42 নং সূরা – আশ-শুরা – اَلشُّوَرَىٰ
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 53
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
02 – শুরা
عٓسٓقٓ
আইন, সীন, কাফ।
03 – শুরা
كَذَٰلِكَ يُوحِىٓ إِلَيْكَ وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكَ ٱللَّهُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ এভাবেই তোমার পূর্ববর্তীদের মতই তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেন।
04 – শুরা
لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই। তিনি সমুন্নত, মহান।
05 – শুরা
تَكَادُ ٱلسَّمَٰوَٰتُ يَتَفَطَّرْنَ مِن فَوْقِهِنَّۚ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِمَن فِى ٱلْأَرْضِۗ أَلَآ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
আকাশমন্ডলী উর্ধ্বদেশ হতে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয় এবং মালাইকা/ফেরেশতারা তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং মর্তবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। জেনে রেখ, আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
06 – শুরা
وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواۡ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ ٱللَّهُ حَفِيظٌ عَلَيْهِمْ وَمَآ أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ
যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরদেরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখেন। তুমি তাদের কর্মবিধায়ক নও।
07 – শুরা
وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ قُرْءَانًا عَرَبِيًّا لِّتُنذِرَ أُمَّ ٱلْقُرَىٰ وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ يَوْمَ ٱلْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِۚ فَرِيقٌ فِى ٱلْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِى ٱلسَّعِيرِ
এভাবে আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় যাতে তুমি সতর্ক করতে পার মাক্কা এবং ওর চতুর্দিকের জনগণকে এবং সতর্ক করতে পার কিয়ামাতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। সেদিন একদল জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
08 – শুরা
وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَهُمْ أُمَّةً وَٰحِدَةً وَلَٰكِن يُدْخِلُ مَن يَشَآءُ فِى رَحْمَتِهِۦۚ وَٱلظَّٰلِمُونَ مَا لَهُم مِّن وَلِىٍّ وَلَا نَصِيرٍ
আল্লাহ ইচ্ছা করলে মানুষকে একই উম্মাত করতে পারতেন। বস্তুতঃ তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে স্বীয় অনুগ্রহের অধিকারী করেন। যালিমদের কোন অভিভাবক নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই।
09 – শুরা
أَمِ ٱتَّخَذُواۡ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَۖ فَٱللَّهُ هُوَ ٱلْوَلِىُّ وَهُوَ يُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
তারা কি আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করেছে? কিন্তু আল্লাহ! অভিভাবকতো তিনিই এবং তিনি মৃতকে জীবিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
10 – শুরা
وَمَا ٱخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِن شَىْءٍ فَحُكْمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّى عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ
তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর না কেন, ওর মীমাংসাতো আল্লাহরই নিকট। বলঃ তিনিই আল্লাহ! আমার রাব্ব। আমি নির্ভর করি তাঁর উপর এবং আমি তাঁরই অভিমুখী!
11 – শুরা
فَاطِرُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَٰجًا وَمِنَ ٱلْأَنْعَٰمِ أَزْوَٰجًاۖ يَذْرَؤُكُمْ فِيهِۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِۦ شَىْءٌۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ
তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, তিনি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং আন‘আমের জোড়া; এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন; কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
12 – শুরা
لَهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ يَبْسُطُ ٱلرِّزْقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقْدِرُۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবি তাঁরই নিকট। তিনি যার প্রতি ইচ্ছা তার রিয্ক বর্ধিত করেন অথবা সংকুচিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
13 – শুরা
شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحًا وَٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِۦٓ إِبْرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنْ أَقِيمُواۡ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواۡ فِيهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِۚ ٱللَّهُ يَجْتَبِىٓ إِلَيْهِ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِىٓ إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ
তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে। আর যা আমি অহী করেছিলাম তোমাদের এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং ওতে মতভেদ করনা। তুমি মুশরিকদেরকে যার প্রতি আহবান করছ তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তার অভিমুখী হয় তাকে দীনের দিকে পরিচালিত করেন।
14 – শুরা
وَمَا تَفَرَّقُوٓاۡ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْۚ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّى لَّقُضِىَ بَيْنَهُمْۚ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ أُورِثُواۡ ٱلْكِتَٰبَ مِنۢ بَعْدِهِمْ لَفِى شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর শুধুমাত্র পারস্পরিক বিদ্বেষ বশতঃ তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফাইসালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কুরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে।
15 – শুরা
فَلِذَٰلِكَ فَٱدْعُۖ وَٱسْتَقِمْ كَمَآ أُمِرْتَۖ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَهُمْۖ وَقُلْ ءَامَنتُ بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِن كِتَٰبٍۖ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُۖ ٱللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْۖ لَنَآ أَعْمَٰلُنَا وَلَكُمْ أَعْمَٰلُكُمْۖ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُۖ ٱللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَاۖ وَإِلَيْهِ ٱلْمَصِيرُ
সুতরাং তুমি ওর দিকে আহবান কর এবং ওতেই দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাক যেভাবে তুমি আদিষ্ট হয়েছ এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করনা। বলঃ আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে বিশ্বাস করি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। আল্লাহই আমাদের রাব্ব এবং তোমাদেরও রাব্ব। আমাদের কাজ আমাদের এবং তোমাদের কাজ তোমাদের। আমাদের এবং তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহই আমাদেরকে একত্রিত করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই নিকট।
16 – শুরা
وَٱلَّذِينَ يُحَآجُّونَ فِى ٱللَّهِ مِنۢ بَعْدِ مَا ٱسْتُجِيبَ لَهُۥ حُجَّتُهُمْ دَاحِضَةٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ
আল্লাহকে স্বীকার করার পর যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের যুক্তি-তর্ক তাদের রবের দৃষ্টিতে অসার এবং তারা তাঁর ক্রোধের পাত্র এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
17 – শুরা
ٱللَّهُ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ ٱلْكِتَٰبَ بِٱلْحَقِّ وَٱلْمِيزَانَۗ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ قَرِيبٌ
আল্লাহই অবতীর্ণ করেছেন সত্যসহ কিতাব এবং তুলাদন্ড। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ কিয়ামাত আসন্ন?
18 – শুরা
يَسْتَعْجِلُ بِهَا ٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِهَاۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ مُشْفِقُونَ مِنْهَا وَيَعْلَمُونَ أَنَّهَا ٱلْحَقُّۗ أَلَآ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُمَارُونَ فِى ٱلسَّاعَةِ لَفِى ضَلَٰلٍۭ بَعِيدٍ
যারা এটা বিশ্বাস করেনা তারাই এটা ত্বরান্বিত করতে চায়। আর যারা বিশ্বাসী তারা ওকে ভয় করে এবং জানে যে, ওটা সত্য; জেনে রেখ, কিয়ামাত সম্পর্কে যারা বাক-বিতন্ডা করে তারা ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
19 – শুরা
ٱللَّهُ لَطِيفٌۢ بِعِبَادِهِۦ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُۖ وَهُوَ ٱلْقَوِىُّ ٱلْعَزِيزُ
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা রিয্ক দান করেন। তিনি প্রবল পরাক্রমশালী।
20 – শুরা
مَن كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ ٱلْءَاخِرَةِ نَزِدْ لَهُۥ فِى حَرْثِهِۦۖ وَمَن كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ ٱلدُّنْيَا نُؤْتِهِۦ مِنْهَا وَمَا لَهُۥ فِى ٱلْءَاخِرَةِ مِن نَّصِيبٍ
যে কেহ আখিরাতের প্রতিদান কামনা করে তার জন্য আমি তার ফসল বর্ধিত করে দিই এবং যে দুনিয়ার প্রতিদান কামনা করে আমি তাকে ওরই কিছু দিই। কিন্তু আখিরাতে তার জন্য কিছুই থাকবেনা।
21 – শুরা
أَمْ لَهُمْ شُرَكَٰٓؤُاۡ شَرَعُواۡ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ وَلَوْلَا كَلِمَةُ ٱلْفَصْلِ لَقُضِىَ بَيْنَهُمْۗ وَإِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
তাদের কি এমন কতকগুলি দেবতা আছে যারা তাদের জন্য বিধান দিয়েছে এমন দীনের যার অনুমতি আল্লাহ দেননি? ফাইসালার ঘোষণা না থাকলে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েই যেত। নিশ্চয়ই যালিমদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
22 – শুরা
تَرَى ٱلظَّٰلِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا كَسَبُواۡ وَهُوَ وَاقِعٌۢ بِهِمْۗ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فِى رَوْضَاتِ ٱلْجَنَّاتِۖ لَهُم مَّا يَشَآءُونَ عِندَ رَبِّهِمْۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَضْلُ ٱلْكَبِيرُ
তুমি যালিমদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত দেখবে তাদের কৃতকর্মের জন্য; আর এটাই আপতিত হবে তাদের উপর। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তারা থাকবে জান্নাতের মনোরম স্থানে। তারা যা কিছু চাবে তাদের রবের নিকট তা’ই পাবে। এটাইতো মহা অনুগ্রহ।
23 – শুরা
ذَٰلِكَ ٱلَّذِى يُبَشِّرُ ٱللَّهُ عِبَادَهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِۗ قُل لَّآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا ٱلْمَوَدَّةَ فِى ٱلْقُرْبَىٰۗ وَمَن يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهُۥ فِيهَا حُسْنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ شَكُورٌ
এই সুসংবাদই আল্লাহ দেন তাঁর বান্দাদেরকে যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে। বলঃ আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাইনা। যে উত্তম কাজ করে আমি তার জন্য এতে কল্যাণ বর্ধিত করি। আল্লাহ ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
24 – শুরা
أَمْ يَقُولُونَ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًاۖ فَإِن يَشَإِ ٱللَّهُ يَخْتِمْ عَلَىٰ قَلْبِكَۗ وَيَمْحُ ٱللَّهُ ٱلْبَٰطِلَ وَيُحِقُّ ٱلْحَقَّ بِكَلِمَٰتِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
তারা কি বলে যে, সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে? যদি তা’ই হত তাহলে আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমার হৃদয় মোহর করে দিতেন। আল্লাহ মিথ্যাকে মুছে দেন এবং নিজ বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অন্তরে যা আছে সেই বিষয়ে তিনি সবিশেষ অবহিত।
25 – শুরা
وَهُوَ ٱلَّذِى يَقْبَلُ ٱلتَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِۦ وَيَعْفُواۡ عَنِ ٱلسَّيِّـَٔاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ
তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবাহ কবূল করেন এবং পাপ মোচন করেন এবং তোমরা যা কর তিনি তা জানেন।
26 – শুরা
وَيَسْتَجِيبُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَيَزِيدُهُم مِّن فَضْلِهِۦۚ وَٱلْكَٰفِرُونَ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ
তিনি মু’মিন ও সৎকর্মশীলদের আহবানে সাড়া দেন এবং তাদের প্রতি তার অনুগ্রহ বর্ধিত করেন; কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
27 – শুরা
وَلَوْ بَسَطَ ٱللَّهُ ٱلرِّزْقَ لِعِبَادِهِۦ لَبَغَوْاۡ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَٰكِن يُنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ بِعِبَادِهِۦ خَبِيرٌۢ بَصِيرٌ
আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে জীবনোপকরণের প্রাচুর্য দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছা মত সঠিক পরিমানেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সম্যক জানেন ও দেখেন।
28 – শুরা
وَهُوَ ٱلَّذِى يُنَزِّلُ ٱلْغَيْثَ مِنۢ بَعْدِ مَا قَنَطُواۡ وَيَنشُرُ رَحْمَتَهُۥۚ وَهُوَ ٱلْوَلِىُّ ٱلْحَمِيدُ
তারা যখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখনই তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর করুণা বিস্তার করেন। তিনিই অভিভাবক, প্রশংসা।
29 – শুরা
وَمِنْ ءَايَٰتِهِۦ خَلْقُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَثَّ فِيهِمَا مِن دَآبَّةٍۚ وَهُوَ عَلَىٰ جَمْعِهِمْ إِذَا يَشَآءُ قَدِيرٌ
তাঁর অন্যতম নিদর্শন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলি। তিনি যখন ইচ্ছা তখনই ওদেরকে সমবেত করতে সক্ষম।
30 – শুরা
وَمَآ أَصَٰبَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُواۡ عَن كَثِيرٍ
তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তাতো তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।
31 – শুরা
وَمَآ أَنتُم بِمُعْجِزِينَ فِى ٱلْأَرْضِۖ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلَا نَصِيرٍ
তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর অভিপ্রায়কে ব্যর্থ করতে পারবেনা এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই।
32 – শুরা
وَمِنْ ءَايَٰتِهِ ٱلْجَوَارِ فِى ٱلْبَحْرِ كَٱلْأَعْلَٰمِ
তাঁর অন্যতম নিদর্শন পর্বত সদৃশ সমুদ্রে চলমান নৌযানসমূহ।
33 – শুরা
إِن يَشَأْ يُسْكِنِ ٱلرِّيحَ فَيَظْلَلْنَ رَوَاكِدَ عَلَىٰ ظَهْرِهِۦٓۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ
তিনি ইচ্ছা করলে বায়ুকে স্তদ্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ নিশ্চল হয়ে পড়বে সমুদ্র পৃষ্ঠে। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।
34 – শুরা
أَوْ يُوبِقْهُنَّ بِمَا كَسَبُواۡ وَيَعْفُ عَن كَثِيرٍ
অথবা তিনি তাদের কৃতকর্মের জন্য সেইগুলিকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারেন এবং অনেককে তিনি ক্ষমাও করেন।
35 – শুরা
وَيَعْلَمَ ٱلَّذِينَ يُجَٰدِلُونَ فِىٓ ءَايَٰتِنَا مَا لَهُم مِّن مَّحِيصٍ
আর আমার নিদর্শন সম্পর্কে যারা বির্তক করে তারা যেন জানতে পারে যে, তাদের কোন নিস্কৃতি নেই।
36 – শুরা
فَمَآ أُوتِيتُم مِّن شَىْءٍ فَمَتَٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۖ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ لِلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
বস্তুতঃ তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ। কিন্তু আল্লাহর নিকট যা আছে তা উত্তম ও স্থায়ী – তাদের জন্য, যারা ঈমান আনে ও তাদের রবের উপর নির্ভর করে।
37 – শুরা
وَٱلَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَٰٓئِرَ ٱلْإِثْمِ وَٱلْفَوَٰحِشَ وَإِذَا مَا غَضِبُواۡ هُمْ يَغْفِرُونَ
যারা গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ হতে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাবিষ্ট হয়েও ক্ষমা করে দেয় –
38 – শুরা
وَٱلَّذِينَ ٱسْتَجَابُواۡ لِرَبِّهِمْ وَأَقَامُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَمْرُهُمْ شُورَىٰ بَيْنَهُمْ وَمِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ يُنفِقُونَ
যারা তাদের রবের আহবানে সাড়া দেয়, সালাত কায়েম করে, নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কাজ সম্পাদন করে এবং তাদেরকে আমি যে রিয্ক দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে –
39 – শুরা
وَٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَابَهُمُ ٱلْبَغْىُ هُمْ يَنتَصِرُونَ
এবং যারা অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে –
40 – শুরা
وَجَزَٰٓؤُاۡ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِّثْلُهَاۖ فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلظَّٰلِمِينَ
মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ দ্বারা এবং যে ক্ষমা করে ও আপোষ-নিস্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আল্লাহ যালিমদের পছন্দ করেন না।
41 – শুরা
وَلَمَنِ ٱنتَصَرَ بَعْدَ ظُلْمِهِۦ فَأُوۡلَٰٓئِكَ مَا عَلَيْهِم مِّن سَبِيلٍ
তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা।
42 – শুরা
إِنَّمَا ٱلسَّبِيلُ عَلَى ٱلَّذِينَ يَظْلِمُونَ ٱلنَّاسَ وَيَبْغُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّۚ أُوۡلَٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
43 – শুরা
وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَٰلِكَ لَمِنْ عَزْمِ ٱلْأُمُورِ
অবশ্য যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয় তাতো হবে দৃঢ় সম্পর্কেরই কাজ।
44 – শুরা
وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن وَلِىٍّ مِّنۢ بَعْدِهِۦۗ وَتَرَى ٱلظَّٰلِمِينَ لَمَّا رَأَوُاۡ ٱلْعَذَابَ يَقُولُونَ هَلْ إِلَىٰ مَرَدٍّ مِّن سَبِيلٍ
আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। যালিমরা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তুমি তাদেরকে বলতে শুনবেঃ প্রত্যাবর্তনের কোন উপায় আছে কি?
45 – শুরা
وَتَرَىٰهُمْ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا خَٰشِعِينَ مِنَ ٱلذُّلِّ يَنظُرُونَ مِن طَرْفٍ خَفِىٍّۗ وَقَالَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِنَّ ٱلْخَٰسِرِينَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓاۡ أَنفُسَهُمْ وَأَهْلِيهِمْ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِۗ أَلَآ إِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ فِى عَذَابٍ مُّقِيمٍ
তুমি তাদেরকে দেখতে পাবে যে, তাদেরকে (জাহান্নামের সামনে) উপস্থিত করা হচ্ছে, লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায়। মু’মিনরা কিয়ামাত দিবসে বলবেঃ ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে। জেনে রেখ, যালিমরা ভোগ করবে স্থায়ী শাস্তি।
46 – শুরা
وَمَا كَانَ لَهُم مِّنْ أَوْلِيَآءَ يَنصُرُونَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِۗ وَمَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن سَبِيلٍ
আল্লাহ ব্যতীত তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবেনা এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন গতি নেই।
47 – শুরা
ٱسْتَجِيبُواۡ لِرَبِّكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌ لَّا مَرَدَّ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِۚ مَا لَكُم مِّن مَّلْجَإٍ يَوْمَئِذٍ وَمَا لَكُم مِّن نَّكِيرٍ
তোমরা তোমাদের রবের আহবানে সাড়া দাও সেই দিন আসার পূর্বে যা আল্লাহর বিধানে অপ্রতিরোদ্ধ, ‘যেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবেনা, আর না (তোমাদের পাপ) অস্বীকার করার সুযোগ থাকবে।’
48 – শুরা
فَإِنْ أَعْرَضُواۡ فَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًاۖ إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا ٱلْبَلَٰغُۗ وَإِنَّآ إِذَآ أَذَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِنَّا رَحْمَةً فَرِحَ بِهَاۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌۢ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَإِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ كَفُورٌ
তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমাকেতো আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। তোমার কাজতো শুধু প্রচার করে যাওয়া। আমি মানুষকে যখন অনুগ্রহ আস্বাদন করাই তখন সে উৎফুল্ল হয় এবং যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের বিপদ আপদ ঘটে তখন মানুষ হয়ে যায় অকৃতজ্ঞ।
49 – শুরা
لِّلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তা’ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।
50 – শুরা
أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَٰثًاۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌ قَدِيرٌ
অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে করে দেন বন্ধ্যা। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
51 – শুরা
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ ٱللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَآئِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِىَ بِإِذْنِهِۦ مَا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ عَلِىٌّ حَكِيمٌ
মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন অহীর মাধ্যম ছাড়া, অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিত, অথবা এমন দূত প্রেরণ ছাড়া যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করে। তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময়।
52 – শুরা
وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ رُوحًا مِّنْ أَمْرِنَاۚ مَا كُنتَ تَدْرِى مَا ٱلْكِتَٰبُ وَلَا ٱلْإِيمَٰنُ وَلَٰكِن جَعَلْنَٰهُ نُورًا نَّهْدِى بِهِۦ مَن نَّشَآءُ مِنْ عِبَادِنَاۚ وَإِنَّكَ لَتَهْدِىٓ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
এভাবে আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি রূহ তথা আমার নির্দেশ; তুমিতো জানতেনা কিতাব কি ও ঈমান কি! পক্ষান্তরে আমি একে করেছি আলো যা দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পথ-নির্দেশ করি; তুমিতো প্রদর্শন কর শুধু সরল পথ –
53 – শুরা
صِرَٰطِ ٱللَّهِ ٱلَّذِى لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۗ أَلَآ إِلَى ٱللَّهِ تَصِيرُ ٱلْأُمُورُ
সেই আল্লাহর পথ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার মালিক। জেনে রেখ, সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন করে।
43 নং সূরা – আয-যুখরুফ – اَلزُّخْرُف
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 89
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – আয-যুখরুফ
حمٓ
হা, মীম।
02 – আয-যুখরুফ
وَٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ
শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের!
03 – আয-যুখরুফ
إِنَّا جَعَلْنَٰهُ قُرْءَٰنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
আমি এটা অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন রূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
04 – আয-যুখরুফ
وَإِنَّهُۥ فِىٓ أُمِّ ٱلْكِتَٰبِ لَدَيْنَا لَعَلِىٌّ حَكِيمٌ
এটা রয়েছে আমার নিকট উম্মুল কিতাবে; এটা মহান, জ্ঞানগর্ভ।
05 – আয-যুখরুফ
أَفَنَضْرِبُ عَنكُمُ ٱلذِّكْرَ صَفْحًا أَن كُنتُمْ قَوْمًا مُّسْرِفِينَ
আমি কি তোমাদের হতে এই উপদেশ বাণী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নিব এই কারণে যে, তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
06 – আয-যুখরুফ
وَكَمْ أَرْسَلْنَا مِن نَّبِىٍّ فِى ٱلْأَوَّلِينَ
পূর্ববর্তীদের নিকট আমি বহু নাবী প্রেরণ করেছিলাম।
07 – আয-যুখরুফ
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن نَّبِىٍّ إِلَّا كَانُواۡ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
এবং যখনই তাদের নিকট কোন নাবী এসেছে, তারা তাকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছে।
08 – আয-যুখরুফ
فَأَهْلَكْنَآ أَشَدَّ مِنْهُم بَطْشًا وَمَضَىٰ مَثَلُ ٱلْأَوَّلِينَ
তাদের মধ্যে যারা এদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল ছিল তাদেরকে আমি ধ্বংস করেছিলাম; আর এভাবে চলে আসছে পূর্ববর্তীদের অনুরূপ দৃষ্টান্ত।
09 – আয-যুখরুফ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ ٱلْعَزِيزُ ٱلْعَلِيمُ
তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবেঃ এগুলিতো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহ –
10 – আয-যুখরুফ
ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ مَهْدًا وَجَعَلَ لَكُمْ فِيهَا سُبُلًا لَّعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন শয্যা এবং ওতে করেছেন তোমাদের চলার পথ, যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার;
11 – আয-যুখরুফ
وَٱلَّذِى نَزَّلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءًۢ بِقَدَرٍ فَأَنشَرْنَا بِهِۦ بَلْدَةً مَّيْتًاۚ كَذَٰلِكَ تُخْرَجُونَ
এবং যিনি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন পরিমিতভাবে। এবং আমি তদ্বারা সঞ্জীবিত করি নির্জীব ভূখন্ডকে। এভাবেই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে।
12 – আয-যুখরুফ
وَٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْأَزْوَٰجَ كُلَّهَا وَجَعَلَ لَكُم مِّنَ ٱلْفُلْكِ وَٱلْأَنْعَٰمِ مَا تَرْكَبُونَ
এবং যিনি যুগলসমূহের প্রত্যেককে সৃষ্টি করেন এবং যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেন এমন নৌযান ও চতুস্পদ জন্তু যাতে তোমরা আরোহণ কর –
13 – আয-যুখরুফ
لِتَسْتَوُۥاۡ عَلَىٰ ظُهُورِهِۦ ثُمَّ تَذْكُرُواۡ نِعْمَةَ رَبِّكُمْ إِذَا ٱسْتَوَيْتُمْ عَلَيْهِ وَتَقُولُواۡ سُبْحَٰنَ ٱلَّذِى سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقْرِنِينَ
যাতে তোমরা ওদের পৃষ্ঠে স্থির হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের রবের অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তোমরা ওর উপর স্থির হয়ে বস এবং বলঃ পবিত্র ও মহান তিনি যিনি এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন যদিও আমরা সমর্থ ছিলামনা এদেরকে বশীভূত করতে।
14 – আয-যুখরুফ
وَإِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ
আমরা আমাদের রবের নিকট অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করব।
15 – আয-যুখরুফ
وَجَعَلُواۡ لَهُۥ مِنْ عِبَادِهِۦ جُزْءًاۚ إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَكَفُورٌ مُّبِينٌ
তারা তাঁর বান্দাদের মধ্য হতে তাঁর অংশ সাব্যস্ত করেছে। মানুষতো স্পষ্টই অকৃতজ্ঞ।
16 – আয-যুখরুফ
أَمِ ٱتَّخَذَ مِمَّا يَخْلُقُ بَنَاتٍ وَأَصْفَىٰكُم بِٱلْبَنِينَ
তিনি কি তাঁর সৃষ্টি হতে নিজের জন্য কন্যা সন্তান গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদেরকে বিশিষ্ট করেছেন পুত্র সন্তান দ্বারা?
17 – আয-যুখরুফ
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِمَا ضَرَبَ لِلرَّحْمَٰنِ مَثَلًا ظَلَّ وَجْهُهُۥ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ
দয়াময় আল্লাহর প্রতি তারা যা আরোপ করে তাদের কেহকে সেই সন্তানের সংবাদ দেয়া হলে তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে দুঃসহ মর্ম যাতনায় ক্লিষ্ট হয়।
18 – আয-যুখরুফ
أَوَمَن يُنَشَّؤُاۡ فِى ٱلْحِلْيَةِ وَهُوَ فِى ٱلْخِصَامِ غَيْرُ مُبِينٍ
তারা কি আল্লাহর প্রতি আরোপ করে এমন সন্তান, যে অলংকারে আবৃত হয়ে লালিত পালিত হয় এবং তর্ক-বিতর্ক কালে স্পষ্ট বক্তব্যে অসমর্থ?
19 – আয-যুখরুফ
وَجَعَلُواۡ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ ٱلَّذِينَ هُمْ عِبَٰدُ ٱلرَّحْمَٰنِ إِنَٰثًاۚ أَشَهِدُواۡ خَلْقَهُمْۚ سَتُكْتَبُ شَهَٰدَتُهُمْ وَيُسْـَٔلُونَ
তারা দয়াময় আল্লাহর বান্দা মালাইকাকে নারী গন্য করেছে। এদের সৃষ্টি কি তারা প্রত্যক্ষ করেছিল? তাদের উক্তি লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে।
20 – আয-যুখরুফ
وَقَالُواۡ لَوْ شَآءَ ٱلرَّحْمَٰنُ مَا عَبَدْنَٰهُمۗ مَّا لَهُم بِذَٰلِكَ مِنْ عِلْمٍۖ إِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ
তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা এদের পূজা করতামনা। এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই; তারাতো শুধু মিথ্যাই বলছে।
21 – আয-যুখরুফ
أَمْ ءَاتَيْنَٰهُمْ كِتَٰبًا مِّن قَبْلِهِۦ فَهُم بِهِۦ مُسْتَمْسِكُونَ
আমি কি তাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতাব দান করেছি, যা তারা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছে?
22 – আয-যুখরুফ
بَلْ قَالُوٓاۡ إِنَّا وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم مُّهْتَدُونَ
বরং তারা বলেঃ আমরাতো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি।
23 – আয-যুখরুফ
وَكَذَٰلِكَ مَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِى قَرْيَةٍ مِّن نَّذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَآ إِنَّا وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم مُّقْتَدُونَ
এভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখন ওর সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিরা বলতঃ আমরাতো আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি।
24 – আয-যুখরুফ
قَٰلَ أَوَلَوْ جِئْتُكُم بِأَهْدَىٰ مِمَّا وَجَدتُّمْ عَلَيْهِ ءَابَآءَكُمْۖ قَالُوٓاۡ إِنَّا بِمَآ أُرْسِلْتُم بِهِۦ كَٰفِرُونَ
সেই সতর্ককারী বলতঃ তোমরা তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে যে পথে পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথ-নির্দেশ আনয়ন করি তাহলেও কি তোমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে? তারা বলতঃ তোমরা যা সহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।
25 – আয-যুখরুফ
فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْۖ فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُكَذِّبِينَ
অতঃপর আমি তাদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দিলাম; দেখ, মিথ্যাচারীদের পরিণাম কি হয়েছে!
26 – আয-যুখরুফ
وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦٓ إِنَّنِى بَرَآءٌ مِّمَّا تَعْبُدُونَ
স্মরণ কর, ইবরাহীম তার পিতা এবং সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা যাদের পূজা কর তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
27 – আয-যুখরুফ
إِلَّا ٱلَّذِى فَطَرَنِى فَإِنَّهُۥ سَيَهْدِينِ
সম্পর্ক আছে শুধু তাঁরই সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন।
28 – আয-যুখরুফ
وَجَعَلَهَا كَلِمَةًۢ بَاقِيَةً فِى عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
এই ঘোষণাকে সে স্থায়ী বাণী রূপে রেখে গেছে তার পরবর্তীদের জন্য যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে।
29 – আয-যুখরুফ
بَلْ مَتَّعْتُ هَٰٓؤُلَآءِ وَءَابَآءَهُمْ حَتَّىٰ جَآءَهُمُ ٱلْحَقُّ وَرَسُولٌ مُّبِينٌ
বরং আমিই তাদেরকে এবং তাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে সুযোগ দিয়েছিলাম ভোগের; অবশেষে তাদের নিকট এলো সত্য ও স্পষ্ট প্রচারক রাসূল।
30 – আয-যুখরুফ
وَلَمَّا جَآءَهُمُ ٱلْحَقُّ قَالُواۡ هَٰذَا سِحْرٌ وَإِنَّا بِهِۦ كَٰفِرُونَ
যখন তাদের নিকট সত্য এলো তখন তারা বললঃ এটাতো যাদু এবং আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করি।
31 – আয-যুখরুফ
وَقَالُواۡ لَوْلَا نُزِّلَ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانُ عَلَىٰ رَجُلٍ مِّنَ ٱلْقَرْيَتَيْنِ عَظِيمٍ
এবং তারা বলেঃ এই কুরআন কেন অবতীর্ণ করা হলনা দুই জনপদের কোন প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির উপর?
32 – আয-যুখরুফ
أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَتَ رَبِّكَۚ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُم مَّعِيشَتَهُمْ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۚ وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَٰتٍ لِّيَتَّخِذَ بَعْضُهُم بَعْضًا سُخْرِيًّاۗ وَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
তারা কি তোমার রবের করুণা বন্টন করে? আমিই তাদের মধ্যে জীবিকা বন্টন করি তাদের পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নীত করি যাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে; এবং তারা যা জমা করে তা হতে তোমার রবের অনুগ্রহ উৎকৃষ্টতর।
33 – আয-যুখরুফ
وَلَوْلَآ أَن يَكُونَ ٱلنَّاسُ أُمَّةً وَٰحِدَةً لَّجَعَلْنَا لِمَن يَكْفُرُ بِٱلرَّحْمَٰنِ لِبُيُوتِهِمْ سُقُفًا مِّن فِضَّةٍ وَمَعَارِجَ عَلَيْهَا يَظْهَرُونَ
সত্য প্রত্যাখ্যানে মানুষ এক মতাবলম্বী হয়ে পড়বে, এই আশংকা না থাকলে দয়াময় আল্লাহকে যারা অস্বীকার করে তাদেরকে আমি দিতাম তাদের গৃহের জন্য রৌপ্য নির্মিত ছাদ ও সিড়ি যাতে তারা আরোহণ করে।
34 – আয-যুখরুফ
وَلِبُيُوتِهِمْ أَبْوَٰبًا وَسُرُرًا عَلَيْهَا يَتَّكِـُٔونَ
এবং তাদের গৃহের জন্য দিতাম রৌপ্য নির্মিত দরজা, বিশ্রামের জন্য পালঙ্ক যাতে তারা হেলান দিয়ে বসত।
35 – আয-যুখরুফ
وَزُخْرُفًاۚ وَإِن كُلُّ ذَٰلِكَ لَمَّا مَتَٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَاۚ وَٱلْءَاخِرَةُ عِندَ رَبِّكَ لِلْمُتَّقِينَ
এবং স্বর্ণের নির্মিতও। আর এই সবইতো শুধু পার্থিব জীবনের ভোগ সম্ভার। মুত্তাকীদের জন্য তোমার রবের নিকট রয়েছে আখিরাতের কল্যাণ।
36 – আয-যুখরুফ
وَمَن يَعْشُ عَن ذِكْرِ ٱلرَّحْمَٰنِ نُقَيِّضْ لَهُۥ شَيْطَٰنًا فَهُوَ لَهُۥ قَرِينٌ
যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণে বিমুখ হয় আমি তার জন্য নিয়োজিত করি এক শাইতান, অতঃপর সে হয় তার সহচর।
37 – আয-যুখরুফ
وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ ٱلسَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ
শাইতানরাই মানুষকে সৎ পথ হতে বিরত রাখে, অথচ মানুষ মনে করে যে, তারা সৎ পথে পরিচালিত হচ্ছে।
38 – আয-যুখরুফ
حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَنَا قَالَ يَٰلَيْتَ بَيْنِى وَبَيْنَكَ بُعْدَ ٱلْمَشْرِقَيْنِ فَبِئْسَ ٱلْقَرِينُ
অবশেষে যখন সে আমার নিকট উপস্থিত হবে তখন সে শাইতানকে বলবেঃ হায়! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত! কত নিকৃষ্ট সহচর সে!
39 – আয-যুখরুফ
وَلَن يَنفَعَكُمُ ٱلْيَوْمَ إِذ ظَّلَمْتُمْ أَنَّكُمْ فِى ٱلْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ
যেহেতু তোমরা সীমালংঘন করেছিলে, তাই আজ তোমাদের এই অনুতাপ তোমাদের কোন কাজে আসবে না, তোমরা তো সবাই শাস্তিতে শরীক।
40 – আয-যুখরুফ
أَفَأَنتَ تُسْمِعُ ٱلصُّمَّ أَوْ تَهْدِى ٱلْعُمْىَ وَمَن كَانَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
তুমি কি শোনাতে পারবে বধিরকে? অথবা যে অন্ধ এবং যে ব্যক্তি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে তাকে কি পারবে সৎ পথে পরিচালিত করতে?
41 – আয-যুখরুফ
فَإِمَّا نَذْهَبَنَّ بِكَ فَإِنَّا مِنْهُم مُّنتَقِمُونَ
আমি যদি তোমার মৃত্যু ঘটাই, তবুও আমি তাদেরকে শাস্তি দিব।
42 – আয-যুখরুফ
أَوْ نُرِيَنَّكَ ٱلَّذِى وَعَدْنَٰهُمْ فَإِنَّا عَلَيْهِم مُّقْتَدِرُونَ
অথবা আমি তাদেরকে যে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেছি যদি আমি তোমাকে তা প্রত্যক্ষ করাই তাহলে তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে।
43 – আয-যুখরুফ
فَٱسْتَمْسِكْ بِٱلَّذِىٓ أُوحِىَ إِلَيْكَۖ إِنَّكَ عَلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
সুতরাং তোমার প্রতি যা অহী করা হয়েছে তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রয়েছ।
44 – আয-যুখরুফ
وَإِنَّهُۥ لَذِكْرٌ لَّكَ وَلِقَوْمِكَۖ وَسَوْفَ تُسْـَٔلُونَ
নিশ্চয়ই ইহা (কুরআন) তোমার এবং তোমার সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ, তোমাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে।
45 – আয-যুখরুফ
وَسْـَٔلْ مَنْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رُّسُلِنَآ أَجَعَلْنَا مِن دُونِ ٱلرَّحْمَٰنِ ءَالِهَةً يُعْبَدُونَ
তোমার পূর্বে আমি যে সব রাসূল প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে তুমি জিজ্ঞেস কর, আমি কি দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য স্থির করেছিলাম যার ইবাদাত করা যায়?
46 – আয-যুখরুফ
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِـَٔايَٰتِنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِيۡهِۦ فَقَالَ إِنِّى رَسُولُ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
মূসাকে আমি আমার নিদর্শনসহ ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের নিকট পাঠিয়েছিলাম; সে বলেছিলঃ আমি জগতসমূহের রবের পক্ষ হতে প্রেরিত রাসূল।
47 – আয-যুখরুফ
فَلَمَّا جَآءَهُم بِـَٔايَٰتِنَآ إِذَا هُم مِّنْهَا يَضْحَكُونَ
সে তাদের নিকট আমার নিদর্শনসহ আসা মাত্র তারা তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে লাগল।
48 – আয-যুখরুফ
وَمَا نُرِيهِم مِّنْ ءَايَةٍ إِلَّا هِىَ أَكْبَرُ مِنْ أُخْتِهَاۖ وَأَخَذْنَٰهُم بِٱلْعَذَابِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
আমি তাদেরকে এমন কোন নিদর্শন দেখাইনি যা ওর অনুরূপ নিদর্শন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নয়। আমি তাদেরকে শাস্তি দিলাম যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে।
49 – আয-যুখরুফ
وَقَالُواۡ يَٰٓأَيُّهَ ٱلسَّاحِرُ ٱدْعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِندَكَ إِنَّنَا لَمُهْتَدُونَ
তারা বলেছিলঃ হে যাদুকর! তোমার রবের নিকট তুমি আমাদের জন্য তা প্রার্থনা কর যা তিনি তোমার সাথে অংগীকার করেছেন; তাহলে আমরা অবশ্যই সৎ পথ অবলম্বন করব।
50 – আয-যুখরুফ
فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ ٱلْعَذَابَ إِذَا هُمْ يَنكُثُونَ
অতঃপর যখন আমি তাদের উপর হতে শাস্তি বিদূরিত করলাম তখনই তারা অংগীকার ভংগ করতে লাগল।
51 – আয-যুখরুফ
وَنَادَىٰ فِرْعَوْنُ فِى قَوْمِهِۦ قَالَ يَٰقَوْمِ أَلَيْسَ لِى مُلْكُ مِصْرَ وَهَٰذِهِ ٱلْأَنْهَٰرُ تَجْرِى مِن تَحْتِىٓۖ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
ফির‘আউন তার সম্প্রদায়ের মধ্যে এই বলে ঘোষণা করলঃ হে আমার সম্প্রদায়! মিসর রাজ্য কি আমার নয়? এই নদীগুলি আমার পাদদেশে প্রবাহিত, তোমরা কি দেখনা?
52 – আয-যুখরুফ
أَمْ أَنَا۠ خَيْرٌ مِّنْ هَٰذَا ٱلَّذِى هُوَ مَهِينٌ وَلَا يَكَادُ يُبِينُ
আমি কি শ্রেষ্ঠ নই এই ব্যক্তি হতে যে হীন এবং স্পষ্ট কথা বলতে অক্ষম?
53 – আয-যুখরুফ
فَلَوْلَآ أُلْقِىَ عَلَيْهِ أَسْوِرَةٌ مِّن ذَهَبٍ أَوْ جَآءَ مَعَهُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ مُقْتَرِنِينَ
মূসাকে কেন দেয়া হল না স্বর্ণ বলয়, অথবা তার সাথে কেন এলো না মালাইকা/ফেরেশতা দলবদ্ধভাবে?
54 – আয-যুখরুফ
فَٱسْتَخَفَّ قَوْمَهُۥ فَأَطَاعُوهُۚ إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَوْمًا فَٰسِقِينَ
এভাবে সে তার সম্প্রদায়কে হতবুদ্ধি করে দিল। ফলে তারা তার কথা মেনে নিল। তারাতো ছিল এক সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।
55 – আয-যুখরুফ
فَلَمَّآ ءَاسَفُونَا ٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَٰهُمْ أَجْمَعِينَ
যখন তারা আমাকে ক্রোধান্বিত করল তখন আমি তাদেরকে শাস্তি দিলাম এবং নিমজ্জিত করলাম তাদের সবাইকে।
56 – আয-যুখরুফ
فَجَعَلْنَٰهُمْ سَلَفًا وَمَثَلًا لِّلْءَاخِرِينَ
অতঃপর পরবর্তীদের জন্য আমি তাদেরকে করে রাখলাম অতীত ইতিহাস ও দৃষ্টান্ত।
57 – আয-যুখরুফ
وَلَمَّا ضُرِبَ ٱبْنُ مَرْيَمَ مَثَلًا إِذَا قَوْمُكَ مِنْهُ يَصِدُّونَ
যখন মারইয়াম তনয়ের দৃষ্টান্ত উপস্থিত করা হয় তখন তোমার সম্প্রদায় শোরগোল শুরু করে দেয়।
58 – আয-যুখরুফ
وَقَالُوٓاۡ ءَأَٰلِهَتُنَا خَيْرٌ أَمْ هُوَۚ مَا ضَرَبُوهُ لَكَ إِلَّا جَدَلًۢاۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُونَ
এবং বলেঃ আমাদের দেবতাগুলি শ্রেষ্ঠ, না ঈসা? তারা শুধু বাক-বিতন্ডার উদ্দেশেই তোমাকে এ কথা বলে। বস্তুতঃ তারাতো শুধু বাক-বিতন্ডাকারী সম্প্রদায়।
59 – আয-যুখরুফ
إِنْ هُوَ إِلَّا عَبْدٌ أَنْعَمْنَا عَلَيْهِ وَجَعَلْنَٰهُ مَثَلًا لِّبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
সেতো ছিল আমারই এক বান্দা, যাকে আমি অনুগ্রহ করেছিলাম এবং করেছিলাম বানী ইসরাঈলের জন্য দৃষ্টান্ত।
60 – আয-যুখরুফ
وَلَوْ نَشَآءُ لَجَعَلْنَا مِنكُم مَّلَٰٓئِكَةً فِى ٱلْأَرْضِ يَخْلُفُونَ
আমি ইচ্ছা করলে তোমাদের মধ্য হতে মালাইকা/ফেরেশতা সৃষ্টি করতে পারতাম, যারা পৃথিবীতে উত্তরাধিকারী হত।
61 – আয-যুখরুফ
وَإِنَّهُۥ لَعِلْمٌ لِّلسَّاعَةِ فَلَا تَمْتَرُنَّ بِهَا وَٱتَّبِعُونِۚ هَٰذَا صِرَٰطٌ مُّسْتَقِيمٌ
ঈসাতো কিয়ামাতের নিদর্শন; সুতরাং তোমরা কিয়ামাতে সন্দেহ পোষণ করনা এবং আমাকে অনুসরণ কর। এটাই সরল পথ।
62 – আয-যুখরুফ
وَلَا يَصُدَّنَّكُمُ ٱلشَّيْطَٰنُۖ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
শাইতান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই নিবৃত্ত না করে, সেতো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
63 – আয-যুখরুফ
وَلَمَّا جَآءَ عِيسَىٰ بِٱلْبَيِّنَٰتِ قَالَ قَدْ جِئْتُكُم بِٱلْحِكْمَةِ وَلِأُبَيِّنَ لَكُم بَعْضَ ٱلَّذِى تَخْتَلِفُونَ فِيهِۖ فَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ
ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ এলো তখন সে বললঃ আমিতো তোমাদের নিকট এসেছি প্রজ্ঞাসহ এবং তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ তা স্পষ্ট করে দেয়ার জন্য। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুসরণ কর।
64 – আয-যুখরুফ
إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُۚ هَٰذَا صِرَٰطٌ مُّسْتَقِيمٌ
আল্লাহই আমার রাব্ব এবং তোমাদের রাব্ব। অতএব তাঁর ইবাদাত কর; এটাই সরল পথ।
65 – আয-যুখরুফ
فَٱخْتَلَفَ ٱلْأَحْزَابُ مِنۢ بَيْنِهِمْۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ ظَلَمُواۡ مِنْ عَذَابِ يَوْمٍ أَلِيمٍ
অতঃপর তাদের কতিপয় দল মতানৈক্য সৃষ্টি করল; সুতরাং যালিমদের জন্য দুর্ভোগ, যন্ত্রণাদায়ক দিনের শাস্তির।
66 – আয-যুখরুফ
هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ أَن تَأْتِيَهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
তারাতো তাদের অজ্ঞাতসারে আকস্মিকভাবে কিয়ামাত আসারই অপেক্ষা করছে।
67 – আয-যুখরুফ
ٱلْأَخِلَّآءُ يَوْمَئِذٍۭ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا ٱلْمُتَّقِينَ
বন্ধুরা সেই দিন হয়ে পড়বে একে অপরের শত্রু, তবে মু’মিনরা ব্যতীত।
68 – আয-যুখরুফ
يَٰعِبَادِ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمُ ٱلْيَوْمَ وَلَآ أَنتُمْ تَحْزَنُونَ
হে আমার বান্দাগণ! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং দুঃখিতও হবেনা তোমরা –
69 – আয-যুখরুফ
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِـَٔايَٰتِنَا وَكَانُواۡ مُسْلِمِينَ
যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিল এবং আত্মসমর্পণ করেছিল।
70 – আয-যুখরুফ
ٱدْخُلُواۡ ٱلْجَنَّةَ أَنتُمْ وَأَزْوَٰجُكُمْ تُحْبَرُونَ
তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিনীগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর।
71 – আয-যুখরুফ
يُطَافُ عَلَيْهِم بِصِحَافٍ مِّن ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍۖ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ ٱلْأَنفُسُ وَتَلَذُّ ٱلْأَعْيُنُۖ وَأَنتُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে; সেখানে রয়েছে সবকিছু, অন্তর যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে।
72 – আয-যুখরুফ
وَتِلْكَ ٱلْجَنَّةُ ٱلَّتِىٓ أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
এটাই জান্নাত, তোমাদেরকে যার অধিকারী করা হয়েছে, তোমাদের কর্মের ফল স্বরূপ।
73 – আয-যুখরুফ
لَكُمْ فِيهَا فَٰكِهَةٌ كَثِيرَةٌ مِّنْهَا تَأْكُلُونَ
সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তোমরা আহার করবে তা হতে।
74 – আয-যুখরুফ
إِنَّ ٱلْمُجْرِمِينَ فِى عَذَابِ جَهَنَّمَ خَٰلِدُونَ
নিশ্চয়ই অপরাধীরা জাহান্নামের শাস্তিতে থাকবে স্থায়ী।
75 – আয-যুখরুফ
لَا يُفَتَّرُ عَنْهُمْ وَهُمْ فِيهِ مُبْلِسُونَ
তাদের শাস্তি লাঘব করা হবেনা এবং তারা হতাশ হয়ে পড়বে।
76 – আয-যুখরুফ
وَمَا ظَلَمْنَٰهُمْ وَلَٰكِن كَانُواۡ هُمُ ٱلظَّٰلِمِينَ
আমি তাদের প্রতি যুলম করিনি, বরং তারা নিজেরাই ছিল যালিম।
77 – আয-যুখরুফ
وَنَادَوْاۡ يَٰمَٰلِكُ لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَۖ قَالَ إِنَّكُم مَّٰكِثُونَ
তারা চিৎকার করে বলবেঃ হে মালিক (জাহান্নামের অধিকর্তা) তোমার রাব্ব আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন। সে বলবেঃ তোমরা এভাবেই থাকবে।
78 – আয-যুখরুফ
لَقَدْ جِئْنَٰكُم بِٱلْحَقِّ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَكُمْ لِلْحَقِّ كَٰرِهُونَ
আল্লাহ বলবেনঃ আমি তোমাদের নিকট সত্য পৌঁছিয়ে ছিলাম, কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই ছিলে সত্য বিমুখ।
79 – আয-যুখরুফ
أَمْ أَبْرَمُوٓاۡ أَمْرًا فَإِنَّا مُبْرِمُونَ
তারা কি কোন ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে? আমিই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী।
80 – আয-যুখরুফ
أَمْ يَحْسَبُونَ أَنَّا لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَىٰهُمۚ بَلَىٰ وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُونَ
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও মন্ত্রনার খবর রাখিনা? অবশ্যই রাখি। আমার মালাইকা/ফেরেশতাতো তাদের নিকট থেকে সব কিছু লিপিবদ্ধ করে।
81 – আয-যুখরুফ
قُلْ إِن كَانَ لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدٌ فَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْعَٰبِدِينَ
বলঃ দয়াময় ‘রাহমানের’ কোন সন্তান থাকলে আমি হতাম তার উপাসকগণের অগ্রণী।
82 – আয-যুখরুফ
سُبْحَٰنَ رَبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ رَبِّ ٱلْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ
তারা যা আরোপ করে তা হতে পবিত্র আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মহান অধিপতি এবং আরশের অধিকারী।
83 – আয-যুখরুফ
فَذَرْهُمْ يَخُوضُواۡ وَيَلْعَبُواۡ حَتَّىٰ يُلَٰقُواۡ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى يُوعَدُونَ
অতএব তাদেরকে যে দিনের কথা বলা হয়েছে তার সম্মুখীন হবার পূর্ব পর্যন্ত বাক-বিতন্ডা ও ক্রীড়া-কৌতুক করতে দাও।
84 – আয-যুখরুফ
وَهُوَ ٱلَّذِى فِى ٱلسَّمَآءِ إِلَٰهٌ وَفِى ٱلْأَرْضِ إِلَٰهٌۚ وَهُوَ ٱلْحَكِيمُ ٱلْعَلِيمُ
তিনিই মা‘বূদ নভোমন্ডলের, তিনিই মা‘বূদ ভূতলের এবং তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
85 – আয-যুখরুফ
وَتَبَارَكَ ٱلَّذِى لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَعِندَهُۥ عِلْمُ ٱلسَّاعَةِ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
কত মহান তিনি, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এইগুলির মধ্যবর্তী সব কিছুর সার্বভৌম অধিপতি! কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু তাঁরই আছে এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
86 – আয-যুখরুফ
وَلَا يَمْلِكُ ٱلَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِ ٱلشَّفَٰعَةَ إِلَّا مَن شَهِدَ بِٱلْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে ডাকে, সুপারিশের ক্ষমতা তাদের নেই, তবে যারা সত্য উপলব্ধি করে ওর সাক্ষ্য দেয় তারা ব্যতীত।
87 – আয-যুখরুফ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَهُمْ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ
তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে তাহলে তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ! তবুও তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?
88 – আয-যুখরুফ
وَقِيلِهِۦ يَٰرَبِّ إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ قَوْمٌ لَّا يُؤْمِنُونَ
আমি অবগত আছি রাসূলের এই উক্তি – হে আমার রাব্ব! এই সম্প্রদায়তো ঈমান আনবেনা।
89 – আয-যুখরুফ
فَٱصْفَحْ عَنْهُمْ وَقُلْ سَلَٰمٌۚ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
সুতরাং তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর এবং বলঃ সালাম! তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
44 নং সূরা – আদ-দুখান – اَلدُّخَان
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 59
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
02 – দুখান
وَٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ
শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।
03 – দুখান
إِنَّآ أَنزَلْنَٰهُ فِى لَيْلَةٍ مُّبَٰرَكَةٍۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ
আমি ইহা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারাক রাতে, আমিতো সতর্ককারী।
04 – দুখান
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয় –
05 – দুখান
أَمْرًا مِّنْ عِندِنَآۚ إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ
আমার আদেশক্রমে; আমি রাসূল প্রেরণ করে থাকি –
06 – দুখান
رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
তোমার রবের অনুগ্রহ স্বরূপ, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ –
07 – দুখান
رَبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَآۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ
যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওগুলির মধ্যস্থিত সব কিছুর রাব্ব – যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
08 – দুখান
لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْىِۦ وَيُمِيتُۖ رَبُّكُمْ وَرَبُّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ
তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই, তিনি জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান; তিনিই তোমাদের এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরও রাব্ব।
09 – দুখান
بَلْ هُمْ فِى شَكٍّ يَلْعَبُونَ
বস্তুতঃ তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে হাসি ঠাট্টা করছে।
10 – দুখান
فَٱرْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِى ٱلسَّمَآءُ بِدُخَانٍ مُّبِينٍ
অতএব তুমি অপেক্ষা কর সেই দিনের যেদিন স্পষ্ট ধুম্রাচ্ছন্ন হবে আকাশ।
11 – দুখান
يَغْشَى ٱلنَّاسَۖ هَٰذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
এবং তা আবৃত করে ফেলবে মানব জাতিকে। এটা হবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
12 – দুখান
رَّبَّنَا ٱكْشِفْ عَنَّا ٱلْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ
তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে এই শাস্তি হতে মুক্তি দিন, আমরা ঈমান আনব।
13 – দুখান
أَنَّىٰ لَهُمُ ٱلذِّكْرَىٰ وَقَدْ جَآءَهُمْ رَسُولٌ مُّبِينٌ
তারা কি করে উপদেশ গ্রহণ করবে? তাদের নিকটতো এসেছে স্পষ্ট ব্যাখ্যাকারী এক রাসূল;
14 – দুখান
ثُمَّ تَوَلَّوْاۡ عَنْهُ وَقَالُواۡ مُعَلَّمٌ مَّجْنُونٌ
অতঃপর তারা তাকে অমান্য করে বলেঃ সেতো শিখানো বুলি বলছে, সেতো এক পাগল।
15 – দুখান
إِنَّا كَاشِفُواۡ ٱلْعَذَابِ قَلِيلًاۚ إِنَّكُمْ عَآئِدُونَ
আমি তোমাদের শাস্তি কিছু কালের জন্য রহিত করছি, তোমরাতো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।
16 – দুখান
يَوْمَ نَبْطِشُ ٱلْبَطْشَةَ ٱلْكُبْرَىٰٓ إِنَّا مُنتَقِمُونَ
যেদিন আমি তোমাদেরকে প্রবলভাবে পাকড়াও করব সেদিন আমি তোমাদেরকে শাস্তি দিবই।
17 – দুখান
وَلَقَدْ فَتَنَّا قَبْلَهُمْ قَوْمَ فِرْعَوْنَ وَجَآءَهُمْ رَسُولٌ كَرِيمٌ
এদের পূর্বে আমি ফির‘আউন সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছিলাম এবং তাদের নিকটও এসেছিল এক মহান রাসূল।
18 – দুখান
أَنْ أَدُّوٓاۡ إِلَىَّ عِبَادَ ٱللَّهِۖ إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
সে বললঃ আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার নিকট প্রত্যর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।
19 – দুখান
وَأَن لَّا تَعْلُواۡ عَلَى ٱللَّهِۖ إِنِّىٓ ءَاتِيكُم بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ
এবং তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে উদ্ধত হয়োনা, আমি তোমাদের নিকট উপস্থিত করছি স্পষ্ট প্রমাণ।
20 – দুখান
وَإِنِّى عُذْتُ بِرَبِّى وَرَبِّكُمْ أَن تَرْجُمُونِ
তোমরা যাতে আমাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতে না পার তজ্জন্য আমি আমার রাব্ব ও তোমাদের রবের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
21 – দুখান
وَإِن لَّمْ تُؤْمِنُواۡ لِى فَٱعْتَزِلُونِ
যদি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না কর তাহলে তোমরা আমা হতে দূরে থাক।
22 – দুখান
فَدَعَا رَبَّهُۥٓ أَنَّ هَٰٓؤُلَآءِ قَوْمٌ مُّجْرِمُونَ
অতঃপর মূসা তার রবের নিকট নিবেদন করলঃ এরাতো এক অপরাধী সম্প্রদায়।
23 – দুখান
فَأَسْرِ بِعِبَادِى لَيْلًا إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ
আমি বলেছিলামঃ তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বের হয়ে পড়, তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
24 – দুখান
وَٱتْرُكِ ٱلْبَحْرَ رَهْوًاۖ إِنَّهُمْ جُندٌ مُّغْرَقُونَ
সমুদ্রকে স্থির থাকতে দাও, তারা এমন এক বাহিনী যারা নিমজ্জিত হবে।
25 – দুখান
كَمْ تَرَكُواۡ مِن جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
তারা পশ্চাতে রেখে গেল কত উদ্যান ও প্রস্রবণ,
26 – দুখান
وَزُرُوعٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ
কত শস্য ক্ষেত ও সুরম্য প্রাসাদ,
27 – দুখান
وَنَعْمَةٍ كَانُواۡ فِيهَا فَٰكِهِينَ
কত বিলাস উপকরণ, যা তাদেরকে আনন্দ দিত।
28 – দুখান
كَذَٰلِكَۖ وَأَوْرَثْنَٰهَا قَوْمًا ءَاخَرِينَ
এরূপই ঘটেছিল এবং আমি এই সমুদয়ের উত্তরাধিকারী করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে।
29 – দুখান
فَمَا بَكَتْ عَلَيْهِمُ ٱلسَّمَآءُ وَٱلْأَرْضُ وَمَا كَانُواۡ مُنظَرِينَ
আকাশ এবং পৃথিবীর কেহই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হয়নি।
30 – দুখান
وَلَقَدْ نَجَّيْنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ مِنَ ٱلْعَذَابِ ٱلْمُهِينِ
আমি উদ্ধার করেছিলাম বানী ইসরাঈলকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি হতে –
31 – দুখান
مِن فِرْعَوْنَۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَالِيًا مِّنَ ٱلْمُسْرِفِينَ
ফির‘আউনের; সে তো পরাক্রান্ত সীমালংঘনকারীদের মধ্যে।
32 – দুখান
وَلَقَدِ ٱخْتَرْنَٰهُمْ عَلَىٰ عِلْمٍ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ
আমি জেনে শুনেই তাদেরকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।
33 – দুখান
وَءَاتَيْنَٰهُم مِّنَ ٱلْءَايَٰتِ مَا فِيهِ بَلَٰٓؤٌاۡ مُّبِينٌ
এবং তাদেরকে দিয়েছিলাম নিদর্শনাবলী, যাতে ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা।
34 – দুখান
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ لَيَقُولُونَ
তারা বলেই থাকে –
35 – দুখান
إِنْ هِىَ إِلَّا مَوْتَتُنَا ٱلْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُنشَرِينَ
আমাদের প্রথম মৃত্যু ব্যতীত আর কিছুই নেই এবং আমরা আর পুনরুত্থিত হবনা।
36 – দুখান
فَأْتُواۡ بِـَٔابَآئِنَآ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
অতএব তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে উপস্থিত কর।
37 – দুখান
أَهُمْ خَيْرٌ أَمْ قَوْمُ تُبَّعٍ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ أَهْلَكْنَٰهُمْۖ إِنَّهُمْ كَانُواۡ مُجْرِمِينَ
শ্রেষ্ঠ কি তারা না তুব্বা সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছিলাম, অবশ্যই তারা ছিল অপরাধী।
38 – দুখান
وَمَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَٰعِبِينَ
আমি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত কোন কিছুই ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।
39 – দুখান
مَا خَلَقْنَٰهُمَآ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
আমি এ দু’টি অযথা সৃষ্টি করিনি, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা জানেনা।
40 – দুখান
إِنَّ يَوْمَ ٱلْفَصْلِ مِيقَٰتُهُمْ أَجْمَعِينَ
নিশ্চয়ই সকলের জন্য নির্ধারিত রয়েছে তাদের বিচার দিবস –
41 – দুখান
يَوْمَ لَا يُغْنِى مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْـًٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
যেদিন এক বন্ধু অপর বন্ধুর কোন কাজে আসবেনা এবং তারা সাহায্যও পাবেনা।
42 – দুখান
إِلَّا مَن رَّحِمَ ٱللَّهُۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ
তবে আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন তার কথা স্বতন্ত্র। তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
43 – দুখান
إِنَّ شَجَرَتَ ٱلزَّقُّومِ
নিশ্চয়ই যাক্কুম বৃক্ষ হবে –
44 – দুখান
طَعَامُ ٱلْأَثِيمِ
পাপীর খাদ্য।
45 – দুখান
كَٱلْمُهْلِ يَغْلِى فِى ٱلْبُطُونِ
গলিত তাম্রের মত; ওটা তার উদরে ফুটতে থাকবে –
46 – দুখান
كَغَلْىِ ٱلْحَمِيمِ
ফুটন্ত পানির মত।
47 – দুখান
خُذُوهُ فَٱعْتِلُوهُ إِلَىٰ سَوَآءِ ٱلْجَحِيمِ
(বলা হবে) তাকে ধর এবং টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে।
48 – দুখান
ثُمَّ صُبُّواۡ فَوْقَ رَأْسِهِۦ مِنْ عَذَابِ ٱلْحَمِيمِ
অতঃপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দিয়ে শাস্তি দাও।
49 – দুখান
ذُقْ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْكَرِيمُ
এবং বলা হবেঃ আস্বাদন কর, তুমিতো ছিলে সম্মানিত, অভিজাত।
50 – দুখান
إِنَّ هَٰذَا مَا كُنتُم بِهِۦ تَمْتَرُونَ
এটাতো ওটাই, যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করতে।
51 – দুখান
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى مَقَامٍ أَمِينٍ
মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে –
52 – দুখান
فِى جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
উদ্যান ও ঝর্ণার মাঝে।
53 – দুখান
يَلْبَسُونَ مِن سُندُسٍ وَإِسْتَبْرَقٍ مُّتَقَٰبِلِينَ
তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং তারা মুখোমুখী হয়ে বসবে।
54 – দুখান
كَذَٰلِكَ وَزَوَّجْنَٰهُم بِحُورٍ عِينٍ
এরূপই ঘটবে; তাদেরকে সঙ্গিনী দিব আয়তলোচনা হুর।
55 – দুখান
يَدْعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَٰكِهَةٍ ءَامِنِينَ
সেখানে তারা প্রশান্তচিত্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে।
56 – দুখান
لَا يَذُوقُونَ فِيهَا ٱلْمَوْتَ إِلَّا ٱلْمَوْتَةَ ٱلْأُولَىٰۖ وَوَقَىٰهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ
প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবেনা। তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন –
57 – দুখান
فَضْلًا مِّن رَّبِّكَۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
তোমার রাব্ব নিজ অনুগ্রহে। এটাইতো মহা সাফল্য।
58 – দুখান
فَإِنَّمَا يَسَّرْنَٰهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
আমি তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
59 – দুখান
فَٱرْتَقِبْ إِنَّهُم مُّرْتَقِبُونَ
সুতরাং তুমি প্রতীক্ষা কর, তারাওতো প্রতীক্ষমান।
45 নং সূরা – আল-জাসিয়া – اَلْجَاثِيَة
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 37
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
02 – জাসিয়া
تَنزِيلُ ٱلْكِتَٰبِ مِنَ ٱللَّهِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَكِيمِ
এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।
03 – জাসিয়া
إِنَّ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ لَءَايَٰتٍ لِّلْمُؤْمِنِينَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্য।
04 – জাসিয়া
وَفِى خَلْقِكُمْ وَمَا يَبُثُّ مِن دَآبَّةٍ ءَايَٰتٌ لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ
তোমাদের সৃষ্টিতে এবং জীবজন্তুর বিস্তারে নিদর্শন রয়েছে নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য।
05 – জাসিয়া
وَٱخْتِلَٰفِ ٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ وَمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن رِّزْقٍ فَأَحْيَا بِهِ ٱلْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَتَصْرِيفِ ٱلرِّيَٰحِ ءَايَٰتٌ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, আল্লাহ আকাশ হতে যে বারি বর্ষণ দ্বারা ধরিত্রীকে ওর মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে।
06 – জাসিয়া
تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱللَّهِ نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِٱلْحَقِّۖ فَبِأَىِّ حَدِيثٍۭ بَعْدَ ٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ يُؤْمِنُونَ
এগুলি আল্লাহর আয়াত যা আমি তোমার নিকট আবৃত্তি করছি যথাযথভাবে; সুতরাং আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতের পরিবর্তে তারা আর কোন্ বাণীতে বিশ্বাস করবে?
07 – জাসিয়া
وَيْلٌ لِّكُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ
দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর।
08 – জাসিয়া
يَسْمَعُ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ تُتْلَىٰ عَلَيْهِ ثُمَّ يُصِرُّ مُسْتَكْبِرًا كَأَن لَّمْ يَسْمَعْهَاۖ فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে, অথচ ঔদ্ধত্যের সাথে অটল থাকে যেন সে তা শোনেনি, তাকে সংবাদ দাও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির।
09 – জাসিয়া
وَإِذَا عَلِمَ مِنْ ءَايَٰتِنَا شَيْـًٔا ٱتَّخَذَهَا هُزُوًاۚ أُوۡلَٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন সে তা নিয়ে পরিহাস করে। তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
10 – জাসিয়া
مِّن وَرَآئِهِمْ جَهَنَّمُۖ وَلَا يُغْنِى عَنْهُم مَّا كَسَبُواۡ شَيْـًٔا وَلَا مَا ٱتَّخَذُواۡ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَوْلِيَآءَۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
তাদের পশ্চাতে রয়েছে জাহান্নাম; তাদের কৃতকর্ম তাদের কোন কাজে আসবেনা, তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে অভিভাবক স্থির করেছে তারাও নয়। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।
11 – জাসিয়া
هَٰذَا هُدًىۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِمْ لَهُمْ عَذَابٌ مِّن رِّجْزٍ أَلِيمٌ
কুরআন সৎ পথের দিশারী; যারা তাদের রবের নিদর্শনাবলী প্রত্যাখ্যান করে তাদের জন্য রয়েছে অতিশয় যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
12 – জাসিয়া
ٱللَّهُ ٱلَّذِى سَخَّرَ لَكُمُ ٱلْبَحْرَ لِتَجْرِىَ ٱلْفُلْكُ فِيهِ بِأَمْرِهِۦ وَلِتَبْتَغُواۡ مِن فَضْلِهِۦ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
আল্লাহই সমুদ্রকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তাঁর আদেশে তাতে নৌযানসমূহ চলাচল করতে পারে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পার ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।
13 – জাসিয়া
وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا مِّنْهُۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সব কিছু নিজ অনুগ্রহে। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন।
14 – জাসিয়া
قُل لِّلَّذِينَ ءَامَنُواۡ يَغْفِرُواۡ لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ ٱللَّهِ لِيَجْزِىَ قَوْمًۢا بِمَا كَانُواۡ يَكْسِبُونَ
মু’মিনদেরকে বলঃ তারা যেন ক্ষমা করে তাদেরকে যারা আল্লাহর দিনগুলির প্রত্যাশা করেনা, এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তার কৃতকর্মের জন্য প্রতিদান দিবেন।
15 – জাসিয়া
مَنْ عَمِلَ صَٰلِحًا فَلِنَفْسِهِۦۖ وَمَنْ أَسَآءَ فَعَلَيْهَاۖ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ
যে সৎ কাজ করে সে তার কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেহ মন্দ কাজ করলে ওর প্রতিফল সে’ই ভোগ করবে, অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।
16 – জাসিয়া
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحُكْمَ وَٱلنُّبُوَّةَ وَرَزَقْنَٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَفَضَّلْنَٰهُمْ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ
আমিতো বানী ইসরাঈলকে কিতাব, কর্তৃত্ব ও নবুওয়াত দান করেছিলাম এবং তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছিলাম এবং দিয়েছিলাম শ্রেষ্ঠত্ব বিশ্বজগতের উপর।
17 – জাসিয়া
وَءَاتَيْنَٰهُم بَيِّنَٰتٍ مِّنَ ٱلْأَمْرِۖ فَمَا ٱخْتَلَفُوٓاۡ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْۚ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِى بَيْنَهُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ فِيمَا كَانُواۡ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রমাণ দান করেছিলাম দীন সম্পর্কে। তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর তারা শুধু পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ বিরোধিতা করেছিল, তারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করত, তোমার রাব্ব কিয়ামাত দিবসে তাদের মধ্যে সেই বিষয়ের ফায়সালা করে দিবেন।
18 – জাসিয়া
ثُمَّ جَعَلْنَٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٍ مِّنَ ٱلْأَمْرِ فَٱتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ
এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দীনের বিশেষ বিধানের উপর। সুতরাং তুমি ওর অনুসরণ কর, অজ্ঞদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করনা।
19 – জাসিয়া
إِنَّهُمْ لَن يُغْنُواۡ عَنكَ مِنَ ٱللَّهِ شَيْـًٔاۚ وَإِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۖ وَٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلْمُتَّقِينَ
আল্লাহর মুকাবিলায় তারা তোমার কোন উপকার করতে পারবেনা; যালিমরা একে অপরের বন্ধু; আর আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু।
20 – জাসিয়া
هَٰذَا بَصَٰٓئِرُ لِلنَّاسِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ
এই কুরআন মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট দলীল এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রাহমাত।
21 – জাসিয়া
أَمْ حَسِبَ ٱلَّذِينَ ٱجْتَرَحُواۡ ٱلسَّيِّـَٔاتِ أَن نَّجْعَلَهُمْ كَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ سَوَآءً مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْۚ سَآءَ مَا يَحْكُمُونَ
দুস্কৃতিকারীরা কি মনে করে যে, আমি জীবন ও মৃত্যুর দিক দিয়ে তাদেরকে তাদের সমান গণ্য করব, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে? তাদের সিদ্ধান্ত কতই মন্দ!
22 – জাসিয়া
وَخَلَقَ ٱللَّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ وَلِتُجْزَىٰ كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে এবং যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার কাজ অনুযায়ী ফল পেতে পারে, আর তাদের প্রতি যুলম করা হবে না।
23 – জাসিয়া
أَفَرَءَيْتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمْعِهِۦ وَقَلْبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَٰوَةً فَمَن يَهْدِيهِ مِنۢ بَعْدِ ٱللَّهِۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
তুমি কি লক্ষ্য করছ তাকে, যে তার খেয়াল খুশীকে নিজের মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয় মোহর করে দিয়েছেন এবং তার চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব, কে তাকে পথ নির্দেশ করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা?
24 – জাসিয়া
وَقَالُواۡ مَا هِىَ إِلَّا حَيَاتُنَا ٱلدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَآ إِلَّا ٱلدَّهْرُۚ وَمَا لَهُم بِذَٰلِكَ مِنْ عِلْمٍۖ إِنْ هُمْ إِلَّا يَظُنُّونَ
তারা বলেঃ একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি ও বাঁচি, আর সময়ই (কাল) আমাদেরকে ধ্বংস করে। বস্তুতঃ এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারাতো শুধু মনগড়া কথা বলে।
25 – জাসিয়া
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُنَا بَيِّنَٰتٍ مَّا كَانَ حُجَّتَهُمْ إِلَّآ أَن قَالُواۡ ٱئْتُواۡ بِـَٔابَآئِنَآ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
তাদের নিকট যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হয় তখন তাদের কোন যুক্তি থাকেনা শুধু এই উক্তি ছাড়া যে, তোমরা সত্যবাদী হলে আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে উপস্থিত কর।
26 – জাসিয়া
قُلِ ٱللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَٰمَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
বলঃ আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন ও তোমাদের মৃত্যু ঘটান। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কিয়ামাত দিবসে একত্রিত করবেন যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানেনা।
27 – জাসিয়া
وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَيَوْمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ يَوْمَئِذٍ يَخْسَرُ ٱلْمُبْطِلُونَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই; যেদিন কিয়ামাত সংঘটিত হবে সেদিন মিথ্যাশ্রয়ীরা হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
28 – জাসিয়া
وَتَرَىٰ كُلَّ أُمَّةٍ جَاثِيَةًۚ كُلُّ أُمَّةٍ تُدْعَىٰٓ إِلَىٰ كِتَٰبِهَا ٱلْيَوْمَ تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়কে দেখবে ভয়ে নতজানু; প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তার আমলনামার প্রতি আহবান করা হবে, আজ তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে যা তোমরা করতে।
29 – জাসিয়া
هَٰذَا كِتَٰبُنَا يَنطِقُ عَلَيْكُم بِٱلْحَقِّۚ إِنَّا كُنَّا نَسْتَنسِخُ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
এই আমার লিপি, এটা তোমাদের বিরুদ্ধে সত্য সাক্ষ্য দিবে। তোমরা যা করতে তা আমি লিপিবদ্ধ করেছিলাম।
30 – জাসিয়া
فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِى رَحْمَتِهِۦۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْمُبِينُ
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, তাদের রাব্ব তাদেরকে দাখিল করবেন স্বীয় রাহমাতে। এটাই মহা সাফল্য।
31 – জাসিয়া
وَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاۡ أَفَلَمْ تَكُنْ ءَايَٰتِى تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱسْتَكْبَرْتُمْ وَكُنتُمْ قَوْمًا مُّجْرِمِينَ
পক্ষান্তরে যারা কুফরী করে তাদেরকে বলা হবেঃ তোমাদের নিকট কি আমার আয়াত পাঠ করা হয়নি? কিন্তু তোমরা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে এক অপরাধী সম্প্রদায়।
32 – জাসিয়া
وَإِذَا قِيلَ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّ وَٱلسَّاعَةُ لَا رَيْبَ فِيهَا قُلْتُم مَّا نَدْرِى مَا ٱلسَّاعَةُ إِن نَّظُنُّ إِلَّا ظَنًّا وَمَا نَحْنُ بِمُسْتَيْقِنِينَ
যখন বলা হয়ঃ আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামাত – এতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা বলে থাকঃ আমরা জানিনা কিয়ামাত কি; আমরা মনে করি এটা একটি ধারনা মাত্র এবং আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত নই।
33 – জাসিয়া
وَبَدَا لَهُمْ سَيِّـَٔاتُ مَا عَمِلُواۡ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُواۡ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
তাদের মন্দ কাজগুলি তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে।
34 – জাসিয়া
وَقِيلَ ٱلْيَوْمَ نَنسَىٰكُمْ كَمَا نَسِيتُمْ لِقَآءَ يَوْمِكُمْ هَٰذَا وَمَأْوَىٰكُمُ ٱلنَّارُ وَمَا لَكُم مِّن نَّٰصِرِينَ
আর বলা হবেঃ আজ আমি তোমাদেরকে বিস্মৃত হব যেমন তোমরা এই দিনের সাক্ষাৎকারকে বিস্মৃত হয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবেনা।
35 – জাসিয়া
ذَٰلِكُم بِأَنَّكُمُ ٱتَّخَذْتُمْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ هُزُوًا وَغَرَّتْكُمُ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَاۚ فَٱلْيَوْمَ لَا يُخْرَجُونَ مِنْهَا وَلَا هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ
এটা এ জন্য যে, তোমরা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে বিদ্রুপ করেছিলে এবং পার্থিব জীবন তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল। সুতরাং সেদিন তাদেরকে জাহান্নাম হতে বের করা হবেনা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টার সুযোগ দেয়া হবেনা।
36 – জাসিয়া
فَلِلَّهِ ٱلْحَمْدُ رَبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَرَبِّ ٱلْأَرْضِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আকাশমন্ডলীর রাব্ব, পৃথিবীর রাব্ব, জগতসমূহের রাব্ব।
37 – জাসিয়া
وَلَهُ ٱلْكِبْرِيَآءُ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে গৌরব গরিমা তাঁরই এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
46 নং সূরা – আল-আহকাফ – اَلْأَحْقَاف
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 35
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
02 – আহকাফ
تَنزِيلُ ٱلْكِتَٰبِ مِنَ ٱللَّهِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَكِيمِ
এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।
03 – আহকাফ
مَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَآ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَأَجَلٍ مُّسَمًّىۚ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ عَمَّآ أُنذِرُواۡ مُعْرِضُونَ
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত সব কিছুই আমি যথাযথভাবে নির্দিষ্ট কালের জন্য সৃষ্টি করেছি; কিন্তু কাফিরদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
04 – আহকাফ
قُلْ أَرَءَيْتُم مَّا تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَرُونِى مَاذَا خَلَقُواۡ مِنَ ٱلْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِۖ ٱئْتُونِى بِكِتَٰبٍ مِّن قَبْلِ هَٰذَآ أَوْ أَثَٰرَةٍ مِّنْ عِلْمٍ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
বলঃ তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও অথবা আকাশমন্ডলীতে তাদের কোন অংশীদারীত্ব আছে কি? পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরম্পরাগত কোন জ্ঞান থাকলে তা তোমরা আমার নিকট উপস্থিত কর – যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
05 – আহকাফ
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُواۡ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَن لَّا يَسْتَجِيبُ لَهُۥٓ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَٰمَةِ وَهُمْ عَن دُعَآئِهِمْ غَٰفِلُونَ
সেই ব্যক্তি অপেক্ষা বিভ্রান্ত কে যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা কিয়ামাতের দিন পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দিবেনা? এবং ওগুলি তাদের প্রার্থনা সম্বন্ধে অবহিত নয়।
06 – আহকাফ
وَإِذَا حُشِرَ ٱلنَّاسُ كَانُواۡ لَهُمْ أَعْدَآءً وَكَانُواۡ بِعِبَادَتِهِمْ كَٰفِرِينَ
যখন কিয়ামাত দিবসে মানুষকে একত্রিত করা হবে তখন ঐগুলো হবে তাদের শত্রু, ঐগুলো তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে।
07 – আহকাফ
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُنَا بَيِّنَٰتٍ قَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لِلْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হয় এবং তাদের নিকট সত্য উপস্থিত হয় তখন কাফিরেরা বলেঃ এটাতো সুস্পষ্ট যাদু।
08 – আহকাফ
أَمْ يَقُولُونَ ٱفْتَرَىٰهُۖ قُلْ إِنِ ٱفْتَرَيْتُهُۥ فَلَا تَمْلِكُونَ لِى مِنَ ٱللَّهِ شَيْـًٔاۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَا تُفِيضُونَ فِيهِۖ كَفَىٰ بِهِۦ شَهِيدًۢا بَيْنِى وَبَيْنَكُمْۖ وَهُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
তারা কি তাহলে বলে যে, সে এটা উদ্ভাবন করেছে? বলঃ যদি আমি উদ্ভাবন করে থাকি তাহলে তোমরা আল্লাহর শাস্তি হতে আমাকে কিছুতেই রক্ষা করতে পারবেনা। তোমরা যে বিষয়ে আলোচনায় লিপ্ত আছ সেই সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে তিনিই যথেষ্ট এবং তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
09 – আহকাফ
قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنَ ٱلرُّسُلِ وَمَآ أَدْرِى مَا يُفْعَلُ بِى وَلَا بِكُمْۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّ وَمَآ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বলঃ আমি এমন কোন প্রথম ও নতুন নাবী নই। আমি জানিনা, আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কি করা হবে; আমি আমার প্রতি যা অহী করা হয় শুধু তারই অনুসরণ করি। আমি এক স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
10 – আহকাফ
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ وَكَفَرْتُم بِهِۦ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنۢ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ مِثْلِهِۦ فَـَٔامَنَ وَٱسْتَكْبَرْتُمْۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি যে, এই কুরআন আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ হয়ে থাকে, আর তোমরা এতে অবিশ্বাস কর, উপরন্ত বানী ইসরাঈলের একজন এর অনুরূপ সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়ে এতে বিশ্বাস স্থাপন করল অথচ তোমরা কর ঔদ্ধত্য প্রকাশ, তাহলে তোমাদের পরিণাম কি হবে? আল্লাহ যালিমদেরকে সৎ পথে চালিত করেননা।
11 – আহকাফ
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لِلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَوْ كَانَ خَيْرًا مَّا سَبَقُونَآ إِلَيْهِۚ وَإِذْ لَمْ يَهْتَدُواۡ بِهِۦ فَسَيَقُولُونَ هَٰذَآ إِفْكٌ قَدِيمٌ
মু’মিনদের সম্পর্কে কাফিরেরা বলেঃ এটা ভাল হলে তারা এর দিকে আমাদের চেয়ে অগ্রগামী হতনা। তারা এর দ্বারা পরিচালিত নয় বলে, বলেঃ এটাতো এক পুরাতন মিথ্যা।
12 – আহকাফ
وَمِن قَبْلِهِۦ كِتَٰبُ مُوسَىٰٓ إِمَامًا وَرَحْمَةًۚ وَهَٰذَا كِتَٰبٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِيًّا لِّيُنذِرَ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواۡ وَبُشْرَىٰ لِلْمُحْسِنِينَ
এর পূর্বে ছিল মূসার কিতাব – আদর্শ ও অনুগ্রহ স্বরূপ এই কিতাব – এর সমর্থক, আরাবী ভাষায়, যেন এটা যালিমদেরকে সতর্ক করে এবং যারা সৎ কাজ করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয়।
13 – আহকাফ
إِنَّ ٱلَّذِينَ قَالُواۡ رَبُّنَا ٱللَّهُ ثُمَّ ٱسْتَقَٰمُواۡ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
যারা বলেঃ আমাদের রাব্বতো আল্লাহ এবং এই বিশ্বাসে অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবেনা।
14 – আহকাফ
أُوۡلَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ خَٰلِدِينَ فِيهَا جَزَآءًۢ بِمَا كَانُواۡ يَعْمَلُونَ
এরাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে এরা স্থায়ী হবে, এটাই তাদের কর্মফল।
15 – আহকাফ
وَوَصَّيْنَا ٱلْإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيْهِ إِحْسَٰنًاۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُۥ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًاۖ وَحَمْلُهُۥ وَفِصَٰلُهُۥ ثَلَٰثُونَ شَهْرًاۚ حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُۥ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِىٓ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ ٱلَّتِىٓ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ وَعَلَىٰ وَٰلِدَىَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَٰلِحًا تَرْضَىٰهُ وَأَصْلِحْ لِى فِى ذُرِّيَّتِىٓۖ إِنِّى تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّى مِنَ ٱلْمُسْلِمِينَ
আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে এবং প্রসব করে কষ্টের সাথে, তার গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময়কাল ত্রিশ মাস, ক্রমে সে পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হওয়ার পর বলেঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন; আমার জন্য আমার সন্তান সন্ততিদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন, আমি আপনারই অভিমুখী হলাম এবং আত্মসমর্পণ করলাম।
16 – আহকাফ
أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُواۡ وَنَتَجَاوَزُ عَن سَيِّـَٔاتِهِمْ فِىٓ أَصْحَٰبِ ٱلْجَنَّةِۖ وَعْدَ ٱلصِّدْقِ ٱلَّذِى كَانُواۡ يُوعَدُونَ
আমি এদের সৎকাজগুলি গ্রহণ করে থাকি এবং মন্দ কাজগুলি ক্ষমা করি, তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। এদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হবে।
17 – আহকাফ
وَٱلَّذِى قَالَ لِوَٰلِدَيْهِ أُفٍّ لَّكُمَآ أَتَعِدَانِنِىٓ أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتِ ٱلْقُرُونُ مِن قَبْلِى وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ ٱللَّهَ وَيْلَكَ ءَامِنْ إِنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّ فَيَقُولُ مَا هَٰذَآ إِلَّآ أَسَٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ
আর এমন লোক আছে, যে তার মাতা-পিতাকে বলেঃ আফসোস তোমাদের জন্য। তোমরা কি আমাকে এ ভয় দেখাতে চাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব যদিও আমার পূর্বে বহু পুরুষ গত হয়েছে! তখন তার মাতা-পিতা আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করে বলেঃ দুর্ভোগ তোমার জন্য! বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য। কিন্তু সে বলেঃ এটাতো অতীত কালের উপকথা ব্যতীত কিছুই নয়।
18 – আহকাফ
أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ ٱلْقَوْلُ فِىٓ أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِم مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِۖ إِنَّهُمْ كَانُواۡ خَٰسِرِينَ
এদের পূর্বে যে জিন ও মানুষ সম্প্রদায় গত হয়েছে তাদের মত এদের প্রতিও আল্লাহর উক্তি সত্য হয়েছে। এরাই ক্ষতিগ্রস্ত।
19 – আহকাফ
وَلِكُلٍّ دَرَجَٰتٌ مِّمَّا عَمِلُواۡۖ وَلِيُوَفِّيَهُمْ أَعْمَٰلَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
প্রত্যেকের মর্যাদা তার কাজ অনুযায়ী; এটা এ জন্য যে, আল্লাহ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং তার প্রতি অবিচার করা হবেনা।
20 – আহকাফ
وَيَوْمَ يُعْرَضُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ عَلَى ٱلنَّارِ أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَٰتِكُمْ فِى حَيَاتِكُمُ ٱلدُّنْيَا وَٱسْتَمْتَعْتُم بِهَا فَٱلْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ ٱلْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَفْسُقُونَ
যেদিন কাফিরদেরকে জাহান্নামের সন্নিকটে উপস্থিত করা হবে সেদিন তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরাতো পার্থিব জীবনে সুখ-সম্ভোগ ভোগ করে নিঃশেষ করেছ, সুতরাং আজ তোমাদেরকে দেয়া হবে অবমাননাকর শাস্তি; কারণ তোমরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে সত্যদ্রোহী।
21 – আহকাফ
وَٱذْكُرْ أَخَا عَادٍ إِذْ أَنذَرَ قَوْمَهُۥ بِٱلْأَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتِ ٱلنُّذُرُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦٓ أَلَّا تَعْبُدُوٓاۡ إِلَّا ٱللَّهَ إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
স্মরণ কর, ‘আদ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা, যার পূর্বে এবং পরেও সতর্ককারী এসেছিল, সে তার আহকাফবাসী সম্প্রদায়কে বালুকাময় উচ্চ উপত্যকায় সতর্ক করেছিল এই বলেঃ আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত করনা। আমি তোমাদের জন্য মহাদিনের শাস্তির আশংকা করছি।
22 – আহকাফ
قَالُوٓاۡ أَجِئْتَنَا لِتَأْفِكَنَا عَنْ ءَالِهَتِنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদেরকে আমাদের দেব দেবীগুলির পূজা হতে নিবৃত্ত করতে এসেছ? তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যার ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ণ কর।
23 – আহকাফ
قَالَ إِنَّمَا ٱلْعِلْمُ عِندَ ٱللَّهِ وَأُبَلِّغُكُم مَّآ أُرْسِلْتُ بِهِۦ وَلَٰكِنِّىٓ أَرَىٰكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ
সে বললঃ এর জ্ঞানতো শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে; আমি যা সহ প্রেরিত হয়েছি শুধু তা’ই তোমাদের নিকট প্রচার করি, কিন্তু আমি দেখছি, তোমরা এক মূঢ় সম্প্রদায়।
24 – আহকাফ
فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُواۡ هَٰذَا عَارِضٌ مُّمْطِرُنَاۚ بَلْ هُوَ مَا ٱسْتَعْجَلْتُم بِهِۦۖ رِيحٌ فِيهَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখল তখন তারা বলতে লাগলঃ ওটাতো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবে। হুদ বললঃ এটাইতো ওটা যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছ, এতে রয়েছে এক ঝড়-মর্মন্তদ শাস্তি বহনকারী।
25 – আহকাফ
تُدَمِّرُ كُلَّ شَىْءٍۭ بِأَمْرِ رَبِّهَا فَأَصْبَحُواۡ لَا يُرَىٰٓ إِلَّا مَسَٰكِنُهُمْۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْقَوْمَ ٱلْمُجْرِمِينَ
আল্লাহর নির্দেশে এটা সব কিছুকে ধ্বংস করে দিবে। অতঃপর তাদের পরিণাম এই হল যে, তাদের বসতিগুলি ছাড়া আর কিছুই রইলনা। এভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়ে থাকি।
26 – আহকাফ
وَلَقَدْ مَكَّنَّٰهُمْ فِيمَآ إِن مَّكَّنَّٰكُمْ فِيهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَأَبْصَٰرًا وَأَفْـِٔدَةً فَمَآ أَغْنَىٰ عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَلَآ أَبْصَٰرُهُمْ وَلَآ أَفْـِٔدَتُهُم مِّن شَىْءٍ إِذْ كَانُواۡ يَجْحَدُونَ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُواۡ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ
আমি তাদেরকে যে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলাম, তোমাদেরকে তা দেইনি; আমি তাদেরকে দিয়েছিলাম কান, চোখ ও হৃদয়; কিন্তু ঐ কান, চোখ ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসেনি; কেননা তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা’ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল।
27 – আহকাফ
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُم مِّنَ ٱلْقُرَىٰ وَصَرَّفْنَا ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
আমিতো ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চতুস্পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ; আমি তাদেরকে বিভিন্নভাবে আমার নিদর্শনাবলী বিবৃত করেছিলাম, যাতে তারা ফিরে আসে সৎ পথে।
28 – আহকাফ
فَلَوْلَا نَصَرَهُمُ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواۡ مِن دُونِ ٱللَّهِ قُرْبَانًا ءَالِهَةًۢۖ بَلْ ضَلُّواۡ عَنْهُمْۚ وَذَٰلِكَ إِفْكُهُمْ وَمَا كَانُواۡ يَفْتَرُونَ
তারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করেছিল তারা তাদেরকে সাহায্য করলনা কেন? বস্তুতঃ তাদের মা‘বূদগুলি তাদের নিকট হতে অন্তর্হিত হয়ে পড়ল। তাদের মিথ্যা ও অলীক উদ্ভাবনের পরিণাম এরূপই।
29 – আহকাফ
وَإِذْ صَرَفْنَآ إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ ٱلْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ ٱلْقُرْءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاۡ أَنصِتُواۡۖ فَلَمَّا قُضِىَ وَلَّوْاۡ إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ
স্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জিনকে, যারা কুরআন পাঠ শুনছিল, যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হল; তারা একে অপরকে বলতে লাগলঃ চুপ করে শ্রবণ কর। যখন কুরআন পাঠ সমাপ্ত হল তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল সতর্ককারীরূপে।
30 – আহকাফ
قَالُواۡ يَٰقَوْمَنَآ إِنَّا سَمِعْنَا كِتَٰبًا أُنزِلَ مِنۢ بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِىٓ إِلَى ٱلْحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ
তারা বলেছিলঃ হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক কিতাব পাঠ শ্রবণ করেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মূসার পরে, এটা তার পূর্ববর্তী কিতাবকে সমর্থন করে এবং সত্য ও সরল পথের দিকে পরিচালিত করে।
31 – আহকাফ
يَٰقَوْمَنَآ أَجِيبُواۡ دَاعِىَ ٱللَّهِ وَءَامِنُواۡ بِهِۦ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে তোমাদেরকে রক্ষা করবেন।
32 – আহকাফ
وَمَن لَّا يُجِبْ دَاعِىَ ٱللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُۥ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءُۚ أُوۡلَٰٓئِكَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
যদি কেহ আল্লাহর দিকে আহবানকারীর ডাকে সাড়া না দেয় তাহলে সে পৃথিবীতে আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যর্থ করতে পারবেনা এবং আল্লাহ ছাড়া তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। তারাতো সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
33 – আহকাফ
أَوَلَمْ يَرَوْاۡ أَنَّ ٱللَّهَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَلَمْ يَعْىَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَٰدِرٍ عَلَىٰٓ أَن يُحْۦِىَ ٱلْمَوْتَىٰۚ بَلَىٰٓ إِنَّهُۥ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
তারা কি দেখেনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ সবের সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তি বোধ করেননি? তিনি মৃতকে জীবন দান করতেও সক্ষম। নিশ্চয়ই তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
34 – আহকাফ
وَيَوْمَ يُعْرَضُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ عَلَى ٱلنَّارِ أَلَيْسَ هَٰذَا بِٱلْحَقِّۖ قَالُواۡ بَلَىٰ وَرَبِّنَاۚ قَالَ فَذُوقُواۡ ٱلْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
যেদিন কাফিরদেরকে উপস্থিত করা হবে জাহান্নামের নিকট, সেদিন তাদেরকে বলা হবেঃ এটা কি সত্য নয়? তারা বলবেঃ আমাদের রবের শপথ! এটা সত্য। তখন তাদেরকে বলা হবেঃ শাস্তি আস্বাদান কর। কারণ তোমরা ছিলে সত্য প্রত্যাখ্যানকারী।
35 – আহকাফ
فَٱصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُوۡلُواۡ ٱلْعَزْمِ مِنَ ٱلرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِل لَّهُمْۚ كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوعَدُونَ لَمْ يَلْبَثُوٓاۡ إِلَّا سَاعَةً مِّن نَّهَارٍۭۚ بَلَٰغٌۚ فَهَلْ يُهْلَكُ إِلَّا ٱلْقَوْمُ ٱلْفَٰسِقُونَ
অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর যেমন করেছিল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ এবং তাদের জন্য (শাস্তির) প্রার্থনায় তড়িঘড়ি করনা। তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা যেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে সেদিন তাদের মনে হবে, তারা যেন দিনের এক দন্ডের বেশি পৃথিবীতে অবস্থান করেনি। এটা এক স্পষ্ট ঘোষণা, আল্লাহ হতে বিমুখ সম্প্রদায় ব্যতীত কেহকেও ধ্বংস করা হবেনা।
47 নং সূরা – মুহাম্মাদ – مُحَمَّد
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 38
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – মুহাম্মাদ
ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَصَدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ أَضَلَّ أَعْمَٰلَهُمْ
যারা কুফরী করে এবং অপরকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করে দেন।
02 – মুহাম্মাদ
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَءَامَنُواۡ بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَهُوَ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْۙ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ
যারা ঈমান আনে, সৎ কাজ করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই (কুরআন) তাদের রাব্ব হতে সত্য; তিনি তাদের মন্দ কাজগুলি ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন।
03 – মুহাম্মাদ
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ ٱتَّبَعُواۡ ٱلْبَٰطِلَ وَأَنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱتَّبَعُواۡ ٱلْحَقَّ مِن رَّبِّهِمْۚ كَذَٰلِكَ يَضْرِبُ ٱللَّهُ لِلنَّاسِ أَمْثَٰلَهُمْ
এটা এ জন্য যে, যারা কুফরী করে তারা মিথ্যার অনুসরণ করে এবং যারা ঈমান আনে তারা তাদের রাব্ব হতে প্রেরিত সত্যেরই অনুসরণ করে। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
04 – মুহাম্মাদ
فَإِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ فَضَرْبَ ٱلرِّقَابِ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَثْخَنتُمُوهُمْ فَشُدُّواۡ ٱلْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّۢا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَآءً حَتَّىٰ تَضَعَ ٱلْحَرْبُ أَوْزَارَهَاۚ ذَٰلِكَ وَلَوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ لَٱنتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَٰكِن لِّيَبْلُوَاۡ بَعْضَكُم بِبَعْضٍۗ وَٱلَّذِينَ قُتِلُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَلَن يُضِلَّ أَعْمَٰلَهُمْ
অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে মুকাবিলা কর তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর, পরিশেষে যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে পরাভূত করবে তখন তাদেরকে কষে বাঁধবে; অতঃপর হয় অনুকম্পা, না হয় মুক্তিপণ। তোমরা জিহাদ চালাবে যতক্ষণ না ওরা অস্ত্র নামিয়ে ফেলে। এটাই বিধান। এটা এ জন্য যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তি দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে অপরদের দ্বারা পরীক্ষা করতে। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনও তাদের আমল বিনষ্ট হতে দেননা।
05 – মুহাম্মাদ
سَيَهْدِيهِمْ وَيُصْلِحُ بَالَهُمْ
তিনি তাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দিবেন।
06 – মুহাম্মাদ
وَيُدْخِلُهُمُ ٱلْجَنَّةَ عَرَّفَهَا لَهُمْ
তিনি তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার কথা তিনি তাদেরকে জানিয়েছিলেন।
07 – মুহাম্মাদ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِن تَنصُرُواۡ ٱللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ
হে মু’মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান দৃঢ় করবেন।
08 – মুহাম্মাদ
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ فَتَعْسًا لَّهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَٰلَهُمْ
যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ এবং তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করে দিবেন।
09 – মুহাম্মাদ
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُواۡ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَٰلَهُمْ
এটা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাদের কাজ নিস্ফল করে দিবেন।
10 – মুহাম্মাদ
أَفَلَمْ يَسِيرُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُواۡ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ دَمَّرَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْۖ وَلِلْكَٰفِرِينَ أَمْثَٰلُهَا
তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং দেখেনি তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল? আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করেছেন এবং কাফিরদের জন্য রয়েছে অনুরূপ পরিণাম।
11 – মুহাম্মাদ
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ مَوْلَى ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَأَنَّ ٱلْكَٰفِرِينَ لَا مَوْلَىٰ لَهُمْ
এটা এ জন্য যে, আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক এবং কাফিরদের কোন অভিভাবক নেই।
12 – মুহাম্মাদ
إِنَّ ٱللَّهَ يُدْخِلُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ ٱلْأَنْعَٰمُ وَٱلنَّارُ مَثْوًى لَّهُمْ
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; কিন্তু যারা কুফরী করে তারা ভোগ বিলাসে লিপ্ত থাকে এবং জন্তু-জানোয়ারের মত উদর পূর্তি করে; তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম।
13 – মুহাম্মাদ
وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ هِىَ أَشَدُّ قُوَّةً مِّن قَرْيَتِكَ ٱلَّتِىٓ أَخْرَجَتْكَ أَهْلَكْنَٰهُمْ فَلَا نَاصِرَ لَهُمْ
তারা যে জনপদ হতে তোমাকে বিতাড়িত করেছে তা অপেক্ষা অতি শক্তিশালী কত জনপদ ছিল; আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে সাহায্য করার কেহ ছিলনা।
14 – মুহাম্মাদ
أَفَمَن كَانَ عَلَىٰ بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّهِۦ كَمَن زُيِّنَ لَهُۥ سُوٓءُ عَمَلِهِۦ وَٱتَّبَعُوٓاۡ أَهْوَآءَهُم
যে ব্যক্তি তার রাব্ব হতে প্রেরিত সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত সে কি তার ন্যায় যার নিকট নিজের মন্দ কাজগুলি শোভন প্রতীয়মান হয় এবং যারা নিজ খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে?
15 – মুহাম্মাদ
مَّثَلُ ٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى وُعِدَ ٱلْمُتَّقُونَۖ فِيهَآ أَنْهَٰرٌ مِّن مَّآءٍ غَيْرِ ءَاسِنٍ وَأَنْهَٰرٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُۥ وَأَنْهَٰرٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّٰرِبِينَ وَأَنْهَٰرٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّىۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْۖ كَمَنْ هُوَ خَٰلِدٌ فِى ٱلنَّارِ وَسُقُواۡ مَآءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَآءَهُمْ
মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্তঃ ওতে আছে নির্মল পানির নহর; আছে দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। সেখানে তাদের জন্য থাকবে বিবিধ ফলসমূহ ও তাদের রবের ক্ষমা। মুত্তাকীরা কি তাদের ন্যায় যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভুড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিবে?
16 – মুহাম্মাদ
وَمِنْهُم مَّن يَسْتَمِعُ إِلَيْكَ حَتَّىٰٓ إِذَا خَرَجُواۡ مِنْ عِندِكَ قَالُواۡ لِلَّذِينَ أُوتُواۡ ٱلْعِلْمَ مَاذَا قَالَ ءَانِفًاۚ أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ طَبَعَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ وَٱتَّبَعُوٓاۡ أَهْوَآءَهُمْ
তাদের মধ্যে কতক তোমার কথা শ্রবণ করে, অতঃপর তোমার নিকট হতে বের হয়ে যারা জ্ঞানবান তাদেরকে বলেঃ এই মাত্র সে কি বলল? এদের অন্তরের উপর আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের খেয়াল খুশীরই অনুসরণ করে।
17 – মুহাম্মাদ
وَٱلَّذِينَ ٱهْتَدَوْاۡ زَادَهُمْ هُدًى وَءَاتَىٰهُمْ تَقْوَىٰهُمْ
যারা সৎ পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং তাদেরকে মুত্তাকী হবার শক্তি দান করেন।
18 – মুহাম্মাদ
فَهَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ أَن تَأْتِيَهُم بَغْتَةًۖ فَقَدْ جَآءَ أَشْرَاطُهَاۚ فَأَنَّىٰ لَهُمْ إِذَا جَآءَتْهُمْ ذِكْرَىٰهُمْ
তারা কি শুধু এ জন্য অপেক্ষা করছে যে, কিয়ামাত তাদের নিকট এসে পড়ূক আকস্মিক ভাবে? কিয়ামাতের লক্ষণসমূহতো এসেই পড়েছে! কিয়ামাত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?
19 – মুহাম্মাদ
فَٱعْلَمْ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ وَٱسْتَغْفِرْ لِذَنۢبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَىٰكُمْ
সুতরাং জেনে রেখ, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; ক্ষমা প্রার্থনা কর তোমার এবং মু’মিন নর নারীদের ত্রুটির জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং অবস্থান সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন।
20 – মুহাম্মাদ
وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَوْلَا نُزِّلَتْ سُورَةٌۖ فَإِذَآ أُنزِلَتْ سُورَةٌ مُّحْكَمَةٌ وَذُكِرَ فِيهَا ٱلْقِتَالُۙ رَأَيْتَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ نَظَرَ ٱلْمَغْشِىِّ عَلَيْهِ مِنَ ٱلْمَوْتِۖ فَأَوْلَىٰ لَهُمْ
মু’মিনরা বলেঃ একটি সূরা অবতীর্ণ হয় না কেন? অতঃপর যদি সুস্পষ্ট মর্ম বিশিষ্ট কোন সূরা অবতীর্ণ হয় এবং তাতে জিহাদের কোন নির্দেশ থাকে তাহলে তুমি দেখবে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা মৃত্যুভয়ে বিহবল মানুষের মত তোমার দিকে তাকাচ্ছে। শোচনীয় পরিণাম ওদের।
21 – মুহাম্মাদ
طَاعَةٌ وَقَوْلٌ مَّعْرُوفٌۚ فَإِذَا عَزَمَ ٱلْأَمْرُ فَلَوْ صَدَقُواۡ ٱللَّهَ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ
আনুগত্য ও ন্যায় সঙ্গত বাক্য ওদের জন্য উত্তম ছিল; সুতরাং জিহাদের সিদ্ধান্ত হলে যদি তারা আল্লাহর প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার পূরণ করত তাহলে তাদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হত।
22 – মুহাম্মাদ
فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِن تَوَلَّيْتُمْ أَن تُفْسِدُواۡ فِى ٱلْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوٓاۡ أَرْحَامَكُمْ
ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে।
23 – মুহাম্মাদ
أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَىٰٓ أَبْصَٰرَهُمْ
আল্লাহ এদেরকেই করেন অভিশপ্ত, আর করেন বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন।
24 – মুহাম্মাদ
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلْقُرْءَانَ أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقْفَالُهَآ
তাহলে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা করেনা? তাদের অন্তর তালাবদ্ধ –
25 – মুহাম্মাদ
إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱرْتَدُّواۡ عَلَىٰٓ أَدْبَٰرِهِم مِّنۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ ٱلْهُدَىۙ ٱلشَّيْطَٰنُ سَوَّلَ لَهُمْ وَأَمْلَىٰ لَهُمْ
যারা নিজেদের নিকট সৎ পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তা পরিত্যাগ করে, শাইতান তাদের কাজকে শোভন করে দেখায় এবং তাদের মিথ্যা আশ্বাস দেয়।
26 – মুহাম্মাদ
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواۡ لِلَّذِينَ كَرِهُواۡ مَا نَزَّلَ ٱللَّهُ سَنُطِيعُكُمْ فِى بَعْضِ ٱلْأَمْرِۖ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ إِسْرَارَهُمْ
এটা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা যারা অপছন্দ করে তাদেরকে তারা বলেঃ আমরা কোন্ কোন্ বিষয়ে তোমাদের আনুগত্য করব? আল্লাহ তাদের গোপন অভিসন্ধি অবগত আছেন।
27 – মুহাম্মাদ
فَكَيْفَ إِذَا تَوَفَّتْهُمُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَٰرَهُمْ
মালাইকা/ফেরেশতারা যখন তাদের মুখমন্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে প্রাণ হরণ করবে তখন তাদের দশা কেমন হবে!
28 – মুহাম্মাদ
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ ٱتَّبَعُواۡ مَآ أَسْخَطَ ٱللَّهَ وَكَرِهُواۡ رِضْوَٰنَهُۥ فَأَحْبَطَ أَعْمَٰلَهُمْ
এটা এ জন্য যে, যাতে আল্লাহর অসন্তোষ জন্মায় তারা তার অনুসরণ করে এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের প্রয়াসকে অপ্রিয় গণ্য করে; তিনি তাদের কাজ নিষ্ফল করে দেন।
29 – মুহাম্মাদ
أَمْ حَسِبَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَن لَّن يُخْرِجَ ٱللَّهُ أَضْغَٰنَهُمْ
যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা কি মনে করে যে, আল্লাহ তাদের বিদ্বেষ ভাব প্রকাশ করে দিবেননা?
30 – মুহাম্মাদ
وَلَوْ نَشَآءُ لَأَرَيْنَٰكَهُمْ فَلَعَرَفْتَهُم بِسِيمَٰهُمْۚ وَلَتَعْرِفَنَّهُمْ فِى لَحْنِ ٱلْقَوْلِۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ أَعْمَٰلَكُمْ
আমি ইচ্ছা করলে তোমাকে তাদের পরিচয় দিতাম। ফলে তুমি তাদের লক্ষণ দেখে তাদেরকে চিনতে পারতে, তুমি অবশ্যই কথার ভঙ্গিতে তাদেরকে চিনতে পারবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ সম্পর্কে অবগত।
31 – মুহাম্মাদ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ نَعْلَمَ ٱلْمُجَٰهِدِينَ مِنكُمْ وَٱلصَّٰبِرِينَ وَنَبْلُوَاۡ أَخْبَارَكُمْ
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমি জেনে নেই তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কার্যাবলী পরীক্ষা করি।
32 – মুহাম্মাদ
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَصَدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَشَآقُّواۡ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ ٱلْهُدَىٰ لَن يَضُرُّواۡ ٱللَّهَ شَيْـًٔا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَٰلَهُمْ
যারা কুফরী করে এবং মানুষকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে এবং নিজেদের নিকট পথের দিশা ব্যক্ত হওয়ার পর রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করবেন।
33 – মুহাম্মাদ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ أَطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواۡ ٱلرَّسُولَ وَلَا تُبْطِلُوٓاۡ أَعْمَٰلَكُمْ
হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের কর্মফল বিনষ্ট করনা।
34 – মুহাম্মাদ
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَصَدُّواۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ ثُمَّ مَاتُواۡ وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ لَهُمْ
যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে, আল্লাহ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না।
35 – মুহাম্মাদ
فَلَا تَهِنُواۡ وَتَدْعُوٓاۡ إِلَى ٱلسَّلْمِ وَأَنتُمُ ٱلْأَعْلَوْنَ وَٱللَّهُ مَعَكُمْ وَلَن يَتِرَكُمْ أَعْمَٰلَكُمْ
সুতরাং তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির প্রস্তাব করনা, তোমরাই প্রবল; আল্লাহ তোমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি তোমাদের কর্মফল কখনও ক্ষুন্ন করবেন না।
36 – মুহাম্মাদ
إِنَّمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌۚ وَإِن تُؤْمِنُواۡ وَتَتَّقُواۡ يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا يَسْـَٔلْكُمْ أَمْوَٰلَكُمْ
পার্থিব জীবনতো শুধু ক্রীড়া-কৌতুক। যদি তোমরা ঈমান আন ও তাকওয়া অবলম্বন কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের পুরস্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদের ধন সম্পদ চাননা।
37 – মুহাম্মাদ
إِن يَسْـَٔلْكُمُوهَا فَيُحْفِكُمْ تَبْخَلُواۡ وَيُخْرِجْ أَضْغَٰنَكُمْ
তোমাদের নিকট হতে তিনি তা চাইলে এবং তজ্জন্য তোমাদের উপর চাপ দিলে তোমরাতো কার্পন্য করবে, এবং তিনি তোমাদের মনের সংকীর্ণতা প্রকাশ করে দিবেন।
38 – মুহাম্মাদ
هَٰٓأَنتُمْ هَٰٓؤُلَآءِ تُدْعَوْنَ لِتُنفِقُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ فَمِنكُم مَّن يَبْخَلُۖ وَمَن يَبْخَلْ فَإِنَّمَا يَبْخَلُ عَن نَّفْسِهِۦۚ وَٱللَّهُ ٱلْغَنِىُّ وَأَنتُمُ ٱلْفُقَرَآءُۚ وَإِن تَتَوَلَّوْاۡ يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوٓاۡ أَمْثَٰلَكُم
দেখ, তোমরাইতো তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারাতো কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারা তোমাদের মত হবেনা।
48 নং সূরা – আল-ফাত্হ – اَلْفَتْح
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 29
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – ফাত্হ
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا
নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়।
02 – ফাত্হ
لِّيَغْفِرَ لَكَ ٱللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنۢبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُۥ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَٰطًا مُّسْتَقِيمًا
যেন আল্লাহ তোমার অতীত ও ভবিষ্যৎ ত্রুটিসমূহ মার্জনা করেন এবং তোমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেন ও তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
03 – ফাত্হ
وَيَنصُرَكَ ٱللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا
এবং তোমাকে আল্লাহ বলিষ্ঠ সাহায্য দান করেন।
04 – ফাত্হ
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ فِى قُلُوبِ ٱلْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوٓاۡ إِيمَٰنًا مَّعَ إِيمَٰنِهِمْۗ وَلِلَّهِ جُنُودُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
তিনিই মু’মিনদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন যেন তারা তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি করে নেয়; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
05 – ফাত্হ
لِّيُدْخِلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عِندَ ٱللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا
এটা এ জন্য যে, তিনি মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন মহিলাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তিনি তাদের পাপ মোচন করবেন; এটাই আল্লাহর দৃষ্টিতে মহা সাফল্য।
06 – ফাত্হ
وَيُعَذِّبَ ٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتِ وَٱلْمُشْرِكِينَ وَٱلْمُشْرِكَٰتِ ٱلظَّآنِّينَ بِٱللَّهِ ظَنَّ ٱلسَّوْءِۚ عَلَيْهِمْ دَآئِرَةُ ٱلسَّوْءِۖ وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلَعَنَهُمْ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتْ مَصِيرًا
এবং মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক মহিলা, মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক মহিলা, যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পোষণ করে তাদেরকে শাস্তি দিবেন। অমঙ্গল চক্র তাদের জন্য, আল্লাহ তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন এবং তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন; ওটা কত নিকৃষ্ট আবাস!
07 – ফাত্হ
وَلِلَّهِ جُنُودُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
আল্লাহরই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ এবং আল্লাহই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
08 – ফাত্হ
إِنَّآ أَرْسَلْنَٰكَ شَٰهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে।
09 – ফাত্হ
لِّتُؤْمِنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
যাতে তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলকে সাহায্য কর ও সম্মান কর; সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
10 – ফাত্হ
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ ٱللَّهَ يَدُ ٱللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِۦۖ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَٰهَدَ عَلَيْهُ ٱللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا
যারা তোমার বাইআত গ্রহণ করে তারাতো আল্লাহরই বাইআত গ্রহণ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। সুতরাং যে ওটা ভঙ্গ করে, ওটা ভঙ্গ করার পরিনাম তারই এবং যে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে তিনি তাকে মহা পুরস্কার দেন।
11 – ফাত্হ
سَيَقُولُ لَكَ ٱلْمُخَلَّفُونَ مِنَ ٱلْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَآ أَمْوَٰلُنَا وَأَهْلُونَا فَٱسْتَغْفِرْ لَنَاۚ يَقُولُونَ بِأَلْسِنَتِهِم مَّا لَيْسَ فِى قُلُوبِهِمْۚ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ ٱللَّهِ شَيْـًٔا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًۢاۚ بَلْ كَانَ ٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًۢا
যে সব আরাব মরুবাসী গৃহে রয়ে গেছে তারা তোমাকে বলবেঃ আমাদের ধন সম্পদ ও পরিবার পরিজন আমাদেরকে ব্যস্ত রেখেছে। অতএব আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তারা মুখে যা বলে তা তাদের অন্তরে নেই। তাদেরকে বলঃ আল্লাহ তোমাদের কারও কোন ক্ষতি কিংবা মঙ্গল সাধনের ইচ্ছা করলে কে তাকে নিবৃত্ত করতে পারে? বস্তুতঃ তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।
12 – ফাত্হ
بَلْ ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَنقَلِبَ ٱلرَّسُولُ وَٱلْمُؤْمِنُونَ إِلَىٰٓ أَهْلِيهِمْ أَبَدًا وَزُيِّنَ ذَٰلِكَ فِى قُلُوبِكُمْ وَظَنَنتُمْ ظَنَّ ٱلسَّوْءِ وَكُنتُمْ قَوْمًۢا بُورًا
না, তোমরা ধারণা করেছিলে যে, রাসূল ও মু’মিনগণ তাদের পরিবার পরিজনের নিকট কখনই ফিরে আসতে পারবেনা এবং এই ধারণা তোমাদের অন্তরে প্রীতিকর মনে হয়েছিল; তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে, তোমরাতো ধ্বংসম্মুখ এক সম্প্রদায়।
13 – ফাত্হ
وَمَن لَّمْ يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ فَإِنَّآ أَعْتَدْنَا لِلْكَٰفِرِينَ سَعِيرًا
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনেনা, আমি সেই সব কাফিরের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি।
14 – ফাত্হ
وَلِلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহর; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
15 – ফাত্হ
سَيَقُولُ ٱلْمُخَلَّفُونَ إِذَا ٱنطَلَقْتُمْ إِلَىٰ مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْۖ يُرِيدُونَ أَن يُبَدِّلُواۡ كَلَٰمَ ٱللَّهِۚ قُل لَّن تَتَّبِعُونَا كَذَٰلِكُمْ قَالَ ٱللَّهُ مِن قَبْلُۖ فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَاۚ بَلْ كَانُواۡ لَا يَفْقَهُونَ إِلَّا قَلِيلًا
তোমরা যখন যুদ্ধলদ্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে তখন যারা গৃহে রয়ে গিয়েছিল তারা বলবেঃ আমাদেরকে তোমাদের সাথে যেতে দাও। তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায়। বলঃ তোমরা কিছুতেই আমাদের সঙ্গী হতে পারবেনা। আল্লাহ পূর্বেই এরূপ ঘোষণা করেছেন। তারা বলবেঃ তোমরাতো আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছ। বস্তুতঃ তাদের বোধশক্তি সামান্য।
16 – ফাত্হ
قُل لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ ٱلْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُوۡلِى بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَٰتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَۖ فَإِن تُطِيعُواۡ يُؤْتِكُمُ ٱللَّهُ أَجْرًا حَسَنًاۖ وَإِن تَتَوَلَّوْاۡ كَمَا تَوَلَّيْتُم مِّن قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
যে সব আরাব মরুবাসী গৃহে রয়ে গিয়েছিল তাদেরকে বলঃ তোমরা আহুত হবে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে; তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আত্মসমর্পণ করে। তোমরা এই নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করবেন। আর তোমরা যদি পূর্বানুরূপ পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে মর্মন্তদ শাস্তি দিবেন।
17 – ফাত্হ
لَّيْسَ عَلَى ٱلْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى ٱلْمَرِيضِ حَرَجٌۗ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ يُدْخِلْهُ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُۖ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًا
অন্ধের জন্য, খঞ্জের জন্য, রুগ্নের জন্য কোনো অপরাধ নেই। এবং যে কেহ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে আল্লাহ তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; কিন্তু যে ব্যক্তি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তিনি তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি দিবেন।
18 – ফাত্হ
لَّقَدْ رَضِىَ ٱللَّهُ عَنِ ٱلْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ ٱلشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِى قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَٰبَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا
মু’মিনরা যখন বৃক্ষতলে তোমার নিকট বাইআত গ্রহণ করল তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি অবগত ছিলেন; তাদেরকে তিনি দান করলেন প্রশান্তি এবং তাদেরকে পুরস্কার দিলেন আসন্ন বিজয়।
19 – ফাত্হ
وَمَغَانِمَ كَثِيرَةً يَأْخُذُونَهَاۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
এবং বিপুল পরিমাণ যুদ্ধ লদ্ধ সম্পদ যা তারা হস্তগত করবে; আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
20 – ফাত্হ
وَعَدَكُمُ ٱللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَٰذِهِۦ وَكَفَّ أَيْدِىَ ٱلنَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ ءَايَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَٰطًا مُّسْتَقِيمًا
আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুদ্ধে লভ্য বিপুল সম্পদের যার অধিকারী হবে তোমরা। তিনি ইহা তোমাদের জন্য ত্বরান্বিত করেছিলেন এবং তিনি তোমাদের হতে মানুষের হস্ত নিবারিত করেছেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও এবং এটা মু’মিনদের জন্য এক নিদর্শন এবং আল্লাহ তোমাদেরকে পরিচালিত করেন সরল পথে।
21 – ফাত্হ
وَأُخْرَىٰ لَمْ تَقْدِرُواۡ عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ ٱللَّهُ بِهَاۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرًا
আরও বহু সম্পদ রয়েছে যা এখনো তোমাদের অধিকারে আসেনি, ওটাতো আল্লাহর নিকট রক্ষিত আছে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
22 – ফাত্হ
وَلَوْ قَٰتَلَكُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ لَوَلَّوُاۡ ٱلْأَدْبَٰرَ ثُمَّ لَا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
কাফিরেরা তোমাদের মুকাবিলা করলে পরিণামে তারা অবশ্যই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করত, তখন তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পেতনা।
23 – ফাত্হ
سُنَّةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِى قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ ٱللَّهِ تَبْدِيلًا
ইহাই আল্লাহর বিধান, প্রাচীনকাল হতে চলে আসছে; তুমি আল্লাহর এই বিধানে কোন পরিবর্তন পাবেনা।
24 – ফাত্হ
وَهُوَ ٱلَّذِى كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنۢ بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا
তিনি মাক্কা উপত্যকায় তাদের হাত তোমাদের হতে এবং তোমাদের হাত তাদের হতে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।
25 – ফাত্হ
هُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ وَصَدُّوكُمْ عَنِ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ وَٱلْهَدْىَ مَعْكُوفًا أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُۥۚ وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُونَ وَنِسَآءٌ مُّؤْمِنَٰتٌ لَّمْ تَعْلَمُوهُمْ أَن تَطَـُٔوهُمْ فَتُصِيبَكُم مِّنْهُم مَّعَرَّةٌۢ بِغَيْرِ عِلْمٍۖ لِّيُدْخِلَ ٱللَّهُ فِى رَحْمَتِهِۦ مَن يَشَآءُۚ لَوْ تَزَيَّلُواۡ لَعَذَّبْنَا ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِنْهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
তারাইতো কুফরী করেছিল এবং নিবৃত্ত করেছিল তোমাদেরকে মাসজিদুল হারাম হতে এবং বাধা দিয়েছিল কুরবানীর জন্য আবদ্ধ পশুগুলিকে যথাস্থানে পৌঁছতে। তোমাদের যুদ্ধের আদেশ দেয়া হত, যদি না থাকত এমন কতকগুলি মু’মিন নর ও নারী যাদেরকে তোমরা জাননা, তাদেরকে তোমরা পদদলিত করতে অজ্ঞাতসারে। ফলে তাদের কারণে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে। যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়নি এ জন্য যে, তিনি যাকে ইচ্ছা নিজ অনুগ্রহ দান করবেন, যদি তারা পৃথক হত, আমি তাদের মধ্যস্থিত কাফিরদেরকে মর্মন্তদ শাস্তি দিতাম।
26 – ফাত্হ
إِذْ جَعَلَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ فِى قُلُوبِهِمُ ٱلْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ ٱلْجَٰهِلِيَّةِ فَأَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِينَتَهُۥ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَعَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ ٱلتَّقْوَىٰ وَكَانُوٓاۡ أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَاۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمًا
যখন কাফিরেরা তাদের অন্তরে পোষণ করত গোত্রীয় অহমিকা-অজ্ঞতা যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মু’মিনদেরকে স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন; আর তাদেরকে তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন এবং তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সমস্ত বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন।
27 – ফাত্হ
لَّقَدْ صَدَقَ ٱللَّهُ رَسُولَهُ ٱلرُّءْيَا بِٱلْحَقِّۖ لَتَدْخُلُنَّ ٱلْمَسْجِدَ ٱلْحَرَامَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَۖ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُواۡ فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসূলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে – কেহ কেহ মাথা মুন্ডন করবে, কেহ কেহ কেশ কর্তন করবে; তোমাদের কোন ভয় থাকবেনা। আল্লাহ জানেন, তোমরা যা জাননা। এটা ছাড়াও তিনি তোমাদের দিয়েছেন এক সদ্য বিজয়।
28 – ফাত্হ
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِيدًا
তিনি তাঁর রাসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর একে জয়যুক্ত করার জন্য। সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।
29 – ফাত্হ
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيْنَهُمْۖ تَرَىٰهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنًاۖ سِيمَاهُمْ فِى وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ ٱلسُّجُودِۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمْ فِى ٱلتَّوْرَىٰةِۚ وَمَثَلُهُمْ فِى ٱلْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْـَٔهُۥ فَـَٔازَرَهُۥ فَٱسْتَغْلَظَ فَٱسْتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِۦ يُعْجِبُ ٱلزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ ٱلْكُفَّارَۗ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًۢا
মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সাজদাহয় অবনত দেখবে। তাদের মুখে সাজদাহর চিহ্ন থাকবে, তাওরাতে তার বর্ণনা এইরূপই এবং ইঞ্জীলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা হতে নিগর্ত হয় কিশলয়, অতঃপর ওটা শক্ত পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা কৃষকের জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মু’মিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তরজ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও পুরস্কারের।
49 নং সূরা – আল-হুজরাত – اَلْحُجْرَات
মাদানী – আয়াত সংখ্যা: 18
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تُقَدِّمُواۡ بَيْنَ يَدَىِ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রনী হয়োনা এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
02 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا تَرْفَعُوٓاۡ أَصْوَٰتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ ٱلنَّبِىِّ وَلَا تَجْهَرُواۡ لَهُۥ بِٱلْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَٰلُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর কন্ঠস্বরের উপর নিজেদের কন্ঠস্বর উচু করনা এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চৈঃস্বরে কথা বল তার সাথে সেই রূপ উচ্চৈঃস্বরে কথা বলনা; কারণ এতে তোমাদের কাজ নিস্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে।
03 – হুজরাত
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَٰتَهُمْ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ أُوۡلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱمْتَحَنَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَىٰۚ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ
যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
04 – হুজরাত
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَآءِ ٱلْحُجُرَٰتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
যারা ঘরের পিছন হতে তোমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকে তাদের অধিকাংশই নির্বোধ।
05 – হুজরাত
وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُواۡ حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করত তাহলে তা’ই তাদের জন্য উত্তম হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
06 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاۡ إِن جَآءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوٓاۡ أَن تُصِيبُواۡ قَوْمًۢا بِجَهَٰلَةٍ فَتُصْبِحُواۡ عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَٰدِمِينَ
হে মু’মিনগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ণ করে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতা বশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না কর এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।
07 – হুজরাত
وَٱعْلَمُوٓاۡ أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ ٱللَّهِۚ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِى كَثِيرٍ مِّنَ ٱلْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ ٱلْإِيمَٰنَ وَزَيَّنَهُۥ فِى قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ ٱلْكُفْرَ وَٱلْفُسُوقَ وَٱلْعِصْيَانَۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلرَّٰشِدُونَ
তোমরা জেনে রেখ যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন; তিনি বহু বিষয়ে তোমাদের কথা মেনে নিলে তোমরাই কষ্ট পাবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং উহা তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন; কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট অপ্রিয়। ওরাই সৎ পথ অবলম্বনকারী।
08 – হুজরাত
فَضْلًا مِّنَ ٱللَّهِ وَنِعْمَةًۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
এটা আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
09 – হুজরাত
وَإِن طَآئِفَتَانِ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ ٱقْتَتَلُواۡ فَأَصْلِحُواۡ بَيْنَهُمَاۖ فَإِنۢ بَغَتْ إِحْدَىٰهُمَا عَلَى ٱلْأُخْرَىٰ فَقَٰتِلُواۡ ٱلَّتِى تَبْغِى حَتَّىٰ تَفِىٓءَ إِلَىٰٓ أَمْرِ ٱللَّهِۚ فَإِن فَآءَتْ فَأَصْلِحُواۡ بَيْنَهُمَا بِٱلْعَدْلِ وَأَقْسِطُوٓاۡۖ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُقْسِطِينَ
মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে; অতঃপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফাইসালা করবে এবং সুবিচার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন।
10 – হুজরাত
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُواۡ بَيْنَ أَخَوَيْكُمْۚ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
মু’মিনরা পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।
11 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُونُواۡ خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌ مِّن نِّسَآءٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّۖ وَلَا تَلْمِزُوٓاۡ أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُواۡ بِٱلْأَلْقَٰبِۖ بِئْسَ ٱلِٱسْمُ ٱلْفُسُوقُ بَعْدَ ٱلْإِيمَٰنِۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ
হে মু’মিনগণ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন মহিলা অপর কোন মহিলাকেও যেন উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করনা এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকনা; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরণের আচরণ হতে নিবৃত্ত না হয় তারাই যালিম।
12 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ ٱجْتَنِبُواۡ كَثِيرًا مِّنَ ٱلظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ ٱلظَّنِّ إِثْمٌۖ وَلَا تَجَسَّسُواۡ وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًاۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُۚ وَٱتَّقُواۡ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
হে মু’মিনগণ! তোমরা বহুবিধ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করনা এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করনা। তোমাদের মধ্যে কি কেহ তার মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করতে চায়? বস্তুতঃ তোমরাতো এটাকে ঘৃণাই মনে কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
13 – হুজরাত
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاۡۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ ٱللَّهِ أَتْقَىٰكُمْۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী। আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন।
14 – হুজরাত
قَالَتِ ٱلْأَعْرَابُ ءَامَنَّاۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُواۡ وَلَٰكِن قُولُوٓاۡ أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ ٱلْإِيمَٰنُ فِى قُلُوبِكُمْۖ وَإِن تُطِيعُواۡ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَٰلِكُمْ شَيْـًٔاۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আরাব মরুবাসীরা বলেঃ আমরা ঈমান আনলাম। তুমি বলঃ তোমরা ঈমান আননি, বরং তোমরা বলঃ আমরা আত্মসমর্পন করেছি; কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর তাহলে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমানও কম করা হবেনা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
15 – হুজরাত
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُواۡ وَجَٰهَدُواۡ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِۚ أُوۡلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ
তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করেনা এবং জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ।
16 – হুজরাত
قُلْ أَتُعَلِّمُونَ ٱللَّهَ بِدِينِكُمْ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ
বলঃ তোমরা কি তোমাদের দীন সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত।
17 – হুজরাত
يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُواۡۖ قُل لَّا تَمُنُّواۡ عَلَىَّ إِسْلَٰمَكُمۖ بَلِ ٱللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَىٰكُمْ لِلْإِيمَٰنِ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
তারা মনে করে আত্মসমর্পণ করে তোমাকে ধন্য করেছে। বলঃ তোমাদের আত্মসমর্পণ আমাকে ধন্য করেছে মনে করনা। বরং আল্লাহই ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
18 – হুজরাত
إِنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ وَٱللَّهُ بَصِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ
আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।
50 নং সূরা – কাফ – ق
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 45
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – কাফ
قٓۚ وَٱلْقُرْءَانِ ٱلْمَجِيدِ
কাফ, শপথ কুরআনের (তুমি অবশ্যই সতর্ককারী)।
02 – কাফ
بَلْ عَجِبُوٓاۡ أَن جَآءَهُم مُّنذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ ٱلْكَٰفِرُونَ هَٰذَا شَىْءٌ عَجِيبٌ
কিন্তু কাফিরেরা তাদের মধ্য হতে একজন সতর্ককারী আবির্ভূত হতে দেখে বিস্ময় বোধ করে এবং বলেঃ এটাতো এক আশ্চর্য ব্যাপার।
03 – কাফ
أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًاۖ ذَٰلِكَ رَجْعٌۢ بَعِيدٌ
আমাদের মৃত্যু হলে এবং আমরা মৃত্তিকায় পরিণত হলে আমরা কি পুনরুজ্জীবিত হব? এ প্রত্যাবর্তন সুদূর পরাহত!
04 – কাফ
قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنقُصُ ٱلْأَرْضُ مِنْهُمْۖ وَعِندَنَا كِتَٰبٌ حَفِيظٌۢ
আমিতো জানি, মৃত্তিকা ক্ষয় করে তাদের কতটুকু এবং আমার নিকট আছে রক্ষিত ফলক।
05 – কাফ
بَلْ كَذَّبُواۡ بِٱلْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ فَهُمْ فِىٓ أَمْرٍ مَّرِيجٍ
বস্তুতঃ তাদের নিকট সত্য আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে তারা সংশয়ে দোদুল্যমান।
06 – কাফ
أَفَلَمْ يَنظُرُوٓاۡ إِلَى ٱلسَّمَآءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَٰهَا وَزَيَّنَّٰهَا وَمَا لَهَا مِن فُرُوجٍ
তারা কি তাদের উর্ধ্বস্থিত আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেনা যে, আমি কিভাবে ওটা নির্মাণ করেছি এবং ওকে সুশোভিত করেছি এবং ওতে কোন ফাটলও নেই?
07 – কাফ
وَٱلْأَرْضَ مَدَدْنَٰهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِيجٍ
আমি বিস্তৃত করেছি ভূমিকে ও তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা এবং ওতে উদ্গত করেছি নয়ন প্রীতিকর সর্বপ্রকার উদ্ভিদ –
08 – কাফ
تَبْصِرَةً وَذِكْرَىٰ لِكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ
আল্লাহর অনুরাগী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, জ্ঞান ও উপদেশ স্বরূপ।
09 – কাফ
وَنَزَّلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً مُّبَٰرَكًا فَأَنۢبَتْنَا بِهِۦ جَنَّٰتٍ وَحَبَّ ٱلْحَصِيدِ
আকাশ হতে আমি বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি এবং তদ্বারা আমি সৃষ্টি করি উদ্যান ও উদগত করি শস্য।
10 – কাফ
وَٱلنَّخْلَ بَاسِقَٰتٍ لَّهَا طَلْعٌ نَّضِيدٌ
ও সমুন্নত খেজুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ খেজুর –
11 – কাফ
رِّزْقًا لِّلْعِبَادِۖ وَأَحْيَيْنَا بِهِۦ بَلْدَةً مَّيْتًاۚ كَذَٰلِكَ ٱلْخُرُوجُ
আমার বান্দাদের জীবিকা স্বরূপ; আর আমি সঞ্জীবিত করি মৃত ভূমিকে; এভাবে পুনরুত্থান ঘটবে।
12 – কাফ
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَأَصْحَٰبُ ٱلرَّسِّ وَثَمُودُ
তাদের পূর্বেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল নূহের সম্প্রদায়, রা’স ও সামূদ সম্প্রদায় –
13 – কাফ
وَعَادٌ وَفِرْعَوْنُ وَإِخْوَٰنُ لُوطٍ
আদ, ফির‘আউন ও লূত সম্প্রদায়।
14 – কাফ
وَأَصْحَٰبُ ٱلْأَيْكَةِ وَقَوْمُ تُبَّعٍۚ كُلٌّ كَذَّبَ ٱلرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِيدِ
এবং আইকাহর অধিবাসী ও তুব্বা সম্প্রদায়; তারা সবাই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি আপতিত হয়েছে।
15 – কাফ
أَفَعَيِينَا بِٱلْخَلْقِ ٱلْأَوَّلِۚ بَلْ هُمْ فِى لَبْسٍ مِّنْ خَلْقٍ جَدِيدٍ
আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে, পুনঃসৃষ্টি বিষয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করছে?
16 – কাফ
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِۦ نَفْسُهُۥۖ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ ٱلْوَرِيدِ
আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রকৃতি তাকে যে কুমন্ত্রনা দেয় তা আমি জানি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমণী অপেক্ষাও নিকটতর।
17 – কাফ
إِذْ يَتَلَقَّى ٱلْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ ٱلْيَمِينِ وَعَنِ ٱلشِّمَالِ قَعِيدٌ
স্মরণ রেখ, দুই মালাক/ফেরেশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কাজ লিপিবদ্ধ করে।
18 – কাফ
مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা গ্রহণ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে।
19 – কাফ
وَجَآءَتْ سَكْرَةُ ٱلْمَوْتِ بِٱلْحَقِّۖ ذَٰلِكَ مَا كُنتَ مِنْهُ تَحِيدُ
মৃত্যুযন্ত্রণা অবশ্যই আসবে। এটা হতেই তোমরা অব্যাহিত চেয়ে আসছ।
20 – কাফ
وَنُفِخَ فِى ٱلصُّورِۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْوَعِيدِ
আর শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ওটাই সেই ভয় প্রদর্শনের দিন।
21 – কাফ
وَجَآءَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّعَهَا سَآئِقٌ وَشَهِيدٌ
সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি উপস্থিত হবে। তার সাথে থাকবে চালক ও তার কর্মের সাক্ষী।
22 – কাফ
لَّقَدْ كُنتَ فِى غَفْلَةٍ مِّنْ هَٰذَا فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَآءَكَ فَبَصَرُكَ ٱلْيَوْمَ حَدِيدٌ
তুমি এই দিন সম্বন্ধে উদাসীন ছিলে, এখন তোমার সম্মুখ হতে পর্দা উম্মোচন করেছি। অদ্য তোমার দৃষ্টি প্রখর।
23 – কাফ
وَقَالَ قَرِينُهُۥ هَٰذَا مَا لَدَىَّ عَتِيدٌ
তার সঙ্গী মালাক/ফেরেশতা বলবেঃ এইতো আমার নিকট ‘আমলনামা প্রস্তুত।
24 – কাফ
أَلْقِيَا فِى جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِيدٍ
আদেশ করা হবেঃ তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, প্রত্যেক উদ্ধত কাফিরকে –
25 – কাফ
مَّنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ مُّرِيبٍ
কল্যাণকর কাজে প্রবল বাধা দানকারী, সীমালংঘনকারী ও সন্দেহ পোষণকারীকে –
26 – কাফ
ٱلَّذِى جَعَلَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ فَأَلْقِيَاهُ فِى ٱلْعَذَابِ ٱلشَّدِيدِ
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য মা‘বূদ গ্রহণ করত তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।
27 – কাফ
قَالَ قَرِينُهُۥ رَبَّنَا مَآ أَطْغَيْتُهُۥ وَلَٰكِن كَانَ فِى ضَلَٰلٍۭ بَعِيدٍ
তার সহচর শাইতান বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমি তাকে অবাধ্য হতে প্ররোচিত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত।
28 – কাফ
قَالَ لَا تَخْتَصِمُواۡ لَدَىَّ وَقَدْ قَدَّمْتُ إِلَيْكُم بِٱلْوَعِيدِ
আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাক-বিতন্ডা করনা; তোমাদেরকে আমিতো পূবেই সতর্ক করেছি।
29 – কাফ
مَا يُبَدَّلُ ٱلْقَوْلُ لَدَىَّ وَمَآ أَنَا۠ بِظَلَّٰمٍ لِّلْعَبِيدِ
আমার কথার রদ বদল হয়না এবং আমি আমার বান্দাদের প্রতি কোন অবিচার করিনা।
30 – কাফ
يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ ٱمْتَلَأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِن مَّزِيدٍ
সেই দিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করবঃ তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? জাহান্নাম বলবেঃ আরও আছে কি?
31 – কাফ
وَأُزْلِفَتِ ٱلْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ
আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের নিকটস্থ করা হবে – কোন দূরত্ব থাকবেনা।
32 – কাফ
هَٰذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ
এরই প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল – প্রত্যেক আল্লাহর অনুরাগী, হিফাযাতকারীর জন্য।
33 – কাফ
مَّنْ خَشِىَ ٱلرَّحْمَٰنَ بِٱلْغَيْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِيبٍ
যারা না দেখেই দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে এবং বিনীত চিত্তে উপস্থিত হয় –
34 – কাফ
ٱدْخُلُوهَا بِسَلَٰمٍۖ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْخُلُودِ
তাদেরকে বলা হবেঃ শান্তির সাথে তোমরা তাতে প্রবেশ কর; এটা অনন্ত জীবনের দিন।
35 – কাফ
لَهُم مَّا يَشَآءُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ
সেখানে তারা যা কামনা করবে তা’ই পাবে এবং আমার নিকট রয়েছে তারও অধিক।
36 – কাফ
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَشَدُّ مِنْهُم بَطْشًا فَنَقَّبُواۡ فِى ٱلْبِلَٰدِ هَلْ مِن مَّحِيصٍ
আমি তাদের পূর্বে আরও কত মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি যারা ছিল তাদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল, তারা দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করে ফিরত। পরে তাদের অন্য কোন আশ্রয়স্থল রইলনা।
37 – কাফ
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَذِكْرَىٰ لِمَن كَانَ لَهُۥ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى ٱلسَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ
এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য যার আছে অন্তঃকরণ, অথবা যে শ্রবণ করে নিবিষ্ট চিত্তে।
38 – কাফ
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ
আমি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এগুলির মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে। আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।
39 – কাফ
فَٱصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ ٱلشَّمْسِ وَقَبْلَ ٱلْغُرُوبِ
অতএব তারা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে।
40 – কাফ
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَأَدْبَٰرَ ٱلسُّجُودِ
তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর রাতের একাংশে এবং সালাতের পরেও।
41 – কাফ
وَٱسْتَمِعْ يَوْمَ يُنَادِ ٱلْمُنَادِ مِن مَّكَانٍ قَرِيبٍ
শোন, যেদিন এক ঘোষণাকারী নিকটবর্তী স্থান হতে আহবান করবে –
42 – কাফ
يَوْمَ يَسْمَعُونَ ٱلصَّيْحَةَ بِٱلْحَقِّۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ ٱلْخُرُوجِ
যেদিন মানুষ অবশ্যই শ্রবণ করবে মহানাদ, সেই দিনই পুনরুত্থান দিন।
43 – কাফ
إِنَّا نَحْنُ نُحْىِۦ وَنُمِيتُ وَإِلَيْنَا ٱلْمَصِيرُ
আমিই জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং সকলের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে।
44 – কাফ
يَوْمَ تَشَقَّقُ ٱلْأَرْضُ عَنْهُمْ سِرَاعًاۚ ذَٰلِكَ حَشْرٌ عَلَيْنَا يَسِيرٌ
যেদিন পৃথিবী বিদীর্ণ হবে এবং মানুষ বের হয়ে আসবে ব্যস্ত ত্রস্ত হয়ে, এই সমবেত সমাবেশ করণ আমার জন্য সহজ।
45 – কাফ
نَّحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَقُولُونَۖ وَمَآ أَنتَ عَلَيْهِم بِجَبَّارٍۖ فَذَكِّرْ بِٱلْقُرْءَانِ مَن يَخَافُ وَعِيدِ
তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে।
51 নং সূরা – আয-যারিয়াত – اَلزَّارِيَات
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 60
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – যারিয়াত
وَٱلذَّٰرِيَٰتِ ذَرْوًا
শপথ ধূলি ঝঞ্ঝার,
02 – যারিয়াত
فَٱلْحَٰمِلَٰتِ وِقْرًا
শপথ বোঝা বহনকারী মেঘপুঞ্জের,
03 – যারিয়াত
فَٱلْجَٰرِيَٰتِ يُسْرًا
অতঃপর স্বচ্ছন্দ গতিময় নৌযানের,
04 – যারিয়াত
فَٱلْمُقَسِّمَٰتِ أَمْرًا
আর শপথ কর্মবন্টনকারী মালাইকা/ফেরেশতার।
05 – যারিয়াত
إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَصَادِقٌ
তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য।
06 – যারিয়াত
وَإِنَّ ٱلدِّينَ لَوَٰقِعٌ
কর্মফল দিন অবশ্যম্ভাবী।
07 – যারিয়াত
وَٱلسَّمَآءِ ذَاتِ ٱلْحُبُكِ
শপথ বহু পথ বিশিষ্ট আকাশের!
08 – যারিয়াত
إِنَّكُمْ لَفِى قَوْلٍ مُّخْتَلِفٍ
তোমরাতো পরস্পর বিরোধী কথায় লিপ্ত।
09 – যারিয়াত
يُؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ أُفِكَ
যে ব্যক্তি সত্যভ্রষ্ট সে’ই তা পরিত্যাগ করে।
10 – যারিয়াত
قُتِلَ ٱلْخَرَّٰصُونَ
অভিশপ্ত হোক মিথ্যাচারীরা।
11 – যারিয়াত
ٱلَّذِينَ هُمْ فِى غَمْرَةٍ سَاهُونَ
যারা অজ্ঞ ও উদাসীন –
12 – যারিয়াত
يَسْـَٔلُونَ أَيَّانَ يَوْمُ ٱلدِّينِ
তারা জিজ্ঞেস করেঃ কর্মফল দিন কবে হবে?
13 – যারিয়াত
يَوْمَ هُمْ عَلَى ٱلنَّارِ يُفْتَنُونَ
(বলঃ) সেই দিন, যখন তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে অগ্নিতে,
14 – যারিয়াত
ذُوقُواۡ فِتْنَتَكُمْ هَٰذَا ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تَسْتَعْجِلُونَ
এবং (বলা হবে) তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন কর, তোমরা এই শাস্তিই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলে।
15 – যারিয়াত
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ
সেদিন মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবণ বিশিষ্ট জান্নাতে।
16 – যারিয়াত
ءَاخِذِينَ مَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْۚ إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَبْلَ ذَٰلِكَ مُحْسِنِينَ
উপভোগ করবে তা যা তাদের রাব্ব তাদেরকে প্রদান করবেন; কারণ পার্থিব জীবনে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ।
17 – যারিয়াত
كَانُواۡ قَلِيلًا مِّنَ ٱلَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ
তারা রাতের সামান্য অংশই অতিবাহিত করত নিদ্রায়,
18 – যারিয়াত
وَبِٱلْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত,
19 – যারিয়াত
وَفِىٓ أَمْوَٰلِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّآئِلِ وَٱلْمَحْرُومِ
এবং তাদের ধন সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক।
20 – যারিয়াত
وَفِى ٱلْأَرْضِ ءَايَٰتٌ لِّلْمُوقِنِينَ
নিশ্চিত বিশ্বাসীদের নিদর্শন রয়েছে ধরিত্রীতে –
21 – যারিয়াত
وَفِىٓ أَنفُسِكُمْۚ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
এবং তোমাদের মধ্যেও। তোমরা কি অনুধাবন করবেনা?
22 – যারিয়াত
وَفِى ٱلسَّمَآءِ رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ
আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযকের উৎস ও প্রতিশ্রুত সবকিছু।
23 – যারিয়াত
فَوَرَبِّ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ إِنَّهُۥ لَحَقٌّ مِّثْلَ مَآ أَنَّكُمْ تَنطِقُونَ
আকাশ ও পৃথিবীর রবের শপথ! অবশ্যই তোমাদের বাক স্ফুর্তির মতই এ সব সত্য।
24 – যারিয়াত
هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ضَيْفِ إِبْرَٰهِيمَ ٱلْمُكْرَمِينَ
তোমার নিকট ইবরাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি?
25 – যারিয়াত
إِذْ دَخَلُواۡ عَلَيْهِ فَقَالُواۡ سَلَٰمًاۖ قَالَ سَلَٰمٌ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ সালাম। উত্তরে সে বললঃ সালাম। এরাতো অপরিচিত লোক!
26 – যারিয়াত
فَرَاغَ إِلَىٰٓ أَهْلِهِۦ فَجَآءَ بِعِجْلٍ سَمِينٍ
অতঃপর সে গৃহাভ্যন্তরে গেল এবং একটি মাংশল ভাজা গো-বৎস নিয়ে এল।
27 – যারিয়াত
فَقَرَّبَهُۥٓ إِلَيْهِمْ قَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ
তাদের সামনে রাখল এবং বললঃ তোমরা খাচ্ছনা কেন?
28 – যারিয়াত
فَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةًۖ قَالُواۡ لَا تَخَفْۖ وَبَشَّرُوهُ بِغُلَٰمٍ عَلِيمٍ
এতে তাদের সম্পর্কে তার মনে ভীতির সঞ্চার হল। তারা বললঃ ভীত হয়োনা। অতঃপর তারা তাকে এক জ্ঞানী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল।
29 – যারিয়াত
فَأَقْبَلَتِ ٱمْرَأَتُهُۥ فِى صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ عَجُوزٌ عَقِيمٌ
তখন তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে সামনে এসে গাল চাপড়িয়ে বললঃ এই বৃদ্ধা বন্ধ্যার সন্তান হবে?
30 – যারিয়াত
قَالُواۡ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْحَكِيمُ ٱلْعَلِيمُ
তারা বললঃ তোমার রাব্ব এরূপই বলেছেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
31 – যারিয়াত
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا ٱلْمُرْسَلُونَ
সে (ইবরাহীম) বললঃ হে প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতাগণ! আপনাদের বিশেষ কাজ কি?
32 – যারিয়াত
قَالُوٓاۡ إِنَّآ أُرْسِلْنَآ إِلَىٰ قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বললঃ আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
33 – যারিয়াত
لِنُرْسِلَ عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن طِينٍ
তাদের উপর নিক্ষেপ করার জন্য মাটির শক্ত ঢেলা,
34 – যারিয়াত
مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِينَ
যা সীমালংঘনকারীদের জন্য চিহ্নিত তোমার রবের নিকট হতে ।
35 – যারিয়াত
فَأَخْرَجْنَا مَن كَانَ فِيهَا مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
সেখানে যেসব মু’মিন ছিল আমি তাদেরকে উদ্ধার করেছিলাম –
36 – যারিয়াত
فَمَا وَجَدْنَا فِيهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ ٱلْمُسْلِمِينَ
এবং সেখানে একটি পরিবার ব্যতীত কোন আত্মসমর্পনকারী (মুসলিম) আমি পাইনি –
37 – যারিয়াত
وَتَرَكْنَا فِيهَآ ءَايَةً لِّلَّذِينَ يَخَافُونَ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَلِيمَ
যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে আমি তাদের জন্য ওতে একটি নিদর্শন রেখেছি,
38 – যারিয়াত
وَفِى مُوسَىٰٓ إِذْ أَرْسَلْنَٰهُ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ
এবং নিদর্শন রেখেছি মূসার বৃত্তান্তে, যখন আমি তাকে প্রমাণসহ ফির‘আউনের নিকট প্রেরণ করেছিলাম।
39 – যারিয়াত
فَتَوَلَّىٰ بِرُكْنِهِۦ وَقَالَ سَٰحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
তখন সে ক্ষমতা দম্ভে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ এই ব্যক্তি হয় এক যাদুকর, না হয় উম্মাদ।
40 – যারিয়াত
فَأَخَذْنَٰهُ وَجُنُودَهُۥ فَنَبَذْنَٰهُمْ فِى ٱلْيَمِّ وَهُوَ مُلِيمٌ
সুতরাং আমি তাকে ও তার দলবলকে শাস্তি দিলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম; সেতো ছিল তিরস্কারযোগ্য।
41 – যারিয়াত
وَفِى عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلرِّيحَ ٱلْعَقِيمَ
এবং নিদর্শন রয়েছে আ‘দের ঘটনায় যখন আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর বায়ু।
42 – যারিয়াত
مَا تَذَرُ مِن شَىْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَٱلرَّمِيمِ
এটা যা কিছুর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল তাকেই চূর্ন বিচূর্ণ করে দিয়েছিল।
43 – যারিয়াত
وَفِى ثَمُودَ إِذْ قِيلَ لَهُمْ تَمَتَّعُواۡ حَتَّىٰ حِينٍ
আরও নিদর্শন রয়েছে সামূদের বৃত্তান্তে, যখন তাদেরকে বলা হলঃ ভোগ করে নাও স্বল্পকাল,
44 – যারিয়াত
فَعَتَوْاۡ عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّٰعِقَةُ وَهُمْ يَنظُرُونَ
কিন্তু তারা তাদের রবের আদেশ অমান্য করল; ফলে তাদের প্রতি বজ্রাঘাত হল এবং তারা তা দেখতে ছিল।
45 – যারিয়াত
فَمَا ٱسْتَطَٰعُواۡ مِن قِيَامٍ وَمَا كَانُواۡ مُنتَصِرِينَ
তারা উঠে দাঁড়াতে পারলনা এবং তা প্রতিরোধ করতেও পারলনা।
46 – যারিয়াত
وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُۖ إِنَّهُمْ كَانُواۡ قَوْمًا فَٰسِقِينَ
আমি ধ্বংস করেছিলাম তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে, তারা ছিল সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।
47 – যারিয়াত
وَٱلسَّمَآءَ بَنَيْنَٰهَا بِأَيْيۡدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
আমি আকাশ নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতা বলে এবং আমি অবশ্যই মহাসম্প্রসারণকারী,
48 – যারিয়াত
وَٱلْأَرْضَ فَرَشْنَٰهَا فَنِعْمَ ٱلْمَٰهِدُونَ
এবং আমি ভূমিকে বিছিয়ে দিয়েছি; আমি কত সুন্দরভাবে বিছিয়েছি এটা।
49 – যারিয়াত
وَمِن كُلِّ شَىْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
আমি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
50 – যারিয়াত
فَفِرُّوٓاۡ إِلَى ٱللَّهِۖ إِنِّى لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
আল্লাহর দিকে ধাবিত হও; আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সতর্ককারী।
51 – যারিয়াত
وَلَا تَجْعَلُواۡ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَۖ إِنِّى لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
তোমরা আল্লাহর সাথে কোন মা‘বূদ স্থির করনা; আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত স্পষ্ট সতর্ককারী ।
52 – যারিয়াত
كَذَٰلِكَ مَآ أَتَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا قَالُواۡ سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
এভাবে তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমিতো এক যাদুকর, না হয় উম্মাদ!
53 – যারিয়াত
أَتَوَاصَوْاۡ بِهِۦۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
তারা কি একে অপরকে এই মন্ত্রণাই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।
54 – যারিয়াত
فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَآ أَنتَ بِمَلُومٍ
অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর, এতে তুমি অপরাধী হবেনা।
55 – যারিয়াত
وَذَكِّرْ فَإِنَّ ٱلذِّكْرَىٰ تَنفَعُ ٱلْمُؤْمِنِينَ
তুমি উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ মু’মিনদের উপকারে আসবে।
56 – যারিয়াত
وَمَا خَلَقْتُ ٱلْجِنَّ وَٱلْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদাত করবে।
57 – যারিয়াত
مَآ أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ
আমি তাদের নিকট হতে জীবিকা চাইনা এবং এও চাইনা যে, তারা আমার আহার যোগাবে।
58 – যারিয়াত
إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلْقُوَّةِ ٱلْمَتِينُ
আল্লাহই রিয্ক দান করেন এবং তিনি প্রবল, পরাক্রান্ত।
59 – যারিয়াত
فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُواۡ ذَنُوبًا مِّثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَٰبِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ
যালিমদের প্রাপ্য ওটাই যা অতীতে তাদের সম মতাবলম্বীরা ভোগ করেছে। সুতরাং তারা এর জন্য আমার নিকট যেন ত্বরা না করে।
60 – যারিয়াত
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُواۡ مِن يَوْمِهِمُ ٱلَّذِى يُوعَدُونَ
কাফিরদের জন্য দুর্ভোগ তাদের ঐ দিনের যে দিনের বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
52 নং সূরা – আত-তূর – اَلطُّور
মাক্বী – আয়াত সংখ্যা: 49
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
01 – তূর
وَٱلطُّورِ
শপথ তুর পর্বতের,
02 – তূর
وَكِتَٰبٍ مَّسْطُورٍ
শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে –
03 – তূর
فِى رَقٍّ مَّنشُورٍ
উন্মুক্ত পত্রে।
04 – তূর
وَٱلْبَيْتِ ٱلْمَعْمُورِ
শপথ বায়তুল মা‘মুরের,
05 – তূর
وَٱلسَّقْفِ ٱلْمَرْفُوعِ
শপথ সমুন্নত আকাশের,
06 – তূর
وَٱلْبَحْرِ ٱلْمَسْجُورِ
এবং শপথ উদ্বেলিত সমুদ্রের।
07 – তূর
إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَٰقِعٌ
তোমার রবের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
08 – তূর
مَّا لَهُۥ مِن دَافِعٍ
এর নিবারণ করার কেহ নেই।
09 – তূর
يَوْمَ تَمُورُ ٱلسَّمَآءُ مَوْرًا
যেদিন আকাশ আন্দোলিত হবে প্রবলভাবে –
10 – তূর
وَتَسِيرُ ٱلْجِبَالُ سَيْرًا
এবং পর্বত চলবে দ্রুত।
11 – তূর
فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
দুর্ভোগ সেইদিন মিথ্যাশ্রয়ীদের –
12 – তূর
ٱلَّذِينَ هُمْ فِى خَوْضٍ يَلْعَبُونَ
যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে।
13 – তূর
يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَىٰ نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
যেদিন তাদেরকে হাকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের আগুনের দিকে,
14 – তূর
هَٰذِهِ ٱلنَّارُ ٱلَّتِى كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
(বলা হবে) এটাই সেই আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে।
15 – তূর
أَفَسِحْرٌ هَٰذَآ أَمْ أَنتُمْ لَا تُبْصِرُونَ
এটা কি যাদু? না কি তোমরা দেখছনা?
16 – তূর
ٱصْلَوْهَا فَٱصْبِرُوٓاۡ أَوْ لَا تَصْبِرُواۡ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
তোমরা এতে প্রবেশ কর, অতঃপর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর অথবা না করা উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হচ্ছে।
17 – তূর
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍ وَنَعِيمٍ
মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতে ও ভোগ করবে বিলাস।
18 – তূর
فَٰكِهِينَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ
তাদের রাব্ব তাদেরকে যা দিবেন তারা তা উপভোগ করবে এবং তিনি তাদেরকে রক্ষা করবেন জাহান্নামের শাস্তি হতে।
19 – তূর
كُلُواۡ وَٱشْرَبُواۡ هَنِيٓـًٔۢا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরূপ তোমরা তৃপ্তির সাথে পানাহার করতে থাক।
20 – তূর
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍۖ وَزَوَّجْنَٰهُم بِحُورٍ عِينٍ
তারা বসবে শ্রেণীবদ্ধভাবে সজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে; আমি তাদের মিলন ঘটাব আয়তলোচনা হুরের সঙ্গে।
21 – তূর
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَٱتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَٰنٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَآ أَلَتْنَٰهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَىْءٍۚ كُلُّ ٱمْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
এবং যারা ঈমান আনে আর তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করাব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করবনা, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।
22 – তূর
وَأَمْدَدْنَٰهُم بِفَٰكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
আমি তাদেরকে দিব ফল-মূল এবং গোশত যা তারা পছন্দ করে।
23 – তূর
يَتَنَٰزَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
সেখানে তারা একে অপরের নিকট হতে গ্রহণ করবে পান পাত্র, যা হতে পান করলে কেহ অসার কথা বলবেনা এবং অসৎ কাজেও লিপ্ত হবেনা।
24 – তূর
وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ কিশোরেরা সেখানে তাদের জন্য নিয়োজিত থাকবে।
25 – তূর
وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ
তারা একে অপরের দিকে মুখোমুখি জিজ্ঞসাবাদ করবে –
26 – তূর
قَالُوٓاۡ إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِىٓ أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
এবং বলবেঃ পূর্বে আমরা পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম –
27 – তূর
فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَىٰنَا عَذَابَ ٱلسَّمُومِ
অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে অগ্নির শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন,
28 – তূর
إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْبَرُّ ٱلرَّحِيمُ
আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহবান করতাম, তিনিতো কৃপাময়, পরম দয়ালু।
29 – তূর
فَذَكِّرْ فَمَآ أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
অতএব তুমি উপদেশ দান করতে থাক, তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি গণক নও, উম্মাদও নও।
30 – তূর
أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِۦ رَيْبَ ٱلْمَنُونِ
তারা কি বলতে চায় যে, সে একজন কবি, আমরা তার জন্য কালের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করছি।
31 – তূর
قُلْ تَرَبَّصُواۡ فَإِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُتَرَبِّصِينَ
বলঃ তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।
32 – তূর
أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَٰمُهُم بِهَٰذَآۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
তাহলে কি তাদের বুদ্ধি তাদেরকে এই বিষয়ে প্ররোচিত করে, না তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
33 – তূর
أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُۥۚ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
তারা কি বলেঃ এই কুরআন তার নিজের রচনা? বরং তারা অবিশ্বাসী।
34 – তূর
فَلْيَأْتُواۡ بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِۦٓ إِن كَانُواۡ صَٰدِقِينَ
তারা যদি সত্যবাদী হয় তাহলে এই সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক।
35 – তূর
أَمْ خُلِقُواۡ مِنْ غَيْرِ شَىْءٍ أَمْ هُمُ ٱلْخَٰلِقُونَ
তারা কি স্রষ্টা ব্যতীত সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
36 – তূর
أَمْ خَلَقُواۡ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ
না কি তারা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারাতো অবিশ্বাসী
37 – তূর
أَمْ عِندَهُمْ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ ٱلْمُصَۣيْطِرُونَ
তোমার রবের ভান্ডার কি তাদের নিকট রয়েছে, না তারা এ সমুদয়ের নিয়ন্তা?
38 – তূর
أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِۖ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ
না কি তাদের কোন সিড়ি আছে যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।
39 – তূর
أَمْ لَهُ ٱلْبَنَٰتُ وَلَكُمُ ٱلْبَنُونَ
তাহলে কি কন্যা সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র সন্তান তোমাদের জন্য?
40 – তূর
أَمْ تَسْـَٔلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
তাহলে কি তুমি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, তারা একে একটি দুর্বহ বোঝা মনে করবে?
41 – তূর
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
না কি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লিখে?
42 – তূর
أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًاۖ فَٱلَّذِينَ كَفَرُواۡ هُمُ ٱلْمَكِيدُونَ
অথবা তারা কি কোন ষড়যন্ত্র করতে চায়? পরিণামে কাফিরেরাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার।
43 – তূর
أَمْ لَهُمْ إِلَٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِۚ سُبْحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
না কি আল্লাহ ব্যতীত তাদের অন্য কোন মা‘বূদ আছে? তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র।
44 – তূর
وَإِن يَرَوْاۡ كِسْفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ سَاقِطًا يَقُولُواۡ سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
তারা আকাশের কোন খন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলেও বলবেঃ এটাতো এক পূঞ্জীভুত মেঘ।
45 – তূর
فَذَرْهُمْ حَتَّىٰ يُلَٰقُواۡ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى فِيهِ يُصْعَقُونَ
তাদেরকে উপেক্ষা করে চল সেই দিন পর্যন্ত, যে দিন তারা বজ্রাঘাতের সম্মুখীন হবে।
46 – তূর
يَوْمَ لَا يُغْنِى عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْـًٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
যেদিন তাদের ষড়যন্ত্র কোন কাজে আসবেনা এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবেনা।
47 – তূর
وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُواۡ عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
এ ছাড়াও আরও শাস্তি রয়েছে যালিমদের জন্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানেনা।
48 – তূর
وَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَاۖ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
ধৈর্য ধারণ কর তোমার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর –
49 – তূর
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَٰرَ ٱلنُّجُومِ
এবং তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর রাতে ও তারকার অস্ত গমনের পর।