ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে রফ’উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত ।” (কূতুল কূলুব ৩/১৩৯)
কাযী ছানাউল্লাহ পানিপত্তি (রহমাহুল্লাহ) বলেনঃ বর্তমান সময়ের অধিকাংশ আলেমের দৃষ্টিতে রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নাত। অধিকাংশ ফকীহ এবং মুহাদ্দিসগণ একে প্রমাণ করে থাকেন।” (মালা বুদ্দা মিনহু পৃষ্ঠা ৪২, ৪৪) ইমাম আবু ইউসুফ-এর শীষ্য ইছাম ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ আল্লামা ‘আবদুল হাই লাখনোভী বলেনঃ “এছাম ইব্নু আবু ইউসুফ ইমাম আবু ইউসুফ (রহমাহুল্লাহ)-এর শাগরিদ ছিলেন এবং হানাফী ছিলেন। তিনি রুকু’তে যাওয়ার সময় এবং রুকু’ থেকে উঠার সময় দু’হাত উঠাতেন।” (আল ফাওয়ায়েদুল বাহিয়্যাহ ১১৬ নূর মোহাম্মদ প্রেস) ‘আবদুল্লাহ ইব্নুল মোবারক, সুফিয়ান ছাওরী এবং শু’বাহ বলেনঃ “এছাম ইবনূ ইউসুফ মুহাদ্দিছ ছিলেন তাই তিনি রফউল ইয়াদাইন করতেন।” (আল ফাওয়ায়েদুল বাহিয়্যাহ ১১৬ নূর মোহাম্মদ প্রেস) আল্লামা আবদুল হাই লক্ষ্ণৌবী (রহঃ) বলেনঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে রফয়ে ইয়াদাইন এর প্রমাণ বেশী এবং অগ্রাধিকার যোগ্য।” (আত্তা’লীকুল মুমাজ্জাদ ৯১ পৃষ্ঠা) তিনি আরও বলেনঃ “সত্য কথা হলো রুকু’তে যাওয়া এবং রুকু’ থেকে মাথা উঠানোর সময় ‘রফ’উল ইয়াদাইন’ করা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং অনেক সাহাবী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শক্তিশালী সনদ এবং ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।” (আসসিয়ায়াহ ১/২১৩) রুকু’তে যাওয়া ও রুকু’ হতে উঠার সময় রফ’উল ইয়াদাঈন করা সম্পর্কে চার খলীফাহ সহ প্রায় ২৫জন সাহাবী থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীস বিদ্যমান। একটি হিসাব মতে রফ’উল ইয়াদাইন-এর হাদীসের রাবী সংখ্যা আশারায়ে মুবাশ্শরাহ সহ অন্যূন ৫০ জন সাহাবী- (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১০৭, ফাতহুল বারী ২/২৫৮) এবং সর্বমোট সহীহ হাদীস আসারের সংখ্যা অন্যূন ৪০০ শত। ইমাম সুয়ূতী রফ’উল ইয়াদাঈন এর হাদীসকে মুতাওয়াতির পর্যায়ের বলে মন্তব্য করেছেন। কতিপয় নির্বোধ লোকের বানোয়াট কথা আছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যারা নতুন ঈমান এনেছিলেন তারা নাকি তাঁদের পুরাতন আচরণের বশবর্তী হয়ে বগলে পুতুল রাখতেন এবং এটা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে পারলে তিনি রফ’উল ইয়াদাঈনের নির্দেশ দেন। পরে তাঁদের ঈমান মজবুত হয়ে গেলে রফ’উল ইয়াদাঈন করার নির্দেশ মনসুখ হয়ে যায়। এ কথাটি নিতান্তই আল্লাহ্র রসূলের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের ঈমানের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ। কারণ তাঁদের ঈমান আমাদের ঈমান অপেক্ষা অনেক দৃঢ় ও মজবুত ছিল। তাছাড়া এ কথাটি সাহাবীদের উপর মিথ্যা অপবাদেরই নামান্তর। রফ’উল ইয়াদাঈন সম্পর্কে সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস’উদের হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় রফ’উল ইয়াদাঈন করা যাবে না। কিন্তু মুহাদ্দীসিনে কিরামের নিকট এ কথাটি প্রসিদ্ধ যে, তাঁর শেষ বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে স্মৃতি ভ্রম ঘটে, ফলে হতে পারে এ হাদীসটিও সে সবের অন্তর্ভুক্ত। কারণ তিনি কয়েকটি বিষয়ে সকল সাহাবীগণের বিপরীতে কথা বলেছেন। যেমনঃ (১) মুয়াব্বিযাতাইন- সূরা নাস ও ফালাক সূরাদ্বয় কুরআনের অংশ নয় মনে করতেন। (২) তাত্বীক- রুকু’তে তাত্বীক বা দু’হাতকে জোড় করে হাঁটু দ্বারা চেপে রাখতে বলতেন। (৩) দু’জন সালাতে দাঁড়ালে কিভাবে দাঁড়াবে। (৪) আরাফাহ্র ময়দানে কীভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ওয়াক্ত একসাথে আদায় করেছেন। (৫) হাত বিছিয়ে সিজদা করা। (৬) —– কিভাবে পড়েছেন। (৭) রফ’উল ইয়াদাঈন একবার করেছেন। [নাসবুর রাইয়াহ (ইমাম যাইলায়ী) ৩৯৭-৪০১ পৃষ্ঠা, ফিকহুল সুন্নাহ ১/১৩৪] আব্দুল্লাহ ইব্নু মাসউদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর বর্ণিত এসব হাদীসগুলো অন্যান্য প্রসিদ্ধ সাহাবায়ে কিরাম (রাজিআল্লাহু ‘আনহুম) গণের বর্ণিত সহীহ হাদীস সমূহের বিপরীত তাই মুহাদ্দিসিনে কিরামগণ এবং সহীহ হাদীসের অনুসরীগণ এসব হাদীসগুলো গ্রহণ করেন নাই। তবে তা বাতিলও করেন নাই, বরং উপরোক্ত বিষয়ে কেবল অন্যান্য প্রসিদ্ধ সাহাবায়ে কিরামগণের সহীহ হাদসগুলোর অনুসরণ করেছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٠ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: «كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ اليَدَ اليُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ اليُسْرَى فِي الصَّلَاةِ» قَالَ أَبُو حَازِمٍ لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا يَنْمِي ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِسْمَاعِيلُ: يُنْمَى ذَلِكَ وَلَمْ يَقُلْ يَنْمِي
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু মাস্লামাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মালিক থেকে, তিনি ‘আবূ হা’যিম থেকে, তিনি সাহল ইব্নু সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “লোকদের নির্দেশ দেয়া হত যে, সালাতে প্রত্যেকে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখবে।” ১ আবূ হাযিম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, সাহল (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণানা করেছেন ছাড়া অন্য কিছু আমরা জানতাম না। ইসমাঈল (রহমাহুল্লাহ) বলেন, এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেই বর্ণনা করা হয়েছে। তবে তিনি (সাহল রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এমন বলেননি।
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. ওয়ালিল বিন হুজর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি। তিনি তাঁর বুকে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন। কিছু কিছু অনুবাদক বুখারীর হাদীসের আরবী ইবারতে “যিরা” এর অর্থ করেছেন হাতের কব্জি। কিন্তু এমন কোন অভিধান নেই যেখানে “যিরা” অর্থ কব্জি করা হয়েছে। আরবী অভিধানগুলিতে “যিরা” এর অর্থ পূর্ণ একগজ বিশিষ্ট হাত। অনুবাদক শুধুমাত্র সহীহ হাদীসকে ধামাচাপা দিয়ে মাযহাবী মতকে অগ্রাধীকার দেয়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুবাদে “পূর্ণ হাতের” পরিবর্তে “কব্জি” উল্লেখ করেছেন। তথাপিও সংশয় নিরসনের লক্ষে এ সম্পর্কে খানিকটা বিশদ আলোচনা উদ্ধৃত করা হলঃ
ওয়াইল বিন হুজর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন। (বুখারী ১০২ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ২০ পৃষ্ঠা। মুসলিম ১৭৩ পৃষ্ঠা। আবু দাউদ ১ম খণ্ড ১১০, ১২১, ১২৮ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ৫৯ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪১ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ, ৫৮, ৫৯ পৃষ্ঠা, মেশকাত ৭৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১৭৪ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৬০ পৃষ্ঠা। যাদুল মায়াদ ১২৯ পৃষ্ঠা। হিদায়া দিরায়াহ ১০১ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সাআদাত ১ম খণ্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৩৫। বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯৬। বুখারী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭০২; মুসলিম ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৮৫১। আবু দাউদ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭৫৯, তিরমিযী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৫২, মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৪১, ৭৪২। বুলুগুল মারাম বাংলা ৮২ পৃষ্ঠা) বুকের উপর হাত বাঁধা সম্বন্ধে একটি হাদীস বর্ণিত হলঃ সীনা বা বুকের উপর এরূপভাবে হাত বাঁধতে হবে যেন ডান হাত উপরে এবং বাম হাত নিচে থাকে। (মুসলিম, আহমাদ, ও ইব্নু খুযাইমাহ) হাত বাঁধার দু’টি নিয়মঃ
প্রথম নিয়মঃ ডান হাতের কব্জি বাম হাতের কব্জির জোড়ের উপর থাকবে। (ইব্নু খুযাইমাহ)
দ্বিতীয় নিয়মঃ ডান হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাতের কনুই-এর উপর থাকবে, অর্থাৎ সমস্ত ডান হাত বাম হাতের উপর থাকবে। (বুখারী) এটাই যিরা’আহর উপর যিরা’আহ রাখার পদ্ধতি ।
বুকে হাত বাঁধা সম্পর্কে আলোচনাঃ
হাত বাঁধা সম্পর্কে আল্লামা হায়াত সিন্ধী একখানা আরবী রিসালা লিখে তাতে তিনি প্রমাণিত করেছেন যে, সালাতে সীনার উপর হাত বাঁধতে হবে। তাঁর পুস্তিকার নাম “ফতহুল গফূর ফী তাহকীকে ওযয়িল ইয়াদায়নে আলাস সদূর”। পুস্তিকা খানা ৮ পৃষ্ঠায় সমাপ্ত। তা হতে কয়েকটি দলিল উদ্ধৃত করছি।
১। ইমাম আহমাদ স্বীয় মসনদে কবীসহা বিন হোল্ব- তিনি স্বীয় পিতা (হোল্ব) হতে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি (হোল্ব) বলেন যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (সালাত হতে ফারেগ হতে মুসল্লিদের দিকে) ডান ও বাম দিকে ফিরতে দেখেছি, আর দেখেছি তাঁকে স্বীয় সীনার উপর হাত বাঁধতে। উক্ত হাদীসে ‘ইয়াহইয়া’ নামক রাবী স্বীয় দক্ষিণ হস্ত বাম হস্তের কব্জির উপর রেখে দেখালেন। আল্লামা হায়াত সিন্ধী বলেন যে, আমি ‘তাহকীক’ কিতাবে —- তিনি স্বীয় সীনার উপর হাত রাখলেন, এ কথা দেখেছি। আর আমরা বলছি যে, হাফিয আবূ উমর ইব্নু আবদুল বর স্বীয় “আল ইসতিআব ফী মাআরিফাতিল আসহাব” কিতাবে উক্ত হাদীস ‘হোলব’ সাহাবী হতে তাঁর পুত্র কবীসা রিওয়ায়াত করেছেন এ কথা উল্লেখ করে উক্ত হাদীসটি কে সহীহ বলেছেন। (২য় খণ্ড, ৬০০ পৃঃ)
২। ইমাম আবূ দাউদ তাউস (তাবিঈ) হতে সীনার উপর হাত বাঁধার হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
৩। ইমাম ইব্নু ‘আবদুল বর “আত তামহীদ লিমা ফীল মুয়াত্তা মিনাল মাআনী ওয়াল আসানীদ” কিতাবে উক্ত ‘তাউস’ তাবি’ঈর হাদীস উল্লেখ করে সীনার উপর হাত বাঁধার কথা বলেছেন। এতদ্ব্যতীত ওয়ায়েল বিন হুজর হতেও সীনার উপর হাত বাঁধার হাদীস উল্লেখ করেছেন।
৪। ইমাম বাইহাকী ‘আলী “ফাসল্লি লি রাব্বিকা ওয়ান্হার”, এর অর্থ এরূপ বর্ণনা করেছেনঃ তুমি নামায পড়ার সময় ডান হাত বাম হাতের উপর রাখ। (জওহারুন্ নকীসহ সুনানে কুবরা ২৪-৩২ পৃঃ)
৫। ইমাম বুখারী স্বীয় ‘তারীখে’ ‘উকবাহ বিন সহবান, তিনি (‘উকবাহ) ‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে রিওয়ায়াত করেছেন যে, ‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে (হস্তদ্বয়) সীনার উপর বেঁধে “ফাসল্লি লি রব্বিকা ওয়ানহার” (আয়াতের) অর্থ বুঝালেন। অর্থাৎ উক্ত আয়াতের অর্থ ‘তুমি সীনার উপর হাত বেঁধে সালাতে যাও’। এর বাস্তব রূপ তিনি [‘আলী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)] সীনার উপর হাত বেঁধে দেখালেন। উক্ত আয়াতের অর্থ ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। এখন নাভীর নীচে হাত বাঁধার কোন হাদীস আছে কিনা তা-ই দেখা যাক ।
নাভীর নিচে হাত বাঁধাঃ
ইমাম বাইহাকী ‘আলী হতে নাভীর নিচে হাত বাঁধার একটি হাদীস উল্লেখ করে তাকে যঈফ বলেছেন ।
নাভীর নিচে হাত বাঁধার কোন সহীহ হাদীস নেইঃ
আল্লামা সিন্ধী হানাফী বিদ্বানগণের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, যদি তুমি বল যে, ইব্নু আবী শায়বার ‘মুসান্নাফ’ (হাদীসের কিতাবের নাম) হতে শায়খ কাসিম বিন কাতলুবাগা ‘তাখরীজু আহাদিসিল এখতিয়ার’ কিতাবে ‘ওকী’ মুসা বিন ওমায়রাহ হতে, মূসা আলকামা বিন ওয়ায়িল বিন হুজর হতে যে রিয়ায়াত করেছেন তাতে ‘নাভীর নিচে’ হাত বাঁধার কথা উল্লেখ আছে। তবে আমি (আল্লামা সিন্ধী) বলি যে, ‘নাভির নীচে’ হাত বাঁধার হাদীস ভুল। ‘মুসান্নাফ’ এর সহীহ গ্রন্থে উক্ত সনদের উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘নাভীর নিচে’ এই শব্দের উল্লেখ নেই। উক্ত হাদীস পরে (ইবরাহীম) ‘নখয়ী’ এর আসার (সাহাবা ও তাবিঈদের উক্তি ও আচরণকে ‘আসার’ বলে) উল্লেখ আছে। উক্ত ‘আসার’ ও হাদীসের উক্তি প্রায় নিকটবর্তী। উক্ত ‘আসার’-এর শেষ ভাগে ‘ফিস্সালাতে তাহ্তাস সুররাহ’ অর্থাৎ নামাযের মধ্যে নাভীর নিচে (হাত বাঁধার উল্লেখ আছে)। মনে হয় লেখকের লক্ষ্য এক লাইন হতে অন্য লাইনে চলে যাওয়ায় ‘মওকুফ’ (হাদিসকে) ‘মরফু’ লিখে দিয়েছেন। (যে হাদীসের সম্বন্ধ-সাহাবার সাথে হয় তাকে ‘মওকুফ’ আর যার সম্বন্ধ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হয় তাকে ‘মরফু’ হাদীস বলে)। আর আমি যা কিছু বললাম আমার কথা হতে এটাই প্রকাশ পায় যে, ‘মুসান্নাফ’ এর সব খণ্ড মিলিতভাবে নাভীর নিচে হাত বাঁধা বিষয়ে এক নয় অর্থাৎ সবগুলোতে নাভীর নীচে হাত বাঁধার কথাটি উল্লেখ নাই। তাছাড়া বহু আহলে হাদীস (মুহাদ্দিস) উক্ত হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। অথচ ‘নাভির নীচে’ এর কেউই উল্লেখ করেননি। আর আমি তাঁদের মধ্যেকার কোন ব্যক্তি হতে শুনিওনি। কেবল ‘কাসেম বিন কাতলুবাগা ঐ কথার (নাভির নীচে) উল্লেখ করেছেন। তিনি ‘তাম্হীদ’ কিতাবের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন যে, (আহলে হাদীসদের মধ্যে প্রথম) ইব্নু আব্দিল বর উক্ত কিতাবে বলেছেন যে, সওরী ও আবূ হানীফা নাভির নীচের কথা বলেছেন। আর সেটা ‘আলী ও ইব্রাহীম নখঈ হতে বর্ণিত হয়ে থাকে বটে, কিন্তু ঐ দু’জন (‘আলী ও নখঈ) হতে সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। যদি সেটা হাদীস হতো তাহলে ইব্নু ‘আবদুল বর ‘মুসান্নাফ’ হতে ওটা অবশ্য উল্লেখ করতেন। কেননা হাত বাঁধা সম্বন্ধে ইব্নু আবী শায়বা হতে তিনি বহু রিওয়ায়াত এনেছেন। ২য় ইব্নু হজর আসকালানী, (আহলে হাদীস) ৩য় মুজদুদ্দ্বীন ফিরোজাবাদী (আহলে হাদীস) ৪র্থ আল্লামা সৈয়ূতী, (আহলে হাদীস) ৫ম আল্লামা যয়লয়ী, (মুহাক্কিক) ৬ষ্ঠ আল্লামা আয়নী (আহলে তাহ্কীক) ও ৭ম ইব্নু আমীরিল হাজ্জ (আহলে হাদীস) প্রভৃতির উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন যে, যদি “নাভির নীচে”-এর কথা থাকত তাহলে সকলেই তা উল্লেখ করতেন। কেননা তাঁদের সকলের কিতাব ইব্নু আবী শায়বার বর্ণিত হাদীস দ্বারা পূর্ণ। তিনি এ সম্পর্কিত হাদীসদ্বয়ের আলোচনা করে বুকে হাত বাঁধাকে ওয়াজিব বলেছেন। সিন্ধী সাহেব উপসংহারে লিখেছেন “জেনে রাখ যে, ‘নাভির নীচে’-এ কথা প্রমাণের দিক দিয়ে না ‘কত্য়ী’ (অকাট্য), না ‘যন্নী’ (বলিষ্ঠ ধারণামূলক)। বরং প্রমাণের দিক দিয়ে ‘মওহূম’ (কল্পনা প্রসূত) আর যা মওহূম তদ্দ্বারা শরীয়তের হুকুম প্রমাণিত হয় না। …….কাজেই শুধু শুধু কল্পনা করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে কোন বস্তুর সম্বন্ধ করা জায়েজ নয়। অর্থাৎ শুধু কল্পনার উপর নির্ভর করে নাভীর নীচে হাত রাখার নিয়মকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত করা জায়েজ নয়। যখন উপরিউক্ত আলোচনা হতে স্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে গেল যে, নামাযের মধ্যে সীনার উপর হাত বাঁধা নয় যে, ওটা হতে মুখ ফিরিয়ে নেন। আর ঐ বস্তু হতে কিরূপ মুখ ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে প্রমাণিত হয়েছে। কেননা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আমি যা এনেছি (অর্থাৎ আল্লাহ্র ব্যবস্থা), যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে কেউ তার প্রবৃত্তিকে তার অনুগামী না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না। অতএব, প্রত্যেক মুসলমান (স্ত্রী-পুরুষের) উচিত তাঁর উপর আমল করা, আর কখনো কখনো এই দু’আ করা- প্রভু হে, যে বিষয়ে মতভেদ করা হয়েছে তাতে আমাদেরকে সত্য পথের সন্ধান দাও। কেননা তুমিই তো যাকে ইচ্ছা ‘সিরাতে মুস্তাকীমের’ পথ দেখিয়ে থাক”। (উক্ত কিতাব ২-৮ পৃঃ ও ইবকারুল মিনান ৯৭-১১৫ পৃঃ)
আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী তাঁর সীফাত গ্রন্থে হাত বাঁধা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে শিরোনাম এসেছেনঃ —- বুকের উপর দু’হাত রাখা। অতঃপর তিনি হাদীস উল্লেখ করে নিচে টীকা লিখেছেন। যা বন্ধনীর মধ্যে দেখানো হল। “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাম হাতের পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর হাত রাখতেন।” [আবূ দাউদ, নাসাঈ, ১/৪/২ সহীহ সনদে, আর ইবনু হিব্বানও সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। ৪৮৫ ] “এ বিষয়ে স্বীয় সাহাবাগণকেও আদেশ প্রদান করেছেন ।” (মালিক, বিখারী ও আবূ আওয়ানাহ) তিনি কখনো ডান হাত দ্বারা বাম হাত আঁকড়ে ধরতেন ।” (নাসাঈ, দারাকুত্বনী, সহীহ সনদ সহকারে। এ হাদীস প্রমাণ করছে যে, হাত বাঁধা সুন্নাত। আর প্রথম হাদীস প্রমাণ করছে যে, হাত রাখা সুন্নাত। অতএব উভয়টাই সুন্নাত। কিন্তু হাত বাঁধা ও হাত রাখার মধ্যে সমন্বয় বিধান করতে গিয়ে পরবর্তী হানাফী ‘আলিমগণ যে পদ্ধতি পছন্দ করেছেন তা হচ্ছে বিদআত; যার রূপ তারা এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ডান হাতকে বাম হাতের উপর কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা আঁকড়ে ধরবে এবং অপর তিন আঙ্গুলি বিছিয়ে রাখবে (ইব্নু আবিদ্বীন কর্তৃক দুররে মুখতারের টীকা (১/৪৫৪)। এতএব, হে পাঠক! পরবর্তীদের (মনগড়া) এ কথা যেন আপনাকে ধোঁকায় না ফেলে ।
“তিনি হস্তদ্বয়কে বুকের উপর রাখতেন ।” [আবু দাউদ, ইব্নু খুযাইমাহ স্বীয় সহীহ গ্রন্থে (১/৫৪/২) আহমাদ, আবুশ্ শাইখ স্বীয় “তারীখু আছবাহান” গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ১২৫) ইমাম তিরমিযীর একটি সনদকে হাসান বলেছেন। গভীরভাবে চিন্তা করলে এর বক্তব্য মুওয়াত্তা ইমাম মালিক এবং বুখারীতে পাওয়া যাবে। আলবানী বলেন, এ হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনাসুত্রে নিয়ে আমি —- কিতাবের (১১৮) পৃষ্ঠায় বিস্তারিত আলোচনা করেছি ।
জ্ঞাতব্যঃ বুকের উপর হাত রাখাটাই সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত। এছাড়া অন্য কোথাও রাখার হাদীস হয় দুর্বল আর না হয় ভিত্তিহীন। এই সুন্নাতের উপর ইমাম ইসহাক বিন রাহভিয়া ‘আমল করেছেন। মারওয়াযী — গ্রন্থে ২২২ পৃষ্ঠাতে বলেন, ইসহাক আমাদেরকে নিয়ে বিত্রের সালাত পড়তেন এবং তিনি কুনূতে হাত উঠাতেন আর রুকু’র পূর্বে কুনূত পড়তেন। তিনি বক্ষদেশ উপর বা নীচে হাত রাখতেন। কাযী ‘ইয়াযও —কিতাবের ১৫ পৃষ্ঠায় (রিবাত্ব তৃতীয় সংস্করণ) এ —- সালাতের মুস্তাহাব কাজ বর্ণনার ক্ষেত্রে অনুরূপ কথা বলেছেন, ডান হাতকে বাম হাতের পৃষ্ঠের উপর বুকে রাখা। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু আহমাদের বক্তব্যও এর কাছাকাছি, তিনি তাঁর —- এর ৬২ পৃষ্ঠায় বলেনঃ আমার পিতাকে দেখেছি যখন তিনি সালাত পড়তেন তখন তাঁর এক হাতকে অপর হাতের উপর নাভির উপরস্থলে রাখতেন, দেখুন —- (৩৫৩)।] (দেখুন নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী কৃত সিফাতু সলাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤١ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «هَلْ تَرَوْنَ قِبْلَتِي هَا هُنَا، وَاللَّهِ مَا يَخْفَى عَلَيَّ رُكُوعُكُمْ وَلَا خُشُوعُكُمْ، وَإِنِّي لأَرَاكُمْ وَرَاءَ ظَهْرِي»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ যিনাদ থেকে, তিনি আ‘আ্রায থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা কি মনে কর যে, আমার কিবলা শুধুমাত্র এদিকে? আল্লাহ্র শপথ, তোমাদের রুকু’ তোমাদের খুশু’ কোন কিছুই আমার নিকট গোপন থাকে না। আর নিঃসন্দেহে আমি তোমাদের দেখি আমার পিছন দিক হতেও।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٢ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” أَقِيمُوا الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ فَوَ اللَّهِ إِنِّي لَأَرَاكُمْ مِنْ بَعْدِي – وَرُبَّمَا قَالَ: مِنْ بَعْدِ ظَهْرِي – إِذَا رَكَعْتُمْ وَسَجَدْتُمْ “
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: গুন্দার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমি ক্বাতাদাহ থেকে শুনলাম, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমরা রুকু’ ও সিজদাগুলোতে যথাযথভাবে আদায় করবে। আল্লাহ্র শপথ! আমি আমার পিছন হতে বা রাবী বলেন, আমার পিঠের পিছনে হতে তোমাদের দেখতে পাই, যখন তোমরা রুকু’ ও সিজদা কর।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٣ – حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبَا بَكْرٍ، وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا كَانُوا يَفْتَتِحُونَ الصَّلَاةَ بِ {الحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ العَالَمِينَ} [الفاتحة: ٢] “
হা’ফস্ব্ ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ক্বাতাদাহ থেকে, তিনি আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এবং ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) – الحَمدُ لِلَّهِ رَبِّ العالَمينَ দিয়ে সালাত শুরু করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٤ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ القَعْقَاعِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو زُرْعَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْكُتُ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَبَيْنَ القِرَاءَةِ إِسْكَاتَةً – قَالَ أَحْسِبُهُ قَالَ: هُنَيَّةً – فَقُلْتُ: بِأَبِي وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِسْكَاتُكَ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَالقِرَاءَةِ مَا تَقُولُ؟ قَالَ: ” أَقُولُ: اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ، كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ المَشْرِقِ وَالمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنَ الخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالبَرَدِ “
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহিদ ইব্নু যিয়াদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উমারাহ ইব্নু ক্বা‘আক্বা‘আ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ যুর্‘আহআমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাক্বীরে তাহ্রীমা ও কিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতামাতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও কিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কি পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেন, এ সময় আমি বলি- “হে আল্লাহ্! আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান করে দাও যেমন ব্যবধান করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ্ আমাকে আমার গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র কর যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ্ আমার গোনাহকে বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٥ – حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى صَلَاةَ الكُسُوفِ، فَقَامَ فَأَطَالَ القِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ القِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ، فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ، فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ قَامَ، فَأَطَالَ القِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ فَأَطَالَ القِيَامَ ثُمَّ رَكَعَ، فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ، فَسَجَدَ، فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ، فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ انْصَرَفَ، فَقَالَ: ” قَدْ دَنَتْ مِنِّي الجَنَّةُ، حَتَّى لَوِ اجْتَرَأْتُ عَلَيْهَا، لَجِئْتُكُمْ بِقِطَافٍ مِنْ قِطَافِهَا، وَدَنَتْ مِنِّي النَّارُ حَتَّى قُلْتُ: أَيْ رَبِّ، وَأَنَا مَعَهُمْ؟ فَإِذَا امْرَأَةٌ – حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ – تَخْدِشُهَا هِرَّةٌ، قُلْتُ: مَا شَأْنُ هَذِهِ؟ قَالُوا: حَبَسَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ جُوعًا، لَا أَطْعَمَتْهَا ، وَلَا أَرْسَلَتْهَا تَأْكُلُ – قَالَ نَافِعٌ: حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ: مِنْ خَشِيشِ – أَوْ خَشَاشِ الأَرْضِ “
ইব্নু আবূ মারয়াম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: নাফি‘ই ইব্নু ‘উমার আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ মুলাইকাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আসমা বিন্তই আবূ বক্র স্বিদ্দিক্ব (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার সালাতুল কুসূফ (সূর্য গ্রহণের সালাত) আদায় করলেন। তিনি সালাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। অতঃপর দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর উঠলেন, পরে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় রইলেন। আবার সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং আবার রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর সালাত শেষ করে ফিরে বললেন, “জান্নাত আমার খুবই নিকটে এসে গিয়েছিল এমনকি আমি যদি চেষ্টা করতাম তাহলে জান্নাতের একগুচ্ছ আঙ্গুর তোমাদের এনে দিতে পারতাম। আর জাহান্নামও আমার একেবারে নিকটবর্তী এসে গিয়েছিল। এমনকি আমি বলে উঠলাম, ইয়া রব! আমিও কি তাদের সাথে? আমি একজন স্ত্রীলোককে দেখতে পেলাম। আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছিলেন, একটি বিড়াল তাকে খামচাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ স্ত্রী লোকটির এমন অবস্থা কেন? মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) জবাব দিলেন, সে একটি বিড়ালকে আটকিয়ে রেখেছিল, ফলে বিড়ালটি অনাহারে মারা যায়। উক্ত স্ত্রী লোকটি তাকে খেতেও দেয়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে আহার করতে পারে। নাফি’ (রহমাহুল্লাহ) বলেন, আমার মনে হয়, ইব্নু আবূ মুলায়কাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেছিলেন, যাতে সে যমীনের পোকামাকড় খেতে পারে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَتْ عَائِشَةُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَلَاةِ الكُسُوفِ: «فَرَأَيْتُ جَهَنَّمَ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا حِينَ رَأَيْتُمُونِي تَأَخَّرْتُ»
‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে কুসূফ বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, “তোমরা যখন আমাকে পিছিয়ে আসতে দেখেছিলে তখন আমি জাহান্নাম দেখেছিলাম; তার এক অংশ অপর অংশকে বিচূর্ণ করছে।”
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٦ – حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: قُلْنَا لِخَبَّابٍ أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟، قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِمَ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ ذَاكَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল ওয়াহিদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উমারাহ ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি আবূ মা’মার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমরা খাব্বাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কিভাবে বুঝতে পারতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়া দেখে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٧ – حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَنْبَأَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ، يَخْطُبُ قَالَ: حَدَّثَنَا البَرَاءُ – وَكَانَ غَيْرَ كَذُوبٍ – أَنَّهُمْ كَانُوا «إِذَا صَلَّوْا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَامُوا قِيَامًا حَتَّى يَرَوْنَهُ قَدْ سَجَدَ»
হা’জ্জাজ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ইসহা’ক্ব আমাদেরকে হাদীসটি সংবাদ দিলেন, তিনি বললেন: আমি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ইয়াযীদ থেকে শুনলাম, তিনি খুতবাহ দিচ্ছিলেন, তিনি বললেন: বারা‘আ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি মিথ্যাবাদী ছিলেন না। তিনি বললেন, “তাঁরা যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন, তখন রুকু’ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজদায় গেছেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٨ – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، رَأَيْنَاكَ تَنَاوَلْتَ شَيْئًا فِي مَقَامِكَ، ثُمَّ رَأَيْنَاكَ تَكَعْكَعْتَ، قَالَ: «إِنِّي أُرِيتُ الجَنَّةَ، فَتَنَاوَلْتُ مِنْهَا عُنْقُودًا، وَلَوْ أَخَذْتُهُ لَأَكَلْتُمْ مِنْهُ مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا»
ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যায়দ ইব্ন সালামাহ থেকে, তিনি ‘আত্বা ইব্ন ইয়াসার থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন তিনি এজন্য সালাত আদায় করেন। সাহাবা-ই-কিরাম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনাকে দেখলাম যেন কিছু একটা ধরতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু পরে দেখলাম, আবার পিছিয়ে এলেন। তিনি বললেন, “আমাকে জান্নাত দেখানো হয় এবং তারই একটি আঙ্গুরের ছড়া নিতে যাচ্ছিলাম। আমি যদি তা নিয়ে আসতাম, তাহলে দুনিয়া স্থায়ী থাকা পর্যন্ত তোমরা তা হতে খেতে পারতে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٤٩ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِلَالُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: صَلَّى لَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ رَقِيَ المِنْبَرَ، فَأَشَارَ بِيَدَيْهِ قِبَلَ قِبْلَةِ المَسْجِدِ، ثُمَّ قَالَ: «لَقَدْ رَأَيْتُ الآنَ مُنْذُ صَلَّيْتُ لَكُمُ الصَّلَاةَ الجَنَّةَ وَالنَّارَ مُمَثَّلَتَيْنِ فِي قِبْلَةِ هَذَا الجِدَارِ، فَلَمْ أَرَ كَاليَوْمِ فِي الخَيْرِ وَالشَّرِّ» ثَلَاثًا
মুহা’ম্মাদ ইবনু সিনান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ফুলায়হ’ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিলাল ইব্নু ‘আলী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং মসজিদের কিব্লার দিকে ইশারা করে বললেন, এইমাত্র আমি যখন তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলাম তখন এ দেওয়ালের সামনের দিকে আমি জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম। আজকের মতো এত ভাল ও মন্দ আমি আর দেখিনি, একথা তিনি তিনবার বললেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٠ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُمْ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَرْفَعُونَ أَبْصَارَهُمْ إِلَى السَّمَاءِ فِي صَلَاتِهِمْ»، فَاشْتَدَّ قَوْلُهُ فِي ذَلِكَ، حَتَّى قَالَ: «لَيَنْتَهُنَّ عَنْ ذَلِكَ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ»
আলী ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ইব্নু আবূ ‘আরূবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ক্বাতাদাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “লোকদের কী হলো যে, তারা সালাতের মধ্যে আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকায়?” এ ব্যাপারে তিনি কঠোর বক্তব্য রাখলেন; এমনকি তিনি বললেনঃ “তারা যেন অবশ্যই এ হতে বিরত থাকে, অন্যথায় অবশ্যই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়া হবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥١ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَشْعَثُ بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الِالْتِفَاتِ فِي الصَّلَاةِ؟ فَقَالَ: «هُوَ اخْتِلَاسٌ يَخْتَلِسُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ صَلَاةِ العَبْدِ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূল আহ্ওয়াস্ব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আশ‘আছু ইব্নু সুলায়মান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি মাসরূক্ব থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ “এটা একধরনের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত হতে অংশ বিশেষ ছিনিয়ে নেয়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٢ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى فِي خَمِيصَةٍ لَهَا أَعْلَامٌ، فَقَالَ: «شَغَلَتْنِي أَعْلَامُ هَذِهِ، اذْهَبُوا بِهَا إِلَى أَبِي جَهْمٍ وَأْتُونِي بِأَنْبِجَانِيَّةٍ»
ক্বুতায়বাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন যুহ্রী থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ থেকে, তিনি ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) থেকে, তিনি বললেন: একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি নক্শা করা চাদর পরে সালাত আদায় করলেন। সালাতের পরে তিনি বললেন, “এ চাদরের কারুকার্য আমার মনকে আকর্ষিত করেছিল। এটি আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং এর বদলে একটি ‘আম্বজানিয়্যাহ’ (নকশা ছাড়া মোটা কাপড়) নিয়ে এসো।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ سَهْلٌ: «التَفَتَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَرَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
সাহ্ল (রহমাহুল্লাহ) বলেছেন, আবূ বক্র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাকালেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٣ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّهُ قَالَ: رَأَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُخَامَةً فِي قِبْلَةِ المَسْجِدِ وَهُوَ يُصَلِّي بَيْنَ يَدَيِ النَّاسِ، فَحَتَّهَا، ثُمَّ قَالَ حِينَ انْصَرَفَ: «إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا كَانَ فِي الصَّلَاةِ فَإِنَّ اللَّهَ قِبَلَ وَجْهِهِ، فَلَا يَتَنَخَّمَنَّ أَحَدٌ قِبَلَ وَجْهِهِ فِي الصَّلَاةِ» رَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، وَابْنُ أَبِي رَوَّادٍ، عَنْ نَافِعٍ
ক্বুতায়বাহ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন নাফি’ই থেকে, তিনি ইব্নু ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, এমতাবস্থায় মসজিদে কিব্লার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে তা পরিষ্কার করে ফেললেন। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করে বললেন, “তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন আল্লাহ্ তার সামনে থাকেন। কাজেই সালাতে থাকা অবস্থায় কেউ সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। মূসা ইব্নু ‘উক্বাহ ও ইব্নু আবূ রাওয়াদও (রহমাহুল্লাহ) নাফি’ (রহমাহুল্লাহ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٤ – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: بَيْنَمَا المُسْلِمُونَ فِي صَلَاةِ الفَجْرِ لَمْ يَفْجَأْهُمْ إِلَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ، فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ وَهُمْ صُفُوفٌ، فَتَبَسَّمَ يَضْحَكُ، وَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ لَهُ الصَّفَّ، فَظَنَّ أَنَّهُ يُرِيدُ الخُرُوجَ وَهَمَّ المُسْلِمُونَ أَنْ يَفْتَتِنُوا فِي صَلَاتِهِمْ، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَتِمُّوا صَلَاتَكُمْ، فَأَرْخَى السِّتْرَ وَتُوُفِّيَ مِنْ آخِرِ ذَلِكَ اليَوْمِ»
ইয়াহ্’ইয়া ইব্নু বুকায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: লায়ছ ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উক্বায়ল থেকে, তিনি ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি বললেন: আনাস ইব্নু মালিক (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন। তিনি বললেন, মুসলমানগণ ফজরের সালাতে রত এ সময় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা)-এর হুজরার পর্দা উঠালে তাঁরা চমকে উঠলেন। তিনি তাদের দিকে তাঁকিয়ে দেখলেন, তাঁরা কাতারবদ্ধ হয়ে আছেন। তা দেখে তিনি মুচকি হাসলেন। আবূ বকর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁর ইমামতের স্থান ছেড়ে দিয়ে কাতারে শামিল হবার জন্য পিছিয়ে আসতে চাইলেন। তিনি মনে করেছিলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হতে চান। মুসলিমগণও সালাত ছেড়ে দিতে উদ্যত হয়েছিলেন। তিনি ইঙ্গিতে তাঁদের বললেন, তোমরা তোমাদের সালাত পুরো কর। অতঃপর তিনি পর্দা ফেলে দিলেন। এ দিনেরই শেষে তাঁর ওফাত হয়। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. অর্থাৎ তাঁর ইন্তিকালের বিষয়টি শেষ প্রহরে সকলের নিকট সুনিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান হয়। কেননা, ঐতি-হাসিকগণ এ ব্যাপারে একমত যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিনের প্রথম প্রহরে ইন্তিকাল করেছেন। তাই এ হাদীসের ব্যাখ্যা এভাবেই করা যায়।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٥ – حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ المَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ: شَكَا أَهْلُ الكُوفَةِ سَعْدًا إِلَى عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَعَزَلَهُ، وَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِمْ عَمَّارًا، فَشَكَوْا حَتَّى ذَكَرُوا أَنَّهُ لَا يُحْسِنُ يُصَلِّي، فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ، فَقَالَ: يَا أَبَا إِسْحَاقَ إِنَّ هَؤُلَاءِ يَزْعُمُونَ أَنَّكَ لَا تُحْسِنُ تُصَلِّي، قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ: أَمَّا أَنَا وَاللَّهِ «فَإِنِّي كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا أَخْرِمُ عَنْهَا، أُصَلِّي صَلَاةَ العِشَاءِ، فَأَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ وَأُخِفُّ فِي الأُخْرَيَيْنِ»، قَالَ: ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ، فَأَرْسَلَ مَعَهُ رَجُلًا أَوْ رِجَالًا إِلَى الكُوفَةِ، فَسَأَلَ عَنْهُ أَهْلَ الكُوفَةِ وَلَمْ يَدَعْ مَسْجِدًا إِلَّا سَأَلَ عَنْهُ، وَيُثْنُونَ مَعْرُوفًا، حَتَّى دَخَلَ مَسْجِدًا لِبَنِي عَبْسٍ، فَقَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ أُسَامَةُ بْنُ قَتَادَةَ يُكْنَى أَبَا سَعْدَةَ قَالَ: أَمَّا إِذْ نَشَدْتَنَا فَإِنَّ سَعْدًا كَانَ لَا يَسِيرُ بِالسَّرِيَّةِ، وَلَا يَقْسِمُ بِالسَّوِيَّةِ، وَلَا يَعْدِلُ فِي القَضِيَّةِ، قَالَ سَعْدٌ: أَمَا وَاللَّهِ لَأَدْعُوَنَّ بِثَلَاثٍ: اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ عَبْدُكَ هَذَا كَاذِبًا، قَامَ رِيَاءً وَسُمْعَةً، فَأَطِلْ عُمْرَهُ، وَأَطِلْ فَقْرَهُ، وَعَرِّضْهُ بِالفِتَنِ، وَكَانَ بَعْدُ إِذَا سُئِلَ يَقُولُ: شَيْخٌ كَبِيرٌ مَفْتُونٌ، أَصَابَتْنِي دَعْوَةُ سَعْدٍ، قَالَ عَبْدُ المَلِكِ: فَأَنَا رَأَيْتُهُ بَعْدُ، قَدْ سَقَطَ حَاجِبَاهُ عَلَى عَيْنَيْهِ مِنَ الكِبَرِ، وَإِنَّهُ لَيَتَعَرَّضُ لِلْجَوَارِي فِي الطُّرُقِ يَغْمِزُهُنَّ
মূসা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আব্দুল মালিক ইব্নু ‘উমায়র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন জাবির ইব্নু সামুরা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, কূফাবাসীরা সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর ১ বিরুদ্ধে ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং আম্মার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে তাদের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। কূফার লোকেরা সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে এ-ও বলে যে, তিনি ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) তাঁকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, হে আবূ ইসহাক! তারা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, আপনি নাকি ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের অনুরূপই সালাত আদায় করে থাকি। তাতে কোন ত্রুটি করি না। আমি ‘ইশার সালাত আদায় করতে প্রথমে দু’ রাকাআত একটু দীর্ঘ ও শেষের দু’ রাকা‘আত সংক্ষেপ করতাম। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, হে আবূ ইসহাক! আপনার সম্পর্কে আমার এ-ই ধারণা। অতঃপর ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কূফার অধিবাসীদের এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর সঙ্গে কূফায় পাঠান। সে ব্যক্তি প্রতিটি মসজিদে গিয়ে সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো এবং তাঁরা সকলেই তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করলেন। অবশেষে সে ব্যক্তি বনূ আব্স গোত্রের মসজিদে উপস্থিত হয়। এখানে উসামা উব্নু কাতাদা নামে এক ব্যক্তি যাকে আবূ সা’দাহ্ ডাকা হত– দাঁড়িয়ে বলল, যেহেতু তুমি আল্লাহ্র নামে শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছ, সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কখনো সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে যান না, গানীমাতের মাল সমভাবে বন্টন করেন না এবং বিচারে ইনসাফ করেন না। তখন সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, মনে রেখো, আল্লাহ্র কসম! আমি তিনটি দু’আ করছিঃ হে আল্লাহ্! যদি তোমার এ বান্দা মিথ্যাবাদী হয়, লোক দেখানো এবং অপপ্রচারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে – ১. তার হায়াত বাড়িয়ে দিন, ২. তার অভাব বাড়িয়ে দিন, এবং ৩. তাঁকে ফিত্নার সম্মুখীন করুন। পরবর্তীকালে লোকটিকে (তার অবস্থা সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করা হলে সে বলতো, আমি বয়সে বৃদ্ধ, ফিত্নায় লিপ্ত। সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) এর দু’আ আমার উপর লেগে আছে। বর্ণনাকারী আবদুল মালিক (রহমাহুল্লাহ) বলেন, পরে আমি সে লোকটিকে দেখেছি, অতি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তার ভ্রু চোখের উপর ঝুলে গেছে এবং সে পথে মেয়েদের বিরক্ত করত এবং তাদের চিমটি দিত।
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. তিনি তখন কূফায় আমীর হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন ।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٦ – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ»
‘আলি ইব্নু ‘আব্দুল্লাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: যুহ্রী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন মাহ্’মুদ ইব্ন রাবী‘ই থেকে, তিনি ‘উবাদাহ ইব্নু সমিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি সালাতে সূরা আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না।” ১
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. আমাদের দেশের হানাফী ভাইয়েরা ইমামের পেছনে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করেন না, এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘আমলের ও কথার বিপরীত। ইমামের পিছনে মুক্তাদীকে অবশ্যই সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতে হবে। মুক্তাদী ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা না পড়লে তার সালাত, সালাত বলে গণ্য হবে না ।
বুখারীর অন্য বর্ণনায় জুযউল ক্বিরাআতের মধ্যে আছে- ‘আমর্ বিন শুয়াইব তাঁর পিতা হতে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন তোমরা কি আমার পেছনে কিছু পড়ে থাক? তাঁরা বললেন, হাঁ আমরা খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করে থাকি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমরা উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ব্যতিত কিছুই পড়বে না। (বুখারী ১ম ১০৪ পৃষ্ঠা। জুযউল কিরায়াত। মুসলিম ১৬৯, ১৭০ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১০১ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৭, ৭১ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪৬ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬১ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১০৬ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ১ম খণ্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা। মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং ৭৫৮-৭৬৭ ও ৮২০-৮২৪। হাদীস শরীফ, মাওঃ আবদুর রহীম, ২য় খণ্ড ১৯৩-১৯৬ পৃষ্ঠা, ইসলামিয়াত বি-এ, হাদীস পর্ব ১৪৪-১৬১ পৃষ্ঠা। হিদায়াহ দিরায়াহ ১০৬ পৃষ্ঠা। মেশকাত ৭৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম হাদীস নং ৪৪১। বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭১২। বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭১৮। তিরমিযী- ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৭। মিশকাত- নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৫, ৭৬৬, ৭৯৪। বুলূগুল মারাম ৮৩ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ২০৪ পৃষ্ঠা ।)
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٧ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ المَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ، فَصَلَّى، فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَرَدَّ وَقَالَ: «ارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ»، فَرَجَعَ يُصَلِّي كَمَا صَلَّى، ثُمَّ جَاءَ، فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «ارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» ثَلَاثًا، فَقَالَ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ، فَعَلِّمْنِي، فَقَالَ: «إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ القُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلَاتِكَ كُلِّهَا»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু বাশ্শার আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ্’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উবায়দুল্লাহ থেকে, তিনি বললেন: সা‘ঈদ ইব্নু আবূ সা‘ঈদ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন একজন সাহাবী এসে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, “আবার গিয়ে সালাত আদায় কর। কেননা, তুমিতো সালাত আদায় করনি।” তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন। তিনি বললেন, “ফিরে গিয়ে আবার সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি।” এভাবে তিনবার বললেন। সাহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন- আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, “যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু’তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ’ করবে। অতঃপর সিজদা হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর তোমার পুরো সালাতে এভাবেই করবে।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٨ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ سَعْدٌ: «كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، صَلَاتَيِ العَشِيِّ لَا أَخْرِمُ عَنْهَا، أَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ، وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ» فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: ذَلِكَ الظَّنُّ بِكَ
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আব্দুল মালিক ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি জাবির ইব্নু সামুরা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন: সা’দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, “আমি তাদেরকে নিয়ে বিকালের দু’ সালাত (যুহর ও ‘আসর) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের মত সালাত আদায় করতাম। এতে কোন ত্রুটি করতাম না। প্রথম দু’ রাক’আতে কিরআত দীর্ঘায়িত এবং শেষ দু’ রাক’আতে তা সংক্ষিপ্ত করতাম।” ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বলেন, তোমার ব্যাপারে এটাই ধারণা।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٥٩ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلَاةِ الظُّهْرِ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ وَيُسْمِعُ الآيَةَ أَحْيَانًا، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي العَصْرِ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শায়বান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লা ইব্ন ক্বাতাদাহ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের প্রথম দু’ রাক’আতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরা পাঠ করতেন। প্রথম রাক’আতে দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক’আত সংক্ষেপ করতেন। কখনো কোন আয়াত শুনিয়ে পড়তেন। ‘আসরের সালাতেও তিনি সূরা ফাতিহার সাথে অন্য দু’টি সূরা পড়তেন। প্রথম রাক’আত দীর্ঘ করতেন। ফজরের প্রথম রাক’আতও তিনি দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতে সংক্ষেপ করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٠ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
‘উমার ইব্নু হাফ্স আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আমার পিতা আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আ‘আ্মাশ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘উমারাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ মা’মার থেকে, তিনি বললেন, আমরা খাব্বাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহ্র ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦١ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: قُلْتُ لِخَبَّابِ بْنِ الأَرَتِّ: أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: قُلْتُ: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ قِرَاءَتَهُ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সুফ্ইয়ান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আ‘আ্মাশ থেকে, তিনি ‘উমারাহ ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি আবূ মা’মার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমি খাব্বাব ইব্নু আরত্ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কী করে তাঁর কিরাআত বুঝতেন? তিনি বললেন, “তাঁর দাড়ি নড়াচড়ায়।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٢ – حَدَّثَنَا المَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَالعَصْرِ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ، وَسُورَةٍ سُورَةٍ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ أَحْيَانًا»
মাক্বী ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন হিশাম থেকে, তিনি ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাছির থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ কাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আসরের প্রথম দু’ রাক’আতে সূরা আল-ফাতিহার সাথে আর একটি করে সূরা পড়তেন। আর কখনো কখনো কোন আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٣ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ أُمَّ الفَضْلِ سَمِعَتْهُ وَهُوَ يَقْرَأُ: {وَالمُرْسَلَاتِ عُرْفًا} [المرسلات: 1] فَقَالَتْ: يَا بُنَيَّ، وَاللَّهِ لَقَدْ ذَكَّرْتَنِي بِقِرَاءَتِكَ «هَذِهِ السُّورَةَ، إِنَّهَا لَآخِرُ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ بِهَا فِي المَغْرِبِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি ‘উবায়দুল্লাহ ইব্ন ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন ‘উতবাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, উম্মুল ফায্ল (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) তাঁকে وَالمُرسَلاتِ غُرفاً সূরাটি তেলাওয়াত করতে শুনে বললেন, “বেটা! তুমি এ সূরা তেলাওয়াত করে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের সালাতে এ সূরাটি পড়তে শেষবারের মত শুনেছিলাম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٤ – حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ مَرْوَانَ بْنِ الحَكَمِ، قَالَ: قَالَ لِي زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ: «مَا لَكَ تَقْرَأُ فِي المَغْرِبِ بِقِصَارٍ، وَقَدْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ بِطُولَى الطُّولَيَيْنِ»
আবূ ‘আস্বিম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইব্ন জুরায়জ থেকে, তিনি আবূ মুলায়কাহ থেকে, তিনি ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়র থেকে, তিনি মারওয়ান ইব্নু হাকাম থেকে, তিনি বললেনঃ একদা যায়িদ ইব্নু সাবিত (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে বললেন, কী ব্যাপার, মাগরিবের সালাতে তুমি যে কেবল ছোট ছোট সুরা তেলাওয়াত কর? অথচ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দু’টি দীর্ঘ সূরার মধ্যে অধিকতর দীর্ঘটি পাঠ করতে শুনেছি। ১
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১. অপেক্ষাকৃত দু’টি দীর্ঘতম সূরা দ্বারা সূরা আরাফ ও সূরা আন’আমকে বুঝানো হয়েছে। আর এ দু’টির মাঝে দীর্ঘতম সূরা আরাফ।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٥ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَرَأَ فِي المَغْرِبِ بِالطُّورِ»
‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মালিক আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন ইব্ন শিহাব থেকে, তিনি মুহা’ম্মাদ ইব্ন জুবায়র ইব্নু মুত্ব‘ইম (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের সালাতে সূরা আত-তূর পড়তে শুনেছি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٦ – حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ بَكْرٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ العَتَمَةَ، فَقَرَأَ: إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ، فَسَجَدَ، فَقُلْتُ لَهُ: قَالَ: «سَجَدْتُ خَلْفَ أَبِي القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَا أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ»
আবূ নু‘উমান আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মু‘উতামির আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বকর থেকে, তিনি আবূ রাফি’ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “একদা আমি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায় করলাম। সেদিন তিনি إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে এ সিজদা করেছি, তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এ সূরায় সিজদা করব।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٧ – حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيٍّ، قَالَ: سَمِعْتُ البَرَاءَ: ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي العِشَاءِ فِي إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ: بِالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ “
আবূল ওয়ালীদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আদী (ইব্ন সাবিত) (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, আমি বারা‘আ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) হতে শুনেছি যে, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ‘ইশা সালাতের প্রথম দু‘ রাক‘আতের এক রাক‘আতে সূরা وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ পাঠ করেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٨ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي التَّيْمِيُّ، عَنْ بَكْرٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ العَتَمَةَ، فَقَرَأَ: إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ، فَسَجَدَ، فَقُلْتُ: مَا هَذِهِ؟ قَالَ: «سَجَدْتُ بِهَا خَلْفَ أَبِي القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَا أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াযীদ ইব্নু যুরায়‘ই্ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: তায়মী আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন বক্র থেকে, তিনি আবূ রাফি‘ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায় করলাম। তিনি إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, এ সিজদা কেন? তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে এ সূরায় সিজদা করেছি, তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া অবধি আমি এতে সিজদা করব।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٦٩ – حَدَّثَنَا خَلَّادُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، سَمِعَ البَرَاءَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” يَقْرَأُ: وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ فِي العِشَاءِ، وَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ صَوْتًا مِنْهُ أَوْ قِرَاءَةً “
খাল্লাদ ইব্নু ইয়াহ’ইয়া আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: মিস‘আর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ‘আদী ইব্নু ছাবেত আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, বারা‘আ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বললেন, “আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ইশার সালাতে وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ -“সূরা আত তীন” পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে কারো সুন্দর কন্ঠ অথবা কিরাআত শুনিনি।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٠ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عَوْنٍ مُحَمَّدِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ عُمَرُ لِسَعْدٍ: لَقَدْ شَكَوْكَ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى الصَّلَاةِ، قَالَ: «أَمَّا أَنَا، فَأَمُدُّ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلَا آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ مِنْ صَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» قَالَ: صَدَقْتَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ أَوْ ظَنِّي بِكَ
সুলায়মান ইব্নু হা’র্র আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবূ ‘আওন মুহা’ম্মাদ ইব্ন ‘উবায়দুল্লাহ ছাক্বাফী থেকে, তিনি বললেন: আমি জাবির ইব্নু সামুরা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলাম, তিনি বললেন, ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) সা‘দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা (কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন, আমি প্রথম দু‘রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু‘ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করি। আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে যেমন সালাত আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে আমি ক্রটি করিনি। ‘উমর (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) বললেন আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন) আপনার সম্পর্কে আমার এ রকমই ধারণা।
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ: «قَرَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالطُّورِ»
উম্মূ সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা তূর পড়েছেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧١ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ سَلَامَةَ، قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي عَلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ، فَسَأَلْنَاهُ عَنْ وَقْتِ الصَّلَوَاتِ، فَقَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الظُّهْرَ حِينَ تَزُولُ الشَّمْسُ، وَالعَصْرَ، وَيَرْجِعُ الرَّجُلُ إِلَى أَقْصَى المَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ – وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي المَغْرِبِ – وَلَا يُبَالِي بِتَأْخِيرِ العِشَاءِ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ، وَلَا يُحِبُّ النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَلَا الحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَيُصَلِّي الصُّبْحَ، فَيَنْصَرِفُ الرَّجُلُ، فَيَعْرِفُ جَلِيسَهُ، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ – أَوْ إِحْدَاهُمَا – مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى المِائَةِ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: সাইয়ার ইব্নু সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বলেন, আমি ও আমার পিতা আবূ বারযা আসলামী (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে সালাতসমূহের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত সূর্য ঢলে গেলেই আদায় করতেন। আর ‘আসর (এমন সময় যে, সালাতের শেষে) কোন ব্যক্তি সূর্য সতেজ থাকাবস্থায় মদীনার প্রান্তে ফিরে আসতে পারতো। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। আর তিনি রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ‘ইশা বিলম্ব করতে কোন দ্বিধা করতেন না এবং ‘ইশার পূর্বে ঘুমানো ও পরে কথাবার্তা বলা তিনি পছন্দ করতেন না। আর তিনি ফজর আদায় করতেন এমন সময় যে, সালাত শেষে ফিরে যেতে লোকেরা তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনতে পারতো। এর দু’ রাক‘আতে অথবা রাবী বলেছেন, এক রাক‘আতে তিনি ষাট থেকে একশ’ আয়াত পাঠ করতেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٢ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «فِي كُلِّ صَلَاةٍ يُقْرَأُ، فَمَا أَسْمَعَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْمَعْنَاكُمْ، وَمَا أَخْفَى عَنَّا أَخْفَيْنَا عَنْكُمْ، وَإِنْ لَمْ تَزِدْ عَلَى أُمِّ القُرْآنِ أَجْزَأَتْ وَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ»
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল ইব্নু ইবরাহীম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইব্নু জুরায়জ আমাদেরকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি বললেন: ‘আত্বা আমাকে হাদীসটি খবর দিলেন, তিনি আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে শুনলেন, তিনি বলেন, “প্রত্যেক সালাতেই কিরাআত পড়া হয়। তবে যে সব সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের শুনিয়ে পড়ব। আর যে সব সালাতে আমাদের না শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের না শুনিয়ে পড়ব। যদি তোমরা সূরা আল- ফাতিহার উপরে আরো অধিক না পড়, সালাত আদায় হয়ে যাবে। আর যদি অধিক পড় তা উত্তম।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ: «طُفْتُ وَرَاءَ النَّاسِ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي، وَيَقْرَأُ بِالطُّورِ»
উম্মু সালামা (রাজিআল্লাহু ‘আনহা) বলেন, আমি লোকদের পিছনে তাওয়াফ করছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সালাত আদায় করছিলেন এবং সূরা তূর পাঠ করছিলেন।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٣ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ هُوَ جَعْفَرُ بْنُ أَبِي وَحْشِيَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ” انْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ، وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ، فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ، فَقَالُوا: مَا لَكُمْ؟ فَقَالُوا: حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ، قَالُوا: مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلَّا شَيْءٌ حَدَثَ، فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا، فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ بِنَخْلَةَ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ، وَهُوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلَاةَ الفَجْرِ، فَلَمَّا سَمِعُوا القُرْآنَ اسْتَمَعُوا لَهُ، فَقَالُوا: هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، فَهُنَالِكَ حِينَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ، وَقَالُوا: يَا قَوْمَنَا: {إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا، يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ، فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا} [الجن: ٢]، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: {قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِنَ الجِنِّ} [الجن: ١] وَإِنَّمَا أُوحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الجِنِّ “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আবূ ‘আওয়ানাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন আবু বিশর্ থেকে তিনি ছিলেন জা‘আফার ইব্নু আবূ ওয়াহ্’শিয়্য়াহ, তিনি সা‘ঈদ ইব্ন জুবায়র থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে, তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকজন সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। আর দুষ্ট জিন-দের ১ উর্দ্ধলোকের সংবাদ সংগ্রহের পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় এবং তাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হয়। কাজেই শয়তানরা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসে। তারা জিজ্ঞেস করলো, তোমাদের কী হয়েছে? তারা বলল, আমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা দেখা দিয়েছে এবং আমাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ একটা কিছু ঘটেছে বলেই তোমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত ঘুরে দেখ, কী কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের বাধা সৃষ্টি হয়েছে? তাই তাদের যে দলটি তিহামার দিকে গিয়েছিল, তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে অগ্রসর হল। তিনি তখন ‘উকায বাজারের পথে নাখ্লা নামক স্থানে সাহাবীগণকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। তারা যখন কুরআন শুনতে পেল, তখন সেদিকে মনোনিবেশ করলো। অতঃপর তারা বলে উঠলো, আল্লাহ্র শপথ! এটিই তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করেছে। এমন সময় যখন তারা গোত্রের নিকট ফিরে আসল এবং বলল হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক আশ্চর্যজনক কুরআন শুনেছি যা সঠিক পথ নির্দেশ করে, আমরা এতে ঈমান এনেছি এবং কখনো আমরা আমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে কাউকে শরীক স্থির করব না। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ……قُل أُوحِيَ إِلَيَّ সূরা নাযিল করেন। মূলতঃ তাঁর নিকট জিনদের কথাবার্তাই ওয়াহীরূপে অবর্তীণ করা হয়েছে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
ফুটনোটঃ
১.হাদীসে উল্লেখিত “শায়াতিন” (شَياطين) শব্দটি দুষ্ট প্রকৃতির জিন্নদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٤ – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: ” قَرَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا أُمِرَ وَسَكَتَ فِيمَا أُمِرَ، {وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا} [مريم: ٦٤] {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ} [الأحزاب: ٢١] “
মুসাদ্দাদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আয়্য়ুব আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘ইকরিমাহ থেকে, তিনি ইব্নু ‘আব্বাস (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেখানে কিরাআত পাঠের ১ জন্য আদেশ পেয়েছেন, সেখানে পড়েছেন। আর যেখানে চুপ থাকতে ২ আদেশ পেয়েছেন সেখানে চুপ থেকেছেন রয়েছেন। (আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী): “তোমার প্রতিপালক ভুল করেন না”-(সূরা মারইয়াম ১৯/৬৪)। “নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূল-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সূরা আল-আহযাব ৩৩/২১)
ফুটনোটঃ
১. অর্থাৎ সশব্দে পড়ার।
২. নিঃশব্দে পড়ার।
وَالقِرَاءَةِ بِالخَوَاتِيمِ، وَبِسُورَةٍ قَبْلَ سُورَةٍ، وَبِأَوَّلِ سُورَةٍ وَيُذْكَرُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ السَّائِبِ، «قَرَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المُؤْمِنُونَ فِي الصُّبْحِ، حَتَّى إِذَا جَاءَ ذِكْرُ مُوسَى، وَهَارُونَ – أَوْ ذِكْرُ عِيسَى – أَخَذَتْهُ سَعْلَةٌ فَرَكَعَ» وَقَرَأَ عُمَرُ: فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى بِمِائَةٍ وَعِشْرِينَ آيَةً مِنَ البَقَرَةِ، وَفِي الثَّانِيَةِ بِسُورَةٍ مِنَ المَثَانِي وَقَرَأَ الأَحْنَفُ: بِالكَهْفِ فِي الأُولَى، وَفِي الثَّانِيَةِ بِيُوسُفَ – أَوْ يُونُسَ – وَذَكَرَ أَنَّهُ صَلَّى مَعَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ الصُّبْحَ بِهِمَا وَقَرَأَ ابْنُ مَسْعُودٍ: بِأَرْبَعِينَ آيَةً مِنَ الأَنْفَالِ، وَفِي الثَّانِيَةِ بِسُورَةٍ مِنَ المُفَصَّلِ وَقَالَ قَتَادَةُ: «فِيمَنْ يَقْرَأُ سُورَةً وَاحِدَةً فِي رَكْعَتَيْنِ أَوْ يُرَدِّدُ سُورَةً وَاحِدَةً فِي رَكْعَتَيْنِ كُلٌّ كِتَابُ اللَّهِ» وَقَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ: عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، كَانَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَؤُمُّهُمْ فِي مَسْجِدِ قُبَاءٍ، وَكَانَ كُلَّمَا افْتَتَحَ سُورَةً يَقْرَأُ بِهَا لَهُمْ فِي الصَّلَاةِ مِمَّا يَقْرَأُ بِهِ افْتَتَحَ: بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهَا، ثُمَّ يَقْرَأُ سُورَةً أُخْرَى مَعَهَا، وَكَانَ يَصْنَعُ ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ، فَكَلَّمَهُ أَصْحَابُهُ، فَقَالُوا: إِنَّكَ تَفْتَتِحُ بِهَذِهِ السُّورَةِ، ثُمَّ لَا تَرَى أَنَّهَا تُجْزِئُكَ حَتَّى تَقْرَأَ بِأُخْرَى، فَإِمَّا تَقْرَأُ بِهَا وَإِمَّا أَنْ تَدَعَهَا، وَتَقْرَأَ بِأُخْرَى فَقَالَ: مَا أَنَا بِتَارِكِهَا، إِنْ أَحْبَبْتُمْ أَنْ أَؤُمَّكُمْ بِذَلِكَ فَعَلْتُ، وَإِنْ كَرِهْتُمْ تَرَكْتُكُمْ، وَكَانُوا يَرَوْنَ أَنَّهُ مِنْ أَفْضَلِهِمْ، وَكَرِهُوا أَنْ يَؤُمَّهُمْ غَيْرُهُ، فَلَمَّا أَتَاهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرُوهُ الخَبَرَ، فَقَالَ: «يَا فُلَانُ، مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَفْعَلَ مَا يَأْمُرُكَ بِهِ أَصْحَابُكَ، وَمَا يَحْمِلُكَ عَلَى لُزُومِ هَذِهِ السُّورَةِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ» فَقَالَ: إِنِّي أُحِبُّهَا، فَقَالَ: «حُبُّكَ إِيَّاهَا أَدْخَلَكَ الجَنَّةَ»
আব্দুল্লাহ ইব্ন সাইব (রহমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সালাতে সূরা মু‘উমিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মূসা (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও হারূন (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা ‘ঈসা (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকূ’তে চলে গেলেন। ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) প্রথম রাক‘আতে সূরা বাকারার একশ বিশ আয়াত তেলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে মাসানী সূরা সমূহের কোন একটি তিলওয়াত করেন। আহনাফ (রহমাহুল্লাহ) প্রথম রাক‘আতে সূরা কাহ্ফ তিলওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইউসূফ বা সূরা ইউনুস তিলওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা দিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেন। ইব্নু মাস‘উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) (প্রথম রাক‘আতে) সূরা আল-আনফালের চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাকা‘আতে মুফাস্সাল সূরা সমূহের একটি পড়েন। যে ব্যক্তি দু’ রাক‘আতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’ রাক‘আতে একই সূরা আবার পড়ে তার সম্পর্কে ক্বাতাদা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, সবই আল্লাহর কিতাব (অর্থাৎ জায়িয)। এবং আব্দুল্লাহ বললেন ছাবিত থেকে, তিনি আনাস ইব্ন মলিক রাজিআল্লাহু ‘আনহু থেকে, কুবার মসজিদে এক আনসারী ব্যক্তি তাঁদের ইমামাত করতেন। তিনি সশব্দে কিরা-আত পড়া হয় এমন কোন সালাতে যখনই কোন সূরা তেলাওয়াত করতেন, قُل هُوَ اللهُ أَحَدٌ সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক‘আতেই তিনি এমন করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর নিকট বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ দিয়ে অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামাত করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামাত ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামাত করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান। তিনি বললেন, হে, অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাধা দেয়? আর প্রতি রাক‘আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। অনুরূপ বর্ণনা : [আ.প্র. অনুচ্ছেদ পৃষ্ঠা ৩৩৬, ই.ফা. অনুচ্ছেদ ৪৯৮]
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٥ – حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ مَسْعُودٍ، فَقَالَ: قَرَأْتُ المُفَصَّلَ اللَّيْلَةَ فِي رَكْعَةٍ، فَقَالَ: «هَذًّا كَهَذِّ الشِّعْرِ، لَقَدْ عَرَفْتُ النَّظَائِرَ الَّتِي كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرُنُ بَيْنَهُنَّ، فَذَكَرَ عِشْرِينَ سُورَةً مِنَ المُفَصَّلِ، سُورَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ»
আদম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: শু‘উবাহ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘আম্র ইব্ন মুর্রাহ থেকে, তিনি বললেন: আমি আবূ ওয়াইল থেকে শুনলাম, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইব্নু মাস‘উদ (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-এর নিকট এসে বলল, গতরাতে আমি মুফাস্সাল সূরাগুলো এক রাক‘আতেই তেলাওয়াত করেছি। তিনি বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই কবিতার ন্যায় দ্রুত পড়েছ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরস্পর সমতুল্য যে সব সূরা মিলিয়ে পড়তেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি জানি। এ বলে তিনি মুফাস্সাল সূরাসমূহের বিশটি সূরা উল্লেখ পূর্বক বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রাক‘আতে এর দু’টি করে সূরা পড়তেন।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٦ – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لَا يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي العَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ»
মূসা ইব্নু ইসমা‘ঈল আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হা’ম্মাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ’ইয়া থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরা আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরা পড়তেন এবং শেষ দু’রাক‘আতে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে যত দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফজরেও এ রকম করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٧ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قُلْتُ لِخَبَّابٍ: أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: مِنْ أَيْنَ عَلِمْتَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
ক্বুতায়বা ইব্নু সা‘ঈদ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: জারীর আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ‘উমারাহ ইব্ন ‘উমায়র থেকে, তিনি আবূ মা‘মার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাজিআল্লাহু ‘আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, কী করে বুঝলেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ি নড়াচড়া দেখে।
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٨ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ بِأُمِّ الكِتَابِ وَسُورَةٍ مَعَهَا فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلَاةِ الظُّهْرِ وَصَلَاةِ العَصْرِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ أَحْيَانًا وَكَانَ يُطِيلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى»
মুহা’ম্মাদ ইব্নু ইউসুফ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আওযা‘ঈ আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: ইয়াহ’ইয়া ইব্নু আবূ কাছীর আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: আব্দুল্লাহ ইব্নু আবূ কাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও আসরের সালাতের প্রথম দু’ রাক‘আতে সূরা ফাতিহার সাথে আরেকটি সূরা পড়তেন। কখনো কোন কোন আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন এবং তিনি প্রথম রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
হাদীসের মান: সহীহ
٧٧٩ – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلَاةِ الظُّهْرِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ فِي صَلَاةِ الصُّبْحِ»
আবূ নু‘আয়ম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন, তিনি বললেন: হিশাম আমাদেরকে হাদীসটি বর্ণনা করলেন ইয়াহ্’ইয়া ইব্ন আবূ কাছীর থেকে, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইব্ন আবূ ক্বাতাদা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি বললেন, “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাতের প্রথম রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন ও দ্বিতীয় রাক‘আতে সংক্ষিপ্ত করতেন এবং এ রকম করতেন ফজরের সালাতেও।”
অনুরূপ বর্ণনা : [
وَقَالَ عَطَاءٌ: «آمِينَ دُعَاءٌ» أَمَّنَ ابْنُ الزُّبَيْرِ: وَمَنْ وَرَاءَهُ حَتَّى إِنَّ لِلْمَسْجِدِ لَلَجَّةً وَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ: «يُنَادِي الإِمَامَ لَا تَفُتْنِي بِآمِينَ» وَقَالَ نَافِعٌ: «كَانَ ابْنُ عُمَرَ لَا يَدَعُهُ وَيَحُضُّهُمْ وَسَمِعْتُ مِنْهُ فِي ذَلِكَ خَيْرًا»
‘আত্বা (রহমাহুল্লাহ) বলেন, “আমীন হল দু‘আ”। তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইব্নু যুবায়র (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ও তাঁর পিছনের মুসুল্লীগণ এমন ভাবে ‘আমীন’ বলতেন যে, মসজিদে গুমগুম আওয়ায হতো। আবূ হুরায়রা (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) ইমামকে ডেকে বলতেন, “আমাকে ‘আমীন’ বলার সুযোগ হতে বঞ্চিত করবেন না।” নাফি’ই (রহমাহুল্লাহ) বলেন, “ইব্নু ‘উমার (রাজিআল্লাহু ‘আনহু) কখনই ‘আমীন’ বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদের (‘আমীন’ বলার জন্য) উৎসাহিত করতেন। আমি তাঁর কাছ হতে এ সম্পর্কে হাদীস শুনেছি।”
হাদীসের মান: সহীহ
٧٨٠ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَن