Dawah wa Tablig Islamic Website

Help Line = Mob no. +8801783385346 :: Email Address = shalampb@gmail.com || To see the Arabic (Saudi Print) correctly use "Mozilla Firefox" Browser.
Page 2

INDEX

  1. বিশেষ্যের কারক চিহ্ন
  2. ইছমে মুতামাক্কিনের প্রকারভেদ
  3. বর্তমান ও ভবিষ্যত কালের কারক চিহ্ন
  4. কারক চিহ্নের কার্যকারক শক্তির বর্ণনা
  5. আমলকারী অব্যয় পদ
  6. বর্তমান ও ভাবিষ্যত কালিন ক্রিয়ার মধ্যে আমলকারী অব্যয়।
  7. ক্রিয়া কার্যকারণ শক্তির বিবরণ
  8. কর্ম ও কর্তার বিবরণ
  9. কর্তার প্রকারভেদ বা কর্তার প্রকরণের বিবরণ
  10. সকর্মক ক্রিয়ার প্রকারভেদ
  11. অসমাপিকা ক্রিয়ার বর্ণনা
  12. নৈকট্য বোধক ক্রিয়ার বিবরণ
  13. প্রশংসা ও নিন্দাজ্ঞাপক ক্রিয়াসমূহ।
  14. আশ্চর্যবোধক ক্রিয়া সমূহের বিবরণ
  15. কার্যকারক শক্তি সম্পন্ন বিশেষ্যের বর্ণনা
  16. অনুগামী পদ সমূহের আলোচনা
  17. রূপান্তরিত ও রূপান্তরহীনের বর্ণনা
  18. কার্যকারণশক্তি হীন অব্যয় পদের বিবরণ
  19. বহির্ভূতের কারক চিহ্ন

Page 2

দশম পাঠ
إِعْرَابُ الْإِسْم
বিশেষ্যের কারক চিহ্ন

সংজ্ঞাঃ আমিলের কারণে যে সমস্ত عَلَامَتٌ বা চিহ্ন দ্বারা إِسْمٌ বা বিশেষ্য পদের শেষ অক্ষরে হরকতের বা স্বরচিহ্নের বিভিন্ন রূপ হয় তাহাকে إِعْرَابٌ বা কারক চিহ্ন বলে। অর্থাৎ আমিলের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় إِسْمٌ ও صِفَتٌ এর শেষাক্ষরে যে কারক চিহ্ন ফাতাহ, যুম্মাহ, কাসরাহ দেওয়া হয়, তাহাকে إِعْرَابٌ বা কারক চিহ্ন বলে। إِعْرَابٌ এর আমিল এর অবস্থা তিন রকম। যথা – ১। رَفْعٌ কর্তৃকারক, যেমনঃ رَجُلٌ (এখানে শব্দের শেষ অক্ষরে যম্মা বা পেশ বিশিষ্ট হয়েছে) ২। نَصْبٌ কর্মকারক, যেমনঃ رَجُلً (এখানে শব্দের শেষ অক্ষরে ফাতাহ বা যবর বিশিষ্ট হয়েছে) ৩। جَرٌ সম্বন্ধ পদ, যেমনঃ যেমনঃ رَجُلٍ (এখানে শব্দের শেষ অক্ষরে কাসরা বা জের বিশিষ্ট হয়েছে)। কর্তৃকারক যুক্ত শব্দকে مَرْفُوع , কর্মকারক যুক্ত শব্দকে مَنْصُوب বলে এবং সম্বন্ধ পদ যুক্ত শব্দকে مَجْرُور বলে। যে সব শব্দ ضُمَّة (উর্দূ বা ফর্সিতে পেশ) বিশিষ্ট তাহাকে মাযমূম বলে, فَتَحْة (উর্দূ বা ফর্সিতে যবর) বিশিষ্ট তাহাকে মাফতূহ বলে, كَسْرَة (উর্দূ বা ফর্সিতে যের) বিশিষ্ট তাহাকে মাকসূর বলে এবং جَزم বা সূকুন বিশিষ্ট হলে তাহাকে مَجْزُوم মাজযুম বা সাকিন বলে। নিম্নে ইছমে মুতামাক্কিনের প্রকারভেদ বর্ণনা করা হল।

أَقْسَامُ الْإِسْمِ الْمُتَمَكِّنِ
ইছমে মুতামাক্কিনের প্রকারভেদ

إِعْرَا বা কারক চিহ্ন গ্রহনের বিবেচনায় إِسْم مُتَمَكِّن মোট ১৬ প্রকার এবং ইহাদের إِعْرَاب ৯ প্রকার হইয়া থাকে। নিম্নে إِعْرَاب এর প্রকার ও তৎসংশ্লিষ্ট إِسْم مُتَمَكِّن এর বিবরণ দেয় হইল।

০১। প্রথম প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে ضُمَّة (যুম্মাহ), نَصْب বা কর্মকারকে فَتَحَة (ফতাহ) এবং جَر বা সম্বন্ধ পদে كَسْرَة হইবে। এই প্রকার إِعْرَار এর জন্য ৩ প্রকার إِسْم مُتَمَكِّن আছে। যথাঃ

(১) مُفْرَد مُنْصَرِف صَحِيح ইহা এমন বিশেষ্য যার শেষ অক্ষরে হরফে ইল্লাত তথা ي – و – ا নাই এবং একক ও রূপান্তরশীল। যথাঃ- ক. رَفْع কর্তৃকারকে – جَاءَنِى زَيْدٌ – যয়েদ আমার নিকট আসল, এখানে যায়েদ فَاعِلٌ কর্তা এর শেষ অক্ষরে ضُمَّة হয়েছে। খ. نَصْب কর্মকারকে – رَأَيْتُ زَيْدًا আমি যায়েদকে দেখলাম। এখানে যায়েদ مَفْعُولٌ কর্ম এবং এর শেষ অক্ষের فَتَحة হয়েছে। গ. جَر সম্বন্ধ অবস্থায় – مَرَرْتُ بِزَيْدٍ আমি যায়েদের সহিত গেলাম। এখানে যায়েদ مُضَاف إِلَيه সম্বন্ধিত পদ, ইহার শেষ বর্ণে كَسْرَة হয়েছে।

(২) مُفْرَد مُنْصَرِف جَار مَجْرِي صَحِيح ইহা এমন বিশেষ্য যার শেষ বর্ণ সহীহ এর স্থলাভিশিক্ত অর্থাৎ و বা ي হয় এবং এর পূর্ব বর্ণ জযম যুক্ত বা সাকিন থাকে আর একক ও রূপান্তরশীল। যথাঃ- رَفْع কর্তৃকারকে – جَاءَنِى دَلْوٌ আমার নিকট বালতি আসিল।, نَصْب কর্মকারকে – رَأَيْتُ دَلْوًا আমি বালতি দেখিলাম, جَر সম্বন্ধ অবস্থায় – مَرَرْتُ بِدَلْوٍ আমি বালতিসহ গেলাম।

(৩) جُمْع مُكَسَّر مُنْصَرِف ইহা অনিয়মিত বহুবচন। যথাঃ- رَفْع কর্তৃকারকে – جَاءَنِى رِجَالٌ – আমার নিকট লোকগুলি আসিল। نَصْب কর্মকারকে – رَأَيْتُ رِجَالً আমি লোকগুলোকে দেখিলাম। جَر সম্বন্ধ অবস্থায় – مَرَرْتُ بِرِجَالٍ আমি লোকগুলোর সহিত গেলাম।

২। দ্বিতীয় প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে ضُمَّة (যুম্মাহ) হইবে। نَصْب বা কর্মকারকে ও جَر বা সম্বন্ধ পদে উভয় অবস্থায় كَسْرَة হইবে। ইহার জন্য ১ প্রকার ইসম মুতামাক্কিন আছে। যথা-

(৪) جَمْع مُؤَنَّث سَالِم – স্ত্রীলিঙ্গে নিয়মিত বহুবচন। উদাহরণ- رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى مُسْلِمَاتٌ আমার নিকট মুসলিম মহিলাগণ আসিল। এখানে فَاعِلٌ বা কর্তা مُسْلِمَاتٌ এর শেষ বর্ণে ضُمَّة হয়েছে। نَصْب বা কর্মকারকে – رَأَيْتُ مُسْلِمَاتٍ – আমি মুসলিম মহিলাগণকে দেখিলাম। এখানে مَفْعُولٌ বা কর্ম مُسْلِمَاتٍ এর শেষ বর্ণে كَسْرَة হয়েছে। جَر সম্বন্ধ অবস্থায় – مَرَرْتُ بِمُسْلِمَاتٍ – আমি মুসলিম মহিলাগনের সাথে গেলাম, এখানে مُضَاف إِلَيه সম্বন্ধিত পদ مُسْلِمَاتٍ এর শেষ বর্ণেও كَسْرَة হয়েছে।

৩। তৃতীয় প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে ضُمَّة (যুম্মাহ) হইবে। نَصْب বা কর্মকারকে ও جَر বা সম্বন্ধ পদে উভয় অবস্থায় فَتَحة হইবে। ইহার জন্য ১ প্রকার ইসম মুতামাক্কিন আছে। যথা-

(৫) إِسْم غَير مُنْصَرِف বা রূপান্তরহীন বিশেষ্য অর্থাৎ যে বিশেষ্যের মধ্যে أَسْبَابِ مَنِعَصَّرف এর কমপক্ষে দুইটি سَبَب হয় তাহাকে إِسْم غَير مُنْصَرِف বলে। পরে এ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হবে। এই গুলির শেষে তানবীন ও কাসরা হয় না। উদাহরণ- رَفْع অবস্থায়- جَاءَنِى عُمَرُ – আমার নিকট উমার আসিল, এখানে কর্তা عُمَرُ এর শেষ বর্ণে ضُمَّة হয়েছে, نَصْب অবস্থায় – رَأَيْتُ عُمَرَ – আমি উমরকে দেখলাম। এখানে কর্ম عُمَرَ এর শেষ বর্ণে فَتَحة হয়েছে। جَر বা সম্বন্ধ অবস্থায় – مَرَرْتُ بِعُمَرَ – আমি উমরের সাথে গেলাম। এখানে সম্বন্ধিত পদ عُمَرَ এর শেষ বর্ণে فَتَحَة হয়েছে।

৪। চতুর্থ প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে و দ্বারা হইবে। نَصْب বা কর্মকারকে ا দ্বারা হইবে এবং جَر বা সম্বন্ধ পদে অবস্থায় ي দ্বারা হইবে। এই প্রকার ইরাবের জন্য ১ প্রকার إِسْم مُتَمَكِّن আছে। যথা-

(৬) أَسْمَاءِ سِتَّة مُكَبَّرَة ছয়টি ডাক নাম। ১. أَبٌ – পিতা, ২. أَخٌ – ভাই, ৩. حَمٌ – দেবর, ৪. هَنٌ – লজ্জার স্থান, ৫. فَمٌ – মুখ, ৬. ذُوالْمَالِ – অধিপতি। এই ছয়টি নামকে أَسْمَاءِ سِتَّة مُكَبِّرة বলে। যখন ইহারা يَاء مُتَكَلِّم ব্যতিত অন্য কোন পদের প্রতি مُضَاف বা সম্বন্ধ হয় তখন ইহাদের إِعْرَاب বা কারক চিহ্ন رَفْع অবস্থায় و দ্বারা হইবে। যথাঃ جَاءَ أَبُوكَ – তোমার পিতা আসল, نَصْب বা কর্মকারকে ا হইবে। যথা- رَأَيْتُ أَبَاكَ – আমি তোমার পিতাকে দেখলাম, جَر বা সম্বন্ধ পদে – ي হইবে। যথাঃ مَرَرْتُ بِأَبِيكَ – আমি তোমার পিতার সহিত গেলাম।

০৫। পঞ্চম প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে ا ও উহার পূর্বের বর্ণ فَتَحَة হইবে। نَصْب বা কর্মকারকে ও جَر বা সম্বন্ধ পদে উভয় অবস্থায় ي হইবে এবং উহার পূর্বের বর্ণে فَتَحة হইবে। এই প্রকার ইরাবের জন্য ৩ প্রকার إِسْم مُتَمَكِّن আছে। যথাঃ

(৭) مُثَنَّى বা দ্বি-বচন। যথা- رَضُلَانِ – দুইজন পুরুষ। رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى رَجُلَانِ – আমার নিকট দুইজন পুরুষ লোক আসিল, এখানে কর্তা রাযুলা-নে আলিফ হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ফাতাহ হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ رَجُلَيْنِ – আমি দুইজন পুরুষকে দেখিলাম এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ بِرَجُلَيْنِ এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ رَجُلَيْنِي যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে فَتَحه হয়েছে।

(৮) كِلْتَا وَ كِلَا – উভয়ই (পুরুষ) এবং উভয়ই (স্ত্রী)। ইহারা যখন জমির বা সর্বনামের দিকে সম্বন্ধ বা مُضَاف হইবে তখন ইহাদের দ্বি-বচনের কারকচিহ্ন হইবে। উদাহরণ – رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى كِلَاهُمَا وَكِلْتَاهُمَا – আমার নিকট তারা উভয়ই (পুরুষ) এবং তারা উভয়ই (স্ত্রী)আসিল, এখানে কর্তা كِلَاهُمَا وكِلْتَاهُمَا তে আলিফ হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ফাতাহ হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ كِلَيْهِمَا وَكِلْتَيْهِمَا – আমি তাদের উভয়ই (পুরুষ) কে ও তাদের উভয়ই (স্ত্রী) কে দেখিলাম। এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ كِلَيْهِمَا وَكِلْتَيْهِمَا আমি তাদের উভয়ই (পুরুষ) ও তাদের উভয়ই (স্ত্রী) এর সহিত গেলাম, এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ كِلَيْهِمَا وَكِلْتَيْهِمَاي যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে فَتَحه হয়েছে।

(৯) إِثْنَتَانِ وَ إِثْنَانِ – দুইজন (পুরুষ) ও দুইজন (স্ত্রী)। উদাহরণ – رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى إِثْنَانِ وَإِثْنَتَانِ – আমার নিকট দুইজন (পুরুষ) এবং দুইজন (স্ত্রী)আসিল, এখানে কর্তা إِثْنَانِ وَإِثْنَتَانِ তে আলিফ হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ফাতাহ হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ إِثْنَيْنِ وَإِثْنَتَيْنِ – আমি দুইজন (পুরুষ) কে ও দুইজন (স্ত্রী) কে দেখিলাম। এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ بِإِثْنَيْنِ وَإِثْنَتَيْنِ আমি দুইজন (পুরুষ) ও দুইজন (স্ত্রী) এর সহিত গেলাম, এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ إِثْنَيْنِ وَإِثْنَتَيْنِي যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে فَتَحه হয়েছে।

৬। ষষ্ঠ প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে و ও উহার পূর্বের বর্ণে ضُمَّة হইবে। نَصْب বা কর্মকারকে ও جَر বা সম্বন্ধ পদে উভয় অবস্থায় ي হইবে এবং উহার পূর্বের বর্ণে كَسْرَة হইবে এবং শেষ বর্ণ ن হইলে তা فَتَحة বিশিষ্ট হইবে। এই প্রকার ইরাবের জন্য ৩ প্রকার إِسْم مُتَمَكِّن আছে। যথা-

১০) جُمْع مُذَكَّر سَالِمٌ নিয়মিত বহুবচন পুংলিঙ্গ। যথা- رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى مُسْلِمُونَ – আমার নিকট মুসলিম পুরুষগণ আসিল, এখানে কর্তা مُسْلِمُونَ তে و হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ضُمَّة হয়েছে। শেষ বর্ণ নুন থাকায় তা ফাতাহ হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ مُسْلِمِينَ – আমি মুসলিম (পুরুষ) গণকে দেখিলাম এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ بِمُسْلِمِينَ – আমি মুসলিম (পুরুষ) গণের সহিত গেলাম, এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ مُسْلِمِينَي যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে كَسْرَة হয়েছে এবং শেষ বর্ণ ن হওয়ায় তাতে فَتَحة হয়েছে।

১১) أُولُو – অধিকারী। উদাহরণঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى َأُولُوالْمَالِ – আমার নিকট সম্পদশালিগণ আসিল, এখানে কর্তা أُولُوالْمَال তে و হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ضُمَّة হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ أُولِى الْمَالِ – আমি সম্পদশালিগণকে দেখিলাম এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ بِأُلِي الْمَالِ – আমি সম্পদশালিগণের সহিত গেলাম, এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ أُولِى الْمَالِى যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে كَسْرَة হয়েছে।

১২) عِشْرُونَ – বিশ হইতে تِسْعُونَ – নব্বই পর্যন্ত দশক সংখ্যাগুলি। যথা- رَفْع বা কর্তৃকারকে – جَاءَنِى عِشْرُونَ رَجُلًا – আমার নিকট বিশজন লোক আসিল, এখানে কর্তা عِشْرُونَ رَجُلًاو হয়েছে ও এর পূর্ব বর্ণে ضُمَّة হয়েছে। শেষ বর্ণ নুন থাকায় তা ফাতাহ হয়েছে। نَصْب – কর্মকারকের অবস্থায়ঃ رَأَيْتُ عِشْرِىنَ رَجُلًا – আমি বিশজন লোককে দেখিলাম এবং جَر – সম্বন্ধ, অবস্থায় مَرَرْتُ بِعِشْرِينَ رَجُلًا – আমি বিশজন লোকের সহিত গেলাম, এই দুই অবস্থাতেই কর্ম ও সম্বন্ধিত পদ عِشْرِينَ رَجُلًاي যুক্ত হয়েছে এবং এর পূর্ব বর্ণে كَسْرَة হয়েছে এবং শেষ বর্ণ ن হওয়ায় তাতে فَتَحة হয়েছে।

৭। সপ্তম প্রকারঃ رَفْع অবস্থায়, উহ্য যুম্মাহ , نَصْب অবস্থায় উহ্য ফাতাহ, এবং جَر অবস্থায় উহ্য কাস্‌রা এর সাথে হইবে। ইহার জন্য মাত্র ২ প্রকার إِسم مُتَمَكِّن আছে। যথা-

১৩) إِسْم مَقْصُور – যে إِشْم এর শেষ বর্ণ أَلِف مَقْصُورَة বা হ্রস্ব আলিফযুক্ত হয় তাহাকে إِسْم مَقْصُورة বলে। যথা- مُوسَٰى বা عِيسَٰى । আর ইহার ইরাব সর্বদাই উহ্য থাকিবে। যথা- رَفْع বা কর্তৃকারকে جَاءَنِى مُوسَٰى – আমার নিকট মুসা আসিল, نَصْب অবস্থায় বা কর্মকারকে رَأَيْتُ مُوسَٰى – আমি মুসাকে দেখিলাম। جَر – সম্বন্ধ অবস্থায় مَرَرْتُ بِمُوسَٰى – আমি মুসার সাথে গেলাম। এখানে সর্বাবস্থায় মুসার ইরাব উহ্য আছে।

১৪) ইহা এমন إِسْمٌ যা يَاء مُتَكَلِّم এর দিকে مُضَاف হইবে, তবে ইসমটি جَمْع مُذَكَّر سَالِم হইবে না। যথা- غُلَامِى – আমার কৃতদাস। উদাহরণ- رَفْع বা কর্তৃকারকে جَاءَنِى غُلَامِى – আমার নিকট আমার কৃতদাস আসিল, نَصْب অবস্থায় বা কর্মকারকে رَأَيْتُ غُلَامِى – আমি আমার কৃতদাসকে দেখিলাম। جَر – সম্বন্ধ অবস্থায় مَرَرْتُ بِغُلَامِى – আমি আমার কৃতদাসের সাথে গেলাম। এখানে সর্বাবস্থায় غُلَامِى এর ইরাব উহ্য আছে।

৮। অষ্টম প্রকারঃ رَفْع বা কর্তৃকারকে হইবে উহ্য ضُمَّة এর সাথে, نَصْب বা কর্মকারক হইবে, প্রকাশ্য فَتَحة এর সাথে এবং جَر হইবে উহ্য كَسرة এর সাথে। ইহার জন্য ১ প্রকার ইসম আছে। যথা-

১৫) إِسْم مَنْقُوصٌ – যে ইস্‌ম এর শেষ বর্ণ ى হয় এবং এর পূর্ববর্ণ كَسْرَة যুক্ত হয়, তাহাকে إِسْمٌ مَنْقُوصٌ বলে। যেমন- ٱلْقَاضِى – বিচারক। উদাহরণ –رَفْع বা কর্তৃকারকে جَاءَنِى ٱلْقَاضِى আমার নিকট বিচারক আসিল, نَصْب বা কর্মকারকে رَأَيْتُ ٱلْقَاضِىَ আমি বিচারককে দেখলাম, جَر বা সম্বন্ধ অবস্থায় مَرَرْتُ بِٱلْقَاضِى – আমি বিচারকের সাথে গেলাম।

৯। নবম প্রকারঃ رَفْع হইবে, উহ্য وَاو এর সাথে, نَصْبجَر হইবে প্রকাশ্য يَاء – এর সাথে এবং এর পূর্ববর্ণ হইবে كَسْرَة যুক্ত।

১৬) جُمْع مُذَكَّر سَالِم এর জন্য নির্দিষ্ট যাহা يَاء مُتَكَلِّم এর প্রতি مُضَاف হইবে। উদাহরণ- رَفْع অবস্থায় – جَاءَنِى مُسْلِمِىَّ – আমার নিকট আমার অনুগত ব্যক্তিগণ আসল, শব্দটি মূলত مُسْلِمُونَ ছিল, এর সাথে يَاءَ مُتَكَلِّم যুক্ত হওয়ায় مُسْلِمُويَ হইল এবং ইহা তা’লীল হওয়ায় مُسْلِمِىَّ হয়েছে। نَصْب অবস্থায় হইবে رَأَيْتُ مُسْلِمِىَّ – আমি আমার অনুগত ব্যক্তিগণকে দেখিলাম, আর جَر অবস্থায় مَرَرْتُ بِمُسْلِمِىَّ আমি আমার অনুগত ব্যক্তিগণের সহিত গেলাম।

مُسْلِمِىَّ শব্দটি مُسْلِمُونَ ىَ ছিল। ইহাকে যখন يَاء مُتَكَلِّم বা উত্তমপুরুষের ইয়া এর প্রতি مُضَاف সম্বন্ধ করা হইয়াছে তখন নিয়মানুযায়ী নুনটি বিলুপ্ত হইয়াছে। মনে রাখিবেঃ إِضَافت করার সময় দ্বিবচন ও বহুবচনের নুন বিলুপ্ত হয়- ফলে এখানে مُسْلِمُو ىَ হইয়াছে। কন্তু আরবী ভাষায় যখন দুইটি হরফে ইল্লত একত্র হয় এবং একটি হরকাত বিশিষ্ট ও অপরটি সাকিন হয় তখন সাকিন হরফের ইল্লতটি হারাকাত বিশিষ্ট হরফে ইল্লতের দ্বারা পরিবর্তন হইয়া যায়। এ জন্য ওয়াওকে ইয়া দ্বারা পরিবর্তন করিয়া ইয়াকে ইয়ার মধ্যে ইদগাম বা সন্ধি করা হয়। এরপর মীমের পেশকে ইয়ার সাথে সঙ্গতি বা সামঞ্জস্য বিধানের জন্য কাসরা দ্বারা পরিবর্তন করাতে مُسْلِمِىَّ হয়।


একাদশ পাঠ
إِعْرَابُ الْفِعْلِ الْمُضَارِع
বর্তমান ও ভবিষ্যত কালের কারক চিহ্ন

فِعْل مُضَارِع এর إِعْرَاب বা বর্তমান ও ভবিষ্যত কালের কারক চিহ্ন তিন প্রকার। যথাঃ

০১। رَفَع (রফা) যম্মা বা পেশ ـُ ২। نَصْب (নছব) ফাতাহ বা যবর ـَ ৩। جَزْم (জযম) বা সুকুন ـْ হসন্ত চিহ্ন। إعراب এর অনুপাতে বা এরাব দিবার নিয়মানুযায়ী فَعِل مُضَارِع চারি ভাগে বিভাক্ত। যথাঃ

০২। مُضَارِع مُفْرَد যাহা مُعْتَلْ وَاؤ বা مُعْتَلْ يَاء হয়। অর্থাৎ মুযারে -এর একবচনের শেষ অক্ষরে وَاؤ অথবা يَاء এবং ضَمِير بَارز مَرْفُوع তখন ইহার ارَاب হইবে حَالَت رَفع তে উহ্য যম্মাহ, حَالَت نَصب এ প্রকাশ্য ফাতাহ, এবং حَالَت جَزم এ লাম কলিমা লোপ করিতে হইবে। উদাহরণঃ حَالَت رَفع এর অবস্থায় হইবে هُوَ يَغْزُو وَيَرْمِى অর্থঃ সে যুদ্ধ করিবে এবং তীর নিক্ষেপ করিবে। حَالَت نَصب এর অবস্থায় لَن يَّغْزُووَ لَن يَرْمِىَ অর্থঃ সে কখনো যুদ্ধ করিবেনা এবং সে তীর নিক্ষেপ করিবেনা। حَالَت جَزم এর অবস্থায় হইবে لَمْ يَغْزُ وَلَمْ يَرْمِ অর্থঃ সে যুদ্ধ করে নাই এবং তীর নিক্ষেপ করে নাই, ইত্যাদি।

০৩। مُضَارِع مُفْرَد যাহা مُعتل أَلِف অর্থাৎ যদি مُضَارع এর একবচনের শেষ অক্ষর আলিফ হয়। যথাঃ يَرْضَىٰ ইহার حَالَت رَفع তে উহ্য যম্মাহ, حَالَت نَصب এর স্থলে উহ্য যবর হইবে। এবং حَالَت جَزم এ লাম কলিমা হযফ হইবে। উদাহরণঃ حَالَت رَفع বা কর্তৃকারকে হইবে هُوَ يَرْضَىٰ অর্থঃ সে সন্তুষ্ট হয় বা হইবে, حَالَت نَصب বা কর্মকারকে হইবে لَن يَّرْضَىٰ অর্থঃ সে কখনো সন্তুষ্ট হইবে না। حَالَت جَزم এর অবস্থায় لَمْ يَرْضَ অর্থঃ সে সন্তুষ্ট হয় নাই, ইত্যাদি।

০৪। فعل مضارع চাই صَحِيح হউক অথবা مُعْتَل হউক فعل مضارع যদি তাহাতে প্রকাশ্য যমির ও তাছনিয়াহ এবং জমার নুন সমূহ যুক্ত হয় তবে ইহার ইরাব বা কারক চিহ্ন رَفَع স্থলে নুন অপরিবর্তিত থাকিবে, نَصْب এর স্থলে নুন বিলোপ করিতে হইবে এবং جَزْم এর স্থলেও নুন বিলোপ করিতে হইবে।

صِيغَة
শব্দরূপ
فعل مُضَارِع
ভবিষ্যত/বর্তমান কাল
حَالت رفع
নূনে ইরাব পারিবতর্ণ হবে না
حَالت نَصب
নূনে ইরাব উহ্য থাকিবে
حَالت جَزم
নূনে ইরাব উহ্য থাকিবে
تثنية مضارع صحيح هُمَا يَضْرِبَانِ
তাহারা (২ জন) মারিতেছে/মারিবে
لَن يَضْرِبَا
তাহারা (২ জন) কখনো মারিবে না
لَمْ يَضْرِبَا
তাহারা (২ জন) মারে নাই
معتل لام، واؤ هُمَا يَغْزُوَانِ
তাহারা (২ জন) যুদ্ধ করিতেছে/করিবে
لَن يَغْزُوَا
তাহারা (২ জন) কখনো যুদ্ধ করিবে না
لَمْ يَغْزُوَا
তাহারা (২ জন) যুদ্ধ করে নাই
مُعتل ياء هُمَا يَرْمِيَانِ
তাহারা (২ জন) তীর নিক্ষেপ করিতেছে/করিবে
لَن يَرْمِيَا
তাহারা (২ জন) কখনো তীর নিক্ষেপ করিবে না।
لَمْ يَرْمِيَا
তাহারা (২ জন) তীর নিক্ষেপ করে নাই।
مُعتل الف هُمَا يَرْضِيَانِ
তাহারা (২ জন) সন্তুষ্ট হইতেছে/হইবে
لَن يَرْضَيَا
তাহারা (২ জন) কখনো সন্তুষ্ট হইবে না
لَمْ يَرْضَيَا
তাহারা (২ জন) সন্তুষ্ট হয় নাই
جُمع مذكر غائب صحيح هُمْ يَضْرِبُونَ
তাহারা (সকল পুং) মারিতেছে/মারবে
لَن يَضْرِبُوا
তাহারা (সকল পুং) কখনো মারবে না
لَمْ يَضْرِبُوا
তাহারা (সকল পুং) মারে নাই
معتل لام، واؤ هُمْ يَغْزُونَ
তাহারা (সকল পুং) যুদ্ধ করিতেছে বা করিবে
لَن يَغْزُوا
তাহারা (সকল পুং) কখনো যুদ্ধ করিবে না
لَمْ يَغْزُوا
তাহারা (সকল পুং) যুদ্ধ করে নাই
مُعتل ياء هُمْ يَرْمُونَ
তাহারা (সকল পুং) তীর নিক্ষেপ করিতেছে বা করিবে
لَن يَرْمُوا
তাহারা (সকল পুং) কখনো যুদ্ধ করিবে না
لَمْ يَرْمُوا
তাহারা (সকল পুং) যুদ্ধ করে নাই
مُعتل الف هُمْ يَرْضَوْنَ
তাহারা (সকল পুং) সন্তুষ্ট হইতেছে/হইবে
لَن يَرْضَوْا
তাহারা (সকল পুং) কখনো সন্তুষ্ট হইবে না
لَمْ يَرْضَوْا
তাহারা (সকল পুং) সন্তুষ্ট হয় নাই
جُمع مذكر حاضر صحيح أَنتُمْ تَضْرِبُونَ
তোমরা (সকল পুং) মারিতেছ/মারবে
لَن تَضْرِبُوا
তোমরা (সকল পুং) কখনো মারিবে না
لَمْ تَضْرِبُوا
তোমরা (সকল পুং) মারে নাই
معتل لام، واؤ أَنتُمْ تَغْزُونَ
তোমরা (সকল পুং) যুদ্ধ করিতেছ/করিবে
لَن تَغْزُوا
তোমরা (সকল পুং) কখনো যুদ্ধ করিবে না।
لَمْ تَغْزُوا
তোমরা (সকল পুং) যুদ্ধ কর নাই
مُعتل ياء أَنتُمْ تَرْمُونَ
তোমরা (সকল পুং) তীর নিক্ষেপ করিতেছ/করিবে
لَن تَرْمُوا
তোমরা (সকল পুং) কখানো তীর নিক্ষপ করিবে না।
لَمْ تَرْمُوا
তোমরা (সকল পুং) তীর নিক্ষেপ কর নাই
مُعتل الف أَنتُمْ تَرْضَوْنَ
তোমরা (সকল পুং) সন্তুষ্ট হইতেছ/হইবে
لَن تَرْضُوْا
তোমরা (সকল পুং) কখনো সন্তুষ্ট হইবে না।
لَمْ تَرْضُوا
তোমরা (সকল পুং) সন্তুষ্ট হও নাই
واحد مُؤنث حاضر صحيح أَنتِ تَضْرِبِينَ
তুমি (১জন স্ত্রী) মারিতেছ/মারিবে
لَن تَضْرِبِى
তুমি (১জন স্ত্রী) কখনো মারিবে না
لَمْ تَضْرِبِى
তুমি (১জন স্ত্রী) মার নাই।
معتل لام، واؤ أَنتِ تَغْزِينَ
তুমি (১জন স্ত্রী) যুদ্ধ করিতেছ/করিবে
لَن تَغْزِى
তুমি (১জন স্ত্রী) কখনো যুদ্ধ করিবে না
لَمْ تَغْزِى
তুমি (১জন স্ত্রী) যুদ্ধ কর নাই
مُعتل ياء أَنتِ تَرْمِينَ
তুমি (১জন স্ত্রী) তীর নিক্ষেপ করিতেছ/করিবে
لَن تَرْمِى
তুমি (১জন স্ত্রী) কখনো তীর নিক্ষেপ করিবে না।
لَمْ تَرْمِى
তুমি (১জন স্ত্রী) তীর নিক্ষেপ কর নাই
مُعتل الف أَنتِ تَرْضَيْنَ
তুমি (১জন স্ত্রী) সন্তুষ্ট হইতেছ/হইবে
لَن تَرْضَىْ
তুমি (১জন স্ত্রী) কখনো সন্তুষ্ট হইবে না
لَمْ تَرْضَىْ
তুমি (১জন স্ত্রী) সন্তুষ্ট হও নাই।

দ্বাদশ পাঠ
عَوَامِل إِعْرَاب
কারক চিহ্নের কার্যকারক শক্তির বর্ণনা

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত কারণে শব্দের শেষ বর্ণের إِعْرَاب বা স্বরচিহ্ন পরিবর্তন হয়, উহাদেরকে عَامِل বা কার্যকারক শক্তি বা পরিচালক শক্তি বলে। ইহাদের মোট সংখ্যা ৯৯ টি। ইহা দুই প্রকার। যথাঃ

০১। عَوَامِلِ لَفْظِيَّة ইহারা প্রকাশ্য শব্দ বিশেষ। ইহারা স্বয়ং অন্যান্য শব্দের উপর শক্তি (কার্য) প্রয়োগ করে।

০২। عَوَامِلِ مَعْنُويَّة ইহারা অপ্রকাশ্য পরোক্ষ কার্যকারণ, যা অন্য কোন শব্দ দ্বারা চালিত নয়। ইহারা কোন আনুমানিক শক্তি দ্বারা চালিত হয়। ইহার দুইটি উহ্য কারক শক্তি আছে। যথাঃ

(১) যে উহ্য বা আনুমানিক শক্তি কর্তৃক مُبْتَدَا এবং خَبر পদ দ্বয়ের শেষ অক্ষরে যম্মাহ বসে। যথাঃ رَاشِدٌ جَالِسٌ রাশেদ উপবিষ্ট।

(২) যে উহ্য আনুমানিক শক্তি কর্তৃক لَنْلَمْ বিহীন مُضَارِع পদের শেষ বর্ণে যম্মাহ দেওয়া হয়। যথাঃ يَنْصُرُ সে সাহায্য করে।

عَوَامِلِ لَفْظِيَّة বা প্রকাশ্য কার্যকারক শক্তি তিন ভাগে বিভক্ত। যথাঃ ১) حَرْف عَامِلة আমলকারী অব্যয় সমূহ। ২) أَفْعَال عَامِلَة বা আমলকারী ক্রিয়া সমূহ এবং ৩) أَسْمَاء عَامِلَة বা আমলকারী বিশেষ্য সমূহ। পরবর্তী অনুচ্ছেদে উপরোক্ত তিনটি ভাগকে আলাদা করে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হইল।


ত্রয়োদশ পাঠ
حَرُوفِ عَامِلَة
আমলকারী অব্যয় পদ

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত বর্ণ فعل বা إسمعمل বা কার্য কারক শক্তি প্রয়োগ করে তাহাকে حروف عاملة বলে। ইহারাও দুই ভাগে বিভক্ত। যথাঃ

১) حَرُوف عَمِلة فِى الإسم অর্থাৎ যে পদগুলি إِسم বা বিশেষ্য পদের মধ্যে আমল করে।

২) حَرُوف عَمِلَة فِى الفعل যে পদগুলি فعل বা ক্রিয়াপদের মধ্যে আমল করে।

الْحَرُوف العاملة فِى الإسم
বিশেষ্য পদে আমলকারী হরফ সমূহ

ইহারা পাঁচ প্রকার। যথাঃ

(ক) حَرف جَار বা কাসরা (যের) প্রদানকারী অব্যয় সমূহ। অর্থাৎ যে সমস্ত হরুফ أسم এর পূর্বে বসে এবং ঐ أسم টির শেষ বর্ণে কাসরা প্রদান করে তাহাকে حَرف جَار বলে। ইহার সংখ্যা সতরটি। যথাঃ

০১. ب – শপথ, দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, স্থান, সহিত, কারণ, পরিবর্তে ইত্যাদি অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ كَتَبْتُ بِالْقَلَمِ – আমি কলম দ্বারা লিখিলাম, قَدْ كَتَبْتُ بِالْقَلَمِ – আমি কলম দ্বারা লিখিয়াছি, كُنْتُ كَتَبْتُ بِالْقَلَمِ – আমি কলম দ্বারা লিখিয়াছিলাম। এ তিনিটি বাক্যের ইসম قَلَم এর শেষ বর্ণে কাসরা হয়েছে। ইসমটির পূর্বে ب হরুফটি থাকার কারণে এর শেষ বর্ণে কাসরা হয়েছে।

০২. ت – শপথ (قسم); ইহা মাত্র اللَّه শব্দের পূর্বেই ব্যবহার হয়। যথাঃ تَاللَّهِ এর অর্থঃ আল্লাহর শপথ।

০৩. ك – ন্যায় বা তুলনা অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ زَيْدٌ كَالْأَسَدِ যায়েদ সিংহের ন্যায়।

০৪. ل – জন্য এর অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ الْحَمْدُ لِلَّهِ – সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

০৫. (وَاؤ) و ‘শপথ’ অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ وَاللَّهِ – আল্লাহর শপথ।

০৬. مُذْ – অবধি, পর্যন্ত অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ مَارَأَيْتُهُ مُذْ يَوْمِ الْأَحَدِ – আমি তাহাকে রবিবার পর্যন্ত দেখিলাম না।

০৭. مُنْذُ – অবধি, পর্যন্ত অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ مَارَأَيْتُهُ مُنْذُ يَوْمِ الْأَحَدِ – আমি তাহাকে রবিবার আবধি দেখিলাম না।

০৮. خَلَا – ব্যতিত অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ خَلَا زَيْدٍ – যায়দ ব্যতিত দলটি আসিল।

০৯. عَدَا – ব্যতিত অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ عَدَا زَيْدٍ – যায়দ ব্যতিত দলটি আসিল।

১০. حَاشَا – ব্যতিত অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ حَاشَا زَيْدٍ – যায়দ ব্যতিত দলটি আসিল।

১১. رُبَّ – স্বল্পতা বা আধিক্য বুঝাতে ব্যবহার হয়। যথাঃ رُبَّ رَجُلٍ لَقِيتُهُو – আমি অনেক লোকের সহিত সাক্ষাৎ করিলাম।

১২. مِنْ – প্রারম্ভ, হইতে অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ جِئْتُ مِنَ الْفَابْنَةِ – আমি পাবনা হইতে আসিয়াছি।

১৩. فِى – মধ্যে অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ هُوَ فِى الْبَيْتِ – সে ঘরে আছে।

১৪. عَنْ – হইতে অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ رُوِىَ عَنْ حَسِينَةِ – হাসিনা হইতে বর্ণিত।

১৫. عَلَىٰ – উপরে অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ الْقَلَمُ عَلَىٰ الطَّاوِلَةِ – কলমটি টেবিলের উপরে।

১৬. حَتَّىٰ – পর্যন্ত, সহ অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ نِمْتُ الْبَارِحَةَ حَتَّىٰ الصَّبَاحِ – আমি গত রাত্রে প্রাতঃকাল পর্যন্ত ঘুমাইয়াছি।

১৭. إِلَىٰ – পর্যন্ত অর্থে ব্যবাহার হয়। যথাঃ مِنَ الْفَابْنَةِ إِلَىٰ الدَّاكَا – পাবনা হইতে ঢাকা পর্যন্ত।

(খ) حرف مشبهة بالفعل বা ক্রিয়ার সাদৃশ্য যুক্ত অব্যয় সমূহ। সাধারণত যে সকল অব্যয় (ওজন, অর্থ, এবং আমলের দিক থেকে) সকর্মক ক্রিয়া বা فعل متعدى এর সহিত সাদৃশ্য রাখে উহাদেরকে فعل বা ক্রিয়া সদৃশ্য অব্যয় বলে। এই সকল حروف বা অব্যয়গুলি ইসমকে ফাতাহ বা নছব এবং খবরকে যম্মাহ দান করিয়া থাকে। অর্থাৎ جُمْلَئ إسمية বা নামবাচক বাক্যের পূর্বে ব্যবহার হইয়া দুইটি ইসমের উপর আসিয়া একটি إِسم কে ফাতাহ বা নছব দেয় এবং অপরটিকে যম্মাহ বা রফা দেয়। নছব প্রাপ্ত ইসমটিকে ইহাদের إِسم বলে এবং رفع বা যম্মাহ প্রাপ্ত إِسم -টিকে ইহার খবর বলা হয়। যেহেতু ইহারা আমল দানের ক্ষেত্রে فعل এর মতো এইজন্য ইহাদিগকে حروف مشبهه بالفعل বলে। ইহা মোট ৬ টি। যথাঃ

০১। إِنَّ বাস্তবিক বা নিশ্চয়ই অর্থে। যথাঃ إِنَّ زَيْدً جَالِسٌ – যায়দ বাস্তবিকই উপবিষ্ট আছেন। এই বাক্যে যায়দ إِنَّ এর ইসম এবং جَالِسٌ ইহার খবর। সুতরাং দেখা যাইতেছে যে إِنَّ শব্দটি আসিয়া زَيْدٌ বিশেষ্য পদের উপর ফাতাহ এবং খবর বা বিধেয় পদের উপর যম্মাহ দিয়াছে।

০২। أَنَّ যে অর্থে। যথাঃ سَمِعْتُ أَنَّ زَيْدًا عَالِمٌ – আমি শুনেছি যে, যায়দ জ্ঞানী। এখানেও أَنَّ আসিয়া ذَيْدٌ বিশেষ্য পদে ফাতাহ এবং عَالِمٌ খবর পদে যম্মাহ দিয়েছে। উপরোক্ত দুইটি অব্যয় অর্থাৎ إِنَّ এবং أَنَّ উভয়টি حروف تَحْقِيق বা নিশ্চয়তাবোধক অব্যয় পদ।

০৩। كَأَنَّ যেন, উপমা, প্রসঙ্গে অর্থে। যথাঃ كَأَنَّ زَيْدًا أَسَدٌ – অর্থাৎ যায়দ যেন একটি সিংহ।

০৪। لَٰكِنَّ কিন্তু বা সন্দেহ দূর অর্থে। যথাঃ قَامَ زَيْدٌ لَٰكِنَّ خَالِدًا جَالِسٌ – অর্থাৎ যায়দ দন্ডায়মান হইয়াছে, কিন্তু খালিদ উপবিষ্ট আছে।

০৫। لَيْتَ যদি, হইতে অথবা আকাংখা প্রকাশ করিবার অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ لَيْتَ الشَّبَابَ يَعُودُ – অর্থাৎ যদি যৌবন ফিরিয়ে আসিত।

০৬। لَعَلَّ সম্ভব বা সম্ভাবনা প্রকাশ করিবার অর্থে ব্যবহার হয়। যথাঃ لَعَلَّ خَالِدًا غَائِبٌ – সম্ভবত খালিদ অনুপস্থিত।

অনেক লেখক مَاضِى إِحْتِمَالِ তে لَعَلَّمَا এবং مَاضِى تَمَنِّى তে لَيْتَمَا শব্দ প্রয়োগ করেন। এই مَا উপরোক্ত স্থানে বসিলে পরবর্তী শব্দের কোন পরিবর্তন ঘটাইবে না অর্থাৎ ইহাদের আমল বাতিল বা বিনষ্ট হইয়া যাইবে। এই مَا এর নাম مَاءُ الْكَفَّة (অতিরিক্ত مَا) কিন্তু مَاضِى تمنّى আকাংখাবোধক অতীতকাল এবং مَاضِى إِحْتِمَالِى সন্দেহবোধক অতীতকাল-এ এই مَا বসাইলে পরবর্তী فعل গুলির রূপান্তর নিয়ম অনুযায়ী হয় না। এই مَا অতিরক্ত তাই সন্দেহবোধক অতীতকাল এবং আকাংখাবোধক অতীত কালে এই مَا ব্যবহার করার দরকার নাই। (বিস্তারিত জানিতে হইলে তিন ভাষায় আধুনিক মিজান মোনশাব এর উক্ত অধ্যায়টি লক্ষ্য করিতে হইবে।

(গ) مَا وَلَا الْمُشَبَّتَانِ بِلَيْسَ বা ঐ ধরনের مَا এবং لَا যাহা لَيْسَ এর সাথে সাদৃশ্য রাখে। এই বর্ণদ্বয় (অর্থাৎ مَا এবং لَا) لَيْسَ (না) শব্দের ন্যয় কাজ করে। অর্থাৎ উহারা নামবাচক বাক্যের পূর্বে বসিয়া إِسْم পদের শেষে যম্মাহ, এবং خبر পদের শেষে ফাতাহ দেয়। لَيْسَ পদটিও ঠিক একই আমল করে। যথাঃ مَا زَيْدٌ قَائِمًا এখানে زَيْدٌ শব্দটি مَا এর إسم এবং قَائِمًا শব্দটি ইহার خبر । مَا অব্যয়টি مَعْرِفَةنَكِرَة উভয় বিশেষ্যের পূর্বে ব্যবহার হয়। কিন্তু لَا শুধুমাত্র نَكِرَة বিশেষ্যের পূর্বে ব্যবহার হয়। যথাঃ لَا رَجُلٌ أَفْضَلُ مِنْكَ – তোমা হইতে উত্তম ব্যক্তি নাই।

(ঘ) لَاء نَفِى جِنس ইহা জাতি বা শ্রণীর ক্ষেত্রে নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে। لَا একটি নিষেধ সূচক বর্ণ। ইহা সাধারণতঃ ইসম কে ফাতাহ দেয় এবং খবর কে যম্মাহ দেয়। তবে ইহার ব্যাপারে আরও কথা আছে। তাহা হইলঃ ইহার إسم অধিকাংশ ক্ষেত্রে مضاف হয় এবং তখন ইহাতে ফাতাহ হয়। ইহার خبر এ যম্মাহ হয়। যথাঃ لَا غُلَامَ رَجُلٍ ظَرِيقٌ فِى الدَّارِ – লোকটির ঘরে কোন চতুর গোলাম নাই। আর যদি ইহার ইসম نَكِرَة مُفْرَد হয় তবে ইহার ফাতাহ এর উপর মাবনী হইবে। যথাঃ لَا رَجُلَ فِى الدَّارِ – ঘরে কোন লোক নাই।

لَا এর পরবর্তী إسم টি যদি مَعْرِفَة বা নির্দিষ্ট হয়, তখন অন্য একটি مَعْرِفَة এর সাথে تَكراة বা দ্বিরুক্ত করা অপরিহার্য হয়। তবে এই لَا কোন আমল করিবে না বরং উভয় مَعْرِفَة -ই إبتداء এর ভিত্তিতে মারফু হইবে। যথাঃ لَا زَيْدٌ عِنْدِى وَلَا عُمَرُ – আমার নিকট যায়দ বা ‘উমার কেহই নাই।

যদি لَا এর পরের إسم টি نَكِرَة مُفْرَد বা অনর্দিষ্ট একবচন হয় তবে অপর একটি تكرة দ্বিরুক্ত বা تَكْرار করিয়া তাহাতে নিম্ন লিখিত পাঁচ ভাবে إعراب দান করা বৈধ। যেমনঃ

، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ – ۲، لَا حَوْلٌ وَلَا قُوَّةٌ إِلَّا بِاللَّه – ۳، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةٌ إِلَّا بِاللَّه – ۴، لَا حَوْلٌ وَلَا قُوَّةً إِلَّا بِاللَّه – ۵، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةً إِلَّا بِاللَّه

আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন কিছুই করার শক্তি বা সামর্থ কারোর নাই।

(ঙ) حروف نِدَا বা আহ্বানকারী বা সম্বোধন সূচক অব্যয় পদ। অর্থাৎ যে সকল অব্যয় পদের মাধ্যমে কাউকে সম্বোধন করা, ডাকা বা আহ্বান করা হয় তাহাকে حروف نِدَا বা আহ্বানকারী অব্যয় পদ বলে। যাহাকে আহ্বান করা হয় তাহাকে مُنَادَىٰ বা আহ্বানকৃত বলে। যথাঃ يَا اللَّهُ এই বাক্যে يَا অব্যয়টি حرف ندا এবং اللَّه হইল مُنَادَىٰ । مُنَادَىٰ পদের শেষে কাসরা, ফাতাহ, যম্মাহ সবই হইতে পারে। যে উদ্দেস্যে আহ্বান করা হয় উহাকে جَوَابِ نِدَا বলে। যথাঃ يَا اللَّهُ أُنْصُرْنِى – হে আল্লাহ! আমাকে সহায্য কর।

আহ্বানকারী অব্যয় মোট পাঁচটি। কাউকে আহ্বান করিতে বা ডাকিতে হইলে এই পাঁচটি হরফের মধ্যে যে কোন একটি ব্যবাহার করিতে হয়। যথাঃ ১) يَا – ওহে, ২) أَيْ – ওগো, ৩) أَ – (আ) ৪) أَيَا – ওহে, ৫) هَيَا (হায়া)। এর মধ্যে يَا অব্যয় পদটি নিকট ও দূর উভয়ের জন্য ব্যবহার হয়। أَيَا এবং هَيَا দূরের জন্য ব্যবহার হয়। أَيْ এবং أَ নিকটের জন্য ব্যবহার হয়। مُنَادَىٰ পদের শেষে কখনো ফাতাহ, কখনো যম্মাহ, কখনো কাসরা হয়। حَرُوفُ نِدَا এর আমলগুলি নিম্নরূপঃ

১। ইহারা যদি مُضَاف এর পূর্বে ব্যবহার হয় তবে সেই مُصَاف সর্বদা ফাতাহ হইবে। উক্ত مُضَاف কে مُنَادَىٰ مُضَاف বলা হয়। যথাঃ يَا عَبْدَ الهَِ এই বাক্যে عَبْدٌ শব্দটি, مُنَادَىٰ مُضَاف হইবে।

২। ইহারা যদি مُشَابَّه مضاف এর পূর্বে ব্যবহার হয় তবে مضاف সদৃশ্য ইসমকে ফাতাহ দেয়। অর্থাৎ যে إسم টি প্রকৃত مضاف নহে অথচ উহাকে مضاف ন্যায় মনে হয়। যথাঃ يَاطَالِعًا جَبَلًا ঠিক তদ্রুপ ভাবে ইহারা যখন نَكِره غَيرمعيّن বা অনির্দিষ্ট অজ্ঞত পদের পূর্বে বসে তখন ইহাকে ফাতাহ দান করে। যথাঃ কোন অন্ধ ব্যক্তি বলিল, يَا رَجُلًا خُذْبِيَدِى – হে লোক! আমার হাত ধর।

৩। ইহারা যদি إسم এর পূর্বে ব্যবহার হয় অর্থাৎ উক্ত মুনাদা যদি مضاف বা مُشَابَّه مضاف না হয় এবং نِدَا বা যেকোন ভাবে مَعرفة হয় তবে ঐ مُنَادَىٰ টি যম্মাহ-এর উপর মাবনী হইবে। যথাঃ একবচনে হইবে يَازَيْدُ দ্বিবচনে يَازَيْدَانِ এবং বহুবচনে يَازَيْدُونَ ।


চতুর্দশ পাঠ
الْحُرُوفُ الْعَامِلَةُ فِى الْفِعْلِ الْمُضَارِعِ
বর্তমান ও ভাবিষ্যত কালিন ক্রিয়ার মধ্যে আমলকারী অব্যয়।

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত حرف বা অব্যয় পদ فعل مضارع এর পূর্বে ব্যবহার হইয়া ইহার শেষাক্ষরে ফাতাহ অথবা সুকুন (যযম) দেয় উহাকে الْحُرُوفُ الْعَامِلَةُ فِى الْفِعْلِ الْمُضَارِعِ বলে। ইহা দুই প্রকার। যথাঃ

১। حُرُوفٌ تَنْصِبُ الْفِعْلَ الْمُضَارِعَ ঐ সমস্ত حرف কে বলা হয় যেইগুলি فعل مضارع এর পূর্বে ব্যবহার হইয়া সর্বদাই ইহার শেষাক্ষরে ফাতাহ দেয়। এইগুলিকে حرف ناصبه ফাতাহ দানকারী অব্যয় বলে।

২। حُرُوفٌ تَجْزمُ الْفِعْلَ الْمُضَارِعَ ঐ সমস্ত حروف কে বলা হয় যেইগুলি فعل مضارع এর পূর্বে ব্যবহার হইয়া সর্বদাই ইহার শেষাক্ষরে সুকুন বা যাযম দেয়। এইগুলিকে حروف جَازمة বলে।

বিস্তারিত বর্ণনাঃ

১। مضارع তে ফাতাহ প্রদানকারী অব্যয় পদ ৪টি। যথাঃ

(ক) أَنْ হরুফ টি (যেন আর্থে ব্যবহার হয়) এর উদাহারণঃ أُرِيدُ أَنْ تَقُومَ – আমি আশা করি তুমি যেন দাঁড়াও। এই বাক্যে تَقُومَ মুযারে ক্রিয়ার পূর্বে أَنْ ব্যবহার হইয়া উহার শেষাক্ষরে ফাতাহ হইয়াছে। أَنْ পদটি فعل এর পূর্বে বসিয়া মাসদারের অর্থ দেয় বলিয়া উহাকে أَنِ مَصْدَرِيَة বলা হয়। যথাঃ أُرِيدُ أَنْ تَقُومَ এই বাক্যের অর্থ হইবে أُرِيدُ قِيَامَكَ – আমি তোমার দাঁড়ানো হওয়ার ইচ্ছা করি।

(খ) لَنْ হরুফ টি (না বোধক দৃঢ় বা দৃঢ়তা পূর্ণ নিষেধ অর্থে ব্যবাহার হয়) এর উদাহরণঃ لَن يَخْرُجَ زَيْدٌ – যায়দ কখনো বাহির হইবে না। এই বাক্যে لَنْ আসিয়া يَخْرُجَ মুযারে ক্রিয়াকে অর্থাৎ উক্ত শব্দটির শেষাক্ষরে ফাতাহ দিয়াছে। এই لَنْ মুজারে ক্রিয়াকে মুস্তাকবেল ক্রিয়াতে পরিণত করে এবং ইহা নেতিবাচক অর্থের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

(গ) كَىْ হরুফ টি (ইহা কোন কাজের সুনির্দিষ্ট ফলাফল বা লক্ষ্য বুঝাইবার জন্য ব্যবহার হইয়া থেকে)। উদাহরণঃ أَسْلَمْتُ كَىْ أَدْخُلَ الْجَنَّةَ – জান্নাতে (পরকালের পুস্কার বিশেষ বাগান) প্রবেশ করার জন্য আমি ইসলাম গ্রহণ করিলাম।

(ঘ) إِذَنْ হরুফ টি (কোন কিছুর প্রতি উত্তর কালে ব্যবহার করা হয়) উদাহরণঃ কেহ বলিল إِنِّى أَتِيكَ غَدًا – আমি আগামী কাল তোমার নিকট আসিব। ইহার প্রতি উত্তরে জবাব হইতে পারে যে, إِذَنْ أُكْرِمَكَ – আমি তখন তোমাকে সম্মান করিব।

أَنْ এর ব্যবহার বিধি।

মনে রাখিবে যে, নিম্নলিখিত ৬ টি স্থানে উপরোল্লিখিত أَنِ مَصْدَرِيَة উহ্য থাকিয়া فعل مُضَارِع কে ফাতাহ দান করে।

(ক) حَتَّىٰ এর পরে। যেমনঃ مَرَرْتُ حَتَّىٰ أَدْخُلَ الْبَلَدَ – আমি শহরে প্রবেশ করা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়াছি। এই বাক্যে أَدْخُلَ ফে’ল এর পূর্বে أَنْ শব্দটি উহ্য আছে। কেননা حَتَّىٰ পদটি অব্যয় পদ, যাহা فعل এর পূর্বে ব্যবহার হয় না। ফলে উহ্য أَنْ টি ফে’ল মুযারেকে مصدر এর অর্থে রূপান্তর করিয়াছে।

(খ) لَام جحد (লাম জেহাদ) এর পরে। অর্থাৎ অস্বীকৃতি জ্ঞাপক লাম এর পর। যথাঃ مَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ – আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেনই না। এখানে لِ হরফটি كَانَ مَنفى এর পরে আসিয়া ইহার مَنفى এর অর্থকে জোরদার করিয়াছে। তাই ইহাকে لَام جحد বলে।

(গ) أَوْ – অথবা, অব্যয় পদটি إِلَىٰ أَنْ – পর্যন্ত, অথবা إِلَّا أَنْ – যতক্ষণ না, অর্থে ব্যবহার হওয়ার পরে فعل مضارع এর শেষে ফাতাহ হইবে। যথাঃ لَأَلْزِمَنَّكَ أَوْ تُعْطِيَنِى حَقِّى – আমার পাওনা আদায় না করিয়া দেওয়া পর্যন্ত তোমাকে ছাড়িব না।

(ঘ) وَاؤُ الصَّرْف এর পরে। যথাঃ لَا تَأْكُلِ السَّمَكَ وَتَشْرَبَ اللَّبَنَ – দুধ পান করা অবস্থায় মাছ খাইও না। এখানে ওয়াওটি সঙ্গে, সহ, সহিত ইত্যাদি অর্থ দেয় এবং فعل مضارع ফাতাহ বিশিষ্ট হয়।

(ঙ) لَمْ كَىْ বা كَيْ অর্থে ব্যবহার করা লাম- এর পরে। যথাঃ أَسْلَمْتُ لِأَدْخُلَ الْجَنَّةَ – জান্নাতে প্রবেশের জন্য আমি মুসলিম হইলম।

(চ) فَا (অতএব, তবে, সুতরাং) এর পরে। অর্থাৎ فَا এর পর أَنْ উহ্য থাকিয়া فعل مضارع কে ফাতাহ দেয়। মনে রাখিবে যে, এখানে فَا বলিতে ঐ ف কে বুঝানো হইতেছে যে فَا ছয়টি বিষয়ের উত্তরে ব্যবহার হয়। এই ৬টি বিষয় হইতেছেঃ

১) أَمْر বা আদেশের জবাবে। যথাঃ زُرْنِى فَأُكْرِمَكَ – তুমি আমার সহিত সাক্ষাৎ করিও, তোমাকে সম্মান করিব।

২) نَهِى বা নিষেধাজ্ঞার জবাবে। যথাঃ لَا تَشْمِتْنِى فَأُكْرِمَكَ – তুমি আমাকে গালি দিওনা, আমি তোমাকে সম্মান করিব।

৩) نَفِى বা না বোধক অব্যয়ের পরে। যথাঃ مَا تَأْتِينَا فَاتُحَدِّثَنَا – তুমি আমাদের নিকট আসইনা আমাদের সহিত আলোচনা করিবে।

৪) اسْتِفْهَام বা প্রশ্নবোধক অব্যয়ের পরে। যথাঃ أَيْنَ بَيْتُكَ فَأَزُورَكَ – তোমার ঘর কোথায়? তথায় তোমার সাথে সাক্ষাৎ করিব।

৫) تَمَنَّىٰ বা আকাংখার জবাবে। যথাঃ لَيْتَ لِى مَالًا فَأَنْفِقَ مِنْهُ – হায়! যদি আমার মাল হইত তবে উহা ব্যয় করিতাম।

৬) عَرْض বা অনুরোধের জবাবে। যথাঃ أَلَا تَنْزِلُ بِنَافَتُصِيبَ خَيْرًا – তুমি আমার নিকট আস না কেন এতে তোমার ভাল হইত।

২। فعل مضارع কে যযম (সুকূন) প্রদানকারী অব্যয় পদ।

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত حرف বা অব্যয় فعل مضارع এর পূর্বে বসিয়া ইহার পাঁটি সিগাতে সুকূন বা যযম দেয় এবং লাম কালিমাতে হরফে ইল্লাত হইলে উহাকে বিলুপ্ত করিয়া দেয়, উহাকে حروف جَازِمَة বলে। ইহার সাতটি সিগা হইতে نُون إِعرَابى কে ফেলিয়া দেয়। ইহারা সংখ্যায় পাঁচটি। যথাঃ

(ক) لَمْ (লাম) -ইহা فعل مضارع এর পূর্বে আসিয়া উহার শেষাক্ষরে যযম বা সুকূন দেয় এবং فعل مضارع ক্রিয়াকে مَاضِى مَنْفِى অর্থে পরিণত করে। যথাঃ لَمْ يَنْصُرْ – সে (পুং) সাহায্য করে নাই।

(খ) لَمَّا (লাম্মা) ইহাও مضارع -কে সুকূন বা যযম দেয় এবং مَاضِى এর অর্থে পরিণত করিয়া না বোধক অর্থকে দৃঢ় করে। যথাঃ لَمَّا يَنْصُرْ – এর অর্থঃ সে কখনো সাহায্য করে নাই।

(গ) لَامِ أَمر (লামে আমর)- অর্থাৎ যে ধরনের ل , فعل مضارع কে أَمر এর অর্থে পরিণত করে উহা فعل مضارع কে সুকূন বা যযম দেয়। যথাঃ لِيَنْصُرْ – তাহার সাহয্য করা উচিত বা সে যেন সাহায্য করে।

(ঘ) لَاءِ نَهِى (লায়ে নাহী) ইহাও فعل مضارع শেষে সুকূন বা যযম দেয়। যথাঃ لَا تَنْصُرْ – তুমি সাহায্য করিও না।

(ঙ) إِنْ شَرْطِيَة (ইন্ শারতিয়া) এখানেও فعل مضارع এর শেষে সুকূন হইবে। যথাঃ إِنْ تَنْصُرْ أَنْصُرْ – তুমি যদি সাহায্য কর তবে আমিও সাহায্য করিব।

মনে রাখিবেঃ إِنْ شَرْطِيَة দুইটি বাক্যের পূর্বে ব্যবহার হইয়া থাকে। যথাঃ إِنْ تَضْرِبْ أَضْرِبْ এখানে বাক্যের প্রথম অংশ إِنْ تَضْرِبْ কে شرط এবং দ্বিতীয় অংশ أَضْرِبْ কে جَزَٰ বলা হয়। إِنْ شَرْطِيَة যদি فعل مضارع এর পূর্বে ব্যবহার করা হয় উহা মুস্তাকবিল অর্থে পরিণত হইবে। ঠিক একই ভাবে উহা যদি অতীত কালীন ক্রিয়ায় ব্যবাহার হয় তবে তখনও উহা মুস্তাকবিলের অর্থ প্রদান করিবে। যথাঃ إِنْ ضَرَبْتَ ضَرَبْتُ – যদি তুমি মার তবে আমিও মারিব। এখানে সূকূনটি تَقْدِيرى বা উহ্য হইবে। কেননা فعل مَاضِى বা অতীত কালিন ক্রিয়া কখনো مُعْرَب হয় না। তবে, যদি شرط এর جَزَٰ টি جُمْلَءِ إِسْمِية বা নাম বাচক বাক্য, أَمر বা অনুজ্ঞা, نَهِى বা নিষেধাজ্ঞা অথবা دُعَا বা প্রার্থনা হয় তবে, جَزَٰ এর মধ্যে فَا ব্যবহার করা ওয়াজিব। যেমনঃ

১) جُمْلَئِ إِسْمِيَه বা নামবাচক বাক্যে -যথাঃ إِنْ تَأْتِينِي فَأَنْتَ مُكْرَمٌ – তুমি আমার নিকট আসিলে সম্মানিত হইবে।

২) أَمْرٌ বা আদেশ যুক্ত হইলে। যথাঃ إِنْ رَأَيْتَ ذَيْدًا فَاكْرِمْهُ – যায়দ কে দেখিলে সম্মান প্রদর্শন করিবে।

৩) نَهِى (নাহি) বা নিষেধাজ্ঞা হইলে। যথাঃ إِنْ أَتَاكَ عَمْرٌو فَلَا تُهِنْهُۥ – আমর আসিলে তাহাকে অশ্রদ্ধা করিবে না।

৪) دُعَا (দুয়া) বা আবেদন যুক্ত হইলে। যথাঃ إِنْ أَكْرَمْتَنَا فَجَزَاكَ الهَُ خَيْرًا – যদি তুমি আমাদের সম্মান দেখাও তবে আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।


দ্বিতীয় অধ্যায়
عَمَلُ الْأَفْعَالِ
ক্রিয়া কার্যকারণ শক্তির বিবরণ

কোন فعل বা ক্রিয়া غير عامل বা আমল বিহীন নহে। অর্থাৎ প্রত্যেক প্রকার فعل এর কোন না কোন আমল থাকেই। প্রত্যেক فعل ই فاعل কে رفع দেয়। এই আমলের কারণে বা আমলের দিক হইতে فعل সমূহকে দুই ভাগে ভাগ করা হইয়াছে। যথাঃ ১। فعل معروف বা কর্তৃবাচ্য ক্রিয়া এবং ২। فعل مجهول বা কর্মবাচ্য ক্রিয়া।

فعل معروف বা কর্তৃবাচ্য ক্রিয়ার বিবরণঃ

সংজ্ঞাঃ যে فعل এর فاعل বা কর্তা জানা থাকে এবং কর্তা নিজেই কোন কাজ সক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করে তখন ঐ فعل টি فعل معروف হয়। মনে রাখিবেঃ বাংলা ব্যাকারণে ইহাকে কর্তৃবাচ্য এবং ইরাজিতে Active Voice বলে। যথাঃ قَامَ زَيْدٌ – যায়দ দন্ডায়মান হইল। এই বাক্যে زَيْدٌ নিজেই কর্তা বা فاعل এবং قَامَ শব্দটি যায়দের সহিত সম্পর্ক যুক্ত। فعل معروف বা কর্তৃবাচ্য ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হইয়া থাকে। যথাঃ

১। فِعْل مُتَعَدِي (ফি’ল মুতাআদী) বা সকর্মক ক্রিয়া ঐ فعل কে বলে যাহার কাজ শুধু মাত্র فاعل নয় বরং مَفْعُول সংশ্লিষ্ট না হইলে পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না, তাহাকে فعل متعدي বলে। মনে রাখিবে বাংলায় ইহাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যথাঃ ضَرَبَ خَالِقٌ – খালিক মারিল এ বাক্যে অনেক প্রশ্ন উঠে। যেমন- ১। কাহাকে মারিল? ২। কোথায় মারিল? ৩। কবে মারিল ইত্যাদি। তবে উত্তরে যদি বলা হয় رفيق (রফিক) কে তবে বাক্যের পূর্ণতা আসে। তাই ضَرَبَ خَالِقٌ رَفِيقًا – খালিক রফিককে মারিল, বলিলে বাক্যটি পূর্ণ অর্থবোধক হইল। এই ধরণের فعل কে فعل متعدي বলা হয়। এখানে ضَرَبَ ফি’লটি فاعل কে যম্মাহ দিয়াছে এবং مَفْعُول কে ফাতাহ দিয়াছে।

২। فعل لازم (ফি’ল লাযিম) বা অকর্মক ক্রিয়া। যে فعل বা ক্রিয়া কেবল فاعل বা কর্তা দ্বারাই বাক্য সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে কোন مَفْعُول বা কর্মের সাহায্য নিতে হয় না তাহাকে فعل لازم বলে। মনে রাখিবে فعل لازم কে বাংলায় অকর্মক ক্রিয়া বলে। যথাঃ جَلَسَ رَفِيقٌ রফিক বসিল। এই বাক্যে جَلَسَ ক্রিয়া পদটি فعل لازم বা অকর্মক ক্রিয়া। এখানে مَفْعُول বা কর্মের কোন প্রয়োজন হয় না। এই বাক্যে جَلَسَ হচ্ছে فعل এবং رَفِيقٌ হইল فاعل বা কর্তা। ফলে فعل এবং فاعل উভয়ে মিলিয়া جُملئ فعليه বা ক্রিয়াবোধক বাক্য হইয়াছে।

فعل معروف এর আমলের বিবরণ

فعل معروف স্বকর্মক বা অকর্মক হউক উভয় অবস্থাতেই فاعل বা কর্তাকে যম্মাহ বা رفع প্রদান করিবে। ঠিক সেই রূপ فعل معروف স্বকর্মক বা অকর্মক হউক উভয় অবস্থাতেই ৬টি إسم বা বিশেষ্য পদকে ফাতাহ বা نصب প্রদান করিবে। যথাঃ

১। مَفْعُولٌ مُطْلَقٌ – সাধারণ কর্ম কে। যথাঃ ضَرَبْتُ ضَرْبًا – আমি খুব মারলাম।

২। مَفْعُولٌ فِيهِ – স্থান কালবাচক কর্ম কে। যথাঃ صُمْتُ يَوْمَ الْجُمْعَةِ – আমি শুক্রবারে সিয়াম পালন করলাম।

৩। مَفْعُولٌ مَعَه – সঙ্গতা জ্ঞাপক কর্ম কে। যথাঃ جَآءَ الْبَرْدُ وَالْجُبَّاتِ – জুব্বার সহিত শীত আসিল।

৪। مَفْعُولٌ لَهُ – হেতু নির্দেশক কর্ম কে। যথাঃ قُمْتُ إِكْرَامًا لِزَيْدٍ – আমি যায়দের সম্মানে দাঁড়াইলাম।

৫। حَلْ – অবস্থা জ্ঞাপক বিশেষ্য পদে। যথাঃ جَآءَ زَيْدٌ رَاكِبًا – যায়দ আরোহী অবস্থায় আসিল।

৬। تَمِيزٌ – পার্থক্য জ্ঞাপক বিশেষ্য পদকে যখন فاعل বা কর্তৃকারক বিশেষ্যের সহিত فعل বা ক্রিয়াপদের সম্পর্কের বিষয়ে অস্পষ্টতা দেখা দেয়। যথাঃ طَابَ زَيْدٌ نَفْسًا – যায়দ অন্তরের দিক থেকে সন্তুষ্ট হইল।

মনে রাখিবেঃ فعل لازم কখনো مَفْعُولٌ بِهِ – এর উপর আমল করিবে না।

فِعْلٌ مَجْهُولٌ বা কর্মবাচ্য ক্রিয়ার বিবরণ

সংজ্ঞাঃ যে فعل বা ক্রিয়াপদের فاعل বা কর্তা জানা থাকে না বা ক্রিয়াটি পরোক্ষভাবে কর্তা কর্তৃক কৃত হয় এবং বাক্যে কর্তাকে প্রধান্য না দিয়ে কর্মকে প্রাধান্য দেওয়া হয় তখন فعل টির مَجْهُولٌ হয়। মনে রাখিবেঃ বাংলায় ইহকে কর্মবাচ্চ বলে। উদাহরণঃ ضُرِبَ عَمْرٌو – আমর প্রহৃত হইল। এখানে আমরকে কে প্রহার করিল তাহা জানা যাইতেছে না। ফলে ضُرِبَ ক্রিয়া পদটি فعل مجهول হইবে। শুধু فعل متعدي বা সকর্মক ক্রিয়ারই مجهول রূপ হয়। فعل لازم বা অকর্মক ক্রিয়ার مجهول রূপ হয় না। فعل مجهول কে فِعْلٌ مَالَمْ يُسَمَّ فَاعِلُهُ বলে। আর ইহা দ্বারা প্রাপ্ত إسم টিকে مَفْعُولٌ مَالَمْ يُسَمَّ فَاعِلُه বা نَائِبِ فاعل বলে।


পঞ্চদশ পাঠ
بَيَانُ الْفَاعِلِ وَالْمَفْعُولِ
কর্ম ও কর্তার বিবরণ

১। فاعل বা কর্তা। সংজ্ঞাঃ فاعل ঐ ধরণের إِسم কে বলা হয় যাহার পূর্বে ঐ إِسم এর مسند হিসাবে এমন একটি فعل হইবে যাহার দ্বারা উক্ত ক্রিয়াটি সংঘটিত হইয়াছে বুঝায়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি বা বস্তুর মাধ্যমে ক্রিয়া সম্পাদন করা হয় অথবা যাহার দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদন করা অথবা যে إِسم এর মাধ্যমে فعل বা ক্রিয়াপদের কার্যাবলী সম্পাদন করা হয় তাহাকে فاعل বলে। মনে রাখিবেঃ فاعل কে বাংলায় কর্তা বা কর্তৃকারক বলে। যথাঃ ضَرَبَ ذَيْدٌ – যায়দ মারিল। এই বাক্যে যায়দ فاعل কেননা ضَرَبَ ক্রিয়াটি তাহার মাধ্যমেই হইয়াছে। সুতরাং দেখা যাইতেছে যে, ذَيْدٌ ইসমটির مُسْنَدٌ হিসাবে ضَرَبَ ক্রিয়াটি আসিয়াছে। তাই যায়দ এখানে فاعل বা কর্তা এবং ضَرَبَ ক্রিয়াটি তাহার কার্য।

২। مفعول مطلق (সাধারণ কর্মকারক) ইহা এমন একটি مَصْدَرٌ বা ক্রিয়ামূল কে বলে যেই ক্রিয়ামূলটি তাহার পূর্বে ব্যবহার করা ক্রিয়ার অর্থবোধক অথবা সম অর্থবোধক হইবে। ইহা এমন একটি مَصْدَرٌ যাহা একটি ক্রিয়াপদের পরে স্থাপন করা হয়। এই فعل বাক্যের দৃঢ়তা, সংখ্যা বা শ্রণী বুঝাইবার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। উদাহরণঃ ضَرَبْتُ ضَرْبًا – আমি মারার মতো মারিলাম। এই বাক্যে ضَرَبْنَا ক্রিয়ামূলটি তাহার পূর্বে ব্যবহার করা فعل টির অর্থবোধক। তদ্রুপ قُمْتُ قِيَامًا – আমি দাঁড়ানোর মতো দাঁড়াইলাম। এই বাক্যেও قِيَامًا ক্রিয়ামূলটি قُمْتُ ক্রিয়াপদের অর্থবোধক। দুইটি ক্রিয়ামূল বা مَصْدَرٌ – ই এখানে দৃঢ়তা বুঝাইতেছে।

৩। مَفْعُولٌ فِيهِ (অধিকারণ কারক)- ইহা এমন একটি إِسم যাহার পূর্বে উল্লেখিত فعل উক্ত إِسم টির মধ্যেই সংঘটিত হইয়াছে বুঝায় এবং উহাকে ظَرْفٌ ক্রিয়ার আধার বলা হয়। ظَرْفٌ দুই প্রকার যথাঃ

ক) ظَرْف زَمَان বা কাল জ্ঞপক আধার। ইহা কালের সাথে সম্পর্কিত বুঝায়। যথাঃ سُمْتُ يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ – আমি সোমবার সিয়াম রাখলাম। এই বাক্যে সিয়াম রাখার কাজটি একটি সময় বা কালের অর্থাৎ সোমবারের দিন হইল, তাই ইহা কালবাচক বিশেষ্য বা (আধার) مَفْعُولٌ فِيهِ ।

খ) ضَرْف مَكَان বা স্থান জ্ঞপক আধার। ইহা কালের সাথে সম্পর্কিত বুঝায়। যথাঃ جَلَسْتُ عِنْدَكَ – আমি তোমার নিকট বসিলাম। এই বাক্যে عِنْدَكَ অর্থাৎ তোমার নিকট বলিতে নির্দিষ্ট একটি স্থানের কথা বুঝা যাইতেছে। এই অবস্থায় ইহাকে ضَرْف مَكَان বলা হয়।

৪। مَفْعُول مَعه বা সঙ্গতা জ্ঞাপক কর্ম- ঐ ধরণের إِسم কে বলা হয়, যা مَعْ অর্থে ব্যবহৃত وَاؤ অক্ষরের পরে অবস্থান করে। যথাঃ جَاءَ الْبَرْدُوَ الْجُبَّاتِ – জুব্বা সহ শীত আসিয়াছে। এ বাক্যে الْجُبَّاتِ শব্দটি مَعَ অর্থে ব্যবহার হইয়াছে।

৫। مَفْعُول لَه হেতু বা কারণ জ্ঞাপক কর্ম- ঐ ধরণের إِسم কে বলা হয় যাহা উক্ত ক্রিয়ার কারণ স্বরূপ প্রতীয়মান হয়। অর্থাৎ ক্রিয়ার কারণ হিসাবে ব্যবহৃত إِسم -কে مَفْعُول لَه বলে। যথাঃ قُمْتُ إِكْرَامًا لِزَيْدٍ – আমি যায়দের সম্মানে দাঁড়াইয়াছি। এই বাক্যে إِكْرَامًا শব্দটি তাহার পূর্বক্ত ক্রিয়া অর্থাৎ قُمْتُ – এর কারণ বুঝাইতেছে। তাই উহা مَفْعُول لَه হইবে।

৬। حَالْ অবস্থা জ্ঞাপক কর্ম- ইহা এমন একটি ইসম যাহা فَاعِل এবং مَفْعُول উভয়েরই অবস্থা বর্ণনা করে। যখন ইহা فَاعِل কর্তা অবস্থা নির্দেশ করে তখন বাক্যটির রূপ এই ধরণের হয়, যথাঃ جَاءَ زَيْدٌ رَاكِبًا – যায়দ আরোহি অবস্থায় আসল। এই বাক্যে رَاكِبًا শব্দটি فَاعِل এর অবস্থা নির্দেশ করিয়াছে।

حَالْ যখন مَفْعُول এর আবস্থা নির্দেশ করে তখন এই ধরণের বাক্য হইবে। যথাঃ ضَرَبْتُ زَيْدًا مَشْدُودًا – আমি যায়দকে বাঁধা অবস্থায় প্রহার করিলাম। এই বাক্যে مَشْدُودًا শব্দটি مَفْعُول এর অবস্থা নির্দেশ করিতেছে। আবার حَالْ رَاكِيبَيْنِ যখন فَاعِل এবং مَفْعُول উভয়ের অবস্থা নির্দেশ করে তখন এই ধরণের বাক্য হইবে। যথাঃ لَقِيتُ زَيْدًا – আমি ও যায়দ উভয়ে আরোহী অবস্থায় সাক্ষাৎ করিলাম। এই বাক্যে رَاكِيبَيْنِ শব্দটি فَاعِل এবং مَفْعُول উভয়ের অবস্থা নির্দেশ করিতেছে।

حَالْ যাহার অবস্থা বর্ণনা করে উহাকে ذَوَالْحَالْ বলে। অর্থাৎ فَاعِل বা مَفْعُول যাহাই হউক যাহার অবস্থা বর্ণনা করা হয় তাহাকে ذَوَالْحَالْ বলে। ذَوَالْحَالْ সাধারণত معرفه হয়। তবে যদি ذَوَالْحَالْ কোন সময় نَكِرَة হয় তবে হালকে مُقَدَّم করিতে হয় বা আগে আনতে হয়। যথাঃ جَاءَنِى رَاكِيبًا رَجُلٌ – আমার নিকট আরোহী অবস্থায় একজন লোক আসিল।

حَالْ কখনো جمله বা বাক্যও হইতে পারে। যথাঃ رَأَيْتُ الْأَمِيرَ وَهُوَ رَاكِبٌ – আমি আমিরকে সওয়ার অবস্থায় দেখিলাম।

৭। تَمِيز বা পার্থক্য জ্ঞাপক বিশেষ্য। অর্থাৎ যে إِسم দ্বারা পূর্ববর্তী বাক্যে ব্যবহৃত সংখ্যা, পরিমাণ ও বিশালতার মধ্যে অস্পষ্টতা দূর করা হয় তাহাকে تَمِيز বলে। যেই বাক্য হইতে অস্পষ্টতা দূর করা হয় مُمَيَّز বলে। ইহা ৪ প্রকার। যথাঃ

ক) সংখ্য হইতে অস্পষ্টতা দূর করার জন্য। যথাঃ عِنْدِي أَحَدَ عَشَرَ دِرْهَٰمًا – আমার নিকট ১১টি দেরহাম আছে। এই বাক্যে دِرْهَٰمًا বিশেষ্যটি تَمِيز যাহা أَحَدَ عَشَرَ হইতে অস্পষ্টতা দূর করে।

খ) ওজন বা পরিমাণ হইতে সন্দেহ দূর করার জন্য যথাঃ عِنْدِى رِطْلٌ زَيْتًا – আমার নিকট এক রিতল (পাউন্ড) তৈল আছে। এই বাক্যে زَيْتًا শব্দটি تَمِيز যাহা رِطْلٌ দ্বারা অস্পষ্টতা দূর করিয়াছে।

গ) كَيْل বা পরিমাপ হইতে সন্দেহ দূর করা। যথাঃ عِنْدِي قَفِزَانِ بُرًّا – আমার নিকট দুই কাফিয গম আছে। এই বাক্যে بُرًّا শব্দটি تَمِيز যাহা قَفِزَانِ শব্দটি হইতে অস্পষ্টতা দূর করিয়াছে।

ঘ) مساحت বা পরিমিতি হইতে অস্পষ্টতা দূর করে। যথাঃ مَافِي السَّمَآءِ قَدْرُرَاحَةٍ سَحَابًا – আকাশে হাতের তালু পরিমাণ মেঘও নাই। এই বাক্যে سَحَابًا শব্দটি تَمِيز কেননা ইহা দ্বারা বাক্যের সন্দেহ দূর হইয়াছে।

৮। مَفْعُول بِهِۦ বা কর্মকারক- ইহা এমন একটি إِسم যাহার উপর فاعل এর فعل টি পতিত হয়। যথাঃ ضَرَبَ ذَيدٌ عَمْرًوا – যায়দ আমরকে প্রহার করিল। এই বাক্যে প্রহার করা কাজটি আমরের উপর পতিত হওয়া বুঝায়, বিধায় আমর কে مَفْعُول بِهِۦ বলা হয়।

উপরের আলোচিত ইসম গুলিকে অর্থাৎ ফায়েল ব্যতীত বাঁকিগুলিকে مَنْصُوبَات বলা হয় এবং এই সব ইসম বাক্যের পরিপূর্ণতার জন্য ব্যবহার হইয়া থাকে। অথচ কোন বাক্য فعل এবং فاعل দ্বারাই সুসম্পন্ন হইতে পারে। তাই এইগুলিকে বলা হয় الْمَنْصُوبَاتُ فُضْلَة অর্থাৎ নসব যুক্ত বিশেষ্য গুলি অতিরক্ত শব্দ বিশেষ। সোজা কথায়- ফাতাহ প্রাপ্ত ইসমগুলি না হইলেও বাক্যের সমাপ্তিতে কোন অসুবিধা হয় না। আর এই কারণেই এইগুলিকে زائدة বা অতিরিক্ত বলা হয়।


ষোড়শ পাঠ
بَيَانُ أَقْسَامِ الْفَاعِلِ
কর্তার প্রকারভেদ বা কর্তার প্রকরণের বিবরণ

সংজ্ঞাঃ ক্রিয়ার সম্পাদনকারীকে বা ক্রিয়ার কর্তাকে فَاعِل বা কর্তা বলে। অর্থাৎ যাহার দ্বারা কোন একটি কর্ম সম্পাদন করা হয় তাহাকে فَاعِل বলে। ইহারা দুইভাগে বিভক্ত। যথাঃ

১। إسم مظهر বা প্রকাশ্য বিশেষ্য। যথাঃ ضَرَبَ زَيْدٌ – যায়দ মারিল। এই বাক্যে মারা কর্মটি যায়দ কর্তৃক সম্পন্ন হইয়াছে। এখানে যায়দ প্রকাশ্য কর্তা।

২। مضمر বা সর্বনাম সমূহ। ইহাও দুই ভাগে বিভক্ত। যথাঃ

ক) ضَمِير بَارز বা প্রকাশ্য সর্বনাম। যথাঃ ضَرَبْتُ – আমি প্রহার করলাম। এই বাক্যে وَاحِدْ متكل বা উত্তম পুরুষ একবচনে সর্বনাম প্রকাশ্য হইয়াছে।

খ) ضمير مُستتر বা উহ্য সর্বনাম। যথাঃ زَيْدٌ ضَرَبَ এই বাক্যে ضَرَبَ ক্রিয়া পদের কর্তা هُوَ পদটি ضَرَبَ ক্রিয়াপদে উহ্য আছে।

মনে রাখিবেঃ যখন فاعل বা কর্তা مُؤَنَّث حَقِيقي হয় অথবা مُؤَنَّث এর জমির হয় তখন তাহাদের فعل বা ক্রিয়াপদও مُؤَنَّث হইবে। যথাঃ قَامَتْ هِنْدٌ – হিন্দা দাড়াইল। এই বাক্যটির فاعل বা কর্তা مؤنث حقيقي হওয়ার উদাহরণ। আর هِنْدٌ قَامَتْ এই বাক্যে فاعل বা কর্তা ضمير مؤنث হওয়ার উদাহরণ। অর্থাৎ এই বাক্যে هِيَ স্ত্রীলিঙ্গ জ্ঞাপক সর্বনামটি قَامَتْ ক্রিয়াপদের কর্তা। তবে فاعل টি যদি প্রকাশ্য مؤنث غير حقيقي এবং প্রকাশ্য جمع تكسير হয় তবে তাহার ক্রিয়াপদকে مذكّر অথবা مؤنّث উভয় লওয়া যেতে পারে। طَلَعَ الشَّمْسُ এবং طَلَعَتِ الشَّمْسُ অর্থাৎ সূর্য উদয় হইল।

আর فاعل যদি প্রকাশ্য جمع تكسير হয় তখন فعل টিকেও مذكر অথবা مؤنث যে কোনটি ব্যবহার করা যায়। যথাঃ قَالَ الرِّجَالُ এবং قَالَتِ الرِّجَالُ অর্থাৎ পুরুষগুলি বলিল এরূপ বলা যায়।

بيان فعل مجهول
কর্মবাচ্য ক্রিয়ার বিবরণ

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত فعل বা ক্রিয়াপদের কর্তা বা فاعل জানা থাকেনা বা উল্লেখ করা হয় না এবং فاعل কে প্রাধান্য না দিয়া مفعول بِهِۦ কে প্রাধান্য বা স্থলাভিষিক্ত করা হয় তখন ঐ গুলিকে فعل مجهول বলে। মনে রাখিবেঃ فعل مجهول কে বাংলায় কর্মবাচক ক্রিয়া বলে। যথাঃ ضُرِبَ زَيْدٌ – যায়দ প্রহৃত হইল। এই বাক্যে যায়দকে প্রহারকারী ব্যক্তি কে, তাহা উল্লেখ না থাকায় তাহা বলা যাইতেছে না। এখানে فاعل এর পরিবর্তে مفعول কে প্রাধান্য দেওয়া হইতেছে। তাই ضُرِبَ ক্রিয়াপদটি فعل مجهول এবং زَيْدٌ কে তার مفعول বলা হইবে।

فعل مجهول বা কর্মবাচ্য ক্রিয়া فاعل বা কর্তার স্থলে مفعول به কে যম্মাহ দেয় এবং অবশিষ্ট مفعول গুলিকে ফাতাহ দেয়। নিম্নের বাক্যটি ভাল-ভাবে দেখ। এখানে কি অবস্থা বিরাজমান তা লক্ষ্য।

ضُرِبَ زَيْدٌ يَوْمَ الْجُمْعَةِ أَمَامَا الْأَمِيرِ ضَرْبًا شَدِيدًا فِي دَارِهِ تَادِيبًا وَالْخَشَبَةَ

অর্থঃ যায়েদ-কে জুমার দিন তাহাদের বাড়িতে আমিরের সামনে শিষ্টাচার দানের জন্য শক্তভাবে কাঠ দ্বারা প্রহার করা হইল।

এই বাক্যে বিভিন্ন প্রকার مفعول গুলিকে একত্রে উল্লেখ করিয়া দেখান হইয়াছে যে, فعل مجهول শুধুমাত্র তাহার مفعول به কে যুম্মা দিবে এবং বাঁকি مفعول গুলিকে ফতাহ দিবে। উপরোক্ত বাক্যটিতে দাগ দেওয়া স্থানগুলি লক্ষ্য করিলেও দেখা যাইবে যে-

১। ضُرِبَ (যুরিবা) فعل مجهول হওয়ার কারণে فعل এর প্রথমে যম্মাহ হইয়াছে।

২। زَيْدٌ (যায়দুন) مفعول به হওয়ার কারণে যম্মা প্রদান করিয়াছে।

৩। يَوْمَ শব্দটি ظرف زمان তাই বা কালবাচক ফাতাহ হইয়াছে ইহা مفعول فيه।

৪। أَمَامَا শব্দটি ظرف مكان তাই উহাতে ফাতাহ হইয়াছে ইহাও مفعول فيه ।

৫। ضَرْبًا ইহা مفعول مطلق তাই ফাতাহ হইয়াছে।

৬। شَدِيدًا ইহা صفت معموصوف তাই ফাতাহ হইয়াছে।

৭। تَادِيبًا ইহা مفعول له তাই ফাতাহ হইয়াছে।

৮। وَالخَشَبَةَ ইহাও مفعول معه তাই ফাতাহ হইয়াছে।

মনে রাখিবেঃ فعل مجهول কে فعل مًالَمْ يُسمّيٰ فَاعِلُهُ – (কর্তার অনুল্লেখ্য ক্রিয়া) বলা হয়। আর উহার مرفوع কে مفعول مَالَمْ يُسَمَّيٰ فَاعِلُهُ – কর্তার অনুল্লেখ্য কর্ম বলে।


সপ্তদশ পাঠ
أقسام الفعل المتعدّي
সকর্মক ক্রিয়ার প্রকারভেদ

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত فعل বা ক্রিয়াপদের বক্তব্য শুধুমাত্র فاعل দ্বারা সম্পন্ন হয় না বরং مفعول এর সাহায্য লইতে হয় তাহাকে فعل متعدّي বলে। মনে রাখিবেঃ বাংলায় ইহাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। উদাহরণঃ ضَرَبَ زَيْدٌ – যায়দ মারিল। এই বাক্যে যায়দ কাহাকে মারিল তাহার উল্লেখ না থাকায় বাক্যটি অসম্পূর্ণ রহিয়াছে। যদি বলা হয় ضَرَبَ زَيْدٌ عَمْرًوا – যায়দ আমরকে মারিল। এখন বাক্যটি পূর্ণতা লাভ করিল عَمْرًوا বা মাফউল উল্লেখ হওয়ার কারণে। এই ধারণের فعل -কে فعل متعدّي বলে। ইহা চার প্রকার হয়ে থাকে। যথাঃ

১। متعدّي بيك مفعول যাহা একটি কর্মের প্রতি সকর্মক। যথাঃ ضَرَبَ زَيْدٌ عَمْرًوا – যায়দ আমরকে মারিল।

২। متعدّي بدومفعول যাহা দুইটি কর্মের প্রতি সকর্মক কিন্তু একটি উল্লেখ করলেও তা শুদ্ধ। যথাঃ أَعْطَيْتُ زَيْدًا دِرْهَمًا – আমি যায়দকে দিরহাম দিলাম। এখানে যায়দ ও দিরহাম দুইটি কর্ম। যদি এই দুইটি কর্মের একটি উল্লেখ করা হয় তবুও বাক্যটি শুদ্ধ হবে। যথাঃ أَعْطَيْتُ زَيْدًا – আমি যায়দকে দিলাম। এমনটি বলও শুদ্ধ।

৩। متعدّي بدومفعول أفعال قلوب যাহা দুইটি কর্মের প্রতি সকর্মক কিন্তু দুইটি কর্মই উল্লেখ না করলে বাক্যটি শুদ্ধ হবে না। যথাঃ عَلِمْتُ زَيْدًا فَاضِلًا – আমি যায়দকে জ্ঞানী বলে জানি। ইহাকে عَلِمْتُ زَيْدًا – আমি যায়দকে জানি। এভাবে বলা যাবে না কারণ বাক্যটিতে সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে না। এই ধারণের গুলিকে أفعال قلوب বলে। أفعال قلوب সাতটি এবং ইহার مَفْعُول কে ফাতাহ প্রদান করে এবং فاعل যমির হইবে। যথাঃ

১) عَلِمْتُ – যেমনঃ عَلِمْتُ زَيْدًا فَاضِلًا – আমি যায়দকে জ্ঞানী বলিয়া জানিলাম। এই বাক্যে عَلِمْتُ হইবে أفعال قلوب এবং زَيْدًا ও فَاضِلًا দুইটি মাফউল বা কর্ম।

২) ظَنَنْتُ – যেমনঃ ظَنَنْتُ زَيْدًا عَالِمًا – আমি ধারণা করিলাম যে, যায়েদ জ্ঞানী। এই বাক্যে ظَنَنْتُ হইবে أفعال قلوب এবং زَيْدًا ও عَالِمًا শব্দ দুইটি কর্ম।

৩) خِلْتُ – যেমনঃ خِلْتُ زَيْدًا قَآئِمً – আমি খেয়াল করলাম যায়েদ দাঁড়িয়ে আছে। এই বাক্যে خِلْتُ হইবে أفعال قلوب এবং زَيْدًا ও قَآئِمً শব্দ দুইটি কর্ম।

৪) حَسِبْتُ – যেমনঃ حَسِبْتُ زَيْدًا عَالِمًا – আমি ধারণা করিলাম যে, যায়দ জ্ঞানী। এই বাক্যে حَسِبْتُ হইবে أفعال قلوب এবং زَيْدًا ও عَالِمًا শব্দ দুইটি কর্ম।

৫) رَأَيْتُ – যেমনঃ رَأَيْتُ زَيْدًا نَآئِمًا – আমি যায়দকে ঘুমন্ত দেখলাম। এই বাক্যে رَأَيْتُ হইবে أفعال قلوب এবং زَيْدًا ও نَآئِمًا শব্দ দুইটি কর্ম।

৬) وَجَدْتُّ – যেমনঃ وَجَدْتُكَ عَائِلًا – আমি তোমাকে অসহায় পাইয়াছি। এই বাক্যে وَجَدْتُ হইবে أفعال قلوب এবং كَ ও عَائِلًا শব্দ দুইটি কর্ম।

৭) زَعَمْتُ – যেমনঃ زَعَمْتُهُ كَرِيمًا – আমি তাহাকে সম্মানিত ভাবিয়াছি। এই বাক্যে زَعَمْتُ হইবে أفعال قلوب এবং هُ ও كَرِيمًا শব্দ দুইটি কর্ম।

৪। متعدّي بسه مفعول ইহা তিনটি কর্ম চায়। এইরূপ فعل এর পরে فاعل সাধারণতঃ إسم ظاهر হইবে এবং ফায়েলকে যম্মাহ এবং মাফউলকে ফাতাহ দিবে। উহা ৭ টি। যথাঃ ১। أَعْلَمَ – সে অবহিত করল, ২। أَرَايَ – সে দেখিল, ৩। أَنْبَأَ – সে সংবাদ দিল, ৪। أَخْبَرَ সে খবর দিল, ৫। خَبَّرَ সে খবর দিল, ৬। نَبَّأَ সে সংবাদ দিল, ৭। حَدَّثَ সে বর্ণনা করল ইত্যাদি। যেমনঃ أَلِمْتُ زَيْدًا عَمْرًوا فَاضِلًا – আমি যায়দকে জ্ঞানী বলিয়া জানিলাম।

মনে রাখিবেঃ যে فعل متعدّي বা সকর্মক ক্রিয়ার দুইটি বা তিনটি করিয়া مفعول বা কর্ম থাকে উহারা مفعول بهۦ হয় কিন্তু সবগুলিকে نائِب فاعل বানানো ঠিক নয়। কারণ নায়েবে ফায়েলটি مسند إليه এর স্থলাভিষিক্ত হয়, যাহা প্রথম مفعول টিই হইবে। তাই ২য় অথবা ৩য় مفعول কে নায়েবে ফায়েল বানানো যাইবে না। তাহা ছাড়া مفعول গুলিকে ফায়েল এর স্থলে উল্লেখ করা যায়। তবে বাবে أَعْطَيْتُ এর মধ্যে مفعول ثانى টি তজ্জন্য বেশী উপযোগী।


অষ্টাদশ পাঠ
أفعال ناقصه
অসমাপিকা ক্রিয়ার বর্ণনা

সংজ্ঞাঃ نَاقِص (নাকিস) শব্দের অর্থ অসমাপ্ত বা অসম্পূর্ণ فعل ناقص শব্দের অর্থ অসমাপ্ত ক্রিয়া। সুতরাং أفعال ناقصه ঐ ধরনের ক্রিয়াপদকে বলা হয় যাহার ফি’ল বা ক্রিয়াপদ গুলিকে সম্পূর্ণ অর্থবোধক বাক্যে পরিণত করিতে হইলে শুধু فاعل এর সাহায্য লইলেই হয় না বরং خبر এরও প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ যে ফি’ল গুলি শুধু ফায়েল এর দ্বারা সম্পন্ন হয় না বরং তাহাদের জন্য খবর-এর প্রয়োজন পড়ে, তাহাকে أفعال ناقصه বলে। মনেরাখিবেঃ বাংলায় ইহাকে অসম্পূর্ণ ক্রিয়া বলা হয়। এই ফি’ল গুলি দ্বারা মূলত حملئ إسمية বা নামবাচক বাক্য গঠিত হয় এবং এই ফি’ল গুলি নামবাচক বাক্যের পূর্বে ব্যবহৃত হইয়া مسند اليه কে যম্মাহ এবং مسند কে ফাতাহ প্রদান করে। যথাঃ كَانَ زَيْدٌ قَائِمًا – যায়দ দাঁড়ান ছিল। এই বাক্যটির প্রতি লক্ষ্য করিয়া দেখ। এখানে كَانَ ফি’লটি অর্থের দিক দিয়া পূর্ণ হইলেও বাক্যের দিক দিয়া অসম্পূর্ণ। যদি كَانَ زَيْدٌ বলা হয় তবে “যায়দ ছিল” অর্থ হয়। এইখানে إسم বল বা فاعل বল زَيْدٌ আসাতেও বাক্যের পূর্ণতা হয় নাই। যদি একটি خبر যোগ করা হয় অর্থাৎ قَائِمًا (খবর)টি যোগ করা হয় তবে كَانَ زَيْدٌ قَائِمًا – যায়দ দন্ডায়মান ছিল। এই বার বাক্যের পূর্ণতা লাভ করিয়াছে। মনে রাখিবেঃ যম্মাহ যুক্ত ইসমকে إِسم كَانَ (ইসমিকানা) এবং ফাতাহ যুক্ত ইসমকে خبر كَانَ (খবরে কানা) বলে। তবে কোন কোন সময় এই সব ফি’ল শুধু মাত্র ফায়েল দ্বারাই সম্পন্ন হইয়া যায়, কিন্তু خبر এর দরকার হয় না তখন উহাকে كَانَ تَمَّه বা পূর্ণতা জ্ঞাপক كَانَ বলে। যথাঃ كَانَ مَطَرٌ – বৃষ্টি হইয়েছিল। كَانَ কোন কোন সময় زائدة বা অতিরিক্ত হইয়া থাকে। উদাহরণঃ كَيْفَ نُكَلِّمُ مَنْ كَانَ فِي الْمَهْدِ – যে দোলনায় তাহার সাথে কি ভাবে কথা বলিব। এই كَانَ উপরের বাক্যের زَيْدٌ বা مسند اليه কে যম্মাহ এবং قَائِمًا খবর পদকে ফাতাহ দিয়াছে। আরবীতে অসমাপিক ক্রিয়া ১৭টি। এইবার উপরের নিয়ম মুতাবেক বাক্য গঠন কর।

১। كَانَ অর্থঃ হইল বা ছিল বুঝায়, ২। صَارَ অর্থঃ হইল বুঝায়, ৩। أَصْبَحَ অর্থঃ সকাল হইল, ৪। أَمْسَىٰ অর্থঃ সন্ধ্যা হইল, ৫। أَضْحَيٰ অর্থঃ দ্বি-প্রহর হইল, ৬। ظَلَّ অর্থঃ চলা এখনো শেষ হয় নাই বা হইবে এমন কিছু বুঝায়, ৭। بَاتَ অর্থঃ ظَلَّيٰ এর অর্থও বুঝায়, ৮। عَادَا অর্থাৎ কোন কিছু হইবে, ফিরিবে বা হওয়ার পথে ইত্যাদি বুঝায়, ৯। ইহার দ্বারা অতীতের একটি বা গতকাল বুঝায়, ১০। ইহা দ্বারা চলিয়া যাওয়া, ত্যাগ করা বা অতীতকালের কোন কাজ বুঝায়, ১১। সর্বদা ছিল বা শেষ হয় নাই বা পরিস্কার হয় নাই এমন কাজ বুঝায়, ১২। مَا أَنْفَكَّ ইহা দ্বারা দূর হয় নাই, পৃথক হয় নাই ইত্যাদি বুঝায়। ১৩। ءَاضَ হইল, ফেরত হইল ইত্যাদি বুঝায়। ১৪। مَا بَرِحَ ইহা দ্বারা শেষ হয় নাই বুঝায়, ১৫। مَا فَتِيَ ইহা দ্বারা সর্বদা ছিল ইত্যাদি বুঝায়, ১৬। مَادَامَ অর্থঃ সর্বদা ছিল অর্থাৎ তখনও ছিল বা যতক্ষণ ছিল ইত্যাদি বুঝায়, ১৭। لَيْسَ না, নহে বা নিষেধ ইত্যাদি অর্থ হয়।


ঊনবিংশ পাঠ
أفعال المقاربه
নৈকট্য বোধক ক্রিয়ার বিবরণ

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত فعل বা ক্রিয়া দ্বারা অল্প সময়ের মধ্যে বা নিকটতম সময়ে কোন কার্য সম্পাদন হইবার সম্ভাবনাকে বুঝায়, উহাকে أَفْعَالِ الْمُقَارَبَه (আফআলি মুকারাবা) বলে। কর্তার পক্ষ হইতে ক্রিয়া সম্পাদনার নিকটতম সময়ের সম্ভাবনাকে বুঝানোর জন্য এই ক্রিয়াপদ গুলি তৈরী হইয়াছে। এইগুলি جملئ إسمية এর মধ্যে كَانَ এর মতো ইসমকে যম্মাহ এবং خبر কে ফাতাহ দেয়। কিন্তু خبر অবশ্যই مضارع হইতে হইবে। তবে ইহাতে أَنْ উল্লেখ থাকিতেও পারে আবার নাও পারে। যথাঃ أَنْ উল্লেখ থাকিলে عَسَٰي زَيْدٌ أَن يَّخْرُجَ – সম্ভবত যায়দ বাহির হইবে। আর أَنْ উল্লেখ না থাকিলে عَسَٰي زَيْدٌ يَخْرُجُ। তবে أَنْ যুক্ত فعل مضارع টি عَسَٰي এর فاعل হয় বিধায় উহার خبر পদের দরকার হয় না। যথাঃ عَسَٰي أَن يَخْرُجَ زَيْدٌ এখানে أَنْ শব্দটি যম্মাহ এর স্থলে আসিয়া فعل কে مصدر এর অর্থে পরিণত করিয়াছে। ফলে এই বাক্যটি عَسَٰي এর فاعل হইয়াছে।

أَفْعَالِ الْمُقَارَبَه চারি প্রকার। যথাঃ

১। عَسَٰي – আশা করা যায়, বা অচিরেই হইবে।

২। كَادَ – অল্প কালের মধ্যেই বা বেশ তাড়াতাড়ি ঘটিবে।

৩। كَرُبَ – নিঃসন্দেহে বা সন্দেহ ব্যতিত, এবং

৪। أَوْشَكَ – ইহাও সন্দেহ অর্থে ব্যবহার হয়।


বিংশ পাঠ
أَفْعَالٌ مَدْحٌ وَذَمٌ
প্রশংসা ও নিন্দাজ্ঞাপক ক্রিয়াসমূহ।

সংজ্ঞাঃ যে সকল শব্দ দ্বারা কোন ব্যক্তি অথবা অন্য কিছুর প্রশংসা করা হয় তাহাকে أَفْعَالُ الْمَدْحُ বলা হয়। পক্ষান্তরে যে সকল শব্দ দ্বারা কোন ব্যক্তি বা বস্তু অথবা অন্য কিছুর নিন্দা প্রকাশ করা হয় তাহাকে أَفْعَالُ الذَّمُ বলা হয়। এই দুই ধরণের فعل গুলিকে একত্রে أَفْعَالُ الْمَدْحُ وَالذَّمُ বলা হয়। ইহার শব্দ সংখ্যা ৪ টি। ইহার মধ্যে فعل مدح এর জন্য দুইটি ব্যবহার হয়। যথাঃ ১। نِعْمَ – কত ভাল। ইহার দ্বারা বাক্য গঠন করিলে نِعْمَ الرَّجُلُ زَيْدٌ – যায়দ কত ভাল লোক এবং ২। حَبَّذَا – কত চমৎকার। ইহার দ্বারা বাক্য গঠন করিলে حَبَّذَا الرَّجُلُ رَفِيقٌ – রফিক কত চমৎকার ব্যক্তি। فعل ذَمٌ এর জন্য যে দুইটি শব্দ ব্যবহার হয় তাহা হইতেছে, ১। بِئْسَ – কত নিকৃষ্ট। উদাহরণঃ بِئْسَ الرَّجُلُ زَيْدٌ – যায়দ কত নিকৃষ্ট ব্যক্তি এবং ২। سَاءَ – খুব খারাপ। উদাহরণঃ سَاءَ الرَّجُلُ رَفِيقٌ – রফিক খুব খারাপ লোক। নিম্নে উহাদের ব্যবহার বিধি দেওয়া হইল।

উপরের ৪টি উদাহরণের فعل এর فاعل বা কর্তার পরে যে إسم উল্লেখ করা হয় مخصوص بِالْمَدْحِ বা প্রশংসার জন্য নির্ধারিত বা مخصوص بالذّم (নিন্দার জন্য নির্ধারিত হইবে। তবে যে সমস্ত শর্ত বিদ্যমান থাকিবে তাহা হইলঃ

১। ইহা ال দ্বারা معرفه হইবে। যথাঃ نِعْمَ الرَّجُلُ زَيْدٌ অথবা بِئْسَ الرَّجُلُ زَيْدٌ হইবে।

২। ইহা ال -এর দিকে مضَاف হইবে। যথাঃ نِعْمَ صَاحِبُ الْقَوْمِ زَيْدٌ – যায়েদ উত্তম দলপতি।

৩। যখন উক্ত فاعل টি ضمير مستتر বা উহ্য সর্বনাম হইবে তখন তাহার تميز ফাতাহ বিশিষ্ট হইবে। যথাঃ نِعْمَ رَجُلًا زَيْدٌ এই বাক্যে نعم পদটির فاعل বা কর্তা যাহা نِعْم এর মধ্যে উহ্য অবস্থায় আছে এবং رَجُلًا পদটি تميز হইয়াছে বিধায় উহা ফাতাহ যুক্ত। কেননা هُوَ সর্বনামটি দ্বারা যাহাকে বুঝাইতেছে সে স্পষ্ট নয়।

তা ছাড়া حَبَّذَا زَيْدٌ এর মধ্যে حَبَّ পদটি فعل مدح এবং ذا পদটি তাহার فاعل এবং زَيْدٌ (ইসম)টি مخصوص بِالْمَدْحِ আর ঠিক এই ভাবে নিম্নলিখিত বাক্যগুলির অভ্যন্তরে কি ঘটিতেছে তাহা বুঝিয়া নিবে। যেমনঃ ১। بِئْسَ الرَّجُلُ زَيْدٌ – যায়েদ কত নিকৃষ্ট ব্যক্তি এবং ২। سَاءَ الرَّجُلُ عَمْرٌوا – আমর খুব মন্দ লোক ইত্যাদি।


একবিংশ পাঠ
أَفْعَالُ التَّعَجَّب
আশ্চর্যবোধক ক্রিয়া সমূহের বিবরণ

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত فعل দ্বারা মানুষের মনের ভাব এমনভাবে প্রকাশ পায় যাহাতে আশ্চর্যবোধক অর্থ বিরাজ করে তাহাকে أَفْعَالِ التَّعَجَّب বলে। ইহার দুইটি সিগা বা মানদণ্ড আছে। যথাঃ ১। مَا أَفْعَلَهُ ইহার উদাহরণঃ مَا أَحْسَنَ زَيْدًا – যায়দ কত সুন্দর। এই বাক্যটির প্রকৃত রূপ ছিল أَيُّ شَيْئٍ أَحْسَنَ زَيْدًا – যায়দকে কিসে এত সুন্দর করিল! এই বাক্যে مَا শব্দটি أَيُّ شَيْئٍ অর্থে মুবতাদা হিসাবে رفع এর স্থলে; এবং أَحْسَنَ পদটি কর্তা هُوَ সর্বনাম পদটি উহ্য রহিয়াছে এবং زَيْدًا উহার مَفْعُول بِهِۦ রূপে ব্যবহার হইয়াছে। ২। যথাঃ أَحْسِنْ بِزَيْدٍ – যায়দের সাথে ভাল ব্যবহার কর। এই বাক্যে أَحْسِنْ পদটি أَمر বা অনুজ্ঞার সিগা এবং ইহা خبر এবং فعل ماضي এর অর্থ দিবে। মূল ইবারত أَحْسَنَ زَيْدٌ অর্থাৎ صَارَا زَيْدٌ ذَاحُسْنٍ – যায়দ কি সুন্দর। এই খানে بَا অক্ষরটি زائدة বা অতিরিক্ত।


তৃতীয় অধ্যায়
بَيَانُ أَسْمَاءِ الْعَامَلَة
কার্যকারক শক্তি সম্পন্ন বিশেষ্যের বর্ণনা

সংজ্ঞাঃ যে সমস্ত إسم বাক্যের মধ্যে ব্যবহার হইয়া অপর কোন إسم বা فعل এর উপর কোন عمل বা কোন পরিবর্তন করে তাহাদের أَسْمَاءِ الْعَامَلَة বলে। মনে রাখিবেঃ বাংলায় ইহাকে কার্যকারক বা পরিচালনা শক্তি বলে। এই إسم গুলি إِنْ এর মতই فعل مضارع কে জযম দেয় এবং ইহাদের পরে দুইটি جمله বা বাক্য হয়। প্রথমটিকে شرط এবং দ্বিতীয়টিকে جزا বলে। যেমনঃ مَن تَضْرِبْ أَضْرِبْ তুমি যাহাকে প্রহার করিবে, আমিও তাহাকে প্রহার করিব। ইহাদের সংখ্যা এগারটি। যেমনঃ

১। أَسْمَاءِ شَرْطِية বা শর্তবোধক বিশেষ্য। যাহা إِنْ এর অর্থে অর্থাৎ কতিপয় বিশেষ শর্তের ন্যায় إسم ৯টি। যথাঃ

ক) مَنْ যাহাকে। যথাঃ مَن تَضْرِبْ أَضْرِبْ – তুমি যাহাকে প্রহার করিবে, আমিও তাহাকে প্রহার করিব।

খ) مَا যাহা কিছু। যথাঃ مَاتَفْعَلْ أَفْعَلْ – তুমি যাহা করিবে আমিও তাহাই করিব।

গ) أَيْنَ যেখানে। যথাঃ أَيْنَ تَجْلِسْ أَجْلِسْ – তুমি যেখানে বসিবে আমিও সেখানে বসিব।

ঘ) مَتَيٰ যখন। যথাঃ مَتَيٰ تَقُمْ أَقُمْ – তুমি যেখানে দাঁড়াইবে আমিও সেখানে দাঁড়াইব।

ঙ) أَيُّ যাহা। যথাঃ أَيُّ شَيْئٍ تَاكُلْ أَكُلْ – তুমি যাহা খাইবে আমিও তাহাই খাইব।

চ) أَنَّيٰ যেখানে। যথাঃ أَنَّيٰ تَكْتُبْ أَكْتُبْ – তুমি যেখানে লিখিবে আমিও সেখানেই লিখিব।

ছ) إِذْمَا যখন, যে সময়। যথা إِذْمَا تُسَافِرْ أُسَافِرْ – তুমি যখন ভ্রমান করিবে আমিও ভ্রমন করিব।

জ) حَيْثُمَا যথায়, যেখানে। যথাঃ حَيْثُمَا تَقْصُدْ أَقْصُدْ – তুমি যেখানে ইচ্ছা করিবে আমিও সেখানে ইচ্ছা করিব।

ঝ) مَهْمَا যখন, যে সময়। যথাঃ مَهْمَا تَقْعُدْ أَقْعُدْ – যখন তুমি বসিবে আমিও বসিব।

২। أَسْمَاءِ أَفْعَال অতীতকালীন ক্রিয়াত্মক বিশেষ যাহা অতীত কালের অর্থে ব্যবহার হইবে। ইহার পদ সংখ্যা তিনটি এবং ইহারা إِسم কে فاعل হিসাবে যম্মাহ দেয়। যেমনঃ

ক) هَيْهَاتَ দূর হইয়াছে। যথাঃ هَيْهَاتَ يَوْمُ الْعِيدِ – ঈদের দিন অতীত হইয়াছে।

খ) شَتَّانَ পৃথক হইয়াছে। যথাঃ شَتَّانَ زَيْدٌ عَمْرًوا – যায়েদ আমার হইতে পৃথক হইয়াছে।

গ) سَرْعَانَ তাড়াতাড়ি করিয়াছে। যথাঃ سَرْعَانَ الشِّتَاءُ – শীতকাল তাড়াতাড়ি আসিয়াছে।

৩। أَسْمَاءِ أَفْعَال বা অনুজ্ঞা বাচক ক্রিয়াত্মক বিশেষ্য যাহা এর অর্থ প্রদান করে। ইহারা কে বা কর্মকারক হওয়ার ভিত্তিতে ফাতাহ দেয়। ইহাদের পদ সংখ্যা ৬ টি। যেমনঃ

ক) رُوَيْدَ সুযোগ দেওয়া। যথাঃ رُوَيْدَ زَيْدًا – যায়দকে সুযোগ দাও।

খ) بَلْهَ ছাড়িয়া দেওয়া। যথাঃ بَلْهَ زَيْدًا – যায়দকে ছাড়িয়া দাও।

গ) حَيَّهَلْ আগাইয়া আসা। যথাঃ حَيَّهَلَ الْفَلَاحِ – তুমি কল্যাণের দিকে আগাইয়া আসো।

ঘ) عَلَيْكَ কর্তব্য মনে করা। যথাঃ عَلَيْكَ الصَّلَوٰةَ – তুমি সালাতকে কর্তব্য মনে কর।

ঙ) دُونَكَ গ্রহণ করা। যথাঃ دُونَكَ هَٰذَا – তুমি ইহা গ্রহণ কর।

চ) هَا ধরা। যথাঃ هَا زَيْدًا – তুমি যায়দকে ধর।

৪। إسم فاعل যাহা বর্তমান অথবা ভবিষ্যত কালের অর্থে ব্যবহার হইয়া فعل معروف বা কর্তৃবাচ্য ক্রিয়ার মত আমল করিবে অর্থাৎ فاعل -কে رفع বা যম্মাহ ও مفعول -কে نصب বা ফাতাহ দিবে তবে ইহা তাহার পূর্ববর্তীশব্দের উপর অবশ্যই নির্ভর বা اعتماد করিবে। আর সেই শব্দগুলি নিম্ন ধরণের হইতে পারে। যথাঃ

ক) উক্ত শব্দটি হয়তো মুবতাদাহ হইবে। فعل لازم যথাঃ زَيْدٌ قَائِمٌ أَبُوهُ – যায়দের পিতা দন্ডায়মান। এই বাক্যে زَيْدٌ (মুবতাদা) এবং قَائِمٌ শব্দটি إِسم فاعل যাহা فعل لازم বা অকর্মক ক্রিয়া شبه فعل (শিবি’ ফি’ল) হইয়া তাহার فاعل কে أَبُوهُ যম্মাহ দিয়াছে। আর সকর্মক ক্রিয়ার ক্ষেত্রে زَيْدٌ ضَارِبٌ أَبُوهُۥ عَمْرًوا – যায়েদের পিতা আমরকে মারিল। এই বাক্যে زَيْدٌ মুবতাদা, ضَارِبٌ হচ্ছে إسم فاعل যাহা فعل متعدّي বা সকর্মক ক্রিয়া شبه فعل হইয়া فاعل তথা أَبُوهُ কে رفع বা যম্মাহ এবং مفعول তথা عَمْرًوا কে ফাতাহ দিয়াছে।

খ) উক্ত শব্দটি হয়তো موصوف বা বিশেষণয় বিশেষ্য হইবে। যথাঃ مَرَرْتُ بِرَجُلٍ ضَارِبٍ أَبُوهُ بَكْرًا – আমি এমন ব্যক্তির সহিত গিয়াছি যাহার পিতা বকরকে প্রহারকারী। এই বাক্যে رَجُلٌ শব্দটি موصوف বা বিশেষণীয় বিশেষ্য এবং ضَارِبٌ أَبُوهُ بَكْرًا তাহার صفت হইয়াছে।

গ) উক্ত শব্দটি হয়তো إسم موصول হইবে। যথাঃ جَآءَنِي الْقَائِمُ أَبُوهُ – যাহার পিতা দন্ডায়মান, আমার নিকট সে আসিল। এই বাক্যে الْقَائِمُ শব্দটি মূলতঃ الَّذِي قَائِمٌ ছিল তাই ইহা إسم موصول হইয়াছে এবং أَبُوهُ শব্দটি إسم فاعل । সকর্মক ক্রিয়ার উদাহরণঃ جَآءَنِي الضَّاربُ أَبُوهُ عَمْرًا – যাহার পিতা আম্‌রকে প্রহারকারী, আমার নিকট সে আসিল।

ঘ) উক্ত فعل টি হয়তো ذوالحال হইবে। যথাঃ جَآءَنِي زَيْدٌ رَاكِبًا غُلَامُهُ فَرْسًا – আমার নিকট যায়দ এমন অবস্থায় আসিল যে তাহার গোলাম ঘোড়ায় সওয়ার ছিল। এই বাক্যে زَيْدٌ পদটির উপর إِسم فاعل এমন ভাবে إعتماد (ই’তিমাদ) করিয়াছে যে ফলে উহা …. ذوالحال হইয়াছে।

ঙ) উক্ত শব্দটি হয়তো همزهءِ إستفهام হইবে। যথাঃ أَضَارِبُ زَيْدٌ عَمْرًا – যায়দ কি আমরকে প্রহারকারী? এই বাক্যে إِسم فاعل টি همزهءِ إستفهام এর উপর إِعْتِمَاد কারী।

চ) উক্ত শব্দটি হয়তো حرف نفي হইবে। যথাঃ مَاقَائِمٌ زَيْدٌ – যায়দ দন্ডায়মান নয়। এই বাক্যে مَا অব্যয় পদটি ব্যবহার হওয়া إسم فاعل – এর সহিত إِعْتِمَاد করিয়াছে।

উপরোক্ত উদাহরণ সমূহে ضَارِبٌ এবং قَائِمٌ ঐ ধরনের আমলই করিয়াছে ضَرَبَ এবং قَامَ যেই ধারণের আমল করিত।

৫। إِسم مفعول যাহা বর্তমান ও ভবিষ্যত অর্থে ব্যবহার হয়। মনে রাখিবেঃ যাহার উপর কাজ করা বা হওয়া বুঝায় তাহাকে مفعول বলে। আর যে إسم এরূপ কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে বুঝায় তাহাকে إسم مفعول বলে। যথাঃ مَنْصُورٌ (মানসুরুন) সাহায্য প্রাপ্ত ব্যক্তি। এই গুলি فعل مجهول এর ন্যায় আমল বা কার্য করিবে। তবে ইহাতে إسم فاعل এর মতই বর্ণিত ছয়টি পদের উপর إعتمَاد বা নির্ভর করিবে।

জানিয়া রাখিবে যে, إسم مفعول যেহেতু فعل متعدي হইতে গঠিত হয় তাই ইহা চার প্রকার হইয়া থাকে। যেমনঃ ১। এক مفعول -কে নিয়া সকর্মক, ২। দুই مفعول নিয়ে সকর্মক, যাহার শুধুমাত্র একটি مفعول উল্লেখিত ও ঠিক হয়। ৩। দুই মাফউলকে নিয়া সকর্মক যাহার দুইটিই উল্লেখ করিতে হইবে কেবল একটি উল্লেখ করিলে চলিবে না। ৪। তিন মাফউলকে নিয়ে সকর্মক। সমস্ত গুলির বিস্তারিত উদাহরণ নিম্নের ছকটি হইতে বুঝিয়া লও।

তিন মাফউল সকর্মক দুই মাফউলে সকর্মক যাহার দুইটিকে উল্লেখ করিতে হবে দুই মাফউলে সকর্মক যাহার একটিকে উল্লেখ করিতে হয় এক মাফউলে সকর্মক إعتمَاد
خَالِدٌ مُخْبَرٌا إِبْنُهٌ عَمْرًوا فَاضِلًا بَكْرٌ مَعْلُومٌ إِبْنُهُ فَاضِلًا زَيْدٌ مُعْطَيٰ غُلَامُهُۥ دِرْهَمًا زَيْدٌ مَضْرُوبٌ أَبُوهُ مُبْتَدَا
مَرَرْتُ بِرَجُلٍ مُخْبَرُ إبْنُهُ عَمْرًوا فَاضِلًا مَرَرْتُ بِرَجُلٍ مَعْلُومٍ إِبْنُهُ فَاضِلًا مَرَرْتُ بِرَجُلٍ مُعْطَيٰ غُلَامُهُ دِرْهَمًا مَرَرْتُ بِرَجُلٍ مَضْرُوبٍ أَبُوهُ مَوْصُوف
جَآءَنِي الْمُخْبَرَ إِبْنُهُ عَمْرًوا فَاضِلًا جَآءَنِي الْمَعْلُومُ إِبْنُهُ فَاضِلًا جَآءَنِي الْمُعْطَيٰ غُلَامُهُ دِرْهَمًا جَآءَنِي الْمَضْرُوبُ أَبُوهُ مَوْصُول
جَآءَنِي زَيْدٌ مُخْبَرًا إِبْنُهُ عَمْرًوا فَاضِلًا جَآءَنِي زَيْدٌ مَعْلُومًا إِبْنُهُ فَاضِلًا جَآءَنِي زَيْدٌ مُعْطًيٰ غُلَامُهُ دِرْهَمًا جَآءَنِي زَيْدٌ مَضْرُوبًا أَبُوهُ ذوَالحَال
أَمُخْبَرٌ زَيْدٌ عَمْرًوا فَاضِلًا أَمَعْلُومٌ زَيْدٌ فَاضِلًا أَمُعْطًي زَيْدٌ دِرْهَمًا أَمَضْرُوبٌ زَيْدٌ همزهٔ إِستِفْهَام
مَا مُخْبَرٌ زَيْدٌ عَمْرًوا فَاضِلًا مَامَعْلُومٌ زَيْدٌ فَاضِلًا مَا مُعْطًي زَيْدٌ دِرْهَمًا مَا مَضْرُوبٌ زَيْدٌ حرف نفي

মনে রাখিবেঃ مَضْرُوبٌ , مَعْلُومٌ , مُعْطَيٰ ও مُخْبَرٌ এই ধরণের إسم مفعول গুলি ضُرِبَ , أُعْطَيٰ , عُلِمَ এবং أُخْبِرَ – فعل مضهول এর মত আমল করিয়া থাকে।

৬। صفت مشبه ঐ সকল إسم مشتق কে বলে যাহা এমন কোন ذات কে বুঝাইবে যাহার মধ্যে معنئ مصدر করা, হওয়া, যাওয়া ইত্যাদি অর্থ স্থায়ী ভাবে পাওয়া যাইবে। এইগুলি উপরে উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী আপন ক্রিয়া পদের আমল করিয়া থাকে। যথাঃ زَيْدٌ حَسَنٌ عُلَامُهُ – যায়দের গোলামটি সুন্দর। এই বাক্যে حَسُنَ যে আমল করিত حَسَنٌ সেই আমল করিয়াছে।

৭। أسم تفضيل বা তুলনা বোধক বিশেষ্য। যে সমস্ত إسم দ্বারা অপর কোন إسم এর উপর তুলনামূলক প্রাধান্য বুঝায় তাহাকে إسم تفضيل বলে। ইহার ব্যবহার করার নিয়ম তিনটি। যথাঃ

ক) تفضيل النفس অর্থাৎ যে সমস্ত إسم দ্বারা কোন প্রকার তুলনা ছাড়া কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে শ্রেষ্ঠ করিয়া দেখানো হয় তাহাকে تفضيل النفس বলে। ইহার বাক্য গঠন কালে ال যোগ করিতে হয়। যথাঃ زَيْدُنِ الْأَفْضَلُ – যায়দ অতি উত্তম ব্যক্তি। মনে রাখিবেঃ বাংলায় ইহাকে তুলনাহীন বিশেষণ বলে। ইহা ال দ্বারা ব্যবহার হইবে।

খ) تفضيل البعض অর্থাৎ যে সমস্ত إسم দ্বারা দুইটি বস্তু বা ব্যক্তির মধ্যে তুলনা বুঝায় তাহাকে تفضيل البعض বলে। বাংলায় ইহাকে অপেক্ষাকৃত উত্তম বিশেষণ বলে। যথাঃ زَيْدٌ أَفْضَلُ مِنْ عَمْرٍو – যায়দ আমর হইতে উত্তম। এখানে ال ব্যবহার করা হইবে না। مِنْ দ্বারা ব্যবহার হইবে।

গ) تَفْضِيلُ الْكُل অর্থাৎ যে সমস্ত إسم দ্বারা কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে সকলের উপর প্রাধান্য দেওয়া হয় তাহাকে تَفْضِيلُ الْكُل বলে। ইহাকে إضافت এর মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। যথাঃ زَيْدٌ أَفْضَلُ الْقَوْمِ – যায়দ তার দলের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি। ইহার আমল فاعل বা কর্তার মধ্যে হইয়া থাকে এবং هُوَ সর্বনামটি এখানে উহ্য রহিয়াছে। কেননা ইহা মূলতঃ زَيْدٌ هُوَ أَفْضَلُ الْقَوْمِ হইবে।

৮। مصدر অর্থাৎ فعل এর ক্রিয়ামূলকে مصدر বলে। ইহা যদি فعل এর مَعْمُول না হয় অর্থাৎ مفعول مطلق না হয় তখন উহা فعل এর মতো আমল করিবে অন্যথায় করিবে না। যথাঃ أَعْجَبَنِي ضَرْبُ زَيْدٍ عَمْرًا – আমরকে যায়দের প্রহার করা আমাকে আশ্চর্যন্বিত করিল।

৯। إسم مضاف হওয়া। অর্থাৎ যে إسم কে অপর কোন إسم এর দিকে সম্পর্ক যুক্ত করা হয় উহাকে বলা হয় এবং যে দিকে সম্পর্ক করা হইল তাহাকে إسم مضاف বলে এবং যে إسم এর দিকে সম্পর্ক করা হইল তাহাকে مضاف اليه বলে। مضاف সর্বদা مضاف اليه কে কাসরা প্রদান করে। যথাঃ جَآءَنِي غُلَامٌ زَيْدٍ – যায়দের গোলাম আমার নিকট আসিল। এই বাক্যে ال হইবে না। ইহাতে একটি হরফে যার ل উহ্য আছে ধরিয়া লইতে হইবে। কেননা মূল বাক্যটি ছিল جَآءَنِي غُلَامٌ لِزَيْدٍ এখানে ل উহ্য আছে।

১০। إسم تام ইহা তাহার تميز কে ফাতাহ প্রদান করে এবং বাকী إسم গুলি যে সকল অবস্থায় পূর্ণতা পায় তাহা হইলঃ

ক) ইহা তানবীন সহ হইতে পারে। যথাঃ مَا فِي السَّمَآءِ قَدْرُ رَاحَةٍ سَحَابًا – আকাশে হাতের তালুর সমান মেঘ ঝন্ডও নাই।

খ) অথবা ইহার তানবীন হযফ বা উহ্য থাকিতে পারে। যথাঃ عِنْدِي أَحَدَ عَشَرَ رَجُلًا – আমার নিকট এগার জন পুরুষ লোক আছে।

গ) ইহা দ্বী-বচনের ءَانِ সহকারে ব্যবহার হইতে পারে। যথাঃ عِنْدِي قَفِيزَانِ بُرًّا – আমার নিকট দুই টুকরী গম আছে।

ঘ) ইহা বহুবচনের نون সহকারে ব্যবহার হইতে পারে। যথাঃ بِالْأَخْسَرِينَ أَعْمَالًا – কর্মের বিবেচনার অধিক ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন।

ঙ) ইহা বহুবচনের نون -সাদৃশ্য نون -এর সাথে ব্যবহার হইতে পারে। যথাঃ عِنْدِي عِشْرُونَ دِرْهَٰمًا – আমার নিকট বিশটি দিরহাম আছে। عِشْرُونَ হইতে تِسْعُونَ পর্যন্ত একই অবস্থা হইবে।

চ) ইহা إِضَافَت এর মাধ্যমে ব্যবহার হইতে পারে। যথাঃ عِنْدِي مِلْؤُهُۥ عَسَلًا – আমার নিকট উহা ভর্তি মধু আছে।

১১। أسماء لنايات للعدد বা সংখ্যাবাচক ইঙ্গিত সূচক বিশেষ্য। ইহার সংখ্য দুইটি। যথাঃ ১) كَمْ – কত, এবং ২) كَذَا – এরূপ। كَمْ আবার দুই প্রকার। যথাঃ

(১) كَمْ استفهَامية বা প্রশ্নবোধক এবং (২) كَمْ خبرية বর্ণনা মূলক كَمْ । মনে রাখিবে- كَمْ استفهَامية তার تميز কে ফাতাহ দেয়। যথাঃ كَمْ رَجُلًا عِنْدِكَ – তোমার নিকট কতজন পুরুষ লোক আছে? আবার كَذَا ও তাহার تميز কে ফাতাহ দেয়। যথাঃ عِنْدِي كَذَا رَجُلًا – আমার এরূপ সংখ্যক পুরুষ লোক আছে। كَمْ خبرية তার تميز কে কাসরাহ দেয়। যথাঃ كَمْ مَالٍ أَنْفَقْتُ – কত টাকাই আমি খরচ করিলাম। মাঝে মাঝে كَمْ خبرية এর تميز এর পূর্বে مِنْ হরফে কাসরাহ ব্যবহার হইয়া থাকে। যথাঃ كَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَٰوَٰتِ – আকাশে কত মালাক আছে?

عوامل معنوي
উহ্য আমলকারী

সংজ্ঞাঃ معنوي শব্দের অর্থ মৌলিক। عامل معنوي বলিতে ঐসব আমলকে বুঝায় যেইগুলি মৌলিকভাবে বাক্যের মধ্যে আমল করিয়া থাকে। বাক্যের মধ্যে ইহাদের শাব্দিক রূপ থাকে না। ইহা দুই প্রকারঃ

১। إِبْتِدَاء অর্থাৎ إسم এর عَوَمِلِ لفظي বা শাব্দিক আমল হইতে বিমুক্ত হওয়া। ইহা মুবতাদা ও খবর উভয়কে যম্মাহ প্রদান করে। যথাঃ زَيْدٌ قَائِمٌ – যায়দ দন্ডায়মান। এই বাক্যে زَيْدٌ মুবতাদা এবং قَائِمٌ খবর উভয়কে إِبْتِدَاء এর কারণে যম্মাহ দেওয়া হইয়াছে। তবে এই ক্ষেত্রে মুবতাদা এবং খবরের আমলের বিষয়ে আরও মতামত বিদ্যমান। যথাঃ

ক) কারো মতে إبتدَا মুবতাদার عامل এবং مبتدا খবর -এর আমল।

খ) কারো মতে مُبْتَدَا ও خبر উভয়ে একে অন্যের উপর আমলকারী।

২। فعل مضارع বা বর্তমান ভবিষ্যৎ ক্রিয়াগুলি নসবদানকারী আমল এবং জযমদানকারী আমল হইতে মুক্ত হওয়া। ইহা فعل مضارع কে যম্মাহ দান করে। যথাঃ يَضْرِِبُ زَيْدٌ এখানে يَضْرِبُ ফি’ল টি যম্মাহ যুক্ত। কেননা এই বাক্যটি عامل ناصب ও عامل جازم হইতে মুক্ত।


পরিশিষ্ট
بَيَانُ التَّوَابِع
অনুগামী পদ সমূহের আলোচনা

সংজ্ঞাঃ توابع শব্দটি تابع এর جمع বা বহুবচন। ইহার একবচন تابع এবং অর্থ অধিনস্থ পদ। সুতরাং تابع ঐ শব্দকে বলা হয় যাহা তাহার পূর্বোক্ত শব্দেরই একটি অধীনস্ত শব্দ। ইহার ইরাব একই কারণে বা একই দিক দিয়া তাহাই হইবে যাহা পূর্ববর্তী শব্দের ইরাব ছিল। পূর্বোক্ত শব্দটি متبوع বা অনুসরণকৃত এবং পরের শব্দটিকে تابع বা অনুসারী বলা হয়। تابع বা অনুগামী পদের ইরাব সবসময়ই متبوع এর মতই হয়। ইহা পাঁচ প্রকার। যথাঃ

১। نعت বা বিশেষণ। ইহা ঐ ধরণের تابع কে বুঝায় যাহা متبوع এর দোষ, গুণ, অবস্থা ইত্যাদি বুঝায়। যথাঃ جَآءَنِي رَجُولٌ عَالِمٌ – আমার নিকট একজন বিদ্বান ব্যক্তি আসিল। অথবা ইহা متعلق متبوع এর দোষ, গুণ বা অবস্থা বুঝায়। যথাঃ جَآءَنِي رَجُلٌ حَسَنٌ غُلَامُهُۥ – আমার নিকট এমন এক ব্যক্তি আসিয়াছিল যাহার গোলাম খুব সুন্দর। মনে রাখিবেঃ نعت ও صفت এবং متبوع ও موصوف একই অর্থ বহন করে। صفت এবং موصوف এর মিলিত বাক্যকে مركب توصيفي বলে। صفت ও موصوف এর মধ্যে দশটি বিষয়ের মধ্যে সমতা ও একতা থাকা শর্ত। যথাঃ ১) تعريف বা নির্দিষ্ট হওয়া। ২) تنكير বা অনির্দিষ্ট হওয়া। ৩) تذكير বা পুংলিঙ্গ হওয়া। ৪) تانيث বা স্ত্রীলিঙ্গ হওয়া। ৫) افراد বা একবচন হওয়া। ৬) تثنيه বা দ্বিবচন হওয়া। ৭) جمع বা বহুবচন হওয়া। ৮) رفع বা যম্মাহ যুক্ত হওয়া। ৯) نصب বা ফাতাহ যুক্ত হওয়া। ১০) جر বা কাসরাহ যুক্ত হওয়া। যথাঃ جَآءَنِي رَجُلٌ عَالِمٌ وَرَجُلَانِ عَالِمَانِ وَرِجُالٌ عَالِمُونَ وَإِمْرَأَةٌ عَالِمَةٌ وَغَيْرَهُ কিন্তু যে صفت দ্বারা موصوف – এর দোষ গুণ বর্ণনা না করিয়া موصوف এর সহিত সংশ্লিষ্ট বিষয় বা ব্যক্তির দোষ, গুণ বর্ণনা করা হয় তখন ঐ জাতীয় صفت ও موصوف এর মধ্যে পাঁচটি বিষয়ের সমত ও একতা হওয়ার শর্ত অর্থাৎ تابع পাঁটি বিষয়ে স্বীয় متبوع এর অনুরূপ হইবে। যথাঃ ক) تعريف বা নর্দিষ্ট হওয়া। খ) تنكير বা অনির্দিষ্ট হওয়া। গ) رفع বা যম্মাহ হওয়া, ঘ) نصب বা ফাতাহ হওয়া। ঙ) جر বা কাসরা হওয়া। যথাঃ جَآءَنِي رَجُلٌ أَبُوهُ عَالِمٌ আর এইরূপ ক্ষেত্রে বাক্যের মধ্যে এমন একটি সর্বনাম অপরিহার্য যাহা সেই نكرة এর প্রতি প্রত্যাবর্তনকারী হয়।

২। تاكيد বা জোর দেওয়া বা দৃঢ় করা এমন একটি تابع যাহা দ্বারা متبوع এর অবস্থাকে এমন ভাবে দৃঢ় করিয়া ব্যক্ত করা হয় যাহার পরে متبوع এর সম্পর্কে শ্রোতার কোন সন্দেহ থাকে না। ইহা দুই প্রকার। যথাঃ

১) تاكيد لفظي বা শাব্দিক বা একই শব্দ বার বার উল্লেখ করার মাধ্যমে তাকিদ বা জোরদার করা কে تاكيد لفظي বলে। যথাঃ إِنَّ إِنَّ زَيْدٌ قَائِمٌ আথবা ضَرَبَ ضَرَبَ زَيْدٌ অথবা زَيْدٌ زَيْدٌ قَائِمٌ ইত্যাদি।

২) تاكيد معنوي বা নির্ধারিত কয়েকটি ভিন্ন শব্দদ্বারা متبوع কে জোরদার করা বুঝায়। উহা ৮ প্রকার। যথাঃ

i) نَفْسٌ ও ii) عَيْنٌ এই দুইটি একই অর্থে ব্যবহৃত হয় এবং একবচন, দ্বিবচন ও বহুবচনে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ একবচনে جَآءَنِي زَيْدٌ نَفْسُهُۥ وَعَيْنُهُ দ্বিবচন جَآءَنِي الزَّيْدَانِ أَنْفُسُهُمَا وَأَعْيُنُهُمُاَ বহুবচনে جَآءَنِي الزَّيْدُونَ أَنْفُصُهُمْ وَأَعْيُنُهُمْ ।

iii) كِلَا ও كِلْتَا এই দুইটি যথাক্রমে পুংলিঙ্গ স্ত্রীলিঙ্গ ভেদে দ্বিবচনে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ جَآءَنِي الزَّيْدَانِ كِلَاهُمَا ও جَآءَنِي الزَّيْدَانِ كِلْتَاهُمَا।

iv) كُلُّ , v) أَجْمَعُ , vi) أَكْتَعُ , vii) أَبْتَعُ , viii) أَبْصَعُ এই পাঁচটি শব্দ একই অর্থে বহুবচনের জন্য ব্যবহৃত হয়। আবার স্বরণ যোগ্য যে, أَكْتَعُ , أَبْتَعُ ও أَبْصَعُ এই তিনটি ছাড়া কখনও أَجْمَعُ স্বতন্ত্র ব্যবহৃত হয় না এবং أَجْمَعُ এর পূর্বেও আসে না। দ্বিতীয়ত كُلُّ টি সর্বদা ضمير এর সহিত মিলিত হইবে। যথাঃ جَآءَنِي الْقَوْمُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ أَكْتَعُونَ أَبْتَعُونَ أَبْصَعُونَ

৩। بدل বা স্থলবর্তী উক্তি। بدل এইরূপ تابع যাহা উক্তির উদ্দেশ্য হয় অর্থাৎ বাক্যে متبوع উদ্দেশ্য না হইয়া ঐ শব্দ বা بدل উদ্দেশ্য হয়- ইহার متبوع কে مبدل منه বলে। ইহা চার প্রকার। যথাঃ

(ক) بَدَلُ الْكُل ঐ تابع কে বলা হয় যাহার অর্থ অবিকল مبدل منه এর অর্থ হয়। যথাঃ جَآءَنِي زَيْدٌ أَخُوكَ – আমার নিকট যায়দ, তোমার ভাই আসিল। এই বাক্যে زَيْدٌ শব্দটি متدل منه এবং أَخُوكَ শব্দটি بدل । এখানে যায়দ দ্বারা যাহাকে উদ্দেশ করা হইয়াছে أَخُوكَ দ্বারাও তাহাকেই উদ্দেশ্য করা হইয়াছে।

(খ) بدل الاشتمال যে بدل দ্বারা مبدل منه -এর সহিত সম্পর্কিত কোন বস্তুকে বুঝায় উহাকে بدل الاشتمال বলে। যথাঃ سُلِبَ زَيْدٌ ثَوْبُهُۥ – যায়দের বস্ত্রকে কাড়িয়া লওয়া হইল। এই বাক্যে زَيْدٌ শব্দটি مبدل منه এবং ثُوبُهُۥ উহার بدل এবং এইখানে যায়দের সাথে সম্পর্কিত বস্তু তথা কাপড়ের অর্থই تابع এর মাধ্যমে প্রকাশ পাইয়াছে।

(গ) بدل البعض ঐ ধারণের تابع কে বলা হয় যাহা مبدل منه এর অংশ বিশেষ এর অর্থ প্রকাশ করে। যথাঃ ضُرِبَ زَيْدٌ رَأْسُهُۥ – যায়দকে তাহার মাথায় প্রহার করা হইল। এইখানে رَأْسُهُۥ শব্দটি بدل যাহা যায়দের একটি অঙ্গকে বুঝাইয়াছে মাত্র।

(ঘ) بدل الغلط যে بدل দ্বারা ভুল শোধন করা হয় অর্থাৎ ভুলে একটি শব্দ বলায় উহাকে সংশোধন করিয়া পরে উহার পরিবর্তে যেই শব্দ বলা হয় উহাকে بدل الغلط বলা হয়। যথাঃ مَرَرْتُ برَجُولٍ حِمَارٍ – আমি একজন লোকের সঙ্গে- না গাধার সঙ্গে গিয়াছি।

৪। عطف بحروف বলিতে একটি إسم -কে অপর একটি إسم এর সহিত (সংযোজন) করাকে বুঝায়। যাহার সহিত عطف বা সংযোজন করা হয় তাহাকে معطوف عليه বলে এবং যাহাকে عطف করা হয় উহাকে معطوف বলে। যথাঃ جَآءَنِي زَيْدٌ وَعَمْرٌو – আমার নিকট যায়েদ ও আমর আসিল। معطوف عليه এবং معطف এর হুকুম একই। যে সমস্ত حرف দ্বারা عطف করা হয় তাহাদিগকে حرف عطف বলে।

৫। عطف بيان ইহা صفت নহে বরং متبوع এর পরে আসিয়া উহার অর্থকে পরিস্কার করিয়া দেয়। যথাঃ أَقْسَمَ بِاللَّهِ أَبُوحَفْصٍ عُمَرُ – আবু হাফস ওমর আল্লাহর নামে শপথ করিল। এই বাক্যে ওমর শব্দটি দ্বারা أَبُوحَفْص এর অর্থ স্পষ্ট হইয়াছে। তবে ইহা أَبُو حَفْصٍ এর صفت নহে। সুতরাং علم এবং كنيت এর যেইটি অধিক খ্যাতি সম্পন্ন উহার দ্বারাই عطف بيان করিতে হইবে। যথাঃ جَآءَنِي زَيْدٌ أَبُو عَمْرٍو এই উদাহরণটি তখনই দেওয়া যাইবে যখন علم এর তুলনায় كنيت বেশী পরিচিতি অর্থাৎ زَيْدٌ এর তুলনায় أَبُو عمرو বেশী পরিচিত হইলে।

بيان منصرف وغيرمنصرف
রূপান্তরিত ও রূপান্তরহীনের বর্ণনা

সংজ্ঞাঃ منصرف ঐ إسم কে বুঝায় যেইগুলি منع صرف বা غيرمنصرف এর নয়টি سبب বা কারণ এর মধ্যে কোন سبب (সবব) বিদ্যমান থাকে না। আর غير منصرف ঐ إسم কে বলা হয়, যাহাতে منع صرف এর سبب বা কারণ সমূহের মধ্য হইতে দুইটি অথবা দুইটির সমপর্যায়ের একটি سبب বা কারণ পাওয়া যায়। منع صرف এর سبب বা কারণ নয়টি। যথাঃ

১। عدل যথাঃ عُمَرُ ইহাতে معرفه (علم) এবং عدل দুইটি কারণ বিদ্যমান আছে বলিয়া রূপান্তর হীন।

২। وصف যথাঃ ثُلَٰثُ وَمَثْلَثُ ইহাতে عدل এবং وصف এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

৩। تانيث যথাঃ طَلْحَةُ ইহাতে علم ও تانيث এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

৪। معرفه যথাঃ زَيْنَبُ ইহাতে علم ও تانيث এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

৫। عجمه (অনারবী) যথাঃ إِبْرَاهِيمُ ইহাতে علم এবং عجمه এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

৬। جمع যথাঃ مَسَاجِدُ এখানে একটি কারণ অর্থাৎ শুধুমাত্র جمع এর দ্বারাই ইহা غير منصرف হইয়াছে। কেননা এই একটি কারণে মধ্যে দুইটি কারণের সমতুল্যতা বিদ্যমান আছে।

৭। تركيب যথাঃ بَعْلَبَكُّ ইহাতে علم ও تركيب এই দুইটি কারণ বিদ্যমান আছে।

৮। وزن فعل যথাঃ أَحْمَدُ এখানে فعل এর ওজন এবং علم এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

৯। الف ونُون زائِدتانِ যথাঃ سَكرَانُ এখানে الف ونُون زائِدتانِ এবং وصف এই দুইটি কারণ বিদ্যমান।

মনে রাখিবেঃ غيرمنصرف এর শেষে কাসরাহ হয় এবং তানবিন হইবে না। আমরা জানি কোন শব্দের পূর্বে হরফি জর আসিলে কাসরাহ হয় কিন্তু উহা غير منصرف হইলে কাসরাহ হইবে না। যথাঃ جَآءَ عُمَرُ , رَأَيْتُ عُمَرَ , এবং مَرَرْتُ بِعُمَرَ ইত্যাদি।

حروف غير عاملة
কার্যকারণশক্তি হীন অব্যয় পদের বিবরণ

সংজ্ঞাঃ যে সকল حرف (আব্যয়) আরবি বাক্য সমূহে কোন প্রকার আমল করে না উহাদেরকে حروف غير عاملة বলে। ইহা ষোল প্রকার যথাঃ

১। حروف تنبيه বা সতর্কীকরণ অব্যয়। এই অব্যয় গুলি দ্বারা কোন ব্যক্তিকে সতর্ক বা সাবধান করা হয়। এই অব্যয় তিনটি। যথাঃ (ক) أَلَا যেমনঃ أَلَا زَيْدٌ قَائِمٌ (খ) أَمَا যেমনঃ أَمَا زَيْدٌ قَائِمٌ (গ) هَا যেমনঃ هَا زَيْدٌ قَائِمٌ

২। حروف إيجاب বা সম্মতি সূচক অব্যয়। ইহা দ্বারা স্বিকারোক্তি বুঝায়। ইহা ৬টি। যথাঃ (ক) نَعَمْ – হাঁ, (খ) بَلَيٰ – হাঁ, (গ) أَجَلْ – হাঁ, (ঘ) إِي – হাঁ, (ঙ) جَيْر – হাঁ, (চ) أَنَّ – হাঁ।

৩। حروف تفسير – বা ব্যাখ্যাকারী অব্যয়। এই অব্যয়গুলি দ্বারা বিশ্লেষণমূলক অর্থ প্রকাশ পায়। ইহা দুইটি। যথাঃ أَنْ ও أَيْ ।

৪। حروف مصدرية বা কৃদন্ত পদীয় অব্যয়। এইগুলি তিন প্রকার। যথাঃ (১) مَا , (২) أَنْ , (৩) أَنَّ , এর মধ্যে مَا এবং أَنْ ক্রিয়াপদে আসিয়া مَصْدَر এর অর্থ প্রকাশ করে।

৫। حروف تحضيض وتوبخ উত্তেজনা ও তিরস্কারবোধক অব্যয়। ইহা মোট চার প্রকার। যথাঃ (১) أَلَّا , (২) هَلَّا , (৩) أَولَا , (৪) لَوْمَا ।

৬। حروف توقّع (আশা বা বিশ্বাসবাচক অব্যয়)- ইহার সংখ্য মাত্র একটি। যথাঃ قَدْ , ইহা ماضي তে তাহকিকের অর্থ প্রদান করে এবং ماضي ও هال এর মধ্যে নিকটবর্তী হওয়ার জন্য ব্যবহার হয় এবং مضارع এর মধ্যে تعليل বা স্বল্পতা অর্থ দান করার জন্য ব্যবহার হয়।

৭। حروف إستفهام (প্রশ্নবোধক অব্যয় পদ)- ইহা দ্বারা কাউকে প্রশ্ন করা বুঝায়। ইহা তিন প্রকার। যথাঃ (১) مَا , (২) همزه , (৩) هَلْ মনে রাখিবেঃ حروف إستفهام বাক্যের প্রথমে বসে।

৮। حروف ردع বা অস্বীকারবোধক অব্যয়। ইহার সংখ্যা একটি। যথাঃ كَلَّا ইহা ফিরাইয়া বা বিরত রাখা অর্থে ব্যবহার হয়। ইহা حَقَّا বা নিশ্চিত অর্থেও ব্যবহার হয়।

৯। تنوين (নূন সাকিন) হওয়া। ইহা পাঁচ প্রকার। যথাঃ (১) تمكنّ , (২) تنكير , (৩) عوض , (৪) مقابله , (৫) ترنّم এইগুলি কবিতার শেষে ব্যবহার হয়।

১০। نون تاكيد (গুরুত্ব আরোপক নূন) বা দৃঢ়তাবোধক নূন। ইহা فعل مضارع এর শেষে ব্যবহার হয়। ইহা দুইপ্রকার। যথাঃ (১) تقيلة বা তাশদীদ যুক্ত, (২) خفيفة বা তাশদীদ মুক্ত বা জযমযুক্ত।

১১। حروف زيادت বা অতিরিক্ত অব্যয়। ইহা মোট আটটি। যথাঃ (১) إِنْ , (২) أَنْ, (৩) مَا, (৪) لَا, (৫) مِنْ, (৬) ك, (৭) بَا, (৮) لَام।

১২। حروف شرط বা শর্তজ্ঞাপক অব্যয়। ইহা দুইটি। যথাঃ (১) أَمَّا, (২) لَوْ ইহা কোন জিনিষের ব্যাখ্যা করার জন্য ব্যবহার করা হয় এবং ইহার উত্তরে فَا আনা অপরিহার্য।

১৩। لَوْلَا ইহা প্রথমটি হইবার কারণে দ্বিতীয়টি হয় নাই বুঝাইতে ব্যবহার হয়।

১৪। لام مفتوحه – ইহা তাকিদের জন্য আসে।

১৫। مَا ইহা مَادَامَ (যতক্ষন) অর্থে ব্যবহার হয়।

১৬। حروف عطف (সংযোগ অব্যয়)- ইহা মোট দশটি। (১) وَاؤ, (২) فَ, (৩) ثُمَّ, (৪) أَمَّا, (৫) حَتَّيٰ, (৬) أَوْ, (৭) أَمْ, (৮) لَا, (৯) بَلْ ও (১০) لَٰكِنَّ

بَيَانُ الْمُسْتثنَيٰ
বহির্ভূতের কারক চিহ্ন

إِعْرَاب এর দিক হইতে مُسْتَثْنَيٰ চারিভাগে বিভক্ত। যথাঃ

১। منصوب বা ফাতাহ যুক্ত। ইহা কয়েকটি অবস্থায় হইবে। যথাঃ (ক) مستثنيٰ টি إِلَّا এর পরে كَلَامِ مُوجِبْ (কালামি মুজেব) -এ হইলে ও مُسْتَثْنَيٰ مِنْهُ উল্লেখ থাকিলে। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ إِلَّا زَيْدً – গোত্রটি আসিল যায়দ ব্যাতীত। (খ) كلام غير موجب -এ হইয়া مُسْتَثْنَيٰ مِنْهُ -এর পূর্বে আসিলে। যথাঃ مَا جَآءَ إِلَّا زَيْدًا أَحَدٌ – যায়দ ছাড়া কেহই আসে নাই। (গ) مستثنَيٰ منقطع হইলে অথবা مَاخَلَا, مَا عَدَا, لَيْسَ, لَايَكُونُ -এর পরে হইলে সর্বদাই ফাতাহ যুক্ত হইবে। তাছাড়া خَلَا ও عَدَا এর পরে আসিলেও অধিকাংশ নাহুবিদদের মতে ফাতাহ যুক্ত হইবে। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ إِلَّا حِمَارًا – গোত্রটি আসিল কিন্তু গাধা আসিল না। جَآءَ الْقَوْمُ إِلَّا زَيْدًا – গোত্রটি আসিল কিন্তু যায়দ আসিল না।

২। منصوب ومرفوع বা ফাতাহ অথবা যম্মাহ যুক্ত। مستثنيٰ যদি كلام غير موجب -এ হয় এবং مستثنيٰ مِنْه -ও উল্লেখিত হয় তবে তাহাতে যম্মাহ অথবা ফাতাহ দুইটি হইতে পারিবে। যথাঃ

৩। عامل আনুসারে ইরাব হইবে। আর তাহা যদি উল্লিখিত না হয় এবং কালামে মুজেব হয় তখন ইহাকে مُسْتَثْنَيٰ مفرغ বলে। যথাঃ مَا جَآءَ إِلَّا زَيْدٌ وَمَا رَأَيْتُ إِلَّا زَيْدًا وَمَا مَرَرْتُ إِلَّا بِزَيْدٍ।

৪। مجرور বা কাসরাহ হইবে। مستثنَيٰ যদি غير – سواء – سَوَّيٰ এর পরে হয় তাহা হইলেও অধিকাংশ নাহুবিদদের মতে ইহা কাসরা যুক্ত হইবে। অপরপক্ষে যদি حَاشَا এর পরে হয় তাহা হইলেও অধিকাংশ নাহুবিদদের মতে ইহা কাসরাহ যুক্ত হইবে। কেহ কেহ নসব হওয়ার কথাও বলিয়াছেন। যথাঃ جَآءَ الْقَوْمُ غَيْرَ زَيْدٍ وَسَوَيٰ زَيْدٍ

মনে রাখিবেঃ كَلَامُ مُوجب বলা হয় ঐ বাক্যকে যাহাতে نَفِي , نَهِي ও إسْتِفْهَام হয় না। অর্থাৎ নাবাচক, নিশেধাজ্ঞাবাচক ও প্রশ্নবোধক নয়, এমন বাক্যকে كلام موجب বলে। আর غير শব্দটি যেমন إِلَّا অর্থে ব্যবহৃত হয় তদ্রুপ ইহা صفت এর অর্থেও আসে। তাই ইহার إِعرب , مُسْتَثْنَيٰ এর ইরাব অনুসারেই হইয়া থাকে।

Page 2

Page 2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

শাইখ আব্দুর রব আফ্ফান- দাওয়াহ ওয়া তাবলীগ ক্লাস, বিষয়- আকিদা (শবেবরাত)-২০, তাং- ১০-৫-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী – DWT class, বিষয়- রাসূলের আনুগত্য- ১৮, তাং- ১৭-০৮-২০১৭
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলালা মাদানী- কুরবানী-২০১৭, তাং- ১০-০৮-২০১৭
শাইখ জাকির হুসাইন- দাওয়াহ ওয়া তবলীগ ক্লাস, বিষয়- আরবী ভাষা শিক্ষা-৫, তাং- ২০-১১-২০১৬
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল – DWT ক্লাস, বিষয়- যিলহজ্জ্ব মাসের ১০ দিনের আমল ও ফযিল, তাং- ১-৮-২০১৭
আহলি সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা, শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী
© Dawah wa Tablig since 2013