আল হামদুলিল্লাহ, ওয়াস স্বলাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ: অত:পর আমরা আমাদের সমাজের আসেপাশে এমন অনেক কবর ও কবরস্থান দেখতে পাই যা কোনো ব্যক্তি মালিকানার অন্তর্ভুক্ত। অনেকে পুকুর পাড়ে, কেউ তার জমির এক পাশে, কেউ নিজ বাড়ির পিছনে, এমন কি নিজ বাড়ির কোনো গৃহে ও কবর দিয়ে থাকে। সরজমিনে তদন্ত করে দেখা গেলে দেখা যাবে গ্রমাঞ্চলে যৌথ কবরস্থানের সংখ্যা কম আর ব্যক্তি মালিকানার কবরস্থানই বেশী। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমন, গ্রামবাসীদের এ বিষয়ে জ্ঞান না থাকার কারণে সম্মিলিত কবরস্থানের উদ্দ্যেগ না নেওয়া, অর্থকড়ির অভাব থাকা, ইসলামী ভাতৃত্বের অভাব, বংশীয় রেশারেশী, গ্রাম ও জনপদ ছেড়ে একাকি জীবন যাপনকে প্রাধান্য দেওয়া, মাইয়্যেতের ভুল অসীয়ত, ইত্যাদি।
যারা বাড়ির কোনো ঘরে বা বাড়ির পাশে মাইয়্যেতকে দফন করে, তারা হয়ত: আবেগবশত: কিছু দিন যাবত সে কবরের খেয়াল ও সম্মান বজায় রাখে। তারপর সময় যত অতিবাহিত হয় ধীরে ধীরে তাদের আবেগ, মায়া, ভালবাসা, ও সম্মান হ্রাস পেতে থাকে। অত:পর এক সময় এমন পর্যায় পৌঁছে যায় যে, কবরের উপর দিয়ে হাঁটাহাটি, কবরের উপর আবর্জনা ফেলা এবং গরু ছাগল বাঁধাবাধিঁ শুরু হয়ে যায়। তারপর এক দুই প্রজন্ম গত হতে না হতেই ঘর প্রশস্ত করার প্রয়োজন হয়, তখন সেই প্রিয় লোকের কবরটিই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারপর ফতোয়া তলব শুরু হয় যে, আমাদের বাড়ির অমুক বা তমুক পার্শে কবর আছে। এখন আমরা বাড়ি প্রশস্ত করতে চাচ্ছি। আর সে দিক ছাড়া বাড়ি প্রশস্ত করার উপায় নেই। আমরা কি কবরটি স্থানান্তর করতে পারি? ইত্যাদি প্রশ্ন।
আর যারা বাড়ির পাশে কবর না দিয়ে নিজ পুকুর পাড় কিংবা নিজ জমির একাংশে কবর দেয়, তাদের অনেকের কবরস্থানের চিত্র এমন যে সেটা কবরস্থান কম জঙ্গল বেশী মনে হয়। কখনো সেখানে যিয়ারত করতে যেতে চাইলে ঝাড়-জঙ্গল, সাপ, বিছা, পোকা মাকড় এমন কি শৃগাল ও বন্য পশুর ভয়ে সেখানে প্রবেশ করা যায় না। অনেকে সেটা গরু ছাগল চরার ও বাঁধার স্থান করে নেয়। আর অনেকে সেখানে পেশাব পায়খানাও করে। অনেকে কিছুটা সাফ করে খেলা ধুলারও ব্যবস্থা করে নেয়। যার ফলে কবরস্থানের হুরমতের (সম্মান) অনুভুতি অন্তরে বিনষ্ট হয়।
অন্য দিকে যৌথ কবরস্থান হলে তা দেখা-শোনার দায়িত্ব বিশেষ লোকদের স্কন্ধে থাকে ফলে তারা যত্ন নিতে বাধ্য থাকে। চতুর্দিকে ঘিরে দেওয়া সহ ভিতরে যেন জঙ্গল না হয় তার খেয়াল রাখা হয় এবং কবরস্থানের বিধি নিষেধেরও খেয়াল রাখা হয়। সবচেয়ে বড় লাভ হচ্ছে, যৌথ কবরস্থানে দফনের হার এবং কবর যিয়ারতের হার অনেক বেশী যার ফলে সমস্ত মাইয়্যেত যিয়ারতকারীদের দুআ পায় যেটা পারিবারিক কবরস্থানের অধিবাসীরা পায় না। অনুরূপ যদি কোনো এমন গরীব-দু:খি ব্যক্তি কিংবা আগন্তুকের মৃত্যু হয়, যাদের নিজের দফনের জন্য পাঁচ হাত স্থানও নেই, তারা এই যৌথ কবরস্থানে বিনা কোনো অসুবিধায় স্থান পেতে পারে কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন কবরস্থানে তারা স্থান পেতে পারে না।
ইসলাম একটি সামাজিক ধর্ম। এখানে যেমন নিজ মালিকানার বিধান রয়েছে, তেমন যৌথ মালিকানার ও বিধান রযেছে। যেমন নিজ নিজ দায়িত্ব রয়েছে তেমন সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব ও রয়েছে। মুসলিম সমাজ যৌথাকারে যে সব কাজ করতে আদিষ্ট তন্মধ্যে মসজিদ, ঈদ গাহ, মকতব-মাদরাসা, রাস্তা-ঘাট এবং কবরস্থানের জন্য স্থানের ব্যবস্থাপনা ও এসব নির্মাণ কাজ অন্যতম। মুসলিম সমাজের উপর এসব স্থানের ব্যবস্থা করা কম করে হলে মুস্তাহাব আর অনেক সময় জরুরি।
মুসলিম সমাজের কবরস্থান যৌথাকারে হওয়ার প্রমাণ হচ্ছে, প্রিয় নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল এবং পরবর্তীতে তাঁর সাহাবা ও মুসলিম খলিফাগণের আমল। আল্লাহর রাসূল স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে মদীনাবাসীর জন্য একটিই কবরস্থান ছিল আর তা ছিল বাকী কবরস্থান। তাঁর জীবনীতে এমন কোনো ঘটনা পাওয়া যায় না যে, মদীনায় কারো মৃত্যু হয়েছে আর তিনি তাকে বাকী কবরস্থান ছাড়া অন্য কোথাও কবর দিয়েছেন বা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। অত:পর তাঁর পরে তাঁর সাহাবাগণও এই নিয়মের উপর কায়েম ছিলেন। তাই মুসলিম গ্রামবাসী ও জনপদে একটি যৌথ কবরস্থান হওয়া হচ্ছে, সুন্নতে নববী এবং সম্মানিত সাহাবাগণের আমল। সুতরাং এটি মুসতাহাব কাজের অন্তর্ভুক্ত।
মুসাফিরের জন্য গৃহ নির্মাণ শরীয়ায় সাদাকায়ে জারিয়া হিসাবে প্রমাণিত। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মুমিন ব্যক্তি মৃত্যুর পর তার নিজ কৃত সৎ আমল থেকে যা পেতে থাকে, তন্মধ্যে হচ্ছে: ইলম যা সে অপরকে শিখিয়েছে বা প্রচার করেছে কিংবা নেক সন্তান যা সে রেখে গেছে কিংবা কুরআন যা সে অপরকে দিয়ে গেছে কিংবা সে মসজিদ নির্মান করেছে কিংবা সে মুসাফিরের জন্য গৃহ নির্মাণ করেছে কিংবা নদি-নালা খনন করেছে কিংবা জীবিতাবস্থায় ও সুস্থতার সময় নিজ মাল সম্পদ হতে দান করেছে”। [ইবনু মাজাহ, ইবনু খুযায়মা, বায়হাকী]
উল্লেখ্য, জীবিত মুসলিম মুসাফির ভাইর জন্য ঘর নির্মাণ যদি সাদাকায়ে জারিয়া হতে পারে, তাহলে মৃত মুসলিম ভাইর জন্য গৃহ (কবর) নির্মাণের জন্য কবরস্থান ওয়াকফ করা ও সাদাকায়ে জারিয়া।
ইমাম নওয়াভী বলেন: যদি সে তার বাড়িকে মসজিদে পরিণত করে দেয় কিংবা তার জমি-জমাকে কবরস্থান করে দেয় কিংবা তাতে মাদরাসা বানায় কিংবা তা মুসাফিরখানা করে দেয়, তাহলে সবার জন্য সেই মসজিদে স্বলাত আদায় করা ও ইতিকাফ করা এবং সেই কবরস্থানে দফন করা বৈধ…। [রাওযাতুত ত্বলিবীন ৪/৩৯৫]
ইবনু কুদামাহ বলেন: ওয়াকফ বৈধ নয় কিন্তু অমুক অমুকের উপর। তারপর তিনি বলেন: কিংবা নেকীর কাজে যেমন মসজিদ নির্মাণ, সেতু নির্মাণ…কবরস্থান, পানির ব্যবস্থাকরণ এবং আল্লাহর রাস্তায়। [আল মুগনী ৮/২৩৪]
ক- পারতপক্ষে কবরস্থানের জন্য এঁটেল মাটির জমি নির্বাচন করা উচিৎ। কারণ বালি মাটি হলে তাড়াতাড়ি ধ্বসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর পাথুরে মাটি হলে তা খনন করা ও গভীর করা কষ্টকর হয়।
খ-কবরস্থান যেন নদি নালা এবং প্রবাহমান পানি পথ থেকে দূরে অবস্থিত হয়। সউদী স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড বলেন: মাইয়্যেতকে শক্ত মাটিতে দফন করা জরূরি যা, প্রবাহমান নদি নালা থেকে দূরে অবস্থান করে; যেন মাইয়্যেতের অবশিষ্টাংশের সংরক্ষণ করা সম্ভবপর হয়। [৭/৩১১, নং ২০৩০৯]
গ-কবরস্থান যেন নাপাক, নোংরা এবং ড্রেন লাইন থেকে দূরে অবস্থান করে। যেন নাপাক ও নাপাকির পানি বা চুয়ানি মাইয়্যেতদের স্পর্শ না করে। ইফতা বোর্ড বলেন: মুসলিমদের কবর নোংরা হতে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কবরস্থানের পার্শে ড্রেন করা বৈধ নয়। [ফতোয়া নং ২০৮২৮]
কতিপয় ফুকাহা জনপদের বাইরে ময়দানে কবরস্থান হওয়া উত্তম মনে করেছেন; কারণ জনপদের মধ্যে কবরস্থান থাকলে জীবিতদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয় বলে মত ব্যক্ত করেছেন এবং একারণেও যে, বাকী কবরস্থান জনবসতির বাইরে ছিল। অনুরূপ বাইরে হলে তা আখেরাতের জীবনের সাথে বেশী সাদৃশ্যপূর্ণ দেখায়। [শারহু মুনতাহাল ইরাদাত ২/১৪৫] তবে জনপদের ভিতরে বা পার্শে কবরস্থান থাকলে যদি জীবিতদের অসুবিধা না হয়,তাহলে তাতে আপত্তিকর হবে না।
উপরে বর্ণিত উলামা ও ফুকাহাদের ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা যায় যে, কেউ যদি তার জমিতে অন্যদের কবর দিতে অনুমতি দেয়, তাহলে সেটা কবরস্থানের জন্য ওয়াকফ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং এটা তার সম্মতি ধরা হবে; যদিও তা কবরস্থান হিসাবে সরকারি কাগজপত্রে রেজিস্টার করা না থাক। এমন কবরস্থানে এবং ওয়াকফকৃত কবরস্থানে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা কিংবা তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যেমন আবাদী জমিতে পরিবর্তণ করে ফসল আবাদ করা কিংবা নিজের বাগান লাগিয়ে তা থেকে উপকৃত হওয়া কিংবা কবরস্থানের কিছু অংশ পরিষ্কার করে তাতে ধান-গম শুকাতে দেওয়া ইত্যাদি কাজ শরীয়া বহিভূর্ত।
শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়া (রাহে:) বলেন: যে মুসলিমদের কবরস্থানে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে কিছু নির্মাণ করবে সে জবরদখলকারী। এটাই চার মাযহাব ও অন্যদের মত। [আল ইখতিয়ারাত আল ফিকহিয়্যাহ পৃ: ১৩২]
সউদী স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড বলেন: যে জমিতে মৃতদের দফন করা হয়েছে, তা সেই সকল মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে ওয়াকফ বিবেচিত হবে। তাই কারো জন্য এটা জায়েয নয় যে, সে তার উপর নিজ উদ্দেশ্যে বাসস্থান নির্মাণ করবে; সে গরিব ব্যক্তি হোক কিংবা ধনি। আর সে না ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করতে পারবে; যদিও তা পতিত হয়ে পড়ে থাকে। আল্লাহর যমীন প্রশস্ত এবং হালাল পথও স্পষ্ট ও অনেক। তাই মুসলিমকে সাধ্যমত হালাল পথে রোযগার করা কাম্য আর তার সংখ্যা অনেক। আর তার উপর আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা থেকে দূরে থাকা উচিৎ। (যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার জন্য রাস্তা সুগম করে দেন এবং তাকে এমন স্থান থেকে রুযির ব্যবস্থা করে দেন যার সে ধারনাই করতে পারে না।) [সউদী স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড ৯/১২৮ ফতোয়া নং ৮২০]
উপরোক্ত ফতোয়ার আলোকে স্পষ্ট হয় যে, আমাদের সমাজের ঐ সব ব্যক্তি মালিকানাধিন স্থান যা কবরস্থানরূপে দেখা যায়। যাতে কবর থাকে বা কবরের চিহ্ন থাকে বা বয়স্ক লোকেরা সাক্ষ্য দেয় যে, এখানে আমরা কবর দেখেছি, তাহলে সে সব স্থান ঐ সকল মাইয়্যেতের উপর ওয়াকফ ধরা হবে; যদিও সে স্থান কবরস্থান নামে রেজিষ্টার না থাক। সে সব স্থানের মালিকদের ধরে নিতে হবে যে, তাদের নেক পিতৃপুরুষেরা তা মুসলিম ভাইদের কবর দেয়ার জন্য সেই জায়গা দিয়েছিল। তাই তা সে সকল মৃত ভাইদের জন্য ওয়াকফ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং কাগজ-পত্রে কবরস্থান নামে রেকোর্ড নেই বলে, তা ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করা না জায়েয হবে এবং পাপের কারণ হবে।
কবরস্থানের আসলরূপ হচ্ছে, তা উন্মুক্ত ও খোলা রাখা। যেমনটি নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে বাকী কবরস্থান ছিল। কিন্তু মানুষ যদি কবরস্থানের সম্মান না বুঝে এবং তার ভিতর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বানায় কিংবা তাতে পেশাব পায়খান করে কিংবা গরু ছাগল চরানোর স্থান করে নেয় কিংবা তাতে খেলা-ধুলা করে কিংবা কবরস্থানের জমি বেদখল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তা ঘিরে রাখাই উত্তম।
কবরস্থান ঘেরার সময় অবশ্য খেয়াল রাখতে হবে যে, তা যেন সাধারণ হয়, দেয়াল ও দরজায় কারুকার্য না করা হয় এবং ব্যাপক অর্থ কড়ি ব্যায় না করা হয়। অনুরূপ দেওয়াল যেন এত বেশী উঁচু না করা হয়, যাতে তার পাশ দিয়ে চলাচলকারীরা ভিতরে কবর দেখতে না পায়। কারণ জীবিতদের কবর দেখতে পাওয়া কাম্য যেন তারা সেই কবরবাসীদের দেখে আখেরাত স্মরণ করে। পরক্ষণে কেউ বেশী উঁচু করে ঘিরে দিলে এই শারঈ উদ্দেশ্য বিনষ্ট হবে।
উল্লেখ্য, কবরস্থান ঘেরার জন্য সরকারী সাহায্য নিতে কোনো শারঈ নিষেধাজ্ঞা নেই।
একাধিক উলামা ও ফুকাহা বলেছেন: মাইয়্যেতকে তার নিজ গৃহে কিংবা তার খামারে কিংবা তার নিজ মালিকানাধিন স্থানে দফন করা মাকরূহ (অপছন্দনীয় কাজ)। [দেখুন, আল মুদাওয়ানাহ ১/২৫৫,আল মুগনী ৩/৪৪১, আহকামুল মাকবারাহ/১১]
যদি কেউ অসিয়ত করে যে, তাকে যেন তার গৃহে দফন করা হয়, তাহলে তার অসিয়ত বাতিল হয়ে যাবে। [তাকমিলাতুল বাহরির রায়িক্ব ৯/৩০১] ইমাম নাওয়াভী কবরস্থানে দফন করাকে ঐক্যমতানুযায়ী উত্তম বলেছেন। [আল মাজমূ ৫/১৭৪] কারণ নিজ গৃহে দফন হওয়া এটা নবীগণের বিশেষ সুন্নাত,তাদের যেখানে মৃত্যু হয় সেখানেই তাদের দফন করা হয়। আয়েশা রাযি: হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন আল্লাহর রাসূল মারা যান তখন লোকেরা মতভেদ করলো যে, তাকে কোথায় দফন করা হবে? তখন আবু বাকর রাযি: বললেন: আমি আল্লাহর রাসূলের নিকট থেকে শুনেছি এবং তা ভুলে যায়নি। “আল্লাহ তাআলা যখন কোনো নবীর রূহ কবজ করেন তখন সেই স্থানেই কবজ করেন যেখানে তিনি তাকে দফন করা পছন্দ করেন।” তাই তাঁকে তাঁর বিছানার স্থানে দফন করো। [তিরিমিযী নং ১০৩৯, আহকামুল জানায়িয পৃ: ১৩৭]
হাফিয ইবনু রাজাব ইমাম আহমাদের বরাতে বলেন, ইমাম আহমাদ বলেছেন: আমি তাকে ঘরে দফন করা অপছন্দ মনে করি; বরং তাকে মুসলিমদের সাথে কবরস্থানে দফন করা হবে। কেউ যদি নিজ বাড়িতে দফন করার অসিয়ত করে মারা যায়, তার সম্পর্কে তিনি বলেন: মুসলিমদের সাথে তাকে কবরস্থানে দফন করা হবে। যদি তাকে তার ঘরে দফন করা হয়, তাহলে ওয়ারিসদের কষ্ট দেওয়া হবে। অন্যান্য মুসলিমদের সাথে কবরস্থানে দফন করা আমার নিকট বেশী পছন্দনীয়”। [ফাতহুল বারী, ইবনু রাজাব ৩/২৩৩, আত তাযকিরা ফী আহকামিল মাকবারাহ, আব্দুর রাহমান বিন সাআদ শিথরী পৃ: ১৩]
ওয়া স্বল্লাল্লাহু আল নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ তাসলীমান কাসীরা।